জয়নাল দু’বার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েছে- দু’বারই ধরা খেয়েছে। নকলের খুব সুবিধা ছিল। শিক্ষকরাও নকল সাপ্লাই-এ সাহায্য করেছেন, তাতেও লাভ হয়নি। এই জয়নাল ছোট মানুষ হয়েও অনেক বড় স্বপ্ন দেখে।
শামসুদ্দিন সাহেব নান্দাইল হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজি শিক্ষক। সারা জীবনে একটি ও মিথ্যা কথা বলেন নি। কোনো মন্দ কথা বলেন নি। তিনি অনেক বড় মানুষ হয়েও ছোট স্বপ্ন দেখেন।
স্বপ্ন দেখে রাহেলা ও ইতি। একেক জনের স্বপ্ন একেক রকম।
‘আজ আমি কোথাও যাব না’ কিছু মানুষের স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের গল্প।
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
স্বপ্ন সবাই দেখে । কারো স্বপ্ন হয় অনেক বড় কারোটা হয় অনেক ছোট । সবাই চায় তার স্বপ্ন পূরণ হোক । ক্ষুদ্র মানুষ হয়েও বৃহৎ স্বপ্ন দেখা যায় । তেমন ই এক ক্ষুদ্র মানুষ জয়নাল । জয়নালের স্বপ্ন সে আমেরিকা যাবে । ইতি নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করবে । আবার শামসুদ্দীন সাহেব বড় মাপের মানুষ । শামসুদ্দিন সাহেব সংসার করেননি। শেষ জীবনে একবার আমেরিকা যেতে চান। গড়পড়তা মধ্যবিত্তর মত দু’চোখে স্বপ্ন নিয়ে নয়। কোন এক অজানা অস্বস্তিকে চোখের সামনে পরখ করতে হয়তো। বীথিকে তাঁর কোন জিজ্ঞাসা নেই, অথবা কোন সুপ্ত অভিমান, ঠিক তাও নয়। পরিণতি না পাওয়া একটা সম্পর্কের স্মৃতি ধরে অবাক একজোড়া চোখের সামনে দাঁড়াতে চান তিনি... একবার। কিন্তু কেন?
জয়নালও আমেরিকা যেতে চায়। আর পাঁচটা সাধারণ ছেলের মতই আমেরিকা তার কাছে স্বপ্নের দেশ। সব ব্যর্থতা মুছে এক নতুন জীবন শুরু করার সরল বিশ্বাসে বুক বেঁধে ওদেশের মাটিতে পা রাখতে চায় সে। ছোট পৃথু ও স্বপ্ন দেখে যে তাকে একটি ফুটবল আর জ্যামিতি বক্স কিনে দেয়া হবে । স্বপ্ন দেখে রাহেলা আর রফিক ও । এরকম অনেক মানুষ ই নানান ধরনের নানান স্বপ্ন দেখে । কারো স্বপ্ন পূরণ হয় কারোটা বা হয় না । কিন্তু কেউই স্বপ্ন দেখা ছাড়ে না । সবাই স্বপ্ন পূরণের আশায় বুঁদ হয়ে থাকে । এরকমই কিছু মানুষের স্বপ্নভঙ্গ আর স্বপ্নপূরণের গল্প হচ্ছে উপন্যাসটি |
বই: আজ আমি কোথাও যাব না লেখক: হুমায়ূন আহমেদ জনরা: সমকালীন প্রকাশনী: অন্যপ্রকাশ পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১২ মুদ্রিত মূল্য: ২৮০/-
কখনও কি এমন হয় হুট করে অপরিচিত কেউ খুবই আপনজন হয়ে যায়?
শামসুদ্দিন সাহেব ও জয়নালের সম্পর্কটা যেন এমনই। আমেরিকার পাসপোর্ট নিতে যেয়ে পরিচয়। তারপর একইসাথে শুরু হয় আমেরিকা যাওয়ার প্রস্তুতি। জয়নালের শপিং অভিযান, হাস্যরসাত্মক কার্যকলাপ পড়ে দারুণ মজা পেয়েছি। সম্মান, স্নেহ- মমতা, দায়িত্ববোধের মিশেলে শামসুদ্দিন সাহেব- জয়নালের বন্ডিং না ভোলার মতো। কিন্তু বীথি রহস্যের খোলাসা হলো না! আফসোস থেকে গেল।
"সকাল দশটার সময় সত্যি সত্যি মাঝ বুড়িগঙ্গায় জয়নাল তার পাসপোর্ট ফেলে দিল।... " প্যারাটুকু পড়ে হঠাৎ খেয়াল হলো চোখ ভিজে যাচ্ছে। সমাপ্তি বিষাদময় সুন্দর।
হুমায়ূন আহমেদের কিছু কিছু বই স্পেশাল। জীবনের যে সময়ে, যে বয়সেই সে স্পেশাল বই পড়ি না কেন, ভালোলাগা সেই আগের মতই থাকবে। এ স্পেশাল বইয়ের তালিকা করলে একদম ওপরের দিকে থাকবে 'আজ আমি কোথাও যাবো না' । স্বপ্নের গল্প, তুচ্ছ কোন জিনিসও সে স্বপ্নের চেয়ে বড় হয়ে ওঠা এবং চারপাশ ভেঙ্গে পড়া সময়েও মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়; এ সব দর্শনের দেখাই পেয়েছি এ বইতে। সেই সাথে অদ্ভূত মায়া দিয়ে পুরো বইটার প্রতিটি শব্দ লিখেছেন লেখক। জীবদ্দশায় এমন একটা বই লেখাই যথেষ্ট।
সকাল থেকে সারাদিন বেশ ধকল গেল তাই ছোট সাইজের হালকা ধরনের বই হিসেবে এটা নিলাম। এবং পড়ে অতিমাত্রায় বিরক্ত....তবে অন্যান্য রিভিউ দেখে মনে হচ্ছে আমি একাই বিরক্ত। তাই অসহায় লাগছে....আমার চরিত্র কি ক্যাটক্যাইট্টা বুড়া টাইপের হয়ে গেল নাকি যে সবকিছুতেই বিরক্ত হই!!! যাই হোক বইয়ে ফিরে আসি। লেখক খুবই অযত্নে, অন্যমনস্কভাবে বইটি লিখেছেন। আমার বিশ্বাস লেখার পর একবার পড়েও দেখেননি। এক জায়গায় বললেন শামসুদ্দিন সাহেব হালকা সবুজ শার্ট পরে আছেন পাতা না উল্টাতেই জয়নাল ওনাকে সাজেস্ট করছে পাঞ্জাবীর কোণায় নাক মুছতে!!! লেখক যদি নিজের তৈরি চরিত্রদের ভুলে বসেন তাহলে তো মুসকিল! পুরো উপন্যাসে ছোট থেকে শুরু করে মাঝারি এবং বড় আকারের ফাঁক ফোঁকরের কোনো অভাব নাই! শুধুমাত্র শিশু চরিত্র 'পৃথু'কে কিছু যত্ন করে এঁকেছেন যে কিনা আবার উপন্যাসের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ন কোনো চরিত্র না। শুধুমাত্র এই শিশু চরিত্রটির জন্য একতারা....তা না হলে অতিরিক্ত সেন্টিমেন্টাল এই উপন্যাসকে একতারাও মনে হয় দিতাম না....
রেটিং এর জায়গায় পাঁচটি তারা দিয়েছি। কিন্তু এখানে বলছি যে কিছু কিছু বই পড়ে আমি আকাশের সব তারা দেই। এই বইটার জন্যেও আকাশের সব তারা। "আজ আমি কোথাও যাব না" এই পৃথিবীর মধ্যে আমার প্রিয়তম বইগুলোর একটা। এটা আমার অনেক কাছের। অনেক সময় কাঁদতে না পারা কি যে ভয়াবহ একটা কষ্ট। অনেকটা দিন ধরে কাঁদতে চেয়েও আমি সেভাবে কাঁদতে পারছিলাম না। এই বইটা পড়ে আমি কাঁদতে পেরেছি। বইয়ের শুরুর থেকে শেষ পর্যন্তই কিছুক্ষণ পর পর আমার চোখ থেকে পানি পড়েছে আর শেষদিকে যখন কাঁদতে শুরু করলাম, কান্না থামতেও কিছুটা সময় লাগলো। কখনো একজনের অনেক মায়ার কথা পড়ে, কখনো বা একজন মানুষ কতোটা উদার সেটুকু পড়ে, কখনো বা একটা মানুষ কি ভীষণ ভালো তা পড়ে, কখনো মানুষগুলোর স্বপ্নের কথা পড়ে, কখনো তাদের আনন্দ দেখে আর কখনো তাদের কষ্ট দেখে। কিছু কিছু মানুষের মায়া, মমতা আর উদারতা দেখলে মুগ্ধ হয়ে যেতে হয়। সেই মুগ্ধতা চোখে পানি আনে। অন্যের আনন্দে ছলছল করা চোখ আর সেই সাথে মুখে ফুটে ওঠা এক চিলতে হাসি দেখে নিজের ও আনন্দ হয়। সেই আনন্দে নিজের চোখও ছলছল করে ওঠে আর অনেকটা আনন্দ হয়। আনন্দে গলা ধরে আসে। এক বই আমাকে একসাথে কতরকমের অনুভূতির দেখা ই না দিলো আজ। আর শেষদিকে যখন কাঁদতে শুরু করলাম, কান্না থামতেও কিছুটা সময় লাগলো।
আগেই তো বললাম "আজ আমি কোথাও যাব না" পৃথিবীতে আমার প্রিয় বইগুলোর একটা। এর বেশি কিছু আর বলবো না।
গল্পটা কেন ভালো লেগেছে তার একটা কারণ লিখে রাখি। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বহুদিন ধরে আমেরিকা ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছে। আমেরিকা নিয়ে বিস্তর পড়ালেখাও সে করেছে। আমেরিকায় কি কি ঘুরে দেখার মত আছে সেসব নিয়ে আলাপটা ভালো লেগেছে। কারণ আমারও গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখার ইচ্ছা আছে। এছাড়া অটামে লাল কমলা রঙের গাছ দেখারও ইচ্ছা আছে। জায়ান্ট সেকুইয়া ট্রি, পাইনের বন দেখার ইচ্ছা আছে।
গল্পে ছোট একটা ছেলে আছে। নাম পৃথু। তাকে ভালো লেগেছে। বিছানায় পেশাব করে বলে মা তাকে শাস্তি দেয়। সে শবেবরাতে আল্লাহর কাছে দোয়া করে যেসব জিনিস চেয়েছে সেগুলো আমারও পেতে ইচ্ছা করে। ১. একটা ডোনাল্ড ডাকের ছবিওয়ালা পেন্সিল বক্স। ২. ব্যানানা ইরেজার, যেটায় ব্যানানার মত সুগন্ধ আছে। ৩. তালাচাবি দেওয়া খাতা। ৪. অনেকগুলো পকেটওয়ালা প্যান্ট। ফুলপ্যান্ট, আবার একটা জিপার আটকে হাফপ্যান্ট হিসেবেও পরা যায়।
বইটা প্রথম যখন পড়তেছিলাম মনে মনে একরাশ বিরক্ত হচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম হুমায়ূন আহমেদ কিছু বই স্রেফ বইয়ের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য লিখেছেন ( এটা ১০০ ভাগ সত্য। তার প্রমাণ তার কিছু বই পড়লেই বোঝা যায় ) ল। কিন্তু এই বইয়ের শেষটা একদম মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো ছিল।
"আমি তোমাকে ভালোবাসি তার মানে কি এই, যে আমি তোমার জন্য অস্থির হয়ে থাকি?" Oh, yearning! Can it be any more beautiful than the way Humayun Ahmed captured it through this simple line? "আজ আমি কোথাও যাবো না " _ আমার অনেক বেশি পছন্দের বই না। আগেও হয়তো পড়েছিলাম কোন একসময়। নাম ধাম আর কাহিনী সব তালগোল পাকিয়ে বসে ছিলাম। শুধু এই লাইনটা সামনে আসার আগ অব্ধি নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। this line felt terribly haunting, আগেও আর এখনো।
যেই অনুভূতিগুলোকে আকার কিংবা অবয়ব দিতে যেয়ে আমি মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে খেতে হারিয়ে ফেলতাম আর এখনো হারিয়ে ফেলি, হুমায়ুন আহমেদ আর রবীন্দ্রনাথ সেগুলো কি অবলীলায়ই না লিখে রেখে গেছেন বহু আগেই!
এইতো কদিন আগেই গুলতেকিন, শাওন আর হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে আবারও সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। হুমায়ুন আহমেদ গুলতেকিনকে সত্যিই ভালোবাসতেন কিনা জানি না, কিন্তু আমি উনার লেখার মধ্য দিয়েই ভালোবাসা-বাসির ব্যাপারটা জানতে শিখেছি and i am real proud about that। সহজে মুগ্ধ হওয়ার বয়েস টা হয়তো পার করেছি অনেক আগেই।হুমায়ুন আহমেদের প্রতি আবেদন এর ধরনটাও হয়তো বদলেছে, কিন্তু কমেনি একটুও। রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে হুমায়ুন আহমেদ কারোরই ব্যক্তিজীবন, কখনোই ওঁদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা বা ভালোবাসার জায়গাটাকে এক বিন্দুমাত্র নড়াতে পারেনি। আর পারবেও না।
( note August 27 and October 7)
শুভ জন্মদিন, হুমায়ুন আহমেদ। আপনি এখনো যেভাবে বেঁচে আছেন, আরও অনেক শত বছর ধরে এভাবেই বাঁচবেন জানি।
মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা বড্ড বেশিই ছোটাছুটি করি। আশেপাশের মানুষ কেন অনেক সময় পরিবার আর প্রিয় মানুষের দিকেও তাকিয়ে দেখার সময় হয় না, স্বপ্ন হাতছানি দিয়ে ডাকে যে!কোথাও তাকানোর সময় নেই। মাঝে মাঝে থামলে এমন কি ক্ষতি হয়ে যায়! জয়নালও থেমেছিল কিন্তু কোনো রক্তের সম্পর্কের দাবিতে নয়। তাকে থামিয়েছিল অপরিসীম মায়া, মমতা আর ভালোবাসা।তাই বলে কি সফলতা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে!? একটু থামুন না!আজ কোথাও নাই বা গেলেন :)
"বুঝলেন চাচাজি, গোলাপি রঙের মাফলার কেনা ঠিক হয় নি। আমেরিকায় গোলাপি হলো মেয়েদের রঙ। শামসুদ্দিন খুবই বিস্মিত হয়ে বললেন, মেয়েদের রঙ বলে আলাদা কিছু আছে নাকি?
আমেরিকায় আছে। আমেরিকায় গোলাপি হলো মেয়েদের রঙ, নীল হলো ছেলেদের রঙ। বড়ই আজিব দেশ। তাই তো দেখছি।"
জেন্ডার রোলস নিয়ে এই অংশটা অনেক ভালো লাগলো, আর সত্যি বলতে পুরো বইয়ে এই পার্টটা নিয়েই লিখতে ইচ্ছে করছিলো। তাই জাস্ট এটুকু নিয়েই লিখলাম।
অনেকগুলো ছোট-খাট ভুল-ত্রুটি করেও (যেমন পরনের সবুজ পাঞ্জাবী পরের পৃষ্ঠায় কোনও ঘটনা ছাড়াই সাদা পাঞ্জাবী হয়ে যাওয়া), সম্পূর্ণ প্রেডেক্টেবল কাহিনী লিখার পরেও মানুষের ভেতরের আবেগকে ধরে নাড়া দেয়ার অস্বাভাবিক অতিমানবিক ক্ষমতা মনে হয় শুধু হুমায়ুন সাহেবেরই ছিল! আশ্চর্য এক লেখক! লিখাটাতে কিছুই নেই, কিচ্ছু না, তবু পড়তে বিরক্ত লাগে নি।
বইয়ের সমাপ্তি টা পরে কান্না আসি আসি করার মতো অবস্থা। সব কিছু ঠিকঠাক লেগেছে।গল্পের প্রতিটা চরিত্র কে নিজ নিজ জায়গায় সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যখনই মনে হতো এই রে ঝামেলা একটা হবে রে তখনই দেখতাম সব ঠিক। লিখা সবসময়ই উনার সুন্দর আর সাবলীল হয়।
সত্যি ই শেষ মুহূর্তে এমনই মনে হয়! আজ আমি কোথাও যাবো না; মানুষের স্বপ্ন এবং স্বপ্নেভঙ্গের এ এক অদ্ভুত গল্প। 🍀 প্রতিটি মানুষের অনেক চাওয়া পাওয়া আর অনেক স্বপ্ন থাকে। তেমনি স্বপ্ন আছে জয়নাল এর স্বপ্ন আছে শামসুদ্দীন সাহেব এর ও। একজন আমেরিকা যাবে নিজের ভাগ্যপরিবর্তন করতে আর অন্যজন যাবে কোনো এক কালে যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল এবং পরে বিয়ে ভেঙে দেয়া সে রমণীর সাথে দেখা করতে। হয়তো জীবনের শেষ বয়সে জমে থাকা কিছু অব্যক্ত কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতেই মুখোমুখি হতে চেয়েছিল। আবার স্বপ্ন আছে রাহেলা বা রফিক এরও৷ কত জীবন শেষ হয়ে যায় মানুষের কত চাওয়া পাওয়া পূরন হয় না। কত গোপন ইচ্ছে রয়ে যায় অগোচরে ; জয়নাল চরিত্র টা অনেক চমৎকার ছিল। কি সুন্দর আর সহজ! ইতি চ্যাং ব্যাং প্রকৃতির মেয়ে। তাড়াতাড়ি বিয়ে না করলে আবার অন্য ক��রো সাথে ঝুলে পরতে পারে😄! এত মজা লাগছিল এটা পড়ে। আবার যখন ইতি ওর রুমে আসে কথা বলে ওর সাথে তখন সে মনে মনে দুঃখবোধ করে এত সুন্দর মেয়েকে কেন সে চ্যাং ব্যাং ভাবতো! 🌸 হুম চ্যাং ব্যাং ইতি সত্যিই সুন্দর আর বুদ্ধিমতী ও ছিল । সুন্দর ছিল জয়নাল নিজেও। তা না হলে কি এত সহজে নিজের স্বপ্নের টিকিটকে ছিড়ে টুকরো করে ফেলে দিতে পারে বুড়িগঙ্গা নদী তে!🍁 পরিশেষে একটা কথা বলতেই লেখকের আরেকটু যত্নেে এই বইটা আরও অসামান্য হতে পারতো। মাঝে মাঝে গল্পে অসামঞ্জস্য ধরা খেয়েছে। লেখকদের বই প্রকাশ এর তাড়া বা প্রিন্টিং এর ভুল অথবা আগ্রহের এর কমতি এর জন্য সুন্দর গল্পেও চিড় ধরে যায়। সব লেখকের উচিত পাঠকদের একটি যত্নবান লিখা উপহার দেয়া।💚
কি অদ্ভুত ব্যাপার তাই না? সাদা রঙের ক্যানভাসে আর কোন রং ছাড়া শুধু কালো রংয়ের ব্যবহার করে একজন মানুষ কী অবলীলায় বিষন্ন সুন্দর মায়া ছড়িয়ে গিয়েছেন আমাদের জন্য।
হুমায়ূন আহমেদের বই আমি অনেক পড়েছি কিন্তু এই লেখাটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। নিচের লেখাটা পড়ার সময় অনেক বেশি আবেগ তারিতো হয়েছি যা আমাকে চোখে সিক্ততা তৈরি করেছে। লেখক এটাই চেয়েছিলেন হয়তো৷
"ওটির সামনে সবাই ভিড় করে আছে। শুধু জয়নাল সেখানে নেই। সে বেবিটেক্সি নিয়ে তার বাসায় চলে গেছে। বাসা থেকে সে পাসপোর্টটা নেবে। সেখান থেকে যাবে বাদামতলী। বাদামতলী থেকে একটা নৌকা ভাড়া করে সে যাবে বুড়িগঙ্গার মাঝখানে। মাঝ বুড়িগঙ্গায় সে আল্লাহকে বলবে–আল্লাহপাক, আমি আমার জীবনের সবচে প্রিয় জিনিসের বিনিময়ে চাচাজির জীবন ভিক্ষা চাইছি। আমার সারা জীবনের শখ আমেরিকা যাওয়া। আমি আমেরিকা যাব না। আল্লাহপাক, আমি পাসপোর্টটা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিচ্ছি।
সকাল দশটার সময় সত্যি সত্যি মাঝ বুড়িগঙ্গায় জয়নাল তার পাসপোর্ট ফেলে দিল। শামসুদ্দিন সাহেব মারা গেলেন সকাল এগারোটায়। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তার জ্ঞান ছিল। তিনি চারদিকে তাকিয়ে জয়নালকে খুঁজলেন। বিড়বিড় করে বললেন, পাগলাটা গেল কোথায়?"
This entire review has been hidden because of spoilers.
জয়নাল দু’বার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েছে। দুইবারই নকলের খুব সুবিধা ছিল। শিক্ষকরাও নকল করতে সাহায্য করেছিল তাকে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি । দুই বার-ই ধরা খেয়েছে সে।জয়নাল ছোট মানুষ হয়েও অনেক বড় স্বপ্ন দেখে। তার আজন্ম স্বপ্ন সে আমেরিকা যাবে। সেখানে গিয়ে তার ফাটা কপাল কে জোড়া লাগাবে। অপরদিকে শামসুদ্দিন সাহেব নান্দাইল হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজির শিক্ষক। সারা জীবনে কখনো কোন মিথ্যা কথা বলেননি। জীবনে নিজের জন্য কোন স্বপ্ন দেখেননি। তবে জীবন সায়াহ্নের শেষ পর্যায়ে বড় মানুষ হয়েও তিনি একটি ছোট স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন দেখে মধ্যবিত্ত পরিবারের দুই মেরুর দুই মানুষ রাহেলা এবং ইতিও। একেকজনের স্বপ্ন একেক রকম। কিছু মানুষ সারাজীবন চেষ্টা করেও তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনা। খুব কম মানুষের কাছেই তাদের স্বপ্ন সত্যি হয়ে ধরা দেয়। "আজ আমি কোথাও যাবো না" কিছু মানুষের স্বপ্নপূরণ এবং স্বপ্নভঙ্গের গল্প।
❝ওটির সামনে সবাই ভিড় করে আছে। শুধু জয়নাল সেখানে নেই। সে বেবিটেক্সি নিয়ে তার বাসায় চলে গেছে। বাসা থেকে সে পাসপোর্টটা নেবে। সেখান থেকে যাবে বাদামতলী। বাদামতলী থেকে একটা নৌকা ভাড়া করে সে যাবে বুড়িগঙ্গার মাঝখানে। মাঝ বুড়িগঙ্গায় সে আল্লাহকে বলবে–আল্লাহপাক, আমি আমার জীবনের সবচে প্রিয় জিনিসের বিনিময়ে চাচাজির জীবন ভিক্ষা চাইছি। আমার সারা জীবনের শখ আমেরিকা যাওয়া। আমি আমেরিকা যাব না। আল্লাহপাক, আমি পাসপোর্টটা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিচ্ছি।❞— এই অংশে চোখে পানি চলে আসছে।
হুমায়ূন আহমেদের ‘আজ আমি কোথাও যাব না’ উপন্যাসটি একটু অতিরিক্তই অন্যরকম। জানি না যে এত্ত দারুণ এবং দারুণ একটি উপন্যাস তিনি কীভাবে লিখলেন। ‘আজ আমি কোথাও যাব না’ উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে মনে হবে যে প্রতিটি শব্দ আর বাক্য হৃদয়ের এক্কেবারে গহীনে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। উপন্যাসটির প্রত্যেকটি পরত এত্ত এত্ত মায়া আর ভালোলাগায় জড়ানো! অনেকদিন অনেকদিন এবং অনেকদিন যদি কান্না না করে থাকেন তাহলে ‘আজ আমি কোথাও যাব না’ পড়েন। দেখবেন যে উপন্যাসটি শেষ হতে না হতেই আপনার চোখে নোনা জল টলটল করছে। তখন আপনি আর নিজেকে স্থির রাখতে পারবেন না, কোনোক্রমেই পারবেন না। ‘আজ আমি কোথাও যাব না’ এত্ত হৃদয়গ্রাহী কেন? এতবার পড়া সত্ত্বেও এই উপন্যাসটির নতুনত্ব ফুরায় না কেন? হুমায়ূন আহমেদ কীভাবে লিখলেন এত্ত দারুণ একটি উপন্যাস?
Onekdin shelf e pore thakar por o bivinno bestotay boi ti pora hoy ni. Aj mon kharap e humayun sir er likhar paglami te dubte iccha korlo. Lekhok bodh hoy besh onnomonoshko bhabe likhechen besh chara chara legeche tobe ajker amar moner obosthar sathe mile geche ti bodh hoy onno shomoy porle jotota na lagto tar theke beshi e bhalo laglo boi ti.