বিজ্ঞানী জগুমামা, ভাগ্নে টুকলু। প্রায়শই সঙ্গে জুড়ে যান ভিতু ও খ্যাপাটে অনন্ত সরখেল। এই এ্যহস্পর্শ যোগ ঘটলেই অদ্ভুত সব রহস্য ঘনীভূত হয়। কাটা 'হাত' মানুষ খুন করে... দেবদেবীরা হাজির হন লাদাখের মিংথুলা গ্রামে... আলো জ্বলা মশার প্রাদুর্ভাব ঘটে বিজনবাড়ি গ্রামে! রুকটুকা নদীর ধারে পড়ে থাকে নিঃসঙ্গ বিজ্ঞানীর মৃতদেহ... চাঁদিপুরের সাগরবেলায় নীল কাঁকড়ার খোঁজে যেতে হয়... সিকিমের মৈনান পাহাড়ে অতিমানব আছে কী?...দু-দুজন জগুমামা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী! ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত লেখা টুকলু-জগুমামার নানারঙের ৮টি জমাট রহস্যের উপন্যাস নিয়ে প্রকাশিত হল জণ্ডমামা রহস্য সমগ্র ১।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এসসি। শিশু কিশোর ও প্রাপ্তমনস্ক সাহিত্যের ইতিহাস, বিজ্ঞান, রহস্য, হাসিমজা...নানা শাখায় বিচরণ। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রচুর লেখালিখি। প্রকাশিত ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। জনপ্রিয় চরিত্র বিজ্ঞানী জগুমামা ও টুকলু। ১৯৯৫ থেকে কিশোর ভারতী পত্রিকার সম্পাদক। ২০০৭ সালে পেয়েছেন শিশু সাহিত্যে রাষ্ট্রপতি সম্মান। শিশু-কিশোর সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কারে সম্মানিত। মধ্যবর্তী সময়ে পেয়েছেন রোটারি বঙ্গরত্ন, অতুল্য ঘোষ স্মৃতি সম্মান, প্রথম আলো সম্মান ও নানা পুরস্কার
নেটফ্লিক্সের Wednesday সিরিজটি দেখেছেন? যদি দেখে থাকেন, তবে সেখানে যে "থিং" নামের কাটা ও চলন্ত হাতটি রয়েছে, সেটিও ঠিক এই গল্পে আছে। বলা যায়, এটাই গল্পের সেরা দিক! কারণ, এত বছর আগে বাংলা সাহিত্যে "থিং"-এর উপস্থিতি ছিল—এই তথ্য দিয়ে একটু flex করা যাবে😏। তবে গল্পের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আর গোয়েন্দাগিরি? একদম ব্লকবাস্টার লেভেলের হতাশাজনক!
এইটা পড়ে অনেকটা ফেলুদার সঙ্গে মিল পেলাম। না, গল্পের প্লটের মিল নয়, বরং অন্য জায়গায়। যেমন, জগুমামাকে ফেলুদা, টুকলুকে তোপসে, আর অনন্ত সরখেলকে জটায়ু হিসেবে ধরে নিলে—তর্কের খাতিরে—এটা ফেলুদার গল্পের মতো মনে হতে পারে। আরে ভাই, আমি জানি জগুমামা একজন বিজ্ঞানী ও ডিটেক্টিভ, আর ফেলুদা প্রথমে শখের গোয়েন্দা থেকে পরে পেশাদার গোয়েন্দা হন। তারপরও, ফেলুদা যেমন বিভিন্ন জায়গায় যান রহস্য সমাধানের জন্য, জগুমামাও তাই। তবে, জগুমামা সিরিজের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হলো টুকলুর ওপর আলো ফেলাটা। যেমন, তার পড়াশোনার উন্নতি—গল্পের শুরুতে সে যেখানে পড়ত, তা ধীরে ধীরে অন্য গল্পে উন্নতি পেয়েছে। এই দিকটা তোপসের ক্ষেত্রে আমরা দেখিনি। তবে অন্যান্য গোয়েন্দা গল্পের মতো এখানেও পুলিশের কোনো ভূমিকা নেই, যা থাকাই স্বাভাবিক।
প্রায় একমাস ধরে পড়ে শেষ করলাম এই বইটি। আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করে খুব আশ্চর্য হলাম, যখন জীবনে মানসিক চাপ চারদিক থেকে গলা টিপে ধরে, তখন ছোটদের সাহচর্য, তাদের জন্য লেখা সাহিত্য বা অন্য যেকোনো কিছু মনকে খুব হালকা করে দেয়, শরীরে আর মনে একটা নতুন উদ্যম জাগায়। এই বইটা পড়া আমার জন্য সেরকমই একটা সুখযাত্রা ছিল।
"ওরা কী গরিব, অশিক্ষিত! কিন্তু কী পবিত্র! চিরকালই কি ওরা পড়ে থাকবে এমন অন্ধকারে?"
জগুমামা হলেন বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী ড: জগবন্ধু মুখোপাধ্যায়। তিনি ভাগ্নে টুকলু কে নিয়ে প্রায়ই বেড়িয়ে পড়েন নানান রহস্য সমাধান আর এডভেঞ্চারে। অনন্ত সরখেলের উপস্থিতি উত্তেজনা পূর্ণ রহস্য কাহিনী গুলিতে যোগ করে হাস্যরসের স্নিগ্ধতা। এই বইটিতে রয়েছে আটটি রহস্য কাহিনী যার প্রতিটাই জগুমামা সমাধান করেছেন বিজ্ঞানের প্রয়োগের মাধ্যমে। আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় তিনটি কাহিনী নিয়ে নিম্নে আলোচনা করলাম।
👉হাত:- রাঁচি থেকে হুন্ড্রু (হাজার চেষ্টা করেও কীবোর্ডে ঠিক বানানটা এলো না) জলপ্রপাত যাওয়ার রাস্তায় একসিডেন্ট হয় জগুমামার বন্ধু বিজ্ঞানী দুবের। নেপথ্যে রয়েছে একটি কাটা হাত। আসল ঘটনা কি?
👉ছায়ামূর্তি:- এই কাহিনীর প্রতি আমার একটু পক্ষপাতিত্ব রয়েছে এর প্রেক্ষাপটের কারণে। লাদাখ আমার স্বপ্নের জায়গা। ঘুরেও এসেছি ২০২১ এ। ওরকম রোমহর্ষক জায়গায় রহস্য কাহিনী একটা আলাদা মাত্রা পাবেই।
লাদাখের মিংথুলা গ্রামে নাকি দেবদেবীরা নেমে এসেছেন বসবাসের জন্য। সেখানকার অধিবাসীরা বাধ্য হয়েছে গ্রাম ছেড়ে দিতে। একটা মিলিটারি ট্রাক ও খাঁদে পড়ে গিয়েছে। রহস্য টা কি?
👉রুকটুকার পাড়ে :- টুকলু জলপাইগুড়িতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছে। সকালবেলায় রুকটুকার পাশে বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটতে গিয়ে তাঁদের চোখে পড়ে একটি মৃতদেহ যাঁর মুখ অপরাধীরা থেঁতলে দিয়েছে। রহস্য সমাধানে ডাক পড়ে জগুমামার।
বাকি নভেলা গুলোও বেশ ভালো। একনাগাড়ে পড়ে ফেলা যায়। কিশোর সাহিত্য ভালোবাসলে অবশ্যই পড়ুন।
"ঠিক ভয় কীসের? অজানাকে জানার, অচেনাকে চেনার নেশায় কত মানুষ যুগ-যুগ ধরে বেরিয়ে পড়েছেন ঘর ছেড়ে।"
It's a very thrilling book after all.jagumama is not so famous detective in Bengali literature.but the storys are awesome😎😎😎.every one should read it op