ত্রাতিনা চিৎকার করে জিজ্ঞেস করল- আমি কোথায়? তার কণ্ঠস্বর দূরে মিলিয়ে গেল, তারপর প্রতিধ্বনিত হয়ে আবার ফিরে এল, আমি কোথায়...আমি কোথায়...আমি কোথায়...
খুব ধীরে ধীরে প্রতিধ্বনিগুলা মিলিয়ে যেতে থাকে। তারপর এক সময় আবার সেই নৈশঃব্দের শূন্যতায় ডূবে যায়।
ত্রাতিনা আবার চিৎকার করল, আমি কোথায়? তার চিৎকার বধু দূর থেকে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে, প্রতিধ্বনিত শব্দগুলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে থাকে। শব্দগুলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে থাকে। শব্দগুলো মিলিয়ে যেতে যেতে আবার নূতন করে অনুরণিত হয়, ত্রাতিনার মনে হয় সে বুঝি কারো কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছে। স্পষ্ট বোঝা যায় না, কিন্তু কোন এক ধরণের কণ্ঠস্বর। মনে হয় কেউ কিছু একটা বলছে।
Muhammed Zafar Iqbal (Bengali: মুহম্মদ জাফর ইকবাল) is one of the most famous Bangladeshi author of Science-Fiction and Children's Literature ever to grace the Bengali literary community since the country's independence in 1971. He is a professor of Computer Science & Engineering at Shahjalal University of Science and Technology (SUST). Before that, Iqbal worked as a research scientist in Bell Communication Research for six years until 1994.
Birth and Family Background: Iqbal was born on 23 December 1952 in Sylhet. His father, Foyzur Rahman Ahmed, was a police officer. In his childhood, he traveled various part of Bangladesh, because of his father's transferring job. Zafar Iqbal was encouraged by his father for writing at an early life. He wrote his first science fiction work at the age of seven. On 5 May 1971, during the liberation war of Bangladesh, the Pakistan's invading army captured his father and killed him brutally in the bank of a river.
Education: Iqbal passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1968 and HSC exam from Dhaka College in 1970. He earned his BSc in Physics from Dhaka University in 1976. In the same year Iqbal went to University of Washington to obtain his PhD and earned the degree in 1982.
Personal Life: Iqbal married Dr. Yasmeen Haque in 1978. Yasmeen is the Dean of the Life Science Department, Head of the Physics Department, Provost of the Shohid Janoni Jahanara Imam Hall and a researcher at SUST. They have two children - son Nabil and daughter Yeshim. Yeshim translated the book Amar Bondhu Rashed (Rashed, My Friend) written by her father. Iqbal's elder brother, Humayun Ahmed, was the most popular author and film-maker of Bangladesh since its independence. Humayun died after a nine-month struggle against colorectal cancer on the 19 July 2012. His younger brother, Ahsan Habib, is the editor of the satirical magazine, Unmad and one of the most reknowned cartoonist of Bangladesh.
Academic Career: After obtaining PhD degree, Iqbal worked as a post-doctoral researcher at California Institute of Technology (CalTech) from 1983 to 1988. He then joined Bell Communications Research (Bellcore), a separate corporation from the Bell Labs (now Telcordia Technologies), as a Research Scientist. He left the institute in 1994 and joined the faculty of the Department of CSE of SUST.
Literary career: Iqbal started writing stories from a very early age. Iqbal wrote his first short story at the age of seven. While studying in the Dhaka University Iqbal's story Copotronic Bhalobasa was published in a local magazine. But, a number of readers at that time felt that the story was based on a foreign story. To answer this allegation, he later rewrote the story and published the story in collection of stories named Copotronic Sukh Dukkho. Since then he is the most popular writer both in Bengali Science-Fiction and in Juvenile Leterature of the country.
Other Activities and Awards: Zafar Iqbal won the Bangla Academy Award, the highest award in literature in Bangladesh, in 2004. Iqbal also played a leading role in founding Bangladesh Mathematical Olympiad. In 2011 he won Rotary SEED Award for his contribution in field of education.
বইয়ের শুরুটা খুবই দারুণ ছিল। রীতিমত বুকে কাঁপন তোলার মত। কিন্তু গল্প যত এগোল, ততই ধার কমল। মোটামুটি এক-তৃতীয়াংশ পেরুনোর পর শুরু হলো নতুন বোতলে পুরনো মদ। বিশেষ মিশনে মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে একটি মহাকাশযান, ক্রু হিসেবে মানুষ ও অ্যানড্রয়েড দুইই আছে, সেটা কবে ফিরবে-আদৌ ফিরবে কি না অনিশ্চিত... মহাশক্তিশালী মহাজাগতিক প্রাণী... সেই থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়। শেষ পর্যন্ত জাফর ইকবালের আরেকটি গতানুগতিক সায়েন্স ফিকশন। সময় কাটানোর জন্য মন্দ না, কিন্তু স্মৃতিতে দাগ ফেলে যাবার মত কিছু নয়।
এই বইতে জাফর ইকবালের মূল সমস্যা হচ্ছে তিনি নতুন করে কিছুই দিতে পারছেন না। শুধু এই বইই না, গত ৪/৫ বছর ধরেই তিনি কিছু দিতে পারছেন না। গত কয়েক বছর ধরে তিনি যা লিখছেন তা আসলে উনি আগের সায়েন্স ফিকশনগুলোতেই লিখেছেন বারবার। অবস্থাটা আম দিয়ে রান্না করা টকের মতো। টকের মাঝে 'একটা' আমের বরা আছে, একজনের পর একজন মানুষ টক দিয়ে ভাত খাচ্ছে। যত জনই খাচ্ছে তত জনের পাতেই আমের বরা থাকছে। সকলেই বরা চুষছে। কয়েকজন চুষার পর এক পর্যায়ে দেখা গেল এতে আর মুখে দেবার মতো কিছু নেই। আমের বরা এখন আর টক-ভাতের স্বাদ তো বাড়াতে পারছেই না উপরন্তু এর কারণে ভাতের স্বাদই নষ্ট হয়ে গেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের এই সায়েন্স ফিকশনেও হয়েছে সেরকম। একই গল্প এতবার করে তিনি বলেছেন যে আমার প্রিয় এই লেখকের প্রতি নিজেরই ত্যাক্ত বিরক্ত লাগে। মহাকাশযান মহাকাশযান মহাকাশযান... আর কত? আর মহাকাশযান থাকলেই গল্পগুলো ঘুরেফিরে কেন একই ধাঁচের হতে হবে?
এই অভিযোগ যদি বাদ দিয়েও দেখি তাহলে কেমন দেখায়? ধরি, কোনো একজন পাঠক যে কিনা জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন আগে আর পড়েনি, তার কাছে তো একই গল্প বা একই আমের বরা বারবার দেখার বিরক্তি থাকবে না। তাহলে তার কাছে কেমন লাগবে? এদিক থেকে বিবেচনা করলেও বলতে হবে গল্পের প্লট বেশ দুর্বল। গল্পে তিনি আসলে কী বলতে চেয়েছেন? গল্পের মূলে ছিল কী? সেই সৌরজগতের বাইরের বুদ্ধিমান সত্তাই তো, না? তাহলে সেই সত্তাকে কোন পর্যায়ে রেখে তিনি গল্প শেষ করেছেন?
এই মূল প্রসঙ্গ যদি কেউ আমলে না নিয়ে গল্পটিকে বিবেচনা করে তাহলে বলতে হবে এর মূল প্রসঙ্গ ছিল মানবতা। দুই পর্বে দুই ধরনের মানবতার নিদর্শন এখানে এসেছে। এখন প্রশ্ন হলো মানবতার মেসেজ যদি কেউ তার গল্পে দিতে চায় তাহলে তার জন্য মহাকাশযান ও মহাকাশ ভ্রমণ কেন? আর মহাকাশযান ও মহাকাশ ভ্রমণের মাধ্যমে এরকম মেসেজ কেউ দিতে চাইলে তার স্ট্যান্ডার্ডও হওয়া উচিত সায়েন্স ফিকশনের মতো ওজনের। কোনো রকমে একটা সায়েন্স ফিকশন দাড় করিয়ে ফেললে তো হয় না। সেজন্যই আমি জাফর ইকবালের 'প্রতি বছর একটা সায়েন্স ফিকশন' লেখার ব্যাপারে নেতিবাচক।
কেউ যদি বাজারি মানের লেখাও লিখে সেটা সমস্যা নয়, কারণ লেখালেখিটা তার উপার্জনের মাধ্যম হলে ক্ষেত্রবিশেষে বাজারি হওয়া লাগে। এটা জীবনেরই অংশ। পাঠক সমালোচনা করলেও কিছু করার নেই। কিন্তু একই জিনিস গল্প বারবার বললে সেটা বড্ড ক্লান্তিকর লাগে। সায়েন্স ফিকশনের নতুন প্লট খুঁজে না পেলে সময় নিক, নতুন গল্প মাথায় আসার পর মাঠে নামুক। 'নিষ্পাপ ক্ষুদে ছেলেমেয়েরা মেসেজ পাঠিয়ে সায়েন্স ফিকশন লেখার চাপ দেয়' বলে তো আর নতুন প্রচ্ছদে ঐ পুরাতন গল্প দিয়ে দিতে পারেন না। বোতল নতুন হলে কী হবে, মদ তো সেই আগের পুরাতনটাই। এমনিতে বেশি বেশি লেখার জন্য নন-সায়েন্স ফিকশনের আরেকটি উপশন তো আছেই। জাফর ইকবালের নন-সায়েন্স ফিকশনগুলো বেশ ভালো হচ্ছে সম্প্রতি। এদিকে লাগলে বেশি সময় দিতে পারেন তিনি।
বেশ কিছুদিন যাবত আমার মস্তিষ্কে কিছু বিচ্ছিন্ন ভাবনা আমাকে ভাবিয়ে তুলছে,বারংবার.....
আমি মুহাম্মদ জাফর ইকবালের সাহিত্যকর্ম সম্মন্ধে অবগত হই আমার বাসায় অনাদরে পড়ে থাকা বুকশেলফ থেকেই।শোপিস হিসেবে থাকা বইগুলো ক্রমশ আমার অন্যতম সঙ্গী হয়ে ওঠে,যা ধীরে ধীরে আমার অন্তরাত্মায় দ্রবীভূত হতে থাকে।সেই রেশ থেকেই আমি ওনার বেশ কিছু বই পড়ে ফেলি।কিন্তু কোনো কারনে সেগুলো আমাকে খুব মুগ্ধ করতে পারেনি।তবে নন ফিকশনগুলো মজা করেই পড়েছি।প্রায় ৭-৮ বছর আগে বইমেলার আবহে প্রথম আলো পত্রিকা থেকে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের "ত্রাতিনা" বইয়ের খবর মেলে। ভিনটেজধর্মী গ্রাফিক প্রচ্ছদই আমাকে বইটা কিনতে ধাবিত করেছিল।সদ্য কিনেই পড়ে ফেলি।যদিও সময়ের আবর্তনে তেমন কিছুই মনে নেই,কিন্তু বইটা তেমন ভালো লেগেছিল না,কিছুটা একঘেয়ে লেগেছিল। বইটা বর্তমানে আমার কাছে নেই,বোধহয় আমি কোথাও ডোনেট করেছিলাম।সেই একঘেয়েমি এবং ভালো-না-লাগার পুনরাবৃত্তির কারনে আমি ওনার বই পড়া বলতে গেলে বাদ দিয়ে দিই।তবে ওনার কিছু মাস্টারপিস বই পড়ার পর আমার এই নিজস্ব স্টেরিওটাইপ মুহূর্তেই ধূলিসাৎ হয়ে যায়।বুঝতে পারি,আমি ওনার সেরা কাজগুলো তেমন পড়িনি।
পরবর্তীতে এই দোটানার আসল কারণ জানতে পারি।আসলে আমি লেখকের যে বইগুলো পড়েছিলাম,তা অধিকাংশই ছিল এককথায় ''কমার্শিয়াল'',অর্থাৎ সেই বইগুলো বইমেলার স্বার্থে অতি অযত্নে এবং তাড়াহুড়োয় লেখা।সে কারনে আমার সেই বইগুলো অত ভালো লাগেনি।(আফসোস!যে আমি জাফর স্যারের মাস্টারপিসগুলো পড়ি-ই নি!!!)শুধুমাত্র জাফর স্যারের ক্ষেত্রে নয়,হুমায়ুন আহমেদ এর বেশ কিছু বইয়ের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনার নিদর্শন মিলেছে।এই কাতারে বর্তমানে অনেক লেখককেই অবলীলায় খুঁজে পাওয়া যাবে।
এই বিষয়টা আমার তনুমনে এক অন্তর্ভেদী দাগ ফেলল। বইয়ের এই "কমার্শিয়ালিটি'' বা "মার্কেটিং" কি বইয়ের খাঁটি নির্যাস,রসকে খর্ব করে ফেলছে?
আমি এ নিয়ে প্রচুর ভেবেছি,এখনো ভাবি।কিন্তু এই ভাবনার সাগরের কোন কূল খুঁজে পাই না।
একবার আমি সুচিত্রা ভট্টাচার্যের "খোলামন" পড়তে গিয়ে এক দারুন কনসেপ্ট সম্বন্ধে জেনে খুশি হই। সেখানকার একটা প্রবন্ধে আমি সঙ্গীত ইন্ড্রাস্টি নিয়ে ধুমতানানা একটা এভোল্যুশন নিজের চোখের সামনে দেখি। আগেকার দিনে যখন ভারতবর্ষে সঙ্গীত নিয়ে প্রারম্ভিক চর্চা শুরু হল,তখন সেই সঙ্গীত সাধনার এক যথার্থ উদাহরণ দেখি।গ্রামোফোন রেকর্ডের সময়কালে পুরো মিউজিক ইন্ড্রাস্টির সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নিরলস নিষ্ঠা,অক্লান্ত পরিশ্রম,গভীর সাধনা,মেধা-দক্ষতার সঠিক ব্যবহার,ইত্যাদি সঙ্গীতকে এতোটাই বেশি সমৃদ্ধ করেছিল যে,তার প্রসাদস্বরূপ সেই চিরসবুজ গানগুলো আজ আমাদেরকে বিপুল আনন্দে ভরিয়ে দেয়।যদিও বছরে ২-৩টা গান প্রকাশিত হয়,তবুও সেই গানগুলো একদম ক্ষুরধার ছুরির মতন শাণিত,যেন মাস্টার অফ দ্য মাস্টারপিস! কিন্তু পরে ক্যাসেট আসায় যেন সেই ট্রু ডেডিকাশনে ভাটা পড়ে গেল। ১০-১২ টা গান না হলে ক্যাসেট বের হবে না,তাই একদম দায়সারাভাবে সঙ্গীতশিল্পীরা গান তৈরি করা শুরু করল। হয়তো গানগুলোর সংখ্যা একটু বেশি,কিন্তু একদমই পানসে, শত বছর ধুলোয় পড়ে থাকা তানপুরার মত অযত্নে ভরপুর। মনে হল হঠাৎ করে গানের স্বর্ণযুগ নিমেষেই এক তুরীতে হারিয়ে গেলো।
সেই ছায়া যেন আমি এই বইজগতেও স্পষ্টভাবে দেখতে পাই।মানুষ আর মনের খোরাকে ��েখে না।মার্কেটিং আর আয়-উপার্জনের সঙ্কটে শুধু রোবটের মতো পাতার পর পাতা লিখে যায়।কিন্তু?সেই মুগ্ধতা কি আমাদের আলোড়িত করে?সেই বইগুলো কি ��তাব্দী থেকে শতাব্দী আমাদের মনে গেঁথে থাকে?নাকি সোশ্যাল মিডিয়ার হালের ট্রেন্ডে থাকা ভাইরাল ভিডিওর মত উত্তেজক ছড়িয়ে কিছুদিন পর কর্পূরের মত মিলিয়ে যায়?
অপ্রতিরোধ্য গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে একটি মহাজাগতিক কণা, সেটাকে থামাবার উপায়-কণাটির ওপর নেমে তাতে থার্মোনিউক্লিয়ার বিস্ফোরণ ঘটানো। তবে যে নামবে, সে বেঁচে ফিরবে না। দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে এল রায়ীনা, মেয়ে ত্রাতিনাকে বিদায় দিয়ে নামল সেই গ্রহকণায়। বিস্ফোরণের ঠিক আগ মুহূর্তে আবিষ্কার করল--- কী আবিষ্কার করল, সেটা জানতে হলে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের ত্রাতিনা পড়তে হবে। সেবা/তিন গোয়েন্দা এর বাইরে পড়া প্রথম বই স্যারের ক্রুগো এবং যারা বায়োবট। সম্ভবত তার কোন বই পড়া বাকি নেই (লেস্টেস্ট ছোটাচ্চু, সেন্টু আর সাইক্লোন বাদে)। সেই আলোকে কিছু কথা বলার অধিকার মনে হয় জন্মে। আমার মনে হয়, বিগত কয়েক বছরে স্যারের লেখায় নতুন কিছু পাইনি। আসলে ত্রাতুলের জগতের পর তেমনভাবে টানেনি কোনটাই। স্যারের লেখায় একটা চাইল্ডিশভাব থাকে, ঠিক লেখায় না: সংলাপে। এই সমস্যাটা আগে থেকেই দেখে আসছি। এইখানেও তাই মনে হইছে। নভেলা সাইজের বই, চরিত্র কম। প্রায় সবগুলোই ওয়ান-ডাইমেনশনাল। এটা অবশ্য নভেলার সমস্যা, প্রায় সব নভেলাতেই এমন হয়। চরিত্রগুলোর মাঝে গ্রাহা নামের একটা চরিত্রই যা একটু ডেভেলপড। প্রথম অংশটুকু অডলি আর্মাগেড্ডন মুভি এবং বাংলাদেশি আরেকজন লেখকের একটা বই ধ্বংসের মত, তবে সেটা খুব একটা অস্বাভাবিক না। গ্রহকণার ছুটে এসে পৃথিবী ধ্বংস করার গল্প আগেও পড়েছি। তাই এই জায়গাটা বাদ দেয়া যায়। পরের অধ্যায়টা ত্রাতিনাকে প্রপার একটা ব্যাকড্রপ দেয়ার জন্য। এইখানে গল্প একটু ঝুলে যায়। যদিও বেশি না। শেষ অংশটাই আসল গল্প। আর এখানেই গল্পটার আসল সার্থকতা। ত্রাতিনা আসলে স্পেস ড্রাভেল হয়েও স্পেস ড্রাভেল না, অ্যান্ড্রয়েড নিয়ে হয়েও অ্যান্ড্রয়েডের আখ্যান না; মহাজাগতিক প্রাণির আগমন সত্ত্বেও, ঠিক সেই কেন্দ্রিক না। কীসের গল্প তাহলে? মানুষের গল্প, মানবিকতার গল্প। কেন একটা যন্ত্র হয়েও, মানুষ বাকি সব যন্ত্রের চাইতে আলাদা-তার গল্প। তবে পুরাতন পাঠকরা অন্য আরেকটা সায়েন্স ফিকশন (স্যারেরই) এর সংগে মিল পেতে পারেন। যাই হোক, এই অংশটুকু বেশ চিত্তাকর্ষক। দুর্বলতাও এখানেই। ত্রাতিনার ব্যাক ড্রপের তাহলে প্রয়োজন ছিল কতটুকু? গল্পটাকে কি শুধুই একটু বড় করা হলো না? ১৩৬/৩৬ এর মাঝে ৩৬/৩৭ পাতা কেটে ফেললেও কি সমস্যা হত? ওয়ার্ল্ড বিল্ডিংয়ের দোহাই দিয়ে কি এইটুকু জাস্টিফাই করা যায়? সম্ভবত না। স্বভাব খারাপ, তাই ভুল নজরে পড়ে যায়। বইতে বানান ভুল মেবি শুধু নূতন এবং বাই-ভার্বোল একটা। সমস্যা লেখেছে টাইমিং এ। দুই বছর বয়সে রেখে যাবার ষোলো বছর পরেও মেয়ের বয়স ষোলো হবার কথা না। এর চার বছর পর আবার একুশ (এটা অবশ্য হতেই পারে)। আরেকটা সমস্যা বলা লাগে, চরিত্রের নাম এক জায়গায় রিয়া, আরেক জায়গায় ক্রিয়া।
আজ থেকে অনেক বছর পরে যখন কিনা পৃথিবী সব গুলো দেশ মিলে একীভূত হয়ে একটা মাত্র দেশে পরিনত হয়েছে। আর পৃথিবী পরিচালনা করে বিজ্ঞানীরা। মানুষে মানুষে নেই কোন ভেদাভেদ, বৈজ্ঞানিক চূড়ান্ত উতকর্ষ সাধন করেছে মানুষ। এমন এক সময় খবর আসে যে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এক গ্রহানু, যেটা পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়লে ধ্বংস হয়ে যাবে মানুষ জাতি, বহুবছর আগে যেমন ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ডায়নসরেরা ঠিক সেই ভাবে। তাই গ্রহানুকে ধ্বংস করতে থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা নিয়ে ওয়ান ওয়ে জার্নিতে রওনা হল রীয়ানা, একমাত্র কন্যা ত্রাতিনাকে এতিমখানায় রেখে। কিন্তু গ্রহানুতে ল্যান্ড করে রীয়ানা এমন এক সত্য উতঘাটন করল যা বলা যায় চমকে দিল সবাইকে।
এখানেই রীয়ানার পার্ট শেষ এর পর শুরু হয় ত্রাতিনা, নাম ভূমিকার জীবনকাহিনী। যা জানতে হলে পড়তে হবে এই বই।
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ সম্ভবত মুজাইকের বই আমি সিরিয়ালি নতুন করে পড়ছি বলেই আমার চোখে আরো বেশী করে ধরা পড়ছে যে কিভাবে লেখক নিজের একই থিমে লেখা বই একের পর এক রিসাইকেল করতে পারেন। btw এই বই এর প্রথম অংশ পড়তে যেয়ে আমি ডেজাভুতে পড়ছিলাম বার বার। পরে আবিষ্কার করলাম আমার দেখা একটা ইংলিশ মুভির সাথে অস্বাভবিক মিল গল্পটার। আর বাকি অংশ মুজাইকের অন্য বই এর জগাখিচুড়ি রিসাইকেল। নভেলা। ১২০ পেজের। তাও আবার বড় হরফে ফাকা ফাকা লাইনে লিখা বই। ১ ঘন্টাই এনাফ শেষ করার জন্য।
জাফর ইকবাল স্যার আমার শৈশব কৈশোরের দিনগুলো রাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন সহজ সরল সাবলীল ভাষায় মায়া মায়া সেইসব সাইন্স ফিকশন লিখে৷ এই বইটাতেও সেই সাবলীল ভাষায় বজায় রয়েছে কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, সেই একই (বা কাছাকাছি) টিপিক্যাল প্লট, গোটাকয়েক ইল্লোজিক্যাল মোটিভ এবং শেষ মেষ প্রচন্ড দূর্বল একটা এন্ডিং৷ আশাহত হয়েছি স্যার। আমি আবার আর একটাবার আপনার সেই শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ডাবলু, সফদর আলীর মহা মহা আবিস্কার, মেতসিস এর মত জাদুকরী সাই ফাই গুলো পড়তে চাই।
"ত্রাতিনা"......নামটা নিঃসন্দেহে মুহম্মদ জাফর ইকবালের নিয়মিত পাঠক দের কাছে আগে থেকেই পরিচিত। ওনার লেখা "নায়ীরা" নামক সায়েন্স ফিকশন এ নীরা ত্রাতিনা ছিলেন একজন মহাকাশচারী আর তার সন্তানতুল্য ক্লোন মেয়েটি ছিল নায়ীরা। "ত্রাতিনা" 'র ক্ষেত্রে মহাকাশচারী মায়ের নাম রায়ীনা এবং তার মেয়ে ত্রাতিনা। খুব যত্ন সহকারে স্যার নীরা ত্রাতিনা থেকে ত্রাতিনা এবং নায়ীরা উল্টে রায়ীনা নাম দুটি তৈরি করেছেন! এরপর আসা যাক কাহিনীর কথায়। "নায়ীরা" বইটির মতোই এই বইটিও (প্রধানত) দুটি পর্বে বিভক্ত। দুই ক্ষেত্রেই ১ম পর্বের নায়িকা মা এবং ২য় পর্বের নায়িকা মেয়ে, মহাকাশ কেন্দ্রিক গল্প এবং সেই একই পদ্ধতিতে নিজে আত্মত্যাগ করে অপরজনকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে অচেতন করে প্রাণ বাঁচানর গল্প! সব মিলিয়ে তাই মনে হচ্ছিল নায়ীরার সিক্যুয়াল পড়ছি। এমনকি "নায়ীরা"র কথা বাদ দিলেও কাহিনী পরিচিত মনে হচ্ছিল। কারণ ওনার একাধিক সায়েন্স ফিকশনে উনি এই একই ধাঁচের গল্পই শুনিয়েছেন বারবার। এমনকি তথ্যেও বিষম ত্রুটি আছে। ১ম পর্বে ত্রাতিনার বয়স ২ বছর। তাহলে ২য় পর্বে ১৬ বছর পর তার বয়স হওয়ার কথা ১৮ কিন্তু সব জায়গায় লেখা হয়েছে ১৬!! ৩য় পর্বে তারও ৪ বছর পর বয়স হওয়া উচিত ছিল ২২, বলা হয়েছে ২১!! আবার গ্রাহার মেয়ের নাম প্রথমে বলা হয়েছে রিয়া, পরে হয়ে গেছে ক্লিয়া! তারপরও সব বাদ দিয়ে ভাবলে কাহিনীর শুরুটা মন্দ না। অন্তত ত্রাতিনার মহাকাশযাত্রার আগ পর্যন্ত টানটান একটা ব্যাপার ছিল। যে ধরনের প্লট উনি বেছে নিয়েছেন তাতে এরপর থেকেই আসল গল্প শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সেখান থেকেই যেন গল্পে ভাটা পরে গেল। এলিয়েন নিয়ে যে রহস্যের প্রথম সন্ধান পেয়েছিল রায়ীনা, যে রহস্য সমাধানে মহাকাশ যাত্রা করল ত্রাতিনা সেই রহস্যের উদঘা���নই হল না বই শেষ হয়ে গেল! মাঝখান থেকে উদয় হল ত্রাতিনার বাবা গ্রাহা। রায়ীনার সাথে গ্রাহার সম্পর্ক, বিচ্ছেদ, ত্রাতিনার জন্ম, গ্রাহার ২য় পক্ষের স্ত্রী-সন্তান সবকিছুই ধোঁয়াশার মতোন থেকে গেল। ত্রাতিনার বাবা যদি বেঁচেই থাকে তবে কেন রায়ীনা ত্রাতিনাকে অনাথআশ্রমে রেখে গেল? যদি রেখেও যায়, রায়ীনা মারা যাবার পরে গ্রাহা কেন একবারও নিজের মেয়ের খোঁজ করল না? আবার ত্রাতিনা নিজের ক্ষমতাবলে গ্রাহার ২য় মেয়ের ক্লিয়ার ভিডিওর খোঁজ বের করে ফেলতে পারল কিন্তু সে নিজে গ্রাহার মেয়ে এটা জানতে পারল না! আবার ত্রাতিনা নিজের সন্তান জানার পরও গ্রাহার মাঝে সেরকম কোন উত্তাপ দেখা জায়নি কোথাও যা অস্বাভাবিক। বইয়ের একদম শেষে ত্রাতিনা গ্রাহার মেয়ে ক্লিয়াকে খুঁজে বের করে কিন্তু গ্রাহার স্ত্রী সেখানে অনুপস্থিত। লেখা পড়ে মনেও হয়নি যে ক্লিয়া তার মার সাথে থাকে। সবমিলিয়ে তাই গ্রাহা এবং ক্লিয়ার চরিত্র দুটি অসম্পূর্ণ। বইয়ের গল্পও অসম্পূর্ণ এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোঁজামিলে ঠাঁসা। যেটুকু উপভোগযোগ্য সেটুকু বহু আগেই ওনার অনান্য বইয়ে উনি লিখে ফেলেছেন। ত্রাতিনা তাই অন্য বইগুলোর একটা কোলাজ মাত্র।
অনেক বছর পরে জাফর ইকবাল স্যারের একটা সায়েন্স ফিকশন পড়লাম। এককালে ওনার বই রীতিমত গিলতাম। পড়তে গিয়ে হয়ত কিছুটা নস্টালজিয়ায় ভুগেছি! ছোটদের বই না বড়দের বই ওই তর্কে না যেয়ে বলতে গেলে, এই বইটা প্রথম দিকে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছিল। তবে পরের দিকে একটু প্লেইন হয়ে গেছে তুলনামূলক! কনসেপ্টটা আরেকটু নতুনত্ব থাকলে জমত হয়ত!
প্রথম পর্ব- ত্রাতিনার বয়স ২ দ্বিতীয় পর্ব (১৬ বছর পর) - ত্রাতিনার বয়স ১৬! তৃতীয় পর্ব (৪ বছর পর)- ত্রাতিনার বয়স ২১! -_- পৃষ্ঠা ১১১- গ্রাহার মেয়ের নাম রিয়া, পৃষ্ঠা ১৩১- গ্রাহার মেয়ের নাম ক্লিয়া! জাফর ইকবালে স্যারের নামেই বই বিক্রি হয়, তাই কি যত্নবান হবার প্রয়োজন নেই??!!
যদি জিজ্ঞেস করা হয়, মশাই, কোনোদিন প্রচ্ছদ দেখে বই কিনেছেন নাকি? তাহলে পঞ্চ ইন্দ্রিয়তে খিল এঁটে নিঃসন্দেহে বলব 'ত্রাতিনা'! (বহুৎ খুব) (প্রায় বছর চারেক পর মুজাই পড়তে বসে সুখপাঠ্য অনূভুতি হয় নাই যে, সেটা তারকা দেখেই অনুমেয়।)
সাধারণ মানের। তবে খারাপ লাগেনি। শুরুটা বেশ ভালো হলেও সমাপ্তিটা ছিল সাদামাটা। ক্রিস্টাল, মহাজাগতিক বস্তু, মহাজাগতিক অস্তিত্ব, মহাকাশযান, কপোট্রন, মানবিক অনুভূতিসম্পন্ন রোবট- এই জিনিসগুলো শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। 'কোয়াকম্প' নামের বস্তুটি হচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। এ-ও পুরোনো কনসেপ্ট। মহাকাশযানকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সবসময়ই একটি কম্পিউটার থাকে। তবে জাফর স্যারের লেখা তো। তাই লেখনীর ধার দিয়ে ক্ষতিটুকু পুষিয়ে দেয়া যায় মোটামুটি। দিনশেষে লেখাটিতে স্যারের অনন্য কিছু এপিলগ, মাঝে মাঝে কিছু টুইস্ট, ক্লাইমেক্স, আবেগঘন মুহূর্ত একে একেবারে বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়া থেকে রক্ষা করে মোটামুটি ভালো একটি অবস্থানে নিয়ে যায়। বিশেষ করে যারা আগে স্যারের বই পড়েনি, তাদের কাছে নিঃসন্দেহে ভালো লাগবে। কাহিনীটি তবুও অসম্পূর্ণ, ধোঁয়াটে। স্যার সবসময়ই মানব মস্তিষ্ক নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। এরও প্রতিফলন ঘটেছে- শেষের দিকের একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, মহাজাগতিক অস্তিত্ব মানুষের দেহ বানিয়ে ফেললেও মস্তিষ্ক তৈরী করতে পারতে নি। গল্পের এই জায়গাটায় বেশ টানটান উত্তেজনা আছে। অবশ্য মহাজাগতিক এই অস্তিত্বের পুরো ধারণাটিই আমার কাছে ধোঁয়াশায় পূর্ণ ছিল। ওরা গ্রাহাকে নিয়ে গিয়ে কী করলো, পৃথিবীর কী হলো এইসব নিয়েও কোনো ইঙ্গিত নেই। শেষ পর্যন্ত মহাকাশপ্রেমী প্রথম শ্রেণির মহাকাশচারী ত্রাতিনার ক্যারিয়ারের ইতি টেনে লেখক তাকে নামিয়ে আনলেন পৃথিবীর বুকে। নাইস। কিন্তু এইটার কারণ কী কে জানে। ত্রাতিনা এখন করেটা কী? আর 'প্রায় মানবিক অনুভূতিসম্পন্ন' এন্ড্রয়েড দুটি ছিল সবচে' বিরক্তিকর চরিত্র। মাঝখানে হঠাৎ রোবটদুটি বলে, তারা নাকি নিজেদের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ, হিংসা এই নেতিবাচক জিনিসগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমি তখন আশঙ্কা করছিলাম আবার এন্ড্রয়েড বিদ্রোহের মাধ্যমে মহাকাশযান দখল, রোবট ভার্সেস মানুষের সেই পুরোনো যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় কি না। ভাগ্যিস আমার আশঙ্কা সত্যি হয়নি। স্যারের কাছ থেকে আরো বহুগুণ ভালো কিছু আশা করি। আগের বইগুলোর মতো অসাধারণ কিছু। নিখুঁত-নিখাদ একটি সায়েন্স ফিকশন কবে পাবো স্যারের কাছ থেকে? :(
দু:সাহসী এক মহাকাশচারীর। তবে ত্রাতিনার গল্প শুনতে হলে একটু পিছন ফিরে তাকাতে হবে। সে গল্পটাও আরেক মহাকাশযাত্রী রায়ীনার। যে একটা দু:সাহসিক অভিযানে যেয়ে আর ফিরে আসে না.. বিলিয়ে দেয় নিজের জীবন অসীম শূন্যতার মাঝে।
ছোটখাটো উপন্যাসটা চারটা ভাগে বিভক্ত। দ্বিতীয় ভাগে দেখা যায় গল্পের নায়িকা ত্রাতিনা নিজেকে গড়ে তুলতে থাকে আদর্শ একজন মহাকাশচারী রূপে। সময় বয়ে যায়.. একটা সময় আসে বহুল আকাঙ্ক্ষিত সুযোগ.. দু'জন এন্ড্রয়েড মানুষ (নাকি রোবট) কে সাথে নিয়ে রওনা হয় অনিশ্চিত এক অভিযানের উদ্দেশ্যে। যাত্রা পথের ঘটে নানান ঘটনা।
ত্রাতিনা কি পারে তার অভিযান সফল করে তুলতে?
রিভিউর এ পর্যায়ে অনেকেই খ্যাক খ্যাক করে হেসে বলতে পারেন, আরেহ! নায়িকা যেহেতু বিপদে পড়েছে তার মানে বিপদ মুক্তির সম্ভাবনা শতভাগ। হ্যা.. কথাটা হয়তো সত্য। তবে অনেক সময় বিপদ থেকে কিভাবে উদ্ধার পায়-সেটা জানাও একটা বিষয়।
যাই হোক... জাফর ইকবাল স্যারের ভক্তদের বেশ ক'বছরের অভিযোগ বই আগের মতো উপভোগ্য হচ্ছে না, কাহিনি কমন ব্লা ব্লা ব্লা... বইটা হয়তো অনেকের কাছে প্রেডিক্টেবল মনে হবে বাট গল্পটা আসলেই সুন্দর। হৃদয়-স্পর্শী, স্যারের অন্য বইগুলা যেরকম। ত্রাতিনার জন্য শুভকামনা.. সাথে জাফর ইকবাল স্যারের জন্যেও
বইয়ে দুই-একটা ভুল আছে, বাংলাদেশের প্রুফে সে ভুল থাকবেই, তাই চোখে পড়ে না। আর দুটা ভুল আছে, যেটা অন্য যে কোনো লেখকের বেলায় মেনে নিতাম। কিন্তু যে লেখক জ্যোৎস্না ও জননীর গল্পের চাঁদের অবস্থানের ভুল ধরতে পারেন, তাঁর কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না। গল্পের প্রথম পেজ পড়েই মনে হলো এটা Armageddon movieর গল্প। আমাকে সঠিক প্রমান করে সেভাবেই চলল কিছুক্ষণ। ভাগ্য ভালো দুই-আড়াই ঘন্টা লম্বা মুভিটার গল্পটা এখানে ২০/২৫ পেজেই শেষ হয়ে গেছে। এখানে একটা টুইস্ট ক্রিয়েট করা হইছে যেটা বাকী বইয়ের প্লট। বাকী অংশটা চলে, হাজার হলেও স্যারের লেখনি এখনো ভালো। এরপর কিছুটা Interstellar Movieর স্বাদ পাওয়া গেল। সে স্বাদ টেনে মাঝখানে হালকা একটা প্লটে দোলা। দোলায় নড়াচড়ার আগেই আচমকা শেষ হয়ে গেল আধখেঁচড়া কিছু উত্তর দিয়ে। শেষে একটা ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা ছিল। কিন্তু একটু মনোযোগ দিলেই সেটা দোলার টাইমেই বুঝে যাবে পাঠক। ওভারঅল হতাশ, তবে সাইক্লোন পর্যায়ের না।
দুর্বল প্লট, ছন্নছাড়া লেখা, টানটান উত্তেজনা নেই, ৫০ পেজ এর বই ১৩৫ পেজ বানানো হয়েছে, জাফর ইকবালীয় আবেগ নাই,,,, টানা পড়ে মনে হলো সময় নষ্ট। তবে প্রচ্ছদ টা ধ্রুব এষ চমৎকার করেছে।
গল্পটার শুরুতে মনে হচ্ছিল একটা দারুন কিছু কাহিনি হবে। বাট যখন মনে হলো যে এইবার একটা দারুন কিছু ঘটবে ঠিক তখন ই গল্প টা শেষ হয়ে গেলো। এস্কপেক্টেশন আরেকটু বেশি ছিলো।
জাফর ইকবাল এর লেখা সবসমইয়ই অনেক মজার। নতুন সাইন্স ফিকশন গুলো অবশ্য আগের মতন ভাল হয় না, কেমন জানি! আমি মনে হয় অনেক বড় হয়ে যাচ্ছি! ত্রাতিনার কনসেপ্ট অনেক ভাল ছিল, কিন্তু পড়তে বাচ্চাদের বই এর মত লাগে। হয়ত বাচ্চাদের জন্যই লেখা। বুঝতে পারছি না, আমি কি তাহলে আর বাচ্চা জাতের ভেতরে নাই? এখানে বই এর ব্যাপারে বেশি কিছু বলতেও পারবো না, স্পয়লার। কিছু অংশ বাদ দিলে অসারধারন একটা গল্প।
[স্পয়লার ওয়ার্নিং] খুব বেশী বড় না, ১২৯ পেইজের সায়েন্স ফিকশন, কিন্তু অনেক লম্বা সময় ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, প্রায় ৪০ বছর। এই কারনেই হয়তো একটু দ্রুতো লেগেছে ঘটনা। প্রথম চ্যাপ্টার খুবই উত্তেজনার ছিলো। রায়ীনার দুঃসাহসিক অভীযান, মেয়েকে একটু সুন্দর পৃথিবী দেয়ার জন্য, নিজের জীবন দিয়ে পৃথিবীর জীবন বাচানো। এর মাঝ এলিয়েন আবিস্কার করার পুরো চ্যাপ্টারটাই আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।
পরবর্তিতে আস্তে আস্তে গল্প আগায়, কিন্তু গভিরতাটা কেমন যেনো নাই হয়ে যায়। যদিও বইটা ত্রাতিনা কে নিয়ে যে ঐ অভিযানে মারা যাওয়া রায়ীনার মেয়ে, কিন্তু গল্পটাতে ত্রাতিনার চরিত্রের আর্কটা আমার তেমন মনে গাথে নি। ত্রাতিনার জার্নিটা ছিলো প্রায় ২০ বছরের একটা মিশনে গিয়ে এলিয়েনদের খুজে বের করা, যে এলিনদের কারণে তার মা মারা গেছে। ত্রাতিনা খুবই ইন্টিলিজেন্ট, সাহসি। কিন্তু এর বেশী কিছু মনে হয় নি তাকে।
সাথে সাথে গ্রাহা নামের একটা চরিত্র মাঝখানে ইন্ট্রোডিউস করা হয়। ত্রাতিনা যখন এলিয়েনদের খোজে সৌরজগতের শেষ দিকে যাচ্ছিলো তখন ইয়োরপায় আটকে যাওয়া এক এস্ট্রনাউট গ্রাহাকে সে উদ্ধার করে। গ্রাহার সাথে সে সৌরজগতের শেষে চলে যায়। ত্রাতিনা এতিম খানায় বড় হয়েছে। সেখানে সে বাবা-মার আসল ধরণটা বুঝতে পারি নি। আর গ্রাহা অনেক বছর তার মেয়েকে দেখে না। যতক্ষন গ্রাহার সাথে সে শিপে ছিলো, ততক্ষনে গ্রাহার সাথে ত্রাতিনার একটা বাবা-মেয়ের সম্পর্ক হয়ে যায়। এই সম্পর্কটাকেও আরেকটু সময় নিয়ে ঘাটালে ভাল হত।
গ্রাহা লম্বা শেষে এসে ত্রাতিনার জন্য নিজের জীবন স্যাক্রিফাইস করে, নিজের জীবন দিয়ে সে তার মেয়ের জীবন রক্ষা করে। আর শেষে এসে ত্রাতিনা গ্রাহার পৃথিবীতে রাখা মেয়ের সাথে দেখা করে তার বাবার দুঃসাহসিক ঘটনার কথা বলে।
লাস্টে এসে আর্কটা জোড়া লাগানোটা ভাল লেগেছে।
রায়ীনা মারা গেল মেয়ের জন্য > মেয়ে বড় হয়ে জানতে পারলো > মেয়ে মা এর মত অভিযাত্রী হলো > গ্রাহা তার মেয়ের জন্য নিজেকে স্যাক্রিফাইস করলো > মেয়ে জানতে পারলো > তারপর হয়তো গ্রাহার মেয়েও ত্রাতিনার মত কোন একটা গল্প্রে দিকে এগোবে।
কিছু প্রিয় লাইনঃ - ত্রাতিনা বলল, "আমি জানি মহামান্য রিহা। বেঁচে থাকার সময় দিয়ে আমি জীবনের পরিমাপ করি না। কী করেছি, সেটা দিয়ে জীবনের পরিমাপ করি"
- ত্রাতিনা মাথা নাড়ল, বলল, "হ্যা। রাগ একটি নেতিবাচক অনুভূতি, কিন্তু তোমাকে কে বলেছে মানুষের সব অনুভূতি ইতিবাচক? মানুষের ভেতরে ইতিবাচক আর নেতিবাচক দুই অনুভূতিই আছে। যে মানুষ তার নেতিবাচক অনুভূতি নিয়ন্ত্রন করে ইতিবাচক অনুভূতিটি দেখাতে পারে, আমরা তাদের ভাল মানুষ বলি"
- “সেটা কখনো হতে পারবে কি না, আমি জানি না । মানুষ খুবই জটিল একটা প্রাণী । শুধু জটিল না, বলতে পার পুরোপুরি জগাখিচুড়ি একটা প্রাণী । বিবর্তনের কারণে কোনো একটা দিকে পরিবর্তিত হয়েছে । তারপর অন্য একটা প্রয়োজনে আবার অন্য একদিকে পরিবর্তন হয়েছে । একটা স্তরের উপর আরেকটা স্তর, পুরোপুরি এলোমেলো । খুব ঠাণ্ডা মাথায় যদি মানুষকে নৃতন করে ডিজাইন করা যেতো, তাহলে মানুষ হতো খুব সহজ সরল দক্ষ একটা প্রাণী! কিন্তু সেটা তো হতে পারবে না।”
- “কারণ, বিরক্তি, ক্রোধ, আনন্দ, হতাশ এগুলো মানুষের অনুভূতি । মানুষের বুদ্ধিমত্তা থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তা হলে তারা মানবিক এই বুদ্ধিমত্তার অনেক উধর্ব চলে যায় ।”
I don't remember the stories clearly. But I remember the feelings that I felt while reading the sci-fis of professor Zafar Iqbal. I remember the thrill while I was reading "Suhaner Sopno". I felt the intensity of a dystopian world while reading "Phoenix". The ending of "Ikaras" made me cry. I have read most of the sci-fis of Zafar Iqbal. But lately I don't read his fictions anymore and it's because of books like "Tratina". What is this thing? It lacks almost everything which are required in a good sci-fi novel. No details in story telling, readers will not get attached to any character, garbage story and many other things. Only last few pages were worth reading that's why I am giving it one star. Dear Zafar Iqbal, please, don't do this.
ত্রাতিনা সাইন্স ফিকশনটিকে ৫টা পর্বে ভাগ করা হয়েছে।প্রথম পর্বটিতে ত্রাতিনার মা রীয়ানার আত্নত্যাগের কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে।পৃথিবীর দিকে প্রচন্ড বেগে ছুটে আসছিলো এক মহাকাশযান যদিও শুরুতে বিজ্ঞানীরা বিভ্রান্ত ছিলো।এতে পৃথিবী ধ্বংসের মুখে পরায় বিজ্ঞান একাডেমীর সিদ্ধান্তে রীয়ানা নিউক্লিয়ার বোমা দিয়ে যায় মহাকাশে এবং ধ্বংস করে মহাকাশযানটিকে।দ্বিতীয় খন্ডে ষোলো বছর পরের সময়ের কথা উল্লেখ আছে।তখন ত্রাতিনা এতিমখানায়ই ছিলো।একসময় সে মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পায় এবং কমান্ডার লীয়ের সাথে দেখা করে।বাকি খন্ডগুলোতে মহাজাগতিক প্রাণীর সাথে যোগাযোগের অভিজানের কাহিনী আছে। সব মিলিয়ে তাই মনে হচ্ছিল নায়ীরার সিক্যুয়াল পড়ছি।
শুরু হয়েছিল ইন্টারেস্টিং সায়েন্স ফিকশনের প্লট দিয়ে। শেষটা আবেগী হয়ে যেয়ে হুট করে শেষ হয়ে গেল। মনে হচ্ছে দুইটা বই মাঝখানে কেটে জোড়া দেয়া হয়েছে, প্রথমটা সায়েন্স ফিকশন পরেরটা মানবিক ফিকশন। আরও মনে হয়েছে লেখক ইন্টারেস্টিং একটা প্লট এগিয়ে নিয়ে আর বুঝতে পারেন কি কিভাবে শব্দ করতে চান, এজন্য জোড়াতালি দিয়ে শেষ করেছেন। লাভের মধ্যে লাভ হয়েছে, উনার পুরাতন সায়েন্স ফিকশন গুলো রিভিশন দেয়ার ভুত ঘাড়ে চেপেছে।
I wanted to read the book since it came out during the Ekushey Boi Mela this year. When I bought it couple of days ago I expected it to better hell of a lot better it didn't have that many great points the story wasn't that interesting felt liked I read this very story before or watched a movie with the same plot before.
অনেক দিন পর জাফর ইকবাল স্যারের সাই-ফাই হাতে নিলাম। শুরুতেই লাগছিল 🔥 — একেবারে হাই ভোল্টেজ! কিন্তু কিছুদূর যেতেই প্লটটা গেলো “same old vibes” 😅🚀🤖। মহাকাশ মিশন, অ্যান্ড্রয়েড, এলিয়েন — সবই déjà vu টাইপ।
পড়তে খারাপ না, nostalgia boost পেলাম… কিন্তু honestly, মাথা উড়িয়ে দেওয়ার মতো কিছু নেই। 🤷♀️
As included in the book this is only the first part of this story and for a first part i thought it was off to a really good start ... i am interested to see what comes next but to rate it only on the basis of its own story it was not that appealing :/
এখানে একটা কাহিনী ঘটতে না ঘটতেই অনেক বছর টেনে তার পরের টুকু বলা শুরু করায় কারো প্রতি খুব একটা মায়া তৈরি হচ্ছিলো না। এছাড়া গল্পটির মূলভাব যথেষ্ট সম্ভাবনাসূচক ছিল। যদি আরেকটু বড় আর এতো ভাগভাগ না হতো, সহজেই এই বইটিকে আরও এক-দুই বেশি রেট করা যেতো।
শুরুটা ভালোই ছিলো, পরে কেমন ভজঘট পাকিয়ে গেলো। আরেকটা অপছন্দের ব্যাপার হচ্ছে পুনরাবৃত্তি। আগের সায়েন্স ফিকশনগুলোর অনেক বিষয় পুনর্বিন্যাস করে নতুনভাবে উপস্থাপন করা খুব উপভোগ্য না। মৌলিক বিষয় অনেকখানি কমে গেছে।