Jump to ratings and reviews
Rate this book

ആദർശഹിന്ദുഹോട്ടൽ

Rate this book
Malayalam translation of Bibhutibhushan Bandyopadhyaya's Bengali novel Adarsha Hindu Hotel by Ravi Varma.

216 pages, Paperback

First published October 1, 1940

209 people are currently reading
2842 people want to read

About the author

Bibhutibhushan Bandyopadhyay

203 books1,089 followers
This author has secondary bangla profile-বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.

Bibhutibhushan Bandyopadhyay (Bangla: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়) was an Indian Bangali author and one of the leading writers of modern Bangla literature. His best known work is the autobiographical novel, Pather Panchali: Song of the Road which was later adapted (along with Aparajito, the sequel) into the Apu Trilogy films, directed by Satyajit Ray.

The 1951 Rabindra Puraskar, the most prestigious literary award in the West Bengal state of India, was posthumously awarded to Bibhutibhushan for his novel ইছামতী.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
2,945 (60%)
4 stars
1,546 (31%)
3 stars
343 (6%)
2 stars
52 (1%)
1 star
18 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 746 reviews
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
August 30, 2018
উপন্যাসিকদের একটা বড় বদগুন হল, তারা নানা পদ শেষে শেষে পাঠক কে কষ্ট দিয়ে শেষ করতে ভালোবাসেন। হয়তো সুনীল এর মত পুরো উপন্যাসের মুল নায়ক মারা যাবে, নয়তো পুরো উপন্যাসের সেই ভালো চরিত্রটি সবচেয়ে খারাপ চরিত্রের কাছে হার মানবে। বিভূতিভূষণের আদর্শ হিন্দু হোটেল বইটি পড়বার সময় পুরো সময় টি জুড়ে মনে আমার সেই ভয়। আহারে কত কষ্ট, কত স্বপ্নের সেই গড়ে তোলা কার না কার ষড়যন্ত্রে ভেঙ্গে যাবে। হাজারি সেই রাধুনি ঠাকুর থেকে হোটেল মালিক হবার গল্প। পুরো উপন্যাস পড়েছি এক বসাতে, তবে হ্যা মাঝখানে হারানোর ভয় এত প্রবল হয়ে গিয়েছিল যে একটু টুক করে তাই শেষটা দেখে আসি। বেশ প্রেরনার বই, মানুষের মনে স্বপ্ন থাকতে হয়-তাহলেই না বুড়ো বয়সে মানুষ জোয়ান থাকে। সেই স্বপ্নই তাকে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাবার স্বপ্ন দেখায়। যেসকল উপন্যাসিক মনে করেন-শেষে একটু কষ্ট না দিলে লোকে মনে রাখে না-তাদের বড় উত্তর এই বইটি।

ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করে মানুষকে বড় হতে হয়। কিন্তু যদি তার মধ্যে থাকে নিজের ভাগ্যকে অনুকূলে নিয়ে আনার অদম্য প্রয়াস, তবে ভাগ্যদেবী তার সাথ দিতে বাধ্য। এজন্যই কথায় বলে Allah helps those who help themselves. বলা যেতে পারে এই কথাগুলোর নিখুত প্রয়োগ পাওয়া যায় বিভূতিভূষণের বই আদর্শ হিন্দু হোটেলে।

রাণাঘাটের রেল-বাজারে বেচু চক্কত্তির হিন্দু-হোটেলে মাসিক ৭টাকায় রান্নার কাজ করে পঁয়তাল্লিশ-ছেচল্লিশ বছরের হাজারি ঠাকুর। রান্নার হাত ভালো, তাই মানুষ তার প্রশংসা করে, কিন্তু তার এই প্রশংসা সহ্য করতে পারেনা পদ্ম ঝি। যদিও বেচু চক্কোত্তি এই হোটেলের মালিক, কিন্তু পদ্ম ঝিই যেন এই হোটেলের আসল কর্তী। তার উপর কথা বলার সাহস হয় না কারো। সারাদিন নানা মুখ ঝামটা সহ্য করা, অল্প মাইনে পাওয়া ঠাকুর স্বপ্ন দেখে একদিন সে একটা হোটেল খুলবে, যার নাম দেবে আদর্শ হিন্দু হোটেল। কিন্তু বিধি বাম, ঠাকুরকে চুরির অপবাদে একদিন হোটেল ছাড়তে হয়। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ব্রাক্ষ্মণের স্বপ্ন কী আদৌ পূরণ হবে? কোথা থেকে আসবে নতুন হোটেল তৈরী করার মুলধন? জানার জন্য এ উপন্যাস আপনাকে পড়তে হবে

সহজ সরল ঘটনাকে লেখক এমন ভাবে বর্ণনা করেছেন, যা পড়তে ভারী আরাম পাওয়া যায়। তবে ভাগ্য দেবীর একপর্যায়ে গিয়ে শুধু একমুখী আচরণ, কোথায় যেন বাস্তবতার সাথে মিল খায় না। তবুও এ উপন্যাস যে লেখক অত্যন্ত যত্নের সাথে একেছেন, তা বুঝাই যায়।
Profile Image for Ësrât .
515 reviews85 followers
February 18, 2023
বিভূতিভূষণের উপর আমার একটা ক্ষোভ কিংবা বলা যায় আক্ষেপ অভিমান কাজ করতো প্রতিটা গল্পের শেষে,যেমনটা বাবার উপর মেয়ে করে থাকে যখন তাকে তার পছন্দ মতো গল্প না শুনিয়ে কিংবা রাক্ষসপুরীতে যখন রাজকন্যাকে বন্দী করে রাখে বাজে রাক্ষস কিন্তু তাকে বাঁচানোর জন্য আসা রাজপুত্রটাই যখন বেঘোরে প্রাণ হারায় কিংবা নানাবিধ সমস্যার যাঁতাকলে পড়ে পৃষ্ঠ হতে থাকে তখন ছোট্ট মেয়ের যেমনটা মনে হয় বাবা তো চাইলেই সব কিছু সহজ করে দিতে পারত এত কষ্ট দেওয়ার কি দরকার ছিল?

পথের প‍্যাচালীর দূর্গা,কিংবা পুঁইমাচার সেই ছোট্ট মেয়েটা অথবা চারদিক থেকে রিক্ত হওয়া অপুর দুরাবস্থা দেখে কতশতবার যে চোখের পানি ফেলেছি তাই বলতে গেলে বিষাদ সিন্ধু না হলেও ছোটখাটো নদী হয়ে যাবে বই কি!
তারপরও এ লোক হ‍্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো বারবারই টানেন তার লেখার দিকে,সেই টানে পড়া শুরু করেছিলাম "দৃষ্টি প্রদীপ". ভয়াবহ রকমের ডিপ্রেশন চলছিল আমার তখন,পাতা দশেক পড়ার পর বুঝতে পারলাম এই বই পড়লে আমি দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খেতেই থাকবো,থাক বরং বাদ দি পরে অন‍্য কোনো দিনে নিরালা কোনে কিংবা নিঝুম রাতে চাঁদের আলো গায়ে মাখতে মাখতে পড়ে ফেলবো বইটা.

সে পরিকল্পনা অবশ্য এখনো বাস্তবায়ন হয়নি.আশায় বাঁচে মানুষের ভাষা একথা বিশ্বাস করে শুরু করলাম আদর্শ হিন্দু হোটেল,এবার মনে মনে পণ করেছিলাম এ লেখার শেষে যদি কাঁদতে হয় তবে কাটাকুটি করে নিব বিভূতিভূষণের সাথে.

আশাহত হতে হয়নি মোটেই বরং ৪৬ বছর বয়সের হাজারি ঠাকুর যখন সত্যি সত্যিই খুলে ফেললেন রাণাঘাটে তার আজন্ম লালিত স্বপ্নের হোটেলখানা তখন বারবার আমার মনে পড়ছিল ষাটোর্ধ্ব বয়সে বর্তমান সময়ের অন‍্যতম জনপ্রিয় খাবার জায়গা কেএফসির উদ্দ্যোক্তার কথা.ইচ্ছেশক্তি থাকলে আর ভাগ‍্যদেবী সহায় হলে লোকে কি না করতে পারে!

হাজারী ঠাকুরের ও সহায় ছিল তার রাধাভল্লব আর কন‍্যাসম লক্ষ্মীরূপী তিন কন‍্যা কুসুম,অতসী আর সুবাসিনী.নিজেদের সঞ্চয় অকপটে তুলে দিয়েছিলেন হাজারী ঠাকুরের হাতে

শুধু রান্নায় দ্রৌপদী সম দক্ষতার সাথে হাজারী মশাইয়ের অন‍্যতম গুন তার সততা, পরোপকারীতা আর মহানুভবতা.ঠিক কতটুকু বড় মাপের মানুষ না হলে বেচু চক্কোত্তির হোটেলে সাতবছর কাজ করার সময় অষ্টপ্রহর অপদস্ত করা পদ্মঝিকে কেউ দুর্দিনে আশ্রয় দেয়?যে পদ্মঝিকে দেখলে এখানকার দিনের খলনায়িকারা ও বোধহয় লজ্জায় মুখ লুকিয়ে ফেলবে.মুখরা পদ্ম ও শেষ পর্যন্ত অকূলে ঠাঁই পায় হাজারীর হোটেলে.

রাণাঘাটে আমার কোনোদিন যাওয়া হবে কি না জানি না,গেলে অবশ্যই খুঁজে দেখবো আদর্শ হিন্দু হোটেল আর খেয়ে আসবো হাজারী ঠাকুরের হাতের সেই মনভোলানো জিভে জল আনা রান্না.

রেটিং:🌠🌠🌠🌠.৬০
Profile Image for Akash.
446 reviews150 followers
February 18, 2023
জীবনে যখন একটু অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয়, যখন জীবন অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যেতে থাকে, যখন মনে হয় এই জীবন রেখে কোনো ফায়দা নেই, তখন এই বইটা শান্তি দেয়, অনুপ্রেরণা দেয় সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার।

হাজারি ঠাকুর চরিত্রে ৩টি সদগুণ দেখা যায়; অধ্যবসায়, আশা এবং বিনয়। যে গুণ গুলো সাফল্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। তাছাড়া নিজের শক্তিশালী জায়গা খুঁজে বের করা; হাজারির ক্ষেত্রে ছিল রান্নায় ভাল দক্ষতা। যদিও হাজারির জীবনে তিনজন মেয়ে এসেছিল সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে।

আশা মানে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। সে অনিশ্চয়তার হাত ধরে অধ্যবসায় এর সহিত নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হয়। হাজারি ঠাকুরের তীব্র আশা তার আসল বয়স কমিয়ে দিয়েছিল এবং তার মনে-দেহে শক্তি-অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল।

তাছাড়া হাজারি ছিল কর্মঠ; সে বিশ্বাস করত; কর্ম ছাড়া সুখ নাই। সে তার জীবনে অভিজ্ঞতাকে চরম গুরুত্ব দিয়েছিল। যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করে হোটেলের ব্যবসা শুরু করেছিল।

গ্রামাঞ্চলের মানুষের অতিথিসেবা এখন প্রায় হারিয়ে গেছে; হাজারি যা পেয়েছিল নিঃস্বার্থভাবে। এখন গ্রামেও শহরের ছায়া, ভদ্রলোক সম্প্রদায়ের বাস; যারা একটু শিক্ষিত-ধনবান হয়ে অহংকারে পেটে ভুঁড়ি গজিয়ে নাক সিটকে পথ চলে। আহ্‌, আগের গ্রাম আর নেই।
.................

বর্তমান প্রজন্ম বই বলতে শুধু বুঝে সেলফ হেল্প আর মোটিভেশন। ফিকশন বই পড়াকে তারা সময়ের অপচয় মনে করে। তারা যদি বুঝত; ফিকশন গল্পের মাধ্যমে মনে যে অনুপ্রেরণা ঢুকিয়ে দেয়; একমাত্র তা মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।

আর ইউটিউব চ্যানেলগুলোতেও শুধু মোটিভেশনাল বইয়ের রিভিউ হয়। কারণ ইউটিউবাররা জানে ফিকশন বইয়ের রিভিউ করলে ভিডিও-তে ভিউ আসবে না। তাছাড়া বর্তমান ইউটিউবাররা মনে হয় ফিকশন বই পড়েই না।

যাই হোক, যার যেমন ইচ্ছা সে তে��ন বই পড়ুক। আমি গল্পের বইয়ের পোকা। জীবন উন্নত করার জন্য যা যা লাগে সব জানা। মোটিভেশনে আমার সুখ নেই। একমাত্র ফিকশনই আমায় সুখ-অনুপ্রেরণা দিতে পারে।।
Profile Image for Israt Zaman Disha.
194 reviews621 followers
December 28, 2016


কিছু ভালো বই পড়েই বছরটা শেষ হোক।

Profile Image for Rakib Hasan.
455 reviews79 followers
June 21, 2020
আশা- মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন। আশা মানুষের বয়সকে ভুলিয়ে মানুষের মনকে যুবক করে রাখে। মাসিক মাত্র ৭ টাকা বেতনে গত ৫ বছর ধরে একই বেতনে বাবুর্চির চাকরি করা হাজারির স্বপ্ন একদিন নিজের হোটেল দিবে। বয়স ছেচল্লিশ। কিন্তু আশা উনার বয়সকে দমিয়ে রাখতে পারেনা। অনেক সুন্দর একটা গল্প। কখনো আশা ছাড়তে নেই। অন্যের অধীনে কাজ করার থেকে নিজে কিছু করার স্বপ্ন বুনে এগিয়ে চললে একদিন সেই স্বপ্ন পূরণ হতে বাধ্য।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
May 12, 2023
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা বই তে আপনাকে স্বাগতম!
সাহিত্যের আর সাহিত্যিকের মানদন্ডের কষ্টিপাথর নেই। যদি থাকত তাহলে জানতে চাইতাম বিভূতি-ভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর কোন বই থেকে কোন বই কে সেরা বলা যায়।

তবে এর উত্তর হয়তো বা অনেকের কাছে থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে এই সব গুলো সেরা হবার গোলকধাঁধাকেই বরং বড্ড ভালো লাগে!

বেচে থাকুক আদর্শ হিন্দু হোটেল সকল পড়ুয়াদের মাঝ দিয়ে ❤️
Profile Image for Ashkin Ayub.
464 reviews228 followers
September 23, 2022



বেশ কিছুকাল ধরেই রাতে বেশ নির্জীব লাগে, ডিসেম্বর যত কাছে আসে, রাতগুলো দীর্ঘ হয়, আজকাল বই নিয়ে খুব লেখালেখি করছি। সময়ে অসময়ে থেমে থেমে, ছাড়া ছাড়া ভাবে সাহিত্যের পুরানো রস আস্বাদনের সাময়িক চেষ্টা। সেদিন একজনের প্রশ্নে বিভূতিভূষণের আদর্শ হিন্দু হোটেলের কথা মনে পড়ে গেল।

অন্য দশটা মানুষের মতো হাজারি ঠাকুরও আশায় বুক বাঁধে, স্বপ্ন দেখে। যতই সংকটময় মুহূর্ত আসুক না কেনো সে স্বপ্ন দেখে চলে, চিন্তা করতে থাকে কি কি উপায় অবশিষ্ট আছে। শত অপমান সহ্য করেও সে ভেঙে পড়েনি। চলতি পথে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতিটাকেও মেনে নেয়। কিন্তু জীবনে চলার পথে বামুন ঠাকুর অনেক নির্মম রূপান্তরকে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়ে ভালো কিছুর আশায়, নিজের স্বপ্নের আশায় সামনে এগিয়ে গেছে। যাপিত জীবনে এর চেয়ে স্বস্তির কি আছে?

বিভূতিভূষণের জাদুকরী ভাষার ঠাসবুনটে হারিয়ে যেতে পারেন চমৎকৃত হবার গোলকধাঁধায়। এই বই যখন ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছে পড়া যাবে না, ঠিক যেমন ইচ্ছে হলেই এমন বই লেখা যায় না, এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়, উপযুক্ত স্থান কাল পাত্রের, মনের ভিতর থেকে সাড়া আসতে হয়। এক আশ্চর্য উপন্যাস।

হাজারী ঠাকুরের গল্প একসময় সব ছাপোষা বাঙ্গালীর গল্প হয়ে যায়, কী আমার, কী আপনার! আমাদের জীবনপ্রবাহকে ধরে রেখে বিচিত্র মুন্সিয়ানায় জাদুর শব্দজাল বুনে বিভূতিবাবু আমাদের দেন এক নিজস্ব দর্পণ, সারা জীবন ধরে পাশে রাখবার এক হরিহর বন্ধু।

Profile Image for শৌণক.
112 reviews17 followers
March 12, 2021
মগবাজারের সিগন্যালে প্রায় প্রতিদিনই দাঁড়ায় থাকি ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট। কোন এক রাত্রে আশেপাশের গাড়ি, বাসের হেল্পার আর রিক্সার মাঝে বোরড হয়ে ফোন খুলে পুথিকা চালাই। আদর্শ হিন্দু হোটেলটাকে দেখা ওখানেই। বেচু চক্কোত্তির হোটেলের হাজারী ঠাকুরের সাথে চূর্ণী নদীর পাড়ে বসে আকাশ-পাতাল স্বপ্ন দেখার শুরু। এরপর? কত কি হয়ে যায়! কে ভেবেছিল!

আমরা দেখি খুবই অসামান্য শক্তিশালী কিছু নারী চরিত্রকে.. পদ্মদিদি, কুসুম, অতসী, টেঁপিকে.. দেখি অসামান্য হাজারী ঠাকুরকে, দেখি সেই বাংলাকে যখন রাঁধুনীর মাসিক বেতন ছিল সাত টাকা।

খুবই ফাস্ট-পেসড। বিভূতিভূষণের লেখা বরাবরের মতই অস্বাভাবিক সাবলীল, ছবির মত সুন্দর।

দেখালে তুমি হাজারী ঠাকুর, দেখালে বটে...
Profile Image for Rubell.
188 reviews23 followers
January 3, 2022
একটু বেশিই আবেগ আছে বইটাতে। একসাথে অনেকজন নিঃস্বার্থ মানুষের উপস্থিতি একজন সাধারণ মানুষের জীবনে! যারা কেন্দ্রীয় চরিত্রের স্বপ্নপূরণে অকৃপণভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে। দা আলকেমিস্ট বইটার সবচেয়ে ওভাররেটেড চাপাবাজি কোটেশনটা এই উপন্যাসের বাস্তবতা- ''When you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it.''
ভিলেন চরিত্রও আছে উপন্যাসে, তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার মত উদারতাও আছে; ক্ষমা করা খুব ভালো, কিন্তু তাদের পুনর্বার বিশ্বাস করা কদর্যতা। এতো বেশি উদারতা, এতো ভালোমানুষি আমি উপভোগ করতে পারিনি। ''মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ''- রবীন্দ্রনাথের কথা মানলে এইটা একটা পাপী লোকের রিভিউ।
Profile Image for Wasee.
Author 49 books784 followers
July 17, 2019
চতুর্থ/ পঞ্চমবার পড়লাম আদর্শ হিন্দু হোটেল।

বিভূতিভূষণের বর্ণনাভঙ্গির সৌন্দর্য প্রকাশ করার মতো যথার্থ বিশেষণ শুধু আমার কাছে কেন, আমাদের বাংলা ভাষাতেই নেই।

তবে আফসোস করার ভাষা জানা আছে আমার, 'একবার যদি হাজারি ঠাকুরের রান্না খেতে পারতাম! মাত্র একবার!' :/
Profile Image for Hasna.
95 reviews79 followers
June 4, 2021
শেষ করে মনটা এক্কেবারে ভালো হয়ে গেলো!

এক লাইনে যদি রিভিউ দিতে হয় তবে বলবো; আশা, তীব্র ইচ্ছাশক্তি, নিজের উপর দৃঢ় বিশ্বাস সর্বোপরি একটা সাদা মন; এইতো জীবন, জীবনের শ্রী।
Profile Image for Abu Rayhan Rathi.
108 reviews
March 21, 2021
বর্ণনার মাধ্যমে কোনো লেখাকে পাঠকের চোখের সামনে এতটা স্পষ্ট ও জীবন্তভাবে তুলে ধরার ক্ষেত্রে কোনো লেখকই মনে হয় না বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়কে টেক্কা দিতে পারবে।সেই 'পথের পাঁচালী', সেই 'চাঁদের পাহাড়' শুধু মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়েছি আর বারবার বিস্মিত হয়েছি। কি চমৎকার লেখনী!

এই বইটা সম্পর্কে তেমন কিছু বলবো না।নিঃসন্দেহে এটি বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের সেরা বইগুলোর একটি। আমার প্রিয় বইগুলোর তালিকায় আরো একটি নতুন বই যুক্ত হলো।আর যারা এখনো পড়েননি তাদের জন্য হাইলি রেকমেন্ডেড বইটা ;)

২১ শে মার্চ, ২০২১
Profile Image for Rafia Rahman.
416 reviews215 followers
September 23, 2023
প্রায়ই একটা কথা আমরা শুনে থাকি, "পেট শান্ত তো মনও শান্ত"। অথবা এমনও বলতে পারি যে, পেটে ক্ষুধা থাকলে কোনো কাজে মন বসে না। শৈশবে পাঠ্যবইয়ে একটা প্রশ্ন ছিল, "আমরা খাবার কেন খাই?" প্রশ্নের সহজ জবাব, "বেঁচে থাকার জন্য"। কিন্তু সময়ের সাথে এই জবাব আরও পূর্ণতা পেয়েছে।

মাছে ভাতে বাঙ্গালি।

যতোই মুখরোচক খাবার বাঙালি খাক না কেন একসময় ঠিকই মাছ, সবজি, ভাত, ডাল, ভর্তার জন্য মন কেঁদে ওঠে। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কি না খেয়ে থাকতে পারবেন? ধোঁয়া ওঠা ভাত, গরম ডাল-সবজি ও মাছের ঝোল কি সহজে ভোলা যায়? এমনি তো বলে না বাঙালিরা ভোজনরসিক!

রাণাঘাটে রেল-বাজারে বেচু চক্কত্তির হোটেলের বেশ নামডাক। আর দশটা হিন্দু হোটেলের মতো পাওয়�� যায় বাঙালির অতিপরিচিত খাবার। কিন্তু... একবার যে এখানে এসেছে, ভুলতে পারে না চক্কত্তি মশাইয়ের হোটেল! কেন? নামমাত্র পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বেশ কয়েকবছর ধরেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে রসুয়ে-বামুন, হাজারি ঠাকুর। হাজারি ঠাকুরের কারিশমায় অতিসাধারণ খাবারও অসাধারণে পরিণত হয় যেন "অমৃত"! তবে মনে সুপ্ত একটা ইচ্ছে আছে রসুয়ে-বামুনের, একটি হোটেল দিবে; "আদর্শ হিন্দু হোটেল"। যেখানে কোনো খদ্দেরকে ঠকানো হবে না। সতেজ-সুস্বাদু-পুষ্টিকর খাবারই হবে যে হোটেলের মূলমন্ত্র। কিন্তু চূর্ণী নদীর ধারে বসে প্রতিদিন দেখা দিবাস্বপ্ন কি কোনোদিন পূরণ হবে?

পরিবার ছেড়ে এতো দূরে রাণাঘাটে বাবুর্চির জীবন সহজ নয় হাজারি ঠাকুরের। প্রতিদিন পদ্মঝির অযৌক্তিক তিরস্কার, বেচু চক্কত্তির অবহেলা নিরবে সহ্য করে চলেছে। মনে ক্ষীণ আশা একদিন তার কদর তারা বুঝবে। কিন্তু কবে? হাজারি ঠাকুরের রান্নার জয়জয়কার পদ্মঝির সহ্য হয় না। মিথ্যে মামলা দিয়ে তুলে দেয় দারোগার হাতে। তাতেও সাধ মেটে না! কুৎসা রটানো শুরু করে। পদ্মঝির প্ররোচনায় বেচু চক্কত্তি কাজ থেকে ছাটায় করে দেয়! ভগ্নহৃদয়ে অকূল পাথারে পড়ে হাজারি ঠাকুর। কিন্তু স্বপ্ন যার হৃদয়ে তাকে কি দমিয়ে রাখা যায়?

প্রায় দেড় বছর আগে পড়া বিভূতিভূষণের "আদর্শ হিন্দু হোটেল"। মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে এতো সময় পরে রিভিউ লিখছি তাহলে বইয়ের বিষয়বস্তু আদোও ঠিকঠাক মনে আছে কিনা। জবাব হলো, "এতো অসাধারণ একটা বইকে ভোলা সম্ভব না"। আমি যদি আরও কয়েকবছর পরও লিখতাম তারপরও বইয়ের অধিকাংশই আমার মনে থাকতো।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার সাথে পরিচয় "চাঁদের পাহাড়" দিয়ে। সুন্দর-সাবলীল লেখনশৈলী। আদর্শ হিন্দু হোটেল পড়ার সময় যেন কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেছিলাম। রাণাঘাটের সেদিনগুলো, হাজারি ঠাকুরের সংগ্রাম, পদ্মঝির অত্যাচার, স্বপ্নের দিনগুলো যেন চোখের সামনে দেখতে পারছি! খাবারগুলো বর্ণনা, মনে লোভ জাগিয়ে তুলছিল। বইটা শেষ করার পরও রেশ রয়ে গেছিলো। দুটো বিষয়ের জন্য বইটা মনে থাকবে সারাজীবন-
◑ হাজারি ঠাকুরের অসম্ভব ধৈর্য্য ও ইচ্ছেশক্তি।
◑ টক্সিক চরিত্র পদ্মঝি।

"প্রত্যেক সফল ব্যক্তির সাফল্যের পিছনে একজন নারীর হাত (ভূমিকা) থাকে" প্রায়ই শোনা একটা কথা। কিন্তু হাজারি ঠাকুরের পিছনে আছে পাঁচজন নারীর অগাধ আস্হা ও অনুপ্রেরণা। শেষ অংশে অতসীর জন্য কষ্ট লাগে। স্টেশনে অতসীকে দেখে হাজারি যখন কেঁদে দেয়... এই অংশ কোনোদিন ভোলা সম্ভব না আমার জন্য।

এমন একটা বই যেটা পড়ার সময় খুশি, আশা, কষ্ট, স্বপ্ন, রাগ, বিরক্ত বিভিন্ন অনুভূতি হয়েছে। শত-শত বই পড়েছি কিন্তু পদ্মঝির মতো এতো টক্সিক চরিত্র কমই দেখেছি। পড়ার সময় বারবার মনে হচ্ছিল একটা শিক্ষা হওয়া উচিত। কিন্তু এতো কূটনামির পরও যখন হাজারি মাফ করে দেয় রাগ-বিরক্ত হয়েছিলাম। তবে এইভাবেও ভাবা যায় যে ক্ষমা করে আসলে সবচেয়ে বড় প্রতিশোধই নেওয়া হয়েছে। পদ্মঝি ভুলতে পারবে না অতীতকে!

আমার প্রিয় বইগুলোর মধ্যে সবসময়ই থাকবে "আদর্শ হিন্দু হোটেল"। বারবার পড়ার মতো একটা বই। শুধু একটা কথা বলবো,

স্বপ্ন পূরণের কোনো বয়স নেই।
Profile Image for Sharika.
358 reviews95 followers
January 27, 2023
"আদর্শ হিন্দু হোটেল" একটি "আদর্শ" বই - তথা নিখুঁত বই। এই ধরণের উপন্যাস পড়লে নতুন করে মনে পড়ে কেন বাংলা ক্লাসিক উপন্যাসের পাগলাটে ভক্ত ছিলাম একসময়ে। এতো রকমের আবেগ দিয়ে হৃদয়ের কাছের কাহিনী তুলে ধরা তো যার-তার কম্মো নয়, কেবল পুরানোকালের লেখকদের হাতেই এই মাধুর্য ফুটে উঠা দেখেছি। বর্তমানকালের সোশ্যাল মিডিয়া সেলিব্রেটি লেখকদের অর্থহীন কোনো প্লট টেনে লম্বা করে বানানো উপন্যাস পড়তে পড়তে যখন হতাশ হয়ে পড়ি, তখন এসব পুরানো বই এক চিলতে শান্তির মতো মনটা স্নিগ্ধ করে দিয়ে যায়। তাদের কোনো জাঁকজমক সম্পন্ন পটভূমিরও দরকার হতো না, সাধারণ জীবনের অতি সাধারণ জিনিসকে নিজেদের দক্ষতায় কিভাবে যেন অসাধারণ করে ফেলতেন।

"আদর্শ হিন্দু হোটেল" আমার কাছে আজীবন স্মৃতিতে সযত্নে রেখে দেয়ার মতো একটি বই বলে মনে হয়েছে। হাজারি ঠাকুরের জন্য মনের গভীর থেকে অসম্ভব ভালোবাসা রইলো, বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল চরিত্রের একজন সে। বই পড়তে পড়তে তার হাতের রান্না খাবার জন্য মন যেন উচাটন হয়ে উঠছিলো, আহা - কি সুন্দর বর্ণনা! বিভূতিভূষণের লেখাকে যথাযথ সম্মান দেয়ার মতো দু'টো কথা বলার ভাষা আমার আসলে জানা নেই - তার ব্যাপারে যতো প্রশংসার বুলি উচ্চারণ করি তাও কম হয়ে যায়। ভীষণ প্রিয় একজন লেখক তিনি আমার।

বইটা নিয়ে সারাজীবনই চমৎকার চমৎকার কথা শুনে এসেছি। আর নিজে পড়ার পর মনে হয়েছে আশার চেয়েও দশগুণ বেশি কিছু পেলাম।
Profile Image for Sukanya Naz Naz Islam.
19 reviews4 followers
May 26, 2021
এক নিশ্বাসে পড়া বলতে যা বোঝায় সেভাবেই পড়েছি সত্যি!

কি অপূর্ব লেখনী। বিভূতিভুষণের ভক্ত আমি আজকের না। বরাবরই উনার লেখনী বড্ড মায়াকারা, একদম মনের কাছের।

উপন্যাসের প্রতিটি শব্দ, বর্ণনা মুগ্ধ করে রেখেছে একদম!

মানুষ চাইলে কি না পারে, তারই জলজ্যান্ত উদাহরণ "আদর্শ হিন্দু হোটেল" বইটা!

আচ্ছা কেমন ছিলো ৩০/৪০ দশকের একটি ভাতের হোটেলের চিত্র? আদর্শ হিন্দু হোটেল কি তবে শুধুমাত্র একটি অতি সাধারণ ভাতের হোটেলেরই বর্ণনা মাত্র?

রোসো, বলছি!

দরিদ্র বামুন হাজারি দেবশর্মা, পেশায় রান্নার ঠাকুর। ভারতবর্ষে ব্রাহ্মণ রাধুনীকে ঠাকুর ডাকা হয়। এই হাজারি ঠাকুরকে নিয়েই পুরো কাহিনী আবর্তিত। ছোটবেলা থেকেই হাজারি ঠাকুরের রান্নার সুনাম তার গ্রাম এড়োশালা জুড়ে, কে নেই তার রান্নার প্রশংসা করেনি! সেই থেকেই রান্নার সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়, শুরু হয় নানা অভিজ্ঞতায় জ্ঞানের ভান্ডার সম্মৃদ্ধ করার। প্রায় ৪০ এর কোঠায় বয়স এসে পড়লে তার পুরোনো স্বপ্নটা মাথাচারা দিয়ে উঠতে থাকে, একটা ভাতের হোটেল খুলবার।

কিন্তু তা আর সহযে হয় কই? কারণ গরীবের প্রধান শত্রুই যে অর্থাভাব! তার উপর আরো আছে অবহেলা-অনাচার। মাস মাইনে এতোই অল্প যে তা দিয়ে নিজের পেট আর ছেলে পুলের পেটই ভরে না, আর হোটেল খুলবে! তারপরেও সে তার স্বপ্নটা মনে লালনপালন করতে থাকে।
উদার আর দয়ালু হাজারি ঠাকুরের চরিত্রটি পাঠকের মনে জায়গা করে নেবে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই কোনো!

বিভূতিভুষণ বন্দোপাধ্যায় এত অন্যতম সেরা কির্তী “আদর্শ হিন্দু হোটেল। বইটি প্রকাশ পেয়েছিলো ৪০ এর দশকে। তখন ব্রিটিশ আমল। তখনকার জীবনযাপন, জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রগুলো কেমন ছিলো তার আভাস পাওয়া যায় বইতে।

বিভূতিভূষণের লেখা আমার সবসময়ই মায়াকারা মনে হয়, এটাও তার ব্যাতিক্রম কিছু না, যেন একদম মনের কাছের কিছু একটা। আমরা অনেকেই জীবনে একটা কথা জেনেও জানিনা, মেনেও মানি না যে, “সকল কেই কর্মফল ভোগ করতে হয়, ভালো হোক বা মন্দ” । হাজারি ঠাকুর এবং তার সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি চরিত্রের ক্ষেত্রে এই নীতির প্রতিফলন সত্যিই মুগ্ধ করেছে। হাজারি ঠাকুর সারাজীবন কাওকে অশ্রদ্ধা করেননি, অধৈর্য্য হন নি। শত অপমান অপদস্থতা স্বত্তেও স্বীয় নীতিতে অটল ছিলেন এবং যার ফলে অনাত্মীয় মানুষের থেকেও তিনি পেয়েছেন শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সাহায্য। একই সঙ্গে নিজে হতদরিদ্র হওয়া স্বত্তেও অপরের অনাহারযাপন তাকে পীড়া দিতো। অপরদিকে লোক ঠকানো অসাধু চরিত্রগুলো তাদের কর্মফল ভোগ করেছিলো।

শুন্য থেকে শুরুর গল্পটাকে অনেকটা অনুপ্রেরণামূলক হিসেবেও গণ্য করা সম্ভব। সব মিলিয়ে পাঠককে সফর করতে হবে ৪০ এর দশকে, সবশেষে মিলবে এক ভিন্ন রকমের মিশ্র অনূভুতি।
Profile Image for Farhana.
325 reviews202 followers
February 13, 2021
"আমি মারের সাগর পাড়ি দেব বিষম ঝড়ের বায়ে ...
আমি অভয় মনে ছাড়ব তরী, এই শুধু মোর দায়"

আমি বহুদিন এই ভেবে বসেছিলাম যে এটা বোধহয় "পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি" অথবা "সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা" শীর্ষক গদ্গদ একটা কাহিনী হবে। মোটিভেশনাল বা উদ্যোক্তামূলক কাহিনীগুলোয় আমি খুবেকটা আগ্রহ পাই না। তাই মনে সন্দেহ নিয়ে দীর্ঘ সময় পরে বইটা পড়তে বসলাম।

নাহ, বিভূতি বরাবরই একজন শক্তিমান লেখক। বইটা শেষ করার পর আমার শুরুর আর শেষের চিন্তা বেশ বিপ্রতীপ। হাজারি চরিত্রের মধ্যে একটা স্বতঃস্ফূর্ত স্পিরিট আছে "to be and remain himself". He didn't let things influence the kind of person he has been always! And this is something very precious that he didn't allow the bad things to kill his goodness or faith!

আমি জানি না সত্যিকার জীবনে কতজন মানুষ তাদের root কে এরকম প্রভাবমুক্ত থাকতে পারে অথবা সবসময় পেরে উঠে কি না ! One thing I appreciate is that Hajari has been respectful to the affections he has rececived along the way. "না চাইতেই পাওয়া" জিনিসগুলোকে "চেয়ে পাওয়া" জিনিসের মতই মর্যাদা দিতে পেরেছে।

যাই হোক, সব মিলিয়ে বিভূতির হাতের গাঁথুনি তে বাঁধা নিখাদ একটা গল্প।
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
October 1, 2020
স্বপ্ন বাঁচায়; খুলে দেয় বদ্ধ পথের দ্বার। অথবা,যতক্ষণ আশ, ততক্ষণ শ্বাস।
যাই বলুন না কেন, ভালো কিছুর আশা আর বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই মানুষ বাঁচে। আপনি সৎ পথে চলুন, বড় স্বপ্ন দেখুন আর সে অনুযায়ী কাজ করুন।এতে উপরওয়ালা চাইলে স্বপ্নের বেশিও পেতে পারেন।

এই স্বপ্ন পূরণের দৃষ্টান্ত দরিদ্র হাজারি ঠাকুর। রানাঘাটের হোটেলে কাজ করে সে স্বপ্ন দেখেছিল একটি হোটেল খুলবে যার নাম হবে আদর্শ হিন্দু হোটেল।শত অপমান সহ্য করেও সে ভেঙে পড়েনি, অটল ছিল। এই কাঁটাময় পথের ধারে হাজারি ঠাকুর বিশালমনা মানুষের দেখাও পেয়েছিলেন যারা তার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রেখেছে। অবশেষে এই শান্ত মানুষটি মুখোমুখি হয়েছিল তার স্বপ্নের, ছুঁয়ে দেখেছিল তার স্বপ্নকে।

একটি তারা কেটে দিলাম। আসমুদ্র-হিমাচল যার মনের বিস্তার তার সাথে বিভূতিবাবু বড় অবিচার করেছেন। এই একটি তারা কেটে দিয়ে আমি যেন তার শোধ নিলাম! যদিও বাবুর কিছু আসবেও না যাবেও না, আমার আসে আর যায় ;)
Profile Image for Hamima Afroz Lopa.
30 reviews121 followers
January 20, 2015
বিভূতিভূষণের আগে যে উপন্যাসগুলো পড়েছি সেগুলো থেকে এটা একটু ব্যতিক্রম...আসলে তাঁর প্রতিটি বই-ই ব্যতিক্রম...একটির সাথে অন্যটির তেমন মিল নেই...পথের পাঁচালী, অপরাজিত, আরণ্যক, ইছামতী, দৃষ্টি প্রদীপ এইসব বই গুলোতে গ্রাম-গঞ্জের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার বাস্তব চিত্র সুনিপুণভাবে তিনি অঙ্কন করেছেন...এত দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও মানুষ প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখে চলে...যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেটা অধরাই থেকে যায়...সেটা পুরণ করা সবার ভাগ্যে হয়ে উঠে না...অনেক সৎ, কঠোর পরিশ্রমী এবং সৌভাগ্যবান হলেই সেটাই সম্ভব হয়...সেরকম সৌভাগ্যবান একজনের চিত্র লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন...পড়তে পড়তে ভাবছিলাম সেও হয়ত তার স্বপ্নকে বলী দিয়ে আজীবন দারিদ্য ও নির্মম বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করতে থাকবে...কিন্তু মানুষের ইচ্ছাশক্তি এবং নিজের উপর বিশ্বাস মানুষকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায়...
Profile Image for Maisha Samiha.
76 reviews73 followers
March 24, 2018

আদর্শ হিন্দু হোটেল- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভূতিভূষণ একজন জনপ্রিয় ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক। পথের পাঁচালি, আরণ্যক, অশনি-সংকেত এর মত তাঁর আরেকটি কালজয়ী সৃষ্টি আদর্শ হিন্দু হোটেল।
লেখক উপন্যাসের কাহিনী বুনেছেন হাজারি দেবশর্মাকে ঘিরে। ব্রিটিশ শাসনের পটভূমিতে রচিত গল্পটি। হাজারি একজন মধ্যবয়সী বাঙালি ব্রাহ্মণ। রাণাঘাট রেল বাজারে বেচু চকত্তির হিন্দু হোটেলের রসুই বামুন তিনি। প্রতিদিন দু'বেলা রান্না করে, বেচু চকত্তিকে পই পই হিসাব দিয়ে আর হোটেলের পদ্ম ঝি'র নিন্দে শুনেই হাজারি ঠাকুরের দিন কাটে। তারপরেও দুপুরের দিকটায় কিছু অবসর পান। তখন চলে যান চূর্ণি নদীর ঘাটে। নদীর ঘাটের ছোট্ট অবসরে তাঁর চোখে একটা স্বপ্ন উঁকি দেয়। এই রেল বাজারেই তাঁর নিজের একটা হোটেল থাকবে, নাম হবে 'আদর্শ হিন্দু হোটেল'। হোটেলের সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা থাকবে সেই নাম। তিনি নিজে খরিদ্দারদের রান্না করে খাওয়াবেন। কোন ফাঁকি বা জোচ্চুরি থাকবেনা তাঁদের সাথে, খাবার পর একটু পান সুপোরি আর জিরোনোর ব্যবস্থাও থাকবে তাঁর হোটেলে। এই স্বপ্নটাই তাঁর বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগায়। বইটার প্রতিটা লাইন পড়ছিলাম আর ভয়ে ভয়ে এগুচ্ছিলাম, হাজারির স্বপ্ন কি পূরণ হবে? কোন দুর্ঘটনা না ঘটে যায়! স্পয়লার অ্যালার্ট! লেখক শেষ পর্যন্ত পাঠকের মন ভাঙ্গেননি। হাজারি তাঁর নিজ গ্রামের কুসুম আর অতসীর দেয়া টাকায় সেই রেল বাজারেই শুরু করেন তাঁর নিজের ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’। আর তাঁর রান্নার সুনাম তো ছিল আগে থেকেই। কলকাতা থেকে বাবুরা আসতেন শুধু তাঁর হাতের মাংস-রান্না খাবার জন্য!
১৯৪০ সালে বইটির প্রথম প্রকাশ। পরবর্তীতে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। উপন্যাসটি পড়ে ভালো তো লাগবেই, তার সাথে আপনার কিছু অপ্রচলিত বাগধারাও রিভিশন হয়ে যাবে। খুব ছোট্টবেলায় স্কুলের পরীক্ষার জন্য মুখস্ত করা বাগধারা গুলো কি মনে আছে? এই উপন্যাস আপনাকে মনে করিয়ে দেবে সেগুলোর বেশ কয়েকটাই। চক্ষুদান করা, উনপাঁজুরে, ব্যাঙের আধুলি- এমনি খুব সুন্দর কিছু বাগধারার প্রয়োগ লেখকের লেখনীকে করেছে আরো ছন্দময়। বইটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো একটা বাক্যেরও বাহুল্য নেই কোথাও। যেখানে যেমনটি হওয়ার কথা ছিল সেখানে ঠিক তেমনটাই হয়েছে।
সরল ভালো মানুষ হাজারির ভাবনাগুলো, তাঁর জীবনদর্শন, তাঁর স্বপ্ন পাঠকের মন ছুঁয়ে যেতে বাধ্য। তার সাথে টেঁপি (হাজারির মেয়ে), কুসুম, অতসী, নরেন, এমনকি হিংসুটে পদ্ম ঝি কে নিয়েই একটা সুন্দর পরিণতি আমাকেও বাধ্য করল উপন্যাসটিকে ফুল মার্কস দিতে। :)


Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,860 followers
November 17, 2021
এই বইয়ের আবার রিভিউ লাগে নাকি?!
বাঙালির চিরন্তন স্বপ্ন ও সাধের কাহিনি এটি, যাতে মিশে আছে অনেক হাসি-কান্না, অনেক হিরে-পান্না।
এই উপন্যাস এখনও না পড়ে থাকলে দয়া করে ত্রুটি সংশোধন করতে তৎপর হোন।
Profile Image for HR Habibur Rahman.
284 reviews54 followers
June 25, 2025
বিভূতিভূষণকে যে পড়েনি বাঙালির, বাংলার অপুর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্য তার দেখা হয়নি। বাংলার মনোরম পরিবেশে তার ঘুরে আসা হয়নি। বাংলার গাছ, নদী, পাহাড়, পর্বত, বাংলার মানুষ, বাংলার মানুষের আতিথেয়তা, সুখ-শান্তি, দুঃখ-দুর্দ্দশা তার দেখা হয়নি। দেখা হয়নি অপরের চোখ দিয়ে, অপরের চরিত্র দিয়ে নিজেকে। গভীর সমুদ্রের উত্তালতার পূর্বে শান্ত-নির্বিরোধ অথৈজলের মতো, ভয়ঙ্কর অথচ বিশ্বাস রেখে নিরবধি জিবন চালিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া তার চিন্তাশীলতার মধ্যে প্রবেশ করানো হয়নি।

বিভূতিভূষণের লেখার মধ্যে একটা জাদু আছে, যে জাদু মানব জিবনের সুক্ষ্ম অথচ বিরক্তিকর অনুভূতি এবং আবেগ চোখের সামনে নগ্নভাবে তুলে ধরে যা আমরা গ্রহণ করতে এবং প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করি সাথে ভয়ও পাই। তিনি কেমন করে যেন মুখোশ উন্মোচন করে ফেলেন আমাদের অন্তরের সুক্ষ্ম বক্সের ভেতর বন্দি রাখা কুপ্রবৃ��্তি গুলোর তার, অতি সাধারণভাবে বয়ে চলা শান্ত শীতল কোমল নদীর মতো, লেখনীর মাধ্যমে।

অতিবুদ্ধিমান, অথচ শান্ত ভদ্র এক লেখক যিনি মনে হয় জিবনের কোনো বড় প্রশ্নকে কখোনো ভয় করেননি, গা ভাসিয়ে দেননি ব্যাখ্যা বিশ্লেষনে, যেন তিনি খুব সহজেই মেনে নিতে পারেন, "এ তো জিবনেরই অংশ, এমনই তো হয়, এটাকে বাড়িয়ে চড়িয়ে জিবন যাপনের কমলতা নষ্ট করে কোনো লাভ নেই।" যাননি কোনো গভীরতম দর্শনের পথে। তার এই গুণটিই সম্ভবত সবচেয়ে দর্শন নির্ভর। জিবনের কোনো সমস্যাকেই তিনি পরিবর্তনের আসায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে জোরালো ভাবে বিশ্লেষন করিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেননি। সব কিছু বর্ণনা করেছেন সহজ-সরল সাবলীল করে। কিন্তু এর মাঝেই অনায়াসেই বিচার বিশ্লেষন এমনি ভাবেই চলে এসেছে সকল পাঠকের মাঝে। তিনি না বহুবিবাহকে দোষারোপ করেছেন, না বাল্যবিহাবকে, না বিধবাবিবাহ প্রচলনের জোর চেষ্টা চালিয়েছেন তার লেখনীর মাধ্যমে। তিনি "ইছামতী" তে যেমন বহুবিবাহকে খুবই সারল্যের সাথে দেখিয়েছেন তেমনি "আদর্শ হিন্দু হোটেল" এ হিন্দু বিধবাদেরও দেখিয়েছেন সময়ের সাথে চলমান বিষয় হিসেবে। কিন্তু তফাৎ গড়েছেন সেই সারল্যতার মাঝেই। কোনো বিদ্রোহী লেখকের বিধ্বংসী কলমে বিধবাবিবাহ আইন পাশের লেখার যে জোর থাকত সেই সম-জোর বিভূতিভূষণের সরল লেখার মধ্যেও রেখে গেছেন। যে লেখনী ভাবিয়ে তোলে গল্পের উপরিতলের ভেতরে যেয়ে। যেখানে "অতসী" ও "কুসুম" দের জীবনচিত্র খুব সহজেই মনে করিয়ে দেয় কোনটা ঠিক আর কোনটা ঠিক না। হতে পারে বিভূতিভূষণ সমসাময়িক জীবন মেনে নিয়ে লিখে গেছেন আর আমরা বিভিন্ন মতামত আবিষ্কার করছি আবার এও হতে পারে এটা বিভূতিভূষণ বাবুর সুচারু বুদ্ধির খেলা; তিনি চেয়েছিলেন এমন করেই খুব সঙ্গোপনে জানিয়ে দিতে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় মানে ত্রুটিহীন, লালসাহীন ভালোবাসা, সুন্দর কমল সকালের সুর্যের মতো আবেগভরা এক জীবনের সন্ধানের উপাখ্যান,  দুঃখ কষ্টের মধ্যেও বেঁচে থাকার প্রচন্ড ইচ্ছা। যে ইচ্ছার মাঝে হার মেনে যায় "পদ্ম ঝি", "বেচু চক্কত্তি" আর "যদু বাড়ুয্যের" মতো মানুষের পাষান্ডতা। যে ইচ্ছার কাছে সকল বেদনা হার মেনে অপুর সংসারের মতো জিবন বয়ে চলে আপন গতিতে। বিভূতিভূষণ মানে বাহ্যিকভাবে লোভতুর সকালের শিশিরের রুপ, সন্ধায় কিচিরমিচির পাখির ডাক, বনে বনে মন জুড়ানো গন্ধের অলঙ্কার আঁকা ছাড়ায় সবকিছুর ছবি মনের মধ্যে এঁকে দেওয়া।

আজকে অনেকদিন পর আবার দেখা করার সুযোগ হয়েছিলো বিভূতিভূষণ বাবুর সাথে। পড়ছিলাম "আদর্শ হিন্দু হোটেল"। ভেবে দেখলাম এই বইয়ের আবার রিভিউ এর কী দরকার! একটু স্মৃতিচারণ হয়ে যাক, একটু বিভূতিভূষণের সারল্যের মধ্যে ডুব দেওয়া যাক।
Profile Image for Rahat Rubayet.
109 reviews8 followers
January 14, 2021
বইখানার শুরুতে এতবেশি মেজাজ খারাপ লাগিতেছিল যে বার কয়েক মনে হইল আর পড়িব না। মেজাজ খারাপ হইবার মূল কারণ পদ্মঝি।
এ জাতীয় দুই একজন মানুষের সাথে পরিচয় থাকার দরূন মেজাজ টা বেশিই খারাপ হইতেছিল। তবে সেই মেজাজ খারাপ বোধটা সাময়িক।
হাজারীর হার না মানার যে মানসিকতা তা আমাকে বারবারই মুগ্ধ করিয়াছে। যদিও কিছুকিছু ক্ষেত্রে পদ্মঝির প্রতি তাহার আচরণে ক্ষুব্ধও হইয়াছি, তবে সময় গড়াইতে হাজারীর প্রসার পাইবার বর্ননায় তা কিছুমাত্রায় ভুলিয়াও গিয়াছি।
কুসুম, অতসী, সুবাসিনী বা বাকি সবার আন্তরিকতার কাছে পদ্মঝির কুটিলতা ম্লান হইয়া গিয়াছে।
বইখানা আবার পড়িব, ভাল বইয়ের শেষটায় এত সুন্দর উপসংহার দিয়া এইভাবে দাগ কাটিতে কম দেখিয়াছি।
নাকি আমার কাছেই শুধু এত ভাল লাগিয়াছে। আরণ্যক পড়িবার পর অনেকেই বাকি বইগুলি পড়িতে বলিয়াছিলেন।
তাহাদের কথা মানিয়া যে ভুল কিছু করি নাই, আদর্শ হিন্দু হোটেল পড়িয়া তাহা পরিষ্কার বুঝিতে পারিয়াছি।
শুরুটাতে ঠিক যতটা অসহনীয় বোধ হইতেছিল হাজারীর দুরাবস্থা দেখিয়া, শেষটায় ঠিক ততটাই তৃপ্তি পাইয়াছি। এর চাইতে বুঝি বেশি কিছু বলিবার হেতু নাই।
তা এরপর কি পথের পাঁচালী, না ইছামতি কোনটা পড়িব?
Profile Image for Jishnu Banerjee.
31 reviews11 followers
May 20, 2019
রাণাঘাট রেল স্টেশনের কিছু সাদাসিধে ভাতের হোটেল এবং সেই হোটেলগুলোকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে গল্প। লেখনীতে উঠে এসেছে এমন এক সমাজের মানুষের জীবনযাত্রা, যে জীবনের কথা আমাদের অজানা থেকে যায় সচরাচর। ১০০ বছর আগেকার ব্রিটিশ ভারতের একটা চিত্রও পাঠকের মনে ফুটে উঠবে তাঁর অজান্তেই। পড়তে শুরু করলে সময় কোথা থেকে কেটে যাবে টের পাওয়া যাবে না। এমন একটা গল্প যেটার রিভিউ মানেই স্পয়লার। কাজেই ইচ্ছে থাকলেও খুব বেশি লেখা যাচ্ছে না।
Profile Image for Rawnak Sarker.
8 reviews2 followers
January 25, 2019
This book is one of the main reasons why writer Bibhutibhushan Bandyopadhyay is my favorite writer in Bengali literature. Plot is situated way before our time yet concept is so modern in his writing that I get inspired every time I read it. This book perfectly captures the essence of entrepreneurial spirit of protagonist and struggle behind to achieve it.
Profile Image for Ayesha.
117 reviews36 followers
November 7, 2022
বিভূতিভূষণের লেখা বরাবর সবসময় ই ভাল লাগে। এবারো কোনো ব্যতিক্রম হয় নি। ভাল ছিল। :)
Profile Image for Saumen.
256 reviews
February 19, 2023
যতবার মনে হবে, ভেঙে যাচ্ছি, ততবার এই বইটা আমাদের তুলে ধরবে।
Profile Image for Muhammad Kamruzzaman.
33 reviews9 followers
June 16, 2017
৫০/৭৫ বছর আগে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য সম্ভবত মানুষ এই বইটি পড়ত। সাধারণ হোটেল পাচক হাজারির অসাধারণ ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার গল্প, স্বপ্ন সত্যি করার গল্প। এক বসায় শেষ করার মত বই।
Profile Image for Susmita Sarker (বাচ্চা ভূত).
193 reviews11 followers
November 18, 2022
এতো চমৎকার একটি বই! মিষ্টি, স্নিগ্ধ! যা-ই বলি কম হয়ে যায়: বিভূতিভূষণ সবসময় শ্রেষ্ঠ! আদর্শ হিন্দু হোটেলের জবাব নাই: বইটা পড়ে কেঁদেছি:
Profile Image for অন্বয় আকিব.
Author 1 book135 followers
March 11, 2023
"এই দিকে আসুন বাবু, গরম ভাত তৈরি, মাছের ঝোল, ডাল; তরকারি, ভাত-হিন্দু-হোটেল বাবু-"

আমরা বাঙালি। বিদেশী খাবার কালেভদ্রে শখ করে খেলেও বাঙালি খাবারের মত শান্তি অন্য কোনো খাবারে পাওয়া যায় না। বেশি দামি খাবারের চেয়ে কম দামী খাবারেই আমাদের উদর পূর্তি শান্তিময় হয়। ১০০ জন বাঙালিকে প্রশ্ন করে দেখুন, একটানা ১০০ বেলা বিদেশী দামী খাবার খেতে বললে ৯০ জনই রাজি হবে না। কিন্তু আলু ভর্তা, ঘি, গরম ভাত, ডাল, ইলিশ মাছের ঝোল, মুরগী অথবা গরু/খাসী কষা খাওয়ার সুযোগ দেবেন, দেখবেন বত্রিশ পাটি দাঁত বের হয়ে যাবে খুশীতে।

যাকগে, এসেছিলাম আদর্শ হিন্দু হোটেল বইয়ে�� রিভিউ দিতে। কেন অহেতুক বকবক করছি? জ্বী, আজ্ঞে আদর্শ হিন্দু হোটেলের রিভিউ, খাবার নিয়ে কচকচানি তো থাকবেই। তাই নয় কি? ইংরেজিতে যাকে বলে ইরেভেল্যান্ট, বাংলায় অপ্রাসঙ্গিক মনে হলে মার্ক না হয় দুটো কেটে রাখবেন, কিন্তু মনের ভাব আমার প্রকাশ করতেই হবে।

গল্প সংক্ষেপঃ

হাজারি দেবশর্মা। দুর্দান্ত রাধুনী। মধ্যবয়সী এই ব্রাহ্মণ ভদ্রলোক অল্প মাইনের বিনিময়ে বেচু চক্কত্তির হোটেলে রাধুনীর কাজ করেন। তার রান্নার হাতের সুনার রাণাঘাট ছাড়িয়ে দূর দুরান্তে ছড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু তবুও বেচু চক্কত্তি তাকে প্রাপ্য মাইনে বা প্রাপ্য সম্মান কোনোটাই দেন না। তার মনের গোপন খায়েশ হলো এই রেলবাজারেই তার নিজের একটা হোটেল হবে। যার নাম হবে আদর্শ হিন্দু হোটেল। তার স্বপ্ন কি কখনো পূরণ হবে? হাজারি ঠাকুরসহ অন্যান্য কর্মচারীদের জীবন ওষ্ঠাগত করে দেয়ার জন্য হোটেলে রয়েছে আরেক কর্মচারী পদ্মঝি৷ পদ্মঝি যেন বাংলা সিনেমার কুচুটে বুড়ির বাস্তব সংস্করণ। তিনি নিজে কাজে হরদম ফাঁকি দেন, সুযোগ মত হাতটানেরও স্বভাব রয়েছে, কিন্তু বেচু চক্কত্তির পছন্দের মানুষ হওয়ায় তিনি সবার মাথার উপরে ছড়ি ঘোরান। কেউ কোন প্রতিবাদ করতে দেরী, পদ্মঝির মুখ ছুটতে দেরী নেই। এ জন্য সবাই পদ্মঝির থেকে যতটা পারে দূরে থাকার চেষ্টা করে৷ কিন্তু একই হোটেলে কাজ করে কতটাই বা এড়িয়ে থাকা যায়? হাজারি ঠাকুরের মনের ইচ্ছে কি কখনো পূরণ হবে? নাকি শেষ জীবন পর্যন্ত পদ্মঝির মুখের ঝামটা খেতে খেতে বেচু চক্কত্তির গোলামি করতে হবে?

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ

আদর্শ হিন্দু হোটেল। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি। আপনারা কেউ ইরফান খান, নাওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী, নিম্রিতা কউর অভিনীত দ্য লাঞ্চবক্স মুভি দেখেছেন?একেবারে খাসা একখানা মুভি। আমার যখন ক্ষুধা লাগে না কিন্তু খেতে হবে তখন দ্য লাঞ্চবক্স মুভি দেখতে বসি। নিম্রিতা কউরের রান্না এবং ইরফান খানের তারিয়ে তারিয়ে খাওয়া দেখলে পেট অটোম্যাটিক্যালি চো চো করা শুরু করে। অবশ্য শুধু ভালো মন্দ খাওয়া দেখানোই এই মুভির উদ্দেশ্য নয়। প্রচুর শিক্ষণীয় মেসেজ রয়েছে, রয়েছে শান্তিময় মনোহর ডায়ালগের আদান প্রদান। হাজার বার দেখলে হাজার বারই মন ছুয়ে যাবে। বিভূতি বাবুর আদর্শ হিন্দু হোটেলও ঠিক তেমনই সৃষ্টি। বিভূতি বাবু কোথা থেকে এত শান্তিময় ভঙ্গিতে লেখা শিখেছেন জানা নেই, কিন্তু আরণ্যকের পর আদর্শ হিন্দু হোটেল পড়ে আমার আবারও অবাক হতে হয়েছে।

প্রথমেই বলতে হবে গল্পের কথা। সুন্দর, ছিমছাম, শান্তি উদ্রেককারী গল্প। খুবই সাধারণ একটা প্লট, কিন্তু এত অসাধারণভাবে উপস্থাপন করা বিভূতিবাবুর পক্ষেই সম্ভব। অল্পকিছু চরিত্র, সাধারণ একটা হোটেল, মনের ইচ্ছে মেটানোর তীব্র খায়েশের মিশেলে কতটা অসাধারণ গল্প তৈরি হতে পারে, আদর্শ হিন্দু হোটেল তার বাস্তব উদাহরণ। বইয়ের প্রথম পাতা থেকে যে আকর্ষণ আপনি অনুভব করবেন, বইয়ের শেষ পাতা পর্যন্ত সেটা থাকবে। কখনো বইয়ের চরিত্রগুলোর সঙ্গে খুশীর জগতে হারাবেন, কখনো দুঃখে, কখনো ক্ষুধা অনুভব করবেন, কখনো প্রচন্ড রাগও লাগতে পারে, কখনো অবাক হয়ে ভাববেন বিভূতিবাবু গল্পে এত মিষ্টি চরিত্র কিভাবে কল্পনা করতে পারলেন? বেচু চক্কতির হোটেল থেকে শুরু হবে যে অভিযান, তা শেষ হোক সেটা আপনি নিজেই চাইবেন না। কারণ গল্প শেষ হয়ে গেলে তো আপনার আনন্দের উৎস ফুরিয়ে যাবে। চমৎকার ভাষাশৈলী, সহজ সাধারণ গল্প, আকর্ষণীয় বর্ণনার জন্য আদর্শ হিন্দু হোটেল কখনোই বিরক্তির উদ্রেক করবে না। এত সহজ সাধারণ প্লটে এত অসাধারণ গল্প সৃষ্টি করার জন্যেই বিভূতি বাবুর একরাশ সাধুবাদ প্রাপ্য।

বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের বই গুলোর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক যতসম্ভব বইয়ের চরিত্রায়ন।
তার প্রত্যেকটা বইয়েরই কিছু চরিত্র আপনার মনে দাগ কেটে যাবেই। প্রথমেই বলতে হয় হাজারি ঠাকুরের কথা। বই শুরু হওয়ার দুই চার পৃষ্টা এগোনোর পরেই পাঠক নিজের অজান্তেই হাজারি ঠাকুরের সুখে দুঃখে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে শুরু করবে। সাত টাকা মাসিক মাইনে যার, দীর্ঘদিন চাকরি করার পরেও বেতন বাড়েনি, হাজারো অপমান, লাঞ্চনা মুখ ঝামটা সহ্য করেও যিনি নির্বিবাদে কাজ করে গিয়েছেন, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিমকহারামি করেননি, তবুও প্রাপ্য সম্মানটুকুও পাননি হোটেল মালিকের থেকে। কিন্তু সম্মানী মানুষের সম্মান ঠিকই আদায় হয় কোথাও না কোথাও থেকে। হাজারি ঠাকুরের প্রশংসায় দূর দূরান্তের খদ্দেরও পঞ্চমুখ ছিল। তবুও মিথ্যা অভিযোগের বশবর্তী হয়ে চাকুরী খুইয়েছেন, হারিয়েছেন আশ্রয়স্থল। যাত্রাপথে পেয়েছেন বেশ কিছু দেব দেবীতূল্য মানুষের সান্নিধ্যে, যারা যেভাবে পেরেছে তার স্বপ্ন পূরণ করার পথে সাহায্য করেছে। এত দুর্দান্ত চরিত্রায়নের ফলেই গল্পের গভীরে প্রবেশ করার সময় মনে হবে আপনি নিজেই বইয়ের চরিত্র হয়ে সমস্ত ঘটনা অবলোকন করছেন।

পরবর্তী চরিত্রে নাম নিলে অবশ্যই পদ্মঝির নাম নিতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই দুই চারজন মানুষ থাকে যারা বিনাকারণে অন্যের হাড় মাংস জ্বালিয়ে খেতে ওস্তাদ। নিজের সুবিধার জন্য অন্য যে কাউকে কোরবানি দিয়ে দিতে পারে। নিজের উপকারের জন্য অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের কিচ্ছু যায় আসে না। তারা একইসঙ্গে ক্ষমতাশালীদের মন যুগিয়ে চলার ক্ষেত্রে শতভাগ পারঙ্গম। ক্ষমতাশালীদের আশ্রয়ে থেকে তাদের খুশী করার নিমিত্তে দুর্বলের উপরে অত্যাচার করতে তারা বড়ই উদগ্রীব থাকে। পদ্মঝি ঠিক তেমনি একজন মানুষ। বই পড়বেন কিন্তু পড়তে পড়তে তাকে গরম তেলে ভাজতে মন চাবে না, উহু তা হতেই পারে না। গরীব মানুষকে সাহায্য করার মত মানুষ কম হয়। সাধারণত মানুষ গরীবের কষ্ট দেখতেই ভালোবাসে। এখানেও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু জগতে কিছু ভালোমানুষ যে থাকে না তা তো নয়। ঠিক তেমনি দুটো চরিত্র কুসুম এবং অতসী। নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে তারা হাজারি ঠাকুরের স্বপ্ন পূরন করতে চেয়েছে। ভাবেনি নিজেদের স্বার্থের কথা। সহজ সরল দুটো চরিত্র আপনার মনে দাগ কেটে যাবে নিশ্চিতভাবেই। বেচু চক্কত্তি, হোটেলের মালিক, তিনি চোখ থাকিতেও অন্ধ লোক। অপছন্দের চরিত্রে পরিণত হতে খুব দেরী হবে না। এছাড়াও চমৎকার ছোটবড় সব চরিত্র বইটিকে করেছে অনন্যসাধারণ।

বিভূতি বাবুর বই পড়ার বিপদ হচ্ছে আপনি তার বই নিয়ে বর্ণনা করার পূর্বে মনের গহীনে একগাদা কথা জমিয়ে ফেলবেন। কিন্তু যখনই লিখতে বা বলতে যাবেন, দেখবেন ভালো লাগা প্রকাশ করার মত সঠিক ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না। আমার ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। আদর্শ হিন্দু হোটেল বইয়ের প্রকাশকাল ১৯৪০ সালে। ইংরেজ শাসনামলের পটভূমিতেই এই গল্প রচিত। যদিও বইয়ে ইংরেজদের নিয়ে অহেতুক কচকচানী নেই। বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রকাশনী এই বই বের করেছে। আমি সূর্যোদয় প্রকাশনীর বই কিনেছি। চমৎকার প্রডাকশন, বানান ভুল তেমন একটা পাইনি।

যারা বাংলা ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই বইটি এখনো পড়েননি তাদের অনুরোধ থাকবে দ্রুত বইটি পড়ে ফেলার জন্য। বই পড়তে পড়তে হারিয়ে যান হাজারি ঠাকুরের রান্নায়। হয়ত হাজারি ঠাকুরের রান্নার স্বাদ নেয়ার উদ্দেশ্য আপনিও আদর্শ হিন্দু হোটেলের অনুসন্ধানে রাণাঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। কে জানে?!

বইঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল
লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
প্রকাশনীঃ সূর্যোদয়
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫০ টাকা
Displaying 1 - 30 of 746 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.