ডাবল্ স্ট্যান্ডার্ড এর ভূমিকা : সব রকমের প্রশংসা আল্লাহরই যিনি একাই সবকিছু করেছেন, করবেন। অগণিত দরুদ ও সালাম চির-আধুনিক মহামানবের জন্য যাঁকে না। মুসলমানরা চিনলাম, আর না। অমুসলিমদের চেনাতে পারলাম। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর কয়েকজনকে দুআ না করলে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আমার সহাদের শুভ্র সালেহ এই বইটার স্বপ্নদ্রষ্টা, বলেছিল ডায়েরির টুকে রাখা চিন্তাগুলোকে মলাটে বাঁধতে; অভিভাবকপ্রতিম আব্দুল্লাহ আল-বাকী ভাইয়ের কাছে পেয়েছি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা; আমার স্ত্রীর উৎসাহ ও দুআ তো ছিলই। ছােটবোনটাও ছিল গল্পের পাঠিকা,যদিও কিছু বুঝতো কিনা আমার সন্দেহ আছে। আরও ধন্যবাদ মাওলানা ওবায়দুল্লাহ আযহারী সাহেবকে যিনি এই ছাইপাশকে প্রকাশের যোগ্য বিবেচনা করেছেন। ধন্যবাদ মাওলানা আব্দুল্লাহ আল ফারুক, মুফতি রাইহান খাইরুল্লাহ ও অনুমোদন করেছেন এই বইকে। ব্যস্ততার মাঝেও যিনি প্রতিটি শব্দ নজরে ছানী করে দিয়েছেন মুফতি আবু সালেহ মোহাম্মদউল্লাহ সাহেব হাফিযাহুল্লাহকে এবং প্রচ্ছদকার আবুল ফাতাহ মুন্না ভাইকে হৃদয় নিংড়ানো দুআ । আল্লাহ। আপনাদের সবাইকে আহসানুল জাযা, সর্বোত্তম বদলা দান করুন। আমিন । ইসলামের প্রতিটি বিধানই কল্যাণময়। কখনও কোন বিশেষ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কল্যাণময় । আবার কখনো বিশেষ বিষয়ে, কল্যাণ। আপাতভাবে ধীরগতির (slow dose) হলেও সামষ্টিকভাবে কল্যাণ স্পষ্ট। এজন্য কখনো কখনো মনে হতে পারে যে ইসলামের বিধান এমন কেন? বা এটা ইসলামে অনুমোদিত কেন? গভীর চিন্তা করলে বুঝা যায়, যদিও একপক্ষ বিচারে আপত্তি উত্থাপনের সুযোগ আছে বলে মনে হয়; কিন্তু সামগ্রিকতা বিচারে দেখা যায়। এর চেয়ে সুন্দর ও কল্যাণময় বিধান আর হতেই পারেনা। ডাক্তারি ভাষায় বললে, ওষুধের যেমন সাইড এফেক্ট থাকে, আমাদের তৈরি সমাধানগুলো এমন । একটা সমাধান করতে গেলে আরেকটা সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু ইসলামের বিধান সাইড-এফেক্ট মুক্ত; যদিও কখনো দ্রুত, কখনো ধীর; কিন্তু সামগ্রিক রোগ আরোগ্য হবেই নো ডাউট। কেননা এ বিধান এসেছে এমন একজনের কাছ থেকে যিনি মানবজীবনের ও মানবসমাজের স্রষ্টা, সমস্যারও স্রষ্টা, ফলাফলেরও স্রষ্টা । তাই সমাধান তার চেয়ে ভাল আর কে দেবে? প্রথমত, বইটা লেখা আমার নিজের হিদায়াতের জন্য। যাতে ইসলামের যে বিধানগুলোতে বিদ্বেষীমহল সন্দেহ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, সেগুলোতে আমার নিজের বিশ্বাস আরো পাকাপোক্ত হয়। আর ইসলামের বিধানে যুক্তি খুঁজতে যাবার দুঃসাহস দেখাইনি, যেটা খুঁজতে গিয়েছি সেটা হল - কারণ। শায়খুল হাদিস মাওলানা যাকারিয়া কান্ধলভী মাদানী রহঃ এর একটি কথা আমাকে এ কাজে প্রেরণা দিয়েছেঃ “পবিত্র শরীয়তের প্রত্যেকটি হুকুমের মধ্যে যেমন সীমাহীন খায়ের-বরকত ও সাওয়াবা রহিয়াছে, তেমনিভাবে উহার মধ্যে বহু প্রকার কল্যাণও নিহিত রহিয়াছে। যাহার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার; কারণ আল্লাহ তা'আলার অসীম জ্ঞান ও উহার মধ্যকার কল্যাণ উদঘাটনের সাধ্য কাহার আছে? তথাপি নিজ নিজ যোগ্যতা ও হিম্মত অনুপাতে প্রত্যেকের জ্ঞানের পরিধি হিসাবে উহার কল্যাণও বুঝে আসে। যাহার যত যোগ্যতা বেশি হয় ততই শরীয়তের হুকুমে নিহিত গুণাগুণ ও উপকারিতা বুঝে |- আসিতে থাকে” । (ফাযায়েলে আমাল, পৃষ্ঠা ৭৬) তার মানে শরীয়তের হুকুমের কল্যাণ বুঝা সম্ভব। অধমের স্বল্পজ্ঞান ও অযোগ্যতা নিয়ে একাজ করার উদ্দেশ্য একটাই— যদি কোন জ্ঞানী ও যোগ্য ব্যক্তি পর্যন্ত আমার এ আহবান পৌঁছে, না জানি তাঁর গবেষণা থেকে কত রহস্য উম্মত জানতে পাবে, না জানি কত দুর্বল মুসলিমের ঈমান বেঁচে যাবে | দ্বিতীয়ত, মনে হয়েছে অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও বাকস্বাধীনতার নষ্টামীর এই যুগে এমন কিছু ভাবনার সংকলন দরকার যা প্রতিটি মুসলিমের সংগ্রহে থাকা চাই। কেননা প্ৰাচ্যবিদদের (বিধমী ইসলামগবেষকদের) পুরনাে প্ৰলাপই নতুন মোড়কে আসছে। সেই জংধরা অস্ত্ৰেই ঘায়েল হচ্ছে আমাদের সন্তানদের অপকু দুর্বল ঈমান। মূলত বইটা আগে আমাদেরই জন্য লেখা, ওদের জন্য পরে। সামান্য এই কাঁটা বিষয় সম্পর্কে প্রতিটি আর শেষদুটাে গল্প তো শুধুই আমাদের জন্য। মাগদূর্ব ও দ্বোয়াল্লিন'এর পথে যারা আমরা হেঁটে “আন’আমতা আলাইহিম’এর পথ ছেড়ে দিয়েছি। তৃতীয়ত, ওদেরকে আমি দুইভাগে ভাগ করি। তৎসম নামধারী আর আরবি নামধারী। তৎসম নামধারীরা হিন্দুধর্মের বিকৃতি ও অসাড়তা বুঝে নাস্তিকতা অর্জন করেছেন। ইসলামকেও ঐরকমই কিছু একটা ভেবে নিয়েছেন, বা আরবি নামধারী নাস্তিকদের চোখেই ইসলামকে চিনে ঋণাতক ধারণা পোষণ করছেন। এই বই ওনাদের জন্যও । কারণ তাঁরা আসলেই সত্য খুঁজতে যেয়ে নাস্তিক হয়েছেন। তৎসম নামের নাস্তিকরা সত্যের অনেক কাছাকাছি। ওনাদের জন্য আমার বুকভরা দুআ । আর একটু বন্ধু, এই সামনের মোড়ের পরেই তোমার গন্তব্য। চতুর্থত, আরবি নামধারী নাস্তিক। এনাদের নাস্তিকতা অর্জনের কারণ প্রবৃত্তি বা ঝোঁক। এমন একটা দিকে তাদের আকর্ষণ বা ঝোঁক, যা ইসলাম অনুমোদন দেয়না। হয় সে সমকামী, না হয় ব্যভিচারী, না হয় মা-বোনকে নিয়ে যৌন ফ্যান্টাসিতে ভোগে, বা মদ-গাঁজা টানে, নয়তো বহুপুরুষগামিনী- দেখবেন কোন একটা নীতিবিরোধী ও মানবতাবিরোধী কিছুতে সে লিপ্ত যা সে ছাড়তে চায়না। এজন্যই ইসলামকে সে শত্রু। হিসেবে নেয়। কারণ উপায় নেই যে | তখন তার কাজই হয় ইসলামের খুঁত খুঁজে বের করে প্রচার করা। খুঁজতে গিয়ে সে পেয়ে যায় পশ্চিমা ঐতিহাসিকদের কিছু প্ৰলাপ, টেপ রেকর্ডার। ইসলামের দিকে তাক করা বাঁধা কয়েকটা প্রশ্ন। এর ভিতরেই তার ঘুরপাক, অপলাপ, প্রপাগান্ডা। যেগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে আমরা মুসলিমরা হিমশিম খেয়েছি। এড়িয়ে যেতে চেয়েছি। এসব প্রশ্ন যে আমাদের মনেও আসেনা তা নয়। কেউ ওদের জালেই ফেসে গিয়েছে। এই বই ওদের জন্যও। তবে যারা কুরআন তারা এই বইয়েও খুঁত বের করবে। এটাই স্বাভাবিক। ওদের জন্য আমার বুকফাটা দুআ । তবে হ্যাঁ, এই বইয়ের খুঁত গ্রহণযোগ্য হবে নিচের শর্তসাপেক্ষেঃ ১। আইন বিষয়ে আইন পড়ুয়ার মন্তব্য গ্রহণযোগ্য। বিজ্ঞান বিষয়ে বিজ্ঞান ফ্যাকাল্টির কেউ হতে হবে। একইভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের রেফারেন্স কর্তন করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ব্যক্তি হতে হবে। ২। দাসপ্রথা- দাসীপ্রথা এসব সমাধান জাতীয় বিষয়ে শুধ...
আমরা ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের মত শুধু ধর্ম মনে করি। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম একটা সংস্কৃতি, একটা সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যেখান থেকে আমরা অনেক দূরে সরে এসেছি। সেই কারণে আমাদের এত অধঃপতন। তাই আমাদের উচিৎ, প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে জানা ও মানা এবং অন্যদেরকে জানানো।
ইসলামী যুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়া আমার এটা ২য় বই। প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বই প্রকাশের পর এই ধরনের বইয়ের প্রতি পাঠক লেখক দুই ধরনের মানুষেরই আগ্রহ তৈরী হয়েছে। তাই এই ধরনের অনেক গবেষনা মূলক বই উঠে আসছে পাঠকের হাতে আস্তে আস্তে। বই এর মূল লক্ষ বাঁ উদ্দেশ্য যাই বলা হোক না কেন তা হলে নাস্তিকদের বিভিন্ন সময়ে ছুড়ে দেওয়া প্রশ্ন যেগুলো হটকেকের মতন প্রচলিত। এবং সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ ব্যাপার এইযে তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া যে তারা ডবল স্টান্ডার্ড অনুসরন করে। লেখকের কথা অনুসারে নাস্তিকেরা তাঁদের নিজের সুবিধা অনুযায়ী যুক্তি মেনে নেয় বাঁ দেয়। কিন্তু একই যুক্তি তাঁদের বিপক্ষে গেলে তারা তা অস্বীকার করে বাঁ ডবল স্টান্ডার্ড শো করে। বইটিতে ছোট ছোট অধ্যায়ে অনেক গুলো অনুগল্প বা সিনারিও দিয়ে কথা গুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশের এই জেনারা নতুন হিসেবে সুখ পাঠ্য বই।
মুক্তমনাদের যুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিযুক্তি সমৃদ্ধ এত রেফারেন্স সহ বই আমি এর আগে পড়ি নি,এমনকি প্যারাডক্সিকাল সাজিদও না।লেখক জিনিয়াস বলতে হবে,কমিউনিজম আর পুঁজিবাদ এর সাথে ইসলামিক শাসননীতির অসাধারণ এক আলোচনার অধ্যায়টা অসাধারণ।
বইটা পড়ে জানিনা কেন এতো ভালো লেগেছে। এতো রেফারেন্স সমৃদ্ধ একটা বই। প্রথমে পড়ে ভাবতেও পারিনি যে শেষে এতকিছু আছে। শেষের কল্পকাহিনীটা আমাকে এতটাই অভিভূত করেছে যা বোঝানো অসম্ভব। আরো অভিভূত হই এইটা জেনে যে, fact গুলোকেই গুচ্ছবদ্ধ করে বানানো হয়েছে ওই fiction. আমার মনের অনেক প্রশ্নের উত্তর আমি এই বইতে পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ।
বইটা এতই ভালো ছিল যে আম্মুর সাথে ঝগড়া লেগে গিয়েছিলো ইসলাম নিয়ে 😆
ছোট গল্পের মাধ্যমে মানুষের মাঝে ইসলামের ডাউট গুলো খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করা হয়েছে। দাসপ্রথা, দক্ষিণ হস্ত মালিকানা, জিয়িয়া, দাড়ি, গণহত্যার চ্যাপ্টারগুলো থেকে মনের সব ডাউট উঠে গেছে। মুসলিম বাঙালিদের জন্য এরকমই একটা বই দরকার ছিল।
কিছু বই হয় বইয়ের থেকেও বেশি কিছু, এই বইটা তেমনই একটা বই। বইটার কথাগুলো খুবই শক্তিশালী, কিন্তু তা আঘাত করেনা। বরং, মনের মধ্যে এমন এক বোধ সৃষ্টি করে যে মনে হয় আমার উচিৎ শত্রুকেও ভালোবাসা। হতে পারি আমি নাস্তিকতা বিরোধী, কিন্তু তারাও আল্লাহরই সৃষ্টি, নামাজ-কালামের বাইরেও যে একটা জীবন আছে আর সেখানে আমাদের প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হতে হয় তিক্ত অভিজ্ঞতার। এই বইটা আমাদের তা হতে বিরত থাকতে সাহায্য করবে। বিশ্বাস খুবই সংবেদনশীল ব্যাপার। তবুও আমাদের উচিৎ নয় কাউকে তার বিশ্বাসের মূলে সরাসরি আঘাত করা। আমরা মুসলিমরা জানি, সৃষ্টিকর্তার আদেশ মানলে, নবীজীর সুন্নাত পালন করলে কোনো সমস্যা তো হয়ই না বরং জীবনটা আরও মধুর হয়ে ওঠে। তবুও আমরা তা মানিনা, এই বই আমাদের কঠোরভাবে তা মানতে নির্দেশ দেয়না, পড়ার পর তোমার বিবেকই তোমাকে তা করাতে বাধ্য করবে। এই বইটা আমাদের ভাবায় মানবিকতা নিয়ে, ইসলাম যবনদের সম্বন্ধে আসলে কি বলে? গণিমতের মাল, সে কি আসলেই আমার ভোগ্য? মানবধর্মই কি সব? ইসলাম কি কখনো আধুনিক জ্ঞানচর্চার বিরোধিতা করে? ইসলাম কি হুকুম দেয় কোনো বিজ্ঞানীকে আঘাত করার? অনেক প্রশ্নের জবাব মিলবে এই বইটা পড়লে। বইটা পড়ার পর আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি একটাই, “ভালোবাসতে হবে সকলকে।”
এতো সুন্দর! এতো সুন্দর! ইয়া রব, তুমি লেখককে উত্তম, অতি উত্তম বদলা দান করো। ঘরে ঘরে, পাঠকের হাতে হাতে বইটি পৌঁছে দাও। বিশ্বাসের আলোয় পরিপূর্ণ করে দাও আমাদের মা-বাবা-ভাই-বোনদের অন্তর, উদ্ভাসিত করো আমাদের চলার পথ। আর মৃত্যুর পূর্বে এই মতো অসাধারণ সদকায়ে জারিয়া যেন আমরাও করে যেতে পারি সেই তৌফিক নসিব করো!
দাসপ্রথা, শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ; এই দুটো অধ্যায় অন্যগুলোর তুলনায় শক্তিশালী ছিল। দক্ষিণ হস্ত, শস্যক্ষেত্র, জিযিয়া, ইসলাম কি আরব সংস্কৃতি; এই তিনটা অধ্যায় ছিল মোটামুটি। বাকিগুলো গাঁজাখুরি কথাবার্তায় ভরা। লেখক নিজেই নিজের তথাকথিত যুক্তিতে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড প্রদর্শন করেছেন।
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কী? যখন মানুষ নিজেদের সুবিধামতো ন্যায্যতার নিয়ম পাল্টায়, তখনই সেটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। যেমন ধরুন, - কেউ জিন্স, টপস বা স্কার্ট পরে চলাফেরা করলে সেটাকে পোশাকের স্বাধীনতা বলা হয়। - কিন্তু কেউ নিজ ইচ্ছায় বোরখা বা হিজাব পরলে সমাজের অনেক ক্ষেত্রেই কটাক্ষ করা হয়। এই পার্থক্যই হলো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।
এই বইতে লেখক ইসলাম ধর্ম, আল্লাহর দ্বীন এবং শরিয়াহর নিয়মকানুন নিয়ে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মনোভাবের বিরুদ্ধে যুক্তি ও প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন।
ইসলাম এমন কোনো ধর্ম নয় যা শুধু নামাজ, রোজা, যাকাত বা হজের মত কিছু আচার আচরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ইসলাম আসলে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্��া—জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কিভাবে চলতে হবে, মানুষের আচার-আচরণ, নৈতিকতা ও নিয়মকানুন—সবকিছু ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়।
লেখক ইসলামের ক���ছু হালাল বিধান যেমন: দাস ব্যবস্থা, পুরুষ প্রধান পরিবার, জিজিয়া কর ইত্যাদি নিয়ে করা কটাক্ষকে দলিল ও প্রমাণসহ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমি নিজেও এই বিষয়গুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখতাম না, কিন্তু বইটি পড়ে বেশ স্বচ্ছ একটা ধারণা পেয়েছি। সাথে মানবতা বা মানবধর্মের নামে অন্যায় অবিচারকে প্রশ্রয় দিয়ে সমাজে যে বিশৃংখলার সৃষ্টি হচ্ছে সেসবের বিরুদ্ধেও লেখক শক্তভাবে প্রমাণ দিয়েছেন।
লেখক আরো প্রমাণ করেছেন ইসলাম কোনো নির্দিষ্ট গোত্র বা জাতির সংস্কৃতি নয়। ইসলাম হলো সমগ্র মানবজাতির প্রতি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ প্রদত্ত নির্দেশনা।
ছোট্ট এই বইটির বিষয়বস্তু অনেক শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ। অল্প বিদ্যা যেমন ভয়ংকরি, তেমনি ইসলাম সম্পর্কে একদুটো লাইন জেনে ধারণা নেওয়াও ভয়ংকর। এই বইটা আমাকে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিয়েছে। যদিও আমি আরও বিস্তারিত জানতে আগ্রহী, তারপরও gate way হিসেবে বইটা যথেষ্ট।
ইসলাম সম্পর্কে যুগ যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত(!) ভ্রান্ত ধারনাগুলোর যুক্তিসংগত ও প্রমানসহ জবাব দেয়া হয়েছে অত্যন্ত বিচক্ষনতার সাথে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে নাস্তিক্যবাদের অসারতা ও যাবতীয় অযৌক্তিক ধ্যান ধারনা গুলো। দেখানো হয়েছে কিভাবে এসব "ভদ্রসমাজ" খেতাবধারীরা শোশনের নীতি(!) তে লুটপাট চালিয়ে আসছে বছরের পর বছর। ইসলামের মত এত ব্যাপক,সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ন একটি লাইফস্টাইলের বিরুদ্ধে কীভাবে শুধুমাত্র ধর্মের নাম দিয়ে বিষদগার চালানো হচ্ছে। দেখানো হয়েছে ইসলামী অর্থব্যবস্থা, শোষণ মুক্ত ইসলামী রাষ্ট্রনীতি ও লাইফস্টাইল ছাড়াও সর্বযুগে এর প্রয়োগযোগ্যতা ও আধুনিকতা। সবার জন্য সহজপাঠ্য হিসেবে লেখা বইটি সবারই পড়া উচিত।
প্রচ্ছদে একটি চশমা দেখা যাচ্ছে- এ ধরণীর অনেক মরমী সাধককে এ ধরণের চশমা পড়তে দেখা যায়। সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন, চোখ তো দুটো নয়- অন্তরের যে চোখ তার সংখ্যা মক্ষিকার মতই সহস্র। এমন দীর্ঘদৃষ্টি ও হ্রস্বদৃষ্টির রোগে আক্রান্ত সহস্র চোখের অধিকারিগণ, তা তারা ওরিয়েন্টালিস্ট, সুশীল কিংবা মুক্তচিন্তক যে নামেই সুখ্যাতি অর্জন করুক না কেন, এই পুস্তকটি তাদের ব্যাধি নিরাময়ে একটা প্রেসক্রিপশন হতে পারে। উল্লেখ্য, লেখক পেশায় চিকিৎসক।
বইটিতে চিন্তার অবকাশ রয়েছে, প্রতুত্তরের সুযোগ, সমালোচনার হাতছানি, বৈঠকী ঢঙ্গে একাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গি এর উপজীব্য। গল্পের ছাঁচে দেখানো হয়েছে দৃষ্টিভঙ্গির সঠিক লেন্স।
যুক্তিতর্কের তেতো মেডিসিনে নিরাময় হোক সকল অন্ধত্বের রোগ। চিকিৎসা হাতে ও কলমে যুগপৎ চলুক এই কামনা।
Everyone should read this book. It made me know and realize things about Islam. It's an important book. It clears out doubts and gives references to more books and hadiths and ayahs that everyone should know and understand. It made me fall in love with my deen and the Holy Quran and sunnah again, from a new light.
বাংলাদেশের নাস্তিকতাবিরোধী বই বিপ্লবে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড সম্ভবত দ্বিতীয় সংযোজন। বইয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো গায়েবে বিশ্বাস নিয়ে আলোচনা; ইসলামের দাসপ্রথা, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, দণ্ডবিধি; সংস্কৃতি; তাওহীদের সার্বজনীনতা ইত্যাদি। টিপিক্যাল আস্তিক-নাস্তিক বিতর্ক থেকে একটুখানি সরে এসে স্বতন্ত্র একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা এই বইটির অনন্য বৈশিষ্ট্য। লেখক ইসলামী বিধানগুলোর ‘যৌক্তিকতা’ আলোচনার চেয়ে ‘কল্যাণময়তা’র আলোচনাকে প্রাধান্য দিয়েছেন, প্রচলিত অনৈসলামী বিকল্পগুলোর সাথে এগুলোর তুলনা দেখিয়েছেন, এবং নতুন ও অধিক কল্যাণকর বিকল্প সৃষ্টি করার চ্যালেঞ্জ রেখেছেন। ‘যুক্তি’ সংক্রান্ত আলোচনায় ২+২=৪ এর মতো নৈর্ব্যক্তিক উত্তর আশা করা হয়। অথচ মানবজীবন গাণিতিক সমীকরণের মতো সরল নয় যে, অংক কষে কোনো পারিবারিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাষ্ট্রীয় বিধানের ‘যৌক্তিকতা’ বের করে ফেলা যাবে। এ জন্যই একই টপিক আলোচনা করা অন্যান্য বইয়ের চেয়ে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটি আমি বেশি সাজেস্ট করবো; বিশেষত দাসপ্রথা, জিযিয়া ও দণ্ডবিধি সংক্রান্ত বিষয়ে।
লেখকের ভাষাশৈলীর কারণে বইটি বিশেষ সুখপাঠ্য হয়েছে। আরোপিত সাহিত্যিকতা ছাড়াই লেখক বইয়ের প্রাঞ্জলতা ধরে রেখেছেন। মলাট ওল্টাতেই চোখে পড়া ‘লেখকচরিত’ থেকে শুরু হয় লেখকের সাহিত্যিক দক্ষতার প্রমাণ। ছোট ছোট বাক্য, সুন্দর শব্দচয়ন, কবিতার চরণ বা গানের কলিকে সাবলীলভাবে গদ্যের মাঝে স্থাপন করা – এসব ক্ষেত্রে লেখকের মুন্সিয়ানার ছাপ রয়েছে। এ ছাড়া অর্ণবের একটি গানকে রি-ইন্টারপ্রেট করে নাস্তিকমানসের অস্থিরতা ব্যাখ্যা করার বিষয়টি খুবই সুন্দর ছিলো। ব্যক্তিগতভাবে আমি সঙ্গীত, কবিতা, প্রবাদ সহ বিভিন্ন জাহিলি ডিসকোর্সের এমন ইসলামিক ডিকন্সট্রাকশান উৎসাহিত করার পক্ষে।
তবে লেখকের গল্প লেখার হাতে অনেক অনেক উন্নতি করার জায়গা রয়েছে। থার্ড পার্সন ন্যারেটর হিসেবে গল্পের ভেতর এত মন্তব্য সংযুক্ত করা গল্পের স্বাভাবিক গতিকে রোধ করে। আস্তিক-নাস্তিক তর্ক সংক্রান্ত গল্পগুলোতে স্বভাবতই বিপুল পরিমাণ তথ্যের মহাসমাবেশ ঘটে। তাই গল্পের ভেতর অনেক কথা জায়গা না হওয়ায় সেগুলো চলে গেছে টীকা বিভাগে, ফলে তার আকৃতিও হয়েছে দৃষ্টিকটু রকমের বড়। ব্র্যাকেট কিংবা বুলেট পয়েন্ট হলো লিখিত প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য। গল্পের সংলাপে এই উপাদানগুলোর অস্তিত্ব শোভনীয় নয়। এই বইয়ের বিভিন্ন গল্পে বিভিন্ন চরিত্র। তাই বিভিন্ন চরিত্রের মুখে একই কথার হুবহু পুনরাবৃত্তি কৃত্রিম শোনাচ্ছিলো, সাজিদ বা ফারিসের ক্ষেত্রে এই ত্রুটি ছিলো না। যেসব গল্পে উদ্ধত নাস্তিক ভিলেন রয়েছে, সেখানে সংলাপগুলো কিছুটা আবু ফুলান-ইবনে ফুলানের গল্পের মতো কার্টুনধর্মী হয়ে গেছে। আবার যেসব গল্পে ভদ্র নাস্তিক রয়েছে, সেখানে তারা এমনভাবে আস্তিক নায়ককে কথা যুগিয়ে দিচ্ছে যে বোঝা যাচ্ছে না কোন বক্তা আস্তিক আর কোন বক্তা নাস্তিক। সায়েন্স ফিকশানের প্রতি আমি খুব কম লেখককেই সুবিচার করতে দেখেছি। অনেকগুলো কাল্পনিক বিষয়কে এক করতে হয় বলে সেগুলোর মাঝে ইন্টেগ্রিটি রক্ষা করা কঠিন। জ্রাকিল, ভ্রিডাল, রিশিনা, জোহেবের মতো এত কাল্পনিক নামের পাশে একটি ‘আব্দুল্লাহ’ নাম বেমানান ঠেকেছে। পুরো বইটি জুড়েই আফসোস হয়েছে লেখক কেন প্রবন্ধ না লিখে গল্প লিখতে গেলেন।
শারঈ কিছু বিষয় পুনর্বিবেচনার দাবি রাখতে পারে। “[জিহাদ] দরকার হলে তো আলেমরাই আগে যেত।” কথাটি বেশি সরলীকৃত, যা বাস্তব পরিস্থিতির অনেক জটিলতাকে অস্বীকার করছে। তাহলে কি ফিলিস্তিন-কাশ্মীর-আরাকানে কোনো আলেমই নেই? নাকি সেখান��ার মুক্তিযুদ্ধগুলোর সবই ‘অ-দরকারী’? মদীনা ইসলামী রাষ্ট্রের নামে ‘প্রজাতন্ত্র’ শব্দটির ব্যবহারে একটু খটকা লেগেছে। আধুনিক প্রজাতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় তাত্ত্বিকভাবে হলেও কুরআনের বিধানের চেয়ে মানুষের রায় অগ্রগণ্য। এ ছাড়া টাইম ট্র্যাভেল করে অতীতের মানুষদের সাথে যোগাযোগ করে আসাটা, অর্থাৎ অতীতকে একরকম পাল্টে দিয়ে আসাটা ইসলামিক অন্টোলজিতে সংস্থানযোগ্য মনে হয়নি। বিশেষত ত���কদীরের ধারণার সাথে এটা একেবারেই যায় না। সত্যজিৎ রায়ের প্রফেসর শঙ্কু চরিত্রের একটি গল্পে এরকম টাইম মেশিনের ধারণা ছিলো, যেখানে মানুষ অতীতে তো যাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বর্তমানের মানুষেরা সেখানে শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে পারছে না। একটা অস্পষ্ট পর্দার আড়াল থেকে অতীতে ঘটা ঘটনাগুলো দেখছে, কিন্তু নিজেরা কোনো ঘটনায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। অতীতের মানুষেরাও তাদের দেখতে বা শুনতে পাচ্ছে না। টাইম মেশিন নিয়ে গল্প যদি লিখতেই হয়, তাহলে অন্তত এই সীমার মধ্যে থাকা উচিৎ।
তবে স্টাইলিস্টিক কিছু বিষয় বাদ দিলে ইসলামি বই বসন্তের এই মৌসুমে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হলো সুমিষ্ট এক ফল, যার স্বাদ আস্বাদন করা থেকে নতুন প্রজন্মের মুসলিমদের বঞ্চিত হওয়া ও অমুসলিমদের বঞ্চিত করা ঠিক নয়।
বইটি নিয়ে অনেক আশাবাদী ছিলাম কিন্তু শেষমেশ ভালোই হতাশাজনক প্রমাণিত হলো। আল্লাহর একত্ববাদ,দাসপ্রথা,নারীর মর্যাদা বা অধিকার নিয়ে অধ্যায় গুলো খুব ভালো ছিল। যুক্তি গুলোও ছিলো সুন্দর ও শক্তিশালী।
তবে অন্যান্য জায়গায় কয়েকটি বিষয়ে ভুল যুক্তি বা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যেমন এক জায়গায় বলা হয়েছে রোমান ও পারস্যদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বিজয়ের পেছনে নাকি সামরিক প্রচেষ্টা নয় ইসলামি জীবনপদ্ধতিই ছিল মূল চালিকাশক্তি। অথচ ইতিহাস আমাদেরকে ভিন্ন বার্তা দেয়। আরেক জায়গায় ইসলামি ব্যাংকিংকে ইসলামি অর্থনীতির নমুনা হিসেবে পেশ করা হয়েছে। অথচ বাস্তবে ইসলামি ব্যাংকিং পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থারই উদ্দেশ্য পূরণ করে থাকে।
জিম্মিদের অধিকার নিয়ে আলোচনায়ও বক্তব্য অসম্পূর্ণ ছিলো। জিম্মিদের অধিকার, নিরাপত্তা ইত্যাদি আলোচনার সাথে সাথে এটাও উল্লেখ করা উচিত ছিল যে জিম্মিরা কখনো ইসলামি রাষ্ট্রে কোনো নেতৃস্থানীয় আসনে যেতে পারবে না,কোনো উল্লেখযোগ্য অফিস হোল্ডার হতে পারবে না যেখানে কোনো মুসলমান তাদের অধীনে কাজ করবে।
আর সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাখা বা যুক্তি এসেছে বানু কুরাইযার হত্যাকাণ্ডের অধ্যায়ে। যেখানে একরকম বলা হয়েছে যদিও আল্লাহ সা'দ ইবনে মুয়াযের বিচারে সন্তুষ্ট আর এটাই আল্লাহর বিচার। তবুও আল্লাহর রাসূল বিচার করলে নাকি ভিন্নভাবে বিচার করতেন।তিনি নাকি আরও অধিক দয়াপরবশ হতেন। আবার যুক্তি হিসেবে বদরের উদাহরণও দেয়া হয়েছে। অথচ আমরা সকলেই অবগত আছি বদরে আল্লাহর রাসূলের সেই সিদ্ধান্তে আল্লাহ কেমন ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন এবং তাঁর প্রিয় হাবিবকে উদ্দেশ্য করে কতো শক্ত আয়াত নাযিল করেছিলেন। অথচ তারপরও এরকম কোনো বিশ্লেষণের কিভাবে অবকাশ থাকে।
আল্লাহ আমাদের সকলের ভুল-ত্রুটি মাফ করুন। সকল প্রশংসা এই বিশ্বজাহানের একক স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহর!!
বাংলাদেশে সায়েন্স ফিকশন জগতের একচ্ছত্র অধিপতি খ্যাত লেখকের প্রায় অর্ধ শতক ফিকশন পড়েছিলাম।পড়ছি। এক ধরণের নেশা হয়ে গেছে। প্রতিদিন কমপক্ষে একটি। 'সিস্টেম এডিফাস' দিয়ে শুরু। একে একে 'নিঃসঙ্গ গ্রহচারী','ত্রিনিত্রি রাশিমালা','অনুরণ গোলক','নয় নয় শূণ্য তিন','পৃ','রবোনগরী','যারা বায়োবট' ইত্যাদি ইত্যাদি। 'টুকুনজিল' পড়ে মনে হয়েছিল এর চেয়ে অনন্য কল্পকাহিনি হতেই পারে না। এমন ঘোরের মধ্যে থাকাকালীন অন্য কোন ফিকশনকে একেবারে অখাদ্য মনে হত। 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' পড়তে পড়তে তাই যখন 'শ্বাশত একত্ব' গল্পে আসলাম আর গল্পের উপরে শিরোনাম 'বিজ্ঞান কল্পকাহিনী' দেখে বেশি আগ্রহ হয়নি। ভাবলাম,অনন্যসাধারণ লেখকের 'টুকুনঝিলে'র সমান কোন ফিকশন হতেই পারে না। তবু শুরু করলাম। একটানে শেষ করলাম। পরপর দুইবার। আবার... মুগ্ধতার রেশ কাটছিলই না। এমনও সায়েন্স ফিকশন হতে পারে? ফিকশন যেখানে গৌণ,সায়েন্সের হালকা একটু মাত্র ছোঁয়া কিন্তু সত্য—ধ্রুব সত্যগুলো নিপুণভাবে মুখ্য করে তোলা হয়েছে। নতুন করে প্রশ্ন জাগছে মনে। এই যে এত এত ফিকশন পড়লাম। সবগুলো মিলে আসলে আমি কি শিখলাম? প্রতিটা থেকে আলাদা শিক্ষা বাদই দিলাম। সবগুলো মিলেই কি কিছু পেয়েছি? জানার জন্য? মানার জন্য? নিজেকে সমৃদ্ধ করার জন্য? আর এই মাত্র বিশ পৃষ্টার গল্পে যা ছিল তা কি বিশাল এক দেড়হাজার পৃষ্টাওয়ালা সায়েন্স ফিকশনে পেয়েছি?
এক শ্রেণির শ্রোতাদের বলা হয় 'হংস শ্রাবক'। হংস বা হাঁসের মত,শ্রাবক অর্থাৎ যে শ্রবণ করে। হাঁসের মত যে শ্রবণ করে। হাঁস যেমন কাঁদায় ঠোঁট ডুবিয়ে গটগট করে যা পায় সব তুলে নেয় এবং পরে তা থেকে ছেঁকে গ্রহণীয়গুলো গ্রহণ করে এবং বর্জনীয়গুলো ত্যাগ করে—তেমনি এই শ্রেণীর শ্রোতারা সব শুনে। মনযোগ দিয়ে শুনে। গ্রহণ করে ততটুকু,যতটুকু তার দরকার। পাঠের ক্ষেত্রে আমিও এই নীতিতে চলি। ফলে দেখা যায় অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো আমার মস্তিষ্ক মনে রাখতে চাচ্ছে না। রাখছেই না। কষ্ট করে,সময় নষ্ট করে পড়া এতগুলো সায়েন্স ফিকশনের কাহিনী,শিক্ষা কিছু তো মনে নেই ই,এমনকি বইগুলোর নামও মনে নেই। কারণ? এগুলো আখিরাতের জন্য তো নয়ই,দুনিয়ার জন্যেও কোন উপকারে আসবে না। ফলে জাফর ইকবাল স্যারের অনেকদিনের জ্ঞানলব্ধ সৃষ্টি কর্ম বিভ্রান্তি সৃষ্টি ছাড়া আর কিছুই দেয় নি। আর ডা. শামসুল আরেফিন স্যারের একটা ফিকশন সে ক্ষতি পুষিয়ে দিয়ে সত্যের এক মহাসত্য জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। দিকনির্দেশনা দিল। দিল... . এ তো গেল শেষ একটা অধ্যায় নিয়ে কথা। এমন আরও দশটি অধ্যায়ের অসাধারণ সংকলন নিয়ে 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' বইটি। . কিছু গল্প আমাদের মত সাধারণদের জন্য। যারা বিশ্বাস করে নিয়েছে "একজন মহান রব দয়া করে অদৃশ্য জগতের খবরগুলো পৌঁছে দিয়েছেন কুরআনের দ্বারা।" সৃষ্টি করেছেন সর্বোত্তম গঠনে। জ্ঞান,প্রজ্ঞা,চিন্তা শক্তি এমনভাবে দান করেছেন যেন দেখা দিতে না হয়,সব দেখিয়ে দিতে না হয়। পঞ্চইন্দ্রিয় দিয়ে যেন শ্রেষ্ঠতম রবের আশ্চর্যতর সৃষ্টিকে জেনে ইন্দ্রিয়াতীত দয়াময় রবকে চিনে নিতে পারি।এবং... আরও গভীরভাবে জানার জন্য রয়েছে 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' বইয়ের 'না দেখে বিশ্বাস : মানবজন্মের সার্থকতা' গল্প।
কিছু গল্প আছে যারা অবাধ্য হওয়ার জন্য বা কৌতুহলী হয়ে,কখনোবা কারোর প্ররোচনায় পরে প্রশ্ন তুলে তাদের জন্য। যেমনঃ 'দাসপ্রথাঃঐশী বিধানের সৌন্দর্য','জিযিয়াঃঅমুসলিম নাগরিকের দায়মুক্তি','ইসলাম কি আরব সংস্কৃতি?'...
এরপর রয়েছে আরও একটি প্রিয় গল্প 'পরিপূর্ণ দাড়ি : জঙ্গল নয়,ছায়াবীথি'। এ ব্যপারে দ্বিধান্বিতদের সব দ্বিধা ঝেড়ে মুছে ঝকঝকে তকতকে করে দেওয়ার জন্য এই একটি অধ্যায়ই যথেষ্ট। কেবল সত্যকে গ্রহণ করার মানসিকতা নিয়ে পড়তে হবে। চোখ বন্ধ করে নয়। চোখ খুলে এবং দিল খুলে পড়তে হবে। একবারের জন্যে হলেও 'হংস শ্রবণ' পদ্ধতি গ্রহণ করে নিয়ে সবকিছুকে হৃদয় দিতে অনুভব করতে হবে। পরে না হয় যুক্তি তর্ক দিয়ে বাদ দেওয়া যাবে। একবার তো আগে গ্রহণ করেই দেখি!
একই কথা একজন বললে ঠিক আর অন্যজন বললে ভুল— এমন দ্বিমুখী অবস্থান যাদের তারাই মূলত ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের দোষে দুষ্ট। এ অবস্থানের অসাড়তাকে চিত্রিত ক'রে যুক্তিশীল আলোচনা, ইসলাম��ক সোর্স, এবং গবেষণাপত্রের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে নাস্তিক, সংশয়বাদী, মুক্তমনা, বা ইসলাম বিদ্বেষীদের মেরুদণ্ডই ভেঙে দিয়েছেন লেখক।
আরিফ আজাদের প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ এবং ২ পড়েছিলাম অনেক আগেই। তার চেয়ে কম মনে হয়নি এই বইকে। বরং অনেকক্ষেত্রেই মনে হয়েছে লেখায় শক্তিশালী আর্গুমেন্ট ছিলো। লেখক পুরো বই জুড়ে গল্প সাজিয়েছেন খুব সুন্দর ক'রেই। ভালো ছোটগল্পের শেষে যে একটা টুইস্ট পাওয়া যায় সেটা পাওয়া গেছে কিছু কিছু গল্পে। এবং লেখকের রসবোধও আছে বলতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে তথ্যের ভারে গল্প হারিয়ে গিয়েছিলো।
'না দেখে বিশ্বাসঃ মানবজন্মের সার্থকতা' এই অধ্যায়ে লেখক খুব শাণিত যুক্তি দিয়েছেন। যারা নিজেদের যুক্তিশীল ব'লে মনে করেন, তারা সাহস ক'রে প'ড়ে দেখতে পারেন। সতর্কতাঃ চিন্তায় বড়ো রকমের ধাক্কা খেলে লেখক কিংবা রিভিউয়ার কেউ দায়ী থাকবে না।
এবার একটু অর্থনীতিতে আসি। ইসলামি আইন অনুযায়ী যাকাত কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয় যে যার মন চাইবে না সে দিবে না। যাকাত ফরয হওয়ার শর্ত পূরণ হ'লে ইসলামি রাষ্ট্রের সরকার বাধ্যতামূলকভাবে যাকাত আদায় করবে। হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে লেখক খুব স্পষ্ট বর্ণনা করেছেন ইসলামি অর্থব্যবস্থার এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি।
পুঁজিবাদ এবং কমিউনিজমের ব্যর্থতা কোথায় কোথায় সেগুলো আলোচনায় এসেছে 'শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজঃ ওদের স্বপ্ন, আমাদের অর্জন' অধ্যায়ে। তিনি দেখিয়েছেন ইসলামে শ্রেণি আছে কিন্তু শ্রেণিবৈষম্য নেই। এও দেখিয়েছেন ইসলামি অর্থনীতিতে বুর্জেয়া শ্রেণির সম্পদ যতোই বৃদ্ধি পাবে প্রলেতারিয়েত শ্রেণি এর দ্বারা ততোই লাভবান হবে; যেটা পুঁজিবাদে তো সম্ভবই না, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতেও না।
উমার বিন আবদুল আযীয (রাহ.) এর আমলে ইসলামি অর্থনীতির প্রায়োগিক সুফল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলো যেখানে যাকাত গ্রহণ করার মতো কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি। একবার ইয়েমেনে যাকাত নেয়ার মানুষ না থাকায় সে অর্থ ইয়েমেন গভর্নর দিয়ে দেন মদিনায়। সুষম অর্থব্যবস্থার কারণে মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করেছিলো। যেখানে আমরা সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থাসহ অন্য কোনো অর্থব্যবস্থায় এমন উৎকর্ষ চোখে দেখিনি। বরং দেখেছি উল্টোটা।
দাসপ্রথা নিয়ে ইসলামবিদ্বেষীদের রয়েছে বড়ো রকমের চুলকানি। তারা পাশ্চাত্যের দাসপ্রথার সাথে ইসলামের দাসপ্রথাকে এক ক'রে ফেলে। কিছুটা সময় দিয়ে এ বিষয়ে একটু লেখাপড়া করলে তারা এ বিষয়ে প্রশ্ন না তুলে বরং প্রশংসা করতো। বেশিদূর না গিয়ে কয়েক পৃষ্ঠার 'দাসপ্রথাঃ ঐশী বিধানের সৌন্দর্য' অধ্যায়টি প'ড়ে নিলে ধরণা পরিষ্কার হবে। রেফারেন্স মিলিয়ে নেবেন অবশ্যই।
নারীবাদ, নারী আন্দোলন, নারী অধিকার— এসব বুলি কপচানো একশ্রেণির প্রাণী রয়েছে আমাদের সমাজে। তারা রাতদিন ইসলাম নারীর অধিকার খর্ব করেছে ব'লে ব'লে মুখে ফেনা তোলে। বিশেষকরে যুদ্ধবন্দিনী দাসীদের সম্পর্কে তাদের বিস্তর অভিযোগ। তবে ইসলাম তাদের যেসব অধিকার দিয়েছে তার চেয়ে ভালো কোনো উপায় আজ পর্যন্ত তারা দেখাতে পারেনি। খণ্ডিত জ্ঞান নিয়ে তারা এই অভিযোগ করেই যায়৷
এছাড়াও স্ত্রী শস্যক্ষেত্র, জিযিয়া, বনু কুরাইযার মৃত্যুদণ্ড— ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মূর্খতা, অজ্ঞানতা, এবং জানতে না চাওয়ার দৃঢ় মানসিকতা থেকেই তাদের মনে জন্ম নেয় নানা অবান্তর অভিযোগ। লেখকের চমৎকার লেখনী এসব নিয়ে তাদের সন্দেহের অবসান ঘটাবে ব'লেই আমার বিশ্বাস। এই বইতে অনেক বই এবং জার্নালের রেফারেন্স পাবেন যেগুলো গবেষণার কাজে লাগতে পারে।
বিস্ময়কর, "দাসপ্রথা শব্দটা শুনলেই অ্যালেক্স হেলীর 'দি রুটস' আর হ্যারিয়েট বিচার এর 'অ্যাংকেল টমস কেবিন' চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অত্যাচার -চাবুক - কোলের বাচ্চাকে ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি- মৃত্য।" ★ইসলামী দাসপ্রথা একত্রে মিলিয়ে ফেললে হবে না রাসূল (সা.) বলেন," প্রতিদিন ৭০ টা ভূল মাফ করবে" দাস-দাসীদের--বুখারী ই.ফা., হাদিস নং ২৩৮৪ ★নারীবাদি বিধান হতে, সূরা বাকারা ২২১ নম্বর আয়াতে, " মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না যদি না তারা মুসলমান হয়। মুশরিক নারীর চেয়ে তো মুসলিম দাসীই উত্তম, যদিও মুশরিক নারী তোমাদের কাছে মুগ্ধকর লাগে" --কুরআন-২/২২১ ★শেণীবৈষম্যহীন সমাজ হতে- চক্র...দুষ্ট চক্র।চলতেই থাকবে। এই চক্র ভাঙতেই তো এলো কমিউনিজম। কমিউনিজমের কথা হল সমাজের অনেক লোকের যৌথ সৃষ্টি এই পুঁজি। অতএব এই পুঁজি ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক শক্তি। একে সাধারণ সম্পত্তিতে পরিনত করে দিতে হবে। তাহলে শেণীবিভেদ থাকব না, কোনো শ্রেনীই থাকবে না -- ইশতেহার,পেজ ৪৮,৪৯ --->উৎপাদনের উপাদান ৪টি। জমি,শ্রম,পুঁজি আর উদ্যোগ। @পুঁজিবাদের মতে মুনাফার বন্টন হল- জমিকে দাও ভাড়া,পুঁজিকে সুদ আর লাভ হলো উদ্যোক্তার। @@কমিউনিজমের মতে, জমি-পুঁজি-উদ্যোগ এই তিনের মালিক রাষ্ট্র, মজুরি সমান- সমান। @@@ ইসলাম বলছে, জমিওলাকে ভাড়া দাও, শ্রমিককে মজুরি দাও, পুঁজিপতি আর উদ্যোক্তা একই- 'অংশীদার' যারা লোকসানও শেয়ার করবে---পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র ও ইসলাম।" কি এক অসাধারণ হাতে লিখেছেন লেখক, আমি মুগ্ধ। তার বইয়ের প্রাই সকল অংশে। ইসলাম কি আরব সংস্কৃতি? সমাধান কি লালনপ্রথা? সচরাচর, এত্ত সময় লাগেনা আমার একটি বই শেষ করতে যা লেগেছে প্রাই ১০ দিন, যত পড়ছিলাম মনে হচ্ছিলো সকল অক্ষর যেনো আপন অন্তরে খোদাই করে লিখে নেই।
রেটিংঃ কিছু বই রেটিং এর বাইরে থাকে, তাদের দিয়ে সেরাদের কাতার শুরু হয়।
দাস প্রথা, আইন, যুদ্ধ, নারী অধিকার নিয়ে প্রথম খণ্ডে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, যেসব জায়গায় ইসলাম সত্যতার সংস্কৃতি বিকাশ ঘটেনি তবুও আদি ধারণা ও চিত্ত মতে এক-সৃষ্টিকর্তাকে মান্যকরার প্রবণতা, এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে বইটাতে। ইসলাম ভুল ধারণাগুলো সংশোধন করে এবং নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে থেকে ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার দেয়। বইয়ের প্রতিটা তথ্যের ব্যাখ্যা এতটাই জোরালো যে, এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণের সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। তবে অন্ধ অনুসারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। বইয়ে ব্যাখ্যার বর্ণনাশৈলী কিছুটা কাঠখোট্টা মনে হতে পারে, যদিও লেখক প্রতিটি বিষয় যথেষ্ট বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। নাস্তিকরা ইসলামের মূল শিক্ষাকে বিকৃত করে সমাজে ভুল ধারণা ছড়াতে চায়, যার ফলে অনেক মুমিন ব্যক্তিও দ্বিধাগ্রস্ত হন এবং নানা মানুষ নাস্তিকতার দিকে ঝুঁকে পরে। এর প্রধান কারণ হলো মানুষের জ্ঞানের অভাব এবং দ্বৈত মানদণ্ড পোষণ করা। কোনো আইন বা সামাজিক রীতিনীতির বিষয় তুলে ধরলে মানুষরা প্রচলিত ধ্যানধারণার সাথে ইসলামকে গুলিয়ে ফেলে, এর ব্যাপারেও যথাযথ তথ্য দিয়ে সচেতন করা হয়েছে।
দাস প্রথার আইনগত দিক এবং বাস্তবতা নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যেত বলে আমার মনে হয়েছে। এছাড়া কোনো-পরিপক্ক লেখক না হওয়ায় শুধু ধারণার ওপর ভিত্তি করে বলছি, পড়ার জন্য আরো মসৃণ করে লেখা যেতো সম্ভবত (অন্যান্য বইয়ের মধ্যমে ধারণা পেয়ে)।
হাইলাইট করতে মোটা কালিতে লেখা লেখাগুলোর অক্ষর পর্যাপ্তের চেয়ে অতিরিক্ত ঘন-কালি হয়ে গিয়েছে, যার জন্য পড়তে অসুবিধা হয়। কিছুক্ষেত্রে অপর পৃষ্ঠায় জলছাপের মতো ভাবও এসে��ে। এবংকি আমার বইয়ের মধ্যে চার-পৃষ্ঠা এমন ভালো জলছাপের মতো বেখাপ্পা হয়েছে, পড়াটাই দুষ্কর।
বুক রিভিউ 📗✍ বই : ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক : ড. শামসুল আরেফীন পার্সোনাল রেটিং - ৫/৫
বইটি এতটা ভালো হবে ভাবতে পারিনি। বইটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। যতটা আশা করেছিলাম তার থেকে অনেক বেশি কিছু পেয়েছি।
নাস্তিকদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বাজিকে লেখক খুব সুন্দর ভাবে জবাব দিয়েছেন। এত সুন্দর ভাবে প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়েছেন যে এখানে কেউ কোন প্রকার সন্দেহের উদ্রেক প্রকাশ করতে পারবে না। লেখক এর হাতের লেখনীর ভাষাটাও ছিল খুব স্বতঃস্ফূর্ত ও চমৎকার।
বইয়ের থেকে কিছু অংশ -
গলা বুজে আসে নিয়াজের। রাসেলকে দেখেই বেরিয়ে আসে ও। মনটা বিষাক্ত হয়ে আছে। এই অসুস্থ সম্প্রদায়ের সাথে তর্ক করাও এক ধরণের অপচয়। সব যুক্তি শেষে এদের কথা শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ায়, যেহেতু স্রষ্টাকে দেখি না, তাই কখনো মানবো না এবং তোরা রেফারেন্স কারচুপি করেছিস।
এরা বোধ হয় জননীর কাছে গিয়ে ও জননকর্মের ভিডিও চায়, নিজ চোখে না দেখে শুধু জননীর কথার উপর ভিত্তি করে জননকে 'বাপ' ডাকা তো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হয়ে গেল। মনে হয় জননী ভিডিও দিয়ে প্রমাণ করলেও মানবে না। বলবে- এটা এডিট করেছ, মা।
কি রাসেলের উপর রাগ হচ্ছে? রাগ হলে তো আপনি ফেল। মমতা আসতে হবে। বুক ফাটা দুআ আসতে হবে। শেষ নবীর উম্মত বলে কথা।
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটি পড়তে গিয়ে বারবার প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২ বইটির কথা মনে পড়ছিলো। উভয় বইতেই লেখক একই ধরনের তথ্যসূত্র ও যুক্তি ব্যবহার করে ইসলাম সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলোর জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এই বইটি বিশেষভাবে ভালো লেগেছে কারণ এতে যথেষ্ট পরিমাণে তথ্যসূত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা লেখকের বক্তব্যকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। ইসলামে দাসপ্রথা নিয়ে যে অধ্যায়টি রয়েছে, তা অত্যন্ত সুন্দর ও যুক্তিনির্ভরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
লেখক ইসলামের মানবিক ও ন্যায়নিষ্ঠ দিকগুলো তুলে ধরার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড শুধু একটি বই নয়, বরং একটি সচেতন প্রচেষ্টা। ইসলামের সৌন্দর্য ও মাধুর্য পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে দেওয়ার মতো।
যদি প্র্যাক্টিসিং মুসলিম হন: তৃপ্তির আবেশে হৃদয় প্রশান্ত করুন যদি হন নন-প্র্যাক্টিসিং: কী পেয়ে পায়ে ঠেলছেন চিনুন, যদি মডারেট সংস্কারবাদী হন: সংস্কার কোথায় প্রয়োজন জানুন
হন যদি অবিশ্বাসী: উদ্ধত সাহসে গ্রহণ করুন কিংবা যদি হন অমুসলিম: কৌতূহলে হাতে নিন বা আলিম যদি হন: এতিম উম্মতের ব্যথায় পড়ুন আর মানুষ হন যদি: সত্তার তৃষ্ণায় আকণ্ঠ পান করুন
It's a magnificent book. The book provides plenty of food for thought on Islam. Anyone who has reservations about Islam or who is dubious of the rules followed by Muslims should read it with an unbiased view. Merely reading the book may dispel all of your doubts and change your perspective on Islam. You may discover a new perception of Islam and its splendor.
বইটার কথা আর কি বলবো। আমার কাছে খুবই অসাধারণ লেগেছে। আমি ২ দিনের মধ্যেই বইটা পড়ে শেষ করেছি। অবিশ্বাসীদের কিছু প্রশ্ন সঠিক জবাব নিয়ে লেখা হয়েছে বইটি। এর মাধ্যমে শুধু যারা পথভ্রষ্ঠ হয়েছে তারা নয় বরং যারা বিশ্বাসী তাদেরও অনেক উপকার হবে। অনেক কিছু সম্পর্কে জানা যাবে বইটা পড়ে। সকলের জন্য রেকমেন্ড রইলো বইটা পড়ার।
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটা পড়তে পড়তে প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২ বইটির কথা মনে হচ্ছিলো, ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটিতেও একইরকম তথ্যসূত্র খুঁজে পেয়েছি, বইটি পড়ে ভালো লেগেছে কারণ যথেষ্ট তথ্যসূত্র ব্যবহার করা হয়েছে, ইসলামে যে দাসপ্রথার কথা বলা হয়েছে সে বিষয়ে খুবই সুন্দর আলোচনা করেছেন লেখক, ইসলামের মাধুর্য প্রকাশ করার পুরোপুরিভাবে চেষ্টা করেছে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটি।
আমরা ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের মত শুধু ধর্ম মনে করি। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম একটা সংস্কৃতি, একটা সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যেখান থেকে আমরা অনেক দূরে সরে এসেছি। সেই কারণে আমাদের এত অধঃপতন। তাই আমাদের উচিৎ, প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে জানা ও মানা এবং অন্যদেরকে জানানো।