Jump to ratings and reviews
Rate this book

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা

Rate this book
আধুনিক বাংলা কবিতার ভুবনে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের যে বিচিত্র ও বর্ণময় পদচারণা রয়েছে সে সম্পর্কে পাঠক-পাঠিকার কৌতূহল কম নয়। কবিতার শরীর নির্মাণ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় যে বিবিধ অনুষঙ্গ ও প্রকরণ শক্তি দান করেছেন তার প্রতিও রয়েছে বিপুল আগ্রহ। সেই কৌতূহল ও আগ্রহ মেটাবার লক্ষ্যেই প্রকাশিত হয়েছে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার এই সংকলনটি।

এই সংকলনটি ১৯৭৩ সালের মার্চে প্রথম প্রকাশিত হয় এবং লেখকের অনুমতিক্রমে ১৯৮৫ সালে বইটির বাংলাদেশ সংস্করণ প্রকাশ করে নওরোজ সাহিত্য সংসদ ঢাকা।

208 pages, Hardcover

First published March 1, 1973

44 people are currently reading
702 people want to read

About the author

Shakti Chattopadhyay

66 books106 followers
শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর জন্ম ২৫ নভেম্বর ১৯৩৩, বহড়ু, চব্বিশ পরগনা। শৈশবে পিতৃহীন। বহড়ুতে মাতামহের কাছে ও বাগবাজারে মাতুলালয়ে বড় হন। পড়াশোনা: বহড়ু হাইস্কুল, মহারাজা কাশিমবাজার স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ; যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যে অধ্যয়ন অসমাপ্ত। বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় ‘যম’ কবিতা লিখে (১৯৫৬) সাহিত্যজগতে প্রবেশ। যুক্ত ছিলেন কৃত্তিবাস পত্রিকার সঙ্গে। ‘কবিতা সাপ্তাহিকী’ পত্রিকা প্রকাশ করে আলোড়ন তুলেছিলেন কবিতাজগতে৷ প্রণীত, অনূদিত-সম্পাদিত কবিতা ও গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক, তা ছাড়া অজস্র অগ্রন্থিত রচনা ছড়িয়ে আছে পত্রপত্রিকায়। পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার, সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গঙ্গাধর মেহের পুরস্কার, মরণোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার। জীবিকাক্ষেত্রে সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত ছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে। অতিথি-অধ্যাপক হিসেবে বিশ্বভারতীতে সৃষ্টিশীল সাহিত্যের অধ্যাপনায় রত থাকাকালীন অকস্মাৎ হৃদরোগে শান্তিনিকেতনে মৃত্যু, ২৩ মার্চ ১৯৯৫।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
83 (52%)
4 stars
39 (24%)
3 stars
18 (11%)
2 stars
8 (5%)
1 star
9 (5%)
Displaying 1 - 13 of 13 reviews
Profile Image for রিফাত সানজিদা.
174 reviews1,357 followers
October 30, 2017
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা নিয়ে লেখার কিছু নেই। কবিতা নিয়ে লেখার মতো বিদ্যেবুদ্ধিও অন্তত আমার নেই। কবিতা তো বোধের বাইরের জিনিস, যুক্তির সীমার ওপারের বস্তু। জীবনে যত কবিতা পড়েছি, বিশ্লেষণের চেষ্টাও করিনি তাই। কবিতা এবং 'কোবিতা' একজনের কাছে ধরা দেয় একভাবে। মাহবুব আজাদ লিখেছিলেন না একবার, কবিতার শক্তি এখানেই, ইট ড্রিলস ইটস ওয়ে টু দা হার্ট?
সেজন্যেই সৈয়দানার অতি কাব্যগন্ধী উপন্যাস 'শবনম' আমার অতীব প্রিয়, আবার কারো কাছে হ্যাক ছিঃ, দুর্বোধ্য ইত্যাদি ইত্যাদি।

মূল প্রসঙ্গ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। শক্তির কবিতা প্রিয়, বেশকিছু কবিতা ('চাবি' বা 'অবনী বাড়ি আছো') ভীষণ বেশি, সেগুলোও মূল আলোচ্য নয়। শুধু একটা কবিতার কথা লিখে রাখি।

আনন্দ ভৈরবী।

কী অদ্ভুত একটা কবিতা, কী অদ্ভুত! আরো অদ্ভুত ছিল এই কবিতা নিয়ে পড়া একটা রিভিউ, আহমেদ মোস্তফা কামালের লেখা। কী ভীষণ সুন্দর করে যে লিখেছিলেন! হারিয়ে ফেলেছি লিংকটা, কিন্তু এখনো লাইনগুলোর গন্ধ ঝাঁ ঝাঁ করে নাকে বাজে।
ওই রিভিউটা পড়ার পর মনে হয়েছিল এতদিনে বোধহয় এ কবিতাটার মূল মানে ধরতে পেরেছি।
কি রকম হাহাকার মাখা কবিতাটার এই কটা লাইন--
সে কি জানিতোনা যত বড় রাজধানী
তত বিখ্যাত নয় এ হৃদয়পুর
সে কি জানিতোনা আমি তারে যত জানি
আনখ সমুদ্দুর।

আনখ, মানে পা থেকে মাথা পর্যন্ত। মানে নিঃশ্বাসের মতো যাকে জানি! সবচেয়ে বেশি যাকে জানি। যে জানে রাজধানীর মতো বিশাল কিছু আমি নই, অসামান্য কিছু নই,আমি নিতান্তই সাধারণ। এক্সক্লুসিভ নই, এক্সট্রা অর্ডিনারি নই, জাস্ট ক্যাজুয়াল। পাশের বাড়ির জন যেমন হয়, ঘরোয়া, আটপৌরে। সেও জানতো সবই, তাকেও আমি।
সব-ই ছিল জানা, তবুও ছেড়ে গেল কেন?

আমার Seasonal affective disorder (SAD) আছে,, seasonal depression অন্যকথায় যাকে বলে। মেঘলা দিনে কঠিন মন খারাপ থাকে, গ্লুমি ওয়েদারে হয় মুড অফ। সবসময়-ই।

এরকম মেঘলা, অন্ধকার, আলোহীন দুপুরে, শীতে কাঁপতে কাঁপতে আইসিডিডিআরবির ছ'তলায়, রিক্রুটমেন্ট টেস্টের গার্ড দিতে গিয়ে অফিসিয়াল তাবৎ ইস্যু বাদ দিয়ে তাই শক্তির পদ্য মাথায় ঘোরে, খামোখাই।
ঘুরতেই থাকে, ঘুরতেই থাকে।

নিচে, চাতালঘেরা উদ্যানে দোলে বরষাপীড়িত ফুল, আনন্দ ভৈরবী...
Profile Image for Nadia Jasmine.
213 reviews18 followers
September 17, 2021
শক্তির কবিতায় ঠিক কি যে আছে, আর যা আছে সেটার নাম আছে কিনা বলা মুশকিল। সাহসী ও কবিতায় সচরাচর ব্যবহৃত হয় না, এমন সব শব্দ শক্তি অনায়াসে ব্যবহার করেন। কখনো কখনো পরিচিত ছন্দোবদ্ধ কবিতা লিখতেও দ্বিধা করেন নি। কিছু দীর্ঘ কবিতাও পেয়েছি এই সংকলনে। আর কাছের কারোর বা শ্রদ্ধার কোন পাত্রর মৃত্যুতে লেখা কবিতাগুলো পড়লে শক্তি এই মানুষগুলোকে কতো নজর করে দেখেছিলেন, এদের অস্তিত্ব তাঁকে কতো নাড়া দিয়েছিল, তা বোঝা যায়।

সুনীল না থাকলে শক্তিকে চেনা হতো কিনা জানি না। সুনীলের ‘যুবকযুবতী’ (নাকি যুবকযুবতীরা?) উপন্যাসে শক্তির আদলে তৈরি একটি চরিত্র ছিল, যে কবিতায় ‘হ্যাঁচকা’ শব্দটি ব্যবহার করতো। না, সুনীল ওভাবে কোথাও বলেন নি, বললেও পড়ি নি, কিন্তু, চরিত্রটির ক্ষ্যাপামী দেখে আন্দাজ করেছিলাম, এটাই শক্তির ছায়া।

কবিতার বইয়ের ব্যাপার হল, কখনো শেষ হয় না। যতোবার ফিরে যাব, ততোবার জানি নতুন মনে হবে শক্তির এসব অস্থির করা, চিন্তায় ফেলে দেওয়া ও কখনো আলটপকা শব্দবুনন। তাঁর কবিতার লাইনও তাঁর মতোই চলে যেতে পারে, কিন্তু, ‘যাবে কেন?’ ভেবে মনে থেকে যায়।
Profile Image for Zabir Rafy.
312 reviews10 followers
August 16, 2025
বছর জুড়েই একের পর এক কবিতায় শব্দ, ছন্দ আর পঙক্তিমালায় মুগ্ধ করে গেছেন শক্তি চাটুজ্জ্যে মশাই। শক্তির কবিতার শক্তি আছে বটে।

রেটিং : ৪.৫/৫
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,770 reviews357 followers
July 9, 2025
পুনর্পাঠের আলোকে বই পর্যালোচনা
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা — এক জ্বলন্ত নদীর ভিতর দিয়ে হাঁটার গান

এখন খাদের পাশে রাত্তিরে দাঁড়ালে
চাঁদ ডাকে : আয় আয় আয়

এখন গঙ্গার তীরে ঘুমন্ত দাঁড়ালে
চিতাকাঠ ডাকে : আয় আয়

যেতে পারি
যে কোনো দিকেই আমি চলে যেতে পারি
কিন্তু, কেন যাবো?

সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো

যাবো
কিন্তু, এখনি যাবো না
তোমাদেরও সঙ্গে নিয়ে যাবো
একাকী যাবো না, অসময়ে।

“যেতে পারি / / কিন্তু, কেন যাবো?”—বাংলা কবিতার ইতিহাসে এমন প্রশ্ন এতটা একাকী, সাহসী আর সংবেদনশীলভাবে আর কেউ করেনি। এই প্রশ্নটা শুধু একটি কবিতার পঙ্‌ক্তি নয়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সমগ্র কবিজীবনের ছায়া—এক নিরন্তর আত্মজিজ্ঞাসা, সময় ও মৃত্যু সম্পর্কে ভাবনা, এমনকি নিজের কবিতা সম্পর্কে নিজের সন্দেহ। আর এই প্রশ্নের শিরায় শিরায় যে কাব্যরক্ত প্রবাহিত, তারই নীরব সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় শ্রেষ্ঠ কবিতা—শক্তির একান্ত সংকলন, যা কেবল তাঁর শ্রেষ্ঠ নয়, বাংলা কবিতারও এক মহার্ঘ সম্পদ।

এই বই শুধু কবিতার সংকলন নয়, এটি এক অন্তর্জাগতিক মানচিত্র। এখানকার প্রতিটি কবিতা যেন একেকটি পাথর—কখনো নরম, কখনো রুক্ষ, কখনো রক্তাক্ত। কিছু কবিতা হৃদয়ে ঝিরিঝিরি জলের মতো ছুঁয়ে যায়, আবার কিছু এসে মানে খোঁজার ভিতরকার মিথ্যেটাকে ভেঙে চুরমার করে দেয়। শক্তির কবিতায় যেন অর্থ নয়, অনুভব মুখ্য।

শক্তির কবিতা মানে অবিরত টানাপোড়েন।

"বাগানের গাছটিও বাড়বে রোদ্দুরে বৃষ্টিতে / আমার ফুল ফুটবে তুমি সৌরভ পাবে না"—এই লাইন পাঠ করার মুহূর্তে আপনি এক আর্ত চিৎকার শুনতে পাবেন, যা শহুরে নিঃসঙ্গতার গলিতে আটকে পড়া প্রণয়ের ব্যর্থ সুর। কখনও কবিতা হয়ে ওঠে “শিউলির স্তূপ”, কখনও তা এসে ধাক্কা মারে “আনন্দ ভৈরবী”-র বিষণ্ণ দুপুরে—যেখানে কবি জানেন, তাঁর হৃদয়পুর কোনো রাজধানী নয়, তবুও সেখানেই সবচেয়ে প্রগাঢ় আবেগ থাকে।

শক্তি = প্রেম + শহর + নিঃসঙ্গতা + মৃত্যু

এই বইতে প্রেমের উপস্থিতি কখনো অতর্কিত, কখনো ধীরে ধীরে ধোঁয়ার মতো মুছে যেতে থাকে। "ভালবাসা পেলে সব লণ্ডভণ্ড করে চলে যাবো"—এই এক পঙ্‌ক্তিতেই প্রেমের সমস্ত উন্মাদনা, অপমান, অভিমান, অভিশাপ মিশে থাকে। আর মৃত্যু? শক্তির কবিতায় মৃত্যু কোনো গা-ছমছমে বিষণ্ণতা নয়, বরং এক অদ্ভুত আলো—এক স্বস্তিকর স্বীকৃতি। "সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো"—এই লাইন শুধু মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছা নয়, এটা জীবনকে কবি যতটা ভালবেসেছেন, তারও এক অনুপম প্রমাণ।

“এই কবিতা কি বোঝা যায়?” – প্রশ্নটাই ভ্রান্ত।

শক্তির কবিতা বোঝা যায় না—এই ধারণা যেমন ভুল, তেমনি প্রমাণ যে তিনি সত্যিই একজন ব্যতিক্রমী কবি। তাঁর কবিতায় আপনি পাবেন “অভাঙা”, “সমূহ হরিণ”, “অমোঘ মুঠো”—এর মতো শব্দবন্ধ, যেগুলো অভিধানে নেই, অথচ চেতনায় নাড়া দিয়ে যায়। শক্তির কবিতা একেকটি আবেগঘন স্প্ল্যাশ পেইন্টিং—তাতে কেউ যদি ভালোবাসা খুঁজে পায়, কেউ শূন্যতা, কেউবা নিছক বিস্ময়। আপনি তাকে না বুঝেও ভালোবাসতে পারেন, কারণ ব্যাখ্যার বাইরেও একটা চুম্বকত্ব থাকে তাঁর ভাষায়।

হ্যাঁ, কেউ কেউ বলবেন, তিনি “ব্যক্তিক ছিলেন”, “অতিরিক্ত মাতাল ছিলেন”, “বোহেমিয়ান ছিলেন”। কিন্তু তা��রা হয়তো জানেন না, এই মাতাল কবি নিজেই বলতেন, “আমি শক্তির মড়া।” আর তাঁর বন্ধুরা বলতেন, “ঈশ্বরের ভয়ংকর প্রতিদ্বন্দ্বী।”

তিনি কবি নন, তিনি নদী।

এই সংকলনের কবিতাগুলো এক জায়গায় থাকে না। তারা স্রোত, তারা মেঘ, তারা ঝড়। “মনে মনে বহুদূর চলে গেছি – যেখান থেকে ফিরতে হলে আরও একবার জন্মাতে হয়”—এই লাইন স্পষ্ট করে দেয়, শক্তি নিজেই এক চিরপুনর্জন্ম, তাঁর কবিতা মানে নিজেকেই বারবার ফিরে পাওয়া।

‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ মানে শ্রেষ্ঠ চেতনার দলিল।

এই বই শুধু কাব্যপাঠ নয়, এটি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের গভীর ট্রাজেডি, প্রেম, অভিমান, আনন্দ ও মৃত্যু নিয়ে এক ধ্রুপদী শোকগাথা। সাধারণ পাঠকের কাছে এটি হয়তো বিষণ্ণতার মিশ্রণ, কিন্তু গভীর পাঠকের কাছে এটি এক রক্তমাংসের বিদ্রোহ। এই বই পড়া মানে শক্তিকে বহন করা, যেমন কেউ ভালোবাসাকে বুকের ভেতর বহন করে, ব্যাখ্যা না করেও।

শেষে এসে বলা দরকার—শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা না পড়া মানে বাংলা কবিতার অর্ধেক ইতিহাস না জানা।
এটি এমন এক বই, যাকে পড়লে শুধু কবিতা পড়া হয় না—হয়ে ওঠে আত্মদর্শনের অভিজ্ঞতা। শক্তি নিজেই যেমন লিখেছিলেন, “যাবো, কিন্তু এখনই যাবো না”—এই বই-ও তেমন। আপনি যখনই ফিরে যাবেন, নতুন করে খুঁজে পাবেন নিজেকে। আর শক্তির কবিতা? সে-ও আপনাকে খুঁজে নেবে। বারবার, বারবার।

“ভালোবাসা শুধু ভালোবাসা নয়, জীবনরেখার মতো / সেই রেখা আঁকতে আঁকতে কবি হয়ে ওঠে মানুষ।” — আমরা, যারা এখনো শক্তিকে পাঠ করি

অলমতি বিস্তরেণ।
Profile Image for Akash.
446 reviews149 followers
April 19, 2023
মনে মনে বহুদূর চলে গেছি – যেখান থেকে ফিরতে হলে আরো একবার জন্মাতে হয়
জন্মেই হাঁটতে হয়
হাঁটতে-হাঁটতে হাঁটতে-হাঁটতে
একসময় যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেখানে পৌঁছুতে পারি
পথ তো একটা নয় –
তবু, সবগুলোই ঘুরে ফিরে ঘুরে ফিরে শুরু আর শেষের কাছে বাঁধা
নদীর দু – প্রান্তের মূল
একপ্রান্তে জনপদ অন্যপ্রান্ত জনশূণ্য
দুদিকেই কূল, দুদিকেই এপার-ওপার, আসা-যাওয়া, টানাপোরেন –
দুটো জন্মই লাগে
মনে মনে দুটো জন্মই লাগে

(১৯ এপ্রিল, ২০২৩)
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,864 followers
April 20, 2023
"বাগানের গাছটিও বাড়বে রোদ্দুরে বৃষ্টিতে
আমার ফুল ফুটবে তুমি সৌরভ পাবে না
পুকুর ভাসবে সবুজ পানার নিরুৎসুক দৃষ্টিতে
মুখ আমার ভাসবে আলোর গৌরব পাবে না"
'অতিজীবিত' নামের এই অনালোচিত কবিতাটা দিয়েই শুরু করা যাক। আমাদের, মানে বাঙালির মনের কত ভাব, কত কথা, কত লুকোনো ব্যথার ছায়াঘেরা স্মৃতি ফুটে ওঠে এই লাইনগুলোতেই, তাই না?
এটাই শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাব্যের বিশেষত্ব। অন্তত আমা-হেন অরসিক এই কবিতাগুলোতে এমন জিনিসই খুঁজে পায়। চিত্রকল্পের বর্ণাঢ্য দুনিয়া নেই এখানে। নেই রূপকের ঝলক বা রাজনীতির ধার। এমনকি প্রেমে-অপ্রেমেও সে বড়ো বেশি বাঙালি~
"পা থেকে মাথা পর্যন্ত টলমল করে, দেয়ালে দেয়াল, কার্নিশে কার্নিশ,
ফুটপাথ বদল হয় মধ্যরাতে,
বাড়ি ফেরার সময়, বাড়ির ভিতর বাড়ি, পায়ের ভিতর পা, বুকের ভিতর বুক,
আর কিছু নয়।"
এইসব সুখ-দুঃখ, এমন নানা আলো আর অন্ধকার, দিন আর রাত্রির মধ্য দিয়ে পাতা উলটে যায়। শক্তি আমাদের নিয়ে চলেন অভ্যস্ত দিনযাপনের ঘেরাটোপ থেকে অন্য কোথাও। তাঁরই সঙ্গে আমরাও ভাবি~
"অদ্ভুত ঈশ্বর এসে দাঁড়িয়েছেন মৃণ্ময় উঠোনে
একদিকে শিউলির স্তূপ, অন্যদিকে দ্বাররুদ্ধ প্রাণ
কার জন্য এসেছেন—
কেউ কি তা স্পষ্ট করে জানে?"
আমরা ভাগ্যবান যে নিতান্ত অনায়াসে মাতালের তকমায় চিহ্নিত করে দেওয়া মানুষটির এইসব সৃষ্টি পড়তে পারি। আমরা ভাগ্যবান যে শক্তি চট্টোপাধ্যায় এই বাংলায় কবিতা লিখে গেছেন— যা পড়ার জন্য আমাদের অনুবাদকের কৃপার উপর নির্ভর করতে হয় না।
আমরা ভাগ্যবান যে এইসব অক্ষর, শব্দ, বাক্য, জীবন দু'মলাটের মাঝে বাঁধা পড়ে আমাদের হাতে এসে ওঠে।
Profile Image for Tamanna Binte Rahman.
184 reviews140 followers
December 2, 2022
অনেকদিন পরে বাংলা কবিতার বই নিয়ে বসা হল। শুরুটাই হল

“প্রিয়, ফুল খেলবার দিল নয় অদ্য
ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা,
চোখে আর স্বপ্নের নেই নীল মদ্য
কাঠফাটা রোদ সেঁকে চামড়া।”

বন্ধুরা মিলে কোরাসে আবৃত্তির সেই দিনগুলো যখন তারুণ্যের দীপ্তশিখায় ভর করে সকল অন্যায়কে দমন করবার জন্য ইচ্ছেগুলো বেঁচে ছিল তা মনে পড়ে গেল। আরেকটা প্রিয় কবিতাও এখানে আছে-

“ফুলগুলো সরিয়ে নাও,
আমার লাগছে
মালা
জমে জমে পাহাড় হয়
ফুল জমতে জমতে পাথর
পাথরটা সরিয়ে নাও,
আমার লাগছে।”

কত কতবার সন্ধ্যায় এই কবিতা পড়তে পড়তে হারিয়ে গেছি তার ইয়ত্তা নেই। আমার লাগছে, আমার লাগছে। কিংবা সেই কবিতাখানা-

“এ কলকাতা শহরে
অলিগলির গোলকধাঁধায়
কোথায় লুকিয়ে তুমি,
সালেমনের মা?”

যেন সবসময় কানের কাছে কেউ একজন সারাক্ষণ খুঁজে চলছে সালমনের মাকে। কবির লেখা নিয়ে লেখার আস্পর্ধা নেই। শুধু ভালবাসা জানাই।
Profile Image for অ্যালেন সাইফুল.
Author 2 books19 followers
July 17, 2017
শক্তি চট্টোপাধ্যায় !
এই নামটাই যেখানে কবিতাপ্রেমীদের জন্য একটা নেশা- সেখানে 'শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা' নামক বইটা ক্যামন হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
Profile Image for Shaon Arafat.
131 reviews31 followers
April 14, 2019
অসাধারণ এক একটি কবিতা! কবিতার ঝাঁঝে জর্জরিত দুনিয়া।

জীবনানন্দের পরে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের নাম উঠে এলো সবচেয়ে প্রিয় কবিদের তালিকায়।
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
March 19, 2025
কবিতা বুঝি না। তত্ত্ব পড়িনি কখনো। কিভাবে একটি কবিতা আধুনিক হয় আর কিভাবেই বা উত্তর-আধুনিক, সেটার জ্ঞান নেই। আমার কাছে ভাল কবিতা হচ্ছে সেইসব কবিতা, যা পড়ে তৃপ্তি পাওয়া যায়।

শক্তির কবিতাগুলো তৃপ্তি দিতে পারে।
Profile Image for Mithun Samarder.
155 reviews2 followers
September 28, 2025
সারি সারি মানুষ বসে আছে
গাছ পালার সারি ডালে পাখি বসেছে
গান গাইছে শরতের আকাশ
সবুজ সার খেতে বড় হচ্ছে লকলকে লতা
আমার খারাপ সময়ের কাল
ও গনেশ এখনো মনে পড়ে কৈশোর এবং যৌবনের
মধ্যবর্তী মোহনা।
বিলের জলে রতির ঘ্রাণ
নৌকা বাইলে সব কবির মনে ভর করে শক্তি চট্টোপাধ্যায়
এখনো ভাবি সারি সারি শাপলা
কামনার ঘুর্ণি দক্ষিণ থেকে আসে
বিকল্পের গল্পে প্রেম কেবলই প্রেম অন্যথায় ফুল ফোঁটে না!
Profile Image for Kumkum Ghosh.
19 reviews5 followers
January 27, 2022
"ভুলে যেয়ো নাকো তুমি আমাদের উঠানের কাছে/ অনন্ত কুয়ার জলে চাঁদ পড়ে আছে".....
Displaying 1 - 13 of 13 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.