পর্নোগ্রাফি ক্ষতিকর। কারণ? এটায় আসক্তি চলে আসতে পারে, জাস্ট লাইক এনি আদার ড্রাগস। অথবা এটা মাদক থেকেও বেশি ভয়ানক, কারণ উত্তাল যৌনতায় ভরপুর সেসব ভিডিও দেখার পর লোকে পার্টনারের কাছ থেকে অসম্ভব দাবী করে বসে। বিকৃত যৌনচর্চায় আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে এবং বেশিরভাগ পর্নোগ্রাফিই ফিমেইল হ্যারাসমেন্ট প্রোমোট করে, এজন্য নারীবাদীরা এটার বিরুদ্ধে সবসময়ই দাঁড়িয়েছে। থ্যাংক্স টু আ বাঞ্চ অফ টেড টক ভিডিওস, ক্লাস এইট নাইন থেকেই পর্নোগ্রাফির সাইড ইফেক্ট নিয়ে বেশ ভালো ধারণা ছিল আমার। তাই পর্নোগ্রাফি কখনোই তেমন একটা জেঁকে ধরেনি আমাকে।
সেসব ঠিক আছে, কিন্তু মাস্টারবেশন নিয়ে খুব আজেবাজে লেখা এ বইয়ে। যৌন দুর্বলতা এক ধরণের মানসিক দুর্বলতা। আমাদের সমাজে যেভাবে মাস্টারবেশন নিয়ে উদ্ভট উদ্ভট কথা বলা হয়, যেভাবে এটাকে চরম ক্ষতিকর হিসেবে তোলে ধরা হয়(আসলে কিন্তু মোটেই ক্ষতিকর নয়)…তাতে অনেকে যুবাবয়সে গিয়ে মনে করে কিশোর বয়সেই তো নিজের সব ক্ষয় করে ফেলেছি!(আজিব লোকজন, তবে তাদেরকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমার নিজের কানেই অনেকে বলেছে, আ ড্রপ অফ স্পার্ম ইকুয়েলস টু সেভেন্টি ড্রপস অফ ব্লাড) আর এই মানসিক ভীতি, আর ভ্রান্ত ধারণার কারণেই রাস্তার দেয়ালে সাঁটানো নানা বিজ্ঞাপনের অঙ্গীকারও অনেকের ক্ষেত্রে ভ্রান্ত হয়ে দাঁড়ায়। সেক্স এডুকেশন যে কতোটা প্রয়োজনীয়, তা লোকজনের কবে বোধে ঢুকবে তা বলা মুশকিল। ইভেন, একসময় তো স্যানিটারি প্যাডও কাগজে মুড়িয়ে বিক্রি করা হতো। তবে বর্তমানে ফার্মেসিতে একদম সামনে রাখা হয়, উন্মুক্ত করে। সচেতনতা বাড়ছে।
ইয়া মোটা একটা রিভিউ লিখে কেটে ফেলে এই পিচ্চিটা লিখেছি, পর্নোগ্রাফি নিয়ে সচেতনতা ক্রিয়েট করছে এ বই…সেটা আমি বলবো না। কিন্তু, এটলিস্ট কিছু ছেলেমেয়ে যদি এ বই পড়ে রেগুলার পর্ন দেখা থেকে দূরে থাকে, তা-ই বা কম কিসে! যদিও যৌনতা নিয়ে ভীতি ঢুকিয়ে দেয়া কতোটা কার্যকরী সে সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে।
পুনশ্চ: হাই স্কুল/কলেজে সেক্স এডুকেশনের যারা বিরোধীতা করেন, তাদের লজিক কি জানেন তো? "আজকালকার সব পোলাপান পর্ন দেখে, এদেরকে আলাদা করে স্কুল কলেজে কিছু শেখানো দরকার নাই"। পর্ন দেখে যৌনশিক্ষা লাভ? আপগ্রেড ইওর লেভেল প্লিজ।
আর এই রিভিউতে কমেন্ট করলে আমি রিপ্লাই দিবো না। সেক্স এডুকেশন টার্মটাকে আমি ইচ্ছে করেই এনেছি, কারণ এসব বই পড়ে সেক্স নিয়ে ভাসা ভাসা একটা ধারণা নিয়ে যে এই জেনারেশন বড় হচ্ছে, তা বেশ সুবিধার ঠেকছে না আমার কাছে। আর আগেই বলেছি, পর্নোগ্রাফিকে সর্বদাই এভোয়েড করে যাওয়া উচিত। টেডটকের ভিডিওগুলো না দেখে থাকলে দেখতে পারেন। আর কি? ডোন্ট বি আফ্রেইড অফ ইওর সেক্সুয়াল ডিজেয়ার, সুস্থ স্বাভাবিক বিনোদন আর সংস্কৃতির চর্চা করলে যৌন আকাঙ্খা কখনো আপনার চিন্তাভাবনার উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিবে না। অনেকেই আমার সাথে এ বিষয়ে একমত হবেন। বরং এটাকে নিষিদ্ধ করে রেখে দিলে আরও বড় সমস্যা, নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানুষের স্বভাবতই আকর্ষণ বেশি। দ্যাটস ইট৷ এই রিভিউও লম্বা হয়ে যাচ্ছে দেখছি। গুডবাই।
আমি জাস্ট বলে বোঝাতে পারবো না এই বইটা পড়া এখনকার জেনারেশনের জন্যে ঠিক কতটা আই রিপিট "ঠিক কতটা" গুরুত্বপূর্ণ। বই যদি পড়তে নাই বা ইচ্ছে হয়, পড়ার টেবিলে ফেলে রাখুন। তবুও সংগ্রহে রাখুন। এবং আপনার বন্ধুকদেরও সাজেস্ট করে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করুন। অন্যথায়, খুব বেশিই দেরি হয়ে যাবে।
"হারাম থেকে পাওয়া সুখ অল্পেই শেষ হয়ে যায় থেকে যায় শুধু গ্লানি আর লজ্জা দিন শেষে শুধু থাকে শুন্যতা আর পাপের বোঝা সেই আমোদপ্রমোদে কী লাভ শেষমেষ যার পরিনতি জাহান্নামের শাস্তি?" –শাইখ খালিদ আর রাশিদ।
. পর্নোগ্রাফি। আমাদের সমাজে বিষয়টি একটি ট্যাবুতে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে আলোচনা করতে আমরা আজ অনেকটাই লজ্জিত এবং ভীত। যেন পর্নোগ্রাফি নিয়ে আলোচনা করলে আমাদের জাত চলে যাবে। অথচ লুকিয়ে লুকিয়ে মোবাইলে, ল্যাপটপে কিংবা PC-তে পর্নো মুভি দেখলে আমাদের জাত যায় না।
. আর আমাদের সমাজে আজ যে সকল সমস্যা খুব প্রকট আকার ধারন করেছে, সেসব সমস্যার ব্যাপারে আমাদের বেশী বেশী আলোচনা করতে হবে। এই সহজ থিওরীটা আমরা কেন জানি বুঝতে পারি না। যেদিন মসজিদের মিম্বার থেকে শুরু করে বাসার রান্নাঘর পর্যন্ত সকল স্হান থেকেই কোন সমস্যার বিরুদ্ধে সচেতনতার আওয়াজ তোলা হবে, বুঝতে হবে সেদিনই সমস্যার সমাধান অর্ধেক সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।
. যাই হোক, এবার কিছু ব্যক্তিগত বয়ান শেয়ার করি। কিছুদিন আগে অফিসের তাবলীগের এক ভাইয়ের সাথে লাঞ্চের সময় একই টেবিলে বসে খাবার সৌভাগ্য হয়েছিলো। কথায় কথায় তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কি বই পড়ছি। আমি জবাব দিলাম, "মুক্ত বাতাসের খোঁজে"। জবাব শুনে ভাই একটু ভ্রু কুঁচকালেন। আমি একটু হেসে বললাম, "নাম শুনলে মনে হয় মুক্তমনা, প্রগতিশীলদের লেখা ধর্ম বিরোধী কোন বই। আসলে তা না। এটা এমন এক বিষয়ে লেখা যা নিয়ে আমাদের সমাজে আলোচনা প্রায় হয় না বললেই চলে। আমরা ব্যাপারটাকে "নিষিদ্ধ" হিসেবে বিবেচনা করে দিনের পর দিন নীরব থেকেছি। আর এখন বিষয়টি এমন এক পর্যায়ে পৌছে গিয়েছে যে ভেতরে ভেতরে তা আজ ক্যান্সারের রূপ ধারন করেছে। আর সমাজের আবালবৃদ্ধবনিতা আজ সেই ক্যান্সারে আক্রান্ত। এ এক কঠিন সমস্যা আজ আমাদের সমাজে।" আমার কথা শুনে এবার ভাইয়ের ভ্রু সহ কপালও বেশ খানিকটা কুঁচকে গেলো। আমি আবারও হেসে জবাব দিলাম, "এই যে দেখুন আমারও একই অবস্হা। আপনাকেও সমস্যাটির কথা সরাসরি বলতে আমার সংকোচ হচ্ছে। তাই এতো বড়ো একটা ভূমিকা টেনে আলাপটাকে সহজ করতে হলো। সমস্যাটি হচ্ছে "পর্নোগ্রাফি"। আর বইটি এই পর্নোগ্রাফির ভয়াবহতা ও তার প্রতিকারের ব্যাপারে সাজেশন নিয়েই লেখা। তিনি ব্যাপারটি বুঝতে পারলেন এবং পরে আমার থেকে বইটি নিয়ে দেখতে চাইলেন।
. প্রথমে আসি বইয়ের নামকরনে। প্রথম শোনার পর আমার কলিগ ভাইয়ের মতো অনেকেই কনফিউজড হয়ে যেতে পারেন। তবে আমার কাছে নামটি খুব সুন্দর ও বিষয়বস্তুর সাথে মানানসই মনে হয়েছে।
. পর্নোগ্রাফি এক ধরনের নেশা। আর যে কোন নেশাই মানুষের মনে এক ধরনের বদ্ধতার সৃষ্টি করে। মানুষের মনে সেই নেশা ছাড়া কোন ভাবনাই আর স্হান পায়না। যেমনঃ একজন ফেন্সিডিলখোরের ফিকিরই থাকে কিভাবে সে ফেন্সিডিল জোগাড় করবে��� একজন ইয়াবাখোরের সকল ভাবনাই থাকে ইয়াবাময়। যারা হিরোইন সেবন করে তাদের মন থাকে হিরোইনময়। গাঁজার নেশায় যারা আক্রান্ত তারা সর্বদা নৌকা নিয়ে পাহাড়তলীতে যেতে ব্যস্ত। তাদের জীবন থাকে নেশা দ্রব্য দ্বারা আবদ্ধ। তাদের জীবনে মুক্ত বাতাসের কোন স্হান নেই।
. তেমনি একজন পর্নাক্রান্ত ব্যক্তির জীবনও তার নেশার ভেতর আবদ্ধ থাকে। তার চিন্তা ভাবনা সারাক্ষণ পর্ণকে ঘিরেই ঘুরপাক খেতে থাকে। নেশাক্রান্ত জীবনে পর্ন ছাড়া আর কোন কিছুকেই সে গ্রহন করতে পারে না। সে সমাজ-সংসার-পরিবার-বন্ধুজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজের নেশার পেছনে দৌড়াতে থাকে অন্ধের মতো। এ যেন জটিল-কুটিল এক আবদ্ধ জীবন।
. আর "মুক্ত বাতাসের খোঁজে" বইটি সেই আবদ্ধ জীবনে যেন এক পলক বাতাসের মতোই। একটি মানুষ যখন নিজেকে তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তখন বইটি হতে পারে তার জন্য সুস্হ্য পথের দিশা। আলোকবর্তিকা। "মুক্ত বাতাসের খোঁজে" হচ্ছে বদ্ধ ঘরে ঘুটঘুটে অমানিশার মাঝে এক বিন্দু আলোর ফুলকি।
. বইটি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম।ভাগ "অনিবার্য যত ক্ষয়"। এ ভাগে আলোচিত হয়েছে পর্নোগ্রাফি ও তার ফলাফলে হস্তমৈথুন এর নানা ক্ষতিকর দিক। আর এ বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রেফারেন্স দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট এর বিভিন্ন লিংক থেকে শুরু করে গবেষনাধর্মী বিভিন্ন গ্রন্হের।
. সবচেয়ে মজার বিষয়, যে পাশ্চাত্যে পর্নোগ্রাফি আজ ইন্ডাস্ট্রীতে পরিণত হয়ে এক মহীরূহের আকার ধারণ করেছে, সেই পাশ্চাত্যেই এর বিরুদ্ধে গবেষনা সবচেয়ে বেশী। পর্ন মুভি দেখাকে যারা ক্ষনিকের বিনোদন ভেবে সস্তির নিঃশ্বাস নেন, তাদের জন্য বইয়ের এ অংশটি হতে পারে এটম বোমা স্বরূপ।
. আমাদের জীবনে আরেকটি অভিশাপ হচ্ছে হস্তমৈথুন। মৈথুন আমাদের ক্ষনিকের আনন্দ দেয়। কিন্তু ক্ষনিকের এই আনন্দ আমাদের জীবনকে যে কিভাবে অন্ধকারে ঠেলে দিতে পারে তা আসলে আমাদের কল্পনারও অতীত। আমাদের যুব সমাজ আজ কোন কিছু না ভেবেই হস্তমৈথুনের ভয়াল গর্তে গিয়ে পড়ে যাচ্ছে।
. বইয়ের একটি চ্যাপ্টারে এই হস্তমৈথুনকে আতশ কাঁচের নীচে রেখে গবেষনা করা হয়েছে সম্পূর্ণ চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে। হস্তমৈথুন কেন ক্ষতিকর এবং এটি একজনের শারিরিক, মানসিক, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কিভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয়েছে। এ অধ্যায়টি অশেষ উপকারী।
. পর্নেগ্রাফি ও হস্তমৈথুন আসলে পারস্পরিক সম্পর্কিত। তাই পর্নোগ্রাফি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এ ব্যাপারটি চলেই আসে। আমাদের সমাজে পর্নোগ্রাফি যেমন এক মহামরি, তেমনি হস্তমৈথুনও মহারারির রূপ ধারন করেছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আমাদের সমাজে সচেতনতা তৈরীর কোন প্রচেষ্টা নেই। হস্তমৈথুনের ৫/১০ মিনিটের আনন্দ কারো জীবনে যে কি অভিশাপ ডেকে নিয়ে আসতে পারে তা আমরা চিন্তাও করতে পারি না।
. "অনিবার্য যত ক্ষয়" অংশটি আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় সেই ভয়াবহতার সাথে, যার ব্যাপারে আমরা আজ সম্পূর্ন গাফেল। আমরা যাকে উপেক্ষা করি চরম অবহেলায়, সেই ৫/১০ মিনিটের আনন্দই আমাদের জীবনে একদিন।দুঃখের কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে। ক্ষয়।হতে হতে আমাদের জীবনকে পচনশীল করে তুলতে পারে।
. দ্বিতীয় অংশ হচ্ছে "বৃত্তের বাইরে"। এ অংশে মূলত পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুনের এ নারকীয় নেশা থেকে কিভাবে নিজেকে মুক্ত করা যায়, কিভাবে এ আবদ্ধ জীবনকে পেছনে ফেলে মুক্ত বাতাসের সন্ধান করা যায়, সে ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে। আমার স্হির বিশ্বাস, আমাদের অনেকেরই এ অংশটি বিশেষ উপকারে আসবে। কারণ, বাহিরে ভালো মানুষের মুখোশ পরা আমাদের অনেকেই দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাসে আজ পর্নোগ্রাফির নেশায় নেশাতুর। কাজেই, এই অংশটি আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হবে ইনশা'আল্লাহ।
. বিভিন্ন ঘটনাকে কেইস স্টাডি হিসেবে নিয়ে তার উপর ভিত্তি করে সমাধান দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। যা বেশ অভিনব এবং উপকারী সন্দেহ নেই। পর্ণোগ্রাফির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে বৈজ্ঞানিক ও ইসলামের দৃষ্টি কোন থেকে কি কি উপায় ও পন্হা অবলম্বন করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। স্বামীর পর্নাসক্তিকে স্ত্রীদের কি করণীয় তা নিয়ে স্ত্রীদের প্রতিও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নসীহা। সর্বোপরি বইটিতে সমাজের নানা স্তরের মানুষের উপর দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। যা আমাদের জন্য অশেষ উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।
. বইটির প্রচ্ছদ, বাঁধাই, প্রিন্টিং খুবই ভালো হয়েছে। কিন্তু তারপরও ছোট একটি অভিযোগ। লেখার ফন্ট সাইজ। ফন্ট সাইজ আরেকটু বড়ো করার সুযোগ ছিলো। পৃষ্টা সংখ্যা বেড়ে যাবে বলে হয়তো অনেক ক্ষুদ্র ফন্টে বইটি প্রিন্ট কার হয়েছে। কিন্তু ফন্টের ক্ষুদ্রতা কারনে বইটি পড়তে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
. যাই হোক, পর্নোগ্রাফি বিষয়ে বাংলা ভাষায় রচিত এই বইটিই প্রথম। আমার মতে বইটি বাংলদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত মানুষের হাতে হাতে বিলি করার ব্যবস্হা করা উচিত। কারন, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত বাংলার ৫৬ হাজার বর্গমাইল আজ পর্নোগ্রাফির ক্যান্সারে আক্রান্ত।
. পরিশেষে দু'আ করি- বইয়ের নেপথ্যের সকলকে আল্লাহ তা'আলা যেন দুনিয়া ও আখিরাতে অশেষ রহমত দান করেন। তাদের জীবন আল্লাহ তা'আলার উত্তম প্রতিদানে সদা সর্বদা বরকতময় হোক। আমীন।
পর্নোগ্রাফি,ব্লু ফিল্ম,হস্তমৈথুন এর অন্ধকার জগৎ নিয়ে বাংলা ভাষায় লিখা প্রথম বই। অনেকেই দেখেছি অনেক সময় এ কথা বলে আক্ষেপ করতে ইশ! যদি আমার পর্যাপ্ত টাকা হত তাহলে সবাইকে এই বইটি হাদিয়া দিতাম... আমার বেলায়ও ঠিক এই অনুভুতিটি কাজ করেছে এই বই পড়ার সময়। এই নীল জগৎ যে কিভাবে একজন ব্যক্তি, পরিবার,সমাজ ও জাতি ধবংস করার জন্যে যথেষ্ট তা এই বইয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্তের সাহায্যে ও অসংখ্য গবেষণা ও পরিসংখ্যানের মাধ্যমে পরিষ্কার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পুরো বিশ্বজুড়ে পর্ন আসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর অনিবার্য ভয়াবহ ফলাফলও আমাদের চোখের সামনে রয়েছে। বিকৃত যৌনাচার,রেইপ,মার্ডার এমনকি মানবপাচার মতো জঘন্য সব অপরাধ এর সাথে কিভাবে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত তা এই বইয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
শুধু তাই-ই নয়, কিভাবে কুড়ে কুড়ে মেরে ফেলা এই আসক্তি থেকে আল্লাহর সাহায্য নিয়ে নিজেকে ও নিজের পরিবারের সদস্যদের ও বন্ধুদের রক্ষা করবেন তারও অত্যন্ত বাস্তবসম্মত পদ্ধতি দেখিয়ে দেয়া হয়েছে।
উম্মাহর যুবকরা যতো বেশি এই জগতে অগ্রসর হবে ততো বেশি অন্ধকার ও অনিশ্চিত ভবিষ্যত হবে এই উম্মাহর। কারণ এর শুরুটা নিস্পাপ আগ্রহ থেকে হলেও শেষ জাহান্নামের ইন্ধন হয়ে। তাই আমাদের সকলের উচিৎ এই অন্ধকার জগৎ সম্পর্কে আমাদের সন্তান-সন্ততি ও সমাজের সকল শ্রেণীর লোকদের সাবধান করা। হাই কনফিগারেশন সেল ফোন আর হাইস্পিড ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করে দিয়ে আপনার সন্তানকে নিরাপদ ভাবার মত বোকামি করবেন না।সবাই-ই নিষ্পাপ আগ্রহ নিয়ে এই জগতে পাঁ বাড়ায়। অবশেষে, আল্লাহ লষ্ট মডেষ্টির ভাইদের উত্তম থেকে উত্তম প্রতিদান দিন। তাদের এই চেষ্টাকে উভয় জাহানের কামিয়াবির উসিলা হিসেবে কবুল করুন। আমীন।
কখন যে সদ্য কৈশোরে পা দেওয় বালক ফ্রক পড়া বালিকার প্রেমে পড়ে যায়, ঠিক বোঝা যায় না !কোচিং ফাঁকি দিয়ে, বালক হেঁটে বেড়ায় বালিকার বাসার আশেপাশের অলিগলিতে। হয়তো কোনো এক দুর্লভ মুহুর্তে বালিকা ব্যালকনিতে আসবে, দক্ষিণের বাতাসে ভাসিয়ে দেবে বেণি খোলা চুল। ক্ষণিকের দেখা পাওয়া! এতটুকুই তো চাওয়া! বালকের রাতের ঘুম শেষ! অঙ্কে ভূরি ভূরি ভুল, বিজ্ঞানের ক্লাসে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকা!
দিন যেতে থাকে। বালক বালিকার পেছনে আঠার মতো লেগে থাকে। কোনো একদিন বালিকারও ভালো লাগে যায় বালককে। সদ্য গোফের রেখা গজানো, শার্টের বোতাম খোলা বালককে মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ। বালিকা কলমের ক্যাপ কামড়িয়ে বাঁকা করে ফেলে। কিছুতেই মন বসে না পড়ার টেবিলে।
একদিন মুখোমুখি দাঁড়ায় দুজন।
কিছুক্ষণের জন্য নেমে আসে মহাজাগতিক নীরবতা।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শত বার রিহার্সেল দিয়ে আসা কথাগুলো ওলোট-পালোট হয়ে যায়। বালক তোতলাতে শুরু করে। গলা শুকিয়ে যায়। নার্ভাস লাগে। বালিকা বালকের করুণ অবস্থা বুঝে ফেলে নিমিষেই। ঠোঁটের কোণে রহস্যময় একটুকরো হাসি বুলিয়ে রেখে বালিকা কঠিন। স্বরে বলে, “এই ছেলে এত ভয় পাচ্ছ কেন? আমি কি বাঘ? খেয়ে ফেলব?”
বালক আরও নার্ভাস হয়ে যায়।
বালিকা ফিক করে হেসে ফেলে...
বয়ঃসন্ধিকালীন প্রেমের জটিলতা, অস্থিরতা, জীবন ধ্বংসের অন্যান্য আরও দিক খুলে সযত্নে লুকিয়ে গল্প-উপন্যাস, মুভি-সিরিয়ালে রোমান্টিসিযমের চাদরে মুড়িয়ে একে খুবই ইতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। প্রথম ভালোলাগা, প্রথম ভালোবাসা, প্রথম কাছে আসা, প্রথম স্পর্শ...
সব মিলিয়ে যেন নিদারুণ সুখের এক কমপ্লিট প্যাকেজ। মেয়েদের উপস্থাপন করা হয় “রানী” হিসাবে। ছেলেরা প্ৰজাছেলেরা দাস। কিশোরী, তরুণীদের পটানোর জন্য ছেলেরা পাগলামি করে বেড়াচ্ছে, কবিতা লিখছে, গান বাঁধছে, প্রস্তুতি নিচ্ছে দূর আকাশের চাঁদটাও চুরি করে আনার। শেষমেষ হাঁটু গেড়ে বসে ভালোবাসার কথা জনাচ্ছে।
কিশোর, তরুণদের সকল প্রচেষ্টা, সকল কর্মকাণ্ড ঘটছে কিশোরী, তরুণীদের হৃদয় দখলকে কেন্দ্র করে। দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের চোখে ধুলো দেয়া সম্ভব হলেও আজকের চরম যৌনায়িত সমাজে ঠিকই বের হয়ে এসেছে এ প্রেমের আসল চেহারা। পচেগলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে এর বীভৎস অবস্থা।
আর কতকাল পথ ভুল করে ভুল রাস্তায় হেঁটে বেড়াবে উদ্ভ্রান্তের মতো? আর কত কাল? তার চেয়ে বরং এসো খোলা জানালায়। এক ঝলক ঠান্ডা বাতাস এসে শীতল পরশ বুলিয়ে দেবে তোমার স্নিগ্ধ মুখটাতে। বাইরে চেয়ে দেখো ঝকঝকে রোদে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক, উঠোনকোণের পেয়ারা গাছটার পাতার আড়ালে মিষ্টি সুরে গান গেয়ে যাচ্ছে বুলবুলি, দূরের ঐ নীল আকাশে ডানা মেলেছে সোনালি ডানার চিল, হাতছানি দিয়ে ডাকছে তোমায়, যেন তুমি বেরিয়ে পরো।
মুক্ত বাতাসের খোঁজে.........
কিছু অন্ধকার আতঙ্কিত করে, এ অন্ধকার মানুষকে আকর্ষণ করে। আবদ্ধ করে অবাধ্য, অনতিক্রম্য লালসা আর কৌতূহলের জালে। গুটি গুটি পায়ে তন্ময়, মন্ত্রমুগ্ধ দ্রষ্টা যখন কিনারায় এসে দাঁড়ায়, অতল গহ্বর গ্রাস করে নেয়। এই বই এমনই এক অন্ধকার নিয়ে।
সাধারণত আমরা অন্ধকারের কথা চিন্তা করি না। ব্যাপারটার সাথে গোপনীয়তা, লজ্জা, নিষিদ্ধ আনন্দ কিংবা লালসার সম্পর্কটা পরিষ্কার। কিন্তু অন্ধকার?
বাস্তবতা হলো এই অন্ধকার নিয়ে আমরা তেমন একটা চিন্তা করি না। এ নিয়ে আলোচনা সমাজে দুর্লভ। আলোচনার আদৌ দরকার আছে কি নেই, দুর্লভ এমন চিন্তাও।
অন্ধকার নিয়ে অধিকাংশ কথাবার্তা তাই সীমাবদ্ধ থাকে নানা মাত্রার অশ্লীল, ইঙ্গিতপূর্ণ রসিকতা আর হাসিঠাট্টায়। সমাজের বিশাল এক অংশ সম্পূর্ণভাবে বিষয়টা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। আর একটু আধটু আলোচনা যা হয়, যৎসামন্য।
আদিম সুখের বিষাক্ত এ চিত্রকল্পের ক্ষতিকর প্রভাবের সত্যিকারের ব্যাপ্তির ছিটেফোঁটাও আমরা অনুভব করি না।
সত্যি কথা হলো পর্নোগ্রাফি আসলে কতটা ক্ষতিকর আধুনিক মানুষ এখনো পুরোপুরি সেটা বুঝে উঠতে পারেনি। তবে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, চমকে দেয়ার জন্য সেটাই যথেষ্ট।
এই অন্ধকার কোনো "নির্দোষ আনন্দ" না। ছোটখাটো কোনো নৈতিক বিচ্যুতি না। এমন কোনো সমস্যা না, যা দেখেও না দেখার ভান করে থাকলে তার অস্তিত্ব মিলিয়ে যাবে।
ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য এটি মারাত্মক হুমকি। কারণ এর প্রভাব কেবল সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টিতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে তা মানুষ কে বদলে দেয়।
এই অন্ধকার আক্ষরিকভাবেই মানুষের মস্তিষ্ককে পাল্টে দেয়। বদলে দেয় মাথার ভেতরের সার্কিটগুলোর গঠন।
এই অন্ধকার উপভোগ কালে আমাদের মাথায় শুরু হয় ডোপামিন আর অক্সিটোসিনের মতো কেমিক্যাল গুলোর বন্যা। এই কেমিক্যাল গুলো আমাদের মধ্যে আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে।
এই কেমিক্যাল বন্যা বার বার সাময়িক আনন্দের অনুভূতি তৈরী করে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হলো যা তাকে আনন্দ দেয়, বার বার সেই উৎসের দিকে ফিরে যাওয়া।
তাই ডোপামিনের নেশা বার বার মানুষকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই অন্ধকারে। এভাবে একটা লুপ তৈরি হয়। পুনারাবৃত্তির একপর্যায়ে উচ্চমাত্রায় ডোপামিনে অভ্যস্ত মস্তিষ্ক আগের মতো আর আনন্দিত হতে পারে না।
প্রয়োজন হয় আরো বেশি ডোপামিনের। আরও বেশি, আরও কড়া অন্ধকারের উৎস হাতছানি দিয়ে ডাকে। তারপর আরও বেশি, তারপর আরও বেশি। একেবারে অন্ধকার গ্রাস করে নেয় সম্পূর্ণরূপে। একসময় প্রায় সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায় স্বাভাবিকভাবে আনন্দিত হবার ক্ষমতা।
এই ভয়াবহ মাদক অন্ধকারের ভেতরে তৈরি করে অবাস্তব প্রত্যাশা, অতৃপ্তি আর অনুকরণের তৃষ্ণা। বাস্তব তার জন্য যথেষ্ট হয় না। সুখের খোঁজে অতৃপ্ত সেই আত্না প্রবেশ করে অন্ধকার গহ্বরের গভীর থেকে আরও গভীরে। এক সময় অসাড় নিথর হয়ে যায়। হারিয়ে যায় সুখ, শান্তি। আর ফিরতে পারে না স্বাভাবিক জীবনে।
এই অন্ধকারের চর্চা ব্যক্তির মাধ্যমে শুরু হলেও তা শুধু ব্যক্তির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। তার বিষ বিষাক্ত করে তোলে পরিবার ও সম্পর্কগুলোকেও।
এই অন্ধকারের প্রভাব আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতি কে গ্রাস করে ফেলছে। মিডিয়া, নাটক, সিনেমা, গল্প, উপন্যাস, বিজ্ঞাপন, বিলবোর্ড, ম্যাগাজিন, মিউজিক, আইটেম সৎ, কবিতা সব কিছুতে আজ এই অন্ধকার জগতের চর্চাক্ষেত্র।
নিরব এই ব্যাধি, নিরবে সবার আগোচরে ছড়িয়ে পড়েছে মেট্রোপলিটন থেকে মফস্বলে। ২০১২ সালের সমীক্ষা মতে ৭৬% শিক্ষার্থীর মোবাইল আছে। মোবাইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৮৬% এই অন্ধকারের পথযাত্রী। আজ এই সমীক্ষার ফলাফল ৯০% ছাড়িয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
দেহের অবয়বের মাঝে লুকায়িত পুষ্পের ন্যায় কোমল মনটা আজ ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। অসহায় পথপ্রদর্শকহীন মানবসমাজের করুন চক্ষু দেখে হৃদয় নিংড়ে কান্না চলে আসে।
সম্পূর্ণরূপে এই জাতি, সমাজ ও সংস্কৃতিকে গ্রাস করে একেবারে নিথর পঙ্গু করে দেবার পূর্বেই, কী সেই অন্ধকার? তার ভয়াবহতা, সমাজ ও পারিবারিক জীবনে এর প্রভাব সম্পর্কে জানা এবং তা থেকে বাঁচার জন্য
মুক্ত বাতাসের খোঁজে, পাঠক আপনাকে স্বাগতম!
#পাঠক_প্রতিক্রিয়া:
বইটার লেখা পড়ে আমি অবাক হয়েছি, পড়ে মনে হলো একজন দক্ষ সাহিত্যিকের সাহিত্য। যে কি না বহু যুগ ধরে বাংলা লিখে যাচ্ছেন তার মুক্ত কলমে। শব্দচয়ন এতোই ভালো লেগেছে যে কয়েক বার পড়েছি অনেক গুলো অংশ।
বইটা সম্পর্কে নতুন করে কিছুই বলার নেই। কারণ বইটা সম্পর্কে অসংখ্য রিভিউ লেখা হয়েছে। আমি শুধু বলব সময় উপযোগী বই, অবশ্যই বইটা পড়া উচিৎ।
এই বইটি সময়ের চাহিদা ছিল। সবাইকে বলব বইটি কিনুন পড়ুন এবং অনুগ্রহ করে আপনার ঐ বন্ধুকে উপহার দিন যে এই অন্ধকারের দরিয়ায় হাবুডুবু খাচ্ছে।
সত্যি বলতে রিভিউতে বইটাকে সবাই যতটা ভালো বলেছে, বইটা তার চেয়েও অনেক বেশি ভালো। পড়েই দেখুন না, মুগ্ধ হয়ে যাবেন।
বলা হয় এই যুগটা আধুনিকতার যুগ, এই যুগটা সভ্যতার চরম উৎকর্ষতার যুগ। কিন্তু এই যে 'সভ্যতা' এই যে 'চরম উৎকর্ষতা' নামক শব্দগুলোকে দিয়ে আমাদের কান ঝালা-পালা করে দেওয়া হয় সেই শব্দগুলোর অন্তর্নিহিত অর্থ কি? আমাদের (মুসলিমদের) কাছে সভ্যতার যে আলাদা একটা সংজ্ঞা আছে, উৎকর্ষের আলাদা মানে আছে সেটার সাথে আজকের সভ্যতার আর চরম উৎকর্ষের কি সম্পর্ক?
প্রতিটা যুগে ক্ষমতাধররা তাদের সুবিধা অনুযায়ী সভ্যতাকে সংজ্ঞায়িত করে। তাদের পছন্দ অনুযায়ী বদলে যায় বিভিন্ন ধ্যান-ধারণা। আজকে আমরা যেই সভ্যতায় বসবাস করছি সেই সভ্যতার তৈরী করা সংজ্ঞাগুলোই আমরা মেনে নেই কোন পর্যবেক্ষণ ছাড়া। শালীনতা, নৈতিকতা, বন্ধুত্ব এর মত হাজারো শব্দের আড়ালে আমাদের চিন্তা-চেতনাকে সুপরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রন করে তারা। ফলে শব্দের বাহ্যিক গঠন এক থাকলেও বদলে যায় তার প্রায়োগিকতার ধ্যান-ধারণা। আজকের এই সভ্যতার যুগে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হতে পারে পর্নোগ্রাফি। একেবারে কচি-কাচা শিশু থেকে শুরু করে মৃত্যূর দোরগোড়ায় পা দেওয়া বৃদ্ধ, পাড়ার সবচেয়ে ভদ্র ছেলে থেকে শুরু করে বখাটে মাস্তান, লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া কিশোরী থেকে আধুনিক(!) ভাবধারার মেয়ে ; এমন কাউকে হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা পর্নোগ্রাফিতে আক্রান্ত নয়। আজকের সভ্যতায় এসে ক্ষমতাধরেরা তাদের পছন্দমতো 'বন্ধুত্ব' 'ভাই-বোন' নামক শব্দের ধারণাকে পাল্টিয়ে দিয়েছে। বাস্তবিক অর্থে এগুলো এখন আগের 'বন্ধুত্ব' নেই। কিন্তু নিউটনের তৃতীয় সুত্র এখানেও বাধ সেধে গেলো। মানুষের ফিতরাতকে তো আর পরিবর্তন করা সম্ভব না। তাই নতুন এক দানবকে সুশোভিত করে আমাদের সামনে নিয়ে আসা হলো। কাছ থেকেও তাকে দেখা যায় না, নীল অন্ধকারে ঢাকা থাকে তার মুখ। পর্নোগ্রাফি!
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই মোবাইল ডিভাইস হাতে হাতে চলে আসলো। দানবটা ঢুকে গেল সবার হাতে হাতে। বর্তমানে এর বিস্তার সম্ভাব্য আলোর বেগের চেয়ে বেশি। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি। জনপ্রিয় কোন সাইটের ভিজিটর সংখ্যা সেকেন্ডে ৫২৮ জন! নৈতিকতা ধ্বংসকারী, সময় ও স্বাস্থ্যের অপূরনীয় ক্ষতিকারী এই দানব এখনকার সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। কিন্তু একে নিয়ে সমাজের প্রতিক্রিয়া কি? প্রথমঃ সমাজের প্রথম চিন্তা-ধারার মানুষেরা একে নিয়ে আলোচনাই করতে চান না। ছিহ! এইগুলা নিয়ে কিভাবে কথা বলবা! দ্বিতীয়: অধিকাংশ তরুনদের কাছে এটা ফ্যাসিনেশন। দল বেধে আড্ডা দেওয়ার সময় রসালো আলাপের মাধ্যমে ক্রমাগত চলতে থাকে পর্নোগ্রাফির জয়গান। হাল আমলের মেয়েরাও পিছিয়ে নেই। তৃতীয়ঃ এই দলটা একটু নাদুস-নুদুস টাইপের। সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হয় অন্য কোন ধারণাকে সামনে রেখে। পর্নোগ্রাফি কিভাবে নারীর অবমূল্যায়ন করে কিংবা পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিভাবে ব্যাঘাত ঘটায় টাইপ ঘরোয়া আলোচনার মাধ্যমে এদের দায়িত্ব সমাপ্ত হয়।
পর্নোগ্রাফির ফলে মাস্টারবেশন, নৈতিকতার অবক্ষয় ও ধর্ষন নিয়ে কথা উঠলেও সেই চিরচেনা রেটোরিকঃ ১. মাস্টারবেশনঃ মাস্টারবেশন শরীরের জন্য ক্ষতিকার না। মাঝে মাঝে মাস্টারবেশন করা শরীরের জন্য ভালো। ২. নৈতিকতার অবক্ষয়ঃ এটা জাস্ট মজা। এটা নিয়ে এত সিরিয়াস হওয়ার কিছু নেই। ৩. ধর্ষনঃ সব মেয়েদের পোশাকের দোষ/সব ছেলেদের মানসিকতার দোষ। সব ছেড়ে পর্নোগ্রাফি আলাদাভাবে আলোচনার একটা বিষয় হয়ে উঠেনা। কিন্তু এভাবে আর কতদিন! মাল্টি বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি যেই জিনিসকে ঘিরে গড়ে উঠলো সেটা কি শুধুই একটা মামুলি ব্যাপার! ঢাকায় প্রতিদিন যেই জিনিস মেমোরিতে ঢুকানোর ব্যবসা হয় কয়েক কোটি টাকার সেটা কি এতই তুচ্ছ? পরিবার, সমাজ, জীবনের উপর এর প্রভাব কি এতটুকুই? এমন হাজারো জানা-জিজ্ঞাসা রয়েছে সচেতন মানুষের কাছে। বিশেষ করে যারা আমাদের আগামী প্রজন্মকে নিয়ে ভাবেন তাদের।
গোবরেও পদ্মফুল হয়। বাংলাদেশের মতো ক্রমশ নৈতিকতা ক্ষয়িষ্ণু জাতির জন্য এমন একটা পদ্মফুল হলো 'মুক্ত বাতাসের খোঁজে'। যেখানে রয়েছে অনেক ভাইয়ের দরদ-মাখা আহবানের সাথে বাস্তবিকতার উপাখ্যান। আছে অন্তরের সিক্ত বারিধারার গল্পের সাথে বিজ্ঞানের আতশী নীল কাচের ছোয়া। সব মিলিয়ে পর্নোগ্রাফি যেখানে একাই এক আলোচনার বস্তু।
'মুক্ত বাতাসের খোঁজে ' বইটাকে যারা পড়েছেন তারা এই বইয়ের একটা নাম দিয়েছেন। অক্সিজেন! বিষাক্ত এই দুনিয়ায় যদি চান একটু মুক্ত বাতাস হৃদয়ে নিয়ে বেচে থাকতে বা পাশের প্রিয় কোন মানুষটাকে যদি হারাতে না চান এই নীল অন্ধকারে তবে এই বইটি আপনাদের সম্বল হোক। দুনিয়ায় আবার আসুক মুক্ত বাতাসের অধিকারীরা। [বিঃদ্রঃ] নিশ্চয়ই একজন মুসলিমের জন্য পাপ থেকে বেচে থাকার একমাত্র হাতিয়ার হলো তাকওয়া। অর্থ বুঝে কুরআন তিলওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরী করা। বইটি সেই ক্ষেত্রে 'সহায়ক' এর ভূমিকা পালন করবে (ইনশাআল্লাহ)
আধুনিক পৃথিবীর প্রায় পুরোটাই এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। আধুনিক সব জিনিসপত্র- এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ভিডিও প্লেয়ার এগুলো যেমন অনেক কাজে লাগে ঠিক তেমনি ধ্বংস হওয়ার কাজেও লাগে। হ্যা, পর্নোগ্রাফী! আপনি চিন্তা করতে পারেন ক্লাস সিক্স, সেভেনের ছেলেমেয়েরাও পর্নোগ্রাফীতে আসক্ত! কতটা ভয়ংকর পরিস্থিতি!! মোবাইল ফোন সহজলভ্য হয়ে গেছে যে বাচ্চাদের হাতেও আধুনিক ফোন শোভা পায়। আর এই পর্নোগ্রাফী আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ভয়াবহতা তুলে ধরেছে লস্ট মডেস্টি টিম।
বইটির পিডিএফ উন্মুক্ত। লস্ট মডেস্টির ওয়েব সাইটে আপ্লোড করা আছে। এখান থেকে পড়তে পারেনঃমুক্ত বাতাসের খোঁজে
সমাজ ইন্টারনেটের অবাধ জগতে বিচরণের প্রবেশাধিকার দিয়েছিল.. ছেলেটিকে, মেয়েটিকে। কিন্তু কখনো বাতলে দেয়নি সঠিক নির্দেশনা- কী দরকার! নিজেরাই সব বুঝে নিবে। সেই জগতে ছিল চোরাবালির ছড়াছড়ি। ছিল পঁচা শামুক। দেখেও না দেখার ভান করল তারা... ছিঃ এগুলো কী বলা যায় ‘নাদান’,‘কাচু’ আর ‘পিচ্চিদের’?
এভাবে একদিন নীল পর্দা হাতছানি দিয়ে ডাকল অবুঝদের... চোরাবালিতে পা আটকে পড়েছে... মন বলল যাস নে, কিন্তু.. এ যে অসীম শিহরণ জাগায়! মন প্রশ্ন করলো তোর লজ্জা বলে কিছু নেই ? কী দেখছিস এগুলা ? থেমে যা! নইলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।... অবুঝরা আর কিছু শুনতে পেল না। উদ্দামতা মগজকে তোলপাড় করে দিল। ঠিক যেন অন্ধকার গ্রাস করে নিল আলো। সব ওলটপালট হয়ে গেল। ছেলে মেয়েগুলোর ভেতরটা মরে গেল সেদিন থেকে।
তারপর কী হল ? কী হল তারপর ??
কী হতে পারে আপনার জানা নেই ? আপনিও কি সেই উট পাখির মতো মাথা গুঁজে থাকাদের দলে? বাস্তব সমস্যা স্রেফ অস্বীকার করে দায়িত্ব,কর্তব্যগুলো থেকে নিস্তার পাওয়ার ধান্ধায় আছেন ?
আমাদের অবহেলায়, আমাদের উদাসীনতায় এদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে পর্নোগ্রাফি। নষ্ট করে দিয়েছে, দিচ্ছে যা কিছু ছিল মূল্যবান। হাজারো খুন ধর্ষণের সংবাদ আপনার চোখে পড়েনা ? সহস্র পরিবার ভাঙনের শব্দ আপনি শুনতে পাননা ? আপানর চোখে পড়ছেনা যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি হয়ে যাওয়া মা, শিশুদের করুণ চেহারাগুলো ? সমাকামিতা ধীরে ধীরে সয়লাব হচ্ছে এ ভূমিতে সেটাও কি চোখে পড়েনা আপনার ? নাকি অজাচারের খবর পড়ার জন্য এখনো বসে আছেন ঝিম মেরে ?
আর কতো জেগে জেগে ঘুমুবেন ? উঠুন। আড়মোড়া ভাঙ্গুন। জানুন পর্নোগ্রাফির ক্ষতিকর প্রভাব এবং এই মরনাসক্তি থেকে উত্তরণের উপায়। বাঁচান নিজেকে, নিজের প্রজন্ম, পরবর্তী প্রজন্মকে। সর্বোপরি সমাজকে নীল অন্ধকারের মরণকামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চাইলে পড়ুন পর্নোগ্রাফির ক্ষতিকর দিক নিয়ে বাংলা ভাষার প্রথম বই, ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’।
বইঃ মুক্ত বাতাসের খোঁজে প্রকাশনীঃ Ilmhouse Publication লেখকঃ লস্ট মডেস্টি ব্লগ লেখক/ লেখকবৃন্দ ( পর্নোগ্রাফিঃ মানবতার জন্য হুমকি ) সম্পাদকঃ আসিফ আদনান ভাই মূল্যঃ ২৩০ টাকা
এই বইটি আমার জীবন পড়া সেরা বই। জীবন বদলে দেয়ার মত একটা বই। অন্তত আমার জীবন কে কিছুটা হলেও বদলে দিয়েছে। এই বইটি অন্ততো একবার হলেও কিশোর এবং তরুণ ভাইদের পড়া উচিত।
পর্নোগ্রাফি,ব্লু ফিল্ম,হস্তমৈথুন এর অন্ধকার জগৎ নিয়ে বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম বই। এই নীল জগৎ যে কিভাবে একজন ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও জাতি ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট তাই বইয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্তের সাহায্যে ও অসংখ্য গবেষণা ও পরিসংখ্যান এর মাধ্যমে পরিষ্কার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পুরাে বিশ্বজুড়ে যে পর্ন আসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর অনিবার্য ভয়াবহ ফলাফলও যে আমাদের চোখের সামনে,বিকৃত যৌনাচারের,রেপ,মার্ডার এমনকি মানব পাচার ও এর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত না এই বইয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই বইটিতে বলা আছে কি ভাবে এই অন্ধকার জগৎ থেকে বের হওয়া যাই। এই নিয়া অঙ্ক টিপস দেয়া আচ্ছে এবং অনেক ইসলামিক টিপস ও দেওয়া অচ্ছে, এই আসক্তি থেকে বের হওয়া আসার জন্য। বাবা, মা, স্ত্রী দের কি করা উচিৎ তাও বলা আছে।
ধন্যবাদ লস্ট মডেস্টি এর ভাইদের, আল্লাহ্ আপনাদের রহম করুক।
একদম যুগোপযোগী একটা বই। বর্তমান সময়ের এক ভয়াবহ ফেতনা আর মহামারি আকারের সমস্যা হলো পর্নোগ্রাফি এবং বিভিন্ন বিকৃত যৌনতা।
কিন্তু এই দিকে আমাদের মনোযোগ একদমই কম, প্রশাসনিক দিক থেকেও এই সমস্যাটাকে দেখেও না দেখার ভান করা হয়। পর্নোগ্রাফি নিয়ে একটা বিশাল অর্থনৈতিক দানব, আর সেই দানবের বিরুদ্ধে এই বই খুবই ক্ষুদ্র একটা প্রচেষ্টা। আল্লাহ কবুল করে নিক ভাইদের খেদমত।
এই বইটা আমাকে আমার জীবন সম্বন্ধে ভাবতে শিখিয়েছে নতুন করে। বইটা সবারই পড়া উচিত।
একটা অন্ধকারের রাক্ষস ধ্বংস করে দিচ্ছে ব্যক্তি থেকে সমাজ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরো দেশটাকে।
কিন্তু এই রাক্ষসের নাম মুখে আনা, সেটাকে নিয়ে আলোচনা করা মানা। এটা যেন এক প্রকার অলিখিত নিয়ম। রাক্ষসটা এতো ক্ষতি করে যাচ্ছে কিন্তু সেই ব্যাপারে সরাসরি কথা বলতে সবার অনীহা। আসলে এটা অনেক দিনের গড়ে উঠা একটা শিকল। যার কারনে রাক্ষসটার ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলতে সংকোচ বোধ করি। আর সেই সুযোগে রাক্ষসটা নীরব অন্ধকারে সবার চোখের আড়ালে ধ্বংস করে দিচ্ছে এক একটা জীবন।
কে এই রাক্ষস? যেটা আমাদের সামাজ ব্যবস্থাটাকে চুষে চুষে রক্তশূণ্য করে দিচ্ছে। রাক্ষসটা হচ্ছে "পর্ণ বা নীলছবি"। আর রাক্ষসটার ছোবলে আক্রান্ত শহর থেকে গ্রাম জীবন। প্রতিটা অন্ধকার গলি থেকে একাকী রুম পর্যন্ত।
আর এইটাকে আমার এক প্রকার ট্যাবু বানিয়ে রেখে দিয়েছি। এর ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলতে মানা। আর সেই সুযোগে গ্রাস করে নিচ্ছে কোন প্রিয়জনকে।
এর প্রভাব যে কতটা ভয়ানক বইটা না পড়লে বুঝা যাবেনা। প্রতিটি জিনিস ব্যাখা করে হয়েছে বিজ্ঞানসম্মতভাবে সাথে রয়েছে গ্রহনযোগ্য রেফারেন্স। প্রতিটা ঘরে এই বইটা থাকা উচিত। যাতে নষ্ট না হয় কোন জীবন। আপনি জানতে পারবেন না রাক্ষস টা গ্রাস করেছে আপনার প্রিয়জনকে।
আর ট্যাবু বানিয়ে না রেখে এখনই সচেতন হয়ে উঠি দেরি হওয়ার আগে।
বইঃ মুক্ত বাতাসের খোজে প্রকাশনীঃ ইলমহাউস পাবলিকেশন পেজঃ ২৪০
বইটা অবশ্যই ভালো। সমসাময়িক সামাজিক প্রেক্ষাপটে টিনএজের কিশোর-কিশোরদের জন্য অবশ্যপাঠ্য বলা চলে। কিছু ক্ষেত্রে একই বিষয়, শব্দ বার বার আসাটা অদ্ভুত ও অযৌক্তিক লেগেছে। বইয়ে উদাহরণস্বরূপ বিভিন্ন কাহিনী গুলোও খাপছাড়া। কাহিনীগুলো কিশোর বয়সীদের বুঝানো জন্য বলা হচ্ছে, না চার পাঁচ বছরের বাচ্চাদের জন্য। সেটা নিয়েও কনফিউজড ছিলাম। এতো ঠুনকো ব্যাপার দিয়ে উদাহরণ টানাটা বইয়ের প্রাসঙ্গিকতার সাথে একদম যায়নি বললেই চলে।
চেষ্টা। সবসময় চেষ্টায় থাকতে হবে। কখনো নিরাশ হওয়া যাবে না। নীলের গর্তে পড়ছি, আবার উঠে দাঁড়াতে হবে। এই নীল অন্ধকার একসময় আমাকেও গ্রাস করেছিল। ক্লাস সিক্সে হাতে প্রথম স্মার্ট ট্যাব হাতে আসে। অসৎ সঙ্গে আমিও হারিয়ে গেছিলাম। কোন সঠিক গাইড লাইন পাইনি। দীর্ঘ দুই বছরের প্রচেষ্টার পর, আমি মুক্ত হয়েছিলাম তখন। আলহামদুলিল্লাহ। মাঝেমধ্যে মনে হত, দ্যাত্ত্যারি, আমার বুঝি রেহায় পাওয়া সম্ভব না। তাই আবার বলছি, একদম নিরাশ হওয়া যাবেনা। ওহু, আরেকটি কথা। কোনক্রমে ঈমানে ঘাটতি(Lack of the faith) রাখা যাবেনা। শয়তান আর নিজের মধ্যে স্পষ্ট দেওয়াল তৈরী করে দিতে হবে। এই দেওয়ালে কোন ফুটো রাখা যাবেনা। এই জন্য ইমানে ভরপূর থাকতে হবে। আশা করি, আপনার সৎ উদ্দেশ্যের ফলে রব্ব আপনাকে দ্রুত মুক্তি দিবে।
এই বই যদি কেউ পড়ে আর লেখাগুলি অন্তরে গেথে নিয়ে ফলো কররে তবে আমার মনে হয় না কেউ আর পর্ন দেখবে এবং মাস্টারবেট করবে। পর্নাসক্তি যে একটা মানসিক রোগ আর এর ভয়াবহতা যে মাদকের চাইতেও ভয়ঙ্কর তা এই বই পড়লে সহজেই উপলব্দি করতে পারবেন।
বইটার দুইটা অংশ।প্রথম অংশে পর্ন এবং মাস্টারবেশানের ক্ষতিকর দিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে তুলে ধরা হয়েছে।পর্নগ্রাফি আর হস্তমৈথুন একজন সাধারণ মানুষের মানসিকতাককে এত নিচে নিয়ে যায় যে সে ওরাল সেক্স,অ্যান্যাল সেক্স,গেসেক্স,চাইল্ডসেক্সের মতো বিকৃত যৌনাচারকেও স্বাভাবিক মনে করে। তাই যারা পর্নাসক্ত তারা দ্রুত এই বইটা পড়া শুরু করুন। যদি আপনি মনে করেন অামিতো রেগুলার পর্ন দেখি না,মাঝেমধ্যে দেখি তাই অামি পর্নাসক্ত না। অাপনার মাঝেমধ্যের অভ্যাসটাই যথেষ্ট আপনাকে আসক্ত করতে।
দ্বিতীয় অংশে আছে নিরাময়। কিভাবে আপনি নিজেকে পর্ন এবং মাস্টারবেশান থেকে দূরে রাখবেন তা।শুধু তাই নয় আপনার প্রিয়জন,পরিচিত,বন্ধু-বান্ধবদের কেউ এই রোগে রোগী থাকলে আপনার ভূমিকা কি তাও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাই আর দেড়ি না করে আজই সংগ্রহ করে ফেলুন বইটা।
ত্রুটিঃআমার সল্প জ্ঞানে খুব বড় কোন ভুল ধরা পড়েনাই,।ইভেন একটা "বানাম বুল"ও খোঁজে পাই নাই।তবে দাম ২৩০ টাকা এবং এইটা ফিক্সড,কোন ছাড় নাই(সবখানে এমন কিনা জানি না)। তাতে কি,২৩০ টাকায় পেতে পারেন জাহান্নামের আগুনথেকে মুক্তি।
পর্নাসক্তি কতটা ভয়াবহ এবং তা যে কত সহজ ভাবে আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে অল্প অল্প করে তিলে তিলে ধ্বংস করে দিচ্ছে তা আমরা হয়ত এখনো কেউ অনুধাবন করতে পারছি না। মাদকাসক্তির মত পর্নাসক্তি ও যে একটি ভয়ংকর নেশা তা আমরা বুঝতেও পারছি না। সমাজে এর আলোচনা ট্যাবুর ন্যায় হওয়ায় সবার চোখের সামনেই এই বিষাক্ত সাপটি আষ্টেপৃষ্ঠে ধরছে আমাদের নতুন প্রজন্ম কে।
লস্ট মডেস্টি ব্লগের কিছু ভাইয়েরা এই ভয়ংকর নেশার বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, যা অবশ্যই সাধুবাদের যোগ্য। যার লিখিত রুপই এই বইটি। আমার মতে আমাদের সমাজকে ধ্বংসের হাত হতে রক্ষা করার জন্য প্রত্যেকের এই বইটি অবশ্যই পড়া প্রয়োজন।
লস্ট মডেস্টির ভাইদের ধন্যবাদ এমন একটি বিষয় সামনে আনার জন্য।
নীল জগতের অন্ধকার বন্দিখানায় আটকে পড়া সব শ্রেণীর মানুষের জন্যে অবশ্য পাঠ্য বই। পর্ণোগ্রাফির করাল গ্রাস থেকে তরুণ প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে এর চেয়ে উত্তম টনিক আমি দেখিনি। দীর্ঘদিন একে ট্যাবু মনে করে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, আর এড়িয়ে যাবেন না। এই মূর্তিমান আতঙ্ক সম্পর্কে জানুন, জানুন এর ভয়াবহতা, আশেপাশের মানুষকে জানান। কে জানে হয়ত আপনার চারপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা ,বেরিয়ে আসার শত ব্যর্থ আকুতি নিয়ে কিন্তু পারছে না। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি পড়ুয়ারা তো অবশ্যই পড়বেন, সাথে পড়বেন অভিভাবকেরাও। এগিয়ে আসুন, সচেতন হোন, সচেতন করুন আপনার আমার ভালবাসা দিয়ে সাজানো ঘরগুলো তছনছ হবার আগেই।
বর্বর আধুনিকতায় ডুবন্ত আমরা। বুঝার উপায় নেই কতটা ডুবন্ত। বুঝতে হলেও বুক ভরা নিঃশ্বাস নিয়ে ডুব দিতে হবে প্রাপ্তির জলে। কিন্তু জল হয়েছে নোংরা, বিষাক্ত চিন্তার কীটপতঙ্গ যেন স্থান, কালকে জড়িয়ে। স্কুলগামী কিশোররাও রেহায় পায়নি এ থেকে। লেখক দেখিয়েছেন একটি একটি করে ডুবে নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রজন্মকে যাদের ঘুরে বেড়াবার কথা ছিল সরল শিক্ষার চেতনা নিয়ে হারিয়ে যাওয়া মুক্ত বাতাসে।
অনেক উপকারি একটা বই। আজকের যুব সমাজের জন্য অপরিহার্য একটি বই। হে আল্লাহ, তুমি এই বইয়ের সাথে জড়িত সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং এই বইয়ের উদ্দেশ্য সাধনে সহায়তা করুন। আমীন।
পর্ন এডিক্টেডদের জন্য পুরোদমে মেডিসিন হিসেবে কাজ করবে বইটি। সাবলীল শব্দচয়ন ও হৃদয়ছোয়া ভাবভঙ্গি নিঃসন্দেহে পাঠকের মনকে গলিয়ে দেবে এবং উৎসাহ দিবে ভাবতে। সেই সাথে বইয়ে উল্লেখিত যুগোপযোগি গাইডলাইন আসক্তদের অগ্নিচক্র থেকে বেরোতে সহায়তা করবে।