'কেয়াপাতার নৌকো'র পরবর্তী পর্ব 'শতধারায় বয়ে যায়'। এই পর্বে বিনু পরিপূর্ণ যুবক। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে ছিন্নভিন্ন। সে আর বিনু নয়-বিনয়। জনারণ্যে সে খুঁজে বেড়াচ্ছে ঝিনুককে। সীমান্তের ওপার থেকে উদ্বাস্তুরা আসছে অবিরল ধারায়, এই বিরাট মানবগোষ্ঠী প্রায় ধ্বংশের মুখোমুখি। পশ্চিমবঙ্গের স্বল্প পরিসরে তাদের ঠাঁই হওয়া অসম্ভব। তাই তাদের পাঠানো হচ্ছে আন্দামানে। এই সর্বস্ব-হারানো মানুষগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বিনয়ও। ঝিনুককে অন্বেষণ তো আছেই, তার পাশাপাশি শরণার্থীদের সঙ্গে সে আন্দামানে চলে যায়। দেশভাগের পরবর্তী সময়ে বাংলাইয় যে মহাতমসা নেমে এসেছিল 'শতধারায় বয়ে যায়' সেই ক্রান্তিকালের অনন্য আখ্যান, সেই সঙ্গে জীবন্ত ইতিহাসও।
Prafulla Roy was a Bengali author, lived in West Bengal, India. He received Bankim Puraskar and Sahitya Akademi Award for his literary contribution in Bengali.
প্রফুল্ল রায়ের দেশ ভাগ ট্রিলজির ১ম বই কেয়াপাতার নৌকো -তে পূর্ব বাংলার মায়াময় অপরূপ প্রকৃতির, সহজ-সরল মানুষজনের কথা ছিল। বইয়ের শেষে গিয়ে দেশভাগ ঘটে এরপর শুরু হয় মানুষের দুর্দশা। উদ্বাস্তুদের সেই সীমাহীন কষ্টের কথাই উঠে এসেছে এই ২য় খন্ডে। পূর্ব বাংলার বিনু কলকাতায় গিয়ে হয়ে উঠে সাংবাদিক তারই সাথে সাথে পাঠকও ঘুরে বেড়ায় উদ্বাস্তুদের কলোনিগুলোতে। দেখে মানুষের মানবেতর বেঁচে থাকা। তারই মাঝে কোথাও কোথাও একটু আধটু করে জ্বলে উঠে আশার আলো।
❝কেয়াপাতার নৌকো❞ এর আশেপাশেও যেতে পারেনি সিকুয়েলটি। ধীরগতির গল্প, আগের পর্বের কথা বারবার আসা- সব মিলিয়ে পাঁচে সাড়ে তিন দেয়া যায়। কাহিনি শেষ করার জন্য পরের পর্ব খুঁজে দেখতে হবে।
বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কেন যে করেছেন লেখক জানি না। পত্রিকায় প্রকাশ বলেই কিনা কে জানে! সেক্ষেত্রে সম্পাদনার ক্ষেত্রে একটু যত্নবান হওয়া বোধহয় উচিত ছিল। একই ঘটনার বারবার প্রকাশ পাঠকের যথেষ্ট বিরক্তির উদ্রেক যেমন করে, তেমনি মনোযোগও ব্যাহত হয়। যাই হোক, শরণার্থী সমস্যা নিয়ে লেখা উপন্যাসটি ইতিহাসের দলিল হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নানা শরণার্থী আবাসের অবস্থা খুব ডিটেইলসই লেখক তুলে এনেছেন। উপন্যাসের নায়ক হলেও বিনয় চরিত্রটিতে এত দোদুল্যমানতা, এত দ্বিধা থাকায় এটি রক্তমাংসের একটি চরিত্র হিসেবে পাঠকপ্রিয়তা পেলেও কোন রোমান্টিক ঔপন্যাসিক চরিত্র হিসেবে জনপ্রিয় হয় নি সম্ভবত। ঝুমা-ঝিনুক-বিনয় এই ত্রয়ীর রোমান্টিক টানাপোড়েন উপন্যাসটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। মূলত এই সমস্যাটার সমাধান লক্ষ্যেই উপন্যাস এগিয়ে যেতে থাকে। পাশাপাশি আসতে থাকে সমসাময়িক বাস্তব সব ঘটনা। সব মিলিয়ে কেয়াপাতার নৌকো এর মতো এত ভালো না লাগলেও মন্দ না।
বেশ আশা নিয়ে বইটি পড়া শুরু করেছিলাম, আশাহত হয়েছি বলা যায় না, তবে পুরোপুরি প্রত্যাশা মিলেছে এমনও বলা যায় না। দেশভাগ বরাবরই আমার পছন্দের বিষয়, এই বিষয়ক উপন্যাস পেলেই পড়ি। বিশেষ করে এই বইটি উদ্বাস্তু সমস্যাকেই আলাদা করে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে বলে বেশ আগ্রহী হয়েছিলাম। অনেক ক্ষেত্রেই বইটি প্রত্যাশা পূরণ করে, কিন্তু কিছু ছোটোখাটো বিষয়ের জন্য বইটি যত ভালো লাগবে বলে ভেবেছিলাম তত ভালো লাগেনি। এরমধ্যে প্রথম যে বিষয়টি খাপছাড়া লেগেছে সেটি হলো প্রোটাগনিস্টকে রক্ত-মাংসের মানুষের চেয়েও উর্ধ্বে তুলে ধরার প্রবণতা, যদিও এই প্রবণতা একেবারে নতুন নয় এই উপমহাদেশে। প্রোটাগনিস্ট মানেই সে মানবিক দুর্বলতার বেশ উর্ধ্বে থাকবে, নিজের প্রয়োজনকে কখনোই প্রাধান্য না দিয়ে বরাবর ছুটে যাবে গণমানুষের সেবায়। এই ব্যাপারটা যে ক্রমাগত ক্লিশে হয়ে উঠছে, সেটা হয়ত সাম্প্রতিক কালেই। যখন এই বই লেখা হয় তখন হয়ত এমনটাই স্বাভাবিক ছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষ যেখানে উদ্বাস্তু হয়ে দেশভাগের পর ঠিকানা পালটে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল সম্পূর্ণ নতুন একটি বিশাল ভূখন্ডে, সেখানে হাজার হাজার মানুষের যেকোনো কলোনি থেকে শুরু করে একটি মাত্র পতিতালয়ে পর্যন্ত প্রোটাগনিস্ট তার পরিচিতজন খুঁজে পাবেন, এমন বয়ান হয়ত স্বাভাবিক মনে হতো তখন। বিষয়টা বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে যখন দেখা গেল সে আপনজন খুঁজে পেয়েছে আন্দামানে পুনর্বাসিত হওয়া মাত্র একশ পরিবারের মধ্যেও।
আরেকটা যে বিষয় একেবারে দৃষ্টিকটু লেগেছে, সেটা হলো পূর্ববঙ্গের মানুষ, বিশেষ করে যুগলের প্রায় সব বক্তব্যের মধ্যেই অপ্রমিত শব্দগুলোর পাশে ব্র্যাকেট দিয়ে প্রমিত শব্দটি লিখে দেয়া। অথচ একজন অন্য প্রদেশের রাঁধুনি, যার কিনা ভাষাটাকে আর যাই হোক বাংলা বলা চলে না, তার কথায় কোনো ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন মনে হয়নি। এতেই ভালোভাবে প্রকট হয়ে ওঠে তখনকার দিনে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত সমাজে পূর্ববঙ্গের বাংলা ভাষার গ্রহণযোগ্যতা কতখানি ছিল। এখনকার দিনেও এই ভাষাগত কুলীন আচরণ সবাই ছাড়েননি, তবে এর গোড়াটা যে বহু আগেই স্থাপিত হয়েছিল, সে আঁচ পাওয়া যায় এই বই থেকেই। এইসব বিষয়ের জন্যই দুই তারা কেটে রাখা। বাদবাকি বেশ ভালোই বলা চলে।
কেয়াপাতার নৌকো ছিলো এই সিরিজের ফার্স্ট বই,এটা সেকেন্ড।
কেয়াপাতার নৌকোর বেশীরভাগ অংশই ছিলো দেশভাগ পূর্ববর্তী ইংরেজ শাসনামলের সময় রাজদিয়া নামক একখানি গ্রামকে নিয়ে। বিনু,ঝিনুক,ঝুমাকে নিয়ে। শেষের দিকে দেখা গেছে দেশভাগ হবার পর মুসলিম জাহান পাকিস্তানের বুকে কোনো মুসলমানরা হিন্দুদের থাকতে দিতে রাজি না। কাজেই বিনু ঝিনকুকে সাথে নিয়ে পাড়ি জমায় পশ্চিমবাংলায়।
এই অংশের কাহিনী এগিয়েছে শয়ে শয়ে শরনার্থীর এপারে চলে আসা নিয়ে,এপারের মুসলমানদের ওপারে চলে যাওয়া নিয়ে। এগিয়েছে শরনার্থীদের জবরদখল কলোনি,মুসলিমদের ফেলে যাওয়া বাড়িঘরের সাথে হিন্দুদের ফেলে আসা বাড়িঘর এক্সচেঞ্জ এসব নিয়ে। বিনু বা বিনয় এখানে একজন সাংবাদিকের ভূমিকায় আছে তাই তার প্রধান কাজ এসব খবর সংগ্রহ করে পত্রিকায় আর্টিকেল লেখা।
কেয়াপাতার নৌকোতেও লক্ষ্য করেছি কিন্তু খারাপ লাগেনি যেটা এই পার্টে অতিরিক্ত মনে হয়েছে সেটা হচ্ছে লেখকের রিপিটেশন স্বভাব। প্রতিটা ঘটনা যা আগে ঘটে গেছে রিপিট করবার প্রয়োজন নাই তাও লেখক একেক পাতা জুড়ে আবার বলে গেছেন। যেটা রীতিমতো বিরক্তিকর।
এছাড়া এই ট্রিলজিটা পড়বার মতো। অন্তত প্রথম দুইটা অনেক তথ্যসমৃদ্ধ সুন্দর। তৃতীয়টা এখনো পড়া বাকি আমার।
এই পার্টে শরনার্থী সমস্যাটা বিনয়ের চোখ দিয়ে খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। বেশ ভালো লেগেছে। যদি জানার কথা বলি অনেককিছু জেনেছি।
এইটা কিছু হলো? ঝিনুকের অন্তর্ধানের মাধ্যমে 'কেয়াপাতার নৌকা' শেষ করার পর পরবর্তী ইতিহাস জানার জন্য এই 'শতধারায় বয়ে যায়' হাতে নিই। পুরো উপন্যাস একদিনে শেষ দিয়েছি শুধু এইটা জানার জন্যই যে ঝিনুকের কি হয়। তা সমগ্র উপন্যাস জুড়ে ভারতবর্ষে দেশ ভাগের পরের অবস্থার কথায় বর্ণনা করা আছে। যদিও হিসেবে সেটাই স্বাভাবিক। কারন প্রফুল্ল রায় 'কেয়াপাতার নৌকা' লেখা শুরুই করেছিল দেশ ভাগের ইতিহাস কে হাইলাইট করার জন্য আর 'শতধারায় বয়ে যায়' সেই 'কেয়াপাতার নৌকা'র ই সিক্যুয়েল। সেই হিসবে দেশভাগের পরের চিত্র উপন্যাসে থাকবে এইটাই স্বাভাবিক। যাইহোক, একজন পাঠক হিসেবে এই সিক্যুয়েল থেকে কিছু এক্সপেক্টেশন ছিলো যা সম্পূর্ণ হয়নি কিংবা বলা ভাল পুরোপুরি হয়নি। সম্পূর্ণ করার জন্য আবার আরেক উপন্য���স পড়তে হবে।
“কেয়া পাতার নৌকো” যেখানে শেষ, একদম সেখান থেকেই শতধারায় বয়ে যায় শুরু হয়। এই পুরো উপন্যাসই মূলত বিনয়ের নিজেকে আবিষ্কারের তার টানপোড়নের গল্প। উপন্যাসের বড় অংশ জুড়ে আছে পূর্ব বাংলা থেকে শেকড় উপড়ে আসা অভিবাসীদের সংগ্রাম, দূর্ভোগের কথা।
যদিও এই উপন্যাস পড়ে নয়, এর পরের পর্ব পড়ে মনে হয়েছে ঝিনুককে লেখক শুধুমাত্র বেইট হিসেবে ব্যবহার করেছেন আরকী পাঠককে ধরে রাখতে। তাই উপন্যাসে সরাসরি না থাকলেও ঝিনুকের প্রভাব আছে ভালোই। অনেক রিপিটেশন আছে উপন্যাসে, যা পাঠকের মনে বিরক্তি উৎপাদনে বাধ্য।
দেশবিভাগের কারনে বাঙালির সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে যে মহা অন্ধকার নেমে আসে, এমনটা আর কখনও দেখা যায় নি। এই বিপর্যয়ের জের কাটতে লেগেছে কয়েক যুগ।
বঙ্গ-বিভাজন শতসহস্র মানুষকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু নানা প্রতিকুলতার মাঝেও কিছু মানুষ পরাজয় মানেনি। ভেঙ্গেপড়া কিছু মানুষ আবার মাথাতুলে দাড়িয়েছে অনেক লড়াই করে। বিনাশের পাশাপাশি চলেছে সৃষ্টি। সেই বিধ্বস্ত জীবনের নানা কাহিনী লেখক তুলে এনেছেন "শতধারায় বয়ে যায়" উপন্যাসে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় কলকাতা বই মেলা ২০০৮সালে।
" উত্তাল সময়ের ইতিকথা" বইটির প্রথম অংশ "শারদীয় বর্তমান " এবং চতুর্থ অংশটি বেরিয়েছে "সংবাদ প্রতিদিন" -এর পুজো সংখ্যায়। শেষ অংশটি কোনও পত্রিকায় বেরোয় নি।
২০১৪ সালের বইমেলাতে "উত্তাল সময়ের ইতিকথা " বইটি প্রথম প্রকাশ পায়।
দেশ ভাগ নিয়ে আরও দুইটি বই লেখার ইচ্ছা কথা এই বইয়ের ভূমিকাতে লেখক জানিয়েছেন।
"কেয়াপাতার নৌকো'র" বিনু, যে পূর্ব বাংলা থেকে ধর্ষিত, অপ্রকৃতিস্থ ঝিনুককে নিয়ে চরম আতঙ্কের মাঝে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর সঙ্গে চলে আসে কলকাতায়। সেখানে বিনুর বাবার কথায় কষ্ট পেয়ে হারিয়ে যায় ঝিনুক।
এর পর " শতধারায় বয়ে যায়" উপন্যাসে বিনু পুরো কলকাত শহর জুড়ে খুজেও পায় না ঝিনুককে । তা ছাড়া বেঁচে থাকার প্রয়োজনে সংবাদ পত্রে রিপোর্টারের চাকরি নেয়, এতে করে ঝিনুকে খুজতে সুবিধা হয় কিন্তু পুরো উপন্যাস জুড়ে দেখা যায় শত চেষ্টা এবং প্রবল ইচ্ছা থাকার পরও বিনু খুজে পায় না ঝিনুককে।
তবে ভারত সরকার শরনার্থীদের পশ্চিম বাংলাতে বাসস্থানের জাগয়া দিতে না পারায় অনেক পরিবারকে আন্দামানে পাঠিয়ে দেয়। এই সব পরিবারের সাথে বিনু রিপোর্টার হিসেবে যায়।
তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েই চলে। বিরোধী দলের লোকেরা চায় না শরনার্থীরা আন্দামানে যাক। সরকারকে চাপ দিতে থাকে পশ্চিমবঙ্গে এদের বসবাসের জায়গা দিতে হবে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ শরনার্থীদের পশ্চিমবঙ্গে জায়গা দেওয়া সম্ভন নয়। আন্দামানের বিভিন্ন জায়গায় চলছে শরনার্থীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া।
শরনার্থীদের নিয়ে কলকাতা থেকে আসা জাহাজ 'রস' আইল্যান্ডে নেমে সেখান থেকে পাঁচশো পরিবার যাবে দক্ষিন আন্দামানে আর বাকি পাঁচশো যাবো মধ্য আন্দামানে, "রস" আর পোর্টব্লেয়ার থেকে সত্তর মাইল দূরে, আঁকা বাঁকা পাহাড়ী রাস্তা দিয়ে ভিতরে।
কিন্তু মোট এক হাজার পরিবার পূরন না হওয়ায় সেখানে বিবাহো যোগ্য যে সব ছেলে মেয়ে ছিলো, যাদের কোন পরিবার নাই তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এই নতুন বিয়ে হওয়া মেয়ের মাঝে বিনু ঝিনুককে দেখতে পায় খিদিরপুরে বাইশ নম্বর ডকে।
তবে ঝিনুক ইন্টার -আইল্যান্ড শিপ সারভিসের "চলুঙ্গা" জাহাজে পাঁচশো উদ্বাস্তুর সাথে মিডল আন্দামানে চলে যায়।
বিনয়ের বাকি পাঁচশো উদ্বাস্তুর সাথে চলে আসে জেফ্রি পয়েন্টে। এই জঙ্গলের বড় গাছ কেটে সরকার পরিবার প্রতি ৫ একর করে জমি দিবে এবং যতদিন ফসল না উঠবে সরকার থেকে খেতে, থাকতে দেওয়া হবে। মসোহারা হিসেবে টাকাও দেওয়া হবে।
তবে এই জেফ্রি পয়েন্টে তিন দিকে পাহাড় আর ঘন জঙ্গল। জঙ্গলে আছে হিংস্রো আদিবাসী জারোয়ারা। বাইরে থেকে লোক আগমনে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তাছাড়া অন্য দিকে বিশাল সমুদ্র। সেখানে ঝাকে ঝাকে হাঙর।
সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া কিছু মানুষ অনেক ভয় আর সংশয়ের মাঝে আবার শুরু করতে চায় নতুন ভাবে বাঁচা
আর এরই মাঝে কিছু মানুষ সরকারি সাহায্য এবং নিজেদের সাহস ও সহানুভূতি দিয়ে সব হারানো মানুষ গুলোর পাশে এসে দাড়ায়।
এতো কিছুর মাঝে বিনু খুজে ফেরে তার ঝিনুককে। এরই মাঝে পরিচয় হয়। ব্রিটিশ আমলের সংগ্রামী শেখরনাথের সাথে। তিনি ম্যজিজট্রেট বিশ্বজিৎ রাহার কাকা। এ কারনে আন্দামান এবং সব শরনার্থীরা তাঁকে কাকা বলেই জানে।
ব্রিটিশ আমলে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহিতা অভিযোগে কালাপানি সাজা ভোগ করতে যান। আন্দামানের জেলে সেই সময় জাবতজীবন সাজা ভোগ কারীদের কালাপানি পার করে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। বার্মা তখন ভারতেরই অংশ ছিলো। সব প্রদেশের আসামিদের সেখানে নিয়ে গিয়ে কঠিন শাস্তি দেওয়া হতো। আনেককে আবার ফাঁসিও দেওয়া হতো, তবে এ খবর তার পরিবারের লোকজন কখনও জানতেও পারতো না।
তাছাড়া সাজা ভোগ করারা পরে অনেকেই মুক্তি পেয়ে আর দেশে ফিরে আসেসি সেখানে বিয়ে করে থেকে গেছেন। এমন কি সেই সময় অনেক মেয়ে কয়েদিকেও আন্দাম