Jump to ratings and reviews
Rate this book

অভাজনের মহাভারত

Rate this book
মহাভারত এমন এক চলমান কাহিনী যেখানে বিজয়ীরা বীর না, পরাজিতরা বীর্যহীনও না। এখানে বিজয়ীরা কাঁদে, পরাজিতরা হাসে; যেন ঘটনার আরো কিছু বাকি রয়ে গেছে অথবা কিছু ঘটনা ঘটে গেছে আড়ালেই; যা অন্য কেউ বলবে অন্য কোনো সময়, অন্য কোনোভাবে…

প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মহাভারতের সাদামাটা একটা গল্প চালু হয়েছিল কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের নামে। কিন্তু কোথাও দ্বৈপায়নের মৃত্যুর কোনো বিবরণ নেই। তারপর প্রতি শতাব্দিতেই আমরা দেখি ঘটনায় কিংবা বৈচিত্র্যে মহাভারতের ভিন্ন ভিন্ন হাজারো আখ্যান তাঁরই নামে প্রকাশিত হচ্ছে; যেন নিজের শুরু করা সেই গল্পটা উল্টেপাল্টে বদলে এখনো বয়ান করে যাচ্ছেন ভৌগলিক পরিচয়হীন চলমান এক দ্বৈপায়ন…

মহাভারত এক চলন্ত বর্তমানের আখ্যান; যা আগেও ঘটে গেছে; এখনো ঘটছে; বা ঘটবে সামনেও। কিন্তু যা ঘটে গেছে কিংবা ঘটছে কিংবা ঘটবে তা একেকজনের কাছে মনে হয় একেক রকম। ফলে তৈরি হয় মহাভারতের একেকটা নতুন ভার্সন…

প্রথম বাংলা মহাভারত রচিত হয়েছিল আজ থেকে পাঁচশো বছর আগে চট্টগ্রামে; লিখেছিলেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর দাস। আর বাংলা মহাভারতের সাম্প্রতিকতম সংযোজন অভাজনের মহাভারত; যেখানে অলৌকিক ঘটনায় পূর্ণ মহাভারতকে লৌকিক ও যৌক্তিক ব্যাখ্যার আলোকে মৌখিক বাংলায় বলে গেছেন মাহবুব লীলেন…

414 pages, ebook

First published February 1, 2015

18 people are currently reading
310 people want to read

About the author

Mahbub Leelen

4 books27 followers
গল্প বলি বাংলার পালাকার ও বয়াতি-বাউলের মতো বৈঠকি ঢংয়ে। কবিতা, গল্প ও মঞ্চ নাটক মিলিয়ে প্রকাশিত বই এক ডজনের বেশি। সম্প্রতি লিখছি রামায়ণের লোকায়ত আখ্যান...

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
82 (50%)
4 stars
59 (36%)
3 stars
14 (8%)
2 stars
5 (3%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 39 reviews
Profile Image for অমিয়তোষ আকাশ.
17 reviews7 followers
April 6, 2022
আসল রেটিং- ২.৫

প্রথমেই কইয়া লই এটা এক অভাজনেতরের লেখা রিভিউ। রিভিউ পইড়া আর রেটিং দেইখা কেউ কেউ আমারে বর্ণবাদী, ধর্মবাদী, ধর্মান্ধ, সনাতনী কইয়া গালি দিতে চাইলে দিতে ফারুইন, এইতাই আমার গায়ে লাগব না। কারণ আমি আগেই কইয়া লইসি আমি অভাজনেতর এক মানুষ। যাউজ্ঞ্যা এবার সামনের দিকে আউজ্ঞ্যা....

প্রথমেই কইয়া লই রেটিং দিলাম কেমনে। আমি দুইভাগে রেটিং করছি। ভণিতা ও বাড়তি ভণিতা মিলায়া ২, আর অভাজনের মহাভারত ৩, এই দুই এ মিল্যা ২.৫।

প্রথমেই আসি ভূমিকা লইয়া, লেখক ভণিতা আর বা বাড়তি ভণিতার অধিকাংশ ইনফোই লইছে অতুল সুর আর সুকুমারী ভট্টাচার্য এর কাছে। দুইজনই বিরাট একাডেমিক সন্দেহ নাই। কিন্তু এদের পয়লা জন চূড়ান্ত লেভেলের অসৎ আর পরের জন মনে প্রাণে এক হিপোক্র্যাট। প্রশ্ন জাগে কেমনে? তাইলে হুনুইন, ভণিতার শুরুতেই দেখা যায় অতুল সুররে রেফারেন্স টাইনা বলা আছে দুই গণিতবিদ আর্য ভট্ট আর বরাহ মিহিরের মতে নাকি যুধিষ্ঠিরের রাজ্য অভিষেক হইছে খ্রিস্টপূর্ব ২৪৪৮ সালে। অথচ আর্য ভট্ট এমন কিছুই কয় নাই। আর্য ভট্ট তার "কালক্রিয়া" নামক বইয়ে লেখসে তাঁর যহন বয়স ২৩ তহনেই কলির ৩৬০০ বছর গেছেগা। অর্থাৎ তাঁর হিসাবে কলি শুরু হয় ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বে, ততক্ষণে কৃষ্ণ জীবিত নাই। তার মানে হেরও বহু আগে মহাভারতের যুদ্ধ হইছে। অন্যদিকে বরাহ মিহিরের যেই শ্লোক লইয়া জলঘোলা করছে অতুল সুরে হেই শ্লোক ভালা কইরা নাইড়া চাইড়া মহাভারতের যুদ্ধের ডেট আসে খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ এরও আগে। অর্থাৎ অতুল সুরের কথা ভুয়া আর হেতের কথা যাচাই বাছাই না কইরাই ছাইপ্পা দেওয়ার দোষ কিছুটা হইলেও লেখকের ঘাড়ে বর্তায়।

যাইহোক লেখক পরে নানা সময়ের ভজগট লাগায়া একবার মহাভারতরে পুরান বানাইতে চান তো আবার বেদ লইয়া ঝামেলায় পড়েন। কয় মহাভারতের পরে বেদ লেখছে। যা পুরাই ফালতু আলাপ। লেখক এর কাছেত্তে এট্টু আরেকজনের কাছেত্তে আরেট্টু তথ্য আইনা এই ভজগটটা লাগাইছে।

লেখকের মতে বঙ্কিম অসৎ। কেরে? কারণ হেতে মহাভারত কাডা ছিড়া কইরা, বিভিন্ন জঞ্জাল সাফ কইরা মনমতো নিজের আদর্শ কৃষ্ণরে মহান বানাইতে চাইছে, এল্লাইগ্গা। ভাল। তয় লেখক যে জাইনা বুইঝা, কোনটা মূল মহাভারতের অংশ আর কোনটা না হেইতা জাইনাও, জঞ্জাল নিয়া ছিড়িবিড়ি কইরা ভজগটরে মহাভজগট বানাইসে হেইডারে কি কমু?

মহাভারতে বিভিন্ন সময়ে নানা রাজ্যের মহিমা ঢুকানো হইসে তেলমারা পণ্ডিতগো দিয়া সত্য। তাই বইলা ভিক্টোরিয়ারে তেলাইছে বইলা কালীপ্রসন্ন সিংহ মহাভারতের অনুবাদে ভজগট করছে কি না এমন প্রশ্ন তাঁর শত্রুর মুখেও শোনা যায় না, যেটা করে বসেছেন মান্যবর লেখক। যদি উনি কালীপ্রসন্ন সিংহের অনুবাদখানা পড়তেন তবে না এই প্রশ্ন করতেন, না তো এই প্রশ্ন কইরা আমজনতা পাঠকরে বিভ্রান্ত করতেন।

আর সুকুমারী ভট্টাচার্য। দত্ত বাড়ির মেয়ে হইয়া জন্ম। পরে ধর্ম ত্যাগ কইরা বনে খ্রিস্টান। একসময় বামপন্থী। নিজে খুব বর্ণবাদ বিরোধী বইলা চিক্কুর পারে কিন্তু নামের পাশে ঠিকই ভট্টাচার্য টাইটেল লাগায়া রাখছে। তেনার মতে রামায়ণে প্রক্ষীপ্ত আছে, ভালা কথা। উত্তর কাণ্ড মূল রামায়ণের না, কিন্তু ওই উত্তর কাণ্ডে লেহা শম্বুক বধ লইয়া রামরে বর্ণবাদী ট্যাগ দিতে তার বাঁধে না। অথচ হেতি ভালা কইরাই জানে ওইটা প্রক্ষীপ্ত। তয় আফনারাই কইন এইডা হিপোক্র্যাসির মইধ্যে পড়ে কি না? সেম কথা খাটে এই বইয়ের লেখকের ক্ষেত্রেও।

আরেক কাহিনী আর্য অনার্য মারামারি। আর্য আক্রমণ তত্ত্ব বহু আগেই বাতিল হইয়া গেলেও লেখক এই বাতিল তত্ত্বরে ব্যবহার করতে ভুলে নাই।

আবার গীতা বেদ বিরোধী কি না হেইডা লইয়াও লেখক দিছে একপাক্ষিক উদ্ধৃতি। গীতায় যে কইতাছে আমি বেদ সমূহের মধ্যে সামবেদ, আমিই ঋগ, যজু ও সাম মন্ত্র, আমি সামসমূহের মধ্যে বৃহৎসাম আবার বেদের সকল ছন্দ বা মন্ত্রের মধ্যে গায়ত্রী, আমিই বেদবিৎ ও বেদান্তকর্তা। এমন আরও কথাবার্তা লেখক চতুরতার সহিত এড়ায়া গেছে। ফলে অভাজনরা যারা এসব জানে না হেতেরা হয়া যাইব অভাগা।

লেখক একবার কয় মহাভারতে চতুর্বর্ণ আছিন না। আবার একলব্যের কাহিনী টাইন্না আইনা দেখাইতে চায় ব্রাহ্মণ্যবাদীদের দাপট। মাইঝখান দিয়া চাইপ্পা যায় আঙ্গুল কাটা একলব্যও যে দুর্যোধনের পক্ষে যুদ্ধ করতে আসে মহাভারতের মূল যুদ্ধে হেই কাহিনী।
[সংশোধন: লাইনখানা হইব "মাইঝখান দিয়া চাইপ্পা যায় আঙ্গুল কাটা একলব্যও যে জরাসন্ধের মরার পরে হের পক্ষে শোধ নিতে যুদ্ধ করতে দ্বারকা যায়া কৃষ্ণের হাতে মইরা যায় হেই কাহিনী।"]

তাই কই মূল মহাভারত যে ভজগট তাতে সন্দেহ নাই, আর এই বইয়ে জাইনা শুইনা সাসপেন্সওয়ালা মহাভজগট বানানো হইছে তাতেও কোন সন্দেহ নাই। আর মূল কাহিনীর লগে এই বইয়ের কি পরিমাণ ভজগট আছে তা আমার পক্ষে তুলে ধরা সম্ভব না। আপনাগো সন্দেহ হইলে আগ্রহী জনেরা শিশির কুমার সেনের "মহাভারতের মূল কাহিনী ও বিবিধ প্রসঙ্গ" বইখানা দেইখ্যা লইয়েন।

এত কিছুর পরেও বলমু এখানে ভজগটের পাশাপাশি অনেক ভালা ভালা ইনফোও আছে। অন্যরা এইসব বহু তেল মারছে, অন্যদের রিভিউ এ দেইখ্যা লইন। আমার আর ধৈর্য্য কুলায়তাসে না। তবে মূল মহাভারত না পইড়া কেও এই বইটায় হাত দেইন্না যে।

প্রথমে পড়বাইন মূল সংক্ষিপ্ত মহাভারত, মানে রাজশেখর বসুর সারানুবাদ।
তারপর শিশির কুমার সেনের" মহাভারতের মূল কাহিনী ও বিবিধ প্রসঙ্গ"।
এরপরে এই বইখানা।
আর যদি এরমাঝে কালীপ্রসন্ন সিংহের পুরা মহাভারত শেষ করতে ফারুইন, তাইলে আফনেরে দণ্ডবৎ।

পড়তে থাকুইন, পড়ার উপ্রে কথা নাই।
Profile Image for Nazrul Islam.
Author 8 books228 followers
November 2, 2016
যার মহাভারত পড়েছি তারা তো এর কাহিনী জানেন । আর যারা পড়েন নাই তারা হয়ত এটা জানেন যে মহাভারত এমনই এক মহাকাব্য যার কাহিনী আর এর শাখা উপশাখা এতই বিশাল যে এটা নিয়ে অনেক গৎ আছে । অনেক দীর্ঘ কিছু বুহাতে আমরা কথায় কথায় মহাভারত নিয়ে আসি । শত শত বছর ধরে শত শত কবির লেখনীতে আজকের মহাভারত বর্তমান রুপ পেয়ছে । মহাভারত বিশ্লেষণ করেছেন আবার শত শত কবি সাহিত্যিক । সেই শত শত কবি সাহিত্যিকের দেখানো পথ ধরে মাহাবুব লীলেন লিখলেন নিজের মত করে মহাভারত । আসলে তিনি মহাভারত লিখেছেন আলৌকিক সব বিশয় বস্তু বর্জন করে । মহাভারতের প্রত্যেকটি চরিত্রকে তিনি দেখিয়েছেন রক্ত মাংসের মানুষ রূপে । মাহবুব লীলেনের লেখার স্টাইলটাই ভিন্ন । কথ্য ভাষায় তাঁর সরস জাবানীতে মহাভারতের মত গুরুগম্ভীর মহাকাব্য হয়ে উঠেছে হাস্যরসাত্নক । এছাড়া তাঁর ৪৭ পেইজের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । যেখানে ডিটেলইসে বর্ণনা করা হয়েছে মহাভারতের লেখকবৃন্দের বিভিন্ন এডিশনের কথা । আর সেইসাথে চরিত্র বিশ্লেষণ তো আছেই । আমি আসলে তাঁর কথাগুলোই নিচে লিখে দিচ্ছি তাহলে পাঠক বুঝতে পারবেন তাঁর লেখার মজার স্টাইল সম্পর্কে -

১. কবিরা যুক্তি মানেন না আর ধার্মিকেরা যুক্তি বানান। এতে কোনো ঝামেলা নাই কারণ কাব্যকাহিনি যারা পড়েন আর ধর্মকথন যারা মানেন তারা ভিন্ন ভিন্ন লোক; ভিন্ন ভিন্ন রঙের অন্তর নিয়া তারা বসবাস করেন ভিন্ন ভিন্ন জগতে; যদিও দুই দলই ভিত্তি করেন মূলত কল্পনায়। পার্থক্য শুধু এই যে কাব্যভক্তরা কল্পনারে কল্পনা জাইনা বিনোদিত হন আর ধর্মভক্তরা কল্পনারে সত্য জাইনা করেন বিশ্বাস...

এতেও কোনো ঝামেলা নাই। কিন্তু ঝামেলা তখনই বাঁধে যখন কবিরা ধর্মকথন কইতে যান কিংবা ধার্মিকেরা আসেন ক��ব্য রচনায়। আর তখনই তৈরি হয় বিশ্বাসের কাব্য কিংবা কাব্যিক বিশ্বাস কিংবা দুনিয়ার সব থাইকা বড়ো ভজঘট; মহাভারত..

২. তো এই দ্বৈপায়ন ব্যা���রে তার মা সত্যবতী ডাইকা আনছিলেন মৃত সৎ ভাই বিচিত্রবীর্যের বৌদের গর্ভে সন্তান জন্ম দিতে। মায়ের বিবাহ রাজবাড়িতে হইলেও মা না ডাকা পর্যন্ত জীবনেও তিনি রাজবাড়ি আসেন নাই। মহাভারতের শেষ দিকে ভীষ্মের বয়ানে তখনকার যে সংস্কৃতি পাওয়া যায় সেই সূত্রে তিনি মায়ের বিবাহকারণে মায়ের স্বামী রাজা শান্তনুর পোলা আর উত্তরাধিকার হইবার কথা। কিন্তু নিজে তিনি ঋষি মানুষ; নিয়ম মানেন না বরং নিয়ম বানান। তাই মায়ের বিবাহ রাজা শান্তনুর লগে হইলেও তিনি যেমন রাজবাড়িতে যান না; তেমনি নিজেরেও পরিচয় দেন না শান্তনুপুত্র কিংবা শান্তনুর উত্তরাধিকার হিসাবে; বরং নিজেরে তিনি পরিচয় করান মুনি পরাশরের সন্তান কইয়া...

পয়লা দিকে হরিভক্ত এবং শেষ দিকে হরভক্ত এই ঋষি টোল চালাইয়া বইপুস্তক লেইখা ঘুইরা বেড়াইবার পরেও আছিলেন বহুত সংসারী মানুষ। জঙ্গল জীবনেই টেম্পোরারি বৌ ঘৃতাচীর গর্ভে তার আছিল এক পোলা; শুকদেব। যিনি পরে হইয়া উঠেন চতুর্বেদী ঋষি। কিন্তু এই শুকদেব যখন সন্ন্যাসী হইয়া গেলো; কাব্যমতে বৃদ্ধ বাপের কান্দনে জঙ্গলের গাছ কাঁইপা উঠলেও শুকদেব ফিরল না; তখন অন্যের খোপে পাইড়া যাওয়া ডিম ফুইটা যে তিনটা বাচ্চা হইছিল তার; তাগো কাছেই বিনা নিমন্ত্রণে বারবার ছুইটা আসছেন ব্যাস দ্বৈপায়ন। বড়ো পোলা ধৃতরাষ্ট্রটা আন্ধা আর লোভী; মাঝে মাঝেই মহাভারতে দেখি পোলারে আইসা বোঝান পিতা দ্বৈপায়ন। মাইজা পোলা পাণ্ডুটা অসুস্থ আর আঁটকুড়া; কিন্তু ক্ষেত্রজের যুগে যখন নির্বাসনে যুধিষ্ঠির জন্মাইল পুত্রবধূ কুন্তীর গর্ভে; রাজবাড়িতে পরবর্তী উত্তরাধিকার জন্মাইবার সংবাদটাও পৌঁছাইয়া দিলেন দ্বৈপায়ন; যাতে তখনো অপুত্রক ধৃতরাষ্ট্র পরে কোনো বাগড়া না দেয় পোলাপাইনগো মাঝে যুধিষ্ঠিরের বড়োত্ব নিয়া। গান্ধারীর গর্ভসংকট? সেইখানেও দ্বৈপায়ন...


৩. কুরুযুদ্ধখান পুরাটাই রিটায়ার যাইবার বয়সী বুইড়াদের যুদ্ধ। অভাজনের মহাভারত লিখতে গিয়া কুরুযুদ্ধের সময় অত কারিশমার মহানায়ক অর্জুনের বয়স গল্পের খাতিরে মেকাপ-গেটাপ দিয়া কমাইতে কমাইতেও ৫৭ বছরের থাইকা কমানো সম্ভব হয় নাই আমার; যেইটা আবার একটু মেকাপ উঠাইয়া দিলে গিয়া খাড়ায় ৮০’র উপরে। অর্জুন থাইকা ভীম এক বছরে বড়ো; তার থিকা এক বছরে বড়ো যুধিষ্ঠির আর অর্জুনের এক বছর কইরা ছোট হইল যমজ নকুল সহদেব। কর্ণ যুধিষ্ঠির থাইকা কমপক্ষে চাইর বছর বড়ো; দুর্যোধন ভীমের সমবয়সী এবং কৃষ্ণের বয়স অর্জুন আর ভীমের মাঝামাঝি; কয়েক মাস এদিক-সেদিক...

কুরুযুদ্ধের সময় যাতে অন্তত অর্জুনের গায়ে তির-ধনুক চালাইবার তাকত রাখা যায় তার লাইগা আমি আমার পুস্তকে যুদ্ধের সময় ৫৭ বছর হিসাব ধইরা আগাইছি। কিন্তু তাতে আবার ঝামেলা বাঁইধা গেছে অন্যখানে। এই হিসাবে আগাইলে স্বয়ংবরার সময় দ্রৌপদীর বয়স গিয়া খাড়ায় মাত্র ৪ বচ্ছর; বুইঝেন কিন্তু। ...তো কেমনে আমি কুরুযুদ্ধে তিরাতিরির লাইগা অর্জুনের বয়স ৫৭-তে আটকাইয়া দিছি এইবার সেই হিসাবটা কই... (বাকিটা বই দেখে নিয়েন । আমি এইটুকু কপি করে দিলাম ) :v

যাইহোক এইটা তো খালি নমুনা দিলাম । পুরো বই জুড়েই আছে দারুণ দারুণ রসাল সব কমেন্ট । শেষ কর একটা নমুনা দিয়ে - যুধিষ্ঠির ঘটোত্‍কচরে কয়, “ দ্যাহ ভাতিজা, কৃষ্ণ হইবার চায় দেবতা আর আমি হইতে চাই সম্রাট। যতদিন দুইজনের স্বার্থ আলাদা থাকবো ততদিন আমাগো মইধ্যে কুন প্যাচ লাগবো না ”
যারা নমুনা আরো পড়তে চান তারা মাহবুব লীলেন এর ব্লগ থেকে কিছুটা পড়ে আসতে পারেন । আর যারা ফুল মজাটাই পেতে চান আজকেই বই নিয়ে বসে যান । নিচে মাহবুব লীলেনের ব্লগ লিঙ্ক -

http://www.sachalayatan.com/taxonomy/...

হ্যাপি রিডিং
Profile Image for Zunaed.
54 reviews119 followers
July 21, 2017
"কবিরা যুক্তি মানেন না আর ধার্মিকেরা যুক্তি বানান। এতে কোনো ঝামেলা নাই কারণ কাব্যকাহিনী যারা পড়েন আর ধর্মকথন যারা মানেন তারা ভিন্ন ভিন্ন লোক; ভিন্ন ভিন্ন রঙের অন্তর নিয়া তারা বসবাস করেন ভিন্ন ভিন্ন জগতে; যদিও দুই দলই ভিত্তি করেন মূলত কল্পনায়। পার্থক্য শুধু এই যে কাব্যভক্তরা কল্পনারে কল্পনা জাইনা বিনোদিত হন আর ধর্মভক্তরা কল্পনারে সত্য জাইনা করেন বিশ্বাস...

এতেও কোনো ঝামেলা নাই। কিন্তু ঝামেলা তখনই বাঁধে যখন কবিরা ধর্মকথন কইতে যান কিংবা ধার্মিকেরা আসেন কাব্য রচনায়। আর তখনই তৈরি হয় বিশ্বাসের কাব্য কিংবা কাব্যিক বিশ্বাস কিংবা দুনিয়ার সব থাইকা বড়ো ভজঘট; মহাভারত..."

পৌরাণিক কাহিনীগুলোতে লেখা গল্পগুলোর ভিলেন বা ছোট বলে ছেড়ে যাওয়া চরিত্রগুলোকে কেন যেন আমার ভালো লাগে। রামায়ণের কথা বলতে গেলে আমার কাছে রাম-সীতাকে কখনই তেমন ভালো লাগেনি, বরং মেঘনাদ আর প্রমীলার প্রতিই আমার ভালোবাসা কাজ করে বেশি। মহাভারত পড়ার সময় তেমনি ভগবান কৃষ্ণ, ধার্মিক যুথিষ্ঠির কিংবা অন্য পান্ডবদের চেয়ে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে কর্ণ কিংবা ঘটোৎকচকে। দুর্যোধনের সব কাজকে জাস্টিফাই না করেই বলছি, আমার কাছে ভীম যুথিষ্ঠিরের চেয়ে অনেক বেশি নৈতিক লাগে দুর্যোধনকে। অনেকবার ভেবেছি কেন এই ভালোলাগা কাজ করে। সম্ভবত পুরাণকে ধর্মগ্রন্থ না বরং গল্প বা গল্পে বলা ইতিহাস হিসেবে পড়ি বলেই। মানুষ বলে গল্পে আমার মানুষকে ভালো লাগে, রাজা-বাদশা কিংবা দেবতাদের দানে বড় হওয়া কারো চেয়ে বরং মানুষ হিসেবে আমার কাছে প্রকাশিত হওয়া কাউকেই আমার অনেক বেশি আপন লাগে। তাই তো কর্ণের অপমানে আমি অপমানিত হই, একলব্যের জন্য দ্রোণাচার্যের উপর রাগ জমে, ঘটোৎকচের জন্য থাকে ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা। আমার জন্য বা আমার মত পাঠক যারা তাদের জন্য লেখা বই অভাজনের মহাভারত। এই বইয়ে কেবল কর্ণ, ঘটোৎকচ বা একলব্য না, কুন্তী-পান্ডব-কৌরব-কৃষ্ণ সবার আর সব পরিচয়ের বাইরে গিয়ে তাদের মানুষ পরিচয়কে নিয়ে এসেছেন, মানবিক জায়গা দিয়েছেন সবাইকে, অলৌকিক আর দেবতাদের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছেন মাহবুব লীলেন।

লীলেনের লেখার সাথে পরিচয় সচলের পাঠক হিসেবে। রামায়ণ আর মহাভারত নিয়ে তার সিরিজ লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। মূলত ঐ সিরিজের কল্যাণেই মহাভারত আর রামায়ণ পড়ায় আগ্রহ এসেছিল। এর পরে বেশ কয়েকজনের লেখায় এই দুই কাহিনী পড়েছি, কিন্তু হাজার বছরের পুরনো দুটো মহাকাব্য হাজার হাজার জনের মুখে পাল্টাতে পাল্টাতে গোঁজামিলের আখড়া হয়েছে, তথ্য যুক্তিতে ভুল আর অলৌকিক হস্তক্ষেপে ভরে উঠেছে দুই মহাকাব্য, যার সাথে আজকের পৃথিবীর মানুষ হিসেবে নৈকট্য খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। সেই গোঁজামিলের আখড়া মহাভারতকে অনেক কষ্টে মোটামোটি একটা যৌক্তিক রূপ দিয়েছেন, মানুষগুলোকে ভালো-মন্দ-যুক্তি-আবেগের মিশেল মাটির মানুষ বানিয়েছেন এই বইয়ে লীলেন। এই মহাভারত পড়ার সময় মনে হয় না গল্পটা বহু বহু দূরের, বরং কিছুটা চেনা এক দেশের গল্প বলেই মনে হয়, মানুষগুলোকে আপন মনে হয়। তাই এত মুগ্ধ করে এই বই।

আরেকটা ব্যাপার সবাইকে মুগ্ধ করবে কি না জানি না। লেখক প্রমিত বাংলার বদলে অনেকটা আঞ্চলিক সুরের বাংলা ব্যবহার করেছেন (কোনো স্পেসিফিক এলাকার কি?)। কারণ হিসেবে তার কাছে মনে হয়েছে প্রমিত বাংলা কারো মাতৃভাষা না, তাই তিনি কোনো কেতাবি ভাষা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী নন, কারণ এই কেতাবি ভাষা আসলে প্রাণহীন। উনার যুক্তির সাথে একমত না হলেও উনার ভাষা চোখে লাগেনি কোথাও, বরং যে আপন-আপন করছি এতক্ষণ ধরে, সেই অনুভূতি বাড়িয়েছে। আগে এইরকম পুরোটা প্রমিত বাংলা ছেড়ে আঞ্চলিক বাংলায় লেখা পড়েছিলাম হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখি উপন্���াসে। কিন্তু সেটাও ছিল এক চরিত্রের বর্ণনায়। এখানেই প্রথম লেখকের নিজের বর্ণনায় এরকম ভাষা দেখলাম।

বইয়ের বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ তার ভূমিকা। ফিকশনের ভূমিকা পড়ি না সাধারণত, কিন্তু এটা পড়েছি, পড়তে হয়েছে। এই 'ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ' আলোচনাও তার গাম্ভীর্য হারিয়ে ভেতরে ঢুকেছে ভাষার কারণে। পড়ে ফেলবেন। হ্যাঁ, পড়তে পারেন বলছি না, পড়ে ফেলতে বলছি। এই বই না পড়লে মিস করবেন অনেক কিছু, পা���চ তারা দিয়েও মনে হয় কম দেয়া হয়ে গেছে, বুঝেনই তো!
Profile Image for Protyasha.
Author 1 book52 followers
May 24, 2019
'আমার তো ছোটবেলা থেইকাই মনে হইত কর্ণই শ্রেষ্ঠ বীর' জাতীয় বুংবাং কথা কইয়া আর এখন লাভ নাই। বহুত মাইনষেরই এইডা মনে হওয়ার কথা। বিষয় হইল যে এই বইয়ের আলাপে মূল মহাভারতের কাহিনি নিয়া খুব বেশি কিছু কওয়ার নাই। এই কাহিনি বহুত কচলান হইসে এবং হাজার বছর ধইরা কেমনে তা টিকা আছে তাও খুব সহজে বোধগম্য।

হোয়াট অ্যা ট্র্যাজেডি! হোয়াট অ্যা গ্রেট ট্র্যাজেডি! মহাভারত নিয়া সুকুমারী ভট্টাচার্যের কথাগুলাও মনে গাঁইথা গেসিল যে শেষ নাগাদ প্রত্যেকটা চরিত্রই হইয়া উঠসে ট্র্যাজিক মহাকাব্যের সার্থক চরিত্র। প্রত্যেকে শেষপর্যন্ত কী নিদারুণ নিঃসঙ্গ! রামায়ণের তুলনায় নৈতিক টানাপোড়েন আর মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা অনেক বেশি মহাভারতে। সাহিত্যকর্ম হিসাবেও তাই অনেক বেশি আকর্ষণীয়। এর আগে এইভাবে আমি আগে মহাভারতের কথা ভাবি নাই। আসলেই প্রত্যেকটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ট্র্যাজেডির নায়কগো মতন একটা কইরা ব্ল্যাকহোল আছে যা তারে চুরমার কইরা দিসে। আরও বহু দিক দিয়াই এই মহাকাব্য শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। যাই হোক মূল কাহিনি ফালায়া এই বইতে আসি।

'১৬ সালে ব্যক্তিগত ব্লগ বানাইসিলাম একটা। অইডাতে একটা সিরিজ শুরু করসিলাম। ভাষা হিসেবে বাইছা নিসিলাম ছোটবেলার বুলি। নসন্দি থাকতে যেমনে কথা কইতাম সেইটা। কয়েক রকম চিন্তা কইরা এক্সপেরিমেন্ট করসিলাম আসলে। এক হইসে একরকম ঘাউরামি। এই ভাষায় লেখা যাইব না কেন! তাছাড়া প্রকাশের তোড়ে কোনো রকম ফারাক হয় কিনা তাও দেখার ছিল। তা ফারাক তো কিছু হইসে। ভাবের বান খানিক বেশিই ছুটসিল মনে হয়। তয় সমস্যাও হালকা টের পাইসিলাম। কিসু কিসু শব্দের ধবনিবিন্যাস ঠিক লেইখা ধরা মুশকিল। তাছাড়া কিছু শব্দ লেখলে এমন বিচিত্র রূপ নেয়, যে পড়ব হ্যার কষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তখন একটা সমঝোতায় আসি। নসইন্দা ভাষার লগে অদ্দেক পাঁচমিশালি ঢাকুইল্লা ভাষা। জাগায় জাগায় দুই-একটা ইংরেজী শব্দ আইতে পারে, তয় আধিক্য না কোনোভাবেই। কিন্তু তখনও জানতাম না যে মাহবুব লীলেন এই মহাকর্ম কইরা ফেলসেন আরও আগেই। মায়ের কাছে শুনসিলাম বইটার কথা। কিন্তু মনে হইত আর কত মহাভারত! এর মাঝে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর দুই-একটা বই পড়তে গিয়া ব্যর্থ হইসিলাম। এত্ত বেশি কথা কইলে কেমনে! অতিরিক্ত চিপা লেবু তিতা লাগে।

কিন্তু না। এই বইটা ইউনিক। বহুত দিক দিয়াই ইউনিক। ভাষা হইল প্রথম। লেখকের এই উদ্যোগরে আমি মনে থেইকা স্বাগত জানাই। এই ভাষা আমার মতে ব্যাপাক এফিসিয়েন্ট হইসে এই বিশাল কাহিনি কওয়ার ক্ষেত্রে। ইংরেজী শব্দ যা আইসে, আশুক। তা আইবোই। একাধিক ভাষার মিশেল দুইন্নার কেউ আটকাইতে পারব না। সফল হইলে সেই ভাষা মরা গাঙ হইয়া যাইব।

যাই হোক এই ভাষায় শ্লেষ-তীব্র দুঃখ-স্নেহ-হাসিতামাশার প্রকাশ যে সেইরকম হবে তাতে সন্দেহ ছিল না। হুমায়ুন আজাদের 'ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না'র শেষ অংশটুকুর কথা মনে পরসে কয়েকবার। বারকয়েক আবার হাসতে হাসতে বিছানা থেইকা পইরা যাওয়ার দশা হইসিল। বিশেষ কইরা দ্বৈপায়ন যখন নন্দীগো কাছে প্যাঁদানি খাইলো আর ঘটোৎকচ যখন বাপ-জ্যাঠারে সমানে উচিত কথা দিয়া ঠেঙ্গাইলো। একবার তো সহদেব বইলা উঠল, তুমরা কেউ যুদ্ধে না গেলে আমিই যামু। পাঞ্চালীর অপমানের প্রতিশোধ আমি একলাই নিমু। তখন নিজের মনেই কইয়া উঠলাম, আবে তুই কেডায় রে!

তয় আমার বিশেষ কইরা দেখার ছিল এই ভাষায় গুরুগম্ভীর ঘটনা বা যুদ্ধের ক্লাইম্যাক্স বয়ান কেমুন হয়। তাও চরম হইসে। এই ভাষায় দ্রৌপদীর চিৎকার যেমন যুতসই হইসে, তেমনি ঘটোৎকচের যুক্তিসবল গুঁতা ঠিক ঠিক টের পাওয়া গেছে। কুরুসভায় কৃষ্ণের পলিটিক্সময় বয়ান শুইনা বারুদময় অবস্থার গুরুত্ব পুরাপুরি ঠাহর কর গেসে। এরপরে এই ভাষায়ই কর্ণ আর অর্জুনের যুদ্ধের বর্ণনা। মাগ্‌গো! শিরদাঁড়া সিধা হইয়া গেসে পড়তে পড়তে। এই ভাষায়ই প্রত্যেকটা চরিত্রের বিলাপ আর তাদের নিঃসঙ্গতার আভাস। দারুণ মর্মস্পর্শী। সার্থক। লেখককে ধন্যবাদ।

খুব সহজে সুপারিশ করা যায় এই বই। আর এই জাতীয় ভাষা নিয়া জাগো সমস্যা লাগে তারা না হয় খানিক দূরত্বেই থাকেন।
Profile Image for Alfie Shuvro .
239 reviews58 followers
August 17, 2017
সারাটা জীবন সুখের আশায় আশায় শেষমেশ দুঃখ পেয়ে মরতে হল কুন্তীকে। দিন শেষে জয় হল কর্ণ আর ঘটোৎকচেরই। সারাটা জীবন হারতে হারতে ভালবাসা পেল এরা দুজনই। কর্ণকে মনে হয়েছে "রক্তাক্ত প্রান্তরের" ইবার্হীম কার্দির মত। আর যুধিষ্ঠীর সব পেয়েও হারিয়েছে সব। পাপের ভারে কেদেছে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরের ৩৬টি বছর। আর কৃষ্ণ যে কি আগুনে পুড়েছে সে আর না বলি। যতটা বুদ্ধির মারপ্যাচে অপমানিত করতে চেয়েছে অন্যদের , শেষে তার সাথে ঘটেছে সেই একই কাহিনী। হাজার হোক পাপ তো তার বাপ কে ও ছাড়ে না।

প্রতিশোধ , হিংসা, লোভ কখনো কাউকে ভাল থাকতে দেয় না । ঘতোতকচ কে আমার ভাল লেগেছে বেশি । কর্ণ হলো সব চেয়ে স্মার্ট আর হ্যান্ডসাম একটা চরিত্র। দুর্যোধন কে আসলে বিচার করার কিছু নেই । তবে আমার মনে হয়েছে ভীম অথবা যুধিষ্ঠীর থেকে হাজার গুণে ভাল। সারাজীবন ঠকে গেছে দ্রৌপদি । আহা , বেচারী.........
।।
ছোট বেলা দাদীর মুখে যখন শুনতাম কর্ণ মারা যাওয়ার ঘটনা তখনই কষ্ট লাগত । আর এবার সাথে যোগ হয়েছে ঘটোৎকচের নাম। সারাজীবনই মনে হয় ঠিকে থাকবে কৃষ্ণ, অর্জুন আর অভিমূন্যের দল। কিন্তু মনে থাকবে কর্ণ , ঘটোতকচতের দল ।।

ইতিহাসের সেরা চারটা বইয়ের একটা। কতটা ভাল বলার ভাষা নেই...।
Profile Image for Rumana Nasrin.
159 reviews7 followers
May 30, 2019
"কর্ণ। কর্ণরে বাজান আমার..."
"হা কর্ণ। বন্ধু আমার। আমার ভাই..."

আমি ছোটদের মহাভারত পড়েছি, রাজশেখর বসুর মহাভারত পড়েছি, পড়ছি, রমেশ মেননের ইংরেজি মহাভারত শুরু করেছিলাম, মাঝে মাঝে পড়া হয়। মহাভারত নিয়ে যতোগুলো সম্ভব লেখা আছে, সেগুলো পড়ার এক দুরাশা আছে আমার। এই বই নিয়ে আসলে কি বলা যায়, কতোটুকু বলা যায় আমি ভেবে ভেবে বুঝে উঠতে পারিনি এখনো। আমি শুধু যেখানে গলার কাছে দলা পাকিয়ে ওঠা কষ্টগুলো রাস্তা না পেয়ে চোখ আর্দ্র করে সেই জায়গাগুলো কোট করেছি।

আর আমার মহাভারত পড়ে পড়ে একটা অনুভূতি খুব তীব্র হয়েছে।
' আহারে কর্ণ! - বীর আমার'

নাটকীয় রিভিউ শেষ। হুহ।
Profile Image for Benozir Ahmed.
203 reviews88 followers
November 25, 2022
বাংলা বই এরকম দমবন্ধ করে শেষ করেছি বিভূতিভূষণ এর "পথের পাঁচালি"।
সুস্বাদু খাবার বা সুপাঠ্য সাহিত্যকর্মের একটা বেশ বড় সমস্যা হল, যে গতিতে ইহাদেরকে ভোগ করা হয়, উপভোগের পরিতৃপ্তি সেই পরিমাণে অর্জিত হয় না। শেষ করে মনে হয় আরো কেন রসিয়ে রসিয়ে গালের কশগুলো গড়িয়ে রস আস্বাদন করলাম না।
দীর্ঘ দিন পর সেই অনুভূতি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রথমেই লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সেহরির পর এমনিই বইটা নিয়ে শুয়েছিলাম, পড়তে পড়তে ঘুমাবো বলে, তারপর সকালের আলো পর্দার আড়াল থেকে ঘরে আসা শুরু করল এক সময়। এক সময় সকালের আলো উত্তপ্ত রোদ হয়ে জানান দিল যে দুপুর হতে চলেছে। কিন্তু একটা বার ও এক পলকের জন্য পড়া বন্ধ করতে পারিনি বইটা শেষ করার আগ পর্যন্ত।
মহাভারত বা মহাভারতের খণ্ডাংশ আমরা সকলেই ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি বিভিন্নভাবে, কিন্তু এই বইটার প্রধান আকর্ষণীয় দিকটি হল লেখকের দৃষ্টিকোণ। গল্প আকারে পড়েছি যখন ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো নেহাত গল্পের খাতিরেই মেনে নিয়েছি সব সময়। কিন্তু সে সকল ত্রুটি আর হরেক রকম কবিদের মনগড়া অসংলগ্নতাগুলোকে কট্টর পরিহাসের মাপনীতে তুলে লেখক যখন উপস্থাপন করেছেন পাঠকের সামনে, তখন বার বার হৃদয় খুলে হাসতে হাসতে মুগ্ধ হয়েছি লেখকের চিন্তার পরিসর আর লেখার প্রতি তার অধ্যবসায় দেখে। আর লেখকের কঠোর ক্রিটিসাইজিং দৃষ্টিভঙ্গি মহাভারতের প্রায় সকল চরিত্রকে নিয়েই নতুন ভাবে চিন্তা করার খোরাক যোগাবে নিশ্চিত।

নিখাদ, নির্মল বিনোদনের জন্য হলেও সকল বাঙালি পাঠকের এই বইটা পড়া উচিত। অবশ্যই অবশ্যই।
Profile Image for Omar Faruk.
263 reviews16 followers
March 4, 2023
ভালো লাগেনি। বিশেষ করে বইয়ের ভাষাটা। তাছাড়া কাহিনী বলার ভঙ্গিতেও আহামরি তেমন কিছু ছিল না।
Profile Image for Zabir Rafy.
312 reviews10 followers
October 7, 2024
ধর্মীয় বিষয় আশয় বাদ দিয়ে মাহবুব লীলেন লিখলেন রক্ত মাংসের মানুষের মহাভারত।

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসের মহাভারত
রাজশেখর বসুর সারানুবাদ মহাভারত
উপেন্দ্রকিশোরের মহাভারত
সুনীল বাবুর আমাদের মহাভারতের

বাইরে মাহবুব লীলেন লিখলেন একদম অন্য ধরনের এক মহাভারত৷ সরস ভাষায়, কোথাও খানিকটা অশ্লীল ভাষার প্রয়োগ, স্ল্যাংয়ের ব্যবহার, এট্টু ডার্ক হিউমার মিলিয়ে প্রাণবন্ত এক লিখনশৈলী। বেশ উপভোগ করেছি পড়ার সময়ে।

ধর্মীয় বিষয় বাদে, মহাভারতের চরিত্রগুলোর যুক্তি পাল্টা যুক্তির সংলাপগুলো বেশ লেগেছে। বিশেষ করে মহাভারতের সবচাইতে পরাক্রমশালী চরিত্র, স্টারপ্লাসের সিরিজে আমরা যেই আনডিসপুটেড কৃষ্ণকে দেখি, যার সাথে যুক্তিতে কেউ পারে না; সেই কৃষ্ণকে ঘটোৎকচের কাছে যুক্তিতে ঘায়েল হতে দেখে বেশ লেগেছে৷ (এটা বললাম বই পড়ে কেমন লেগছে, ধর্মীয় ব্যঙ্গ বিদ্রুপ টাইপ কিছু নয়।)

লেখকের পরের বই অভাজনের রামায়ণ পড়ার অপেক্ষায় আছি।
Profile Image for Sazedul Waheed Nitol.
87 reviews33 followers
July 17, 2019
হাজার বছর ধরে ডালপালা ছড়ায়ে বৃক্ষ থেকে জঙ্গলে পরিণত হওয়া মহাভারতের গল্পটা কেটেছেটে পরিষ্কার করে, পরতের পর পরত জমতে থাকা স্থুল চর্বির মতো অলৌকিকত্বকে ঝরিয়ে গল্পের ভেতর থেকে হাড়মাংস বের করে নিয়ে এসে লেখক মাহবুব লীলেন আমাদের সামনে মহাভারতের যে আখ্যানটা দাঁড় করান- তা অপূর্ব। এ আখ্যান লৌকিক; এ আখ্যানে অলৌকিকতা কেবলই রাজনীতির হাতিয়ার।

বাঙালের মুখের ভাষায় বর্ণিত এ গল্প শুরু করার আগে লেখক দুইটা প্রবন্ধ পাঠকদের বৌদ্ধিক চাহিদার জন্য বইয়ে জুড়ে দিয়েছেন। 'মহাভারতের কৃষ্ণায়ন এবং রামের বৈষ্ণবায়ন' ও 'বেদবিরোধী গিতার বৈদিকায়ন এবং রামায়ণের অতীতযাত্রা' নামক প্রবন্ধদু'টি দারুণ সংযোজন বাংলা সাহিত্যে। প্রকল্পটা কান্ধে নেয়ার জন্য মাহবুব লীলেনকে ধন্যবাদ জানাই।
Profile Image for Ashis Saha.
106 reviews27 followers
July 31, 2019
মাঝে-মইধ্যে যে পুরা মহাভারতখান পড়তে ইচ্ছা হয় নাই, তা না। তয়, মাশাল্লাহ বইয়ের যেই সাইজ, ইচ্ছাডা আর বেশি আগায় নাই। হের উপ্রে কবিতার ভাষাও যা, পড়লে মনে লয় দাঁত একখানও থাকবোনা। লীলেন সাব সোজা ভাষায় ছুডু সাইজের বইয়ের মইধ্যে মজা কইরা কাহিনী কইছে বইলা পুরাডা বুঝবার পারছি। বই পইড়া এমন মজা বহুদ্দিন পাই নাই। দুয়েকবারতো পেট ফাইট্টা হাসি বাইর হইছে। কইথ্য ভাষা আর কথার ধরন - দুইডা মিলাইয়া অসাধারণ হইছে বইডা। পইত্যেকটা কথা এক্কেরে দিলের মইধ্যে ঢুইক্কা যায়। হেল্লাইগা আমার মন্তব্যখানও কইথ্য ভাষায়।

ছুডুবেলা থেইক্কা ময়-মুরুব্বিগো দেখছি কৃষ্ণতো বটেই, অর্জুন-যুধিষ্ঠিররেও নমো-নমো করতে। খালি যুধিষ্ঠিররে লইয়া "অশ্বত্থামা হত... ইত গজ" কাহিনীখান আছিলো পান্ডবগো সফেদ কাপড়ে ইট্টুখানি হলুদের দাগ, যেইডা সার্ফ-এক্সেল দিয়াও যায়না। কর্ণের কথা দানশীল আর বড় বীর হিসাবেও শুনছি, তয় অর্জুন যে হেতেরে যুদ্ধের শর্ত ভাইঙ্গা মারছে হেইডা কোনকালেই ইস্পষ্ট আছিলো না। আর কৃষ্ণ নিজেই যে এই চুরামি করতে কইছে হেইডাতো মুরুব্বিরা কোনদিনই আমাগো খোলসা কইরা কয় নাই। দুর্যোধনের উরুতে গদা মারার কাহিনীও টিভিতে দেখছি, তয় মুরুব্বিরা তখন কইছে কেবল উরুই নাকি আছিলো দুর্যোধনের দুব্বল জায়গা, যেইডা বলদ ভীম জানতো না, কৃষ্ণ কইয়া দিছে। আসলে যে হেইডা আছিলো যুদ্ধের নীতির লংঘন হেই কথা ভুলেও কেউ কয় নাই। কেডায় জানে, হইতারে মুরুব্বিরা নিজেরাও জানতো না। অভাজনের মহাভারত যতোই পড়ছি ততোই মনে হইছে, এত চুরি-চোট্টামি কইরাও কৃষ্ণয় ভগবানের জায়গা দখল কইরা বইছে কেম্নে?

মহাভারতের কথা আইলেই মাইনষে খালি কৃষ্ণ-অর্জুন-যুধিষ্ঠির-ভীম-দুর্যোধন-আর-কর্ণের কথা হয়, তয় আমার কিন্তুক সবচে মনে ধরছে ভীমের পোলা ঘটারে। আহা, যেমন তেজ অস্ত্রচালনায়, তেমন তেজ বুদ্ধিতে আর কথাবার্তায়। অভাজনের মহাভারতে এই অভাজনের প্রতি ভালুবাসা জাগাইতে পারা লেখকের ব্যাপক সার্থকতা বইলা মনে হয়।
Profile Image for Tamanna Binte Rahman.
184 reviews140 followers
July 12, 2019
সহজ আঞ্চলিক ভাষায় লেখা মহাভারতের সারাংশ পড়েছি মনে হল। শুদ্ধ ভাষায় পড়ে অভ্যস্ততার কারণে প্রথমে ধাক্কা লেগেছে।

গল্প মোটামুটি ঠিকঠাক থাকলেও লেখক ‘বিকর্ণ’ চরিত্রকে একেবারেই দেখাননি। অথচ যুধিষ্ঠিরের পাশাখেলায় পরাজয়ের কারণে রাজসভায় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের একমাত্র প্রতিবাদ করেছিলেন তিনিই। এর প্রতিবাদে এমনকি তিনি সেই সভাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধেও তিনি কৌরব পক্ষের হয়ে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করেন। ভীম কৌরবদের একশ ভাইকে বধ করবার পণ নিয়ে যখন কুরুক্ষেত্রকে প্রায় শ্মশানে পরিণত করেছেন তখন বিকর্ণ তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে দ্বন্দের আহ্বান জানান। ভীম সেই সভার কথা মনে হতে বিকর্ণকে বলেন “তুমি একমাত্র কৌরব যে জানে ধর্ম কি? তুমি সরে দাঁড়াও আমি তোমাকে বধ করতে চাই না। তুমি একমাত্র যে সেই সভায় একমাত্র দুর্যোধনের প্রতিবাদ করেছিলে।” কিন্তু বিকর্ণ বলেন “আজ আমার সরে যাওয়াটাও অধর্ম হবে, আমি জানি কৌরবদের এই যুদ্ধে জয়লাভ কোনোদিনিই হবে না যেহেতু বাসুদেব কৃষ্ণ পান্ডব পক্ষে আছে, কিন্তু আমি আমার ভাই এবং জ্যেষ্ঠ ভাই দুর্যোধনকে পরিত্যাগ করতে পারব না। আমি ধার্মিক কিন্তু বিভীষণ নই। আমাকে যুদ্ধ করতেই হবে।”

এমন বর্ণিল, ছোট কিন্তু সাহসী, প্রতিবাদী এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা তিনি একজনই ছিলেন সমগ্র মহাভারতে। অথচ তাকে রাখাই হলোনা।

কাহিনী কম-বেশি, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বাদ না দিলে বইটা সহজপাঠ্য। কেউ আরাম করে মহাভারত পড়তে চাইলে নির্দ্বিধায় পড়তে পারবে।
Profile Image for Syeda Ahad.
Author 1 book131 followers
August 24, 2019
মহাভারত পড়েছি বেশ ছোটবেলায় উপেন্দ্রকিশোরের সংস্করণ, তার বেশিরভাগই মনে নেই। এর পরে একটা সম্পূর্ণ সংস্করণ পড়ার ইচ্ছে থাকলেও নানান কারণে - অকারণে হয়ে ওঠেনি। তবে টুকরো টুকরো বিবরণ বা গল্প শোনা বা পড়া হয়েছে অনেকবারই। এই বইটার নাম শুনি আমি মাত্র ১০দিন আগে। বেশ প্রশংসা শুনেই আগ্রহ করে শুরু করি, আর বইয়ের ভাষার কারণে প্রথমে বেশ হোঁচট খাই। তবে শুরুতেই নানান তথ্য আর সরাসরি ভণিতা ছাড়া দেয়া ব্যাখ্যাগুলো পড়ে ডুবে যাই বইতে বলা যায়।

কাজ আর জীবনের কারণে এখন আর আগের মতো এক বসায় টানা বই পড়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। সেই দিক থেকে দেখলে অনেকদিন পর এতো কম সময়ে এমন ঘটনা আর তথ্যবহুল একটা বই শেষ করলাম। সেজন্য সমস্ত কৃতিত্ব লেখনীর। বাস্তবতা আর পৌরাণিক ছোট বড় অসংখ্য ঘটনা, কাহিনী, আর কালের স্রোতে নানান জনের স্বার্থে জমতে জমতে বিশাল থেকে বিশালতর হয়ে যাওয়া এই মহা-কাহিনীকে এরচেয়ে সোজাসাপ্টা কথায় এতো গুছিয়ে লেখা মনে হয় সম্ভব না। বিশেষ করে কবে আর কীভাবে কাহিনীগুলো বা তার অংশবিশেষ বদলেছে, বিভিন্ন প্রধান চরিত্র বিশ্লেষণ, আর এ ব্যাপারে আরও জানতে চাইলে উপযুক্ত তথ্যের রেফারেন্সের ব্যাপারগুলো খুবই ভালো লেগেছে। অবশ্যই পড়ে ফেলার মতো বই, এবং পড়ার আগে অবশ্যই ভূমিকাটুকু পড়ে নিতে হবে, নাহলে এই লেখনীর মর্মই বেশিরভাগ বোঝা যাবে না।
Profile Image for Jahangir.
Author 2 books34 followers
January 17, 2015
অলৌকিক ঘটনায় পূর্ণ মহাভারতকে লৌকিক ও যৌক্তিক ব্যাখ্যার আলোকে দাঁড় করানো একটা অসম্ভব কাজ। এই অসম্ভবকে মাহবুব লীলেন সম্ভব করেছেন অপূর্ব দক্ষতায়। ভাষার ক্ষেত্রে ঠিক মুখের ভাষাকে প্রায় অবিকৃতভাবে ব্যবহার করার দুঃসাহসী কাজটিও তিনি এখানে করেছেন। ছুঁৎমার্গে বিশ্বাসীরা কী প্রতিক্রিয়া দেখাবেন সেটা নিশ্চিত না, তবে নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিতে দেখলে এখানে ভাবনার খোরাক আছে।
Profile Image for Amlan Hossain.
Author 1 book67 followers
June 17, 2017
অলৌকিক নয়, এই মহাভারত লৌকিক। কৃষ্ণ, কৃষ্ণা, কুন্তী, কৌন্তেয়রা এখানে রক্ত মাংসের মানুষ। সব ব্যাপারে ঠিক একমত ন, তবে বাহাস করার উপলক্ষ আছে, এটাই বা কম কী!
Profile Image for Mridul.
45 reviews2 followers
March 8, 2019
"মহাভারত" এর একমাত্র পাঠ সম্বল কৈশোরে পড়া উপেন্দ্রকিশোর রায়ের ক্লাসিক "ছোটদের মহাভারত" । তখন মন সংস্কারাচ্ছন্ন ছিল, এখন যে নেই তা নয় । ক্লাস এইট নাইনে পড়ার সময় একটা ভীতি কাজ করত, ভিন্ন ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পড়ায় নিশ্চয়ই অনেক পাপ হচ্ছে । তবু সেই বয়সে পড়া "ছোটদের রামায়ণ" আর "মহাভারত" এর স্বাদ যেন আজও মনে লেগে আছে ।
প্রথম পাঠ ধর্মগ্রন্থ হিসেবে ছিল বলে ভাল মন্দের সুস্পষ্ট সীমারেখা ছিল । 'পাণ্ডবদের বিরুদ্ধাচারণকারী সকলে নিশ্চয়ই পাপী নরাধম । তাদের বধ করাই ধর্ম ।' 'সত্যের জয় নিশ্চিত আর নায়কদের জয় মানে জনতার জয় ।' এমন ধারণার জন্য এক যুগ আগের 'আমি' কে দোষ দিতে পারি না । তবুও কেন জানি না দুর্যোধনের দৃঢ়তা, জেদ আর একাগ্রতা দেখে ভিতরে ভিতরে পুলকিত হয়েছিলাম । আরেকটা বিষয়- কাউকে একপেশে ভাবে হারতে দেখলে মন কখন পক্ষ পরিবর্তন করে হারু পার্টির পক্ষে যোগ দেয় টের পাই না । (নিজেকে কি বরবরীক মনে করি !!? হা হা !!) তাই এত কিছুর পরও মহাভারতের গল্পে আমি কখনোই কারও পক্ষ নিতে পারিনি ।
মাহবুব লীলেন এর "অভাজনের মহাভারত" আমাকে যেন অনেকটা ভারমুক্ত করল । মহাভারতের সব চরিত্রই মানুষ, কেউ দেবতা নয় - এই বক্তব্য প্রতিষ্ঠাই তার লক্ষ্য মনে হয় । তবে প্রথম দিকে এই সত্য হজম করতে যথেষ্ট ঢেঁকুর তোলা লেগেছে । লেখককে সাধুবাদ । এই পাঠ আমাকে যে কোন বক্তব্য বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে সাহায্য করবে । সত্যি কথা বলতে, একটা ব্যাপারে স্পষ্ট উপলব্ধি হল- লেখক চাইলে যে কোন ঘটনা, বক্তব্য পাঠকের কাছে নিজের মত করে উপস্থাপন করতে পারেন, পাঠককে প্রভাবিত করতে পারেন; এক্ষেত্রে পাঠকের দায়িত্ব যাচাই করে নেওয়া ।
বইয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে কিছু কথা বলি । অনেকেই বইয়ের ভাষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন; অর্ধেক মানুষ প্রশংসা করেছেন, বাকি অর্ধেক নাখোশ হয়েছেন । আমার বেশ ভালই লেগেছে । অনেক চরিত্রের নাম লেখক নিজের মত করে সংক্ষিপ্ত করেছেন । তবে আমার কাছে ভাষা এই বইয়ের মূল অনুষঙ্গ নয় । লেখকের উপস্থাপিত কাহিনী ও ব্যখ্যার জন্যই বইটিকে আমি মনে রাখব ।
লেখা ঝরঝরে । একবার পড়তে শুরু করলে বিরতিহীন ভাবে পড়া যায় । মাঝে মাঝে লেখক ঘটনা বিভিন্ন চরিত্রের মনোলগ আকারে উপস্থাপন করেছেন । এমন করতে গিয়ে অতিরিক্ত আবেগ দেওয়ার প্রয়াস পেয়েছেন । এই বর্ণনাগুলো ভাল লাগেনি । মাখনের মত তেলতেলে লেগেছে । মহাভারতে এত তেল (আবেগ) কেন জানি ভাল লাগেনি । আমার কাছে মহাভারতের চরিত্র মানেই অয়োময় ।
সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ্য বই । শুরু করেছিলাম ভারত ভ্রমণের সময়, বিশেষ করে বলতে গেলে ট্রেনে উত্তর প্রদেশ যেতে যেতে যা শুরু তার শেষ আমার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে এবং দাদী বাড়িতে । একেকটা বই আসলে এক রকম ভ্রমণ, মনের পথে ভ্রমণ ।
Profile Image for Ananya Rubayat.
180 reviews197 followers
February 7, 2018
বাচ্চাকাল থেকে আমার হারুপাট্টির প্রতি দুর্বলতা (ঋষি বর্বরীকের মতন অবস্থা!)। পান্ডবদের কৃষ্ণের উস্কানিতে বিভিন্ন টাইপ দুইনাম্বারি করে জেতা সবসময়েই বড় বিরক্ত লাগতো, বড় হয়ে মহাভারতের এক দুইটা অল্টারনেট পারস্পেক্টিভ পড়ে এখন তা আরও জোরদার। ছোট আকারের মহাভারত, যেগুলি সাধারণত আমরা পড়ি, সেগুলোয় কেমন জানি মহাবীর অর্জুন এগেইন্সট দা কৌরবস ধরণের একটা ধারণা তৈরি করার চেষ্টা ছিল বলে মনে হয়। এই বই-তে অর্জুন খুব কমই সামনে আসে, বরং উঠে আসে ঘটোতকচ, যাকে নিয়ে এত লাইন আর কোথাও খরচা হতে দেখেছি বলে মনে পড়েনা।

বইটা পড়ে যথার্থই বিমলানন্দ পেয়েছি।
Profile Image for আহসানুল করিম.
Author 3 books27 followers
May 24, 2019
প্রথমবার মহাভারতের গল্প শুনেছিলাম বন্ধুর কাছে। সারারাত ঢাকা শহরের পথে পথে হেঁটে। ঘোর লাগা সোডিয়ামের আলোয়। তার অনেকদিন পরে পড়েছিলাম অভাজনের মহাভারত। বন্ধুর মুখে শোনা গল্পের মত প্রাণবন্ত, ভাষা এবং উপস্থাপনায়।
Profile Image for Istiaq.
41 reviews10 followers
November 11, 2020
আহ! দারুণ, দারুণ, দারুণ!
এমন বৈঠকী আলাপে ফেসবুকের পোস্ট পড়েছি অহরহ, কিন্তু গোটা একটা উপন্যাস তাও আবার মহাভারত সম্পূর্ণ অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। পুরো উপন্যাসে কায়দা মেনেই যেভাবে মহাভারতে সব কানুনকে খন্ডিয়েছেন তা সত্যই প্রশংসাযোগ্য। সাথে হিউমারের মিশ্রণতো একদম অপূর্ব। হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গিয়েছিল অনেকগুলো জায়গায়। যদিওবা কার কীভাবে কোথায় ক��র মাধ্যমে ভবলীলা সাঙ্গ হবে তা জানা ছিল, তাও অনেক চরিত্রের বিদায়বেলাতে আবেগী হয়েছিলাম। আর যেভাবে আমরা নায়ক - খলনায়কের চিত্র ধরে বসে থাকি, সেই বিশ্বাসটাও ভেঙে দিলেন লেখক সাহেব।
অর্জুন আসলে নায়ক না, তেমনি খলনায়ক না দুর্যোধন ও - অপরাধ, ভুল দুইপক্ষ করেছে, পার্থক্য শুধু কেউ যুদ্ধে জিতেছে আরে কেউ পরাজিত হয়ে দিয়েছে জীবনের বিসর্জন। অবশ্যপাঠ্য।
Profile Image for Ahmed Reejvi.
78 reviews5 followers
May 7, 2021
প্রথমে ভেবেছিলাম ঢাকাইয়া (!) ভাষায় লেখা বই এটি। পরে লেখকের প্রফাইল দেখে বুঝেছি এই অভিনব মহাভারতের ভার্সনটি সম্ভবত বাংলার পালাগান আর বয়াতি বাউলদের ভাষায় লেখা।
কবে আর কীভাবে কাহিনীগুলো বা তার অংশবিশেষ বদলেছে, বিভিন্ন প্রধান চরিত্র বিশ্লেষণ, আর এ ব্যাপারে আরও জানতে চাইলে উপযুক্ত তথ্যের রেফারেন্সের ব্যাপারগুলো এই বইটিতেই প্রথমে পেয়েছি । ভাষাটি বেশ আপন আপন মনে হয়। আর শ্লেষের রসটাও বেশ উপভোগ করেছি। তবে বইটির উপক্রমণিকা অবশ্যই পড়ে নেয়া উচিৎ।
মহাভারত নিয়ে যুগে যুগে অনেক লেখা আসবে, লীলেন সাহেবের এই বইটি ভিন্ন মাত্রা (dimension) থেকে মহাভারতকে দেখতে সাহায্য করবে। তবে হ্যাঁ, মহাভারত সম্পর্কে জানতে সর্বপ্রথমে এই বইটি রেকমেনড করবো ���া, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর "ছেলেদের মহাভারত" অথবা সেবা প্রকাশনীর ছোটদের মহাভারত" দিয়ে প্রথমে শুরু করা যেতে পারে।
Profile Image for Pritom Mojumder.
36 reviews25 followers
March 18, 2018
অলৌকিক মহাকাব্যকে লৌকিক কাহিনীর উপন্যাসে রূপ দিয়েছেন লেখক। সত্যি কথা বলতে এই মহাভারতের রচনা এখনও শেষ হয় নাই, এর কোনো কপিরাইটও নাই। বাজারে শত শত ভার্সন পাওয়া যায়। তার মধ্যে এইটা একটা!

তো কেন এই ভার্সনটা অন্যগুলো থেকে ইউনিক? কাহিনী তো সব জায়গায় এক!

আসলে এখানে চরিত্রগুলো আমাদের ভাষায় কথা বলে, আমাদের মত করে রাগ ঝাড়ে, আমাদের মত করেই বিলাপ করে। পড়তে পড়তে মনে হয় সেই মহাভারতে সময়ে চলে এসেছি।

উপন্যাসের শুরুর আগে বইয়ের "ভণিতা" অংশেও খুব সহজ ভাষায় মহাভারত ব্যবচ্ছেদ করা হয়েছে। হয়তো সনাতনী লোকদের পুরোটা হজম করতে কষ্ট হতে পারে। ওসব না ভেবে নিছক আনন্দ পাওয়ার জন্য হলেও পড়ে দেখতে পারেন।
Profile Image for Prapti Hiya Nag.
27 reviews3 followers
January 5, 2025
এই বইটি মোট ৩ ভাগে বিভক্ত। ভণিতা, ভণিতা বিস্তার এবং অভাজনের মহাভারত। অভাজনের মহাভারত অংশ নিয়ে আমার তেমন কিছুই বলার নেই৷ কারণ এটা মূল মহাভারতেরই আঞ্চলিক ভাষার সারাংশ। এটাকে অনেকটা আমার ফ্যানফিকশনের মতো মনে হয়েছে। বেশিরভাগ কথোপকথনই লেখকের নিজের বানানো। তিনি শুধু মূল কাহিনীর এসেন্সটা ধরে রেখে এগিয়েছেন। ভালোই লেগেছে।

তবে আমার যা বলার তা আমি ভণিতা আর ভণিতা বিস্তার নিয়ে বলব। এই অধ্যায়গুলো লেখক তাঁর ব্যক্তিগত মতামত এবং অন্য বড় বড় লেখকদের রেফারেন্স থেকে নিয়ে লিখেছেন। এখানে কয়েকটা জিনিস নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলতে চাই।

১। তিনি লিখেছেন যে মহাভারত রামায়ণের থেকে পুরোনো। সেটার যুক্তি হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন যে মহাভারত পুরোটাই শৈব হলেও এখানে বৈষ্ণব যুগের শুরুর একটা ইঙ্গিত আছে কৃষ্ণের মাধ্যমে। আর রামায়ণ একদমই বৈষ্ণব। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু তিনি বলেন যে বৈদিক যুগের পর শৈব যুগ এবং তার পর বৈষ্ণব যুগ। তাঁর মতে মহাভারতেই শিবের ওপর মহাদেবত্ব আরোপ করা হয়। কিন্তু বিষয়টা ঠিক এমন নয়। মহাভারতে এমন উপাদান আছে যেখান থেকে বোঝা যায় যে মহাভারত প্রাক-বৈদিক বা সিন্ধুসভ্যতার যুগের৷ গুহায় থাকা, গাছের ছাল-বাকল পরা, কুড়ে ঘরে থাকা, তামার অল্পবিস্তর ব্যবহার (কর্ণের অভেদ্য বর্ম এবং দ্রৌপদীর সূর্যপ্রদত্ত হাঁড়ি), মায়েদের নামে সন্তানদের পরিচয়, নারীর একাধিক বিবাহ কিংবা একাধিক পুরুষের শয্যাসঙ্গী হওয়া, নারীর বিবাহপূর্ব সন্তান এসবই মহাভারতকে সিন্ধুসভ্যতার সমসাময়িক করে তোলে। এমনকি সিন্ধুসভ্যতার যুগে লোকে মৃতদেহের সাথে কুকুরকে কবর দিত। সেটারই হয়তো একটা উপমা হলো যুধিষ্ঠিরের সাথে কুকুরের নরকযাত্রা। তো সেই সিন্ধুযুগে উপবিষ্ট উত্থিতলিঙ্গ শিবই ছিলেন আরাধ্য৷ এই ভূমির সবচেয়ে পুরোনো দেবতাদের মধ্যে হর-পার্বতীই অন্যতম৷

২। মহাভারতের যে ভরত তিনি খুব সম্ভবত কুরুভরত বংশের সেই শক্তিশালী রাজা যার বদৌলতে সেযুগে উত্তর ভারতে একধরনের শান্তি স্থাপন হয়। তবে বাস্তবে এই ভরত মহাভারতের অনেক পরের লোক। তাঁর কারণেই হয়তোবা মহাভারতের একটা ভারতীয়করণ হয়। নয়তো এর আগে এটা ৮০০০ শ্লোক নিয়ে জয় নামে পরিচিত ছিল। এরপরে কলেবর আরেকটু বড় হয়ে ভারত নাম নেয় এবং সর্বশেষে মহাভারত। এই পয়েন্টগুলো লেখক এড়িয়ে গিয়ে স্পিতামা, অঙ্গিরা আর ভার্গবদের যে কাহিনীটা ঝাড়লেন তাতেই বইটায় একটা বিশাল ভজকট তৈরি হয়।

৩। গোত্রপরিচয়বিহীন অগাস্টাস যখন রোমান সম্রাট হলেন তখন তাঁর একটা বংশপরিচয়ের দরকার ছিল। যেকারণে তিনি ভার্জিলকে নিয়োগ করেন ইনিড লেখার জন্য যেখানে ভার্জিল দেখান যে অগাস্টাসের পূর্বপুরুষ দেবতার বংশধর। ঠিক এই ঘটনাটাই আসলে মহাভারতের কর্ণের সাথে হয়েছে। মগধের শূদ্ররাজার নিজেকে ক্ষত্রিয় দেখানো থেকে সূর্য এবং কুন্তীর কাহিনীর উৎপত্তি। নাহলে মহাভারতের যুগে কানীনপুত্র (স্ত্রীর বিবাহপূর্ব সন্তান) স্ত্রীর বৈধ স্বামীরই পুত্র হিসেবে গৃহীত হতো সমাজে। সেই হিসেবে পাণ্ডু যখন নিঃসন্তান ছিলেন তখনো কুন্তী কেন কর্ণের কথা বলবেন না? বিশেষত যেখানে কথাটা ভীষ্ম, দ্রোণদের মতো বয়োঃজ্যেষ্ঠরা জানতেন। আসলে মগধের সেই কর্ণ (মহাভারতের চরিত্র নন) তিনি রাধা আর অধিরথেরই ছেলে। খুব সম্ভবত রাধার বিবাহপূর্ববর্তী সন্তান। সেক্ষেত্রে আমার ধারণা হলো দূর্বাসা আর রাধার সন্তান হলেন মহাভারতের কর্ণ। কারণ কর্ণের উগ্রমেজাজ দূর্বাসার সাথেই যায়।

৪। সে যুগে এতো বড় যুদ্ধ কোনোভাবেই হয় নি লেখকের এই কথার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। ছোটখাটো লাঠালাঠি, গুঁতোগুঁতি যা হয়েছে তাতে কুরুরাই জয়ী হয় এবং কেউ হয়তো সেভাবে হতাহতও হয় না।সেজন্যই কিন্তু মহাভারত পড়লে মনে হয় যেন কুরুরাই সবচেয়ে বড় বীর। আর পাণ্ডবরা সব কাপুরুষের দল। যুদ্ধের প্লট গুপ্তযুগের কবিদের দুর্বল কল্পনাশক্তির ফলাফল। তাছাড়া এতে এতো বড় বড় প্লটহোল থাকত না।

৫। আমার ব্যক্তিগত মতামত আছে যুদ্ধে বিজয়ী পক্ষের ব্যাপারে। আসলে কৃষ্ণের ওপর ঈশ্বরোত্ব আরোপের জন্যই এই যুদ্ধকে যথেচ্ছভাবে বৈষ্ণবরা এডিট করে। এমনকি গীতাকেও প্রক্ষেপ করা হয়। মূলত যেটা হয় তা হলো পাণ্ডবদের পরাজয় এবং পরে কৃষ্ণের ইন্দ্রপ্রস্ত থেকে বিতাড়ন। বিতাড়নের ঘটনা মহাভারতেই আছে। কিন্তু কৃষ্ণের চ্যালাচামুণ্ডাদের তো এটা দেখালে চলে না যে তাদের ভগবান পরাজিত। তারা তাই কাঁচা হাতে যুদ্ধের ফলাফল এডিট করে। কৌরবদের নাম এডিট করে।আর কৃষ্ণের ভাগ্নে অভিমন্যুর পুত্র পরীক্ষিৎকেই করে হস্তিনাপুরের রাজা। সন্দেহ হয় না কেমন করে কৌরব এবং পাণ্ডবদের বাকি সব সন্তানসন্ততি মরে গিয়ে অভিমন্যুপুত্রই ক্ষমতায় বসলো? তাও আবার তার জন্মটাও হয় যুদ্ধের পর যেন তাকেই নির্ঝঞ্ঝাটে রাজা বানিয়ে দেওয়া যায়? এবং মহাভারতকে ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে কৌরব বা পাণ্ডব কেউই এখানে নায়ক নয়। এই যুদ্ধের নায়ক কৃষ্ণ যিনি এ যুদ্ধে সারথীমাত্র। এখানে কৃষ্ণেরই জয়জয়কার। কারণ যারা এই মহাভারত কাটাছেঁড়া করেছেন তারা কেয়ারও করেননি পাণ্ডবদেরকে ছ্যাঁছড়া দেখা গেলো না কৌরবদেরকে মহান দেখা গেলো। তাঁদের লেখনির অদক্ষতার সুযোগে কর্ণ হয়ে যান পরাজিত হয়েও ট্র‍্যাজিক হিরো আর দূর্যোধন থেকে যান সত্যবাক। জয়ী যদি আসলেই পাণ্ডবেরা হতো তবে বইতে শত্রুপক্ষের এতো গুণকীর্তন দেখা যেতো না।

সবশেষে এটাই বলব যে লেখক আসলে উপরে উপরে থেকেই বইটা শেষ করেছেন। তিনি চাইলে আরো গভীরে যেতে পারতেন। তবে মূল মহাভারতের কাহিনী তিনি যেভাবে বর্ণনা করেছেন তাতে আমি বইটা শেষ না করা পর্যন্ত রেখে উঠতে পারিনি। ভালোই লেগেছে মোটের ওপরে।
5 reviews
February 22, 2022
প্রথম মহাভারত পড়া উপেন্দ্রকিশোরের ছেলেদের মহাভারত। ধর্মীয়ভাবধারণা অক্ষুন্ন রেখেই লেখক যা লিখেছিলেন তাতে ভালো খারাপ বিচারে যাইনি।
অভাজনের মহাভারতে লৌকিকতার মানদন্ডে মহাভারত পড়ার পরে যে বিষয়গুলোতে কিছুটা খটকা/দ্বন্দ ছিলো তা অনেকাংশেই কেটে গেছে। শতভাগ পরিপূর্ণ সৎ মানুষের অস্তিত্ব হয়তো কোথাও নেই, কুরুপুত্র দুর্যোধন তার রাজত্বকালে যেভাবে পান্ডববর্গকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে, যুদ্ধের সময় পান্ডববর্গের অবৈধ আচরনগুলো আবার তাদের আসল রূপ তুলে ধরেছে।
দিনশেষে কর্ন আর ঘটোৎকোচই একমাত্র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা ধরে রেখেছে।

লেখকের ভাষা ব্যবহারের বৈচিত্রতাই বইটিকে আরো অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।
Profile Image for সৌমিত্র বিশ্বাস.
115 reviews7 followers
February 16, 2021
ইন্টারনেটে ঘুরতে ঘুরতে কোথায় যেন বইটার একটা ই-পাব সংস্করণ পেয়ে গেছিলাম। কিছুটা তাচ্ছিল্যভাব নিয়ে পড়া শুরু করলাম। 'ভনিতা'র প্রথম অনুচ্ছেদ পড়েই চমকে গেলাম। আরেব্বাস ! ! ! এ কি জিনিষ ! ! ব্যাস আর কোন কথা নয়। প্রায় আড়াই'শ পাতার বইখানি একটানা পড়েই গেলাম।
শুধু একটা কথাই বলব, অসাধারণ! ভাষা চমৎকার, বিশ্লেষণ চমৎকার সবকিছুই চমৎকার।
যারা শুধুমাত্র মহাভারত পড়েছেন। তাদেরকে অনুরোধ করব মাহবুব লিলেনের এই বইটি অবশ্যই পড়তে। মহাভারতের চরিত্রগুলোকে নতুন দৃষ্টিতে দেখার একটা সুযোগ পাবেন। হয়তো সব ব্যপারে লেখকের সাথে একমত হতে পারবেন না, বিশেষ করে যারা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মহাভারত বিচার করেন।
Profile Image for Shahin S. Eity.
27 reviews14 followers
Read
February 16, 2022
কিশোরবেলায় যখন সেবা প্রকাশিত "ছোটোদের মহাভারত" পড়েছি - তখনই নানারকম বিদ্রোহী, কৌতুহলী প্রশ্ন মনে এসেছে। পরধর্মে নিজ নাসিকা চর্চা শোভন নয়। তবে, পর ব্লগে অভাজনের মহাভার পড়েছি তখন বেশ লেগেছে। পূর্ণাঙ্গ বই প্রকাশের জন্য লেখককে অভিনন্দন।
Profile Image for Tahsina Alam.
108 reviews
December 8, 2019
মাহবুব লীলেন পুরাই চায়ের দোকানে বেঞ্চে বসে গল্প করার মত করে বলে গেসে সব। তার নিজের অপিনিয়ন আর রিসার্চের ব্যাপারগুলাও চলে আসছে বইয়ের ভণিতায়।
পয়সা উসুল বই
Profile Image for Ayon Bit.
147 reviews13 followers
July 14, 2020
ভাষা শৈলী অত্যন্ত বিরক্তি কর। কিন্তু মহাভারত নিয়ে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া আছে৷
Profile Image for Fahad Ahammed.
386 reviews44 followers
August 13, 2020
পড়াম এবং মুগ্ধ হলাম,
অনেক টা আসল এবং জয়করে চলে গেলোর মতো অবস্থা। অসাধারণ লেগেছে।
3 reviews1 follower
October 8, 2020
কথিত ভাষার ঢঙে লেখা মহাভারতের চরিত্রদের নিয়ে লেখকের খেলা প্রশংসার দাবিদার।
Profile Image for লোচন.
207 reviews56 followers
December 17, 2020
এইরকম একটা রিটেলিং পড়তে পাইলে আর কি লাগে! প্যায়সা উসুল, বাবুজি 😊
Displaying 1 - 30 of 39 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.