পেশায় প্রযুক্তিবিদ। প্যাশনে কলাম-লেখক। ‘গুরুচণ্ডালি.কম’ নমের এক জনপ্রিয় ওয়েব সাইটের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও অন্যতম সংগঠক। লিখেছেন বেশ কয়েকটি বই। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'হাম্বা', 'বন্দরের সান্ধ্যভাষা', 'খেরোবাসনা', ‘মহেঞ্জোদারো’, ‘গোরুর রচনা’। আড্ডাবাজ বন্ধুবৎসল সৈকতকে পেশাগত কারণে বিদেশে থাকতে হয় মাঝে মাঝেই। তবে কলকাতা বইমেলায় তাঁর স-গিটার উপস্থিতি প্রতি বছরেই।
এ বই শিল্পবিপ্লবোত্তর ইউরোপের আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার ডায়াস্পোরা নিয়ে এক আশ্চর্য ভাষ্য। লেখক খুব সরল কথায় তুলে এনেছেন ওই যুগের ইউরোপীয় মানসিকতার অহং এবং প্রবৃত্তির অংশগুলো। যা তারপরে নিয়ন্ত্রণ করে চলবে বিশ্বজুড়ে ইউরোপের কলোনীগুলোকে। এবং তাদের আধুনিক বহমান হালহকীকতকে। লেখকের মেধাবী কলমের আঁচড়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পোস্ট কোল্ড ওয়ার যুগের দুনিয়াব্যাপী অবস্থান।ইউরোপকেই মানদন্ড ধরে আধুনিক বিশ্বমুখীনতার নামে যে ইউরোপকেন্দ্রীক বোধ ও ভাবনা তার সূত্রপাতে এশিয়ার কলোনীরা য্যামোন হয়ে উঠেছে 'উচ্ছিষ্ট ইউরোপ' ত্যামোনই আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া হয়ে উঠেছে খোদ ইউরোপেরই উদ্বৃত্ত শক্তি। এই আলো আঁধারের মধ্যেই আজও যে বিগত ইতিহাসের স্বর ভেসে যায় সিডনি কিম্বা নিউ ইয়র্কের বন্দরে তারই খোঁজ করেছে এই বই। এ বই আরও বড় হতে পারে আরো বড় পরিসর ব্যাপ্ত করে , ভবিষ্যতে লেখক যদি চান। কিছু সরলীকরণ তাহলে আরও বিস্তৃত হতে পারে আমাদের মতন সাধারণ পাঠকের জন্যে। যারা এই রিভিও পড়বেন তাঁদের বলবো পারলে এই বই সংগ্রহ করে পড়ুন, পড়ান। সরল সমাজতত্ত্বের বাংলা বই সহজবোধ্য নয় সচরাচর। এই লেখকের কলমে কিন্তু সে গুণ আছে।
ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব ও তার ফলে সৃষ্টি হওয়া নতুন পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় অপ্রয়োজনীয় মানুষ গুলোর সে দেশ থেকে অন্য অজানা এক ভূখণ্ডে দ্বীপান্তর । কোনও কাহিনী নয়, সেই সময় ও সেই সময়ের সমাজ ব্যবস্থ্যা নিয়ে সামগ্রিক আলোচনা । নিঃসন্দেহে অসাধারণ একটা বই ।