Jump to ratings and reviews
Rate this book

गृहदाह

Rate this book
‘গৃহদাহ’ শরৎচন্দ্রের এক অমর সৃষ্টি। এ উপন্যাস আবহমান বাংলার প্রণয় সঙ্কটে ভুগতে থাকা তিনজন নর-নারীর ত্রিভুজ প্রেমের আখ্যান। ‘গৃহদাহ’ উপন্যাসে শরৎচন্দ্র সমসাময়িক বাঙালির আত্মিক বৈশিষ্ট্য, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ব্যক্তিমানসের পারস্পরিক সম্পর্ক, তাদের প্রেম-পরিণয়, বিশ্বাসকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। সমাজ-সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় ন্যায়-নীতি যে কীভাবে সম্পূর্ণরূপে এ সমাজের হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, তা এ উপন্যাসের মূল উপজীব্য।

322 pages, Paperback

First published November 1, 1920

54 people are currently reading
679 people want to read

About the author

Sarat Chandra Chattopadhyay

234 books931 followers
Complete works of Sarat Chandra (শরৎ রচনাবলী) is now available in this third party website:
http://sarat-rachanabali.becs.ac.in/i...

Sarat Chandra Chattopadhyay (also spelt Saratchandra) (Bengali: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) was a legendary Bengali novelist from India. He was one of the most popular Bengali novelists of the early 20th century.

His childhood and youth were spent in dire poverty as his father, Motilal Chattopadhyay, was an idler and dreamer and gave little security to his five children. Saratchandra received very little formal education but inherited something valuable from his father—his imagination and love of literature.

He started writing in his early teens and two stories written then have survived—‘Korel’ and ‘Kashinath’. Saratchandra came to maturity at a time when the national movement was gaining momentum together with an awakening of social consciousness.

Much of his writing bears the mark of the resultant turbulence of society. A prolific writer, he found the novel an apt medium for depicting this and, in his hands, it became a powerful weapon of social and political reform.

Sensitive and daring, his novels captivated the hearts and minds of thousands of readers not only in Bengal but all over India.

Some of his best known novels are Palli Samaj (1916), Charitraheen (1917), Devdas (1917), Nishkriti (1917), Srikanta in four parts (1917, 1918, 1927 and 1933), Griha Daha (1920), Sesh Prasna (1929) and Sesher Parichay published posthumously (1939).

"My literary debt is not limited to my predecessors only. I'm forever indebted to the deprived, ordinary people who give this world everything they have and yet receive nothing in return, to the weak and oppressed people whose tears nobody bothers to notice and to the endlessly hassled, distressed (weighed down by life) and helpless people who don't even have a moment to think that: despite having everything, they have right to nothing. They made me start to speak. They inspired me to take up their case and plead for them. I have witnessed endless injustice to these people, unfair intolerable indiscriminate justice. It's true that springs do come to this world for some - full of beauty and wealth - with its sweet smelling breeze perfumed with newly bloomed flowers and spiced with cuckoo's song, but such good things remained well outside the sphere where my sight remained imprisoned. This poverty abounds in my writings."

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
225 (25%)
4 stars
344 (39%)
3 stars
217 (24%)
2 stars
61 (6%)
1 star
26 (2%)
Displaying 1 - 30 of 72 reviews
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
April 26, 2019
ধুর ! দিনটাই মাটি হলো। এই প্রথম শরৎ এর বইয়ে ৫ তারার কম দিচ্ছি। কম বললে কম হয় একদম ১ তাঁরা। প্রথম ২৩০ পৃষ্ঠা মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়েছি তারপর, একদম অসহ্য। কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে না......এ উপলক্ষে আপাতত দুই মাস শরৎ বাবু অফ।
Profile Image for HR Habibur Rahman.
284 reviews54 followers
November 13, 2021
গল্পটা ত্রিকোন প্রেমের। মহিম, সুরেশ অন্তরঙ্গ বন্ধু। একজন প্রচুর গরীব আরেকজন প্রচুর ধনী। দুজনেই হিন্দু ধর্মের। যেকোনো ভাবে মহিমের সাথে পরিচয় ঘটে অচলা নামের মেয়ের। অচলা ব্রাহ্মণ। মহিম চুপচাপ, শান্ত আর নিজের মাঝেই সম্পূর্ন প্রকৃতির মানুষ। সুরেশ নাস্তিক, পরোপকারী, জেদি। মহিমের সাথে বিয়ে ঠিক হয় অচলার। অচলা ব্রাহ্ম ধর্মের জেনে সুরেশ কিছুতেই চায়না এ বিয়ে হোক। কিন্তু মহিম আর অচলা অটল থাকে বিয়েতে। বিয়ে ভাঙ্গাতে গিয়ে নিজেই অচলার সৌন্দর্যের পড়ে যায় সুরেশ। যেকোনো মূল্যে অচলাকে সে পেতে চায়। এভাবেই এগিয়ে চলে গল্প।




রিভিউঃ

শরৎচন্দ্র বরাবরই প্রিয় আমার। যে যা-ই বলুক। শরৎচন্দ্র পড়বেন আর বিরহে ডুববেননা এমনটা হয়না। এখানকার প্রত্যেকটা চরিত্র উজ্জল। মৃণাল, রাক্ষসী দি, রামবাবু, কেদারবাবু, সুরেশের পিসীমা ইত্যাদি। গল্পের মহিম আত্মক্রেন্দ্রিক হলেও সাদা মাটা মানুষ। সুরেশ পরোপকারী আর লোভী। অচলার অচরন বা কর্মকান্ড সব থেকে বেশি লজ্জার বিষয়। ত্রিকোন প্রেমের জন্য প্রধানত দায়ী সে। এখানে তার ব্যক্তিত্ব সে বজায় রাখতে পারিনি। সুরেশেরও একই। কিন্তু প্রথম থেকেই সুরেশ যে তার দেহের প্রেমে পড়ে ছিলো সেটা অচলারও অজানা না। মৃনালের হাসি তামাশাকে কেন্দ্র করে মহিমকে অচলার সন্দেহ। তারপর বিয়ে বহির্ভুত মেলা মেশা সুরেশের সাথে। দুদিনের পরিচয়ের কারোর কথা রাখতে পর পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হওয়া এই সব কিছুই তার নিম্ন ব্যক্তিত্ব প্রকাশক। মহিমের আত্মকেন্দ্রিক দূর্গের ভেতর সে কখনো কাওকে ঢুকতে দেয়নি এটাই তার জিবনের সবচেয়ে বড় সর্বনাশ করেছে। অচলার রাগের প্রধান কারন সে স্ত্রী হওয়া স্বত্বেও একদিনের জন্যও মহিমের সুখ দুঃখের ভাগীদার হতে পারেনি। মহিম, সুরেশ, অচলার ত্রিকোন প্রেম কে ফুটিয়ে তুলতে যা যা দরকার সব কিছুই আছে গৃহদাহ তে। ত্রিকোন প্রেম আর তার পরিনতি, অচলার ট্রাজেডি সব কিছু বইয়ের মাঝে ডুবে রাখার মতো। ত্রিকোন প্রেমের ভয়াবহ জালে জড়িয়ে ২১ বছরেই জিবন থেকে কেমন করে একজন নারীর সুখ, দুঃখ, রঙ সব মুছে যায় একমাত্র গৃহদাহ পড়েই অনুধাবন করা সম্ভব। যদিও অচলার ট্রাজেডির জন্য মন খারাপ হয় কিন্তু এটাতে তার নিজের দ্বিচারিণী আচরনই দায়ী।

বইঃ গৃহদাহ
লেখকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ধরনঃ উপন্যাস
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৫৪
Profile Image for Shahriar Kabir.
107 reviews42 followers
May 25, 2019
এতটা উত্তাল, অশান্ত, অনির্ণেয়, নির্মীলিন আর হৃদয় ও মস্তিষ্ককে দহন করা উপন্যাস আমি অদ্যাবধি আর পড়ি নাই। বই পড়ার যে স্বাভাবিক আনন্দ থাকার কথা, সে আনন্দ নেশার ঘোরে যেন দলিত ও মথিত ছিল। আমি যেন সাগরের ন্যায় বিশাল অথচ মরুর নেয় উত্তপ্ত আর দুঃসহ জটিল পরিস্থিতিতে এসে পড়েছি শরৎবাবুর জটিলতার পাকে! না যায় পেছনে যাওয়া, না যায় দাঁড়িয়ে থেকে হাল ছেড়ে দেয়া!

"অচলার কি কোন দোষ ছিল?"- না ভাঙতে পারা ধাঁধার কি খণ্ডন করা যায়? পুরুষ কি নিস্তার পেয়ে গেল? একজনের মরে বেঁচে যাওয়া, আর একজনের কাঠ-কাঠ নির্মোহ পৃথিবীচলন ঠিকই তাদের একটা করে জায়গা দিল জগতের এপার-ওপার মিলিয়ে; কিন্তু পুরো পট আন্দোলিত করে রাখা নারীদেহটির তো কোথাও জায়গা হল না, হৃদয়ের কথা নাই তুললাম- সে বৃত্তান্ত করা আমার সাধ্যাতীত। বরং যে ধর্ম বস্তুটির জায়গা না হলেও চলত তার বাদাবাদি নীরবে অম্লান একখানি দাগ রেখে দিল।

গৃহের ভেতর ও বাহির পুড়ে খাক পৃথিবীর কিছু কিছু ঘটনা কোনো কোনো হৃদয়ের পৃথিবীকে থামিয়ে দিয়ে রাখে। জগতের আর সব চলতে থাকা হয়ত নিয়ম, কিন্তু সে ক্রমাগত ঝড়ের মাঝ দিয়ে চলা হৃদয়ের মালিকের পৃথিবীকে নিয়ম হয়ত চলতে দিবে না, শান্তও হতে দিবে না। পাঠকও যে শান্তি নিয়ে গল্পের রোমন্থন করে ধীরনিঃশ্বাস ফেলবেন, তার সময় হয়ত জুটবে না, মনে হয় মনের এ কোণ, ও কোণ কেবল অস্থির হবে।

কেন পড়িলাম? কেন পড়িলাম? এ আমি কী পড়িলাম?
এই ধাঁধার গভীর খাদে পড়িয়া উত্তর না করিবার দহনে জ্বলিলাম শরৎবাবু!
Profile Image for Rifat.
501 reviews330 followers
December 21, 2020
গৃহদাহ পড়তে গিয়ে আমার দেহই দাহ হয়ে গেছিল প্রায়।
পড়া শুরু করে রেখে দিয়েছিলাম!কেন যে আবার পড়লাম জানি না। ধুর!মেজাজ খারাপ হয়েছে বারবার। শরৎ বাবু আজ সামনে থাকলে ঝগড়া লেগে যেত ওনার সাথে।অচলা আর কিছু না পারুক - এই প্রেমের ত্রিকোণমিতিতে দ্বিধায় পড়েছে আর মূর্ছা গেছে বারংবার😒
স্টার জলসার জন্য পারফেক্ট প্লট🙄

#স্পয়লার_এলার্ট
কাহিনী সংক্ষেপঃ
দুই প্রাণের বন্ধু সুরেশ আর মহিম। মহিম অনাথ, দরিদ্র ছেলে আর সুরেশ অন্যদিকে ধনী পরিবারের। মহিম নিতান্তই অতি শান্ত স্বভাবের, নিজের অসুবিধার কথা পর্যন্ত মুখ ফুটে বলবে না।

ব্রাহ্ম ধর্মের মেয়ে অচলা, দারিদ্রতা এর পরিবারেও দোদুল্যমান। তবে কি করে যে ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে মহিম আর অচলা মন দেয়ানেয়া করেছিল!!

সেই কথা শুনে রেগে যায় সুরেশ। তার বন্ধু কি করে ধর্মের বাইরে যেতে চায়।উপস্থিত হয় অচলাদের বাড়ি যাতে করে মহিমের সাথে এই সম্পর্কের ইতি টানানো যায়।
কিন্তু সে কি! নিজেই জড়িয়ে ঝামেলায়। বন্ধুর প্রেমিকার জন্য তার হৃদয়ে হাহাকার শুরু হয়। অচলার বাবাকে কোনোরকম রাজিই করায় সুরেশ। অচলার বাবা নিজে থেকেই সুরেশের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।মহিমের দীনতা আর সুরেশের সচ্ছলতা তাকে সুরেশের দিকেই নিয়ে যায়। কিন্তু বাধ সাধে অচলাই। সুরেশের এই আচরণ সে মেনে নিতে পারে নি। অগত্যা মহিমের সাথেই বিনা আড়ম্বরে বিয়ে হয় অচলার।

কিন্তু মহিমের বাড়ি আসার পর থেকেই কেমন যেন সবকিছু ওলটপালট হতে থাকে। দূরত্ব হানা দেয় মহিম আর অচলার মাঝে। গ্রামের সাধারণ হাসি ঠাট্টা আর মহিমের পাতানো বোন মৃণালের কথাগুলো স্বাভাবিক মজা হিসেবে নিতে পারেনি শহরের শিক্ষিতা অচলা।ক্রমেই মহিম আর অচলার মাঝে ফাটল তৈরি হয়। এক সময় সুরেশ আসে বেড়াতে। এদের তিনজনেই এক ঘোর আশংকায় থেকে যায়। হঠাৎ একদিন রাতে আগুন লাগে মহিমের বাড়িতে। সব পুড়ে যায়। পরে অচলাকে সুরেশের সাথে বাড়ি বাঠিয়ে দেয় মহিম। কেদারবাবু এদের দেখে অবাক হয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে অসুস্থ হয় মহিম,আবার অন্যদিকে মৃণালের বয়স্ক স্বামী স্বর্গলাভ করেন। এরা দুজনেই সুরেশের বাড়িতেই যায় যাতে করে মহিমের ভালো চিকিৎসা হতে পারে। খবর পেয়ে অচলা আর কেদারবাবুও সুরেশের বাড়িতেই যান।সেখানে গিয়ে হঠাৎ করে অচলার এক মুহূর্তের জন্য মনে হয় সে সুরেশকেও ভালোবেসেছিল কিনা!!

বেশকিছু দিন পার হলে মৃণাল চলে যায় গ্রামে। মহিম একটু সুস্থ হলে হাওয়া বদলের জন্য পশ্চিমে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়, সাথে অচলা আর শেষ মুহূর্তে সুরেশও সঙ্গী হয়। সুরেশ এখনও কিন্তু মনে মনে অচলাকেই চায়! তবে মাঝ রাস্তায় গাড়ি বদলের পর অচলা বুঝতে পারে সুরেশ মহিমকে অন্য গাড়িতে পাঠিয়েছে। অচলা সুরেশের এই ধরনের কাজের কথা কখনও ভাবতেই পারে নি। এখন কি করবে সে! অগত্যা মাঝ রাস্তায়ই সুরেশ আর অচলা নেমে পড়ে। একটা সরাইখানায় আশ্রয় গ্রহণ করে।এবার অচলার কি আর কোনো আশা আছে গৃহে ফিরে মুখ দেখানোর! তারা দুজন একটি বাড়িতে বসবাস শুরু করে অতিথি হয়ে। বীণাপানি নামের একজনের বাসায় যার সাথে অচলার আলাপ হয়েছিল গাড়িতে।
যাইহোক এদের সাথে ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওদের।
এদিকে কেদারবাবু মৃণালের চিঠি পেয়ে হতবাক হয়ে যায়। মহিমদের কোনো টেলিগ্রাম না পেয়ে সে চিন্তিত ছিল।মৃণালের চিঠি পড়ে কেদারবাবু যা জানলেন - অসুস্থ অবস্থায় মহিম মৃণালের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে উঠেছে, একা একা। এর মানে কি দাঁড়ায়! কেদারবাবু আর ভাবতে পারেন না। তিনিও চলে যান মৃণালের ওখানে, মৃণাল তাকে নিজের বাবার মতোই আদর যত্ন করে।

এদিকে সুরেশ আর অচলা ঐ এলাকাতেই বাড়িঘর কিনে থাকা শুরু করে আলাদা ঘরে। সুরেশ অচলাকে ভালোবাসে, ঘর বাধতে চায় তার সাথে।কিন্তু কি করবে অচলা! একদিন অচলা আর সুরেশ বেড়াতে যায় বীণাপানিদের ওখানে আর তাদের অতিথি মহিমকে দেখেই মূর্ছা যায় অচলা। মহিমের আর বোঝার বাকি থাকে না কিছুই।সুরেশ বাড়ি ফিরেই চলে যায় প্লেগে আক্রান্ত হওয়া একগ্রামে, কারণ সে তো ডাক্তার হয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। দুইতিন দিন পর সুরেশের কোনো খোঁজ না থাকায় ভৃত্যকে সাথে নিয়ে গ্রামটায় যায় অচলা। সুরেশের খোঁজ পায়, কিন্তু ততক্ষণে ভারি দেরি হয়ে গেছে।সুরেশও মমরণঘাতী প্লেগে আক্রান্ত। সে চিঠি লিখে মহিমের কাছে। সুরেশ মারা যায়। মহিম তার বন্ধুর শেষকৃত্য সম্পাদন করে রওনা হয় বাড়ির দিকে, অচলাকে একা ফেলে!এদিকে মৃণাল আর কেদারবাবু কি কারণে যেন এদিকটায় আসছিলেন।গাড়ি থেকে নামবার সময় দেখা হয়ে যায় মহিমের সাথে। তারা মহিমের থেকে জানতে পারে সুরেশ আর নেই।এখান থেকে এগিয়ে গেলে সুরেশ এর নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা জানতে পারবে কোন বাড়িতে থাকতো সে, সেখানেই অচলা রয়েছে যে কি না এখন আশ্রমের খোঁজ করছে আশ্রয়ের জন্য!!!!
Profile Image for বিমুক্তি(Vimukti).
156 reviews89 followers
March 19, 2021
কি আর বলিব, এ বইয়ের প্রতিটা বাক্য আমার কিশোর মনে বড়ই অত্যাচার চালাইয়াছিল।

বইটি পড়ে একটা শিক্ষাই লাভ করিয়াছিলাম, প্রেমের ক্ষেত্রে নিজের সর্বোৎকৃষ্ট বন্ধুবরকেও বিশ্বাস করা অনুচিত। ইহাদেরকে সুযোগ প্রদান করিলে, বৃষ্টিস্নাত রাত্রিতে ট্রেন বদলের নামে আপনার বিবাহিত স্ত্রীকে লইয়া পলায়ন করিবে এবং যথারীতি বিধাতার অভিশাপে যমও তাহাকে অকালে তুলিয়া লইবে। এবং ভাবিয়া দেখেন, সে মরিবে কোথায়? আপনার তথাকথিত জীবনসঙ্গীনির ক্রোড়ে মাথা রাখিয়া! জ্বলিয়া পুড়িয়া মরিয়া ছারখার হইয়া যাইবেন না আপনি?

বউও হারাইলেন, বন্ধুও হারাইলেন…শরৎচন্দ্র দারুণ এক জীবনশিক্ষা প্রদান করিয়া গিয়াছেন আমাদের। শরৎ চাটুজ্যের ''দ্যা লাভ অফ লাইফ''কে ইশ্বর অকালে তুলিয়া লইয়াছিলেন, সেই ক্রোধ কি এই বইয়ে বন্ধুর উপর ঝাড়িলেন?
Profile Image for Habiba Kamrun.
36 reviews16 followers
February 15, 2021
অচলা-সুরেশ কিংবা মাহিম-অচলা কাহার ভালোবাসা সত্য ছিল, সেই ভালোবাসা কেনো এমন ছিলো এই প্রশ্নের জবাব কেবল শরৎ বাবুই জানেন, আমি আজও এর কোনো সদোত্তর পাইনে।

প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্যে সুরেশ হলো ধনীর দুলাল এবং ভীষণ বন্ধুবৎসল। অনেক ভালো গুণের সাথে তার একটা অবিশেষ গুণও রয়েছে, তা হলো কোনো জিনিসের প্রতি তার নজর পড়লে যেকোনো উপায়েই সেই জিনিস হাসিল করে নেয়।
সুরেশের প্রাণাধিক প্রিয় বন্ধু হলো মাহিম। কথায় কাজে সুরেশ যতটা চঞ্চল, মাহিম ঠিক তার উল্টো টা। মাহিমকে মিতভাষী উপাধি দিলেও যেন বেশি হয়ে যায়। সে দরিদ্র হিন্দু ব্রাহ্মণের ছেলে,কিন্তু শিক্ষিত। কিছুদিন হলো সে এক বেহ্ম মেয়ের প্রেমে পড়েছে এবং তাকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বেহ্মবিরোধী সুরেশ সেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। সুরেশ ঠাকুর দেবতায় বিশ্বাস করেনা, তবে জাতপাতের সংস্কারে বেশ স্পর্শকাতর। প্রাণের বন্ধু এক বেহ্ম কন্যাকে বিয়ে করে জাত খোয়াবে তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না। বন্ধুকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে বিয়ে ভাঙতে সেই মেয়ের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়।

কিন্তু ওই মেয়েকে দেখে সে নিজেই যেনো মোহে আটকে গেলো, বন্ধুর বিয়ে ভাঙতে গিয়ে সুরেশ একপ্রকারে নিজের বিয়ের সমস্ত ঠিক করে এলো। মেয়ের বাবা সবদিক ভেবে দেখলো মাহিম অপেক্ষা সুরেশ পাত্র হিসেবে ঢের ভালো। কিন্তু ঘটনা চক্তে সেই মেয়ের বিয়েটা মাহিমের সাথেই হলো, তারচেয়ে বলা যায় সেটা সুরেশের জন্যই সেটা সম্ভব হয় । আর সেই মেয়ের নাম হলো অচলা।
বিয়ের পর অচলা কলকাতা ছেড়ে পাড়াগাঁয়ে তার স্বামীর জীর্ণ কুটিরে এসে উঠে । সেখানে এসে হাজির হয় মাহিমের এক দূরসম্পর্কের ভগিনী মৃণাল। তার সাথে ছেলেবেলায় নাকি মাহিমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু যেকোনো কারণে হোক সেটা সম্ভব হয়নি। মৃণালের চঞ্চলতা অচলার যেমন ভালো লাগতো আবার মাঝে মাঝে তা বিরক্তির কারনও হয়ে উঠেছিলো। তবে মৃণালের প্রতি অচলার সবচেয়ে বেশি যেটা ছিলো তা হলো হিংসা।
এরপর এক দিন সুরেশও সেখানে এসে হাজির হয়। কিছুদিন পর একরাতে মাহিমের বাড়িতে আগুন লেগে ঘরবাড়ি সব পুড়ে যায়। মাহিম বেহ্ম মেয়ে বিয়ে করেছে বলে গ্রামের কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে না আসায় অগত্যা অচলা ফিরে যায় কলকাতায় তার বাবার কাছে।
গ্রামের বাড়িতে থেকে মাহিম অসুস্থ হয়ে পড়ায় সুরেশের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে হাওয়া বদল করতে মাহিম অচলা এবং সুরেশ তিনজনে রওনা দেয় পশ্চিমে। কিন্তু অচেনা এক স্টেশনে মাহিমকে রেখেই সুরেশ অচলাকে নিয়ে নেমে যায়। কিন্তু কেনো?

ত্রিভুজ প্রেমের কথা মাথায় এলেই প্রথমেই যে বইয়ের নাম মনে আসে তা হলো গৃহদাহ। শরৎ চন্দ্রের সেরা উপন্যাস গুলোর মধ্যে গৃহদাহ একটি । হৃদয়ে প্রেমের গভীর আকুলতা বোঝাতে যে শরৎ বাবুর জুড়ি নেই, গৃহদাহ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
যদিও শরৎ বাবুর সমালোচনা করার যোগ্যতা আমার নেই, তবুও মনে হয়েছে তিনি চাইলে উপন্যাস টা আরও ছোট করতে পারতেন, ২০/২৫ পাতা কম লিখলেও কাহিনি বর্ণনায় তেমন কোনো অসুবিধা হতো না।
সবশেষে বলবো, সুরেশের ব্যক্তিত্ত্ব আর অচলার প্রতি আকুলতা, অচলার আত্মোভিমান কিংবা দ্বিচারিতা, মাহিমের অতি শীতলতা এবং মৃণালের সরলতা সবমিলিয়ে অদ্ভুত এক ত্রিকোণ প্রেমের উপন্যাস এই গৃহদাহ। তাই আর দেরী না করে পড়েই ফেলুন।
Profile Image for Jenia Juthi .
258 reviews64 followers
June 21, 2021
প্রেম করিবেন তো প্রেমিক/প্রেমিকার আলাপ বন্ধুর কাছে করিতে যাবেন না। বিবাহ করিবেন তো সেই একই ব্যাপার। ব্যক্তিগত ব্যাপার ব্যক্তিগতই রাখিবেন। নয়তো দেখিবেন, কখন আপনার 'মানুষটি' অন্যজনের হয়ে গেছে। টেরও পাবেন না!
সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কাহিনী নিয়ে মানুষের কান্নাকাটি দেখতাম, আর হাসতাম। আর আ�� এই বইখানা শেষ করিয়া হাসি দূরে থাক বিরক্তি লেগেছে।
অচলা কাকে ভালোবাসে সে নিজেও বুঝে না, এত্ত কনফিউজড থাকলে বিয়েটা কেনো করতে গেলো? আর মহিম মানুষটা ভালো, বেকুব শ্রেণীতে পড়ে না৷ তবুও সবটা জেনে-বুঝেও চুপ করে থাকাটা বেকুব শ্রেণীর মানুষের কাজ। আর সুরেশের ব্যাপারটাই বুঝলাম না, এই বেটার কি সারাক্ষণ মুড সুইং হতো? কি আশ্চর্য, মানুষ!
আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে মৃণালকে:3

এতো বিরক্ত লাগা স্বত্তেও পুরো বই শেষ করেছি। কিভাবে? কে জানে!!
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
523 reviews190 followers
December 8, 2025
questionable চরিত্র৷ কিন্তু সেটাই যেনো পড়ার জন্য ইচ্ছে বেশি জাগিয়েছে।
Profile Image for Somrat Hossain.
14 reviews15 followers
November 18, 2017
উপন্যাসটি মূলত তিনটা চরিত্র- অচলা, মহিম এবং সুরেশকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। পরে মৃণাল নামের একটা চরিত্র ক্ষণিকের জন্য উদয় হয়ে উপন্যাসটির বড় একটা ভূমিকা রাখে।
মহিম এবং সুরেশ স্কুলজীবনের বন্ধু। তাদের দুজনের সম্পর্ক একসময় খুব ভাল ছিল। তবে এখন আর তেমনটা নেই। সুরেশ পড়াশোনা করে মেডিকেলে। বাবার অঢেল সম্পত্তিতে পাওয়ার পাল্লা বেশ ভারী। কিন্তু মনটা তার ভাল, সমাজের প্রতিটা বিষয়ে আগ্রহ এবং দরাজ হৃদয়। অন্যদিকে মহিম কোনরকমে কলেজে বি.এ. করছে। দারিদ্র্যের মধ্যে অতি সাধারণ জীবনযাপন করছে নিভৃতে, সুরেশের মত সমাজের থেকে বাইরে। তবে তার জীবনের মেঘের অন্তরালে সূর্যস্বরূপ একজন হচ্ছে অচলা। তাদের সম্পর্কও পরিণয়ের সামনে উপস্থিত। কিন্তু ব্রাহ্মণ মহিমের সাথে ব্রাহ্ম অচলার সম্পর্ক অনেকদিন পর উদয় হওয়া সুরেশের চোখে দৃষ্টিকটু। সুতরাং বন্ধুকে সমাজের আদর্শ সচেতন করে তোলার জন্য অচলার দ্বারে পা রাখে সে। উপন্যাসটির জটিল মনস্তাত্ত্বিক কাহিনীতে প্রবেশেও সেখান থেকে।
একদিকে মহিম নিস্পৃহ। ভালোবাসলেও কোনকিছু জোর করে কিংবা নিজের কর্তৃক্ত প্রকাশ করে আঁকড়ে ধরা মানুষ সে নয়। অন্যদিকে সুরেশ যেটা পছন্দ করে সেটা নিজের করে নিতে শিখেছে আজীবন। এখন অচলাকে দেখার সাথে সাথে তার মনে যে ঝড় ওঠে সেটাও থামানোর জন্য তার নীতিবান মানসিকতায় আঘাত লাগে। অন্যদিকে অচলাও দ্বিধান্বিত। সুপ্ত মানসিকতার মহিমের প্রতি তার প্রেম শুধু সম্পর্কের পরিণতি। যেটা সে সুরেশের মধ্য পায় সেটা হয়ত মহিমের মধ্যেও দেখতে চায়। সমস্যা এটাই, ত্রিমুখী প্রেম।
ক্ষণিক সময়ের জন্য উদয় হওয়া মৃণালের আবির্ভাবে অচলার মনে হিংসার জন্ম নেয়। আদর্শ হিন্দু সমাজের মৃণাল যেন তাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে তার কর্তৃত্বে আঘাত করে। সমাজে তার একমাত্র সম্পদ স্বামীর প্রতি অধিকার শুধু যে তার একার নয় সেটা বুঝিয়ে দেয়। গ্রাম্য মৃণালের আচার-ব্যবহার শহুরে মেয়ে অচলার ভাল লাগেনা।
আজীবন শহরে বাস করা অচলার গ্রামে এসে খড়ের ঘরে বাস করতে গিয়ে প্রেমে ভাঁটা পড়ে। কিন্তু সেটা হতনা যদি মহিম তার পাশে দাঁড়াত, তার অনুভূতি ভাগাভাগি করে নিত। অন্যদিকে সুরেশের চিত্র ভিন্নরকম।
বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতি অনেক বড় অভিযোগ- তিনি গোঁড়া হিন্দু, আচারপন্থী এবং প্রগতিশীল নন। একজন লেখকের জন্য সার্বিক সমাজের চিত্র তুলে ধরার জন্য প্রগতিশীল হওয়ার প্রয়োজন আছে। ‘গৃহদাহ’ উপন্যাস পড়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে হিন্দু সমাজের প্রতি দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। তিনি প্রকটভাবে প্রগতিশীল ভাব যেমন দেখাননি, তেমনিভাবে প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাবও দেখাননি। প্রথমে মহিমের দ্বারা ব্রাহ্ম মেয়েকে বিয়ে করার মধ্যে যে প্রগতিশীল মনোভাব দেখা যায় তা বেশিদূর স্থায়ী হয়না। মৃণাল চরিত্রটি ব্রাহ্ম অচলাকে হিন্দু সমাজের শিক্ষা দেওয়ার জন্যেই যেন আবির্ভাব। উপন্যাসের শেষে অচলার বাবার মৃণালকে পরের জন্মের মেয়ে হিসেবে চাওয়া যেন লেখকের নিজ কণ্ঠের কথা।
যদি প্রগতিশীল হতো তাহলে শেষে মহিম অচলাকে গ্রহণ করত। একজন মানুষের ভুল হতেই পারে। নির্দিধায় গ্রহণ না করে একজন অসহায় মহিলাকে সমাজের স্রোতে ভাসিয়ে দেয়া গোঁড়ামির পরিচয় দেয়। মোটকথা লেখক সমাজের প্রচলিত ধ্যানধারণাকে ছাপিয়ে যেতে পারেননি।
শরৎচন্দ্রের সৃষ্টির মধ্যে ‘গৃহাদাহ’ উপন্যাসে অভিনবত্ব দেখতে পাই। মনস্তাত্ত্বিক আলোচনার দ্বারা মনোলোকে গভীরভাবে জটবিস্তৃত করেছেন। নারী মনস্তত্ত্ব এবং স্বাধীন প্রেমের মানসিকতা শরৎসাহিত্যে অভিনব বিষয়। বাংলার নারীহৃদয়ের চিত্র তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর তুলনা নেই। কিন্তু তাঁর ‘গৃহদাহ’ উপন্যাসের অচলা সেই নারীকুলের গণ্ডি পেরিয়ে আলাদা একটা স্থান করে নিয়েছে। বিবাহিত নারীর অন্য পুরুষের প্রতি বাসনা, নারীর যে আলাদা একটা রূপ বা স্বাধীন সত্ত্বা আছে তা মনস্তাত্ত্বিক আলোচনার দ্বারা তুলে ধরে, দ্বন্দ্ব সংঘাতের সৃষ্টি করে তাঁর উপন্যাসটিকে তিনি আধুনিক সাহিত্যের একটা অভিনব রূপ দিয়েছেন।
রেটিং: ৭.৫/১০

Profile Image for Protik Mondal.
3 reviews3 followers
July 3, 2018
ত্রিভুজ প্রেমের ত্রিমুখী সংঘর্ষে সৃষ্টি তীব্র অন্তর্দাহমূলক উপন্যাস "গৃহদাহ" আর দ্বন্দ্বমুখর এই তিন চরিত্র মহিম, সুরেশ, অচলা।
অবস্থাসম্পন্ন-বন্ধুবৎসল-প্রচন্ড ঝোঁকপ্রবন সুরেশের দরিদ্র বন্ধু মহিম হচ্ছে এগল্পের নায়ক। যার চরিত্রের গাম্ভীর্য এবং অবিচলতা তার অন্যান্য সব বৈশিষ্ট্যকে শাসন করেছে প্রতিনিয়ত।
ব্রাহ্মপিতার শিক্ষিতা এবং মাতৃহীন কন্যা অচলা মহিমের বাগদত্তা। কিন্তু ব্রাহ্ম-বিদ্বেষী ব্রাহ্মন ঘরের নাস্তিক তরুন সুরেশ কোন ভাবেই তার বন্ধুটির এ এই হবু-বধূকে সমর্থন না করতে পেরে ছুটে যায় অচলাদের বাড়ি।
কিন্তু অচলার রূপে-গুণে মুগ্ধ হয়ে বরং নিজেই তার প্রতি তীব্রভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, তার খামখেয়ালিপনার শিকার হয়ে মহিম-অচলার নিরুপদ্রব লক্ষ্য খেয়া হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে অবশ্য মহিম আর অচলার বিয়েটা হয়েই যায়।

আজন্ম কলকাতাবাসী অচলা, স্বামীর সংসার করতে দূর পল্লীগ্রামে যায়। কিন্তু তার পল্লী সম্বন্ধীয় স্বপ্ন আর সাক্ষাৎ বাস্তবতার তীব্র আঘাতে নব্য-দাম্পত্য কিছুটা শ্রীহীন হয়ে পড়ে, অন্যদিকে আদর্শ এক বাঙালি গার্হস্থ্য-বধূ "মৃণাল"এর স্বভাবসুলভ ঠাট্টা আর আচরনের অর্থ বুঝতে না পেরে ভুল বুঝে দাম্পত্যকলহকে বাড়িয়ে তোলে আরো।
হয়তোবা এই কলহ আবার শান্ত হয়ে যেতো, কিন্তু সেখানে সাইক্লোনের মত আঘাত হানে সুরেশ এবং তার অপ্রতিরোধ্য আবেগের ঝোঁক।
সুরেশের অসংযত-অবাধ্য আচরন অন্যদিকে মহিমের কঠোর-সংযত-অবিচল গাম্ভীর্য এবং অপ্রকাশিত অতি-অবদমিত আবেগের চাপে পড়ে অচলা-মহিমের ঘর পুঁড়ে ছাই হয়ে যায়।

এরপরেও অবশ্য একটা সুযোগ আসে একসময় মহিম-অচলার পুঁড়ে যাওয়া সংসার আর ক্ষত সারাবার। অনেকটা ক্ষত কাটিয়েও ওঠে তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না সুরেশের নিতান্ত অসংযত-শীথিল চরিত্র এবং একইসাথে অচলার চরিত্রের পর্যাপ্ত দৃঢ়তার কারনে। গল্পের পরবর্তী বেশ খানিকটা অংশ তারপর থেকে অসহ্য-তাপদগ্ধ তাই আলোচনা নিষ্প্রয়োজন।

★ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ-
গৃহদাহের ঘর-পোঁড়া গন্ধে পাঠকের যখন দম-বন্ধের উপক্রম, প্রচণ্ড ধোঁয়ায় যখন দিশাহীন; তখন দিশা দেখায় "মৃণাল" চরিত্রটি। যেই আদর্শ বধূ চরিত্রটি, অসমবয়সী এক বৃদ্ধ স্বামীকে ভালবেসেছে এবং স্বামীর মৃত্যুর পর অকাল-বৈধব্যেও চরিত্র স্খলিত হয় নি।

পাঠক যদি অচলার শহুরে আভিজাত্য, শিক্ষা আর উন্নত রুচির বিপরীতে যদি অজ-পাড়াগাঁর মৃণালকে দাঁড় করায় তাহলে স্পষ্ট দেখা যাবে ; মৃণালের "আদর্শবাদ"এর স্নিগ্ধতা এবং মুগ্ধতার কাছে বাদবাকী সব বড্ড ফ্যাকাশে।
"অচলা"রা তাদের রূপ-গুণ-শিক্ষা-রুচি দিয়ে সুরেশের মত হাজারটা পতঙ্গকে পুঁড়িয়ে নিজের ঘরও পোঁড়াতে পারে। কিন্তু "মৃণাল"রা তাদের "আদর্শবাদ"এর স্নিগ্ধতায় সবাইকে আলো দেয়, কাউকে পোঁড়ায় না।

★ব্যক্তিগত মতামত-
"গৃহদাহ" উপন্যাসে গৃহ দাহ করার পেছনে আমি প্রধান তিন চরিত্রকেই দায়ী করব, কারন তাদের কেউই ত্রুটিমুক্ত নয়। আপাতদৃষ্টিতে মহিমের চারিত্রিক দৃঢ়তাকে ইতিবাচক মনে হলেও অন্যের কাছে নিজেকে অস্পষ্ট রাখা অবশ্যই ভীষন দোষ।
বরং এই তিন চরিত্রের বাইরে "মৃণাল" এই উপন্যাসের সবথেকে আকর্ষনীয় এবং মুস্কিল-আসান চরিত্র আমার কাছে। মৃণালে আদর্শের কাছে সকলকেই নত হতে হয়েছে।
যদিও গল্পের শেষদিকে সুরেশের মৃত্যুর পর অচলা যখন সব কিছুর চাপে বিদ্ধ্বস্ত তখন একপর্যায়ে মৃণাল তার সেজদা(মহিম) কে বলে, "আমার যে শিক্ষা সে তো তোমারই দেওয়া।" এক্ষেত্রে মহিম চরিত্রটি যথেষ্ট শক্তিশালী।
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,772 reviews357 followers
June 8, 2025
সাহিত্যের ডাইনিং টেবিলে বসার যোগ্য নয় এমন বইগুলো: যারা কেবল গিমিক আর হাইপেই উড়ে বেড়ায়

ডিসক্লেইমার: "ওভাররেটেড" মানেই খারাপ না—এইটা মাথায় রাখবেন /অনেক সময় একটা বই বিশাল জনপ্রিয় হয় কারণ সেটা সাংস্কৃতিক বা আবেগগতভাবে মানুষকে স্পর্শ করে। কিন্তু তাই বলে সবসময় সেটার সাহিত্যমান একেবারেই উঁচু নয়।

গৃহদাহ — প্রেমের নামে দহনের ‘ফাইন প্যাকেজ’ শরৎচন্দ্র যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে নিশ্চয়ই একখানা ফেসবুক পোস্ট দিতেন: “Feeling Betrayed at Mahim’s Bari with Achala. 💔 #TrustNoOne #DeadBestie”

সারমর্মের চুনোপুঁটি: একটা মেয়ে, দুই বন্ধু, একটা ট্রেন, আর অতিরিক্ত মাত্রার দুঃখ — এই নিয়েই "গৃহদাহ", যেটা দেখে রবীন্দ্রনাথও বলতেন:

“ভাই শরৎ, একটু ব্রেক নাও। প্রেম নিয়ে এত emotional investment করলে LIC-ও ক্লেম মানবে না।” 😵‍💫

রোস্ট: চরিত্রভিত্তিক ডেমোলিশন:

১) সুরেশ – সাদা কোটে লুকানো ছুরি; বাইরে ভদ্রলোক, ভিতরে এক নম্বর প্রেম-জুয়ারি। প্রথমে মহিমের জন্য কাঁদে, তারপর তারই প্রেমে ঢুকতে লেগে যায়। বন্ধু বললে শত্রু কাকে বলে, সুরেশ তার case study. আরে ভাই, "বিয়েতে বাধা দিচ্ছো", বুঝলাম। কিন্তু train ধরার ছুতোয় বৌ নিয়ে চম্পট?! এ আবার কোন cinematic villainy? "ধর্ম রক্ষা" করতে গিয়ে নিজেই character assassination-এর মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠলেন।

২) অচলা – মন না হওয়া, মুখ না খোলা: একদম textbook “শরৎনায়িকা” — চোখে জল, ঠোঁটে নীরবতা, আর হৃদয়ে এক গ্লিচি প্রেম। একে বলে "emotional buffering" — মহিম না সুরেশ? দাঁড়িয়ে থাকুন, লোডিং হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কী করল? নির্বাক হেঁটে গেল একটা নতুন ট্র্যাজেডির দিকে।

শুধু একটা প্রশ্ন, অচলা: “মেয়েটার এত সমস্যা হইতেছিল, কেউ ওরে একবার বলল না – 'আপনার থেরাপি লাগবে বৌদি'?”

৩) মহিম – তুমি আমার না, কবরে যাওয়ার পার্টনার। মহিম মানেই কবিতা, আত্মত্যাগ, আর হঠাৎ মরে যাওয়া — যেন শরৎচন্দ্রর কাহিনির পেটেন্টকৃত ট্র্যাজেডি বট। বন্ধুর জন্য ছেড়ে দিল, পরে বৌয়ের জন্য মরল — কিন্তু এভাবে মরলে তো বন্ধুর শেষ আলিঙ্গনে নয়, বরং বউয়ের কোলে মাথা রেখে ওয়াইফাই সিগন্যালের মতো নিভে যাওয়া!

“একটা ছেলে, একটা মেয়ে, একটা ট্রেন আর কিছু দারিদ্র্য… এই নিয়েই আমি প্রেম, সমাজ, ধর্ম, বন্ধুত্ব — সব একসাথে হালকা আগুনে পুড়িয়ে পরিবেশন করব।

নাম: ‘গৃহদাহ’

(পাঠকের হৃদয়ও দাহ হবে, কেউ বাঁচবে না!)”

শিক্ষণীয় কথা (তামাশার ছলে): প্রেমে বিশ্বাস করো — কিন্তু সুরেশের মতো বন্ধুর হাতে নিজের বিয়ে ফেলে রেখো না।

ট্রেনে ওঠার আগে নিশ্চিত হও, কে কোথায় নামবে — না হলে তুমি বিয়ে করে শেষ অবধি বিধবা হয়ে যাবে নিজেরই বিয়েতে।

যদি কোনো গল্পে শরৎচন্দ্র লেখক হন আর ট্রেন থাকে প্লটে — দৌড়াও! দেরি হলে মরো!

শর্ট ফিল্মে রূপান্তর হলে নাম হতো: “Pyar Ka Train Signal — Ek Grihodah Ki Kahani”

শেষকথা: “গৃহদাহ” মানে প্রেম নয়, রসায়নের প্র্যাকটিক্যাল! সবাই পুড়ে ছাই — কেউ সমাজে, কেউ ধর্মে, কেউ বন্ধুত্বে, আর কেউ প্রেমে।
শুধু পাঠকই বেঁচে থাকে, সেটাও পেট ব্যাথার ওষুধ খেয়ে।”
Profile Image for Amjad Hossain.
196 reviews1 follower
July 27, 2023
বড়ই ব্যাথিত করিলা অচলা!

যাহাকে ভালবাসি বলিয়া বোধ করি তাহাকে যদি অকপটে বুঝাইয়া না দিতে পারিলাম তবে আর কি থাকে!
আর অভিপ্রায় যদি এমনি হইয়া থাকে যে তাহাকে ভালবাসিয়াছি বলিয়া বলিতে যাইবোনা, অপেক্ষাতর ই থাকিব তদপুরি কেন অন্যদ্বারা নিজের আত্মকে ভুলাইয়া চরিত্রে কালি লেপন করিব..??

নারী তুমি বড়ই দুর্বোধ্য।
Profile Image for Samia Rahman.
34 reviews2 followers
March 13, 2023
বই: গৃহদাহ
লেখক: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
আলোচনা:

ধৈর্য হারালে বইটার নেগেটিভ রিভিউই দিতাম।
হাতে গুনা কয়েকটা চরিত্র বইটাতে। মহিম, সুরেশ, অচলা, অচলার বাবা, মৃণাল, রাক্ষসী আর রাক্ষসীর বৃদ্ধ শশুর।  মহিমকে প্রথমে মেরুদণ্ডহীন বলেই মনে হয়েছে, অচলা যেন সংজ্ঞাহীন আর সুরেশ দুমুখো মানুষ।

'গৃহদাহ' যেন এই সময়েও জগৎ সংসারের স্পষ্ট দর্পণ। সুরেশ আর মহিম দুজনেই বাল্যকালের বন্ধু।  সুরেশ সবসময় যেকোনো মানুষের বিপদে প্রাণের পরোয়া না করে ঝাপিয়ে পড়ে।  দু'বার সে মহিমকে এভাবে মৃত্যুর হাত থেকে বাচিয়েছে। তাও কেন শেষমেষ মহিমের সাথে একটা নিষ্ঠুরতম খেলা খেললো ভেবে পাই না। বোধহয় এটাই বাস্তবতা।  ঘোরের মধ্যে মানুষ সব অপরাধ করে এটাই তার উদাহরণ। 
যদি বলি, উপন্যাসের প্রিয় চরিত্র কে? তবে সে, মৃণাল। " ক্ষমা মহৎ গুণ "-সব ধর্মই বলে। মৃণাল সেটা বিশ্বাস করে, অপরকে বিশ্বাস করতে শেখায়।  আধুনিকা, শিক্ষিতা অচলার বিবেকও গ্রাম্য, মূর্খ মৃণালের সরলতার কাছে হার মানে।
এ জগৎ সংসারে প্রতিনিয়ত কত জঘন্য পাপ, কত নিষ্ঠুরতার স্বীকার হচ্ছে মানুষ।  তাও শেষে যদি বিবেক জাগ্রত হয়, সব সুন্দর হতে পারে। এই তার উদাহরণ।
Profile Image for Bonnie.
24 reviews
April 23, 2024
শরৎচন্দ্রের গল্প গুলো যতই অপছন্দের হোক না কেন, কেন জানি শেষটা জানার জন্য কিউরিসিটির কোনো কমতি থাকে না।
প্রচন্ড দুর্বল নারী চরিত্র, দাম্পত্য কলহ, পরকীয়া প্রেম এই তিনটা জিনিসের জন্যই মূলত আমার কখনো শরৎপ্রেম তৈরি হবে না। আমায় পড়া এখন পর্যন্ত তাঁর সবগুলো বই এমনই। এই বইও তার ব্যতিক্রম নয়।
অচলার সুরেশ সামনে থাকলে সুরেশ কে চাই আর মহিম সামনে থাকলে মহিমকে চাই, মৃণালের প্রতি অহেতুক হিংসা, মহিমের সাথে ঝগড়া সবকিছু মিলিয়ে বইটার গল্পের বেশি অংশ টক্সিসিটেতে ভরা ছিল (হয়তো ভবিষ্যতে আবার যদি কখনো পড়া হয় তাহলে আমার এই ধারণা বদলাতে পারে)।

এই বইয়ের মৃণাল চরিত্রটাকে বেশ ভালো লেগেছে। এছাড়া ধর্ম এবং সমাজের যে সুপারস্টিশন, নিয়ম নীতির যে আলাপ অচলা এবং জ্যাঠামশাই মধ্যে হয়েছে তা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

ইন্টারেস্টিং পার্ট হলো পড়ার শুরুতে যাকে সবথেকে বেশি ঘৃণা করবেন, শেষ টায় গিয়ে তাকে আর তেমন একটা খারাপ মনে হবে না।
Profile Image for নির্ঝরিণী.
5 reviews
August 21, 2022
অর্ধেক পড়ে বাকি অর্ধেক খুব কষ্টে শেষ করেছি! পড়তে ইচ্ছেই করছিলো না তবুও শেষ অবধি পড়লাম। এক মৃণাল ছাড়া আর কাউকেই ভালো লাগে নি, পিসিমা চরিত্রটা ভালো ছিলো তবে গল্পে তাকে খুব একটা দেখা যায় নি। অচলা বলি, সুরেশ বলি কিংবা মহিম তিনজনই নিজ দোষে দোষী! মহিমেরও এখানে দোষ আছে, সবকিছুতে নিস্তব্ধ থাকাটা মোটেই ভালো লাগে নি। আর গল্পের শেষ অংশটুকু তো মহা বিরক্তিকর! আমার কেন যেন মনে হয়, লেখক চরিত্রগুলোকে গ্রে করতে চেয়েছিলো তবে সেটা সম্ভব হয় নি বরং বিরক্তিকর হয়ে গেছে। আর রইলো অচলার বাবা, সবচেয়ে দোষী এই ব্যক্তি নিজে অথচ গল্পের শেষে তাকে সাধু বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Profile Image for Rasel K..
25 reviews
April 12, 2022
একটা চরিত্রও সেভাবে মনে ধরেনি। সবচেয়ে বিরক্তিকর লেগেছে মহিমকে।
Profile Image for Nandini.
17 reviews
May 11, 2023
ত্রিকনী প্রেমের ওপর ভিক্তি করে লিখিত উপন্যাস,মাঝ পর্যন্ত খুব ভালো লেগেছিলো, কিন্তু মহেন্দ্র কে ট্রেনযাত্রায় ছেড়ে আসা থেকে শুরু হয়েছে বইয়ের ওপর বিরক্তি
Profile Image for Al Amin Sarker.
45 reviews1 follower
October 24, 2020
বাংলার চিরায়ত উপন্যাসের মধ্যে অন্যতম উপন্যাস। কিন্তু বুঝতে একটু সময় লাগে অনেক লাইন মাঝে মাঝে 3-4 বার পর্যন্ত পড়ছি তারপরে বুঝতে পারছি। এক কথায় অসাধারণ একটি উপন্যাস।
Profile Image for Atik Rahman.
31 reviews2 followers
December 29, 2015
মহিম আর সুরেশ পরম বন্ধু। বন্ধুত্ব পরম হলে কি হবে, দুজনের ব্যক্তিত্ব দুরকম। সুরেশ ধনী কিন্তু মারাত্বক আবেগপ্রবণ। মানুষের বিপদে জীবন বাজি রেখে সাহায্য করে কিন্তু রিপুর তাড়না থেকে মুক্ত নয়। মহিম দরিদ্র, ধীরবুদ্ধিসম্পন্ন, যথেষ্ট আত্মসম্মানবোধে আক্রান্ত এবং যেকোনো প্রকার আবেগ প্রকাশে একেবারেই অনিচ্ছুক। সে ঝোকের বশে কাজ করে না, তাই শুধু বন্ধুর দোহাই দিয়েই সুরেশ তাকে অনেক সাহায্য করতে চেয়েছিল যার কোনোটাই মহিম গ্রহন করেনি। সুরেশ ব্রাহ্মদের দুচোখে দেখতে পারত না, তার মতে ব্রাহ্মরা হল হিন্দু সমাজকে বাতিল ঘোষণা করে হিন্দু থেকে বের হয়ে যাওয়া জাতি। নিজে হিন্দু হিসেবে ব্রাহ্মদের ঘৃণা করাটা তাই সে সামাজিক দায়িত্ব জ্ঞান মনে করত। আবার বন্ধুর যেকোনো কিছু সে নিজের বলে মনে করত। তাই যখন হটাৎ জানতে পারল যে মহিম একটা ব্রাহ্ম মেয়ের প্রেমে পরেছে তখন সে তার বন্ধুর পিছনে উঠেপড়ে লাগল যেন সে ওই মেয়ের থেকে সরে আসে। এভাবে একদিন যখন মহিম তার নিজস্ব অভ্যাসবশত নিরুদ্দেশ হল সুরেশ তখন খুজতে খুজতে সেই ব্রাহ্ম মেয়ের বাসায় গিয়ে উপস্থিত হল। মেয়েটির নাম অচলা। অচলার বাসায় গিয়ে সে মহিম কে খুজে পেল না, তাই সে তখন তাদের বিয়েটা ভাঙতে সচেষ্ট হল। সে অচলা ও তার বাবার কান ভারী করে তুলল। এদিকে আরেকটা জিনিশ মাথাচাড়া দিল। অচলার জ্ঞানী ও স্থির ভাষা, চমৎকার আচরণ সুরেশকে বিভ্রান্ত করে তুলল, এতদিনের সংস্কার ভুলে সে নিজেও অচলার প্রেমে পরে গেল। শুরু হল মহিম-অচলা-সুরেশ এ তিনের অসম ত্রিভুজ প্রেম। মহিমের ছিল স্থিরবুদ্ধিজ্ঞান, আত্মসংযম। টাকা না থাকলেও যথেষ্ট ভাল ব্যক্তিত্ব ছিল মহিমের যার কারনে অচলা তার প্রতি দুর্বল হয়েছিল। অপরদিকে সুরেশ তার ভাবাবেগ কখনো লুকিয়ে রাখতে পারত না। তার ছিল যথেষ্ট উচ্ছল প্রানশক্তি। এই ব্যাপারটাও অচলাকে আকর্ষণ করত।
.
এটা হল কাহিনির শুরু। এখান থেকেই মূল কাহিনী শুরু হয়। কাহিনীর পদে পদে বিস্ময় লুকানো। গৃহদাহ শরৎচন্দ্রের একটি অসাধারণ উপন্যাস। প্রেম ব্যাপারটা অন্তর্ভুক্ত বলে অনেকে এটাকে রোমান্টিক উপন্যাস বলতে পারে। তবে সেটা হবে ভুল। এটা হালকা ট্র‍্যাজেডী ঘরানার সামাজিক উপন্যাস। এতে প্রেমের প্রকাশ থেকে প্রেমের ফলাফল বেশি প্রকাশ পেয়েছে। তবে এটাও প্রধান আলোচ্য বিষয় না। সুরেশ মহান সেইসাথে পিশাচও। মহিম উদার, ধৈর্যশীল। অচলা পড়েছে গ্যারাকলে। আবেগ আর বৌদ্ধিক সত্বার লড়াই চলেছে পুরো উপন্যাস জুড়ে। অবসর সময়ে পড়ার জন্য দারুন একটি বই।
Profile Image for Asadullah Hill Galib.
44 reviews2 followers
April 26, 2020
দুই বাল্যবন্ধু সুরেশ আর মহিম আর তাদের মাঝে আরেক নারী অচলা; এদের ত্রিমুখী প্রেম বা ঘোলাটে একটা ব্যাপার নিয়েই উপন্যাস এগিয়েছে। মহিম ধীর-স্থির, মনের কথা মনেই রাখে; সুরেশ খুবই চঞ্চল, প্রতিপত্তিশালী, যা মনে আসে তাই করে বসে; অন্যদিকে অচলা ব্রাহ্ম তরুণী, ছোঁয়া বাছ বিচারের বালাই নেই। অচলা মহিমের প্রেম ও বিয়ে হলেও উপন্যাসের প্রতি পরতে পরতে সুরেশ এসে বাগড়া দিতে থাকে। অধিকাংশ সময়ে সুরেশ বেশী বেশী করে বিরক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে পাঠককে। এদিকে মহিমের পাথর মূর্তির মত স্বভাব অচলার মনে সংশয় জাগায় তাদের সত্যিকার ভালবাসা নিয়ে। এরই মধ্যে মহিমের গ্রামের আশ্রিতা রসিক তরুণী মৃণাল; তার কথা বার্তায় সন্দেহ আরও গাড় হয় অচলার। মাঝেমধ্যে অচলার কাজকর্মও অস্বাভাবিক ঠেকেছে, দুই নৌকায় পা দেয়ার মত অবস্থা। আর ওদিকে সুরেশ তার স্বভাবসুলভ বাম হাত যেখানে সেখানে ঢুকিয়ে যাচ্ছেই... সব মিলিয়ে গোলমেলে অবস্থা। মোটামুটি লেগেছে সব মিলিয়ে।
8 reviews
August 8, 2020
It's not an easy read, it's not a blissful tale. It's full of angst and error in judgement. The happiness of domestic life versus the sinful pleasure of passionate love. The contrast in lead characters create a stage for absolute ruin. Each flaw of character is magnified and unified into one great suffering.
Profile Image for Aurora.
98 reviews35 followers
April 27, 2019
অনেক আগে পড়ছিলাম। মাথাটা এত খারাপ হইছিল -_-
Profile Image for Fazle  Chisty Himel.
11 reviews44 followers
May 7, 2019
খুব কষ্ট করে শেষ করছি। আশা অনুরূপ ভালোলাগেনি।😐
Profile Image for Sazzad Hossen.
21 reviews6 followers
August 23, 2020
উপন্যাসটা পড়তে পড়তে কখন শেষ হলো বুঝতেই পারি নি।তবে মহিম অচলার মিল হলে ভালো লাগতো আরও। অসাধারণ লেখা।
Profile Image for Na Bi Ha.
78 reviews6 followers
Read
December 11, 2021
তখন চল টা এমন ছিল যদি উপন্যাসের চরিত্র মানুষ হিসেবে খারাপও হয়, তবু পাঠকের পড়ে দয়া হতে বাধ্য। আর ভালো হলে তো কথাই নেই। কিন্তু সে ধারার বাইরে গিয়ে শরৎ এখানে প্রধান তিনটি চরিত্র 'ম', 'সু' ও 'অ' এনেছেন, যারা নিজ নিজ প্রেক্ষাপটে নানা গুণে গুণী এবং একই সাথে দোষী।
এজন্যই হয়ত এই উপন্যাসটি তখনকার পাঠকদের মনে দাগ কেটে দিয়েছিল।
ঐ তিনের মধ্যে নারী চরিত্রটির দোদুল্যমান মনের চরমভাবাপন্ন অবস্থা ��্রকৃষ��টরূপে চোখে পড়ে। তার নিজের নিষ্ঠা যেমন নড়বড়ে, তেমনি শিক্ষা ও মন সদা কম্পমান। তবু সে দিনশেষে এক ক্ষেত্রে ক্ষমা পেতেই পারে। কেননা মানসিক পরিপক্বতা আসার আগে যাদের গাঁট-ছাট বেঁধে বিবাহের আয়োজন হয়, সে সব নারী ভুলে ভরা জীবনের পথে অগ্রসর হবে, সেইটেই যেন স্বাভাবিক। 'ম' ও 'সু' য়ের মধ্যেও কাউকে নিতান্ত খারাপ, আবার অপরপক্ষকে অতি ভালো বলা যায় না।
এছাড়া অন্যান্য গৌণ চরিত্রগুলোও দোষ ও গুণে সমভাবে সজ্জিত, ঠিক বাস্তবে চলাফেরারত মানব-মানবীর মত।
বইটি পড়তে গিয়ে শুরুর দিকে মনে হয়েছে দীর্ঘসূত্রতার বারোমাস কেটে যাচ্ছে। অযথা কিছু পৃষ্ঠা লেখার কারণ সম্ভবত লেখকের খামখেয়ালিপনা, যেগুলো না থাকলেও খুব একটা ক্ষতি হত না। আবার কিছু অংশে মনে হয়েছে শরৎ জোর করে একের পর এক কাকতালীয় ঘটনা জোড়াতালি দিয়ে ঘটনা অগ্রসর করতে চাইছেন।এমনই একটি ব্যাপার হলো 'সু' ও 'অ' য়ের অজ্ঞাতবাসে লেখক যেভাবে 'ম' য়ের অবতরণ ঘটান। আরো অজস্র উদাহরণ আছে।

উপন্যাসে ধর্মের এক অন্তর্নিহিত সংঘর্ষ দেখা যায়। ধর্মের ভালো দিক অনিবার্য। থাকবেই,  চিরসত্যের মত। তবু কিছু সংস্কার যেন কু'রূপে মনুষ্য মাঝে জ্বলতে থাকে, যেগুলো শুধু অন্য ধর্ম ও মতবাদের মানুষকে প্রত্যাখ্যান করতেই শেখায়, ক্ষমা করতে বা গ্রহণ করে নিতে নয়। সনাতন হিন্দু ধর্ম ও তার ব্যতিক্রমী একটি শাখা ব্রাক্ষ্মধর্মের সংঘাত চোখে পড়ে। তবে বইয়ের সমাপ্তিতে লেখক সে ধর্মকে ধিক্কার জানিয়েছেন, যে ধর্মের ছত্রছায়ায় ক্ষেত্র বিশেষে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করে। একদা যা পিতৃতুল্য স্নেহ ছিল তা কর্দয গালাগালে রূপ নিতে দ্বিধা করে না। সমতার বদলে ভেদাভেদই যেন মূখ্য সেখানে।

আরেকটি চমৎকার ব্যাপারে শরৎ নিপুণভাবে দেখাতে পেরেছেন।
এক চরিত্র যা দেখছে, যা বলছে, তাতে তার মুখের ভাবভঙ্গি দেখে অপর চরিত্র নিজের মত করে কিছু একটা বুঝে নিচ্ছে, ভুল কিছুকে সঠিক ভেবে নিচ্ছে মনে মনে বা সত্যকে ভাবছে মিথ্যা। আমার কাছে এটি এই উপন্যাসের সবচেয়ে আর্কষণীয় দিক বলে মনে হয়েছে।

নিষ্ঠাবান, নীতিতে একরোখা, পাপশূন্য এবং পরম সুশীল নায়ক-নায়িকার পরিবর্তে শরৎচন্দ্র ভুল-শুদ্ধে ভরা, অনুশোচনায় দগ্ধ, বিষাদে মূঢ়, প্রতারণায় জব্দ চরিত্রদের দেখিয়েছেন যেগুলো বাস্তবতার খুব কাছাকাছি বলে বোধ হয়।

জীবনে অসাবধানতা, অদূরদর্শীতা, ভুল ও হিতাহিতজ্ঞানশূন্যতার প্রভাবে সাজানো গৃহের অভ্যন্তরে ও বাহিরে দাহ হতে থাকে, যা জীবনকে ভস্মীভূত না করা অব্দি কোনো ভাবেই থামে না৷
আর পাপের অনুশোচনা-অনুতাপ অপ্রতিরোধ্য অগ্নিসংযোগের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়৷
কারণ, সেই দাবানল কেবলই বাড়ে, কখনো কমে না।
Profile Image for Nuhash.
221 reviews8 followers
May 12, 2023
ভালোবাসা এমন জিনিস যাকে স্পর্শ করলে মানুষের হিতাহিতজ্ঞান থাকে না। মানুষ বুঝতে পারে না অদৃষ্টে তার জন্য কতই না কান্না বয়ে বেড়াচ্ছে। কখনো এমন নির্মম করে ভালোবাসতে নেই, যে ভালোবাসায় না পেলে কারো কাছে দাঁড়াবার স্থান থাকে না। স্থান যদিও কেউ দেয়, চোখের মাঝে থাকা আদ্রতা ভরা বাষ্পিত সৌন্দর্যটা কখনো পাবে না। যে ভালবাসা মেঘলা দিনের মত সারাক্ষণ মনে ঘনিয়ে থাকে তাকে দূর করার দুরভিসন্ধি করা ভুল। বৃষ্টি না আসলেও ভালোবাসাটার মাঝে হঠাৎ কোনো সময়ে নীল আকাশটা তো দেখা দেয়, নিজের বিবেকের তাড়নায়। কোনো উপমা নেই, না দিতে পারব বইটা সম্পর্কে।

"গৃহদাহ" বইটিতে লেখক ভালোবাসার আদ্যোপান্ত ইতিহাস ব্যাখ্যা করেছেন। সাথে বলেছেন, তখনকার সমাজে কথা, হিন্দু নারীদের পতি প্রেম, একজন নিষ্ঠাবান হিন্দুর আচার-ব্যবহার, ধর্মকে ত্যাগ করা মানুষের চিত্র, নতুন করে জাগা বাক্ষ্ম মতের উত্থান, সর্বোপরি ভালোবাসার ত্যাগ তিতিক্ষা নিয়ে তিনজন মানুষের জীবন কথা।

প্রতিটি চরিত্র সুবিন্যস্ত। প্রচলিত ধারা থেকে বাহিরে গিয়ে তিনি সমাজ, ধর্ম নিয়ে কথা বলেছেন হালকা, ভাসা ভাসা বলা যায়। গল্পটা না পারবে কেউ সহ্য করতে, না পারবে গিলতে। মাধুর্যতা ভরা দৃষ্টিতে যাই হোক অচলাকে সবাই দেখলেও আমি পারব না দেখতে। সবাই যদি বলে, স্বামীর জন্য তো তার মন কেঁদেছে বারবার সুরেশের সাথে যাওয়ার সময়। সে কি মিথ্যে ? তা মিথ্যে কি না, যেমন লেখক বলেন নি, না আমিও বলতে চাই।

"গৃহদাহ" নামটির সাথে যর্থাথ মিল আছে বইটির। সত্যি এ এমন গৃহ থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। মহিমকে আমি কাপুরুষ বলব, সকল কিছু সহ্য করার জন্য। কেন মুখ বুঝে মেনে নেয় সে বারবার তাই মনে পড়ে! সুরেশ যখন অচলাকে দেখে সব ভুলে যায়, আবার অচলাও তার দিকে যখন ঝুঁকে অচলার উচিত ছিল মহিমকে বিয়ে না করা। কিন্তু বিয়ে করে মহিমকে এমন করে দাহ না করলেও সে পারত।

সুরেশকে ভালো লাগা খারাপ লাগা দিয়ে লেখক তৈরী করে করেছেন। একে ঘৃণা করতে ইচ্ছে করে, আবার খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। মানুষের জন্য তার যেভাবে মন কাঁদে বাংলার আর কোনো মানুষের কাঁদে না। অন্যের জন্য যে সে তার জীবন দিতে দ্বিধাবোধ করে না। আবার আরেকজনকে স্ত্রীকে ভালোবাসা, তাকে নিয়ে চলে যাওয়া, বন্ধুর ঘরে আগুন দেওয়া এগুলোর জন্য তাকে ঘৃণা করতে হয়। ভালোবাসে আসে না। বন্ধু হয়ে বন্ধুর সে সর্বনাশ করে তাকে বন্ধু না বলা উচিত।

অচলা এ নারীকে নিয়ে লেখারও ইচ্ছে নেই। পুরো বই জুঁড়ে ও যেন ছলনাময়ী। সুরেশকে যে যদি ইঙ্গিত না করত ভালোবাসার তাহলে এত দূর গড়াতো না কষ্ট গুলো। দুটি মানুষের জীবনের শেষ করেছে সে।

আরেকটি নারী মৃণাল। নারীর আসল সত্তা। যে জানে ভালোবাসতে। আমি তার প্রাণে শতকোটি প্রণাম করি। সে যে পুরো ভারত বর্ষের নারীর ভালোবাসার প্রতীক।

"গৃহদাহ" যে বই আমাকে তিক্ততার স্বাদ দিয়েছে খুব। আমি বোধহয় এত কষ্ট প্রতি লাইনে লাইনে কখনো পাই নি। বইটাকে এক দিক দিয়ে অসাধারণ বলতে ইচ্ছে করে, অন্যদিকে বলতে হয়, জঘন্যতম। কারণ প্রেমে সব কিছু সঠিক। কিন্তু সেই প্রেমটা তোমার যখন বুঝে নেওয়ার সময় ছিল তখন কেন নিলে না!
Displaying 1 - 30 of 72 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.