Jump to ratings and reviews
Rate this book

সেই অজানার খোঁজে

Rate this book

292 pages, Hardcover

First published April 1, 1957

5 people are currently reading
86 people want to read

About the author

Ashutosh Mukhopadhyay

72 books38 followers
Ashutosh Mukhopadhyay (Bengali: আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, anglicised spelling of surname: Mukherjee ) was one of the most prominent writers of modern Bengali literature.

He was born on September 7, 1920 in Bajrajogini, Dacca (now Dhaka) as the fifth of ten children of a Bengali Brahmin couple, Paresh Chandra Mukhopadhyay and Tarubala Devi. Mukhopadyay graduated in commerce from Hooghly Mohsin College, then affiliated with the University of Calcutta. His first story was Nurse Mitra, published in the newspaper Basumati, which was later made into major movies (Deep Jwele Jai in Bengali and Khamoshi in Hindi). Bollywood films like Safar (1970) and Bemisal were also made from his novels.

He died on May 4, 1989.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
20 (46%)
4 stars
20 (46%)
3 stars
2 (4%)
2 stars
1 (2%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 13 of 13 reviews
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
February 7, 2021
'আচ্ছা! আজ পর্যন্ত এমন কোন মানুষ দেখেছেন, যে প্রাণের আনন্দ থেকে বলে পরম শান্তিতে আছি, কোন খেদ নেই, কোন ক্ষোভ নেই দু:খ জমা দেবার মতো, শোক জমা দেবার মতো কোন আশ্রয়ের দরকার নেই, দেখেছেন এমন কাউকে?'

প্রশ্নটা আমার নয়, কালীকিংকর অবধূতের। আসলে পরম শান্তিতে পৃথিবীর কেউ কোথাও নেই, দু:খ জমা দেবার মতো বা শোক দূরীভূত করার জন্য বা বিপদকে কাটানোর জন্য আমাদের কাউকে না কাউকে অথবা কোন কিছু একটার প্রয়োজন হয়। আমরা বাস্তবে সে সবের সমাধান না পেলে সমাধান খুঁজি অলৌকিকে আর এভাবেই মানুষের বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছে (নাকি মানুষই তৈরি করেছে?) 'গডম্যান' নামক চরিত্রদের। অনেকে আছে সুযোগসন্ধানী, মানুষের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে লুটেপুটে খায় আবার কেউ কেউ আছেন সত্যিকারের সাহায্যকারী, মানুষের কল্যাণকামী। আর যারা সত্যিকার অর্থেই মানুষের কল্যাণপ্রত্যাশী, তারা অতি অবশ্যই বিনয়ী। আর সেজন্যই কালীকিংকর অবধূত নি:সংকোচে বলতে পারেন, এই যে পৃথিবী জুড়ে এতো ঘটনা... কে সাজায়? কে ঘটায়? কেন ঘটায়? কিভাবে ঘটায়? বিনা কারণে তো কিছুই ঘটে না। সেসব দেখে দেখে উপলব্ধি করি, কিন্তু কোন জবাব পাই না। আমি খুঁজি। আমি খুঁজে বেড়াই। ঈশ্বর আছে কি নেই, আমি জানি না।

কালীকিংকর অবধূত ঈশ্বরের খোজে ব্যস্ত থাকলেও সাধারণ মানুষ তা মানবে কেন? অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, মানুষকে বুঝা ও পড়তে পারার ক্ষমতা, ঔষধি বিদ্যায় পারদর্শী, কিছুটা ভোগী, কিছুটা সংসারী, ব্যতিক্রম চরিত্রের এই গৃহী সাধুবাবাটির সাথে লেখকের পরিচয় কিছুট আকস্মিকভাবেই। কিছু ব্যক্তিগত দু:খের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন লেখক ও তার পরিবার। প্রথম পরিচয়ে লেখকের মাঝে সাধুর প্রতি কিছুটা নিরাসক্ত ভাব থাকলেও ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হোন তার প্রতি। না, সাধুবাবার কেরামতির জন্য নয় বরং মানব চরিত্র বুঝার সুবিধার্থে। লেখকের বর্ণনায় মূর্ত হয়ে উঠেছেন অবধূত। প্রাঞ্জল ব্যবহার, তীক্ষ্ণধী আর ব্যক্তিত্বের গুণে ক্রমেই হয়ে উঠেছেন লেখকের প্রিয়পাত্র। 'সেই অজানার খোঁজে' বইটির পরতে পরতে উঠে এসেছে নানান ঘটনা, সাধুর অতীত ইতিহাস আর ঈশ্বরকে খোঁজার ব্যাকুলতা।

এক কথায় দারুণ!
Profile Image for Tiyas.
449 reviews126 followers
September 27, 2024
তারানাথ জ্যোতিষার্ণব বাদে অন্য কোনো কাল্পনিক সিদ্ধপুরুষের সাথে দুদণ্ড বসে গল্প করবার বাসনা জাগেনি কোনোদিনও। এই বইয়ের কল্যাণে সেই শ্রদ্ধামিশ্রিত ভালোবাসায় ভাগ বসালেন কালীকিংকর অবধূত। হাতে তুলে দিলেন তার নির্মল পৃথিবীর আশ্চর্য চাবিকাঠি। এই পৃথিবীর মূলে কোনো অলৌকিক কারচুপি নেই। নেই কোনো সূক্ষ্ম দৈবক্রিয়ার প্রকোপ। এই জগতের পরিসর, গডম্যান পরিচয়ে, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও লোক ঠকানোর পসার থেকে শতহস্তে দূরে।

থাকার মধ্যে, কেবল মানবিকতার আশ্রয়ে ঈশ্বর অন্বেষণ, তকমা বর্জিত চিরন্তন চাহিদা, ও বিশ্বাস তথা অনুসন্ধানের সহজ সহাবস্থান। সাথে, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জটিল সারল্য ন্যায় কিছু চরিত্রেরা, যাদের প্রতি ভরসা রাখতে মন চায়। সবটাই কাল্পনিক জেনেও। এছাড়াও, লেখকের প্রতি ঈর্ষা জন্মায়। হোক না বইয়ের পাতায় কেবল। তবুও তো তারই ট্রেনের কামরায় উঠে আসেন কালীকিংকর অবধূত। বাড়িয়ে দেন বন্ধুত্বের সুন্দর হাত। এত সহজ, এত মিষ্ট অভিজ্ঞতাগুলো স্রেফ কলমের খোঁচায় জাগিয়ে তোলা কি সত্যিই সম্ভব?

হয়তো উপন্যাস হিসেবে সর্বকালের সেরা দশের মধ্যে এই বইকে আমি রাখব না। দুই-খন্ডে বিভক্ত হওয়ার দরুন, দ্বিতীয় ভাগে অনেকাংশেই পুনরাবৃত্তির আশ্রয় নিয়েছেন লেখক। যা প্রকাশকালে, পড়বার ক্ষেত্রে উপযোগী হলেও, একত্রে পড়তে গিয়ে ব্যাঘাত ঘটায়। তবুও এই যে একগুচ্ছ অকৃত্তিম ভালো লাগা সঞ্চিত হয়ে রইলো। এর দাম কি কেবল সাহিত্যের দাড়িপাল্লায় মাপা যায়? মন জানে, ওসব করতে যাওয়া বৃথা। তাই রিভিউ থাক। নতুন বছরের প্রাক-লগ্নে এসব বইয়ের সান্নিধ্যে, মন ভালো হয়।

এই আমার সত্য।
আর এই সত্যের মূলেই অগ্নিদীপ্ত সেই অমোঘ প্রশ্নগুচ্ছ, যাদের সান্নিধ্যে রাতের অজানা আকাশে মিলিয়ে যাওয়াই যায়...

'কে করে? কেন করে? কে ঘটায়? কেন ঘটায়?'

(৪/৫ || নভেম্বর-ডিসেম্বর, ২০২৩)
Profile Image for Ësrât .
515 reviews85 followers
September 4, 2022
তান্ত্রিক আবার সে না কি গৃহবাসী!তার আবার একজন রীতিমতো বিবাহিত স্ত্রী ও আছেন অথচ তান্ত্রিকদের বলে সাধনার জন্য ভৈরবী থাকে, কিন্তু এ যে দস্তুর মত সংসারী কবিরাজী করা সাধক যে মায়ার টান কাটাতে বারবারই গৃহ ছেড়ে শশ্মানবাসী হয়েছেন,অজস্র মানুষ তাকে ঈশ্বরের দরজা দিলেও নিজেই সবসময়ই খুঁজেছেন সেই অসীম শক্তির উৎস কে,যার মুখে একটা প্রশ্নই ঘুরেফিরে এসেছে কে এই ঘটনা সাজায় ঘটায় ,কার সবকিছুতেই এমন নিপুণ কারিগরি,কে বারবার কালিকিংকর অবধূতকে টেনে নিয়ে যায় ঘটনার অকুস্থলে?আর কার উপরেই ভরসা করে তার দিব‍্যাঙ্গনা স্ত্রী কল‍্যানী স্মিতমুখে সারাজীবন এক দিব‍্যশক্তির আধার হয়ে আলো ছড়িয়েছেন?!

গৃহবাসী তান্ত্রিকের মধ্যে তারানাথ আমাদের সবারই মনের মনিকোঠায় এমনভাবেই ভাস্বর বোধহয় তার জায়গা কেউ নিতে পারবে না আমার এই বিশ্বাস ছিল মাত্র সাতদিন আগেই, মধু সুন্দরী দেবীর কৃপায় অসাধ‍্য সাধন করা তারানাথকে আমার কাছে সবসময়ই দিব‍্য পুরুষ লেগেছে,তার জায়গা অন‍্য কেউ নিতে পারে এ আমার কল্পনাতীত ছিল!

নিতান্তই কৌতুহল বশে বইটা হাতে নিয়ে আমার এই কয়দিনের এত জঘন্য সময়সূচির ভেতর থেকে ও একটা নির্মল আনন্দের খোরাক হয়েছে,হয়ত অনেকের কাছে তারানাথের মত অবধূতকে খাসা লাগবে না কিন্তু আমার কাছে কালীকিংকর আর কল‍্যানীর এই গল্পগাথা তোফাই লেগেছে

তিনশো সত্তর পৃষ্ঠার দুই খন্ডের বইটা সময় পেলে পড়ে ফেলতেই পারেন যদি আপনি এই ধরনের বই পছন্দ করে থাকেন

রেটিং 🌠🌠🌠🌠.৭৫
৮/৭/২০২০
Profile Image for Prithibi.
49 reviews3 followers
November 29, 2025
বইটি এক গৃহী তান্ত্রিক ও চিকিৎসকের গল্প, যার মন এমন কাউকে খুঁজছেন যে এই জগতের নাটকগুলোকে গেঁথে সাজাচ্ছেন।
লেখকের লেখার গাঁথুনি বেশ ভালো !পুরোটা সময় আমাকে আকর্ষণ করে রেখেছিল!
প্রথম খণ্ডের থেকে দ্বিতীয় খণ্ড বেশ ভালো ছিল! প্রথম খণ্ড আমার কাছে মনে হয়েছে কিছুটা বাংলা সিরিয়ালের মতো , যেখানে এক তান্ত্রিক অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়ে, মানুষের ভাগ্য গণনা করে, সেই ক্রেডিট নিজে নিতে চান না। কিন্তু দ্বিতীয় খণ্ড অনেক ঘটনার সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়ে তৈরি করা।
বইটি পড়ে মনে হল বইটি “লো অফ এট্ট্রাকশন “ এর উপর বেস করে লিখা। এইটা মনের এক জাগ্রত শক্তি যেইটা অনেক বছর চর্চা করে তৈরি হয়।আমি নিজেও এই শক্তির চর্চা কিছুদিন করেছি। তান্ত্রিক অবধূত জি ও তার স্ত্রী কল্যানির সেই শক্তি আমার কাছে সেইরকম মনে হলো। বইটা পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে। প্রথম খণ্ড না লিখলেও চলত আমার মনে হয়।
Profile Image for Aritra De.
59 reviews6 followers
October 3, 2024
আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সেরা উপন্যাস হিসাবে লোকে 'সোনার হরিণ নেই'য়ের উল্লেখ করেন। আমার কাছে এখনও অব্দি পড়া এটাই সেরা।
Profile Image for Titu Acharjee.
258 reviews34 followers
August 24, 2020
অন্যরকম এক তান্ত্রিকের গল্প। যে তান্ত্রিক রীতিমতো সংসারী,ভোগী....যে কোনো অলৌকিক কোনো গল্প বা কার্যকলাপ ও ঘটায় না। বরং একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যায় সারা জীবন ধরে, "কে করে? কে ঘটায়?"

কালীকিংকর অবধুত নামের এই তান্ত্রিকের সাথেসাথে সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে কখন যে লোকটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম,ঠেরই পাইনি। এই ভালোবাসার টানেই, একটানা দুই খণ্ড পড়ে শেষ করেছি।

কালীকিংকর তান্ত্রিকের সাথে অন্যরকম,একটু বেশিই অন্যরকম একটা ভ্রমণ হলো। সাথে যোগ হয়েছিল, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সহজ, সাবলীল লেখনী। সব মিলিয়ে,সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে।
Profile Image for NILOY BISWAS.
1 review
January 11, 2023
ভূমিকা -
যেকোনো রহস্যময় চরিত্র বরাবর ই আকৃষ্ট করে আমাকে। ঠিক সেইরকমই এও যেনো এক এক অদ্ভুত আকর্ষণীয় জীবনের আখ্যান। পড়তে শুরু করলে বুঁদ হয়ে যেতে হয় চরিত্রগুলোতে। আধ্যাত্মিকতার সাথে সংসারী মানসিকতার এক আশ্চর্য মিশেল রয়েছে এই উপন্যাসটিতে। তন্ত্র-মন্ত্র-সাধন-সাধনার ধোঁয়াশার আড়ালে ঈশ্বরকে খোঁজার,ঈশ্বরকে জানার ব্যাকুলতাই এই বইয়ের নাড়ী। সুখপাঠ্য,সাবলীল। লেখক খুব সাবলীল ভাবেই এর ব্যাখা করেছেন,
"অনেকে চোখ বুজে বিশ্বাস করে ঈশ্বর আছে। অনেকে চোখ বুজে অবিশ্বাস করে, ঈশ্বর নেই। ঈশ্বর আছে কি নেই - এই সন্ধান কত জন করে?"

সারসংক্ষেপ -
তাহলে শুরু করি অন্যরকম এক তান্ত্রিকের গল্প। যে তান্ত্রিক রীতিমতো সংসারী,ভোগী.... যে কোনো অলৌকিক কোনো গল্প বা কার্যকলাপ ও ঘটায় না। বরং একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই থাকে সারা জীবন ধরে, "কে করে? কে ঘটায়?"
একদম শুরুতে দেখা যায় আমাদের মতোই লেখক ওই অর্ধেক নাস্তিক, ঈশ্বর এ তার যেনো বিশ্বাস নেই, স্ত্রী-কন্যা কে নিয়ে কলকাতার দম বন্ধ করা পরিবেশ থেকে মুক্তি চেয়ে হরিদ্বারে ঘুরতে যাওয়া ঠিক করলেন এবং সেখানে অগ্রিম কোনো থাকার ব্যবস্থা না করেই যাত্রা নিশ্চিত হয়ে গেলো শুধুমাত্র রামকৃষ্ণ মিশনের বড়ো মহারাজের দৌলতে, নইলে কোনো হোটেলে ঠাঁই নেবেন। ট্রেনের এই যাত্রাপথেই লেখকের পরিচয় হয় এই তান্ত্রিকের সাথে, নাম - কালীকিঙ্কর অবধূত। বলাবাহুল্য, এই অপরিচিত তান্ত্রিক কে যাত্রাসঙ্গী হিসেবে পেয়ে লেখক ও তার পরিবার কেউই খুশি হননি প্রথমেই।
যেনো নাটকীয় ভাবেই তাদের জীবনে আবির্ভুত হলেন অবধূত, লেখক তাঁর যে বর্ণনা বর্ণনা দিয়েছেন তাতে সাধারন তান্ত্রিকের সাথে তেমন পার্থক্য নেই, তবে তিনি সকলকে সম্মান করতে জানেন, ট্রেনের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ভিতরে লেখকের স্ত্রী-কন্যাকে দেখেই তাদের সম্মানে তিনি কোনো ভক্ত কে সিগারেট ফেলে দিতে বলেন। কিন্তু অবধূতের পরোপকারী, অমায়িক এবং বিলাসী মনোভাবের পরিচয় লেখক ক্রমশ পেতেই থাকেন। লেখক স্বীকার করতে দ্বিধা করেননি যে অবধূতের হাস্য-কৌতুক এবং বিবেচনা বোধ প্রবল। এরপর ট্রেন ছাড়ার আগের মুহূর্ত অব্দি অবধুতের ভক্ত আর প্রনামি দেখে লেখক ও পরিবার হতচকিতই হয়েছেন।
ট্রেন ছাড়ার পর লেখকের সাথে কথাবার্তা চলতে থাকে অবধূতের, সেখানে বোঝা যায় তার মধ্যে কোনো সবজান্তা ভাব নেই। অবধূত সরস বচন-পটু তো অবশ্যই, কিন্তু তিনি যখন কিছু উপলব্ধি করেন মনে হয় তাঁর চোখ যেন কথা বলছে, লেখকের মতে এতেই তার ভক্তরা তাকে দেখে অভিভূত হয়, আর কেনোই বা হবে না তার উপলব্ধি তো ভুল প্রমাণিত হয়নি। এরপর লেখক, তার পরিবার ও অবধূতের পরিচয় বাড়তে থাকে... এই নিয়েই প্রথম খন্ড।

দ্বিতীয় খণ্ডে লেখক জানতে পারেন অবধূতের অতীত, পরিচিত হন তার স্ত্রী এর সাথে কালক্রমে তার অতীতের সাথে...(এগুলি বিশেষ বলবো না, শব্দ সংখ্যা কম আর পড়লে বেশি মজা পাবেন) লেখক যেনো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন কি না হয় গুরুভক্তি আর গভীর বিশ্বাসে। এরপর হঠাৎই একদিন হারিয়ে যান অবধূত ও তার স্ত্রী, কেউই জানতে পারেন না তাদের কথা।

উপসংহার -
তান্ত্রিক সে না কি আবার গৃহবাসী! তার আবার একজন রীতিমতো বিবাহিতা স্ত্রী ও আছেন অথচ তান্ত্রিকদের বলে সাধনার জন্য ভৈরবী থাকে, কিন্তু এ যে দস্তুর মত সংসারী কবিরাজী করা সাধক যে মায়ার টান কাটাতে বারবারই গৃহ ছেড়ে শ্মশানবাসী হয়েছেন, অজস্র মানুষ তাকে ঈশ্বরের দরজা দিলেও নিজেই সবসময়ই খুঁজেছেন সেই অসীম শক্তির উৎস কে, যার মুখে একটা প্রশ্নই ঘুরেফিরে এসেছে কে এই ঘটনা সাজায় ঘটায়, কার সবকিছুতেই এমন নিপুণ কারিগরি, কে বারবার কালীকিঙ্কর অবধূতকে টেনে নিয়ে যায় ঘটনার অকুলস্থলে? আর কার উপরেই ভরসা করে তার দিব‍্যাঙ্গনা স্ত্রী কল‍্যানী স্মিতমুখে সারাজীবন এক দিব‍্যশক্তির আধার হয়ে আলো ছড়িয়েছেন?!
আর এভাবেই মানুষের বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছে (নাকি মানুষই তৈরি করেছে?) 'গডম্যান' নামক চরিত্রদের। অনেকে আছে সুযোগসন্ধানী, মানুষের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে লুটেপুটে খায় আবার কেউ কেউ আছেন সত্যিকারের সাহায্যকারী, মানুষের কল্যাণকামী। আর যারা সত্যিকার অর্থেই মানুষের কল্যাণপ্রত্যাশী, তারা অতি অবশ্যই বিনয়ী। আর সেজন্যই কালীকিঙ্কর অবধূত নি:সংকোচে বলতে পারেন, এই যে পৃথিবী জুড়ে এতো ঘটনা... কে সাজায়? কে ঘটায়? কেনো ঘটায়? কিভাবে ঘটায়? বিনা কারণে তো কিছুই ঘটে না। সেসব দেখে দেখে উপলব্ধি করি, কিন্তু কোন জবাব পাই না। আমি খুঁজি। আমি খুঁজে বেড়াই। ঈশ্বর আছে কি নেই, আমি জানি না।
কালীকিংকর অবধূত ঈশ্বরের খোজে ব্যস্ত থাকলেও সাধারণ মানুষ তা মানবে কেন? অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, মানুষকে বোঝা ও পড়তে পারার ক্ষমতা, ঔষধি বিদ্যায় পারদর্শী, কিছুটা ভোগী, কিছুটা সংসারী, ব্যতিক্রম চরিত্রের এই গৃহী সাধুবাবাটির সাথে লেখকের পরিচয় কিছুট আকস্মিকভাবেই। কিছু ব্যক্তিগত দু:খের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন লেখক ও তার পরিবার। প্রথম পরিচয়ে লেখকের মাঝে সাধুর প্রতি কিছুটা নিরাসক্ত ভাব থাকলেও ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হোন তার প্রতি। না, সাধুবাবার কেরামতির জন্য নয় বরং মানব চরিত্র বুঝার সুবিধার্থে। লেখকের বর্ণনায় মূর্ত হয়ে উঠেছেন অবধূত। প্রাঞ্জল ব্যবহার, তীক্ষ্ণধী আর ব্যক্তিত্বের গুণে ক্রমেই হয়ে উঠেছেন লেখকের প্রিয়পাত্র। 'সেই অজানার খোঁজে' বইটির পরতে পরতে উঠে এসেছে নানান ঘটনা, সাধুর অতীত ইতিহাস আর ঈশ্বরকে খোঁজার ব্যাকুলতা।

আমার কথা -
গৃহবাসী তান্ত্রিকের মধ্যে তারানাথ আমাদের সবারই মনের মনিকোঠায় এমনভাবেই ভাস্বর বোধহয় তার জায়গা কেউ নিতে পারবে না আমার এই বিশ্বাস ছিল লকডাউন এর আগেই, মধু সুন্দরী দেবীর কৃপায় অসাধ‍্য সাধন করা তারানাথকে আমার কাছে সবসময়ই দিব‍্য পুরুষ লেগেছে,তার জায়গা অন‍্য কেউ নিতে পারে এ আমার কল্পনাতীত ছিল!
নিতান্তই কৌতুহল বশে বইটা হাতে নিয়ে আমার এই কয়দিনের এত জঘন্য সময়সূচির ভেতর থেকে ও একটা নির্মল আনন্দের খোরাক হয়েছে,হয়ত অনেকের কাছে তারানাথের মত অবধূতকে খাসা লাগবে না কিন্তু আমার কাছে কালীকিংকর আর কল‍্যানীর এই গল্পগাথা তোফাই লেগেছে।

কালীকিংকর অবধূত নামের এই তান্ত্রিকের সাথেসাথে সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে কখন যে লোকটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম, সেটা আজ অব্দি বুঝতে পারিনি। এই ভালোবাসার টানেই, একটানা দুই খণ্ড পড়ে শেষ করেছি।

সবশেষে এটুকুই বলবো কালীকিংকর অবধূতের সাথে অন্যরকম, একটু বেশিই অন্যরকম একটা ভ্রমণ হলো। সাথে যোগ হয়েছিল, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সহজ, সাবলীল লেখনী। সব মিলিয়ে,সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে।
Profile Image for Joynab Rimu.
75 reviews115 followers
September 26, 2019
"অনেকে চোখ বুজে বিশ্বাস করে ঈশ্বর আছে। অনেকে চোখ বুজে অবিশ্বাস করে,ঈশ্বর নেই।ঈশ্বর আছে কি নেই --- এই সন্ধান কত জন করে? "

তন্ত্র-মন্ত্র-সাধন-সাধনার ধোঁয়াশার আড়ালে ঈশ্বরকে খোঁজার,ঈশ্বরকে জানার ব্যাকুলতাই এই বইয়ের নাড়ী। সুখপাঠ্য,সাবলীল।
Profile Image for Arpan Kumar Basak.
22 reviews
October 12, 2025
সেই অজানার খোঁজে - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এর পড়া এটা আমার প্রথম বই।

দর্শন, আধ্যাত্মিকতার সাথে সম্পর্কিত বই পড়তে আমার বেশ ভালো লাগে। দেবযান পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। সেই কারণেই এই বইটা তুলে নেওয়া।

উপন্যাসের মূল উক্তি - কে করে? কেন করে? কে ঘটে? কেন ঘটায়?

গল্পের শুরু লেখকের সপরিবারে হরিদ্বার যাত্রার মধ্যে দিয়ে। ট্রেনে উঠেই লেখকের দেখা হয় 'godman' কালীকিঙ্কর অবধূতের সাথে। সাধু, জ্যোতিষ - এরকম মানুষদের প্রতি লেখকের একপ্রকার ঘৃণাই বলা যায়। কিন্তু নিজ ব্যবহারের গুণে কালীকিঙ্কর অবধূত ধীরে ধীরে লেখক ও তার পরিবারের মনে নিজের জায়গা বানিয়ে নেয়। লেখকের যেটা সবচেয়ে ভালো লাগে সেটা হল এই মানুষটার কোনরকম অহংকার নেই, ভন্ডামি নেই, নেই মিথ্যা অলৌকিক ক্ষমতার প্রদর্শন। কালীকিঙ্কর যা কিছু অসাধ্য সাধন করেন তার সবকিছুরই কৃতিত্ব তিনি দেন ঈশ্বরকে, ঊর্ধ্বতন শক্তিকে । আর এসবের মাঝেই বারে বারে সেই একই প্রশ্ন উঠে আসে আর নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে তার উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়।

এরপর আমরা চলে যাই অবধূতের অতীতে। বক্রেশ্বরে কঙ্কালিমাল ভৈরব ও ভৈরবী মায়ের সান্নিধ্যে থাকা তার জীবনের কয়েকটা বছর। সেই সময়ই তার জীবনে আসে কল্যাণী। তার সাথে দেখা হওয়ার চার বছর পর দুজনের বিয়ে হয়।

শক্তিশালী নারী চরিত্র থাকলে সেই উপন্যাস পড়তে আমার ভালো লাগে। দেবযানেও যতীনের চেয়ে পুষ্প উন্নত চরিত্র ছিল। এখানেও তাই। পুরো উপন্যাস জুড়েই মাতাজী অর্থাৎ কল্যাণীর মহিমা ও চারিত্রিক উৎকর্ষ মনকে ভরিয়ে তোলে।

লেখক যখন প্রথম কল্যাণীকে দেখেন তখন অবধূতের প্রতি তার রাগ হয় কারণ ওনার বয়স প্রায় ষাট কিন্তু তার স্ত্রীর বয়স যে বড়জোর বত্রিশ। ভুল ভাঙতে খুব বেশি সময় লাগেনা যখন তিনি জানতে পারেন কল্যাণীর বয়স পঞ্চাশ। তার মধ্যে এমন কিছু আছে যা তার নিজের স্বামীরও অজানা। সেকারনেই তার এই চিরস্থায়ী যৌবন। যোগশক্তি যাকে বলে।

স্বামী স্ত্রী দুজন দুজনের পরিপূরক। এরকম ভালোবাসায় ভরা দম্পতিকে কোনো উপন্যাসে দেখলে মন ভালো হওয়ারই কথা, অন্তত আমার ক্ষেত্রে তাই ! তাদের মধ্যের ভালোবাসা সহজ, আড়ম্বরহীন, সাবলীল। উপন্যাসের একটা স্মরণীয় মুহূর্ত মাতাজীর অনন্য কালীপূজা। তার কোনো দীপ ছাড়াই নিজে হাতে আরতি, শঙ্খমুদ্রায় ধ্বনি সত্যিই চোখের সামনে ফুটে ওঠে।

বিভিন্ন সময়ে অবধূতের কাছে নানা মানুষ আসে সাহায্য চেয়ে, আর তার সমাধান শেষে তিনি নিজের কৃতিত্ব সম্পূর্ণ অস্বীকার করে একই প্রশ্ন করে চলেন, কে করে? কেন করে? কে ঘটে? কেন ঘটায়?


পুরো উপন্যাসটা একজন তান্ত্রিক ও তার স্ত্রীকে নিয়ে কিন্তু কোথাও অযাচিত তন্ত্রক্রিয়া, মনগড়া মন্ত্রের প্রয়োগ নেই। তাই সবটাই প্রাকৃতিক মনে হয়, বলপূর্বক নয়।

উপন্যাসটা আমি আগে পড়েছি, আর ভূমিকা পড়েছি পরে। এই সিদ্ধান্তটা আমার একদম সঠিক ছিল। শেষে এটা জেনে আশাহত হয়েছি ঠিকই যে পুরোটাই লেখকের মনঃপুত গল্প কিন্তু তাও, আগেই যদি এটা জেনে ফেলতাম তাহলে আমার ক্ষেত্রে, অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন হত।

সবশেষে এটাই বলবার, কালীকিঙ্কর অবধূত একজন মনে রাখার মত চরিত্র। আর কল্যাণী এখন বাংলা সাহিত্যে আমার প্রিয় নারী চরিত্রগুলোর মধ্যে একটা।

লেখকের ভাষা খুব সহজ সরল। উপন্যাসে একটা দারুণ গতি আছে, একদম বোর করেনা। লেখকের অন্য বইগুলোও পড়ার ইচ্ছা রইল।

©অর্পণ কুমার বসাক
Profile Image for Tasfia Promy .
96 reviews30 followers
December 31, 2024
সবাই ২৪ এর নানা বই এর নাম দিচ্ছে।




এ বছর আমার পড়া বই কম।




এর মধ্যে সবচাইতে ভালো লেগেছিল আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সেই অজানার খোঁজে। গৃহবাসী এক তান্ত্রিক। কালীকিংকর অবধূত। সে বা তার ভক্ত হয়ে পড়েন গল্প কথক। এক অজানা আর অমোঘ টান তৈরি হয় দু পরিবারের। কালীকিংকর স্বয়ং বা তার পত্নী। তাদের দক্ষতা বা মেধা বা চিন্তা একেবারেই অন্য পর্যায়ের। সাধারণ মানুষের চিন্তা যেখানে শেষ, ভাবনা তাদের সেখান থেকে শুরু। এই গৃহী-যোগী দম্পত্তির খোঁজ এক অজানার। যে অজানার খোঁজ জানা বা জানবার কথা চিন্তা করা আমাদের মত সাধারণের জন্য না।


সেই অজানার খোঁজ করতে থাকবেন লেখকের সাথে পাঠকও। কিন্তু সেই খোঁজ মিলবে কি? আমরা খুব সহজেই হয়তো হাল ছেড়ে দেব, হয়তো মাঝ পথে বন্ধুর পথ দেখে পিছু হটব। কিন্তু অবধূত কি পিছু হটেছিলেন? না খোঁজ পেয়েছিলেন সেই অজানার?


এত সুন্দর লেখনী, প্রতি শব্দে সম্মোহনী শক্তি আছে। বই শেষ না করে উঠতে পারবেন না। দু খন্ড শেষ করে মনে হবে, এভাবে শেষ হতে হল? প্রতিটা চরিত্র এত সুন্দর করে স্থান পেয়েছে এ গল্পে, যেন আমার রোজকার জীবনে দেখা পাশের বাসার কেউ। তারানাথ তান্ত্রিকের কথা অনেকে হয়তো বলবেন, কিন্তু তারানাথের চাইতে অবধূতের তফাত অনেক। না কম? জানতে হলে বইটি পড়ুন। একটু খারাপ তো লাগবেই না, অতৃপ্তি রবে, কেন আরো আগে বই পড়েননি বলে। সেই অজানার খোঁজ যদি আমরা সবাই করতাম, অন্তত মানুষ হবার পথে থাকতাম।
Profile Image for Debayan Koley.
39 reviews3 followers
July 23, 2020
এক অদ্ভুত আকর্ষণীয় জীবনের আখ্যান। পড়তে শুরু করলে বুঁদ হয়ে যেতে হয় চরিত্রগুলোতে। আধ্যাত্মিকতার সাথে সংসারী মানসিকতার এক আশ্চর্য মিশেল
Profile Image for Mousumi Saha.
4 reviews
October 5, 2023
অসাধারণ একটি উপন্যাস। না পড়ে থাকলে অবশ্যই পড়ুন।
Profile Image for Gain Manik.
335 reviews4 followers
June 15, 2024
আজকেই পড়লাম। শেষটা সুন্দর হয়েছে। এই কাহিনী কি সত্য না অনুমিত???
Displaying 1 - 13 of 13 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.