Jump to ratings and reviews
Rate this book

ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ

Rate this book
১২ টি ডার্ক ফ্যান্টাসি র সংকলন:

• ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ
• বাচ্চুমামার বাড়ি
• ছাদের বাগান
• গুহাচিত্র
• জলকষ্ট
• কলঙ্কভাগী
• মড়া ফুলের মধু
• পাশা
• সূর্যাস্তের ছবি
• হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম
• তুলোবীজ
• নিভাঁজ ত্রিভুজ

160 pages, Hardcover

Published January 1, 2018

19 people are currently reading
365 people want to read

About the author

Saikat Mukhopadhyay

48 books110 followers
তাঁর জন্ম এবং বড় হওয়া হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর উপাধি অর্জনের পরে তিনি রাজ্য সরকারের অধীনে আধিকারিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ দুই-দশকের লেখক-জীবনে তিনি প্রাপ্তবয়স্ক এবং কিশোর-সাহিত্য, উভয় ধারাতেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তিনি যখন গল্প-উপন্যাস লেখেন, তখন ঘটনার বিবরণের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেন মানব-মনের আলোছায়াকে তুলে আনার বিষয়ে। লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পঞ্চাশের কাছাকাছি। তাঁর বহু কাহিনি রেডিও-স্টোরি হিসেবে সামাজিক মাধ্যমে সমাদর পেয়েছে। সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন দীনেশচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার এবং নান্দনিক সাহিত্য সম্মান।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
98 (32%)
4 stars
117 (39%)
3 stars
64 (21%)
2 stars
10 (3%)
1 star
9 (3%)
Displaying 1 - 30 of 77 reviews
Profile Image for Sumaîya Afrôze Puspîta.
220 reviews288 followers
September 14, 2025
গল্পগুলো‌ পড়ে কেমন অবশ অবশ লাগছে।‌ সৈকত মুখোপাধ্যায়ের লেখা‌ এই প্রথম পড়লাম... দারুণ! আসলেও ডার্ক ফ্যান্টাসি কিনা জানি না, তবে গা‌ শিরশির করছিল; ভয় না, ঘৃণাও না। অন্যরকম একটা কিছু....

গতানুগতিক ধারার বাইরে একটু অবসর পেতে চাইলে এই লেখাগুলো টনিকের মতো কাজ করবে। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই‌ ব‌ইয়ের কিছু গল্প বিবমিষার উদ্রেক ঘটায় এবং গল্পের স্বার্থেই প্রাপ্তবয়স্ক-উপযোগী দৃশ্যের বর্ণনা রয়েছে। একেবারেই অন্যরকম ধরনের লেখা‌ যারা চেখে দেখতে চান, তাদেরকেই কেবল ব‌ইটা পড়ার আমন্ত্রণ জানাতে চাই।
Profile Image for Ësrât .
515 reviews85 followers
May 25, 2021
এই বইটা অনেক যত্ম করে সাজিয়ে গুছিয়ে শেলফে তুলে রেখেছিলাম, কোনো বড় বই পড়ার ফাঁকে ইচ্ছে হলে নামিয়ে পড়ে নেওয়ার জন্য, প্রায়ই সময়ে এটাই করি হয়ত সাতশো আটশো বা হাজার পেজের একটা বই শুরু করেছি মাঝখানে পড়তে পড়তে ঝিম ধরে আসছে,ব‍্যস চটপট অন‍্য কোনো বইয়ে আলোর গতিতে শিফট হয়ে যাই।

তেমনি সাড়ে ছয়শো পেজের এক বই পড়তে যেয়ে যখন বিরক্তি ধরে গেল শেলফে যেয়ে বই খুঁজতে গিয়ে আমার তো আক্কেল গুড়ুম হয়ে যাওয়ার দশা.

বইখানা নেই মানে নেই!তবে কি কাউকে দিয়ে দিলাম পড়তে!নাহ গত সাড়ে তিনমাসে সাড়ে তিন ঘন্টার জন্য ও কেউ আসেনি দিবোটা কাকে আমি!

নিশ্চয়ই কোনায় পড়ে আছে কোনো(?)পাক্কা ছয় ঘন্টা ধরে ঘরের এমন এমন কোনায় বই খুঁজেছি ,যেখানে আরশোলা বাবাজি বা টিকটিকি রাও চিন্তা করেনি কেউ খুঁজতে আসবে, কিন্তু লাভের লাভ কি হলো?

লবডঙ্কা,মাঝখান দিয়ে মাতাজির ঘরের কোনা পরিষ্কার হয়ে গেল,(খুশি মনে সে আবার না বই হারানোর কামনা করে বসে আল্লাহ মালুম!)তবে কি বইয়ের পাখা গজালো না ভাই গতদিনের ঝগড়ার জের মেটাতে আমার বইখানা হাপিস করে দিল.😑

তিনসতি‍্য করার পর বিশ্বাস গেলাম, না সে আমার বই ধারে কাছেও আসে নাই,জানেই না,তবে আরেকটি যুগান্তকারী তথ‍্য সে দিল যাতে আমার জ্ঞান হারানোর উপক্রম হয়ে গেল;

জননী কয়েকদিন আগে টেবিল ,শেলফ থেকে পুরানো কাগজপত্র কাগজওয়ালা কে বিক্রি করে দিয়েছেন তার মধ্যে থাকলেও থাকতে পারে আমার বই খানা,

তো ব‍্যাপারটা এই দাঁড়ালো আমার এত সাধের বই এখন হয় কোনো বাদামওয়ালা পাতা ছিঁড়ে বাদাম না হয় কটকটি ওয়ালা কটকটি কিংবা ঝালমুড়ি দেদারসে বিক্রি হচ্ছে.😫

এখন তো কোথাও যেয়ে বই কেনাটাও সম্ভব না,তার উপর এলাকায় চলছে লকডাউন 😢
দুঃখে কষ্টে সারাদিন রাত পার করার পর হঠাৎ এক পরোপকারী ?!(অধিকাংশ সময়ে উনি আমার মাথাটাই নষ্ট করেন,যার জন্য প্রায়শ আমাকে বিরক্ত হয়ে বলতে হয় মাথাটা এবার আমার যাবেই)পুরো বইখানা স্ক‍্যান করিয়া পিডিএফ বানায় সুন্দর করে পাঠায় দিল,এখন এটা মাথা ধরানোর আক্কেল সেলামি না বন্ধু হিসেবে উপহার রূপে উপকার তার যোগ বিয়োগ পরেই করবো.

এখন আসি বইয়ের কথায়,বারোটা গল্প,খুবই ইন্টারেস্টিং প্লট প্রতে‍্যকটাতে, বিজ্ঞানের সাথে বর্তমান বা অতীতের মেলবন্ধন,অথবা অতিপ্রাকৃতিক বিষয়ের সাথে বর্তমান প্রেক্ষাপটের যোগসূত্র পড়তে যদি আপনি ভালোবাসেন তবে আপনার জন্য এই বইখানা এক নিখাদ আনন্দের খোরাক হবে তা নিয়ে নিঃসন্দেহে থাকতে পারেন.

রেটিং: 🌠🌠🌠.৪০ আরো একটু বেশিই দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু প্রায় সবগুলো গল্প পড়ার পর শেষ হওয়ার আগেই বুঝে ফেলেছিলাম কি ঘটতে চলেছে পরে তাই একটু কিপটেমি করতেই হল আবার.
Profile Image for Tiyas.
449 reviews126 followers
January 16, 2024
'অটো-বাই অথর' বলতে যা বোঝায়, আমার ক্ষেত্রে সেই জায়গাটি সৈকত মুখোপাধ্যায় দখল করে রয়েছেন বেশ কিছু বছর। এমন একজন লেখক, যার বই নির্দ্বিধায় কিনে ফেলা যায় এবং সচরাচর হতাশ হতে হয় না। অন্য ভাবে বললে, লেখক হতাশ হতে দেন না।

'ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ' নিঃসন্দেহে লেখকের সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্প সংকলন। সর্বাধিক পঠিতও বটে। বইটি আমার সংগ্রহে ছিল বেশ কিছুদিন। পড়তে কেন এতদিন লেগে গেল, কে জানে? নিরাশ হওয়ার ভয়ে? হবে হয়তো।

লেখকের লেখার সাথে প্রথম পরিচয় ওনার 'নোনা বালি চোরা টান' বইটির মারফত। এটার মতন, ওটাও ছিল একটি আদ্যোপান্ত ডার্ক ফিকশন সংকলন। শুনিয়েছিলেন দারুণ কয়েকটি গল্প, যাদের অবস্থিতি আমাদের তথাকথিত চেনা সমাজের অন্ধকার কোনো পাঁকে। এই বইটিতেও বারোটি গল্পের সাহায্যে লেখক বলেছেন কিছু মানুষ-পিশাচের গল্প। দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন মানব-মনের পাশবিক প্রবৃত্তির ঘৃণ্য, নোংরা ও অচেনা দিকগুলো। সাথে মিষিয়েছেন অনেকখানি ম্যাজিক। তবে এই জাদুর রঙ নেই। পাঠকের কাছে পড়ে থাকে বর্ণহীন, ধূসর, এক অস্বস্তিকর মায়ার খেলা।

তবে 'নোনা বালি...'র থেকে এই বইটিকে বেশ কিছু ধাপ এগিয়ে রাখবো। যার প্রধান কারণ, লেখক বইতে 'শক-ভ্যালু'র চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন স্রেফ কয়েকটি ভালো গল্প বলাতে। গল্পগুলো তাই স্রেফ অন্ধকারের বর্ণনা সিক্ত সস্তার কিছু ছাইপাশ হয়ে রয়ে যায়নি। বরঞ্চ তাদের আশ্চর্য সুন্দর রেঞ্জ, বলিষ্ঠ গদ্য আর প্রভূত ভাবনাচিন্তার খোরাক, বইটিকে করে তুলেছে অবশ্যপাঠ্য। বারোটির মধ্যে দু-তিনটে বাদে, বাকি সবকটা গল্পই স্বতন্ত্র এবং নিজগুনে অসাধারন।

তবুও বলবো, এই বইয়ের পাঠ অভিজ্ঞতা সবার জন্য সমান বা মসৃণ হবে না। জেনে বুঝে সেরম দাবিও করবো না। তবে প্রতিটি কৌতুহলী পাঠক, এই ছোট ছোট গল্পগুলো থেকে কিছু না কিছু ফেরত পাবেন, সেই বিশ্বাস রাখি। তা সে অন্ধকারের নয়া কোনো অপাংক্তেয় সংজ্ঞাই হোক, বা জাদু-বাস্তবতায় মোড়া কোনো নতুন পৃথিবীর চাবিকাঠি। আপনি যদি বইটিকে ফেলে না দেন, তবে বইটিও আপনাকে ত্যাগ করে যাবে না। এবং এখানেই হয়তো বা সংকলনটির স্বার্থকতা!

কোথাও গিয়ে তাই লেখককে বলতে ইচ্ছে হয়, থামবেন না। কোনোমতেই থামবেন না। এভাবেই গল্প বলে যান, বেচে থাকুক আপনার বয়ান। এগিয়ে যাক কিসসাওয়ালা-র কলম!

(৪/৫)
Profile Image for Nisha Mitra.
141 reviews39 followers
April 10, 2021
মনে আছে ডেভিড ফিঞ্চারের
Se7en দেখতে দেখতে গা গুলিয়ে এসেছিল। খ্রিষ্টীয় মতে সাত রিপুর উপর্যুপুরি ব্যবহারে স্তব্ধ হয়েছিলাম কিছুদিন।
হ্যানিবল লেকটারকে দেখে মনে হয়েছিল এত শান্ত মানুষটি এত বিকৃত! Mindhunter এড কেম্পারকে দেখেছিলাম মুগ্ধ হয়ে। মানুষ কি সৃষ্টির আদিকাল থেকেই নষ্ট, নোংরা! রেলের পাশের বস্তির মধ্যে বসে থাকা নেশাতুর মানুষের সাথে আইটি সেক্টরের ঠাণ্ডা এসির তলায় কাজ করা ছেলেটির মিল বোধহয় ওই ষড়রিপুর সৌজন্যেই।

সৈকত মুখোপাধ্যায় আমার প্রিয় লেখক। তাঁর কিসসাওলা বা মৃত্যুর নিপুণ শিল্প মনের এমন কিছু দিক উন্মোচিত করে যা সহজে ধরা যায়না। ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ সেই ডার্ক ফ্যান্টাসি জগৎটাকে আরো সামনে নিয়ে চলে আসে। আয়নার মত ধরে রেখে জানতে চায় "Aren't we all the same?"
তাই এটা কোনো পাঠ প্রতিক্রিয়া নয়, পাঠানুভূতি বলা যায় হয়তো। অন্ধকারের এমনই মাধুর্য্য।
শুরুতেই ভূমিকায় অনীশ দেব। আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক। তিনিই বোধ হয় সচেতনভাবে বাংলা ভাষায় মনস্তত্ত্বের গভীর অন্ধকারময় দিকগুলো তুলে আনতে সক্ষম ছিলেন। বলা যায় যথাযথ ব্যক্তির হাতেই তিনি ব্যাটন তুলে দিলেন।
ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ মন�� করিয়ে দেয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাগৈতিহাসিক কে। সেই প্রাচীনত্বের কাহিনী প্রস্থর যুগ হয়ে বর্তমানেও সমান প্রাসঙ্গিক "গুহাচিত্র" গল্পটিতে। "সূর্যাস্তের ছবি" র মত গল্পে কল্পবিজ্ঞান ও ডার্ক ফ্যান্টাসির চরম মিশেল দেখা যায়। "তুলোবীজ" গল্পটি ভয় ধরিয়ে দেয় মনে।
" ছাদের বাগান" তেমনি একটা ধাক্কা দেওয়া গল্প। কে সঠিক, কে বেঠিক সব মিলিয়ে যায় ভুইচাঁপার সুগন্ধে।

মনের কালো জগৎ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এই বই হয়ত সবার জন্যে নয়। ভুতের গল্প এর কাছে নস্যি। যারা ভয় পেতে ভালোবাসেন তাদের ভালো লাগবে। যদিও এ ভয় আরামের নয়, survival এর।

মনে আছে বনফুলের "কেন" নামক অনুগল্প পড়ে সারাদিন একটা অস্বস্তি কাজ করেছিল। সেই অস্বস্তির কোনো উত্তর হয়না। কী ভীষন এই মনের অন্ধকার, তার কূল পাওয়া যায় না। সম্প্রতি পড়া ও দেখা DC র watchmen series এর Black Freighter এর কাহিনী মনে করিয়ে দেয় এই বইটি। মনের মধ্যে ঘটে চলা শুম্ভ - নিশুম্ভের লড়াই বড্ড বাস্তব। প্রতিদিনকার খবরের কাগজের হেডলাইন হয় আমাদের সেই সুপ্ত বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলিত রুপগুলি। "নিভাঁজ ত্রিভুজ" তারই উদাহরণ। কিন্তু সব চাহিদার তো হেডলাইন হয়না। তারা কোথায় যায় ? হয়তো "বাচ্ছুমামার বাড়ির" মতো মিলিয়ে যায় সাধারণের চোখ থেকে।

শুধু মনে থাকে একটি নেটিভ আমেরিকান উপকথার গল্প, "The story of the two wolves" এর কথা।
বুড়ো দাদু নাতিকে গল্প শোনাচ্ছেন। "আমাদের সবার মধ্যে দুটো নেকড়ে আছে। তাদের ভয়ানক লড়াই চলছে সবসময়। একজন রাগী,হিংসুক,লোভী, স্বার্থান্বেষী, মিথ্যাবাদী। অন্যজন আশাবাদী, দয়াবান, মানবদরদী প্রেমিক।"
নাতি জানতে চায়, " তবে কার জয় হবে, দাদু?"
বৃদ্ধ কিছুক্ষন চুপ করে থেকে উত্তর দেন," The one you feed" ।
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,865 followers
Read
October 10, 2018
না, এই বইয়ের কোনো রিভিউ দেব না। কোনো তারাবাজি করব না। অন্ধকার প্রত্যেকের কাছে আলাদা রূপে আসে। এই গল্পগুলো অন্ধকারের। এদের রূপ প্রত্যেক পাঠকের চোখে, মনে, বুকে আলাদা হয়ে আসবে।
এটুকুই বলব, যে একে এড়ানো যাবে না।
Profile Image for Avishek Bhattacharjee.
370 reviews79 followers
August 4, 2021
প্রথমেই বলে নেই এটা খুবই এডাল্ট বই। গল্পগ্রন্থটিতে ১২টি গা শিউরে উঠানো গল্প আছে। সবগুলো গল্পই মানব চরিত্রের অন্ধকারতম দিকগুলা নিয়ে লেখা হয়েছে। সাথে ভূতুড়ে কারবার তোহ আছেই। ছোট গল্প হিসেবে ভালই লাগল আমার কাছে। প্লটগুলা এমন করে লেখা যে হাজার চাইলেও আর বড় করা যেত না। কিন্তু চরিত্রগুলাকে মনে হয় একটু বিল্ড আপ করা দরকার ছিল। বিশেষ করে মূল চরিত্রগুলাকে ধাপে ধাপে খুললে সাসপেন্সটা বেশী পাওয়া যায়। বইটার নামটা মনে হয় প্রথম গল্পের অনুপ্রেরণায় দেওয়া। সেই হিসেবে বাকি গল্পগুলার উপরে অবিচার হইল।
এই বইয়ের অনেক গল্প পড়ে আমার গা গুলিয়ে উঠেছিল। একটা কথা অনস্বীকার্য যে বাংলায় এমন ডার্ক হরর স্টোরি আমি আর পড়িনি। সেই হিসাবে ভরা পেটে অথবা খালি পেটে বইটা পড়বেন না। উভয়ক্ষেত্রে বিপদের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ৩.৬ স্টার দিলাম।
Profile Image for Manzila.
166 reviews159 followers
March 31, 2022
নানান কারনে ভূত-পেত্নী, ডার্ক ব্যাপার-স্যাপার, আধিভৌতিক জিনিসপত্রে চিরদিনই আমার আগ্রহ বেশি। আগে বদহজম করতাম, এখন ভালো ভাবেই সুস্বাদ গ্রহণ করতে পারি। এই জনরার সিনেমা যতটা দেখা হয়, লক্ষ্য করলাম সাদা-কালো অক্ষরে এসব পড়া হয়েছে কম। "ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ"র খোঁজ গুডরীডস থেকেই পাওয়া। পিডিএফটা বেশ হেলাফেলা করেই ধরলাম।

শুরুতেই এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার খেয়াল করলাম। বইটার প্রতিটা গল্পের শুরুতে একটা করে ছবি। ছবিগুলো আবার সাধারণ কোন ছবি না - কেমন জানি একটা অস্বস্তির তৈরী হয়, এমন। যেমন- "বাচ্চুমামার বাড়ি" গল্পের ছবিতে দুটো পা সিলিং থেকে ঝুলে আছে, "হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম" গল্পের শুরুতে আছে লতায় জড়ানো একটা ডাকবক্সের ফুটো দিয়ে একজোড়া চোখ পাঠকের দিকে তাকিয়ে, "মড়া ফুলের মধু"তে জানালা গলিয়ে আসা দুইহাতে দুইতোড়া রজনীগন্ধা। ছবিগুলো কেমন যেন গল্পের শুরুতেই মুড সেট করে দিচ্ছিল। গল্পের কথা বলতে গেলে নাম গল্পটাই আমার তেমন ভালো লাগেনি। তবে যত সামনের দিকে আগাচ্ছিলাম ভালোলাগা বাড়ছিল। শুধু যে অশরীরী বা ডার্ক ফ্যান্টাসি এই বইয়ের মূল থিম তা আমি বলব না। বরং কিছু কিছু গল্প প্রেম এতো প্রবল -সে প্রেম আবার সবসময় দুটা মানব-মানবীর প্রেম নয় - প্রেম হয়েছে জমিদার বাড়ির রাঁড়ের সাথে পাশার বোর্ডের আর কিশোরী একটি মেয়ের সাথে এক ময়ূরের। এই বইয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প "ছাদের বাগান", সেটা কেন তা বুঝিয়ে বলতে পারছি না। খুব ভেবে দ্বিতীয় অবস্থানে রাখলাম "জলকষ্ট"। আপাতদৃষ্টিতে "জলকষ্ট" গল্পটা আমাদের কাছে খুব নতুন লাগে না, মরা মানুষ এসে প্রোটাগোনিস্টের সাথে কথা বলছে পরে কেউ এসে বলছে অমুক তো অনেক আগেই মরে গেছে। কিন্তু যে একটু নতুনত্ব লেখক যোগ করে দিয়েছেন এই পুরান কাসুন্দির সাথে তাতেই খাওয়া গেছে রুচি করে। আর খুব অস্বস্তি নিয়ে পড়েছি "তুলোবীজ"।

এই লেখকের আরও লেখা পড়ব আশা রাখি।
2 reviews11 followers
April 9, 2018
...অ্যাণ্ড দেয়ার অ্যারাইজেজ দ্য ডার্ক লর্ড...।
অন্ধকারের গল্প, গল্প অন্ধপ্রহরের। যে গল্পগুলিকে পাঠ করতে আরম্ভ করলে সুললিত ছন্দে যেন রক্তরাগিনী অধিকার করে নেয় আমাদের পাঠধমনী। অত্যদ্ভুত অথচ বিচলিত ধারাপ্রবাহে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে মগজকোষ। অসহনীয় বিবমিষা আকর্ষ বাড়িয়ে দেয় পাঠকের দিকে, কিন্তু কোনও এক অমোঘ আকর্ষণ পাঠককে কক্ষপথ হতে বিচ্যুত হতে দেয় না। অন্ধকারের আলো আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে কেবলমাত্র পাঠকের চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার জন্যই।
প্রায় একটি বছর আগে লেখকের ‘তেঁতুলপাতার গল্প’ পড়ে আশ্চর্য জন্মেছিল মনে, কত অমোঘ কৃষ্ণত্ব প্রাপ্তি ঘটলে অমন গল্প কলমের অগ্র হতে নিঃসারিত হতে পারে! কেউ মানুন বা না মানুন, অন্ধকার প্রত্যেকের মনে অবস্থান করে। আমার মনেও। যার চরিত্রে গ্রে শেডস যত বেশি, তিনি ততোধিক আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেন আমাদের সমাজে। কেন আমরা আজও চার্লস শোভরাজের খবর পড়তে রোমাঞ্চ বোধ করি, নিঠারি কাণ্ডের পান্ধেরের কথা লুকিয়ে পড়তে আমাদের গায়ে শিহরণ জাগে কেন? হতে পারেন তাঁরা অপরাধী। কিন্তু অপরাধ কি আমাদের রক্তেও মিশে নেই সেই কোন আদিম কাল হতে? আদিম রিপুকে দমন করে আজ শিক্ষার মোড়কে ঢাক ঢাক গুড় গুড় করলেও ঈষৎ বিচলিত কি হই না বিভিন্ন একান্ত মুহূর্তে? আড়চক্ষে কি দেখে নিই না যুবতী শরীরকে? মনে কি বাসনা জাগে না কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত স্বাদ গ্রহণের? তেমনই মনগহনের দ্বাদশ অধ্যায় যাপিত হয়েছে সৈকত মুখোপাধ্যায়ের ‘ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ’ বইতে। কী অসামান্য চিত্রণ যে সম্ভবপর করে তুলেছেন লেখক, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
ডার্ক ফ্যান্টাসি। নষ্টগদ্যের ধারা। বাংলায় আজকাল এই নিয়ে কাজ প্রায় হয় না বললেই চলে। লেখকের একটি বক্তৃতায় এই ধারাতেই বিমল করের একখানা গল্পের উল্লেখ শুনেছিলাম। জমে থাকা থকথকে অন্ধকারের যাপন। কেবল শব্দের মাধ্যমে সাদায় – কালোয় সেই যাপনকে ফুটিয়ে তোলা অতীব দুরূহ বিষয়। সেই কঠিনতম ধারা নিয়ে ক্রমাগত পরীক্ষণ চালিয়ে গেছেন লেখক। একের পর এক বিখ্যাত পত্রিকায় লেখাগুলি ছাপা হয��েছে। তেমনই বারোটি গল্পকে বেছে নিয়ে প্রকাশক প্রোথিত করেছেন ‘ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ’।
• ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ
• বাচ্চুমামার বাড়ি
• ছাদের বাগান
• গুহাচিত্র
• জলকষ্ট
• কলঙ্কভাগী
• মড়া ফুলের মধু
• পাশা
• সূর্যাস্তের ছবি
• হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম
• তুলোবীজ
• নিভাঁজ ত্রিভুজ
নামে কী আসে যায় –এই বাক্য আমাদের মনে গেঁথে থাকলেও পাঠকের মন টানার জন্য এই গল্পগন্থের গল্প���ুলির নামকরণের অভিনবত্ব অনস্বীকার্য। প্রকাশক ব্লার্বে লিখেছেন, ... বারোটা গল্প নিজেদের মধ্যে সারাক্ষণ লড়ে গেছে সেরার শিরোপা জিততে। কথাটা সর্বৈব সত্য। এ বলে আমায় দ্যাখ, তো ও বলে আমাকে।
যতদূর মনে পড়ে ‘ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ’ গল্পটি ‘গোয়েন্দা রহস্য’ পত্রিকায় ছদ্মনামে ছাপা হয়েছিল। ছদ্মনাম ছিল অঞ্জনা মুখোপাধ্যায়। গল্পটি প্রকাশের পর মনে হয়েছিল এত অন্ধকার, এত ম্যাকব্রে লেখা কি বাংলায় আদৌ লেখা সম্ভব ছিল? আমার জানা নেই এই গল্প কোনও সত্য ঘটনার উপর আধারিত ছিল নাকি, যদি তা হয়ে থাকে কিংবা না -ও হয়ে থাকে তবে বলব লেখক যে অসাধারণ প্রণালীতে গল্পের গিঁট পাকিয়েছেন এবং খুলেছেন, তাতে তিনি যদি এই গল্পের ইংরাজি অনুবাদ করান / করেন তো ভারতীয় ইংরাজি সাহিত্যে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হবে। এই সাহিত্য লঘুসাহিত্য নয়। লেখকও লঘুসাহিত্যিক নন।
‘বাচ্চুমামার বাড়ি’ দ্য ডার্কেস্ট থীমের কাহিনী। একজন বৈজ্ঞানিকের খেয়াল, আমাদের অবচেতনে থাকা যৌনতা, হারানোকে ফিরে পাওয়ার বাসনা এবং আবিষ্কারের ফ্রাংকেন্সটাইন হয়ে ওঠা। উফ! চেতনার কোনও স্তরে পৌঁছালে আমাদের রাজ্যের একটা সাদামাটা মফঃস্বলের পরিবেশেও এমন গল্পের প্লট নামিয়ে আনা যায় তা ভাবতে বসলে দিন বদলে যায়।
‘ছাদের বাগান’ পড়তে পড়তে অবশ্য মনে হয়েছে এইক্ষেত্রে পাঠকের গ্রে শেডস আর গ্রে ম্যাটার দুটোই থাকা অত্যাবশ্যকীয়। এই ক্ষেত্রে অসহনীয় একটা সাসপেন্স কাজ করে। একজনের আত্মহত্যায় ইন্ধন জোগাতে থাকার কাহিনী। টুইস্ট আছে, আর আছে ভাষা সৌকর্য। গল্পের শেষে মনে হয় কোনার্ক সুন্দরীর বিভঙ্গ দেখে মদনোন্মত্ত হলেও পূজা হয় না অভিশপ্তের, তবুও তার টানে ছুটে যেতে হয় বারংবার।
এই সংকলনের সেরা গল্প বেছে নিতে বললে আমি বাছব ‘গুহাচিত্র’কে। এই গল্প আমি আগেও পড়েছি, আবার পড়ব তোমার দিব্যি দিয়ে। সেই কোন আদি অনন্তকাল হতে অঙ্কিত হয়ে চলেছে গুহাচিত্র। অবাক হবেন না। আজও অঙ্কিত হয়ে চলেছে। মনস্তত্ত্বের এমন নিখুঁত পোস্টমর্টেম করে লেখক ডিসেকশন টেবিলে ফেলে রেখেছেন যে অ্যানাটমি বুঝতে কষ্ট হয় না। আদিমতম অন্ধকার গহন অরণ্যের মত ছেয়ে ফেলে পাঠকের আনন্দঘনত্বকে, জন্ম নেয় বিষাদ। কেউ একজন লিখে গেছেন সেইসব গান, কবিতা, রচনা আমাদের মনে গেঁথে যায়, যেগুলি দুঃখযাপন করে, বিশ্বাস করাতে পারব নাকি জানা নেই, এই গদ্য তেমনই। যদি দুঃখকে বিলাস করার মত ক্ষমতা থাকে, তবে আপনি এই গল্প পাঠান্তে ধনকুবের হয়ে উঠবেন।
‘জলকষ্ট’, ‘কলঙ্কভাগী’, ‘মড়া ফুলের মধু’ এবং ‘হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম’ অত্যদ্ভুত পয়ারে মনের রিপুদমন সত্ত্বাকে বধ করে তাকে করে তোলে নরকপাল। সেক্স, স্ল্যাং, স্লিজিনেস এর মাত্রাবদ্ধ ব্যবহারে মাথা তোলে কালীয়। পড়তে – পড়তে মনে হয় ইশ অমুককে নিয়ে এমন কপোলকল্পনা আমিও যে করতাম। উত্তুঙ্গ গোলার্ধের আহ্বান কাঠিন্যের জন্ম দেয়, মনে হয় যে কোনও প্রকার স্খলনই অপরাধ নয়। প্রবৃত্তি কক্ষবিক্ষিপ্ত হলে হোক। একজন লেখকের কিন্তু ভালো মানুষ হওয়ার কোনও দায় নেই, সেই দায় প্রদর্শন করার প্রচেষ্টা তিনি করেনওনি। বয়ে যেতে দিয়েছেন ধারাকে, যেভাবে ইন্দ্র ভেঙে দিয়েছিলেন বৃত্রের বাঁধ।
‘পাশা’ গল্পটি সমস্ত গল্পের তুলনায় পৃথক। এই নিয়ে খুব বেশি বললে স্পয়লার হতে পারে। তবে এমন ভয়াবহ গল্প লেখককে আবার লিখতে হলে নিজেকে ছাপিয়ে যেতে হবে। নিশুতি রাতে হুমায়ূন আহমেদ সাহেবের ‘দেবী’ পড়ার সময় শিহরিত হয়েছিলাম, আবার তেমনই শিহরণ অনুভব করলাম ‘পাশা’ পড়ে। মনে হচ্ছিল যেন শিয়রে এসে কেউ উপস্থিত হয়েছে।
‘সূর্যাস্তের ছবি’ অতিলৌকিকতার বেশে টুইস্টের খেলায় বাজিমাত করে। ‘নিভাঁজ ত্রিভুজ’ গল্পে লেখকের ভুলে বীভৎস রসের প্রাধান্য হতেই পারত, কিন্তু ওই যে... তিনি কলম ধরেন মেপে, তাই কল্পবিজ্ঞানের ছাঁচে হরর পড়তে কোনও কষ্ট হয় না। সমাজের চিত্র, ঘা ছোপ ছোপ দাগ ধরায় মনের গায়ে, মনে হয় আরে এগুলো তো ছিলই, আমি আগে কেন খেয়াল করিনি। ‘তুলোবীজ’ আমাকে বড় টেনেছে, বাংলার পটভূমিতে সায়েন্স ফিকশন লেখার মুন্সিয়ানা এবং গল্পের বুনন পদ্ধতি অসামান্য। চুল পড়ে, মন নড়ে; কনফিডেন্স কমতে থাকা নারী – পুরুষকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে বিস্তারিত হয়ে চলেছে একটা নেটওয়ার্ক, তারই গল্প।
বইয়ের প্রচ্ছদ একটু অন্যরকম হলে আমার ভালো লাগত বলেই ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করছি। তবে হেডপিসগুলি নজর কাড়ে। প্রিন্টিং, বাইন্ডিং প্রশ্নাতীত। ব্লার্বে লাল – কালো কালার কম্বিনেশন অন্য মাত্রা জুগিয়েছে। এমন ঐতিহাসিক কাজে একটা খামতি হল লেখাগুলি কোথায়, কবে প্রকাশ পেয়েছিল তার দলিল না রাখা। সেইসকল সম্পাদককে কুর্ণিশ জানাতেই হয় যারা এই লেখাগুলিকে পরীক্ষণমূলক ভাবে প্রকাশ করেছিলেন।
সত্যই যেমন শিব এবং সুন্দর, তেমনইভাবেই ইহাও সত্য যে আমাদের মনে অন্ধকার আছে। সেই অন্ধকারকে যাপন করা প্রিয় মনে হলে অবশ্যই হাতে তুলে নিন ‘ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ’, শিহরণ জাগবেই জাগবে।
Profile Image for Shaid Zaman.
290 reviews47 followers
April 27, 2021
বেশ ভালো একটা বই। প্রতিটা গল্পে একটা ধাক্কা আছে। গা হিম করা ভয় নেই কিন্তু ঐযে বললাম ধাক্কা আছে। চেপে ধরে ভয় পাওয়ানোর কোন চেষ্টা নেই।
Profile Image for Zabir Rafy.
312 reviews10 followers
September 13, 2025
গল্পগুলো মোটের উপরে খারাপ না। খুব উপভোগ করেছি তাও না। তবে ডার্ক থিম বরাবরই আমাকে টানে। সেই হিসেবে বইটা শেষ করা আর তিন রেটিং দেয়া গেলো।
Profile Image for Shadin Pranto.
1,471 reviews560 followers
April 14, 2020
এককথায় বইয়ের গল্পগুলো ভয়ংকর সুন্দর! ডার্ক হরর লেখা সহজ কম্ম নয়। কেননা হরর গল্পকে ডার্ক করবার বাসনায় লেখক যা লিখে বসেন তা অনেকসময় পাতে দেওয়া যায় না। স্রেফ অখাদ্য হয়। কিন্তু সৈকত মুখোপাধ্যায় সফল হয়েছেন৷ তাঁর লেখার হাত ভালো। প্রত্যেকটি গল্পেই সাধারণ এবং স্বাভাবিক বিচার-বুদ্ধির বাইরে দিয়ে এমনধারা কিছু অঘটন ঘটে গিয়েছে যেমনটা ভাবতে আপনার,আমার মন অভ্যস্ত নয়। যৌনতা ডার্ক হররের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তবে এটি আমার পছন্দসই বিষয় নয়। তাই পড়তে গিয়ে খানিকটা বিব্রতবোধ করেছি এই কথা অস্বীকার করব না।

কিছু গল্পের কাহিনিতে পরোক্ষ মিল রয়েছে বলে মনে হলো। সম্ভবত একটানা পড়েছি তাই এমন ধারণা।

নিঃসন্দেহে ভিন্নধারার লেখনী। গল্পগুলোও পড়ার মতো। হরর পড়তে চাইছেন, অথচ গৎবাঁধা ভূতের গপ্পে অরূচি এমন সময় আপনার চাই "ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রুণ "।
Profile Image for তান জীম.
Author 4 books279 followers
March 22, 2024
বইয়ের নামটা আজব না? আজব নামের জন্যই বইটা নজর কেড়েছিলো আজ থেকে না হলেও ৪ বছর আগে। অদ্ভুত নামের এই ১২টা গল্পের সংকলন বইটাকে আবার ট্যাগ করা হয়েছে ‘ডার্ক ফ্যান্টাসি’ হিসেবে। কিন্তু আমার জন্য দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বইটা প্রকাশ পেয়েছে কলকাতার প্রকাশনী পত্রভারতী থেকে। কলকাতা থেকে বই আনানোর যে লং টাইম প্রসেস এইটা আবার আমার ধাতে সয় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি আবার একটু অধৈর্য মানুষ কিনা। অথচ এমন না যে বইটা পেলেই সাথে সাথে পড়তে বসে যাবো। সুতরাং এই ৪ বছরেও সে বই আমার পড়ার সুযোগ হয়নি, অথ�� অর্ডার করলে ১-২ মাসের মধ্যে হাতে চলে আসতো। যাই হোক, সপ্তাহখানেক আগে বইটা হাতে পেলাম আর দমাদম পড়ে ফেললাম। আজকে সে বইটা নিয়েই বলি।

শুরুতে বলে নেই, বইটাকে যেরকম ডার্ক ফ্যান্টাসি বলে ট্যাগ করা হয়েছিলো আমার কাছে পার্সোনালি সেরকম মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে বইয়ের গল্পগুলো অ্যাবসার্ড বা উইয়ার্ড ফিকশন সাবজনরায় পড়ে।

বইয়ের লিখনশৈলী চমৎকার। এটা নিয়ে অবশ্য আমি অবাক হইনি। কারণ আমার পড়ার স্বল্প অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কলকাতার লেখকদের প্লট দুর্বল-দুর্বলতম-দুর্বলতর হতে পারে কিন্তু লেখা একদম ১০০ তে ১০০ না হলেও ৮০/৯০ এর কম না। তাদের শব্দ চয়ন, ব্যাকরণ, বাক্যবিন্যাস সবকিছুতে আলাদা একটা মাধুর্য আছে (আমায় দেশিয় সাহিত্যের হেটার ভাববেন না যেন)। গল্পের শুরুর লাইনটা দিয়ে যে পাঠককে হুকড করে ফেলার একটা গোপন টোটকা আছে, সেটার সঠিক ব্যবহার করেছেন লেখক; কয়েকটা গল্পেই। যেমন- বইয়ের প্রথম গল্প ‘ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ’ এর ১ম লাইন হচ্ছে, ‘অনেকগুলো ঠেক-এ ঠোক্কর খাওয়ার পর শেষমেষ আমরা ভাদ্রকালী শশ্মানে ঢুকে থিতু হয়েছিলাম।’ শশ্মানে ঢুকে কেউ থিতু হবে কেন? শশ্মানে ঢুকে থিতু হয়ই বা কীভাবে? কারা? তবে কি…? আবার ‘গুহাচিত্র’ গল্প শুরু হয়েছে, ‘বহুদিন বাদে সেদিন সাইকিয়াট্রিস্ট ডাক্তার সামন্তর চেম্বারে বসে বিজুরিকে সামনাসামনি দেখেছিলাম।’ মোটকথা ছোটগল্প লেখার যে তরিকা সেটা ওনার একটু হলেও যে জানা আছে সেটা তো বুঝলাম। বাকি থাকে প্লটটা কেমন আর সেটাকে শেপআপ করে দাঁড় করিয়েছেন কীভাবে সেটা দেখা।

প্লটের কথা বললে বলতে হয়, এটাও সেই ‘মারাং গ্রামের পান্থশালা’ ঘরানার বই (এটাও ওনারই লেখা)। প্লটগুলো অদ্ভুত, সুন্দর, উইয়ার্ড। ডার্ক ফ্যান্টাসি তো বুঝি না তবে এমন কিছু প্লট আছে যেগুলো আপনি এর আগে পড়েননি। মানে একদম ফ্রেশ। ছোটগল্পের প্লট নিয়ে বিস্তারিত তো দূরে থাক, সংক্ষিপ্ত কিছু বলতে গেলেও মনে হয় এই বুঝি শব্দ গলে স্পয়লার দিয়ে ফেললাম। সুতরাং বিরত থাকলাম প্লট নিয়ে কথা বলাতে। এমনকি জনরাও কী সেটাও বলে বোঝাতে পারছি না যে এত অদ্ভুত গল্পগুলো। আর অদ্ভুততা (জানিনা এটা আদৌ কোন শব্দ কিনা :v) আরো বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিটা গল্পের আগে থাকা ছবিগুলো। বিশেষ করে ‘হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম’, ‘মড়া ফুলের মধু’, ‘বাচ্চুমামার বাড়ি’ ইত্যাদি গল্পগুলোর আগে থাকা ছবিগুলো ক্রিপি অনুভূতি দেয়। গল্পগুলোতে পরাবাস্তবতা, হরর, ক্রিপি এলিমেন্ট মিলে মিশে যে জগাখিচুড়ি প্লট পাঠকের সামনে দাঁড় করিয়েছে তা অত্যন্ত চমৎকার।

বাকি থাকে শুধু এক্সিকিউশন। সৈকত মুখোপাধ্যায়ের এটা নিয়ে দুটো বই পড়েছি । দুটোই ছোটগল্পের সংকলন এবং এটা পড়ার পরে মনে হয়েছে স্পেকুলেটিভ ফিকশনে ছোটগল্প কীভাবে লিখতে হয় সেটা কেউ শিখতে চাইতে আদর্শ লিটারেরি মাস্টার হতে পারে এই বইদুটো। ১৬০ পৃষ্ঠায় ১২টা গল্প আটালেও কোন গল্পে কম সময় দেননি। মানে মনে হয়নি এখানে আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভালো হতো। কিংবা ঐ গল্পগুলো একটু বেশি মেদযুক্ত হয়ে গেছে। প্রায় সবই ছিলো একদম পারফেক্ট। বেশি ভালো লেগেছে 'হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম', 'গুহাচিত্র', 'ছাদের বাগান', 'তুলোবীজ', 'নিভাঁজ ত্রিভুজ'। বেশি ভালো কথা বলতে বলতে খেয়াল করার চেষ্টা করলাম, বইতে আমার খারাপটা লেগেছে কী? আসলে বইতে আমার কোন কিছুই খারাপ লাগেনি। একটা গল্পও ছিলো না যেটা খারাপ লেগেছে। হ্যাঁ, কিছু গল্প কম ভালো লেগেছে তবে খারাপ লাগেনি একটাও। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই বইয়ের একটা ব্যাপার বলে যাই যেটা কারো কারো ড্রব্যাক মনে হলেও হতে পারে। সেটা হলো, বইটাতে প্রচুর অ্যাডাল্ট কথাবার্তা, সিন আছে; প্রায় প্রতিটা গল্পতেই। তবে আমার কাছে তা আরোপিত লাগেনি, মনে হয়েছে গল্পের প্রয়োজনেই এসেছে। কিন্তু অনেকে পড়ার ক্ষেত্রে এই জিনিস এড়িয়ে চলেন, তাই তাদের জন্য হেডসআপ।
Profile Image for Shoroli Shilon.
167 reviews72 followers
May 20, 2025
ট্রিগার ওয়ার্নিং: প্রচুর ডার্ক, অ্যাডাল্ট বই।

আধিভৌতিক এবং স্পেকুলেটিভ ফিকশনও বলা যেতে পারে। কি হতে চলেছে বোঝা যাচ্ছিলো না, আনপ্রেডিক্টেবল ভালোই। তাছাড়া গল্পগুলো বেশ অন্যরকম, যা আপনার-আমার কল্পনার বাইরে। যে গল্পে আমরা সাধারণত অভ্যস্ত নই। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হুকড করে রেখেছিল বলেই হয়তো ভালোলেগেছে।

তাছাড়া লেখনী ভিন্নধারার। গতানুগতিক নিয়মের বাইরে। তবে প্রত্যেকটা গল্পতেই যৌনতা স্পষ্ট। যেটা একটু অস্বস্তিরও কারণ।
Profile Image for Indranil Mukherjee.
4 reviews1 follower
January 9, 2022
প্রায় মাস ছয়েক শুধু non-fiction বই পড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখার পর, গত এক মাসে বেশকিছু বাংলা ফিকশন পড়লাম । প্রথম যে বইটা হাতে তুলে নিয়েছিলাম সেটা যে আমাকে এতটাই মুগ্ধ করবে, তা ভাবি নি। একটা সময় বাংলা পত্রিকাগুলিতে ধারাবাহিক উপন্যাস নিয়মিত জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে ক্রমশ বাংলা পাঠকমহলে মহাকাব্যিক উপন্যাসের বই কেনার দিকে আগ্রহ বাড়তে থাকল আর বাংলা সাহিত্য যেন বনফুল, সুবোধ ঘোষ, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়দের মত ছোট গল্পকারদের ভুলতে চাইল। বইবাজারের দাবীতে ছোট গল্পকাররা হলেন হাইওয়ে-চ্যুত । সৈকত মুখোপাধ্যায় এইযুগের এক নামী কথাশিল্পী, যিনি অবশ্য তাঁর জাদুকরী শব্দের মায়াজালে একের পর এক ছোট গল্প রচনা করে চলেছেন। বড় গল্প , উপন্যাস রচনাতেও তিনি পাঠককে অনায়েসে আকৃষ্ট করতে পা থরেন, যদিও ছোট গল্প লেখা সমন্ধে নিজেকে নিয়ে মজা করে আমাকে একবার বলেছিলেন—আমি মুর্গি কাটি ; আস্ত পাঁঠা কাটার সময় আমার নেই।

পত্রভারতী থেকে প্রকাশিত তাঁর লেখা বারোটি আয়তনে ছোট-বড় উপাখ্যানের সমাহার ‘ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রুন’ বইয়ের প্রচ্ছদে গল্পগুলোর বিষয়বস্তু উল্লেখ করা আছে -- গায়ে কাঁটা দেওয়া……; স্বাভাবিকভাবেই আধিভৌতিক, পরাবাস্তব, রহস্য-রোমাঞ্চকর কাহিনীর দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। যদিও বারোটি গল্পের মধ্যে যদি নিছক ভৌতিক, প্যারানরমাল গল্পের পর্যায়ে ফেলতে হয়, তাহলে পাশা, জলকষ্ট আর মড়া ফুলের মধু এই তিনটি গল্পকেই বলা যেতে পারে। যদিও লেখনীর মুন্সিয়ানাতে মরা ফুলের মধু আর জলকষ্ট দুটো গল্পেই বেশ মজবুত সাইকোলজিকাল ট্রিটমেন্ট রয়েছে। বইএর প্রথম গল্পটার কথা বলি অর্থাৎ ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ – লেখক এখানে এক অভূতপূর্ব রহস্যময় প্লটের বিস্তার করেছেন । লেখককে সবার আগে সাধুবাদ জানাতে হয় এইরকম একটা প্লট নিয়ে দীর্ঘ গোয়েন্দা গল্প না লিখে একটা অসাধারণ সাইকোলজিকাল থ্রিলার উপহার দেওয়ার জন্য । ছাদের বাগান গল্পটা পড়ার সময় কলমের জাদুকরী ভাষার বিন্যাসে মনে হচ্ছিল যেন গদ্য সাহিত্য নয়, কবিতা পড়ছি। বিচিত্র প্লটের দিক থেকে ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ যদি এই বইটার শ্রেষ্ঠ রত্ন হয়, ছাদের বাগান আর কলঙ্কভাগী -- এদুটি গল্পকে সাম্প্রতিককালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনস্তাত্ত্বিক রচনা বলা যেতে পারে । উচ্চ-মধ্যবিত্ত শহুরে সমাজের সৌখিন সুখ-দুঃখের গল্প তো অনেক পড়েছেন , একবার গুহাচিত্র গল্পটা পড়ে দেখুন। পাত্র-পাত্রী সেই আমাদের চেনা গন্ডির মানুষ কিন্তু আখ্যান রচনার ভঙ্গিমা, একে সাম্প্রতিককালের কিছু সেরা ছোটগল্পের মধ্যে ফেলে দেবে। প্যারানরমাল বিষয়বস্তুর সাথে বেশ ম্যাজিক রিয়ালিজম ঘরানার টোটকা আর হালকা ফ্যান্টাসি ফোরণ মেশানো গল্প - সূর্যাস্তের ছবি ,তুলোবীজ,নিভাঁজ ত্রিভুজ বা বাচ্চুমামার বাড়ি। প্রত্যেকটি গল্প�� আধুনিক মানুষের মননকে হাল্কা চাবুক মেরে যাবে। হাত কাটা মেয়ের হারমোনিয়াম গল্পটি দারুন কিছু না হলেও বেশ উতরে গেছে। আমার ব্যক্তিগত মতে বারোটি গল্পের মধ্যে একমাত্র পাশা গল্পটি একেবারেই আটপৌরে ফর্মুলা মাফিক ভূতুড়ে গল্প।

সব মিলিয়ে বইটিকে বলা যেতে পারে , ডার্ক ফ্যান্টাসি ঘরানার সাম্প্রতিককালের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বাংলা সাহিত্য কীর্তি। তবে প্রকাশক বইটির প্রচ্ছদে নামকরনের সাথে সাবটাইটেলে ‘গায়ে কাঁটা দেওয়া বারোটি কাহিনী’ শব্দবন্ধ যোগ করে পুস্তকটির হয়ত ব্যবসাবৃদ্ধি করেছেন কিন্তু সেই সঙ্গে বইটির চরিত্রকে কিছুটা লঘুত্ব প্রদানও করেছেন বলে আমার ব্যক্তিগত মতামত। আসলে আমার বলার উদ্দেশ্য এই যে , এই বইটি গুরুত্বপূর্ন সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা রাখে , কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমাদের দেশের পুরস্কার প্রদানের প্রচলিত নিয়মে এই জাতীয় বইগুলোকে প্রথমেই ব্রাত্য করে রাখা হয় থাকে।
Profile Image for Shampa Paul.
105 reviews36 followers
November 30, 2020
অনেকদিন ধরে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও অবশেষে এতদিনে পড়া হলো। বাংলায় এধরণের বই তেমন একটা পড়িনি। দু একটা গল্প বাদে বাকি সব গল্পগুলোই বেশ লেগেছে। ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ গল্পটাই সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এই নিয়ে দুটো বই পড়ে মনে হচ্ছে, সৈকতবাবুর লেখা ভরসা করে পড়া যায়।
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
May 25, 2021
বিজ্ঞাপনে যা বলা হয়েছে সেরকম দুর্ধর্ষ কিছু না।
Profile Image for Madhurima Nayek.
361 reviews135 followers
March 23, 2021
ওয়ান অফ মাই ফেবারিট লেখক সৈকত মুখোপাধ্যায়।ওনার যে কয়টা বই পড়েছি, বেশ ভালো লেগেছে। এই বইটা তো সেই কত্তদিন থেকে পড়ার শখ ছিল, শেষমেষ এত্তদিন পর ফুলফিল হলো।

বইএর প্রচ্ছদ বেশ নজরকাড়া, সেই সঙ্গে গল্পের ইলাস্ট্রেশন গুলোও বেশ ভালো।
মোট ১২টা গল্প, বুক ডেসক্রিপশনে নাম গুলো দেওয়া আছে। প্রত্যেকটা গল্পের কনসেপ্ট গুলো বেশ ইউনিক, চটপট পড়ে ফেলা যায়। সত্যি বলছি পড়ে তৃপ্তি পেয়েছি, কোথাও বিরক্তিবোধ করিনি। তবে "গুহাচিত্র" গল্পটা আগে পড়েছি, অন্য কোনো বইতে পড়েছি।
তবে একটা কথা বলবো যে, ডার্ক ফ্যান্টাসি দেখে গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্প বা ভয়ংকর কিছু ভেবে পড়তে শুরু করতে যাবেন না, এখানে সেরকম কিছু নাই, এখানে যা আছে এককথায় বলতে গেলে অন্ধকার জগতের গল্প। আর লেখকের লেখা পড়ে একটা কথাই মাথায় ঘুরছিল, এসব আইডিয়া গুলো লেখকের মাথায় আসে কি করে !?🤔
Profile Image for DEHAN.
276 reviews86 followers
February 4, 2019
বইয়ের শেষে ফ্ল্যাপে লেখা বাংলা কল্প-গল্প জগতে এমন অসহ্য আতঙ্কের গল্প খুব কম লেখা হয়েছে। কথাটা ভয়ংকর সত্য কথা। প্রত্যেকটা গল্পই ব্যতিক্রমের মধ্যেও ব্যতিক্রম। এইরকম জিনিস পড়ার পর কয়েকদিন মাথায় অন্যকিছু নেওয়া যায় না। পড়ার পর থেকেই কেমন জানি একটা পৈশাচিক মজা লাগতেছে।
Profile Image for Abid.
136 reviews23 followers
September 17, 2025
খুব উপভোগ্য কতগুলো ছোটগল্প নিয়ে এ বই৷ বইয়ের জনরা হিসেবে লেখা 'ডার্ক ফ্যান্টাসি'। আদতে গল্পগুলো খুব উচ্চস্তরের ডার্ক না হলেও গল্পগুলোর প্লট আর কনসেপ্ট অতুলনীয়। ছোটগল্পের বইতে দেখা যায় শুরুর দিকে কিছু ভালো গল্প, এরপর ক্রমশই মান হারাতে থাকে। কিন্তু এ বইয়ের শুরু থেকে শেষ- প্রতিটা গল্পই worth reading. গা শিরশির করবে, ভাবনার খোরাক জোগাবে- আর সবচে বেশি যা করবে তা হলো তা হলো, 'মুগ্ধ'। গল্পগুলোর একমাত্র সীমাবদ্ধতা হলো প্রতিটা গল্পেই ডার্কনেসের একমাত্র উপাদান 'যৌনতা'। আরে বাপু, যৌনতা বাদেও ডার্ক স্টোরি লেখা যায়!
Profile Image for Sumaiya Akhter  Lisa.
83 reviews
February 5, 2021
বইয়ের নাম আর অতিরঞ্জিত রিভিউ দেখেই বইটা নেয়া ।
সত্যি কথা বলতে এইখানে ভয়ংকর, নৃশংস, গায়ে কাটা দেওয়ার মতো কিছুই নেই।
কাল রাতে পড়ার পর তেমন ভালো লাগেনি। ভাবলাম থাক, গল্প গুলো নিয়ে হয়তো আরো একটু ভাবলে ভালো লাগবে।
কিন্তু না এটা অখাদ্য।
আমি মত বদলাতে পারলাম না।

একটা কথা কয়েকদিন থেকেই ভাবছিলাম আর বইটা পড়ে সেকথা না বলে থাকতে পারছি না।
রিভিউতে এত রং না লাগিয়ে যেটা সত্যি শুধু সেটাই লিখুন। কেউ একজন হয়তো আপনার এই রিভিউ দেখেই একটা বই পড়তে চাইবে।
লোকজনকে বিভ্রান্ত করে কি লাভ বলেন?
আমি এই বিষয়ে বারবার ঠকে শুধু এটাই বলব , কারো চাকচিক্যময় রিভিউ দেখেই ধুমধাম বই সিলেক্ট করলে মাঝে মাঝে বদহজম, ডায়রিয়া হতে পারে।

পুরো বইয়ের মধ্যে দু'একটা লাইন ভালো লেগেছে তাই কিপ্টামি না বরং উদারতার খাতিরেই একটা স্টার।

Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
April 29, 2025
৩.৫/৫

কলঙ্কভাগী আর সূর্যাস্তের ছবি, এই দুইটা গল্প আলাদা করে মনে থাকবে। বাকিগুলো বেশ চলনসই।
তবে, বিশেষ করে নজর কাড়ে সৈকত মুখোপাধ্যায়ের ভাষা। প্রতিটি গল্পেই সুন্দর মানিয়ে গেছে।
Profile Image for Gourab Mukherjee.
164 reviews25 followers
December 23, 2019
আমাদের মনের কিছু অন্ধকার দিক থাকে যেখান থেকে খুব মাঝে মধ্যে কিছু উদ্ভট, নৃশংস, অনৈতিক চিন্তা বেরিয়ে আসে আমাদের যৌক্তিকতার সমস্ত কঠিন স্তর ভেদ করে। আমরা নিজেদের মুহূর্তের মধ্যে সেই চিন্তা থেকে সরিয়ে আনি যাতে আমরা ক্ষেপে গিয়ে পৈশাচিক না হয়ে যাই।

এই বই সেই বারণ একদম বাদ দিয়ে লেখা। সমস্ত গল্পই ভয়াবহ ধরনের ডার্ক। (লেখক বলেই দিয়েছিলেন অবশ্য)
প্রত্যেকটা গল্প পড়ে আপনাকে থামতে হবে। নিজেকে বোঝাতে হবে না এটা সত্যি না - এমন কোনোদিন হবে না। শান্তি পাবার পর পরের গল্প শুরু করতে পারবেন।

160 পাতার মধ্যে 12 টি ভয়াবহ গল্পের প্রত্যেকটিই পড়ার পর মাথার ঠিক রাখতে পারবেন না। নিজের ডার্ক সাইড এর ওপর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা করার কোন ইচ্ছা না থাকলে এই বই না পড়াই শ্রেয়।
(Blurb পড়লেই অবশ্য তা বোঝা যায়। )
Profile Image for Uzzal Orpheus.
60 reviews6 followers
January 15, 2021
ভদ্রলোকের লেখনী খুবই ভাল। বেশ কাব্যিক আর সুখপাঠ্য।বারোটা গল্পের মধ্যে চারটা গল্প বেশ ভাল্লাগছে। (১) ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ (২) হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম (৩) কলঙ্কভাগী (৪) গুহাচিত্র।
Profile Image for Arif Hossain.
43 reviews2 followers
April 28, 2021
একটু অন্যরকম কিছু পড়ে শান্তি লাগছে। সব গুলো গল্পই যে ভালো ছিলো তা না। কিন্তু খারাপ ও ছিলো না...
Profile Image for Rizal Kabir.
Author 2 books45 followers
July 7, 2020
নামটা বড়ই অদ্ভুত বইয়ের, ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ – লেখক যে সামাজিকতার সনাতন শৃঙ্খলের খুব একটা তোয়াক্কা করেন না সেটা বোঝা গেছে নামেই। Saikat Mukhopadhyay-এর অন্য কোনো লেখা আগে পড়ি নি, এই বইটি মূলত এক্সপেরিমেন্টাল ছিল আমার জন্য। সেই এক্সপেরিমেন্ট সফল হয়েছে বলা যায়। সমকালীন পশ্চিমবঙ্গের কোনো লেখকের বই পড়লাম অনেকদিন পর। লেখকের বারোটি ছোটগল্পের এই সংকলনকে যদি কোনো নির্দিষ্ট ধারায় ফেলা হয়, তাহলে এগুলোকে ডার্ক ফ্যান্টাসি বলা যেতে পারে। পড়তে গিয়ে সবচেয়ে চমৎকার লেগেছে যা তা হলোঃ বিষয়বস্তুর নতুনত্ব। গল্পের কনসেপ্টগুলো যেন অন্য আরেক পৃথ��বী থেকে নেয়া।

কল্পনার সাথে বাস্তবের এক অপূর্ব মিশ্রণ পাওয়া গেছে লেখায়। ভারতীয় বাঙালী জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক টুকটাকের সাথে মিলেছে অসাধারণ ও ভিন্নধর্মী পরাবাস্তবতা। সেই সাথে বেশ আটপৌরে একটা ঘ্রাণ রয়েছে লেখায়ঃ
গাংশালিক আর শামুকখোল পাখিরা কেঁচো আর শামুক খেয়ে ফুরাতে না পারে ভোম্বলের মতন এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।

সমাজকে অত্যন্ত নগ্নভাবে উপস্থাপন করেছেন সৈকত মুখোপাধ্যায়। প্রচ্ছদে লেখা আছে একটা কথা – ‘গায়ে কাঁটা দেয়া কাহিনী’ যার সাথে আমি একমত নই, তবে হ্যাঁ, পাঠকমনে ধাক্কা দেয়ার মত যথেষ্ট উপাদান রয়েছে গল্পগুলোয়। তাছাড়া প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছেন লেখক কিছু গল্পে, পশ্চিমবঙ্গের সমাজের প্রতি কটাক্ষ করতেও ছাড়েন নি সুযোগ পেলে – যার প্রায় সবই আমাদের বাংলাদেশের জন্যও প্রযোজ্য।

মূল্যবোধ, প্রেম, ধর্ম, নারী, যান্ত্রিক সমাজ, যৌনতা, সামাজিক রীতি, ইতিহাস ইত্যাদি সবকিছুই আছে বিভিন্ন গল্পে। বর্ণনাতে ভীষণ ধারালো একটা ব্যাপারও রয়েছে যা খুবই ভাল লেগেছে। প্রথম গল্পটিই হলোঃ ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ – এবং ধাক্কা খাওয়ার শুরুও এখান থেকেই। গল্পগুলো পড়তে গিয়ে প্রায়ই ভ্রু কুঁচকেছে, ‘এমন আইডিয়া লেখকের কিভাবে মাথায় আসলো’ ধরণের চিন্তা হয়েছে বেশ কয়েকবার।
অন্য একটা বই চলছিল আমার, তার মাঝেই টুকটাক একটা দুটো করে গল্প পড়েছি এখান থেকে। এতে চিন্তা করার অবকাশ পাচ্ছিলাম ভালই। একটানা পড়ার চেয়ে বিরতি নিয়ে গল্পগুলো পড়া উচিত বলেই মনে হয় আমার। দু-একটা গল্পকে একটু সাদামাটা মনে হয়েছে, এর বাইরে বাকি সবগুলোই কমবেশী চিত্তাকর্ষক। সত্যি বলতে, বাংলা সাহিত্যে এ ধরণের অন্ধকারাচ্ছন্ন, নিষিদ্ধ কিংবা সমাজের গলি-ঘুপচির পাপচিন্তার মত বিষয় নিয়ে কতটুকু কাজ হয়েছে আমি ঠিক নিশ্চিত না। হলেও এই ধারার সাথে আমার তেমন অন্তরঙ্গ পরিচয় নেই। তাই সব মিলিয়ে কেমন লেগেছে সেটা বলা একটু কঠিন। বলাই বাহুল্য, গুমোট পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছেন লেখক গল্পগুলোতে, খুব আয়েশি ভঙ্গিতে রহস্যের জাল বিছিয়েছেন নিপুণ হাতে। প্রচলিত বিশ্বাস, প্রথাকে অতিক্রম করে গল্পগুলোতে অস্বস্তিকর অনুভূতি তৈরি করেছেন। মুখ ফুটে যেসব কথা বলা হয়না, সেগুলোও বলেছেন অবলীলায়। বেশ কয়েক জায়গায় ডার্ক ফ্যান্টাসির অবধারিত যৌনতার উপস্থিতি থাকলেও, ব্যাপারগুলো অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করেন নি – যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।

সহজ স্বাভাবিক গল্প বলার ফাঁকেও কৌশলে গভীরতার খাদে নেমেছেন কখনো কখনো। আবেগ-অনুভূতি খুব একটা পাত্তা পায় নি লেখায়, তবে ভাষাগত মাধুর্য পাঠককে স্পর্শ করবে তা বলা যায়।
মেঘ ডাকলো যেন তার বুকের অনেক ভেতরে। যেন ফুলকির অনেকজন্ম আগে চাপা পড়ে থাকা সব কষ্ট সেই মেঘ গর্জনের সঙ্গে ওপরে ভেসে উঠল।

সব ধরণের পাঠকের হয়তো এই ধারার লেখা ভাল লাগবে না, তবে লেখক আমাকে মুগ্ধ করেছে বলবো। চিরচেনা পৃথিবীর বাইরে অন্ধকার, আধিভৌতিক কিংবা নিষিদ্ধ জগতে ঢুঁ মেরে আসার জন্য বেশ ভাল একটা বই।
Profile Image for Mrinmoy Bhattacharya.
225 reviews36 followers
April 28, 2021
🔸প্রতিটি পাঠকের মনের মধ্যে একজন লেখক সত্ত্বা থাকে। সেই সত্ত্বা প্রকাশ পায় কোনো গল্প পড়তে পড়তে । মনে হয়, আমি গল্পটি লিখলে কীভাবে লিখতাম ? কীভাবে শেষ করতাম ?
ঠিক এইখানেই আমার লেখক সত্ত্বা সম্পূর্ণরূপে ব‍্যর্থ । এই সংকলনের প্রত‍্যেকটি গল্পই আমার ধারণার বাইরে, শুধু ধারণার বাইরে বললে কিছুই বলা হয় না । প্রতিটি গল্প শেষ করেই বিস্মিত এবং হতবাক হয়েছি । পড়া থামিয়ে ভাবনায় ডুবে গেছি বেশ কয়েকবার, এটা কী পড়লাম !!

📝 এই সংকলনের প্রতিটি গল্পই জঁর-ফিকশনের অন্তর্ভুক্ত । রহস্য-রোমাঞ্চ-ভৌতিক-কল্পবিজ্ঞান-ডার্ক ফ‍্যান্টাসি - এই সব বিষয়গুলির মিলিত রূপ হলো জঁর-ফিকশন । যেখানে লৌকিক-অলৌকিক, বিজ্ঞান-কল্পবিজ্ঞান - সবকিছু অবস্থান করছে একে অপরের সাথে মিলে । আর ঠিক এই কারণেই এই গল্পগুলি আমাদের প্রচলিত ধ‍্যান-ধারণার বাইরে গিয়ে পাঠক-মনকে সম্পূর্ণরূপে ধাক্কা দিতে সক্ষম ।

▪️সংকলনের ১২টি গল্পই দুর্দান্ত । না, শুধু গল্প বললে কিছুই বলা হয় না । ভয়ংকর, নৃশংস, গায়ে কাঁটা দেওয়া এক একটি উপাখ্যান । এককথায় অন্ধকার বা অন‍্য দুনিয়ার গল্প । বাংলা কল্প-গল্প জগতে এমন অস্বস্তিকর , অসহ্য আতঙ্কের গল্প খুব কমই লেখা হয়েছে ।

📜 সংকলনের গল্পগুলি হলো -
১. ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ
২. বাচ্চুমামার বাড়ি
৩. ছাদের বাগান
৪. গুহাচিত্র
৫. জলকষ্ট
৬. কলঙ্কভাগী
৭. মরা ফুলের মধু
৮. পাশা
৯. সূর্যাস্তের ছবি
১০. হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম
১১. তুলোবীজ
১২. নিভাঁজ ত্রিভুজ

▪️না, কোনো বিস্তারিত বর্ণনায় যাবো না । শুধু বলবো, ১২টি গল্প নিজেদের মধ্যে সারাক্ষণ লড়ে গেছে সেরার শিরোপা অর্জনের জন্য । আর এখানেই লেখক সৈকত মুখোপাধ্যায়ের কলমের সাফল্য ।
Profile Image for Diptajit Misra.
47 reviews27 followers
September 3, 2019
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া
বইয়ের নাম: ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ
লেখক: সৈকত মুখোপাধ্যায়
প্রকাশক: পত্রভারতী
মূল্য: ২২৫₹

এটা মূলতঃ গল্প সংকলন। বইয়ের প্রচ্ছদেই লেখা আছে গল্পের সংখ্যা এখানে ১২টি। বইয়ের শিরোনাম সহ আরও ১১টি গল্প এই বইয়ে উপস্থিত। এবার প্রশ্ন হল এই বইয়ের জঁর কী? এটার উত্তরটা দেওয়া আমার পক্ষে একটু গোলমেলে। কখনও কোনো গল্প কল্পবিজ্ঞানে নির্ভর করেছে, তো কখনও ভৌতিক, কখনও আবার দৈবিক। কিন্তু গল্পগুলোয় আতঙ্ক স্পষ্ট। গা বেয়ে শিরশিরানি নামবে প্রচুর বর্ণনা পড়ে।
আমি ভয় পেতে ভালোবাসি। কিন্তু এ বইয়ের সব গল্পের শিরশিরানি আমার ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগেনি। তবে প্রতিটা গল্পের মধ্যে দিয়ে লেখক সমাজের বিভিন্ন স্তরের ও বিভিন্ন মানসিকতার মানুষকে ফুটিয়ে তুলেছেন সুচারুভাবে।
উৎকৃষ্টতার দিক দিয়ে দেখতে গেলে ১২টি গল্পকে নীচের অর্ডারে সাজানো যায়:
কলঙ্কভাগী
হাতকাটা মেয়ের হারমোনিয়াম
বাচ্চুমামার বাড়ি
তুলোবীজ
নিভাঁজ ত্রিভুজ
ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রূণ
পাশা
জলকষ্ট
সূর্যাস্তের ছবি
গুহাচিত্র
মড়া ফুলের মধু
ছাদের বাগান
সেই সঙ্গে বইয়ের ইলাস্ট্রেশনগুলো প্রশংসার দাবী রাখে। অল্প টান ও শেডের ছটায় পাঠকের মনে ছাপ ফেলে যেতে ও গল্প শেষের পর গল্পের সঙ্গে ছবিকে রিলেট করতে এ ইলাসট্রেশনের জুড়ি নেই। প্রদীপ্ত মুখার্জিবাবুকে ধন্যবাদ জানাই এরকম সযত্নে করা ইলাসট্রেশনের জন্য।
Profile Image for Nayeem Samdanee.
58 reviews14 followers
October 14, 2024
গল্পগুলো যে খুব বেশি অস্বস্তিকর, যেমনটা ফ্ল্যাপে লেখা আরকি, ঠিক ততোটা বলা যায় না। কিছু আদিভৌতিক গল্প বরং খানিকটা ক্লিশে, চিরাচরিত ফরম্যাটের বাইরে নয়। তবে স্ব���কার করতে হবে যে, লেখক গল্পে যৌনতাকে ব্যবহার করতে জানেন; যদিও কিছু ক্ষেত্রে মাত্রা ছাড়িয়েছে, রগরগে হয়ে পড়েছে। তারপরও লেখকের বর্ণনায় একধরনের বাস্তবোচিত বোধ আছে, জীবনবোধও আছে। গল্প বলার ধরনটি বেশ চমৎকার।
Displaying 1 - 30 of 77 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.