"বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?"
'কাজলা দিদি' কবিতার কথা মনে আছে আপনাদের? ছোটবেলা থেকেই সবার খুব প্রিয় একটি কবিতা এটি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় কবির নাম হয়তো অনেকেই জানা নেই। হৃদয়গ্রাহী এই কবিতাটি লিখেছেন যতীন্দ্রমোহন বাগচী। মজার ব্যাপার হচ্ছে, 'কাজলা দিদি' কিন্তু কবিতাটির মূল নাম নয়। কবি কবিতাটির নাম দিয়েছিলেন 'দিদি-হারা'। যতীন্দ্রমোহন বাগচীর সেরা কবিতাগুলোর সংকলন সংকলন বের করতে গিয়ে আরেক কীর্তিমান কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ কবিতাটির নাম বদলে দিয়ে নাম রাখেন 'কাজলা দিদি'। এরপর থেকে এই নামেই কবিতাটি পরিচিত হয়ে আসছে।
যতীন্দ্রমোহন বাগচীর সেরা কবিতাগুলোর সংকলন 'শ্রেষ্ঠ কবিতা' নামে বের করেছে 'বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র'। বইটি সম্পাদনা করেছেন আবদুল মান্নান সৈয়দ। মোট ৩০টি কবিতা আছে বইটিতে। রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, সত্যেন্দ্রনাথ এবং নজরুলকে নিয়ে লেখা অসাধারণ চারটি কবিতা আছে বইটিতে। এছাড়াও হাফিজ, বায়রন, ব্রাউনিং-এর মত বিখ্যাত কবিদের কবিতার ভাবানুবাদের মাধ্যমে কবির অনুবাদ দক্ষতাও প্রকাশ পেয়েছে। 'অন্ধ বধূ', 'কাজলা দিদি', 'খাঁটি সত্য', 'জন্মভূমি', 'খেলা', 'অপরাজিতা', 'পঞ্চাশোর্ধ্বে' 'নিরুপায়', 'এক জোড়া কালো আখিঁ' কবিতাগুলো খুব ভাল লেগেছে। কিছু ক্ষেত্রে কবি কঠিন শব্দ ব্যবহার করেছেন, তবে তা সে যুগের রীতি ছিল। সব মিলিয়ে উপভোগ্য একটি কাব্য সংকলন বইটি। আগ্রহীরা পড়তে পারেন। রেটিং ৪/৫।
সত্যিই অসাধারণ একটি কবিতার বই। গ্রাম্য বাংলার বর্ননা যে সমস্ত কবিদের কবিতার মধ্য দিয়ে বিশেষ করে ফুটে উঠেছে তাদের মধ্যে যতীন্দ্রমোহন বাগচী একটি উল্লেখযোগ্য এবং অবিস্মরণীয় নাম। আপনি যদি সেই সময় কালীন গ্ৰাম্য বাংলার ব্যাপারে জানতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে এই কবিতার বই টি অবশ্যই পড়ুন। কথা দিচ্ছি এটি এমন একটি বই যেটি সম্পূর্ন পড়লে আপনি কখনো বলতে পারবেন না আমার ভালো লাগেনি।