Jump to ratings and reviews
Rate this book

ওয়ান ডাউন

Rate this book

Unknown Binding

Published February 1, 2019

2 people are currently reading
32 people want to read

About the author

Rashat Rahman

12 books24 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
9 (29%)
4 stars
17 (54%)
3 stars
4 (12%)
2 stars
1 (3%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 12 of 12 reviews
Profile Image for Rafsan Riyadh.
27 reviews24 followers
February 7, 2019
৩.৫★
এ জনরায় প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে ৪★ দিলাম। তাড়াহুড়ো করে লেখা না হলে অনায়াসে মাস্টারপিস হিসেবে পরিগণিত হতো!
Profile Image for Masum Ahmed.
Author 2 books44 followers
February 9, 2019
পাড়ার ক্রিকেটে কাউকে দুই দলেই ফিল্ডিং করতে দেখেছেন? এরকম কাউকে দেখলে স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ জাগার কথা। আর যদি জানতে পারেন এই ছেলেটার বাবা চরম রকমের ক্রিকেটখোর ছিল? যে সময়ের কথা বলছি তখনও ক্রিকেটে বাংলাদেশের নাম তেমন কেউ জানতোই না। তখন বাংলাদেশে একটা খেলাই খুব জনপ্রিয় ছিল, সেটা হলো ফুটবল। সে যুগে একজন মানুষ ক্রিকেটের জন্য পাগল ছিল। সে ক্রিকেট পাগল লোকটার ছেলে রাহাত। বয়সে ছোট হওয়া সত্বেও বড়দের সাথে খেলতে চাইতো। আর বড়রাও ইচ্ছেমত দুই দলেই ফিল্ডিং করাতো ওকে দিয়ে। এ নিয়ে অবশ্য ওর মনে কোনো কষ্ট ছিল না। খেলতে পারলেই খুশি।

ফয়েজ কখনো ভাবতে পারেনি রাহাতের জীবনী ওকে দুইবার লিখতে হবে। প্রথমবার লেখার পর রাহাত বলেছিল, "ভাই, আমার জীবন এখানেই শেষ না, আপনাকে আবার লিখতে হবে জীবনী"। ফয়েজও রাহাতের মত ক্রিকেটপাগল ছিল একসময়। ক্রিকেট খেলতে গিয়েই ইনজুরিতে একটা পা খোঁড়া হয়ে যায়। তারপরও ক্রিকেট একদম ছেড়ে না দিয়ে হয়ে যায় ক্রিড়া সাংবাদিক।

জীবনের বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে রাহাত একসময় বাংলাদেশের জাতীয় দলে চান্স পায়। পাড়ার ওই ছোট্ট মাঠ থেকে জাতীয় দলে যাওয়ার সফরটা খুব একটা সুখকর ছিল না ওর জন্যে। সেই চড়াই উৎরাইটাকেই সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন লেখক।

ক্রিকেট নিয়ে এর আগে আমাদের দেশে এমন কোনো উপন্যাস লেখা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। চমৎকার একটা গল্পের সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্মের ইতিহাস থেকে এই পর্যন্ত সবই তুলে ধরা হয়েছে। ক্রিকেটপাগল যারা আছেন তাদের তো ভালো লাগবেই, অন্যরাও বেশ ভালো মজা পাবেন। পড়তে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় আমার গুজবাম্প হচ্ছিল।

আমি সাধারণত থ্রিলারের বাইরে পড়িনা। তারপরেও এই বইটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। গত বইমেলার পর কোনো একদিন আমাকে বলেছিলেন ক্রিকেট নিয়ে একটা বই লিখতে চাই। আমি ভেবেছিলাম ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে নন-ফিকশন কিছু একটা লিখবেন। তারপর একদিন প্লট শেয়ার করলেন। আমি বুঝতে পারলাম বাংলা সাহিত্যে ক্রিকেটীয় উপন্যাস আসতে চলেছে। তারপর বেশ কয়েকবার নক করেছি এই বইয়ের খোঁজ নিতে। লেখক বললেন এবার কাজের চাপে কিছুই লিখতে পারছেন না। জানুয়ারির ১৬ তারিখে আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, "আদি ভাই ছুটি নিয়েছি, লিখব"। আমি বললাম "আলহামদুলিল্লাহ্‌"। এরপর অনেক কাটাছেড়ার পর রেডি হলো 'ওয়ান ডাউন'। যতটা এক্সপেক্ট করেছিলাম, পেয়েছি তার থেকেও বেশি। প্লটটা জানা থাকার পরও ক্লাইম্যাক্সে গিয়ে ঘোল খাইয়ে দিয়েছেন আমাকে। আমাকে কিছুট আভাস দেয়ার পরেও ভাবতে পারিনি যে এভাবে উনি ছক্কা মারবেন। শুভ কামনা লেখকের জন্য, শুভকামনা ক্রিকেটপাগল পাঠকদের জন্য।
Profile Image for Wasee.
Author 49 books784 followers
February 7, 2019
ওয়ান ডাউন বইটার একটা বিশেষ দিক হচ্ছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস খুব গোছানোভাবে উঠে এসেছে বইয়ের পাতায়। ছোট ছোট অর্জন থেকে শুরু করে রীতিমতো লড়াই করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাঘের মতো গর্জন করতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, সেই আবেগ আমরা হৃদয়ের গহীণ কোণে সগর্বে লালন করি।

বাংলা ভাষায় স্পোর্টস ফিকশন কিছুটা বিরল; মতি নন্দী ছাড়া আর কারও লেখায় তেমন উল্লখযোগ্য কিছু পড়েছি বলে মনে পড়ে না। 'ওয়ান ডাউন' নিঃসন্দেহে একটা দারুণ সংযোজন। আমাদের ক্রিকেটের ইতিহাসের সাথে সাথে সমানতালে এগিয়েছে রাহাত নামের এক ক্রিকেটপাগল কিশোরের গল্প, জীবনের সাথে সংগ্রাম...অবশেষে নানান প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন হয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা। সেই গল্পে যেমন আবেগ আছে, প্রেম আছে, অর্জন আছে; তেমনই আছে বিষণ্ণতা, বিসর্জন আর ত্যাগের কথা।

তবে দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, উপন্যাসের পরিসর। হুট করে শেষ হয়ে যাওয়াটা বড় আফসোস নয়, আফসোস হলো বর্ণণাতেই অনেকটুকু গল্প ডানা মেলে উঠতে পারেনি ঠিকমতো। বেশ কিছু জায়গায় পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে, কাহিনির সারসংক্ষেপ পড়ছি, আরও অনেক কথা জানার ছিল!
Profile Image for আশিকুর রহমান.
152 reviews27 followers
March 11, 2020
একটি সম্ভাবনাময় গল্পের অপমৃত্যু।
দুঃখিত, এর থেকে ভাল কিছু বলতে পারলাম না। লেখায় তাড়াহুড়োর ছাপ স্পষ্ট। মনে হয়নি যে বই পড়ছি, মনে হয়েছে গল্পের সিনোপসিস পড়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতির সাথে লেখকের গভীর সম্পর্ক টের পাওয়া যায় তার লেখাতে, যেটা প্রশংসনীয় ভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন। ক্রিকেটের শুরুর সময়টাতে ধুঁকে ধুঁকে চলা বাংলাদেশের চিত্র সংক্ষেপে প্রায় পুরোটাই তুলে এনেছেন তিনি। গল্পে চরিত্র হাতেগোণা কয়েকটা। তাদের কাহিনীতেও খুব দ্রুত কলম চালানো হয়েছে যেটা একেবারেই ভাল লাগেনি। গল্পের টাইমলাইন বিশাল হলেও বোঝা যায়নি কারণ লেখক আবারও বাজির ঘোড়া তুফান বেগে ছুটিয়ে দিয়েছেন।
ক্রিকেট বাঙালির আবেগের নাম, সেই আবেগের একটা টুকরো অংশ তিনি দেখিয়েছেন প্রবাস জীবন কাটানো শ্রমিকদের মাঝে। যেটা বেশ ভাল লেগেছে। তবে সেই গল্পও বলা হয়েছে আলগোছে।
ক্রিকেট নিয়ে এমন গল্প লেখার সাহস নতুন লেখকদের এখনো হয়ে উঠেনি, প্রথা ভাঙার জন্য রাসয়াত রহমানকে একটা বড় ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
আরেকটা বিরক্তিকর ব্যাপার ছিল পৃষ্ঠায় অহেতুক স্পেস দিয়ে কলেবর বাড়ানো হয়েছে। আশাকরি এমন কাজ থেকে আদী প্রকাশন বিরত থাকবে ভবিষ্যতে।
প্রচ্ছদশিল্পীকে সাধুবাদ জানাতে হয় চমৎকার একটা প্রচ্ছদ করে দেবার জন্য।

আশা করি লেখকের কাছ থেকে ক্রিকেট নিয়ে আরও কিছু লেখা উপহার পাব।
Profile Image for Shashoto Sharif.
116 reviews8 followers
March 11, 2020
গুডরিডসে প্রিয় লেখকের তালিকা করা যায়।আমি সবার আগে যার নাম এড করেছিলাম তিনি হলেন মতি নন্দী।ভদ্রলোক ছিলেন ক্রীড়া সাংবাদিক,উপন্যাস,ছোটগল্প লিখেছেন বেশ কিছু।তবে কিশোরদের জন্য যা লিখতেন,তার মধ্যে একটা কমন ব্যাপার থাকত,ক্লাবতী সিরিজের কয়েকটা বাদে বাকি সব উপন্যাসেই কোন না কোনভাবে খেলার জগৎ এসে যেত।আর সে কি বর্ণ্না,একবার পড়লে আপনি তাঁর ফ্যান হতে বাধ্য।
যাই হোক,এই লোকের প্রায় সব বই আমি পড়েছি,পড়ার পর একদিন খেয়াল হল,এরকম লেখা আর কেউ লেখে না?খোঁজ নিয়ে তেমন কাউকে পাইলাম না,ননফিকশন অনেক আছে,ফিকশন বড্ড কম।বাংলায় তো নেই বললেই চলে।
এরই মাঝে কয়দিন আগে রকমারি ঘাটতে গিয়ে "ওয়ান ডাউন" বই এর সাথে পরিচয়।লেখক রাসায়াত রহমান জিকো ফেসবুকে বেশ পরিচিত,তবে উনার বই পরা হয় নাই আগে।ক্রিকেট নিয়ে লেখা দেখে পড়া শুরু করলাম।মতি নন্দীর সাথে তুলনা করা বোধহয় ঠিক হবে না,তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের নস্টালজিক করে দেবার যথেষ্ট উপাদান আছে এই বই এ।ক্রিকেটের টাইমলাইনটা চলেছে,সাথে চলেছে চরিত্রগুলোর জীবন।শেষটা হয়েছে পিউর ফ্যান্টাসিতে,যা ক���়েক মুহূর্তের জন্য স্বপ্নে বিভোর করে রেখেছিল আমাকে।
Profile Image for Ferdous Hriday.
17 reviews2 followers
March 5, 2019
"স্পোর্টস লিটারেচার" পুরা বিশ্বেই খুব ইস্টাব্লিশড একটা সাহিত্যের ধারা। মনে পড়ে ক্লাস ৭-৮ এ পড়ার সময় "ভিনগ্রহের ক্রিকেটার" বইটা হাতে পাই। অদ্ভুত একটা অনুভূতি জন্ম দিয়েছিল। ইকরাম আহমেদ লেনিনের একটা বই পড়েছিলাম, নাম মনে নাই, সেইটা ছিলো কিশোর সম্ভবত আন্ডার ১৯ ক্রিকেট দলকে নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ আর তাদের সাথে একজন স্পোর্টস সাইকোলজিস্টের কথা বার্তা। অনেক মোটিভেশনাল ছিলো বইটা। ওয়ান ডাউন লেখার প্রেক্ষাপট আমি খুব ভাল ভাবেই জানি বলেই আমি বলি সময়ের স্বল্পতায় এর থেকে ভাল কিছু হয়তো সম্ভব না। কিন্তু পর্যাপ্ত সময় নিয়ে লিখলে এইটা একটা ক্লাসিক্সের মর্যাদা পেত।আমি জানি না আপনি নতুন কি লেখার চিন্তা করছেন। কিন্তু আমি চাইবো এরকম আরো কিছু লিখুন যেখানে আরো ডিটেইলিং থাকবে, আরো বড় পরিসরে হবে।আমি জানি ভাই আপনি পারবেন।

ভাই, আমি এক বসায় ২ বার পড়েছি বইটা। আমি গত কদিনে এই বইয়ের কিছু কিছু অংশ অনেকবার পড়েছি।ভবিষ্যতেও পড়বো।কারণ খেলা নিয়ে আপনি যা লিখেছেন টা আমার ইমোশনকে টাচ করেছে।

হুমায়ূন আহমদ একজন বাজারি লেখক-আমি এইটা বিশ্বাস করি না। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা আর পাঠক প্রকাশকের চাপ তাকে এমন অনেক কিছুই লিখতে বাধ্য করেছে যা আসলে তার লেখার কথা না। আমার অনুরোধ রইলো ভাই আপনি এই ধরনের কোন কিছুর কাছে কখনো নতি স্বীকার করবেন না!
Profile Image for Shamim Ehsan.
77 reviews3 followers
April 6, 2019
বেশ নস্টালজিক হয়ে গেলাম। বাংলাদেশ যখন খালি খেলতো আর হারতো - সেই আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের সাথে সাথে দেশের ক্রিকেটের উত্থান পতনের ইতিহাস সুন্দরভাবে লেখক গল্পের সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন। গল্পের আসল কাহিনী অবশ্য লেখক আরেকটু সময় নিয়ে ভালো করে লিখতে পারতেন, ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখলে কেউ হয়তো এই বইকে পাঁচ তারা দেবেন না, তবে দেশের ক্রিকেট অনুরাগী যে কারো কাছেই বইটা খুব ভালো লাগার কথা, রাহাতের বয়সী আমার মতো মানুষজনের আরো ভালো লাগবে।
Profile Image for Ayon Ahmed.
Author 2 books10 followers
February 10, 2019
নতুন ধরনের উপন্যাস। যারা ক্রিকেটপ্রেমী তাদের জন্য অসাধারণ বই। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উঠে গল্পগুলো আমার হাতের লোমগুলো দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। আমি ফিরে গিয়েছিলাম সেই ছোটবেলা খেলার মাঠের দিনগুলোতে। খেলা নিয়ে এমন লেখা আগে পড়ি নি। একদম নতুন ধরনের লেখা অসাধরণ লেগেছে।
Profile Image for Ashiqur Rahman.
63 reviews
December 7, 2021
আইডিয়া ভালো ছিল, এক্সিকিউশান ভালো হয় নি। অনেকগুলো এলিমেন্টস উপন্যাসটি আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস, স্ট্রিট ক্রিকেট, ডমেস্টিক ক্রিকেট, বাবাহীন পরিবারের সংগ্রাম, প্রবাসী শ্রমিক, যৌতুক। এতবড় পরিসরের বইয়ের জন্য গল্পটা অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে।

ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট মূল চরিত্র রাহাত ছাড়া কারোরই ভালো হয় নি। ফয়েজ-রাত্রির ক্যামিস্ট্রি ছিল অতি নিরস। এন্ডিং ভালো। একটু সময় নিয়ে ফয়েজ, উজ্জল আর রাহাতের বাবার ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট করলে ভালো হতো।

ভালোদিক বলতে ক্রিকেট নিয়ে বর্ণনা দারুণ উপভোগ্য ছিল। আমি মূলত ১৯৯৯ থেকে খেলা দেখি। তবে মূলত ২০০৭ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের খুঁটিনাটি জানার ব্যাপারে একেবারেই ঢুকে পড়ি। এই নেশা আপাতত ছাড়ানো যায় নি। '০৭ এর আগের বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে অজানা ঘটনাগুলো পড়া খুবই উপভোগ্য ছিল।
Profile Image for Syeda Banu.
99 reviews51 followers
May 16, 2019
মনে আছে, একটা সময়  ছিলো যখন বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখতাম না। উন্মাদনা সব ছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত। ১৯৯২ তে পাকিস্তান যখন বিশ্বকাপ জিতলো, বাংলাদেশে পাকিস্তানের নামে মিছিল করেছিল অনেকেই। একটা ছোট্ট ছেলে তাতে কষ্ট পেয়েছিল। প্রশ্ন করেছিল 'কি করলে মিছিল বের হবে না?'


গল্পটা এই রাহাতের। গল্পটা ফয়েজেরও। অথবা সব ছাপিয়ে এটা ক্রিকেটের গল্প। আমাদের সকলের গল্প, যারা দিনের পর দিন বাংলাদেশের ক্রিকেটের হতাশার যুগ দেখেছি, তবু গায়ক আসিফের সুরে 'গুডলাক বাংলাদেশ গুডলাক' গেয়ে রাস্তায় দৌড়েছি। ধীরে ধীরে বিশ্বাস করতে শিখেছি, শুধু 'গুডলাক' এর শুভকামনাই নয় কাপটাও হাতে তোলা সম্ভব।


যাক, গল্পে ফিরি। রাহাতের রক্তে মিশে আছে খেলা। তার ক্রিকেট-পাগল বাবা খেলা দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান। রাহাত দশ বছর বয়সেই পাড়ার বড় ভাইদের সাথে  খেলত। খেলবেই বা কি, ছোট মানুষকে কেউ তেমন সুযোগ তো দেয় না, ফিল্ডিং করেই দিন কাটে।


এরমধ্যেই রাহাত চোখে পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ফয়েজের। ফয়েজ নিজেও এক ক্রিকেট পাগল, খেলতে গিয়ে পায়ে চোট পাওয়ার পর থেকে খুঁড়িয়ে চলে, খেলাটা আর হয়ে উঠেনি। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসাটা অটুট। রাহাতের মধ্যে দিয়ে নিজের স্বপ্নটা আবার দেখতে পায় ফয়েজ, তার অনুরোধে পাড়ার টিমে খেলার সুযোগ পায় রাহাত।


সেই সময় কোনো পরিবারেই তেমন বিশ্বাস ছিল না, ক্রিকেট খেলেও কিছু হওয়া যায়। ফয়েজের নিরলস চেষ্টা আর গাইডেন্সে রাহাত এগিয়ে যায় পাড়ার দল থেকে টাউন ক্লাবে, টাউন ক্লাব থেকে বিকেএসপিতে।


একসময় ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে বিদেশে ট্রেনিং নিতে পাড়ি জমায় ফয়েজ। মাথায় নিজের থিতু হওয়ার চিন্তা, ভালোবাসার মানুষকে একটা নিরাপদ জীবন দিতে হবে, রাহাতকে জাতীয় দলে খেলতে দেখবে। যখনই ভেবেছিল সব ঠিকঠাক এগুচ্ছে, সব এলোমেলো হয়ে গেল। হারিয়ে ফেলল প্রিয়জনকে, রাহাতকেও।


জীবন যুদ্ধ খেলতে ক্রিকেটকে পিছনে ফেলে শ্রমিক হিসেবে বিদেশে পাড়ি জমালো রাহাত। অদ্ভুত একটা স্বপ্ন তাকে প্রায় রাতেই ঘুমের মধ্যে তাড়া করে। জেলখানায় বন্দী কতগুলো মানুষ কি যেন বলতে চায় তাকে। রাহাত বুঝে উঠতে পারে না।


কিন্তু রক্তে যার ক্রিকেট, সে কি স্বপ্ন ফেলে হেঁটে চলে যেতে পারে? 'বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ জিতবে' - নিজের প্রতিজ্ঞা রাখতে হবে না?


বিশ্বাস, স্বপ্ন আর লাল-সবুজ পতাকার গল্প 'ওয়ান ডাউন'।


পাঠপ্রতিক্রিয়া: নব্বইয়ের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্মাদনায় যারাই ভেসেছেন তাদের এই বইটি ভালো লাগবেই। সুখে দুঃখে পাশে থেকে আমরা যারা কখনো পাকিস্তানের সাথে টেস্টে অল্পের জন্য হেরে কেঁদেছি, এক একটা পরাশক্তিকে হারিয়ে আনন্দে নেচেছি - তারা এই বইয়ের সাথে আবারও আবেগে ভাসবেন।


মূল গল্পের পাশাপাশি লেখক বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক ইতিহাস, বিভিন্ন ম্যাচের গল্প তুলে এনেছেন। তবে প্রথম দিকের ইতিহাস যতটা বিস্তারিত, পরের দিকে অনেকটা সংক্ষিপ্ত করে এনেছেন। দেশে ফেরার পর থেকে রাহাতের খেলার বর্ণনাও কমে আসছিলো, মনে হচ্ছিল দ্রুত সমাপ্তির দিকে পৌঁছানোর একরকম তাড়াহুড়ো।


মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখ আর রাহাতের স্বপ্নের বিষয়টা ভালো লেগেছে। যাঁদের উল্লেখ আনা হয়েছে তাদের বিষয়ে অনেকেই জানে না। এই জায়গাটাও আরেকটু বিস্তারিত করা যেত, জানার মতো অনেক কিছু এখা��ে।


মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিক আবুল ভাই আর মজিদ ভাইয়ের চরিত্র দুটো পুরো বাংলাদেশের একরকম প্রতিনিধিত্ব করেছে। তারা দুজন খেলায় ভারত এবং পাকিস্তানের সমর্থক, কিন্তু বাংলাদেশ যেদিন বড় জয় পেল তারাও আনন্দে ভাসলেন। ক্রিকেটের জন্য, দেশের জন্য ভালোবাসাটা বুকের গভীরেই ছিল, ছিলো না শুধু উপলক্ষটা। সেটা যেদিন পেয়ে গেলেন তাদের আর অন্য দলের দিকে তাকানোর প্রয়োজন পড়েনি।


বই��়ের প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ছাপা সবকিছুই সুন্দর এবং নির্ভুল। আসলে এই গল্পটাই এমন ভাবে পাঠককে টেনে রাখবে যে অন্যকিছু তেমন ভাবিত করার সুযোগও ছিল না।


পশ্চিমবাংলায় মতি নন্দী খেলা নিয়ে গল্প-উপন্যাস লিখেছেন। বাংলাদেশে ক্রিকেট নিয়ে গল্প খুব বেশি বোধহয় লেখা হয় না। রাসয়াত রহমান জিকো নিজে একজন ক্রিকেটপ্রেমী, তাঁর মত বাংলাদেশের আরো সব ক্রিকেট পাগলদের জন্য তিনি আরো লিখবেন এই শুভকামনা। জিকো ভাই হয়ে উঠুন আমাদের মতি নন্দী।


বই: ওয়ান ডাউন

লেখক: রাসয়াত রহমান জিকো

প্রকাশনায়: আদী প্রকাশন

প্রকাশকাল: বইমেলা ২০১৯

পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১১৯

মূল্য: ২৭০ টাকা
Profile Image for Mitul Rahman Ontor.
161 reviews57 followers
February 11, 2019
গতকাল বইমেলা অভিযান শেষে প্রথম যে বইটি পড়ে শেষ করেছি তা হলো রাসয়াত রহমান জিকো'র "ওয়ান ডাউন"।

প্রথমেই এই বই দিয়ে শুরু করার অনেকগুলি কারণ উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমনঃ বইটির হাইপ, গ্রুপে বইটির প্রিভিউ
ও রিভিউ পড়ে আগ্রহ জাগা, বইটির বিষয়বস্তু... ইত্যাদি।

এবার আসি বইয়ের কথায়। এক বসাতেই পড়ে শেষ করে ফেলার মত বই। দেড় ঘন্টা সময় লেগেছে বইটি শেষ করতে, আর হ্যা বইয়ে যথেস্ট উপকরণ আছে আপনাকে এক বসায় বইটি শেষ করার জন্য বাধ্য করতে।

বইটি রাহাত নামের এক ছেলেকে নিয়ে৷ যার ধ্যান-ধারণা, স্বপ্ন সব ক্রিকেট'কে কেন্দ্র করেই। রাহাতের স্বপ্নপূরণে ধ্রুবক তারার মত সবসময় সাথে থেকেছেন ফয়েজ। গল্পের মাধ্যমে বইয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস এবং বর্তমানের সকল ঘটনা উঠে এসেছে। যা বইটির একটি সুন্দর দিক।
গল্পের শেষভাগে মুক্তিযুদ্ধের ফ্লাশফিকশন ও বেশ ভালো লেগেছে।

বইটি কেমন লেগেছে?
ভালো লেগেছে। এক বসায় পড়ার মত ভালো বই।
তবে এটি মাস্টারপিস হতে পারতো। পুরো বই জুড়েই কেমন এক তাড়াহুড়োর ভাব, যা বইটির মধ্যভাগের পর অনেকাংশেই বেড়ে যায়৷
বাংলাদেশ ক্রিকেটের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো যেহেতু লেখক তুলে এনেছেন, আরো গভীরে গেলে দারুন হতো। কিছু জিনিস লেখক এড়িয়ে গেছেন যা দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের ইংল্যান্ডের সাথে নাটকীয় জয়, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রিয়াদ-সাকিবের ক্যারিশমা, নিদাহাস ট্রফিতে ফাইনালে উঠার গল্প এরকম অনেক কিছুই।

বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া পর্যন্ত গতি বেশ স্বাভাবিক ছিল। এরপর থেকেই বলতে গেলে লেখক ফাস্ট ফরোয়ার্ড মোডে চলে গেছেন৷

মুক্তিযুদ্ধের কিছু অংশ নিয়ে আসায় ভালো লেগেছে৷ অনেক মানুষ আমাদের এই ইতিহাস জানে না। তবে এটিও সংক্ষেপিত৷

গল্পের শেষের অংশে নাটকীয়তা একটু বেশিই মনে হয়েছে (ব্যাখা করলে স্পয়লার হয়ে যাবে), তবে গল্পের হ্যাপি এন্ডিং এর খাতিরে এতটুকু মেনে নেওয়া যায়৷

এত এত সমালোচনা দেখে মনে হতে পারে, বইটির নেগেটিভ সাইড অনেক বেশি। আসলে তা নয়। এত সমালোচনা আসলে আক্ষেপ থেকে। কারণ বইটি বড় ক্যালিবারে লেখা হলে কি মাস্টারপিসই না হতো!
তাড়াহুড়োয় শেষ করতে যেয়ে, পাঠকদের মাস্টারপিস হতে বঞ্চিত করায় সমালোচনা প্রয়োজনীয়। পরবর্তীতে যেন লেখক ভুলগুলো সুধরে নিতে পারেন।

এবার আসি প্রাসঙ্গিক আরো কিছু কথায়। বইটির বাইন্ডিং, পেজ কোয়ালিটি, প্রচ্ছদ সুন্দর। (প্রচ্ছদের রঙ গোলাপি না হয়ে, আমাদের জাতীয় পতাকার লাল রঙটি হলে আরো সুন্দর লাগতো বোধ হয়। যেহেতু গল্পের শেষে মুক্তিযুদ্ধ চলে এসেছিল)

বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা ১২০. গায়ের মূল্য ২৭০ টাকা। (যা স্বাভাবিকের থেকে বেশি মনে হয়েছে।) বইমেলায় অবশ্য ২৫% ছাড়ে ২০০টাকায় পাবেন বইটি।

লেখকের জন্য শুভকামনা। পরবর্তীতে বই লেখার সময় এমন তাড়াহুড়া করবেন না প্লিজ।

এবং পাঠকদের উদ্দ্যেশ্যে, ক্রিকেট আপনার আবেগের জায়গা হয়ে থাকলে, বইটি আপনার অবশ্যই ভালো লাগবে৷
এই ধরনের বই মনে হয় এবার ই প্রথম। প্রথম কাজ হিসেবে বেশ ভালো। ভালো লাগবে আশা করছি৷

So... Happy Reading ❤
Profile Image for Maruf Siam.
1 review2 followers
February 20, 2019
ক্রিকেট সম্পর্কে যাদের কিঞ্চিৎ ধারনাও আছে, বইয়ের নাম প্রথম দেখাতেই হয়ত তাদের চিন্তার উদয় হতে পারে বইটা কি ক্রিকেট নিয়ে!

আপনাদের ধারণা অমূলক নয়। তবে শুধু ক্রিকেটই নয়, ক্রিকেটার হতে চাওয়া এক স্বপ্নবাজ ছেলের বেড়ে ওঠা, জীবনের উত্থান-পতন, নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এত উচ্চমানের স্বপ্ন দেখার খেসারত দেওয়া ও তার যাপিত পারিপার্শ্বিক জীবন ব্যবস্থার এক দারুণ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বইটিতে।

আশির বা নব্বইয়ের দশকের পাড়ার ক্রিকেটের চালচিত্র থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উত্থানের গল্প, আজকের টিম টাইগার্সে পৌঁছানোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস টেনে আনা হয়েছে গল্পের ছলে। লেখক একজন সাংবাদিকের ভূমিকায় থেকে, ক্রিকেটের প্রতি অসম্ভব ডেডিকেশনের দরূণ ক্রিকেট সম্পর্কিত স্মৃতি-আখ্যানকে রোমন্থন করেছেন, যিনি কিনা নিজে একসময় পাড়া মাতিয়েছিলেন ক্রিকেট ব্যাট হাতে! তার অপূর্ণ থাকা স্বপ্ন দেখেছেন রাহাত নামক পাড়াতোভাই এর মাঝে। এই সহজাত স্বপ্নবাজকে কাহিনীর মূল ভূমিকায় রেখে অতিবুদ্ধিদীপ্তভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন কাহিনির পুরো অংশ।

পিতা হারানো এক ছেলের খেলার প্রতি এত টান, অপরদিকে সংসারের দৈন্যদশা। পরিববারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেও খেলা চালিয়ে যাওয়া, আবার অভাব নামক অভিশাপের কবলে পড়ে খেলা থেকে অব্যহতি, সবকিছুর সংমিশ্রণে ভাবপ্রবণ এক সামাজিক চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। জীবনে অনেক ভালো উদ্দেশ্যে করা কাজ নাকি জীবনে বুমেরাং হিসেবে ফিরে আসে। রাহাতের জীবনে কি ভালো সময় আসলেই এসেছিল নাকি জীবন থেকে ছিটকে পড়ে তাকে আর পাঁচটা ছেলের মত সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হতে হয়? .

এ সব কিছুর উত্তর পাবেন উপন্যাসের প্রান্তে গিয়ে। ভেতরে যাপিত জীবনের নাটকীয়তা, সেই সাথে মাশরাফি, সাকিবদের দেশসেরা হয়ে ওঠা বাংলাদেশ টিমের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প এবং সমর্থকদের ক্রিকেট খেলার প্রতি অপরিসীম ভালবাসা ও আবেগের জয়গান থেকেছে কাহিনির অন্তর্ভূক্তিতে।

বইটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।
লেখকের জন্য শুভকামনা, তবে একটু আক্ষেপ যে- আরেকটু সময় দিয়ে কাহিনীগুলোকে আরেকটু বর্ণনায় নিয়ে আসতে পারলে উপন্যাসটা পরিপূর্ণ হয়ে যেত একদম। আশা করি সামনের লেখাগুলোতে তিনি ব্যপারটা বিবেচনায় রাখবেন।
লেখকের লিখার প্লট নিয়ে কোন সংশয় নেই যে নিঃসন্দেহে তিনি এমন একটা অনুভূতিপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার সাহস দেখিয়েছেন, এজন্য ধন্যবাদ উনার প্রাপ্তি।

সামনে এ ধরনের প্লট নিয়ে আরও লেখা পাওয়ার প্রত্যাশা থাকবে।

'ধরণী ছেয়ে যাক বইয়ে বইয়ে'

হ্যাপি রিডিং..
Displaying 1 - 12 of 12 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.