দুই খণ্ডে লেখা এই উপন্যাসটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। লেখকের মতে, এটি কোনো ঐতিহাসিক উপন্যাস না। তবু ১৯০৫ সাল থেকে শুরু করে দেশবিভাগের পূর্বের সময়টুকুতে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন, অন্তর্দ্বন্দ্ব, সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষসহ অনেক কিছুই উঠে এসেছে এই উপন্যাসে।
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
Some day I wish to make a movie of this novel and I can bet there are very very few Western novels which can tell a story as deep and as inspiring as Moddhannya!
ইতিহাস আমার বরাবরই পছন্দের,আর অবিভক্ত বাংলা নিয়ে সবসময়ই অন্য রকমের আগ্রহ কাজ করে। ভেবেছিলাম হুমায়ূন আহমেদ এর গদ্যের ছোঁয়ায়,অবিভক্ত বাংলার উপর ঐতিহাসিক উপন্যাস তো পুরো মাখন হবে। প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও 'মধ্যাহ্ন' থেকে পাইনি।। নির্দিষ্ট একটা এলাকা,কয়েকজন ভালো লোক,খারাপ লোক, কিছু ধনী -গরীব, হিন্দু, মুসলিম চরিত্র আর জমিদারি,নৌকা - বজরা,চিঠিপত্র, যৌনপল্লী এমন কিছু এলিমেন্ট নিয়ে উপন্যাসটা লিখে দিয়েছে। এটা ১৯০৫ সালের সময়কার কাহিনীর কথা বলা হয়েছে। তবে সামান্য কিছু অদল বদল করলে ১৮০৫ সাল বা ২০০৫ সালের গ্রামের উপর লেখা বলেও চালিয়ে দেয়া যাবে। ব্যক্তিগত ভাবে হরিচরণ সাহা,মওলানা ইদরিস,ধনু শেখ ও শশাংক পাল এই চারটা চরত্রেই আমার ভালো লাগা,মন্দ লাগা ছিলো। অন্য চরিত্রগুলো তেমন টানেনি। আমার এখন পর্যন্ত পড়া সবচেয়ে ওভাররেটেড উপন্যাস মনে হয়েছে "মধ্যাহ্ন"কে। হুমায়ূন আহমেদ এর সুন্দর লেখনী ছাড়া এই উপন্যাসে আর কিছুই পাইনি।
মধ্যাহ্ন-১ পড়া শেষ করে মনে হলো আমি যেনো এক অদ্ভুত সময়যাত্রায় বেরিয়েছিলাম। ইতিহাস আর কল্পনার মিশ্রণে হুমায়ূন আহমেদ এক অন্যরকম জগৎ সৃষ্টি করেছেন। তিনি একটা যুগের শ্বাস-প্রশ্বাস, মানুষের ভালোবাসা, প্রতারণা, আত্মত্যাগকে এমন রূপ দিয়েছেন যার সবই সত্য বলে মনে হয়। সবই আসল বলে মনে হয়।
উপন্যাসের হরিচরণ সাহার চরিত্রটা আমাকে একদম নাড়িয়ে দিয়েছেন। এক মুসলিম শিশুকে বাঁচানোর বিনিময়ে নিজের জাতি, সমাজ সবকিছু হারিয়ে ফেললেন! তবুও তিনি এতোই পবিত্র যে, পবিত্রতার জ্যোতি তার কাছ থেকে হারিয়ে যায়নি। তা যেনো আরো গাঢ়ভাবে তাকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেছে। ধনু শেখ, জুলেখা, শশাংক পাল, লাবুস! প্রত্যেকটা চরিত্রই যেনো একেকটা জীবন্ত মানুষ। যারা আমার আশেপাশেই থাকে। তাদের আমি কাছ থেকে চিনে ফেলেছি।
এই বইয়ের সবচাইতে শক্তিশালী দিক হচ্ছে, এতে কোনো জোরজবরদস্তি নাই। হুমায়ূনী লেখার শক্তি নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই। সবকিছুই আপন আপনই লাগে। ইতিহাসকে পেছনে রেখে সাধারণ মানুষের আবেগ, ধর্ম নিয়ে সংকট, জাতপাত, দেশপ্রেমের হাওয়া নিয়ে এই উপন্যাস যেনো এক অনন্য উপন্যাস। দ্বিতীয় খন্ডও ধরে ফেলেছি। আশা করছি দ্রুতই শেষ করবো। পড়া না থাকলে অবশ্যই পড়বেন। নাহলে, অনেককিছুই মিস করবেন।
গত বছরের মতো এই বছরের শুরুটাও হলো হুমায়ুন আহমেদ এর বই দিয়ে । এই বইটা শুরু থেকেই বেশ ভালো লাগছে, আসা করি পরের খণ্ডও এই গল্পের ভালো লাগার রেশ বজায় থাকবে ।
বিশেষ কিছু বলার নেই। বিশেষ কিছু বলার প্রয়োজনও নেই। মধ্যাহ্ন মধ্যাহ্নের মতই সপ্রতিভ, প্রয়োজনে কাঠখোট্টা বেরসিক। জীবনের যে প্রতিচ্ছবি দেখানো হয়েছে তা যথার্থই বাস্তব। পড়ে মনে হচ্ছে সময় বদলেছে, সমাজও বদলে গেছে অনেকটা, কিন্তু সামাজিক ক্ষমতায়নের রীতি সেই আগের মতই আছে। চালক বদলে যায়, কিন্তু ক্ষমতার ক্ষুধা বদলায় না। রাজা হয় ফকির, ফকির হয় রাজা। ভাগ্যের ফের অমোঘ।
জানি দ্বিতীয় বই আছে। হয়তো ধুম করে পড়েও ফেলতে পারি একদিন। তবে আপাতত পড়ার ইচ্ছা নেই। এই আমেজ আগে হজম করতে হবে, তারপর পরিক্রমার অগ্রগতি।
হুমায়ুন আহমেদ সেরা ১০ বই এর মধ্যে মধ্যাহ্ন অবশ্যই আছে। সমাজের কিছু রূঢ় বাস্তবতা যেমন আছে তেমনি আছে ভালোলাগার মতো অনেক চরিত্র। 🌻 তখনকার পৃথিবী টা আসলেই অন্যরকম ছিল। আমাদের এখনকার সাথে যার কোনো মিল নেই। ইংরেজ রা কিভাবে আমাদের শোষণ করতো পাশাপাশি কিছু বঙ্গ সন্তান কিভাবে ইংরেজ এর চেয়ে ভয়াবহ ছিল তারই ধারণা পাওয়া যায়। সর্বোপরি ওই সময় টাকে ধরে লিখতে চেষ্টা করেছেন লেখক এবং সফল ও হয়েছেন।💐 সত্যিকার অর্থেেে সেই সময়ে হারিয়ে গেছিলাম ।👍👏
তেমন ভালো লাগল না। কিছু সংলাপ কিছু চরিত্রের আচারণ এমনই বেখাপ্পা যে পড়তে গিয়ে চরম ভাবে বিরক্ত হওয়া লেগেছে। এত বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে যে হুমায়ুন আহমেদের আর কোনো বই আদৌ পড়ার রুচি আসবে কি না জানি না। আমি উনার হিমু, মিসির আলীর খুবই ভক্ত।তাছাড়া যতটুকু উনাকে পড়া হয়েছে কেন জানি উনার এক চেটিয়া লিখা আমার আর টানে না।জানি না অন্যদের কি অবস্হা।তবে উনার গল্পের তারিফ করা যায়। কিন্তু উপন্যাস গুলো কেন জানি আমার ভালো লাগে না।সবার তো আর এক রুচি না।হয়তো অন্য কারোর ভালো লাগতেই পারে।তবে পরোক্ষ ভাবে বলতে পারি উনার বই গুলো যেন মুড়ির মতো ;খাবে তৎক্ষণাত ই ফুরিয়ে গেল। গতানুগতিক একই বেখাপ্পা সংলাপ,চরিত্র।যাচ্ছে তাই।
This entire review has been hidden because of spoilers.
বান্ধবপুর নামের এই গ্রামটির কথা শুনেছি আর বারবার মনে করেছি আমিও যেন এই গ্রামেরই একজন। আমার চোখের সামনে দিয়েই গ্রামের ঘটনাগুলো ঘটছে। চরিত্রগুলোর বয়স বাড়ছে, আমারও বয়স বাড়ছে। ঐতিহাসিক অনেক ঘটনার সাথে গল্প মিশিয়ে দিয়ে লেখক যেন আরও প্রানবন্ত করে তুলেছে এই কল্পকাহিনী। এই গল্পের অন্যতম সুন্দর দিক ছিল, হিন্দু বা মুসলমান এই দু'টি সম্প্রদায়কে গুরুত্বের দিক থেকে অসম বিবরণ দেয়া হয়নি। সকলে মিলে একটি যুক্ত গ্রাম। অন্যদিকে, ধনু শেখের মতো এইরকম একটি খল চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে যা সবসময় মনের মধ্যে গেঁথে থাকবে। বারবার যেন চরিত্রটির জন্ম হয়ে আসছে, ইতিহাসের পাতায় ধনু শেখ আছে, এরা সবসময়ই ছিল। হুমায়ুন আহমেদের অনবদ্য একটি উপন্যাস এটি।
প্রথম খন্ড শেষ করলাম মিশ্র প্রতিক্রিয়া নিয়ে। অখাদ্য লাগেনি (অনেকের মুখে শুনেছি).. আবার আহামরি কিছুও লাগেনি। তবে শুরুর দিকটা খুবই ভালোভাবে আগাচ্ছিলো। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রচিত তবে মাঝেমধ্যে মনে হচ্ছিলো "ওম শান্তি ওম" সিনেমার ঐ লাস্টের গানটার মত। ওইখানে যেমন একের পর এক সেলিব্রিটি এসে হাত নাড়ায় এ বইয়েও তেমন বিখ্যাত মানুষজনের কেউ বাদ নেই। হুমায়ূন আহমেদ যে ফর্মুলায় গল্প বলেন এ বই ও তার ব্যাতিক্রম নয়। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না। কারণ বেশিরভাগ সময়ে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছি। উঠে দেখি কিচ্ছু মনে নাই।
সময় ১৯০৫। গ্রামের নাম বান্ধবপুর। উত্তরে গারো পাহার। বান্ধবপুর পুরাপুরি হিন্দু গ্রাম। কিছু মুসলমান রয়েছে যদিও। তারা শুধু নাম মাত্রই মুসলমান।
হরিচরণ সাহার বয়স ৫০। শক্ত শরীর। বাজারে ৩ টা ঘর আছে, মোটামোটি ধনবানই বলা চলে। তার ২ বিয়ে। প্রথম ঘরে প্রথম সন্তান এর মৃত্যুর পর আর সন্তান হয়নি। দ্বিতীয় ঘরে কোনো সন্তান হয়নি।
হরিচরণ এর সমস্যা শুরু হয় এক মুসলিম কাঠমিস্ত্রি এর বাচ্চা (জহির) কে পুকুরে ডোবার হাত থেকে রক্ষা করার পর। সেই বাচ্চার উপর তার মায়া জন্মালে তাকে নিয়ে পূজাঘরে বসার কারণে তাকে সমাজচ্যুত করা হয়। এক এক করে তার সব কর্মচারী তাকে রেখে চলে যায়। বাড়ি হয়ে যায় ফাঁকা। একা থাকার অভ্যাস হরিচরণ এর হয়ে যায়। বই পড়েন, বিভিন্ন জিনিশ নিয়ে ভাবেন। জহির এর সাথে বড়দের ব্যাপার সেপার নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন। হঠাৎ হঠাৎ অম্বিকা চরণ হাজির হয়। নানা উপায় বলে যা দিয়ে সমাজে আবার স্থান পাওয়া যাবে। হরিচরণ এর জন্য ধনু শেখ এর ও অনেক টান। সে লঞ্চ ঘাট এর টিকেট বাবু। সবাইকে হরিচরণ এর জাত যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করায় তার চাকরি চলে যায়। তার ঘর হয় নৌকায়। তার প্রেগনেন্ট বউ নিয়ে পড়লো মহা বিপদে। খাওয়ার কিছু নাই, কোনো ব্যবসাতেই লাভ হচ্ছে না। তাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করে হরিচরণ। তার জন্য ১ টা লঞ্চ কিনে দেয়। সেই লঞ্চ এর কোনো লাভ হরিচরণ নিবে না। যখন সময় হবে, পর্যাপ্ত টাকা থাকবে তখন লঞ্চ এর টাকা ফেরত দিলেই হবে। কপাল খুলে যায় ধনু শেখ এর।
সোনাদিয়ার জমিদার শশাঙ্ক পাল নানাভাবে হরিচরণকে কষ্ট দিতে থাকে। তার জন্য সামাজিক ব্যাপারগুলা বন্ধ করে দেন। সেই শশাঙ্ক পাল এর জমিদারি নিলামে তুলা হয়। সেই জমিদারি কিনে ফেলে হরিচরণ। সব সম্পত্তি চলে আসে হরিচরণ এর কাছে। যার মধ্যে ছিলো ২ টি হাতি। হাতিগুলার সাথে হরিচরণ এর অনেক গাড়ো সম্পর্ক হয়ে যায়।
শশী বাবু বান্ধপুর চলে আসে বাবা মা এর সাথে ঝগড়া করে। মাধাই খাল এর কাহে হরিচরণ শশীবাবুর জন্য একটি বাড়ি তুলে দেন। শশী বাবু খুবই কর্মী মানুষ। খুব সহজেই গ্রামের মানুষের সাথে মিশে যায়। একটা স্কুলে তিনি একা পরিচালনা করেন। সেই সাথে খুব ভালো গানও করেন তুনি। সেই গান এর কারনে পরিচয় জুলেখার সাথে। জুলেখা হলো জহির এর মা। অসম্ভব রূপবতী এই জুলেখার প্রেমে পড়ে শশীবাবু।
জহির এর বাবা সুলেমান জুলেখাকে তালাক দেয়। তাই জুলেখা বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নেয় রঙ্গিলা নটি বাড়িতে। তার নতুন নাম হয় চান বিবি। এদিকে সুলেমান আবার বিয়ে করে। জহির এর তাই সেই বাড়িতে আর থাকতে ইচ্ছা হয় না। তাই সে হরিচরণ এর সাথে থাকা শুরু করে।
বিখ্যাত বাউল উকিল মুন্সী ও তার বউ লাবুসের মা (লাবুস বলতে কেউ নাই, তারা নিঃসন্তান দম্পত্তি) আসেন বান্ধবপুর এ। তিনি নিজের গান জুলেখার মুখে শুনার জন্য তার কাছে যায়। জুলেখার গানের কন্ঠ ছিলো অসাধারণ। জুলেখা গান শুনায়। সেই গান শুনে উকিল মুন্সী তাজ্জব হয়ে যায়। তার গান তার থেকেও কেউ ভালো করে গাইতে পারবে এটা তাকে খুব অবাক করেছে। আর জুলেখা চোখের সামনে তার গুরুকে দেখতে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়। উকিল মুন্সী যতদিন গ্রামে ছিলেন অনেক আরামে ছিলেন। যাওয়ার সময় তারা সাথে জহিরকেও নিয়ে যায়। নিঃসন্তান পরিবারে প্রথম সন্তান এলো।
গ্রামের ইমাম মাউলানা ইদ্রিস অনেক চেষ্টার পর হাফেয হয়েছেন। কিন্তু এখনো পরিক্ষা দিতে পারেন নাই। তাই হাফেয টাইটেল ঝুলে আছে।
এদিকে ধনু শেখ এর এখন অনেক টাকা। সে নামী দামী ব্যাক্তি। ধনু শেখ জঙ্গলে গোপনে গরু জবাই করে সব মুসলিম ফ্যামিলিতে সেটা বিতরণ করে। সাথে অম্বিবা ভট্টাচর্যকেও কিছু মাংস দিয়েছিলো, খাশির মাংস বলে কাজ চালিয়ে দেয় তখন। সেই মাংস খাওয়ার কারণে অম্বিকা ভট্টাচর্যকে জাত চ্যুত করা হয়। সেখান থেকে পুরো পরিবার এর মুসলমান হতে হলো।
সবার ধারণা হরিচরণ সাধু হয়ে গেছেন। তার কাছে অলৌকিক ক্ষমতা আছে। তাই সবাই তার কাছে পানি পড়া নিতে আসে। তিনি কারো শরীরে হাত রাখলে সেই মানুষ সুস্থ হয়ে যায়। এরকম আরো অনেক কথা ছড়াতে থাকে মানুষের মধ্যে।
এর মধ্যে গ্রামে আসলো এক বিপ্লবী মোঃ মফিজ (জীবনলাল)। শশী মাষ্টার এর বন্ধু। তিনি গ্রামে এসে সবার সাথে ভাব জমিয়ে ফেলে।
হরিচরণ মৃত্যুর আগে সব সম্পত্তি দিয়ে যায় জহিরকে। সাক্ষি হিসাবে থাকে জীবনলাল ও মাওলানা ইদ্রিস। কিন্তু সেই রাতেই জীবনলাকে পালিয়ে যেতে হয় কারণ তাকে পুলিশ ধরতে আসে এবং পালাতে গিয়ে ধরাও খায়। ধনু শেখই পুলিশকে খবর করে আনে পুরষ্কার এর লোভে। এইজন্য খান সাহেব টাইটেলও পেয়েছে। জীবনলাল না থাকায় ধনুসেখ হরিচরণ এর সব সম্পত্তি নিজের করে নেয়। কেউ বাধা দেয়ার নেই। সবাই ভয় পায় ধনুশেখকে।
মাওলানা ইদ্রিস এর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি মনে করেন তার বারিতে বউ আছে কিন্তু আসলে নাই।
যমুনা নাম এর এক মেয়েকে সমাজ পতিত করলে তাকে ঘরে জায়গা দেয় মাওলানা ইদ্রিস। কিন্তু তারপর সবাই তাকে বর্জন করে। তার পিছনে কেউ নামায পড়ে না। খুব কষ্টে দিন পার হচ্ছিলো মাওলানা ইদ্রিস এর।
এদিকে জীবনলাল জেল থেকে পালিয়ে আসে। ধনু শেখ এ�� বাড়িতে গিয়ে তাকে হুমকি দেয় যাতে জহির এর সম্পত্তি তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। ধনু শেখ এর এক পায়ে গুলিও করে। তারপর যমুনাকে সঙ্গে করে তার প্রেমিক এর কাছে নিয়ে যায়।
এদিকে জহির এর কোনো খোঁজ নাই তাই হরিচরণ এর বাড়ি এখন উন্মুক্ত। এই বাড়িতে স্থান হয়ে ছে শশাংক পাল ও সুলেমান এর। সুলেমান এর কাজ হচ্ছে ভিক্ষা করা আর শশাংক পাল এর সেবা করা।
মসজিদের নতুন ইমাম এসেছে, নাম করিম। তার প্রধান কাজ হলো মাউলানা ইদ্রিসকে সমাজ চ্যুত করা, তার নামে গুজব ছড়ানো। মাউলানা ইদ্রিস পাগল, গ্রামে পাগল রাখা যাবে না, এটাই তার মূল বক্তব্য।
জহির ফিরে এসেছে। হরিচরণ এর কবর এর পাশে বসে আছে জবুথুবু হয়ে। সে জানে না তার অগাধ সম্পত্তি। প্রথম দিনই ঝগড়া লেগে যায় ইমাম করিম এর সাথে। ইমাম করিম ঠিক করে ফেলেন, জহিরকে সে সায়েস্তা করেবেনই।
জুলেখা ফিরে এসেছে। মাউলানা ইদ্রিস এর ঘরে সে থাকে। এখন থেকে সে এখানেই থাকবে।
পুরো গল্পেই লেখক ঐ সময়কার নানারকম ঐতিহাসিক বর্ণনা দিয়েছেন। যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, ভারতবর্ষের দাঙ্গা আরো অনেক কিছু।
This entire review has been hidden because of spoilers.
The story of "Madhyanha" is set in a village in undivided Bengal (pre-independence India). Named "Bandhabpur", the village consists of people who are hardly best friends with each other, thanks to a variety of societal and religious barriers. It's a place where patriarchy is as its peak. A place where, not surprisingly, religious dogma and social stigma reign supreme. Needless to say, instituionalised misogyny is not far behind in the race.
The masterful storytelling of Ahmed takes the reader right into the belly of the beast from the very beginning. We see an up, close and personal (and very ugly) view of the ever-volatile ego of the religious leaders in the village and what happens when that ego faces a threat, the power play of those with all the money (hence, all the power), such as the zamindars, and the helplessness and vulnerability of the villagers, who barely have any other option than to shut up, keep their heads down and suck up to those two "chiefs" of the community. Most of them do it willingly and enthusiastically, courtesy of decades of indoctrination. Some of them don't, and of course, suffer the vile consequences.
Due to its remote location, the village is far away from the threats faced by places where the fights for Independence are occurring. And maybe that's why, some people in the village, especially the moneyed ones and the uneducated ones (the women), are content in their own cocoons of safety, some of which real, some imagined. Until, it's too late.
But all is not bad news for the people of Bandhabpur. There are a few glimmers of hope, which first, come in the form of a noble, widowed gentleman and then in the form a brooding, angelic-looking young man whose life turned upside down when he was only a child. He survives through the worst of times, sees the best in people and always has a clear sense of justice. He is the most empathetic fictional character I have ever come across. He has a surreal ability to sense people's suffering, even from far away. Not his family, not his fellow villagers, but any person's suffering brings him great sadness and he tries in any and every possible way to help. You can only imagine what he goes through when the nuclear bombs are dropped on Hiroshima and Nagasaki. I shuddered when I was reading it.
"Madhyanha" is a work of fine historical fiction. In my opinion, it is up there with "Sei Samay" and "Pratham Alo". It has historical characters in it, although the story is never told from their POVs. Historical characters are there in the background. The main focus is on the people of Bandhabpur, where communal forces start to appear as the British Raj makes one of its last, desperate attempts to hold on to power. You'll see many instances of "Absolute power corrupts absolutely" in this story. And just as many of the blindly sexist and downright horrible treatment of women (much of which is relevant even today in many parts of my country). At the end of most of the chapters, the author depicts a concise picture of the national and global political scene of the time, which gives context, clarity and information, which is very enjoyable for a voracious reader.
My rating of "Madhyanha" - 4.9 out of 5 stars.
This entire review has been hidden because of spoilers.
‘মধ্যাহ্ন’ উপন্যাসের লেখক মূলত ‘হিমু’ কিংবা ‘মিসির আলি’র রচয়িতা হিসেবে বিখ্যাত হলেও, বহুদিন থেকেই ইচ্ছে ছিল ওঁর অন্য ধরণের কিছু উপন্যাস পড়বো। দেখার চেষ্টা করবো জনারিক ফিকশনে হুমায়ূন অলৌকিকের সঙ্গে বাস্তবের মিশেল, এবং সঙ্গে অসামান্য সেন্স অফ হিউমার যোগ করে যে বিচিত্র রসের সৃষ্টি করতে পারেন, সেই কাজ অন্য ধরণের উপন্যাসে কতটা দেখা যায়। সেই চেষ্টাতেই প্রায় চারশো পাতার কাছাকাছি এই বৃহদাকৃতি বই নিয়ে বসা। কিছুক্ষণ আগে উপন্যাসটি শেষ হল।
মধ্যাহ্ন উপন্যাসের বিষয়বস্তু আপাত অর্থে আর পাঁচটা বাংলা ইতিহাস ঘেষা সামাজিক উপন্যাসের মতোই। বান্ধবপুর নামের অবিভক্ত গ্রামবাংলার এক গ্রামের কিছু মানুষের গত শতকের মোটামুটি প্রথম দশক থেকে পঞ্চাশ দশক অবধি জীবনকাল উপন্যাসের বিষয়। উপন্যাসের প্রথম অর্ধের টাইমলাইন যদি শুরু হয় প্রথমবার বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব পাশ করার সেই ১৯০৫ সাল থেকে, উপন্যাস শেষ হচ্ছে যখন দেশভাগ হয়ে গেছে - চতুর্দিকে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা শুরু হয়েছে। এক নজরে ভাবতে গেলে আমাদের মাথায় আসতেই পারে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘প্রথম আলো’র মতো উপন্যাস।
কিন্তু এক্ষুণি যে লেখার নাম করলাম, তার থেকে মধ্যাহ্ন-র মূলগত একটা পার্থক্য রয়েছে। সেই পার্থক্য, আমার মতে, গল্প বলার কায়দা এবং মেজাজের উপর নির্ভরশীল। উপন্যাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দাঙ্গা, দেশভাগ, মন্বন্তর ইত্যাদি থাকলেও, সমস্ত ঘটনাই গল্পের প্রান্তে - কেন্দ্রে থাকে শুধু গ্রামবাংলার সাধারণ, অতিসাধারণ মানুষের বহমান জীবনকথা। এই জীবনের কথা বলতে গিয়ে হুমায়ূন সচেতন ভাবে গল্প বলার কায়দায় ধর্ম, অন্ধবিশ্বাস, অলৌকিক ইত্যাদির সঙ্গে প্রগ্রেসিভ রাজনীতি কিংবা যুক্তিবাদের কোনো প্রখর সীমানা টেনে দেননি। ফলে মসজিদের যে ইমামকে, কিংবা হিন্দু যে ব্রাহ্মণ পন্ডিতকে গল্পের শুরুতে ধর্মান্ধ মৌলবাদী মনে হচ্ছিল - তাঁরাই গল্প চলতে চলতে ক্রমশঃ সহিষ্ণু হতে শুরু করেন - উপন্যাসের শেষে এই ইমামই ধর্মবিশ্বাস সম্বল করে দাঙ্গা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন।
আর গল্পের মাঝে মাঝে স্রোতের মত ঢুকে পড়ে অলৌকিক, ভুতপ্রেত, তাদের নানান কার্যকলাপ। হুমায়ূন, তাঁর জনারিক লেখার মেজাজ অক্ষুণ্ণ রেখে সার্থক ভাবে এই অতিলৌকিক উপাদানকে আখ্যানের স্রোতে মিশিয়ে দেন - সিঁড়ির ঘাটে একজনের বদলে অলৌকিক ভাবে দুইজন মানুষকে বসে থাকতে দেখে, কিংবা হিরোশিমায় বোমা পড়লে সুদূর বান্ধবপুরের এক মানুষের চামড়া ঝলসে যাওয়ার ঘটনা শুনে আমাদের আর অবাক লাগে না। লেখক হিসেবে সক্রিয় সচেতন ভাবে কোনো ‘র্যাশনাল’ বিন্দুতে না থাকা, চরিত্রদের ধর্মবিশ্বাস এবং সংস্কারকে মান্যতা দিতে দিতেই প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির বিরোধীতা করা - আমার মতে এই জায়গাটি লেখক হিসেবে ওঁর সবচেয়ে বড় অর্জন। আমরা সহিষ্ণুতার বুলি আউড়ে নিজেরাই নানান ক্যাম্পের মানুষজনকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিই - এ উপন্যাসে আঙ্গিকের স্তরেই এই প্র্যাকটিসের বিরোধীতা করা হয়েছে। এই জায়গাতেই, আমার মতে, উপন্যাসটি লেখনশৈলীর কায়দায় রাজনৈতিক হয়ে ওঠে।
মধ্যাহ্ন - উপন্যাস না বলে কথাসাহিত্য বলা যেতে পারে। লেখক নিজেও তাই দাবি করেছেন। কিংবা ইতিহাসআশ্রিত কথাসাহিত্যও বলা যেতে পারে। তবে ইতিহাসআশ্রিত হলেও বাড়তি এমন কিছু নেই যা পাঠকের মনে বিরক্তির সঞ্চার করবে। কল্পকাহিনির ভেতরে ভেতরে সুন্দরভাবে ইতিহাস সম্বনিত করা হয়েছে। কিছুটা কাল্পনিক, কিছুটা বাস্তবের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। পাঠককে লেখার মোহে আচ্ছন্ন করে রাখবে শেষ পাতা অব্দি।
গল্পের কেন্দ্রবিন্দু ময়মনসিংহ - নেত্রকোনার বান্ধবপুর গ্রামকে কেন্দ্র করে। বান্ধবপুরে তখন হিন্দুসমাজের একচ্ছত্র আধিপত্য। সেখানে উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র হরিচরণ সাহা তার পাকাবাড়ির পেছনে পুকুরঘাটে বসে আছেন। বয়স পঞ্চাশ, পরপর দুই স্ত্রী গত হয়েছেন এবং একমাত্র সন্তান শিউলীও তিন বছর বয়সে দিঘিতে ডুবে মারা যায়। অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী এই হরিচরণ একটা মুসলমান ছেলেকে কোলে নিয়ে আদর করায় এবং ঠাকুরঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাতচ্যুত হয়।
এছাড়াও উপন্যাসে বেশ কিছু চরিত্র রয়েছে যার কিছুটা সত্য এবং কিছুটা কাল্পনিক। শশী মাস্টার যাকে সবাই ডাকে পাগলা মাস্টার, মসজিদের ইমাম ইদ্রিস যে তার স্ত্রীকে কল্পনা করে সংসার করে চলেছে, ঠক এবং লোভী ধনু শেখ যে হঠাৎ করে ক্ষমতালাভ করে তার অপব্যবহার করে চলেছে, কাঠমিস্ত্রী সুলেমান, তার অসম্ভব রূপবতী স্ত্রী জুলেখা যে তালাকের পর জায়গা করে নিয়েছে রঙিলাবাড়িতে ( নটীবাড়ি), জুলেখার ছেলে জহির ওরফে লাবুস, জমিদার শশাঙ্ক পাল এবং প্রমুখ। এছাড়াও হরিচরণের কন্যা শিউলি যে কি না অল্প বয়সে মারা গিয়েছে অথচ তার প্রভাব রয়ে গিয়েছে উপন্যাসে। তৎকালীন সমাজের নানারকম কুসংস্কার, কুপ্রথা, হিন্দুদের ওপর মুসলমানদের আধিপত্য, রাজনৈতিক সমস্যাসহ নানাদিক লেখক অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পুরো বইটিতে।
এছাড়াও বিশ্বইতিহাসের কিছু কিছু দিক ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক তার সুনিপুণ লেখনীর মাধ্যমে। একই সময়ে গল্পের হরিচরণ যখন জাতচ্যুত হয় ঠিক সেই সময় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উপন্যাস লিখছেন এবং তিনি মনে করছেন এটি খুব নিম্নমানের একটি উপন্যাস যার নাম দেওয়া হয়েছে ' দেবদাস '। এভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ফজলুল হক প্রমুখের নাম উঠে এসেছে উপন্যাসের বেশ কিছু জায়গায়।
সম্ভব অবিশ্বাসযোগ্য কাহিনীকে সম্ভব করতে পারার ক্ষমতা এই একজন লেখকেরই আছে। লেখকের সার্থকতা এখানেই যে একজন পাঠক এই ইট পাথরের ঢাকা শহরে বসেও বান্ধবপুরের তাজা অনুভূতিগুলো উপভোগ করেছি পুরোদমে। অন্য সব বইয়ের মতো এই বইটিও অসম্ভব প্রিয় একটি বই হয়ে থাকবে।