"শাম্ব" মিথলজির বাস্তবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে পাঠককে প্রথম প্রথম ধন্ধে ফেলে দেয় - এই বই নন-ফিকশন কীনা। অথচ কালকূট নামধারী সমরেশ বসু এই বইয়ের আধেক অংশ ভারতীয় পুরাণের ব্যবচ্ছেদ করে একে যৌক্তিকরূপে ব্যাখা-বিশ্লেষণ করে অবাক করে দিয়েছেন পাঠককে। যখন শুরু হল মূল কাহিনি, ততক্ষণে কালকূটের সম্মোহনী লেখার জালে পাঠক আটক!
মহাভারতে মহাবীর,মহারথীদের ভিড়। এত এত বীরেদের ভিড়ে শাম্ব নামটি প্রায় অনুচ্চারিত, বিস্মৃতও বটে। অথচ সেই শাম্বকে নিয়েই কী দারুণ এক ভাবজগতকে নাড়া দেবার মতো একখান উপন্যাস লিখে ফেললেন কালকূট।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ। যদুবংশীয়দের মিত্র পান্ডব ও অন্যান্যরা সুখে-শান্তিতে বাস করলেও দ্বাপরযুগ শেষের পথে। উল্লেখ্য, পুরাণের হিসেব মতেই কলিকালের শুরু কৃষ্ণ ও যদুকুলের অবস্থা রমরমা থাকাকালেই। বছরের কথা বললে কলিকাল শুরু হয়েছে প্রায় চৌত্রিশশো বছর আগেই!
শাম্ব হল শ্রীকৃষ্ণের পুত্র। পুরাণ মতে, শাম্ব পিতা কৃষ্ণের চেয়ে কোনো অংশেই কম রূপবান ছিলেন না । বীরত্ব ও রমণীমোহনত্বের বিচারে কৃষ্ণকে টেক্কা দেবার মতো যোগ্যতা ছিল শাম্বের। যদিও ভারতীয় পুরাণে শাম্বকে আলোতে আসতে দেয়া হয়নি, আঁধারেই ছিলেন শাম্ব।
যাদবকুল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর বেশ প্রতাপশালী অবস্থায় হেসে খেলে সময় কাটাচ্ছে। যদুদের পুরাতন সকল শত্রু জরাসন্ধসহ সকলেই পরাস্ত হয়েছে। তাই আর যুদ্ধে নামার তাড়া নেই। যদুবীর শাম্বও তাই রমণীকুলের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত। হঠাৎ এই ব্যস্ততার কারণে রোষানলে পড়ল নারদ মুনির। এই গানবাজনার ঋষি কৃষ্ণের কাছে গিয়ে জানাল রূপবান শাম্বের টার্গেট পিতার ষোলহাজার গোপিনী! খেলা জমে উঠল। কৃষ্ণ ভুলবুঝে অভিশাপ দিল শান্বকে। পিতার অভিশাপে পুত্র শাম্ব রাজরোগ কুষ্ঠতে আক্রান্ত হল। রূপবান শাম্বের রূপ রইল না।
শাম্ব এবার বের হল নিজের সিদ্ধির সন্ধানে। সেই সিদ্ধি মিলবে আরোগ্যে। শাম্ব পাবে কী আরোগ্যে?
অভিশপ্ত শাম্বের শাপমোচনের আখ্যান "শাম্ব"। এই উপন্যাসে ছোট ছোট কথায় কালকূট যে দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন তা হল নিয়তিকে কেউ এড়াতে পারেনি। পারবেও না। কিন্তু মানুষ তার ভবিতব্যকে মেনেই নিরন্তর তাকে বদলাবার চেষ্টা করতে পারে। কারণ অমোঘকে গ্রহণ করেই তাকে পাল্টে দেবার অভিযাত্রী শাম্বর ন্যায় সবাইকে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছেন কালকূট। তিনিই লিখেছেন,
" মানুষ মাত্রেই ভুল। আর ভুল মাত্রেই তার জন্য দিতে হয় মূল্য। "
"শাম্ব" খুব সুখপাঠ্য উপন্যাস। পুরাণ কতটা অমনোযোগিতা আর স্থূলমন মন নিয়ে পাঠ করি আমরা তারই নিদর্শন শাম্ব নামের এতো চমৎকার একটি চরিত্র সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিস্মরণ হয়ে যাওয়া।
বাংলা সাহিত্যে এমন কয়েকটি রত্ন আছে, যাদের তুল্য রচনা আর হয়নি, হবেও না। "শাম্ব" তেমনই এক উপন্যাস। এর মধ্যে ধরা আছে আসমুদ্রহিমাচল ভারতবর্ষের ইতিহাসচেতনা ও ভক্তিভাব— কিন্তু তার সবটাই ঘটেছে অনুচ্চ স্বরে। এর মধ্যে আছে ভারতের সার্বিক পুরাণপ্রজ্ঞা, আছে ধর্ম, আছে রক্তমাংসের এই দেহের টানে পীর্ণ এক মানবের দেবতা হয়ে ওঠার অনন্য আখ্যান। একে পড়লে মনে হয়, অতীতকে দেখার এমন নতুন, স্বচ্ছতর, উজ্জ্বলতর দৃষ্টি কেন আর কারও লেখায় পাই না? কালকূটের শ্রেষ্ঠ রচনা তথা বাঙালি মনীষার এক অত্যুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই গ্রন্থ। আগে না পড়ে থাকলে এখন পড়ুন, নইলে ক'দিন পরে পড়ুন। কিন্তু এটি থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। সত্যি বলছি, এই লেখা না পড়া থাকলে বড্ড দুঃখ হবে পরে।
"শাম্ব"র মাধ্যমে আমার সাথে পরিচয় ঘটে সমরেশ বসু'র প্রতিসত্তা কালকূটের সাথে। খুবই পছন্দের উপন্যাস। পুরাণের লৌকিক ব্যাখ্যা বা সত্য একটা ঘটনা কীভাবে কালের পরিক্রমায় কিংবদন্তি হয়ে ওঠে তার বর্ণনা সবচেয়ে ভালো লেগেছে।
কালকূটের এবারের যাত্রা দ্বারকায়। উদ্দেশ্য পৌরাণিক চরিত্র কৃষ্ণতনয় শাম্বকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা। নারদ মুনির রোষানলে পড়ে কৃষ্ণ কতৃক অভিশাপগ্রস্ত হন রমণীদের চোখের মণি শাম্ব। মূলত জন্মলগ্নেই শাম্বের ভবিতব্য "কুষ্ঠ" ঠিক হয়ে যায় এবং সেটাই কৃষ্ণ কতৃক উচ্চারিত হয়। রাজকীয় জীবন ছেড়ে রোগমুক্তির জন্য নতুন জীবনের পথে যাত্রা শুরু হয় শাম্বের। নানা ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে শাম্ব ঠিকই তার লক্ষ্যে পৌঁছে যায় এবং সাথে সাথে নতুন এক আলোকিত জীবনের সন্ধান পায় সে।
পৌরাণিক চরিত্রকে কেন্দ্র করে লেখা এই উপন্যাস আমাদের শাম্ব চরিত্রকে বুঝার পাশাপাশি আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে রোগ-ব্যাধি জীবনের একটি অংশ, কিন্তু তাই বলে হাত গুটিয়ে বসে না থেকে আরোগ্য মুক্তির সন্ধান করা উচিত।
হিসেবের কাল-বিন্দু আছে, সেটা যীশুর জন্মকাল, তাহলে পুরাণের কি কোন কাল-বিন্দু নেই? নেই। কিন্তু আদিবিন্দু আছে, সেটাকে বলা হচ্ছে মানব কল্পের আদিবিন্দু। স্বয়ম্ভর মনুকাল, পাঁচ হাজার ন’শো আটান্ন খ্রিষ্টপূর্ব। এই আদিবিন্দুর অতীতে আর কিছু নেই, থাকলেও তা ইতিবৃত্তে আসেনি। কালকূটের হাত ধরে শাম্বকে দেখার অভিপ্রায়ে পুরাণের পথে আমাদের যাত্রা শুরু এক হাজার চারশো খ্রিষ্টপূর্বাব্দে।
এ এক ভিন্ন ধরনের ভ্রমণকাহিনী, এর স্বাদ যেমন অভিনব, যাত্রাপথ তেমনি গহন। কাঁধে ঝোলা চাপিয়ে ঠেলাঠেলি করে যাওয়া নয়, তবে এ যাত্রাতেও বাঁশি বাজে, নিশান ওড়ে। এ বাঁশি প্রাণের কোথায় যেন বাজে, সুরে ডাক দিয়ে ঘরের বাহির করে নিয়ে যায়। বাস্তব থেকে কল্পনায়, সেখান থেকে পুরাণের পথে দ্বারকা নগরীতে। কৃষ্ণ এখনে প্রধান চরিত্র নয়, প্রধান চরিত্র কৃষ্ণ আর জাম্ববতী তনয় অপরুপকান্তি বীর শাম্ব। যাত্রাপথে যার আবির্ভাব দুর্যোধন কন্যা সর্বাঙ্গসুন্দরী, সর্বালংকারশোভিতা লক্ষণাকে বলপূর্বক হরণের মাধ্যমে।
শাম্বের পরিচয় দিতে গেলে বলতে হয় একবার শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা হল শিবের মত গুণসম্পন্ন একটি পুত্রলাভের। তখন তিনি উপযুক্ত পরামর্শের জন্য এক ঋষির কাছে যান। সেই ঋষি কৃষ্ণকে বলেন যে তিনি যদি এক হাজার ফুল নিবেদন করে বহু বছর ধরে শিবের আরাধনা করেন তাহলেই শিব তুষ্ট হয়ে তাঁর মত একটি পুত্র দান করবেন। সেই পরামর্শ অনুসারে কৃষ্ণ নিভৃতে গিয়ে সারা অঙ্গে ভস্ম মেখে এবং বল্কল (গাছের ছাল) ধারণ করে শিবের আরাধনা করতে আরম্ভ করেন। সেই উপাসনায় প্রসন্ন হয়ে দেবী পার্বতী এবং শিব উভয়েই কৃষ্ণের কাছে উপস্থিত হন তাঁর মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে। তখন কৃষ্ণ তাঁদের কাছে শিবের সকল গুণসম্পন্ন একটি পুত্র প্রার্থনা করলে শিব তাঁকে সেই পুত্রলাভের বর দান করেন। বর পেয়ে কৃষ্ণ গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন এবং কিছুকাল পরেই জাম্ববতীর গর্ভে জন্ম হয় শাম্বের।
তবে আমাদের যাত্রা শুরুর ঘটনার সূত্রপাত যখন দ্বারকা নগরীতে জগৎবিখ্যাত বাসুদেব, পুরুষোত্তম জনার্দন, বৃষ্ণিসিংহাবতার কৃষ্ণের সাথে দেখা করতে আসেন মুনি নারদ। এই সেই মুনি যিনি যুধিষ্ঠিরকে শিক্ষা দিয়েছিলেন রাজনীতি, অর্থনীতি, ভেদনীতি, সমাজনীতি এবং গার্হস্থ্যনীতি সমুহ। ভ্রমণ করেছেন সমগ্রবর্ষ... কিম্পুরুষবর্ষ, ইলাবৃতবর্ষ, মধ্যস্থল, অন্তরীক্ষ, ভদ্রাশ্ববর্ষ, কৈলাস কোনও জায়গা বাদ নাই। দেবতা, অসুর, দানব, গন্ধর্ব, যক্ষ, সর্প, মানব সকলের সাথে মিশেছেন, দেখেছেন জীবনযাত্রা ও ধারণ প্রনালী।
কৃষ্ণের মহলে সাদরে সম্ভাষণে নারদ এবং তার সঙ্গীরা সত্যিই খুশি হলেন কিন্তু তার তীক্ষ্ণ ভ্রুকুটি চোখে একটি জিজ্ঞাসা লেগেই রইলো আর তা হল কৃষ্ণ পুত্র শাম্ব।
কৃষ্ণ পুত্রদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা রূপবান যুবা শাম্ব। কাঞ্চনের অধিক উজ্জ্বল বর্ণে পারিপার্শ্বিক সবকিছুই যেন প্রতিবিম্বিত হয়। তা সে কানন, কুঞ্জ, জলাশয়, আকাশ, পর্বত, নারী যাই হোক। তার আয়ত চোখে সর্বদা কামনার বহ্নি অনল প্রজ্বলিত হয় না, কিন্তু তার মুগ্ধ দৃষ্টিতে এমন চিত্ত জয়ী দুর্বার আকর্ষণ আছে, রমণী মাত্রই তার দর্শনে মিলন আকাঙ্ক্ষায় কাতর হয়ে উঠে।
নারদ যখন উপস্থিত হলেন তখন বর্ণাঢ্য ফুলের কেয়ারী ও লতাপাতায় আচ্ছন্ন কাননের মধ্যে রূপবান শাম্বকে দেখলেন রমণী পরিবেষ্টিত হয়ে প্রণয়োদ্দীপ্ত ভাষণে ও আলাপে ব্যস্ত। যথোপুযোক্ত সম্মান না পেয়ে ক্রুদ্ধ হয়ে মহর্ষি গুরুতর অভিযোগ তুললেন পুত্র শাম্বের বিরুদ্ধে, তাও পিতার রমণী গনের বিরুদ্ধে পুত্রকে অভিযোগ করে আর সেই অভিযোগ পিতা কৃষ্ণকেই। শাম্বের সঙ্গলাভে ব্যাকুল কৃষ্ণের ষোল হাজার রমণী, আর তাতেই পিতার বিচিত্র অসূয়া অভিশাপ হয়ে নেমে এলো পুত্র শাম্বের জীবনে।
পিতার দ্বারা অভিশপ্ত হওয়া, শাপমোচন এবং মুক্তি, বহুবিধ ঘটনা তত্ত্ব তথ্যের জালে আবৃত। তবে বাহুল্য বোধ ত্যাগ করে কালকূট শুধু অভিশাপের কারণ আর শাপমোচন বিষয়কেই যথাসম্ভব সহজভাবে বলেছেন। ইতিহাসে অনেক সময়েই পরবর্তীকালের অনেক ঘটনা স্থুলহস্তাবলেপে প্রক্ষিপ্তভাবে প্রবেশ করে। অনেক ঘটনা রয়ে যায় লোক চক্ষুর অন্তরালে, অনেক পার্শ্ব চরিত্র হারিয়ে যায় মূল চরিত্রের আলোকচ্ছটায়। শাম্ব উপন্যাসে এমনি এক চরিত্রের কথা বলা হয়েছে যে অতি দুঃসময়েও বিশ্বাস হারায়নি, দৈহিক ও মানসিক কষ্টের ভিতর দিয়ে যাবার সময়েও চেষ্টা করেছে নিরন্তর উত্তীর্ণ হবার। শাম্ব এক সংগ্রামী চরিত্র, যার উত্তরণকে কালকূট দেখিয়েছেন শ্রদ্ধার সঙ্গে, যার যাত্রার পথকে নিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ভৌগলীক অবস্থান, তথ্য, উপাত্ত, পরিসংখ্যানের আলোকে, পাশাপাশি বেদ পুরাণের অবস্থানকে দেখিয়েছেন কালের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে।
এই বইয়ের প্রথম দিকে পড়তে গিয়ে খেই হারায়ে যায়। কিন্তু, শেষে এসে মনে হচ্ছে, প্রথমটুকই যা জৌলুস, প্রথমটুকুই যা অসাধারণ। বস্তুত, শাম্ব নামটা প্রথমবার এই বইয়ে যখন উচ্চারিত হয় (), তখন থেকেই মনে হয় এই বই হাটু মুড়ে গড়ায়ে পড়তে শুরু করে। প্রথমদিকের খেই হারানো পৃষ্ঠাগুলি শেষে গিয়ে অনেক বেশি ফেরত চাইতে হয়। শেষটা দুর্বিষহ।
পৌরাণিক পটভূমিতে লেখা উপন্যাস। নারদ মুনির চক্রান্তে শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপে তার অসাধারণ সুদর্শন, বীর পুত্র শাম্বের কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত হওয়া এবং রোগমুক্তির লক্ষ্যে তার অভিযানের মানবিক কাহিনি। কাহিনি বিন্যাস আর সমরেশ বসুর জাদুকরি ভাষা মুগ্ধ করার মত।
சாகித்திய அக்காதெமி 1995 ஆம் ஆண்டு வெளியிடப்பட்ட சாம்பன் நாவல் 1978 ஆண்டு வெளிவந்து 1980 ல் சாகித்திய அகாதமி விருது பெற்றது. கால்கூட் என்ற புனைப்பெயரில் எழுதியவர் சமரேஷ் பாசு (1924-1988) வங்க இலக்கியத்தில் முக்கியமான இவர் புராண இதிகாச கதைகளை நவீன படுத்தி தற்காலத்திற்கு ஏற்ற வகையில் பல நூல் எழுதி இருக்கிறார். பல புகழ்பெற்ற வங்க நூல்களை தமிழில் மொழிபெயர்த்து பெரும் இலக்கிய பணியாற்றிய சு . கிருஷ்ண மூர்த்தி தான் இதையு மொழிபெயர்த்து உள்ளார். தமிழ் விக்கியில் அவரின் ஒரே புகைப்படம் தான் இருக்கிறது.
இந்த உலகை விட்டுப் போக நான் விரும்பவில்லை இந்த அற்புதமான உலகில் சுற்றி திரிய ஆசைப்படுகிறேன் என்று தொடங்குகிறது நாவல்.சரி வாங்க போகலாம் இன்றிலிருந்து 5125 ஆண்டுகள் கடந்து நாம் துவாரகைக்கு செல்ல வேண்டும் அங்கு தான் எல்லா வகையான சிறப்புகலோடும் வாய்ந்த வசுநேசர் (கிருஷ்ணன்)வாழ்ந்தார் ஆமாம் அவரைப் பார்க்கத்தான் நாம் சென்று கொண்டு இருக்கிறோம் என்று கையைப் பிடித்துக் கொண்டு நம்முடன் வாசகனுடன் உரையாடிக் கொண்டு நம்மை துவாரகைக்கு அழைத்து செல்கிறார். பதினாறாயிரம் அடிமை பெண்களை மீட்டுக் கொண்டு வந்த கிருஷ்ணன் அவர்கள் அனைவரையும் தன்னுடைய பெண்டீராக ஆகிக்கொண்டு உல்லாசமாக வாழ்ந்து கொண்டிருக்கும் துவாரகைக்கு தான் நாம் செல்ல போகிறோம். வையத்தில் வாழ்வாங்கு வாழும் மனிதர்கள் வானுறையும் தெய்வத்திற்கு ஒப்பாக வைக்கப்படுவார்கள் இல்லையா ? அதைப்போல தான் வசுனேசரும் ஆனால் கதை அவரைப் பற்றியது அல்ல. கதை கிருஷ்ணனுக்கும் ஜம்பவதிக்கும் பிறந்த சாம்பன் பற்றியது. ஆமாம் நீங்கள் நினைப்பது சரிதான் துரியோதனனின் மகள் கிருஷ்ணையை சிறை எடுத்துக் கொண்டு வந்தானே அவனே தான். பிறகு கிஷ்னணையை கௌரவர்கள் மற்றும் கர்ணன் வந்து மீட்டு அஸ்தினாபுரம் கொண்டு போக பிறகு மூத்த யாதவன் பலராமன் அஸ்தினாபுரத்தை தன் கலப்பையால் கிடுகிடுக்க வைத்து மீட்டு வந்தார் இல்லையா? நான் சொல்கிறேன் அது நில நடுக்கம் தான் இவரின் கலப்பையால் வந்தது அல்ல. யாதவர்கள் பல்வேறு குலங்களாக பிரிந்து தங்களுக்குள் சண்டையிட்டுக் கொண்டு இருந்த காலத்தில் நாரதர் துவாரகைக்கு வருகிறார் அவரை இந்த சாம்பன் உதாசீனப்படுத்தி விடுகிறார் எல்லா உலகையும் சுற்றித் திரிகிற நாரதர் அனைத்தும் அறிந்த திறமையானவர். அவரால் இந்த புறக்கணிப்பை ஏற்று கொள்ள முடியவில்லை சாம்பனுக்கு தக்க பாடம் புகட்ட சரியான சந்தர்ப்பத்தை நோக்கி காத்திருக்கிறார். சாம்பன் எப்போதும் பெண்களுடைய உல்லாசமாக இருப்பவன் பாறையில் பட்ட நீர் எப்படி உருண்டோடுமோ அதே போல் சாம்பன் இருக்கும் இடத்தில் பெண்கள் அனைவரும் அவளை நோக்கி உருண்டோடி வருவார்கள். அழகாலும் ஆணவத்தாலும் நாரதரை உதாசீன படுத்திய சாம்பன் தன் தந்தை மூலமாகவே அந்த அழகு அழிய சாபம் பெறும் படி நாரதர் செய்கிறார்.அதாவது தொழு நோய் அவனை தாக்குகிறது ஒரு வகையில் அ���ு விதிபயன் என்றாலும் அந்த விதி தந்தையின் சாபத்தின் மூலமாக செயல்பட துவங்குகிறது. சாபம் என்று ஒன்று இருந்தால் அதற்கு தீர்வு என்று ஒன்று இருக்கும் அல்லவா ? இறுதியில் சாம்பன் என்ன ஆனான் என்பது தான் மீதி கதை சாம்பனின் வாழ்வில் இருந்து நாம் பெற்றுக் கொள்வது நம்பிக்கை எனும் ஒளி. வாழ்வில் என்ன இடர்கள் துன்ப துயரங்கள் வந்தாலும் நம்பிக்கை என்ற ஒன்று இருந்தால் அனைத்தையும் மீண்டும் அடைய முடியும் என்பது தான் சாம்பன் வாழ்வு நமக்கு உணர்த்தும் பாடம். அனைத்தையும் விட எளிய கேளிக்கையும் பொழுதுபோக்கும் உண்மையான மகிழ்ச்சி என்று நாம் நினைக்கும் போது அர்ப்பணிப்பும், லட்சியமும், தொடர் செயல்பாடும் தான் வாழ்வின் உண்மையான மகிழ்ச்சியை கொடுக்கும் என்பதை சாம்பன் மீண்டும் தன் பழைய வாழ்க்கைக்கு செல்லாமல் தொழு நோயாளிகளுக்கு பணிபுரியும் அவர்களுக்கு மருத்துவம் செய்யும் வேலையே தனக்கு மிகவும் மகிழ்ச்சியான வாழ்வு என்று முடிவு செய்வதிலிருந்து நாம் அறிய முடிகிறது. இருக்கும் அத்தனை எழுத்தாளர்களும் மகாபாரத கதையை எழுதாத யாரும் இருக்க முடியாது அந்த வகையில் கால்கூட்டும் ஒரு மகாபாரத கதையை நவீனப்படுத்தியிருக்கிறார். எளிமையான கதை சொல்லல் முறையும் வாசகனோடு உரையாடிக் கொண்டே செல்லும் முறையும் இந்த நாவலை சிறந்த ஒன்றாக அமைக்கிறது. மகாபாரத காலத்தில் இருந்தவர்களும் சாதாரண மனிதர் தான், சொர்க்கம் நரகம் எல்லாம் அவர்கள் ஆட்சி செய்த பகுதிகள் தான் என்று சொல்கிறார் கால்கூட். இன்னும் நிறைய சொல்கிறார். வாசிங்க.....
একে ঠিক অন্যসব উপন্যাসের মতো বলা যায় না। এর রচনার প্রক্রিয়া বেশ আলাদা। দীর্ঘসময় পর্যন্ত শাম্ব এর কাহিনির সাথে যুক্ত ছিলেন না, এই সময়ে মিথোলজির বিভিন্ন বিষয়ে কালকূট আলোকপাত করেন। মূল ঘটনাটি বেশ সহজ। বাসুদেব কৃষ্ণের রমণীমোহণ পুত্র শাম্ব অভিশাপগ্রস্ত হন ও রোগাক্রান্ত হয়ে যান। এরপরে তার মুক্তির দীর্ঘ যাত্রাই এখানে উঠে এসেছে।
The so-called notorious and devil but beloved son of Shri Krishna, Shamba is potrayed in a new light in this novel. The tragic protagonist, the son of a God/Hero, cursed by his own father, by a devious trap by one of the Great Rishi Narada, and bound to take a giant responsibility in his shoulders for the welfare of mankind!
From the highly detailed Introduction and Prologue itself, where the author goes through the whole geography and terminology of the story that was to be presented as a grand framework of literature and poise, to become a depressed but beautiful and illustrious tale, this book is nothing but highly recommended!!
"মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে। ভ্রমিতে চাহি আমি সুন্দর ভুবনে।"
কালকূট অর্থাৎ সমরেশ বসু এক নতুন ভ্রমণকাহিনীর স্বাদ অনুভব করালেন। এই স্বাদ যেমন অভিনব, এর যাত্রাপথ তেমনই গহন।
সৌন্দর্য কি কখনও কারও জীবনে অভিশাপ ডেকে আনে? হ্যাঁ আনে। কৃষ্ণপুত্রদের মধ্যে শাম্ব ছিলেন সর্বাধিক রূপবান ও গুণসমৃদ্ধ। নগরের পথে বের হলে মাতা ও মাতৃপ্রতিম মহিলা ছাড়া সকল যাদবরমণীগণ তাঁকে একটিবার দেখার জন্য ছুটে আসতেন। কৃষ্ণতনয় শাম্বর এই সৌন্দর্যই তাঁর জীবনে অভিশাপ ডেকে এনেছিল। আর এই অভিশাপ তাঁকে দিয়েছিলেন স্বয়ং তাঁর পিতা শ্রীকৃষ্ণ।
একদা মহর্ষি নারদ যাদবদের সাথে সাক্ষাৎ করতে উপস্থিত হন দ্বারকা নগরীতে। সকলে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করলেন, কিন্তু কৃষ্ণতনয় শাম্ব অবকাশ পেলেন না তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার। অনিচ্ছাবশত মহর্ষির গরিমায় শাম্ব আঘাত দেওয়ায় মহর্ষির পরিকল্পনা স্বরূপ পিতা শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা শাম্বর জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ অভিশাপ। আর অভিশাপের ফলস্বরূপ তিনি এক কুৎসিত কুষ্ঠরোগীতে পরিণত হন। সেই অভিশপ্ত জীবন থেকে কী করে মুক্ত হলেন শাম্ব সেই কাহিনীই ব্যক্ত হয়েছে কালকূটের এই নতুন ভ্রমণ উপন্যাসে।
শাম্ব এক অসামান্য চরিত্র। হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভেঙে না পরে সে তাঁর বিশ্বাস অটুট রেখে কর্মের মাধ্যমে অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি লাভের উপায় খুঁজেছে। খুঁজে নিয়েছে আত্মদর্শনের পথ।
শাম্ব বললেন, "তোমাদের সঙ্গে আমার কোনও প্রভেদ নেই, প্রভেদ শুধু একটাই—। প্রভেদ এই, তোমরা বিশ্বাস হারিয়েছ, আমি এখনও বিশ্বাস হারাইনি।"
কয়দিন আগে পড়লাম "শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটি দিন" আর আজ পড়ে শেষ করলাম "শাম্ব"। আমি মুগ্ধ। সমরেশ বসুর লেখা "অমৃত বিষের পাত্রে" এবং "অমৃত কুম্ভের সন্ধানে" পড়েই তাঁর লেখনীর প্রতি মুগ্ধ হয়েছিলাম। এটিও তাঁর আর একটি নমুনা। এক কথায় বলতে গেলে অমূল্য সৃষ্টি।
জীবনে বিশ্বাস হারালে আর কিছুই থাকে না । শাম্ব জীবনের এক কঠিন সময় বিশ্বাস না হারানোর গল্প । ভাগ্য কে দোষারোপ না করে নিয়তেকে মেনে নিয়ে অভিশাপ মোচনের গল্প । নারদ মুনিকে প্রাপ্য সম্মান না দেওয়ায় , ওনার ছলনায় পিতার দ্বারা অভিশাপ গ্রস্ত শাম্ব , কুষ্ঠ রোগ মুক্তির জন্য এক কঠিন যাত্রা অতিক্রম করে সূর্যক্ষেত্র মিত্রবনে পৌঁছান । সেখানে তিনি জানতে পারেন কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত অনেক ব্যক্তি সেখানে রোগমুক্তির আশায় এসে বিশ্বাস হারিয়ে সেখানকার বাসিন্দা হয়ে রয় গেছেন বছরের পর বছর । তারা চান্দ্রভাগা র স্রোতে স্নান করে , সূর্যমন্দিরে প্রণাম করে , ভিখ্যাকরে সংসার চালায়। তাদের সন্তান হয় , স্বাভাবিক সন্তান , কিন্তু কিছু বছরের মধ্যে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায় । তাদের মধ্যে রোগ মুক্তির কোনো আসা নেই ,অবিশ্বাসী । মিত্রবনে এক ঋষি থাকেন তার প্রতি তাদের বিশ্বাস নেই আর। শাম্ব কি পারবে তাদের বিশহ ফেরাতে নিজের বিশ্বাস অটল থেকে অভিশাপ মোচনের করতে । .......
কালকূট বা সমরেশ বসুর কোন বই এই প্রথম পড়ে শেষ করলাম। একটি রাজনৈতিক রচনার প্রয়োজনে কালকূট ছদ্মনামটি তিনি গ্রহণ করেছিলেন নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে। পরবর্তীতে এই ছদ্মনামেই তিনি লিখেছেন বিখ্যাত সব বই। এই বই তারই একটি। কৃষ্ণের এক পুত্রের নাম শাম্ব। অত্যন্ত রূপবান, রমণীমোহন শাম্বের জীবনের এক পর্যায়ে নেমে আসে এক ভয়াবহ অভিশাপ। সেই অভিশাপ থেকে কিভাবে শাম্ব মুক্তি পেয়েছিলেন সেই নিয়েই এই বই। তবে শুধু কি এটা শাম্বেরই আখ্যান? মোটেও তা নয়। কালকূট বাস্তবতার আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন পূরাণকে। মিথোলজির আড়ালে হয়তো অনেক সত্য ঘটনা লুকিয়ে আছে, হাজার হাজার বছরের সময়ের স্রোতে কাহিনীর বিবর্তনে সেই সত্যকে খুঁজে পাওয়া ভার।
একজন কৃষ্ণ, নারদ, শাম্ব হয়তো সত্যিই ছিলেন, তবে তাদের নিয়ে লেখা অলৌকিক আখ্যানের বাস্তব ব্যাখ্যা হয়তো দেয়া সম্ভব। সেই চেষ্টাই করেছেন কালকূট আর তার ফলে পাওয়া গেছে দারুণ এক বই-শাম্ব। শুরুতে যদিও লেখার ধারাটা ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, লেখক যেন এলোমেলো হয়ে চলে যাচ্ছিলেন নানা জটিল পথে। কাহিনীর স্রোতে কখন চলে এলেন তারাশংকর, ব্যাখ্যা পেলাম স্বর্গ, নরক, পাতাল, দেবতা আর মানুষের। অন্তরীক্ষ, ব্রহ্ম বা বিষ্ণুলোক কোন দূর মহাশূণ্যে নয়, এ পৃথিবীরই চেনা সব জায়গা । ইন্দ্র কিংবা নারদ নন কোন ব্যক্তি বিশেষ, বিশ��বকর্মাও নন। তারা কেউই নন অতিমানব, আমাদের মতোই মানুষ। এসব আখ্যান পড়তে পড়তে ভাবছিলাম শাম্ব কোথায়? তার তো দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। তবু তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছিলাম পূরাণের এই নবতর ব্যাখ্যাকে, গল্পের আড়ালে লুকিয়ে থাকা গল্প না কে। তারপর শুরু হলো লেখকের মানসভ্রমণ, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময়কাল, কিংবা দ্বারাবতী নগরীর অবস্থান ব্যাখ্যা করে লেখক আমাদের নিয়ে গেলেন দ্বারাবতী বা দ্বারকায়। ভারতের পশ্চিম উপকূলের সেই দ্বারকায় গিয়ে বাস করেছিলো যদু বংশের লোকেরা। ছিলেন কৃষ্ণ, রাজা না হয়েও যিনি রাজাদেরও রাজা আর ছিলেন শাম্বও। দ্বারাবতীর সবচেয়ে রূপবান এই যুবকটি নারদের প্ররোচনায় পড়েছিলেন পিতা কৃষ্ণের অভিশাপের কোপে। তবে সেটা কি সত্যিই অভিশাপ নাকি ভবিতব্য? কুষ্ঠরোগী হয়ে নিজের সব রূপ হারিয়ে ফেলা শাম্ব কি করে তার নিজের রূপ ফিরে পেয়েছিলেন, বহু পথ ঘুরে শেষ পর্যন্ত কিভাবে অভিশাপ মুক্ত হয়েছিলেন তারই লৌকিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন কালকূট। পড়তে পড়তে যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম সেকালের দ্বারাবতীতে, চন্দ্রভাগা নদীর তীরে, মৈত্রেয় বনে। এই লেখা শুধু শাম্বের আখ্যান নয়, বরং আপনাকে চিন্তা করতে বাধ্য করবে মিথোলজির আড়ালে হারিয়ে যাওয়া সত্য সম্পর্কে। বইটি যদিও শাম্বকে নিয়ে তবু যেন শাম্বকে নিয়ে নয়। এ যেন হারিয়ে যাওয়া অতীতের দিকে মানস যাত্রা, বই শুরুর দিকের নানা ব্যাখ্যা অংশ যার পথের সূত্র। বই শেষ করে মনে হয়েছে শেষটা সুন্দর, তবে তার চেয়েও সুন্দর প্রথম দিকের এই পথের সূত্রগুলোই।
এই কাহিনীর নায়ক শ্রীকৃষ্ণ ও জাম্ববতির পুত্র শাম্ব। এই উপন্যাস এমন একটি সময়ের কথা বলছে যখন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ হয়েছে, পরাজিত করা গেছে দ্বারকার শত্রুদের, দ্বারকায় এখন শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর প্রজারা সুখে বাস করছে।
একদিন দ্বারকায় এলেন মহর্ষি নারদ। শ্রীকৃষ্ণ, তাঁর পরিবার ও প্রজাগণ যখন অতি সম্মানের সাথে মহর্ষির সেবায় ব্যস্ত, তখন মহর্ষি খেয়াল করেন যে শুধুমাত্র একজন তাঁর দিকে লক্ষই করছে না। তিনি হচ্ছেন কৃষ্ণের পুত্র রমণীমোহন শাম্ব। তিনি অন্যান্য রমণীদের সাথে রঙ্গ- রসিকতায় মগ্ন হয়ে ছিলেন। মহর্ষি নারদ এই অপমান ভুললেন না। পরে একদিন তাঁর কথায় শ্রীকৃষ্ণ শাম্বকে ভুল বুঝে পুত্রকে অভিশাপ দেন যে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর এই ভুবন ভোলানো রূপ নষ্ট হয়ে যাবে।
পিতার অভিশাপ মাথা পেতে নিয়ে শাম্ব বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন আরোগ্যলাভ ও শাপমোচনের উদ্দেশ্যে। শাম্বের সেই পুণ্যের পথে যাত্রা, তাঁর অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিকে সম্বল করে এগিয়ে চলে কাহিনী।
কাহিনীর নায়ক শাম্ব হলেও গল্প কিন্তু সরাসরি শাম্বকে দিয়ে শুরু হয়নি। মূল গল্প শুরু হওয়ার আগে লেখক আরো অনেক কিছু বোঝাতে চেষ্টা করেছেন। পৌরাণিক কাহিনীর বিভিন্ন কথাকে তিনি যুক্তিবাদী দৃষ্টি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। যেমন-
আমরা জানি স্বর্গে দেবতাদের বাস। এই স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল আসলে কোথায় অবস্থিত?
মহাভারত বা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সঠিক সময়কাল কখন? খ্রিষ্টপূর্ব আর খ্রিষ্টাব্দের যে হিসেব আমরা পাই সেটা কি সব হিসেবনিকেশ মেলাতে সক্ষম?
দেবরাজ ইন্দ্র, বিশ্বকর্মাদের মত দেবতারা কি পুরোপুরি কাল্পনিক নাকি সত্যি এঁরা ছিলেন?
এই ব্যাখ্যা দেওয়ার সময়ে বা শাম্বের গল্প বলার সময়ে লেখক সবটাকেই বাস্তব চোখ দিয়ে দেখিয়েছেন, কোথাও কোন অলৌকিক কার্যকলাপ ঘটেনি।
কালকূটের লেখা প্রথমবার পড়লাম। একটু অন্যরকম লাগলো। যেহেতু প্রথম অভিজ্ঞতা তাই এর চেয়ে বেশি কিছু আর লিখতে পারলাম না। আগামীতে ওনার আরো কিছু লেখা পড়লে আশা করি তাঁর লেখার গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে আরো ভালো করে জানতে পারব। তবে এই উপন্যাস নিঃসন্দেহে মন ভরিয়ে তোলার মত। শান্ত মন নিয়ে পড়তে বসলে ভালো লাগবে।
এই বইটাও আবিষ্কার করলাম আলমারি থেকে। উপন্যাস বলা ভুল হবে, এটাকে বড়ো গল্প বলেই শ্রেয়। শাম্ব ছিলেন শ্রী কৃষ্ণের পুত্র। তাই ভূমিকার কিছু পাতা ব্যতিরেকে পুরো গল্পটি মহাভারত আর পৌরাণিক কাহিনীর উপর ভিত্তি করে রচনা। তাই, পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে রচিত কাহিনীর আভাস রক্ষা করতে হোক, কিংবা অতি সরল ভাষায় এই কাহিনী রচনা করে সমালোনামূলক মন্তব্য এড়ানোর তাগিদে হোক, লেখন প্রচুর কঠিন শব্দ, সন্ধি শব্দ আর বিষ্ফোরক তৎসম শব্দের প্রয়োগ করেছেন। যেমন আমি যদি বলি, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বাওয়ালে কত লোকের প্রাণ গেলো! এই বাক্য অনেক ধর্মপ্রাণ ব্যাক্তির কানে ও মনে লাগতে পারে। তাই বলা ভালো, কুরুক্ষেত্রের মহাসংগ্রামে অগণিত মানুষের সংহার হয়েছিলো। লেখক ও সেই পথেই হেঁটেছেন। আর বলা উচিত, যারা আমিশের মহাদেব ত্রীকাহিনীর সারি পাঠ করে অভিভূত হয়েছেন, মহাদেবকে রক্ত মাংসের মানুষ কল্পনা করায়, এই গল্পটি সেই একই কাজ করেছে শ্রী কৃষ্ণ, মহর্ষি নারদ, বিশ্বকর্মা ও অন্যান্য পৌরাণিক চরিত্রকে মনুষ্যত্ব দান করে। তবে এই বইটির রচনা ১৯৭৭। তাই বাংলা সাহিত্য নিতান্ত ' নিরামিষ ' নয়।
পাঠ প্রতিক্রিয়া বই - শাম্ব লেখক - কালকূট আলোচনায় -অঙ্গিরা দত্ত দন্ডপাট
কালকূট সমরেশ বসুর শাম্ব বইটি সম্প্রতি আবার পড়লাম। বইটি নিয়ে পাঠ আলোচনা করার ধৃষ্টতা আমার নেই, পড়ার পরে নিজের অনুভবটুকু শুধু জানানোর জন্য এই লেখা। ১৯৮০ সালে আনন্দ পুরস্কার পাওয়া বইটি রক্ত মাংসের কাঠামো সম্পন্ন মানুষের দেবতাতে উন্নীত হওয়ার কাহিনী, পৌরানিক চরিত্র শ্রীকৃষ্ণ এই গল্পের নায়ক নন, বরং তিনি পার্শ্ব চরিত্র। কাহিনী আবর্তিত হয়েছে শ্রীকৃষ্ণ পুত্র শাম্বকে ঘিরে। শ্রীকৃষ্ণ পত্নী জাম্ববতীর সুদর্শন পুত্র শাম্ব নারদের কারণে পিতা কৃষ্ণের দ্বারা শাপিত হয় এবং দুরারোগ্য কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক শ্রী হারিয়ে যায়। সুদর্শন যুবা থেকে কুষ্ঠরোগাক্রান্ত পচনশীল দেহ ধারণ, তাও পিতার অভিশাপে। এরপরে শাম্বের কর্মযোগ শুরু, নিরলস প্রচেষ্টার এক অপরূপ আখ্যান। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় পৌরানিক কাহিনী লেখার সময় লেখকেরা সর্বাধিক প্রচলিত চরিত্রটিকে নায়করূপে বেছে নেন, তাঁরই গুণকীর্তন করে আখ্যানটি লেখেন। কিন্তু কালকূট ভিন্ন পথের যাত্রী, তিনি শ্রীকৃষ্ণের পুত্র স্বল্প পরিচিত শাম্বের ছোট্ট একটি কাহিনীকে কেন্দ্র করে কী ভীষণ মমতায় মানবের দেবত্বে উন্নীতকরণের গল্পটি লিখেছেন, তা বাংলা সাহিত্যে খুব বেশী নেই। অসামান্য কালকূট, অসামান্য তাঁর রচিত শাম্ব।
যখন কোন বইয়ে লেখক চিরায়ত প্রথা ভেঙে নতুন একটি ধারণা পাঠকের সামনে বিশ্বাসযোগ্যভাবে হাজির করে এবং পাঠক সেটা সাদরে গ্রহণ করে, তখনই লেখক সফল।
কালকূট ভার্সনে লেখা লেখকের প্রথম কোন বই পড়লাম এবং পড়ে ভালো লেগেছে। বইয়ের বিষয়বস্তু অতিশয় চমকপ্রদ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে লেখক রক্ত মাংসের মানুষ হিসেবে দেখিয়েছেন। দেখিয়েছেন ভগবানরা আমাদের মতই রক্ত মাংসের মানুষ ছিলেন কিন্তু উচ্চ স্তরের , মানে মনীষীদের মতো। তো শ্রীকৃষ্ণ তনয় শাম্ব কে নিয়েই এই বই। মিত্রবন থেকে শাম্ব এর সত্তরজন সঙ্গীসহ যাত্রা এবং পরবর্তী যাত্রা গুলো আরও বিস্তারিত উল্লেখ করে, এই যাত্রাগুলো মানুষের জীবনের সাথে আরও বিশদভাবে সম্পর্কযুক্ত করলে এখানের ওডিসি হতে পারতো। শেষের দিকে লেখক তাড়াতাড়ি শেষ ক���ে দিয়েছেন।
Shambo is the story of Lord Krishna's son. A mighty warrior, he was destined to be cursed by his father who he so loved. Shambo was also cursed by Narada Muni to be the cause that brings an end to the mighty Yadav clan.
But through the eyes of Shambo, who turns into an ugly-looking leper from one of the most beautiful men in Dwarka and is redemption is the crux of the story. His journey brings him into contact with other lepers and gives him a perspective to look outside himself. It is said he ordained the setting up of Sun temples in India, most notably the Konark temple.
এই প্রথম কালকূটের লেখা উপন্যাস পড়লাম। ছোট্ট উপন্যাস - "শাম্ব" আনন্দ পাবলিশার্স মূল্য - ১৫০ টাকা কালকূটের যাত্রা এবার পুরাণের পথে, দ্বারকানগরীতে। কৃষ্ণ এখানে পাশ্ব - চরিত্র। কৃষতনয় অসামান্য নায়ক। কৃষ্ণের ষোলো হাজার রমণী সেই রূপবান বীর শাম্বের - এই ভ্রমণকাহিনীর নায়কের সঙ্গলাভে আকুল। পিতা কৃষ্ণের কানে কথাটা তুললেন দেবর্ষি নারদ। পিতার বিচিত্র অসূয়া তাই অভিশাপ হয়ে নেমে এল পুত্র শাম্বের জীবনে। সেই অভিশপ্ত জীবন থেকে কী করে মুক্ত হলেন শাম্ব সেই অসামান্য কাহিনীই শুনিয়েছেন কালকূট তাঁর এই ভ্রমণোপন্যাসে।
2.5 Stars. The Beginning of the book was very fascinating to read. But when The real story starts it looses it's charm. The plot is very straight and simple . It fails to portray the struggle of the main character in a way that creates some feelings in the reader's heart and The heroic ascend of Shamba feels like a course of normal happenings . Overall the character development of the main character does not evoke the feeling of a hero ( he faces so little resistance!!!). I think the length is too short to justify all these things that the preface promised.
এ বইয়ের প্রতিক্রিয়া দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। যতোটুকু সম্ভব লিখছি। আমার পড়া কালকূটের প্রথম বই শাম্ব। মিথ্যা কথা বলবো না, প্রথমে কিছু পাতা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল, কি পড়ছি? কেনোই বা পড়ছি? কিন্তু প্রায় কুড়ি পাতার পর মূল গল্প শুরু হল। কাহিনী শেষ করার পর বুঝেছি, প্রথম কুড়ি পাতার ভূমিকা কেন প্রয়োজন ছিল। এ এক অসাধারণ যাত্রা। অসাধারন অভিজ্ঞতা।
এখনও অপেক্ষা করছেন ? বেরিয়ে পড়ুন শাম্বর সাথে। ভ্রমন শেষে রিপ্লাই দিয়ে যাবেন।