Salimullah Khan is a Bangladeshi writer, thinker, critic, and public intellectual. Regarded as an eminent thinker of Bangladesh, Khan explores national and international politics and culture using Marxist and Lacanian theories. Informed and influenced by Ahmed Sofa's thoughts, his exploration of Bangladesh's politics and culture has a significant following among the country's young generation of writers and thinkers.
Khan translated the works of Plato, James Rennell, Charles Baudelaire, Frantz Fanon, Dorothee Sölle into Bengali. In Bangladesh, he is a regular guest in talk shows on national and international political issues.
A proponent of anti-colonial movements, Khan has engagements in the global and regional political economy and culture from a Lacanian-Marxist perspective. A critic of Western interventionism, Salimullah Khan analyzes Western thought and discourse through critical scrutiny of the colonial and imperial legacy of the West. From this perspective, he has written on the works of Charles Baudelaire, Walter Benjamin, Michel Foucault, Frantz Fanon, Claude Lévi-Strauss, Edward Said, Aime Cesaire, Talal Asad and many others. Since 1997, his engagement with Freud and Lacan has made him use psychoanalysis to explore Bangladesh's politics and culture and also international issues. He also wrote two books on Freudo-Lacanian philosophy: Freud Porar Bhumika, and Ami Tumi She.
ফরাসিদেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী জাক লাঁকা সাহেব ১৯৬৬ সনে একটি বক্তৃতা দেন। লাঁকা সাহেব স্বদেশের ভাষায় ওস্তাদ লোক বটে। কিন্তু তার ইংরেজি ঠিক যুতসই না। তাই এই বক্তৃতার পর 'মূর্খ' সাংবাদিককূল লাঁকা সাহেবকে বরাবরের মতো 'দুর্বোধ্য' আখ্যায়িত করলো। সলিমুল্লাহ খান লাঁকা সাহেবের সেই ষাট সালের ভাষণের তর্জমা করেছেন লাঁকা সাহেবের তত্ত্বের আলোচনাপূর্বক। ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে লেখা মোট ১৯টি প্রবন্ধের সংকলন 'আমি তুমি সে'।
পাণ্ডিত্য ও বাগ্মীতার কারণে সলিমুল্লাহ খান সুপরিচিত। সাধারণত বক্তৃতা ও টক-শো'তে তিনি যেমন সহজ-সরল ভাষায় কথা তেমন সহজবোধ্য ভাষায় তিনি লেখালিখি করেন না। সাধু ভাষার গদ্যরীতির দরুণ তার লেখা বুঝতে কষ্ট হয়। জাক লাঁকা সাহেবের একজন আশেক সলিমুল্লাহ খান। '৬৬ সালে লাঁকার দেওয়া বক্তৃতাকে উপজীব্য করে এমন এক অভিনব প্রবন্ধ ফাঁদলেন খান সাহেব যার মাথা-মুণ্ডু কিচ্ছুটি বোঝা হলো না। পরপর তিনবার পড়েও যে তিমিরে ছিলাম, সে তিমিরেই রইলাম। সলিমুল্লাহ খান সম্ভবত জাঁকাবিষয়ক পিএইচডিধারীদের জন্য এই প্রবন্ধটি রচনা করেছেন। অতএব আমার মতো হস্তীমূর্খের এ নিয়ে ভালো-মন্দ বাতচিৎ না করাই শ্রেয়।
এডওয়ার্ড ওয়াদি সাঈদ জন্মসূত্রে খ্রিষ্টান। কিন্তু আমৃত্যু ফিলিস্তিনের মুসলমানদের পক্ষে কথা বলেছেন, কলম ধরেছেন। নিজ কর্মভূমি ইউএস ও ইসরাইলের প্রচারমাধ্যম এবং পণ্ডিতমহল তাকে 'ইসলামের রক্ষাকর্তা', 'সহিংস অধ্যাপক' ইত্যাদি অভিধায় ভূষিত করেছে। তবু সাঈদ ফিলিস্তিনের মজলুম জনতার সাথী হয়েছেন। ইয়াসির আরাফাত যেবার প্রথম জাতিসংঘে ভাষণ দিতে গেলেন, সেবার ভাষণের মুসাবিদা করে দিয়েছিলেন সাঈদ। অসলো চুক্তিকে গ্রহণ করা সাঈদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই পিএলও'র সদস্যপদ ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু মজলুমের কণ্ঠস্বরের ভূমিকা নিরন্তর পালন করেছেন। প্রথম ইন্তিফাদাকে সমর্থন করতেন। বিশ্বাস করতেন ফিলিস্তিনবাসীর জয় সুনিশ্চিত! বিতর্ক তাকে কখনোই ছাড়েনি। ২০০০ সালে দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলি বাহিনীর পরিত্যান্ত এক ক্যাম্প ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তখন তার সঙ্গে কতিপয় যুবা এই ইসরাইলি টর্চার সেলকে উদ্দেশ করে ঢিল ছুঁড়ে মারে। ঠিক হাজিরা যেভাবে ইবলিসকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে যেভাবে। ইহুদিপন্থি গণমাধ্যমে এই ঢিল নিক্ষেপের ঘটনাকে ইসরাইলের প্রতি সাঈদকে প্রতিহিংসাপরায়ণ হিসেবে উল্লেখ করে ব্যাপক প্রচার চালায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্ট্রিয়ায় সাঈদের একটি বক্তৃতাদানের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। ২০০৩ সালে সাঈদ ক্যান্সারে ইন্তেকাল করেন। মজলুমের কন্ঠস্বর এডওয়ার্ড ওয়াদি সাঈদকে নিয়ে লেখাটি এই সংকলনের অন্যতম সম্পদ।
'..মীরের পর নজরুলকে বাদ দিলে আহমদ ছফাই সম্ভবত সবচেয়ে মহান বাঙালি মুসলমান লেখক। '
ছফাকে নিজের মুর্শিদ জ্ঞান করেন সলিমুল্লাহ খান। তার ছফাপ্রীতি সর্বজনবিদিত। এই মহব্বত নিয়ে গুরুতর আলোচনা নিশ্চয়ই চলে। তা স্থগিত থাকুক। ছফার 'অলাতচক্র' নিয়ে এমন মনমাতানো আলোচনা বোধকরি সলিমুল্লাহ খান ব্যতিরেকে কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেহাল হাল দেখে লোকে 'গাভী বিত্তান্ত'-এর কথা স্মরণ করে। উপাচার্য আবু জুনাইদের জামিয়া মিলিয়ার ( উল্লেখ্য, জামিয়া মিলিয়া অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়) সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পায় নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। লেখকগণ হয়তো ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হন। নতুবা ছফা নব্বইয়ের দশকে আজকের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর করুণ ছবি দেখতে পেতেন না। স্বদেশে 'গাভী বিত্তান্ত' আদৃত হলেও ঢাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মনজুরুল ইসলাম এই উপন্যাস 'কিচ্ছু হয়নি' বলে মত প্রকাশ করেন। পশ্চিমদেশীয় উদারবাদী গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক 'গাভী বিত্তান্ত'কে নারীবিদ্বেষী লেখা হিসেবে গণ্য করেছেন।
কাজী নজরুলের কতিপয় গজল ও কবিতাকে ফ্রয়েডের তত্ত্বের তরিকায় তালাশ করেছেন সলিমুল্লাহ খান। পড়তে ভালো লেগেছে। ফ্রয়েড সাহেবের ওপর হাফেজি থাকলে পড়া আরও বোধগম্য হতো।
সিমন বুভেয়ারকে নিয়ে রচিত প্রবন্ধের ভালো-মন্দ যাচাই করার মতো দৌঁড় আমার নেই। তাই নির্বাক থাকা উত্তম।
লেখক লেখেন পাঠকের জন্য। কিন্তু লেখকের বক্তব্য পাঠককে বুঝতে যদি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলেম হওয়া লাগে তাহলে সেই লেখা পড়ার আবশ্যকতা কত তা নিয়ে ইমান দোলাচলে পড়ে যায়। সলিমুল্লাহ খানের পাণ্ডিত্য প্রশ্নাতীত। কিন্তু লাঁকা সাহেবকে সবকিছুতে টেনে আনা ও দুর্বোধ্যভাবে ব্যাখা করা আমজনতার জন্য অসহনীয়। সলিমুল্লাহ খান লেখেন চমৎকার। তবে তার লাঁকাপ্রেম ভীষণ বিদঘুটে!