স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর লেখায় একটা মজা আছে। শুরু করতে হয় এরপর কখন কিভাবে শেষ হয়ে যায় বোঝা যায় না। শেষাংশটা সিনেম্যাটিক স্টাইলের না হলে বোধ হয় আরও ভালো লাগতো।
তারপরেও ভাল্লাগসে। বইয়ের কিছু কিছু কথা বা চরিত্রদের ভাবনা বেশ ভালো লেগেছে। তারচেয়ে বেশি ভাল্লাগসে সিনেমা থুক্কু বইয়ের প্রোটাগনিস্ট লালমোহন কাঞ্জিলালকে। 😂
বাবার সাথে সম্পর্ক কোনোকালে স্বাভাবিক ছিল না লালমোহন কাঞ্জিলাল ওরফে লালের। সকল আবদার পূরণ করতেন মা। বড়ো ভাই থাকতো নিজের মতো। মা মারা গেল। সংসারে একা হয়ে গিয়েছিল লাল। তখনই ত্রিশ বছরের লালের জীবনে এলো সবে বিশ বছর বয়সী দুরন্ত তরুণী মিকি। অসবর্ণ মিকিকে পুত্রবধূ হিসেবে মানতে রাজি হবে না লালের বাবা। তাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল লাল। পেয়িং গেস্ট হিসেবে আশ্রয় নিলো এক বাড়িতে। তখন থেকে কাহিনি শুরু।
পেয়িং গেস্ট হিসেবে বাড়িতে আরও একজনকে পেল লাল। সে হলো অণু। এই তরুণী প্রথম থেকেই লালের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু যার জন্য বাড়ি ছাড়ল, বাবার সঙ্গে বিবাদ করে বেরিয়ে এলো সেই মিকি হঠাৎ যেন আমূল পাল্টে গেছে। লাল আবিষ্কার করলো,
"যে-মেয়ে প্রায় সারা রাত মেসেজ করে পাগল করে দিত, সে মেসেজ করাই বন্ধ করে দিয়েছিল! ভাল করে সারাদিন কথাই বলছিল না শেষের ক’দিন! ফোন করলে দু’-এক মিনিট কথা বলে কাটিয়ে দিচ্ছিল। এমনকী, দেখা পর্যন্ত করতে চাইছিল না শেষের দুটো দিন।মন প্রমাদ গুনছিল তখনই। "
শেষমেশ আধুনিক তরুণী মিকি জানিয়ে দিল দশ বছরের বড়ো লালকে তার গ্রহণ করা সম্ভব নয়। লালের মনে হতে লাগল,
"আসলে মানুষের সারা জীবনের বিশ্বাস, সে যত সামান্যই হোক না কেন, যখন ভেঙে যায় তার যন্ত্রণাটা কিন্তু সামান্য থাকে না। আসলে আমাদের বিশ্বাসগুলো আমাদের বন্ধুত্বের মতো! এক-একটার ভেঙে যাওয়া মানে আমাদের আরও একা হয়ে যাওয়া। "
মিকিকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল লালের। এগুলো সব চৌচির হয়ে গিয়েছিল। তখন অণুই লালের পাশে এসে বন্ধুর মতো দাঁড়িয়েছিল। তাকে বোঝার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু লাল কী বুঝতে পারবে অণুকে? সবসময় আমরা ঠিকঠাক নিজেদের বুঝতে পারি?
অসাধারণ কোনো লেখা নয়। নিতান্তই মামুলি কাহিনি। কিন্তু পড়তে বেশ লাগে। অনুভূতিগুলো মুহূর্তের জন্য নাড়া খায়। মোটকথা, চিরাচরিত স্মরণজিৎ চক্রবর্তী।
২০১২ তে হইচই ছিল না। থাকলে বলতাম হইচইয়ের দুরন্ত কোনো ওয়েব ফিলিমের জন্য স্ক্রিপ্ট লিখেছেন লেখক। এ বই যেরূপ হালকা, ততোধিক জোলো, এবং একান্তই অন্তঃসারশূন্য। ট্রেনে পড়বো বলে, একটা বে-'সিরিয়াস' বই হাতে নিয়ে উঠেছিলাম। সেই জায়গায় হয়তো এ বই যথার্থরূপে সফল। তবে 'ফিঙে' পড়ে একবারও মনে হলো না যে লেখকের আদতে কোনো গল্প বলার ছিল। এ বই পৃথিবীর মুখ না দেখলে, কারো কিস্যু এসে যেত না, ধরিত্রী ধরিত্রীর ন্যায়েই চলত।
ব্যাপারটা দূর্ভাগ্যজনক, কারণ স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর 'মোম-কাগজ' উপন্যাসখানি আমার দিব্যি লেগেছিল। ওটার নিরিখে এটা একেবারে বেফালতু ইনভেস্টমেন্ট হয়ে রয়ে যাবে। কতকটা ওই 'ফানুস' বা 'অদম্য'-র মতন। লেখকের লেখনী ও সংলাপ সচরাচর বুদ্ধিদীপ্ত হলেও, এ গল্পে ভীষণ ওভারস্মার্ট। গায়ে পড়ে মজা করলে যেরমটা হয়, অনেকটা সেরকম। পড়ে বিরক্তি ধরে যায়। সঙ্গে আবার হিরোর বয়ানে জোর জবরদস্তি চতুর্থ দেওয়াল ভাঙার প্রবণতা।
বইয়ের ভরাডুবির মোদ্দা কারণ, মূল চরিত্র লাল ও অনুর অস্তিত্বহীন রসায়ন। কোথাও কোথাও মন আদ্র করলেও, দুজনের যতটা সময় পাওয়ার কথা ছিল, সেটা তারা একেবারেই পায় নি লেখককৃপায়। তার বদলে ক্রমাগত গুরুত্ব পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের সাবপ্লট। যার বেশিরভাগটাই, হয় শেষে এসে ভুলে মেরে দেওয়া হয়েছে, নয়তো বা স্রেফ গোঁজামিল দিয়ে মেলানো অঙ্ক। যেন ভুলো মনের কোনো নবীন পরিচালককে দিয়ে দশ দিনে নামানো একটি সিনেমা। পিওর ফাঁপা। পড়তে পড়তে মনে হয় পুরো কাহিনীটাই যেন স্রেফ প্লট আর্মরের কাঁচা তেলে ভাজা ফুলুরি। চাইলে স্বাদ আরোহণ করাই যায়, তবে পরে বুকের কাছে চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করলে প্রমাদ গোনার সমান। আর মুশকিল একটাই, এ ব্যথা প্রেমের ব্যথা নয়।
বি দ্রঃ : মিকির সাথে পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় আমাদের হিরো লালমোহন বলছে, "মিকি বেশ লম্বা, স্লিম। গায়ের রং গরম বালির মতো। আর চোখটা যামিনী রায়ের থেকে কপিরাইটের তোয়াক্কা না করেই কাট-পেস্ট করা!"
লেখকের এই কালজয়ী বর্ণনাটি পড়ে, আমি যে বইটিকে একবার হলেও ব্যাগে ভরে রাখবার কথা ভাবিনি, সেটা বললে সত্যের অবমাননা হবে।
রোমান্টিক উপন্যাস। কিন্তু পুরো রোমান্সটাই হালকা 'ঢপ' টাইপ( ঢপ শব্দটা এই মাত্র বইটা পড়ে শিখলাম)। অবশ্য হবারই কথা। নায়ক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আর নায়িকা ইউনিভার্সিটি টিচার। এইরকম চরম সফল মানুষদের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে লেখা উপন্যাস জমিয়ে তোলা তো আর যে সে কম্ম নয়। মলিন শার্ট, টঙের চা, প্রেমিকার দীর্ঘশ্বাস...এই জিনিসগুলো ছাড়া মডার্ন বেঙ্গলী রোমান্টিক নোভেল জমে না বাঙালির কাছে।
লেখক অবশ্য নায়ককে ব্রেক আপের পর দেবদাস বানায় দেন নি। এই জন্য বোধহয় খুশি হয়ে আরেকটা তারা বাড়িয়েই দিয়ে দিতাম। কিন্তু শেষে ট্রেন ধরা নিয়ে যে নাটকটা তৈরি করলেন তাতে আর দেওয়া হলো না। চিন্তা করে দেখেন এই স্মার্টফোনের যুগে নায়িকা ট্রেনে করে নর্থ বেঙ্গল চলে যাচ্ছে, আর নায়ক একটা কল পর্যন্ত না করে নায়িকাকে ওর মনের কথা বলার জন্য একেবারে স্টেশন পর্যন্ত হিরোগিরি করে চলে গেছে। বাপ রে! এটা তো ঢাকাইয়া সিনেমাকেও হার মানায়।
বইটা নিয়ে ভালো মুভি বানানো যায়। এমনকি কাহিনি হালকা ঘষা মাজা করলে ব্লকবাস্টারও হয়ে যেতে পারে।
The word ফিঙে indicates a common bird which you can see anywhere in Bengal . This author has made this bird special. When the male Protagonist saw the bird it reminded him of his mother who's no more. It's not a random love story but it's definately has a pinch of Bollywood flavour , I love this !!. Go read it ! And if you have read it let's talk together
আমি জানিনা কেনো আমার ওনার লেখা ভীষণ ভালো লাগে। একবারের জন্য মনে হয় না যে সেই বইটার বাইরে কোনো জগৎ আছে বলে, যখনই ওনার বই পড়া শুরু করি বাইরের জগৎ টা ঝাপসা হয়ে আসে আর আমি ক্রমশ নিজেকে হারিয়ে ফেলি বইয়ের পাতার ভেতর। মন খারাপের ওষুধ বলো কি সারাদিনের সঙ্গী সবকিছুই হলো এনার বই। এই বইটাও ব্যাতিক্রম নয়। এতো সুন্দরভাবে লালের ভালোলাগা, ভালোবাসা, মনখারাপ, রাগ, দুঃখ, কষ্ট, অভিমান সবকিছু এতো সুন্দর ভাবে লেখক প্রকাশ করেছেন কিছু আর বলার নেই। শুধু লাল কেনো অনু চরিত্রটাও ভীষণ আকর্ষণীয়, তেমনি পটাই আর নীল এরাও কিছু কম নয়। যেখানে যারা যেমন সেখানে তারা সেরোম। আমাদের জীবনের শেষটা সবসময় খুশির না হলেও ওনার গল্পের খুশি দিয়ে শেষটা কি ভালোই না লাগে!!
A cute little book of finding love in middle of family drama and all the chaotic events of life. All over not a very impactful storyline, just a simple slice of life story. One time read for me.
" আমরা যত বড়ই হই আর আমাদের সঙ্গে আমাদের বাবাদের যেমনই সম্পর্ক থাকুক না কেন, আমাদের অবচেতনে বাবারাই হল, স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান আর অরণ্যদেবের ককটেল। এরা বিছানা নিয়েছে শুনলে সবারই পায়ের তলার জমি নড়ে যায়। "
" লেবেল ক্রসিংয়ে আটকে থাকা মানুষ যেভাবে নব্বই বগির মালগাড়িকে দেখে, আমিও সেভাবে তাকিয়ে থাকি স্মৃতির দিকে! "
"... তবু কিছু একটা আছে! এলজেব্রার মতো একটা "X" নামে কিছু আছে, যা আটকে রাখছে আমায়। যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ পেরিয়েও যে কিছুতেই নিজেকে প্রকাশ করছে না। কী সেটা আমার মনের ফিঙে লেজ নাড়াতে নাড়াতে কী বলতে চাইছে আমায়? কার কথা বলতে চাইছে? কার কাছে পৌঁছোতে বলছে? "
✍️প্রাক কথন: এটা আমার স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর পড়া প্রথম বই, আমার হবু বউ গিফট করেছে আমাকে। দেবার সময় বলছিলো "আমি খুব রিসার্চ করে এই বইটি নিলাম, তোমাকে দেবার জন্য" আসলে আমি পড়তে ভালো বাসি সে কথা তার অজানা নয়। সেও বই পড়তে ভালো বাসে।
✍️ মূল চরিত্র: লালমোহন কাঞ্জিলাল(লাল), অণু, মিকি, পটাই, লালের দাদা ও শ্রীনিকা, তাছাড়াও রয়েছে আরো অনেক চরিত্র যাদের উপস্থিতি আরো সমৃদ্ধ করেছে উপন্যাসটি ।
✍️আমার চোখে গল্পের বিশ্লেষণ: ফিঙে, হ্যা এই ফিঙে হল এই উপন্যাসের আবেগ, প্রাপ্তি- অপ্রাপ্তি ভালোলাগা, ভালবাসার কেন্দ্র। যে ফিঙে ধরা দিত লালের মায়ের স্বপনে, যার গল্প শুনে লাল বড় হয়েছে, আর যখন লাল জিজ্ঞেস করত ওই ফিঙে কোথায় গেলো, তখন তার মা লালকে দেখিয়ে বলত এইতো আমার সামনে,আমার ফিঙে।সেই লালের সবার চেয়ে কাছের মা একদিন ফিঙে হয়ে লালকে ছেড়ে চলে যায়। তার একাকিত্ব জীবনে এরপর সুখ দুঃখ পরপর আসে, ভালোবাসায় প্রতারিত হওয়া, কাজের সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা ও নিজের বাবার প্রতি অভিমান সব মিলে মিশে যখন লাল অথই জলে ধরার মতো কিছু খুঁজে মিলছিল না ঠিক তখন কোথা থেকে যেন ফিরে আসে সেই ফিঙে, হ্যা লালের ফিঙে হয়ে এসেছিলো এবার অণু, পটাই এর কথায় অণু- পরমাণু নিয়ে খেলা, সাবধানে থাকিস নয়ত নাগাসাকি হতেও দেরি হবে না। না নাগাসাকি আর হতে হয়নি বরং এই অণু ছিল লালের জীবনে বদলে দেবার একমাত্র কারিগর।
✍️গল্প চরিত্র: লাল: প্রাথমিক অবস্থায় নির্বোধ, বোকা বলে মনে হলেও মনের দিক দিয়ে যে ভালো তা বলাই যায়, লালের চরিত্রটি বাস্তবিক সেটা গল্পে লেখক ভাবতে বাধ্য করেছেন।
✍️লালের বাবা ও দাদা: লালের বাবা যে একরোখা, জেদী তা বলা যেতেই পারে, তবে তার ভেতরে যে একটা নরম হৃদয় আছে সেটাও স্বীকার করতে হয়, লালের দাদা এখানে একদম সরল সাদা শিধে লোক, জীবনে কিছু সমস্যা হলে লালকেই তার দাদার দমকল হতে হয়।
✍️অণু: সবচেয়ে ইতিবাচক চরিত্র একটি, যার উপস্থিতি এখানে যেনো লালকে সমস্যা মুক্ত করতেই হয়েছে, ভালোবাসি কথাটা যে মুখে না বলে কেবল কাজেও দেখানো যায়, সেটাই এখানে অণু চরিত্রটিতে দেখা যায়।
✍️পটাই: যেমন কোনো ফিল্মে একটি হাসির চরিত্র থাকে, পটাই এখানে সেই কাজটাই করেছে। তার উপস্থতিতে আমাকে গল্পের মাঝে হাসির অনুভুতি দিয়েছে।
✍️ মন্তব্য: কোথাও কোথাও আমার মনে হয়েছে গল্পকে অযথা একটু দীর্ঘায়িত করা হয়েছে, তবে তা লেখন শৈলীর খাতিরে মেনে নেওয়া যায়। মিকি এর অংশ বাদ দিলে আমার সামগ্রিক উপন্যাসটি বেশ ভালই লেগেছে। অনুর গুন গুলোর মতো আমার হবু বউ এর অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি।😊 আরও অনেককিছু লেখার ছিল কিন্তু লেখকের লেখা পরে নেওয়াটাই ভালো, আপনারা বইটি পড়ে নেবেন।
এতদূর পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।🙏
উপন্যাসটি লালমোহন কাঞ্জিলাল নামের এক চরিত্রকে কেন্দ্র করে বিস্তারিত হয়েছে। লালমোহনের মায়ের স্বপ্নে ঘুরে ফিরে এসে বসতো একটি ফিঙে। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর লালমোহন খুব একা হয়ে যায়। লালমোহনের সাথে কুসুমিকা নামের একটি মেয়ের সম্পর্ক হয় যেটা লালমোহনের বাবা মেনে নিতে পারেন না। লালমোহন তার বাবা, দাদা হরিৎলাল এবং বৌদি শ্রী কে ছেড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে অন্য একটা জায়গায় পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকে, সেখানে আলাপ হয় অণুর সাথে। লালমোহন তাদের নিজেদের পারিবারিক ব্যাবসা ছেড়ে নিজের যোগ্যতায় ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটা চাকরি করে। আর এসবের ফাঁকে লালের চোখে পড়ে বাড়ির সামনের বাগানে এসে বসা একটা ফিঙের ওপর।
আমরা সবাই দৌড়ে চলেছি এক অজানা গন্তব্যের দিকে। তাই একটা ফিঙে সারাজীবন উড়ে বেড়ায় আমাদের ভিতর, ছটফট করে সে। পৌঁছে দিতে চায় আমাদের ইচ্ছের কাছে। আর আমাদের এক একটা করে ইচ্ছে যখন পূরণ হয়, আমরা দেখি সেই ফিঙে আর নেই। শূন্য ডাল আর পাতারা পড়ে আছে শুধু। কি বলতে চাই এই ফিঙে? কার স্বপ্ন নিয়ে এসেছে সে? এই ফিঙে কি আসলে জীবনের কোনও রূপক? সেই সব কিছুর উত্তর রয়েছে এই উপন্যাসটিতে।
"মানুষের সারা জীবনের বিশ্বাস সে যত সামান্যই হোক না কেন যখন ভেঙে যায় তার যন্ত্রণাটা কিন্তু সামান্য থাকে না। আসলে আমাদের বিশ্বাসগুলো আমাদের বন্ধুত্বের মতো। এক একটা ভেঙে যাও���়া মানে আমাদের আরও একা হয়ে যাওয়া।"
এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে লেখক আমাদের সময়ের মূল্য বুঝতে শেখান। মানুষের খামখেয়ালী মনের গভীরতা বুঝতে শেখান। আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত "ফিঙে"র সন্ধান দেন, যা চিরকাল আমাদের অধরাই থেকে যায়।
"চলে যেতে হবে, সবাইকেই চলে যেতে হবে। আগে বা পরে চলে যেতেই হবে। কিন্তু তার আগে যেটুকু সময় হাতে আছে সেটুকু কাটিয়ে যেতে হবে প্রিয়জনদের সাথে। তাকে জানিয়ে যে��ে হবে তার জন্যই এসেছিলে তুমি। তাকে ছেড়ে যেতে তোমার কষ্ট হচ্ছে খুব।"
"ফিঙে", খুবই সংবেদনশীল একটি উপন্যাস। কাহিনীর গতিময়তা, শব্দচয়ন, উপন্যাসের প্লট সব কিছুর জন্যই লেখকের পারিদর্শিতাকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। নিরন্তর শুভেচ্ছা রইল লেখকের লেখনীর জন্য।
মানুষের মনে যত রকমের অনুভূতি বিরাজ করে, তাদের মধ্যে ভয়ঙ্করতম হলো প্রেমের অনুভূতি.. যুগ যুগ ধরে লেখক-লেখিকাদের কলমে স্থান পেয়েছে প্রেমের বিভিন্ন রূপ.. স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর কলমে এই উপন্যাসের নায়ক লালের জীবনেও ধরা দিয়েছে ভালোবাসার নানারঙের অসমান ধাপ.. বয়সে ছোট মিকির ফাজলামিও যেমন লালের মুখে হাসি ফুটিয়েছে, তেমনই ভীষণ সিরিয়াস অনুর বকুনিও লালের মনে আনন্দ দিয়েছে.. এই উপন্যাসের প্রতিটি স্তরে ফুটে উঠেছে ভালোবাসা, আত্মসম্মান ও দায়িত্ব-কর্তব্যের মতো গুরুতর মানসিক জটিলতার কিছু আশ্চর্য সুন্দর সমাধান সূত্র.. পৈতৃক ব্যবসা ছেড়ে চাকরি করতে গিয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসে লাল, আর তারপর থেকেই বিভিন্ন ছোট বড়ো ঘটনাকে কেন্দ্র করে বদলাতে থাকে লালের জীবন..ভীড় করে আসে নতুন সব মুখ আর একটা ফিঙে পাখি.. কোন পথে নিয়ে যাবে এই ফিঙেটা? আবারও কি সব মান-অভিমান ভুলে বাড়ি ফিরতে পারবে লাল? মিকি না অনু- কে হয়ে উঠবে লালের সত্যিকারের ভালোবাসা? অফিসের বস আদৌ কি কোনোদিন খুশি হবে তার কাজে? অবুঝ প্রেম, একরাশ অভিমান আর এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর লেখার জাদুতে এক নতুন মোড়কে হাজির এই অচেনা প্রেমের উপন্যাস..
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো বই "ফিঙে"। এতে প্রেম আছে, প্রেমে ভেঙে যাওয়ার আঘাত আছে, আছে সেই আঘাত কাটিয়ে উঠে আবার নতুন করে প্রেমে পড়ার সাহস। ব্যবসা ও চাকরির চাপ, বাড়ির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি ইত্যাদি আরও অনেককিছু আছে যা খুবই সাধারণ এবং যৌবনের প্রথম ধাপে পা দেওয়া প্রতিটা মানুষ relate করতে পারবে এগুলোর সঙ্গে। "একটা ফিঙে সারা জীবন উড়ে বেড়ায় আমাদের ভিতর। ছটফট করে সে! আমাদের তাড়িয়ে মারে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। পৌঁছে দিতে চায় আমাদের ইচ্ছের কাছে।" আর এই ইচ্ছে তথা গন্তব্যকে খুঁজে পাওয়ার গল্পই বলে এই উপন্যাসটি। এতে রয়েছে সব ভুল বোঝাবুঝির বাইরে বেরিয়ে একে অপরের কাছে আসার সহজ আনন্দ। আমার বেশ ভালো লেগেছে বইটি। ওয়ান টাইম রিড হিসেবে অবশ্যই সাজেস্ট করবো।
Finge is one of those books that’s not mind-blowing but still pretty enjoyable.Lal’s whole thing with Miki was relatable – you know, when someone just changes out of nowhere. It’s not the most intense plot, but it feels real. The best part was how Anu, who had always been there for Lal, quietly falls for him, but he doesn’t notice it at all. By the end, though, Lal kinda starts to get it, and the whole thing wraps up with a bit of emotional depth. It’s not a heavy read, but definitely keeps you hooked till the last page.
It is a beautiful story with an equally delightful ending. The main character's sense of humour is amazing. This book will make you laugh and snicker while delivering a much-needed message in this modern era of self-love. A simple, humourous and beautiful story of love, father-son relationships and brotherhood.
বইটা পড়ার পর বলার মত ভাষা নেই। প্রত্যেকবার এর মত এই বারো বইটা পড়ে লেখকের লেখায়, গল্পের প্রতি প্রেমে পড়লাম। প্রিয় লেখক প্রিয় থাকবেন সারাজীবন। হয়তো একটা করে নতুন বই পড়বো আর প্রিয় লেখক একটু করে আরও বেশি প্রিয় হয়ে উঠবে।
এমন লেখক যুগে যুগে থাকুক। এবং গল্পের প্রেমিকা "অনুর" মত প্রেমিকা সবার একটা করে যুটুক। অসাধারণ গল্প। অসাধারণ অনুভূতি। বুঝতেই পারছি এর রেশ কাটতে দেরি আছে। 💛👀
লাল ছোটো থেকেই মা কে খুব ভালোবাসতো। তার গোটা জগৎ ছিল মা ময়। তাই মায়ের মৃত্যুর পর সে একেবারে একা হয়এ যায়। দাদা ও বাবার কাছে থেকে দূরেই থাকতে চেয়েছে সে। কিন্তু বাবার হঠাৎ শরীর খারাপ হলে তাকে মুম্বাই থেকে আস্তে হয় কলকাতায় এবং এখানে তাদের নিজেদের ব্যাবসায় যোগ দিতে হয় কিছুটা বাধ্য হয়ে। তারপর ত্রিশ বছরের লাল প্রেমে পড়ে কুড়ি বছরের মিকির। চাকরির চাপ, নিজেদের ব্যাবসা,মিকির অবজ্ঞা এসবের মাঝে জড়িয়ে পড়ে লাল। এসবের ফাঁকে তার চোখে পড়ে বাড়ির সামনের বাগানে এসে বসা একটা ফিঙে। কী বলতে চায় এই ফিঙে তাকে?
"ফিঙে" গন্তব্য খোঁজার গল্প , অভিমান ভাঙার গল্প, অবজ্ঞার গল্প, পড়ে গিয়ে উঠে দাঁড়ানোর গল্প। এই গল্পের বেশ কিছু লাইন মন ছোঁয়ার মতো , তারা বাস্তবিক ��ূপকে আমাদের সামনে আনে। " ... একটা ফিঙে সারাজীবন উড়ে বেড়ায় আমাদের ভিতর, ছটফট করে সে। আমাদের তাড়িয়ে মারে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। পৌঁছে দিতে চায় ইচ্ছের কাছে। আর যখন আমাদের এক একটা ইচ্ছে পূরণ হয়, আমরা দেখি সেই ফিঙে নেই।"
.... বৃষ্টির দিনে বই পড়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে । কাল ঐ ঝড়-বৃষ্টি মুখরিত দিনে মামাবাড়ীর চিলেছাদে বসে বৃষ্টি দেখতে দেখতে পড়তে শুরু করেছিলাম স্মরণজিৎ'দার ‛ফিঙে’ উপন্যাসটি । এক অন্যধরণের সুন্দর ভালোবাসার গল্প , সব ভুল বোঝাবুঝির বাইরে বেরিয়ে প্রিয় মানুষদের কাছে আসার গল্প ।
.... সবাই তো যেতেই চায় । খুঁজতেই চায় তার গন্তব্য । তাই একটা ফিঙে সারাজীবন উড়ে বেড়ায় আমাদের ভিতর । ছটফট করে সে । আমাদের তাড়িয়ে মারে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় । পৌঁছে দিতে চায় আমাদের ইচ্ছের কাছে । আর আমাদের এক একটা করে ইচ্ছে যখন পূরণ হয় , আমরা দেখি সেই ফিঙে নেই । শূণ্য ডাল আর পাতারা পড়ে আছে শুধু ।