Dashu is a precocious little always in the pursuit of mischief, He might seem a bit eccentric but he is not a fool at all. This graphic novel brings together three famous stories of Dashu.
Sukumar Ray (Bangla: সুকুমার রায়) was a Bengali humorous poet, story writer and playwright. As perhaps the most famous Indian practitioner of literary nonsense, he is often compared to Lewis Carroll.
His works such as the collection of poems Aboltabol (Bengali: আবোলতাবোল), novella HaJaBaRaLa (Bengali: হযবরল), short story collection Pagla Dashu (Bengali: পাগলা দাশু) and play Chalachittachanchari (Bengali: চলচিত্তচঞ্চরী) are considered nonsense masterpieces equal in stature to Alice in Wonderland, and are regarded as some of the greatest treasures of Bengali literature. More than 80 years after his death, Ray remains one of the most popular of children's writers in both West Bengal and Bangladesh.
বাংলা শিশু-সাহিত্যের ইতিহাসে এটি একটি যুগান্তকারী গ্রন্থ। বিদ্যাসাগরের শিক্ষামূলক রচনার নৈতিক গুরুগম্ভীরতা, উপেন্দ্রকিশোরের কল্পলোকের শৃঙ্খলা এবং রবীন্দ্রনাথের শিশুমুখী কাব্যের সৌন্দর্য— সব কিছুকে ভেঙে সুকুমার এখানে গড়ে তুলেছেন হাস্যরস, ব্যঙ্গ ও দুষ্টুমির এক স্বতন্ত্র ভুবন।
দাশুর চরিত্রকে প্রথমে মনে হয় অদ্ভুত— ছোটখাটো চেহারা, ঝাঁকড়া চুল, অস্বাভাবিক কান, আর কথায় পাগলামির ছাপ। কিন্তু এই অদ্ভুতের আড়ালে নিহিত আছে ব্যতিক্রমী বুদ্ধি ও বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গি। সে নিয়ম মানে না, অথচ সমাজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভণ্ডামিকে কৌতুকে ভেঙে দেয়।
এই দিক থেকে দাশুকে দেখা যায় এক ধরনের "ট্রিকস্টার" চরিত্র হিসেবে, যাকে নানা সংস্কৃতির লোককথা ও বিশ্বসাহিত্যে পাওয়া যায়। সুকুমার এখানে বাংলা শিশু-সাহিত্যে সেই ট্রিকস্টার আর্কিটাইপকে বসিয়েছেন, কিন্তু তাকে ঘিরে রেখেছেন আধুনিক স্কুল-জীবনের পরিবেশে। চণ্ডীপুরের ইংরেজি স্কুল আসলে ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রতীক, যেখানে ছাত্রদের একঘেয়ে মুখস্থ পড়া, শৃঙ্খলিত জীবনযাপন, আর গুরুগম্ভীর শিক্ষক-শাসনকে তিনি ব্যঙ্গ করেছেন। দাশুর কর্মকাণ্ডে একদিকে শিশুদের স্বাভাবিক দুষ্টুমি, অন্যদিকে সেই শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শূন্যতাকে প্রকাশ করা হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ায় সুকুমার বাংলা শিশু-সাহিত্যে এমন এক দ্বিস্তরীয়তা সৃষ্টি করেছেন যা তাকে অনন্য করে তোলে। শিশুরা দাশুকে পড়ে খিলখিলিয়ে হাসে, আর প্রাপ্তবয়স্করা সেখানে শিক্ষাব্যবস্থার ব্যঙ্গাত্মক প্রতিফলন খুঁজে পান। ভাষা এখানে কথ্য, সপ্রাণ, এবং শব্দখেলার দক্ষতায় ভরপুর— যেখানে নিছক মজার আড়ালে লুকিয়ে থাকে সামাজিক তীক্ষ্ণ সমালোচনা। এক অর্থে, এটি "ননসেন্স সাহিত্য"র ধারারই বাংলা রূপ, যা লুইস ক্যারলের Alice’s Adventures in Wonderland–এর সঙ্গে তুলনীয়।
তবে সুকুমারের স্বাতন্ত্র্য এই যে, তিনি বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজ ও স্কুল-জীবনের অভিজ্ঞতাকে ননসেন্স ও ব্যঙ্গের মাধ্যমে একেবারে দেশীয় আঙ্গিকে প্রকাশ করেছেন। পাশ্চাত্যের প্রভাব থাকলেও দাশু নিছক অনুকরণ নয়; বরং একেবারে বাঙালি পাঠকের অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে গড়া চরিত্র।
পাগলা দাশু–র গুরুত্ব এখানেই যে এটি শিশু-সাহিত্যে নীতিপাঠের গুরুগম্ভীর আবহ থেকে মুক্তি এনে দেয়। বিদ্যাসাগরের "বোধোদয়" শিশুদের কর্তব্যশিক্ষা শিখিয়েছে, রবীন্দ্রনাথের সহজ পাঠ ভাষা ও প্রকৃতির সৌন্দর্য চিনিয়েছে, কিন্তু সুকুমার রায় সেই ধারার বাইরে গিয়ে শিশুমনের চপলতা, দুষ্টুমি এবং বিদ্রোহী সত্তাকে সাহিত্যে জায়গা দিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ নিজেই মন্তব্য করেছিলেন যে সুকুমারের সমশ্রেণীর রচনা বাংলায় আর নেই—এই স্বীকৃতি শুধু হাস্যরসের জন্য নয়, বরং শিশু-সাহিত্যে প্রথাভাঙা দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।
ফলত, পাগলা দাশু কেবল একটি শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ নয়, বরং বাংলা সাহিত্য-ইতিহাসে প্রথার ভাঙন ও নতুন রূপ নির্মাণের দলিল। এর ভেতরে যে সামাজিক ব্যঙ্গ, মনস্তাত্ত্বিক অন্তর্দৃষ্টি, এবং বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে সংলাপের সক্ষমতা আছে, তা একে একাডেমিক আলোচনার জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। সুকুমারের দাশু আসলে বাঙালি মানসিকতার এক রূপক— বিদ্রোহী অথচ হাস্যরসিক, পাগলাটে অথচ বুদ্ধিমান। শিশু-সাহিত্যকে নিছক শিক্ষাদানের বোঝা থেকে মুক্ত করে আনন্দ, খেলা ও ব্যঙ্গের সাহিত্যিক রূপ দিয়েছিলেন বলেই পাগলা দাশু আজও অপরাজেয়।