ভবিষ্যতের কোন এক সময়ে, মানবজাতি দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে টেলিপ্যাথি আর মাইন্ড কন্ট্রোল এর ক্ষমতা সম্পন্ন মেন্টালিস্ট আর আরেক ভাগে সাধারণ মানুষের দল। যে দল সবচাইতে বেশি শক্তিশালী প্রকৃতিতে তারাই টিকে থাকবে, বাকিরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বিজ্ঞান পরিষদ প্রধান ফিহা একাই লড়ে চলেছেন মানুষের পক্ষে, মানুষ যাতে টিকে থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে তার। কিন্তু মেন্টালিস্টরা কি তাকে সেই কাজে সফল হতে দেবে?
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
হুমায়ূন স্যারের সায়েন্স ফিকশন উপন্যাসগুলো পড়তে ভালো লাগে কারণ তিনি পদার্থ আর গণিতের বিষয়গুলো এত সহজ করে বুঝিয়ে দেন যে মাঝে-মাঝে মনে হয় স্যার বেঁচে থাকাকালীন উনাকে দিয়ে সরকার যদি পর্দাথ আর গণিতের বইগুলো স্কুলগামী ছাত্রদের জন্য লিখিয়ে নিতেন তাহলে এই দুইটা বিষয়ের প্রতি আর ভয় কাজ করত না। তা তো আর হবার নয়।
ধরুন ৩৫০০ খ্রিস্টাব্দের এক কাল্পনিক পৃথিবী যেখানে মেন্টালিস্ট নামের এক মনুষ্য প্রজাতি সাধারণ মানুষের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। কেমন লাগবে? এখন মনে হচ্ছে না রাগে শরীর কেঁপে উঠছে? মনে হচ্ছে এখনই ওদের ধ্বংস করে দেই? কিন্তু এই আলাদা ধরনের মনুষ্য প্রজাতি তো আর একা একা সৃষ্টি হবে না। কারণ প্রকৃতি এমন ধরনের মানুষ কখনই জন্মানো সমর্থন করবে না। কিন্তু যদি কোন বিজ্ঞানী এমন কাজ করে বসে তাইলে কেমন হবে?
জী, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ' ফিহা সমীকরণ ' বইয়ে ৩৫০০ খ্রিস্টাব্দের এমন এক কাল্পনিক শহর আর মনুষ্য প্রজাতি নিয়ে সায়েন্স ফিকশন ভিত্তিক গল্প ফেঁদেছেন যেখানে মেন্টালিস্ট নামের মনুষ্য প্রজাতি সাধারণ মানুষের উপর ছড়ি ঘুরায়। নিউ মেক্সিকো শহরে ৩০০৫ খ্রিস্টাব্দে এমব্রায়োলজিস্টদ ের এক সম্মেলনে এংগেল হার্স্ট নামের এক বিজ্ঞানী তার বৈজ্ঞানিক নিবন্ধে ঘোষণা দেন তিনি এমন এক মনুষ্য প্রজাতি ল্যাবরেটরিতে তৈরি করছেন যাদের জিনে তিনি ' ইরিকার্বো ফসফিন' ঢুকিয়ে দিয়েছেন যেটা রোবটের চোখের আলোর সংবেদনশীল অংশ তৈরিতে কাজে লাগে। এতে করে মানব সম্প্রদায় নাকি প্রচন্ড মানসিক ক্ষমতার অধিকারী হবে। অন্য মানুষদের তাদের চিন্তায়, কর্মে প্রভাব ফেলতে পাড়বে।
সম্মেলনে সবাই হার্স্টকে পাগল বলে বিদ্রুপ করলেও ততদিনে তিনি ২১ টি শিশুর জিনে ইরিডিয়াম ঢুকিয়ে দিয়েছেন। হার্স্ট এর এই কাজের জন্য ফাঁসি দেওয়া হলেও তাঁর তৈরি করা নতুন মানুষদের মধ্যে ৭ জন বেঁচে রইল যারা নিজেদের মধ্যে বিয়ে করে সন্তানাদির জন্ম দিল। এরাই মেন্টালিস্ট হিসেবে পরিচিত পেয়ে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেল। এদের বাসস্থান আলাদা জায়গায়। মাটির নিচে। যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। অন্যদিকে ৫০ বছর বয়সী বিখ্যাত তাত্ত্বিক পর্দাথবিদ মহামতি ফিহা, যিনি ছোটবেলায় মেন্টালিস্ট পরিবারে বড় হলেও ১২ বছর বয়সে তাদের ছেড়ে চলে আসেন। তিনি সময় সমীকরণ নিয়ে গবেষণার কাজে সবসময় রত থাকেন কারণ তিনি মেন্টালিস্টদের কাজ- কর্মে খুব বিরক্ত আর তাই তিনি অতীতে ফিরে গিয়ে সেই মেন্টালিস্ট তৈরির প্রক্রিয়াটি ভেঙে দিতে চান। মেন্টালিস্টরা মানুষের মস্তিষ্কের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ফিহার মস্তিষ্কের কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পাড়ত না কারণ ফিহার পালক পিতা- মাতা তার মস্তিষ্ক সর্বদা পাহারা দিত।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফিহার জীবনে নুহাশ নামের এক তরুণী আসে যাকে তিনি বিয়ে করতে চান। ফিহার বিশাল বাসায় থাকে তিনটি রোবট। যাদের কাজ ফিহাকে সঙ্গ দেয়া, রান্না করে দেয়া আর বাড়ি পাহারা দেওয়া। ফিহা মেন্টালিস্টদের দেখতে না পাড়লেও মারলা লি নামের একজন মেন্টালিস্ট এর সাথে সখ্য ছিল। মারলা লিয়ের থেকে তাদের জীবন- যাপন সর্ম্পকে বই পড়ে ফিহা দূর্যোগপূর্ণ রাতে সময় সমীকরণের কাজ নিয়ে খুব অস্থির হয়ে উঠেন। তিনি যখন খবর পান তার পালক পিতা- মাতা মৃত্যু শয্যায় তখন তিনি তাদের দেখতে মেন্টালিস্টদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় গেলে তাদের থেকে ফিহা এক ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি হন। যা তার জীবনে বয়ে আনে এক মর্মান্তিক দূর্ঘটনা।
গতবছরে পড়া বইয়ের সংখ্যা মাত্র চল্লিশও পেরোতে না পারলেও বছরের শেষে এসে বড় পাওয়া ছিলো সাইন্স ফিকশন জনরার বইয়ের প্রতি আগ্রহ বোধ করা। ফলশ্রুতিতে এ বছরের শুরুতে প্রথম পড়ে শেষ করা বইয়ের নাম ফিহা সমীকরণ।
ভবিষ্যতের কোনো এক সময়ে পৃথিবীর মানুষ দুইভাগে বিভক্ত- সাধারণ মানুষ আর এই সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণকারী শক্তিশালী মেন্টালিস্ট। বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ এই মেন্টালিস্টদের প্রচন্ড ঘৃণা করে কেননা মেন্টালিস্টরা ওদের মস্তিষ্ককে সর্বক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করে চলছে। এক কথায় বলতে গেলে সাধারণ মানুষ ওদের হাতের পুতুল। তবে ওদের বয়স ত্রিশ পেরোলেই কিছু শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়, কাজেই অস্তিস্ত্বের ঝুঁকি রয়েছে বৈকি, আবার ওদিকে মেন্টালিস্টদের কড়া আইনের কারণে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের সংখ্যাও কমে আসছে। যার ফলে অত্যধিক চিন্তায় থাকেন সর্বকালের সেরা থিওরেটিকাল ফিজিসিস্ট মহামতি ফিহা। টাইম ইকুয়েশন নিয়ে কাজ করছেন তিনি। যার সমাধান পেলে সময়ের একমুখীতা উবে যাবে এক নিমেষে! ফিহা একাত্ন হয়ে ইকুয়েশন সমাধানের চেষ্টায় নিমগ্ন হন যেন কেউ ভারী কন্ঠে তার কানেকানে বলে যাচ্ছে-
"Do not go gentle into that good night, Old age should burn and rave at close of day"
বিশ্বসাহিত্যে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর চর্চা বেশ পুরনো হলেও বাংলা সাহিত্যে এই ধারাটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে অনেক পরে। বাংলা সাহিত্যে জগদীশচন্দ্র বসুকে বিজ্ঞান কল্পকাহ��নীর জনক বলা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে যিনি বিজ্ঞান কল্পকাহিনীকে জনপ্রিয় করে তোলেন, তিনি হুমায়ূন আহমেদ। 'তোমাদের জন্য ভালোবাসা' বইটির মাধ্যমে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর সূচনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় 'ফিহা সমীকরণ' প্রকাশ পায়; যা পাঠকের মন জয় করে নেয়।
'ফিহা সমীকরণ' ভবিষ্যতের গল্প। পৃথিবীতে তখন দুই ধরনের মানুষ বসবাস করে। স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন এবং মেন্টালিস্ট অর্থাৎ উচ্চ মানসিক দক্ষতাসম্পন্ন মানুষদের নিয়েই ভবিষ্যতের পৃথিবী। এ্যাংগেল হার্স্ট নামক এক বিজ্ঞানী সাধারণ মানুষের শরীরে 'ইরিকার্বো ফসফিন' ঢুকিয়ে জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে মেন্টালিস্টদের সৃষ্টি করে। মেন্টালিস্টরা খুব সহজেই মানুষের চিন্তাভাবনা জানতে পারে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে মেন্টালিস্টদের মধ্যে প্রতিভাবান মানুষ নেই; সকল শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী সবাইই সাধারণ মানুষের শ্রেণিতে বেঁচে আছে। তাই মেন্টালিস্টরা চায় সকল মানুষকে তাদের কাতারে নিয়ে যেতে। কোন প্রক্রিয়ায় কাজটি করবে মেন্টালিস্টরা?
বিজ্ঞান পরিষদের প্রধান ফিহা একজন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ। সে মেন্টালিস্ট পরিবারে বড় হলেও স্বাভাবিক একজন মানুষ। তবে মেন্টালিস্টরা তার চিন্তাভাবনা জানতে পারেনা; কারণ তার বাবা-মা তার মস্তিষ্কের নিরাপত্তা প্রদান করে আসছে। মানুষের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় তাই কোনো জায়গাতে গেলেই মানুষের নজর কেড়ে নেয়। একদিন কফি শপে পরিচয় হয় নুহাশ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণীর সাথে। নুহাশের কাছে অতিপ্রাকৃত গল্পের বই দেখে ফিহা অবাক হয় এই ভেবে যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কীভাবে এমন আজগুবি বিষয়ের বই পড়ে! কিছুদিন যাওয়ার পর নুহাশকে বিয়ে করতে চায় ফিহা। এদিকে মেন্টালিস্টদের হীন প্রচেষ্টাকে বানচাল করার জন্য ফিহা উদ্যোগ নেয়। সময় পরিভ্রমণের মাধ্যমে অতীতে গিয়ে এ্যাংগেল হার্স্টের মেন্টালিস্ট তৈরির চেষ্টাকে বন্ধ করতে চায়। সেই সময় পরিভ্রমণের জন্য কিছু সমীকরণের উত্তর পাওয়া জরুরি। এদিকে ফিহা দীর্ঘদিন পর তার পালক পিতা-মাতার থেকে এমন এক তথ্য জানতে পারে, যা তার সময় পরিভ্রমণে বাঁধার সৃষ্টি করে। ফিহা কি পারবে অতীতে যেতে? নাকি সকল মানুষ মেন্টালিস্টে রূপান্তরিত হবে?
বইটা অনেক ছোট। তবে কথায় আছে 'ছোট মরিচের ঝাল বেশি'। এই বইয়ের বেলাতেও তাই। এত স্বল্প পরিসরে দারুণ এক গল্প লিখেছেন হুমায়ূন আহমেদ। বইটিতে বিজ্ঞানের কিছু বিষয় আছে যা সকলের জন্যই বোধগম্য হবে। বইটিতে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর বাইরেও মানবিক বিষয় ফুটে উঠেছে। গল্পের প্রধান চরিত্রের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই, কীভাবে সে মানবজাতিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে! আবার এটাও বুঝতে পারি যে, প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক আমাদের সমাজকে কীভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।
এক বসায় পড়ার মতো বই। যারা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী কখনো পড়েন নি; তাদের জন্য দারুণ সূচনা হতে পারে। আর যারা আগে পড়েছেন অন্য কোনো কল্পকাহিনী, তাদের জন্যেও সুখপাঠ্য হবে বলে আশা করি। হ্যাপি রিডিং।
কি দূর্দান্ত এক বই লিখে গেছেন তিনি। আফসোস হয় তিনি কেন আরো সাই ফাই লিখলেন না। এই যে সায়েন্সের সাথে মানুষের বিশুদ্ধ অনুভূতির এই নিদারুণ মিশেল, এটা কি তার মতো কেউ কখনো করতে পেরেছিলো, না কেউ পারবে?
হুমায়ুন আহমেদ আর জাফর ইকবাল, দুইভাইয়ের কেউ কি জানেন, তারা নরমালি যা লিখেন তার চেয়ে শক্তিশালী লেখক তারা আরো অন্য কোন জনরার হতে পারতেন? এই যেমন, হিমু, মিসির আলীর জন্য হুমায়ুন আহমেদ পরিচিত, কিন্তু তিনি ফিহা সমীকরণ এর মত একটা দারুণ সাইন্স ফিকশন লিখে গেছেন। আবার মুজাই প্রেত, দানবের মত অতিপ্রাকৃত উপন্যাস রেখে যাবেন।
আর এই বইয়ের শেষটা এত দারুণ! প্রতি পাতায় হুমায়ূন এর ডিসটিংক্ট ভাষা এই বইটাকে একটা অন্য মাত্রা দিয়েছে। কেমন একটা উদাস বিষাদী সুর। আর লাস্ট সমাপ্তিটা পুরো মন ছোয়াঁ।
আমি হুমায়ূন এর ভক্ত নই। নইলে কেঁদে দিতাম। চমৎকার লিখেছেন স্যার!
হুমায়ূন আহমেদের সাইফাই খুবই কম পড়া হয়েছে। "ফিহা সমীকরণ" দিয়েই ওনার সাইফাই লেখার সাথে পরিচয়। দারুণ একটা বই। কাহিনীর প্লট, স্টোরি টেলিং এবং অবশ্যই এন্ডিংটা ভোলার মতো না।
চমৎকার একটি বই দিয়েই ২০২৪ এর পড়া শুরু হলো! হুমায়ুন আহমেদ এর সাই-ফাই গুলো প্রতিটাই আমাকে অবাক করে। এত অসাধারন ইউনিক প্লট। প্রতিটা গল্পই পড়ার সময় এবং শেষ দিকে আসার সময় মনে হয়, আরে এটাতো পাঁচ তারা বই, তখনই হুট করে গল্প শেষ হয়ে যায়। 'সাইন্স ফিকশন সমগ্র' থেকে পড়ি সবগুলো তাই আগে থেকে বুঝিও না কত পৃষ্ঠা বাকি আছে। মন্ত্রমুগ্ধের মত পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে হঠাৎ দেখি আরে এটাতো শেষ পৃষ্ঠা। আমার মনে হয় হুমায়ুন আহমেদ চমতকার প্লট সাজান ঠিকই কিন্তু গল্পটার ফিনিশিং নিয়ে আগে চিন্তা করেন না। শেষে অসমাপ্ত একটা এন্ডিং থেকে যায় আর এক সময় তো পাঠক এই ধরনের এন্ডিং এক্সেপ্ট করেই ফেলে তারপর আর উনি মাথাও ঘামালেন না গল্পের এন্ডিং নিয়ে। এই গল্পটা আরো ২০০ পৃষ্ঠা থাকলেও আমি হা করে পড়ে যেতাম। এন্ডিং হুমায়ুন আহমেদ টাইপ বলে ১ তারা কম।
ফিহা সমীকরণ পড়ছিলাম ছোটবেলায়। আজকে কি মনে করে আবার পড়লাম।
বইয়ের যে কলেবর, তাতে এই বইকে উপন্যাস না বলে উপন্যাসিকাই বলা ভালো। বিজ্ঞান কল্পকাহিনী আমি যতটুকু পড়েছি(খুবই সামান্য), তাতে আমার ধারণা হুমায়ূন আহমেদের এই উপন্যাসিকা একটা বিশ্বমানের বিজ্ঞান কল্পকাহিনী হয়েছে।
একটা অসাধারণ বিজ্ঞান কল্পকাহিনীতে নিছক গল্পের বাইরেও থাকে ধারণার অভিনবত্ব। যেহেতু আমার সায়েন্স ফিকশানে পড়াশোনা খুব বেশি নয়, সময় সম্পর্কিত হুমায়ূন আহমেদের এই ধারণা আসলেই অভিনব কিনা সেটা এই মুহূর্তে আমার জানার উপায় নেই। তবে হুমায়ূন আহমেদের এই বইতে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক একটা ভাব প্রবল। জগৎ রহস্যময়। বিজ্ঞান জগতকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে,তাই বিজ্ঞানও রহস্যময়। জগতের বা বিজ্ঞানের এই রহস্যময় আধ্যাত্মিকতা তাই মাঝে মাঝে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর লেখকদের উপর ভর করে, ফিলিপ কে ডিক বা স্টানিশ্ল লেমের বেলায় যেমনটি হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদের এই বইয়ের বেলাতেও সেরকম হয়েছে।
বইয়ের দুর্বলতা হলো হুমায়ূন তার প্লটে একটি টাইম প্যারাডক্স তৈরি করেছেন, সেটার সমাধান দিয়ে যান নাই। সেই বিচারে হয়তো বইটা বিশুদ্ধ বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর মধ্যে না পড়ে ফ্যান্টাসির কাতারে পড়বে।
কল্পনার আধিক্য এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বল্পতার কারণে হালফিল রচিত অধিকাংশ বিজ্ঞান কল্পকাহিনি পাতে তোলার মতো নয়। সংখ্যায় বেশি না হলেও এই ঘরানায় হুমায়ূন আহমেদের দারুণ কিছু কাজ আছে। যার অন্যতম একটি ‘ফিহা সমীকরণ’। এটাকে বাংলা ভাষায় লেখা বিশ্বমানের সায়েন্স ফিকশন বললে বোধহয় অত্যুক্তি হবে না।
যারা ফুল ছড়িয়ে এগিয়ে যায় তাদের চেনারও তেমন প্রয়োজন নেই।
হুমায়ূন আহমদ আমার প্রিয় লেখক। উনার অনেকগুলো বই পড়া থাকা স্বত্বেও সাইন্স ফিকশন পড়া হয়নি। "ফিহা সমীকরণ " আমার পঠিত প্রথম সাইন্স ফিকশন। এর আগে মুজাইয়ের অনেক গুলো পড়েছি। তার মধ্যে সবচে প্রিয় "টুকুনজিল"। আমি তো বিজ্ঞানের ছাত্র নই,বিজ্ঞানে আমার দখল ও কম! তাই সাইন্স ফিকশন পড়তে গেলে বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বুঝতে অসুবিধা হয় বটে,তবে মোদ্দা গল্পটা বেশ উপভোগ করি।
অন্য সাইন্স ফিকশনের তুলনায় হুমায়ূনের "ফিহা সমীকরণ" বেশ আলাদা লেগেছে আমার। বিজ্ঞানের খচখচানিটা কম। আর আমার মনে হয়েছে গল্পটা সাইন্স ফিকশন হলেও লেখক মূলত করতে চেয়েছেন মানবতার জয়গান। দারুণ লেগেছে। মহামতি ফিহা শুধু মানুষ জাতিকে বাঁচাবেন বলে,নিজেকে বলি দিলেন। অন্যদিকে ভিলেন হিসেবে মেন্টালিস্টরাও বেশ অদ্ভুত। শুরুটা জটিল মনে হলেও কী স্বাভাবিক ভাবে লেখক সমাপ্তি টেনেছেন,এটা দেখে অবাক লাগল। মানুষ যতই যা বলুক,হুমায়ূন বরাবর আমাকে মোহিত করছিল,করছে,ভবিষ্যতে ও হয়ত করবে। আমি ও চাই আমার মনের অবস্থা কখনো এমন জটিল না হোক,যাতে হুমায়ূন পড়তে মন বিরূপ হয়!
হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভা। সে মাত্রা এতই বেশি ছিল যে সবদিকেই দেখতে গিয়ে কিছু কিছু দিক কম রয়ে গিয়েছে যেন। নতুবা সায়েন্স ফিকশন জনরাটাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারতেন এই ভদ্রলোক! কী সামান্য কলেবর অথচ কতকিছুই না দেখিয়েছেন এর মাঝে! ছোট থাকতে পড়েছিলাম, রিভিশন দিলাম, অসাধারণই লাগলো!
মুভি সিরিজ থেকে আমরা একটা বিষয় জানি আর সেটা হচ্ছে একটা স্টোরি যখন শেষ হয় তখন গল্পটি যে পরিণতিতে পৌছায় তার অনেক কারণ থাকে যা অনেক সময় একসাথে দেখানো সম্ভব হয় না, আর তখন নির্মাতারা সিদ্ধান্ত নেয় সেই গল্পের ব্যাক স্টোরি নিয়ে প্রিক্যুয়াল সিরিজ বানানোর সেইখান থেকে পুরো গল্পটা নিয়ে সব কনফিউশন দূর হয়। হুমায়ুন আহমেদের যেকোন গল্প পড়ার পর আমি চিন্তা করি যে এই চরিত্র, এই সাবপ্লট নিয়েও আরেকটা উপন্যাস লেখা যায়।
ফিহা সমীকরণের একটা প্রিক্যুয়াল কনসেপ্ট বলি আর সেটা হলো এইযে মেন্টালিস্টরা সবার মাথা থেকে তথ্য নিতে পারে, তাদের চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু মহামতি ফিহার মাথাকে তারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না কারণ ফিহা এর মেন্টালিস্ট পালক পিতা মাতা তাকে সবসময় রক্ষা করে। তো কেন তারা ফিহা কে রক্ষা করছে তারা কেন চায় ফিহা সময় সমীকরণ আবিষ্কার না করুক আবার তা না হলে কিন্তু স্বজাতি ধ্বংস হবে, কারণ চক্র সম্পূর্ণ হবে না, তার পিতা মাতা কেন চায় ফিহা মেন্টালিস্টদের ধ্বংস করুক, কেন তারা এটাকে অন্যায় চক্র বলে ফিহা কে সমর্থন করছেন, তাদের এই বিদ্রোহী মনোভাব এর পিছনে নিশ্চয়ই একটা ব্যাক স্টোরি আছে যার কারণে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌছেছেন। সেটা নিয়ে একটা প্রিক্যুয়াল হলে জমে ক্ষীর হতো যা আর সম্ভব না শুধু আমাদের ভাবনাতেই সীমাবদ্ধ।
এ এক আশ্চর্য সুন্দর গল্প। এর শুরুটা বহুলাংশে ছকবন্দি— সামাজিক রীতিনীতির সঙ্গে সম্পর্ক না-রাখা এক প্রতিভাধর অদ্ভুত এক জীবন যাপন করে চলেছেন। তারপর এল অন্য এক চরিত্র। এল নতুন কিছুর সম্ভাবনা। তারপরেই উন্মোচিত হল এক অদ্ভুত সত্য। ছোট্ট লেখা, কিন্তু চক্রাকার কাল ও ভবিতব্য নিয়ে সাহিত্যে ভাবনায় এর প্রভাব বড়োই গভীর হয়েছে। সুযোগ পেলে অবশ্যই পড়ুন।
অল্প শব্দে, স্বল্প বাক্যে, বাহুল্য বর্জন করে যে একটি চমৎকার বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখা যায়, যেখানে পর্যাপ্ত বিজ্ঞান ও কল্পনা উপস্থিত, এমন উদাহরণ বোধহয় বাংলা সাহিত্য কেন বিশ্বসাহিত্যেও খুব বেশি নেই। একই সাথে সময় এবং মানব সভ্যতার এক নিদারুণ ভবিষ্যতের উপাখ্যান রচিত হয়েছে এই গল্পে।
ঘৃণার চাদরে ঢাকা মহান বিজ্ঞানীর অন্তরকে এভাবে এক সাধারণ তরুণীর তরে মাথা নোয়াতে দেখাতে আর কে পারেন হুমায়ুন আহমেদ ছাড়া? জলাঞ্জলি যাক বর্ণাঢ্য জীবন, ধ্বংস হোক অন্যায় সভ্যতা।
'ফিহা সমীকরণ' কে কি আমরা একটি ডিস্টোপিয়ান বই হিসেবে চিনতে পারি? বোধহয় পারি। অবশ্য... যারা ফুল ছড়িয়ে এগিয়ে যায় তাদের চেনারও তেমন প্রয়োজন নেই।
আমরা মানুষ, স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। কিন্তু, কেউ যদি আপনার চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, চিন্তাভাবনা ইত্যাদি কেউ যদি নিয়ন্ত্রণ করে বা ঠিক করে দেয়; অর্থাৎ এভাবেই যদি পরাধীন থাকতে হয়, তাহলে কেমন অনুভব হবে? 'ফিহা সমীকরণ' বইটিতে মেন্টালিস্ট নামের এক সম্প্রদায় মানুষদেরকে ঠিক এভাবে নিয়ন্ত্রণ করিতেছিল। এককথায় রোবট বানিয়ে রেখেছিল। এ নিয়ে খুব অল্প কথায়, বাহুল্যতা ছাড়া, হুমায়ূনের সায়েন্স ফিকশন।
উদ্ধৃতি: "~ আপনাদের কাছে কি কোন বিষ আছে? মেন্টালিস্ট: হ্যাঁ। আমরা জোগাড় করে রেখেছি। আমরা জানি তুমি চাইবে। " 😐
শেষের ফুলের বিষয়টা বুঝতে পারিনি প্রথমে, বোঝার পর বইটি অনেক ভালো লাগলো। কিন্তু আমার বেচারি নুহাশের জন্য খারাপ লাগছে। আর আমি শুধু এটাই ভাবছি ফিহা কি নুহাশের কাছে যেতে পেরে তাকে বিদায় জানাতে পেরেছে কিনা।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা সায়েন্স ফিকশনগুলোর মধ্যে "ফিহা সমীকরণ" হলো অন্যতম জনপ্রিয় একটি বিজ্ঞানভিত্তিক উপন্যাস। এই গল্পের মূল চরিত্র হলো সর্বকালের সেরা পদার্থবিদ মহামতি ফিহা। চল্লিশোর্ধ এই জ্ঞানী মানুষটি চেষ্টা করে চলেছেন "সময় সমীকরণ" সমাধান করার। এর পেছনে অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণও রয়েছে। ফিহা যেই সময়ে বসবাস করছেন, সেই সময়ে বসবাসকারী মানুষেরা দুইটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে রয়েছে মেন্টালিস্টরা আর দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে সাধারণ মানুষ। এই মেন্টালিস্টরাই মূলত নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে বাকি সাধারণ মানুষদের, তাদের মধ্যে থাকা অদ্ভুত শক্তি বা ক্ষমতার দ্বারা সাধারণ মানুষদের মস্তিষ্ক বা মাইন্ডরিড করার মাধ্যমে।
ফিহা চেয়েছিলেন তার সময় সমীকরণ সমাধান করার মাধ্যমে অতীতে গিয়ে প্রায় 5000 বছর পূর্বে ঘটে যাওয়া একটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা থামিয়ে দিতে, যাতে করে ভবিষ্যতে এই মেন্টালিস্ট শ্রেণি জন্ম নিতে না পারে। কিন্তু তিনি যখন তার পালিত বাবা-মা, যারা কিনা নিজেরাও মেন্টালিস্ট ছিলেন, তাদের সাথে তাদের মৃত্যুশয্যায় দেখা করতে যান, তখন তিনি তার জীবনের সবচেয়ে বড় কিন্তু তিক্ত সত্য জানতে পারেন। তার সেই পালিত মেন্টালিস্ট বাবা-মা মৃত্যুশয্যায় থেকে ফিহাকে বলেছিলেন যে তারা এই চল্লিশটি বছর ধরে ফিহার মস্তিষ্ককে রক্ষা করে এসেছেন, যার কারণে কোন মেন্টালিস্ট আজ পর্যন্ত ফিহার মাইন্ডরিড করতে সক্ষম হননি। আর ফিহা যদি একবার তার এই সময় সমীকরণটির সমাধান বের করে ফেলেন, সেক্ষেত্রে ফিহার নিজের এই মহান উদ্দেশ্যটি পূরণ হবেই না বরং মেন্টালিস্টরা তাদের তৈরি একটি রোবটকে অতীতে পাঠানোর মাধ্যমে তাদের জীবন ও সময়ের চক্রকে পূর্ণ করবে। আর মেন্টালিস্টদের আটকানোর একমাত্র উপায় হলো ফিহা যদি তার সময়ে সমীকরণটির সমাধান বের না করে এবং তার নিজের অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়। শেষ পর্যন্ত ফিহা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? সেটি জানতে পড়ে ফেলুন হুমায়ূন আহমেদের এই জনপ্রিয় সাইন্স-ফিকশন উপন্যাস "ফিহা সমীকরণ" বইটি।
ব্যক্তিগত অভিমত: হুমায়ূন আহমেদের লেখা আমার বরাবরই প্রিয়, তবে তার লেখা "হিমু" এবং "মিসির আলি" সিরিজের গল্প গুলোই বেশি পড়া হয়েছে। অন্য জনরার গল্প বা উপন্যাস তেমন একটা পড়া হয়নি বললেই চলে। হুমায়ূন আহমেদের লেখা সাইন্স ফিকশনগুলোর মধ্যে "ফিহা সমীকরণ"-ই আমার পড়া ওনার লেখা প্রথম সায়েন্স-ফিকশন। বইটিতে হুমায়ূন আহমেদ ফিজিক্স বা গণিতের জটিল সমীকরণ ও থিউরিগুলো এতটাই চমৎকার ভাবে ব্যক্ত করেছেন যে, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী না হলেও যেকোনো সাধারণ পাঠক এই বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট টানটান আমেজ ছিলো। গল্পটির ভাষা যথেষ্ট পরিমার্জিত এবং সাবলীল এবং লেখক এর গল্প বলার গতিও গল্পের কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। লেখকের লেখা বাকি সবগুলো সাইন্স ফিকশন গল্প পড়ে ফেলার প্রবল ইচ্ছা রইলো।
🔹 কোন এক অজানা ভবিষ্যৎ। যখন মানব সভ্যতা উন্নতির সর্বোচ্চ শেখরে আরোপিত। পৃথিবী সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর। সেই সময় মানবসভ্যতা বিভাজিত দুটি জাতিগোষ্ঠীতে। আসল মানুষ এ জিনে ইরিডিয়াম পরমাণু সংযুক্ত 'মেন্টালিস্ট'। মেন্টালিস্টরা মানুষের সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে তাদের বিশেষ এক ক্ষমতার মাধ্যমে। তাদের উদ্দেশ্য সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে মেন্টালিস্ট জাতিতে রুপান্তরিত করা। এজন্য তারা ব্যবহার করে তাত্ত্বিক পদার্থবিদ মহামতি ফিহাকে। ফিহাও নিজের অজান্তে মেন্টালিস্টদের চক্রান্তে মূলহোতা হয়ে ওঠেন। শেষ অবধি কি মেন্টালিস্টদের চক্রান্ত নস্যাৎ হবে নাকি সব মানুষ পরিণত হবে মেন্টালিস্টে?
🔹অনেক দিন পর হুমায়ূন আহমেদের একটি বই পড়লাম সম্পূর্ণ তৃপ্তির সাথে। এটা পড়ে সবসময়ের সেই 'সময় নষ্ট' অনুভূতিটি জাগে নি। বরং মন ছেঁয়ে গেছে ভালো লাগা অনুভূতিতে। সব জায়গায় লেখকের অযাচিত ও অযৌক্তিক উক্তি দেখে বিরক্ত বোধ করি। কিন্তু এই বইয়ের কিছু মন্তব্য দারুণ বাস্তবিক ছিলো। যেমন -
"লাজুক মানুষের আত্মবিশ্বাস কম থাকে।"
"পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হলো ভালোবাসা।"
🔹 সায়েন্স ফিকশন আমার অন্যতম পছন্দের জনরা। যদি সেটা একটু ইমোশনাল ড্রামাটিক হয় তাহলে তো লা-জাওয়াব! এজন্যই বইটি অত্যাধিক ভালো লেগেছে। ফিহার পর 'পাঠক' চরিত্রটিও দারুণ ছিলো (রোবটকে কি চরিত্র হিসেবে সাব্যস্ত করা যায়?)। এছাড়াও গল্পটিতে নুহাশেরও গুরুত্ব রয়েছে। ঠান্ডা মাথার ভিলেন হিসেবে মারলা লি ও অসাধারণ ছিলো।
🔹 হুমায়ূন আহমেদের 'তোমাদের জন্য ভালোবাসা' উপন্যাসেও ফিহা ছিলেন। সেখানেও তাকে আত্মত্যাগ করতে দেখা যায়। 'ফিহা সমীকরণ'ও এই ধারার অভিন্ন। ওই উপন্যাসের এন্ডিং এর মতো এটার এন্ডিংও অসাধারণ।
"রাস্তার মানুষ অবাক হয়ে দেখছে ফুল বিছিয়ে বিছিয়ে একজন মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে। সে পা ফেলছে এলোমেলো ভঙ্গিতে। অন্ধকারে মানুষটিকে চেনা যাচ্ছে না। যারা ফুল ছড়িয়ে এগিয়ে যায় তাদের চেনারও তেমন প্রয়োজন নেই।"
আহা! Shree 420 মু��ির 'Pyar hua iqrar hua' গানটি মাথায় ঘুরঘুর করছিলো। 'আমার পড়া হুমায়ূন আহমেদ' এ 'ফিহা সমীকরণ' ছিলো এক দারুণ এক শোভাবর্ধন।
সাল ৩৫০০, মানবজাতি দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে । একভাগ হলো সাধারণ মানুষ অন্যভাগ হলো প্রচন্ড মানসিক ক্ষমতা সম্পন্ন মেন্টালিস্ট।৫০০ বছর আগে নিউ মেক্সিকো শহরে ৩০০৫ খ্রিস্টাব্দে এংগল হার্ষ্ট এমব্রায়োলজিস্টদের এক সম্মেলনে জানান তিনি ২১টি শিশুর জিনে ইরিকার্বো ফসফিন ঢুকিয়ে দিয়েছেন যা রোবটের চোখের আলোরসংবেদনশীল অংশ তৈরিতে কাজে লাগে।যাদের মধ্যে ৭ জন বেঁচে যায় ফলে তৈরি হয় একনতুন প্রজাতির মানব।এরা মানুষের মতোই কিন্ত ট্যালিপাথি ক্ষমতাসম্পন্ন অতিউচ্চ মানসিক ক্ষমতাবান প্রজাতি, এরাই মেন্টালিস্ট।এদের বাসস্থান মাটির নিচে। যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নেই।৫০ বছর বয়সী বিখ্যাত তাত্ত্বিক পর্দাথবিদ মহামতি ফিহা, যিনি ছোটবেলায় মেন্টালিস্ট পরিবারে বড় হন তিনি কাজ করছেন সময় সমীকরণ নিয়ে যার সমাধান করতে পারলে তিনি যেতে পারবেন অতীতে, থামাতে পারবেন এংগল হার্ষ্টকে।মেন্টালিস্টরা মানুষের মস্তিষ্কের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ফিহার মস্তিষ্কে পাড়ত না কারণ ফিহার পালক পিতা- মাতা তার মস্তিষ্ক সর্বদা পাহারা দিত।ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফিহার জীবনে নুহাশ নামের এক তরুণী আসে যাকে তিনি বিয়ে করতে চান। ফিহার বিশাল বাসায় থাকে তিনটি রোবট। যাদের কাজ ফিহাকে সঙ্গ দেয়া, রান্না করে দেয়া আর বাড়ি পাহারা দেওয়া। ফিহার মারলা লি নামেক মেন্টালিস্টের সাথে সখ্য ছিল।ফিহা নিজের মৃত্যু পথযাত্রী পিতামাতার কাছে জানিতে পারে তার সমীকরণে বড় ধরনের ভুল আছে।সে যেই মুহূর্তে সমাধান বের করবে সেই মুহূর্তে মেন্টালিস্টরা তা জেনে যাবে।তার বিদ্যা কাজে লাগিয়ে মেন্টালিস্ট তৈরির বিদ্যা শিখিয়ে একটি রোবট পাঠিয়ে চক্র সম্পন্ন হবে।সুতরাং সময় সমীকরণ বের না করলেই চক্র ভেঙে যাবে মেন্টালিস্টদের ধর্মগ্রন্থে এমনটাই আছে।তাই মানবজাতিকে রক্ষায় ফিহা বিষ পান করে আত্নহত্যা করে।
এটা এমন একটা পরিস্থিতির গল্প যেখানে মানুষ জাতির ভিতরে দুটো স্তর তৈরি হয়েছে! এক স্তরে সাধারণ মানুষ এবং অন্য স্তরে মেন্টালিস্ট। যারা মানুষের ইচ্ছাশক্তি এবং আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। মেন্টালিস্টদের উদ্দেশ্য পৃথিবীর সব মানুষদের আস্তে আস্তে মেন্টালিস্ট বানিয়ে ফেলবে।
সাধারণ মানুষদের পক্ষে মহামতি ফিহা কাজ করে চলেছেন এক জটিল সমীকরণ নিয়ে। এই সমীকরণ দ্বারা কি সাধারণ মানুষদের রক্ষা করা সম্ভব?
An adaptation material. Though it couldn't maintain the intensity as it started. But there’s something about minimalistic science fictions which attracts me.