Jump to ratings and reviews
Rate this book

Humayun Ahmed (Chronological List) #2

শঙ্খনীল কারাগার

Rate this book
“সোমেন চন্দের লেখা অসাধারণ ছোট গল্প ‘ইঁদুর’ পড়ার পরই নিম্ন মধ্যবিত্তদের নিয়ে গল্প লেখার একটা সুতীব্র ইচ্ছা হয়। ‘নন্দিত নরকে’ , ‘শঙ্খনীল কারাগার’ ও ‘মনসুবিজন’ নামে তিনটি আলাদা গল্প প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লিখে ফেলি। নিজের উপরে বিশ্বাসের অভাবের জন্যেই লেখাগুলি দীর্ঘদিন আড়ালে পড়ে থাকে। যাইহোক জনাব আহমদ ছফা ও বন্ধু রফিক কায়সারের আগ্রহে ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশিত হয় মাস ছয়েক আগে। এবারে প্রকাশিত হল ‘শঙ্খনীল কারাগার’।

‘নন্দিত নরকে’র সঙ্গে এই গল্পের কোনো মিল নেই। দুটি গল্পই উত্তম পুরুষে বলা এবং নিম্ন মধ্যবিত্তের গল্প এই মিলটুকু ছাড়া। নামধাম দুটি বইতেই প্রায় একই রেখেছি। প্রথমত নতুন নাম খুঁজে পাইনি বলে, দ্বিতীয়ত এই নামগুলির প্রতি আমি ভয়ানক দুর্বল বলে। কার্যকারণ ছাড়াই যেমন কারো কারো কিছু কিছু দুর্বলতা থাকে, এও সেরকম।

আন্তরিক চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু ছাপার ভুল রয়ে গেছে। ভুলগুলি অন্যমনস্ক পাঠকের চোখ এড়িয়ে যাবে এইটুকুই যা ক্ষীণ আশা।”

—হুমায়ূন আহমেদ, বৈশাখ ১৩৮০

82 pages, Hardcover

First published April 1, 1973

133 people are currently reading
3431 people want to read

About the author

Humayun Ahmed

450 books2,906 followers
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.

Early life:
Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.

Education and Early Career:
Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.

Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.

Marriages and Personal Life:
In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.

Death:
In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
2,933 (55%)
4 stars
1,770 (33%)
3 stars
484 (9%)
2 stars
106 (1%)
1 star
28 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 349 reviews
Profile Image for Nishat.
27 reviews537 followers
August 30, 2018
“There is a house built out of stone,
Wooden floors, walls and window sills
Tables and chairs worn by all of the dust
This is a place where I don't feel alone
This is a place where I feel at home.

And I built a home for you, for me.
Until it disappeared from me, from you”
-(To Build A Home), The Cinematic Orchestra


কিছু বইকে আমি ভয় পাই, তারা আমার আশে-পাশের প্রিয় মানুষগুলোর সব গোপন কথা বলে দেয়। কিছু বই আগাম বলে দেয় আমাকে আমার আগামীর কথা, বলে সহাস্যে নিঃসঙ্গতার কথা। এদের আমি বইয়ের সেল্ফের একেবারে পিছনে রাখি যাতে অযাচিত কারো হাতে না যায়! এই বইগুলোকে খুব ভয়ে ভয়ে আমি ভালোবাসি!

শঙ্খনীল কারাগারকে আমি বিশ্লেষণ করবো কোন যোগ্যতা দিয়ে? যারা পরিবারকে ভালোবেসেছে এবং বাসে, তারা জানে এই বইয়ের মুল্য কতটুকু! এর প্রত্যেক চরিত্রকে আমি আমার আশে-পাশেই কারো না কারো মাঝে রোজ দেখি। আমার কষ্ট হয় ভেবে, লেখক যাকে এত শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি, তিনি এরকম বই আমাদের আর পরবর্তীতে উপহার দেন নি, দিতে চান নি..

“জামগাছের মাথায় সর সর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হাহা করে উঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায়, কি বিপুল বিষণ্নতাই না অনুভব করি! জানালার ওপাশে অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে, একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ভুগছি!”

শঙ্খনীল কারাগারের কাহিনী জীবন থেকেই নেওয়া, যেকোন সাধারণ, সহজ সরল মানুষকে তার বেড়ে উঠার গল্প বলতে বললে সে এরকমই কিছু শুনাবে। এই বই এক পরিবারকে নিয়ে, পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের পরস্পরের প্রতি ভালবাসা আর সময়ের সাথে সাথে তাদের মধ্যে বেড়ে যাওয়া দূরত্ব নিয়ে।
মাঝে মাঝে এমন হয় না যে, আমাদের আপন জনেরা আমাদের আপনই থাকে, কিন্তু আমরা আর তাদেরকে আপন করে কাছে পাই না? সে হয়তো আমার বোন, সে হয়তো আমার ভাই, কিন্তু একটা সময় আসে যখন সে অন্য কারো স্ত্রী, অন্য কারো বাবা। এই সম্পর্কের ডাল-পালা গজানোতে কত পুরনো সম্পর্ক যে হৃদয়ের গভীরে থেকেও ধরা ছোঁয়ার আড়াল থেকে যায়, তা নিয়েই শঙ্খনীল কারাগার।

আমার বাবা তার ১৩ ভাই-বোনকে একা বড় করেছিলেন কষ্ট করে। কোন কোন ফুফুকে আমি চিনি, কারো কারো সাথে দেখা হয় নি, তারা জানবেন না কোনদিন, তাদের ঐ ভাইয়ের এই বড় মেয়ে দেখতে কেমন, কতটুকু লম্বা! আফসোস! আমি আমার নিজের ছো্টকালের বন্ধুদেরই ভুলে গেছি, মাঝে মাঝে নাম মনে করতে চেষ্টা করি, আসে আসে বলে নাম আর মনে আসে না। সামনে কলেজে যাব, পিছনে হয়তো কিছু পুরনো সম্পর্ক চিৎকার করতে থাকবে, আমি শুনতে পাবো না। আমার নিজের ভাইও আছে মাত্র একটা! ভয় হয় কোনদিন না আমরাও দূরে চলে যাই! তার অবশ্য তখন, নতুন বল কিনার জন্য আমার কাছে বায়না করার সুযোগ আর বয়স কোনটাই থাকবে না।

তবে জানি তো, সব বিকেলের গল্পকেই একদিন শেষ হতে হবে, রাত ঘিরে নিবে আমাদের, চায়ের কাপে চা ফুরোবে। বইয়ের সেল্ফের পিছনে থাকা এই বইয়েও একসময় ধূলো পড়বে, পরিষ্কার করবার সময় থাকবে না। তবে যতদিন বিকেলের এই আড্ডাটুকু জমে আছে, প্রিয়জনকে আঁকড়ে ধরুন। যতদিন অবসর আছে, এ বইটাকেও যত্ন করুন, সযত্নে আঁকড়ে রাখার মতই বই এটা!
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
March 12, 2025
Waqt ki qaid mein zindagi hai magar..(13-02-2025)

"মানুষ চলে যায়, ভুলে যায়, মরে যায় আর জিনিস ভেঙে যায়, চুরি যায়, হারিয়ে যায়। কী হবে ভালবেসে?"
(হলদে পাখির পালক,Leela Majumdar)

আমি মাঝে মাঝে একটা জিনিস খুব ভাবতে থাকি- সময় গড়ালে পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কগুলো কেমন কেমন হয়ে যায়! ছোটবেলার ভাই-বোনদের আদরের সম্পর্ক কেমন হয়ে যায়! যে ভাইবোনরা একজন আরেকজনকে ছাড়া সময়ই কাটাতো না, থাকতে পারতো না, একজনের দুঃখে আরেকজন ব্যথিত হয়ে থাকতো সর্বদা। কই তারা? আলাদা হয়ে ছড়িয়ে আছে, তাদের নিজেদের সংসার আছে, তারা নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের বড় হতে দেখছে আর হয়তো নিজেদের ছোট্টবেলাকে খুঁজে ফিরছে এর মাঝে! ভাগ্যিস এই পরিবর্তন একটু ধীরগতির!

কিন্তু এই আলাভোলা প্যাঁচালের সাথে এই বইয়ের সম্পর্ক কি? হয়তো সম্পর্কটা শঙ্খনীল কারাগারের সাথে!

শঙ্খ/শাঁখ কেমন শক্ত ধরনের হয়! আবার নীল রঙ কেমন বিষাদ মাখা! শঙ্খনীল কারাগার বলতে লেখক কি বুঝিয়েছেন? বিষাদ ভরা শক্ত কিংবা গভীর কোনো কিছুর আবদ্ধতা? নাকি মায়া অথবা স্মৃতির অদৃশ্য বেড়াজাল যাদের আবির্ভাবে সর্বদাই নিঃসঙ্গ হতে হয়।

“জামগাছের মাথায় সরসর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হা -হা করে উঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায়, কি বিপুল বিষণ্নতাই না অনুভব করি! জানালার ওপাশের অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে। একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ডুবছি।”

নিঃসঙ্গতা, বিষণ্নতা বড় আজব জিনিস; যে কোনো সময় যে কাউকেই পেয়ে বসে।
কারাকাননের গান গাইতে থাকা মেয়েটির একদিন কি যে হলো হঠাৎ করে, পরবর্তী ২৩ বছরে গুনগুন করেও আর কোনোদিন গাইলো না। ছেলেমেয়েরা তো তার মায়ের ভালবাসার জন্য হাহাকার করে রইল। আহারে! খোকাটা হয়তো সেই দুঃখ আজীবন মনে পুষে রেখেছে! রুনুটা কেমন স্মৃতি রেখে দিয়ে গেল সকলের মগজে, নিজের ডায়েরিতে। কিটকি রুনুকে আল্লাহর কসম দিয়ে কি এমন কথা বলেছিল যে রুনু তা ডায়েরিতেও লিখে রেখেছে! কি বলেছিল!? ভালবাসা সম্বন্ধীয় কোনো গোপন কথা নয়তো? কি জানি! আচ্ছা, ঝুনু কি মনসুরের সাথে একদম সুখে ছিল! রুনুর কথা কি একটুও মনে হয়নি? সবুজ ছেলেটা এত্ত বদমায়েশ কেনো! আমাদেরই আশে পাশে কত সবুজ রয়েছে! নিনুটা তো আচ্ছা পাগল; বাক্স-প্যাটরা গুছিয়ে নিচ্ছে রাবেয়া আপার সাথে যাবে বলে। বড় হয়েও কি নিনু এমন পাগলামি করে?
আর রাবেয়া আপা! বড্ড বোকা।
“দিতে পার একশ' ফানুস এনে
আজন্ম সলজ্জ সাধ,
একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।”
রাবেয়া আপা বোকা নয়তো কি! মন্টুর লেখা লাইনের মধ্যে নিজেকে দেখতে পেল! তবে রাবেয়া আপার সৌভাগ্যও ছিল বটে! না হলে কি আর ঐ কারাকাননের দুঃখী মেয়েটির আদর পায়! মধ্যবিত্ত বাবার অতো স্নেহ পায়! তারপরও রাবেয়া আপাটা কত বিষণ্ন ছিল!


ঐ যে, বিষণ্নতা বড় আজব জিনিস যে কোনো সময় যে কাউকেই পেয়ে বসে। ঠিক বসন্তের বিকালটার মতো! বিনা কারণে বিষণ্ন করে দিয়ে যায়। কেমন শূন্যতা পেয়ে বসে। মনে হয় কি যেন নেই, কি যেন হারিয়ে গেছে, বড় দুঃখের ব্যাপার ঘটে গেছে। এই বইটা পড়ার পর ঠিক এমনই অবস্থা হয়। মনে হয় কানের পাশে কেউ ষাটের দশকের গানের লিরিক গুনগুন করে যাচ্ছে--
Chhoo Gayi Jism Mera, Kiski Daaman Ki Hawa?
Kahin Yeh Woh To Nahin! 🎵


~১৭ জানুয়ারি, ২০২১
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
August 13, 2020
কি বলব! আমি ভাবি এরকম একটা কাহিনী লেখকের প্রথম জীবনে মাথায় আসে কি করে! একেবারে মধ্যবিত্তদের ভেতরকার কথা এতো সহজ ভাবে প্রকাশিত করেছেন।যার প্রতিটি অক্ষর মায়া আর আবেগ দিয়ে মুড়ানো। যেখান থেকে চাইলেও আড়াল করা যায় না। নিজেকে কয়েদি হিসেবে চিহ্নিত করতে এতটুকুও কষ্ট হয়না তখন। প্রতিবার একটা হাহাকার নিয়ে শেষ করি বইয়ের পৃষ্ঠা গুলো।

কি অসামান্য একটি লেখা! পুরো বইটা পড়া হয়ে গেলেও মাথার ভেতর দুটি লাইন ঘোরাফেরা করে, যে লাইন দুটি একদম আমাদের কথা বলে; চুপচাপ মুখ বুঁজে হাসিমুখে কাজ ��রে যাওয়া মানুষ টার ভেতরেও যে বিশাল এক অব্যক্ত চাহিদা পরে থাকে, সেই চাহিদার কথা—; ভালবাসা না পেতে পেতে মনের মধ্যে সীমাহীন ভালোবাসা পাওয়ার জন্য যে হাহাকার, সেই হাহাকারের কথাই যেন বলে এই দুটো লাইন— ‘দিতে পারো একশো ফানুস এনে? আজন্ম সলজ্জ সাধ— একদিন আকাশে কিছু ফানুস ওড়াই!’
Profile Image for BJ Lillis.
329 reviews278 followers
July 21, 2024
Over the last year, my Rabindranath Tagore reviews have brought me a slow but steady trickle of friend requests from Bengali readers. As a result, Bengali novels cross my feed now and then. Sometimes they’ve even been translated. I’m not sure how I learned about Flowers of Flame, but I’m sure it was on goodreads. Apparently a classic in Bangladesh, the novella has hundreds of Bengali reviews. (That said, apparently this translation is attached to the wrong Bengali novel; all of the reviews on this page are for a different book by the same author (possibly In Blissful Hell). Flowers of Flame is actually a translation of আগুনের পরশমণি.)

It’s incredible how little notice the literary world takes of our planet’s fifth most spoken language and its extraordinary literature. Not that I have read much of it myself. This is only my second Bengali author, after Tagore. There are so many languages, after all, so many literary cultures, so many extraordinary novels published year in and year out. But I’m glad this book crossed my path. A short, easy read, Flowers of Flame is a nakedly patriotic account of urban guerilla warfare in the Bangledeshi War of Independence. Stirring, romanticized, partisan (not that there is much confusion about who the good guys were in this particular war; ruling Bangladesh from Karachi was madness from the beginning)—the novel is also a series of character studies. It feels lived; a heightened account of daily life in a city on the edge of rebellion. The romance is understated; the novella’s emotional heart sneaks up from behind, where it caught me off guard.

The political stakes of the book are far removed, at least from America ca. 2024. It’s moral clarity, the solidarity and purpose Bengali nationalism gives its characters, feel like a fairy tale compared to today’s headlines. And like a fairy tale, the story is transporting, almost lovely. But it is less irrelevant to today’s world than it first appears. Ethnic nationalism, after all, has arguably been the overwhelming ideological force of the last two centuries of human history. Now, the meanings of ethnic and national identity seem to be changing, shifting beneath our feet. Reading stories like this one, of national struggles past, reminds me not to take those changes lightly, and to approach our own moment with humility and courage.
Profile Image for Jahid Hasan.
135 reviews160 followers
July 3, 2021
এমন খুব কম বই আছে যা পাঠের পর বুকের ভেতর এক ধরনের হাহাকার তৈরি হয়..সবকিছু শুন্য মনে হয়..শুন্য মনে হয়..

ওরা সব বেঁচে থাক নিরাপদ ওমের ভেতর..
Profile Image for Injamamul  Haque  Joy.
100 reviews115 followers
April 18, 2021
সকাল সকাল মন-মেজাজ খারাপ করে দিলো। একটা সাধারণ কাহিনীকে জাস্ট লেখনী দিয়ে এরকম মুখরোচক করে ফেলা, বাংলায় দ্বিতীয়টা পেতে কষ্ট হবে। যখন পড়েছি অন্যরকম কিছু ফিল করেছি, কখনো পরিবারের উত্থান, কখনো পতন। কিন্তু বই শেষ করার পর যখন পেছনে তাকালাম, দেখি আসলে কোনো কাহিনীই না এটা। একটা ছোটগল্পের বিস্তৃতিও এর চেয়ে বেশী থাকে। বইটার দুটো চরিত্র লেখকের অন্য সব বইয়ের চেয়ে এটাকে আলাদা করেছে:
১. রাবেয়া।
২. শিরিন সুলতানা।
এই দুটো চরিত্রকে লেখক তার লেখনী দিয়ে যেভাবে রহস্যময়ী করে তুলেছে, সেটা এককথায় চমৎকার। বইয়ের মূল বিষয় হচ্ছে একটা নিম্নবিত্ত পরিবারের জীবনধারা, কখনো হাসিখুশি, কখনো বিষণ্নতায় ভরপুর। আবেগটাকে একেবারে নিংড়ে বের করার জন্য এরকম একটা বইই যথেষ্ট।

আর হুমায়ুন আহমেদের হিমু সিরিজের বই পড়লে ঠিক যতটা খেলো লেখক ওনাকে মনে হয়, তার অন্যসব বই পড়লে ওনাকে ঠিক তত বড় সাহিত্যিক মনে হয়। বাংলা সাহিত্যকে পূর্ণতা দিয়েছে এই বই গুলোই। তো হুমায়ুনের বিষণ্ণ ভুবনে হারিয়ে যেতে চাইলে এটা আপনার জন্যই।
Profile Image for Maruf Hossain.
Author 37 books258 followers
April 26, 2016
হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের চরিত্রগুলো আমাদের এত প্রিয় হবার কারণ বোধ হয় চরিত্রগুলো আমাদের খুব পরিচিত। গল্পের কাহিনিটাও আমাদের জীবন থেকেই নেওয়া। চরিত্রগুলো আমাদের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে, গেঁথে যায় আমাদের অন্তঃস্থলে। হুমায়ূন আহমেদের লেখনীর আরেকটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পুরো বইটাকে লেখা দিয়ে কেমন একটা মায়ার চাদরে জড়িয়ে রাখেন, কেমন একটা মায়ময় ওম ওম ভাব! রুনু,ঝুনু, মন্টু, খোকা, রাবেয়া আপা - এ চরিতগুলো তো আমরাই। কিংবা আমাদের পাশের বাড়ির অতি পরিচিত মানুষজন। চিরকালীন মফস্বল সমাজের এমন জীবন্ত, নিটোল আখ্যান আর ক'জন ফাঁদতে পেরেছেন!

'শঙ্খনীল কারাগার'-এর চরিত্রগুলো হৃদয়ের গভীরে কোথায় যেন অনুরণিত করে যায়, উদাস করে যায় মনটাকে। নিজের অজান্তে, সঙ্গোপনে হাহাকার বেরিয়ে আসে মানুষগুলোর জন্য। ইচ্ছা করে গলা ছেড়ে বলে ওঠি-

"দিতে পারো একশো ফানুস এনে?
আজন্ম সলজ্জ সাধ একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।"
Profile Image for Ësrât .
515 reviews85 followers
March 6, 2021
রেটিং:৪.৫

এই বইটা পড়বো পড়বো করে অনেকদিন অনেক গড়িমসি করছি, হুমায়ুন আহমেদের একদম শুরু দিকের তার লেখালেখির জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক অনবদ্য সৃষ্টি.খুব ছোট্টবেলায় যখন চারদিকে এত ঝকমকে তকতকে মুখ, রঙ্গিন টিভি আর হাজারটা বিনোদনের মেলা ছিলনা,সবার এক প্রবল আকর্ষণের জায়গা সেই পুরানো বিটিভি পর্দায় ছবিটি দেখেছিলাম,আট-নয় বছরের একটা ছোট্ট মেয়ের স্মৃতি ঘিরে রাবেয়ারূপি ডলি জহুর,খোকা চরিত্রে আসাদুজ্জামান নূর,রুনুর ভূমিকায় লাস‍্যময়ী সুবর্না মোস্তফা,আর আজিজুল হাকিম (উনার চরিত্র টা ঠিক মনে নেই , খুব সম্ভবত মন্টুর চরিত্রে উনি ছিলেন)বইটা পড়ার সময় বারবার ভেসে আসছিল.একদম সেই সময়ের এক মধ‍্যবিত্ত পরিবারের নিখুঁত উপাখ্যান.

পুরো বইয়ে আমার সবচেয়ে পছন্দের জায়গা হল রাবেয়ার সেই চিঠিটা আর এখনকার চিরায়ত ফেবুকে যখন তখন ক‍্যাপশন হিসেবে লেখা সেই দুই লাইন

"দিতে পারো একশো ফানুস এনে?
আজন্ম সলজ্জসাধ-একদিন আকাশে কিছু ফানুস ওড়াই"
Profile Image for Salawat Ullah.
29 reviews32 followers
December 26, 2016
পড়া শুরু করেই সবকিছু পরিচিত মনে হতে লাগল, বিশেষ করে রাবেয়া আপাকে। বাড়ি ছাড়ার আগে নিয়মিত বাংলাদেশ বেতার ঢাকার এক ঘন্টার নাটক শুনতাম। এই গল্প অবলম্বনে বেতারে নাটক রয়েছে; ২০০৫ পর্যন্ত দুইবার শুনেছি।

কৈশোরে রাবেয়া আপাকে আমার নিজের বড় আপা মনে হত। এরপর দীর্ঘ সময় পার হয়েছে; গল্পের নাম ভুলেছি, গল্পও ভুলেছি; শুধু মনে ছিল মধ্যবিত্তের সংকটের এক করুন ইতিহাস আর একজন রাবেয়া আপা।

আমি ভেবেছিলাম রাবেয়া আপাকে হয়ত আর খুজে পাব না; কারন হুমায়ূন আহমেদের গল্প অনেক বেশি আর চরিত্র সে তুলনায় অনেক কম। এর মধ্যে একজন রাবেয়া আপাকে খুজে বের করা কঠিনই বটে। তবে আমার সৌভাগ্য যে অনেকটা বিনা চেষ্টাতেই রাবেয়া আপাকে খুজে পেয়েছি এবং তা আবার বাড়িতে বসে কৈশোরের সেই একই খাটে শুয়ে শুয়ে।

হঠাত করে অসময়ে বাড়ি এসেছিলাম একটু স্মৃতিকাতর হওয়ার জন্য; তবে তা যে এমন পূর্ণমাত্রায় হব, ভাবতে পারিনি।
Profile Image for Yeasmin Alo.
201 reviews386 followers
September 21, 2020




জানিনা শুধু আমারই এমন হলো কিনা কিন্তু "শঙ্খনীল কারাগার" পড়ে আমার মনে হল শহুরে "হাজার বছর ধরে" পড়লাম।

বেশী কথা বাড়াবো না সবাই চমৎকার রিভিউ লিখছেন! আমি অপ্রাসঙ্গিক কথা লিখবো ����

শঙ্খনীল কারাগার সিনেমা অনেক অনেক ছোট থাকতে দেখিলাম মনে আছে। তবে সুবর্ণা মোস্তফা আর আসাদুজ্জামান নূর এই সিনেমাতে অভিনয় করেছেন এটা ছাড়া আমার আর কিছু মনে নেই!

গল্পটা পড়ে অনুমান করার চেষ্টা করলাম তারা কোন দুইটি চরিত্রে অভিনয় করতে পারে, তো যাই হোক অতি সত্তর ছবি দেখে সেই রহস্য সমাধা করতে হবে যে আমি ঠিক ঠিক অনুমান করতে পেরেছি কিনা। যদি ঠিক ঠিক অনুমান করতে পারি তাহলে নিজেকে শার্লক হোমস ভাবতে শুরু করবো হয়তো 😂 তো ভুল হওয়াটা শ্রেয় বোধহয় 🤔

হুমায়ূন আহমেদর সহজ সাবলীল লেখনী তার সাহিত্যের মূল আর্কষণ, যেমনটি এই গল্পে আপনারা দেখতে পাবেন, বলার অপেক্ষা রাখে না পড়ে ভালো লাগলো।
Profile Image for Momin আহমেদ .
112 reviews49 followers
March 6, 2021
কখনো কাওকে কিছু দিতে না পারলে হয়তো মানুষ বলে তোমার জন্য দোয়া করি, আমার কাছে দেয়ার মতো তো কিছু নাই।
আর হুমায়ুন আহমেদ বলেন তোকে অনেক টাকা দিলাম, আমার কিই বা দেয়ার আছে।
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews772 followers
November 19, 2020
“জামগাছের মাথায় সর সর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হাহা করে উঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায়, কি বিপুল বিষণ্নতাই না অনুভব করি! জানালার ওপাশে অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে, একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ভুগছি!”

কিছু গল্প একেবারে বুকের ভেতরে খুব যত্নকরে রেখে দিতে হয়। এই গল্পটা তেমনই!
Profile Image for হাসান নাহিয়ান নোবেল.
105 reviews169 followers
May 31, 2018
যতদূর মনে পড়ছে, প্রথম প্রকাশিত বই ‘নন্দিত নরকে’ হলেও, হুমায়ূনের লেখা প্রথম উপন্যাস এই ‘শঙ্খনীল কারাগার’, এবং উপন্যাসটা সম্ভবত লিখে ফেলেছিলেন একুশ-বাইশ বছর বয়সেই। ব্যাপারটা কি অনেক অনেক ঈর্ষণীয় না? আমরা বাইশের আশেপাশে ঘুরঘুর করে এখনও জীবনের অর্থ খুঁজে যাচ্ছি, আর হুমায়ূন অনধিক একশো পৃষ্ঠার বইয়ে কীভাবে এমন গভীর জীবনবোধ তুলে এনেছিলেন—কে জানে।

অর্থাৎ যত যাই বলি না কেন, লোকটার হাত ছিল, এবং বুকের ভেতরে কিছু একটা ছিল—এ কথা স্বীকার করতেই হবে। জীবনের একটা ‘ক্ষুদ্র অংশ’ ছাড়া বাকি সময়টুকু তিনি দেবতার মতই লিখেছিলেন, কারণ এই যে হাহাকার—সেটা সান জু থেকে শুরু করে জন গ্রিন, ব্যাসদেব থেকে শুরু করে শাহাদুজ্জামান পর্যন্ত আর কেউই তৈরি করেন না—অন্তত এই দেশের ‘সারাদিন খাইট্টা বাসে ঝুইলা বাসায় ফেরা’ মানুষের হৃদয়ে না।
Profile Image for Muhaimeen.
32 reviews13 followers
July 19, 2020
একজন লেখকের লেখা প্রথম বই এতোটা সুন্দর কিভাবে হয়?

হুমায়ূন আহমেদের প্রায় সব বই পড়া থাকলেও, এটা পড়া ছিল না। ইচ্ছে করেই পড়িনি। কই যেন দেখেছিলাম বইটা নাকি বিষণ্ণতার ভরা। এতদিন পরে আজকে কি মনে করে পড়ে ফেললাম। এখন মনে হচ্ছে, না পড়লেই ভাল হত। কিছু বিষণ্ণতা ছুঁতে নেই।
"দিতে পারো একশো ফানুস এনে?
আজন্ম সলজ্জ সাধ-একদিন আকাশে কিছু ফানুস ওড়াই।"
Profile Image for তান জীম.
Author 4 books279 followers
March 20, 2021
হুমায়ূন আহমেদ তার গল্প বলার ঢং পরের বইগুলোতে সম্ভবত খানিকটা পাল্টে ফেলেছেন। পরের বইগুলো এটার আগে পড়ে ফেলায় তার লিখনশৈলী সম্পর্কে আমার ধারণা সেই আগের গুলোতেই আটকে আছে। তবে একদমই যে আলাদা তা নয়।

একটা সংসারের গল্প আছে 'শঙ্খনীল কারাগার' এ। মাত্র ৮৫ পৃষ্ঠার এ উপন্যাসিকাতে সে সংসারের সবগুলো চরিত্রকে, একদম সবগুলো চরিত্রকে দারুণভাবে পোট্রে করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। পোট্রে করেছেন মানে যে খুব বেশী বর্ণনা দিয়ে চরিত্রগুলোকে একদম পাঠকের মানসপটে তুলে ধরেছেন তা নয়। আলাদা করে বর্ণনা খুব বেশি নেই। তবে ঘটনার প্রেক্ষিতে এক দুই লাইন করে যা লিখেছেন তাতেই রাবেয়া আপা হয়ে উঠেছেন মমতাময়ী বড় বোন, যে কিনা সংসারের ভাইবোনকে অসম্ভব ভালোবেসে কখনো বিয়ে করেননি। একসাথে থাকা দুবোন রুনু ঝুনুও স্রেফ একটা ঘটনায় চলে যায় যোজন যোজন দূরে। এরকম ছোট ছোট ঘটনায় ঠাসা 'শঙ্খনীল কারাগার', যা পড়ে মধ্যবিত্ত সমাজের সব মানুষেরই মনে হবে, আরে এ তো আমাদের সংসারেরই গল্প। এমন অপূর্ব কোমলতা আর সাবলিলতায় বোনা এই উপন্যাসিকা যে পাঠক হাতে নিয়ে শেষ না করে উঠতে পারবেনা।
Profile Image for Muhammad .
152 reviews11 followers
March 22, 2013
This is great read! The very second novel by Humayun Ahmed. So spontaneous and so strong and also so matured!. Humayun told the whole family tale in such a magical tone and draw the familial tensions so vividly. I read this book a long time back (almost 12 years) and till this day it has the same appeal to me. I remember, up to my teen days, every time I read this book, I cried. I'd like to include it in my '10 best Bangladeshi novels' list. I think I would have included this even if I were to pick 5 instead of 10!
Profile Image for Rafia Rahman.
416 reviews215 followers
May 1, 2025
❝মৃত্যুর জন্যে মানুষ শোক করে ঠিকই, কিন্তু সে-শোক স্মৃতির শোক, এর বেশি কিছু নয়।❞

সাদামাটা ছোট একটা বাসায় পাঁচ ভাইবোন মা-বাবা নিয়ে একটা পরিবার দেখে যদিও অনেকের দয়া হয় কিন্তু তারা দিব্যি ভালো আছে। আসলেই কি আছে? তবে সাতজনের এই পরিবার আটজন হতে চলেছে। এক কালো রাতে তাদের ছেড়ে অজানার পথে চলে যান মা। ভার্সিটি পড়ুয়া খোকা সদ্য জন্ম নেওয়া বোনের কথা চিন্তা করে অসহায় বোধ করে। কিন্তু আশ্চর্য হয়ে একসময় উপলব্ধি করে মায়ের অভাব সবসময় মনে পড়ে না! বড় বোন রাবেয়া অজান্তেই যেনো তাদের মা'য়ের আসনে বসে গেছে। আবারও এই ছোট্ট ঘরে মৃত্যু হানা দেয়। কিন্তু এবার মৃত্যুর আঘাত সবার হৃদয়কে রক্তাক্ত করে। ছোটছোট ভাইবোনেরা চোখের সামনে বড় হয়ে যাচ্ছে...

ভূমিকা অংশ পড়ে আগেই জেনেছিলাম "নন্দিত নরকে"- এর চরিত্রগুলোর নাম হুমায়ূন আহমেদ এই বইয়েও রেখেছেন। খোকার জবানিতে পুরো গল্প। বইয়ের সবচেয়ে সুন্দর অংশ আমার কাছে দু'টো। ভাইবোনের মিষ্টি সম্পর্ক ও বাবার চরিত্রে একজন সাদা মনের মানুষ। বইয়ের প্রতিটা চরিত্রেই এতো মায়া! শুরুতেই কিছু চরিত্রের পরিনতি কি হতে পারে আন্দাজ করে ফেলেছিলাম যেহেতু লেখক সাহেব পাঠককে সমাপ্তিতে কেমন অনুভূতি দেন জানা আছে। তবে রুনু-ঝুনুর মধ্যে কোনো রহস্য থাকবে পরবর্তীতে জানা যাবে এমনটা আশা করেছিলাম কিন্তু...! শেষে শুধু রাবেয়ার কথা মনে পড়ছে, "যদি পারত, তবে জানত সুখের স্বাদ কত তীব্র"।

বই: শঙ্খনীল কারাগার
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
জনরা: সমকালীন
প্রকাশনী: অন্যপ্রকাশ
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৮৫
মুদ্রিত মূল্য: ২৮০/-
Profile Image for Galib.
276 reviews69 followers
October 7, 2017
বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেনা । কয়েকঘন্টা পরে হাতছাড়া হয়ে যাবে । না পড়েই দিয়ে দিবো , তা হবে না ! :3

যদিও লিখে দিয়েছি -
" জন্মদিন উপলক্ষে , পড়ার জন্য । পড়া শেষে ফেরত দেওয়া বাধ্যতামূলক " ;)

***একটা পরিবার'কে ঘিরে কাহিনী এগিয়েছে ।মধ্যবিত্ত পরিবার ; অর্থিক কষ্ট ? না , সেরকম কিছু সেভাবে আসে নাই ।

তবে, পড়া শেষে একটা শূন্যতা অনুভব করছি ।।
Profile Image for Turna Dass.
145 reviews
June 30, 2025
এইতো!কিচ্ছুক্ষণ আগে বইটার শেষ পাতা ওলটালাম৷নিস্তব্ধ আবহ,একাকী ফ্যাকাশে টেবিলে বইখানার পাতাগুলো কালবৈশাখী ঝড়ের মতো উড়ে যাচ্ছে, আমি ফাঁকা দৃষ্টিতে আঁখিজোড়া মেলে তাকিয়ে আছি৷আমার একটা গাল দখল করে আছে ছোট্ট হাত, মস্তিষ্কজুড়ে বড্ড বিচ্��িন্ন,এলোমেলো চিন্তাদের অবাধ ঘোরাফেরা৷এক চাপা,সূক্ষ্ম বেদনায় হৃদয় ভারাক্রান্ত;লাল-নীল অবান্তর অনুভূতির প্রলাপ বকে চলেছে৷এমন এক অনন্ত শূন্যতায় আমি কি লিখব!

কত মহাকাব্য পড়েছি;রাজরাজড়াদের বংশপরিচয়,ধামামা যুদ্ধ-বিগ্রহের বর্ণনা,ঘটনার ঘনঘটা,কেমন যেন এক ঐশ্বর্য,উচ্চাভিলাস আস্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে,বুঝি সাধারণের কোন ঠাই নাই!কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ বোধহয় অদ্ভুত একজন মহাকবি ��িলেন৷একদমই নিতান্ত সাধারন মানুষের জীবন,কিংবা ছাপোষা মধ্যবিত্ত পরিবারের আত্মকথাকে কলমের আঁচড়ে করে তুলেছিলেন এক জীবন্ত মহাকাব্য৷হ্যাঁ,আমাদের এই জৌলুসহীন জীবন তো এক মহাকাব্যই বটে!

কখনো কখনোবা মনে হয় সুদূরে ঐ পিচঢালা রাস্তার দিকে তাকিয়ে,আমাদের এই জীবন এক ওপেন হাইওয়ের মতোন- এই হাইওয়ের উপর দিয়ে কত মানুষের আনাগোনা,যাওয়া-আসা৷কিছু কিছু পদচিহ্ন থেকে যায়,কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাতে পড়ে যায় কিছু কাঁটাছেঁড়া,ঠিক যেমন সময়ের আবর্তনে রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে জীর্ণ হয়ে পড়ে থাকে-বিরহিণী একাকিনী রাইয়ের মতোন!তবুও জীবন নামক হাইওয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে;আনাগোনা থামে না,অনুভূতিরা আরও আচ্ছন্ন করতে থাকে- রেখে যায় কিছু স্মৃতি,বিষণ্ণতা নামক তাজা দগদগে স্ক্র্যাচ.........

বিষণ্ণতা?স্মৃতি?যেন এক অদ্ভুতুড়ে লুপ-একটা ছেড়ে একটা আসবে ত আসবেই!জীবনের সাথে একদম মিশে গেছে,আলাদা করা ত মুশকিল!

হঠাৎ যখন কেউ না ফেরার দেশে চলে যায়,খুব শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি-মায়া তো কাটাতে পারি না৷তারপর,সবকিছু ঘড়ির কাঁটার মতো টিকটিক করে বিরতিহীন চলতে থাকে৷শ্রীমদ্ভগবদগীতার শ্লোক মনে আগত হয়-"সবকিছুই মায়ার লীলা,সবকিছুই অনিত্য৷বৃথা শোক করো না,পার্থ!" ঠিক তো!সবকিছু মায়া বৈ কিছু নয়৷কিন্তু... ট্র্যাজেডি?

ট্র্যাজেডি-সে এক জিনিস বটে!সুখের সাথে বড্ড দ্বন্দ্ব বাঁধে তার;ঠিক সে বাধায় না,বরং আমরা বাঁধাই!

সুখ-দুঃখ নিয়ে আমরা কতই না ভেবে গুমরে গুমরে মরি৷একসময় চরম বিষণ্ণতায় মগ্ন হয়ে আকস্মিক আমি এক অদ্ভুত ফিলোসফিতে আনমনে হাসতে থাকি!

~''হায়রে দুঃখ!তুই আমাকে সারাজীবন কি নিগূঢ়ভাবে আগলে জড়িয়ে রেখেছিস,একদম আমাতে দ্রবীভূত হয়ে যাস,কৈ?সুখ তো আমায় অমন করে আগলে রাখে না?ক্ষণিকের জন্য হাই-হ্যালো বলে দুম করা পালিয়ে যায়!তাহলে কেন আমি তোকে আপন করতে পারি না?সেই সুখকে মায়ামৃগের মতন আকুলভরে চাই?আসলে তো তুই আমার ঠুনকো জীবনের খাঁটি সঙ্গী!"

আসলেই তাই!

আবার হঠাৎ করে আমি একজন মূর্তমান নিহিলিস্টের মত ভাবি-এই সুখ-দুঃখ থেকে কি লাভ?যদি কিছুই না থাকত,একদম শূন্য থাকত,শূন্য......?
আবার ভাবি শ্রীমদভগবদগীতার সেই 'স্থিতপ্রজ্ঞ'ব্যক্তির কথা-যিনি দুঃখে কাতর হয়ে পড়েন না,সুখে হর্ষবোধ করেন না,একদম স্থির থাকেন......
ইশ!যদি হতে পারতাম সেইজন......

কিন্তু, আমরা বড্ড সাধারণ৷মায়াকে ছেড়ে আসতে পারি না৷হাসিমুখে বরণ করে করে নেই ট্র্যাজেডিকে-যে শঙ্খের মত শুভ্র-সাদা,কিন্তু সত্যের ন্যায় কঠিন৷আবার বিষণ্ণ নীলের মতন তীক্ষ্ণ অনুভূতিতে ভারাক্রান্ত৷এককথায়,''শঙ্খনীল''!

হায়!আমরা,সেই জীবন নামক ''শঙ্খনীল কারাগারে'' বন্দি৷

সর্বোপরি রেটিং-৫/৫
Profile Image for Akhi Asma.
230 reviews464 followers
May 22, 2020
“জামগাছের মাথায় সর সর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হাহা করে উঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায়, কি বিপুল বিষণ্নতাই না অনুভব করি! জানালার ওপাশে অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে, একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ভুগছি!”
Profile Image for Tasnima Oishee.
140 reviews26 followers
November 27, 2021
বইটা হঠাৎ করে আজকে আবার পড়লাম। এসে দেখি এর রেটিং আমি গুডরীডস এ দিয়ে রেখেছিলাম ৩! কি অদ্ভুত ব্যাপার, এতো সুন্দর বই এর রেটিং তিন কেন!

এইজন্য বোধহয় পড়া বই আবার পড়তে হয়, কারণ পড়ার সময় আমার কোনো ঘটনাই মনে ছিলো না। সেই কিশোরী বয়সে ৩/৫ পাওয়া উপন্যাস এ বয়সে এতো ভালো লাগলো!

রাবেয়ার জন্য কোথাও একটা কষ্ট হচ্ছে। মধ্যবিত্তের সুখ অসুখ পাওয়া না পাওয়ার ভালোবাসার গল্প আর দ্বিধা দ্বন্দে থাকা একটা বই। অদ্ভুত সুন্দর!

হুট করেই মনে আসলো, আমার এমন অনেকগুলো ভাইবোনের সংসার থাকলে বেশ হতো হয়তো। কিংবা খোকার মতো করে ভালোবাসার কেউ!

"দিতে পারো একশ' ফানুশ এনে?
আজন্ম সলজ্জ সাধ, একদিন আকাশে কিছু ফানুশ উড়াই!"
Profile Image for Ishtiyak Fahmi.
133 reviews24 followers
February 20, 2025
অসংখ্য একাডেমিক পড়ার থেকে একটু বিরতি নেওয়ার জন্য পড়তে শুরু করেছিলাম। পড়তে পড়তে এক পর্যায়ে চোখ লেগে আসতে থাকে কিন্তু নিমিষেই তা চলে যায় রাবেয়া আপুর চিঠিটা দেখে।

এই মেয়েটা কতই না করেছে, সবগুলো ভাইবোন এবং বাবাকেও মমতা দিয়ে আগলে রেখেছে, এমন একজন বোন যদি আমারো হতো!

এই লেখক সেরা হবেই না কেন, যার লেখার রয়েছে এতো এতো জাদু। এই লিখতেসে প্রেমের উপন্যাস আবার এক লিখতেসে সাইন্স ফিকশন এবং একই সাথে দরিদ্র পরিবারের ছাপ তুলে ধরছে মারাত্মকভাবে। এই উপন্যাস ৫ স্টারেরও বেশি ডিজার্ভ করে আমার মতে🤍
October 22, 2022
আব্বু যখন টেলিভিশন দেখেন তখন সচারাচর আমি সেখানে থাকি না, যদিও তিনি খুব কম টেলিভিশন দেখেন।একদিন তিনি টিভি দেখছেন ড্রয়িং রুমে বসে, তো আমার কোন কাজে আমি সেখানে গেছি,আব্বু আমাকে দেখে হকচকিয়ে গিয়ে চোখের পানি মুছলেন।টিভিতে তখন তিনি শঙ্খনীল কারাগার সিনেমা দেখছিলেন,রাবেয়ার আত্নত্যাগ দেখে তিনি কেঁদে ফেলেছেন,নিজের বড় বোনদের কথা মনে করে।
হ্যাঁ, আমি হুমায়ূন আহমেদের, শঙ্খনীল কারাগারের কথা বলছি।আব্বুর মত যারা বয়ঃজ্যোষ্ঠ তাদের হৃদয় হরণ করেছে যার লেখা তিনি তো আর নগন্য কোন লেখক নয়,তিনি হুমায়ূন আহমেদ। হয়তো তারা(গুরুজনেরা) হুমায়ূনের উপন্যাস পড়েনি কিন্তু তার উপন্যাস কে কেন্দ্র করে নাটক,উপন্যাস দেখেছেন। সেগুলো দেখে তারা কখনো কেঁদেছেন বা কখনো হেসেছেন কেননা সেগুলো যেন তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর প্রতিচ্ছবি।
হুমায়ূনের লেখা নিয়ে কিছু বলবো না,কেননা আমি কোন সমালোচক নয়।
বেশ কিছুদিন ধরে শঙ্খনীল কারাগার, উপন্যাসটি পড়ছিলাম কিন্তু কাজের জন্য আগাতে পারছিলাম না,অবশেষে শেষ করলাম।
আব্বুর মত আমার চোখ দিয়ে অশ্রু নির্গত হয়েছে তবে শুধু রাবেয়ার জন্য নয় অনেক কিছুর জন্যে।আসলে একজন লেখক তখনই সফল হয়,যখন তার লেখা আপনার হৃদয় -মন কে স্পর্শ করে।
দিন শেষে আমরা সবাই একা,রাতে যখন বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়া হয় তখন উপন্যাসের ন্যারেটরের মত আমরা ও একাকী হয়ে পড়ি।
Profile Image for Sakib A. Jami.
334 reviews36 followers
August 31, 2025
বেশ কয়েকদিন আগে ফেসবুকে স্ক্রল করতে গিয়ে একটা লেখা চোখে পড়ে। যেখানে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর আবির্ভাব সম্পর্কে বলা হয়েছিল। এখানে একটা শিল্প-কারখানার কথা চিন্তা করা যাক। এতে দুইপক্ষ থাকে। এক. মালিকপক্ষ, দুই. শ্রমিকপক্ষ। মালিকপক্ষ ধনী আর শ্রমকপক্ষ গরীব। এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকাটা জরুরি। আর যারা সমন্বয় করে, তাদেরকে কেতাবি ভাষায় কেরানি বলে। ম্যানেজার থেকে শুরু করে যারা অফিসের কাজগুলো করে, তাদের মধ্য দিয়েই মালিক আর শ্রমিকে��� মধ্যে সংযোগ। এই যে মধ্যস্থতাকারী, যারা ঠিক বড়লোক না, আবার গরীবও না; তারাই মূলত মধ্যবিত্ত। তাদের জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই মধ্যবিত্ত শ্রেনীর ধারণার জন্ম নেয়।

উপরে এতক্ষণ যা বললাম, এর সাথে “শঙ্খনীল কারাগার”-এর কোনো সংযোগ নেই। কথাগুলো বললাম এই কারণে, এতে করে হুমায়ূন আহমেদ ও তার লেখাকে বুঝতে সুবিধা হবে। হুমায়ূন আহমেদ “শঙ্খনীল কারাগার” লিখেছেন একটি গল্প পড়ার পর। যে গল্প তাকে মধ্যবিত্তদের নিয়ে লিখতে উৎসাহিত করেছে। নিজের প্রকাশিত দ্বিতীয় বই হলেও বইটি তিনি প্রথমেই লিখেছেন। লিখেছেন মধ্যবিত্তদের গল্প। তখন তিনি জানতেন না, এই মধ্যবিত্তদের জীবন নিয়ে লিখতে গিয়ে তিনি তাদের মাঝেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাবেন।

খেয়াল করলে দেখা যায়, তখনকার সমসাময়িক বা এর আগের লেখকদের লেখায় হয় গরীব নাহয় ধনীদের নিয়ে লেখা হতো। মধ্যবিত্ত শ্রেণী থাকলেও তাদের পরিপূর্ণ বিকাশ হতো না। হুমায়ূন আহমেদ সেই ধারা বদলে দিয়েছেন। তিনি এমন এক শ্রেণীকে তার লেখায় জীবন্ত করেছেন, তারা প্রবল পরিশ্রমে দিন পার করার একটু মানসিক প্রশান্তির জন্য বই হাতে নিয়ে বসে। পড়তে গিয়ে তারা খেয়াল করল, এ যেন তাদের গল্প। তাদের জীবনের গতিপথ, দুর্দশা, হাসি-আনন্দ, দুঃখ-কষ্টের এক অদ্ভুত মিশেল। তাই হুমায়ূন আহমেদ হয়ে উঠলেন প্রবল জনপ্রিয় ও কাছের একজন।

“শঙ্খনীল কারাগার” তেমন ধারারই একটা গল্প। উত্তম পুরুষ বর্ণিত এই গল্পের মূল চরিত্র খোকা। তার পরিবারকে কেন্দ্র করেই যেন গল্প পরিচালিত হয়েছে। তখনকার সময়ে সন্তান নেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি ছিল। সে হিসেবে খোকার ভাইবোনের সংখ্যা অনেক। সবাই সমানভাবে গুরুত্ব পায় না। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারে সবাইকে সমানভাবে লালনপালন করা যায় না। হয়তো ভালোবাসা থাকে, কিন্তু অর্থের যোগান দেওয়া কষ্টকর হয়ে যায়।

খোকার মা বড় পরিবারের সন্তান ছিলেন। কিন্তু খোকার বাবাকে পছন্দ করে বেরিয়ে এসেছিলেন নিজের আভিজাত্য থেকে। ভালোবাসা দূর থেকেই সুন্দর। যখন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়, তখন বোধহয় নিজের ভাগ্যের দোষ দিতে হয়। খোকার মা কি নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত? যে রাজকীয় জীবন ছেড়ে কষ্টের বাস্তবতা কি মেনে নিতে পেরেছে? নাহলে কেন মাঝেমাঝে চুপচাপ হয়ে যায়। সন্তানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এক মেয়েকে ঘরে বন্দি করে তালা মেরে দেয়। ছোটো ছেলেকে ঘরের বাইরে বের করে দেয়।

খোকারা দুই ভাই, তিন বোন। বড় বোন রাবেয়া, তারপর খোকা। এরপর রুনু, ঝুনু, মন্টু। নতুন আরেকজনের আগমনের বার্তা দিতে গিয়ে মায়ের জীবনের নিঃশ্বাসও বিলীন হয়ে গেল। মানুষের জন্ম নেওয়াতে যত আয়োজন, মৃ ত্যু হয় তারচেয়েও নীরবে। এখানে কোনো আয়োজন নেই, শুধু বিষাদ। তবুও যখন মনের মধ্যে শঙ্কা কাজ করে এই বিষাদের রেশও হারিয়ে যায় দ্রুত।

পরিবারে নতুন অতিথি এসেছে। সকলের আদরের ছোটবোন নিনু। একজন শিশুকে পালনের দায়িত্ব কে নেবে? যখন ভবিষ্যত সময়ের উৎকণ্ঠা ঘিরে ধরে তখন আর শোক প্রকাশের অবকাশ থাকে না। মায়ের চলে যাওয়াতে পরিবারের হাল কে ধরবে, কে তাদের সদ্য জন্ম নেওয়া ছোট বোনকে লালন করবে; এই চিন্তা যখন ঘিরে ধরে তখন শোকের সেই গম্ভীর অভিব্যক্তি দুর হয়ে যায়। শুধু নিজেদের নিয়ে বসবাস। যদিও সময় অসময়ে মাকে মনে পড়বেই। কিন্তু সময় আর মানব জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। চলমান এ যাত্রায় সকল প্রকার শোক পেছনে হারিয়ে যায়।

হুমায়ূন আহমেদের লেখা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি নন্দিত নরকে কিংবা শঙ্খনীল কারাগারের মতো বইয়ের মধ্য দিয়ে জানান দিয়েছিলেন, একজন লেখক আসছেন। যে মধ্যবিত্ত সমাজে আটকে পড়া জীবনগুলোর গভীরতা তুলে আনবেন। মধ্যবিত্ত জীবনের সংগ্রাম, হাসি আনন্দ, বেদনার গভীরতা, মনের মধ্যে সংকোচের যে আবাস; সবকিছুকে এত দারুণভাবে কে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন?

একটা প্রবাদ আছে, উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে। যিনি মধ্যম, তিনি ছিলেন তফাতে।

হুমায়ূন আহমেদের এই গল্পগুলো যেন সেই প্রবাদেরই প্রতিফলন। মধ্যবিত্ত শ্রেণী কখনও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না। অনেক কিছুই চাওয়ার থাকে, কিন্তু চাইতে পারে না। ভালোবাসার কথা বলতে না পারার কারণে প্রিয় মানুষটা অন্যের ঘরণী হয়ে ওঠে। জীবনের অনেক চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে মেলবন্ধন, তার ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় না। অপ্রাপ্তির খাতায় যোগ হয় অনেক কিছুই। সেসব নিয়েও মধ্যবিত্ত শ্রেণী বেঁচে থাকে। হাসিতে মাতিয়ে রাখে সবকিছু। কিন্তু জীবনের গভীরে যে নিজে একটু একটু করে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, তা হয়তো নিজেরাও বুঝে না। কিংবা পরিবার বা আত্মীয়ের কেউ যে নিজেকে প্রতিনিয়ত হারিয়ে ফেলছে, তার অনুভূতিও অনুভূত হয় না। যখন হয়, বড্ড দেরি হয়ে যায়।

“শঙ্খনীল কারাগার” খুব আহামরি গল্প না। তবুও আমার কাছে অসাধারণ। এক অসাধারণ গল্প লুকিয়ে আছে লেখকের লেখাতে। এমন অসাধারণ কিছু জড়িয়ে মানুষের জীবনে। যে মানসিক অভিব্যক্তি এখানে ফুটে উঠেছে, তার গভীরে প্রবেশ করতে না পারলে এ বই উপলব্ধি করা যাবে না। প্রতিটি মানুষের মনস্তত্ত্ব ভিন্ন ছাঁচে গড়া। আর এই অনুভূতি গড়তে গিয়ে হারিয়ে ফেলে জীবনের কতশত প্রহর! লাজলজ্জা, দুঃখ, কষ্ট, হাসি, আনন্দ, সবকিছুকে সাথে নিয়ে মানুষের মনস্তত্ত্ব যেন ভিন্ন অভিব্যক্তি প্রদর্শন করে।

একসময় মানুষ আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সে একা। একার এই গল্পে আর কেউ থাকে না। পরিবারের মানুষগুলোও কোনো এক সময় দূরত্ব বাড়িয়ে চলে। সময় এই দূরত্বে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখে। কিন্তু তবুও শিকড় পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া যায় কি? কোনো এক সময় শিকড়ে টান পড়বে, তখন কি তাকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে?

পরিশেষে, আমার এই লেখাটা ঠিক রিভিউ হয়েছে কি না বলা যায় না। বরং বলা চলে আমার মনের অভিব্যক্তি। খোকা, রাবেয়া, রুনু, ঝুনুদের গল্প; তাদের পরিণত হওয়ার সময়গুলো বেশ ভালোভাবেই অনুভব করেছি। আর বুঝেছি, এই এক জীবন কত রং বদলায়! জীবনের স্রোতের প্রবাহমান যাত্রায় কতবার ভেসে যায় অজানায়! এ-কূল, ও-কূলে ধাক্কা খেয়ে কোনো এক সংসার নামের কারাগারে বন্দী হতে হয়। কিন্তু মনটা কি এভাবে বন্দী হতে পারে কখনও?

▪️বই : শঙ্খনীল কারাগার
▪️লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
▪️ব্যক্তিগত রেটিং : ৪/৫
Profile Image for শিবলী  সাইক.
17 reviews3 followers
January 23, 2021
প্রারম্ভিকা :
বাংলা ভাষায় এ পর্যন্ত বহু উপন্যাস রচিত হয়েছে। কিন্তু সব উপন্যাস সম্পর্কে আমার গভীর ধারণা নেই আর আমি সমালোচকও নই। তবুও, নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের লেখা "শঙ্খনীল কারাগার" উপন্যাসটি পড়ে আমি বেদনা ও বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি। আমার নিকটে মনে হয়েছে এই উপন্যাসের গঠনরীতি, বর্ণনা, ঐক্যবোধ, জীবন দর্শন, চরিত্র সৃষ্টি, লঘুরস প্রভৃতি যথার্থই শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার।

লেখক পরিচিত :
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ "নন্দিত নরকে" উপন্যাসের মাধ্যমে সাহিত্য জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর লেখা উপন্যাসগুলোতে উঠে এসেছে মধ্যবিত্ত পরিবারের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি ইত্যাদি। নগরজীবনের পটভূমিতেও রয়েছে তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস। উপন্যাসের পাশাপাশি গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনী, রূপকথা, শিশুতোষ রচনা, কল্পবিজ্ঞানসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ করেছেন।

উপন্যাসের নামকরণ :
শঙ্খ শব্দের আভিধানিক অর্থ শামুকজাতীয় এক ধরণের সামুদ্রিক প্রাণী। তবে, আমার মনে হয়েছে লেখক "শঙ্খ" শব্দটি "মায়া" অর্থে এই উপন্যাসের নামকরণ করেছেন। এটা এমন একটি মায়ার কারাগার, যেটা দুর্ভেদ্য। এই উপন্যাসে লেখক এমনই কাহিনী চিত্রায়িত করেছেন বলে কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই নামকরণ করা হয়েছে।
তবে, "শঙ্খনীল কারাগার" মূলত রফিক কায়সার নামের জনৈক কবির লেখা একটি কবিতার নাম। উক্ত কবির অনুমতি নিয়েই লেখক হুমায়ূন আহমেদ নামটি পুনরায় ব্যবহার করেছেন এই উপন্যাসে। ��টি লেখক উল্লেখ করেছেন এই উপন্যাসের শেষে।

বই রচনার নেপথ্যে :
সোমেন চন্দ নামের জনৈক লেখক "ইঁদুর" নামের একটি ছোটগল্প গল্প রচনা করেছিলেন। এই গল্পে নিম্ন মধ্যবিত্তদের জীবনের করুণ চিত্র তিনি তুলে ধরেছিলেন। এই গল্পটি পড়ার পর লেখক হুমায়ূন আহমেদ নিম্নমধ্যবিত্তদের নিয়ে গল্প লেখার ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি তাঁর ইচ্ছা পূরণ করার জন্য "নন্দিত নরকে", "শঙ্খনীল কারাগার" ও "মনসুবিজন" নামে তিনটি আলাদা আলাদা উপন্যাস প্রায় একই সঙ্গে লিখে ফেলেন। কিন্তু লেখকের প্রথম গ্রন্থ "নন্দিত নরকে" উপন্যাসটি মুদ্রিত হওয়ার ছয় মাস পর "শঙ্খনীল কারাগার" বইটি মুদ্রিত করা হয়।
"নন্দিত নরকে" ও "শঙ্খনীল কারাগার" উপন্যাস দুটি নিম্নমধ্যবিত্তদের গল্প এবং দুটি উপন্যাসই উত্তম পুরুষে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে, দুটি উপন্যাসে লেখক চরিত্রদের প্রায় সবগুলোর নাম একই রেখেছেন। এর কারণ হিসেবে লেখক উল্লেখ করেছেন, তিনি নতুন কোনো নাম খুঁজে পাননি এবং এই নামগুলোর প্রতি লেখকের ভয়ানক দুর্বলতা রয়েছে।

উপন্যাসের সময়কাল:
বর্তমানে আমরা একবিংশ শতাব্দীতে বসবাস করছি। বিজ্ঞানের অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির সাথে আমরা পরিচিত। কিন্তু লেখক এই উপন্যাসটি বিংশ শতাব্দীর এমন এক সময়ে রচনা করেছিলেন, যখন এতসব আধুনিক প্রযুক্তি সহজলভ্য ছিল না। সেই সময়ের চিত্র ফুটে উঠেছে উপন্যাসে। এই উপন্যাসে শুধু টেলিফোন ছাড়া যোগাযোগের জন্য দেখা যায়নি কোনো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। কখনো কখনো ব্যক্তিগত যোগাযোগের প্রয়োজনে চিঠির আদান-প্রদানও করতে দেখা গেছে, যেটা বর্তমান যুগের জন্য বিরল ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফ্ল্যাপে লেখা কথা :
কোনো কোনো রাতে অপূর্ব জোছনা হয়। সারা ঘর নরম আলোয় ভাসতে থাকে। ভাবি, একা একা বেড়ালে বেশ হতো। আবার চাদর মুড়ি দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে ফেলি। যেন বাইরের উথাল পাথাল চাঁদের আলোর সঙ্গে আমার কোনো যোগ নেই।
মাঝে মাঝে বৃষ্টি নামে। একঘেয়ে কান্নার সুরের মতো সে শব্দ।
আমি কান পেতে শুনি। বাতাসে জাম গাছের পাতার সর সর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হা হা করে উঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায় কী বিপুল বিষন্নতাই না অনুভব করি।
জানালার ওপাশের অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে। একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ডুবছি।


উপন্যাসের কাহিনী সম্পর্কে সম্যক ধারণা :
এই উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছে মা শিরিন এবং তার সন্তানেরা যথাক্রমে রাবেয়া, খোকা, রুনু, ঝুনু, মন্টু আর নিনু। উপন্যাসে রয়েছে এদের বাবাও।

মায়ার টান বড় সাংঘাতিক। এই টান উপেক্ষা করে যা ইচ্ছা তাই করা যায় না। আবার, এই টান যখন বিপরীত অনুভূতিতে পরিণত হয়, তখন সেটা অত্যধিক নির্মম হয়ে ওঠে। যেমনটা নির্মম হয়ে উঠেছে "শঙ্খনীল কারাগার" উপন্যাসে মাতৃ চরিত্রের প্রতিনিধি শিরিনের ক্ষেত্রে। তিনি তেইশ বছর ধরে সুখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে একনিষ্ঠভাবে সংসার করেছেন, কখনো বাপের বাড়ি যাননি। ছোটবেলায় গান গাইতেন, কিন্তু বিয়ের পর গান ছেড়ে দিয়েছেন। সন্তানদের কেউ তাকে কখনো গান গাইতে শোনেনি। তিনি খুবই কম হাসতেন অথচ একসময় তিনি সবসময় থাকতেন হাসিখুশি। কেন তার এই বিশাল পরিবর্তন? এর পিছনে রয়েছে এক বেদনা-বিধুর করুণ ইতিহাস।

অনেক সময় এমন মনে হয়, কেউ না থাকলে হয়তো পৃথিবী থমকে দাঁড়াবে। জীবনে হয়তো আর সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হল, কারো জন্য কোনোকিছু থেমে থাকে না। জীবন চলতে থাকে প্রবহমান নদীর মতোই। এই উপন্যাসের কোনো একটি স্থানে মনে হতে পারে, এই বুঝি সবাই অসাড় হয়ে পড়ল। কিন্তু না, কাহিনী চলতে থাকবে চলমান গতিতে।

এই উপন্যাসে আরও রয়েছে খোকার প্রতি তার খালাতো বোন কিটকির হৃদয়ের টান। কিন্তু মানুষের হৃদয়ের অলিগলি সবসময় একরকম থাকে না। কখনো চলতে চলতে পরিবর্তন হয়। সেটা অনুধাবন করতে পারি কিটকির আর খোকার ঘটনাতে।

এছাড়া, উপন্যাসের অনেকটা স্থান জুড়ে দখল করে আছে রাবেয়া। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে পাঠক সাক্ষী হবে রাবেয়ার জীবনের এক অদ্ভুত ঘটনার সাথে, যা পাঠককে বিস্ময়ে-বেদনায় বিহ্বল করে দেবে। সে যখন স্কুলে পড়তো তখন মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রলোক তাকে ডেকে অনেক আদর করত, তাকে চকলেট কিনে দিত, মিষ্টি খাওয়াতো। প্রতিদিন তাকে সেই অপরিচিত ভদ্রলোকটি তার বিলাসবহুল গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দিত। কিন্তু লোকটি এমন কেনো করত? নিশ্চয় কোনো বদ মতলব ছিল। কিন্তু না, তার কোনো বদ মতলব নেই। এর নেপথ্যের কারণ জানলে পাঠক অবশ্যই হতচকিত ও আবেগে আপ্লুত হবেন এবং এই নেপথ্যের ঘটনা জানতে যেতে হবে উপন্যাসের শেষ পর্যন্ত।

চরিত্র বিশ্লেষণ:
এই উপন্যাসে চরিত্র সৃষ্টিতে লেখক হুমায়ূন আহমেদ অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এই উপন্যাসের প্রধান কিছু চরিত্র নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।

→ শিরিন:- তিনি বিয়ের পর কখনো বাপের বাড়িতে যাননি। শ্বশুরবাড়ির কারাগারের মধ্যেই কাটিয়ে দিয়েছেন দীর্ঘ তেইশটি বছর। তিনি সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। ছেলেমেয়ে কাউকে তিনি হৃদয় উজাড় করে অবারিত স্নেহ ঢেলে দেননি। তবে, বড় মেয়ে রাবেয়াকে অন্যরকম সুদৃষ্টিতে দেখতেন তিনি। এর অবশ্য কারণও আছে।

→ রাবেয়া:- বাবা মায়ের বড় মেয়ে সে। অন্য সব ভাই-বোন ফর্সা হলেও তার গায়ের রং কালো। এজন্য তার বিষণ্ণতা কাজ করত সবসময়। তবে সে ছিল অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ। তার খোকা ভাইটাকে সবচেয়ে বেশি স্নেহ করত সে। তার নজির পাওয়া যাবে উপন্যাসের শেষে।

→ খোকা:- মা-বাবার বড় ছেলে। এজন্য তার অনেক দায়িত্ব। সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করে, অবহেলা করে না। পড়াশোনা শেষ করার পর শিক্ষাকতাকে পেশা হিসেবে বেঁছে নেয় সে।

→ কিটকি:- সে হল খোকার খালাতো বোন। কিন্তু খোকার সাথে কিটকির সম্পর্কটা ঠিক ভাইবোনের মত ছিল না। কিটকির ছিল খোকার প্রতি টান। কিন্তু সে যখন দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমায়, তারপর যেন সে বদলে যেতে থাকে।

→ খোকার বাবা:- তিনি ভাবালুতায় ভাসা একজন মানুষ। সারাদিন শুধু পত্রিকা পড়েন। পত্রিকার সবকটা খবর খুটিয়ে খুটিয়ে পড়েন। এমনকি বিজ্ঞাপন সহ। তিনি রাজনীতি নিয়ে এত বেশি ভাবতেন যে, পাঁচ বছর পর রাজনীতির অবস্থা কী হতে পারে, তা তিনি বলে দিতে পারেন।

লঘুরস :
উপন্যাসটি বেদনাকাতর কাহিনী উপজীব্য করে লেখা হলেও, সবসময় যে উপন্যাসে বিরস বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা নয়। রয়েছে সামান্য লঘুরসও।
কিটকি তখন অনেক ছোট ছিল, একেবারে শিশু। সে খেয়ালের বশে তার খালা অর্থাৎ খোকার মায়ের কানে কানে বলে ফেলে সে যখন বড় হবে, তার সাথে যেন খোকার বিয়ে দেওয়া হয়। যদিও কিটকি তার খালাকে কথাটি বলার আগে কসম করিয়ে নেয়, যেন কথাটি কাউকে না বলা হয়। তবুও এই ঘটনাটির জন্য তাকে ইতস্ততবোধ করতে হয়।
এই ঘটনাটি লেখক রসাত্মকভাবে উপস্থাপন করেছেন। এছাড়াও উপন্যাসটির কয়েক স্থানে উঠে এসেছে আরও কিছু হাস্যরসাত্মক কথা।

প্রচ্ছদ :
এই বইটির অপূর্ব সুন্দর শৈল্পিক প্রচ্ছদ নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। বইটির নাম ও কাহিনীর সাথে মিল রেখে নীল রংয়ে বেদনার্ত একটি চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই শৈল্পিক প্রচ্ছদটি অঙ্কন করেছেন বাংলাদেশের প্রয়াত প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি তেল রঙ, জল রঙ, কালি-কলম, মোমরং, রেশমছাপ ইত্যাদি নানা মাধ্যমে কাজ করতে সুদক্ষ ছিলেন। তাঁর চিত্রাঙ্কনের প্রবণতা জ্যামিতিক আকৃতির অনুষঙ্গ। বর্ণিল পটভূমিতে মোটাদাগের নকশা তাঁর প্রধানতম অঙ্কনশৈলী। "শঙ্খনীল কারাগার" বইটিতেও আমরা দেখতে পাই তাঁর সে বৈশিষ্ট্য।

উপন্যাসটি সম্পর্কে আমার প্রতিক্রিয়া :
মানুষের জীবন প্রবহমান নদীর মত। এক জীবনে কত আনন্দ বেদনার ঘটনা ঘটে, তার ইয়াত্তা নেই। সেইসব ঘটনা যিনি বাস্তবসম্মত ভাবে উপন্যাসের পাতায় তুলে ধরতে পারেন, তিনি হন সফল লেখক। আমার মতে লেখক হুমায়ূন আহমেদ এদিক দিয়ে সম্পূর্ণ সার্থক। তাঁর "শঙ্খনীল কারাগার" উপন্যাসটি পড়তে পড়তে আমার যেন নিজের জীবনের বহু স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। উপন্যাসে রাবেয়া ও খোকাদের মা শিরিন তেইশ বছর সংসার করেছে কিন্তু কখনো বাপের বাড়িতে যাননি। খোকার প্রতি বড়বোন রাবেয়ার যে মাতৃরূপ স্নেহের প্রকাশ ঘটা, এসব চিত্র বাস্তবেও প্রতিফলিত হয় কারো না কারো জীবনে। আমার জীবনেও রয়েছে এমন বেদনা-বিধুর চিত্র। তাই, উপন্যাসটি পড়তে পড়তে আবিষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম আমি।

উপসংহার:
পরিশেষে বলা যায় "শঙ্খনীল কারাগার" উপন্যাসটি মধ্যবিত্ত পরিবারের বেদনাকাতর জীবনকে উপজীব্য করে লেখা একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসে একদিকে ফুটে উঠেছে এক বিরাট জীবন-জিজ্ঞাসা, অন্যদিকে মুক্তির স্বপ্ন। উপন্যাসটির মর্মমূলে এক গভীর ও কোমল ট্রাজেডির সুর ঝংকৃত হয়ে উঠেছে, যা পাঠকের হৃদয়কে মলিন করে দিতে পারে।
Profile Image for Tawheeda Rufah Nilima.
294 reviews58 followers
December 28, 2020
"দিতে পারো একশো ফানুস এনে?
আজন্ম সলজ্জ সাধ একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।"
-শঙ্খনীল কারাগার
-হুমায়ূন আহমেদ।
"শঙ্খনীল কারাগার" একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প।সেই পরিবারের সদস্যদের একে অপরের প্রতি আকাশসমান ভালোবাসা আর গভীরতম মায়ার গল্প।সেই পরিবারের সুখ দুঃখের গল্প,ভাঙা গড়ার গল্প।
ছোট্ট একটা বই,কিন্তু পড়ার সময় মনে হয় লেখক বুঝি প্রতিটি পাতায় আকাশসমান ভালোবাসা আর গভীর থেকে গভীরতম মায়া লেপে দিয়েছেন।
একজন লেখকের মাথায় লেখালেখির প্রথম জীবনে এরকম গল্প কিভাবে আসে?মানে কিভাবে?
এতো সুন্দর!এতো বেশি সুন্দর।
লেখক কি করে মধ্যবিত্ত পরিবারের কথা এতো সহজ আর সাবলীল ভাবে তুলে ধরেছেন?
বারবার শুধু একটি কথা ই বলতে ইচ্ছে হয় কি ভীষণ মায়া আর ভালোবাসার একটা বই।প্রতিটা লাইন আবেগ আর মায়া দিয়ে মুড়ানো।
প্রত্যেকটা চরিত্রের আড়াল করা দুঃখ কষ্ট গুলো চোখে ধরা পড়ে।গলা ধরে আসে।খুব কান্না পায়।বইটা এতো অদ্ভুত কেনো?এতো মন খারাপ করে দেয় কিন্তু তাও এতোও বেশি সুন্দর।
রাবেয়া,খোকা,রুনু,ঝুনু,মন্টু,নিনু প্রতিটা চরিত্রই একটা ঘোরে ফেলে দেয়।
কি মোহ লাগানো গল্প।
এই বই পড়তে গিয়ে মোহগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম।একদম মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়েছিলাম।
কখনো কি এমন হয় যে একটি বই একই সাথে খুব মন খারাপ করা,আবার সুখপাঠ্য ও?
হ্যা,"শঙ্খনীল কারাগার" সেরকম ই একটি বই।
"কিছু কিছু কান্না আছে যা শুনলেই কষ্টটা সম্বন্ধে শুধু যে একটা ধারণাই হয় তাই না,ঠিক সেই পরিমাণ কষ্ট নিজেরও হতে থাকে"।
এই বইয়ে প্রতিটা চরিত্রের কান্না মনে হয়েছে যেনো নিজের কানে শুনতে পেয়েছি।এতো বেশি কষ্ট হয়েছে।
" সমুদ্রের মতো এত স্নেহ কী করে সে ধারণ করেছে কে জানে?"-রাবেয়াকে নিয়ে খোকার এই কথাটি অনেক বেশি সত্যি।কি করে রাবেয়া পারে সমুদ্রসমান স্নেহ নিজের হদয়ে ধারণ করতে?
আর খোকাকে লেখা রাবেয়ার সেই চিঠি।সেই চিঠি নিয়ে কি বলবো।চিঠিটা বারবার পড়তে মন চায়।
চিঠিতে রাবেয়া বলে "প্রচুর দুঃখ আছে আমার।এত প্রচুর যে কোনো দিন কেউ জানতেও পারবে না।"-এই লাইনটি পড়ার সাথে সাথেই গলা ধরে আসে।কান্না পায়।মনে হয়,আমি জানি তার দুঃখের কথা।
ছোট্ট একটা বই,কিন্তু আকাশসম,সমুদ্রসম আবেগ নিয়ে লিখা।ভীষণ ভালোবাসা আর মায়া দিয়ে লিখা।অনেক বেশি মন খারাপ করা অদ্ভুত সুন্দর একটি বই,যতক্ষণ তুমি এই বই পড়বে ততক্ষণ ই
অদৃশ্য এক মায়া আর ভালোবাসা তোমাকে আচ্ছন্ন করে রাখবে এবং মন খারাপ করিয়ে দিবে।তারপরও তোমার মনে হবে সুখপাঠ্য একটি বই কারণ খুব বেশি সুন্দর করে হুমায়ূন আহমেদ স্যার মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের সুখ-দুঃখ আর ভাঙা-গড়ার গল্প তুলে ধরেছে।নিঃসন্দেহে " শঙ্খনীল কারাগার" হুমায়ূন আহমেদ এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটা বই।💚
Profile Image for Melody.
86 reviews21 followers
December 12, 2016
বইটা কেন আগে পড়লাম না সেটা নিয়ে বিস্তর ভাবনা-চিন্তা চলছে। Review পরে দেই, ঘোর কাটে নি এখনও।

সময় হলোঃ
রাবেয়া নিঃসন্দেহে আমার খুব পছন্দের চরিত্রগুলোর মধ্যে থাকবে। তার মায়ের বর্ণনা যখন পড়ছিলাম, খারাপ লাগছিল বেশ। ভালোবাসার আকুতি যে কী জিনিস সেটা বাচ্চা-কাচ্চাগুলোর কথা পড়ে বুঝেছি ভালোমত।
যদিও সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে রাবেয়া। ^_^
Profile Image for Mehzabin Hasan Hridy.
65 reviews
Read
May 20, 2021
"নন্দিত নরকে" আর "শঙ্খনীল কারাগার"-এর নাম শুনেছি খুব। প্রায়ই দুটোর নাম একসাথে উঠে আসে। দুটি উপন্যাসে চরিত্রগুলোর নাম এক, দুটোই নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের কাহিনী আর দুটোই সমাপ্ত হয়েছে অস্পষ্টতা রেখে। (অন্তত আমার কাছে!)

বিরক্তিকর রিডার্স-ব্লক থেকে মুক্তিলাভ করে গত এক-দেড়মাসে বেশ ক'টা বই পড়া হয়েছে টানা। আজ পড়তে পড়তে টিস্যু পেপার ভেজানোর অভিজ্ঞতাকে হঠাৎ কেমন নতুন মনে হলো নিজের কাছেই। স্পয়লার হবে?...তবু বলি, রুনু যখন মারা যাচ্ছিলো, রুনু যখন বাবার কোলে যেতে চাইছিলো- তখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল! খুউব!
Profile Image for Tasnim Dewan  Orin.
159 reviews79 followers
January 19, 2021
বইটি পড়ে গত কয়েকদিন যাবৎ মন খারাপ। খুব বাজে দিন যাচ্ছে তার মধ্যে এই বইটি আমাকে আরো মনে করে দিচ্ছে এই খারাপ যাওয়া অনেকের জীবনে দ্রুব। যাই হোক, লেখক লিখা শ্রেষ্ঠ বই আমার মতে এটা। এই বই পড়লেন আর মন খারাপ লাগবে না এমন হতেই পারে না। এতদিন কেন এই বইটি পড়ি নাই জানি না।

আমাদের এই সমাজে এখন আছে মন্তু, রুনু, রাহেলা আর খোকা। তাদের জীবন একেকটা শঙ্খনীল কারাগার।

৫ তারার বেশি দেওয়া গেলে তাই দিতাম।
Displaying 1 - 30 of 349 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.