Jump to ratings and reviews
Rate this book

মামলার সাক্ষী ময়না পাখি

Rate this book
এই গল্পগুলো ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের ভেতর লেখা । এগারোটা গল্পের চারটি ইতিপূর্বে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, বাকি সাতটি গল্প এই বইয়ে প্রথম প্রকাশিত হচ্ছে । ‘জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লেখেন’, ‘মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার’ এবং ‘ওয়ানওয়ে টিকিট’ গল্প তিনটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল; গ্রন্থিত হয়েছিল আমার ‘নির্বাচিত গল্প’ সংকলনে । ‘মামলার সাক্ষী ময়না পাখি’ শিরোনামটির জন্য আবদুল করিম খানের একটি পুঁথির কাছে আমি ঋণী । - লেখক

112 pages, Hardcover

First published February 14, 2019

56 people are currently reading
693 people want to read

About the author

Shahaduz Zaman

49 books530 followers
Shahaduz Zaman (Bangla: শাহাদুজ্জামান) is a Medical Anthropologist, currently working with Newcastle University, UK. He writes short stories, novels, and non-fiction. He has published 25 books, and his debut collection ‘Koyekti Bihbol Galpa’ won the Mowla Brothers Literary Award in 1996. He also won Bangla Academy Literary Award in 2016.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
203 (22%)
4 stars
461 (50%)
3 stars
208 (23%)
2 stars
28 (3%)
1 star
4 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 184 reviews
Profile Image for Shuhan Rizwan.
Author 7 books1,107 followers
April 19, 2019
মুখোমুখি আলাপে সালমান রুশদীকে একবার কুর্ট ভনেগাট জিজ্ঞেস করেছিলেন যে রুশদী সত্যিই লিখতে চায় কি না। রুশদী সায় জানালে ভোনেগাট দুঃখ করে বলেছিলেন, যে সমস্ত প্রকৃত লেখকের সামনে লুকিয়ে থাকে একটি অনিবার্য বিপদ। এমনও সময় আসে, যে একজন লেখকের কিছুই থাকে না লেখার, কিন্তু সেই ঘোরতর শুন্য দিনেও প্রকাশক আর ভক্তের চাপে তাকে লিখে যেতে হয়।

তো, লেখালেখি নিয়ে যত রকমের আলোচনা পড়ি নানা জায়গায়, তার মাঝেও এই কথাটা আমার বিশেষ করে মনে পড়ে। মনে হয়, বহু লেখকই লিখে চলেছেন কেবল প্রতি বছর বই লিখে মেলায় থাকতে হবে বলেই। আবিষ্কার করি, বলবার কিছু নেই ভেতরে, তবু অনেকেই লিখে চলেছেন।

দীর্ঘদিন পরে প্রিয় লেখক শাহাদুজ্জামানের গল্পগ্রন্থ ‘মামলার সাক্ষী ময়না পাখি’ পড়ে বোধ হলো, বলবার মতো বেশ কিছু কথা জমে গেছিলো তার ভেতরে। মাঝের কয়েক বছরের কলাম সংকলন আর অন্যান্য টুকরো লেখার ঝাঁপিতে এই অন্তর্যাসটা ক্যানো যেন খুঁজে পাইনি। গল্পলেখক ও স্তন্যপায়ী প্রাণী মতিন কায়সারের মতোই, মনে হলো এক ধরনের যাত্রা তিনি এখনো জারি রেখেছেন।

লেখকের মৃত্যু হয় পুনরাবৃত্তির সঞ্চারপথে, এই সত্য মেনে নিলে পাঠক জানতে পারবে এই সত্যও, যে লেখকের নিরীক্ষার যাত্রাতেই যুগপৎ লুকিয়ে থাকে গল্পের অচেনা দুনিয়া আবিষ্কারের ঝুঁকি আর সম্ভাবনা।
Profile Image for Amlan Hossain.
Author 1 book67 followers
February 26, 2019
একজন লেখককে তার সব লেখা দিয়েই বোঝা যায় না। রবীন্দ্রনাথ গল্প, উপন্যাস, কবিতা সবই লিখেছেন, কিন্তু ছোটগল্পেই যেন তিনি সবচেয়ে বেশি বাঙময়। আমার সব সময়েই মনে হয়েছে, শাহাদুজ্জামানের সত্যিকার শক্তির জায়গাটা তাঁর গল্পে। মামলার সাক্ষী ময়নার পাখিতে তার কিছুটা প্রমাণ পেলাম।

একটা গল্পগ্রন্থ কেমন সেটা বোধ হয় আলাদা আলাদা সব গল্প দিয়ে বিচার করা ঠিক নয়। পুরো গল্পে কোনো একটা অভিন্ন সুর অলক্ষ্যে থেকে বাজছে কি না, আমি সন্তর্পণে খেয়াল করি। এই বইতে যেন লেখকের বিষণ্ণতার সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা গলাগলি করে আছে পাতায় পাতায়। আগের কয়েকটি বইয়ের চেয়ে এবারের গল্পগুলো অনেক বেশি ‘ডার্ক’। এই বইয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প দুইটি- জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লেখেন আর মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার-দুটিতেই নাগরিক ডিপ্রেশন এসেছে বড় সন্তর্পণে।

সব গল্পই যে আবার খুব দাগ কেটেছে, সেটিও বলতে পারছি না। টুকরো রোদের মতো খাম, পৃথিবীতে হয়তো বৃহস্পতিবার, উবার বা অপস্রিয়মাণ তীর- এই গল্পগুলো যেন ঠিক জমাট বাঁধতে পারেনি। একটা আচমকা ধাক্কা দেওয়ার প্রবণতা ছিল, কিন্তু পাঠক কীভাবে সেই ধাক্কা সামলাবে, সেটি বোধ হয় ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি লেখক। কিছুটা হুট করেই যেন শেষ হয়ে গেছে সেগুলো। লবঙ্গে বঙ্গ ফেলে, চিন্তাশীল প্রবীণ বানরও মন্দ লাগেনি, তবে সত্যিকার একটা ধাক্কা খেয়েছি নামগল্পে এসে। ময়না পাখি কেন মামলার সাক্ষী- লোকজ একটা প্লটের সঙ্গে তুমুল মেট্রোপলিটানের প্রবঞ্চনা মিশে গেছে সেই প্রশ্নে। একটা গল্প আলাদা করলে আমি এটিই করব। নাজুক মানুষের সংলাপে নিরীক্ষার চেষ্টা ছিল খুব স্পষ্ট, কিন্তু কতটা উতরেছে তা নিশ্চিত নই।

তবে সবল গল্পেই মনে হয়েছে, নাটাইটা বরাবর ছিল লেখকের কাছে। তিনি জানেন, কখন সুতো ছাড়তে হবে, কখন ধরে রাখতে হবে। যেমনটি ছিল তাঁর কয়েকটি বিহবল গল্প আর পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহে। আর অমন দুর্দান্ত প্রচ্ছদের জন্য সব্যসাচী হাজরার একটি ধন্যবাদ প্রাপ্য।
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,956 followers
April 17, 2019
শাহাদুজ্জামান কি তার লেখার ধরণ বদলাচ্ছেন? বোধহয়। একদম শেষ গল্পটায় কেবল পুরনো গল্পকথকের ছোঁয়া পেয়েছি। তবে ব্যাপারটা কোনমতেই নেতিবাচক নয়। সবগুলো গল্পই কমবেশি ভালো লেগেছে। নির্মোহ ভঙ্গিতে তিনি যেভাবে জীবন দর্শনগুলো তার বিচিত্র আওব চরিত্রের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন তা বরাবরের মতনই উপভোগ্য।
Profile Image for তান জীম.
Author 4 books279 followers
August 13, 2021
ওয়েল, একেবারে মুগ্ধ হয়েছি বললে একদমই ঠিক হবে না৷ শাহাদুজ্জামানের 'মামলার সাক্ষী ময়না পাখি' ছোট গল্প গ্রন্থর কয়েকটা গল্প ভালো লাগলেও বেশিরভাগই 'চলে' বলে মনে হয়েছে। কিছু গল্প সাবলীল হলেও খাপছাড়া মনে হয়েছে। তবে তিনটে গল্প বেশ ভালোই লেগেছে।

১. নাজুক মানুষের সংলাপ
২. টুকরো রোদের মত খাম
৩. মামলার সাক্ষী ময়না পাখি

এই গল্পগুলোর আড়ালে লুকিয়ে থাকা ফিলোসফিগুলো আমি ধরতে পেরেছি বলেই ভালো লেগেছে। বাকিগুলোতেও হয়তো ফিলোসফি আছে কিন্তু আমি ধরতে পারিনি। সবমিলিয়ে ১০৮ পৃষ্ঠার ছোট একটা বই। পড়তে পারেন। সময় একদম খারাপ কাটবে না।
Profile Image for Zihad Al Faruqe .
33 reviews60 followers
March 4, 2023
এর আগে ছোটগল্প খুব একটা পড়া না হলেও এখন আগ্রহ বাড়ছে। ছোটো একটা বইয়ের পরিসরে নানা রকম পরিস্থিতিতে পড়ার অভিজ্ঞতা লাভে এছাড়া বিকল্পও বা কোথায়? শাহাদুজ্জামানের লেখনী ভাবনার খোরাক জোগায়, কাহিনীর শেষটা কিছুক্ষেত্রে অনুমেয় হলেও ভাষার অদ্ভুত সারল্য অথচ গভীরতার কারণে তাতে গল্পপাঠের আগ্রহ বিন্দুমাত্র কমে যায় না। 'জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লেখেন', 'মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার', 'টুকরো রোদের মতো খাম', 'চিন্তাশীল প্রবীণ বানর', 'অপস্রিয়মাণ তির', 'মামলার সাক্ষী ময়না পাখি', 'ওয়ানওয়ে টিকিট' - এ গল্পগুলো বেশি ভালো লেগেছে।

হয়তো আমরা সকলেই মৃত্যুর ঘোর বিরোধী, আমাদের সন্তানেরা আমাদের ভালোবাসার উপলক্ষ বৈ কিছু নয়, খামে মোড়ানো কিছু এলোমেলো অক্ষরে বোনা চিঠির জন্যে আমাদের মনে আলাদা জায়গা আছে কিংবা দেশ ছাড়ার একশো একটা কারণ থাকার পরেও আমরা রিটার্ন টিকিট কেটেই এরপর বিদেশে পা বাড়াই। একারণেই গল্পগুলি প্রাসঙ্গিক।
Profile Image for Urmy.
21 reviews16 followers
October 11, 2021
গল্পগুলো পড়তে ভালোই লাগছিলো। মনে হয়েছিল শেষ পর্যন্ত হয়তো চারটা তারা দিবো। কিন্তু শেষের গল্পটা "নাজুক মানুষের সংলাপ"- শুধুমাত্র এটার জন্যই পাঁচ তারা দিয়ে দিলাম! এক কথায় অসাধারণ!
Profile Image for Mahatab Rashid.
107 reviews117 followers
June 27, 2019
লেখকের প্রতিটা গল্পে বেশ ভিন্নরকমভাবে চমৎকৃত হতে পারার সেই অনুভূতিটা এবার বেশির ভাগ গল্পের শেষে আসে নাই কেন যেন। 'কয়েকটি বিহবল গল্প' বা 'পশ্চিমের মেঘের সোনার সিংহ' বইয়ের সাথে তুলনা করলে ময়নাপাখি বেশ পিছিয়ে থাকবে। । কয়েকটা গল্প যথাযথ ভাবেই শাহাদুজ্জামানের গল্প হিসেবে উৎরে গেছে। তিন তারা।
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
February 14, 2020
মুগ্ধ!!!
একজন লেখকের চিন্তা যে কত গভীর হতে পারে, কত নিখুঁত হতে পারে আল্লাহ!!
Profile Image for Akash.
446 reviews148 followers
February 13, 2023
প্রকৃত সাহিত্যের উদ্দেশ্য হচ্ছে গল্পের মিথ্যের মাধ্যমে সবার সামনে জীবনের নিগূঢ় সত্যকে তুলে ধরা। সে জায়গায় শাহাদুজ্জামানের বইটা সফল। কিছু বই আছে যা শুধু পড়লে হয় না; পড়ার সাথে সাথে ভাবতে হয়। যে বইটা আমাকে ভাবাতে পারবে সে বইটার কথা আমার আজীবন মনে থাকবে।

বইয়ের ১১টা অনুগল্পের মধ্যে ৩টা অনুগল্প 'জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লিখেন, মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান এবং অপস্রিয়মাণ তির' চিন্তার গভীর সাগরে ডুব দিতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে 'অপস্রিয়মান তির' অনুগল্পের সাথে নিজেকে রিলেট করতে পেরেছি।

নিচে বই থেকে আমি আমার ভালোলাগা ৩টা অনুগল্প থেকে কিছু অংশ তুলে দিচ্ছি। যারা বইটা এখনও পড়েননি তারা নিচের লেখাটা পড়লে আশা করি বইটা পড়ার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ তৈরি হবে।

'অপস্রিয়মাণ তির' থেকে —

— "দুজনের মনে পড়ে শাহাবের শেষ কথাগুলো, কী দিছ তোমরা আমাকে?
— তাই তো, সাব্বির আর নীনা কী দিয়েছে শাহাবকে?
— বলতে পারবে কি, ‘দিয়েছি জীবন'।
— কিন্তু সে কি আর সত্য কথা? ওরা জীবন দেওয়ার কে? ওরা তো নেহাত উপলক্ষ মাত্র।

হয়তো সেটাই ঠিক । দিয়েছে শাহাবই সব । গভীরতম বেদনা, অনাস্বাদিত আনন্দ। হয়তো সেটাই ঠিক, নিজেদের ভালোবাসে বলেই বস্তুত শাহাবকে ভালোবাসে নীনা আর সাব্বির। শাহাব বস্তুত উপলক্ষ মাত্র নিজেদের ভালোবাসার।

বৈরুতে, বোস্টনে ছোটাছুটি করতে করতে শরণার্থী সেই কবি বলেননি কি, 'তোমার সন্তানেরা তোমার নয়।'

জীবনের ভেতর গুঁজে থাকা যে তৃষ্ণা, তারা বস্তুত তারই সন্তান। তারা তোমাদের মাধ্যমে সংসারে আসে শুধু কিন্তু তোমাদের থেকে নয়। বাবা-মা হিসেবে ধনুক থেকে অনন্তের দিকে ছুটে যাওয়া অপস্রিয়মাণ তিরের মতো সন্তানদের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু তো করবার নেই তোমাদের । বলেননি কি সেই আরব কবি জিবরান?"

'জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লিখেন' থেকে —

"সেই হাসপাতাল ওয়ার্ডটার কথা মনে পড়ে মতিন কায়সারের। হাসপাতালের এই ওয়ার্ডের গল্প পুরোনো, সবাই জানে। সেই জানা গল্পই মাঝে মাঝে উঁকি দেয় তার মনে।

হাসপাতালের ওয়ার্ডে পাঁচজন রোগী। সবাই মৃত্যুপথযাত্রী। কে কোন দিন মারা যাবে তা জানা নাই কারও। সেই হাসপাতাল ওয়ার্ডে একটামাত্র জানালা। ফলে সেই জানালার পাশে যে রোগীটা শোয়া, শুধু সে ওই জানালা দিয়ে দেখতে পায় বাইরের দৃশ্য। বাকিরা শুয়ে থাকে বিছানায় দিনের পর দিন । যে রোগী জানালার পাশে, সে প্রতিদিন জানালায় দেখা দৃশ্যগুলো বয়ান করে তার শয্যাশায়ী সহরোগীদের । জানায় সেদিনের ভোরের সূর্যটা কতটা লাল, জানায় গাছের পাতা কেমন হলুদ থেকে সবুজ হয়ে উঠছে। বলে দূরে নদীর পাড়ে কেমন নিবিড় বসে আছে এক প্রেমিক যুগল আর তাদের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে নীলকণ্ঠ পাখি । কোন কোন রাতের অন্ধকারে জানালার ওপাশে কিম্ভূত প্রেতেদের হেঁটে যাওয়ার দৃশ্যও বয়ান করে জানালামুখী রোগী। বাকি রোগীরা উদ্‌গ্রীব উত্তেজনায় সেই বয়ান শোনে, মনে মনে স্বপ্ন দেখে কোনো একদিন তাদেরও হয়তো সৌভাগ্য হবে ওই জানালার পাশের বিছানাটায় শোবার।

তারপর একদিন হঠাৎ জানালার পাশের সেই কথক রোগী মারা যায়। তার মৃতদেহ সরিয়ে ফেলা হয় সৎকারের জন্য। শূন্য হয় জানালার পাশের সেই বিছানা। বাকি চার রোগী তখন উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করে কার সুযোগ ঘটবে ওই মহামূল্যবান বিছানায় যাবার । শুভ্র পোশাকে নির্বিকার নার্স এসে ওই বিছানার অধিবাসী নির্বাচনে লটারি করে। লটারিতে তৃতীয় রোগীটাই নির্বাচিত হয় সেই কাঙ্ক্ষিত বিছানার অধিকারী হিসেবে। পরদিন তৃতীয় রোগীটাকে উত্তেজনায়, আবেগে বিভোর সেই তৃতীয় রোগী বহু প্রতীক্ষিত সেই জানালা স্থানান্তর করা হয় জানালার পাশের ওই শূন্য বিছানায়। বিছানায় শুয়েই দিয়ে বাইরে তাকায়। কিন্তু তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় সে। বিভ্রান্ত বোধ করে, কী ব্যাপার কিছুই বুঝে উঠতে পারে না সে । কারণ, ওই জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে সে শুধু দেখতে পায় একটা উঁচু নিরেট দেয়াল । সে দেয়াল ভেদ করে কোথাও কিছু দেখা যায় না। বাইরে তাকিয়ে সে শুধু দেখতে পায় সাদা, শীতল একটা ইটের দেয়াল । আর কিছু না।

মতিন কায়সার জানে, জানালার পাশের সেই মৃত কথক রোগী বস্তুত সেই হয়ে ওঠা গল্পের গল্পকার, যে এই মৃত্যু চিহ্নিত পৃথিবীর নিরেট দেয়ালে অলীক পৃথিবীর ছবি এঁকে এঁকে সবার বাঁচার আশাকে জাগরূক রেখে নিজের তৈরি মধুতে ডুবে একদিন মারা যায়।"

'মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান' থেকে —

"বাবা আমাকে গ্রিক দেবী ইয়োসের গল্প বলেছিল । ইয়োস ভোরের দেবী, যাঁর আঙুলগুলো গোলাপি। ইয়োস প্রেমে পড়েছিলেন মানুষ টিথোনাসের। কিন্তু ইয়োস তো দেবী, যিনি অমর অথচ মানুষ টিথোনাসের মৃত্যু ঘটবে একদিন। তাঁর প্রেমিক একদিন মারা যাবে এ সত্য কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না ইয়োস। ভোরের দেবী ইয়োস দেবতা জিউসের কাছে প্রার্থনা করলেন, টিথোনাসও যেন তাঁর মতো অমরত্ব লাভ করে। জিউস ইয়োসের ইচ্ছা পূরণ করলেন।

টিথোনাসকে অমরত্বের বর দিলেন তিনি উচ্ছ্বাসে, প্রেমে দিন কাটে ইয়োস আর টিথোনাসের, বছরের পর বছর কাটে। তারপর হঠাৎ একসময় ইয়োস লক্ষ করেন, টিথোনাসের বয়স বাড়ছে, টিথোনাস ক্রমশ প্রৌঢ় থেকে বৃদ্ধ হচ্ছে, কিন্তু ইয়োস রয়ে গেছেন অনন্ত যৌবনবতী। ইয়োসের বোধোদয় হয়, সে টের পান যে ভুল হয়ে গেছে। জিউসের কাছে টিথোনাসের অমরত্বের বর চাইলেও চিরযৌবনের বর তো তিনি চাননি । জিউসের কাছে একাধিক বর চাইবার আর উপায় নাই। ফলে চিরযৌবনা ইয়োসের চোখের সামনে টিথোনাস একটু একটু করে বার্ধক্যে নুয়ে পড়তে থাকে। টিথোনাস মরে না কিন্তু থুথুরে বুড়ো হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তার আর কথা বলবার শক্তি থাকে না, চলবার কোনো শক্তি থাকে না। একটা বিছানায় স্থির হয়ে শুয়ে থাকে টিথোনাস আর শুধু নিজের মৃত্যু কামনা করে। কিন্তু মৃত্যু তার হয় না। ইয়োস মনে গভীর দুঃখ নিয়ে অমর টিথোনাসের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলেন । অমরত্বকে তখন তাঁর মনে হয় এক অভিশাপ।"

যাক জীবনে আরেকটা ভালো বই পড়ে শেষ করলাম। 'অপস্রিয়মাণ তির' অনুগল্পটার কথা আমার মনে থাকবে আমরণ।

পড়ার টেবিলে থাকা সুহান রিজওয়ানের ডিগ্রি ওয়ালা বইটা আমাকে ডাকতেছে। যাই বইটা পড়ে শেষ করে আবার গুডরিডসে চলে আসতেছি। টাটা।
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
April 27, 2023
বাংলা সাহিত্যে সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে শাহাদুজ্জামান অগ্রগণ্য। বিচিত্র সব বিষয় নিয়ে লেখালেখিতে নিজেকে ঢেলে দিয়েছেন। তাঁর লেখাগুলো পাঠককে চিন্তা করতে শেখায়। 'মামলার সাক্ষী ময়নাপাখি' লেখকের গল্পগ্রন্থ। বইটিতে মোট এগারোটি ছোটগল্প স্থান পেয়েছে।

জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লিখেন

স্তন্যপায়ী প্রাণীরা বাস্তব কিংবা কল্পনায় বিভিন্ন বিষয়ের সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেন। মতিন কায়সার একজন লেখক। তিনি মনে করেন, শুধু লিখতে পারলেই লেখক হওয়া যায়না। এই হুঁশ আছে যে, গল্প কিংবা পাঠক-পাঠিকাদের মাঝেও আসল নকল থাকে। শায়লার সাথে প্রেম ছিল মতিন কায়সারের। তবে তার মনে হতো নারীর মোহের চাইতে একটি গল্প লেখার সংগ্রাম তাকে বেশি আকর্ষণ করেছে। জানালার পাশে শুয়ে থাকা রোগির গল্প দিয়ে অন্যান্য রোগিকে জীবনের প্রতি উৎসাহ দেওয়ার গল্পের মাঝেও সত্য খুঁজে বেড়ায় মতিন কায়সার।

টুকরো রোদের মতো খাম

আন্দালীব বড় কর্পোরেট কর্মকর্তা। তার হাতে লেখা চিঠির ঘ্রাণ নেওয়ার ইচ্ছা জাগে। পোস্ট অফিসে চাকরি করা আত্মীয় রাজীবের মাধ্যমে বাতিল কিছু চিঠি আসে আন্দালীবের হাতে। মূলত প্রাপককে না পাওয়ায় চিঠিগুলো বাতিল করা হয়েছে। বাড়িতে নিয়ে চিঠিগুলো নেড়েচেড়ে দেখে আন্দালীব। একটি হলুদ খামের চিঠিতে চোখ যায় তার। প্রেরক একজন ফাঁসির আসামি; যিনি বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। চিঠি লেখা হয়েছিল উত্তর বাড্ডায় একটি সেলুনে। তবে চিঠিটি আর সেখানে যায়নি। চিঠি পড়তে শুরু করে আন্দালীব। এই চিঠির মাধ্যমেই জীবনের একটি অন্ধকার অথবা আলোকোজ্জ্বল দিকের দেখা পায় আন্দালীব!

চিন্তাশীল প্রবীণ বানর

পুরান ঢাকার নারিন্দায় মোমেন-নিলুফার দম্পতি তাদের একমাত্র মেয়ে টুম্পাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠে। তারা কোত্থেকে কীভাবে আসলো সে সম্পর্কে বিস্তারিত না জানলেও আলী হায়দার তাদের এনেছে এবং তার মাধ্যমেই জানা যায় মোমেনের পরিবার দাঙ্গা থেকে বাঁচতেই দেশত্যাগ করেছে। কিছুদিন পর মোমেন বিদেশে চলে যায় এবং তাঁর কোনো খোঁজ থাকেনা। তখন ল্যাংড়া ফরিদ তাদের বাজারসদাই করে দিত। তাদের বাসার আশেপাশেই দেখা যেত একটি বানরকে। যে বানরটি তাদের সবসময় পর্যবেক্ষণ করতো। মোমেনের কী হলো? নিলুফার-টুম্পার জীবন চলবে কীভাবে?

মামলার সাক্ষী ময়নাপাখি

ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে। বজলুর জীবনেও এমন ঘটনা ঘটেছে। নারিকেল গাছের নারিকেল পেড়ে এবং পরিষ্কার করে জীবিকা নির্বাহ করতো সে। সেই গাছ থেকে পড়েই পা ভাঙে বজলুর। স্ত্রী মোমেনাকে সাথে নিয়ে শহরের হাসপাতালে যায় সে। সেদিনই শহরের একটি কারখানা ধ্বসে পড়ে এবং অনেক শ্রমিক হতাহত হয়। এই সুযোগটাই নেয় বজলু। পুঁথি শুনে গল্প তৈরির সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে টিভি চ্যানেলে নিজেকে একজন শ্রমিকের জীবনরক্ষাকারী হিসেবে তুলে ধরে। রাতারাতি হিরো বনে যায় সে। সাহায্য হিসেবে টাকাও পায়। গ্রামে এসে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মতো অবস্থা। বজলুর এই ধনী হওয়ার কৃতিত্ব একটি ময়নাপাখিকে দেখা যায়। আসলে ঘটনাটা কী?

শাহাদুজ্জামানের অন্যান্য গল্পগ্রন্থের সাথে তুলনা করলে এই গ্রন্থটি নিচের সারিতেই থাকবে। এই বইটি যখন প্রকাশিত হলো তখন লেখকের লেখা নিয়ে পাঠকের মধ্যে এক ধরনের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বইটি পাঠকের তৃষ্ণা কতটা মেটাতে পেরেছে তার নির্ণায়ক তারাই। ভিন্ন ভিন্ন গল্পের স্বাদ নিতে বইটি পড়তে পারেন। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for Rani  Chatterjee.
64 reviews
April 14, 2025
অন্য ধাঁচের লেখা, সুন্দর বই । গল্পগুলোর মাধ্যমে সমাজের কিছু বাস্তব ফুটে উঠেছে। শেষদিকে মন টা ভারী লাগে।
এক দুটো গল্প ঠিক বুঝতে পারিনি। এই বই আবার পড়তে হবে।
Profile Image for Omar Faruk.
263 reviews16 followers
August 22, 2021
শাহাদুজ্জামান-এর গল্প এই প্রথমবারের মতো পড়লাম। আর এই প্রথমবার পড়ার স্মৃতিটা, সুখস্মৃতি হয়ে থাকবে। তাঁর গল্প বলার ধরন থেকে শুরু করে প্রতিটা গল্পই ভালো লেগেছে। নিচে গল্প গুলো নিয়ে আলাদাভাবে লিখলাম।

- জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লেখেন

লেখক মতিন কায়সার "হয়ে ওঠা" গল্পের পেছনে ছুটেছেন, সমাজকের দেখছেন গল্পের আদলে। তিনি এমন সব গল্প লিখতে চান যেগুলোকে বানাতে হবেনা, নিজে থেকেই গল্প হয়ে উঠবে। সেই লক্ষ্যেই তার এগিয়ে চলা। এই এগিয়ে চলার পথের দু'পাশের অনেক চিত্র এই গল্পের অলংকরণ করেছে।

- মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার

মৃত্যুপথযাত্রী বাবার সাথে কাটানো অতীতের স্মৃতিচারণ। এর মধ্যেই মনে ভিড় করে আসা কিছু প্রশ্ন। আর সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আরো অনেক প্রশ্নের জালে জড়িয়ে যাওয়া।
সুন্দর সাবলীল একটা গল্প। পড়ে তৃপ্তি পাওয়া গেছে।

- টুকরো রোদের মতো খাম

একজন চিঠি প্রিয় মানুষ। একটা হারিয়ে যাওয়া চিঠির প্রাপ্তি। শেষে একরাশ বিষাদ। মাথার ভেতরে অনেকদিন থেকে যাবে এই গল্পের শেষটা।

- চিন্তাশীল প্রবীণ বানর

এই গল্পটা পড়ে কিছুটা শহীদুল জহির সাহেবের লিখার স্বাদ পাচ্ছিলাম। গল্পটা খুবই সুন্দর সেটা মানতেই হবে।

- পৃথিবীতে হয়তো বৃহস্পতিবার

সমাজের একটি কমন বিষয় নিয়ে লিখা গল্প। একজনের ঘাড়ে পা রেখে দেয়াল টপকে যাওয়ার ব্যাপারটা আজকালকার সমাজে অহরহ ঘটে থাকে। সেই ব্যাপারটাই গল্পের মূল বিষয়। যেখানে একজনের কাছে অন্যের ঘাড়ে পা রেখে টপকে যাওয়াটা জীবনের জন্য সহজ ব্যাপার হলেও। যার ঘাড়ে পা রেখে দেয়ালের ওপারে যাওয়া হচ্ছে তার জন্য ব্যাপারটা কতটা বেদনাদায়ক সেটার এক দারুণ উদাহরণ এই গল্পে পেলাম।

- উবার

এক নারীর গল্প। গল্পের শেষটা না পড়া পর্যন্ত পাঠক ধোয়াশার মধ্যে থাকবে। কি হচ্ছে? কি হবে? এই চিন্তাটাই কাজ করবে মাথার ভেতর।

- অপস্রিয়মাণ তির

সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের আবেগ-অনুভূতি, মায়া, সর্বোপরি সন্তানের ভালোর জন্য বাবা-মায়ের আপ্রাণ চেষ্টা। এসব নিয়েই গল্পটা।
গল্পের দৃশ্যপট হুটহাট বদলে যাওয়াতে প্রথমে কিছুটা খাপছাড়া লেগেছে। শেষটার বেলায়ও একই কথা বলা চলে।

- ওয়ানওয়ে টিকিট

বন্ধুত্ব, পারিবারিক সম্পর্ক, বিশ্বাসঘাতকতা। সুন্দর সম্পর্ক গুলোর মাঝেও যে অসুন্দর পাশাপাশি থাকতে পারে। সময় সুযোগ বোঝে সে তার রূপ দেখাতে পারে। এই গল্পের মাধ্যমে তা যেন আরেকবার প্রমানিত হলো।

- লবঙ্গের বঙ্গ ফেলে

একজন কাঁঠাল ব্যবসায়ী, তার যুবতী স্ত্রী, আর তার হতভাগ্য মেয়ে, মেয়ের জামাই। সুখী সংসার কিভাবে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয় তার এক সুন্দর ক্যানভাস যেন এই গল্পটা। মন বিষন্ন করে দেয়ার মতো একটা গল্প।

- মামলার সাক্ষী ময়না পাখি

গাছি বজলু যখন গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা ভাঙ্গেন। ঘটনাক্রমে তার কিছু পরেই তার বোধদয় হয় তিনি আসলে নিরীহ কোনো গাছি না। তার পক্ষেও সত্য মিথ্যার মাঝে দাঁড়িয়ে একটা কবিতা তৈরি করা সম্ভব। হোক সেটা মিথ্যে কোনো কবিতা। যা সত্যকে প্রমানিত করার জন্য ব্যবহার করা হবে। যেটা বজলুর মতো সাধারণ মানুষকেও অসাধারণত্ব দান করবে, আর এই সবকিছুর প্রমাণ হিসেবে আমরা ধরে নিয়ে পারি বজলুর নিরবতাকে।

- নাজুক মানুষের সংলাপ

অনেকগুলো প্রশ্ন, বাস্তবতার আঙ্গিকে তার সুন্দর সাবলীল উত্তর। মন হালকা করে দেয়ার মতো একটা গল্প।
Profile Image for Farhana.
325 reviews202 followers
April 13, 2020
বহুদিন বাদে একখানা বই যেন নিজের মধ্যেকার মানবিক অনুভূতিগুলো একটুখানি নাড়া দিয়ে গেল - অনেকটা কোন জলাশয়ে ঢিল পড়বার মতন কিংবা সকালে পর্দার আড়াল পেড়িয়ে যে একটুখানি রোদ ঘরের মেঝেতে তার চিহ্নখানি এঁকে দিয়ে যায় তার মতন।

আমি জানি না যে কোন কাজে বা কোন একটা বই পড়ে যোগসূত্র খোঁজা বা স্থাপনের চেষ্টা করাটা কতখানি যৌক্তিক কিংবা কতটুকু বাতুলতা। তবুও আমাদের বর্তমান দৈনিক নাগরিক বা গ্রামীণ জীবনের কথা পড়ে ভালো লাগে। এখনও মানুষের জীবন, তাদের কথা, বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা, ক্ষয় আর জয়ের গল্প আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রসদ।

Profile Image for Ummea Salma.
125 reviews121 followers
July 25, 2020
চাইলেই এক বসাতে পড়ে ফেলতে পারতাম কিন্তু কিছু বই থাকে যেগুলো ইচ্ছে করেই শেষ করতে ইচ্ছে হয় না, মনে হয় একটা গল্প পড়ার পর অনেকক্ষণ সেই গল্পটার রেশ মনের মধ্যে ধরে রাখি।

"টুকরো রোদের মত খাম" গল্পটা একটা ভালোবাসা।
Profile Image for Titu Acharjee.
258 reviews34 followers
October 7, 2022
শাহাদুজ্জামান বরাবরই শব্দ দিয়ে ছবি এঁকে থাকেন। এই বইয়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অসম্ভব সুন্দর লেখা। শব্দ দিয়ে তৈরি দৃশ্যকল্পগুলোয় ভ্রমণ করে আরাম পেয়েছি,বিস্মিত হয়েছি। তবে সমান মুগ্ধ হতে পারিনি কিছু গল্পে। আবার কিছু গল্পে মুগ্ধতার পারদ একদম উপরের দিকেই ছিল। সব মিলিয়ে, উপভোগ্য ছিল।
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews772 followers
March 25, 2019
টেনেটুনে আড়াই দেয়া যাবে বড়জোড়। 😞
Profile Image for Jarin Khan Mou.
25 reviews12 followers
March 8, 2022
ক্রাচের কর্ণেল শেষ করেই শাহাদুজ্জামানের আরেকটা বই হাতে নিলাম,"মামলার সাক্ষী ময়না পাখি"। শাহাদুজ্জামান আমার ভিতর তাকে ভরসা করার জায়গা করে নিয়েছেন। তার বই চোখ বুঝে কোনো ভাবনা ছাড়াই পড়ে ফেলার মত।

শাহাদুজ্জামানের গল্প লেখার হাত পাকাপোক্ত। সে থেকেই এই বইটা নিয়েছিলাম। এগারোটা গল্পের প্রতিটাই আলাদাভাবে ছুঁয়েছে। সত্য মিথ্যার বড় এক ব্যাবধান বা যৌনতা থেকে অমরত্বের স্বাদ হারিয়ে, প্রেমে তা ফিরে পাওয়া বা কখনো অপরিচিত এক ফাঁসির আসামির শেষ ইচ্ছা পূরন করে ফেলার মত আত্মতৃপ্তি বা এ যুগে বোকারা জীবন নিয়ে কোথায় দাড়ায় অথবা এই শয় শয় কলকারখানায় আগুন,ভেঙ্গে পরার পিছনে আরো কত নাটকীয়তা তৈরি হয় - মোট কথা আমার মনে হচ্ছিলো সব কয়টা গল্পের ঘটনা আমার পূর্বপরিচিত। যা নিয়ে একেক সময় হাহাকার করেছি, এই সমাজ থেকে তাই তুলে নিয়েছেন শাহাদুজ্জামান।
Profile Image for DEHAN.
275 reviews86 followers
February 28, 2020
প্রতিটা গল্পই অতি ব্যতিক্রমধর্মী সুস্বাদু গল্প।
গিলে আরাম পেয়েছি। সবার শেষে ছিলো মিষ্টান্নর ব্যবস্থা। কিন্তু পান জর্দা নাই দেখে একটা তারা দিলুম না।
Profile Image for Mahrin Ferdous.
Author 8 books208 followers
July 7, 2021
মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার
টুকরো রোদের মতো খাম
নাজুক মানুষের সংলাপ

'মামলার সাক্ষী ময়না পাখি' গল্পগ্রন্থ থেকে এই তিনটি গল্প ভালো লাগলো। যেহেতু 'যে হিসাব কষবে তা না মিলবার সম্ভাবনাই বেশি' তাই বাকি গল্প নিয়ে বিস্তারিত হিসাবে না যেয়ে ভালো লাগার গল্পগুলোই ডিয়ার ডায়েরিতে টুকে নিলাম।
Profile Image for Shaid Zaman.
290 reviews47 followers
March 22, 2020
শাহাদুজ্জামান এখন পর্যন্ত কখনো হতাশ করেন নি। তিনি কথা দিয়ে মাকড়সার মতো জাল বুনেন। সেই জালে পাঠক আটকে যায়। একটা সময় বই শেষ হয়ে যায়, পাঠক সেই জাল ছিড়ে বের হয়ে আসে। কিন্তু জালের কিছু অংশবিশেষ আঠার মতো লেপ্টে থাকে পাঠকের শরীরে।
Profile Image for Tasnim Z.
50 reviews55 followers
August 13, 2021
এই বছরের শুরুর দিকেই পড়েছিলাম। সম্ভবত মার্চ মাসে।
Profile Image for Shoroli Shilon.
164 reviews71 followers
September 19, 2025
লেখালেখির তাড়নায় বারবার নিজের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছি গল্প লিখলেই কি তাকে গল্প বলা যায়? নিঁখুত, দারুণভাবে সুগঠিত, প্রতিটা শব্দ সুনির্বাচিত, মসৃণ হওয়া সত্ত্বেও যে গল্প মৃত সে গল্প সৃষ্টির আদৌ কি কোন দরকার আছে? তাই আপাত এলোমেলো হলেও জীবন্ত গল্পই লিখতে চান ‘জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী, যিনি গল্প লেখেন’ গল্পের মতিন কায়সার। গল্পের যে অজানা স্তরে পাঠকেরা পৌঁছাতে অভ্যস্ত নয় ঠিক সে স্তরেই যেতে চান তিনি।

‘মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার’ অথচ আমরা জানতেই পারি না মৃত্যু সম্পর্কে গল্পকথক ঘোর বিরোধী হলেও তিনি শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নিলেন।

‘মামলার সাক্ষী ময়না পাখি’ আগ্রহ জাগানিয়া এই গল্পটা পড়েছি সবার শেষ এ। প্রকৃতি ছাড়া বোধহয় আমাদের ভেতরকার প্রতারক সত্তাটার কেউ বিচার করতে পারে না। খুবই ফ্যাসিনেটিং একটা গল্প।

শাহাদুজ্জামান স্যারের লেখা আমাকে বরাবরের মত মুগ্ধ করেছে। পিড়ি পেতে গল্প শুনেছি, মনে হলো যেন। দু’য়েকটা গল্পে চিন্তার গভীরতা কিংবা রুঢ়তার সাথে অমূলক অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতায় কোথাও না কোথাও একটা আক্ষেপ থেকেই যায়। হতে পারে এসব গল্পে লেখকের দর্শন আমি সব গল্পে ঠিক ধরতে পারিনি। তবে ‘টুকরো রোদের মতো খাম’, ‘চিন্তাশীল প্রবীণ বানর’, ‘অপস্রিয়মাণ তির’, ‘ওয়ানওয়ে টিকিট’, ‘লবঙ্গের বঙ্গ ফেলে’ গল্পগুলো ভালোলেগেছে। ‘নাজুক মানুষের সংলাপ’ এভারেজ।

প্রীতিকর সব শিরোনামের প্রতিটা গল্পেই লেখক বোঝাতে চেয়েছেন তিনি আসলে জনৈক স্তন্যপায়ী প্রাণী কিংবা একজন মতিন কায়সার। মিথের তালে তালে যিনি আপাত এলোমেলো কিংবা অগোছালো গল্প হলেও অতি সতর্কতার সহিত শব্দ জুড়ে দিয়ে পাঠককে ফেলে দিতে পারেন ভাবনার সেই অচেনা অতল গহ্বরে।
Profile Image for Binayak Chakraborti.
43 reviews69 followers
July 16, 2020
‘মামলার সাক্ষী ময়না পাখি’ বোধহয় সেই কিসিমের সংকলনবই যে ছোটগল্পদের আপনি নিরীক্ষামূলক ডাকতে পছন্দ করবেন। আর যাই হোক চিরাচরিত বোর করছে না দেখে খারাপ লাগছিল না। তাই বা কেন, শুরুর দিকের এমনকি কটা গল্প বেশ ভালোই। মাঝের কয়েকটা অবশ্য পাতি – “ধরতে পারলেন তো ?” –কায়দায় ইন্টেলেকচুয়াল মোড়কাবৃত। শেষের ক’টা নট-সো-পাতি দিয়ে ব্যাপারটা অবশ্য ব্যালেন্সড হয়ে গেছে।
Profile Image for Monirul Hoque Shraban.
171 reviews52 followers
June 11, 2022
অনেকদিন পর ছোট গল্প পড়লাম। গল্পের আবেশে আবিষ্ট হলাম। এ বই পড়ে আবারো ছোট গল্প পড়ায় আগ্রহী হলাম। বাসায় ছোটগল্পের বই যেগুলো আছে, নাড়াচাড়া দিলাম। (রেটিং- ৪.৫/৫)
February 27, 2021
মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার
    মৃত্যুপথযাত্রী লেখকের বাবা টিকে আছেন আইসিইউ এর সব জটিল-কঠিন যন্ত্রপাতির সাহায্যে। যন্ত্রপাতি খুললে মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু যন্ত্রপাতির খরচ প্রতিদিন চল্লিশ হাজার টাকা। লেখক ডাক্তারের কাছে কাছে বারংবার যান কিন্তু একই কথা প্রতিনিয়ত বলার ও শোনার পরেও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন তার করণীয় সম্পর্কে।


টুকরো রোদের মতো খাম
বেওয়ারিশ এক চিঠি খোলে আন্দালীব৷ চিঠিতে ফাঁসির আসামী শাহীন তার ভাইকে উদ্দেশ্য করে লেখা কিছু অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ ও অনুরোধ করে। একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুত হয় আন্দালীব।
পছন্দের একটা লাইন :
ওজোনস্তর ভেদ করে কোনো আদিম গ্লেসিয়ারের বরফে প্রথম সূর্যতাপ পড়বার পর তা কি এমনই একাধারে মৃদু এবং তীব্রভাবে গলতে শুরু করেছিল?

পৃথিবীতে হয়তো বৃহস্পতিবার
কী নিদারুণ সুন্দর গল্প! মাসুদের আইডিয়া চুরি করা নিয়েই মূলত গল্পের কাহিনি। এর মধ্যে চলে আসে এক বৃহস্পতিবার, লজ্জাবতী বানর ও বিনয় মজুমদারের বৃহস্পতিবার নিয়ে লেখা কবিতা। আসে মহাভারতের খুবই ক্ষুদ্র একটি ঘটনা, উজ্জ্বল হলুদ পায়ের একটি শালিক_রুমা এবং আরও অনেকে���

উবার
কোনো এক দুপুরে ব্যক্তিগত ঝামেলা নিরসনের জন্য সম্ভ্রান্ত এলাকার এক বোরকা পরিহিতা নারী নামীদামী এক হোটেলের রিসেপশন লাউঞ্জে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। বিপত্তি বাধে তার পোশাক নিয়ে৷ উবার, উবার ড্রাইভার এবং উবারে বাজানো গান গল্পের ক্লাইমেক্স সৃষ্টি করে কিছু। তবে তা লাউঞ্জে অপেক্ষাকৃত নারীকে কোনোভাবে ছাপিয়ে যায় না।


অপস্রিয়মাণ তির
পাঠকের মধ্যে জন্ম, পরিবার নিয়ে নিজের কিছু সন্দেহ, কিছু প্রশ্নের বীজ বপন করেছেন লেখক।

উপরোক্ত পাঁচটি ছাড়াও ছয়টি—সর্বমোট ১১ টি ভিন্ন ভিন্ন গল্প নিয়ে বইটি। দারুণ কিছু গল্প পাঠককে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে পড়তে বাধ্য করবে। ছোটোগল্পকে পারফেক্ট শেইপ দেওয়ার পাশাপাশি কি দারুণ করেই না বর্ণনা করা যায়! সবগুলো গল্পই যে ছাপিয়ে গেছে সবকিছু, বিষয়টা এরকম নয়। তবে সব গল্পই মার্জিনাল আর কিছু গল্প মার্জিনের ওপরে।
কেমন সহজ-সরল-নিরালম্ব গল্পগুলোকে অনিন্দ্যসুন্দর বর্ণনার আলোকচ্ছটায় অবর্ণনীয় সুন্দর করে তোলেন শাহাদুজ্জামান_এটাই ভালোলাগা অনুভব করায়। এছাড়া লেখকের শব্দচয়ন ভীষণ ভালো। বইটা পড়তে পড়তে কবে যেন জেনেছিলাম উনি বর্তমানে আর লিখছেন না। মনটা বিষাদে পরিপূর্ণ... সেদিন না হলেও গতপরশু বইটা পুরোপুরি শেষ করার পর হয়েছে।

যারা টুকটাক ছোটোগল্প লেখেন, বইটি তাদের জন্য অবশ্য পঠিতব্য।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for সন্ধ্যাশশী বন্ধু .
368 reviews12 followers
May 19, 2023
শাহাদুজ্জামানের লেখা আমাকে খুব মুগ্ধ করে। যে কয়টা বই উনার পড়েছি, ভীষণ মুগ্ধ হয়ে পড়েছি। এমন করে একের পর এক বাক্য লেখক বসান,পুরোটা গল্পটা যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অদ্ভুত একটা ঘোর তৈরি হয়,সেখানে ডুবে যাই আমি। উনার বাক্য গঠন, শব্দের প্রয়োগ এই দুইটা জিনিস আমার ভীষণ পছন্দ। সব মিলিয়ে শাহাদুজ্জামান পড়া মানে একটা সুন্দর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া।

মামলার সাক্ষী ময়না পাখি,দ্বিতীয় বার পড়লাম। প্রথমবার তেমন একটা বুঝতে পারি সব কয়টা গল্প। ফলে মন টানেনি। এবার খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছি,পুরো একটা শুক্রবার এই বইয়ের পেছনে ব্যয় করেছি। লেখক ও আমাকে হতাশ করেনি,আমার বেশ ভালো লেগেছে গল্পগুলো। সবগুলো গল্পই ভালো লেগেছে, তবে কয়েকটা অতিরিক্ত ভালো লেগেছে। যেমন টুকরো রোদের মতো খাম,পৃথিবী হয়তো বৃহস্পতিবার, ওয়ান ওয়ে টিকিট,নাজুক মানুষের সংলাপ। এই গুলো আমার দীর্ঘ দিন মনে থাকবে।
Profile Image for Shahriar Kabir.
107 reviews42 followers
August 16, 2021
সাধারণত বইয়ের ভূমিকাটাও পড়ি। এ বইয়ে সোজা গল্পে চলে গিয়েছিলাম। গল্পগুলো স্বাধীন, প্রথম তিন-চারটা পড়ে তাই ইঙ্গিত পাওয়া গেল। এর বিভিন্ন গল্প বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
কতকটা পড়ে মনে হয়, এভাবে তো আমরাও দ্বন্দ্বে পড়ি। দ্বন্দ্ব থেকে সমাধানে উৎরাতে আমরাও সময়ের অপেক্ষা করি, যেন সিদ্ধান্ত নেয়ার চেয়ে পরিস্থিতি আমাদের ঠেলে দেয় যে সিদ্ধান্তটা বিবেক নিতে পারছিল না।
Life has a way of forcing decisions on those who vacillate. আমার কথা না। Nelson Mandela বলে গেছেন। এ কথাটার সাথে মিল আছে মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার গল্পটিতে।

এ বইয়ের গল্পগুলোকে টুকরো করে করে বাক্য পর্যন্ত গেলে খুব বেশি গভীর ভাবের কথা পাওয়া যায় না। যার সহজ অর্থ, এর কথাগুলো সহজ। মগজ ধোলাই দাবি করে না এর বুনট। লেখকের অন্য বইয়ের সাথে তুলনা দেব না। কিন্তু সবচেয়ে বেশি যে কারণটা আমাকে বইটি পড়তে উদ্যত করেছে সেটি এর মলাট এবং এর নাম! অসাধারণ সুন্দর দুই-ই।

শেষ গল্পটায় কতক ভাবের কথা বিধৃত। হয়ত বই শেষে পাঠক একটু ভাবনায় কাতর হবে ভেবেই ভাবনার কথকথা শেষে সেঁটে দিয়েছেন। আর সবগুলো গল্প থেকে তাই সেটি ব্যতিক্রমও। সংলাপধর্মী, ১০-২০ সেকেন্ড মন্তব্যের সংলাপে প্রায়ই গড়িয়ে আসে মহাকালের গভীরতা সম এক-দুটো ভাবের কথা, যার কয়েকটা আবার মেদহীন হাছাকথা। গল্প ছেঁকে শুধু ওকথা দু'চার বললে লোকে নিতে চাইবে না। বা কোথাও বললেও ব্যাখ্যা ছাড়া ওগুলোকে একা অভিভাবকবিহীন ছেড়ে দেয়া যাবে না।
এ বইয়ের রেটিংটা এমনি দেয়ার জন্য দেয়া। পড়লেও তেমন বিরাট লাভ নেই, না পড়লেও কোনো ভাবান্তর হবার কারণ দেখি না।
Profile Image for Jannatul Rafi Mariya.
61 reviews12 followers
September 24, 2022
৩.৫ ★
বইটিতে গল্প আছে ১১টি। দুই একটা ছাড়া প্রায় সব গল্পই ভালো লেগেছে।
গল্পগুলোতে আছে নাজুক মানুষেরা। মানুষ ভীষণ নাজুক। কতটা নাজুক মানুষ তা নিজেই জানে না। বড় কর্মকর্তা আন্দলিব কতটা নাজুক তা না জানা গেলেও, তিনি যে চিঠি প্রেমিক তা বেশ বোঝা যায়। যার কাছে হাতে লেখা চিঠি মানে চেনা অথচ হারিয়ে যাওয়া কোন দ্বীপ। চেনা সড়ক ধরে ‘তোমার সন্তানেরা তোমার নয়’ আরব লেখকের কথাটি ভাবতে ভাবতে হারিয়ে যাওয়া সন্তানের জন্য ছুটতে থাকে এক দম্পতি। দেখা পাওয়া যায় পুরান ঢাকার পাঠান মঞ্জিলের রেলিঙে বসে থাকা চিন্তাশীল এক প্রবীণ বানরের। জানতে পারি মৃত্যুশয্যা পিতাকে দেখে পুত্রের স্বীকারোক্তি ‘মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার, আমি এর ঘোর বিরোধী’। প্রহেলিকাময় কুয়াশা গায়ে মেখে নগরের বাতাসে হাঁটতে থাকে এক গল্প খোঁজা লেখক। এমনি কোন এক নগরের হাওয়ায় কে যেন বলে যায়, প্রতারণার দক্ষতাই এই শহরে টিকে থাকার মন্ত্র। শহর ছাড়িয়ে সত্রাসিয়া ও মহিমাগঞ্জে এক সন্ধ্যায় দেখা যায় দুটি দৃশ্য একাকী ছাগল, পুকুরের মাঝে মৃতদেহ।
'কামারের মার মাইরা, পাঁঠার কাইট্টা পা, লবঙ্গের বঙ্গ ফেইলা চুইষা চুইষা খা’, কও তো এইটা কী?
Profile Image for Fahmida Rini.
67 reviews33 followers
March 18, 2023
আজ পড়া শেষ হলো "মামলার সাক্ষী ময়নাপাখি"
লেখকের নাম অজস্রবার শুনলেও কোনো লেখা এর আগে পড়া হয়নি। প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম শাহাদুজ্জামানের লেখা পড়বার জন্যে।
শেষমেশ এবছর জন্মদিনে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে উপহার পেয়ে পড়া হলো। মনে রাখার মতন একটি বই।ছোটগল্পগুলো আমায় ভাবিয়েছে। প্রতিটা গল্প পড়ে আমার থামতে হয়েছে। ভেবেছি কেনো লিখলেন এই গল্প লেখক? আমি কি ঠিক মানেটা ধরতে পেরেছি?
সময় নিয়েছি,ভেবেছি সাধারণের মোড়কে লেখা অসাধারণ গল্পগুলো।
গল্পগুলো আমাদের নিজেদেরই গল্প, সাধারণের জীবনের গল্প। আমাদের রোজদিনের কথাই যেনো লেখকের কলমে ছাপার কাগজে উঠে এসেছে। প্রতিটি গল্পের সাথে আমি নিজেকে রিলেট করতে পেরেছি।সাধারণ জীবনকে খুঁজে পেয়েছি। তবে কই আগেতো এমন করে ভাবিনি!গল্পগুলোর মধ্যে আমার সবচে' বেশি ভালো লেগেছে "টুকরো রোদের মতো খাম" "পৃথিবীতে হয়তো বৃহস্পতিবার" "মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার" এই তিনটে গল্প।
Profile Image for Troyee.
3 reviews10 followers
October 9, 2020
মনে রেখ, তুমি জগতের মাপমত নও, জগৎ ও তোমার মাপমত না। সমুদ্রের হারমুত কাঁকড়ার খোঁজ করে দেখ। খোলসহীন শরীর নিয়ে জন্ম নেয় সে, তারপর কোন ���রা শামুকের খোলস খুঁজে তার ভেতর আশ্রয় নেয় আর তাতেই কাটিয়ে দেয় জীবন। হারমিট আশ্রয় খুঁজে পায় ঠিক ই কিন্তু তার আশ্রয়হীনতার আশঙ্কা যায় না।

যে হিসাব কোষবে তা না মিলবার সম্ভাবনাই বেশি । কারণ মানুষ ভীষণ নাজুক।

শাহাদুজ্জামানের প্রথম যে বই টি পড়েছিলাম তা হল , একটি হাসপাতাল এবং কয়েকটি ভাঙ্গা হাড়। বেশ লেগেছিল, মেডিক্যাল স্টুডেন্ট বলেই কিনা, তা জানি না।
এর পর একজনের রেকমেন্ড এ পড়লাম, ক্রাচের কর্নেল। মুগ্ধ হলাম। কিভাবে কখন যে শাহাদুজ্জামান এর গুনগ্রাহী হয়ে গেলাম বুঝেতেই পারলাম না । মামলার সাক্ষী ময়নাপাখি একজন প্রিয় মানুষের উপহার । বইটি আমার কেন জানি মনে হয়েছে, শাহাদুজ্জামান এর বিক্ষিপ্ত চিন্তা। পড়তে বেশ মজা পেয়েছি, কয়েকবার কিছু চিন্তাও করেছি। এই বইটি তার অনন্য বই গুলোর মত অতোটা ভাল লাগে নি , তবে চিন্তার খোরাক আছে নিঃসন্দেহে। তাই না কম কি !!!
Displaying 1 - 30 of 184 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.