Jump to ratings and reviews
Rate this book

প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প

Rate this book
অপরাধীর প্রায়শ্চিত্ত কি? কারাগারের বন্দীশালা? নাকি মৃত্যুদণ্ড? উত্তর খুঁজতে মেজর জেনারেল মহিউদ্দীন হক ফিরোজ বিদেশের সম্মান ও অর্থ-বিত্তের মোহ ত্যাগ করে দেশে ফিরে আসেন। গড়ে তোলেন MRAU নামক এক গোপন সংস্থা। ভীষন গোপনীয়তার সাথে দেশের ভয়ঙ্করতম কিছু অপরাধীকে নিয়ে শুরু করেন প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প। প্রকল্প প্রধান বিখ্যাত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডঃ বশির জামান। সব কিছু ঠিকঠাক মতই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘটে যায় এক রহস্যময় দুর্ঘটনা। নিখোঁজ হয়ে যান ডঃ বশির জামান সহ কিছু অপরাধী।

ছড়িয়ে পড়তে থাকে প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের বিষাক্ত কালি। এই কালিতে জড়িয়ে যায় নিজের হারানো বাবাকে খুঁজতে দেশে আসা এক ইটালিয়ান তরুণী মেরিলিনা। তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন ওসি খাইরুল ইসলাম; যিনি আজও পাঁচ বছর আগে তার একমাত্র বোনের রহস্যময় মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি।

প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের কালি মুছতে মরিয়ে হয়ে ওঠেন মেজর জেনারেল ফিরোজ। বাধ্য হয়ে হাত পাতেন রহস্যময় ঈশ্বর বাগচীর কাছে, যিনি জীবনের বিনিময়ে মৃত্যু আর মৃত্যুর বিনিময়ে জীবন দান করেন।

কিন্তু শেষ রক্ষা কি হয়? শহরে শুরু হয় বীভৎস সব হত্যাকাণ্ড। কারা এই পোসাইডন, প্রমিথিউস আর হেডিস? শহরের দেয়ালে দেয়ালে রহস্যময় দেয়াল লিখনেরই বা উদ্দেশ্য কি? এটা কি কোন দুর্যোগের পূর্বাভাস? বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়তে থাকে দাবানলের মত।

এই টালমাটাল সময়ে ক্ষমতার লোভে এক জেনারেল খুলে দেন নরকের দুয়ার। দেশে প্রবেশ করে বহু পুরনো হিংস্র এক অপরাধী সংগঠন ‘কংসচক্র’। সব কিছু ফিরোজের নিয়ন্ত্রনে থাকবে? নাকি এই প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের আগুনে সব জ্বলে ছারখার হয়ে যাবে?

কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের ব্যর্থতা কেবল একটা ঝড়ের পূর্বাভাস মাত্র

344 pages, Hardcover

First published August 3, 2018

5 people are currently reading
178 people want to read

About the author

Jubaer Alam

6 books38 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
53 (32%)
4 stars
80 (48%)
3 stars
25 (15%)
2 stars
5 (3%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 42 reviews
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
September 17, 2022
এই বইটা বেশি সেরা! বেশি জোস!
Profile Image for Pranta Dastider.
Author 18 books329 followers
October 14, 2018
What a story! Had this book been published in a country where people still love and look forward to buying books it would have been a bestseller. It has the potential to be sold in millions, but here in the land of diminishing book fandom and less people willing to buy books for real, it will be unnoticed by many. And I feel kind of sad for that.

It is not without glitches, but nothing major. Every characters were well fleshed out, they had their motives and darkness. They had reason enough to go on. Turn of events felt realestic enough. The lust and thirst for power felt lively. Ideas turn wrong, characters went south. The author did a great job at injecting a philosophical plotline. And I saw in shadow the explanations of real events.

The start and the end rounded up nicely. It also has scope for expansion, but I won't actually mind if it doesn't extend to a sequel.

A full five starts for the beginning, plot, ending, characterization, atmosphere, and effort.
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
October 18, 2020
'নিজের পাপের কারণ বিনাশ করাই সব থেকে বড় প্রায়শ্চিত্ত।'
Profile Image for শুভাগত দীপ.
274 reviews47 followers
September 21, 2018
|| রিভিউ ||

বইঃ প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প
লেখকঃ জুবায়ের আলম
প্রকাশকঃ বুক স্ট্রিট
প্রকাশকালঃ আগস্ট, ২০১৮
ঘরানাঃ এসপিওনাজ/থ্রিলার/পলিটিক্যাল
প্রচ্ছদঃ বুক স্ট্রিট
পৃষ্ঠাঃ ৩২০
মুদ্রিত মূল্যঃ ৪০০ টাকা
ধরণঃ হার্ডকাভার


কাহিনি সংক্ষেপঃ মেজর জেনারেল মহিউদ্দীন হক ফিরোজ ও ড. বশির জামান প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প নামে অতি গোপনীয় এক প্রজেক্ট হাতে নিলেন। যার উদ্দেশ্য হলো ভয়াবহ অপরাধীদের ওপর গবেষণা ও তাদের পুনর্বাসন। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ব্যর্থ হলো তাদের এই প্রজেক্ট। প্রচুর রক্তপাত হলো। নরক গুলজার হয়ে গেলো তাকিয়া মহল নামের বাড়িটাতে, যেটা আসলে প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হতো। শুধু তাই না, একেবারে যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন ড. বশির জামান। মহা গ্যাঁড়াকলে পড়ে গেলেন মেজর জেনারেল ফিরোজ। নিজের এজেন্সি MRAU এর দক্ষ কয়েকজন এজেন্টকে সাথে নিয়ে ড. বশির রায়হানের খোঁজে নেমে পড়লেন তিনি।

বাবাকে খুঁজতে ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছে মেরিলিনা নামের এক তরুণী। ঢাকার অদূরে অবস্থিত বহরমপুরে পা রাখতেই সে হারিয়ে ফেললো তার লাগেজ। যার ভেতরে ছিলো তার বাবার শেষ স্মৃতিচিহ্ন - এক গোছা চাবি। যে চাবি নির্দেশ করে নির্দিষ্ট একটা ঠিকানা। মেরিলিনা বিশ্বাস করে সেখানে পৌঁছাতে পারলেই সে জানতে পারবে তার বাবার সাথে কি হয়েছে। চাবির গোছাটা হারিয়ে ফেলে দিশেহারা হয়ে পড়লো মেয়েটা। তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসলেন বহরমপুর থানার ওসি খাইরুল সাহেব। যে মানুষটার বুকে জ্বলছে এক অন্যরকম আগুন। যে আগুনের সূত্রপাত পাঁচ বছর আগে এক জেলখানায় তাঁর একমাত্র বোনের রহস্যময় মৃত্যুর সময় থেকে।

শংকর সাহা একজন জেল সুপার। মিথ্যে এক অভিযোগের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে। এদিকে তাঁর একমাত্র মেয়ে সুতপা ও স্ত্রী সুলেখাও নিখোঁজ। শংকর ঠিক করলেন, এর শেষ তিনি দেখেই ছাড়বেন। আর তার জন্য মেজর জেনারেল ফিরোজ পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে তাঁকে। শুরু হলো এক অদ্ভুত পথচলা। যা একই সাথে অনিশ্চিত ও বিপদশঙ্কুল।

উন্মাদ এক জেনারেল এসব বিশৃঙ্খলার মাঝেই দেশের সর্বময় ক্ষমতা দখলের সুখস্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন। তাঁরই অঙ্গুলিহেলনে দেশের সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে বহু পুরোনো ও কুখ্যাত এক অপরাধী সংগঠন কংসচক্র। এই সংগঠনের সদস্যরা সুযোগ পেয়েই অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে লাগলো দেশের পুরো সিস্টেম জুড়ে। কংসচক্রকে থামানো না গেলে আবারো অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে পুরো দেশ।

অদ্ভুত সব দেয়াল লিখনে ভরে উঠলো পুরো শহর। প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প আর তাকিয়া মহলের চার দেয়ালের মাঝে সীমাবদ্ধ রইলোনা। ছড়িয়ে পড়লো সর্বত্র। পাওয়া যেতে লাগলো একের পর এক রাজনীতিবিদদের ক্ষতবিক্ষত লাশ। আর লাশগুলোর পাশে পাওয়া প্ল্যাকার্ডে লেখা "নিজের পাপের কারণ বিনাশ করাই সব থেকে বড় প্রায়শ্চিত্ত।" তবে কি পাঁচ বছর আগে সত্যি সত্যিই প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের নামে ভয়াবহ এক ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে জাগিয়ে তুলেছিলেন মেজর জেনারেল ফিরোজ ও ড. বশির জামান! যদি তাই হয় তবে এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে কে!

শুধুমাত্র এক প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পকে ঘিরেই ঘটতে লাগলো একের পর এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বাড়তে লাগলো লাশের সংখ্যা। এই প্রকল্পের ব্যর্থতায় যেন গল্প শেষ হলোনা। বরং গল্পটা শুরু হলো এক নতুন আঙ্গিকে।


পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ আমি এর আগে কখনো জুবায়ের আলমের লেখার সাথে পরিচিত ছিলামনা। 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' এই লেখকের প্রথম বই। যদিও দৈনিক প্রথম আলোয় বেশ কিছু ছোট গল্প প্রকাশিত হয়েছে এই লেখকের। জুবায়ের আলমের পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনটা ছোটগল্প হলো পাপ, ইন্টারভিউ ও মেহমান (বইয়ের ফ্ল্যাপ দ্রষ্টব্য)। লেখকের এই বইটা প্রকাশের আগে থেকেই পড়ার প্রতি একটা অন্যরকম আগ্রহ কাজ করছিলো আমার মধ্যে। যাই হোক, দেশীয় পটভূমিতে দারুন একটা থ্রিলার উপন্যাস লিখে ফেলেছেন জুবায়ের আলম।

বিস্তৃত প্লটের এই উপন্যাসে একই সাথে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও অবিশ্বাস্য প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের কথা। বিশাল কলেবরের এই কাহিনির প্রত্যেকটা চরিত্রকেই দারুন শক্তিশালী মনে হয়েছে আমার কাছে। মেজর জেনারেল ফিরোজ, ড. বশির জামান, ওসি খাইরুল, জেল সুপার শংকর সাহা, রহস্যময় ঈশ্বর বাগচী সহ প্রত্যেকটা চরিত্রই একরকম আনপ্রেডিক্টেবল ছিলো। কোনমতেই আন্দাজ করা যাচ্ছিলোনা এর পর আসলে কি হতে চলেছে। জুবায়ের আলম দারুনভাবে 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প'-এর প্লটটাকে ডেভেলপ করেছেন, তা বলাই বাহুল্য।

লেখকের গল্প বলার ভঙ্গিতে দারুন এক সাবলীলতা ছিলো। বেশ সহজ ভাষায় তিনি বর্ণনা দিয়ে গেছেন। ভালো লেগেছে প্রত্যেকটা অধ্যায়ের শুরুতে শিরোনাম দেয়ার ব্যাপারটা। বেশ কিছু শিরোনাম তো যথেষ্ট কাব্যিকও মনে হয়েছে আমার কাছে। ছোটখাটো কিছু টাইপিং মিসটেক ছিলো। বইটার বাঁধাই চমৎকার লেগেছে আমার কাছে। লেখকের পরবর্তী প্রজেক্টের জন্য রইলো শুভকামনা। আগ্রহীরা চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প'।


ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪/৫
গুডরিডস রেটিংঃ ৪.১২/৫

© শুভাগত দীপ

(২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮)
Profile Image for Peal R.  Partha.
211 reviews13 followers
October 31, 2020
‘প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প’ নামটাই বিস্তর ভাবনার খোরাক লুকিয়ে রয়েছে! রয়েছে বললে ভুল হবে লেখক মহোদয় খুব যত্ন সহকারে উক্ত প্রকল্পের শাখা প্রশাখা গুলো দক্ষ হাতে সামলে পুরো গল্পটাকে বাস্তবিক প্রেক্ষাপটের সাথে মিশানো সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। পাঠক হিসেবে বলবো, তিনি সফল তার প্রথম উপন্যাস দিয়ে। ‘জুবায়ের আলম’ সাহেবের ‘শব্দযাত্রা লেখক সংঘ’ প্রথমে পড়ে খুবই রোমাঞ্চিত হয়েছি! সিরিয়াল কিলিং ও রাইটার্স ব্লকের উদাহরণ টেনে অসাধারণ একটা থ্রিলার উপন্যাস লিখেছেন বটে, কিন্তু ‘প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প’ নিয়ে তেমন আ��ামরি রিভিউ বা আকৃষ্ট হওয়ার মতো কিছুই চোখে পরলো না! ভাবলাম বইটা আশানুরূপ ফল পাবো তো?

দুইদিনের মাথায় এই বই আমি একপ্রকার চিবানো শব্দগুলো গিলে হজম করেছি, প্রথম পৃষ্ঠা থেকে উত্তেজনার পরশ মেখে দিয়ে লেখক পাঠকের চোখ ছুটিয়েছে সেই সাথে মস্তিষ্কের ভাবনার কোষ! উপন্যাসটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নির্ভর করে বানালেও প্রচুর থ্রিল আর টুইস্ট রয়েছে, তবে অতিমাত্রার নার্ভ সিস্টেম গুলিয়ে ফেলার প্রয়োজন বোধ হয়নি! ছোট ছোট আঙ্গিকে তিনি যেইভাবে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব গুলো লিখেছেন একেবারে মনোমুগ্ধকর, খুব বেগ পেতে হবে না কারণ চরিত্রের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত না! তবে প্রত্যকটা চরিত্রের ব্যাকস্টোরি থেকে বর্তমান সিচুয়েশন যেইভাবে মিলিয়ে দিয়েছেন এদিকটা অভিযোগ করার কিছু নেই! তবে কিছু চরিত্র থেকে আপনি হয়তো বেশি আশা করলেও সেটা ঠিক বিপরীত ভাবে প্রতিফলন হবে।

আরেকটা বিষয় নিয়ে লেখক বেশ স্টাডি করেন বুঝা যায় সেটা হচ্ছে ‘সংঘ!’ অর্থাৎ উনার দু'টো উপন্যাসে এই সংঘ নিয়ে বেশ মিল রয়েছে। সংঘ গুলো খুব ভয়ানক যেমন এই উপন্যাসে ছিলো "ছায়াসংঘ" একই সাথে দুর্ধর্ষ ‘কংসচক্র’ নামক সংঘটন! কি তাদের কাজ আর প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা কতটুকু প্রয়োজনীয় সেটা বই পড়লে জানতে পারবেন।

_ ফ্ল্যাপ থেকে সারাংশ আখ্যানভাগ বলছি…

অপরাধীর প্রায়শ্চিত্ত কি? কারাগার বন্দীশালা? নাকি মৃত্যুদণ্ড? এইসব উত্তর খুঁজতে মেজর মহিউদ্দীন হক ফিরোজ বিদেশের সম্মান ও অর্থ-বিত্তের মোহ ত্যাগ করে দেশে ফিরে আসেন। গড়ে তোলে MRAU নামক এক গোপন সংস্থা! ভীষন গোপনীয়তার সাথে দেশের ভয়ঙ্করতম কিছু অপরাধীকে নিয়ে শুরু করেন প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প!

বাকিটুকু আর বলছি না! মেজর ফিরোজের সাথে এই প্রকল্পে ছিলেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডঃ বশির জামান! প্রকল্পের সাথে জড়িয়ে রয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ! এমনকি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত জড়িয়ে পরেছিলো অজ্ঞাত কোন এক আতঙ্কে! এছাড়া খাইরুল, শংকর, মেজর ইকবাল, পোসাইডন, প্রমিথিউস, হেডিস, মেরিলিনা ও নাসরিন প্রমুখ চরিত্র গুলোর ছিলো আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য! গল্পে আসল প্রোটাগনিস্ট কে সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে বইয়ের শেষ পাতা পর্যন্ত! তবে সবচেয়ে রহস্যময় চরিত্র হচ্ছে ঈশ্বর বাগচী, যিনি জীবনের বিনিময়ে মৃত্যু আর মৃত্যুর বিনিময়ে জীবন দান করে থাকেন।

পুরো উপন্যাস জুড়ে দেশের এক অস্তিশীল পরিবেশের দেখা পাবেন যেখানে সাধারণ জনগণ ফুঁসে উঠছে কোন এক পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য। বইয়ে মাইন্ড গেম থেকে শুরু করে আবেগ এবং কিঞ্চিৎ ড্রামাটিক আক্ষেপের সমন্বয়ে নিমিষে হারিয়ে যেতে পারবেন গল্পের অন্তরালে। অভিযোগের একটা বিষয় হচ্ছে প্রচ্ছদ, সত্যিকার অর্থে প্রচ্ছদে গুরুত্ববহন করলেও আরো ভালোভাবে সেটা ফুটানো যেতো। এছাড়া বাদবাকি সব সাবলীল।

সব মিলিয়ে দারুন উপভোগ্য সময় কাটানোর দুর্দান্ত একটা বই। ব্যাক্তিগত ভাবে ‘প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প’ বইটি ভালো হলেও ‘শব্দযাত্রা লেখক সংঘ’ কিছুটা এগিয়ে থাকবে অন্যরকম ও আনকোরা প্লটের জন্য।দুর্দান্ত দুইটি বই দ্রুত শেষ হয়ে গেলো তাই আফসুস তো থেকেই যাবে। যারা থ্রিলার পাঠক তাদের জন্য ‘জুবায়ের আলম’ লেখকের দুইটি বই মাস্ট রিড!

➜ বইঃ প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প | লেখকঃ জুবায়ের আলম
➥ পৃষ্ঠাঃ ৩২০ | মূল্যঃ ৪০০
➥ প্রকাশনীঃ বুকস্ট্রীট
➥ প্রথম প্রকাশঃ আগস্ট ২০১৮
Profile Image for Mitul Rahman Ontor.
161 reviews57 followers
February 19, 2020
লেখক হিসেবে জুবায়ের আলম এবং বই হিসেবে তার "প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প" এবং "শব্দযাত্রা" কে বেশ অনেকটা আন্ডাররেটেড মনে হয় আমার কাছে।

লেখক বেশ নবীন মাত্র দুটো বই লিখেছেন, এখনই তার খ্যাতি পেয়ে যাওয়া উচিত এমনটা মনে করি না। মাঝেমাঝে আন্ডাররেটেড থাকা ভালো।

তবে তার বইদুটো নিয়ে বেশি কথা না হওয়ায়, পাঠকরাই বরং বঞ্চিত হচ্ছে বলে আমি মনে করি।

জুবায়ের আলমের লেখার ধরণ একেবারেই ভিন্ন। লেখনী বেশ শক্তিশালী এবং সাবলীল। তবে তার স্পেশালিটি তার গল্পের "প্লট"। একেবারেই অনন্য। ফ্ল্যাপ স্টোরি পড়লেই ধারণা করতে পারবেন অনেকটা।

সাধারণত থ্রিলার জনরার বইয়ে বারবার টুইস্ট দিয়ে পাঠককে ভড়কে দেওয়ার প্রবণতা থাকে। থ্রিলিং করার জন্য কৃত্রিম সাসপেন্স ক্রিয়েট করা হয়। জুবায়ের আলমের ক্ষেত্রে এমনটি দেখি নি। লেখকের প্রধান ফোকাস থাকে গল্পের দিকে।

গল্পের সাজানো বেশ পরিকল্পিত। লেখক বেশ চিন্তাভাবনা করে, সময় ও শ্রম দিয়ে লিখেন এতটুকু ধারণা করাই যায়।

থ্রিলার জনরার বইয়ে বর্তমানে দুটো জিনিস অনেক বেশি দেখা যায়। একটি হলো, ইতিহাসের প্লটে থ্রিলার বা হিস্টোরিকাল থ্রিলার। এর বাইরে থ্রিলার মানেই মার্ডার মিস্ট্রি।
আরেকটি হলো, থ্রিলারে অনেক বেশি নলেজ বা ইনফরমেশন শেয়ারিং।

এই দুটো দিকের কোনোটাকেই আমি খারাপ বলছি না।
তবে জুবায়ের আলমের লেখা এর বাইরে কিছু একটা। স্টোরিলাইন বেশ মজবুত, গল্পের প্লট অসাধারণ।

লেখকের ২য় বই "শব্দযাত্রা" দিয়ে জুবায়ের আলমের লেখার সাথে আমার পরিচয়। "প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প" লেখকের প্রথম বই। বইটি নিয়ে কথা না বলে, লেখককে নিয়েই অনেক কথা বলে ফেললাম।

গল্প পাঠক ধরে রাখার মত। টানটান থ্রিলটা গল্পের শেষাংশেই মূলত। তবে শুরু থেকে শেষ ইন্ট্রেস্টিং। গল্পের আরেকটি পজেটিভ সাইড হলো, গল্পে হুট করে নতুন চরিত্র বা কাহিনী চলে আসে না। পরিচিত কোনো চরিত্রের হাত ধরেই গল্পে প্রবেশ করে নতুন চরিত্র।

থ্রিলের খানিকটা অভাব বোধ করেছি। লেখকের ২য় বই "শব্দযাত্রা" আরো বেটার ছিল, আরো থ্রিলিং ছিল।

আমার ব্যক্তিগত রেটিংঃ 4.5 / 5

৫ তারা দেওয়ার কারণ বইটি আরো পাঠকের সাড়া ডিজার্ভ করে।

বইটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত "বুকস্ট্রিট" থেকে। বইটির বাইন্ডিং, পেজ কোয়ালিটি খুব ভালো। মূল্যও নাগালের মধ্যেই। প্রকাশনীর এক্ষেত্রে ধন্যবাদ প্রাপ্য।

২০২০ বইমেলায় লেখকের কোনো বই প্রকাশিত হয় নি। এক্সপেক্টেশন অনেক উঁচুতে রেখেই লেখকের নতুন গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,860 followers
February 10, 2024
গাঢ় অন্ধকার পটভূমিতে আরও অন্ধকার কিছু চরিত্র কালো পোশাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারও উদ্দেশ্য মহৎ, কিন্তু পদ্ধতি নারকীয়। কারও লক্ষ্য অত্যন্ত খারাপ, কিন্তু মুখোশটি মনোরম। এদের ভিড়ে জড়িয়ে গেল কিছু নিরপরাধ মানুষ। তাদের পারস্পরিক চলন, অনুসন্ধান এবং এক গভীর রহস্যের পর্যায়ক্রমিক উন্মোচন— এই নিয়েই প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প।
লেখা অত্যন্ত গতিময়, কিন্তু তার শেষে আমরা কিছু পাই না।
রহস্যটা জটিল, কিন্তু তার তথাকথিত সমাধানের শেষেও প্রশ্নের সংখ্যা উত্তরের চেয়ে বেশিই থাকে।
ভালো উপন্যাস, কিন্তু মন পুরোপুরি ভরল না।
Profile Image for Samiur Rashid Abir.
217 reviews44 followers
July 30, 2021
শুরুটা বেশ ভাল ছিল। এক টানে অর্ধেক শেষ করে ফেলেছিলাম। শেষের দিকে দেখি পুরোই পার্জ মুভির মতন অবস্থা। লেখক ভিন্নধর্মী লেখা লিখতে জানেন। বর্ণনাভঙ্গি বেশ ভাল লেগেছে। মেদহীন লেখা এক কথায় বলতে গেলে।
এবার শব্দযাত্রা পড়বার পালা।
1 review
June 23, 2021
প্রথমে পড়লাম শব্দযাত্রা লেখক সংঘ এরপরে প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প। বেশ ভিন্নতা পেলাম লেখায়।
সত্যি বলতে এই সময়ের একজন আন্ডাররেটেড লেখক জুবায়ের আলম। সামনে আশা করি আরো ভালো কিছু বই পাবো তার।
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
March 5, 2024
পুরানো রোগ�� দুর্দান্ত শুরু, কাহিনী নানাদিকে ছড়িয়ে দেয়া, শেষে ফিনিশিংয়ের সময় জালের সুতাগুলো নিজেই খুঁজে না পেয়ে গিট্ঠু দিয়ে বই শেষ করে দেয়া; অজুহাত হিসেবে বলে দেয়া চলে যে, সমাপ্তিতে অনিশ্চয়তা রাখা হলো, পাঠক নিজের মত বুঝে নেবেন। আমি শুধু এইটুকুই বুঝেছি যে, সম্ভাবনাময় একটা গল্পের অপমৃত্যু হলো। এজন্য ২।
Profile Image for Taznina Zaman.
251 reviews64 followers
April 18, 2025
প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প পড়ার সময় একটা কথা আমার খুবই মনে হয়েছে, এটা নিয়ে দারুন একটা ওয়েব সিরিজ বানানো যায়। বাংলাদেশের পটভূমিতে এরকম সিনেম্যাটিক থ্রিলার উপন্যাসের কথা ভাবলে জাহিদ হোসেনের কাদ্যুসেয়াসের কথাও মাথায় আসে।

যাই হোক, কাহিনীর ৯০% আবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের কোন এক শহর বহরমপুরকে ঘিরে। বহরমপুরের তাকিয়া মহলে মেজর জেনারেল ফিরোজের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে তারই সিক্রেট এজেন্সি MRAU এর উদ্যোগে গড়া চরম সিক্রেট প্রোজেক্ট 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প'। এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে আছেন ইতালি ফেরত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট বশির জামান। প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পে ঠাঁই হয়েছে দেশের শীর্ষ তেরো সন্ত্রাসীর, খাতায় কলমে যারা মৃত। প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প প্রোজেক্ট শুরু হবার পাঁচ বছর পরের এক বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায় হামলা হলো তাকিয়া মহলে। ডঃ বশির জামান ও তিন সন্ত্রাসী বাদে কচুকাটা হলো সবাই। এবং এটাই ছিল সর্বনাশের শুরু। এরপরে যা ঘটতে লাগলো তা মেজর জেনারেল ফিরোজের স্বপ্নের 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' গড়ার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত। কিংবা এই উপন্যাসের একেকজনের করা ভুলের প্রায়শ্চিত্ত।

এই বইটা পড়ার জন্য রেখে দিয়েছিলাম অন্তত তিন বছর আগে থেকে (সেই কোভিডের সময় থেকে)। কিন্তু কিছুতেই পারফেক্ট টাইমিং হচ্ছিলো না। জুবায়ের আলমের শব্দযাত্রা লেখক সংঘ তো খুবই ভালো লেগেছিলো, প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পও ভালো লাগলো।

তবে, যেহেতু এটা লেখকের প্রথম উপন্যাস তাই আমার কিছু জায়গায় মনে হয়েছে আরো ভালো হতে পারতো। বইয়ের শুরুটা হয়েছিলো দুর্দান্ত। বাইরের ঠান্ডা পরিবেশে দেশীয় প্রেক্ষাপটে এমন জমজমাট থ্রিলার একদম জমে ক্ষীর। কিন্তু যতটা প্রতিশ্রুতিশীল প্রথমে ভেবেছিলাম, মাঝখানে কোনভাবে কাহিনী ঝুলে গেছে কিংবা বেশ অসংগতি লেগেছে। যেমন,

১. তাকিয়া মহলে মৃতের সংখ্যা প্রচুর। এত মানুষ আসলো কোথা থেকে? আমি আসলে ঠিক ক্লিয়ার বুঝলাম না ঐদিন তাকিয়া মহলে আসলে ঠিক কী হয়েছিলো।

২. কাহিনী ঘুরেফিরে বহরমপুরেই ফিরে আসে। এমনকি যে চরিত্র কোন এক জায়গা থেকে হারিয়ে যায় সেও কীভাবে যেন এখানেই চলে আসে। প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প ধ্বংসের পর মূল chaos বহরমপুরেই শুরু হয়। কেন?

৩. দেশের এমন ভয়ংকর অবস্থায় দেশের খুবই প্রভাবশালী একজন পাশের দেশে খুন হলেন আর সেটা নিয়ে বলা যায় কোন উচ্চবাচ্যই হলো না। এবং সত্যি বলতে গোটা কংস চক্রকে যেভাবে হাইপড করা হয়েছে, কাহিনীতে তাদের সেরকম প্রভাব নেই বললেই চলে।

৪. কাহিনী এমনভাবে বহরমপুর টু রাজধানী, রাজধানী টু বহরমপুরে সুইচ করেছে যে আমার কিছু জায়গায় বুঝতে কষ্ট হয়েছে যে ঘটনাগুলো ঘটছে কোথায়, বহরমপুর নাকি রাজধানী?

৫. খায়রুল আলম বা মেরিলিনার কী হলো কিছুই জানা গেলো না।

যাই হোক, হতে পারে বিশাল ক্যানভাসের উপন্যাস লিখতে গিয়ে জুবায়ের আলম কিছুটা ছড়িয়ে ফেলেছেন, যেহেতু এটা ছিল তার প্রথম উপন্যাস। কিন্তু প্রথম উপন্যাসেই তিনি তার মেধার দ্যুতি ছড়িয়েছেন। প্লটহোল থাকা সত্ত্বেও কখনোই মনে হয়নি বই নামিয়ে রাখি। এখানেই লেখকের বিজয়।
বিশেষ করে আমাদের দেশের বিবাদমান রাজনৈতিক অবস্থার সাথে দারুন সাযুজ্যপূর্ণ, একেকটা বর্ণনা পড়ছিলাম আর মনে হচ্ছিলো জুবায়ের আলম সেই ২০১৮ সালের বইয়ে ২০২৪-২৫ এর কথা দিব্যদৃষ্টি দিয়ে দেখেছেন আর লিখেছেন।

সবমিলিয়ে প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প দেশীয় প্রেক্ষাপটে লার্জার দ্যান লাইফ থ্রিলার উপন্যাস হিসাবে A পেয়ে যাওয়ার উপযুক্ত। জুবায়ের আলমের কলম আরো চলুক, এই কামনা করি।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
542 reviews
May 5, 2025
২.৫/৫
নির্দিষ্ট কোনো চরিত্রকে কেন্দ্র না করে একেক অধ্যায়ে একেকজনের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প বলেছেন জুবায়ের আলম। এতে গল্পকে বেশ ছাড়া ছাড়া বলে মনে হয়।
সমাপ্তিতে সবকিছু ঠিকমতো জোড়াতালি দিতে পারেননি। এই জায়গাতে কাজ করার অনেক অপশন ছিল।
Profile Image for মোহতাসিম সিফাত.
180 reviews50 followers
May 21, 2024
ভালো লেগেছে: গল্প বলা, যেই প্লট টা নিয়ে চিন্তা করছিলেন লেখক, কিন্তু ঠিক মতো এক্সিকিউট করতে পারেন নাই।

যেসব অংশে লেখক নজর দিতে পারেন:
সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে কিছু লিখতে হলে একটু পড়াশোনা করে নেয়া ভালো। মেজর জেনারেলকে সংক্ষেপে সম্মানার্থে জেনারেল ডাকা হয়, কিন্তু কখনোই মেজর ডাকা হয় না। ম্যা হু না সিনেমার সেই কলেজের প্রিন্সিপালের মতো লেখক র‍্যাংক গুলিয়ে ফেলেছেন অনেকবার। সেনা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা যতোই তুখোড় মেধাবী হন না কেন, উনাকে কখনোই নৌ সদর দপ্তরে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় না।
চরিত্রচিত্রণের পাশাপাশি পরিবেশ বা একটা ভৌগোলিক সীমারেখা টানার ওপর থ্রিলারের কাহিনী অনেকাংশে নির্ভরশীল। লেখক সবগুলো জায়গা বা এলাকার কাল্পনিক নাম দিলেও (উদাহরণ: গমমন্ডি), এদের কোনটা কোন জায়গায় কত দূরত্বে, এসব একদম বোঝা যায়নি। এই পাহাড়ি এলাকা আসলো তো এই রাজধানী, আবার এই নদী, এই বস্তি - একদম খিচুড়ি।
এই উপন্যাসের প্লটটা ভালো ছিলো, এক্সিকিউশনটা হয় নাই ঠিক করে।
Profile Image for Zahidul.
450 reviews93 followers
April 28, 2020
"নিজের পাপের কারণ বিনাশ করাই সবচেয়ে বড় প্রায়শ্চিত্ত।"
-
প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প
-
বিদেশ ফেরত উচ্চাভিলাষী এক সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মহিউদ্দীন হক ফিরোজ। দেশে এসে শুরু করলেন MRAU (Military Research and Analysis Unit) নামক এক সিক্রেট এজেন্সি। এ এজেন্সির আন্ডারে সে ও ড. বশির জামান শুরু করলেন প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প নামের এক প্রজেক্ট। যার উদ্দেশ্য ছিল দেশের সবচেয়ে দাগি অপরাধীদের উপর নানা রকম গবেষণা করা।
-
কিন্তু এক অজানা কারণে যে স্থানে এই প্রজেক্টটি হচ্ছিলো সে জায়গায় হলো এক ভয়াবহ বিপর্যয়। তিনজন কয়েদিসহ পালিয়ে গেলেন ড.বশির জামান। তাই ফিরোজ নিজের এজেন্সি MRAU এর সর্বশক্তি নিয়ে এই প্রকল্পের সকল চিহ্ন মেটাতে শুরু করলেন।
-
দেশের এই অবস্থায় এক জেনারেল আর এক মন্ত্রী মিলে সাজালেন দেশের ক্ষমতা দখলের এক ভয়াবহ চক্রান্ত। এ চক্রান্ত সফল করার জন্য হাত পাতলেন দেশ থেকে বিতাড়িত এক ভয়াবহ অপরাধ গোষ্ঠীর।
-
এদিকে বহরমপুরে বাবার খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক বিদেশী তরুণী। কিন্তু সেখানে গিয়ে হারিয়ে ফেলেন যে জায়গায় যাবেন তার ঠিকানা। এদিকে কয়েক গোষ্ঠীর ভিতর শুরু হয়ে গেল এই মেয়েকে নিয়ে নিজেদের প্ল্যান। সে প্লানের সাথে জড়িয়ে গেলেন বহরমপুর থানার ওসি খাইরুল।
-
ঈশ্বর বাগচী, পুরোদস্তুর রহস্যময় এক লোক। ঘটনার সাথে তিনি জড়িয়ে দিলেন এমন এক মানুষকে যে সবার কাছ�� অনেক আগেই মৃত। এদিকে প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের রেশ ছড়িয়ে পড়তে লাগলো পুরো দেশ জুড়ে। জায়গায় জায়গায় বীভৎসভাবে খুন হতে শুরু হলো বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
-
এখন শহরজুড়ে এই খুনগুলো কে বা কারা করছে ? মেজর জেনারেল ফিরোজ কি সময়মত বশির জামানকে খুঁজে পাবে? সেই ভয়াবহ অপরাধ গোষ্ঠী কি আবারো দেশে ত্রাসের রাজত্ব শুরু করবে? সেই বিদেশী মেয়ে আর তাকে পরিকল্পনা করা লোকজনের মূল উদ্দেশ্য কি? এ সব কিছুর উত্তর জানতে হলে পড়তে হবে লেখক জুবায়ের আলম এর পলিটিক্যাল থ্রিলার ঘরানার থ্রিলার 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প'।
-
'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' আমার পড়া লেখক জুবায়ের আলমের প্রথম লেখা। যদিও এটি লেখকের প্রথম বই, লেখনী বেশ সাবলীল বলে মনে হয়েছে। দেশীয় পটভূমিতে এ রকমের একটা থ্রিলার বই পড়তে কোনো রকম বিরক্ত হইনি।
-
'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' বইয়ের বইয়ের আরেক শক্তিশালী দিক হচ্ছে এর চরিত্রায়ন। লেখকের এই বইতে বেশ ভালো সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে। সব চরিত্রগুলোই কম বেশি ভালো লেগেছে। বিশেষ করে মেজর জেনারেল ফিরোজ আর শংকর সাহার কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়, পুরো বই জুড়েই তাদের দুর্দান্ত লেগেছে।
-
'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' বইতে লেখক প্রথম থেকেই গল্পের প্লট কে এমনভাবে সাজিয়েছেন যে এর শেষ পরিণতি জানার আগ পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। সে এক্সপেক্টেশন অনুযায়ী গল্পের শেষ ফিনিশিং কিছুটা অগোছালো মনে হয়েছে, অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর পাইনি। আশা করি এই সিরিজের পরবর্তী লেখাগুলায় সে উত্তর পাব।
-
নতুন প্রকাশনী হিসেবে বুকস্ট্রিটের এই বইটির বাঁধাই ও কাগজের মান বেশ ভালোই বলা যায়। ছোটখাটো কিছু ভুল বাদে টাইপিং মিস্টেক খুব একটা চোখে পড়েনি। বইটির প্রচ্ছদ মোটামুটি লাগলো।
-
সবমিলিয়ে 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' দেশীয় পটভূমিতে বেশ ভালো মানের একটি মৌলিক পলিটিক্যাল থ্রিলার। যারা এ ধরণের পঠভূমির মৌলিক থ্রিলার পছন্দ করেন তাদের এ বইটি ভালো লাগবে আশা করছি।
-
Profile Image for SirLaughsALot.
88 reviews19 followers
September 12, 2018
উপন্যাসের শুরুতেই বিশাল এক পটভূমি না লিখে লেখক আমার মন জয় করেছে। শুরু থেকেই গল্পের মাঝে বুঁদ হয়ে ছিলাম। মনে হয় নি গল্প টেনে বড় করা হয়েছে।

গল্পে মেজর জেনারেল ফিরোজের নাম বহুবার লেখার পরেও মনে হয়েছে এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরত্র ফিরোজ না। না থানার ওসি খাইরুল ইসলাম, না মেরিলিনা, না শংকর, না ঈশ্বর বাগচি। কিন্তু প্রতিটা চরিত্র কোন না কোন ভাবে বাকি চরিত্রদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। একটি দেশের ভঙ্গুর প্রশাসনিক অবস্থা, রাজনৈতিক অরাজগতা এবং নিষিদ্ধ সংগঠন কে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাস। তবে গল্পের পুরো কাঠামোটা দাঁড়িয়ে আছে ক্রিমিনালদের গিনিপিগের মত ব্যবহার করে রিসার্চ করা। :p

নতুন লেখকদের একটা জিনিস আমার ভাল লাগে। অনেক গুলো চরিত্র সৃষ্টি করে, সব চরিত্রকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করতে পারেন।
Profile Image for Shafin Ahmed.
81 reviews8 followers
May 27, 2020
জুবায়ের আলমের আরেকটা অসাধারণ সৃষ্টি!
শব্দযাত্রা মতো মাস্টারপিস না হলেও এই বইটাও যথেষ্ট ভালো।
আর জুবায়ের আলমের বই কেউ পড়লে তার লেখার প্রশংসা করতে বাধ্য।

আমার মনে হয় জুবায়ের আলমের উচিত উপন্যাস লেখায় হাত দেয়া। দারুণ লিখবেন!
Profile Image for Rafat Tamim.
73 reviews7 followers
November 21, 2023
কাহিনীর বিষয়বস্তু চমকপ্রদ। শুরু থেকে যেভাবে গল্প এগিয়েছে, অনেকটা পর বোঝা গেছে প্রটাগোনিস্ট কে আর এন্টাগোনিস্ট কে। এই বিষয়টা ভালো লাগছে। এইটা দুই পার্টে করতে পারত। শেষের দিকে একটু তাড়াহুড়া হয়ে গেল।

"শব্দযাত্রা লেখক সংঘ" যেটা ভালো লেগেছিল বেশ কিছু সিক্যুয়েন্স খুবই সিনেমাটিক ছিল। এখানেও পেয়েছি তেমন। বেনারসের অংশটুকু, পাহাড়ের অপারেশন এবং শেষে কংসচক্র এর অংশটা।

কংসচক্র এবং ছায়াসংঘ নিয়ে আলাদা করে বই আসলেই প্রয়োজন। এই দুই সংঘ নিয়ে বেশি কিছু ছিল না বইয়ে, কিন্তু অল্প যা ছিল সেইটুকুই দাগ কেটে গেছে।

এইবার কিছু নেগেটিভ দিক নিয়ে বলি। "শব্দযাত্রা লেখক সংঘ" তে যে বিষয়টা খারাপ লেগেছিল সেটা হল, যেই সংঘ এবং যে বই নিয়ে এত কাহিনী শেষের দিকে যেয়ে সেটাই কেমন গুরুত্ব পেল না। এখানেও একই অবস্থা। প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প এর ডিটেইল নিয়ে কিছুই নেই। কেন করা হয়েছে, কার কি আশা এবং উদ্দেশ্য ছিল এইগুলা কয়েকটি কথাতেই শেষ করে দেয়া হয়েছে।

আরো কিছু বিষয় এর উত্তর ছিল না।

ছোটখাটো কিছু অসঙ্গতি থাকার পর বইটা পুরোটা এনজয় করেছি। ভালো থ্রিল ছিল। কিছু দার্শনিক দিকও ভালো লেগেছে। জুবায়ের আলম পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষা।
Profile Image for Shadman Navid.
36 reviews1 follower
September 18, 2025
বেশ আন্ডাররেটেড একটা ফাস্ট পেসড থ্রিলার। মৌলিক বই হিসেবে চমৎকার ছিল। প্রতিটা প্লট এবং চরিত্রকে অল্পের মাঝে বেশ ভালো ভাবে বিল্ড আপ করেছেন লেখক।
Profile Image for Shaon Arafat.
131 reviews31 followers
April 8, 2019
অসাধারণ প্লট! একটি দুর্দান্ত, রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার!

বইটির প্রশংসা শুনেছিলাম অনেক। এক্সপেকটেশন হয়ে দাঁড়িয়েছিল অতিরিক্ত রকম... এবং ইন্টারেস্টিং ব্যাপারটা হচ্ছে- বইটি পড়ার পর লক্ষ করলাম প্রায় সব এক্সপেকটেশনই আনএক্সপেক্টেডলি লেখক পুরণ করে ফেলেছেন।
Profile Image for Muntasir Dhip.
165 reviews3 followers
October 15, 2024
নিজের পাপের কারণ বিনাশ করাই সব থেকে বড় প্রায়শ্চিত্ত।
Profile Image for রায়হান রিফাত.
255 reviews8 followers
July 24, 2021
প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প

-জুবায়ের আলম



কেমন হয় যদি আমরা সীমানাবিহীন একটা পৃথিবী পেতাম?

কেমন হত যদি সমাজে রাজনৈতিক নেতারা যদি নিজের আখের গোছানো বাদ দিয়ে সমাজের কথা ভাবতেন?

কজন ই বা আর প্রকৃত রাজনীতি করেন?

সেই ঘুরে ফিরে সবাই এক নৌকার মাঝি!!


কিন্তু এমন মানুষ ও থাকে যারা সমাজের এই ব্যবস্থা পাল্টাতে চাই কিন্তু যদি তারা ভুল পথ গ্রহণ করে?

তবে কি হবে?

কি হবে সেটা নিয়েই এই গল্প!!



একজন আর্মি কর্মকর্তা যিনি কিনা চাইলেই দেশের বাইরে ভা��� একটা দেশে থেকে ভাল একটা ফিউচার কর‍তে পারতেন সেসব বাদ দিয়ে তিনি নতুন কিছু করার আশায় দেশে ফিরে আসলেন| কিন্তু তিনি যে পদ্ধতি ব্যবহার করছিলেন তা নিষিদ্ধ , জানাজানি হলে তার চাকরি ও চলে যেতে পারে!!

কিন্তু সমাজ পরিবর্তনের নেশায় ভুল মানুষ কে বিশ্বাস করে ফেললেন!


তার ভুলের পরিণতি এই গল্প!!!


শব্দযাত্রা লেখক সংঘ পড়ে আমি উনাকে সিডনি শেলডনের সাথে তুলনা করেছিলাম,

এই তুলনা আমি এখন ও করবো!!

প্রতি পর্যায়ে তিনি যেন টুইস্ট আর থ্রিলের পারদ চড়িয়ে দিয়েছেন,

হাসপাতালে অলস সময়ে এই বই আমাকে পরিপূর্ণ আনন্দ দিলো :3


(হালকা স্পয়লার আছে কিন্তু ক্ষতি হবেনা কোনো)

তবে একেবারে ফিনিশিং এ অনেক প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে জোর করে শেষ করে দিয়েছেন লেখক,

খাইরুল সাহেব আর মেরিলিনার খোজ না দিয়েই শেষ করে দিলেন :3


বই টা গুড রিডসে নেই,কেও এড করে দিবেন???


রেটিং: 8/10
Profile Image for Naimul Arif.
108 reviews5 followers
October 24, 2024
বর্ণনাভঙ্গি ভালো। কাহিনীও জমিয়েছেন দারুণ। কিন্তু খামতি রয়েছে চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তোলায়। অনেকগুলো চরিত্র সমান গুরুত্ব দিয়েও কাহিনীর গতি ঠিক রেখেছেন লেখক, আমার অভিযোগও এই অতি-গতি নিয়ে। গল্পের গতিটা একটু কমিয়ে চরিত্রগুলোকে আরেকটু ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। কোন চরিত্রের ব্যক্তত্বই গভীরতা পায় নি যথেষ্ট।
মোটের উপর ভালো সময় কেটেছে বইটা পড়তে গিয়ে।
Profile Image for Ariyan Shuvo.
77 reviews1 follower
April 21, 2021
পাপকে ঠেকানোর জন্য কিছু না করাই তো পাপ -
|| রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ||

আপনি কখনো পাপ করেছেন? এই ধরুন যেকোনো ধরণের পাপ? পাপ যখন আছে, প্রায়শ্চিত্তও নিশ্চয়ই আছে। কী সেই প্রায়শ্চিত্ত? যাবজ্জীবন কারাগারের বন্দীশালা? নাকি মোম লাগানো শক্ত দড়িতে ফাঁসি? অদ্ভুত এই প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজতেই দেশে ফিরে আসেন মেজর ফিরোজ। গড়ে তোলেন MRAU নামক এক গোপন সংস্থা। ভীষণ গোপনীয়তার সাথে দেশের কুখ্যাত কিছু অপরাধীদের নিয়ে শুরু করেন এক অদ্ভুত প্রজেক্ট - প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প । প্রকল্প প্রধান ডঃ বশির জামান ; বিখ্যাত সাইকোলজিস্ট । সবকিছু ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল। কিন্তু এক রহস্যজনক দুর্ঘটনা এলোমেলো করে দিল সবকিছু। নিখোঁজ হয়ে গেলেন বশির জামান সহ বেশ কিছু অপরানী। ক্রমশ প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের সাথে জড়িয়ে পড়লো অনেকগুলো জীবন।
অগত্যা প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পের বিষাক্ত কালি মুছতে মরিয়া হয়ে ওঠেন মেজর ফিরোজ। বাধ্য হয়ে হাত পাতেন রহস্যময় এক মানুষের কাছে। নাম তার ঈশ্বর বাগচী, যিনি জীবনের বিনিময়ে মৃত্যু, আর মৃত্যুর বিনিময়ে জীবন দান করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা কী হবে?
পাঁচ বছর আগে জেলখানায় একটা মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু আজও মেনে নিতে পারেনি ওসি খাইরুল ইসলাম। মেয়েটা তার আপন বোন ; কারাগারের ভেতরে বসেই শরীরে আগুন জ্বেলে আত্মহত্যা করে সে। কিন্তু খাইরুল জানে এটা আত্মহত্যা নয়। বরং খুব কৌশলে ব্যবহার করেছে তার বোনকে। আজও প্রতিশোধস্পৃহা তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
শহরে শুরু হয়েছে বীভৎস হত্যাকাণ্ড। কারা এই পোসাইডন, প্রমিথিউস আর হেডিস? মানুষ হত্যৃ করে দেওয়ালে দেওয়ালে লিখে রাখা বাক্যগুলোই বা কোন প্রায়শ্চিত্তের ইঙ্গিত করছে? আর এই টালমাটাল সময়ে ক্ষমতালোভী জেনারেল পাশার ঘুঁটি ওল্টানোর মোক্ষম পরিকল্পনা সাজিয়ে বসে আছেন। পারবেন কি তিনি পরিকল্পনামাফিক এগোতে? বহুবছর পরে কুখ্যাত খুনেদল 'কংসচক্র' আবার দেশে ফিরে আসতে মরিয়া। অনেক প্রতিশোধ নেওয়া বাকি তাদের। সফল হবে কি তারা?

পাঠক আপনাদের হাতে লেখক তুলে দিয়েছেন এক অজানা চাবি, যার নব ঘোরালে ঘনিয়ে আসবে ঘোর বিপদ; খুলে যাবে নরকের দরজা।

পাঠ প্রতিক্রিয়া
----------------------------

'শব্দযাত্রা লেখক সংঘ' বইটির মাধ্যমে জুবায়ের আলমের লেখার সাথে পরিচয়। লেখকের সবথেকে প্লাস পয়েন্ট আমার কাছে মনে হয় ওনার ভাষাশৈলী, চরিত্রায়ন এবং গল্প বলার ধরণ। এই বইটিতেও লেখক ধীরে ধীরে সময় নিয়ে প্রতিটি চরিত্র ডেভেলপ করেছেন। বিশেষত জেনারেল ফিরোজ চরিত্রটি এত বেশি জীবন্ত হয়ে উঠেছিল যেন প্রতি পৃষ্ঠায় তাকে অনুভব করতে পেরেছি। এছাড়া শংকর, খাইরুল, তফিসুল বারি - সবগুলো চরিত্র ই যথেষ্ট ডেভেলপড্ ছিল। পোসাইডন, প্রমিথিউস আর হেডিসের জীবন অধ্যায়গুলোও দারুণ ছিল। লেখকের গল্প বলার কৌশল যথেষ্ট ভালো লেগেছে আমার। যখন যেমাবে এগোনো দরকার গল্প ঠিক সেভাবেই এগিয়েছে। আর এরসাথে যোগ হয়েছে ইন্টারেস্টিং প্লট। সব মিলিয়ে লেখকের প্রথম বই হিসেবে 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' বেশ ভালো একটা পদক্ষেপ ই বলবো।

বইটির মন্দ দিকের কথা বলতে হলে প্রথমে বলবো গল্পের গতি শুরুর দিকে বেশ স্লো ছিল। আর আমি যেহেতু 'শব্দযাত্রা লেখক সংঘ' শেষ করে তারপর এটা ধরেছি তাই তুলনামূলকভাবে এই বইতে ভাষাশৈলী অতটা বাস্তবিক লাগেনি আমার কাছে। বরঞ্চ 'শব্দযাত্রা লেখক সংঘ'র ভাষাবিন্যাস যথেষ্ট ভালো ছিল। 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' - বইটিতে সংলাপগুলো যেন কিছুটা কাব্যিক মনে হয়েছে আমার। অথচ এরকম প্লটের একটা বইয়ের ভাষাশৈলী দরকার যথেষ্ট শক্তপোক্ত।
বইয়ের বাইন্ডিং, মলাট বেশ ভালো ছিল। তবে প্রচ্ছদটার মত একই পোস্টার এর আগে কোথাও সম্ভবত দেখেছি। ঠিক মনে নেই। পৃষ্ঠা কোয়ালিটি ভালো হলেও বইটির পাতা ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হল । যেমন এক পৃষ্ঠায় একটামাত্র বাক্য ছাপা হয়েছে এমনও পৃষ্ঠা আছে বইতে। এরকম তিন-চার বাক্যের পৃষ্ঠা পেয়েছি অনেকগুলো। এটা দৃষ্টিকটু লেগেছে আমার কাছে।


প্রথম কাজ হিসেবে জুবায়ের আলমের 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' বেশ উপভোগ্য একটা বই নিঃসন্দেহে। এই বইয়ের ত্রুটিগুলো লেখক নিজের পরের বইতে(শব্দযাত্রা লেখক সংঘ) প্রায় শতভাগ কাটিয়ে উঠেছেন - এটা দেখে বেশ ভালো লেগেছে আমার। বইটির সিক্যুয়েল আসবে সম্ভবত। বইয়ের শেষের দিকে এর ইঙ্গিত আছে। আশা করছি সিক্যুয়েলটা আরো বেশি ইন্টারেস্টিং হবে। লেখকের জন্য শুভকামনা।

বই : প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প
লেখক : জুবায়ের আলম
প্রকাশনী : বুকস্ট্রিট
পৃষ্ঠা : ৩২০
মুদ্রিত মূল্য : ৪০০ টাকা
Profile Image for Ifsad Shadhin.
115 reviews24 followers
November 26, 2019
নবীন লেখকদের বই পড়ি খানিকটা ভয়ে ভয়ে। লেখক নতুন বলেই তার লেখায় অণুবীক্ষণযন্ত্র লাগিয়ে কুটে কুটে ভুল-ভ্রান্তি বের করার চেষ্টা করা কিংবা তার মৌলিক ব্যতিক্রম কিছু লেখন শৈলী কে 'অদ্ভুত' ভাবার প্রবণতা নিজের মধ্যে খেয়াল করেছি বহুবার। সেজন্যই হয়তো নতুন বই পড়তে গেলে আকাঙ্ক্ষার মানদণ্ড নামিয়ে রাখি পারদস্তম্ভের একদম নিচে।

জুবায়ের আলমের লেখার সাথে পূর্বপরিচিতি ছিল না, চোখ বন্ধ করেই এক প্রকার পড়তে শুরু করা বলা চলে। পড়তে পড়তে চমৎকৃত হয়েছি প্লট এবং কাহিনীর বুননী দেখে। টুকিটাকি কয়েকটা ব্যাপার ছাড়া কেউ বুঝতেই পারবে না এটা লেখকের প্রথম বই। সমস্যা হলো, এই 'টুকিটাকি' ব্যাপার গুলোর দিকে আবার চোখ বন্ধ করেও রাখা যায় না।

স্পয়লার দেয়ার ইচ্ছা নেই তাই নির্দিষ্ট উদাহরণ দিচ্ছি না। কিন্তু চরিত্রায়নের ক্ষেত্রে দূর্বলতা কিছুটা চোখে পড়েছে বারবার। না, চরিত্রায়ন বললে ভুল হবে; বলতে হবে চরিত্রদের কথোপকথনের দূর্বলতা। প্রায় সবার কথার ধরনই একরকম– দু-একটা ইংলিশ শব্দ যোগ-বিয়োগ করে।

আবার কিছু কিছু চরিত্রের চিন্তা ভাবনার ধারায় প্রথম দিকে চাতুর্য্যের পরিচয় পেলেও পরে তারা কেমন ভাবে যেন বোকা বোকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পরিণতিও ভোগ করেছে তেমন। গল্পের জন্য চরিত্র, নাকি চরিত্রদের নিয়ে গল্প– এই আদিম প্রশ্ন তুলে আর রিভিউ বাড়াব না। বরং, লেখকের পরিবর্তী বইগুলো পড়ার ইচ্ছা পোষণ করে এখানেই ইতি টানার চেষ্টা করা যাক।

কেউ বইটা পড়তে চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন। রোমাঞ্চিত হবেন, সাথে সময়টাও ভালো কাটবে।

শুরুতে দুই তারকা দিয়েছিলাম, রিভিউ লিখতে লিখতে আরেক তারকা যোগ করলাম। লেখকের প্রথম প্রয়াস, সেই অনুযায়ী আসলেই ভালো করেছেন।
70 reviews11 followers
October 27, 2019
Actually my rating was 3.8, I have rounded it to a 4.
In my opinion, this book could be recommended to anyone who is a thriller and mystery lover. Set on a alternative universe on a town named Baharampur, it shows the fate of multiple character centered the initial stage and consequences of a Military research project. The world was massive and the author done a laudable job not amalgamating the characters or the plot in a byzantine way.
I have finished the novel on a straight 4 hour read. The character development was great. The plot was also good. However, the initial plot setting will test the patience of the reader (I actually found it quite stretchy). But, if we think about the nice characterization author created- it turns into a requirement. The plot was primarily focused on only one city, how much big it is, I think for variation some trivial storyline was possible to be transferred on different cities.
Finally, প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প (The Atonement Project?) is definitely a remarkable addition in the Mystery/Thriller section of Bangla Literature. Hope in future we would get more such fresh and innovative stories from the author.
Profile Image for Farhan Labib.
12 reviews1 follower
April 7, 2021
ভালো লাগলো পড়ে। লেখকের প্রথম হিসাবে যথেষ্ট উপভোগ্য ছিলো!

"নিজের পাপের কারণ বিনাশ করাই সব থেকে বড় প্রায়শ্চিত্ত।"
Profile Image for Sakib A. Jami.
332 reviews36 followers
August 13, 2021
অন্যায় বা পাপ কাজ করলে একটা সময় পরে তার প্রায়শ্চিত্ত করা অনিবার্য হয়ে পড়ে। তার আগে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। কেন মানুষ পাপের সেই জগতে প্রবেশ করে? কী আছে এর পেছনে? একজন মানুষ জন্ম থেকেই তো অপরাধী হয়ে জন্ম নেয় না। তবে কি সমাজে অবহেলা বা বিশেষ কেউ কি এর জন্য দায়ী? ঠিক কী কারণে সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনের বিপরীতে অপরাধ জগৎ বেছে নিতে হয়? এর উত্তর কি পাওয়া যাবে?

কাহিনি সংক্ষেপ :

একজন উচ্চবিলাসী বিদেশ ফেরত মেজর জেনারেল মহিউদ্দিন হক ফিরোজ। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গড়ে তুলেছেন এক সংগঠন। মিলিটারি রিসার্চের সে সংগঠন নানান ধরনের গবেষণা করে চলেছে। সবকিছু ঠিক ছিল। হঠাৎ-ই বদলে গেল পরিস্থিতি। বিশেষ এক গবেষণায় ঠিক কী হয়েছিল, এভাবে ব্যর্থ হয়ে গেল প্রকল্প? মেজর জেনারেল ফিরোজের তিলে তিলে গড়ে তোলা সংগঠন এক নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে। গোপন সে প্রকল্প আর গোপন থাকার অবকাশ নেই। আবার প্রকাশ পেলে বের হয়ে আসবে নির্মম কিছু সত্য, যা খারাপ ছাড়া ভালো কিছু হবে না।

ইতালি থেকে রাজধানীর অদূরে বহরমপুর নামক জায়গায় পা রেখেছেন মেরেলিনা নামের এক তরুণী। নিজের বাবাকে খুঁজতে ঢাকায় আসা তার। পাঁচ বছর আগে কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যান ড. বশির জামান। পাঁচ বছর পর খবর পাওয়া যায়, বাংলাদেশে তার দেখা পাওয়া গেছে। তাই কালক্ষেপণ না করে ছুটে আসে বাংলাদেশে তার মেয়ে। দেশে আসার আগে মায়ের কাছ থেকে একটি চাবির গোছা হাতে পায়। সেখানে নির্দিষ্ট এক জায়গায় নাম লেখা। মেরিলিনার বিশ্বাস সেখানে গেলেই পাওয়া যাবে বাবার সন্ধান। না হলে অন্তত জানা যাবে, কী হয়েছিল তার বাবার সাথে। কিন্তু সত্য বড়ো নির্মম জিনিস। এমন সত্যের মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা আছে মেরিলিনার?

গল্পে আরও আছে ওসি খাইরুল ইসলাম। মেরিলিনার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে সে। একাকী জীবনের একাকীত্ব তাকে বড়োই পীড়া দেয়। মেরিলিনার অসহায়ত্ব আর নিজের তদন্ত করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন এক গভীর রহস্যে। তা নিয়ে যায় তাকে পাঁচ বছর আগের স্মৃতিতে। যেখানে আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিল তারই একমাত্র বোন। আরো আছে জেল সুপার শংকর সাহা। মিথ্যে অভিযোগে ফেঁসে গা ঢাকা দিয়ে আছে সে। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা শংকরের চোখে মুখে জ্বলজ্বল করছে প্রতিশোধের আগুন। এছাড়াও আছে পোসাইডোন, প্রমিথিউস আর হেডাস। কারা এরা? তাদের চোখেও জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। সে আগুনে জ্বলবে কে?

ওদিকে শহর জুড়ে ঘটতে লাগল একের পর এক খুনের ঘটনা। রাজনীতিবিদদের ক্ষতবিক্ষত লাশের দেখা মিলছে এদিক ওদিক। লাশগুলোর পাশে প্লেকার্ড পড়ে আছে, কিংবা লাশের পাশে লেখা আছে এমন কিছু - যা বদলে দিলো গোটা পরিস্থিতি। একের পর এক খুন হতে লাগল শহর জুড়ে। মেজর জেনারেল ফিরোজের সামান্য এক প্রকল্পেই তা সীমাবদ্ধ থাকল না, ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে সময় লাগল না। ব্যর্থতার দায় মাথা পেতে নিতে অপারগ ফিরোজ তাই তার হাতে লেগে থাকা ব্যর্থতার কালি মুছতে দ্বারস্থ হলেন ঈশ্বর বাগচী নামের এক রহস্যময় ব্যক্তির। যে মৃত্যুর বদলে জীবন দিতে পারেন, আবার কারো জীবনের পরিবর্তে কেড়ে নিতে পারেন অন্যের জীবন।

দেশের এই টালমাটাল অবস্থার মধ্যেও ক্ষমতালোভী এক জেনারেল নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বিসর্জন দেননি। বরং এমন পরিস্থিতির পুঁজি করে খুলে দিচ্ছেন নরকের দুয়ার। দেশে ফিরিয়ে আনছেন এমন এক দলকে, যাদের দশ বছর আগে দেশ ছাড়া করতে বাধ্য করা হয়েছিল। যাদের ভয়ে দেশবাসী সবসময় তটস্থ থাকত। তারা আবার ফিরছে। তাদের প্রতিশোধের আগুনে ছাইভস্ম হয়ে যাবে গোটা দেশ। এসব থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

এক ব্যর্থ প্রকল্প, খুলে যাওয়া নরকের দুয়ার, তীব্র প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বেঁচে থাকা কিছু মানুষ - এ তো কেবল ঝড়ের পূর্বাভাস! ঝড় এলে খড়কুটোর মতো উড়ে যেতে হবে না তো?

পাঠ প্রতিক্রিয়া :

জুবায়ের আলমের লেখায় সাথে আমার প্রথম পরিচয় 'শব্দযাত্রা লেখক সংঘ' এর মাধ্যমে। লেখকের মাথায় গল্প আছে, তা তিনি ফুটিয়ে তুলতে জানেন। সেদিন বুঝেছিলাম, এই লেখক নিরাশ করবেন না। তিনি নিরাশ করেননি। জিরো একপেক্টেশন নিয়ে শুরু করা 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প' বইটার পৃষ্ঠা যত উলেটেছে, তত মুগ্ধ হয়েছি। টুইস্টে ভরপুর এই বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা ছিল অনবদ্য। লেখক তার সাবলীলতা দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিটি বিষয়।

দেশীয় প্রেক্ষাপটে এমন গল্প সম্ভবত এর আগে হয়নি। ভিন্ন আঙ্গিকে লেখার ধরণের কারণে 'শব্দযাত্রা লেখক সংঘ' পাঠক মহলে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। তার প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প বইটি যারা পড়েছেন, উদার হস্তে প্রশংসা করেছেন। তবুও আমার মনে হয়, তা যেন যথেষ্ট নয়। জুবায়েরকে নিয়ে আরও আলোচনা হওয়া উচিত। তার লেখার মূল্যায়ন যথাযথ হওয়া উচিত। ঠিক কী কারণে তাকে নিয়ে কথা হয় না জানা নেই। প্রচার বিমুখ বলেই হয়ত।

প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প বইয়ের সবচেয়ে প্রধান আকর্ষণ ছিল চরিত্রগুলো। খুব বেশি চরিত্রের বহর নেই, আবার সব চরিত্রই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সবার চরিত্র সমানভাবে ফুটে উঠেছে। সবাইকেই কখনো নায়ক আবার কখনো খলনায়ক মনে হতে পারে। আবার ভাবনা শেষে টুইস্ট সবকিছু ওলটপালট করে দিতে পারে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন চরিত্রই ছিল আনপ্রেডিক্টেবল। বইয়ে অবস্থান করা ক্ষুদ্র চরিত্রও যতক্ষণ ছিল, তারও গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি।

রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতার লোভ, ক্ষমতার অপব্যবহারের, বিশ্বাসের ভগ্নদশা, সত্য-মিথ্যার মারপ্যাঁচ ছিল বইয়ের প্রধান আকর্ষণ। বিস্তৃত প্লটের বইটির কোনো কিছুই ফেলনা নয়। বাড়তি কোনো মশলা যোগ হয়নি কোথাও। সবকিছুই ছিল পরিমাণ মতো। তাই তো বইটি শেষে যখন গল্পটা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়, মনে হয় এমন এক তরকারি গলাধঃকরণ করা হয়েছে, যার স্বাদ জিহ্বায় লেগে থাকবে অনেকক্ষণ।

বই : প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প
লেখক : জুবায়ের আলম
প্রকাশনী : বুকস্ট্রিট
পৃষ্ঠা : ৪৫০
মুদ্রিত মূল্য : ৩৪৪৳
ব্যক্তিগত রেটিং : ৯.৫/১০
Profile Image for Mohammad Kamrul Hasan.
342 reviews15 followers
January 27, 2021
📚 বই নিয়ে আলোচনা

"আমরা এই সুখ স��্বোচ্চ করতে গিয়ে কত পাপ যে করে ফেলি। কিন্তু পাপ করলে পাপের প্রায়শ্চিত্তও করতে হয়। পাপ যেমন মানুষের জন্য অবধারিত, প্রায়শ্চিতও তাই"... কথাটা কি আসলেই সত্যি?

হঠাৎ করে শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। শহরের রাস্তায় রাস্তায় মিলছে লাশ। গুলিবিদ্ধ, চাকু মারা, পিটিয়ে মারা মৃতদেহ সব। প্রতিটা মৃত্যুর পর খুনিরা কিছু বিশেষ মৃতদেহের উপর একটি চিরকুট রেখে যায়, তাতে লেখা

---"নিজের পাপের কারণ বিনাশ করাই সব থেকে বড় প্রায়শ্চিত্ত"---

একই লেখা দেখা যেতে লাগলো রাস্তার পাশের দেয়াল গুলোতেও। কারা করছে এসব? কেন করছে? কিসের পাপের প্রায়শ্চিত্ত?
আসুন ঘুরে আসি বর্তমান থেকে পাঁচ বছর আগের সময়ে।

'জেনারেল মহিউদ্দিন হক ফিরোজ' রাশিয়ার জেনারেল স্টাফ একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েট করে। এবং ফ্রান্স থেকে ইন্টার কোর্স স্টাফ ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। তিনি সাতবছর ন্যাটোর মেরিন উইং-এ কাজ করেছিলেন। সেখানে তিনি বেশ পরিচিত ছিলো, কারণ তিনি মিলিটারি দক্ষতার পাশাপাশি স্নাইপিং এ বেশ দক্ষতা দেখিয়েছে।
তো এই ফিরোজ সাহেব দেশে ফিরে আসেন। এখনে তিনি অতি দক্ষতার সাথে কিছু অপারেশন করেন ছদ্মবেশে।
তারপর এক 'স্বপ্ন' নিয়ে যাত্রা শুরু করেন 'মিলিটারি রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ইউনিট (MRAU) এর সাথে। A 22 নামে একটি অতি গোপনীয় প্রজেক্ট নিয়ে কাজ হাতে নেন তিনি, পরে প্রজেক্টের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় "প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প"

প্রজেক্টের জন্য একজন দক্ষ সাইক্রিয়াটিস্ট এবং গবেষক দরকার। তাই তার পরিচিত একজনকে ইতালি থেকে নিয়ে এসে তার প্রজেক্টে নিয়োগ দেন। তিনি বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত ডাঃ বশির জামান।
প্রজেক্টের জন্য আরো সংগ্রহ করা হয় কিছু কুখ্যাত অপরাধীকেও। যারা দেশের সকলের কাছে বর্তমানে মৃত! তাদের রাখা হতো অতি গোপন একটি কারাগারে।

এবার বর্তমানে আসি...
কিছু বিশ্বস্ত এজেন্ট আর বশির জামানকে নিয়ে চালু হলো "প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প"...
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো অপরাধীদেরকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা।
কিন্তু একদিন হঠাৎ " তাকিয়া মহলে"(গবেষণাগার বাড়ির নাম) অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অনেক এজেন্ট সহ মারা পরে অনেক অপরাধীরাও।

ফিরোজ হক ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে দেখেন তিনজন কুখ্যাত অপরাধী সহ ডাঃ বশির জামান ঘটনাস্থলে নেই। শুরু হলো তাদের খোঁজ করা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী 'তফিছুল বারী'ও বেশ চাপে আছেন। কারণ 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প'এর কথা যদি দেশে ফাস হয়ে যায় তবে তিনি অস্তিত্ব সংকটে থাকবেন। 'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্পটির' কথা শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী, দেশের সেনাবাহিনী প্রধান 'জেনারেল' এবং 'ফিরোজ হক' শুধু জানেন। কিন্তু কোনো এক মাধ্যমে ঘটনাটা জেনে যান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী 'আশফাক চৌধুরী'। আর জেনেই অনেকটা ব্ল্যাকমেল করা শুরু করেন তিনি।

এদিকে এই হযবরল দৃশ্য দেখে অদ্ভুত এক চিন্তা খেলে যায় 'উন্মাদ জেনারেলের' মনে। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও আশফাককে সরিয়ে দিয়ে দেশে সামরিক আইন জারি করে নিজেই ক্ষমতা দখল করবেন বলে ছক কষতে থাকে।
এজন্য তিনি দেশের এক সময়কার ক্যান্সার সমতুল্য অপরাধ সংগঠন 'কংস চক্রের' সহয়তা নিতে ইন্ডিয়া যান। তারই নির্দেশে কিছুদিন পরে দেশে ১৫ জনের একটি দল প্রবেশ করে। ঘটতে থাকে একের পর এক ঘটনা।

বাংলাদেশে এসেই "মেরিলিনা" তার সাথে থাকা ব্যাগেজ খুইয়ে ফেলেন। ঐ ব্যাগে ছিলো একটা চাবির গোছা সহ তার দরকারী কাগজ পত্র । কিন্তু মেরিলিনার খুব বেশি দরকার চাবির গোছাটি। ঐ চাবির গোছাতে একটি ঠিকানা লেখা আছে। আর সেই ঠিকানাটা 'তাকিয়া মহলের'
তিনি ইতালি থেকে এদেশে খুঁজতে এসেছেন তার নিখোঁজ পিতা ডাঃ বশির জামানকে। এবং এই চাবির গোছাটাই ছিলো বাবার দেয়া শেষ স্মৃতি চিহ্ন।
আর এই হারিয়ে যাওয়া চাবি খুঁজতে নেমে পরেন বহরমপুর থানার ওসি 'খাইরুল ইসলাম'

কিন্তু 'খাইরুল সাহেব' নিজেও কি তখন জানতেন যে এই চাবি তাকে কোথায় নিয়ে ফেলবে?

অন্যদিকে পাঁচ বছর ধরে পলাতক সাবেক জেল সুপার 'শংকর সাহ'। সৎ এই পুলিশ অফিসার তীব্র ঘৃণা, প্রতিশোধ স্পৃহা নিয়ে ঘুরছেন একটি সুযোগের অপেক্ষায়। যার জন্য তিনি আজ ফেরারি। হারিয়েছেন একমাত্র মেয়ে এবং স্ত্রীকে। তাকে তিনি শেষ করবেনই। কিন্তু যাকে নিয়ে তার এতো চিন্তা, সে কি সত্যিই অপরাধী? আর যদি হয়েও থাকেন তবে কেন করতে গেলেন তিনি এসব?

'প্রায়শ্চিত্ত প্রকল্প'কে কেন্দ্র করে চলতে থাকে মর্মান্তিক, লোমহর্ষক, কুৎসিত সব ঘটনা। কিন্তু প্রকল্পটির উদ্দেশ্য কী এটাই ছিলো? নাকি অন্য কিছু? কার কী লাভ এসব ঘটিয়ে?



উপন্যাসে লেখক তুলে ধরেছেন একটি দেশের রাজনীতির কিছু অভ্যান্তরিণ অস্থিতিশীল পরিবেশ। এটা সত্যি যে এমন কিছু দৃশ্য আমাদের দেশেও ঘটে।
তার সাথে খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে অপরাধ জগতের কিছু কানাগলি। এবং তার সাথে জড়িয়ে থাকা অপরাধীদের মনস্তাত্ত্বিক চিত্র।

কাহিনীর পরতে পরতে চমক না থাকলেও, কাহিনীর মোড় ঠিকই আছে, যা পাঠকের জন্য বেশ উপভোগ্য বিষয়। সবচেয়ে মজার বিষয় যেটা, সেটা হলো প্রতিটা অধ্যায়ের কিছু বিচিত্র নাম দেয়া আছে। যা অনেকটা কাহিনীর চমক বাড়ায়, অন্তত আমি তেমনই পেয়েছি আরকি।

"জুবায়ের আলম"। লেখকের প্রথম কোনো বই পড়লাম। এবং আমি মুগ্ধ তার লেখনিতে। পড়তে পড়তে ভাবছিলাম হয়তো বিদেশি কোনো থৃলার বইয়ের অনুবাদ পড়ে যাচ্ছি। এতোটাই টপ ক্লাসের লেখা আমার দেশের লেখকেরাও লেখতে পারেন বলে গর্ববোধ করছি।

বইটি প্রকাশ করেছেন "বুক স্ট্রিট প্রকাশনী" তাদের বইয়ের মানও যথেষ্ট ভালো। বানানও ৯৮% নির্ভূল।

সবশেষে বলতে হয় আমার দেশের কোনো লেখকের নিজস্ব প্রেক্ষাপটে গড়া কোনো থৃলার পড়ে আমি মুগ্ধ।

ধন্যবাদ।

মোঃ কা।ম।রু।ল। হা।সা।ন ©
সময়ঃ রাত ৮ : ০০। ০৪ - ১০ - ২০১৯ ইং
📚 বই হোক আপনার, আপনি বইয়ের 📚
Displaying 1 - 30 of 42 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.