আধুনিক তরুণ পাঠকদের জন্য লেখা এ বই, কারণ তরুণপ্রাণ সবসময় বিজয়ের জন্য মুখিয়ে থাকে। সানজুর 'দ্য আর্ট অব ওয়ার' এর পাতায় পাতায় সেই নিরংকুশ বিজয়েরই গুপ্তমন্ত্র লুকিয়ে আছে। অনবদ্য এই বইএর আবেদন চিরায়ত, কিন্তু মূল বইটি একে তো ২৫০০ বছর আগে লেখা, তার উপর চীনা ভাষায় রচিত। তাই অধুনা বাঙ্গালী পাঠকদের জন্য উপযুক্ত করে উপস্থাপনের অবকাশ ছিলো। এই বইতে লেখক চমৎকার মুন্সিয়ানার সাথে সেই কাজটিই করেছেন। তাই বইটি শুধু এক বসায় পড়ে ফেলার মতই নয়, বরং পরবর্তীতে আবার পড়ার জন্য সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।
পরিবর্ধিত এই সংস্করণে আর্ট অব ওয়ারের আধুনিক বিশ্লেষনের পাশাপাশি সরল অনুবাদও যোগ করা হয়েছে। তাই একের ভেতর দুই!
🅓Born as an army brat and joined Bangladesh Army to become a Gunner Officer. 🅓Dived into the Bay of Bengal as a FROGMAN and played with IEDs as Bomb Disposal Expert. 🅓Patrolled the Chittagong Hill Tracts to evict the insurgents and traversed African savanna to witness the birth of South Sudan. 🅓An Army Staff College Graduate. 🅓A writer since childhood and a book author since 2015. 🅓Authored books on Military History, Historical Fiction, War Studies and translations. 🅓A few of the books became bestsellers and received an Army Medal as a contributing military writer. 🅓Writes regularly for various journals and a social media savvy.
Keep your friend close and your enemies closer -SUN TZU রাজ রাজাদের ইতিহাস আমাকে কখনোই খুব একটা টানত না। আরে কে কবে কোন দেশ শাসন করেছে, কোন যুদ্ধে কে কাকে কচুকাটা করেছে তাতে আমার কি এই সব মানুষ গুলা এই সব হাবিজাবি করে মরে গেছে এখন তাদের সেই ইতিহাস পড়তে গেলে মাথার ভিতর ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম লেগে যায়। মোটামুটি ভাবে এই ছিল ইতিহাস নিয়ে আমার ধারনা। ইন্টারে পড়ার সময় হটাত করে ইতিহাসে আগ্রহ পেয়ে গেলাম। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে যুদ্ধের ইতিহাসে। চেংগিস খানের দূধর্ষতা, কুবলাই খানের নিষ্ঠুরতা। আকবরের মাত্র ১৩ বছরের বালক থেকে শিখরে উঠা আলেকজান্ডার এর বিশ্বজয় সব কিছুতেই আগ্রহ পেতে থাকলাম অন্যদের কি ধারনা জানি না আমার নিজের ধারনা এক সফল অধিপতির ২টা গুন মাস্ট থাকা দরকার ১ নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা আর কুশলতা (এই কুশলতা যুদ্ধ ক্ষেত্রের রাজ্য পরিচালনার, মিত্র তৈরির) এই ২টা ছাড়াও একজন বুদ্ধিমান মেন্টর কোন নেতাকে তার সাফল্যের শীর্ষে নিতে। যুদ্ধ ক্ষেত্র পাল্টে গিয়েছে অনেক আগেই এখন আর সেই সময় নেই ঢাল তলোয়ার নিয়ে নেমে গেলাম। কিন্তু যে জিনিসটা পাল্টায় নি সেটা হল যুদ্ধের জেতার কুশলতা। এই গুলা বলতে পারেন আমার নিজের ধ্যান ধারনা আর প্রারম্ভিকতা টাইপ কথা। আসল কথায় আসি। এই বারের বই মেলা থেকে মাস্ট রিড যে বই গুলা ছিল তার ভিতর এই বইটা অন্যতম। লেখক এইখানে হাজার খানেক বছর আগের সানজু নামের এক কুশলীবিদের সাথে আধুনিক যুদ্ধের ট্যাকটিস মিলানোর চেষ্টা করেছেন। বইটা আমাকে হতাশ করে নি সত্যি বলতে উল্টা মুগ্ধ করেছে। সেই ট্রোজান যুদ্ধ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের যুদ্ধের সফলতা পিছনে কি কি আছে আর ব্যর্থতার পছনেও কারন গুলা কি। সানজু কি বলেছেন সেগুলা খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। সত্যি বলতে কি যুদ্ধ নিয়ে কেউ এইভাবে চিন্তা করতে পারে সেটা আমি সানজু এর কথা না জানলে জানতে পারতাম না। উপদেশের মত করে বলা কথা গুলা এখন ও যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বইটা না পড়লে বুঝবেন না ।সবাইকে সানজুর জগতে স্বাগতম। টানটান উত্তেজনাময় থ্রীলার থেকে কোন অংশে কম না।
আরিব্বাপ্স! সেই কবে কোন আমলে সান জু নামক এক বুড়োর পিতামহ লিখে গেছেন যুদ্ধ সংক্রান্ত এক বই। ওই নীতিনির্ধারণীগুলো আরও একটুখানি মডারেট করে নিজের আরও কিছু বিদ্যাবুদ্ধি প্রয়োগ করে যা একখান জিনিস লিখলেন সান জু! সেই জ্ঞান এখনও চলছে, চলবে। সেনানায়করা এখনও সেই রীতি ফলো করে যুদ্ধের ময়দানে। ভাই রে ভাই! সান জু একখান জিনিস বটে! যুদ্ধের রীতিনীতি সংক্রান্ত কঠিন কঠিন জ্ঞান যথেষ্ট আনন্দ নিয়েই পড়েছি। 🔥
যারা গেইম অফ থ্রোনস সিরিজ দেখেছে তারা এই বইয়ের প্রত্যেকটা বিষয় খুব সহজেই বুঝতে পারবে। কারণ এই বই পড়ার সময় আমি সিরিজে যুদ্ধগুলোর দৃশ্যের সাথে অনেক মিল পেয়েছি যেন সেই সিরিজের লেখক মূলত এই বইকেই অনুকরণ করেছেন।
বইটা ‘ আউটবই’ হিসেবে পড়ার ইচ্ছা ছিল অনেকদিন ধরেই। বিখ্যাত ব্যক্তিদের প্রিয় বইয়ের তালিকায় বইটাকে দেখে বা ব্যবসা, ক্রীড়া, সামরিকক্ষেত্রে বইটার উপযোগিতা শীর্ষক কয়েকটা আর্টিকেল দেখে সে ইচ্ছাটা হওয়া অস্বাভাবিক না। কিন্তু এখন পড়লাম ‘ একাডেমিক বই' হিসেবে। আসলে ব্যাপারটা হলো সামনের সপ্তাহে ‘ চীন-ভারতের দ্বন্দ্বে সানজুর তত্ত্ব ' শিরোনামে একটা অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হবে একটা কোর্সের জন্য, তো সেটার রেফারেন্স বই হিসেবেই এখন পড়তে হলো বইটা। অবশ্য তাতে কোনো সমস্যা হয় নি বরং নোট নিয়ে পড়তে গিয়ে আরও ভালোভাবে পড়া হয়েছে।
সাধারণত কোনো বই পঞ্চাশ বা একশ বছর পরেও পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে পারলে তাকে কালজয়ী বলা হয় কিন্তু একটা বই যদি আড়াই হাজার বছর পরেও প্রাসঙ্গিক থাকে তখন তাকে কি বলা হবে?! এমনটাই ঘটেছে সান জু'র আর্ট অব ওয়ারের ক্ষেত্রে। খ্রিস্টের জন্মেরও পাঁচশ বছর আগে বাঁশের চাটাইয়ের উপর লেখা বইটা আজও পাঠককে তেমনি মুগ্ধ করে, সমর নায়কদের ভাবনার গতিপথ গড়ে দেয়।
সান জু বইটা লিখেছিলেন তেরটা খন্ডে। কখন যুদ্ধ লিপ্ত হওয়া সুবিধাজনক হবে থেকে শুরু করে কিভাবে আক্রমণ করতে হবে, কিভাবে সৈন্য সমাবেশ করতে হবে, কমান্ডারের গুণাবলী, যুদ্ধের বিভিন্ন পরিস্থিতি, অস্ত্রের ব্যবহার, গুপ্তচরের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন তিনি। যুদ্ধের সবটাই শত্রুকে ধোঁকা দেওয়ার খেলা, যুদ্ধ না করেই যুদ্ধে জেতা সবচেয়ে ভালো যুদ্ধ, বন্ধুর চেয়ে শত্রুকে কাছাকাছি রাখার শিক্ষা, নিজের ক্ষমতার সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা ও কৌশলকে গোপণ রাখার শিক্ষা, ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করে বড় লক্ষ্যে দিকে এগিয়ে যাওযার তাগিদ, শত্রুকে বন্ধু বানানোর কৌশল ইত্যাদি সান জু’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট। আর বইটাতে লেখক যেটা করেছেন তা হলো সান জু’র এসব বক্তব্যকে পৌরানিক থেকে শুরু করে সর্বশেষ আমেরিকার ইরাক আক্রমণের দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন, তাঁর বক্তব্যের প্রাসঙ্গিকতা দেখিয়েছেন। লেখক নিজে সামরিক পেশার মানুষ হওয়ায় যুদ্ধ সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানকে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পেরেছেন সান জু’র বক্তব্যের সাথে।
বইটার মাধ্যমে লেখক আমাদের সাথে সান জু’র সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে যে এত তীক্ষ্ণ মেধার একজন মানুষ ছিলেন যিনি যুদ্ধকে হাতের তালুর মতো চিনতেন, বুঝতেন, ব্যবহার করতে পারতেন তা পড়লে অবাক-ই হতে হয়। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো লেখক দেখিয়েছেন যে যুদ্ধের অস্ত্র, যুদ্ধক্ষেত্র, সৈন্য সংখ্যা, যুদ্ধরত পার্টি ইত্যাদির আকাশ-পাতাল পরিবর্তন হলেও যুদ্ধের ব্যাসিক নিয়ম তথা কেন যুদ্ধ হয়, কিভাবে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়, কেন কেউ জেতে আর কেন কেউ পরাজিত হয় ইত্যাদির কোনো পরিবর্তনই হয নি। সেই ট্রোজান যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিশ্বযুদ্ধ বলি আর আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বলি সবজায়গায় যুদ্ধরত পক্ষরা একই নিযমে চালিত হয়েছে।
অসাধারণ একটা বই। যুদ্ধের এত খটমটে বিষযগুলো লেখক অতি সহজে তুলে ধরেছেন। এত বেশি উদাহরণ ব্যবহার করেছেন যে প্রতিটা বক্তব্য একদম স্পষ্ট। তবে একই বিষয বারবার আসা বা একই উদাহরণের পুনরাবৃত্তি কিছৃটা বিরক্তিরও সৃষ্টি করেছে।
লেখক সান জুর 'আর্ট অব ওয়ার' এর সরল অনুবাদের পাশাপাশি ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ঘটে চলা বিভিন্ন যুদ্ধ ও যুদ্ধসম্পর্কিত ঘটনা টেনে এনেছেন, যাতে কেবলমাত্র অনুবাদের নিরামিষ নির্দেশ-উপদেশে আটকে না থেকে, প্রতিটি সাজেশন উদাহরণের সাহায্যে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো যায়। টিউটারবার্গ, আজিনকোর্ট, ইয়ারমুক, বার্মার যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, আমেরিকান গৃহযুদ্ধ ইত্যাদি ঘটনাবলী থেকে প্রচুর সূত্র টেনেছেন লেখক। ফলাফল - উপভোগ্য অনুবাদ।
এর পূর্বেও বেশ কয়েকবার অন্য একটা অনুবাদ পড়ার চেষ্টা করে না বুঝতে পেরে রেখে দিয়েছিলাম। কোভিট ১৯ এর সময় লেখক এই বইটির অনলাইন কপি উন্মুক্ত করে দেন, এবং স্বেচ্ছায় যারা টাকা দিয়েছিলেন তা থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ কোভিট ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য দিয়ে দেন। বইটির ২ টি বিশেষ দিক, একটি হলো সুন্দর সরল অনুবাদ এবং অপরটি হলো সানজু'র পদ্ধতি টির একটি বাস্তব প্রয়োগ উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন। এর ফলে বইটি যেমন বুঝতে সহজ হয় পাশাপাশি এই এক বই আমাকে ঘুড়িয়ে এনেছে নানান যুদ্ধক্ষেত্র থেকে। পরিচয় হয়েছে দূরদর্শী কিছু সেনা নায়কের সাথে যারা বদলে দিয়েছিলেন যুদ্ধে র দিশা।
"GAME OF THRONES" দেখার পর এইটা পড়লাম,এবং "GAME OF THRONES" এ এই বইয়ের বিভিন্ন বিষয় যেভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে,আমি নিশ্চিত "GAME OF THRONE" এর লেখক ও "ART OF WAR" পড়েই তার বইয়ে যুদ্বের বিভিন্ন ট্যাক্টিক্স গুলা প্রয়োগ করেছেন।
The best book in bangla language about war tactics and planning Highly recommended for those who are interested in this topic Further the writer had explained it in easy language