দ্রুত পরিবর্তনশীল আধুনিক পৃথিবীর পক্ষে অনুপযুক্ত ঝলক পরিবারের দায় পালন করতে এসে পড়ল সমাজের অন্ধকার বৃত্তে। দেখা হল রিঙ্কি, তৃষিতা, তমসা ও সিক্তার সঙ্গে। উপন্যাসের এই চার চরিত্র সহাবস্থান করছে কিন্তু তাদের প্রত্যেকের জীবনের ইতিহাস এবং লক্ষ্য আলাদা। বর্তমান পরিস্থিতিতে রিঙ্কিকে এনেছিল কালঝড়, তৃষিতাকে স্বেচ্ছা-নির্বাচন, তমসাকে এনেছিল তার স্বামীর অনুপস্থিতি, সিক্তা এসেছে মৃত্যুর হাত ধরে। ঝলকের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া এই চার নারীর মধ্যে গোপন রহস্যের মতো লুকিয়ে আছে অন্য মুখ, যাদের আলোয় ঝলকও একদিন উদ্ভাসিত হতে পারবে অন্য সত্তার আবিষ্কারে। নিজের মধ্যে অন্য এক নিজেকে খোঁজার আকাঙ্ক্ষা নিয়েই এই উপন্যাস।
বিনতা রায়চৌধুরী-র জন্ম কলকাতায়। পড়াশোনা বেথুন স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি.। বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজের বাংলা বিভাগের আসোসিয়েট প্রফেসর। স্বামী ব্যবসায়ী। একটি মাত্র কন্যা। পুরস্কার: সাধনা সরকার স্মৃতি গবেষক সম্মান, হিন্দোলী সাহিত্য পুরস্কার, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড প্রদত্ত বিশেষ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৯, শতপূর্ণা আশাপূর্ণা রৌপ্য স্মারক।
অনেকদিন পর বাংলায় একেবারে ভিন্ন বিষয়ের নতুন স্বাদের কোনো বই পড়লাম আর খুব ভালোও লাগলো। শুধু বিষয়ভাবনার চমক নয়, লেখিকা গোটা উপন্যাসটিকে খুব ভালোভাবে সমপন্ন করেছেন। লেখা বেশ ঝরঝরে, প্রাণবন্ত, পড়তে কোথাও এতটুকু একঘেয়ে বা ক্লান্ত লাগেনি।
দারিদ্র্যের কবলে পরে সমাজের কত নর-নারী অন্ধকারে তলিয়ে যায়। 'অন্য আমি' উপন্যাসটির নায়ক ঝলকও এমনই পরিস্থিতির শিকার হয়ে ধীরে ধীরে এক জটিল বৃত্তে ক্রমশ আটকা পড়তে থাকে। নিজেকে নিজেই সে আর চিনতে পারে না। জড়িয়ে পরে চারজন নারীর জীবনের সঙ্গে। ঝলক কি পারবে এই অন্ধকার জগৎ থেকে নিজেকে মুক্ত করে অন্যভাবে নিজেকে খুঁজে বের করতে? উত্তর জানা যাবে উপন্যাসটি শেষ করে।