Shankar's real name is Mani Shankar Mukherjee. Sankar is a very popular writer in the Bengali language. He grew up in Howrah district of West Bengal, India. Shankar's father died while Shankar was still a teenager, as a result of which Shankar became a clerk to the last British barrister of the Calcutta High Court, Noel Frederick Barwell. The experience of working under Mr. Barwell provided the material for his first book Koto Ojanare (কত অজানারে), translated as The Great Unknown. During 1962, Shankar conceived the idea of writing the novel Chowringhee on a rainy day at the waterlogged crossing of Central Avenue and Dalhousie - a busy business district in the heart of Kolkata. Many of Shankar's works have been made into films. Some notable ones are - Chowringhee, Jana Aranya (জন-অরণ্য, translated as The Middleman) and Seemabaddha (সীমাবদ্ধ, out of which the last two were directed by Satyajit Ray.
আমার স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি আকর্ষণ বলুন কি ভক্তিই বলুন তার প্রধান কারন হল তাঁর প্রবল তামাক অনুরাগ আর ভোজন বিলাস। স্বামীজীর তামাক প্রেম আমাকে একটাই উদ্বুদ্ধ করে ছিল যে ক্লাস এইট থেকেই সিগারেট ফোঁকা দিয়ে দীক্ষিত হয়েছিলাম। মনে আছে ক্লাশ নাইনে পড়ার সময় যখন আমার পিতৃদেবের কাছে বামালসমেত ধরা পড়ি তখন, আমার পিতৃদেব প্রবল পেটাতে পেটাতে আমাকে স্বামীজী আর নেতাজীর আদর্শে উদ্দীপ্ত করার প্রবল প্রচেষ্টার মধ্যেই আমি কাতর গলায় আমার পিতাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম যে দুই মহাপুরুষই ধুমপানের অনুরাগী। ঠ্যাঙানী থামিয়ে আমার বাবা বলল - ওদের ভাল গুণ গুলো নিতে পারো নি। নাছোড় আমি কাতর ভাবে বললাম - খারাপ থেকে ভাল হওয়াটাই তো ভাল নাকি ভাল থেকে খারাপ। আগে খারাপটা নি তারপর তো... এরপরে আর কথা হয় নি কেবল আওয়াজ শপাং শপাং। বাপ তো নয় যেন অনুব্রত মন্ডল। যাইহোক ধূমপান আজও চালিয়ে যাচ্ছি।
আমার মতে একজন মানুষকে জানার প্রধান মাধ্যম হল তার খাদ্যাভ্যাস। মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনেকখানি ধরা পরে তার খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে দিয়ে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আহারে অনাহারে বিবেকানন্দ বইটির ওপর আমি অনেকদিন ধরেই তাক করে ছিলাম। হাতে আসতেই চটপট পড়ে ফেললাম এই অত্যন্ত স্বাদু বইটি।
তবে চমৎকার এই বইটির ক্ষেত্রে একটাই দুর্বলতা চোখে পড়ল সেটি হল মাঝমাঝেই একই কথার পুনরাবৃত্তি। বইটি সম্পাদনার সময় এই বিষয়ে আরেকটু মনোযোগী হলেই বইটা আরও সুন্দর হয়ে উঠত। ছাপাই ও বাঁধাই বেশ ভালোই । দাম ও নাগালের মধ্যে। ২৭২ পাতার বই মাত্র ১৬০.০০ টাকা। পাঠকদের বইটি পড়ার অনুরোধ করছি।
শংকরের যেকোনো গবেষণামূলক লেখার প্রতি আগ্রহ স্বাভাবিক। তবে একজন সন্ন্যাসীর খাদ্যরুচি এমনকি কঠিন সময়ে তার অনাহারে কষ্টের কথা এমন করে এই বই আকারে প্রকাশ করা যায় তা যেন স্বপ্নাতিত। রামকৃষ্ণ মিশনে কেটেছে আমার জীবনের দশটা বছর, তাই স্বামীজীর কিছু কিছু খাদ্যাভ্যাসের সাথে আমরাও পরিচিত ছিলাম। তবে এমন সংগঠিত ভাবে লেখা এই বইতে যে কেবল স্বামীজীর কি ধারণা ছিল কিংবা পছন্দ তা ফুটে ওঠে নি। এছাড়াও সেই সময়ের বাঙালির খাবারের পাতে কি থাকত তারও কিছুটা আভাস পাওয়া গেছে।
শংকর বহু অংশে সাহায্য নিয়েছেন স্বামীজীর সহোদর ভাই মহেন্দ্রানাথ দত্তের। এই পরিবারের সাহসিকতা আর অদম্য ইচ্ছে দেখার মতন। তেমনই ছিল তাদের খাওয়ার পরিপাটি। স্বামীজী প্রথম জীবনে রসগোল্লার লোভে দক্ষিনেশ্বরে ঠাকুরের যাওয়া থেকে সন্দেশের জন্ম সহ বাঙালির পাতে নানান রকম বিদেশি খাদ্যশস্য আসার নানান কাহিনী পাওয়া যায় এই বইতে।
বিদেশি নানা প্রদেশের খানার ব্যাপারে তার মতামতও বেশ চিত্তাকর্ষক। দেশে বিদেশে গিয়ে মাংস খাওয়ার ব্যাপারে তার কোনো ছুৎমার্গ ছিল না। তিনি বলতেন, সন্ন্যাসীর খাওয়ার বিচার করলে চলে না। এইজন্য বহু জায়গায় তাকে অপমানিত হতে হয়েছে। তিনি শাস্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন প্রাচীন মুনি ঋষিরাও ভালো মতোই মাংসাশী বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবে এই নিরামিষ খাওয়ার প্রচলন হয়েছে। তিনি জীবহত্যায় কোনোদিন উৎসাহ দেন নি। কিন্তু তার মতে যে দেশে খেতে খাওয়া মানুষের পরিমাণ বেশি এবিং যার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র তাদের সস্তায় পাওয়া মাংস খাওয়ায় কোনো দোষ নেই।
আদ্যন্ত খাদ্যরসিক বিবেকানন্দের সম্পূর্ণ জীবন মোটেই ভোজন সর্বস্ব ছিলো না। বাবা বিশ্বনাথের অকাল প্রয়াণের পরেই তাঁর পরিবারে নেমে আসে দৈন্যতা। আর তার পরেই পথ চলা শুরু হয় সেই মহান সাধু, সেই পরিব্রাজক যাঁকে আমরা বিবেকানন্দ নামে চিনি। কখনো অর্থের অভাব তো কখনো সেবকের অভাব, কখনো ভিক্ষার অভাব তো কখনো সুযোগের অভাব। এভাবেই, তাঁর সন্ন্যাসকালে এমনও দিন তিনি কাটিয়েছেন যখন একমুঠো ভাত তাঁর জোটেনি। খিদে মিটিয়েছেন কেবল জল খেয়ে! তবু তিনি দমে যাননি।
এ তো গেল স্বামিজির কথা। এবার বইটির কথা কিছু না বললেই নয়। প্রথমত যে জিনিসটা খারাপ লেগেছে সেটা হল বেশ কিছু ঘটনার কথা লেখক পুনরাবৃত্তি করে ফেলেছেন আমার যেগুলো অপ্রয়োজনীয় লেগেছে। দ্বিতীয়ত, ঘটনাক্রম সাজানোটাও হয়ত আরো ভালো করা যেত বলে মনে হয়। স্টোরিটেলের পরিবেশনাটিও বেশ ভাল, শুনতে শুনতে ক্লান্ত বোধ হয় না। যে কেউ চাইলেই পড়ে অথবা শুনে নিতে পারেন এই বইটি।