Jump to ratings and reviews
Rate this book

বারো ঘর এক উঠোন

Rate this book
Baro ghar ek uthon is a bengali book written by a renowned author jyotirindra nandy.

343 pages, Unknown Binding

First published March 21, 1956

3 people are currently reading
150 people want to read

About the author

Jyotirindra Nandi

23 books12 followers
জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী-র জন্ম ২০ আগস্ট, ১৯১২ অধুনা বাংলাদেশের কুমিল্লায়। বাবা অপূর্বচন্দ্র নন্দী, চারুবালা নন্দী। বাল্য কৈশোর কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ১৯৩০-এ ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্নদা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ। কলেজ-জীবনে সাহিত্যচর্চায় সক্রিয়। ১৯৩১-এ স্বদেশি আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ও কারাবাস। এক বছর গৃহবন্দি, জ্যোৎস্না রায় ছদ্মনামে লেখালেখি। ১৯৩২-এ কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই এসসি পাশ করে ওই কলেজেই বি এ-তে ভর্তি। বি এ পাশ ১৯৩৫-এ। ১৯৩৬-এ. ‘পরিচয়’ ও ‘দেশ’ পত্রিকায় গল্প প্রকাশ, বৃহত্তর পাঠকমহলে পরিচিতি। কলকাতায় আসেন ১৯৩৭-এ। বেঙ্গল ইমিউনিটি, যুগান্তর, টাটা এয়ারক্রাফট, জে ওয়ালটার টমসন, দৈনিক আজাদ, মজদুর পত্রিকা, জনসেবক সহ নানা জায়গায় কাজ করেছেন বিভিন্ন সময়ে। ১৯৪৬-এ বিবাহ, স্ত্রী পারুল। ছোটগল্পকার হিসেবে দৃষ্টি আকর্ষণের পর ১৯৪৮-এ ‘দেশ’ পত্রিকায় লিখতে শুরু করেন ধারাবাহিক উপন্যাস ‘সূর্যমুখী’। আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত হন ১৯৬৬ সালে। সরল, আত্মাভিমানী, অন্যধারার এই লেখক প্রয়াত হন ১ আগস্ট, ১৯৮২।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
13 (24%)
4 stars
24 (45%)
3 stars
13 (24%)
2 stars
2 (3%)
1 star
1 (1%)
Displaying 1 - 12 of 12 reviews
Profile Image for DEHAN.
275 reviews86 followers
December 13, 2020
বারোটা ঘর মিলে একটা বস্তি ।জীবন এই বস্তিতে অতিরিক্ত পরিমাণে নির্মম । এখানে যারা এসে থাকছেন সবাই পূর্বে স্বচ্ছল ছিলেন কিন্তু এখন নেই । বারোটা ঘরে অনেক গুলা দরিদ্র জীবন একত্র হয়ে মিলেমিশে আছে ।
তা এখানে মিলেমিশে কথাটা ব্যবহার করা কি খুব যুক্তিসঙ্গত হচ্ছে? মনে হয় না । দারিদ্র গুণনাশিনী । দারিদ্র মানুষের চিন্তাভাবনা , আচার আচরণ , দৃষ্টিভঙ্গি সব কিছুতেই আঘাত করে । কি যেন বলছিলাম ? হ্যাঁ বারো ঘরের কিচ্ছা ।
বারো টা ঘরে বারো রকম মানুষের বসবাস ।
গল্পের নায়ক শিবনাথ একসময় ব্যাংকে চাকুরী করতো । চাকুরী টা যাওয়ার পর সে এই বারো ঘরের এক ঘরে এসে উঠে । শিবনাথ এর স্ত্রী রুচি একটা স্কুলের টিচার । তার আয়েই সংসার চলে । শিবনাথ এখন বেকার । স্ত্রী একমাত্র কন্যা মঞ্জু কে নিয়ে স্কুলে চলে যাওয়ার পর ঘরে বসে বসে অন্য ঘর গুলোর মানুষের কথা শুনে । শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে গেলে শিবনাথ বাইরে বের হয় । সাক্ষাৎ হয় মুদি দোকানদার বনমালির সাথে , কোন ব্যবসা তেই সুবিধা করতে না পারা বলাইয়ের সাথে , মাতাল কে. গুপ্তর সাথে , নাপিত পাচুর সাথে , চায়ের দোকানের মালিক রমেশের সাথে , বছর বছর বাচ্চার বাপ হওয়া বিধু মাষ্টারের সাথে , মেয়ের বিয়ে নিয়ে চিন্তিত শেখর ডাক্তারের সাথে ... শিবনাথ বুঝতে পারে এইখানে কেউ ই সুখী না । সবাই জীবনের নিষ্ঠুরতম পরিহাসে জর্জরিত হয়ে আছে।এমনকি কেউ কারু ভালো দেখতে পারে না । সবাই পরস্পরকে হিংসা করে । একসময় তার মনে হয়- সে একদিন এদের মতো হয়ে যাবে নাতো!
আসলে আমার জীবন সম্পর্কে চিন্তাভাবনাতেও উপন্যাস টা আঘাত করছে । মানুষের জীবন এমন ও হয় ! সব ই তো বাস্তব মনে হলো । যেন সবকিছু চোখের সামনে দেখছি । এই উপন্যাসের দুইটা পৃষ্ঠা আমার সারা জীবন মনে থাকবে । আমি কখনো ভুলতে পারবো না । দারিদ্র , অভাব দেখতে এতো ভয়ানক হয় কে জানতো !
ভালো উপন্যাস পড়ার পর নিজের ভেতর একটা বিস্ফোরণ হয় । এইটা পড়ার পর হইছে পারমানবিক বিস্ফোরণ । তিরিশ চল্লিশটা তারা দিতে পারতাম যদি । তা তো আর পারবো না ।
এই ধরনের বইগুলো সকলের পরা উচিৎ । কিছু জানতে পারেন আর নাই বা পারেন কিন্তু জীবনে যে কখনো কখনো সাফল্যের গৌরব থেকে বঞ্চিত হয়েও বেঁচে থাকতে হয় এবং ধৈর্য্যের পরীক্ষায় উর্ত্তীন্ন হওয়ার জন্যই কখনো বড় ধরনের অসফলতার লাঞ্ছনাও খুব হাসিমুখে সহ্য করে নিতে হয় সেটা নিশ্চয় শিখতে পারবেন ।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
June 5, 2023
একটু স্লো... কিন্তু অনেক সুন্দর।


কলকাতা তখন একটু একটু করে বড় হচ্ছে। বেলেঘাটা তখনও অত উন্নত হয়নি। বস্তিটাইপ এলাকা হলেও শহরের ভদ্রঘরের মানুষজন যারা 'এক্সপান্ডিং কলকাতা'র সাথে পাল্লা দিয়ে পারছিল না, তারাই আশ্রয় নিত সেই এলাকায়।
ছোট্ট এক চিলতে উঠানকে ঘিরে ১২ টা ঘর। বারোটা সংসার। বারো ধরণের জীবন। কেউ কারও জন্য আটকে থাকে না.. জীবন চলতে থাকে জীবনের নিয়মে।
Profile Image for রিফাত সানজিদা.
174 reviews1,356 followers
September 23, 2018
অপন্যাস, কোবিতা আর কাব্যজগতের বাইরের শিল্পসুধাবিহীন, অনিশ্চিত যে নগ্ন জীবন, যে জীবনে বাড়িভাড়া দিতে হয়, বাজারের টাকায় টান পড়ে, রাতে শুয়ে পড়তে হয় না খেয়েই, স্যান্ডেল ছিঁড়ে গেলে রাস্তায় মুচি খুঁজে তালি দিয়ে নিতে হয়, ভীষণ অসুখ চিকিৎসা ছাড়া পুষতে হয় মাসের পর মাস, মেয়েদের নামতে হয় পথে, বেচতে হয় শরীর..
সেই জীবনের গল্প।

যে অভাব মানুষকে পাশবিক জীবনযাপনে বাধ্য করে, তেমন অভাবের গল্প পড়তে গেলে মন খারাপ হয়।
Profile Image for Anik Chowdhury.
175 reviews36 followers
May 4, 2022
বারোটা ঘর একটি উঠোন, তাই নিয়ে 'বারো ঘর এক উঠোন'। নামটার মধ্যেই বলা আছে বইয়ের অনেকটা।
সবে দেশ স্বাধীন হয়েছে, চারদিকে তার তোরজোর। তবে এর মাঝে চাকরি হারিয়ে আরে বহু মানুষের মতো পথে বসেছে শিবনাথ। স্বল্প খরচে জীবন ধারণের জন্য রওনা দেয় শহরতলীতে। বেকার শিবনাথ চলে স্ত্রী রুচির স্কুলের শিক্ষকতা করে কামানে পয়সায়। তাই বেলেঘাটাতে বাসা নেয় একটা বস্তিতে। সেখানে বস্তির মোট বারোটি ঘর একটি উঠোন। এইরকম খন্ড খন্ড করে বানানো বস্তির আট নম্বর বস্তির বারো নম্বর ঘরে জায়গা হলো তাদের। সেই বারো ঘরে বারো রকমের পরিবারের বাস। তাদের নিয়েই আবর্তিত আমাদের উপন্যাসের প্লট।। কমলা, হিরণ, রমেশ, ক্ষিতিশ, কে. গুপ্ত, মল্লিকা, বিধু মাস্টার, শেখর ডাক্তার, কিরণ, অমল,প্রমথর দিদিমা, প্রভাতকণা, প্রীতি, বীথি সাথে দোকানদার বনমালী এবং দোকানদার পারিজাত তার স্ত্রী দীপ্তি সহ আরো বহু চরিত্রের সমন্বয়ে এই বই। কলকাতার বস্তি জীবনকে লেখক অসাধারণ নৈপুণ্যের সাথে জায়গা দিয়েছেন তার বইয়ের পাতায়। জীবনের উঠা পড়া, উঁচুনিচু অংশকে সাহিত্যের আঙিনায় জায়গা দিয়েছেন তার লেখার সাহায্যে। কত রকম চরিত্রের মানুষকে কতরকম ভাবেই না তুলে এনেছেন তা একটু মনোযোগ দিলেই পাঠক বুঝতে পারে। নাক উঁচু শিবনাথ যেমন শিক্ষার গরিমা নিয়ে বস্তি থেকেও বস্তির অন্য বাসিন্দদের থার্ড ক্লাস বলতে মুখে আটকানোর চেষ্টা করেন না, আবার অন্য দিকে সেই থার্ড ক্লাস মানুষগুলোর মধ্যের কিছু মানুষের সাথেই সে তার বৈষয়িক জীবনের শলাপরামর্শ পর্যন্ত করতে দুইবার ভাবেন না। অন্যদিকে কে. গুপ্তর মতো মানুষ যার আগে পিছে একসময় কর্মচারীরা লাইন দিতো সেও আজ অথর্ব হয়ে হয়ে সমাজের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে ধুঁকছে। রমেশের মতো মানুষ দু'চারটা সব জায়গায় দেখা যায়, যে নিজের লাভের গুড় গোছাতে মহা ধুরন্ধর।

"বারো ঘর এক উঠোন" আসলে বিশাল একটা সমাজের একটা খন্ড তুলে ধরেছেন লেখক। এত এত চরিত্রের মাঝে প্রথমদিকে তাল হারিয়েও ফেলেছি। তবুও প্রশংসা করবো লেখকের লেখার। তিনি তাঁর লেখা দিয়ে সমাজের এমন একটা অন্ধকার কিংবা বলা চলে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিগোচর না হওয়া সমাজকে তুলে এনেছেন তার লেখা দিয়ে। কাহিনীকে গতিময় করে তুলেছেন নানান চরিত্র দিয়ে। কখনো এই ঘরের চিত্র তো কখনো তার পাশাপাশি ঘরের চিত্র। কারো ঘরে ইলিশ তো কারো ঘরে শুধুমাত্র সেদ্ধ তরকারি। মানুষের জীবনের বৈচিত্র্যময় দিকগুলোকে অনবদ্য ভাবে পড়ে গিয়েছি। তবুও অনেকদিন লাগলো শেষ করতে। শেষ করে তৃপ্ত হয়েছি বললে অত্যুক্তি হবে না বোধ করি। বিরাট পরিসরে লেখা বইয়টিতে চরিত্রগুলোর বর্ণনা পাঠককে ভাববে। মানুষের পতনের কারণে সমাজ যে তাকে মাঝে মাঝে আস্তাবলে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই বইয়ের কে. গুপ্ত, শিবনাথ সহ আরো অনেকেই। যারা একসময় সমাজের একটা উঁচু স্থানে বাস করতো তারাই আজ পর্যুদস্ত।

'বারো ঘর এক উঠোন' বইটির নির্মম সত্যগুলো বেশ আঘাত করবে পাঠককে। মানুষের চরিত্রের দিক নিয়ে লেখক তাঁর চরিত্রগুলোকে দিয়ে এমন সব কথা বলিয়েছেন বা এমন সব কাজ করিয়েছেন যা দেখে মনে হবে এটা তো আমার সমাজেরই পারিপার্শ্বিক অবস্থা! লেখক এখান থেকেই হয়তো তার বইয়ে স্থান দিয়েছে। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী সাহেবের পর্যবেক্ষণ দৃষ্টির প্রশংসা না করলে এই আলোচনা অসম্পূর্ণ মনে হবে!
Profile Image for Ësrât .
515 reviews85 followers
November 11, 2022
যার নেই পুঁজিপাটা সে যায় বেলেঘাটা

মুক্তোরাম স্ট্রীট ছেড়ে বারো ঘরের একঘরের বাসিন্দা হতে আসা শিবনাথ সু��ুচির অভিজ্ঞতা খুব সুখকর অনুভূতির আলোড়ন যে তুলছিলো না এক কথা কয়েকপাতা পড়লেই বেশ বোঝা যায়;শঙ্কায় দ্বিধায় সুযোগ সুবিধাময় সময়ের সেতুটার সম্পর্ক এমন সমাপ্তির রেখা টা দম্পতিদের দাম্পত্যের দূর্যোগের ঘনঘটায় আশেপাশের ফ্ল্যাটে কেউ মুচকি হেসে কেউ বা বেচাল বোলে ফেঁসে জানিয়েই দিয়েছিল বস্তিতে যাওয়া বাস্তুরা এ ঝকঝকে তকতকে সমাজে উদ্ভাস্তু-না ঘারকা না ঘাটকা।

বিচিত্র সব প্রানীদের জীবনের সচিত্র এ গল্পের পরতে পরতে সুখ দুঃখ হাসিকান্না যেন হীরে পান্না হয়ে জড়িয়ে আছে একে অপরের সঙ্গে।মাঝের কিছু কুটকাচালিতে মল্লিকা আর যশোদা দা কুমড়ো হয়ে পতির যোগ্য সতী প্রমানে রমেশ আর পাঁচুর পাঁচালি পড়ে যদি ক্লান্ত হয়ে পড়েন;

তিষ্ঠোন ভদ্রসমাজের ভদ্রলোকগন
পিকচার আভি বহুত বাকি হে,-


ব্যোমকেশের চিড়িয়াখানার চালচিত্র মনে করিয়ে দিবে এই বিচিত্রদের বৈচিত্র্য।কি নেই এদের জীবনে?

অভাব আছে,আহারান্তে কখনো মাসকলাইয়ের ডাল , কাকে চিলেও মুখে দেয় না এমন কুঁচো চিংড়ি সাথে দশখানা রেশন কার্ডেও ঘরে রোশনাই আনতে না পারা বিধু মাস্টারের নীড়ে তাও বছরান্তে মা ষষ্ঠীর কৃপাদৃষ্টিতে দাড়ি তো দূরে থাক কমা দিতেও নারাজ লক্ষ্মীমনির চন্দ্রকান্ত স্বামী প্রীবরটি।

ন্যাকা থেকে বোকা,গোয়ার থেকে গাধা পারিজাতের আট নাম্বার বস্তির খোয়াড়ে যে একবার ঠাঁই নিয়েছে হয় সময় তাকে সরিয়ে নয়তো ঝালিয়ে পুড়িয়ে গুছিয়ে নিয়েছে নিজের মতো।

দুহাজারের চাকুরে পাড়মাতাল গুপ্তের গূহ্যগোপন গালগল্পের সাথে ফ্রিতে জল মেশানো ছল দেখানো শেখরবাবুর হোমিওপ্যাথি তে মন না ভরলে প্রীতি বিথী কমলার কথকতা তো রইলোই।

মন মজলো না?বসুন তো মশাই

হালের YOU দেখে ব্রেস ইউরসেলফ বলার মতো ফাঁকা বুলি ছাড়বো না মশাই তবে অমলবাবুর অমূল্য কমল কিরনের কিছু কথার সাথে "পেটে খিদে পিঠে কিল"এ যেন চিরায়ত বাঙালী বধূর গল্প।


অভাবের সাথে সুস্বভাবের সমন্বয় সেই সময়েও যেমন সত্যি ছিল আজকে এই হীরক রাজার দেশে নিজের বাড়ির ঠিক নিচেই তিনটে টিনশেডের এক কামরা বারান্দাওয়ালা কিংবা টিসিবি ট্রাকের সামনে সুলভ মূল্যে সওদা করতে আসা সুবিধাবঞ্চিতদের এই বারো ঘর এক উঠোনের গল্প লুকিয়ে বাঁচিয়ে দেখে হয়ত দুফোঁটা অশ্রু আবার পড়বে কোনো জীবনযুদ্ধে হেরে যখন হারিয়ে যেতে চাইব।

রেটিং: ⭐🌟🌠💥.৮০
১৮/১১/২১
Profile Image for Bayazid Khan.
14 reviews8 followers
September 20, 2018
বেলেঘাটার বারোয়ারিতলায় একটা বস্তি দেখে এসে আমাকে বললেন, ‘ওই বস্তিতে থাকতে হবে।’ আমি সম্মতি জানালাম। লেখার তাগিদে ওই বেলেঘাটার তেরো ঘর বস্তির মধ্যে আমরা ছিলাম। উনি তেরো ঘর নাম না দিয়ে উপন্যাসের নাম রাখলেন ‘বারো ঘর এক উঠোন’।’’

সাহিত্যিক স্বামী জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীকে নিয়ে বলতে গিয়ে এক জায়গায় এমনই কথা লিখেছিলেন স্ত্রী পারুলদেবী। আজীবন অর্থের মুখ দেখেননি। জীবনে ‘জনপ্রিয়তা’ পাননি। অথচ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম একটি বড় সম্পদ আজ আমাদের কাছে -" বারো ঘর এক উঠোন"।

ব্যাংকের চাকরি খোয়া যাওয়ায় কলকাতার ফ্ল্যাট ছেড়ে বেলেঘাটায় একটা বস্তিতে ১২ নম্বর ঘর ভাড়া নেয়, শিবনাথ ও রুচি। সাথে পাঁচ বছরের কণ্যা মঞ্জু। শিবনাথের চাকরি না থাকলেও তার স্ত্রী একজন স্কুল টিচার। সেই টাকাতে সংসার। ১২ নম্বর ঘরের বাসিন্দা ছাড়াও রয়েছে আরও ১১ ঘর!

গ্রামে এরকম হরহামেসা দেখা যেত সারি সরি ঘর মাঝখানে এক উঠোন। উপন্যাসেও ঠিক একই রকম। বারো ঘরের বাসিন্দাদের একটিমাত্র উঠোন। কিন্তু এখানের গল্প অন্যরকম, অন্যরকম এক জীবন যাত্রা, অন্যরকম এক বস্তির গল্প!

এরেই এক ঘরে কে গুপ্তের পরিবার। একসময় হাজার টাকা মাইনে পাওয়া গুপ্তের পরিবারকে বেশিরভাগ রাতেই খেতে হয় আধাসেদ্ধ কপি আর মুলো। বলাইচরনকে করতে হয় সাবান ফেরি। আরেকঘরে কমলা, সে একজন নার্স। আছে বিধু মাষ্টারের পরিবার যার স্ত্রী প্রতিবছর সন্তান প্রসব করে যাচ্ছে। শেখর ডাক্তার। আছে শয্যাগত ভুবন ও তার পরিবার। বাড়ির মালিক পরিজাতের একান্ত অনুগত আছে রমেশ। আছে আরও অনেকে। প্রায় প্রত্যেক ঘরেই চলে নিত্য নতুন অভাব।

উপন্যাসের পটভুমিটা দেশভাগের পরে। সেসময় দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক অবস্থা। চাকরি থেকে গণহারে লোক ছাঁটাই। অসহায়, নিম্নবিত্ত, কর্মহীন, অশিক্ষিত, মানুষের গল্প নিয়ে লেখকের "বারো ঘর এক উঠোন"। ক্ষুধার তাড়নায় চুরি, বেশ্যাবৃত্তি, ব্যভিচার, ধার-দেনা, করে বেঁচে থাকার তাগিদ। অবৈধ পথে উচ্চপথের দিকে গমনের চেষ্টা। অবাদে সন্তান জন্ম। এসবেরই বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন লেখক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী।

এসবের মাঝেই নিজেদের শিক্ষা, রুচি কে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছে শিবনাথ পরিবার। কিন্তু শেষের দিকে দেখা যায় পরিবেশের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাদের গল্প! এর উল্টোদিকেই এই বারো ঘরের ঘঠনার সাথে জড়িয়ে আছে জমিদার ও তারপুত্র ও পুত্র বধুর বিলাসী জীবন।

উপন্যাসে প্রচুর চরিত্র। পড়তে পড়তেই চরিত্র মনে রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। আজ থেকে প্রায় ৬৩ বছর আগে বইটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু পড়ার পর মনে হলো, যেন এইসময়কার কথা লেখক হুবহু দেখতে পেয়েছিলেন। উপন্যাসটা যেন বর্তমানেরই আরেক বাস্তব চিত্র। মানুষের জীবনের সহ্য ক্ষমতার শেষ পরীক্ষাও বলা যায় এ উপন্যাস কে।
Profile Image for Alimur Razi Rana.
95 reviews5 followers
April 20, 2025
ব্যাঙ্কের চাকরি হারিয়ে কলকাতা ছেড়ে বস্তির জীবন ধরতে বাধ্য হয় শিবনাথ। সাথে তার স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী আর ছোট মেয়ে। আশেপাশের আরও ১১ ঘরের সাথে বাস করে শিবনাথ সমাজের নিচু তলার কদর্য রূপ দেখে এবং এক পর্যায়ে সেও সেখানে মিশে যায়। অভাবের তাড়নায় নিজেদের আদর্শ বিকিয়ে দেয়া নিয়ে বাংলা সাহিত্যে অনেক গল্প আছে। সেই জন্যই হয়তো এই বইয়ের গল্প তেমন কোন নতুনত্ব আনে নি। বরঞ্চ কাহিনী অনেক স্লো, আমার তো মনে হয় অনায়াসে ১০০ পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে সহজেই আসল বইয়ের অর্ধেক করা যাবে।

জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী এর লেখার আরেকটা জিনিষ দেখলাম, কোন ঘটনা লেখকের ভাষায় কিংবা ৩য় পুরুষে বর্ণনা করার চেয়ে তিনি চরিত্রদেরকে দিয়ে সেই ঘটনা সম্পর্কে কথা বলান। এটা অনেকটা আরোপিত মনে হয়। সাধারণত তো মানুষ এভাবে কথা বলে না। কে. গুপ্ত একদা অনেক বড়োলোক ছিলেন, তার সাবেক অবস্থার কথা পাঠক জানতে পারে শিবনাথ আর মুদি দোকানির কথার মধ্য দিয়ে। তাদের পাশে বসে কে. গুপ্ত তখন আরও উৎসাহ দেয় - বেশ তো, আরও বলো ... ।

লেখকের আসল মুনশিয়ানা হচ্ছে, তিনি ১২ টা পরিবার সাথে তাদের বাড়ির মালিক রায় সাহেব সহ ১৩ টা পরিবার আর প্রায় ৩০ - ৩৫ টা চরিত্র সমানে চালিয়ে গেছেন। তারা কেউ মাতাল, কেউ লোভী, কেউ অসৎ, কেউ চরিত্রহীনা। তেমন আড়াল না থাকায় এক ঘরের কথা বাকিদের জানতে কিংবা জানাতে সময় লাগে না। অভাব তাদের এক করেছে আবার যখনই তারা তাদের অভাবকে কাঁটাতে পেরেছে, দ্বিধাহীন ভাবেই বস্তি এলাকার পাঠ গুটিয়ে নিয়েছে। একেক ঘটনা ভিন্ন জন ভিন্ন ভাবে দেখে, কিন্তু নিজের স্বার্থ কিংবা আত্মগরিমা দেখানোর জন্যও যে মানুষ সেই ঘটনার অবলম্বনে অবলীলায় মিথ্যা চালিয়ে যেতে পারে, সেটাও লেখক খুব ভালভাবেই দেখিয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের যে অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিবর্তন হচ্ছে, এই বইয়ে সেই চিত্রের অনেকটাই ফুটে উঠেছে।
Profile Image for Musharrat Zahin.
404 reviews489 followers
June 9, 2024
পুরোনো জিনিসের মায়া ছাড়তে পারেন না বেশিরভাগ মানুষই। নতুন যত কিছুই হোক না কেন, পুরোনোকে আঁকড়ে থাকার অভ্যাস আছে অনেকেরই। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা চিন্তা করে অনেক পুরোনো জিনিসের মায়াই আমাদের কাটাতে হয়।

এই যেমন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় চাকরি খুয়ে কলকাতার ফ্ল্যাট ছেড়ে বেলেঘাটার বস্তিতে ১২ নম্বর ঘর ভাড়া নেয়, শিবনাথ-রুচি দম্পতি। সাথে থাকে পাঁচ বছরের কন্যা মঞ্জু। শিবনাথ বেকার, তাই রুচির মাস্টারির বেতনই তাদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু সেই টাকায় আর কতই বা চলা যায়৷

এইটা সেই সময়ের কথা, যখন কলকাতা শহরে পিলপিল করে মানুষ ঢুকছে, পুরো শহরজুড়েই অর্থনৈতিক মন্দার আভাস। তখন বেশিরভাগ মানুষেরই চাকরি খোয়া যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তাই তো না পেরে বস্তিতে ওঠা। বস্তি বলে কিন্তু সবার আর্থিক অবস্থা যে করুণ, তা কিন্তু না। এই বস্তিতেও ঠিকাদার আছে, ডাক্তার আছে, স্কুল মাস্টারও আছে। তারাও একসময় বেশ ল্যাভিশ লাইফ লিড করতেন। কিন্তু ওই যে অর্থনৈতিক মন্দায় মার খেয়ে শেষ পর্যন্ত এই ঘুপচিতে এসে জুটেছেন।

সেই বস্তির একরতি উঠোনে বারোটা ছোট্ট ঘরে বারোটা পরিবার, সেই বারো পরিবারের আবার বারো রকম জীবনের গল্প।

শিবনাথের এখানে মানিয়ে নিতে খুব একটা কষ্ট না হলেও, স্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে সুরুচির এখানে মানিয়ে নিতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছিল। কারণ এখানের মানুষগুলোর রুচি তো এদের সাথে মেলে না! এদের মুখের ভাষা ভালো না, সারাক্ষণ হিংসে-বিদ্বেষ, গালাগালি লেগেই রয়েছে। দরজার কাছে মানুষ মদ খেয়ে মাতলামো করে, রাত-বিরাতে মানুষজন ঘর ছেড়ে বের হয়ে যায়।

তবে শিবনাথ এখানে বেশ আনন্দেই আছে। রুচি স্কুলে যাওয়ার সময় মঞ্জুকে সাথে নিয়ে যায়। তখন শিবনাথ ঘরে বসে বসে অন্য ঘরগুলোর মানুষের কথা শুনে। এরপর বেরিয়ে চলে যায় মুদির দোকানদার বনমালির কাছে। মাঝে মাঝে সেখানে হাজির হয় বলাই, মদ্যপ কে. গুপ্ত, পাচু নাপিত, বিধু মাস্টার, শেখর ডাক্তারের সাথে। কেউই সুখী না। সবাই কিছু না কিছু নিয়ে চিন্তিত। একজন তার বউকে বাসা থেকে বের হতে দিবে না, পরপুরুষ তাকাবে বলে, আরেকজন মেয়ের বিয়ে কিভাবে দিবে সেই চিন্তায় অস্থির, আরেকজন বছর বছর বাচ্চার বাপ হয়ে কিভাবে এতগুলো মানুষের খাবার জোগাড় করবে, সে নিয়ে হাপিত্যেশ করে৷ এখানে যেই পরিবারের মানুষ আগে কাটা চামচ-ছুরি ছাড়া খেতে পারতো না, তারাই এখন চুরি করে আনা আধাসেদ্ধ কপি আর মূলা খায়। প্রায় প্রত্যেক ঘরেই চলে নিত্য নতুন অভাব।

সবাই যদি দুঃখী হয়, তাহলে কি সবার মধ্যে খুব মিল? মোটেও না! কেউ কারোর ভালো দেখতে পারে না। কোনো পরিবারে একদিন ইলিশ মাছ রান্না হলে সেই পরিবারের কর্ত্রী ইলিশ মাছের ঘ্রাণ আশেপাশের সবার নাকে পৌঁছে দিবে, কোনো বাসার মেয়ে বেশি আয় করলে সন্দেহের চোখে দেখবে, কারো বাসা থেকে কিছু খোয়া গেলে সবচেয়ে গরিব মানুষটাকেই জেরা করা হবে। এই বস্তির মানুষ একে-অন্যের পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করে, এর-ওর থেকে ধার করে খায়, যৌনতা নিয়ে পড়ে থাকে, বাচ্চা ফুটিয়েই হাঁপিশ হয়ে যায়, অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে চায়। এমন পরিবেশে কি আসলেই কোনো পরিবর্তন সম্ভব?

এসব চুলোচুলি দেখে শিবনাথ-রুচির মনে হয়, এদের সাথে থাকতে থাকতে কি তারাও তাদের মতো হয়ে যাবে? তাদের চিন্তাভাবনাও কি এমন নিচ হয়ে যাবে?

এরই মধ্যে রুচির জীবনে হুট করে একটা পরিবর্তন চলে আসে৷ তাকে বলা হয় বস্তির সভার নেত্রী হতে৷ এসবের মাঝেই নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে শিবনাথ পরিবার। কিন্তু শেষ দিকে দেখা যায় পরিবেশের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাদের গল্প! শেষ পর্যন্ত এই পরিবর্তন তাদের পরিবারকে কোনদিকে নিয়ে যাবে?

.

.

.

সত্যি বলতে বইটা বেশ স্লো। আমি একটানা পড়ে মাঝে কয়েকদিন ফেলে রেখেছিলাম কারণ মনে হচ্ছিল কাহিনী অযথা টেনে লম্বা করা হচ্ছে। তাছাড়া বইয়ে কমলা, হিরণ, রমেশ, ক্ষিতিশ, কে. গুপ্ত, মল্লিকা, বিধু মাস্টার, শেখর ডাক্তার, কিরণ, অমল, প্রমথের দিদিমা, প্রভাতকণা, প্রীতি, বীথি সাথে দোকানদার বনমালী এবং দোকানদার পারিজাত তার স্ত্রী দীপ্তিসহ আরো অনেক চরিত্র আছে, মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলছিলাম যে কে কোনটা এখানে।

লেখক এখানে প্রতিটি পরিবারের ভিন্ন ভিন্ন মানসিক অবস্থা বেশ দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন। এই যেমন শিবরাম নিজের আর রুচির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বেশ আত্মদম্ভে ভোগে, বস্তির বাকিদেত থার্ড ক্লাস বলে বেড়ায়। কিন্তু দিনশেষে এই বস্তির মানুষদের সাথেই মেশে, বস্তির মালিক এলে তার সাথে ত্যালত্যালা হাসি দিয়ে কথা বলে। অন্যদিকে কে. গুপ্তের মতো ডাকসাইটে অফিসের বড়কর্তাও এখানে এসে অথর্ব হয়ে পড়ে আছে।

বইটায় এত নির্মম সত্য বলা যা পাঠকের মনে বেশ আঘাত করবে পাঠককে। লেখক তাঁর চরিত্রগুলোকে দিয়ে এমন সব কথা বলিয়েছেন এবং কাজ করিয়েছেন যা দেখে মনে হবে এটা তো আমার সমাজেরই অবস্থা! এই বাড়ির ভাড়া মেটানোর জন্য মানুষ যেভাবে চুরি, বেশ্যাবৃত্তি, ব্যভিচার, ধার-দেনা করে বেড়ায় করে বেঁচে থাকার তাগিদে, এগুলো কিন্তু আমাদের আশেপাশেই অহরহ ঘটে যাচ্ছে। এসবেরই বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন লেখক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী।

.

.

.

এই উপন্যাসের মতো এমন হাজারো বস্তিতে এসব নিত্যদিনের কড়চা৷ কেবল আমরা চোখে রঙিন চশমা পরে থাকি দেখে আমাদের চোখেই পড়ে না৷ আমরাও তো আমাদের আশেপাশের মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য নিজেদের ভোল পাল্টাই। তাহলে উঁচু জাত আর নিচু জাত মানুষের মধ্যে তফাতটা কোথায়?
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books356 followers
March 18, 2018
এক ফালি উঠোন ঘিরে অনেকগুলো ঘর। সেসব ঘরে নানা লোকের বাস। আমাদের গ্রামে তো এমন হামেশাই দেখা যায়, এক উঠোন ঘিরে নানা ভিটায় একেকটা পরিবারের একেকটা ঘর। কিন্তু এ গল্পের বারো ঘর ঠিক তেমন নয়। শহর ছাড়িয়ে শহরতলীর এক বস্তির গল্প।

ব্যাঙ্ক ফেল করে শিবনাথ দত্তকে কলকাতা শহরের ফ্ল্যাট ছেড়ে আসতে হয় বেলেঘাটায়। স্ত্রী রুচি আর পাঁচ বছরের মেয়ে মঞ্জুকে নিয়ে তাঁর ঠাই হয় বারো কামরার এক বস্তির বারো নম্বর ঘরে। শিবনাথের চাকরি না থাকলেও রুচি একটা স্কুলের শিক্ষিকা, তাদের একটা সন্তান। চলে যাচ্ছিলো এক রকম। কিন্তু বাড়ির অন্য মানুষেরা?

একটা ঘর নিয়ে থাকে নার্স কমলা, যদিও সকলে মনে মনে তাকে বেশ্যার চেয়ে কিছু ভাবে না। বিধু মাস্টার তার স্ত্রী আর তেরো পুত্র নিয়ে থাকেন আরেকটি ঘরে। এককালের মোটা বেতনের বড় অফিসার কে. গুপ্ত চাকরি খুইয়ে এক ছেলে এক মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে আছেন শিবনাথের পাশের কামরায়। আছে বলাই, সাবান ফেরি করে। আছে রমেশ, সে বস্তির মালিকের চামচা। ভুবন নামের লোকটি শয্যাগত, তার বড় মেয়ে টেলিফোনে চাকরি করে। এমন অনেক মানুষের বাস পারিজাত রায়ের আট নম্বর বস্তিতে।

সময়টা সাতচল্লিশ পরবর্তী। যুদ্ধের পর চারদিকে কেবল মন্দা আর চাকরিতে ছাটাই। পিলপিল করে পাকিস্তান ছেড়ে চলে আসছে মানুষ। একটা অস্থিতিশীল পরিবেশে, নিম্ন আয়ের, কিংবা রোজগার বিহীন ধুঁকে ধুঁকে চলা কিছু মানুষের গল্প, যারা একটা উঠান ঘিরে বাস করে। তাদের মধ্যে আছে হিংসা, দ্বেষ, কোমরে কাপড় গুজে ঝগড়া, চেয়েচিন্তে খাওয়ার প্রবণতা। আছে যৌনতা, কেবল বাচ্চা ফোটানো। এরই মাঝে উপরে ওঠার চেষ্টায় ব্যস্ত কিছু মানুষ। সেখানে ছোঁকছোঁক করে চারু রায়, সিনেমায় নায়িকা নামাবে বলে। সেই পরিবেশের মাঝে এসে সুশিক্ষিত শিবনাথ, আদর্শবাদী রুচির পরিস্থিতির সাথে বদলে যাওয়ার গল্প।
Profile Image for Gain Manik.
336 reviews4 followers
June 14, 2024
অসাধারণ কিন্তু আন্ডাররেটেড
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
523 reviews189 followers
June 13, 2019
লোভ সব মানুষেরই বুঝি সমান থাকে।আর চুরি সবাই করে--গরিব করে হয়তো পেট চালাতে আর বড়ো লোক করে নিজের সম্মান আরো বাড়াতে।।
আমাদের সমাজে শিবনাথ বাবুর মতো মানুষ প্রচুর।কাজের বেলাতে অষ্টরম্ভা কিন্তু পকেট থাকা চায় ভরা।প্রয়োজন আর লোভ মানুষকে কতো ধুরন্ধর করতে পারে শিবনাথ বাবু তার প্রমাণ।
আর মেয়েদের সম্পর্কে চাকরি করলেই যে পুরুষের সাথে ডলাডলি এই ধারণা এখনো করা হয়।।আর মেয়েদের শত্রু মেয়েরাই।।। কোনো মেয়ে হয়তো ভালো চাকরি করছে অন্য মেয়ে গুলোয় তাকে নিচে নামাবে😑

কে.গুপ্ত শেষে যা বলেছে তা কি সত্যি??
This entire review has been hidden because of spoilers.
Displaying 1 - 12 of 12 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.