শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক।
তিনি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ময়মনসিংহে (বর্তমানে বাংলাদেশের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন—যেখানে তাঁর জীবনের প্রথম এগারো বছর কাটে। ভারত বিভাজনের সময় তাঁর পরিবার কলকাতা চলে আসে। এই সময় রেলওয়েতে চাকুরিরত পিতার সঙ্গে তিনি অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শীর্ষেন্দু একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা ও দেশ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত।
তাঁর প্রথম গল্প জলতরঙ্গ শিরোনামে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সাত বছর পরে সেই একই পত্রিকার পূজাবার্ষিকীতে তাঁর প্রথম উপন্যাস ঘুণ পোকা প্রকাশিত হয়। ছোটদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম উপন্যাসের নাম মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
প্রায় সবগুলো গল্পের প্লট একই। ডিসটোপিয়ান ভবিষ্যৎ, পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা কমতে কমতে মানুষ ফিরে যাচ্ছে আদিম রূপে অথবা বিবর্তনের চাকা ঘুরছে উলটো, বিয়েশাদী, পরিবার, আত্মীয়তার সম্পর্ক বলে আর কিছুই নেই। বর্ণাশ্রম না মেনে মিলনের ফলে বন্ধ্যা নারী পুরুষের জন্মের মত চরম আউল ফাউল লজিকও আছে। সবমিলিয়ে হতাশ। গল্পের ইলাস্ট্রেশন গুলো সুন্দর। মাঝেমধ্যে শীর্ষেন্দুর বিখ্যাত হিউমারের কারণে কিছু কিছু গল্প মজাই লাগে। সবমিলিয়ে এক সেকেন্ড, মাছ, সময় সরণি, পোকা গল্পগুলো ভালো লেগেছে।
সার্বিক দিক দিয়ে বিলো এভারেজ। মনে হচ্ছিল একই ক্লান্তিকর গল্প পড়ে যাচ্ছি একেরপর এক। ভবিষ্যতের পৃথিবীর বিবাহহীনতা, যথেচ্ছাচার আর তাই থেকে মানুষের ক্রম অবনতি, যৌনতাহীনতা, মানসিক অবসাদ এই প্রায় সব গল্পের প্লট। অথবা ভবিষ্যতে গিয়ে মানুষ কমে গিয়ে আবার উল্টোপথে যাত্রা। ভালো লাগার মতো কিছু পেলাম না সত্যি।
শীর্ষেন্দু সবসময়ই আমার একজন প্রিয় লেখক, কিন্তু এই বইটা কেন যেন খুব একটা মন ছুতে পারে নি। বিশেষত কিছু মন্তব্য এর কারণে লেখককে কিছুটা বর্ণবাদী মনে হয়েছে।