शरतचन्द्र भारतीय वांग्मय के ऐसे अप्रतिम हस्ताक्षर हैं जो कालातीत और युग संधियों से परे हैं। उन्होंने जिस महान साहित्य की रचना की है उसने पीढ़ी-दर-पीढ़ी पाठकों को सम्मोहित और संचारित किया है। उनके अनेक उपन्यास भारत की लगभग हर भाषा में उपलब्ध् हैं। उन्हें हिंदी में प्रस्तुत कर हम गौरवान्वित हैं। प्रस्तुत उपन्यास 'मझली दीदी' एक ऐसी स्नेहमयी नारी की कहानी है जो अपनी जेठानी के अनाथ भाई को अपने बेटे के समान प्यार करने लगती है। यहां तक कि उसे अपनी जेठानी और जेठ आदि के अत्याचारों से बचाने के लिए पति को छोड़ने पर तैयार हो जाती है। इस सशक्त रचना पर 'चौखेर बाली' के नाम से बंगाली में फिल्म भी बन रही है जिसमें मझली दीदी की भूमिका हिंदी की प्रसिद्ध नायिका ऐश्वर्या राय निभा रही हैं।
Sarat Chandra Chattopadhyay (also spelt Saratchandra) (Bengali: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) was a legendary Bengali novelist from India. He was one of the most popular Bengali novelists of the early 20th century.
His childhood and youth were spent in dire poverty as his father, Motilal Chattopadhyay, was an idler and dreamer and gave little security to his five children. Saratchandra received very little formal education but inherited something valuable from his father—his imagination and love of literature.
He started writing in his early teens and two stories written then have survived—‘Korel’ and ‘Kashinath’. Saratchandra came to maturity at a time when the national movement was gaining momentum together with an awakening of social consciousness.
Much of his writing bears the mark of the resultant turbulence of society. A prolific writer, he found the novel an apt medium for depicting this and, in his hands, it became a powerful weapon of social and political reform.
Sensitive and daring, his novels captivated the hearts and minds of thousands of readers not only in Bengal but all over India.
"My literary debt is not limited to my predecessors only. I'm forever indebted to the deprived, ordinary people who give this world everything they have and yet receive nothing in return, to the weak and oppressed people whose tears nobody bothers to notice and to the endlessly hassled, distressed (weighed down by life) and helpless people who don't even have a moment to think that: despite having everything, they have right to nothing. They made me start to speak. They inspired me to take up their case and plead for them. I have witnessed endless injustice to these people, unfair intolerable indiscriminate justice. It's true that springs do come to this world for some - full of beauty and wealth - with its sweet smelling breeze perfumed with newly bloomed flowers and spiced with cuckoo's song, but such good things remained well outside the sphere where my sight remained imprisoned. This poverty abounds in my writings."
মানুষকে বিনা কারণে ভালোবাসতে হয়তো সবাই পারেনা। যারা পারেন তারাই শুধু পারেন। শরৎচন্দ্র মানুষের সহজাত আবেগকে তার লেখা গল্পে তুলে এনেছেন। এ যেন পাশের বাড়ির গল্প। পড়তে পড়তে তাই মন খারাপ হয়, বড় বৌয়ের উপর ক্রোধ হয়, মেঝবৌয়ের জন্য ভালোবাসা জন্মায়, কেষ্টর জন্য মায়া হয়। বড় মায়াময় গল্প।
ভাই ও দিদির ভালোবাসা এতো নির্মল অথচ গভীর হতে পারে তা বোধ করি কথার শিল্পী স্বয়ং না রচিলে কখনো বাঙালি পাঠকদের সম্মুখে প্রস্ফুটিতই হতো না। গ্রাম বাংলার দারিদ্র, অসুখ-অনাহারে হারানো আপন মানুষদের বেদনা , ও জীবনের কিছু নিষ্ঠুর সত্য কথা শিখিয়ে দিয়ে গেলেন ১৪ বছরের বালক, কেষ্ট ও তার রক্ত সম্পর্কবিহীন মেজদিদি হেমাঙ্গিনী।
'মেজদিদি' শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত গল্প।মেজদিদি সহ আরো দুটো গল্প দর্পচূর্ণ ও আঁধারে আলো গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হওয়ার আগে ১৩২১ সালের ভারতবর্ষ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে কার্তিক,মাঘ ও ভাদ্র সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।পরে ১৯১৫ খ্রীঃ ১২ ডিসেম্বর প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
#কাহিনী_সংক্ষেপ: গল্পের একটি প্রধান চরিত্র কেষ্টা ১৪ বছর বয়সে মা হারিয়ে একা হয়ে যায়।বাবা অনেক আগেই গত হয়েছেন।বৈমাত্র বড় বোন কাদম্বিনী তার একমাত্র ভরসা এখন।ভিক্ষা করে মায়ের শ্রাদ্ধ শেষে ছোট একটা পুটলি নিয়ে সে কাদম্বিনীর বাসায় গিয়ে উপস্থিত হয়।সব শুনে এবং পরিচয় পেয়ে সে মৃত বিমাতাকে উদ্দেশ্য করে কেষ্টাকে যা ইচ্ছে তাই শুনিয়ে দেয়।অনেক কটু কথা শোনার পর কেষ্টার ঠাঁইটুকু মেলে। বিনিময়ে একটি চাকরের বিদায় হল এবং কাদম্বিনীর স্বামী নবীন মুখুজ্যের ধান চালের আড়তে কাজে কেষ্টাকে লাগানো হলো।
কেষ্টা পরিমাণে ভাতটা খেতে একটু বেশি পছন্দ করে।কিন্তু এই দুমুঠো ভাত বেশি খাওয়ার পরিনামে কাদম্বিনী যে তাকে হাজার ব্যঙ্গ করতেও পিছপা হয়না।চোখের জল আড়ালে রেখে লজ্জায় সমস্ত ভাত কোনরকম গিলতে থাকে সে।অথচ তার মা বেঁচে থাকা অবস্থায় দুমুঠো ভাত বেশি খাওয়ার জন্য কতইনা জোর করতো।মা হারানোর কষ্ট, একাকীত্ব, পায়ের নিচের নির্ভরস্থল হারানোর কষ্ট সবকিছু সে সহ্য করেছে তাই দুমুঠো ভাত আর এ আশ্রয়টুকুর জন্য বৈমাত্র বোনের সারাক্ষণের কটুবাক্য তার পবিত্র হৃদয়কে নতুন করে আর কীই বা আঘাত করবে।
ছোট এই পবিত্র মন মাতৃস্নেহটুকু পেয়েছিল কাদম্বিনীর জা হেমাঙ্গিনীর নিকট।হেমাঙ্গিনীর কোমল মন কারো দুঃখ কষ্ট সইতে পারতোনা।তার নিজ সন্তানের বয়সী কেষ্টার দুঃখ সে সইতে না পেরে মাতৃস্নেহটুকু দিয়ে কেষ্টাকে সে নিজের কাছে আগলে রাখতে চাইতো।কেষ্টা হেমাঙ্গিনীকে মেজদিদি বলে ডাকতো।একমাত্র হেমাঙ্গিনীর কাছে পাওয়া মাতৃস্নেহটুকু অনায়াসে তার সকল কষ্টকে ভুলিয়ে দিতো।হেমাঙ্গিনীকেও কেষ্টা অনেক ভালবাসতো শ্রদ্ধা করতো।ভাইয়ের প্রতি হেমাঙ্গিনীর এ ভালবাসা কাদম্বিনীর কাছে বাড়াবাড়ি মনে হতো।এ নিয়ে দু জায়ের মধ্য ঝগড়া,মনোমালিন্য দিন দিন বাড়তে রইলো।কেষ্টার প্রতি হেমাঙ্গিনীর ভালবাসা মায়া মমতা তার স্বামী বিপিনকেও অতিষ্ট করে তুললো।হেমাঙ্গিনীকে সে অনেক ভালবাসে কিন্তু হেমাঙ্গিনীর কেষ্টাকে নিয়ে পাগলামো অসহনীয় হয়ে উঠে তার কাছে।সবার এই নিষ্ঠুর আচরণ হেমাঙ্গিনীকে অসুস্থ করে তোলে একসময়।
কেষ্টার প্রতি হেমাঙ্গিনীর মাতৃস্নেহ ভালবাসা,মায়া মমতা সকল নিষ্ঠুরতার নিকট জয়ী হয়েছে কি না তা গল্পের শেষ অংশেই জানা যাবে :)
এই গল্প অবলম্বনে ১৯৫০ ও ২০০৩ সালে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়
#আমার_উপলব্ধি -অনেক আগে পড়েছিলাম।পড়ার পর কেঁদেছিলাম।আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।হৃদয়স্পর্শী একটা গল্প।একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।বারবার কেষ্টা চরিত্রটাকে অনুভব করছিলাম বলে কষ্ট পেয়েছিলাম বেশি।যারা পড়েননি পড়ে দেখতে পারেন।আশা করি ভালো লাগবে ☺ ছোটদের পড়ার মতও দারুণ একটা গল্প
সৃষ্টিকর্তা কিছু মানুষের হৃদয় মায়া,মমতা, স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ করে দেন। আমাদের আশেপাশের এই মানুষগুলোর জন্যই এখনো পৃথিবীতে মনুষ্যত্ব বলে কিছু আছে।
অনাথ কেষ্টর জীবনে মেঝদিদি ঠিক এরকমই একজন দেবদূত হিসেবে আসেন।
সৃষ্টিকর্তা কিছু মানুষের মনে দয়া মায়া অনেক বেশীই দেয়। আর যাদের কারণ��ই, কেষ্টার মতো অনাথরা এখনো বেঁচে আছে। আসলে একটা প্রশ্ন, কাছের মানুষ কে?রক্তের সম্পর্কের মানুষ? নাকি আত্মার সম্পর্কের?
কিছু কিছু গল্প-উপন্যাস এত সুন্দর হয়... বইটা শেষ করে যেন মন চায় কিছু সময় বুকের সাথে জড়িয়ে বসে থাকি। এই গল্পটা মোটেও তার ব্যতিক্রম নয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শুধু নামটাই enough! দারুণ সব গল্প,উপন্যাসের স্রস্টার আরেক অসাধারণ সৃস্টি হচ্ছে মেজদিদি।
মেজদিদি সম্পর্কে যদি এক লাইনে সম্পূর্ণ রিভিউ দিতে যাই তবে বলতে হবে, Books or story that heals our inner frustration. দীর্ঘক্ষণ কোন লেখা পড়ার পর, শেষ পৃষ্ঠায় এসে যখন মনে হয়...বইটা পড়ার জন্য যতটুকু সময় ইনভেস্ট করেছি পুরাটাই worth it হয়েছে, সেরকমই।
মায়ের মতন করে কেউই ভালোবাসতে পারে না৷ কিন্তু মা যখন থাকে না, তখন সেই সব অভাগাদের জন্য প্রকৃতি যেন একটা মা পাঠিয়ে দেন একভাবে না একভাবে। ১৪ বছর বয়সী কেষ্টা, মা মারা যাওয়ার পর আশ্রয়ের আশায়, ঠাই নেয় বৈমাত্র বড়বোন কাদম্বিনীর বাড়িতে। কিন্তু নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত সীমায় নিয়ে যায় এই বোন। জীবনেও এতটা অপমান সহ্য করে নাই যতটা না অল্প ক'দিনে তার জীবনের পর থেকে কাদম্বিনী বয়ে নিয়ে গিয়েছে। অপমান, নিঃসঙ্গতা, হতাশা সবকিছুতে যখন মুষড়ে পড়েছে কেষ্টা তখন প্রকৃতি যেন তার দিকে স্নেহের নজর ফেলে, তার জীবনে আসে মেজদিদি। ঠিক যেই ভালোবাসাটা তার মায়ের থেকে পেত সেই ভালোবাসাই মেজদিদি দিতে থাকে। পিতৃ মাতৃহীন ছেলেটার জন্য এর থেকে বেশি আর কি বা প্রয়োজন ছিল।
গল্পের নেগেটিভ দিকটা নিয়ে লিখতে চাচ্ছি না। শুধু পজিটিভটাই তুলে ধরলাম। বইটা পড়ার সময় খুব খুব খুবববব মন খারাপ হচ্ছিল। সমাজ এত নিষ্টুর কেন? বাবা মা বেঁচে থাকতে দুনিয়া কতই না সুন্দর, কিন্তু মাথার উপর থেকে বাবা মায়ের ছায়া সরে গেলে রোদের উত্তাপ যখন মাথায় এসে লাগে তখন বোঝা যায়, দুনিয়ায় সারভাইব করা কতটা কঠিন। আমি এই ছোটগল্পটা সবাইকে রিকমেন্ড করব পড়ার জন্য। আর নিজে যে এত এত দিন পর এসে পড়লাম, এজন্য রাগ লজ্জা দুটোই হচ্ছে, আরো বহু বহু বার পড়ব, ইনশাআল্লাহ।
সৃষ্টিকর্তা কিছু মানুষের হৃদয়ে মায়া, মমতা, স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ করে দেন। আমাদের আশেপাশে এরকম মানুষগুলোর জন্যই মনুষ্যত্ব বলে কিছু আছে। কখনো দেখা যায়, রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আত্মার সম্পর্কে বেশি গভীর হয়ে ওঠে। একজন স্নেহময়ী বোনের অকৃত্রিম ও নিখাঁদ ভালোবাসার গল্পই হলো 'মেঝদিদি'।
এরকম অসাধারণ ভালোবাসার গল্প একমাত্র চিরায়ত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দ্বারাই সম্ভব। বাঙালির আবেগকে তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি ও ধারণ করতে পারেন। গল্পের শেষটা অতি অসাধারণ। পড়ার সময় মনে হবে হয়তো স্যাড এন্ডিং হবে। কারণ এটা লেখকের সহজাত প্রবৃত্তি। কিন্তু শেষটা সুন্দর। এই হেমাঙ্গিনীদের জন্যই নারী চরিত্র এতোটা মায়াবী ও মাহাত্ম্যপূর্ণ।
ছোটবেলায় বড়দের মুখে শোনা নীতিকথার মত। খালি একটু কদর্য বেশি। মেজদিদি আর কেষ্টা- সেই বহু পুরাতন পরের বাড়িতে অনাদরে বেড়ে উঠা পরগাছা জীবনের কাহিনী, গল্প বলা উচিত না, এমন জীবন ফ্যান্টাসি করার মতন না- করুণ বাস্তবতা। হয়ত সেই গেরস্তের কেউ তাকে একটু দয়া পরবশ হয়ে স্নেহ দেখায়। অনর্থক আসলে। হয়ত একটু দরকারিও, কে জানে?
ছোট গল্প, কিন্তু যে মাটির গন্ধ, যে আবেগ, সেটা অনেক বড় কিছুকে ছুঁয়ে যায়।
মেজদিদি চরিত্রটা যতটা কঠিন মনে হয় বাইরে থেকে, ভেতরে ততটাই নরম। দায়িত্ব, ত্যাগ, ভালোবাসা—সবকিছু একসাথে বহন করা এক নারীর অসহায় অভিমান যেন পুরো গল্পটা জুড়ে বাজে।
ভাষা একেবারে সরল, কিন্তু এন্ডিংটা...! সংক্ষিপ্ত হলেও গভীর।