পৃথিবীকে দেখার আপনার একটা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে...সবারই থাকে । এখন কল্পনা করুন এমন এক ভবিষ্যৎ, যেখানে যে কেউ চাইলেই আপনার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পৃথিবী দেখতে পারবে । ভাববে আপনার সব চিন্তা, অনুভব করবে আপনার সব অনুভূতি । এ জগতে দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে সবচেয়ে দামি সম্পদ, সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক । আর অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গি চুরি করার জন্য জন্ম নিয়েছে একদল দুর্ধর্ষ, দক্ষ চোর ।
এমন এক চোরের সবচেয়ে বিপজ্জনক মিশন থেকে এ গল্পের শুরু ।
আর্কন, অক্টারিন দিয়ে পাঠকপ্রিয়তা লাভ করার পর কেটজালকোয়াটল এবং সৃষ্টিবিনাশ রহস্য-এর মতো নিরীক্ষাধর্মি নভেলা উপহার দিয়েছিলেন এ সময়ের আলোচিত লেখক তানজীম রহমান... এবার তিনি পাঠকের সামনে হাজির হয়েছেন আর আমি হবো ধ্বংসতারা’র মতো কাব্যিক নামের এক মহাকাব্যিক কল্পবিজ্ঞান উপাখ্যান নিয়ে.. .আর সেটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা গৎবাধা কোনো সাই-ফাই গল্প নয় মোটেও । এখানে আপনি রুদ্ধশ্বাস অ্যাকশনে পূর্ণ অসাধারণ এক রোমাঞ্চযাত্রা উপভোগ করবেন । ভ্রমণ করবেন সম্পূর্ণ নতুন এক পৃথিবীতে, খুলবেন অপ্রত্যাশিত রহস্যের জাল । কে জানে, হয়তো বইয়ের শেষে বদলে যাবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ।
দৃষ্টিভঙ্গি দখলের এই দমবাজ খেলায় দর্শকের দলে আমন্ত্রণ... তবে অবশ্যই একটানা তুমুল অ্যাকশন সিন দেখার ধৈর্য থাকতে হবে!
▪️▪️▪️
এটা একটা সাইফাই অ্যাকশন থ্রিলার। প্লট আধুনিক এবং অনন্য। এই জিনিসটা বেশি পছন্দ হয়েছে। মারামারির সময় দু-পক্ষের সমান ক্ষমতা আনন্দ দিয়েছে। কারণ সম্প্রতি পড়া বেশকিছু থ্রিলার এমন ছিল যেখানে–হয় নায়ককে শেষে বোকা বানিয়ে দেওয়া হয়, নয় আঁতকা অতি সাহসী করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে সবাই শুরু থেকে শেষ একই মেজাজে ছিল, একই রকম ফাইট চালিয়ে গেছে। এটা ভালো লেগেছে।
ভালো না লাগার দিক হলো– বইটা গুপ্তচর🔹শিল্পী 🔹যোদ্ধা🔹 অতিমানব এভাবে অধ্যায়ে বিভক্ত ছিল। কিন্তু আমার মনে হয়েছে এগুলোর সাব-অধ্যায় থাকলে ভালো হতো। কারণ এত লম্বা সময় ধরে একটা অধ্যায়ে হাঁসফাঁস করে মরছি, কিন্তু শেষের দেখা নেই–এটা একঘেয়েমির সৃষ্টি করে। এজন্য কিলঘুষির দৃশ্য দীর্ঘ সময় ধরে পড়েই যাচ্ছি এমন লাগছিল; মাথায় খুব চাপ তৈরি হচ্ছিল। এই বিষয়টা ছাড়া গল্পের ধারণা ও বর্ণনা দুটোই প্রশংসাজনক।
কিন্তু এমন ফাইটিং দেখার পর শেষটা নিয়ে আবার অতি অতি আশা করে ফেলবেন না যেন। মনোভঙ্গ হবার প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন।
লড়াইটা দৃষ্টিভঙ্গির দখল নিয়ে। পটভূমি ভবিষ্যতের কোনো এক অজানা সময়, অজানা দেশ। যে সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছে কোনো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে সংগ্রহ করার উপায়। এমন যখন পরিস্থিতি, তখন তার অন্যায় সুযোগ নেয়ার লোকেরও তো অভাব হবে না, স্বাভাবিক সেটাই। এখানেও তাই দেখা যায় - দৃষ্টিভঙ্গি এখন সবচেয়ে মূল্যবান মাদকের নাম। তাই সেটা চুরি করার জন্যেও উদয় হয় নতুন একদল চোরের। এমন এক চুরির কাহিনী নিয়েই এগিয়ে গেছে বইয়ের কাহিনী।
কাহিনী নিয়ে বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই। লেখকের প্রথম বই আর্কনের সাথে এই বইটার একটা মিল ধরা পড়ে চোখে - একাধিক চরিত্রের জবানে গল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। চুরি হয়ে গেছে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গিটা - এবার তার পরিণতি কি হবে, এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে খুজতেই পাঠক কাহিনী ধরে এগিয়ে যাবেন। শেষ পর্যন্ত যে টুইস্টটা ধরা পড়বে চোখে তা আসলেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে যে কখনও কখনও গুজবে কান দেয়ার ফল কতটা ভয়ানক হতে পারে। এমনকি পাঠকের নিজের দৃষ্টিভংগি বদলে যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়!
তানজীম রহমানের আগের দুটো বইই পড়া ছিল, সেই সুবাদে তিন নম্বর বইটা পড়তেও দেরি করিনি। পড়ার পর এ কথা বলতে পারি যে লেখক এই মুহূর্তে বাংলা থ্রিলার জগতে অন্যতম সেরা নক্ষত্র। তার বর্ণনার ভঙ্গি সাবলীল, অ্যাকশন দৃশ্যগুলো পড়ার সময় মনে হচ্ছিল আমি নিজেই অকুস্থলে উপস্থিত। সুচারু উপমার ব্যবহারে বর্ণনা আরও নিখুঁত হয়েছে। বইটা হাতে নিয়ে পড়্রতে শুরু করার যখন প্রথম পৃষ্ঠা সংখ্যার দিকে খেয়াল করলাম তখন দেখি ১১৪ পৃষ্ঠায় চলে এসেছি! পাঠককে এভাবে বইয়ের সাথে আটকে রাখতে পারাই সম্ভবত লেখকের সবচেয়ে বড় দক্ষতা। অভিনন্দন রইল তানজীম ভাই। সাই ফাই থ্রিলারকে নতুন চেহারায় বাংলা ভাষার পাঠকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কনসেপ্টটা ভালো কিন্তু মারামারিতে বেশি ফোকাস দেয়াতে গল্পটা খুব বেশি মনযোগ দিতে পারলাম না। অ্যাকশনগুলো বেশ ভালো ছিল যদিও বর্ণনাগুলো বেশি অতিরিক্ত লেগেছে কয়েক জায়গায়।
পাতার পর পাতা জুড়ে লম্বায়ায়ায়া ফাইট সিকোয়েন্স- তাদের টেকনিক, হিস্ট্রি, জিওগ্রাফির পার্পেচুয়াল বর্ণনার মাধ্যমে লেখকের জ্ঞানের ভাণ্ডার এবং কল্পনাশক্তি প্রদর্শনের এই অমানবিক সোদন আর নিতে পারতেসি না!
বইয়ের মূল কাহিনী দৃষ্টভঙ্গি চুরি নিয়ে। এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি যা চিরশান্তির, দ্বিধা-চিন্তাবিহীন। সেই দৃষ্টিভঙ্গি আবার বিশাল এক সিক্যুরিটি সম্পন্ন সরকারি ভবনে বন্দী। হঠাৎ চুরি হয়ে গেল পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গি টুকু।
চোরের উপর বাটপারি স্বরূপ সেই দৃষ্টিভঙ্গি হাত বদল হতে থাকল। গল্পের প্লট ইউনিক এবং খুবই ইন্টারেস্টিং। সবচেয়ে ভাল লেগেছে, দৃষ্টভঙ্গি হাত বদল হয়ে যার কাছে পৌঁছেছে, গল্পের দৃষ্টিভঙ্গি তৎক্ষনাৎ সেই ব্যক্তির প্রেক্ষাপট থেকে শুরু হয়েছে। প্রথম চোরকে যখন খুন করা হলো, তার খুনীর উপর রাগ হচ্ছিল। কিন্তু, যখন প্রথম চোরের খুনীর দৃষ্টিভঙ্গিতে গল্প আবার শুরু হলো, তখন রাগ বদলে গিয়ে আবার মনে হতে লাগল, ব্যাটা যেন না মরে। তানজীম রহমান সাহেব বিভিন্ন ব্যক্তির ন্যারেটিভে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ফ্লেভার কেমন হতে পারে তা লেখায়ই ফুটিয়ে তুলেছেন। দুর্দান্ত!
এছাড়া অদূর ভবিষ্যতের ডিস্টোপিয়ান যে চিত্র লেখক দেখাইছেন, বাস্তবে তা হলে অবাক হবো না!
দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারটা কেমন যেন একটু অন্যরকম। পৃথিবীতে দুটো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি একরকম হবার কোন চান্স নেই! মতের মিল হতে পারে কিন্তু একই ব্যাপার একইভাবে অনুভব করা কোনভাবেই আসলে সম্ভব নয়! কিন্তু কেমন হবে যদি আমাদের এই অনন্য অসাধারণ ব্যাপারটা চুরি হয়ে যায়? এরকমই এক অন্যরকম প্লটে এইবারের বইমেলায় তানজীম রহমান লিখেছেন আর আমি হবো ধ্বংসতারা বইটি! একলাফে চলে যাই ভবিষ্যতের এমন একটা সময়, এমন একটা পরিবেশ যা আমাদের একদমই অচেনা। যে সময়ে ইট পাথরের দেয়ালের পরিবর্তে জ্ঞানকাঁচে দৃশ্যরা ভেসে বেড়ায়, অদ্ভুত সব বিশ্বাসে বিশ্বাসীরা পৃথিবীর বুকে গড়ে তুলেছে রাজত্ব। প্রযুক্তির আশীর্বাদে সব সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় স্বভাবতই মানুষ সহজে বোর হতে শুরু করলো, আর সেই বোরডম কাটানোর নিমিত্তেই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করে বসলো আরেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখার কৌশল কিন্তু সমস্যা একটাই যার দৃষ্টিভঙ্গিটি নেয়া হবে সে আর বেঁচে থাকবে না। সরকার পুরো প্রক্রিয়াটিই তাই নিষিদ্ধ করে দিলো।কিন্তু তা থেমে থাকেনি, গোপনে ঠিকই সংগ্রহ করা হয়েছে লোকচক্ষুর আড়ালে। সময়ের পরিক্রমায় তা বর্তে গেলো সবচেয়ে মুল্যবান মাদকে। স্বাভাবিকভাবেই তাই এই দৃষ্টিভঙ্গির উপর চোরদের দৃষ্টি পড়লো। গল্প এগিয়ে যায় এই দৃষ্টিভঙ্গি চুরির ঘটনাকে আবর্ত করে।
পুরো লেখাটি একেকবার একেকজনের জবানবন্দিতে রচিত,ব্যাপারটা একটু অন্যরকম পড়তে ভালো লাগে। বইটি শুরু করার সাথে সাথে মনে হবে লেখক স্বাগতম জানাচ্ছেন ভায়োলেন্সের এক দুনিয়ায়। প্রথম পাতা থেকে অ্যাকশনের চূড়ান্ত ছিলো, ম্যাথিউ রাইলির সাথে বেশ মিল পাওয়া যায়, সেই মারামারি চলেছে একদম শেষ পর্যন্ত। লেখকের একটা দ��ক না বললেই না, তিনি তার প্রতিটি বইয়ে প্রচুর প্রচুর ইনফরমেশন দেন, এই বইটিও তার ব্যাতিক্রম নয়। বোঝাই যায় লেখকের জানার পরিধিও বেশ দীর্ঘ!
কিন্তু পুরো বইটি পড়ার পর একটু যেন ক্লান্তিই এসে ভর করে।বলতে চাচ্ছিলাম বইটি কিছু কিছু জায়গায় মনে হয়েছে অযথাই টেনে লম্বা করা হয়েছে। হয়তো অনেক আগেই বইটি শেষ করা যেতো যদি লেখক একটু চাইতেন।
তানজীম রহমান বর্তমানে বাংলা থ্রিলার সাহিত্যের এক অনবদ্য নাম। উনার বাকি বই গুলোও আমি ভীষণ মুগ্ধতা নিয়ে পড়েছি, এমনকি এই বইটি এবারের বইমেলায় আমার লিস্টির একদম শুরুতে ছিলো। বইটি পড়তে পড়তে প্রায়ই মনে হচ্ছিলো কোন গ্রাফিক নভেল পড়ছি। বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আসলে টের পাওয়া যায়না কাহিনী কোনদিকে মোড় নিতে পারে! এরকম চমৎকার একটি সাইফাই থ্রিলারের জন্য লেখককে অসঙ্খ্য ধন্যবাদ!
বইটা যখন পড়া শুরু করবেন তখন প্রথমেই একটা হোচট খাবেন। একজন লোক, পূর্ন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছে। চুরি করবে দৃষ্টিভঙ্গি। ব্যাপারটা কেমন জানি লাগল। এইটা আবার কি জিনিস যাকিনা চুরি করা যায়। লেখক একটু বুঝায়া দিলে পরিষ্কার হইল যে জিনিসটা কি। ধরেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, উনার চিন্তা ভাবনা কেউ বুঝতে পারছে নাহ। আজকে এই কথা বলে তো কালকে ওই কথা। আজকে এরে বন্ধু ভাবে তো কালকে ওরে। আপনার বুঝেই আসছে না যে এ কি চায়। এইটা হল ট্রাম্পের একটা দৃষ্টিভঙ্গি। এখন ধরেন তার এই জগত দেখা আর বুঝার পদ্ধতিটা আপনি বুঝে ফেললেন। তার দৃষ্টিভঙ্গি আপনি বুঝে ফেললেন (ট্রাম্প আর এলন মাস্ককে দেখার পরে মনে হল ব্যাপারটা সত্য হলে মন্দ হতনা)।
আসেন গল্পে ফিরে আসি। সর্বকালের সেরা এক দৃষ্টিভঙ্গি বানায়া সেটা ৩১ নম্বর বাড়িতে রাখা হয়েছে। দুনিয়ার সবাই হন্য হয়ে চায় এইটা নিতে। এই জিনিস চুরি করে ইউলাস মব বস পাটেরের কাছে বেচতে গেলে সেইটা আবার সুন জিরো নিয়া ভাগে। এভাবে একজনের কাছ থেকে আরেকজন দৃষ্টিভঙ্গি কেড়ে নিয়ে পালাতে থাকে। সবার উদ্দেশ্য বেচবে। কিন্তু শেষ চোরটা দৃষ্টিভঙ্গিটা লোড করতেই নেমে আসে নতুন কুশীলব। এটাই কিন্তু পুরা গল্প। শেষের স্পয়লারটা দিলাম না আর। এই উপন্যাসের মূলকথা খুবই কম। পুরা বইটাই বিভৎস সব মারামারির বর্ননায় ভরপুর। তবে চমৎকার সব ব্যাপার পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন লেখক। দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারটা আসলেই অনন্য। এমন আমি চিন্তাই করিনি কখনো। তবে বইটা অনেক জটিল আর আরো ঘটনাবহুল হতে পারত। লেখক এমন জগত তৈরি করেছেন যে সেখানকার সরকার আর পুলিসে যে কে কে আছেন আর তারা কেমন সেটা জানার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। লেখক বইটাকে দুই থেকে তিনটা পর্ব করে সেখানে বিস্তর জাল বুনন করতে পারতেন। এবং আমার বিশ্বাস উনি পারতেন কারণ উনার সেই গুনাবলি আছে। কারণ আমি উনার আরো বই পড়েছি। চরিত্রের কথা যদি বলতে চাই তবে সুন জিরো আর উইনাস গালাস, চমৎকার দুটো চরিত্র ক্রিয়েট করছেন। যুদ্ধের জ্ঞান তাদের ব্যাপক প্রফেশনাল করেছে। ২১১কে আরো বেশী উজ্জ্বল হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু পরিশেষে হতাশ হলাম। সব মিলায়া একটা সায়েন্স ফিকশন একশ্যান উপন্যাস পড়লাম। কিন্তু খুব বেশি খুশি হইতে পারলাম না।
তানজীম রহমানের লেখা ভাল্লাগে। উনার নাম দেখেই বইটা কেনা হইছিল। অতিরিক্ত রকম খারাপ রিভিউ শোনায়, এতদিন পড়া হয় নাই। সময় নিয়ে পড়লাম। অতিরিক্ত মারামারি কিছুটা একঘেয়েমি ছিল। এই বিষয়টা বাদ দিলে, এ বইয়ের সবকিছুই অসম্ভব ভালো। কনসেপ্ট দারুণ। লেখকের নিরলস পরিশ্রম বেশ স্পষ্ট।
প্রথম পাতা পড়ে মনে হল ইহা কি ম্যাথিউ রাইলি পড়ছি? প্রথম পাতা থেকেই ধুমধাম মারমার কাটকাট অবস্থা। আর তাহা বিরাজমান ছিল একদম শেষ পাতা পর্যন্ত । লেখক এক পৃষ্ঠাতেও রেস্ট নেয় নাই । ওয়েলকাম টু ভায়োলেন্স এবং কোপাকপি।
কাহিনী শুরু হয় এমন এক সময় যখন বিজ্ঞান অনেক এগিয়ে গিয়েছে । বিজ্ঞানের অনেক আবিষ্কারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ আবিষ্কার হল "দৃষ্টিভঙ্গি" । আর সেই সাথে জন্ম হল এমন একদল চোরের যাদের কাজ হল মানুষের "দৃষ্টিভঙ্গি" চুরি করা । বইয়ের কাহিনী সেই "দৃষ্টিভঙ্গি" চুরি করাকে কেন্দ্র করেই। পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত "দৃষ্টিভঙ্গি" চুরি করার জন্য প্রস্তুত হল একজন চোর। কিন্তু ঠিক যেভাবে চিন্তা করছেন আপনি কাহিনী কি আদৌ যেভাবে আগাবে?
সম্ভবত ভিন্ন ভিন্ন "দৃষ্টিভঙ্গি" থেকে কাহিনী বর্ননা করার ট্রেডমার্কটা তানজিম ভাই পেয়ে যাচ্ছেন :D ।
ম্যাথিউ রিলি'র লেখা পড়িনি অনেকদিন। এটা পড়তে গিয়ে মনে হল, যেন বাংলায় সেইরকম লেখাই পড়লাম— যা আসলে লিখিত ভিডিও গেম ছাড়া কিছু না। রিলি'র লেখা ভালো লাগে দুটো কারণে: ১) অন্তত কিছু চরিত্র থাকে যাদের সঙ্গে একাত্ম হওয়া যায়; ২) প্রযুক্তি ও পারিপার্শ্বিক কিছুটা হলেও চেনা হয়, যার ফলে কাহিনির প্রধান চালিকাশক্তি (কোনো সম্পদের অন্বেষণ বা কোনো শক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা) আমাদের বোধগম্য হয়। মুশকিল হল, এই উপন্যাসে আমি তেমন কিছু পেলাম না৷ ভবিষ্যতের যে প্রযুক্তি-নির্ভর দেশ ও কালে এই কাহিনির ঘটনা ও চরিত্ররা বাঁচছে, মরছে, মারছে— তাকে আমি চিনি না। তার চেয়েও বড়ো কথা, একটি চরিত্রের সঙ্গেও একাত্ম হতে পারিনি আমি। তবে হ্যাঁ, এত গতিময় লেখা আমি বাংলায় খুব কমই পড়েছি। লেখক চরিত্রগুলোকে আর একটু মানবিক করে গড়লে হয়তো ব্যাপারটা আরও বেশি উপভোগ করতে পারতাম। অলমিতি।
ঘটনার সময়কাল আজ থেকে অনেক পরের বছর। যখন কিনা সবচেয়ে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গিয়েছে। যখন কিনা দৃষ্টিভংগীও বিক্রি করা যায়। চুরি করা যায়। এমনই এক দৃষ্টিভংগী হল ৩১ নাম্বারের দৃষ্টিভংগী। এটাকে অন্য সব দৃষ্টিভংগী থেকে এটাকে আলাদা করেছে যে অন্য দৃষ্টিভংগীর প্রভাব মাত্র কিছু সময়ের জন্য কিন্তু ৩১ নাম্বারের দৃষ্টিভংগী পার্মানেন্ট। আর এটা নিয়ে অনেক মিথ আছে তাই এটার বাজার মূল্য অনেক। তাই অনেকেই এটা চুরি করতে চায়। এই নিয়ে কাহিনী এগিয়ে যায়।
বইটা পড়ে প্রথম কথা যেটা মাথায় এসেছে সেটা হচ্ছে 4x রিলে দৌড় প্রতিযোগিতা আর ৩১নাম্বারের দৃষ্টিভংগী হল সেই রিলের ব্যাটন। বাটন যার হাতে থাকে তার দিকে থেকে কাহিনী এগিয়ে যায়। যাকে হয়ত আপনি একটু আগেও পছন্দ করতে পারছিলেন না যখন তার দিক থেকে কাহিনী বর্ননা শুরু করা হয় তখন তাকে ভাল না লেগে পারে না।
তবে যেই জিনিষটা সবচেয়ে বেশী বিরক্ত লেগেছে বা পড়ার গতি কমিয়ে দিয়েছে তা হল একশন সিনের বর্ননা। গল্পের শুর থেকেই যেন কেউ আপনাকে প্লেন থেকে প্যারাড্রপ করে একটা যুদ্ধের ময়দানে ফেলে দিয়েছে আর আপনি তাকিয়ে তাকিয়ে তা দেখছেন। এত ডিটেইল একশনের বর্ননা মনে হয় না দরকার ছিল। গল্প বলার ধরন নতুন কনসেপ্টটাও অনেক ভাল। কিন্তু মনে হবে বই এর পেট হুদাই মোটা হয়েছে।
সায়েন্স ফিকশনের আম���জে আ্যকশন থ্রিলার। আ্যকশন সিন গুলো চমৎকার ছিল, যেন গ্রাফিক নভেল। তবে শুধুই আ্যকশন। ৪০০ পেজের বিশাল সাইজের বইয়ে, এর থেকেও বড় কথা আর্কন-অক্টারিনের রাইটার থেকে আপনি কেবল এতটুকেই মোটেও সন্তুষ্ট হবেন না। Disappointed. কেউ আ্যকশন থ্রিলারের চরম লেভেলের ভক্ত না হয়ে থাকলে, না পড়ার সাজেশনই থাকবে।
Great read. But, quite different than any other book. Lots of concepts and they are futuristic. It's completely action packed, fast paced and nicely completed. As always I will be waiting for the next book by the author.
বইটা ৩৮২ পৃষ্ঠার, এর মধ্যে ২৫০ পৃষ্ঠা পুরাই অপ্রয়োজনীয়। কোন কাহিনী ছাড়া মারামারি বর্ণনা করে বইয়ের ৪৫ পার্সেন্ট শেষ করেছেন তানজীম ভাই।
ভালোটা দিয়ে শুরু করি, আমার মনে হয় এই প্রথম বাংলাদেশী বইয়ে সমকামিতা দেখলাম। যথেষ্ট সাহসের সাথে লেখক সমকামিতার কথা বলেছেন, এই জন্য ১ স্টার না দিয়ে ২ স্টার দিয়েছি।
কাহিনী ১৫ পার্সেন্ট অরিজিনাল ছিল। কিন্তু তানজীম রহমান থেকে ৮৫ পার্সেন্ট অরিজিনাল পেলেও তো মনে হবে কম হয়ে গেল।
বই লেখার সময় একটা জিনিস আমি খুবই অপছন্দ করি আর তা হল ইনফরমেশন ডাম্প। উনি নিজের জ্ঞান দেখানোর জন্য মুয়াই থাই থেকে শুরু করে গর্ডিয়ান গিট সবকিছুই বর্ণনা করে গেছেন। ব্যাপারটা মোটেই ভালো লাগে নাই। লেখকও সম্ভবত বুঝতে পেরেছেন, সেই জন্য ফার্স্ট হাফ এর পর ইনফরমেশন ডাম্প অনেক কমে গেছে।
ম্যাথু রাইলির অ্যাকশন , গিলিয়ান ফ্লিন এর সাইকোলোজিকাল থ্রিল, হারলান কোবেন এর টুইস্ট, বারডুগোর হাইস্ট, আসিমভের ওয়ার্ল্ড সেটাপ মিশালে হয়ত অনেকের কাছে ভালো লাগবে। কিন্তু আমরা যারা একচুয়ালি ফ্লিন, রাইলি, কোবেন, বারডুগো আর আসিমভ পড়ে এসেছি তারা খুব সহজেই ধরে ফেলতে পারব। আমার আশা পাঠকের বুদ্ধিমত্তাকে সম্মান করবেন আগামীতে।
তানজীম ভাই এর আর্কন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা হরর। অক্টারিন অতটা ভালো না হলেও, চলনসই। কিন্তু এই বইটা ওনার লেখা আমার পড়া সবচেয়ে খারাপ বই। মানুষের দিনে দিনে উন্নতি হয়, আর ওনার হয়েছে অবনতি।
আমি এখানে স্পয়লারে বইয়ের কাহিনী ৫ লাইনে বলব, যেন কেউ আমার মত কষ্ট করে এই বই না পড়ে।
শেষে মনে হয়েছে, বই এর নাম "আর আমি হবো ধবংসতারা" না দিয়ে "আর আমি হব কুং ফু পান্ডা" দিলে বেটার হত। অন্তত যে জিনিসের কোন অভাব ছিল না তা হল মারামারি।
আগামি বইমেলার তানজীম ভাই এর "আত্মরক্ষার কৌশল" অথবা ভালো একটা প্রপার বই পাবার আশা রাখছি।
কাহিনী হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, এমন এক পৃথিবী যেখানে মানুষের চিন্তা করার ধরণ কপি করা যায় কিন্তু তাতে সমস্যা একটি, যারটা কপি করা হবে সে মারা যাবে! এবং একদল মানুষ আছে যারা এরপরেও এই কাজটা করতে চায়...এইরকমই একটা দৃষ্টিভঙ্গির চুরি ও হাতবদল নিয়ে পুরো কাহিনী এগিয়ে যায়...
প্রথম চ্যাপ্টার ৬১পৃষ্ঠার!! কিছুটা অবাক হয়েছিলাম...ভাবলাম ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং এর জন্য হয়তো... কিন্তু না, আমার ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে অপ্রয়োজনীয় পৃষ্ঠা বাড়তে থাকলো...
বুঝা যায় যে এটা ভালোভাবে পড়াশোনা করে, চিন্তা করেই লেখা বই কিন্তু ডিটেল অতিরিক্ত বেশি...৩৭০র কাছাকাছি বই হলেও আমার ধারণা অন্তত ১০০পৃষ্ঠা কমই হতে পারত...! সবচে বড় আফসোস, এই বড় বড় সিনের আড়ালে আসল গল্পটাই কিছুটা ঢাকা পড়ে যায়, অন্তত আমার তাইই মনে হয়েছে...গল্পটার পটেনশিয়াল ছিল কিন্তু সেই পর্যন্ত পৌছাতে পারেনি....
প্রথমত বইটাকে আমার সায়েন্স ফিকশন মনে হয়নি। দ্বিতীয়ত মনে হচ্ছিল ম্যাথু রাইলির কোন বই পড়ছি। বইটা আরো ছোট করা যেত।বইয়ের কাহিনীও জুতসই লাগেনি। শুধু অ্যাকশন আর অ্যাকশন।
বেশ গতিশীল একটা অ্যাকশন সাই-ফাই। গতিটা একটু বেশিই যেন। গোলাগুলি, ঘুসি-লাথ্যির মধ্য দিয়া এতো বেশি টানাহেঁচড়া করা হইছে যে আরেকটু একটু ধীরে সুস্থে শ্বাস নিয়ে লেখকের তৈরি পৃথিবীটা, গল্পটা উপভোগ করার তেমন সুযোগ দেয় নাই।
পেটমোটা ফিলোসফি ফাকফোকড়ে খাওয়াচ্ছে, একটু ভাবাচ্ছে, মারামারি-কাটাকাটি-গোলাগুলির পর একটা মিনমিনে এন্ডিং।
ক্যারেক্টার বিল্ডিং, আর গল্পের পরিবেশটা তৈরি করতে অর্ধেক এনার্জি দিছেন, আর বাকি অর্ধেক মারামারি-গোলাগুলিতে। সফলও। মাঝখানে গল্পটা, এন্ডিংটা বেশ হতাশাজনক। কাজটা মৌলিক, এক্সপেরিমেন্টাল হইলেও বেশ শক্ত। ওয়ান থার্ড পড়ে যতটুকু বিরক্ত লাগবে ভাবছিলাম, ততটুকু লাগে নাই। এঞ্জয় করছি।
" আর আমি হবো ধ্বংসতারা " এর শুরুতেই আমরা জানতে পারি সুদূর ভবিষ্যতের এক দুনিয়া সম্পর্কে , যেখানে যেকোন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এক ভয়াবহ মূল্যবান সম্পদ। মূলত জীবনকে এক অন্য কোন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা সেখানে বড় কোন ড্রাগস নেয়ার চেয়েও আনন্দময়। - কিন্তু সমস্যা হলো যার দৃষ্টিভঙ্গি নেয়া হয় সে আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকে না। তাই দৃষ্টিভঙ্গি নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয় , কিন্তু অন্য সকল অনৈতিক কাজের মতো দৃষ্টিভঙ্গি ও চুরি হতে থাকে। আর এ কাজের জন্য তৈরী হয় এক বিশেষ ধরণের চোর ,দৃষ্টিভঙ্গি চুরি করাই যাদের পেশা। আর এই চোরদের বিভিন্ন সময়ের জবানবন্দি নিয়েই লেখা হয়েছে " আর আমি হবো ধ্বংসতারা। " - "আর আমি হবো ধ্বংসতারা" গল্পটি মূলত সাই ফাই হলেও যে জিনিষটি গতানুগতিক সাই ফাই থেকে আলাদা করেছে তা হলো প্রচুর একশন আর ভায়োলেন্স। বইয়ের প্রথম পাতা থেকেই যার শুরু আর তা বিরাজমান থেকেছে শেষ পাতা পর্যন্ত যার কিছুটা over the top মনে হয়েছে । এর মাঝেই পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে বেশ কিছু ফিউচারিস্টিক টেকের সাথে যেগুলোকে গল্পের প্রয়োজনে সুচারুভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। - " আর আমি হবো ধ্বংসতারা " তে গল্প বলার ধরন লেখকের আগের উপন্যাস আর্কনের কথা মনে করিয়ে দেয়। গল্পের প্লট অক্টারিনের তুলনায় কিছুটা হালকা মনে হলেও ভবিষ্যৎ দুনিয়ার দারুন ডিটেলিং বেশ ভালো লেগেছে। গুপ্তচর , শিল্পী , যোদ্ধা , অতিমানব প্রতিটি চরিত্রকে লেখক ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। আর কাহিনী বরাবরের মতোই অত্যন্ত সাবলীল এবং দ্রুতগতির যা একবার পড়া শুরু ���রলে শেষ করার আগে থামতে ইচ্ছে হবে না। - এক কথায় বলতে গেলে বাংলা ভাষার পাঠকদের সাই ফাই থ্রিলারকে গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে এক নতুন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখিয়েছেন লেখক। সামনে তার এ ধরনের আরো লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
বই : আর আমি হবো ধ্বংসতারা লেখক : তানজীম রহমান ধরন: থ্রিলার / সাইন্স ফিকশন প্রকাশনী : বাতিঘর পৃষ্ঠা : ৩৮৩ মলাট মূল্য : ৪০০ টাকা
বইটির যখন প্রচারনা চলছিল, তখন একটা কথা বলা হচ্ছিলো এটি কোনো গৎবাধা গল্প না। তাহলে বইয়ের রিভিউও কিভাবে গৎবাঁধা ধাচে দিতে পারি!😂 পুরো বই জুড়ে দৃষ্টিকোণ নিয়ে খেলে গেছেন লেখক। এখন বইটি পড়া শেষে আপনার দৃষ্টিকোণ বদলাবে কিনা আমার জানা নেই, তবে এনাকে নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন। গুপ্তচর, শিল্পী, যোদ্ধা, অতিমানব বইয়ের চারটি অধ্যায়। আমার প্রিয় যোদ্ধা💜। শুরু হবে একটি চুরি দিয়ে (চুরি বলব না ডাকাতি বলব জানি না😞।) অভিনব পদ্ধতিতে দৃষ্টিকোণ চুরি(এই কথাটাই আমাকে বইটি পড়তে বাধ্য করে)। দুর্দান্ত অপারেটরদের সাথে আপনার সময় কাটবে। লেখক ঘন ঘন ঘটনার মোড় ঘুরিয়েছেন। গল্প একটি কিন্তু বিভাজক অনেক। আর কিছু না বলি বই সম্পর্কে। বইটি পড়ে আমার এমন অবস্থা হয়েছে আমি অনেকের মতামত জানতে বাধ্য হয়েছি। কি অবস্থা হয়েছে তা বলে আমি আপনাকে প্রভাবিত করবো না। রেটিং করব না। কারন বলা যাবে না। 😜
বইটাকে একটা ২২ ঘন্টার ফাস্ট পেসড অ্যাকশনপ্যাকড্ সাইবারপাংক সাইফাই গেইমের সাথে তুলনা করা যথার্থ হবে। প্রথম পাতা থেকে শুরু করে শেষ পাতা পর্যন্ত রুদ্ধশ্বাস অ্যাকশন সিকোয়েন্স, মাঝেমধ্যে যেটা একঘেয়ে লাগতে পারে। আমার ক্ষেত্রে এটা ভালো সমস্যা করেছে। পড়ার মাঝে বেশ অনেকদিন গ্যাপ পড়ে গিয়েছিলো এজন্য।
ফিউচারিস্টিক সায়েন্সের সাথে কল্পনার মিশেলে কনসেপচুয়ালি বইটা চমৎকার, এই ইউনিভার্স নিয়ে রীতিমতো কমিক্স বা আর্টবুক করে ফেলা যায়। সিঙ্গুলার, জৈবিক, অতিমানব - ইত্যাদি কনসেপ্টগুলো খুবই ইন্টারেস্টিং এবং কল্পনার জন্য অত্যন্ত ভিজ্যুয়ালি অ্যাপেলিং। কোনও নির্দিষ্ট প্রটাগনিস্ট বা অ্যান্টাগনিস্ট নেই, প্রত্যেক চাপ্টারে মূল প্রটাগনিস্ট চেঞ্জ হলেও প্রত্যেকের ক্যারেক্টারাইজেশন-ই মাল্টিডাইমেনশনাল রাখতে পেরেছেন লেখক, যেটা একটা বড় ক্রেডিট। বইটা এদেশের জন্য একদম ভিন্নধারার সায়েন্স ফিকশন, এরকম কাজ আগে হয়নাই। চাইলে এই ইউনিভার্সে আরও কিছু বই লিখে ফেলা যেতে পারে।
প্লটা ইউনিক সেটা মানতেই হবে তবে উপস্থাপনে কিছু একটা ঝামেলা আছে। উপস্থাপনের টেকনিকটা কিছু জায়গায় অনেক ইন্টারেস্টিং লাগলেও কিছুক্ষেত্রে সেইম টেকনিকটাই পড়াটাকে কঠিন করে তুলেছিল। তাছাড়া কেন জানি মনে হয়েছে বইটা ইচ্ছে করে লেন্দি করা হয়েছে। উপন্যাসের শেষ অবধি কাহিনির সমাপ্তি কিভাবে ঘটবে তা বোঝা যাচ্ছিল না এবং যেভাবে লেখক ইতি টেনেছেন তা আসলেই ভাল লেগেছে এবং প্রতিটা চরিত্রের আবির্ভাব এবং তাদের একেকজনকে লেখক অনেক ভাল ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। লেখকের পড়া এটাই আমার প্রথম বই। বইটি পড়ে তার অন্যান্য লেখা পড়ার ইচ্ছা জেগেছে। আশা করি সেগুলো ভাল লাগবে।
তানজীম রহমান বিভিন্ন জনরায় লিখে নিজেকে বার বার ভেঙে গড়েন, এই পরিশ্রম হয়তো সব লেখক করতে চাইবেন না এইজন্যই তিনি হয়ে উঠেছেন আমার প্রিয় লেখকের শীর্ষে। আর আমি হবো ধ্বংসতারা তানজীম রহমানের সাইন্স ফিকশন থ্রিলার উপন্যাস। একটি সাবজেক্টকে একেকজন মানুষ একেক দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে দেখেন, কেমন হয় যদি অন্য কারো দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে আপনি দেখলেন? হ্যা গল্পটা এক চোরের যে মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গি চুরি করে। গল্পের বাঁকে বাঁকে টুইস্ট আপনাকে বোরিং হতে দিবে না৷
বেশ খানিকটা হতাশই বলা চলে। কারণ হিসেবে লেখকের আগের বইগুলো পড়ার পর যে এক্সপেক্টেশান ছিলো সেটাকে দায়ি করা যেতে পারে। স্টার্টিংটা চমৎকার ছিলো, মূল ব্যাপারটিও বেশ ইউনিক ছিলো। কিন্তু পুরো উপন্যাসটাই মনে হচ্ছিলো শুধুই অ্যাকশান সিকোয়েন্স।
৩.৩ তানজীম রহমানের আর্কন আর অক্টারিন পড়ার পর এটা তিন নম্বর বই।আগের দুইটা পড়ে তাই আশা বেশি ছিল। গল্পের প্লটটা খুব সুন্দর।সাই ফাই হিসেবে ভালো। তবে চরিত্রগুলোর মারামারি করার সময়ের বর্ণনায় একটু বেশিই সময় নিয়েছেন লেখক।উনার যা ক্যালিবার তাতে এর চাইতে আরো ভালো ভাবে লেখা একটা উপন্যাস পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে পারতেন। তবে একেবারে যে খারাপ লিখেছেন এমন না।বর্ণনাভঙ্গি সাবলীল ও সুন্দর।দ্রুতগতিতে পড়ে ফেলা যায়। পড়ে আরাম পাওয়া যায়
সায়েন্সন ফ্যান্টাসি বলা যায় গল্পটাকে। চারটা আলাদা আলাদা ফার্স্ট পার্সন POV স্টাইলে গল্পকথন ভালো লেগেছে। তবে একসাথে অনেকগুলো সাইফাই ট্রোপ আর এলিমেন্ট ঢুকাতে যেয়ে গল্পের ক্ষতি হয়েছে বেশি। কোনো।এলিমেন্টই পূর্ণ বিকশিত হতে পারেনি গল্পে। যেন বিশাল বড় ছোটগল্প পড়লাম। বর্ণনার দিক থেকে খুব বেশি টেল এর বিপরীতে শো ছিল খুব অল্প। সব চরিত্রদের সাথে এটাচমেন্ট তৈরী হয়নি।
Felt like the story went nowhere. The writing style is captivating, as ever. But really disappointed with the scattered stories in the story. Liked the intriguing history of martial arts from Sun Zero's perspective. Liked that there was a reason behind each of the villain's (although they are the only main characters of the book, there are no heroes here, really) madness or actions. especially after I got to know each of their stories and motivations.
I think I would have liked the story more had the ending been not so as it was.
This book was just not my cup of tea, I guess. Maybe more so because of the fact that I'd been sick while I was reading it, and I was looking for a more lighthearted read or just the right kind of sci-fi for then. Yes, that's it. I think it disappointed because I'd been expecting a bit more sci-fi-ish sci-fi than this action and thrill-filled mystery sci-fi story.