Jump to ratings and reviews
Rate this book

আসমান

Rate this book
“আসমান" বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ

আমেরিকার কুখ্যাত জেল গুয়ানতানামাে বে থেকে বিনা বিচারে ১২ বছর জেল খেটে মুক্তি পেয়েছে এক বাংলাদেশি। ওয়াশিংটন পােস্টের এই খবরে চমকে গেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে এমন সন্ত্রাসীর দায়িত্ব বাংলাদেশ নেবে না। আমেরিকান আর্মির কার্গো প্লেন তাকে ফেলে গেছে আলবেনিয়ার তিরানা বিমান বন্দরে । ট্রাভেল ডকুমেন্টহীন দেশহীন মানুষটাকে পৃথিবীর কোনাে দেশ রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় না। রিফিউজির স্ট্যাটাস নিয়ে তাকে থাকতে হবে রেডক্রসের শেল্টারে।

মানুষটা এখন কোথায় যাবে?
চেনা সব দরজা বন্ধ হয়ে গেলে, একটা অচেনা দরজা খুলে যায়, জীবন বন্দি হয়ে গেলে সেটা জীবনকেও ছাপিয়ে যায়, সেই জীবনের গল্প জীবনের চেয়েও বড় হয়ে যায়...
The Fiction Based on Fact এই উপন্যাসের স্থান সত্য, কাল সত্য, ইতিহাস সত্য, কাল্পনিক শুধু এর চরিত্রগুলাে।


বইটির প্রথম অংশের কিছু কথাঃ

সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬ ‘হৃদয় আল্লাহর ঘর। মানুষের হৃদয়টা তৈরি করা হয়েছে এই জন্য যে সেখানে
শুধুমাত্র আল্লাহ থাকবেন। সে ঘরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু ঢুকালেই শুরু হবে তােমার জাগতিক অশান্তি। | ধানমন্ডি আট নম্বর রােডের জামে মসজিদের বৃদ্ধ পেশ ইমাম মাওলানা ইসহাক আব্দুর রহমান কথাগুলাে বললেন ধীরস্থির আর অনুচ্চ শব্দে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আছরের আজান হবে, তিনি প্রস্তুত হয়ে বসে আছেন। তার নজর একটি আরবি কিতাবের দিকে। মাথার ওপরে ঘুরছে পুরাতন ফ্যান। সেই ফ্যানের বাতাসে সাদা কাশফুলের মতাে তিরতির করে কাঁপছে তার দীর্ঘ দাড়ি। সেপ্টেম্বরের শেষ দুপুর, প্রায় নীরব ধানমন্ডির রাস্তা দিয়ে বিক্ষিপ্ত বেল বাজিয়ে চলে যাচ্ছে একটা রিকশা। এরপর গুমােট নীরবতা, যেটা ধীরে ধীরে অস্থির করে তুলল ওমার রিজওয়ানকে। শুধুমাত্র নীরবতাটাকে ভেঙে দেওয়ার জন্য ওমার প্রশ্ন করল | ‘আমার মনে অশান্তি আপনি কীভাবে বুঝলেন?

এই প্রশ্নে বৃদ্ধ ইমামের চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ল একটা সহে হাসির দ্যুতি। ‘বেশ কিছুদিন ধরে আমি তােমাকে মসজিদের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখছি কিন্তু তােমাকে জামাতের নামাজে দেখি না।

‘আর তাতেই আপনার মনে হলাে আমার মনে অশান্তি?
এই বেপরােয়া তরুণটির সাথে কথা বলতে কেমন যেন ভালাে লাগছে ইমাম সাহেবের। তরুণটি তাকে একবারও হুজুর সম্বােধন করেনি। তাই একটু মজার ছলে বললেন | ‘তিন ধরনের লােক মসজিদের আশেপাশে ঘুরঘুর করে। ফকির, জুতা চোর আর মজনু। তুমি হলে মজনু শ্রেণির লােক।
এই ইমাম লােকটির মধ্যে পিরালী কিংবা বুজুর্গি দেখানাের কোনাে প্রচেষ্টা নেই, কথা বলছেন খুব সাধারণ কিন্তু বিচক্ষণ মানুষের মতাে ইমামের গাম্ভীর্য।

সারাংশ

ওমার- হৃদয়ঘটিত কারণে যে যুবক হতাশার অতল সমুদ্রে হারিয়ে গিয়ে মজে যায় নেশার ধ্বংসাত্মক দুনিয়ায়। তার জীবনে ইসলাম কেমন করে পরিবর্তন আনে। হয়ে ওঠে ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ঢাকার বিশেষ কিছু কুখ্যাত অলিগলি যার নখদর্পণে সে কেন আফগানিস্তানের যুদ্ধের মাঠে। যার খেসারত দিতে হয় ১২ বছর কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে বিনা বিচারে জেল খেটে- অকথ্য নির্যাতন সহ্য করে। কিন্তু পরম করুণাময় কি এতই নিষ্ঠুর যে তার জীবন কে এক বিয়োগ গাঁথা হিসেবেই লিখবেন? না- তিনি পরম করুণাময়, প্রত্যেকের জন্য যিনি রেখেছেন উত্তম প্রতিদান। তাই উপন্যাসের শেষে ওমার যেন এক মুক্ত বিহঙ্গ- সে খুশি এক আসমান ভালবাসা নিয়ে। কোন অন্ধ বুলি নয়। তীক্ষ্ণ যুক্তি দিয়ে গড়া ধর্ম ইসলাম। ইসলামের দর্শন নিয়ে আমরা কমই ভাবি। উপন্যাসটি আপনাকে ভাবাবে। আছে রক সংগীতের গল্প, ঢাকার অলি গলির গল্প। এবং শেষে অপ্রত্যাশিত চমক।

156 pages, Hardcover

Published February 1, 2019

58 people are currently reading
488 people want to read

About the author

Latiful Islam Shibli

11 books83 followers
পয়লা বৈশাখের এক কাকডাকা ভোরে জন্ম নিয়েই দেখে, বাংলাদেশে চলছে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। ফুলছড়ি, বাহাদুরাবাদ ঘাটে পাকিস্তানি সেনাবাহিনির অবস্থানের ওপর যখন ইন্ডিয়ান মিগ থেকে বোমা ফেলা হচ্ছিল, তখন মুক্তিযোদ্ধা বাবার সঙ্গে বাঙ্কারে বসে শিশুটি বলছিল, 'আল্লাহ্, রক্ষা কর'—গল্পটি শিবলীর মায়ের কাছে শোনা। তখন যুদ্ধ না বুঝলেও নব্বইয়ের দশকের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের ভেতর দিয়েই তাঁর বেড়ে ওঠা। ইন্টারমিডিয়েটে পড়াকালেই স্বৈরশাসকের জেল জুলুম আর হুলিয়া মাথায় নিয়ে চলে আসেন নাটোর থেকে ঢাকায় । অভিনয়ের উপর এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স শেষে গ্রুপথিয়েটার নাট্যচক্রের সঙ্গে মঞ্চনাটকে কাজ করতে করতেই ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকেন শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমে।অভিভাবকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একদল গানপাগল তরুণ ব্যান্ড সংগীতের মাধ্যমে বাংলা গানের ধারায় যে-পরিবর্তন এনেছে, শিবলী তাদেরই অন্যতম। যুগযন্ত্রণার ক্ষ্যাপামো মজ্জাগত বলেই প্রথা ভাঙার যুদ্ধে শিবলী হয়ে ওঠেন আপাদমস্তক 'রক'। আধুনিক জীবনযন্ত্রণাগ্রস্ত তারুণ্যের ভাষাকে শিবলী উপস্থাপন করেছেন অত্যন্ত সহজসরল 'রক' এর ভাষায়। তাঁর সাফল্য এখানেই । তাই অল্প সময়ের মধ্যেই শিবলী পরিণত হয়েছেন এদেশের ব্যান্ড সংগীতজগতের কিংবদন্তি গীতিকবিতে । শিবলীর লেখা (প্রায় ৩০০) জনপ্রিয় গানের মধ্যে কয়েকটি: জেল থেকে বলছি | কথা-সুর: শিবলী, ফিলিংস /নগরবাউল তুমি আমার প্রথম সকাল | তপন চৌধুরী-শাকিলা জাফর কষ্ট পেতে ভালবাসি | আইয়ুব বাচ্চু (এলআরবি) হাসতে দেখো, গাইতে দেখো | আইয়ুব বাচ্চু কত কষ্টে আছি | জেমস পালাবে কোথায় | জেমস একজন বিবাগি | জেমস রাজকুমারী | আইয়ুব বাচ্চু হাজার বর্ষা রাত । সোলস পলাশী প্রান্তর। মাইলস কী ভাবে কাঁদাবে তুমি (যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে) | খালিদ (চাইম) আরও অনেক অনেক গান......... 'কমপ্লিট ম্যান' খ্যাত ঝুঁটিবাঁধা সেঞ্চুরি ফেব্রিকসের দুর্দান্ত সেই মডেল শিবলী ছিলেন তাঁর সময়ের ফ্যাশন-আইকন।তিনি একজন সফল নাট্যকার। বিটিভির যুগে তাঁর লেখা প্রথম সাড়া জাগানো নাটক 'তোমার চোখে দেখি'(১৯৯৫)। আরও লিখেছেন- রাজকুমারী, হাইওয়ে টু হেভেন, গুড সিটিজেন, নুরু মিয়া দ্যা পেইন্টার, যত দূরে থাকো, বৃষ্টি আমার মা,রান বেইবি রান,আন্ডারগ্রাউণ্ড,শহরের ভিতরে শহরসেকেন্ড চান্স,স্পন্দন,মিলিয়ন ডলার বেইবি,দ্যা ব্রিফকেস।নিজের লেখা নাটক 'রাজকুমারী'তে(১৯৯৭) মির্জা গালিব চরিত্রে তাঁর অনবদ্য অভিনয় এখনও অনেকের মনে থাকার কথা।শিবলীর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো 'ইচ্ছে হলে ছুঁতে পারি তোমার অভিমান' (১৯৯৫), 'তুমি আমার কষ্টগুলো সবুজ করে দাও না'(২০১০), মাথার উপরে যে শূন্যতা তার নাম আকাশ, বুকের ভেতরে যে শূন্যতা তার নাম দীর্ঘশ্বাস'(২০১৪)।বাংলা একাডেমী প্রকাশ করেছে তাঁর 'বাংলাদেশে ব্যান্ড সংগীত আন্দোলন'(১৯৯৭) নামে ব্যান্ড সংগীতের ওপর লিখিত প্রথম এবং একমাত্র গবেষণাধর্মী প্রবন্ধগ্রন্থ।শিবলী'র কাহিনী সংলাপ এবং চিত্রনাট্যে ও গীতিকবিতায় প্রথম পূর্ণদৈঘ্য চলচ্চিত্র 'পদ্ম পাতার জল'(২০১৫)।শিবলী'র প্রথম এবং বেস্টসেলার উপন্যাস- দারবিশ (২০১৭)।স্বভাবজাত বোহেমিয়ান, ঘুরেছেন ইউরোপে সহ পৃথিবীর পথে পথে।।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
341 (51%)
4 stars
247 (37%)
3 stars
56 (8%)
2 stars
15 (2%)
1 star
5 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 166 reviews
Profile Image for Md. Al Fidah.
Author 126 books549 followers
February 22, 2019
যখন আমি ঘরে থাকি
বুকে তুলে রাখি
যখন আমি বাইরে থাকি
মাথায় তুলে রাখি,
এছাড়া আর রাখবো কোথায়?
হয় না সংকুলান
আমি তোমার একলা পাখি
তুমি আসমান।

গত দুটো মেলায় কেন যেন অ্যাণ্টিসিপেশন নিয়ে অপেক্ষায় থাকি। এর আগে কোন বিশেষ বইয়ের জন্য খুব একটা আগ্রহ করে অপেক্ষায় থাকতাম না। এখন দেখছি-মেলায় বের হওয়া বইয়ের জন্য অপেক্ষা বাড়ছে, বাড়ছে আগ্রহ।
এই বছরে তো একেবারে পাঁচ-ছয়টা বইয়ের জন্য ছিল অপেক্ষা। তাদের মধ্যে একটা লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাইয়ের আসমান।
প্রথমেই কিছু কথা বলে নেই-গত বছরের “দখল” বইটি সব দিক দিয়েই ছিল আশাহত করার মতো। লেখা, ছাপা, বানান-কোন কিছুই মন ভরেনি। আসলে মন ভরেনি বললে নিজের প্রতি অবিশ্বস্ততা করা হবে। বাজে লেগেছে।
আসমান নিয়ে তারপরেও ছিল আগ্রহ। প্রবল আগ্রহই বলা চলে, কেননা পচা শামুকে পা বারবার কাটে না। তাই লেখক যে পূর্ণদ্যমে ফিরে আসবেন, তাতেও সন্দেহ ছিল না।
গল্পের প্লটটাই যে অন্যরকম। স্বীকার করেন আর না-ই করেন, দাড়ি-টুপিঅলা মোল্লা সমাজকে আমরা কখনও মূলধারার অংশ হিসেবে মেনে নিতে পারিনি। একজন মানুষ দ্বীনের বড় বুঝ পেয়ে সুন্নতি লেবাস ধরে-এটাই আমাদের ধারণা। কিন্তু মানুষ যে সুন্নতি লেবাসের মধ্যে খুঁজে পেতে চায় দ্বীনকে, সেটা কতজন বিশ্বাস করতে চাই?
গল্পটার মূল চরিত্র ওমার। সে আপনিও হতে পারেন, আমিও হতে পারি। সম্ভবত আমাদের চারপাশে আর দশজন যুবকের মতোই তার শুরু। আচ্ছা, প্রতিটা সার্কেলে কি এমন এক বন্ধু থাকে না, প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়ে যে পা বাড়ায় অন্য কোন দিনে? যার হয়ে যায় আমূল পরিবর্তন? ওমারেরও হয়েছিল। ও পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিল ড্রাগস, মিউজিক ইত্যাদিকে। এমন ক্ষেত্রে সবার কোন-না-কোন বন্ধু থাকে যে হয়ে যায় সার্বক্ষণিক সঙ্গী। রুশোও তেমন।
এমন সময় ঘুরে যায় ওমারের জীবনের মোড়। দেখা হয় তার এক ইমামের সঙ্গে। শেষ কবে এমন “মূলধারা”-এর লেখকের বইতে এমন কোন ইমামে পেয়েছি, তা জানি না। কেমন ইমাম? যিনি সব কথা বলেন যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে, যার সব কথার মাঝে আছে চিন্তার খোরাক। সাধারণত উপন্যাসে ইমামরা হন পান খাওয়া, দাড়ি হাতানো, মেয়েদেরকে পড়াতে নিষেধ করা কোন গোঁড়া মৌলবাদী। সেখান থেকে অনেকটা সরে এসে প্রাজ্ঞ এক ইমামের চিত্র অঙ্কনের জন্য ভাইয়া ধন্যবাদ পেতেই পারেন।
প্রথম পঞ্চাশ পাতায় দর্শনের যে পাঠ লেখক পড়িয়েছেন, সেটার জন্য জীবন সম্পর্কে থাকতে হয় পরিষ্কার একটা ধারণা। হ্যাঁ, সেই ধারণা ভুল হতে পারে। কিন্তু ধারণা একটা থাকতে হবেই।
ইসলামের বেশ কয়েকটা ব্যাপার সুন্দর করে টাচ করে গিয়েছেন। আমার ভাবতে এবং বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়, মুসলমানরা এভাবেই ভাবে। এই চিন্তাতে উদ্বুদ্ধ হয়েই তারা পরিচালনা করে তাদের জীবন (যদিও সেটা আজকালের নানা ঘটনায় বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে)।
তাবলিগের প্রসঙ্গ এসেছে বইটিতে বেশ বিস্তৃত ভাবেই, ব্যক্তিগতভাবে তাবলিগের সঙ্গে এক সময় সম্পৃক্ত থাকায় ব্যাপারটা ভালোই লেগেছে। যদিও তাবলিগের আছে অনেক লেয়ার, সেটাও কেবল বইয়ে উল্লিখিত কার্যক্রমের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়; তারপরও যতটুকু এসেছে, তাতে অন্তত আমার চোখে কোন বিকৃতি ধরা পড়েনি।
পরবর্তী পাতাগুলোতে আমরা দেখতে পাই নতুন এক ওমারকে। এমন ওমারকে সম্ভবত আমাদের চারপাশে পাওয়া যাবে না। চরিত্রের এই পরিবর্তনটুকু যদি ঘটে যেত এক লহমায়, বইটিকে গিলতে কষ্টই হতো। কিন্তু এমনভাবে লেখক এই ওমারকে পাল্টেছেন যে বলতে ইচ্ছে করে, ওমার এমন না হলেই বরং অবাক হতাম।
মাঝের কিছু অংশ অদ্ভুত সুন্দর। বিশেষ করে বইয়ের নামকরণের স্বার্থকতা যে অংশে, সেই অংশকে আমার ব্যক্তিগতভাবে একবার হলেও স্যালুট দিতে ইচ্ছে হয়েছে।
শেষের অংশটুকু বিষাদমাখা, সমাপ্তি সুন্দর। সব মিলিয়ে সুন্দর একটি বইয়ের সুন্দর একটা পরিসমাপ্তি।
নালন্দা সম্ভবত অভিজাত সমাজের প্রকাশনী হিসেবেই খ্যাতি পাবে। বইমেলার প্যাভিলিয়ন সাজিয়ে পাঠককে সেবার দেয়া একটি প্রকাশনী ফেলনা না কোনভাবেই। কিন্তু পাঠকের জন্য প্রকাশনী, প্রকাশনীর জন্য পাঠক নয়। কণ্টেণ্ট যতই ভাল হোক না কেন, তার বাজে উপস্থাপনা পুরো জিনিসটিকেই নষ্ট করে ফেলে। ৮০ গ্রাম কাগজে জঞ্জালের চাইতে, ৬৫ গ্রাম কাগজে উৎকৃষ্ট লেখা আমার কাছে ভালো।
বই বলতে আমি বুঝি কণ্টেণ্ট। প্রচ্ছদে আমার কিছু যায় আসে না, বাঁধাই-ছাপাতেও না। কণ্টেণ্ট ইজ কিং। সেই কণ্টেণ্টের ভেতরে পড়ে লেখা, বানান, মেকআপ। লেখার ক্ষেত্রে বইটি পাঁচে চার পেলেও, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বাকি পয়েণ্টগুলোয় সম্মানজনক মার্ক পাওয়াও কঠিন হয়ে যাবে। হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি টাইপ করাতে হয়, সেটা যায় প্রুফ রিডিং-এ। এগুলোর কোন ধাপে ভুল হয়েছে জানি না, কিন্তু এমন বাজে সম্পাদনা বা প্রুফ রিডিং বইটির প্রাপ্য ছিল না।
আশা করি প্রথম তিন মুদ্রণে এসবের দিকে লক্ষ্য না রাখা হলেও, পরেরগুলোতে রাখা হবে।
আসমান
লতিফুল ইসলাম শিবলী
নালন্দা প্রকাশনী
পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৫২
মুদ্রিত মূল্য ৩০০
বইমেলা, ২০১৯
Profile Image for Rohun.
120 reviews58 followers
October 17, 2021
আমি মনে করি, যে উপন্যাসগুলো মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আমূল নাড়িয়ে দেয়, আসমান তেমন একটা উপন্যাস। আমি এও মনে করি, 'কালজয়ী উপন্যাস' তালিকায় স্থান পাবার মতো কন্টেন্ট এই উপন্যাস টি ধারণ করে। প্রচলিত ধর্মীয় ও জীবনবোধ চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনার স্থানও রেখে যায়। ধর্মীয় আলাপ আলোচনাতে আমি যাবোনা। স্পিরিচুয়াল, ভাববাদের জায়গাটা বিতর্কের, আমি জায়গাটাকে গল্পের প্লট বিল্ডাপে প্রয়োজনীয় টুলস হিসেবে দেখতে আগ্রহী।


যে ব্যক্তির কলম থেকে '...দেখো নাতো হাসি শেষে নীরবতা... আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি...' গানের লিরিকের মতো রংবাজ আর বাউন্ডুলে লিরিক বের হতে পারে তাঁর কাছে স্বভাবতই উচ্চাশা থাকে। ওয়েল, এই যাত্রায় উচ্চাশা পরিপূর্ণতা পেয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। আসলেই আসমান এমন এক গল্প, যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়। আমার মনে হয়েছে লেখক জীবনকে খুজে বেড়িয়েছেন পুরো উপন্যাস জুড়ে দর্শনের মাধ্যমে। অবশ্যই ভাববাদ দর্শন। তাঁর ভাষাশৈলী, উপস্থাপনা, বাক্য গঠন খুব ই আরামদায়ক ছিলো। প্রতিটা মূহুর্ত আমার মনে হয়েছে, গল্পের সেই সীনে আমিও উপস্থিত আছি!


উপন্যাসের প্লট বিস্তৃত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ছাড়িয়ে সুদূর আফগানিস্থানের হিন্দুকুশ পর্বতমালা পর্যন্ত। হিন্দু কুশ পর্বত মালার সেই ইতিহাস বিখ্যাত খাইবার পাস পর্যন্ত! সেই খাইবার পাস, যা উপমহাদেশের সকল ইতিহাসের কোনো কিছুর সাক্ষ্মী! পানিপথের যুদ্ধ, আলেক্সান্ডারের আগুন, বাবর কিংবা সুলতান মাহমুদ, এমন কেউ নেই মনে হয় যার ইতিহাসের পদধূলি খাইবার পাস বহন করছে না! ধর্মীয় ভাবধারার নামে যে ধর্মান্ধ, অপসংস্কৃতি, গোড়ামি আছে তাঁর বিরুদ্ধে সত্যিকার যুক্তিবাদী ইসলামী জীবনব্যবস্থা নিয়ে সোচ্চার কেন্দ্রীয় চরিত্র ওমার যে ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিলো তা সহজভাবে উপস্থাপনে লেখকের মুন্সিয়ানার ভূয়সী প্রশংসা করছি। তুলে দিচ্ছি, সেই আরামদায়ক পছন্দসই ভাববাদ!_


''মানুষ চায়, সবাই না হোক, কেউ একজন অন্তত তারে বুঝুক। হাজারো সম্পর্কের ভেতর দিয়ে মানুষ আসলে সেই কেউ একজনকেই খুজে বেড়ায়। এই খোজার জার্নিটাই জীবন।''

''পৃথিবীর সমস্ত সমুদ্র সৈকত আর সমস্ত মরুভূমিতে যত বালিকণা আছে, মহাবিশ্বে তারার সংখ্যা তাঁর চেয়েও ��েশি। মানুষকে যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি সম্ভবত মানুষকে সারপ্রাইজড করতে ভালোবাসেন। সাধারন ড্রপারের পানিতে যে পরিমাণ অনু পরমানু আছে সেটার সংখ্যা মহাবিশ্বের মোট তারকার সংখ্যার থেকেও বেশি। কেদে কেদে এত মূল্যবান মহাজাগতিক পানির অপচয় করবার দরকার কি? ''

''একটা শিশুর কাছ থেকে তাঁর খেলনা কেড়ে নেও, সেই শিশুটা যেভাবে কাদবে, একটু আগে তুমি সেভাবে কেদেছো। সেই শিশু, তুমি তরুণ বা আমি বৃদ্ধ, বয়সে আমরা যেরকম ই হই না কেনো, আমাদের কাছ থেকে প্রিয় জিনিস কেড়ে নিলে একই রকম দুঃখ লাগে।''

আপনি আসলে পাখি, একদিন আমাদের ছেড়ে ঠিক ই উড়ে চলে যাবেন! উড়ে উড়ে আর কত দূর যাবেন! আপনি ওমার যদি পাখি হতে পারেন, তবে আমি আসমা- আসমান হয়ে যাবো।


উপন্যাসে আছে পুরো একটা জীবন। সেটা আপনার, আমার, আমাদের। প্রেম, অধর্মের বিনাশ, লোকজ সংস্কৃতি, যুদ্ধ! সর্বোপরি হিন্দু কুশ পর্বতের অনিন্দ সুন্দর মায়াবী প্রকৃতি, জগতবিখ্যাত পূর্ণিমা, বুড়িগঙ্গার তারার মেলা থেকে শুরু করে শেষ হয়েছে সাম্যের জয়গানে। আপনি যদি যুক্তি দিয়ে বিচার করতে যান, আপনাকে বুঝতে হবে ইসলাম কোনো ধর্ম না। ধর্ম ইংরেজি রিলিজিয়ন। ইসলামকে ধর্ম বলা হয়নি। বলা হয়েছে দ্বীন। বাংলায় পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। আরো বিস্তৃত করলে ইসলাম একটা আইডিওলজি। কেনো? ওয়েল সারা উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র ওমারের মাধ্যমে লেখক সেই উত্তর খুজে বেড়িয়েছেন। আমিও ডুব দিয়েছিলাম মহাকালের অতল অন্ধকারে, আলোর সন্ধ্যানে। ওমারের সাথে জার্নিটা বাস্তবিক আমি স্বচোক্ষে দেখে দেখে অনুভব করেছি। দৃষ্টিসীমানা উদাস বা ঝাপসা হয়ে আসতে চাইলে প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি চোখে ধুলো পড়ার অজুহাত বা সান্ত্বনাও হয়তো দিয়েছি নিজেকে।

ওমারের মতোই আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ভুলে ভরা গল্প আছে। হৃদয়ের কষ্ট আছে, চলে যাওয়ার ব্যাথা আছে। ফিরে আসার উপলক্ষ্য ও আছে। এখানে এসে স্মৃতাচারণে ঢুকে পড়তে বাধ্য হই আমি।


কলেজ জীবন। নিশাচরের মতো সারারাত জেগে নিকোটিন পুড়িয়ে ঠোট গোল করে শীষ বাজিয়ে বলি, "কেউ না জানুক কার কারনে মন পিছু টানে,তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে..." ঢাকায় থাকায় ঢাকার শ্রেষ্ট ৫টা স্কুল-কলেজের একটায় পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে... কিন্তু প্রাপ্তি অনুযায়ী আমার কৃতকাজের হিসেব মেলাতে গেলে মনে হতো, ওটা আসলে দুর্ভাগ্য ছিল। যার কারনে আমার শেষ আশ্রয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে থাকা প্রাইভেট ভার্সিটি নামের মুরগীর খামারে। হতাশাগুলো যখন কোন কারন অনুসন্ধ্যানের চেষ্টা করে তখন সব দোষ ভাগ্যের উপর দিয়ে নিজের অপারগতা আর ব্যার্থতাগুলো এড়িয়ে যেতাম। মা'র অনেক স্বপ্ন ছিল,"ছেলে আমার বড় হবে,হবে মানুষের মতো মানুষ হবে" টাইপ স্বপ্ন। স্কুলে প্রথম না হলেও ১০ এর বাইরে কখনও যাই নি একবারের জন্যেও.... নেশা ছিল তিন গোয়েন্দা,মাসুদ রানা,হ্যারি পটারের গল্পের বইগুলোতে আর "মোস্ট ওয়ান্টেড"টাইপ ভিডিও গেমসে। পাঠ্য বইয়ের ফাকে চুরি করে গল্পের বই পড়ার কারনে মা যে কত বই ছিড়েছেন, পুড়িয়েছেন আর আমি যে কতরাত কাথার নিচে মাথা ঢুকিয়ে মোবাইল, টর্চ দিয়ে গল্পের বই পড়েছি তার হিসেব সম্ভব না। বন্ধুদের মধ্যে বই পড়ার প্রতিযোগিতায় ফার্স্ট হতাম। গল্পের বই,কম্পিউটার গেমস,পড়াশোনা ছাড়া চার দেয়ালের বাইরের কোন কাজেরর প্রতি আগ্রহ বা আসক্তি হয় নি কখনও। তারপর কলেজে উঠলাম, স্বাভাবিক ভাবে রঙিন চশমা চোখে থাকায় মনে হল বড় হয়েছি। দশ বছর চারদেয়ালের মাঝে বয়েজ স্কুলে পড়ুয়া ছেলেটা হঠাৎ কম্বাইন্ডে যেয়ে খেই হারিয়ে ফেললো জীবনের। সেখানে আব্বার সাথে তুমুল ঝামেলা,বাসা ছেড়ে চলে যাওয়া! ততদিনে জীবন চার দেয়ালের মাঝে পড়ে থাকা আমাকে চার দেয়ালের বাইরে এনে চার দিকের সাথে অনেক কিছু এড করল। আড্ডাবাজি চায়ের দোকানে, লিনকিন পার্ক,আয়রন মেইডেন,মেটালিকা আর রিয়েল মাদ্রিদ। চার দেয়ালের ভেতর পড়ে থাকা আমার সাথে হুট করে একগুলো দিক যোগ হওয়ায় আমার আর আমি হয়ে থাকা হয়ে ওঠে নি। বৃত্তের একদম বাইরে চলে গেলাম এক সময়। তারপর থেকে আমি কোন দিন ও পরীক্ষায় ১০ এর ভেতর আসিনি, গল্পের বই পড়িনি প্রায় পাচ বছর। সেই জন্য এখন আক্ষেপ করতেও ক্লান্তি লাগে। আক্ষেপটা বড্ড আপেক্ষিক ব্যাপার। ভার্সিটি এ্যাডমিশনের সময় ঢাকা ভার্সিটির পরিক্ষার দিন পরিক্ষা হলে বসে আশেপাশের সবার দিকে চেয়ে শেষবারের মতো মোচড় দিয়ে উঠেছিল বুকটা। মুচড়ে উঠে যদিও লাভ নাই কারণ ততদিনে অবসাদের কাছে আমার স্বপ্নগুলো বেচা হয়ে গেছে। ভর্তি পরীক্ষার পর দিন থেকে আজ পর্যন্ত বিশাল কোন একসিডেন্ট বা খুব জরুরী প্রোগ্রাম ছাড়া আমাকে কেউ টেনে হিচড়েও টিএসসি নিতে পারে নি। ছবির হাট,কার্জন হল ওগুলোকে আমি আমার ব্যাক্তিগত সম্পদ মনে করে স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু যখন ওগুলো দূরে সরে গেল তারপর থেকে কোন এক অজানা হতাশা, শূন্যতা গ্রাসের ভয়ে যাই না ওখানে। ভার্সিটি আমার অবশিষ্ট স্বপ্ন গুলো আমার থেকে দূড়ে নিয়ে গেছে, চেয়ে চেয়ে দেখেছি শুধু। পারিবারিক কলহে রাগ করে না খেয়ে থাকতাম। নিজেকে কষ্ট দিতাম। জীবনকে নিয়ে ছিনিবিনি খেলতাম নষ্ট আড্ডার টেবিলে। শুয়ে থাকতাম ফ্লোরে। কখনো সেফটি ট্যাঙ্কির কর্নারে পা ঝুলিয়ে বসে থাকতাম। একাকীত্ব গ্রাস করতো। সবকিচ্ছু হারিয়ে সব শেষে সুইসাইড এটেম্পট এবং একটি জীবনের অবমূল্যায়ন এর চেষ্টাও করেছি! নেশার ঘোড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ঝর্নার নিচে নিষ্পলক দাড়াই থাকতাম। প্রিয় জিনিস গুলো ছুড়ে মারতাম। কখনো একটার পর একটা সিগারেট জ্বলতো। পাগলামীর আতিশয্যে চাইতাম সিলিঙ ফ্যানের দিকে।

এক সময়, আমি নিজেকে খুজে পেয়েছি আবারো। নেশা গ্রস্থের মতো অতীতের চিঠী হাতড়ানো একদিন বন্ধ হয়েছে। আবেগের ডি এন এ তে মিউটেশান হয়েছে। আকাশফুড়ে রাজপুত্র/রাজকন্যা হয়তো নামে নাই। ভিড়ের মাঝে পারফেক্ট মানুষটা ঠিক ই ধরা দিয়েছে। আমি ধৈর্য্য ধরেছি। জীনকে উপভোগ করেছি, বাচার মতো বেচেছি। ঘুরে দাড়িয়েছি। জীবনকে বুঝেছি , জীবনটা নাস্তার টেবিলের পাউরুটি নয়!
আমি জীবনকে বুঝে এইযে ঘুরে দাড়িয়েছিলাম, জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে; শিক্ষাটা ছিলো, পৃথিবীতে বিষাদ চিরন্তন, খুইয়ে ফেলা, হারিয়ে ফেলাও চিরন্তন। এই যে আমার নিজের জীবনের মূল্যবান দশ টা বচ্ছর হারিয়ে পাওয়া শিক্ষাটা, সেই শিক্ষাটা উপন্যাস জুড়ে ওমার খুজে বেড়িয়েছে মহাকালের অতল গহবরে এক জীবন জুড়ে!

বিধাতা সবাইকে বাস্তববাদী করে পাঠায় নাই। দূর্গাপূজার শেষ দিনে দূর্গা বিসর্জনের সার্থকতা আমার জানা নাই বাট মানুষের নিজের জীবনকে টোয়েন্টি নাইনের জুয়ার আসরে ঠেলে দেয়ার সার্থকতা আমি জানি। এদের অবচেতন মনের অসহায়ত্বের পরিমান একটু বেশি। অবচেতন মনটাকে একটু ভালোবাসা দিতে হয়। কাছে টানতে হয়। নির্ভরতা দিতে হয়। মানুষটা অবশ্যই সোজা হয়ে দাড়াবে!


"Every time Life Let you down, You have to make that right, and that going to make u LARGER THAN LIFE"
Profile Image for Tamanna Ani.
16 reviews51 followers
April 2, 2020
বইটার অনেক প্রশংসা শুনে বইটা হাতে নিয়েছিলাম। সেজন্য স্বাভাবিকভাবেই বইটার কাছ থেকে আশা বেশি ছিল। কিন্তু বইটা হাতে নিয়ে শুরুতেই হতাশ হয়েছিলাম। সেটা হয়তো ভাষার ব্যাপারে আমার বাড়াবাড়ি রকমের খুঁতখুঁতে স্বভাবের কারণে। যাই হোক, ভাবলাম, বইটা শেষ করবো। কারণ যারা বইটাকে ভাল বলেছেন, এদের উপর আস্থা রাখা যায়।

কিছুদূর এগোনোর পর ইমাম চরিত্রকে ভাল লাগে, তার ভাবনাগুলো সুন্দর। কিন্তু সেই ভাল লাগাটাকে ঠ��ক মজবুত হতে দেয়না ভাষার বুনন! বারবার মনে হতে থাকে আরো অনেকটুকু ভাল করার সুযোগ আছে লেখার স্টাইলে।

বইটার অর্ধেক পর্যন্ত পড়তে পড়তে আমি ভাবছিলাম আমি সম্ভবত দুই বা তিন রেটিং দেবো। বইটা আমাকে আগ্রহী করতে পারছিল না।

শেষ এক-তৃতীয়াংশে এসে হঠাৎ ভাল লাগতে শুরু করে। বেশ ভাল লাগে বইয়ের শেষ ভাগ। কাহিনীর পরিণতির সাথে সাথে গল্প বলার ধরণেও পরিণত ভাব দেখলাম। ফিনিসিংটা সুন্দর। আমার রেটিং ৪/৫। "শেষ ভাল যার, সব ভাল তার" এ সূত্র ধরে রেটিং!

বইটা কি নিয়ে, গল্পটা কি এসব জানার জন্য যারা লেখাটায় ঢুঁ মেরেছেন, তারা নিশ্চয় এতোক্ষণে হতাশ হয়ে গেছেন। কিন্তু যারা বই নিয়ে আমার অন্যান্য প্রতিক্রিয়াগুলো দেখেছেন তারা হয়তো জানেন আমি এসব কিছুই লিখিনা। এটা বুক রিভিউ না। এটা শুধুই বই সম্পর্কে একজন পাঠকের মতামত!

তাবলীগ, জিহাদ, তালেবান এসব শব্দগুলোর সাথে পরিচিত ছিলাম। বিস্তারিত জানাশোনা নেই। এ ধরণের উপন্যাস আগে পড়িনি। তাই একেবারেই অন্যস্বাদের একটা বই পড়া হলো! যদিও বইটা পড়তে পড়তে আমি কিছুটা কনফিউজড হয়ে যাচ্ছিলাম পাঠকদের উপর এটা কিধরণের প্রভাব ফেলবে। একজনকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে বলতে দেখলাম, তার নাকি এ বই পড়ে আফগানিস্তান যেতে ইচ্ছে করছে! এটা আমার কাছে নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট মনে হয়েছে! তবে একটা বড় অংশের কাছে হয়তো পজিটিভ ইম্প্যাক্ট মনে হবে।

আমার কাছে বইটা মোটামুটি লাগলেও এটা অনেকের প্রিয় বইয়ের তালিকায় থাকবে, এটা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়! তা না হলেও ভিন্নস্বাদের উপন্যাস পড়তে চাইলে পড়তে পারেন বইটা!
Profile Image for তান জীম.
Author 4 books279 followers
May 25, 2022
বইটা শেষ করেছি ৪-৫ দিন আগে। পড়তে গিয়ে আর পড়া শেষ করে এতটাই মোহের মাঝে পড়ে গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম এখন এই বই নিয়ে কিছু লিখবো না, লিখলেই বায়াসড লেখা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ৪-৫ দিন পর এসেও সেই মোহ থেকে বের হতে পারিনি। বুঝতে পারছি এখন লিখলে হয়তো বায়াসড হবে না। তবে আফসোসের কথা এই যে, এই বই আমার এতোটাই ভালো লেগেছে যে সে ভালোলাগা প্রকাশ করার মত শব্দ আমার শব্দভান্ডারে নেই। যে বা যার কাছে আমার এই রিভিউ যাবে, তাকে উদ্দেশ্য করে বলছি, আপনি অবশ্যই এই বইটি পড়বেন। কারণ কিছু কিছু লেখা আছে, গল্প আছে, লেখার মাঝে দর্শন আছে যা, জীবনের চাইতেও বিশাল। কে জানে, হয়তো বই পড়ার মত আপনি আর 'বই পড়ার আগের মানুষটি' থাকবেন কিনা!
Profile Image for Zanika Mahmud.
185 reviews9 followers
May 21, 2023
এই বই পাঁচ তারকা ডিসার্ভ করে। উপায় নেই।
না পড়লে একটা মিস হয়ে যাবে।
Profile Image for Syeda Banu.
99 reviews51 followers
May 16, 2019
'আমার মনে অশান্তির আগুন জ্বলে, কি করবো?'


'ওজু করো। আগুন তো পানিতেই নেভে, নাকি?'


ইমাম ইসহাকের এমন সব মজাদার সহজ কিন্তু অর্থপূর্ণ কথা আকৃষ্ট করতো ওমারকে। 


ওমার রিজওয়ান। নব্বইয়ের দশকে যখন বাংলাদেশে রক এবং ব্যান্ড সংগীতের জন্য প্রচন্ড উন্মাদনা, তখন রক গায়ক বন্ধু রুশোর সাথে ঢাকা শহরের পথেঘাটে ঘুরে বেড়ায় উদ্দেশ্যহীন ছেলেটা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্র ওমার, কিন্তু প্রেমিকার অপ্রত্যাশিত প্রতারণায় বেঁচে থাকার সব রঙ হারিয়ে বসেছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করেও পারেনি, এখন রুশোর সঙ্গে এখানে সেখানে ঘুরে, গাঁজা - ফেন্সিডিল খেয়ে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করে।


শান্তি খুঁজে পেলো বৃদ্ধ ইমাম ইসহাকের বন্ধুত্বে। সাধারণ হুজুরদের মতো জাহান্নামের ভয় বা জান্নাতের লোভ দেখান না তিনি  ওমারকে। তিনি বলেন যুক্তির কথা, দর্শন আর জীবনের লক্ষ্যের কথা, হৃদয়ের শূন্যতার কথা। তাঁর কথা শুনতে শুনতেই ওমার অনুভব করে নিজের অন্তরের পরিবর্তন। রুশোর জীবনাদর্শ পিছে ফেলে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে শান্তি খুঁজে পায়। 


তাবলিগ জামাতের সাথে পাকিস্তানের রাইওয়াইন্ডে আসে ওমার। বিভিন্ন দেশের ২০ লাখ মুসলিমের সম্মেলনে পরিচয় ঘটলো তালিবান নেতার পুত্র খালিদ বিন হিশাম এর সাথে। আফগান তালিবানরা তখন নিজেদের ভূমিতে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরূদ্ধে লড়ে যাচ্ছে। কাবুল এবং বিভিন্ন অঞ্চলে কমিউনিজমের বিষ ছড়িয়ে পড়েছে, তা হটিয়ে একটি প্রকৃত ইসলামী রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য খালিদ এবং আরো অনেকে যুদ্ধ করছে।


খালিদের চিন্তার স্বচ্ছতা এবং লক্ষ্যের দৃঢ়তা ওমারকে স্পর্শ করলো৷ বিশ্বাস রক্ষার জিহাদে পাড়ি দিলো আফগানিস্তানে। ট্রেনিং-এর পর বারগামে সশস্ত্র যুদ্ধের সময় ধাক্কা খেলো ওমার। যাদের আক্রমণ করেছে তারাও যে কালিমাই পড়ছে! 


যুদ্ধে আহত ওমার আশ্রয় নিলো খালেদের বাড়িতে। সেখানে খুঁজে পেল স্রস্টার পক্ষ থেকে তার জন্য নির্ধারিত ভালোবাসা আসমাকে, বিয়ে করলো। যুদ্ধে ফিরলো না আর ওমার, নিজ মুসলিম ভাইদের উপর অস্ত্র ধরতে মন চাইলো না। 


কিন্তু ১/১১ এর হামলার পর আমেরিকা শুরু করলো আফগান জনপদকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার অভিযান। আবারো সব হারালো ওমার, নিরপরাধ হওয়া স্বত্বেও স্থান হলো কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে।


আলোর মুখ দেখেনি ওমার ১২ বছর হলো। নিজের দেশেও পরিচিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে। স্ত্রী আসমার সাথে কি আর দেখা হবে? জীবনের উত্থান-পতন, তবু বিশ্বাস না হারানোর গল্প 'আসমান'। 


পাঠপ্রতিক্রিয়া: কিছু বই অন্তরের অন্তঃস্থল পর্যন্ত আমূল নাড়িয়ে দিয়ে যায়। আসমান উপন্যাসটি তেমনই। এটা শুধু ওমারের কাহিনি নয়, আমাদের গতানুগতিক যে ধর্মীয় চিন্তাধারা, তার থেকে এক কদম বেশি ভাবতে শেখাবে গল্পটা।


ধর্মকে যারা প্রশ্ন করতে চান, বা যারা ধর্ম নিয়ে খুব বেশি ভাবেন না, সবার জন্যই ওমার চরিত্রটি। ওমারের মতই আমাদের অনেকেরই জীবনে ভুল আছে, হৃদয়ের ব্যাথা আছে, ফিরে আসার গল্প আছে। ওমার তাই কেবল গল্পের চরিত্র নয়, ভীষণ বাস্তব।


ইমাম ইসহাকের যুক্তিবাদী চরিত্রটি মুগ্ধ করার মতো। দিকভ্রান্ত এক তরুন, যে মানবীর প্রেমে এতোটাই বুঁদ ছিলো যে সেই প্রেম হারিয়ে তার জীবন উদ্দেশ্য হারালো, তাকে তিনি জানালেন হৃদয়ে আল্লাহর প্রেমকে স্থান দিলেই কেবল জাগতিক সব অশান্তি থেকে মুক্তি ঘটে। এখনকার তরুনদের মধ্যে যে অস্থিরতা তার সমাধানের সহজ ব্যাখা দিয়েছেন লেখক ইমামের বয়ানে। সেই অস্থিরতার স্বরূপ অনেকটা দেখিয়েছেন রুশোর মধ্যে। রুশোর সাথে ওমারের কথোপকথনগুলোতে একজন অবিশ্বাসী আর বিশ্বাসীর দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য ফুটে উঠেছে।


ইমামের চরিত্রের বিপরীত দিক বলা যায় আনোয়ারকে৷ আনোয়ার পড়ালেখা খুব একটা করেনি৷ তাবলিগ জামাতের সাথে যুক্ত আছে প্রায় দশ বছর, ধর্ম তার কাছে যুক্তির উর্ধ্বে তীব্র বিশ্বাসের জায়গা। আনোয়ার ধর্মের অলৌকিকত্বে বিশ্বাস করে,  কিন্তু যা বিশ্বাস করে সেখানেই তার আন্তরিকতা। আনোয়ারের চরিত্রটা থেকে বোঝা যায়, একজন বিশ্বাসী যদি খুব চিন্তা করতে নাও চায়, তবু ধর্মের প্রতি আন্তরিকতা আর সরলতা তাকে শান্তি এনে দিতে পারে।


তাবলীগ জামাতের যে ভ্রাতৃত্ববোধ আর শৃঙ্খলা সেটাও চিত্রিত করেছেন লেখক। একই সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘদিন ধরে রটে যাওয়া কর্মপদ্ধতির ত্রুটিটাও উঠে এসেছে। একজন দূর্বল মুসলমানের জন্য তাবলিগ উপযোগী, কিন্তু বর্তমান আধুনিক তরুনরা যারা প্রশ্ন করতে জানে, বুদ্ধি দিয়ে ভাবে তাদের জন্য তাবলিগের সংস্কারের প্রয়োজন।


যাদের সংস্পর্শে এসে পুরোপুরি ঘুরে গেলো ওমারের জীবন, সেই তালিবানদের জীবন ফুটে উঠেছে গল্পে। খালিদের মাধ্যমে জানা যায় আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাস। লেখক বলেছেন জঙ্গিবাদীতার বিরুদ্ধে, নিরপরাধ মানুষকে অকারণে হত্যার বিপক্ষে। ইসলামে জিহাদেরও অবস্থান ব্যাখা করেছেন লেখক, 'অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের স্বপক্ষে দাঁড়ানোর নাম জেহাদ।'


আধুনিক বিশ্বে ইসলামের বিভিন্ন সংগঠনের ইতিহাস উঠে এসেছে গল্পে। তাবলিগ জামাত, তালিবান, আল কায়েদা এদের কথা এসেছে, এসেছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, টুইন টাওয়ার হামলা ও তার ফলশ্রুতিতে অকারণ গণহত্যা। গুয়ানতানামো বে'র নৃশংসতা আর নিরপরাধ মানুষের উপর অত্যাচার এর গল্প আছে, আছে বন্দীদের নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির উপরও আলোকপাত করা হয়েছে।


লেখকের কঠিন দর্শনের কথা সহজভাবে বোঝানোর মুন্সিয়ানা প্রসংশা করার মতো। উপন্যাসের শুরুর দিকে রক নিয়ে আলোচনা আরো সংক্ষিপ্ত করলে ভালো হত। বিভিন্ন চরিত্রের মুখে দীর্ঘ সব আলোচনা রয়েছে, যার কারণে অনেকে ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। তবে ধৈর্য ধরে পড়লে অনেক মেসেজ পাওয়া যায়, চিন্তা করার মতো খোরাক আছে। আফগানিস্তানে ট্রেনিং আর যুদ্ধের অংশগুলো উত্তেজনাময়, এখান থেকেই গল্প গতি পাওয়া শুরু করে। 


হতাশায় পতিত জীবন থেকে ফিরে আসার, সহজে যুক্তি দিয়ে ভাবতে শেখার, আর মানুষকে, জীবনকে এবং সবকিছুর অগ্রে স্রষ্টাকে ভালোবাসার গল্প আসমান। 


'যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়।'


বই: আসমান

লেখক: লতিফুল ইসলাম শিবলী

প্রকাশনায়: নালন্দা

প্রকাশকাল: বইমেলা, ২০১৯

পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৫৮

মূল্য: ৩০০ টাকা
Profile Image for Umama Turna.
79 reviews28 followers
March 15, 2023
This book left me speechless.
I really have no words to describe how much I loved it.

It's rare to see this kind of work by Bangladeshi authors. Yes there are translations and non-fictions, but not enough fiction - and definitely not enough GOOD fiction - based on contemporary Muslim history/politics.

The writer was really brave to touch these topics, and he did it in a very insightful way - to say the least. And the ending was just spot on, it made the whole read worth it.
Profile Image for HR Habibur Rahman.
284 reviews54 followers
December 1, 2025
প্রচ্ছদ দেখলে যেমন অ্যাডভেঞ্চার অ্যাডভেঞ্চার একটা ভাব আসে ঠিক তেমোনি একটা গল্প এই বইয়ে লিখেছেন লেখক। গল্প ওমারের। ওমারের বন্ধুত্ব, তার বন্ধুদের জগৎ, নিজের জগৎ, পারিবারিক জগৎ, ইসলামকে নতুন করে জানা এবং শেষ পর্যন্তু দেশে আসার অনুমতি হারানো নিয়ে গল্প। যে গল্পের ভেতরে ঘটে যায় আরও অনেক কিছু। যে গল্প আসলেই "জীবনের চেয়ে বড়।"


মানুষের জীবন কোথা থেকে কোথায় যেতে পারে এই গল্প তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। কোন এক জগৎ থেকে কোন জগতে চলে যেতে পারে মানুষ সেটা গল্প না পড়লে বুঝা যায়না। আশেপাশের অনেক মানুষের পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু সেটা মনে তেমন ছাপ ফেলেনা, কারণ সেটাকে 'একবারে' সামগ্রিকভাবে দেখা হয়না। পরিবর্তন গুলো ধীরে ধীরে হয় বলে ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হয় আর তাই বিশাল কিছু মনে হয়না সেসব পরিবর্তনকে। কিন্তু যদি সেটা সমন্ধে বা কারোর পরিবর্তন সমন্ধে কেউ গুছিয়ে গল্প বলে তখন মনে হয় বাপরে কত কিছু ঘটে মানুষের জীবনে! এজন্যই চোখের সামনের মানুষ যতোটা না মনকে প্রভাবিত করতে পারে, তার চেয়ে ঢের বেশি পারে তার সমন্ধে শোনা/পড়া গল্প।


বইয়ে গল্পের নায়ক যে একজন স্ট্রং পারসোনালিটির মানুষ সেটা লেখক প্রথম থেকেই দেখিয়েছেন। হাড়ির একটা ভাত টিপলেই যেমন সব ভাতের খবর জানা যায় ঠিক তেমনি ওমারের বয়ঃসন্ধি কালে বন্ধুদের সাথে মেশার পরেও যে শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের পরিচয় লেখক দিয়েছেন তার মাধ্যমেই লেখক জানিয়েছেন অনেক পরেও এই চরিত্র মচকাবার নয়। সেই সাথে স্রোতের বিপরীতে যে এই চরিত্র যেতে পারে সেটাও ইমামের সাথে সাক্ষাতের বা ইমামের সাথে বন্ধুত্ব করার সময়ই জানান দিয়েছেন। যেটার ফলাফল ওমারের পরবর্তী জীবনে দেখা গিয়েছে।


বইয়ের ভাষাও প্রাঞ্জল। লতিফুল ইসলাম শিবলী একজন গীতিকার। তার বইয়েও তার ছাপ পাওয়া যাবে এটাও স্বাভাবিক। বাক্যের শব্দ চয়নে বেশ পারদর্শীতা দেখিয়েছেন লেখক। এই শব্দগুলো রুক্ষভাষী হয়ে পড়া যায়না। রাগ নিয়েও পড়া যায়না। পড়া যায় কোমলতা নিয়ে। পড়তে গেলেই মনে হয় আস্তে, ধীরে, প্রশান্তি নিয়ে, শব্দ নিচু করে উচ্চারিত হওয়া উচিৎ এই শব্দগুলোর। কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস যেমন কবিতার মতো পড়া যায়, ঠিক তেমন না হলেও এই শব্দগুলো বেছে বেছে চয়ন করা। পড়তেই ভালো লাগে। তবে বেশি বেশি  রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিম, বিভূতিভূষণ পড়ার অভ্যাস হলে "হুমায়ন আজাদের" মতো ভাবের গভীরতা কম বলেই মনে হবে সাদামাটা চলিত ভাষার শব্দ বলে।


একটা বইয়ে ভালো লাগার আরও কিছু কারণের ভেতর গল্পের অবাধ বয়ে চলা একটা মুখ্য কারণ। যে গুণ এ বইয়ের আছে। গল্পকে ছোট ছোট খণ্ডে ভাগ করে লিখলেও গল্পের ভাব, খেই কোনোটাই হারিয়ে যায়নি। সাথে গল্পের গভীরতাও বেশ। যে বই পড়ে শেষ করলে মনে হবেনা যে নিছক কিছু পড়লাম। এই বই ভাবাবে জীবন নিয়ে, জীবনের দর্শন নিয়ে, বিশ্বাস নিয়ে। সাথে কিছু কিছু কোটেশন মনে গেথেও যাবে। যেমন একটা,
             "হৃদয় আল্লাহর ঘর। মানুষের হৃদয়টা তৈরী করা হয়ে এই জন্য যে, সেখানে শুধুমাত্র আল্লাহ থাকবেন। সে ঘরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু ঢুকালেই শুরু হবে তোমার জাগতিক অশান্তি।"



বই: আসমান
লেখক: লতিফুল ইসলাম শিবলী
Profile Image for Jakir Hossain.
17 reviews3 followers
January 18, 2024
    'কতটা তুমি হারালে বন্ধু কেঁদেছে অন্তর

    জানো না তুমি হারাবার ব্যথা

    জানে পলাশীর প্রান্তর'

মাইলসের গাওয়া এই গানটি(পলাশীর প্রান্তর) আমার অসম্ভব রকম পছন্দের কিংবা সোলস এর হাজার বর্ষা রাত শুনে শতো শতো রাত পার করছি। এই গানগুলো যে লতিফুল ইসলাম শিবলী নামে যে কেউ একজন লিখেছেন এটা খুব ভালো করেই জানতাম। প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় নিয়ে আমি প্রতিনিয়ত ব্যান্ড মিউজিক শুনে যাচ্ছি যদিও এখন তেমন সময় হয় না কিন্তু চেষ্টা করি। স্কুল কলেজ ভার্সিটি থাককালীন প্রচুর গান শোনা হতো, আমি একজন ভালো শ্রোতা ছিলাম। 

আচ্ছা আসমান বইয়ের সাথে এই মিউজিক শোনার সম্পর্কের আগে বলে নেই এই বইটি আমি কিভাবে পেলাম। বেশ কিছুদিন আগে আসমান বইটির রিভিউ দেখি, ভাবছিলাম ইসলামিক মোটিভেশান টাইপের কোনো বই, শতো শতো বইয়ের সাথে এটিকেও দীর্ঘদিন উইস লিস্টে রেখেছিলাম। কেনার কোনো আগ্রহ ছিলো না। কয়েকদিন আগে সমকালীন প্রকাশনীর ৫০% ছাড় দেখে আর রাহীকুল মাখতুম বইটি অর্ডার দিচ্ছিলাম, ডেলিভারি চার্জের কথা চিন্তা করে ভাবলাম আর কিছু অর্ডার দেই। সত্যি বলতে প্রথমত আসমান বইয়ের প্রচ্ছদটা আমার নজর কেড়েছিলো এবং দাম মাত্র ১০০ টাকা দেখে এটাও রকমারিতে অ্যাড করি। বইটি এক মিলিয়ন কপির প্রজেক্ট তো ভাবলাম হয়তো ভালো কিছু হতে পারে। 

বই হাতে পাওয়ার পর বইয়ের পিছনে লেখকের ছবি দেখে আমি ভড়কে যাই। আরে এই মানুষকে তো আমি সম্ভবত চেনি। এ দেখি পলাশীর প্রান্তরের লিরিক্স লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাই। আগে জানলে তো আমি এই বই আরও অনেক আগেই পড়ে ফেলতাম। একজন নাট্যকার, গান লেখক বা মিউজিক ভক্ত মানুষ ইসলামিক টাইপের বই লেখেছে এই জিনিসটা আমার খুবই প্রয়োজন ছিলো কারন আমি নিজে প্রচুর গান শুনি সুতরাং হয়তো লেখকের ফিলোসফি বা চিন্তা ভাবনার একটা অংশের সাথে নিজেকে মিলাতে পারবো।

বইয়ের প্রধান চরিত্র ওমার নামের প্রেমে ব্যর্থ এক যুবকের। যে কিনা একাকিত্ব আর তার ভাঙা হৃদয় নিয়ে অসহায় হয়ে ছিলো এবং তার বন্ধু রুশো কে নিয়ে পুরোপুরি ড্রাগ এডিক্টেট ছিলো। রুশো চরিত্রটা ইন্টারেস্টিং ছিলো যে কিনা ওমারকে অদ্ভুত সব পিনিক শিখিয়েছিল। সারা রাত তারা নেশা করতো সাথে রুশো তার ইলেকট্রিক গিটারে জিম মরিসনের গান ধরতো। রুশোর লক্ষ্য ছিল গুরু হবে, লালন শাহ বা জিম মরিসন এর মতো নিজস্ব দর্শন থাকবে আর মানুষজন তাকে চর্চা করবে। 

ঘটনাচক্রে ওমার এর সাথে পরিচয় হয় ইমাম ইশহাক সাহেবের, ভেবেছিলাম গতানুগতিক সব ইসলামিক বইয়ের মতো এবারো ওমার হয়তো ইমামের সংস্পর্শে এসে নামাজ কালাম পড়া শুরু করবে এবং পুরোপুরি ধার্মিক হয়ে যাবে। হ্যা ওমার পুরোপুরি ধার্মিক হয়েছিল এবং ইমাম একবারো তাকে বলেনি আগে নামাজ পড়ো বরং ইমাম ওমারের হৃদয়ে স্রষ্টার জন্য প্রথমে ভালোবাসা সৃষ্টি করেছিল কিভাবে স্রষ্টাকে হৃদয় ধারণ করা যায় শিখিয়েছিল। ফলে আস্তে আস্তে ওমার তার হৃদয়ে ইহজাগতিক ভালোবাসার কষ্টকে ছুড়ে ফেলে দেয় এবং সেখানে স্রষ্টাকে স্থান দেয়। ইমাম চরিত্রটা আমার অসম্ভব রকম ভালো লেগেছে। প্রথমে এর সাথে আমি জালালউদ্দিন রুমির অনেকটা সাদৃশ্য পেয়েছি। ওমার যখন আসমাকে বললো বালখ হলো আমার প্রিয় এক কবির জন্মস্থান আর উত্তরে আসমা যখন বললো আমি জানি তিনি হচ্ছেন জালালউদ্দিন রুমি, আমি সত্যিই ভড়কে গিয়��ছিলাম মনে মনে ভাবলাম যাক আমার ধারণা তাহলে সত্যি হলো। 

রুমির কিছু অসাধারণ উক্তি বইয়ে দেওয়া ছিলো যেমন, 


'স্রষ্টার কাছে পৌঁছানোর হাজারো পথ আছে 

তার মাঝে আমি প্রেমকে বেছে নিলাম'


'আল্লাহর প্রেমে তোমার আত্মাকে উৎসর্গ কর 

কসম করে বলছি এছাড়া আর কোন পথ নেই '

বইয়ের প্রথম অর্ধেক খুবই স্লো ছিল ফ্ল্যাপের কাহিনীর সাথে কোন মিলই পাচ্ছিলাম না। ভাবতেছিলাম গতানুগতিক কোন বই ই হবে। আসল কাহিনি তো অর্ধেকের পরই শুরু হয়, আনোয়ারের সাথে তাবলিকের পরিচয়, তাদের সাথে পাকিস্তানের ইজতেমায় যোগ দেওয়া সেখানে খালিদের উপর মুগ্ধ হয়ে আফগানিস্তানের জন্য রওনা দেওয়া এবং আসমার সাথে পরিচয়। অবশেষে ১২ বছর বিনা বিচারে জেল খেটে আমেরিকার কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া। কিন্তু কোনো দেশই ওমারকে আশ্রয় দিতে চাচ্ছে নাহ, কোথায় যাবে সে, আসমার কি অবস্থা, এখনো কি বেচে আছে কিংবা কোথায় আছে সে। বিশাল পৃথিবীর কোথাও কি তার থাকার একটু জায়গা হবে নাহ। শেষ অর্ধেক অসাধারণ একটা জার্নি ছিল। আমি লেখকের যুক্তি তর্কে ধ্যান ধারণায় মুগ্ধ হয়েছি। বইটা আরেকটু বড়ো হলে মনে হয় ভালো হতো, শেষ অর্ধেক চুম্বকের টানের মত শেষ হয়ে গেলো।
Profile Image for আহসানুল শোভন.
Author 39 books91 followers
March 1, 2019
বইয়ের শুরুটা এভাবে- ‘হৃদয় আল্লাহর ঘর। মানুষের হৃদয়টা তৈরি করা হয়েছে এই জন্য যে সেখানে শুধুমাত্র আল্লাহ থাকবেন। সে ঘরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু ঢুকালেই শুরু হবে তোমার জাগতিক অশান্তি।’

ওমার (ব্যক্তিগত মতামত: নামটা ওমর হলে পড়তে আরও ভালো লাগতো), প্রেমে দাগা খাওয়া দিকভ্রান্ত এক যুবক। ধানমন্ডি বয়েজের ক্লাস টেনে পড়াকালীন সময়য় থেকেই ভালোবাসতো ধানমন্ডি গার্লসের লামিয়াকে। সে সময়য় লামিয়া পড়তো নাইনে। ধীরে ধীরে লামিয়া গ্রাস করে ফেলে ওমারের পুরোটা অস্তিত্ব। নিজের থেকে আলাদা করতে পারতো না সে লামিয়াকে। তারপর একদিন লামিয়াকে ইউনিভার্সিটির ক্যাডার এনায়েতের সঙ্গে আবিষ্কার করে বজ্রাহত হয়ে থমকে যায়। বিচ্ছেদের বেদনা ভুলতে ওমার আশ্রয় খোঁজে বন্ধু রুশোর কাছে। সাইক্যাডেলিক রক ব্যান্ড দ্য উইন্ডো-র দলনেতা ও ভোকাল রুশো তাকে নিয়ে যায় নেশার জগতে। গাঁজা, ফেন্সিডিলে ভুলিয়ে দিতে চায় সবকিছু। কিন্তু এসব মাদকে মনের অশান্তি কমে না, বরং আরও বাড়ে। ওমারের মা সব বুঝেও কিছু বলেন না। জায়নামাজে বসে ছেলের জন্য চোখের পানি ফেলেন। তারপর একদিন ছেলেকে তিনি অনুরোধ করেন ধানমন্ডি মসজিদের এক ইমাম সাহেবের কাছে। সেই ইমাম তাকে বলেন, ‘জীবনের শুরুতেই তুমি যে কষ্টটা পেয়েছো এটাকে যদি তুমি শিক্ষা হিসেবে নিতে নাও তবে তোমার বাকি জীবন কোনো কষ্টই তোমাকে এমন অস্থির আর ভেঙে ফেলতে পারবে না।’

ইমামের সান্নিধ্যে আসার পর ধীরে ধীরে বদলে যেতে শুরু করে ওমার। তার বাহ্যিক চোখজোড়ার বাইরে খুলে যায় তার অন্তরের দৃষ্টি। পৃথিবীকে নতুন আরেক দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে সে। এরপর প্রায়শই মসজিদে ইমামের সাথে পড়ে থাকতো ওমার। তার পেছনে দাঁড়িয়ে তার ইমামতিতে নামাজ আদায় করতো। একদিন মসজিদে তাবলিগ জামাতের একটি দল আসে। দলপ্রধান আনোয়ারের সাথে ওমারের সখ্যতা সৃষ্টি হয়। মাসখানেক বাদে আনোয়ার তার দল নিয়ে তাবলিগি জামাতে পাকিস্তানের লাহোরে যাবে। ওমারকেও সে সঙ্গে যাবার প্রস্তাব দিলো। ইমামের সাথে কথা আলোচনার পর ওমার সিদ্ধান্ত নিলো, সে যাবে। পাকিস্তানে যাবার পর বদলে গেলো ওমারের জীবন। এরপর কাহিনীর বিস্তৃতি গড়িয়েছে আফগানিস্তান, মিলিটারি প্রিজন, ছদ্মবেশী মার্কিনি এজেন্ট, কিউবার গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে আলবেনিয়া অবধি। শেষ পর্যন্ত ওমারের ভাগ্যে কী ঘটে জানতে হলে পুরো বইটি পড়তে হবে।

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
প্রখ্যাত গীতিকার এবং কবি লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা উপন্যাস এই প্রথম পড়লাম। দখল বইটা দিয়ে শুরু করার কথা থাকলেও নানান কারণে বইটা আর পড়া হয়ে ওঠেনি। তাই এবারের বইমেলা থেকে কেনা ‘আসমান’ দিয়েই লেখকের কলমের সঙ্গে পরিচয়। সত্যি কথা বলতে কী, শুরুর দিকে পড়তে বেশ বিরক্তবোধ করছিলাম। মনে হচ্ছিলো প্রেমে দাগা খাওয়া এক হতাশাগ্রস্থ যুবকের কাহিনী। এখানে নতুন কিছুই নেই। কিন্তু ধীরে ধীরে পৃষ্ঠা সংখ্যা যত বাড়তে লাগলো, আগ্রহের পারদও পাল্লা দিয়ে তুঙ্গে উঠতে শুরু করলো। বইয়ের দ্বিতীয়ার্ধ বলতে গেলে প্রায় এক নিঃশ্বাসেই পড়তে হয়েছে।

বই আমরা কমবেশী অনেকেই পড়ি, তবে চিন্তার খোরাক জাগানোর মতো বইয়ের সংখ্যা হাতে গোণা যায়। ‘আসমান’ সেই হাতে গোণা বইগুলোর ভেতর অন্যতম। ‘আসমান’ কী ধরণের বই জানতে চাইলে আমি বলবো জীবনধর্মী থ্রিলার। যে বইতে জীবনের গল্পও আছে, সেই সঙ্গে আছে থ্রিল। বইয়ের ট্যাগলাইন ‘যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়’। সত্যিই আসমানের কাহিনী জীবনের চাইতেও বড়। লেখককে ধন্যবাদ এমন একটি বই পাঠকসমাজকে উপহার দেবার জন্য।
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
October 31, 2022
"স্রষ্টার কাছে পৌঁছানোর হাজারো পথ আছে,
তার মাঝে আমি প্রেমকে বেছে নিলাম" - রুমি

নব্বইয়ের দশক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওমার রিজওয়ান।প্রেমিকা লামিয়া ও বন্ধু রুশোর সাথে সময়টা চলে যাচ্ছিল ভালোই। ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের দশম শ্রেণির ওমার ও ধানমণ্ডি গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণির লামিয়ার পরিচয় হয়েছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। ওমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার এক বছর পর লামিয়া ভর্তি হয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। ক্যাম্পাসে নামকরা জুটি ছিল তারা। কিন্তু ওমারকে অবাক করে দিয়ে লামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডার এনায়েতের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে। এই কষ্টকে মেনে নিতে পারেনি ওমার। আত্মহত্যা করতে চেয়ছিল। কিন্তু ভাগ্যের লিখন ছিল তাকে বহুদূর যেতে হবে।

মানসিক কষ্ট কাটাতে মায়ের পরামর্শে ওমার শরনাপন্ন হয় ধানমন্ডি আট নম্বর রোডের জামে মসজিদের বৃদ্ধ পেশ ইমাম মাওলানা ইসহাক আব্দুর রহমানের। ইমামের বাস্তবিক ও যুক্তিযুক্ত নসিহতের প্রভাবে ওমার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। নিয়মিত নামাজ পড়া এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে প্রশান্তি খুঁজে পায় সে। এই মসজিদেই একসময় চিল্লায় আসে তাবলীগ জামাতের আনোয়ার। আনোয়ারের সান্নিধ্যে ওমার পাকিস্তান যায় তাবলীগ জামাতে। পাকিস্তানে ওমার জীবনের আরেকটি ঘটনা ঘটে যা তার জীবনের মোড় পাল্টিয়ে দেয়। আফগানিস্তানের খালিদ ইবনে হিশামের বক্তব্যে উৎসাহী হয়ে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে জেহাদ করতে আফগানিস্তান চলে যায় সে। কী হয় তার পরিণতি? সে কি পেরেছিল তার উদ্দেশ্য পূরণে সফল হতে? যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়, তা জানতে পাঠককে বসতে হবে বইটি নিয়ে।


লতিফুল ইসলাম শিবলীর বই আগে পড়া হয়নি, এটাই প্রথম। আর এক বই দিয়েই লেখক আমাকে মুগ্ধ করেছেন। নান্দনিক প্লটের উপস্থাপন এবং চরিত্রায়ন দারুণ ছিল। লেখক সঙ্গীতের সাথে সম্পৃক্ত তাই বইটিতেও তার ছাপ লক্ষ করা গিয়েছে। এছাড়া যুদ্ধের বিভিন্ন অস্ত্রের বর্ননা, আফগানিস্তান-পাকিস্তানের ভৌগলিক-রাজনৈতিক অবস্থানকে তুলে ধরেছেন সাবলীলভাবে। গল্পের পাশাপাশি ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক সংঘাতের ইতিহাসও উঠে এসেছে লেখককের কলমে। ওমার চরিত্রকে দারুণ লেগেছে। সে যেন খাদের কিনারা হতে ফিরে আসা দৃঢ় মনোবলের প্রতীক। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for Mitul Rahman Ontor.
161 reviews57 followers
February 1, 2020
২০১৯ বইমেলায় প্রকাশিত "আসমান" লতিফুল ইসলাম শিবলীর তৃতীয় উপন্যাস এবং আমার পড়া লেখকের দ্বিতীয় বই।

গল্পের প্লটটা সুন্দর এবং ব্যতিক্রম। জিহাদ, তালেবান গোষ্ঠী ইত্যাদি নিয়ে লেখা সাহসীও বলা যায়। তবে এইসব সেন্সিটিভ টপিক নিয়ে বেশ সুন্দর প্লট সাজিয়েছিলেন লেখক।

ওমার এবং রুশো মূলত নেশায় আসক্ত দুই বন্ধু। সেখান থেকে ওমারের পরিচয় হয় ব্যতিক্রমী এক ইমামের সঙ্গে। যিনি ইসলামকে ভিন্ন দৃস্টিকোণ থেকে তুলে ধরেন ওমারের সামনে। সেখান থেকে পরিবর্তিত হয় ওমারের পথ। ওমার জড়িয়ে পড়ে তাবলীগের সাথে। তাদের সাথে অংশ নেয় পাকিস্তানের বিশ্ব ইজতেমায়।

সেখান থেকে ওমারের পথ আরেকবার পরিবর্তন হয়। ইসলামের পথে সংগ্রামের, জিহাদের পথে পা বাড়ায় সে।

বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা রয়েছে আমেরিকার কুখ্যাত কারাগার গুয়ানতানামো থেকে ১২বছর বিনা বিচারে সাজা কাটানোর পর মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশি এক যুবক। তবে নিজ দেশের দরজা তার জন্য বন্ধ। এখন কোথায় যাবে সে?


যা পুরোপুরিই গল্পের শেষাংশ, গল্পের প্লট নয়। মানুষ ফ্ল্যাপ দেখে মূলত গল্পের প্লট পছন্দ হলে, বই ক্রয় করে। এক্ষেত্রে এখানে পাঠক আশাহত হতে পারে।

গল্পের শুরুটা বেশ ভালো। কাহিনী শুরুতে না জমলেও, চরিত্রগুলোর বিল্ড আপ ভালো। তবে গল্পের মাঝে কিছু জায়গায় ডিটেইলিং বেশ প্রয়োজন ছিলো।

লেখক বইটিকে আরেকটু বড় পরিসরে করার চিন্তা করে থাকলে হয়ত বইটি মাস্টারপিস হতে পারতো। শেষটা বড্ড তাড়াহুড়ায় করা বলে মনে হয়েছে।

বইটি পড়ে ভালো লেগেছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে, কিছু জায়গায় ঘাটতি লেগেছে। এরকম প্লটে, এই স্টোরি লাইনে লেখকের থেকে আশাটা আরেকটু বেশি ছিল।


"নালন্দা" হতে প্রকাশিত ১৫২ পৃষ্ঠার বইটির মলাট মূল্য ৩০০টাকা। বইয়ের বাইন্ডিং ভালো, তবে প্রচ্ছদ ব্যক্তিগতভাবে আমার একেবারেই ভালো লাগে নি।

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৩.৫/৫
Profile Image for Mahmudul Hassan.
14 reviews7 followers
June 1, 2022
কোনো রেটিং এর মানদন্ডে বইটি বিচার করা ঠিক হবে না। আপনি পড়বেন এবং কেবল বিমুগ্ধ হয়ে যাবেন। জীবন এমন ও হয় !
আরেকটা কথা না বললেই নয়, বাজারে মুফতি মাওলানার এতো এতো বই, কিন্তু ইসলামের যে সকল দিক ফোকাস করে বই লিখা উচিত সেই জিনিস গুলো খুব কম বইতেই পাওয়া যায়। কিন্তু এই বইতে মাশাআল্লাহ ইসলামের কিছু বিষয় খুব চমৎকার ভাবে উঠে এসেছে। তাই বলে এটি কোনো ইসলামিক বই নয়, নিরেট ফিকশন।
লেখকের তথ্য অনুযায়ী এই উপন্যাসের স্থান সত্য, কাল সত্য, ইতিহাস সত্য, কাল্পনিক শুধু এর চরিত্রগুলো। আপনিও অন্তর্জাল দুনিয়া থেকে চাইলে এর সত্যতা আবিষ্কার করতে পারবেন।
Profile Image for Jenia Juthi .
258 reviews64 followers
April 27, 2021
"কোথায় যাবে, কতদূর যাবে পাখি আসমান ছেড়ে! আমি সে পাখির জন্য আসমান হয়ে থাকবো।"
বইটার যখন একদম শেষে চলে আসলাম, তখন ভাবলাম পাখির জন্য আসমান তো আর থাকলো না। কি আফসোসটাই না হচ্ছিলো। একদম শেষে এসে কি সুন্দর মিলে গেলো!

বইয়ে সবচে' ভালো লেগেছে ইমাম চরিত্রটি। যিনি সব কথা বুঝান যুক্তি দিয়ে। অন্ধভাবে কিছু বিশ্বাস করলে তা একসময় না একসময় ভেঙে যায়। ইমামের কথাগুলো খুব ভাবাচ্ছিলো, কিছু কথা ছিলো এতো সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছিলেন!
কাহিনী হচ্ছে ওমারকে নিয়ে!
প্রথমে বিচ্ছেদ-বেদনা, তারপর হেদায়েত। জানার উদ্দেশ্যে দূর দেশে পাড়ি, আর সেখান থেকে 'আফগানিস্তান' আর সেখানেই দেখা হয় 'আসমান' এর সাথে। বইটি কি নিয়ে বুঝতে পারছিলাম না, যখন মাঝখানে এলাম বুঝতে পারলাম। বইটার নামকরণ সার্থক! বিষাদমাখা সুন্দর সমাপ্তি।
লেখায় কিছু ভুল ত্রুটি থাকলেও, তা কোনো সমস্যা করে নি।
Profile Image for Shaon Arafat.
131 reviews31 followers
March 30, 2019
একটি ইসলামিক গ্রন্থ! ইসলামিক জীবনাদর্শ ও মানবীয় আবেগের মিশেলে আফগান-আমেরিকান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এক অভূতপূর্ব কাহিনী; যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়।

আমি ধার্মীক নই, সুতরাং লেখকের বেশ কিছু ধর্ম-আশ্রিত মতাদর্শ আমার তেমন ভালো লাগেনি; কিছু মতাদর্শ তো সরাসরি আমার মতাদর্শের সাথে বৈপরিত্যমূলক আচরণ করেছে! তবে নিছক একটি উপন্যাস হিসেবে 'আসমান' অসাধারণ। তার আগের দু'টি বইয়ের তুলনায় এতটাই পরিণত যে এ বইটা পড়তে এসে বড় ধরণের ধাক্কা খেতে হয়েছে।

'দারবিশ' এবং 'দখল' পড়ে আমার মতো যে সকল পাঠক অতটা তৃপ্ত হতে পারেনি, তাদেরকে এ বইটি পড়ার জন্য জোর আহবান জানাচ্ছি।

... এবং আপনার ইসলাম-ধর্মীয় বিশ্বাস যদি তেমন শক্তিশালী না হয়ে থাকে, বইটি আপনাকে নিছক একটি উপন্যাস হিসেবে পড়তেই অনুরোধ করবো।
Profile Image for Imdadul  Swadin .
49 reviews2 followers
April 19, 2022
লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা এইটাই প্রথম পড়া।
উনার লেখা সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিলনা। বইপোকাদের আড্ডাখানা গ্রুপ থেকে সন্ধান পাই। পুরাই অস্থির লাগছে। 🔥❤️
Profile Image for Muhammad Tamimul Ihsan.
30 reviews
October 5, 2021
শিবলী ভাইয়ের এই বইয়ের প্রশংসা সবার মুখে মুখে পেয়েছিলাম। ফাইনালি পড়ে মনে হলো বইটার গল্পের লেন্থটা আরো বড় হলে উপন্যাসটা আরো কঠিনভাবে জমে উঠতো। তবে উপন্যাসটা এককথায় অসাধারণ। গল্পের চরিত্র ‘ওমরের’ পরিবর্তনটা সবচেয়ে বেশি আকর্ষনীয় ছিল। আর পরিবর্তনের পরে গল্পের ‘ওমরের’ জীবনে যে কাহিনীগুলো ঘটে গিয়েছে এগুলোই পাঠককে উপন্যাসের একদম শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে আর তখনই মনে হবে,“আরেহ!উপন্যাসটা এতো তাড়াতাড়ি শেষ হলো কীভাবে? উপন্যাসটা আরো একশ পৃষ্ঠা বেশি হলে মনে হয় সম্পূর্ণতা পেতো!” সর্বোপরি এ উপন্যাসটাও দারুণ ছিল। আমার পড়া অন্যতম সেরা উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি একটা হয়ে থাকবে। তবে ভাষার বুননটা একটু অন্যরকম কেমন যেনো লেগেছে। শিবলী ভাইয়ের আরেকটা উপন্যাস “ফ্রন্টলাইন” সংগ্রহে এলো বেশ কিছুদিন হলো,আশা করি এই বইটার মতো ওটা আরও দারুণ হবে!

▪︎ বইটি অসাধারণ কিছু লাইন :

১| “সত্য বিশ্বাসের বাণী আসে হৃদয় থেকে। সত্য যখন কথা বলে তখন মুখ বা স্বরতন্ত্র কথা বলে না,মূলত কথা বলে তার হৃদয়,সেটা অন্য হৃদয়কে স্পর্শ করে।”

২| মুসলিমদের জীবন হলো সৈনিকের জীবন।

৩| আত্মার মুক্তি-ই পরম স্বাধীনতা, আমরা দুনিয়ার বিনিময়ে আখেরাত ক্রয় করেছি।

৪| "হৃদয় আল্লাহর ঘর। মানুষের হৃদয়টা তৈরি করা হয়েছে এই জন্য যে সেখানে শুধুমাত্র আল্লাহ থাকবেন। সে ঘরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু ঢুকালেই শুরু হবে জাগতিক অশান্তি।"

৫| "সসীমকে ভালোবেসে করেছ পূজা
ভালোবেসে হয়ে গেছ দাস
তোমার অনন্ত মন আর কারো নয়
এক অসীম প্রভুর নিবাস।"

৬| অন্ধকার জঙ্গলটা হলো পৃথিবী, সূর্যোদয় পর্যন্ত আমাদের আয়ুকাল আর টর্চলাইট হচ্ছ�� সত্য। তোমার হাতে যখন সত্য থাকবে তখন সেই সত্য দিয়ে পৃথিবীর সবকিছু তুমি যাচাই করতে পারবে। আমি সত্যটা ভালোমতো জেনেছিলাম তাই বাকিগুলো চেনা আমার জন্য সহজ ছিল।'

৭| ব্যক্তি শুদ্ধ হলে সমাজ শুদ্ধ হবে, সেই শুদ্ধ ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র তৈরি করলে সেটা হবে কল্যাণ রাষ্ট্র। তেমন কল্যাণ রাষ্ট্র তার নাগরিকের জন্য যেমন উপকারী তেমনি বাদবাকি পৃথিবীর জন্যও উপকারী।

৮| ‘ইমান শুরু হয় অন্তর থেকে, পরে দেহের বাইরে ইসলাম রূপে সেটা প্রকাশ পায়। ইসলাম শুরু হয় বাইর থেকে পরে অন্তরে প্রবেশ করে সেটা পূর্ণতা পায়। তুমি দেখতে যেমনই হও না কেন, তোমার কর্মটাই ইসলাম।'

৯| তুমি যখন অন্ধকারের আসল রূপটা চিনে যাবে তখন তোমাকে আর কোনোভাবেই অন্ধকারে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। এই অন্ধকারকেই বলে কুফর। কুফর অর্থ যা সত্যকে ঢেকে রাখে।


• রেটিং :4.5/5
Profile Image for saba.
12 reviews26 followers
September 1, 2023
এন্ডিং ও এত সুন্দর হয়
হ্যাপি এন্ডিং এও মানুষ কাঁদে !
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
December 31, 2023
বইয়ের ফ্ল্যাপের কাহিনি যেমন আকর্ষণীয়, ভিতরের কন্টেন্ট ঠিক সেখান থেকে শুরু না হলেও (আরও আগের ঘটনা থেকে শুরু) তাতেও বেশ দারুণ বলা চলে।

জীবনের চেয়ে বড় গল্প আসলে আর কিছু নেই। মানুষের তাকদীর যে মানুষকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়, গল্পের মূল চরিত্র ওমার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আমি খুব অবাক হয়ে গেছি গল্পের লেখক, যিনি মূলত গীতিকার হিসেবে পরিচিত.. গান, কবিতা, নাটক ইত্যাদির মতো বিনোদন জগতে যার বিচরণ এরকম একটা ইন্টারেস্টিং টপিক নিয়ে এতো সুন্দর একটা উপন্যাস লিখেছেন। শিবলীর বই আগেও পড়েছি.. তিনি একজন গীতিকবি বলেই বোধ হয় তার লেখার স্টাইলটা একটু অন্যরকম। আর তার উপন্যাসের চরিত্ররাও যথেষ্ট ব্যতিক্রমী। এইবার আসি আসমান প্রসঙ্গে। মূল চরিত্র ওমার ব্যর্থ একটা প্রেমকে বুকে চেপে যখন দিশেহারা তখন ঘটনাক্রমে পরিচিত হয় মসজিদের এক ইমামের সাথে। তার মেধা, প্রজ্ঞা, জ্ঞান আর বিশ্লেষণী ক্ষমতায় মুগ্ধ হয়ে ইসলামকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করে সে। তখন থেকেই ঘুরে যেতে থাকে তার জীবনের মোড়। ভাগ্য যে তাকে কোথায় নিয়ে যায়! যে গল্প জীবনের চেয়ে বড়-ট্যাগলাইন দেয়া উপন্যাসটি সত্যিই আপনাকে ভাবাবে।

বছরের শেষটা আসলেই খুব দুর্দান্তভাবে হলো!
45 reviews
April 6, 2022
বইয়ের কাভার ভালো লাগে নাই, কাভারের উপরে লেখা ভালো লাগে নাই, কিন্তু পুরোটা পড়ার পরে, "Don't judge a book by it's cover." কথাটার সত্যতা টের পেলাম। জানিনা লেখক ঠিক ইতিহাস বলেছেন কি না, তবে গল্প পড়ার টাইম এ আপনার অনেক কিছুই কেমন জানি মনে হতে পারে। সেগুলো উপেক্ষা করে গল্প শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকলেই ইতিহাস নিয়ে জানার আলাদা আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হবে। লেখক গল্প লেখার মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন, Historical Fiction লেখার জন্য কতো কি জানা লাগে! জায়গার নাম, তারিখ, কিছু দেশের Geography, আরোও অনেক কিছু। অন্যদিকে Kite Runner বইয়ে গল্পে তালিবান কে যেমন সাপর্ট করা হয় নাই, আসমান বইয়েও আমরা সেটা একটু অন্যভাবে দেখতে পাই। এই বই নাকি তালিবান কে সমর্থন করে! তাও আবার ১৯৯০ এর সময়কার তালিবান কে! এইসব শুনেই বই পড়লাম এই ভেবে যে, বইটা পুরোই Kite Runner বইয়ের বিপরিদ কিছু। কারণ Kite Runner বইয়ে ১৯৯০ এর সময়কার তালিবান কে ঘৃণার চোখে দেখা হয়েছে। তবে আসমান বইয়ে সেটা একদম অস্পষ্ট। তালিবান ভালো না খারাপ, তা জানি না। কিন্তু এটা মানতেই হয় Kite Runner এবং আসমান অন্য লেভেলের Masterpiece!
Profile Image for Mashrur.
3 reviews1 follower
September 29, 2022
উপন্যাসের প্লট এক কথায় দুর্দান্ত।পুরান ঢাকার গলি থেকে তালেবানের দেশ আফগানিস্তান,কাবুল থেকে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম গুয়ান্তানামো বে কারাগার,পাঠককে নিয়ে যাবে রোমাঞ্চের চরম সীমায়।
সেই সাথে পাঠকের চোখের সামনে কখনও ভেসে উঠবে ৯০ দশকের ঢাকার অলিগলি,কখনোবা তালেবানের খেলাফত ভিত্তিক ইসলামি শাসনামাল,আবার কখনও গুয়ান্তামোর ওয়াটারবোর্ডিং এর মতো ভয়ংকর নির্যাতন।

গল্পের মাধ্যমে ইতিহাসের অজানা সত্যগুলো উঠে এসেছে বলেই "আসমান" হয়েছে পাঠক নন্দিত।২০২১ সালে আমার পড়া অন্যতম সেরা উপন্যাস।
Profile Image for Modassir Hasan.
8 reviews1 follower
December 31, 2024
কি ছিলনা এই বইয়ে? আধুনিকতা, রোমান্স, দর্শন, ইতিহাস, ইসলাম। পরিপূর্ণ একটা কাহিনী। শিবলী ভাইয়ের বই এটাই প্রথম পড়লাম। অসাধারন লেখনী!একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠতে ইচ্ছে করেনা। বহু জটিল বিষয় সহজ ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন লেখক।
রেটিং: ৫/৫

“সসীমকে ভালোবেসে করেছ পূজা
ভালোবেসে হয়ে গেছ দাস
তোমার অনন্ত মন আর কারও নয়
এক অসীম প্রভুর নিবাস।”
Profile Image for Habibur Rahman.
13 reviews2 followers
May 22, 2023
আমার পড়া সেরা বইগুলোর মাজে একটা ❤️
Profile Image for Osama Zouad  Mahy.
7 reviews3 followers
August 10, 2021
বই আমরা কমবেশী অনেকেই পড়ি, তবে চিন্তার খোরাক জাগানোর মতো বইয়ের সংখ্যা হাতে গোণা বলা যায়। ‘আসমান’ সেই হাতে গোণা বইগুলোর মধ্যে অন্যতম। ইতোমধ্যে যারা বইটি পড়েছেন তারা আমার সাথে এই বিষয়ে নিঃসন্দেহে একমত হবেন!

এটি প্রেমিকার অপ্রত্যাশিত প্রতারণায় বেঁচে থাকার সব রঙ হারিয়ে বসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়া এক যুবকের গল্প। সেই কষ্ট ভুলতে বন্ধুর সান্নিধ্যে নেশার জগতে প্রবেশ। কিন্তু এসব মাদকে তার মনের অশান্তি কমে নি, বরং আরও বেড়েছে। এরপর বৃদ্ধ ইমামের যুক্তি, সৌহার্দ্য এবং গ্রহণযোগ্যতার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য দর্শন করে ইসলামের দিকে ধাবিত হওয়া এবং নিজের অন্তরের পরিবর্তন। অতঃপর অতীতের উন্মাদ জীবনাদর্শ পেছনে ফেলে স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ। পাকিস্তানে বিশ্ব ইজতেমায় গিয়ে খালিদের সাথে পরিচিত হয় তার এবং আফগানিস্তানে চলমান গৃহযুদ্ধের কথা জানতে পেরে সেখান থেকে সে আফগানিস্তানের তালেবানদের সাথে যুদ্ধে যোগ দেয়। ঘটনাক্রমে এর মধ্যেই সে খুঁজে পায় তার ভালবাসার মানুষ "আসমা"কে। যার নামানুসারে আলোচ্য উপন্যাসের নাম রাখা হয়েছে "আসমান"। কিন্তু নাইন ইলেভেনের টুইন টাওয়ার হামলার সাথে মোড় ঘুরে যায় পরিস্থিতির। তারপর কি হলো, কেমনে হলো সেটা জানতে হলে আপনাকে বইটি পড়তে হবে।

বইটিতে একজন বাঙালি "মুসলিম" (মুসলিম শব্দটি কেন কোট করলাম তা জানতে হলে আপনাকে বইটা পড়তে হবে) চরিত্রকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরা হয়েছে, যা সচরাচর দেখা যায় না। আসমানের প্রধান চরিত্র হিসেবে আছে ওমার! তাবলীগ, বিশ্ব ইজতেমা, জিহাদ, তালেবান গোষ্ঠী, আমেরিকার কুখ্যাত কারাগার 'গুয়ানতানামো বে' এর মতো সাহসী নিয়ে লেখা আসমান। এসব সেন্সিটি��� টপিক নিয়ে বেশ সুন্দর প্লট সাজিয়েছেন লেখক। এই উপন্যাসটির ভাষাশৈলি অনেকটা সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফির মতো। পড়ার সময় মনে হচ্ছিল গল্পটা আমার চোখের সামনে ভাসছে। আর প্লটটা অসাধারণ, অবিস্মরণীয় এবং অভূতপূর্ব। আমার মতে উপন্যাসটি আরেকটু বড় পরিসরে লিখলে ভালো হতো। শেষটায় বড্ড তাড়াহুড়া করা বলে মনে হয়েছে।


এই বইয়ে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে অংশটিঃ

"তাহলে কি মানুষ শুধু আল্লাহকেই ভালোবাসবে, কোনো মানুষ প্রাণী বা বস্তুকে ভালোবাসবে না?"
"তাহলে ভালোবাসার অনুভূতি কেন সৃষ্টি করা হয়েছে?"
"ভালোবাসা মানে রেসপন্সেবিলিটি বা দায়িত্ব। যখন তুমি কাউকে ভালোবাসো তখন তুমি তার দায়িত্ব নাও। এই দায়িত্ব তোমাকে কে দেন?"
"তিনি দেন যিনি তোমার হৃদয়ের ঘর জুড়ে বসে আছেন, তিনি সমস্ত বিশ্বজগতের মালিক, সৃষ্টিকর্তা। তিনি বলেছেন, জীবে দয়া কর আর সমস্ত সৃষ্টিকে ভালোবাসো। সেটা শুধু কথার কথা নয়, সেই ভালোবাসা এক বিশাল দায়িত্ব। তাই তার জন্য যখন ভালোবাসবে এই সৃষ্টি জগতের কেউ তোমার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। যখন তোমার ভালোবাসা হবে আল্লাহর আলো, বাতাস আর পানির মতো, যা সমস্ত পোকামাকড় জীবজন্তু থেকে শুরু করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ভোগ করে। দেখ তুমি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করা হয়েছে তোমার জন্য, আর তোমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাঁর জন্য। তুমি যখন তাঁর হবে এই বিশ্বজগত সবকিছু তোমার হবে। তুমি যখন তাঁর হবে না তখন এই বিশ্বজগত সবকিছু তোমাকে বিচ্ছেদ বেদনা দেবে। তাঁর সাথে এই সম্পর্কটাই প্রকৃত প্রেম। আর এই প্রেমটাই হলো ইবাদত। এই প্রেমের জন্যই তোমাকে অসীম এবং অমূল্য এক বস্তু দেয়া হয়েছে। যেটার নাম হৃদয়। সেই হৃদয়ের ব্যবহার আর প্রকৃত প্রেমের কায়দাটা শেখোনি বলে আজ এত কষ্ট পাচ্ছ।"

"আসমান" কী ধরণের বই জানতে চাইলে বলবো এটি একটি জীবনধর্মী থ্রিলার। এটি এমন একটি বই যা অন্তরের অন্তঃস্থল পর্যন্ত আমূল নাড়িয়ে দিয়ে যায়। হতাশায় পতিত জীবন থেকে ফিরে আসার, সহজে যুক্তি দিয়ে ভাবতে শেখার এবং মানুষকে, জীবনকে এবং সবকিছুর অগ্রে স্রষ্টাকে ভালোবাসার গল্প আসমান। এরকম ধাচের লেখা বাংলা সাহিত্যে আমার জানা মতে আর নেই। খুব গভীরভাবে ইসলাম এর কিছু বিষয় তিনি তুলে এনেছেন, যা এই যুগে বেশিরভাগ মানুষ উপলব্ধি করতে ব্যর্থ।

শেষ করছি ওমারকে নিয়ে তার বন্ধু রুশোর লেখা একটি গান দিয়ে।

"জাস্টিস জাস্টিস
এটা কার কণ্ঠস্বর
ওয়ার ক্রিমিনাল
অথবা লিবারেটর!
কার আদলে কে?
নাৎসি? জায়োনিস্ট?
কারো চোখে তুমি স্বাধীনতাকামী
কারো চোখে টেরোরিস্ট।
কার আদলে কে
উত্তর দেবে বন্ধু তোমায়
গুয়ানতানামা বে।"

যে গল্প জীবনের চেয়েও বড় 💗
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Farhana Sultana.
94 reviews72 followers
January 20, 2022
কিছু বই ভাবায়। ভীষণ ভাবায়। আসমান তেমন একটি বই।

বইটা পড়ার পর থেকেই মাথায় ঘুরছে অনেককিছু। সত্যি বলতে যখন পড়া শুরু করেছিলাম খুব সাদামাটা সাধারণ একটা বই মনে হয়েছিলো। কিন্তু শেষ করার পর বুঝেছি বইয়ের নামটা সার্থক।
চাইলে বিশাল এক পাঠ-প্রতিক্রিয়া লেখা যায় বইটা নিয়ে। কিন্তু মনে হয় এই বইয়ের জন্য সেটা প্রয়োজন নেই। আসমানের পরিচয় আসমান নিজে।

বছরের প্রথম পড়া বই হিসেবে শুরুটা চমৎকার হলো বলতেই হবে। এর রেশ আগামী দিনগুলোতেও থাকবে৷ যতবার মনে হতাশা আসবে, মনে পড়বে আসমানের কথা৷ এই বই আসমান, আর উপরের আসমান যেখানে সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন যিনি সকল উপশমের মালিক।
Profile Image for Rifat Ridwan.
80 reviews7 followers
April 28, 2022
আসমান— মাত্র ১৫৮ পৃষ্ঠা আপনার হৃদয়ে প্রবিষ্ট করাবে গোটা আসমানের বিশালতার ন্যায় অনাবিল আনন্দ। হতাশায় জরাজীর্ণ, বাস্তববিমুখ, অচেতন অন্তরকে নতুন এক স্বপ্নের চেতনায় জাগ্রত করবে নিমেষেই। বরেণ্য লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর বর্ণনার দরুন আফগানিস্তানের যেরূপ প্রতিকৃতির সাথে ইতোপূর্বে আপনার পরিচয় ঘটেছে তার ব্যতিক্রমস্বরূপ 'আসমান' উপন্যাসটির ক্ষুদ্র কলেবর একই আফগানিস্তানের যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা আপনার মানসপটে টেরাকোটার চিত্রের ন্যায় চিত্রিত করবে।

বাংলাদেশি ওমারের বিস্ময় জাগানিয়া চারিত্রিক পরিবর্তনের পর তালেবানে যোগদান, শত্রুর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ, জীবন্মৃতের ন্যায় ক'মাস বেঁচে থাকা, সাহসী রমণী আসমার সাথে প্রণয়, নাইন এলেভেনে টুইনটাওয়ারে হামলা, সিআইএ কর্তৃক বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার, গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দিদশা, দীর্ঘ ১২ বছর পর মুক্তি পেয়ে প্রিয়তমা আসমা ও পুত্রের সাথে পুনর্মিলন— ঠিক এভাবেই উপন্যাসের অভূতপূর্ব কাহিনী ধীরে ধীরে সমাপ্তিতে এসে একীভূত হয়েছে। ওমারের সুদীর্ঘ এ যাত্রায় রয়েছে প্রাণাধিক প্রিয় জননী ও অসংখ্য প্রিয় মানুষ হারানোর প্রগাঢ় হাহাকার, রয়েছে স্বপ্নপূরণের তীব্র হাতছানিবলে ওমারের উপমাতুল পদযাত্রা।

আফগানিস্তানে বহিরাগতদের আক্রমণ ও আফগানিদের প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা গোটা উপন্যাসে প্রাধান্য পেয়েছে। তথ্যবহুলতা, বর্ণনার সাবলীলতা পুরোটা সময়ই আমাকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল। যদিও অপ্রাঞ্জল কতক বর্ণনা ঈষৎ বিরক্তির কারণ হয়েছিল কখনো-সখনো। তবুও আপনার ভালোলাগবে; দৃঢ়তা জ্ঞাপন করে বলতে পারি। আমি বিশ্বাস করি— আসমান উপন্যাসটি অভিনব একটি অনুভূতি প্রদানপূর্বক আপনার অভিজ্ঞতার সমাহার সমৃদ্ধ করবে।

— রিফাত রিদওয়ান
Profile Image for Rasel Khan.
170 reviews8 followers
January 1, 2022
প্রেমে ব্যর্থ ওমার মনের কষ্টে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে একটু শান্তির জন্য৷ বন্ধুবান্ধব, আড্ডা, নেশায় পড়ে কিছুটা অতীত ভুলে থাকলেও ঠিক শান্তি খুঁজে পাচ্ছিলো না কোথাও। একদিন মায়ের অনুরোধে দেখা করতে যান এক ইমামের সাথে। যেখান থেকেই তার জীবনের নতুম অধ্যায়ের শুরু।

তাবলীগের এক সাথীর সাথে পরিচয় হয় ওমারের৷ তার থেকে পাকিস্তান ইজতেমায় যাওয়ার প্রস্তাব পায় ওমার। ইমামের পরামর্শ নিয়ে যে যাত্রায় রওনা দেয় তারা। বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে সেখানে যোগ দেয় তা/লি/বা/নে/র এক দল প্রতিনিধি৷ বিভিন্ন দেশের কাছে তাদের মতাদর্শ ও সাহায্য চায় তারা৷ মূলত মু/জা/হি/দ  সংগ্রহই ছিলো প্রধান উদ্দেশ্য।

ওমার তাদের বয়ানে খুবই প্রভাবিত হয়ে পড়ে৷ কঠিক এক স্বীদ্ধান্ত নেয় সে৷ যা সারাজীবনের জন্য পাল্টে দেয় তার জীবন৷ শুরু হয় এক নতুন গল্পের৷ যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়।

বই থেকে প্রিয় কিছু উক্তি

দীর্ঘ জীবন মানেই শোকের দীর্ঘ সফর।

আদতে কষ্টের কোনো শেয়ার নেই।

পরিণত হলে নারী খোঁজে নির্ভরতা, খোঁজে সামর্থ্যবান পুরুষ।

এই সংক্ষিপ্ত জীবনে যত বেশি বস্তু তোমার হৃদয়ে জায়গা করে নেবে তত বেশি তুমি বিচ্ছেদ বেদনা ভোগ করবে।

তুমি যত বেশি অন্ধকারকে চিনবে, আলো তত বেশি মূল্যবান হয়ে উঠবে।প্পপ

পৃথিবী বিচ্ছেদের জায়গা, মিলনের জায়গা জান্নাত।
Profile Image for Nahid Hasan.
132 reviews20 followers
January 2, 2025
এই বই পড়াটা ছিল রোলার কোস্টার চড়ার মতো (আমি জীবনেও রোলার কোস্টারে চড়িনি)।

কিন্তু তার আগে একটা কথা লেখক নিজেই কি উপস্থিত ছিলেন আফগানে অথবা কিউবাতে? এতটা রিয়েলিস্টিক যে কী বলব! বিভূতিভূষণের পর এই ১ম সম্ভবত কারও বই পড়লাম যার চরিত্রগুলি এতটা জীবন্ত ছিল।

বইয়ের কলেবর মাত্র ১৬০ পৃষ্ঠা কিন্তু এই বইয়ের লেখার ওজন বিশাল। কয়েকটা জীবনকে ধারণ করে আছে এই বই।

বাস্তব জীবন থ্রিলারের চেয়ে কম কিছু না৷ ওমার-ইমাম-রুশো-লামিয়া-এনামুল-ওমারের মা-আনোয়ার-খালেদ-আসমা-শিমুজি-আব্দুল্লাহ-মোল্লা ওমর-OBL এই চরিত্রগুলো সবাই সবাইকে চিনে কিন্তু mutually connected. বুড়িগঙ্গা-কাবুল যেভাবে সম্পর্কিত।

মানুষের বিশ্বাস, বিশ্বাসের ভঙ্গুরতা, বিশ্বাসঘাতকতা থেকে শুরু করে সামান্য সামান্য আচরণ মানুষকে বাটারফ্লাই ইফেক্টের মতো করে আমূলে বদলে দিতে পারে। এই বইটা বদলে যাবার কাহিনী, বিশ্বাসের কাহিনী, কাহিনী সেই সত্তার দিকে যাত্রার, যেই সত্তার প্রতি আমাদের আত্মা ডুকরে কাঁদে প্রতিদিন, যেই কান্না আমরা জাগতিকতা দিয়ে ঢেকে রাখি, না শোনার ভান করি আর ডিপ্রেশন, ডোপামিনে ভাসিয়ে দিই নিজেদেরকে।

এই বইয়ের গল্প, জীবনের চেয়েও বড়।
Profile Image for Zahidul  Tamim.
113 reviews3 followers
May 31, 2021
উপন্যাসের ভাষাশৈলি হলো সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফির মতো। মোটামুটি মানের প্লটকে ভাষার মাধুর্যে অনন্য রূপে উপস্থাপন করা যায়। উপন্যাসের প্লটটা অসাধারণ, অবিস্মরণীয় এবং অভূতপূর্ব। এরকম প্লটে উপন্যাস রচনা করায় লেখক প্রশংসার দাবিদার।
তবে লেখকের বাক্য শৈলি ও শব্দের ব্যাবহার নিয়ে আমার সমস্যা আছে। সাহিত্য মান চলনসই ধরণের বলা যায়। গাম্ভীর্যের অভাব রয়েছে।
তাছাড়া কাহিনী শেষদিকে খুব তাড়াহুড়ায় শেষ হয়েছে। আরেকটু লম্বা করে এন্ডিং দিলে ভালো হতো।
উপন্যাসটা পড়ার সাজেশন রইলো কারণ এরকম ধাচের লেখা বাংলা সাহিত্যে হয়তোবা নেই।
Profile Image for Humayra Ta Deen Fabi.
74 reviews8 followers
May 15, 2024
প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গেল। শুরুতে মনে হচ্ছিল এ তো ক্রিন্জ গল্প। গল্পের শেষটুকু বেশ সেনসিটিভ আর হার্ট টাচিং। যেহেতু স্টোরি প্লট খুব সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে তৈরি তাই ঘটনা চক্রে বেশ কিছু স্থান ইতিহাস ইত্যাদি সত্যি বলেই মনে হল। অনেক জানাশোনা থাকলে বায়ানেসটা ধরা সম্ভব। লেখকের স্টার্ট টু এন্ড লেখা চমৎকার এবং এন্ডিং ওয়াজ wholesome. গল্প হিসেবে পড়লে ঠিক আছে কিন্তু যদি অনেক সিভিয়ার লেভেলে গিয়ে চিন্তা করা হয় বা এনালাইসিস করা হয় তখন অতটা স্বাভাবিকভাবে নেয়া যাবেনা। Overall it was a good journey. Best of luck to the writer.
Displaying 1 - 30 of 166 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.