'প্রতিদিন কত জনের লাশই তো পাওয়া যায় ঢাকা শহরে। তাদের প্রত্যেকেই দুর্ঘটনার শিকার, অনৈচ্ছিক কিংবা ঐচ্ছিক । ইন্সপেক্টর রাহাত আজিমের কাজ এই ঐচ্ছিক ‘দুর্ঘটনা’ গুলোর সুরাহা করা। অপরাধীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। কিন্তু এবারের লাশটা একটু ভিন্ন, কপালে তিনটা পাখির ছবি আঁকা । তদন্তে নেমে গোলকধাঁধায় ঘুরতে লাগলো সে, মিলছে না কোন সূত্র। এদিকে নিয়মিত বিরতিতে লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে... সাথে সেই অদ্ভুত চিহ্ন। তবে কি সবার মাঝে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার? সে প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে যেতে হবে সুদূর অতীতে।'
রেলস্টেশনে গিয়ে ট্রেনের ভেতর গুছিয়ে বসার পর, ট্রেনটা যখন ছেড়ে দেয়ার জন্য শেষ হুইসেলটা দিচ্ছে, তখনই আপনি দেখতে পাবেন ২-৪টা লোক ট্রেনে ওঠার জন্য জীবনবাজি রেখে দৌড়াচ্ছে। তাদের কাঁধে ঝোলাব্যাগ, দুই হাতে ট্রলি ব্যাগ ও বিছানাপত্তর; আর যারা সপরিবারে এই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে তাদের একটাকে কোলে নিয়ে গিন্নী হাঁচড়েপাঁচড়ে চলেছেন, মাঝারি সাইজের একটাকে কর্তা ছেঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন, আর সবচেয়ে বড়টা আরো দু'য়েকটা বোঁচকা নিয়ে কোনমতে দৌড়ে লিড নিয়ে একটা কামরার দরজার কাছে পৌঁছে গেছে। এর মাঝে তাড়াহুড়োয় কারো হাতের জিনিসপত্র ছিটকে গেছে, সেগুলো যেভাবে পারছে দু'হাতে কুড়িয়ে আবার ছুট দিচ্ছে। যারা কুলি নিয়েছে, তাদের কুলি ট্রেনে উঠে গেছে, কিন্তু নিজেরা উঠতে পারবে কিনা সেটাই সন্দেহ। যতবার আপনি ট্রেনে উঠবেন, ততবারই এই দৃশ্য চোখে পড়বে। ট্রেন সময়মত ছাড়ুক, দু'মিনিট লেট হোক, দু'ঘণ্টা এমনকি দু'দিন পরে ছাড়লেও এই বিনোদন গ্যারান্টিড; লোকে ট্রেনের চেয়েও লেট করবেই এবং ১০০ মিটার স্প্রিন্ট দেবেই।
সংক্ষেপে এটাই হলো বাতিঘর প্রকাশনীর সকল বইয়ের সারমর্ম। লেখকরা সারা রাস্তা হেলেদুলে সুন্দর কাহিনী সাজিয়ে এগোবেন, এবং পাঠক ভাবতে থাকবেন যে এবার হয়তো সময়মত ট্রেনে উঠে মালপত্র গুছিয়ে আরামে ট্রেনযাত্রা হবে। সে গুড়ে বালি। এ দোকানে থেমে মিষ্টি কেনা, ও দোকান থেকে নকশীকাঁথা, বাজার থেকে আম-কলা-গুড় কিনে স্টেশনে ঢুকতে ঢুকতেই শেষ হুইসেল এবং তখন জান নিয়ে দৌড়ের ঠ্যালায় আম-কলা দূরে থাক, বাচ্চাকাচ্চা আর নিজের জামাকাপড় নিয়ে কোনমতে ট্রেনে উঠতে পারলেই বাঁচোয়া। বাতিঘরের অনেকগুলো বই পড়ার পর ব্যাপারটা এতই গা-সওয়া হয়ে গেছে যে, এখন ধরেই নিই যে, ট্রেনের পেছনে দৌড় হবেই, এখন কে কিভাবে দৌড়ায় আর কার কোন মালপত্তর ছিটকে পড়ে, সেটাই দেখার বিষয়।
'তিন ডাহুক'-ও ব্যতিক্রম নয়। সিরিয়াল কিলার নিয়ে কাহিনী। পুলিশকে ঘোল খাওয়াচ্ছে সে। মোটামুটি ২০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত বেশ ছিল। রহস্য জমে এসেছিল; কিলারের দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু কাহিনী বলে ব্যাকগ্রাউন্ডটাও বেশ এস্টাবলিশড করে ফেলেছিলেন, খানিকটা ক্লিশে হলেও। কিন্তু এরপরই লেখকের মনে গায়েবি হুইসেল বেজে উঠলো, তিনি লোটাকম্বল ফেলে ট্রেন ধরার জন্য ছুট দিলেন। আর সে এমনই ছুট যে, কার লোটা আর কার কম্বল নিয়ে তিনি ট্রেনে উঠে পাঠককে হাতে লোটা ধরিয়ে দিলেন যে, পাঠক সেই লোটা হাতে নিয়ে কেবলই ভাববে--"হালার কি আচানক কারবার, ছিল রুমাল, হয়া গেল হুলা বিলাই"!
এইরকম একখান গল্পের ঘেঁডি ধরে গোঁজামিল দেয়ার পর কেবলই পবিত্র গ্রন্থের বাণী মনে আসে--"হে মানবসন্তান, তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া"।
সিরিয়াল কিলিং। বীভৎস একটা ঘটনা। সমাজের সাইকোপ্যাথরা সিরিয়াল কিলিং এর সাথে যুক্ত থাকে। উন্নতদেশ ইউরোপ, এমেরিকায় সিরিয়াল কিলিং প্রচুর থাকলেও বাংলাদেশের মতন প্রেক্ষাপটে সিরিয়াল কিলিং কনসেপ্টটা নতুনই বলা যায়। এই বই এর কাহিনী এমন এক সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে। যে কিনা নিজের পরিচয় দেয় ডাহুক নামে। আর তার ট্রেড সাইন হল লাশের কপালে ৩টা ডাহুক পাখি আকিয়ে দেয় ছুরির আচরে। শহরে হাজির হল নতুন এক সিরিয়াল কিলারের। যার শিকার হল নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের অধিকারিণী মেয়ে। শহরের বুকে নেমে আসল ত্রাস।
সিনিয়র ইনসপেক্টর রাহাত আজিমকে দেওয়া হল এই কেসের দায়িত্ব। কিন্তু কেসে কাজ করতে নেমে বিপদ টের পেল সে। কোন দিক দিয়েই সুরহা করতে পারছে না সে কেসের। খুনি অতিমাত্রায় সতর্ক, কোন ভুলই করছে না সে। কোন চিহ্নও রেখে যাচ্ছে না যা থেকে খুনি কে তার পরিচয় পাওয়া যাবে। কেসের কাজে সে জানতে পারে খুনি নতুন কেউ না। ১৭ বছর আগেও একবার সে সিরিয়াল কিলিং শুরু করেছিল সে। এই সেই ডাহুক। রাহাত বুঝতে পারে অতীতের ঘটনাই হয়ত লুকিয়ে আছে বর্তমান সমাধানের চাবিকাঠি।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ লেখক ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন বলে সমালচনা করতেও ভয় লাগছে। জানি না উনি কি ভাবে নিবেন কথা গুলো। ১। বইএর কাহিনী বিন্যাস খুবই সুন্দর একটু একটু করে কাহিনী এগিয়ে চলছে। অনেক রহস্য উপন্যাসের মতন এমন হয়নি যে মাঝ পথেই বুঝতে পেরে গেছি কে খুনি। ইভেন খুনির দৃষ্টিকোন থেকেও বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ফ্লাস ব্যাক দেখানো হয়েছে। আর সবচেয়ে ভাল লেগেছে শব্দার্থের যে ছোট ছোট অধ্যায়। নতুনত্ব। ২।এত সুন্দর করে কাহিনী বিল্ডাপ করে তড়িহড়ি করে ১ চ্যাপ্টারের মাঝেই কাহিনী শেষ করে দেওয়া হয়েছে। কোন রূপ এক্সপ্লেনেশনও নাই যে কেন রাহাস সন্দেহ করল। অনেকটা পড়ে মনে হয়েছে যে লেখক আরাম করে লিখছিলেন হঠাত করে তারিখ দেখে খেয়াল করেন আজকেই তার বইএর পান্ডুলিপি জমা দেওয়ার ডেডলাইন, তাই তড়িহড়ি করে শেষ করছেন। নিখোঁজকাব্য এর মতন এত মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া এন্ডিং এর পর এটা পড়ে মনে হয়েছে বড় বেশী সাদামাটা। বিদ্রঃ ট্রাডেজি আমার পছন্দ না।
বইটা পড়েছি সম্ভবত ৩/৪ বছর আগে। সময়ের সাথে বইয়ের অনেককিছু ভুলে গেছি আবার কিছু মনেও আছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি মনে আছে যেটা সেটা হলো বইটার প্রতি ভালোলাগা। পড়ার সময় কনফিউজড হয়ে গেছিলাম খুনি কে চিন্তা করে। মাস্টারমাইন্ড একজন খুনি, সাথে তার অদ্ভুত খুন। খুনির দৃষ্টিকোণ দিয়ে দৃশ্যপট বর্ণনা, সাইকোলজিক্যাল পয়েন্ট অব ভিউ, পাস্ট ট্রমা লেখক দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। খুনির ব্যাকস্টোরি পড়ার সময় একটা কথা মাথায় বারবার ঘুরছিল, "villain are not born, they are made"। তবে শেষটা কিছুটা খাপছাড়া লেগেছে। এছাড়া ভালো লাগার মতো একটা বই। বইয়ের যেভাবে ধীরে ধীরে খুনির পাস্ট রিভিল করা হয়েছে, এটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।
দারুণ আমার একটা বদ অভ্যাস হচ্ছে বইয়ে যখন শক্তিশালী কোন চরিত্র থাকে, হোক সে প্রোটাগনিস্ট বা অ্যান্টাগনিস্ট- সেই চরিত্রের পক্ষ নেয়া। 'তিন ডাহুক' উপন্যাসের ফ্ল্যাপের পেছনের অংশটুকু পড়েই 'ডাহুক' চরিত্রটাকে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়। বলতে গেলে সে থেকেই বইটা অর্ডার দেয়া। পয়সা উশুল বলতেই হবে। ডাহুক চরিত্রটাকে দারুণ দক্ষতায় গড়ে তুলেছেন লেখক।
বাংলাদেশের পটভূমিতে সিরিয়াল কিলিং নিয়ে আস্ত উপন্যাস, বেশ স্কেপ্টিক ছিলাম- কেমন হয়। কিন্তু শেষ অবধি বইটা একটা আঁচড় কেটে গেল মনে। যে বই শেষ করার পর চরিত্রগুলোর জন্যে একটা হাহাকার থেকে যায় মনে, বলতেই হবে চরিত্রায়নে লেখক সফল। ডাহুকের পাশাপাশি রাহাত, রাকিব, ইরতিজা চরিত্রগুলোও নিজ নিজ জায়গায় মানানসই ছিল।তবে ইরতিজার কাহিনীটার প্রতি আরেকটু মনোযোগ দিতে পারতেন লেখক��� বইটা শেষটা যেভাবে হলো সেটা ভালো লাগবে নাকি লাগবে না তা স্বাদের ওপর নির্ভর করবে। আমার কাছে এরকম এন্ডিংই ভালো লাগে।
আরেকটা দারুণ ব্যাপ���র না বললেই না, কয়েক অধ্যায় পরপর যে এক পাতার অধ্যায়গুলো ছিল সেটা ভীষণ রিফ্রেশিং। এরকম আরও বই চাই সালমান ভাইয়ের কাছ থেকে।
সকাল সাড়ে নয়টায় বইটা আলগোছে হাতে নিয়েছিলাম বিরক্তিকর ক্লাসের ফাকে,এই নিয়ে এটা আমার দ্বিতীয় বার পরিচয় সালমান হকের লেখার সাথে.কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পরিচয়টা আরো লম্বা হবে ভবিষ্যতে এবং সেটা আশাকরি এরকমই টানটান উত্তেজনা আর রহস্যময় থাকবে 😊
ডাহুক পাখির কথা জানতাম আগে থেকেই, ছোটবেলায় পাখি নিয়ে আগ্ৰহ থাকায় গোগ্ৰাসে গিলতাম পাখি বিষয়ক সব তথ্য,তাই যখন বইটার নাম দেখলাম তিন ডাহুক মনে হয়েছিল আচ্ছা তবে পাখি নিয়েই হবে কিছু একটা
পাখি নিয়েই বইটা , হুম একটা ঠান্ডা মাথায় একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালানো ছোটবেলা থেকে মানসিক আর শারীরিক যন্ত্রণায় ছটফট করা এক আহত 🐦.যার পৃথিবীটা বড় হয়ে ও বিশেষ বদলায়নি একই কষ্ট আর প্রতারণা এক নিরীহ গোবেচারা চিকিৎসক থেকে করে তুলেছিল এক ভয়াবহ ঠান্ডা মাথার মস্তিষ্ক বিকৃত সাইকোপ্যাথ যে কিনা একের পর এক ছক কেটে ধীরে সুস্থে নিজের অর্জিত বিদ্যাকে বিপথে ব্যবহার করে কেড়ে নিয়েছে আটটি তরুণীর প্রাণ, শুধু শেষ করেই ক্ষান্ত হননি তাদের যঠর থেকে বের করে এনেছেন তার তথাকথিত "আমানত"সন্তান ধারণের জায়গা "জরায়ু".আর নিজে থেকেছেন আইনের ছদ্মবেশে হুমায়ূন কবির পঞ্চম নামে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে.
সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল, শুধু মাত্র রাহাত যেভাবে খড়ের গাদায় ছুঁচ খোঁজার মতো পালের গোদাটাকে বের করে এনেছিল তার আরেকটু সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পেলে পাঁচ তারকা দিয়েই দিতাম.
অফিস শেষে বাসায় ফেরার কথা সাবেরীর৷ কলিগের জন্মদিনের সারপ্রাইজ পার্টি শেষ হতে হতে একটুখানি দেরি হয়ে যায় তার। কিন্তু তার আর ফেরা হয় না...
এভাবে তো কতো মানুষই হারিয়ে যায়। কপাল ভালো হলে কাওকে খুঁজে পাওয়া যায় তা না হলে মিলে লাশ। কারও কারও স্বজনের ভাগ্যে তো সেটাও জোটে না। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বলা চলে সাবেরীর স্বামীর ভাগ্য বেশ ভালোই ছিল (!) দিন কয়েক পরে একটা বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া যায় সাভারের একটা মাঠে। পঁচা গন্ধ ছড়াচ্ছিল তখন। লাশের ময়নাতদন্ত করার পর দেখা যায় অদ্ভুত একটা বিষয়, লাশের কপালে কে বা কারা একটা অদ্ভুত চিহ্ন এঁকে রেখেছে। আর সবচেয়ে ভয়ংকর যে ব্যাপার, সেটা হলো মৃত্যুর পর কে বা কারা যেন সুনিপুণ হাতে অপারেশন করেছে মৃতদেহের উপর। আর সেই অপারেশনে তার জরায়ু কেটে ফেলে হয়েছে!!
তদন্তে নামে এন বি আই। ঢাকা শহরে কতো মানুষ প্রায় প্রতিদিন কতোভাবেই না মারা যাচ্ছে.. কেউ খুন হচ্ছে, কেউ বা দুর্ঘটনায় আর নয়তো আত্মহত্যা। এরকম অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করে থাকে এই স্পেশাল ফোর্স। কিন্তু কোন কূলকিনারা পায় না তারা। খুনী অত্যন্ত সাবধানী৷ খুব সযত্নে মুছে দিয়েছে তার প্রতিটা চিহ্ন। আর বোঝাই যায়, খুনটা সে বা তারা করেছেও বেশ রসিয়ে রসিয়ে, আয়েশ করে। প্রচুর সময় নিয়ে।
অস্বাভাবিক রকমের নিখুঁত খুনটা নিয়ে রীতিমতো অকুল পাথারে পরে গোয়েন্দারা। তার মাঝে ঘটে আরেকটা দুর্ঘটনা। ঠিক একইভাবে খুন আরেকটা। তবে এবারে সমাজের উঁচুতলার কেউ নয়, এবারে খুন হয়েছে এক পতিতা। সেই একই রকম পদ্ধতি, একই রকম সাবধানী খুনি!
একটা মৃত লাশ। কপালে খোদাই করা চিহ্ন। আর ময়নাতদন্ত ছাড়াই গোয়েন্দারা বলে দিতে পারে, নিখুঁত অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়েছে মৃতের জরায়ু!
তবে কী ঢাকায় আগমন ঘটেছে কোন নৃশংস সিরিয়াল কিলারের? আঁটঘাঁট নেমেই তদন্তে নামে ডিটেকটিভ রাকিব-রাফাত। এন বি আই প্রধান এস এম আকরাম খানের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তাহলে ফিরে এসেছে সে! জীবনে অমীমাংসিত রহস্যগুলোর মাঝে অন্যতম এই খুনগুলো। সতেরো বছর আগেও ঠিক একই রকমভাবে খুন হয়েছে দেশের সাধারণ কিছু নাগরিক। আরও স্পেসিফিক ভাবে বললে কিছু নারী। খুব কাছে যেয়েও ধরতে না পারার ব্যর্থতা এখনও পোড়ায় এই প্রবীন অফিসারটিকে। তখন সেই অপরাধীকে ধরতে পারলে আজ হয়তো এই মৃত্যুগুলো দেখতে হতো না। বসের কাছ থেকে ডিটেকটিভদ্বয় শোনে এক অভূতপূর্ব ঘটনা, ঠিক যেন থ্রিলার বইয়ের কোন চরিত্র উঠে এসেছে বাস্তবে। বসের ভাষ্যমতে, 'ফিরে এসেছে ডাহুক। তার আমানত উদ্ধার করতে।'
নৃশংস এই সিরিয়াল কিলার নিজেকে পরিচয় দেয় ডাহুকরূপে। আর খুঁজে বেড়ায় তার আমানত। কী তার আমানত আর কে এই ডাহুক? আর কেন-ই বা এভাবে একের পর এক নিরীহ নারীকে খুন করে বেড়াচ্ছে? সব প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে খুব দ্রুত। সময় নেই... ঘড়ির কাঁটা যত দ্রুত ঘুরতে থাকবে, যত সময় যেতে থাকবে, ততই বিপদের সম্মুখীন হতে হবে আরেকজন নিরীহ নারীকে৷
টিক টিক.. টিক টিক.. টিক টিক....
ভয়ংকর সুন্দর একটা থ্রিলার। জাস্ট এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো। (এটা আসলে কথার কথা, ২৫৪ পেজের মোটামুটি ভোটকা থ্রিলার বইটা এক নিঃশ্বাসে পড়ার ট্রাই কইরেন না, দম-টম আটকে গেলে সমস্যা৷ দিনকাল এমনিতেই খুব একটা ভালো না) পুরোটা বইয়ের কাহিনি এগিয়েও গেছে খুব সাবলীভাবে। কথায় আছে, প্রতিটা সিরিয়াল কিলারের পিছনে কিছু না কিছু ঘটনা থাকে৷ যে ঘটনাগুলো সে মানুষটাকে ধীরে ধীরে ঠেলে দেয় নিষ্ঠুর পরিণতির দিকে। আপনি ডাহুককে ঘৃণা করতে করতেও, ঘৃণা করতে একটু কষ্ট হবে। যাই হোক, এতোক্ষণ সব পজেটিভ দিকের কথাই বললাম। এবার আসি একটু একটু নেগেটিভ দিকে। :/ এতো সুন্দর একটা বই এতো যত্ন করে পুরাটা লেখা, লাস্ট চ্যাপ্টারে আরেকটু সময় দিলে ক্ষতি কি হইতো? একটু দ্রুত সব শেষ হয়ে গেছে বলে মনে হয়েছে। দুর্দান্ত বইটার আরেকটু জমজমাট এন্ডিং হলে হয়তো আরেকটু ভালো হইতো 🐸 দুই একটা প্রশ্ন পেটে ঘুটঘুট করছে কিন্তু স্পয়লার হয়ে যাবে যেহেতু থাক। নিখোঁজকাব্য মোটামুটি লেগেছে কিন্তু এই বইটা যেন আরও বেশি জোস, আরও বেশি থ্রিলিং 😁 সালমান হকের জন্য শুভকামনা। অনুবাদ দিয়ে তো বটেই মৌলিক দিয়েও দিনে দিনে পাঠকের মন জয় করে নিচ্ছেন ❤
বই-তিন ডাহুক লেখক-সালমান হক প্রকাশনী-বাতিঘর৷
#happy_reading #বই_হোক_অক্সিজেন
বি. দ্র. বইটা পড়তে যেয়ে আমার মাথায় একটা জিনিস কাজ করেছে। জানি না অন্য কারও এমন মনে হয়েছে কি না। লেখকই ভালো উত্তর দিতে পারবেন। বইটা কি কোন না কোনভাবে মাইকেল কনেলির দ্য পোয়েট বইটা দ্বারা অনুপ্রাণিত? মিল নাই, কিন্তু ডাহুকের মাঝে ক্যান জানি আমি পোয়েটের ছায়া পেয়েছি। আবার এটাও হতে পারে, অই বইটা রিসেন্টলি পড়েছি তাই অবচেতন মন মিল খুঁজে নিয়েছে। 😌
বই ভালো ছিলো। প্লট একটু পরিচিত লাগলেও টুইস্টগুলো সত্যিই ভালো ছিলো। শব্দার্থ, বাক্যরচনার ব্যবহার নতুনত্ব এনেছে বেশ। শেষটা বেশ তাড়াহুড়ো করে করা হয়েছে সেটা ভালো লাগে নাই।
তবে বিরক্তি ধরিয়েছে বইয়ের প্রায় প্রতিটা পাতায় "ক্যারেকটার স্পেসিং" বলে কোন কিছুর অস্তিত্বহীনতা! নিজে প্রকাশনা সংস্থার সাথে জড়িত থাকায় এসব ভীষণ চোখে লাগে। সম্ভবত পাঠকের চোখের আরাম, আর বিরক্তিহীন পাঠ বলে কোন কিছু থাকা উচিৎ বলে বলে হয়নি প্রকাশকের। দুই বা তারও বেশী শব্দ জোড়া লেগে গেছে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে বইয়ে! এতো এতো বই প্রকাশ করা প্রকাশক আরো দায়িত্বশীল হবেন এমনটা তো পাঠক আশা করতেই পারে।
নতুন, তরুণ লেখক, সম্ভাবনাময় লেখক। তাঁর জন্য শুভকামনা।
১৭ বছর পূর্বে ত্রাস সৃষ্টিকারী এক অধরা সিরিয়াল কিলার। নিজেকে যে পরিচয় দেয় ডাহুক নামে। হঠাৎ করে তার আবার আগমন ঢাকা শহরের বুকে। একে একে তরুণী ধরে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর জরায়ু কেটে নিচ্ছে সেই লাশ থেকে। ফেলে যাচ্ছে না কোন সূত্র বা প্রমাণ। যাকে ধরতে গলদঘর্ম হওয়া আগের দুই অফিসার আকরাম খান ও হুমায়ুন কবির পঞ্চমের সাথে এবার মাঠে নামে এনবিআইয়ের দুই ইনভেস্টিগেটর রাহাত আজিম ও রাকিব মালিক। কিন্তু সূত্র প্রমাণ বিহীন এই হত্যাযজ্ঞের পুরোহিত কি ধরা দেবে...!?
পাঠ প্রতিক্রিয়া: বহুদিন পর সিরিয়াল কিলিং এর উপরে বই পড়লাম। এর আগে শেষ গত বছর দিমেন্তিয়া পড়েছিলাম। এটার প্লট চরিত্রায়ন বিশেষ করে কিলারের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাভাবনা অনেক চমকপ্রদ ছিল। মাঝে মাঝে একটা শব্দের সমার্থক শব্দ ব্যবহার (আমার ধারণা সেটা কিলারের ডায়েরি) রহস্যকে ক্রমেই ঘনীভূত করছিল। হত্যা হওয়া চরিত্রগুলোর প্রতিষ্ঠাও যথেষ্ট নিপুণভাবে করা হয়েছে। কিন্তু যবনিকাপাত ছিল আকস্মিক এবং অপ্রত্যাশিত। ২৭০পেজের বইয়ের ২৪০ পেজ পর্যন্তও কাহিনি অনেক সুন্দর ভাবে এগিয়েছিল। কিন্তু শেষে এসে অনেকটা গোঁজামিল মনে হয়েছে। কিলার নিশ্চিত হওয়ার ব্যাখ্যাটা আরেকটু যথাযথ হলে আরো ভাল লাগত। শুরু থেকে এত সুন্দর কাহিনি বিল্ড আপ করে পরে এসে শেষে এমন তাড়াহুড়ো কিছুটা হতাশ করেছে। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৩.৮/৫।
ঢাকা শহরের নিত্যদিনকার খুনের মাঝে হঠাৎ করেই পদার্পন ঘটেছে একজন সিরিয়াল কিলারের, যে নিজেকে ডাহুক নামে পরিচিতি দেয়। যার শিকার মাঝবয়সী তরুণী এবং শিকারের অস্ত্র স্ক্যাপটিকাল। এক উন্মাদ অতীত থেকেই এই ভেনদেন্তা মুখোশধারী নিশৃংসভাবে খুন করে চলছে একের পর এক। দুই যুগ ধরেই এই ডাহুকের পেছনে ছুটছে এনআইবি অফিসার'স। এবার কেস এসে পড়েছে ডিটেকটিভ রাহাত আজিমে ঘাড়ে। নিজের টিমকে নিয়ে পুরোদমে কাজে লেগে পড়েছে কিন্ত কেসের কোনো কূলকিনারা করতে পারছেনা। পাচ্ছে একের পর এক আঙ্গুলকাটা হুশিয়ারী চিরকুট যেন আইনকে দেখাচ্ছে বুড়ো আঙ্গুল। কিন্তু কেস ফাইল মিমাংসিতের কাতারে পৌছেও দিনশেষে আইনেরই হার হয়। কেন?
সালমান হক সবসময় ই আমার প্রিয় অনুবাদকের একজন। এই প্রথম হয়তোবা তার কোনো মৌলিক বই পড়ছি এবং সত্যি বলতে তার লেখনী ও ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং আমাকে বেশ ইমপ্রেস করেছে। কিন্ত ঐ একটুর জন্য ব্যাস পাচঁ তারকা হলোনা বইটা। শুরুতে প্রত্যেক ক্যারেক্টারের ডেভেলপমেন্ট বেশ ভালো লাগছিল কিন্ত শেষে এসে লেখক যে হন্তেদন্ত হয়ে গল্পের ইতি টানলেন তা নিরাশাজনক। ঘরের দুয়ারে এসেই আছাড় খাওয়ার মত। আততীয় কে ছিল সেটা যদিওবা আন্দাজ করতে পারিনি কিন্ত আততায়ীর খোলাশা ভালো লাগেনি। শেষটা খুবই সাদামাটা আর ফিল্মি হয়ে গিয়েছিল।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিনই অনেক মানুষ নিখোঁজ হয় বা অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু লাশ পাওয়া যায়। যাদের অনেকেই কোন না কোন দুর্ঘটনার শিকার, সেটা অনৈচ্ছিক কিংবা ঐচ্ছিক যাই হোক না কেন। এন বি আই এর হেড আকরাম খান এবং তার টিমের কাজ এই ঘটনা গুলোর তদন্ত করে এর পেছনের রহস্য খুঁজে বের করা। - এমনই এক কেসে হটাৎ বেশ কিছু লাশের সাথে কয়েকটি একই ধরনের সাইন দেখে এন বি আই বুঝতে পারে যে তারা এক ভয়াবহ সিরিয়াল কিলারকে খুঁজছে।আটঘাট বেধে শুরু হয় সেই সিরিয়াল কিলারকে খোঁজা। এদিকে দিন দিন লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে কিন্তু সিরিয়াল কিলার ধরা পরছে না।এখন এই সিরিয়াল কিলার কে ,কেনই বা সে এ ধরনের নৃশংস খুন করছে আর আদৌ কি সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এই নিয়েই “ তিন ডাহুক “ বইটির কাহিনী। - তিন ডাহুক,নিখোঁজকাব্যের পর লেখকের দ্বিতীয় উপন্যাস।তিন ডাহুকের লেখনী আগের উপন্যাসের চেয়ে পরিপক্ক মনে হয়েছে । এই ধরনের গল্পে যে টাইপের প্লট,সংলাপ আর সাসপেন্স দরকার সেটাও ভালোভাবেই তৈরি করা হয়েছে। - গল্পের প্রয়োজনে নানা ধরনের চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে যার ভিতর ডিটেকটিভ রাহাত আজিম স্বাভাবিকভাবেই বেশি ফোকাস পেয়েছে। কয়েক অধ্যায় পর পর কিছু ছোট অধ্যায় এবং জীবনানন্দ দাসের কবিতার উপযুক্ত ব্যবহার ব্যক্তিগতভাবে অনেক ভাল লেগেছে। -
- সবমিলিয়ে , সিরিয়াল কিলিং নিয়ে বেশ সাস্পেন্স পুর্ন এক উপন্যাস “ তিন ডাহুক “। যাদের সিরিয়াল কিলিং নিয়ে বই ,মুভি ,টিভি সিরিজ দেখতে পছন্দ তাদের জন্য এই বইটি recommandation রইলো।
সালমান হক নিজেই লিখেছেন থ্রিলার তার প্রিয় জনরা আর ইংরেজি থ্রিলার পড়েই তিনি লিখতে চেয়েছেন বাংলাদেশের বিশেষত ঢাকার প্লটে। তিন ডাহুক তারই ফসল। গল্পটা আমাদের বেশ পরিচিত। কেননা সিরিয়াল কিলাররা যেমন একটা প্যাটার্ন অনুসারে খুন করে, সিরিয়াল কিলারদের গল্পও একটা প্যাটার্নে পড়ে যায়। সালমান হক মোটামুটি সেই প্যাটার্নেই লিখেছেন কিন্তু ঢাকার প্লট হওয়ার কারণে সেটা বেশ উপভোগ্য হয়। বিশেষত রাহাত আর রাকিবের কথোপকথন, চিফ আকরামের আচরণ থেকে শুরু করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যাইমার আচরণ থেকে শুরু করে সংবাদপত্রের তরুণ সাংবাদিক মেয়েটার (নাম ভুলে গেলাম) মরিয়াভাব--আমার খুব পরিচিত। তাই হয়ত ভালো লাগে কেননা আমি পরিচিত বিষয়ই বইয়ে চাই।
ভালো লাগার বিষয় হলো কতগুলো চরিত্র তৈরি করা। রাহাত, রাকিব, আকরাম, পঞ্চম, হান্নানরা আমাদের আশেপাশেরই মানুষ। থ্রিলার কম পড়া হলেও থ্রিলারের এক��া গৎবাঁধা ধারা আছে বলে আমার মনে হয়। তার মধ্যে পরিচিত নাম, আচরণ দিয়ে গল্পটা দেখতে ভালো লাগে। রাহাতের পরিণতি নিয়ে আমার আপত্তি আছে তবে ওটা তেমন কিছু না। চাইলে রাহাতকে ফিরিয়ে এনে আরেকটা কেস দিতেই পারেন সালমান হক এবং সেটা হলে আমি খুশি হবো। ব্রিফিং রুমে রাহাতের আচরণ ভালো লাগছে।
আপাতত সালমান ব্রোর প্রতি আবেদন, নিবেদন হইল জাপান থেইকা দেশে আইসা আর কিছু লিখতে যদি মহাশয়ের মর্জি হয়। এই বইয়ের খামতিগুলা নিয়ে লেখক সচেতন, সেইটা আমার জানা এবং সেইখান থেকেই ওস্তাদরে কইতেছি, শুরু কইরা দেন আরেকটা।
Indeed, one of the best serial killer themed thriller I have ever read in Bangla. Well plotted, nice backup character and background, and a decent ending. Apart from a few printing mistakes I have very less to complain. I will wait for the next book by the author.
বেশ আন্ডাররেটেড বই "তিন ডাহুক"। বাতিঘর থেকে প্রকাশিত বাকি বইগুলোর মত, থ্রিলারপ্রেমীদের আলোচনার শীর্ষে কখনো দেখি নি "তিন ডাহুক" কে। যদিও আরো বেশি এটেনশন বইটির প্রাপ্য।
ডাহুকের পরিচয় অনেকটা অনুমেয় ছিল। থ্রিলের আমেজটা শুরু থেকে বেশ ভালোই ফিল করা যায়। তবে থ্রিলটা রিবুস্ট হয় নি ফলে, বইটা একটু দীর্ঘ মনে হতে পারে। বইটা আরেকটু ছোট হতে পারতো, দ্রুত শেষ করা যেত। ইরতিজা-মালিহার কাছে যেই কেসটা গেলো, সেটা মূল গল্পের সাথে কিভাবে প্রাসঙ্গিক এটা বোধগম্য হয় নি।
আবার অন্যদিকে সিরিয়াল কিলিং এর ভিক্টিমদের নিয়ে আরেকটু ইমোশন ক্রিয়েট করা যেত, তাহলে বোধহয় পাঠকদের হৃদয়স্পর্শী হতে পারতো আরো।
তবে ওভারঅল, সিরিয়াল কিলিং এর উপরে বেশ ভালো একটা বই।
সালমান এর প্রথম বই নিখোঁজকাব্য' বেশ ছিলো। সেই বই থেকেও অনেক অনেক ভালো হয়েছে এই বইটি। উন্নতি দারুণভাবে লক্ষণীয়। ডিটেকটিভ রাহাত আজিম রকস! সিরিয়াল কিলিং, পুলিশ ইনভেস্টিগেট, তদন্তের ধারা, প্লট -উপভোগ্য লেগেছে। কবিতাগুলোর ব্যবহার একদম দারুণ ভাবে মিলে গেছে গল্পের সাথে। সেই সাথে ছিলো আরও অদ্ভুত কিছু চরিত্র। - এক পারফেক্ট সিরিয়াল কিলিং মিস্ট্রি। আশা করি সালমান আরও এগিয়ে যাবে, আরও নতুন নতুন গল্পের ধারায় নিজের প্রমাণ রাখবে।
বাংলায় সিরিয়াল কিলিং নিয়ে বই লেখা সহজ নয়। আমাদের মন চট করে এই কথাটা মানতেই চায় না যে কোনো মনোরোগী স্রেফ নিজের বিকৃত যুক্তির তাড়নায় একের পর এক খুন করতে পারে। তারপরেও যখন সেই বিষয়ে কিছু লেখা হয় তখন প্রশ্ন থাকে দুটো: ১. বইটা পোলিস প্রসিডিওরাল হবে, না সাসপেন্স-ভরা থ্রিলার? ২. শেষটা কেমন হবে - আলোকিত, না অন্ধকারাচ্ছন্ন? এই বইয়ে প্রথম প্রশ্নের উত্তর পাওয়াই যায়নি। শেষটাও 'সেভন'-এর প্রভাব আর (সম্ভবত) লেখকের আলসেমির ফলে ঘেঁটে গেছে। স্বচ্ছন্দ ও নির্ভার গদ্যের জন্য বইটা একবার পড়া যায় - ব্যস।
কারও যদি মনে হয়ে থাকে অনুবাদক দ্বারা মৌলিক লেখা সম্ভব নয়, এই বইটা পড়ার আহবান জানালাম। ডিটেকটিভ ঘরনার মৌলিক, সাথে কাব্যিক ছোঁয়া, লেখনশৈলী নিজে পড়েই বিবেচনা করুন না হয়।
এরা অন্যের বই পড়ে বস! পড়ুয়ারা সবসময় ভালো কিছুই উৎপাদন করে।
কাহিনী খুব ভালো জমেছিলো, কিন্তু শেষে যেন বড্ড তাড়াহুড়ো করে শেষ করে দিলো। আমার কাছে মনে হয়, থ্রিলার জনরার উপন্যাসগুলোতে শুধু রহস্য দিয়েই সব মজা পাওয়া যায় না। লেখক তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সেই রহস্য আর জট কিভাবে ছড়াচ্ছেন সেটার উপরেই বেশিরভাগ মজাটা নির্ভর করে। এই বইয়ের ক্ষেত্রে লেখক খুব সুন্দরভার রহস্য উপস্থাপন করতে পেরেছেন ঠিকই, কিন্তু রহস্যের জট খুলতে পারেননি সেভাবে। মনে হলো, এনবিআই অফিসার রাহাতের মাথায় কেউ হুট করে ডাহুকের নাম বলে দিয়ে গেলো(অনেকটা স্বপ্নে পাওয়া ঔষুধের মতো)। এটা একদম ই ভালো লাগে নি৷ এই ক্ষেত্রে লেখক আরেকটু বিচার বিশ্লেষণের দিকে যেতে পারতেন বলে আমার মনে হয়।
WTF!! Didn't expect it to be this good. After reading Bird Box just casually picked it up while going to bed. Ended up reading till Fajr!! Then again after lunch. Finished in two sittings. Marvelous job indeed. I liked the fact how the leading investigating officers were flawed but each stood upto their potentials. The psycopath "Dahuk" was scary at times, but you will feel sympathy for the guy too. The ending.... well, I sighed for so long. The poems were exceptionally good. The dictionary type chapters added some extra flavor. Hats off to this guy. He can write. N:B: Can there be less printing mistakes please?
বর্তমান সময়ে যে ক'জন হাতে গোণা ভালো অনুবাদক আছেন, তার মধ্যে সালমান হক একজন। ভীষণ ভালো অনুবাদ করেন। কিন্তু গত বছর মেলায় ৩.৪৬ এ এম এর সাথে তার প্রথম মৌলিক নিখোঁজকাব্যও কিনেছিলাম। বেশ ভালো লেগেছিল। আগে বাতিঘর থেকে শুধু অনুবাদ বইই কিনতাম, কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে এবার ওখান থেকেই ১৮টা মৌলিক কিনেছি। তিন ডাহুকের কথায় ফিরে আসি। আমার কাছে মনে হয়েছে নিখোঁজকাব্যের তুলনায় লেখার ধরণ যথেষ্ঠ পরিপক্ক। সিরিয়াল কিলিং বা সাইকো থ্রিলার যা-ই বলেন না কেন, এধরণের বই লেখতে যে ধরণের সাসপেন্স জিইয়ে রাখা প্রয়োজন তা পূর্ণমাত্রায় বজায় ছিল। জীবনানন্দের কবিতার ব্যবহার এবং শুরুতে লেখা কবিতাটা একটা কাব্যকি ঢং এনে দিয়েছে। একমাত্র বাংলাতেই বোধহয় এরকম বিষয়ের একটা বইয়ের মাঝে কাব্যিক ভাব আনা সম্ভব। আগামী বইয়ের অপেক্ষায় থাকবো।
হঠাৎ করেই এক সিরিয়াল কিলারের আবির্ভাব ঘটে ঢাকা শহরে। অদ্ভুত ভাবে খুন হয় কয়েকজন তরুণী। তদন্তে নামে এনবিআই। হাতে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য- ভিক্টিমদের মৃত্যুর পর তাদের কপালে আকা হয়েছে তিনটি চিহ্ন আর কেটে নেয়া হয়েছে জরায়ু। হকচকিয়ে যায় পুরো টিম, এ কেমন সিরিয়াল কিলার!!! সামনে আসে অতীতের কিছু ঘটনা। এই বদ্ধ উন্মাদকে ধরতে মরিয়া পুরো এনবিআই টিম।
সবচেয়ে বড় কথা বইয়ের ৫ ভাগের ৪ ভাগ এত সুন্দর করে সাজানো-গোছানো কিন্তু শেষটায় এত তাড়াহুড়া কেনো😐? সবই তো সুন্দর আগাচ্ছিল, শেষটায় লেখক কেন এত তাড়াহুড়া করলেন। ভেবেছিলাম ৫ তারকাই পাবে বইটা🤕
প্রতিদিন কত জনের লাশই তো পাওয়া যায় ঢাকা শহরে। তাদের প্রত্যেকেই দুর্ঘটনার শিকার, অনৈচ্ছিক কিংবা ঐচ্ছিক । ইন্সপেক্টর রাহাত আজিমের কাজ এই ঐচ্ছিক ‘দুর্ঘটনা’ গুলোর সুরাহা করা। অপরাধীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। কিন্তু এবারের লাশটা একটু ভিন্ন, কপালে তিনটা পাখির ছবি আঁকা । তদন্তে নেমে গোলকধাঁধায় ঘুরতে লাগলো সে, মিলছে না কোন সূত্র। এদিকে নিয়মিত বিরতিতে লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে... সাথে সেই অদ্ভুত চিহ্ন। তবে কি সবার মাঝে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার? সে প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে যেতে হবে সুদূর অতীতে।'
----পাঠ প্রতিক্রিয়া----
সুঅনুবাদক সালমান হক ভাইয়ার মৌলিক হিসেবে দ্বিতীয় প্রয়াস ‘তিন ডাহুক’। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি পুলিস প্রসিডিওরাল/সাইকো থ্রিলার বই। কাহিনী আবর্তিত হয় এনবিআই অফিসার রাহাত আজিম আর এক সাইকোপ্যাথের মাঝে যে নিজেকে ‘ডাহুক’ নামে পরিচয় দিতে ভালোভাসে। বইয়ের প্লট, এক্সিকিউশন বেশ ভালো ছিল। একেবারে ইউনিক কিছু না। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ভালোভাবেই ফুটে উঠেছে কাহিনী। এক কথায় ভালোই লেগেছে বইটা। কিছু ব্যাপার অপ্রাসঙ্গিক লেগেছে। যেমন ইরতিজার কঙ্কালওয়ালা কেস, মালিহার সাথের ব্যাপারগুলোর মূল কাহিনীতে কোনো এফেক্ট ছিল না। তাছাড়া শেষদিকে একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলেছেন বলে মনে হয়েছে। নাহলে, বাকি দিকগুলো বিবেচনায় এই বইটাকে প্রিয়র তালিকাতেই রাখা যেত।
ডাহুকের মানসিক অবস্থা লেখক দক্ষ হাতে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে আরো এক্সট্রিম কিছু আশা করেছিলাম। বলতে গেলে ডাহুকের সাইকোতে পরিণত হওয়ার কারণগুলো অতোটাও স্ট্রং লাগেনি।
বইটা শুরু থেকেই রোলার কোস্টারের গতিতে এগিয়েছে এবং কোথাও একবারের জন্যও মনে হয়নি যে কাহিনী ঝুলে গেছে। অনেকদিন পর এমন দুর্দান্ত গতির বই পড়েছি।
----চরিত্র----
চরিত্রায়ন ভালো ছিল। রাহাত আজিমকে প্রধান চরিত্র হিসেবে ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। ডাহুকের চরিত্রটাকেও মোটামুটি ভালোভাবেই তৈরি করেছেন। এ ব্যাপারে অবশ্য উপরে কথা বলা হয়ে গেছে। অন্যান্য চরিত্রগুলোও মোটামুটি ভালোভাবেই ফুটে উঠেছে। আমার মনে হয় কাহিনীর গতি আর সাসপেন্সের সাথে অন্য চরিত্রগুলো যতোটা প্রয়োজন ততোটাই ফুটে উঠেছে। শেষে একটু ইমোশনালও হয়ে পড়েছিলাম!
----টুইস্ট----
আরেকটা আক্ষেপের দিক। নাহ, টুইস্টে কোনো সমস্যা ছিল না। একেবারেই আনপ্রেডিক্টেবল। কিন্তু টুইস্টটাকে লেখক যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা একটু বেশিই নাটকীয় মনে হয়েছে।
পুলিস প্রসিডিওরাল থ্রিলারগুলোর টুইস্ট যেন একটা কি-ওয়ার্ডের মতো। এবছর বেশ কয়েকটা বই পড়েছি যেগুলোর টুইস্ট একরকমই। কারণটা আলাদাভাবে বলছি নিচে।
----লিখনশৈলী----
এক কথায় চমৎকার লেখা। একেবারে ঝরঝরে, মেদহীন। পড়ে গিয়েছি টানা। বইয়ের গতি বজায় রাখতে লিখনশৈলী অন্যরকম একটা ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া যে প্লটে লিখেছেন তাতে তার দৃষ্টিভঙ্গি লেখার মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে ফুটে উঠেছে বলা যায়।
----প্রোডাকশন----
বাঁধাই তুলনামূলক দুর্বল, কাগজের মান ভালো না। প্রচ্ছদটাও তেমন একটা ভালো লাগেনি। এপ্রিল, ২০১৮ এর সংস্করণ এটি। আশা করছি নতুন সংস্করণ এলে নিশ্চয়ই প্রোডাকশন ঠিক করে নেওয়া হবে। তাছাড়া টাইপো সমস্যা ছিল বেশ কয়েক জায়গায়।
বই: তিন ডাহুক লেখক: সালমান হক প্রকাশনী: বাতিঘর প্রচ্ছদ: ডিলান মুদ্রিত মূল্য: ২৬০ টাকা পৃষ্ঠা: ২৫৬ জনরা: পুলিশ প্রসিডিওরাল/ সাইকো থ্রিলার
রেটিং:৪/৫
[স্পয়লার]
এপর্যন্ত যতোগুলো সাইকো থ্রিলার পড়েছি সবগুলোতেই সাইকো তদন্ত দলের ভিতেরই ছিল।
বাংলাতে লেখা মৌলিক সিরিয়াল কিলার/সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের মধ্যে নিঃসন্দেহে উপরের সারিতে থাকবে এই বই। কিলারের মনস্তত্ত্বকে সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সাইকো কিলিং এরও যে মোটিভ থাকে, সেটা অযৌক্তিক হলেও, সেটা একটা ভালো প্লটের মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে। দুইটা ছোট সাবপ্লটও পাশাপাশি রাখা হয়েছে, যেটাতে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম আর পুলিশ প্রসিডিউরালের ছাপ রয়েছে। তবে সাবপ্লটগুলো মূল প্লটের সাথে কাকতালীয়ভাবে মিলিয়ে দেয়া হয় নি, এটা ভালো লেগেছে। এন্ডিংএ কিছু ঝামেলা আছে। টুইস্টটা ভালো ছিল, তবে যেভাবে কিলার ধরা পড়ে সেটা অযৌক্তিক। এত সতর্ক একজন খুনী পুলিশ পোস্টে ধরা খাবে এ কেমন কথা? এছাড়াও রাহাত আজিম কিভাবে কিলারকে খুঁজে বের করে প্রথমে সেটার যুক্তি ঠুনকো লেগেছে। তবে চূড়ান্ত এন্ডিংটা প্রচণ্ড gritty ছিল, no scope for sunshine. এটাই পারফেক্ট এন্ডিং লাগলো। PR: 7/10
এতোদিন যাবৎ সালমান হক কে একজন দক্ষ অনুবাদক হিসেবে জেনে এসেছি। উনার কিছু মৌলিক বই-ও আছে তারমধ্যে তিনডাহুক একটি। বইটি একটা সিরিয়াল কিলারের এক আখ্যান নিয়ে লেখা। প্লট টা বেশ উপভোগ করার মতো ছিলো। হত্যা, রহস্য, তদন্ত, হিংসে, ঘৃণা কিংবা কাঁদা ছোড়াছুড়ি নিয়ে এক অনবদ্য মিশেল আছে এতে। মৌলিক থ্রিলার হিসেবে বেশ সফল-ই বলা যায় বইটিকে।