Muntassir Mamoon (Bangla: মুনতাসীর মামুন) is a Bangladeshi author, historian, scholar, translator and professor of University of Dhaka. He earned his M.A. and PhD degree from University of Dhaka. Literary works
Mamoon mainly worked on the historical city of Dhaka. He wrote several books about this city, took part in movements to protect Dhaka. Among his historical works on 1971 is his Sei Sob Pakistani, in which many interviews with leading Pakistanis was published. Most of them were the leading Pakistani characters during the liberation war of Bangladesh.
জন্ম এবং পরিবার মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালের ২৪ মে ঢাকার ইসলামপুরে নানার বাড়িতে। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মিসবাহউদ্দিন এবং মায়ের নাম জাহানারা খান। পিতামাতার তিন পুত্রের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ। তিনি ১৯৭৫ সালে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী ফাতেমা মামুন একজন ব্যাংকার। মুনতাসির মামুনের দুই ছেলে মিসবাহউদ্দিন মুনতাসীর ও নাবীল মুনতাসীর এবং কন্যা রয়া মুনতাসীর।
কর্মজীবন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই দৈনিক বাংলা/বিচিত্রায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন মুনতাসীর মামুন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। এর পাশাপাশি ঢাকা শহরের অতীত ইতিহাস নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের 'মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইন্সটিটিউটে' সন্মানিক প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে ১৯৯৯-২০০২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। কৈশর থেকে লেখালেখির সাথে জড়িত হয়ে ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানে বাংলা ভাষায় সেরা শিশু লেখক হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর অনুবাদ, চিত্র সমালোচনা ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রচনা করেন অনেক বই। তাঁর লেখালেখি ও গবেষনার বিষয় উনিশ, বিশ ও একুশ শতকের পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশ ও ঢাকা শহর।
সাংগঠনিক কর্মকান্ড স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ডাকসুর প্রথম নির্বাচনে মুনতাসীর মামুন ছিলেন সম্পাদক। একই সময়ে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি। ডাকসুর মুখপত্র "ছাত্রবার্তা" প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর সম্পাদনায়। তিনি বাংলাদেশ লেখক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যথাক্রমে প্রথম যুগ্ম আহ্ববায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক। তিনি জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ড ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী এবং জাতীয় আর্কাইভসের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। ঢাকা নগর জাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ঢাকার ইতিহাস চর্চার জ্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন সেন্টার ফর ঢাকা ষ্টাডিজ (ঢাকা চর্চা কেন্দ্র)। এ কেন্দ্র থেকে ঢাকা ওপর ধারাবাহিক ভাবে ১২টি গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি বাংলা একাডেমীর একজন ফেলো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিনেটের নির্বাচিত সদস্য হয়েছেন কয়েকবার। '৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তিনি একজন প্রতিষ্ঠাতা ও সক্রিয় সদস্য। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ফাতেমা মামুন প্রতিষ্ঠা করেছেন মুনতাসীর মামুন-ফাতেমা মামুন ট্রাস্ট। এ ট্রাস্ট গরিব শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের নিয়মিত সাহায্য করছে।
সাহিত্য কর্ম মুনতাসীর মামুনের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২২০+। গল্প, কিশোর সাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষনা, চিত্র সমালোচনা, অনুবাদ সাহিত্যের প্রায় সব ক্ষেত্রেই মুনতাসীর মামুনের বিচরণ থাকলেও ইতিহাসই তার প্রধান কর্মক্ষেত্র। ।
পুরস্কার বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার, একুশে পদক, নূরুল কাদের ফাউন্ডেশন পুরস্কার, হাকিম হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক পুরস্কার, ইতিহাস পরিষদ পুরস্কা, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, অলক্ত স্বর্ণপদক পুরস্কার, ডঃ হিলালী স্বর্ণপদক, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৩), মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিয়েন্স শহর তাঁকে 'অনারেবল ইন্টারন্যাশনাল অনারারী সিটিজেনশিপ' প্রদান করে।
ব্র্যাক প্রিন্টার্স প্রকাশিত বইটি পাঞ্জেরী নতুন করে বের করেছে। আমাদের বাসায় পুরানটাই ছিল। পুরান ঢাকায় হিন্দুদের উৎসব সহ আরো দারুণ খুচরা ইতিহাস সংক্ষেপে ধরা আছে বইটিতে।
ঢাকা মানেই স্মৃতি-বিস্মৃতির এক ঝলমলে শহরের ইতিকথা। কত ঘটনা, কত গৌরব, কত ঐতিহ্য আর কত না কিংবদন্তি ছুঁয়ে আছে এই শহরকে ঘিরে।চারশ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকার অনেক না-জানা উপাখ্যান।
যেহেতু গবেষণার ধর্মী লেখা, স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা ধীর গতিসম্পন্ন বইটা।
বইটাকে দুইটা অংশে ভাগ করা যায়, প্রথম অংশে ঢাকার আর্মিনির সম্প্রদায় এবং ঢাকার প্রসিদ্ধ কিছু নবাবদের সম্পর্কে আলোচনা আছে। দ্বিতীয় অংশে হৃদয়নাথ মজুমদার ঢাকাকে কিভাবে দেখেছিলেন তার বর্ণনা দেওয়া আছে।
🔰প্রথম অংশ—
আর্মেনিটোলায় জীর্ণ, ম্লান আর্মেনি গির্জগুলো আজও আর্মেনি সম্প্রদায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে আর্মেনিরা ঢাকায় বসতি স্থাপন করে। অতি ক্ষুদ্র একটি সম্প্রদায় হওয়া সত্ত্বেও তারা সেই সময়ে বিত্তবান হওয়ার কারণে ছিলেন প্রভাবশালী। পাটকে একসময় বাংলাদেশের সোনালী আঁশ বলা হতো , এই পাটের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা আর্মেনিরাই প্রথম বুঝেছিলেন।১৯৪৮ সালের পর থেকে এ-শহরে আর কোনো আর্মেনি সম্প্রদায়ের লোক দেখা যায়নি।
প্রায় একশ বছর ধরে ঢাকার নবাব পরিবারের প্রভাব-প্রতিপত্তি ঢাকায় তো বটেই পূর্ববঙ্গেও ছিল অসীম। ঢাকাতেই তাঁদের জন্ম, ঢাকাতে বসবাস করেছেন তাঁরা আজীবন এবং পরলোকগমনও করেছিলেন ঢাকায়। ঢাকায় নবাব পরিবারের পত্তন করেছিলেন খাজা আলিমউল্লাহ বা আলি মিয়া। তবে, 'নবাব' উপাধি বৃটিশ সরকার দিয়েছিলেন তাঁর পুত্র আবদুল গনিকে। এবং সে-সময় বংশানুক্রমিকভাবে সে-উপাধি ব্যবহারেরও অধিকার দেয়া হয়েছিল। ঐ সময় থেকে এই পরিবার পরিচিত ছিল ঢাকার নবাব পরিবার নামে। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস তাঁর এক প্রবন্ধে, ঢাকার এই নবাবদের উল্লেখ করেছেন কাগুজে নবাব হিসেবে।
এর মধ্যে আরো উল্লেখ আছে ঢাকার নবাবদের আদি প্রতিষ্ঠাতা খাজা আলিমউল্লাহ, আব্দুল গনি, নবাব আহসানুল্লাহ, নবাব সলিমুল্লাহ ও আহসান মঞ্জিল সর্ম্পকে।
🔰দ্বিতীয় অংশ—
হৃদয়নাথ মজুমদার নামের এক হিন্দু ব্যক্তি তার পরিণত বয়সে ইংরেজিতে একটি গ্রন্থ লিখেছিলেন ঐ গ্রন্থে তিনি ১৯ শতকের ঢাকার কিছু চিত্র তুলে ধরেছেন। বইটার নাম ছিল “রেমিনিসেন্সেস অফ ঢাকা” বা ‘ঢাকার স্মৃতি’।
এখানে উনিশ -বিশ শতকের (১৮৬৪ সাল থেকে) ঢাকার বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে হৃদয়নাথ মজুমদারের আত্মজীবনীতে,, অন্যান্য আত্মজীবনী'র সাথে এটার পার্থক্য হচ্ছে এখানে হৃদয়নাথ নিজের সম্পর্কে প্রায় কিছুই বলেননি। বলেছেন শুধু ঢাকার কথা। তন্মধ্যে রয়েছে ফরাসি উপনিবেশের কথা, বুড়িগঙ্গা, পিলখানার , রমনা , ঢাকার আদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , ঢাকায় সিপাহি বিদ্রোহের আলোচনাও উঠে এসেছে। সাথে আরো ছিল ঢাকার সেই সময় গীতবাদ্য, অভিনয়, ঢাকার ধর্মীয় উৎসব, ঢাকার আইন-আদালত এবং ঢাকার পণ্য। সেই সময় ঢাকার অভিজাত এলাকা ছিলো উয়ারি।
এখানে লেখক মুনতাসির মামুন কিছু যোগ করেছেন, সেই সময়টায় হৃদয়নাথ যেভাবে ঢাকাকে দেখেছেন সেটা তো বইয়ে উল্লেখ আছেই সংক্ষিপ্ত আকারে। সেই সাথে ও-ই সময় ঢাকায় আরো যেসব উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল সেগুলো লেখক উল্লেখ করে দিয়েছেন। যেমন - ১৮৮০'র দিকে ঢাকার রাস্তা আলোকিত করা হতো কেরোসিন বাতি দিয়ে। ১৯০১ সালে আবার ঢাকায় ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিজলি বাতির। এজন্য পৌরসভা কে টাকা দিয়েছিলেন নবাব আহসানুল্লাহ। কিন্তু হৃদয়নাথ মজুমদার তার বইয়ে ঘটনাটি উল্লেখ করেননি যেটি তার সময়েই হয়েছিল। এরকম আরো অনেক কিছুই পাবেন বইটা পড়ার সময়।
যারা প্রাচীন ঢাকা কে জানতে চান তাদের জন্য অত্যন্ত সুখপাঠ্য একটি বই।
This entire review has been hidden because of spoilers.