সমাজ ও আইন যখন ন্যায় বিচারে ব্যর্থ হয়, তখন পাপীর প্রায়শ্চিত্ত নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব গ্রহণ করে আদিম এক প্রবৃত্তি। সেই প্রবৃত্তির নাম প্রতিশোধ। যে প্রবৃত্তির প্রজ্জ্বলিত রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষদের গুনতে হয় চরম মূল্য। কিন্তু সেই মূল্য প্রতিশোধ উন্মত্ত মানুষগুলোকে পথচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়। কারণ প্রতিহিংসার অনলে দগ্ধ হওয়া সত্তা যেকোন মূল্য পরিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকে।
জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার পেছনে কিছু কারণ থাকে যা একজন মানুষকে নিয়ে যায় নিয়তির দিকে। সেই নিয়তির অমোঘ স্পর্শে অসম্ভব এক ঘটনার সাক্ষি হয়েছে অনির্বাণ। প্রবেশ করেছে বাস্তবতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা হিংস্র একটি জগতে, যেখানে কদর্য কিছু অস্তিত্বের বিপরীতে প্রতিনিয়ত জীবন বাজি রেখে লড়াই করে চলেছে অসাধারণ কয়েকজন যোদ্ধা।
বইয়ের ব্যাক-ফ্ল্যাপের লেখাটা অসাধারণ। কেউ যদি "এটা ঘটে গেল, ওটা করল, সেটা করল, তারপর কী হবে?" এমন ধরনের কাহিনীসংক্ষেপ পড়তে না চান, তবে ব্যাক-ফ্ল্যাপের লেখাটাই পড়বেন। ঘটনা কীভাবে শুরু সেগুলো না বলে চমৎকারভাবে কাহিনীর সারমর্মটা বলা হয়েছে সেখানে। বিন্দুমাত্র স্পয়লারও খাবেন না, আবার কাহিনী সম্পর্কে সুন্দর একটা ধারণাও পেয়ে যাবেন। তবে আমি নিচে একটু কাহিনীসংক্ষেপ লিখছি, রিভিউ করার জন্য দরকার পড়বে। এড়িয়ে যেতে পারেন।
কাহিনীসংক্ষেপ : অফিসে যাওয়ার পথে জ্যামে আটকা পড়েছে অনির্বাণ। মাথার উপরে গনগনে সূর্যের তাপ, আর গাড়ির এসিটাও নষ্ট, শুধু গরম বাতাস বের হয়। এমন অসহ্য যন্ত্রণার মাঝে যদি পেছন থেকে আরেকটা গাড়ি এসে ধাক্কা দিয়ে বসে, তাহলে কার ভালো লাগবে? অনির্বাণেরও ভালো লাগল না, মেজাজ গেল খিঁচড়ে। পাশের আরেকটা গাড়ির সাথেও ধাক্কা লাগিয়েছে, সেটার যাত্রী আর অনির্বাণ বের হয়ে গেল গাড়ি থেকে। চোটপাট করতে করতে যখন দেখলে ধাক্কা দেওয়া গাড়িটার ভেতরে ড্রাইভিং সিটে একটা লাশ! পচন ধরেছে ইতোমধ্যে, স্টিয়ারিং ঘোরানোরও চেষ্টা করছে! অর্থাৎ লাশ গাড়ি চালাচ্ছিল, এমনকি মৃত্যুর পরও হাত নাড়াচ্ছে। একদম দিনেদুপুরে অস্বাভাবিক কান্ড। অনির্বাণ ও অন্য গাড়ির যাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হলো দেশের সিক্রেট এক সংস্থায় যারা আধিভৌতিক ব্যাপার নিয়ে তদন্ত করে। তারপর কী হয় জানতে বইটা পড়তে হবে।
আলোচনা : প্রথমত ফ্ল্যাপের সারমর্ম পড়েই বইটা পড়ার ইচ্ছা বেড়ে গিয়েছিল। তারপর প্রথম অধ্যায়টা পড়তেই একদম হুকড। দিনের বেলায় আধিভৌতিক ব্যাপার! তাও ব্যস্ত এক ফ্লাইওভারের উপরে। যেটা বলতে চাচ্ছি, দারুণ একখানা প্লট তৈরি করেছেন লেখক। বইয়ের কাহিনী একেবারে সরলভাবে এগিয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত। তারপর একটা ফ্ল্যাশব্যাক আছে দীর্ঘ। বইয়ের ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্ট হয়েছে দারুণভাবে। প্রায় সব চরিত্র ভালো স্পেস পেয়েছে। প্রায় প্রত্যেকের ব্যাকস্টোরি দেখানো হয়েছে সুন্দরভাবে। চরিত্রগুলোর পরিবারের সাথে ইন্টারেকশন, বন্ধুত্ব, খুঁনসুটি, লাভ লাইফ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এজন্য চরিত্রগুলোর সাথে ভালো কানেক্ট করতে পারবেন, ওদের মনস্তত্ত্বটা বুঝতে পারবেন। এক্ষেত্রে লেখকের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তার বর্ণনা। প্রতিটা ঘটনার নিখুঁত বিবরণ দিয়েছেন, চোখের সামনে ভেসে উঠতে দেখবেন ঘটনা ও চরিত্রগুলো। তবে কিছু চরিত্রের এখনো ব্যাকগ্রাউন্ড দেখানো বাকি, তবে এই বইয়ের জন্য যথেষ্ট। সিরিজের পরবর্তী বইতে আরো স্পষ্ট হবে আশা করি। চরিত্রগুলোর সংলাপে বৈচিত্র্য ছিল। যেমন একটা চরিত্র অনেকদিন বিদেশে থেকেছে, তার সংলাপে যে ইংরেজির আধিক্য থাকবে তা সহজেই অনুমেয়। লেখক সেটাই করেছেন। তাই সংলাপে ইংরেজির ব্যবহার সেই চরিত্রটাকেই ডিফাইন করছে। কারো কারো সমস্যা হতে পারে ইংরেজির জন্য, তবে সংলাপ ওরকমই হওয়া উচিত ছিল। অ্যাকশন দৃশ্যের জন্যে লেখক বাহবা পাবেন। আগেই বলেছি চমৎকার ডিটেইলিং করেছেন তিনি। অ্যাকশন দৃশ্যের ক্ষেত্রেও তাই। অ্যাকশন দৃশ্যে টেনশন বিল্ডআপ করাটা কঠিন। কিন্তু লেখক চমৎকার কাজ দেখিয়েছেন। হরর ও আরবান ফ্যান্টাসির মিশেলে চমৎকার একটি গল্প। তবে খুব ফাস্ট-পেসড কাহিনী আশা করবেন না। অনেকটা স্টিফেন কিং ধাঁচে গল্প ডেভেলপ করা হয়েছে। কিন্তু পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উলটে যেতে পারবেন আগ্রহ নিয়ে। তবে ১৫০ পৃষ্ঠা পড়ার পরে গতি বাড়বে, কারণ ততোক্ষণে কাহিনীটা বিস্তৃত হয়ে গেছে। হরর বলেছি একটু আগে, কিন্তু কাহিনীর সব জায়গায় হরর বিস্তৃত নয়, কিন্তু যে সময়টায় হররের আমেজটা পাবেন, সেটা একেবারে উসুল করে নিবেন। ডেমনদের সাথে ফাইট করার দৃশ্য, দারুণ। তবে আমি একটু ভয় কম পাই কি না, তাই এটা নিয়ে বেশি বলব না, তবে অ্যাড্রেনালিন রাশ হবে বলতে পারি। সাসপেন্সটা উপভোগ করবেন। রাতে পড়তে পারেন, আমি রাতেই পড়েছি একা রুমে। এবার আসি অ্যান্টাগনিস্টের ব্যাপারে। বাংলা সাহিত্যে একদম আনকোরা এক ভিলেনের আবির্ভাব হয়েছে এ বইতে। বাংলা সাহিত্যে এতটা নিষ্ঠুর ভিলেন চরিত্র আর আছে কি না বলতে পারছি না। এক কথায় ভয়ানক! ভিলেন চরিত্রটা যতটুকু দেখানো হয়েছে তাতেই এ অবস্থা। তার ব্যাকগ্রাউন্ডও এখনও সম্পূর্ণ না। পরবর্তী বইয়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এত পজিটিভ দিকের পাশাপাশি কিছু নেগেটিভ দিকও আছে বইয়ের। বইয়ের শুরুর দিকের লেখনশৈলীতে আড়ষ্টভাব ছিল। কিছু বাক্য পড়তে সমস্যাই হয়েছিল। তবে ২০-২৫ পৃষ্ঠার পরে এটা আর ছিল না। সম্পাদনার প্রয়োজন ছিল, বাক্যে শব্দগুলো একটু আগ-পিছ করে দিলেই হতো। এছাড়া কিছু বানান ভুল ছিল। আধিভৌতিককে পুরো বইতেই আদিভৌতিক লেখা হয়েছে। বেশকিছু জায়গায় 'পরা' ও 'পড়া' মিক্স করে ফেলা হয়েছে। উপরে বলেছি সংলাপগুলো চমৎকার হয়েছে, তবে এও ঠিক কিছু সংলাপে সমস্যা ছিল, মানে আমার মনে হয়েছে আমরা সাধারণত ওভাবে কথা বলি না। তবে এটা অল্পক্ষেত্রেই হয়েছে। কাহিনীর প্রোটাগনিস্ট অনির্বাণ, কয়েক পৃষ্ঠা পড়লেই বুঝবেন। কিন্তু পুরো বইতে এতবার অনির্বাণ অনির্বাণ করা হয়েছে যে একটু বিরক্তই লেগেছে। সর্বনাম ব্যবহার করা প্রয়োজন ছিল। এছাড়া আর সমস্যা চোখে পড়েনি। বইটা আরেকটু ভালো সম্পাদনা হয়ে প্রোডাকশনে আসলে ভালো হতো। সামান্য বিরক্তিটুকুও অনুভব করতাম না। দুয়েক জায়গায় অনির্বাণের উপর বিরক্ত হয়েছি তার অদ্ভূত সিদ্ধান্তের জন্যে। তবে চরিত্রটাই এমন, কিছু বলতেও পারছি না। :/
আমার কাছে মনে হয়েছে এ বইটা অনেক অনেক কম আলোচনা হয়েছে। বইটা আরো অ্যাটেনশন ডিজার্ভ করে। গুডরিডসে রেটিং ভালো হলেও বলব আরো আলোচনা হওয়া দরকার বইটা নিয়ে। যারা ভাবছেন এটা সিরিজের বই, এখনই পড়বেন না। আমার সাজেশন থাকবে এখনই পড়েন। এর কারণ হলো এ বইয়ের ঘটনা যেভাবে শুরু হয়েছিল, সেটার একটা উপসংহার পাবেন। তবে কিছু ছেঁড়া সুতো রয়ে গেছে, সেটার জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী বইয়ের জন্য। আশা করি সিরিজের পরের বইতে লেখক আরও অসাধারণ কিছু দিবেন। খুবই প্রমিজিং একটা সিরিজ হবে আশা রাখি। হ্যাপি রিডিং! :)
আসল রেটিং ৩.২৫, অর্থাৎ গুডরিডসের ভাষায় 'লাইকড ইট' এর চেয়ে একটু বেশি, 'রিয়েলি লাইকড ইট' এর চেয়ে বেশ খানিকটা কম। কয়েকটা খাপছাড়া ব্যাপার না থাকলে এমন দুর্দান্ত একটা এগজিকিউশনের জন্য ৪-ই দেয়া যেত।
ভাল দিয়েই শুরু করি। হরর বা আরবান ফ্যান্টাসি ঠিক আমার পছন্দের ধারা না। কিন্তু সৈয়দ অনির্বাণের 'শোণিত উপাখ্যান' সিরিজের পর আমের আহমেদের 'পাপপিঞ্জর' (এটাও মনে হয় সিরিজ হতে যাচ্ছে) আমাকে দারুণভাবে টেনেছে। মূল কারণ একটাই--দেশীয় প্রেক্ষাপটে ফ্যান্টাসি বা হরর এলিমেন্টগুলো (যেমন জ্বিন বা ডাইনি ইত্যাদি) উপস্থাপন করা এবং সেগুলো সুন্দরভাবে ব্লেন্ড করা। আরবান ফ্যান্টাসিটা পশ্চিমা ধারাই, এমনকি 'হরর' বলতে যা বুঝি সেটাও পশ্চিমাই (আমাদের দেশে 'ভূতের গল্প' বলতে যা পড়ি সেগুলোকে ঠিক 'হরর' মনে হয় না আমার), কিন্তু পশ্চিমা হরর এলিমেন্টগুলো কোনভাবেই ঠিক আমাদের দেশের সাথে খাপ খায় না। লেখকের মূল কৃতিত্ব, এগুলোকে 'বাংলাদেশি' করে তোলা। যতদূর জানি, পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে এ ব্যাপারে আমাদের তরুণ লেখকরাই এগিয়ে গেছেন, অন্তত অনির্বাণ আর আমেরের বই পড়ে সেটাই মনে হয়েছে। (বারবার অনির্বাণকে কেন টানছি সেটা পরে বলছি)
'পাপপিঞ্জর'-এ ট্যুইস্ট বা মিস্ট্রি কম; যেটা আছে সেটা হলো ১১তম অধ্যায় থেকে শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত গতি। বইটার মূল দুর্বলতাই হলো প্রথম ১০ অধ্যায় পর্যন্ত ঝিমানো। মনে হচ্ছিল লেখক বারবার একই কথা বলছেন, একই জায়গায় ফিরে আসছেন। বর্ণনার ডিটেইলস না, অনেকটা রিপিটিশন, যেন মনস্থির করতে পারছেন না ঠিক কোনদিকে যাবেন। এ জায়গাতেই আমাদের দেশে ভাল সম্পাদকের অভাব খুব বেশি অনুভব করি। একজন ভাল সম্পাদক থাকলে হয় এই ১০টা অধ্যায়ের অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো ছেঁটে দিয়ে পরের অধ্যায়গুলোর গতির সাথে মিলিয়ে দিতেন, অথবা এই জায়গাটুকুর আয়তন একই রেখে মূল গল্পের সাথে আরো ভালভাবে সামঞ্জস্যপূর্ন করতে পারতেন, আরো প্রাসঙ্গিক ডিটেইলস এবং স্টোরিলাইন যোগ করে। এখানে আবারো অনির্বাণের শোণিত উপাখ্যান সিরিজের কথা বলা যায়, যেখানে ৩টা বইয়ের সবক'টা অধ্যায়ই গল্পের সাথে প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় মনে হয়েছিল, কখনো মনে হয়নি লেখক কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। সম্পাদকের সাথে একজন প্রুফরিডারও জরুরি; বারবার 'আধিভৌতিক'-কে 'আদি ভৌতিক' দেখতে রীতিমত বিরক্ত লাগে, সাথে অনেকগুলো বানান ভুল তো আছেই। ইংরেজিগুলোও ঠিক জায়গামত লাগেনি; ডঃ তরফদার-এর মুখে জোর করে কয়েকবার ইংরেজি বসিয়ে তাকে 'বিলেতফেরত' দেখানোটা জমেনি।
এবার ক্যারেক্টার ডিটেইলস। অনির্বাণ আর নিশা ঠিক আছে, শেষ দিকে নিশা'র লাইফটাইম ট্রমা'র ব্যাখ্যাটা খুব মিলে গেছে। কিন্তু ডঃ তরফদার, ডঃ প্রসাদ, বিকাশ মজুমদার, এমনকি মূল ভিলেনের চরিত্রগুলোর ব্যাকগ্রাউন্ডও ভালভাবে আসেনি। বইয়ের প্রথম পরিসরে এলোমেলো কথাবার্তা না লিখে স্পেসটাকে এক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেত। আশা করি সিক্যুয়েল লিখলে এগুলো, বিশেষ করে ভিলেনের ব্যাকগ্রাউন্ড বেশ ভালভাবেই চলে আসবে (আমি আশাবাদী যে, ভাল একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে।)। মাসুদ পারভেজের 'পাপ'-এর ব্যাপারটা বেশ জোড়াতালি দেয়া এবং টিপিক্যাল হয়ে গেছে; আর কোন প্লট খুঁজে না পেলেই এ লাইনে চলে যাওয়াটা বেশ ক্লিশে, আর অতিনাটকীয় তো বটেই। শেষ দিকে সমাধানটাও বেশ সোজা হয়ে গেল, খানিকটা তাড়াহুড়ো এবং খাপছাড়াও। তারপরেও ভাল লেগেছে, এবং পরবর্তী বইটা কেনার দিকে আগ্রহ জেগেছে শেষ কয়েক পৃষ্ঠার কারণে, সেটা বললে এখানে স্পয়লার হয়ে যাবে, কাজেই বইটা যোগার করেই জানতে হবে।
এত লম্বা আলোচনায় যদি মনে হয় সমালোচনাই বেশি, তাহলে কারণটাও বলি, এই সিরিজ এবং লেখক সম্পর্কে আশাবাদী বলেই এতগুলো কথা খরচ করলাম (লেখকের দেখার তেমন সম্ভাবনা অবশ্য নেই)। একটা বই যদি ভাল লাগে এবং টেনে রাখে, সেক্ষেত্রে আমি দু'টো লাভ পাই। প্রথমত, বইটা ভাল লেগেছে, মানে সময়টা ভাল কেটেছে। দ্বিতীয়ত, আমি যেহেতু আর্থিক দিক দিয়ে দরিদ্র একজন পাঠক, কাজেই বই ভাল লাগা মানে 'ভ্যালু ফর মানি' পাওয়া গেছে, সোজা বাংলায়, পয়সা দিয়ে বই কেনাটা সার্থক হয়েছে। এই দুই দিক দিয়েই 'পাপপিঞ্জর' ফ্লাইং কালারস নিয়ে বের হয়ে গেছে। তারচেয়েও বড় কথা, বাংলা ভাষায় বাংলার প্রেক্ষাপটে হরর এবং আরবান ফ্যান্টাসি ধারায় এই বাংলার তরুণ লেখকরাই পায়োনিয়ার হতে যাচ্ছেন, সেটা আমের এবং অনির্বাণের লেখা পড়ে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। পাঠকদের যেটা করতে হবে, সেটা হলো বইটার "পিডিএফ হবে ভাই?" বলে জনে জনে হাত পেতে লেখক-প্রকাশকের ভাত মেরে তাদের ভাল লেখা লিখতে নিরুৎসাহিত না করে, বরং একটু চা-সিগ্রেট-মোবাইল-ডেটিংয়ে সামান্য কম ইনভেস্ট করে বইগুলো কিনে ফেলতে হবে। এসব লেখক এবং প্রকাশক দাঁড়িয়ে গেলে আপনাদের দীর্ঘমেয়াদী আনন্দ এবং আড্ডার খোরাকের অভাব হবে না। এনাদের প্রতিভা আছে নিঃসন্দেহে, দরকার একটু উৎসাহ এবং পৃষ্ঠপোষকতা। আর লেখকদের যেটা করতে হবে, পাঠকের সমালোচনাকে শত্রুতার বদলে ভালবাসা ভেবে, এবং পাঠককে বেকুব না ভেবে আরেকটু সময় নিয়ে এবং মনোযোগ দিয়ে লিখে, আগের লেখাগুলোর ফাঁকগুলোকে ভরাট করে এগুলোর মতই চমৎকার কিছু লেখা উপহার দিয়ে যেতে হবে।
সবশেষে, অনির্বাণ। বারবার তাঁর কথা টানার কারণ হলো, দেশীয় প্রেক্ষাপটে আরবান ফ্যান্টাসি কেমন হতে পারে, তার একটা ভাল টেমপ্লেট হতে পারে তাঁর 'শোণিত উপাখ্যান'। কিভাবে একটা বিশাল টাইমলাইনকে বড় একটা ক্যানভাসে জোড়া লাগাতে হয়, কিভাবে প্রায় প্রতিটা ক্যারেক্টারকে এবং স্টোরিলাইনকে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে হয়, এবং কিভাবে অতি নাটকীয় এলিমেন্ট বেশি না এনেও ফ্যান্টাসি লিখতে হয়, সেটা দেখার জন্য এই সিরিজটা সবারই পড়া উচিত, যারা এই ধারায় লিখতে চান। শেষ প্যারাটা 'পাপপিঞ্জর'-এর সমালোচনাও ধরে নিতে পারেন। এবং আবারো, 'পাপপিঞ্জর'-এর সিক্যুয়েলটা কবে আসছে? কেনার জন্য কিউ দিয়ে রাখলাম।
“If I got rid of my demons, I’d lose my angels.” ― Tennessee Williams
আমরা সাধারণত ভয়ের বই হিসেবে অন্ধকার, জ্বীন-ভুত, কালো-যাদু ইত্যাদি ম্যাটারিয়েল সংক্রান্ত জাম্প স্ক্যারি সমৃদ্ধ একটা বইকে বুঝে থাকি। এই বইটাকে সেই সিলেবাসের বাইরে ধরা যায়। পরিচিত টপিক, কিন্তু অভিনব উপস্থাপন। ধরুণ ভয়ের ম্যাটারিয়েল এখানে একেবারেই কম কিন্তু এদেশে এটা হায়েস্ট হরর বই। কারণ, ধরতে পারলে এখানের ভয়টা আপনার মজ্জাগত হয়ে ছাড়বে। একটা বিশাল কলেবরের বই সাধারণত 'পরিণত' হয় তখন, যখন লেখক যেটা অনুভব করছেন সেটা পাঠকও অনুভব করছেন কিনা। সেক্ষেত্রে আমি বলবো আমের আহমেদ খুবই সফল। কেননা বইটা এত সহজবোধ্য আর সুখপাঠ্য করে লেখা, যে কোনো বয়সী পাঠকের বোঝাই সহজ হবে বলে আমি মনে করি। আমি আলাদা কেন বললাম সেটা বোঝাতে যদি আমরা যদি প্লটটার দিকে একটু তাকাই, দেখা যাবে বইটার মূল ঘটনা ভর দুপুর বেলার। মানে কই ঘুটুঘুটে রাতের অন্ধকার আর কই ভর দুপুর বেলা! মূল প্রোটাগোনিস্ট অণির্বাণ একজন সাধারণ ব্যাংকার। যার সাদামাটা জীবনটা এক ঝটকায় বদলে যায় এক ঘটনার পর। এক দুপুরে জ্যামে জনবহুল এক ফ্লাইওভারে তার গাড়ির পেছনে খারাপভাবে ধাক্কা দেয় একটা গাড়ি যেটার চালক একটা তিনদিনের পঁচন ধরা মৃত লাশ, যেটি এখনও নড়ছে! এরকম বিদপঘুটে ঘটনার তদন্ত করে ডিএসআই নামের দেশী সরকারি একটা সিক্রেট অর্গানাইজেশন, যারা সুপারন্যাচারাল ঘটনার তদন্ত করে থাকে। ঘটনাচক্রে তাদের সাথে জড়িয়ে যায় অনির্বাণ। এভাবেই চলতে থাকে প্রায় ৪৫০ পৃষ্ঠার এই বিশাল বই। লম্বা প্লটের গল্পের সমস্যা হলো এতটা মনোযোগ ধরে রাখা যায়না আর শেষে গিয়ে দেখা যায় মেলাতে পারেননাই লেখক। কিন্তু এই ৪৫০ পৃষ্ঠার বইটা প্রথম ১০পৃষ্ঠা দিয়েই আমাকে একদম আটকে রাখলো গত দুইটা দিন। পেজ টার্নার বলে একটা কথা আছে, বইটি দূর্দান্ত পেজ টার্নার। আমি পুরো ২দিন টানা পড়েছি যখন সুযোগ পেয়েছি। সেটা স্বন্ধ্যা হোক, রাত ৪টা হোক। চেষ্টা করেছি রাতে পড়ার, ভয়ের বই যেহেতু। আমার মনে হয়েছে বইটা একটা কমপ্লিট প্যাকেজ৷ মেইন ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট গুলো সুন্দর। নিশার ব্যাকস্টোরি দারুণ। আর লেখক এখানে পরাবাস্তব, টাইম ম্যানিপুলেশন, ডাইমেনশন ব্রেক সহ কিছু দারুণ কনসেপ্ট এপ্লাই করেছেন হরর গল্পে। যেটা স্বাদটাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। রোমান্টিক সম্পর্ক গুলো সুন্দর ছিলো, তবে কিছু জায়গায় অতি রোমান্টিক লেগেছে। আর ডায়লগ ডেলিভারি কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা দূর্বল লেগেছে যেহেতু প্রথম বই। তবে ফিনিশিং টা ছিলো চমৎকার। স্পয়লার হয় কিনা জানিনা, তবে মারাত্মক একটা প্রশ্ন তৈরি করে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে শেষ হবে বইটা!
যাহোক, আপনি যদি আমার কাছে ভুলেও বাংলা ভাষার হরর বইয়ের সাজেশন চান, আমি আপনাকে ঘাড়ে ধরে এই বই পড়াবো বলে দিলাম আগেই।
আমার খুব ই হতাশ লাগে। বাঙ্গালি ডিরেক্টর নাটক, ড্রামা, ছবি, সিরিজের জন্য এপিক কন্টেন্ট নাকি খুজে পায় না!!! এই লেভেলের বাংলা কন্টেন্ট থাকার পরেও থার্ড ক্লাস, লেইম কন্টেন্টের উপরেই যদি কাজ হয়, তাহলে হতাশার পারদ বেড়ে কাচ ফেটে যাবার দশা মনে হয় নিজের কাছে।
আমি আমার জীবনে বলার মতো অজস্র উপন্যাস পড়িনি। বাংলা মৌল���ক আরো কম। তবু ন্যুনতম আলোচনা বিশ্লেষণ করার মতো কিছু আমার পড়া হয়েছে। ক্লাসিক, হরর, ফ্যান্টাসি বা থ্রিলার যা-ই বলি। এই উপন্যাস টা আমার জীবনে এযাবত পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ আদিভৌতিক সাইকোলজিকাল থ্রিলার। বই টা, বই এর সমস্ত কিছু বইটা মনে রাখার জন্যে যথেষ্ট। তার সাথেও উপন্যাস টা আমার দীর্ঘদিন, বহু বচ্ছর মনে থাকবে মাস খানেক যাবত ঝুচতে থাকা বিরক্তি বা রিডার্স ব্লক থেকে বের করে নিয়ে আসবার জন্য।
বইটা আমি মনে রাখবো দীর্ঘদিন আগেই বলেছি। মূলত সেই উদ্দ্যেশ্যেই এই টুকরি রিভিউটা প্লট উল্লেখ পূর্বক সংযোজন করে রাখছি আমার চলমান বুক এলবামে।
মাসুদ পারভেজ এর শাস্তির পিছনের মোটিভ, শাস্তির ধরন আর তার পাপের সাথে রিলেটের ব্যাপারটা অনবদ্য মিলিয়েছেন লেখক। মাঝে দিয়ে গল্প ঝুলে গেলো, ঝুলে গেলো মনে হচ্ছিলো। অল্প সময়ের মধ্যে লেখক যখন গ্রিপ টেনে ধরলেন আনন্দ পাইসি। যে চরিত্রগুলোর জন্য ফিয়ার অফ আননৌন একটা ভাইব আসছিলো, সেখানে আরেকটু এক্সপেক্টেশান আসে যে, পরাক্রমশালী ভাবে উপস্থাপিত চরিত্রগুলোর কাছে আরেকটু ভয়াবহ কনফ্লিক্ট পাঠক হিসেবে এক্সপেক্ট করেছি। সাথে এও বুঝেছি লেখক নিজেও সেটা বুঝছেন,কিন্তু সেটা করতে গেলে কিছু জায়গায় অতি নাটকিয় বা ফিল্মি ভাব চলে আসতো। আরবান ফ্যান্টাসি বা ক্লাসিক ভাইব্জ টা নষ্ট হতো বলে আমি মনে করি। আমার মতো লিকুয়িড পাঠককে ঠিক ঠাক বিল্ডাপে একটা পড়ার মত মোহনীয় প্লট দিলেই বর্তে যায় সেখানে এই বই এর প্লট এপিক পর্যায়ের।
দ্য ফলেন কিং চরিত্রটা খুব বেশি ভালো লেগেছে আমার। সরকারী আদিভৌতিক ইনভেস্টিগেশান টিমে অনির্বান জড়িয়ে যায়। ট্র্যাফিক জ্যামে গাড়ি এক্সেডেন্টে আটকে যায় এক মৃত লাশ, যার হাত অনবরত নড়ছে,মুখে বিষাদের ছায়া। প্লট পরিক্রমায় বেরিয়ে আসে জিন এট্রোক্স, আন আমুন, দ্য ফলেন কিং, দ্য টাইম কিলার বা ওডিঙ্গা সহ অনেকে। নিশার লাইফ স্টোরির বিল্ডাপ, গুপ্ত ইনভেস্টিগেশান টীমের গুপ্ত সিক্রেট সহ বই এর প্রত্যেক টা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এলিমেন্ট আমি উপভোগ করেছি দারুণ ভাবে।
ব্যাপারটা এই প্রথম ঘটল আমার সাথে। আগে কখনো একটা বই পড়তে গিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়নি। কিন্তু 'পাপপিঞ্জর' বইটা শুরু করার পর আমার সাথে ঠিক এমনটিই হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে এমন অভাবনীয় কিছু হতে পারে তা জানা ছিল না। কিন্তু এখন তা অসম্ভব মনে হচ্ছে না। লেখকের প্রশংসা না করলে বড্ড অন্যায় হয়ে যাবে। পাপপিঞ্জর একটি দুর্ধর্ষ, দুর্দান্ত ও অসাধারণ একটি বই। প্রিয় বইয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে অতি সহজে। লেখক আমের আহমেদের পরবর্তী লেখাগুলোর অপেক্ষায় থাকব। আর যারা পড়েননি এখনো, শীঘ্রই পড়ে ফেলুন <3
"তেমন ভালো লাগে নি" বলেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। তবে দুটো কথা বলা খুব দরকার মনে হলো।
পাপপিঞ্জর বেশ ওভারেটেড মনে হয়েছে আমার কাছে। লেখনী ভালো না হলে ৪৪৫পৃষ্ঠার বই শেষ করার মত কস্ট খুব কমই আছে দুনিয়ায়।
বইয়ের স্টার্টিং বেশ ক্যাচি। এট্রাক্ট করবে পাঠককে। তারপর বইয়ের ৩০পেজ থেকে ২৮০পেজ না পড়লেও কোনো ক্ষতি হবে না। এই ২৫০পেজ কি চিন্তা করে লেখা আমি জানি না৷ ২৮০ পেজের পর থেকে গল্প কিছুটা গতি পায়৷
বইয়ের শেষ ৩০% ভালোই লেগেছে। তবে গল্প টেনে বড় করার প্রয়াস পুরো বই জুড়েই৷ লেখক হয়ত ধরেই নিয়েছিলেন, তার প্রথম উপন্যাস এত বড় ক্যালিবারেই লিখবেন। বইয়ের কন্টেন্ট অনুযায়ি বইটা ২০০-২৫০পৃষ্ঠার মত হওয়ার কথা।
বইটা পড়ার সময়ই "লেখনী" নিয়ে কথা বলেছি। বাতিঘর প্রকাশনী থেকে এমন আ্যমেচার লেখনীর বই বের হয়েছে এটা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলাম।
ব্যাপারটা একটু ব্যাখা না করলেই নয়।
লেখকের প্রথম উপন্যাস। বইয়ের প্রথমার্ধে বর্ণনারীতি একদম ভালো লাগে নি। দ্বিতীয়ার্ধ থেকে মনে হয়েছে ধীরে ধীরে বেটার হয়েছে।
থ্রিলার বইয়ের ক্ষেত্রে কিছু মূল বৈশিষ্ট্য হল অপ্রয়োজনীয় সংলাপ, অপ্রয়োজনীয় চরিত্র যথাসম্ভব পরিহার করা। এমনটা একদম দেখা যায় নি৷ সংলাপের মাঝে বাক্যের ধরণ, শব্দের চয়ন আলাদা হতে হয়। নাহলে মেকি মেকি লাগে। সংলাপের " " এর মাঝে যেসব কঠিন শব্দ আমরা কখনোই আমাদের বাস্তব কথোপকথনে ব্যবহার করি না - সেসব শব্দ প্রয়োগ করলে দৃস্টিকটু লাগে। সংলাপ লেখার ধরণ একেবারেই ভালো লাগে নি।
বইয়ের প্রধান চরিত্র অনির্বাণ৷ লেখক তার ৪৪৫পেজের বইয়ে কমপক্ষে ৪০০০ থেকে ৫০০০ বার "অনির্বাণ" শব্দটি ব্যবহার করেছেন। আমি গুনেছিলামও। ২ পৃষ্ঠায়২৮বার অনির্বাণ শব্দটি ছিল। সর্বনামের প্রয়োগ, নামের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে বাক্যগঠনের প্রয়োজন ছিল।
এরকম ছোট-খাটো অনেক বিষয়। সবমিলিয়ে আমার কাছে বড্ড বেশি আ্যমেচার এবং প্রকাশনীর নামের সাথে বেমানান লেগেছে। বইয়ের সিক্যুয়াল আসবে, বইয়ের শেষে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন লেখক।
তবে মজার ব্যাপার হল, "পাপপিঞ্জর" সম্ভবত প্রোডাকশন কোয়ালিটির দিক থেকে বাতিঘরের বেস্ট। বানান ভুল চোখে পড়ে না। এত মোটা বইয়ের বাইন্ডিংয়েও প্রব্লেম হয় নি।
বইটি গুডরিডসে অনেক হাইরেটেড। অনেক পাঠকপ্রিয়তাও পেয়েছে। তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে নি।
আরবান ফ্যান্টাসি নিয়ে প্রথম বাংলা লেখা পড়ি সৈয়দ অনির্বাণের শোনিত উপাখ্যান সিরিজ। এরপরে এরকম আর কোন বই পাইনি পড়ার মত। পাপপিঞ্জর বইটা কোন ব্যাকগ্রাউন্ড না জেনেই পড়তে বসেছিলাম। তা, বইটা পড়া শুরু করার বেশ খানিকক্ষণ পরে বুঝতে পারলাম কোন জনরা এটা। বই নিয়ে কথা শুরু করলেই প্রথমেই আমার মাথায় যেটা আসল তা হল নায়কের নাম। এখানে নায়কের নাম অনির্বাণ, যাকিনা শোনিত উপাখ্যানের লেখকের নাম। ব্যাপারটা কি কাকতালীয় নাকি ট্রিবিউট? বইয়ের ক্যারেক্টারগুলা বড্ড ছেলেমানুষী মনে হল, মানে বোল্ডনেসটা কম। তবে গল্পটা খারাপ না। কিন্তু শোণিত উপাখ্যানের ব্যাপ্তি আর গভীরতা এই বইয়ে পেলাম না। গল্পের টুইস্টও ধরে ফেলেছিলাম। ইমোশনের জায়গাগুলা নিয়ে লেখকের আরো কাজ করা দরকার বলে মনে করি। এসব ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও বইটা পড়তে ভালই লাগল। ঝরঝরে লেখা পড়তে কোন অসুবিধা হয় নাই।
"Men who fears demons see demons everywhere." - Brom, The Child Thief
- পাপপিঞ্জর - অনির্বান, চাকরি করে মতিঝিলের একটি ব্যাংক কোম্পানিতে। তেমনই একদিন অফিসে যাবার সময় এক ব্যাখ্যাতীত ঘটনার সাক্ষী হয় সে। তাকে নিয়ে আসা হয় ডিএসআই এর কার্যালয়ে। - ড. তরফদার, সরকারের এক ধরনের সিক্রে��� সার্ভিস ডিএসআই এর চীফ। সাধারণত নানা ধরণের অতিপ্রাকৃতিক কেস নিয়েই এই দপ্তরের কাজ কারবার। তার সাথে দপ্তরে রয়েছে সমমনা আরো কিছু মানুষ। হঠাৎ তাদের কাছে এসে পরে দুর্বোধ্য এক কেস, যে কেসে অনির্বানও জড়িয়ে আছে। - সেই দুর্বোধ্য কেসের এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে অনির্বানও তাদের সাথে কাজ করা শুরু করে। যতই তদন্ত আগাতে থাকে, ততই রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে। এখন অনির্বানের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া সেই ব্যাখ্যাতীত ঘটনার ব্যাখ্যা কি? কে ঘটাচ্ছে এ ধরনের ব্যাখ্যাতীত ঘটনা? কেন আর কিভাবেই বা ঘটাচ্ছে এরকম ঘটনা? ডিএসআই কি পারবে এর পেছনে কলকাঠি নাড়ানো সত্তাকে ধরতে? তা জানতে হলে পড়তে হবে লেখক আমের আহমেদের আরবান ফ্যান্টাসি এবং হরর ঘরানার উপন্যাস "পাপপিঞ্জর"। - "পাপপিঞ্জর" উপন্যাসটি মুলত হরর এবং আরবান ফ্যান্টাসির এক দুর্দান্ত মিশ্রণ। গল্পের শুরুটা বেশ ধীরগতির, কাহিনী জমাট বাঁধতে বেশ কিছু পৃষ্ঠা সময় নেয়। কিন্তু কাহিনীর মাঝ থেকে শেষ ভাগ একদমই রোলার কোস্টার রাইড, পড়ে মনেই হচ্ছিল না এটি লেখকের প্রথম উপন্যাস। ডেব্যু লেখা হিসেবে লেখনী বেশ ম্যাচিউরড। কিছু অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা অবশ্য রয়ে গেছে, সেগুলি আরো ভালোভাবে সম্পাদনা করা যেত। - "পাপপিঞ্জর" এর চরিত্রায়নের ভিতরে প্রটাগনিস্ট অনির্বান এবং মুল এন্টাগনিস্ট দুজনই যার যার জায়গায় সেরা । নিশা, ড.তরফদার সহ বাকি ক্যারেক্টারগুলোও গল্পের সাথে মানানসই, বিশেষ করে নিশা এর ব্যাকস্টোরি চমৎকার লেগেছে। আরবান ফ্যান্টাসি হিসেবে নানা ধরনের অতিপ্রাকৃতিক সত্তা এবং বস্তু, ডাইমেনশনের খেলা, পোর্টাল ইত্যাদি একেবারেই দুর্দান্ত ছিল, এত ভালো ডিটেলিং আমি আসলেও আশা করিনি বইটি থেকে। কাহিনীর এ জায়গাগুলো আশাতীত ভালো লেগেছে। কাহিনীর শেষভাগে বেশ কিছু রহস্যের খোলাসাও নিপুনভাবে করা হয়েছে। - পাপপিঞ্জর ৪৪৮ পৃষ্ঠার বেশ মোটা সাইজের বই হলেও বাইন্ডিং বেশ ভালোই ছিল, কোন পেইজ বা ফর্মা খুলে পড়েনি। বানান ভুলও প্রকাশনীটির অন্যান্য বইয়ের তুলনায় তুলনামুলকভাবে কম। প্রচ্ছদে গল্পের ভাইবটা ঠিকঠাকমতোই ফুটে উঠেছে। - এক কথায়, গতানুগতিক হররের থেকে বেশ অন্যরকম এক হররের জগত নিয়ে লেখা হয়েছে "পাপপিঞ্জর"। ডেব্যু নভেল হিসেবে বলতে বাধ্যই হচ্ছি যে প্রচন্ড ভালো কাজ দেখিয়েছেন লেখক। সিক্যুয়েলের আভাস যেহেতু স্পষ্টই দেওয়া হয়েছে, তাই আশা করছি পরবর্তী বইগুলো এর থেকেও ভালো হবে। হরর এবং আরবান ফ্যান্টাসি প্রেমীদের এ বই মিস করা কোনভাবেই উচিত হবে না।
৩.৫/৫ কাহিনী বলা হোক, লেখকের বর্ণনাভঙ্গি বলা হোক সবই ভালো লেগেছে তবে শেষ করে মনে হচ্ছিলো আদিভৌতিক বইটায় কি যেন একটা মিস করে গিয়েছি পরে কিছুক্ষণ চিন্তা করে দেখলাম বইতে আদিভৌতিক যে ব্যাপারগুলো বা যদি বলি ডেমন বা জিনদের যে ব্যাপারগুলো সেগুলোয় আরেকটু ফোকাস দিয়ে একটু ডিটেইলস লেখা হলে ভালো হত। বইয়ের অনেকটা অংশ জুড়ে অনির্বান আর নিশার একটা রিলেশন তৈরী করার যে ব্যাপার ছিল যেটা অনেকটা বাংলা ছায়াছবির মতই লেগেছে। যাইহোক তবে এই ব্যাপারগুলো হজম করা গেলে আসলেই 'পাপপিঞ্জর' দারুন একটা বই। বইটার হয়ত আরো পার্ট আসবে অন্তত শেষ করার পর সেটাই মনে হলো। দেখা যাক পরবর্তীতে কিহয়।
কাহিনী সংক্ষেপ: অনির্বাণ ব্যাংকে চাকুরী করে অবসর টাইম এ বন্ধুদের সাথে আড্ডায় ভালোই কাটছিল তার জীবন।একদিন সকালে অফিসে যাওয়ার সময় ফ্লাইওভার এ জ্যাম আটকে ছিলো এমন সময় হঠাৎ করে তার গাড়ি কে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় আরেকটি গাড়ি।এর পর গাড়ি থেকে বের হয়ে এসে সে এমন এক ব্যাখাতীত ঘটনার সম্মুখীন হয় যা তার স্বাভাবিক জীবন টাকে বদলে দেয়। ধাক্কা দেওয়া গাড়ী টির চালকের আসনে সে দেখতে পায় একটি মরা পচা লাশকে যে কিনা মৃত অবস্থাতেই গাড়ীর স্টিয়ারিং হুইল গুড়াচ্ছিল।আবার লাশটির মুখে ছিল কিনা জীবন্ত মানুষের মত বিষণ্নতা। লাশটি পুলিশ নিয়ে গেলে সাক্ষী হিসেবে তদন্তে জড়িয়ে পড়ল অনির্বাণ।এবং জানতে পারলো বাংলাদেশে ডিএসআই নামে এমন একটি সংস্থা আছে যারা মূলত কাজ আদি ভৌতিক বিভিন্ন কেস নিয়ে।জীবন্ত লাশের এই কেস টিও তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।নিজের শক্তিশালী অভার্সভেশন ক্ষমতা দিয়ে ডিএসআই কে কেস এ সাহায্য করতে গিয়ে আরো বিভিন্ন আধিভৌতিক ঘটনার মুখোমুখি হতে হলো তাকে।এবং বুঝতে পারলো আমাদের জগতের বাইরেও রয়েছে অন্য এক অশুভ জগতের অস্তিত্ব।এক সময় ডিআসএই সাথে কাজ করার অফার পেলো অনিবার্ন। আবার অন্য দিকে ডিএসআই এর এজেন্ট নিশা কেও মন দিয়ে ফেলে অনির্বাণ যার আবার রয়েছে ভয়ংকর এক অতীত। এর পর কি করলো অনির্বাণ?যোগ দিয়েছিল কি ডিএসআই এর সাথে নাকি ফিরে গিয়েছিল তার স্বাভাবিক জীবনে? কি ঘটেছিল সেই জীবন্ত লাশের ভাগ্যে,অতীতের কোনো কাজের জন্য কি মৃত্যুর পরেও শাস্তি পেতে হচ্ছে তাকে? আমাদের জগতের বাইরে সেই অশুভ জগতেই বা কি আছে? ডিএসআই বা কিভাবে লড়বে এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে,কি তাদের ইতিহাস? এই সকল প্রশ্নের জবাব জানতে পড়তে হবে পাপপিঞ্জর বইটি।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
পাপপিঞ্জর মূলত বৃহৎ কলেবর এ লেখা হরর থ্রিলার+ আরবান ফ্যান্টাসি। বইটির বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ পর্যালোচনা + রেটিং নিচে দেওয়া হলো:
প্লট: বইটির প্লট বেশ ইউনিক আর কৌতূহল উদ্দীপক ছিল।দেশীয় + শহরের প্রেক্ষাপটে বেশ দারুন একটি আধিভৌতিক গল্প ফেঁদেছেন লেখক। প্লটের উপর এক্সিকিউশন ছিল দারুন । হরর হিসেবে ভয় পাওয়ার আশায় কেউ বইটি পড়লে তার অবশ্য কিছুটা হতাশ হতে হবে। বইটিতে হরর মেটেরিয়াল কিছুটা কম থাকলেও তাতে বইটা উপভোগ্যতা বিন্দুমাত্র হারায়নি। রেটিং ৫/৫
স্টোরি টেলিং: লেখনী ছিল বেশ সাবলীল ,বাক্য গঠন চমৎকার।একটানা পড়ে যাওয়ার মত। বইটির প্রথম চ্যাপ্টার থেকে শুরুই হয়েছিল বেশ ধামাকা দিয়ে ,শুরুতেই পাঠককে গল্পটি টেনে ধরবে। কিন্তু এর পর থেকে বইয়ের অর্ধেক পর্যন্ত কাহিনী বেশ ঝিমিয়ে যায়,এই অংশে মূলত কাহিনী বিল্ডআপ হয়েছে।কিন্তু এই অংশে বেশ কিছু অংশ অপ্রয়োজনীয় লাগছিলো,যা কিছুটা কাটছাট করে লিখলে কাহিনী ৩০০/৩৫০ পেজ শেষ হয়ে যেত। কিন্তু অর্ধেক এর পর থেকে কাহিনী বেশ গতিময়তা পাই যা একদম শেষ পর্যন্ত ছিল । এই অংশে লেখক পূর্বের দুর্বলতা বেশ ভালো ভাবেই কাটিয়ে গেছেন। রেটিং :৪/৫
চরিত্রায়ন :বইয়ের ঠিকঠাক ছিল বিশেষ করে প্রধান ২ চরিত্র অনির্বাণ এবং নিশার চরিত্র বেশ ভালো ভাবেই বিল্ড আপ হয়েছে।নিশার ব্যাকগ্রাউন্ড স্টোরি টা বইয়ের অন্যতম সেরা অংশ।অনির্বাণ ক্যারেক্টারকে লেখক সাহসী + ইমোশনাল দেখাতে গিয়ে কোন অংশে একটু বেশি ইমোশনাল দেখিয়ে ফেলেছেন,যা ভালো লাগে নি।কিন্তু বইয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ড. তরফদার,বিকাশ মজুমদার,কাউসার সাহেব এবং বইয়ের মেইন ভিলেন এর ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে লেখক কোনো ধারণাই দেন নি ,কাহিনীর প্রয়োজনে যা বেশ দরকার ছিল। রেটিং:৩/৫
সংলাপ: এই বইয়ের সবচেয়ে দুবর্ল দিক আমার কাছে লেগেছে এর সংলাপ।শুরু থেকেই বই এর সংলাপ গুলো বেশ মেকী লাগছিলো।বিশেষ করে মূল প্লট এর বাইরে যে সংলাপ গুলো ছিলো তা ছিল যাচ্ছেতাই। আমাদের সাধারণ জীবনে এমন সংলাপ ব্যবহার না। অনির্বাণ আর নিশার শুরুতে প্রেম বিষয়ক কিছু সংলাপ ছিল নাটক সিনেমার মত। রেটিং: ৩/৫
ফিনিশিং: বইয়ের ফিনিশিং নিয়ে আসলে বলার কিছু নেই কারণ লেখক সুকৌশলে ক্লিফ হেঙ্গার এর মাধ্যমে পরের বই এর ইঙ্গিত দিয়ে কাহিনী শেষ করছেন।বই এর ২ টি অংশের একটির সমাপ্তি হয়েছে এই বইয়ে বাকি কাহিনী সিরিজ এর পরবর্তী বই এ সমাপ্তি হবে।তবে এই পার্টের ভিলেন কে শুরু থেকে যে ভাবে বিল্ড আপ করা হয়েছিল , কিন্তু অতি সহজেই যেনো তার সমাপ্তি ঘটলো।বইয়ের পরবর্তী পার্টের কাহিনী আরো জমজমাট হবে বেশ আগ্রহ নিয়ে পরবর্তী পার্টের জন্য অপেক্ষা করছি। রেটিং ৪/৫
সব মিলিয়ে পাপপিঞ্জর একটি বেশ উপভোগ্য বই,সকল ধরনের পাঠকদের ভালো লাগার মত।করো যদি হরর বা আরবান ফ্যান্টাসি প্রতি জোক থাকে তাহলে তার জন্যে মাস্ট রিড।ছোটোখাটো সকল ভুল লেখকের প্রথম বই হিসেবে মার্জনা করা যায়। প্রথম বই হিসেবে বেশ দুর্দান্ত একটি কাজ দেখিয়েছেন লেখক,তার জন্য শুভ কামনা ।
আমের আহমেদের 'পাপপিঞ্জর' একশব্দে 'উপভোগ্য' লেগেছে আমার কাছে। মাইন্ড ব্লোয়িং বলা যাবেনা, আর খারাপ তো বলা যাবেই না। মোদ্দা কথা মোটামুটির চাইতে বেশ খানিকটা ওপরে এবং পারফেক্টের চাইতে অল্প খানিকটা নিচে বলে মনে হয়েছে আমার।
যে দিকগুলো স্ট্রং মনে হয়েছে সেগুলোই আগে বলি, কেমন?
১. গল্পের স্টার্টিংটা দুর্দান্ত ছিলো। একদম প্রথম দশ পেজ থেকেই উপন্যাসের ভেতর ঢুকে গিয়েছিলাম আমি। বারবার মনে হচ্ছিলো হচ্ছেটা কি, এরপর কি হবে!
২. লেখনী বেশ সাবলীল। যে কোন বয়সের পাঠকের জন্য উপযোগী বই। প্রথম উপন্যাস হলেও আমের আহমেদের এই বইটি পড়তে কারোরই কষ্ট হবে না বলে আমার ধারণা।
৩. প্লটটা বেশ ভালো ছিলো। আরবান ফ্যান্টাসীর একদম দেশীয় একটা আমেজ পাওয়া যাচ্ছিলো। সেই সাথে ডাইমেনশান, টাইম ম্যানিপুলেশন টার্মগুলা বেশ ভালো ভাবে এক্সিকিউট হয়েছে। গল্পে হয়তো তেমন কোন বড় টুইস্ট নেই কিন্তু তা সত্ত্বেও বইটি পেজ টার্নার।
৪. মাসুদ পারভেজের শাস্তির ব্যাপারে লেখকের চিন্তাধারাটা আমার কাছে অনবদ্য লেগেছে এবং এই জায়গাটার বর্ণনাতা আমাকে বেশ ভয় পাইয়েছে। O my god! কি ছিলো ওটা?
এবার বলি কোন দিকগুলো দূর্বল মনে হয়েছে।
১. বেশ বড় পরিসরের উপন্যাস লেখার পর আমার মনে সেগুলোকে একটা আলাদা এডিটিং সাইড থেকে দেখা উচিৎ। এই সাইডের মূল ফোকাস থাকবে বইটি কোথাও গতি হারালো কিনা সেদিকটা দেখা। এবং এই দিক বিবেচনায় বইটা মাঝামাঝি গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে বলে মনে হয়েছে আমার। অবশ্য গতি ফিরে পেতে খুব একটা সময় লাগেনি।
২. এই টাইপের একটি আরবান ফ্যান্টাসি বই তখনি সফল হয় যখন বইটি পড়তে গিয়ে পাঠক এক্সাক্টলি ওটাই ফিল করে যেটা লেখক ফিল করাতে চেয়েছেন। এই বইটিতে বেশ কিছু রোমহর্ষক বর্ণনা থাকা উচিৎ ছিলো যেটি ভয়ের আবহ তৈরী করে। লেখক চেষ্টাও করেছেন এবং খানিকটা সফলও হয়েছেন কিন্তু আমি আরেকটু বেশী আশা করেছিলাম।
৩. ইয়েদেরকে মেরে ফেলার (কোন স্পয়লার দেয়াই যাবে না, সো তারা ইয়ে নামেই থাক) ব্যাপারগুলো দুম করে হয়ে গিয়েছে মনে হয়েছে। যেহেতু তাদেরকে এতটা শক্তিশালী করে দেখানো হয়েছে সেহেতু তাদের মোকাবেলা করার ব্যাপারটাও বেশ বড় পরিসরে দেখালে ভালো হতো। লেখক তাড়াহুড়ো করে ফেলেছেন। মনে হয়েছে তিনি আসলে খুঁজে পাচ্ছিলেন না এদেরকে কিভাবে মেরে ফেলবেন।
৪. সবচাইতে দূর্বল পয়েন্ট ছিলো, ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট। এত বড় পরিসরের একটা উপন্যাসে ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট ঠিকভাবে হয়নি এটা খুবই দুঃখজনক। যদিও উপন্যাসে ৭-৮ টি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলো কিন্তু তা সত্ত্বেও নিশা আর অনির্বাণ চরিত্র ছাড়া আর কোন চরিত্রেরই সঠিক রুপায়ন ঘটেনি৷ ব্যাকস্টোরীও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়নি। যদিও গল্পের শেষটায় বোঝা গেছে সিক্যুয়েল আসতে পারে। আশা করবো সিক্যুয়েলে লেখক ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টে মনোযোগ দেবেন আর সেই সাথে ব্যাকস্টোরী গুলাও বর্ণনা করবেন।
প্রথম উপন্যাস 'পাপপিঞ্জর' এ লেখক আমের আহমেদ বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের আকাশে উজ্জ্বল একটি তারা হতে এসেছেন তিনি। আমার এত সমালোচনা করার উদ্দেশ্য একটাই। যদি এগুলো লেখকের চোখে পড়ে এবং তিনি নিজেকে আরো শানিত করেন। তাহলেই আমরা ভবিষ্যতে তার কাছ থেকে আরো ভালো উপন্যাস পাবো।
৪.৭ তারকা পাপপিঞ্জরে সব-ই ছিল।কাহিনী,চমক,টানটান উত্তেজনা -ইত্যাদি যা যা মাল মশলা লাগে আর কি একটা ভাল থ্রিলার/আধি ভৌতিক বই লেখার জন্য। তবে কোন মশলা আমার মন কাড়লো? বইটির নানা মানবিক সম্পর্ক,আর মানবিক গল্প গুলো।এছাড়াও,চরিত্রগুলোর কনভারসেশনস,ডায়ালগ এগুলো ও ছিল খুব স্পন্টেনিয়াস।মেকি লাগে নি একটু ও( যা অনেক থ্রিলার বইয়েই দেখেছি কেমন জানি থ্রিল আনতে যেয়ে চরিত্রগুলোর genuineness ঠিক আসেনা।) তবে হ্যাঁ,নিশার ছেলেবেলার গল্প পড়তে যেয়ে মনে হলো,প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বড় হয়ে গেল।তবে তার জন্য কমপ্লেইন নাই।(বলতেসি কমপ্লেইন নাই,কিন্তু আধা তারকা কেটে রাখসি এর জন্যেই।) এই বইয়ের ২য় বই আসবে মনে হচ্ছে।অনেককিছুই খোলাশা হয়নি।
বিশ্বাস করেন এতোক্ষণ মনে হচ্ছে স্টিফেন কিংয়ের লিখা কোন উপন্যাস পড়েছি। দেশীয় লেখক ‘আমের আহমেদ’ সাহেব এতো অসাধারণ গল্প লিখেন বইটা না পড়লে টের পেতাম না। বেশ পজেটিভ রিভিউ এবং যাচাই বাচাই করে নিয়েছিলাম, আগ্রহ যতোটা ছিল তার চাইতে বেশিকিছু পেয়েছি বইটা শেষ করার পরে। এতোটা মুগ্ধতা আর তৃপ্তি নিয়ে দারুন একটা গল্পের সাথে সময়গুলো কাটিয়েছি এখন শেষ করে খানিকটা আফসুস হচ্ছে।
বইটা নিয়ে কিছুটা আলোচনা করা যাক। প্রথমত আধিভৌতিক ব্যাপার যখন সম্মুখে আসে তখন মনের অন্তরালে কিছু অশরীর ছায়া নড়াচড়া করার অনুভূতি জাগ্রত হতে থাকে। বেশ ঠাণ্ডা একটা শিহরণ অনুভব করতে চাইবে অবচেতন মন কিন্তু সেটার জন্য পরিপূর্ণ গল্প না হলে চলে? গল্পের কিছু ধরণ থাকে, আপনি চাইলে সেটা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে পারবেন কিন্তু অনুভূতি তাজা হবে না। ‘‘পাপপিঞ্জর’’ সেদিক থেকে ভিন্ন ধাঁচের গল্প বা লেখকের অমর সৃষ্টির একটি ধরে নিতে পারেন যেখানে মিশ্র সব সুখানুভূতির সাথে বেদনার কালো ছায়া ঢাকা খারাপ অনুভূতি মিশ্রিত অবস্থায় রয়েছে। গল্পের দোলনায় একবার চড়ে বসলে সেইখান থেকে নামার ইচ্ছে হবে না কোনভাবে কিন্তু সবকিছুর সমাপ্তি ঘটে যেমনটা ঘটেছে এই গল্পের ক্ষেত্রে! হতাশ হওয়ার দরকার নেই, সিক্যুয়েল আসবে!
ডাইমেনশন ব্রেক থেকে শুরু করে যাবতীয় হরর এলিমেন্টের আভরণে মোড়ানো গল্পের অনুপাত ছিল সমানে সমান। প্রোটাগনিস্ট থেকে অ্যান্টাগনিস্ট দুই পক্ষের শক্তির তারতম্য ভীষণ ভাবে উপলব্দি করা গিয়েছে একেবারে বাস্তবিক ছোঁয়ার মতোই। প্রত্যকটা চরিত্রের মধ্যকার বেদনা, সুখ বা দুঃখ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন বেশ সাবলীল ভাবে তার জন্য লেখকের চিন্তাশক্তি, লেখনী এবং প্রচুর শ্রমের প্রশংসা না করা পারা যায় না। জিনিয়াস বটে!
➲ আখ্যান—
পাপ। প্রতিশোধ। প্রায়শ্চিত্ত।
সমাজ ও আইন যখন ন্যায় বিচারে ব্যর্থ হয়, তখন পাপীর প্রায়শ্চিত্ত নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব গ্রহণ করে আদিম এক প্রবৃত্তি। সেই প্রবৃত্তির নাম প্রতিশোধ। যে প্রবৃত্তির প্রজ্জ্বলিত রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষদের গুনতে হয় চরম মূল্য। কিন্তু সেই মূল্য প্রতিশোধ উন্মত্ত মানুষগুলোকে পথচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়। কারণ প্রতিহিংসার অনলে দগ্ধ হওয়া সত্তা যেকোন মূল্য পরিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকে।
জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার পেছনে কিছু কারণ থাকে যা একজন মানুষকে নিয়ে যায় নিয়তির দিকে। সেই নিয়তির অমোঘ স্পর্শে অসম্ভব এক ঘটনার সাক্ষি হয়েছে অনির্বাণ। প্রবেশ করেছে বাস্তবতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা হিংস্র একটি জগতে, যেখানে কদর্য কিছু অস্তিত্বের বিপরীতে প্রতিনিয়ত জীবন বাজি রেখে লড়াই করে চলেছে অসাধারণ কয়েকজন যোদ্ধা।
➤ পাঠ প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা—
জমিয়ে রাখা কথাগুলো এইবার ঝেড়ে বলে ফেলি! পড়ার সময় প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল জানতে চাইছেন? বইটা হাতে নিয়েছি, প্রথম অধ্যায় পড়েছি এরপর থেকে কিভাবে যেন গল্পের মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে উর্ধশ্বাসে ছুটেছি খেয়ালে আসেনি। তবে বইয়ে মজার অনেকগুলো বিষয় রয়েছে যেগুলো আমাকে আনন্দ দিয়েছে মাত্রাতিরিক্ত!
সাধারণত আমরা জানি হরর গল্পে বা থ্রিলারে প্রোটাগনিস্ট প্রধান ভূমিকা পালন করে আলোর পথে থেকে, যার দায়িত্ব পৃথিবী তথা প্রিয় মানুষগুলোকে সকল প্রকার অন্ধকারে নিমজ্জিত মানব, দানব থেকে রক্ষা করো কিন্তু এই প্লটে আসল মজাটা কোথায়? গল্পের মজাটা শুধু শক্তির বা বুদ্ধির খেলা থেকেও রয়েছে বিভিন্ন উপাদান যেটা গল্পের টার্ন গুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিশেষ সাহায্য করে। এই গল্পে তেমনি একটা প্রধান হাতিয়ার ছিলো "ডাইমেনশন" কনসেপ্ট! লেখক এই কনসেপ্ট বেশ দক্ষ হাতে সাজিয়েছেন, উনি সেটাকে আলো ও অন্ধকারের মাঝে দেয়াল বানিয়েছেন ঠিকই কিন্তু উপস্থাপনা বা ব্যাখা ছিল একেবারে ভিন্নরকম। বেশিকিছু বলছি না, নাহয় স্পয়লার হয়ে যাবে!
শুরু থেকে গল্পের কনসেপ্ট দারুন সেইসাথে চলে আসে স্টোরিটেলিং যেটাকে বলা হয় গল্পের মেরুদণ্ড! কেমন ছিল? গল্পের শুরুতে বলেছি, মনে হচ্ছে স্টিফেন কিং সাহেবের উপন্যাস পড়েছি! সঠিক ধরেছেন লেখকের উক্ত গল্পটা ছিল সেইরকম। অসাধারণ ভাবে গল্প উপস্থাপনা করেছেন একইসাথে চরিত্র গুলোকে খুঁটে খুঁটে সাজিয়েছেন সামঞ্জস্যতা রেখে। বইটা শেষে তারিফ করতে আমি বাধ্য হয়েছি। গল্পের গাঁথুনি এতোটা শক্তভাবে গেঁথেছেন যে চাইলেও উপড়ে ফেলা সম্ভব না। বিশেষ চরিত্র থাকলেও অন্যান্য পার্শ্বচরিত্রে গুলোকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে করিয়েছেন অসাধারণ সব কাজ। অপূর্ব!
সমাপ্তিতে গল্পটা অসমাপ্ত তবে দুই ধাপের এক ধাপ সম্পূর্ণ! সিক্যুয়েল আসলে বাকিটা পূর্ণ সমাপ্তি পাবে। গল্পের বুনট যে ধারাতে এগিয়েছে সেটাকে বজায় রাখতে হলে নতুন গল্পের বা প্লটের শরণাপন্ন হতে হবে লেখক—কে যদি না কোন পুরানো শক্তপোক্ত ফ্ল্যাশব্যাক থাকে! কিছু ফ্ল্যাশব্যাক ছিল এই গল্পের শক্তিশালী দিক, আশা করি দ্বিতীয় সিক্যুয়েলে কমপক্ষে একটা ফ্ল্যাশব্যাক তো থাকবেই! কারণ কিছু চরিত্রের অতীত খানিকটা অমীমাংসিত বলা যায়। সবশেষে অপেক্ষার মাত্রা এই ডাইমেনশন পার করে অন্য ডাইমেনশনে ঢুকতে শুরু করেছে, লেখক সাহেব তাড়াতড়ি করুন!
অনেকের মতামতে গল্পটা আরবান ফ্যান্টাসি হিসেবে মনে হলেও আমার এই গল্প হররে থ্রিলার বলে মনে হয়েছে! অন্যদিকে যদি ফ্যান্টাসি এলিমেন্টে দেখতে চাইছেন তাহলে "ডার্ক ফ্যান্টাসি" হিসেবে মার্ক করা হবে। কারণ ক্রিয়াকলাপ হচ্ছে সব ডার্ক টাইপের। সুস্থভাবে সেটাকে শুধু হরর বা আরবান ফ্যান্টাসি বলা যাবে না, যদিও এইটা ব্যাক্তিগত ধারনা। বাকিটা লেখক ভালো বলতে পারবে।
আমের মোস্তাক আহমেদের প্রথম পাঠ করা বই ‘‘পাপপিঞ্জর’’ সেদিক থেকে বইটাকে আমি সুখপাঠ্য ও দারুন রোমাঞ্চকর হিসেবে গ্রহণ করতে পেরেছি। লেখক উক্ত বইতে বেশ "ইংরেজী ভাষা" ব্যবহার করেছেন যেটা চাইলে উনি কমাতে পারতেন। সাধারণত আমরা দেখি, ইংরেজী ভাষা বা যেকোন ভাষার কথা বললেও লেখক বা অনুবাদক সেটাকে বাংলাতে রুপান্তর করে ফেলে শুধুমাত্র পরিশেষে বলে দেয় যে, লোকটি কথা ইংরেজীতে বলেছেন অথবা সে কথাটি ইংরেজীতে উচ্চারণ করেছে এইভাবে। এইদিকে কিছুটা খেয়াল রাখাটা উচিত বলে করি, এইরকম হলে ইংলিশ যত চরিত্র আসবে তাদের সংলাপ বাংলাতে রুপান্তর না করে ইংরেজীতে লিখে যেতে হবে। যদিও লিখক কেনো ইংরেজী সংলাপ আসছে সেটা বারবার উল্লেখ করেছেন।
কিছু প্রশ্ন আমি বইয়ের বিস্তারিত দেওয়ার পরে "স্পয়লার" হিসেবে লেখক ও যারা পড়েছেন তাদের উদ্দেশ্য করবো একেবারে নিচে।
প্রচ্ছদ তৈরি করেছেন ‘তন্ময় ইরতিজা’ তিনি চেষ্টা করেছেন গল্পের সাথে প্রচ্ছদের মিলকরণ ফুটিয়ে তুলতে। প্রচ্ছদ পছন্দ হয়েছে, বিশেষ করে ‘‘পাপপিঞ্জর’’ লিখাতে গোলাপী আলোড়ন ও একটা মুখাবয়ব যেখানে কাটা দাগ থেকে রক্ত ঝড়ে পড়ার দৃশ্য! সবমিলিয়ে সুন্দর।
বইটা সুখপাঠ্য হওয়ার আরেকটা কারণ হচ্ছে নির্ভুল বানান। তবে কিছু জায়গায় (ে,া,=) আ-কা, এ-কারের এইরকম ডাবল ব্যবহার দেখা গিয়েছে, কিছু কিছু শব্দ একসাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাদবাকি সব ঠিকঠাক। মলাট হিসেবে বইটি শক্তপোক্ত, অন্যদিকে বাইন্ডিং ঠিকঠাক যদিও বাতিঘর প্রকাশনীর বই নিয়ে কমবেশ অনেকের শঙ্কা থাকে পৃষ্ঠার বাধাই নিয়ে তবে এদিক থেকে বইটার বাধাই ভালো ছিল। সাদা পৃষ্ঠা হিসেবে ভালোই লেগেছে। সবমিলিয়ে বিল্ড কোয়ালিটি পরিতৃপ্তি এনে দিবে।
✬ গুডরিডস— ৪.২৮/৫ (৪৩) ✭ ব্যাক্তিগত রেটিং— ৪.৫/৫
➠ বইঃ পাপপিঞ্জর | আমের আহমেদ ➠ জনরাঃ হরর, ডার্ক ফ্যান্টাসি ➠ প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ➠ প্রচ্ছদঃ তন্ময় ইরতিজা ➠ প্রকাশনীঃ বাতিঘর | মূল্যঃ ৪৫০ টাকা মাত্র
জ্যামে অনেকক্ষণ আটকে থাকলে কেমন লাগে? অনির্বানও একদিন ওর রদ্দিমাল গাড়িটা নিয়ে জ্যামে আটকে ছিল। হুট করেই ওর গাড়ির পেছনে একটা গাড়ি এসে ধাক্কা দিলো। এমনেই শালা রদ্দিমাল গাড়ি, এর ওপর ধাক্কা দিলে কার মেজাজ ঠিক থাকে। অনির্বান নেমে গেল। কিন্তু যা দেখল...ওর মাথা নষ্ট হয়ে গেল। পেছনের গাড়িটার ড্রাইভার মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কিন্তু তার চেহারায় জীবিতদের মত বিষণ্নতার ছাপ। অদ্ভুত ব্যাপার হল, মৃত্যুর পরেও দেহটা নড়ছে।
লাশটা নিয়ে গেল ডিএসআই। প্যারানর্মাল ইনভেস্টিগেশনের সরকারি দপ্তর। সেই সাথে অনির্বাণকেও নিয়ে গেল ওরা। অনির্বান জড়িয়ে পড়লো অদ্ভুত এক কেসে? লাশটা নড়ছে কেন? কালোজাদু নাকি কোনো অভিশাপ? কে করেছে লাশের এই ভয়াবহ হাল? ডিএসআই ও অনির্বান কি এই রহস্যের সমাধান করতে পারবে?
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
আমের আহমেদের বৃহৎ পরিসরে লেখা হরর উপন্যাস হল পাপপিঞ্জর। শহুরে প্রেক্ষাপটে লেখা হরর গল্প। হিসেবে হরর থ্রিলার, ক্রাইম হরর কিংবা কিঞ্চিৎ আরবান ফ্যান্টাসিও ধরা যায়। দারুণ ফাস্ট পেসড, পেজ টার্নার। প্লটও ভালো। ভালো এক্সিকিউশন। সেই সাথে রহস্যময়, সাহসী কিছু প্রটাগনিস্ট। সুন্দরভাবে ভয়ানক কিছু মিথলজিক্যাল জ্বীনের ব্যবহার করেছেন লেখক। যেমন এট্রক্স, আনআনুম ইত্যাদি। যথেষ্ট ভয়ানকভাবে এদের কার্যক্রম ব্যাখ্যা করেছেন। সেই সাথে এদের মিথলজিও ব্যাখ্যা করেছেন। কিছু জায়গায় ভয়ের উদ্রেক হয়েছে। কিছু জায়গা বেশ ক্রিপি ছিল। গা শিউরে উঠেছে কয়েক জায়গায়। সর্বশেষ এমনটা হয়েছিল অক্টারিন ও হার না মানা অন্ধকারের ক্ষেত্রে। জ্বীনদের ধ্বংসলীলা উপভোগ্য ছিল, ওদেরকে থামানোর প্রক্রিয়াও বুদ্ধিদীপ্ত ও চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে। টুইস্ট মোটামোটি। কিন্তু এধরণের উপন্যাসে টুইস্ট মুখ্য নয়। তবে লেখক মূল কালপ্রিটের ব্যাপারটা আরেকটু রহস্যময় করতে পারতেন। যাইহোক সেটা উপন্যাসের অলঙ্কার একদম কমায়নি। পাপপিঞ্জর আমার পড়া এ বছরের অন্যতম প্রিয় হরর হয়ে থাকবে। লেখক আমের আহমেদের কাছে এই বইয়ের সিক্যুয়েল চাই।
দুর্দান্ত একটা মৌলিক শেষ করলাম। বইয়ের প্লটটা আপাতদৃষ্টিতে সরল মনে হলেও অনবদ্য উপস্থাপনা এবং চরিত্রায়ন বইটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। আধিভৌতিক ব্যাপার-স্যাপারের সাথে চরিত্রগুলোর জীবনঘনিষ্ঠ বর্ণনা দারুনভাবে বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছে। ঢাউস সাইজের বই ছিল, তবুও বিনা বিরক্তিতে একমনে পড়ে গিয়েছি। সমাপ্তি অসাধারণ ছিল, বইয়ের পরবর্তী পার্টের অপেক্ষায়।
অনির্বাণ একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করে। সম্প্রতি কিছু টাকা জমিয়ে সে একটি থার্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনেছে যার এসি থেকে গরম বাতাস আর ধুলা বের হয়। সেই গাড়ি নিয়েই একদিন অফিসে যাওয়ার সময় ট্রাফিক জ্যামের মধ্যে একটা অঘটন ঘটলো। কথা নাই বার্তা নাই তার গাড়ি বরাবর লাগায় দিলো আরেকটা গাড়ি। সে গাড়ি থেক বের হয়ে ঐ ড্রাইভারকে গালি দিতে গিয়ে দেখলো ড্রাইভার ঠিক জীবিত না। প্রায় পচন ধরে যাওয়া একটা লাশ গাড়ি চালাইতেছে। তা মৃত মানুষ গাড়ি চালাইলে দুই একটা এক্সিডেন্ট হওয়াটা নিশ্চয় অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু এই এক্সিডেন্ট এর মাধ্যমে জ্বীন,শয়তান,টাইম ট্রাভেল,টাইম লুপ,প্রতিশোধ হাবিজাবির মধ্যে জড়িয়ে গেলো অনির্বাণ। সরকারের একটা গোপন সংস্থা যাদের কাজ অবাধ্য বেয়াদব জ্বীন ভূত দের ধরে ধরে ধ্বংস করা, সেই সংস্থার সাথে পরিচয় হয় অনির্বার্ণের। মুর্দা হালায় গাড়ি চালায়া ওভারব্রিজের জ্যামে হান্দাইলো ক্যামনে হেইডা গবেষণা করতে করতে সংস্থার এক সিক্রেট এজেন্টের প্রেমে পইড়া ব্যাংকের চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয় অনির্বাণ। এরপর আর কি! চলতে থাকে জ্বীন দের সাথে কিউট যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা আর ভয়ংকর নির্মম প্রেম ভালোবাসা। খুবই আধ্যাত্মিক উপন্যাস নিঃসন্দেহে।
বেশ বড় পরিসর নিয়ে লেখা গল্প৷ মূল চরিত্রকে গড়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট সময় দেয়া হলেও ঠিক কনভিন্সিং ক্যারেক্টার লাগেনি৷ তরফদার সাহেব যেন কিছুটা প্লট আর্মারের হুমকি-ধামকি খেয়েই অনির্বাণকে পছন্দ করেছেন আচমকা৷ আর গল্প শেষ পর্যায়ে গিয়ে লম্বা সময়ের জন্য ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যাওয়ায় কিঞ্চিৎ ফোকাস হারিয়েছে মূল কাহিনী৷ কিছুটা মেদ আছে লেখায়৷ আরেকটু কাটছাঁট করলে কম্প্যাক্ট একটা প্রেজেন্টেশন হতো৷ তবে সবমিলিয়ে ভালো লেগেছে৷ বাংলাদেশী আরবান ফ্যান্টাসিতে প্রশংসনীয় এক সংযোজন৷
অনেকদিন পরে এত অসাধারণ একটি আদিভৌতিক উপন্যাস পড়লাম। প্রথম দিকে কাহিনী অনেক স্লো লাগছিলো, তবে ১০০ পেজের পর আর সেরকম টা লাগে নি। শেষের দিকে দুর্দান্ত সব টুইস্ট ভরপুর ছিল, যার কারণে একদম এ বোরিং মনে হয়নি কোথাও। যারা হরর গল্প পড়তে পছন্দ করেন, তাদের আমি অবশ্যই বইটি সাজেস্ট করবো। হ্যাপি রিডিং ।
📖 Book: পাপপিঞ্জর / Pappinjar (Pap/ পাপ = Sin, Pinjar/ পিঞ্জর = Skeleton. So, roughly "The Cage of Sins") ✍️ Author: আমের মোস্তাক আহমেদ / Aamer Mostaque Ahmed 📚 Genre: Urban Fantasy | Supernatural Thriller | Bangladeshi Occult Fiction | Psychological Horror | Speculative Fiction | Bangladeshi Gothic Horror 📅 Published: February 2019 by Batighar Prokashoni 📦 Book From: PBS Ltd 🔥 My Rating: ⭐⭐⭐⭐½ (4.5/5)
Ω 𝐒𝐲𝐧𝐨𝐩𝐬𝐢𝐬: The novel opens with a deceptively simple premise: Anirban, an ordinary banker, encounters something extraordinary during a traffic jam on a busy Dhaka flyover in broad daylight. What begins as a simple rear-end collision quickly transforms into a nightmare when the other driver turns out to be a three-day-old rotting corpse that's somehow still moving. As Anirban is swept into the shadows of the DSI—a secret government unit handling supernatural phenomena—he enters a world few survive. From demonic possessions and corrupted dimensions to cursed relics and ancient pacts, Anirban, alongside DSI agents like Nisha and Dr. Torafdar, must untie a mystery that runs deeper than mere haunting. It traces back to trauma, generational guilt, and spiritual warfare (+ somehow 1971). And at the center of it all? A villain who barely appears, but when they do, they burn into memory, embodying the very CAGE OF SINS where monsters are born out of grief, vengeance, and despair.
Will they survive the ancient djinns? Will Anirban’s conscience withstand the emotional toll? And in the end, will justice be served—or will revenge consume them all?
💭 𝐌𝐲𝐓𝐡𝐨𝐮𝐠𝐡𝐭𝐬: In the landscape of Bengali literature, where supernatural fiction often treads familiar ground, আমের আহমেদ's "পাপপিঞ্জর" emerges as a refreshing and ambitious departure. This debut novel doesn't merely tell a horror story and entertain us—it constructs an entire universe where ancient djinn mythology collides with modern urban Bangladesh.
I’ll be honest: this book had been recommended to me by people whose tastes I trust. When writer and dramatist/ playwriter Nabiha Nupur [notable works বারোটা বেজে বাইশ (2023), নিখোঁজকথন (2024), এখানে ভূত তাড়ানো হয়: ফোন করে আসবেন (2025) book and প্রিয় কুন্তল & একজন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেমিকা drama (2025)] told me on June 23, 2025 that, “পাপপিঞ্জর মাস্ট রিড। এটা মাস্টারপিস/ Pappinjar is a must-read. It's a masterpiece” it stuck with me. And then on June 24, 2025, while having a random conversation, prominent Bangladeshi bookstagrammer Musa said about this book's review, “লিখি নাই আমি। বেশি ভাল্লাগসিল বলে লিখতে পারিই নাই!’/ I haven't written it. I liked it so much that I just couldn't!”, I had to ask myself—what is this book doing right?
Turns out, a lot. We usually think of horror books as being full of darkness, and lots of jump scares. Then the writer welcomes us to পাপপিঞ্জর, where horror thrives not in darkness, but in midday traffic. Topics are familiar, but the presentation is incredibly fresh and innovative, through which we get to see that, Pappinjar is what happens when revenge becomes a parasite — when justice mutates into damnation.
Let’s begin with the tone. Placing supernatural horror in the harsh light of day rather than the comfort of darkness—this brilliant subversion of expectations immediately establishes the book's unique tone. So, from the very first pages, we’re submerged in an unsettling atmosphere. The pacing is deliberate—almost deceptive. At first, it feels like the narrative is slowly circling the drain, repeating motifs, meandering. This deliberate pace allows for proper character establishment and world-building. Once the story gains momentum, it becomes a genuine page-turner that maintains tension through to its conclusion.
What truly sold it for me was its rich cast of characters. Sameer Ahmed—better known as Anirban—works in the SME department of a prominent Bangladeshi bank and stands out as one of the most human protagonists I’ve come across in recent Bengali horror fiction (granted, from the little I’ve read so far). His emotional nature—his tendency to respond with his heart instead of his head—makes him incredibly relatable. Take page 136, where Nisha observes: “মানুষটা অনেক ইমোশনাল। এই ইমোশন দিয়ে সবকিছুর সাথে লড়তে চায় ও। কিন্তু শুধু আবেগ দিয়ে সব দানবের মোকাবেলা করা যায় না। / The man is too emotional. He wants to fight everything with this emotion. But you can't face all monsters with just feelings.” But the moment that resonated most with me comes on page 45, where Anirban’s emotional state is captured beautifully: “সবার সাথে একটা নির্মল বাঁধভাঙ্গা হাসি দেখতে পেল অনির্বাণ। কাছের মানুষগুলো সব নিজের মতো ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। একটা স্বার্থপর বিষণ্ণতা ধীরে ধীরে ভর করতে শুরু করলো ওর ওপর।/ Anirban saw everyone sharing carefree, bursting laughter. The people closest to him were all busy in their own worlds. A selfish melancholy slowly began to take hold of him.” Relatable, isn’t it? So, this simple, emotional guy—stuck in a mundane life—quietly longs for something exciting. Think about it. Don’t we all? Still, Anirban’s reactions can be frustrating. I, too, was annoyed by some of his decisions, especially during that final conversation with Assistant Superintendent of Police (ASP, a Grade 9/Assistant Secretary–ranked officer) Bikash Majumdar, who also happens to be his senior from the Faculty of Business Studies at the University of Dhaka. But that’s what makes him feel real. He’s no superhero—just a flawed man learning, stumbling, regretting. His exit from DSI felt justified—not necessarily for the reasons the author provides, but for one I personally believe in. His sharp observation and snap memory were key to this case, mostly because he was a direct witness. While these traits might help in future investigations, Anirban lacks the training and, more importantly, the temperament needed to be a full-fledged DSI agent. I suspect this particular logic might have slipped through the cracks during the writing process—either overlooked or intentionally left ambiguous by the author.
Then, if Anirban is the heart of the story, our impossible girl, the Deputy Director of DSI, Ishrat Karim (Nisha)—a PhD in Psychology—is undoubtedly its soul. A layered, magnetic character whose presence alone could carry a series. Her backstory felt like a dagger to the heart (or face, perhaps 🤔). It was raw, brutal, beautifully tragic and provides some of the novel's most emotionally powerful moments. The rape scene wasn’t there for shock—it carried meaning, grief, and resistance. I was disturbed, broken, then driven to finish the book just to see her find closure. The way Ahmed handles her past—connecting personal trauma to the larger supernatural threat—demonstrates sophisticated storytelling that transcends genre boundaries. Her strength and vulnerability make her not just a compelling character but a symbol of resilience that readers can't help but root for. Not to mention, she’s one of the rare few who can touch djinns/ demons in their true form and sense where the fabric between the human and djinn worlds breaks—an ability as terrifying as it is fascinating. Kind of like a Metahuman (DC) or a Mutant (Marvel) from Hollywood, but rooted in our own myths 😉.
The supporting characters—Dr. Abul Kashem Torafdar (a former medical practitioner & the first Director of DSI), Dr. Kalidas Prasad (former DD of DSI, now heading the Medical & Preservation Room), Saif Karim (the wonder boy with rare abilities; DSI’s best fighter), Joseph D’Costa (DSI’s sharpshooter & weapon specialist who is directly recruited from the BD Army’s Commando Unit), Asif Kamal (anime fan & the country’s best hacker, recruited from either the BD Police or BD Army as DSI’s Resident IT expert), and Miraj (a field agent deployed to DSI from RAB, the elite multi-agency task force)—each occupy their designated spaces effectively. So glad the love finally happened—and that kiss? Been rooting for them!
And then there’s the villain. Ahmed has crafted one of the most genuinely terrifying antagonists in Bengali fiction—cruel, calculated, and quietly menacing. The primary antagonist manages to be bone-chillingly effective despite limited screen time, establishing a presence that lingers long after their scenes end. The Ananum/ আনআনুম djinn and entities like the Atrox are rendered with eerie detail and mythological consistency, making them both believable and deeply unsettling. Another key character/ antagonist holds a major twist—but saying more would give it away.
The world-building in পাপপিঞ্জর is among the best I’ve encountered in local contemporary fiction this year. While urban fantasy often leans heavily on Western supernatural lore, this novel crafts a uniquely Bangladeshi universe that feels authentic, not imitative.nThe Directorate of Special Investigation (DSI)—a secret government agency tasked with handling all supernatural, paranormal, and unexplained phenomena in Bangladesh—is a brilliant localized take on the covert organizations we often see in Hollywood. In the novel we see, DSI originally formed in 1992. Back then it was under Army Intelligence, thus suffered from severe governance issues. But after a supernatural attack on the then Prime Minister in 1996, with the direct intervention of the then prime minister, DSI was restructured into an autonomous, shadow organization under the Prime Minister’s Office. It’s a clever move that, strangely enough, feels right at home within our bureaucratic framework. And the DSI headquarters? Incredibly cool. A vast library, a relic room filled with ancient artifacts and supernatural weapons, a general weapons and practice arena, and even a Medical & Preservation Room—it’s all vividly imagined and immersive. Just one gripe: the use of 'Director' as the head of the agency. It’s a common practice in the USA (like FBI or fictional organization S.H.I.E.L.D. etc.), but in Bangladesh’s administrative hierarchy, that role would more accurately be 'Director General' (Grade 1/Secretary rank). It’s a small thing, but it caught my eye. But then again, what do I know about the writer’s vision.
I also loved the blend of science & magic—terms like “dimension break” made the lore feel grounded. The fight scenes are detailed, cinematic, & pulse-pounding. The weapons were especially fun: the মাদ্দিয়া মিন হাত্তুশা dagger, গোইজ্জু হোয়া or Demon Detection Box, and ওডিঙ্গা gloves. I’m not sure if these have real-world references (couldn’t find anything concrete on Google), but honestly, I didn’t care—they were imaginative, effective, and just cool.
One of the writer’s true strokes of brilliance is how he weaves the plot into the context of our Liberation War and its aftermath. I don’t know if it’s coincidence, but just days before reading পাপপিঞ্জর, I had finished and reviewed Shahidul Jahir’s জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা. In পাপপিঞ্জর, Aamer Ahmed shares why one of the antagonists made a pact with a djinn. The suffering of this antagonist is eerily similar to the entire novella of 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা'.
[On a different or may be similar note, why do war-criminals in Bangladesh always end up gaining power and prosperity? It forces us to confront whether the lessons of the past have truly been learned, or if we are, in fact, trapped in a cyclical narrative where the wounds of history are reopened again and again. Anyway, if you want, you can find my review of 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা' on:
With that similarity, the novel also dares to ask: What happens when law and society fail to deliver justice? Isn’t that when revenge steps in—not as a choice, but as instinct? And like a parasite, it consumes. This cycle of pain and betrayal—how unhealed wounds give rise to monstrosity—struck me deeply. As I read that antagonist’s backstory, I fully understood that their motivations were rooted in real human suffering. Judge me if you must, but I did sympathize. Doesn’t that prove the book’s emotional maturity? The fact that we felt what the author intended—that’s real success. It’s easy to follow, emotionally gripping, and accessible to readers of any age.
But as much as I loved the book—there were flaws. Let’s talk editing. Frequent misspellings like “আদিভৌতিক” instead of “আধিভৌতিক” weren’t the only ones; several other random spelling errors were scattered throughout. Add to that a few grammatical slips and factual inaccuracies. One example: on page 353, “পাহাড়পুর/ Paharpur” is mistakenly mentioned as being in Bogra (and no, I still don’t feel like writing ‘Bogura’). Many might not notice, but having lived in Bogra from 1998 to 2007 (theoretically till 2010), I’m quite certain the author meant মহাস্থানগড়/ Mahasthangarh. Paharpur is actually in Naogaon. And how do I know that? Naogaon was my father’s very first government posting in 1983—and funnily enough, also his 11th (technically 8th) in 2006 during his decorated 33+ year career in public service. Then there’s the line that Miraj was ‘recruited from RAB.’ What does that even mean? The Rapid Action Battalion (RAB) is a paramilitary, multi-agency elite task force under the Ministry of Home Affairs, composed of personnel deputed from the Bangladesh Police, Army, Navy, Air Force, and Border Guard Bangladesh (BGB). Since RAB itself is a composite force of deputed members, it doesn’t have the authority to deputate anyone elsewhere. The accurate phrasing would be: Miraj was deputed from one of those core forces (excluding BGB, whose senior leadership is usually deputed from the Army)—not from RAB directly.
Then there’s the writing style—it wavers. At times, it feels stiff; at others, overly romantic, making some dialogues sound unnatural. Certain scenes glow with atmospheric richness, while others feel either overwritten or underdeveloped. The early chapters, though important for world-building, suffer from sluggish pacing. A sharper editorial hand could’ve trimmed the excess without losing depth, resulting in a more cohesive narrative arc. These issues, while noticeable, didn’t ruin the experience for me—thanks to the book’s overall brilliance. But they did make me seriously question the current editing standards in contemporary Bengali publishing. As someone committed to reading more Bengali book in 2025, I’ve noticed this as a recurring problem. If Bengali horror—or Bengali literature as a whole—wants to compete globally, it’s high time these editorial gaps be addressed with real urgency.
And then there’s the ending. For a villain that terrifying (not the main antagonist), the final showdown felt too abrupt. A bit more buildup—a proper face-off—would’ve made all the difference. A few more pages might’ve helped. The way the Fallen King forged the Odhinga weapon so quickly? Felt too convenient & overly simplified, like the writer ran out of ideas at that point. Some plot threads, like Masud Parvej’s unresolved fate, deserved closure. And that antagonist whose name I’ve deliberately avoided mentioning? He could have contacted DSI for help instead of doing what he did.
Furthermore, Dr. Torafdar, Dr. Prasad—even Alexander Corvas—deserved more depth. Flashbacks, origin stories—anything. So much potential, slightly undercooked. I also wanted more on Ananum, Bikash Majumdar, and the Fallen King. Honestly, Bikash needed a whole extra chapter—so much could’ve been clarified. I hope the sequel explores them wherever possible.
Now, let me say this loud: This book is made for the screen. Every element screams film adaptation—dialogue, visuals, pacing, emotional depth. I genuinely don’t understand why it isn’t more hyped. And then there’s the issue of availability. Major retailers being out of stock suggests poor distribution or limited print runs. Let me share my personal experience: After failing to order from Granthasram, I ordered from Boier Duniya, and after a week, they informed me they mistakenly took the order and didn't have it. Then I ordered from Baatighar, and after four days, they said they couldn't even manage a copy from the publishing house (Batighar) as Batighar had none. Finally, I ordered from PBS, and after three days, they informed me they had only one copy, which was old and a bit defected, so they'd try to get a fresh one from The Publishing House. They couldn't, and ultimately sent me the old, somewhat defected copy (which I didn't mind). Even Rokomari didn't have any copy. Sure, free PDFs exist—but piracy goes against my ethics. I’d never cheat a writer like that. For a novel of this caliber, that’s a serious missed opportunity—for readers and for the publishing industry.
Lastly, despite some editorial rough edges and a few other issues, পাপপিঞ্জর is a masterclass in horror storytelling—ambitious, emotional, terrifying, and deeply human. It proves that local authors can work within international genre conventions while preserving distinctly Bangladeshi sensibilities. Its exploration of historical trauma, family bonds, and social dynamics adds meaningful depth beyond mere entertainment. Personally, I tend to prefer stories like Nabiha Nupur’s এখানে ভূত তাড়ানো হয়: ফোন করে আসবেন > Mohaimin Arefin’s পরম্পরা > M.J. Babu’s জিন (which focuses on black magic, djinns, Ruqayyah, and authentic Islamic-rooted lore). But in terms of overall quality, পাপপিঞ্জর topped them all in my short experience with Bengali supernatural fiction—and that’s how it earned a solid 4.5/5 from me.
The book’s setup for future installments promises an exciting series ahead. Aamer Ahmed (who, I’m happy to say, graduated from my alma mater NSU—possibly a year or two junior to me!) has something special here. If he can maintain this quality—or, dare I hope, improve it—while addressing minor technical issues, the পাপপিঞ্জর series could very well become a defining work in Bengali speculative fiction. And honestly, I can’t wait to see where Anirban, Nisha, and the terrifying legacy of পাপপিঞ্জর go next.
And with that, my formal review ends. I couldn't help but notice the irony: I criticized the book’s pacing, yet here I am, dumping information and personal stories into paragraphs as if possessed, Ha ha 😅! Ergo, sorry as I’ve wasted enough of your time with this bizarrely big (even considering my usual standard) book talk, but I appreciate you wasting it with me.
হ্যাঁ, বইটা যখন পড়ছিলাম মনে হচ্ছিলো, ধুর! বইটা পড়ে শীতের ছুটিটা মাটি করতেছি। আবার ���খন পড়ে শেষ করলাম মনে হলো, নাহ! বইটা ভালো আছে। লেখককে দোষ দিয়ে লাভ নাই। বইটার প্রতি অনুভুতিটা সংকর ধরণের।
বিস্তারিত ধীরে ধীরে বলছি..
➠ বই : পাপপিঞ্জর | আমের আহমেদ ➠ জনরা : হরর, ডার্ক ফ্যান্টাসি ➠ প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ➠ প্রচ্ছদ : কৌশিক জামান ➠ প্রকাশনী : বাতিঘর ➠ মূল্য : ৪৮০ টাকা মাত্র ➠ পেজ সংখ্যা: ৪৪৬ ➠ব্যক্তিগত রেটিং: ৩.৪/৫ ➠গুডরিডস রেটিং:৪.৩/৫
🔴বইটা আদিভৌতিক ধরণের এবং আরবান ফ্যান্টাসিও বলা যায়। এই আদিভৌতিক জনরা এবং গুডরিডসে হাই রেটিং দেখে বইটা তুলে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এটা টানটান সাসপেন্স সম্পন্ন বই। ভুল করেছিলাম।
কেউ যদি এটাকে পাতায় পাতায় টানটান সাসপেন্স সম্পন্ন বই বলে মনে করে থাকেন তাহলে ভুল করবেন। হ্যাঁ, এই বইতেও সাসপেন্স আছে। তবে ২৮০পেজের পরে।
⚫কাহিনী শুরু হয় খুব আকর্ষণীয় ভাবে। নড়তে থাকা অভিশপ্ত লাশ!! কাহিনী শুরুর ২-১ অধ্যায় পরই শুরু হয় বিশাল চরিত্র চিত্রায়ন। লেখক প্রায় ২৬০ পেজ মতো নিয়েছেন চরিত্র চিত্রায়নেই। তবে এর মাঝে কিছু মাথানাড়া দেওয়া বিষয়ও আছে। আছে ডিটেকটিভ বিষয়াদিও। কিন্তু ওগুলোর পড়েও বোরিং কাটতেছিলো না। মনে হচ্ছিল একই জিনিস বার বার ফিরে আসতেছে। এরপর আবার শুরু হচ্ছিল ক্লাসিক ভাবে চরিত্র চিত্রায়ন। এভাবেই শেষ হবে ২৮০ পেজ!! অবশ্য তার পরের ১৬৬ পেজ যথেষ্ট সাসপেন্স সম্পন্ন।
লেখকের লেখনী যথেষ্ট পরিষ্কার এবং সুখপাঠ্য। এটাই লেখকের প্রধান হাতিয়ার। এই হাতিয়ারকে কেন্দ্র করেই অনেক পাঠক প্রথম ২৮০পেজ সহজেই শেষ করে ফেলতে পারবে। অনেকের বোরিং নাও লাগতে পারে।
🔴সব ভালোর ভালো হচ্ছে, লেখক বিষয়াদির এমন ভাবে বর্ণনা দিচ্ছিলেন যেন কাহিনী পাঠকের কাছে বাস্তব লাগে। এখানে লেখক সফল হয়েছেন। কাহিনী কাল্পনিক হলেও কাহিনী বাস্তব বাস্তব মনে হচ্ছিলো।
আমার মনে হয়, যদি বইটার প্রথম এবং মাঝামাঝির বর্ণনা গুলো কিছুটা কমিয়ে ২৮০-৩২০পেজের মধ্যে লেখা যেত তাহলে বইটা যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেত। কথাও এমন ছিলো। লেখকের পোস্ট হতে জানলাম, বইটা লেখার কথা ছিল ৪০,০০০ শব্দে কিন্তু বইটা লিখতে গিয়ে শব্দসংখ্যা দাঁড়ায় ১১৯,০০০ শব্দে! এখানেই সমস্যাটা হয়েছে। চরিত্রগুলোকে পাঠকের কাছে বেশি আন্তরিক করতে গিয়ে বোর বোর একটা ভাব চলে এসেছে গল্পে।
🔴লেখকের পোস্ট হতে জানলাম, এই সিরিজের নাকি ৭টি বই বের হবে এবং সিরিজের পরবর্তী বই "বইমেলা-২০২২" এ বের হবে।
🔴মোট কথা হচ্ছে, জিনদের পিছনে ডিটেকটিভ লাগলে বিষয়টা কেমন হয় যদি তা জানতে চান এবং কম সাসপেন্সে বড় বই শেষ করার মানসিকতা থেকে থাকে তাহলে নিয়ে নিন বইটি।
কিছু বই থাকে যেগুলোর গল্প,কন্সেপ্ট এসবই মূলত পাঠকের মনে রয়ে যায়। আবার কিছু বইয়ের গল্প বলার ভঙ্গি,ভাষার ব্যবহার ইত্যাদি কারণে তা সুখপাঠ্য হয়ে উঠে কিন্তু পাপপিঞ্জর এমন এক বই,যার কন্সেপ্ট এবং প্লট ইউনিক হওয়ার পাশাপাশি চরিত্রগুলো খুবই স্ট্রং। অনেক ক্ষেত্রেই পড়া বইয়ের চরিত্রগুলো কিছুদিন পর হয়তো ভুলে যাই কিন্তু এই বইয়ের চরিত্রগুলো একদম মনে গেথেঁ আছে।
" আরবান ফ্যান্টাসি ",হরোর থ্রিলার অনেকের মনে হলেও আমার মতে বইটা পুরোপুরি হরোর থ্রিলার। যার প্যাটার্ন ভিন্ন। প্রথম থেকেই হয়তো সেভাবে হুক করতে না পারলেও, স্লো বিল্ডাপে গল্প এগিয়ে যায়।প্রথমার্ধের পর একটানে পড়ে ফেলা যায়। এমনকি বইয়ের একটা অধ্যায় অনেক বড়, সেটাও কখন শেষ হয়ে যাবে বুঝতেই পারবেননা।
প্লট সম্পর্কে বেশিকিছু বলবো না,ফ্ল্যাপের অংশটুকুই বইটা পড়ার জন্য যথেষ্ট। কোনো ধরনের স্পয়লার ছাড়া এমনকি সাধারণভাবে গল্প না বলেও এই লেখার মাধ্যমে সকলকে আকৃষ্ট করা হয়েছে বইটি পড়ার জন্য। → __
" পাপ। প্রতিশোধ। প্রায়শ্চিত্ত।
সমাজ ও আইন যখন ন্যায় বিচারে ব্যর্থ হয়, তখন পাপীর প্রায়শ্চিত্ত নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব গ্রহণ করে আদিম এক প্রবৃত্তি। সেই প্রবৃত্তির নাম প্রতিশোধ। যে প্রবৃত্তির প্রজ্জ্বলিত রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষদের গুনতে হয় চরম মূল্য। কিন্তু সেই মূল্য প্রতিশোধ উন্মত্ত মানুষগুলোকে পথচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়। কারণ প্রতিহিংসার অনলে দগ্ধ হওয়া সত্তা যেকোন মূল্য পরিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকে।
জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার পেছনে কিছু কারণ থাকে যা একজন মানুষকে নিয়ে যায় নিয়তির দিকে। সেই নিয়তির অমোঘ স্পর্শে অসম্ভব এক ঘটনার সাক্ষি হয়েছে অনির্বাণ। প্রবেশ করেছে বাস্তবতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা হিংস্র একটি জগতে, যেখানে কদর্য কিছু অস্তিত্বের বিপরীতে প্রতিনিয়ত জীবন বাজি রেখে লড়াই করে চলেছে অসাধারণ কয়েকজন যোদ্ধা। " __
বইয়ে বিভিন্ন ধরনের কন্সেপ্ট যেমন টাইম ম্যানুপেলেশন,টাইম লুপ,ডাইমেনশন ব্র্যাক ইত্যাদি পরিচয় করানো হয়। তাছাড়া আধিভৌতিক সমস্যা গুলোর জন্য একটি আলাদা সংগঠন দেখানো হয়েছে। তাদের তদন্তের এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। যা ভালোই লেগেছে কিন্তু বইটি শুরুর দিক থেকে আকৃষ্ট করলেও চরিত্রদের মধ্যে সংলাপ কিছুটা ভিন্ন যা ভালো লাগেনি এবং প্রথম ২৫০ পেজ ধৈর্য ধরে পড়তে হয়েছে যা আরেক্টু সংক্ষেপ করলে ভালো হতো কিন্তু কিছু জায়গা হয়তো বিল্ডআপের জন্য ছিল তাই সে অংশও গুরুত্বপূর্ণ।
বইয়ের সবচেয়ে পজিটিভ পয়েন্ট আমার মতে চরিত্রগুলোর উপস্থাপন এবং তাদের বিস্তৃতি যা অসাধারণ মনে হয়েছে। সম্ভবত বিশাল কোনো সিরিজের প্রথম বই এটি। তাই এর পরবর্তী বইগুলোর জন্য অপেক্ষায় রইলাম। তাছাড়া যদি কখনো এই বইয়ের এডাপটেশন হয় তাহলে মন্দ হয়না। বাংলায় ভালো হরোর থ্রিলার সিরিজ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু অন্যান্য বইয়ের এডাপটেশন এর মতো নষ্ট না করলেই হয়। সর্বোপরি সময়সাপেক্ষ এবং উপভোগ্য হরোর থ্রিলার এটি যার পরবর্তী ধাপের জন্য অপেক্ষায়.......
রিডার্স ব্লকে পড়ে থাকা একজন থ্রিলারপ্রেমী যদি "পাপ পিঞ্জর" র মতো মোটা বই দুই দিনে (ঘুমের সময় বাদ দিয়ে) গোগ্রাসে গিলতে পারে তাহলে অবশ্যই বলতে হবে বইটা বেশ ভালো। বইটা পড়ে যতটা ভয় পাবো আশা করেছিলাম তার কিছুটাও পাইনি ভয়। তবে এক ধরনের উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলাম যে মানুষ আর ডেমনের মধ্যে ফাইট হলে কিভাবে কি। এই বইয়ে ঠিক আমরা যেভাবে জ্বীন-ভূতের সাথে ফাইট করতে দেখি ওরকম কিছু না হওয়াতে হয়তো পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে গেছি। কেম্নে ফাইট করবে, কে বাঁচে, কে মরে, ওদের ব্যাকস্টোরি কি। সুপার হিরোদের ব্যাকস্টোরি, তাদের সুপার পাওয়ার সম্পর্কে হঠাৎ করে জানতে পারা- এরকম এরকম ফিল হচ্ছিলো। তবে মনে হচ্ছিলো সব সহজভাবে হয়ে যাচ্ছে। এতো মোটা বই কিন্তু ততটো ধাক্কা/হতবিহবল / " কি হলো এটা ওমাইগড " টাইপ কোনো মুহূর্ত দেয়নি। এটা হতাশাজনক। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে গল্পটা আমাকে একটুও বোর করেনি। আসলে মার্ভাডারগুলোর কারনে এতটা ভালো সময় কেটেছে। 😊 শেষটুকু যেন আমাকে বলছিল যে সব সহজ ভাবে হয়েছে তাইনা? অপেক্ষা করো সিকোয়েন্স এর জন্য। এই বইয়ে লেখক জ্বীনদের অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন এবং সরকারী একটা সংস্থার অস্তিত্ব আমাকে বেশ আপ্লূত করেছে :v
This entire review has been hidden because of spoilers.
কাহিনী যেভাবে শুরু হইছে, নতুন লাগলো। জায়গায় জায়গায় একরম সারপ্রাইজিং এলিমেন্ট ছিলো আরো কিছু, প্রত্যেকটাই ভালো লাগার মতো। বইটা পড়ার সময় এবার একদম স্টপওয়াচ ধরে বসছিলাম, পড়ার গতি আগের চেয়ে কমলো নাকি চেক করার জন্যে। কমে নাই একদমই, তবে এতো ফ্লুইডলি পড়তে পারার কারন বইয়ের লেখার স্টাইলটা। এটাও ভালো লাগছে।
টার্গেট ছিলো একটু একটু করে তিনদিনে শেষ করবো, দেড়দিনে করা লাগছে :3 কিছুটা পড়ে রেখে দেওয়ার পরে আবারো পড়তে ইচ্ছা করে, তারপরে আবারো। তাই এটা মোটামুটি শিওরিটি দিয়ে বলা যায় যে লেখক ইন্টারেস্টটা ধরে রাখতে সফল ছিলেন প্রায় সবটুক সময়ে। আর মানুষগুলোর অনুভূতির বর্ণনা যেভাবে করেন লেখক, ওটাও পছন্দ হওয়ার মতো।
হররের চেয়ে থ্রিলারই বেশি। ওভারঅল কনসেপ্ট ভালো। অল্প কিছু অংশ সামান্য ক্লিশে আর একটু বিরক্তিকর লাগা ছাড়া আর কোনো কিছু বাজে মনে হয়নাই।
স্টপওয়াচ নিয়ে বসছিলাম যে পড়তে প্রত্যেকবার। সাতঘন্টার একটু কম লাগছে টোটাল and the time was totally worth reading this.
বইটির যদি প্রথম দুইশো পেজ ধৈর্য নিয়ে পড়া যায়, তবে অসাধারণ একটি বই পড়ার স্বাদ পাবেন। ঐ দুইশো পেজ হয়তো সুপার ফাস্ট না, তবে চরিত্রগুলো আর তাদের সমস্যাগুলোকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেখানে। আর তারপর শুরু হয় এমেজিং এক অভিযান। বইয়ের 'এবিলিটি'-গুলো আর তাদের বর্ণনা খুব ভালো। ফাইটিং সিন দুর্দান্ত। গ্যাজেটগুলোও বেশ ক্রিয়েটিভ। ডিটেইল রিভিউ লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সময়ের অভাবে পারিনি। তবে এটুকু অবশ্যই বলতে চাই, এটা নিয়ে অসাধারণ একটি হরর/ফ্যান্টাসি মুভি তৈরি করা যেত। আর যদি সত্যিই কেউ তৈরি করতো, তবে আই উইশ আমি এর স্ক্রিপ্ট লিখতে পারতাম। I would love to do it.
বইয়ের সেরা অংশ কী? এককথায় নির্দিষ্ট কোনো চরিত্রের ব্যাকস্টোরি। Totally loved that part and the character associated with it.
এই বই কেন পড়বেন? চরিত্রায়ন নামক জিনিসটা সম্পর্কে জানার জন্য। সুপারন্যাচরাল আর ভয়ের অনুভূতি পাওয়ার জন্য। আর জিনের জন্য।
৫/৫ ⭐ ভাই রে ভাই কি পড়লাম আমি এটা !!! অসম্ভব সুন্দর একটা বই এটা। অনেক দিন যাবত TBR লিস্টে পরে ছিল বইটা এখন মনে হচ্ছে আরও আগে কেন পড়ে শেষ করলাম না। শুরুতে যেমনই যাচ্ছিলো শেষে তো একদম দম বন্ধ করা টান টান উত্তেজনা মূলক কাহিনী পুরাই গল্পের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম আমি! অসাধারণ গল্প এটা। বেশি ভালো লেগেছে যখন মেয়েটা মানে নিশার অতীত বর্ণনা করা হল। কি ভয়ঙ্কর !! ভাই রে ভাই আমি তো পরবর্তী বইটার অপেক্ষায় খুব অস্থির হয়ে আছি 😍 আশা করি সেটা আশাহত করবে না 😁 যদিও জানিনা আদৌ পার্ট টু আসবে কিনা 😊