ডক্টর অতুল সুর প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ, ইতিহাস বিদ ও সমাজ-বিজ্ঞানী বিদ্বৎ সমাজে ‘দুধর্ষ’ পণ্ডিত রূপে আখ্যাত। বয়স ৯২ বৎসর। রচিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৫৪।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র ও অধ্যাপক। ‘প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি ও নৃতত্ত্ব’ বিষয়ে এম.এ. পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে সুবর্ণ পদক ও পুরস্কার পেয়েছিলেন। অর্থনীতিতে সপ্রশংশ ডি.এস.সি উপাধি পেয়েছেন। দশ বৎসর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করেছেন।লেখক পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘রবীন্দ্রপুরস্কার’ পেয়েছেন। মধুসূদন ও রামমোহন পুরস্কার পেয়েছেন। নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন থেকে সুশীলা দেবী বিড়লা পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রাবন্ধিক ও গবেষক অতুল সুর-এর নাম ইদানীং আলোচনায় না থাকলেও বাংলা ভাষায় নানা বিষয়ের চর্চায় তাঁর মতো খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ বিরল। 'প্রতিদিন' পত্রিকায় 'অতিথি' নামক কলামে তিনি যে ফিচারগুলি লিখেছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকটিকে সংকলিত করা হয়েছে এই বইয়ে। বইটি রচনার সময় লেখকের বয়স ছিল ছিয়ানব্বই! তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রাচীন রক্ষণশীলতা দেখা গেছে অনেক জায়গায়। কিন্তু তারই সঙ্গে পাওয়া যায় যৌক্তিক তর্কপ্রীতি ও বাঙালির পরিচয় নিয়ে স্বকীয় ভাবনার মনোরম নিদর্শন। বইটিতে কোনো সূচিপত্র নেই। নেই প্রথম প্রকাশের সাল-তারিখ। কিন্তু হলদে হয়ে যাওয়া কাগজে এই ছোট্ট-ছোট্ট লেখাগুলোয় চিন্তার খোরাক আছে বিস্তর। উদাহরণ হিসেবে আমি গোটাকয়েক লেখার শিরোনাম শুধু উদ্ধার করলাম: - হিন্দুসভ্যতার শিকড়; - এটা গাজনের মাস; - ঈশ্বর কী? - স্বর্গ কোথায়? - জ্যাকি (যতীন চক্রবর্তী) চলে গেল; - খঞ্জ ভগবান; - অধ্যক্ষ ওয়াট; - পদবি কি জরুরি? - শিবঠাকুরের বিদেশযাত্রা; - রাম নাম সত্ হ্যায়; - প্রথম বিদ্রোহী নারী; - যবনাব্দ? নৈব নৈব কদাচন; - মথিত মনু; - সার্কাসে বাঙালি মেয়ে; - বাংলার ধর্মীয় যাদুঘর; - বাঙালির ইংরেজি শিক্ষা। এই লেখাগুলোয় রচয়িতার সঙ্গে আপনি একমত নাই হতে পারেন, ইনফ্যাক্ট না-হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু এই নাতিদীর্ঘ লেখাগুলো পড়ামাত্র আপনার মাথায় প্রশ্নের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ আত্মপ্রকাশ করতে পারে। পাঠকের কাছে একজন প্রাবন্ধিক, এবং প্রবন্ধপাঠে রত এক পাঠক, আর কী চাইতে পারেন, বলুন?