Jump to ratings and reviews
Rate this book

অদিতার আঁধার

Rate this book
দুই হাজার বছর পর পৃথিবীতে কোনো আলাদা দেশ নেই। মানুষের মৃত্যু হলে তার কপি করা মস্তিষ্ক পুনরায় দেহে বসিয়ে জীবন্ত করা হয়। বয়স দুই শ বছর হওয়ার আগে মৃত্যুর অনুমতি পেতে হলে বিশেষ ছাড়পত্র লাগে। বনবিজ্ঞানী অদিতা সান সেই ছাড়পত্র চান। এর বহু বছর আগে অদিতা ও বিষাণের সন্তান সেনভা হারিয়ে গিয়েছিল চাঁদে। বিষাণের গবেষণাই মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়াকে সাফল্যমণ্ডিত করেছিল। কিন্তু মানুষের জীবনকে দীর্ঘমেয়াদি করার সিদ্ধান্ত সমাজকে এক দার্শনিক দ্বন্দ্বের সম্মুখীন করে। সেই দ্বন্দ্বের ফল এক বিশাল ষড়যন্ত্র। ব্যতিক্রমী কথাকার দীপেন ভট্টাচার্যের হাতে সামাজিক ও কারিগরি পরিবর্তনের সম্ভাব্যতার প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর এই ভবিষ্যৎ রূপ নিয়েছে এক আকর্ষণীয় বিজ্ঞান কল্পকাহিনিতে। এক হাজার তিন শ থেকে দুই হাজার বছর পরের কাহিনি বয়ান করা হয়েছে এই আখ্যানে, পাঠককে যা আনন্দ দেবে, অভিভূত করবে।

126 pages, Hardcover

Published February 1, 2019

77 people want to read

About the author

Dipen Bhattacharya

20 books44 followers
দীপেন (দেবদর্শী) ভট্টাচার্য (Dipen Bhattacharya) জ্যোতির্বিদ, অধ্যাপক ও লেখক। জন্ম ১৯৫৯ সালে। আদি নিবাস এলেঙ্গা, টাঙ্গাইল। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল, নটরডেম কলেজ ও ঢাকা কলেজে পড়াশুনা করেছেন।

মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পদার্থবিদ্যায় মাস্টার্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানে পিএইচডি করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ম্যারিল্যান্ড-এ নাসার (NASA) গডার্ড স্পেস ফ্লাইট ইনস্টিটিউটের গবেষক ছিলেন। পরে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড ক্যাম্পাসে (ইউসিআর) গামা রশ্মি জ্যোতি জ্যোতিঃপদার্থবিদ হিসেবে যোগ দেন। মহাশূন্য থেকে আসা গামা-রশ্মি পর্যবেক্ষণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে বায়ুমণ্ডলের ওপরে বেলুনবাহিত দূরবীন ওঠানোর অভিযানসমূহে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে পদার্থবিদ্যায় গবেষণা করছেন ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড কমিউনিটি কলেজে; এছাড়া পদার্থবিদ্যা এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে অধ্যাপনা করছেন ক্যালিফোর্নিয়ার মোরেনো ভ্যালি কলেজে।
১৯৭৫ সালে তিনি বন্ধুদের সহযোগিতায় ‘অনুসন্ধিৎসু চক্র’ নামে একটি বিজ্ঞান সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬-২০০৭ সালে ফুলব্রাইট ফেলো হয়ে ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। বাংলাদেশে বিজ্ঞান আন্দোলন ও পরিবেশ সচেতনতার প্রসারে যুক্ত।

পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা ছাড়াও বাংলা ভাষায় তাঁর বিজ্ঞান-কল্পকাহিনিভিত্তিক ভিন্ন স্বাদের বেশ কয়েকটি ফিকশন বই প্রকাশিত হয়েছে।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
8 (17%)
4 stars
29 (63%)
3 stars
9 (19%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 20 of 20 reviews
Profile Image for Harun Ahmed.
1,650 reviews418 followers
October 13, 2023
অসাধারণ, মনোমুগ্ধকর এক লেখা।

বহুদিন পর বাংলা ভাষায় লেখা কোনো ডিসটোপিয়ান বিজ্ঞান কল্পকাহিনি পড়ে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পেলাম। সময়টা দুই হাজার বছর পরের পৃথিবীর, যেখানে আলাদা দেশ নেই,মানুষ চাইলেও সেখানে মৃত্যুবরণ করতে পারেনা। আপাত নিখুঁত এই জগতে অদিতা দ্যাখে মৃত্যুর স্বপ্ন। আর কোনো এক ষড়যন্ত্রের বলি হয়ে একদিন সে সত্যিই মারা যায়।তাকে কি আবার ফিরিয়ে আনা হবে পৃথিবীতে? কী ঘটেছিলো অদিতা আর বিষাণের অতীত জীবনে? কারা আছে ষড়যন্ত্রের পেছনে?তারা কী চায়? এ নিয়েই "অদিতার আঁধার।"

লেখক খুব বিশ্বাসযোগ্যভাবে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর চিত্র এঁকেছেন, গল্পের ভেতর তুলে ধরেছেন নানান দার্শনিক প্রশ্ন। উপন্যাসটি একইসাথে জমজমাট ও দার্শনিক অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ বলে পড়া শেষ হওয়ার পরও এর রেশ থেকে যায়, নিউরনে অনুরণন তোলে।

"নিস্তার মোল্লার মহাভারত "এর পর আরেকবার দীপেন ভট্টাচার্যের লেখা পড়ে মুগ্ধ হলাম। এইবার এই লেখকের সব লেখা খুঁজে খুঁজে পড়তে হবে।

(২০ জুন, ২০২১)
Profile Image for Ashik.
220 reviews40 followers
January 18, 2025
দীপেন ভট্টাচার্যের লেখার সাথে আমার পরিচয় "দিতার ঘড়ি" এর মাধ্যমে, এবং বলতে দ্বিধা নেই বইটা পড়েই লেখকের প্রতি ভালো লাগা কাজ করেছিল চমৎকার গল্প ও সুন্দর, সাবলীল ভাষার জন্য। এরপর "নিস্তার মোল্লার মহাভারত" পড়ে চমৎকৃত হয়েছিলাম, অদ্ভুত রকমের গল্পগুলো আকৃষ্ট করেছিল ভীষণ।

সায়েন্স ফিকশনে সাধারণত সুন্দর গল্প এবং মসৃণ লেখনীর মেলবন্ধন খুব কমই হয়, বিশেষ করে বাংলা কল্পকাহিনিতে।
দীপেন ভট্টাচার্য এখানে স্বকীয়তা ধরে রেখেছেন, "অদিতার আঁধার" গল্পে তিনি দিয়েছেন দুর্দান্ত একটা গল্প, সেইসাথে তার ট্রেডমার্ক লেখনী।
Profile Image for Yeasin Reza.
508 reviews85 followers
October 14, 2023
দীপেন ভট্টাচার্যের এই ডিস্টোপিয়ান সাইন্স ফিকশন পড়ে আমি মুগ্ধ। ভবিষ্যৎ পৃথিবীর রূপরেখা বেশ বিশ্বাসযোগ্য ও আগ্রহ ধরে রাখার মতো করে সৃষ্টি করেছেন। নিছক এডভেঞ্চার টাইপ গল্প এটি নয়। তিনি চমৎকারভাবে মানুষের নানান দার্শনিক জিজ্ঞাসা এবং উপলব্ধি কাহিনীতে বয়ান করেছেন। সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার যেটা সেটা হলো যে বইটি অত্যন্ত সুখপাঠ্য। বৈজ্ঞানিক তথ্য কিংবা গল্পকাঠামোর অতিরিক্ত বর্ণনাভঙ্গি থেকে মুক্ত। মানুষের চিরায়ত মানবিক টানাপোড়ন, আত্মবিধ্বংসিতা, প্রেম, প্রতিশোধস্পৃহা ইত্যাদি ভবিষ্যতের কল্পকাহিনী রুপে বর্তমানকেই বিবৃত করে।
Profile Image for মোহতাসিম সিফাত.
180 reviews50 followers
October 12, 2024
আজ থেকে দুই হাজার বছর পরের পৃথিবী। আক্ষরিক অর্থেই "ঘুচে গেছে দেশ কাল সীমানার গণ্ডি"। প্রযুক্তির সুনিপুণ উৎকর্ষতায় মানুষ মস্তিষ্কের অনুলিপি সংরক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের সত্ত্বা বাঁচিয়ে রাখতে পারে। হাজার হাজার ন্যানোবট ব্যস্ত থাকে শরীরের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষায়। দুর্ঘটনাবশত কারো মৃত্যু হলে, তিন বছর আগের কপি করা মস্তিষ্ক নিয়ে পুনরুজ্জীবিত হয় মানুষ। পৃথিবীর জনসংখ্যা দুই বিলিয়নে স্থিত। সুখী সুন্দর উপভোগ্য জীবনব্যবস্থা।

কিন্তু নশ্বর মানুষ কেনো অমর হবে? মস্তিষ্ক সংরক্ষণের আবিষ্কার-পদ্ধতির কুশীলবদের একজন বিরুদ্ধাচরণ করে বসে এই নিয়মের। গঠন করে গোপন সংগঠন। শুধুই কি যুক্তির খাতিরে? নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে ব্যর্থ প্রেমের প্রতিহিংসা? কি চায় তারা? নিরাপদ মৃত্যুর স্বাধীনতা?

দুই সহস্রাব্দ পরের এক ডিস্টোপিয়ান জীবন ব্যবস্থা কল্পনা করেছেন লেখক। নিয়ে এসেছেন সুন্দর অসুন্দরের কোন্দল; বর্তমানের প্রেম-ভালোবাসা, আবেগ-বিবেকের অন্তর্দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতের দুনিয়ায় কি আকারে প্রকাশ পেতে পারে, সেটা দেখিয়েছেন। সাথে দীপেন ভট্টাচার্যের চিরায়ত সুন্দর লিখনশৈলী ও কাহিনী-নির্মাণ তো থাকছেই। সব মিলিয়ে সুন্দর একটা বই।

পুনশ্চ: আজ জানলাম, Dystopiaর বাংলা হচ্ছে "দুঃস্বপ্নলোক"।
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews194 followers
January 8, 2024
দীপেন ভট্টাচার্য এর লেখা পড়ব গত বছরই ঠিক করি। পরে নানা কারণে হয়ে ওঠে নি। শেষ দিকে একটা বই কিনে আনলাম। আর পড়তে শুরু করেই বুঝতে পারলাম কী কী মিস করে গিয়েছি এতদিন!
সবসময়ই বেটার লেইট দ্যান নেভার আপ্তবাক্যে বিশ্বাসী না হলেও পাঠক হিসেবে এইটা মেনে চলি আমি। তাই আফসোস না হলেও প্রচণ্ড আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
সাইন্স ফিকশন ছোটবেলায় গোগ্রাসে গিলেছি একসময়, এখনো ভালো শুনলে দ্বিধা না করে তুলে নেই। তবে এই বইটিকে যদি কেবল সাইন্স ফিকশন তকমা দেই, মোটেই সুবিচার হবে না বইটির প্রতি।
পৃথিবী ফুরিয়ে আবার যদি পৃথিবী ফিরে আসে, বারবার, সাইকেলগুলো কেবল শেষ হবে আসলে, যা শুরু হবে আবার তাই শুরু হবে শুরু থেকে। ধ্বংস নেই, থাকলেও পরক্ষণেই নতুন সৃষ্টি হচ্ছে।
টুকি এবং ঝা এর (প্রায়) দু:সাহসিক অভিযান আমার অন্যতম প্রিয় একটি কিশোরপাঠ্য সাইন্স ফিকশন, এর শেষটা পড়ে আমার এই অনুভূতিটা হয়েছিল।
অদিতার আঁধার নানা দার্শনিক প্রশ্নে সেই ভাবনাটাকেই আরো গাঢ় করে তুলল। আর বলে গেল, ভবিষ্যতের খোলসে বর্তমানেরই আমাদের কথা।
আচ্ছা, মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন এর এই যে প্রক্রিয়া, যাতে প্রতিবার মানুষ অন্য একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে ওঠে, মানে নিজের মস্তিষ্ক হওয়া সত্ত্বেও যেহেতু গ্যাপ থাকে কিছু বছরের -অনেক কিছুই মনে থাকে না, মানুষটি আর এক থাকে না, এতে কি জন্মান্তরবাদ এর কোন ছায়া আছে?
এটা নিছকই আমার এক কৌতূহল। হিন্দুধর্মে জন্মান্তরবাদ এক অতি শক্তিশালী দর্শন, কিন্তু প্রতি জন্মেই মানুষটি অন্য একজন হয়ে জন্মায়।
আর, মূল উপন্যাসের যে চালিকাশক্তি, সেই শতাব্দীপ্রাচীন প্রেম আর ঘৃণা-প্রতিশোধ এই বিষয়গুলোও বোধহয় মানুষের বয়স যতই হোক, পৃথিবী টিকুক বা না টিকুক, মানুষের মধ্যে রয়ে যাবে।
অদিতার আঁধার এর ভাষাবিন্যাস এবং শব্দচয়ন অপুর্ব। এটি একটি উচ্চমার্গীয় সাহিত্যকর্ম এবং একজন বিজ্ঞানীর কলম থেকে। তাঁর অন্যান্য বইয়ের নাম জানা রয়েছে, এখন পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে পড়ে ফেলা যাবে।
Profile Image for Mahbub Mayukh Rishad.
57 reviews15 followers
April 12, 2022
১২/৪/২০২০

৪.৫/৫

যে বই খুব দ্রুত পাঠ করে ফেলা যায়, সেই বই কি ভালো বই? বইটা কেমন ছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে যে কথাটা সবচেয়ে বেশি শোনা যায় তা হলো তরতর করে পড়ে ফেলেছি।
আমি নিচের ছবির বইটা তরতর করে পড়ে ফেলেছি। সুতরাং ভালো লাগার শর্তে খুব সহজে একটি পয়েন্ট বইটি পেয়েই যায়।
কিন্তু বইটি আমার বহু বহু পুরোনো ব্যক্তিগত, পুরোনো ইচ্ছার সিন্দুক খুলে দেওয়ায় আমার একে অনেক নাম্বার দিতে মন চাইছে। ব্যাপারটা এমনভাবে বলছি যেন, নাম্বার দেওয়াতে বুঝি অনেক কিছু এসে যায়। আমি কোন তালেবর?
মৃত্যু নেই এমন একটা সময়ের গল্প। মানুষ, মানুষ আসলে কখনোই শান্তি পায় না।
মৃত্যু চায় না কোন বোকা? আমি তো চাই। বিজ্ঞান যাই করুক মানুষকে যেন অমর না করে!

বইটি পাঠ করা যেতে পারে। এটা একটা দার্শনিক সায়েন্স ফিকশন। প্রথমা বের করেছে।
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
September 22, 2021
আর বেঁচে থাকতে চায় না অদিতা। মায়ের চলে যাওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া দুঃস্বপ্ন, ছেলে সেনভার দূরে চলে যাওয়া, অনন্তকাল ধরে বেঁচে থাকা এই সবকিছুই যেন তাকে তাড়া করে ফেরে। যদিও অদিতা আত্নহত্যার চেষ্টা করেছে কয়েকবার কিন্তু লাভ হয় নি। প্রায় দুই হাজার বছর পরের পৃথিবী যেখানে কোনো আলাদা দেশ নেই। মানুষের মস্তিষ্ক কপি করে রাখা হয় যার ফলে মৃত্যুকে ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। তবে কিছু নিয়ম রয়েছে- মানুষ একটা নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যুর জন্য আবেদন করতে পারে। অদিতা এখন সে চেষ্টাই করছে।

শেষমেষ অদিতার এই ইচ্ছা বাস্তবে রূপ নেয় কিন্তু অস্বাভাবিকভাবে। নির্জন বনে খুন করা হয় অদিতাকে। একজন মানুষ মরে যেতে চাচ্ছে, তাকে খুন করা হল! কিন্তু কেন?🤷‍♀️ বনে যাওয়ার আগে অদিতা ডক্টর বিনতাকে বলে গিয়েছিল এক অদ্ভুত আঁধারের কথা যা হঠাৎ করে তার ঘরের কোণায় ফুঁসে ওঠে।

"অদিতার আঁধার" একটা প্রশ্ন কিংবা মানুষের বিশাল আকাঙ্ক্ষার এক অজানা দিক/ অন্ধকার অংশ। মানুষ বাঁচতে তো চায়! কিন্তু মৃত্যুহীন এই হাজার, কোটি বছর কেমন হবে? জড়াহীন পৃথিবীতে কেমন হবে মানুষের পারিপার্শ্বিক অনুভূতি? ঈর্ষা, ভালবাসা কিংবা ঘৃণা...


ভেরি ইন্টারেস্টিং প্লট। সাই-ফাই তেমন পড়া হয় না। এই বইটা বেশ ভাল লাগলো। তবে শুরুতে লেখা কেমন যেন স্মুথ লাগেনি, শেষের দিকে এমন মনে হয়নি। সংস্কৃত শব্দের ব্যবহারটাই এজন্য দায়ী, (মনে হচ্ছিল গাড্ডাওয়ালা রাস্তায় ভ্যানগাড়ি নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি :/ ) আর শেষের দিকে তেমন ভাল লাগে নি। তবে ফিনিশিং ভাল ছিল।



~২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
Profile Image for Adwitiya (অদ্বিতীয়া).
297 reviews41 followers
March 14, 2024
5.0 / 5.0


এখন পর্যন্ত এবছর পড়া সেরা বই। নিজের নামের সাথে মিল দেখেই বইটা প্রথম আলাদাভাবে নজর কেড়েছিলো। তবে তাছাড়াও সাইন্স ফিকশন বরাবরই আমার ভালো লাগার একটা জনরা। মহাবিশ্বের অন্তহীন বিশালতার মাঝে ক্ষণিকের এই অস্তিত্বের রহস্যগুলোকে সচেতন মস্তকে এনে কিছুটা সময় নাড়াচাড়া করতে চাইলে সাইন্স ফিকশনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া আমাদের নিত্যকার আটপৌরে জীবনে খুব ভালো উপায় আর নেই। বিজ্ঞান কল্পকাহিনির লেখার ক্ষেত্রে ভাষাগত দিকটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ, তবে বাংলা ভাষার কি আশ্চর্য সুন্দর ব্যবহার দেখলাম এই বইয়ে। প্রথমার সম্পাদনাও বেশ ভালো, বানান ভুল বা অন্যকোন অসংগতি চোখে পড়েনি। দীপেন ভট্টাচার্যের বাকি লেখাগুলোও এখন তাই না পড়লেই নয়। 


~ 14 March 2024
Profile Image for Khandaker Sanidulla Sanid.
41 reviews7 followers
February 25, 2024
বেশ আগে একই লেখকের 'অভিজিৎ নক্ষত্রের আলো' বইটা নিয়ে লিখেছিলাম। বলেছিলাম বেশ কিছু ব্যাপার মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে লেখাও একটু কঠিন। আজ একই লেখকের 'অদিতার আঁধার' পড়ে শেষ করলাম। মনে হলো দুটো বই দুজন লেখক লিখেছেন। এত সাবলীলভাবে যে এত সুন্দরভাবে ১২৫ পৃষ্ঠার মধ্যে একটা ডিস্টোপিয়ান সাইন্স ফিকশন ঠাসা যায় এটা না পড়লে হয়ত বোঝা যেতনা।

বইয়ের সময়টা ৪৩৫৯ সাল যখন পৃথিবী তার সর্বোচ্চ উন্নতিতে পৌছে গিয়েছে। ব্যবহার করতে শিখেছ সর্বোচ্চ প্রযুক্তির। প্রতিটা মানুষের শরীরে চিপ বসানো কারো কোথাও হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই আর হারিয়ে গেলেও ট্র‍্যাক করা যায় খুব সহজেই। সেই সময়টাতে শরীরের কোথাও কেটে গেলে শরীরের ভেতরে থাকা ন্যানো রোবটরা কয়েক মিলিসেকেন্ডের মধ্যে আক্রান্ত স্থান সুস্থ করে তোলে৷ মানুষের মস্তিষ্ককে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ ২০০ বছরের আগে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মারা যাবার চিন্তাও করতে পারবেনা আবার মরতে চাইলেও নানান আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তবে এই লম্বা গদবাধা জীবন থেকে বের হতে চায় বনবিশেষজ্ঞ অদিতা। হঠাৎ করেই অঘটন ঘটে গেলো। অদিতার ডেডবডি পাওয়া গেল গহীন জঙ্গলে। অদিতাকে খুন করা হয়েছে এবং সেখানে খুনির কোনো ট্রেস পাওয়া যায়নি। এমন শক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাকি দিয়ে যে অদিতাকে খুন করতে পারে সে নিশ্চয়ই বিশালগড়ের গবেষনাগারের লোকদের থেকে ধুরন্ধর। বিশালগড়ের উঁচু শ্রেণির গবেষক থেকে শুরু করে সবাই এমন ঘটনায় হতবিহ্বল। এরপর আবার খুন হয় অদিতার চিকিৎসক 'বিনতা' কিন্তু এর কারণ বের করতে পারেনা কেউই। কারণ খুনগুলোর সময় সিস্টেম ট্র‍্যাকারগুলোকে জ্যাম করে দেয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এটার তদন্তে বেরিয়ে আসে বিশালগড়েরই এক কালো অধ্যায়। বেরিয়ে আসে কিছু সম্পর্ক আর হারিয়ে যাওয়া কিছু চরিত্র।


ডিস্টোপিয়ান সাইন্স ফিকশন পড়েছি খুবই কম। প্রথম পড়েছিলাম 'প্রিসিলা' ভালো লেগেছিল দ্বিতীয় পড়লাম দীপেন ভট্টাচার্যের এই 'অদিতার আঁধার'। এটার শুরু থেকেই বেশ গোছানো ছিল। সহজ ভাষায় লেখা কোনো কাঠিন্যের মধ্যে দিয়ে যাননি লেখক। এমনকি জটিল কোনো বিষয়ও আনা হয়নি। মাঝে মাঝে দার্শনিক আলাপের মাধ্যমে গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। দুই হাজার বছরের পরেও এই মহাবিশ্বের চেহারা আসলে কেম হতে পারে, প্রযুক্তি কেমন হতে পারে এসবকিছু একজন সাধারণ লেখকের মাথায় আসা সম্ভব না। এমন প্রযুক্তির সময়ের মধ্যেও বাইত প্রেম,অবিশ্বাস,প্রতিহিংসা থেকে প্রতিশোধপরায়ণতা এত সুন্দরভাবে গোছানো। লেখক নিজেও একজন বিজ্ঞানী সেজন্য তার জন্য হয়ত এটা বেশি সহজ হয়েছে। সব মিলিয়ে বলব 'অদিতার আঁধার' আমাকে মুগ্ধ করেছে। লেখকের 'দিতার ঘড়ি' আর 'নিস্তার মোল্লার মহাভারত' বইদুটো সংগ্রহে রয়েছে পড়ব যত দ্রুত সম্ভব হয়।
Profile Image for Salman Sakib Jishan.
272 reviews158 followers
July 8, 2022
এমন একটা সময়, যেখানে কোনো আলাদা দেশ নেই, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে মানুষের রোগ, ক্ষত থাকছেনা, এমনকি থাকছেনা মৃত্যু! মৃত্যু ঘটলে পুনরায় কপি করে রাখা মস্তিষ্ক দেহে বসিয়ে আবার জীবিত করা হচ্ছে মানুষকে। নেই ঘৃণার রাজনীতি, বনে বনে গড়ে তোলা হয়েছে অভয়ারণ্য। সমগ্র পৃথিবী ছিমছাম নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা, নাগরিকরা পাচ্ছে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা। এমন স্বপ্নের একটা কল্পিত দুনিয়া সহজেই আপনাকে 'ইউটোপিয়া'র ধারণা মনে করিয়ে দেবে।
কিন্তু মানুষের জন্য বানানো এরকম একটি দুনিয়াও তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে শুধুমাত্র মানুষের জন্যই। মানুষের দীর্ঘ জীবন মতবাদ নিয়ে দ্বন্দ আর এরকম ইউটোপিয়ার ধারণার ফাঁকফোকর, আর নানান দার্শনিক প্রশ্নর উদয় ঘটিয়ে রচিত হয়েছে দীপেন ভট্টাচার্যের বিজ্ঞান কল্পকাহিনী অদিতার আঁধার।
বইটা স্লো বার্ণ, কিন্তু ছোট একটি কাহিনী। সাথে বড় একটা ম্যাসেজ। শুরুতে ধীরে ধীরে আগানো গল্পটা পড়ে যেতে বেশ আরাম। দীপেন ভট্টাচার্যের মনোমুগ্ধকর লেখনীর ক��্যাণে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী পড়তেও একটা বিরল তৃপ্তি পাওয়া যায়।
অদিতা নামের এক বনবিজ্ঞানীকে ঘিরে কাহিনীর সূত্রপাত হলেও সেই একটি জায়গা কিংবা একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে থেমে থাকেনি গল্পটা বিষাণ, বিনতা, তরকার, সেনভা, অশির, রাস্কো প্রমুখ চরিত্রের বিল্ডআপও ছিলো সুন্দর। কয়েক হাজার বছর পরের একটি কল্পনাযোগ্য পৃথিবীর দৃশ্যপট ধরে রেখে, সামাজিক উপন্যাসের ঢং-এ বিজ্ঞান কল্পকাহিনী রচনা করা ঠিক সহজ কথা নয়। কিছুটা স্লো লাগলেও আমি আরেকবার দীপেন ভট্টাচার্যে মুগ্ধ।
Profile Image for Debashish Chakrabarty.
108 reviews94 followers
July 27, 2020
বিশাল এই মহাবিশ্বে, এই রহস্যময় অস্তিত্বে ক্ষণস্থায়ী দেহের অধিকারী মানব সত্ত্বা সব সময়েই খুঁজে ফিরেছে অমরত্ব । না হয় অন্তত বর্ধিত কিছুটা সময় । সময়ের মাপকাঠিতে আরও কিছুটা সময় যাতে সে পায় নিজের অস্তিত্বের কারণ খুঁজতে, ব্রহ্মাণ্ডে তার অবস্থান যাচাই করতে অথবা ক্ষমতা প্রয়োগ-ভোগ করতে আরও এই একটু সময়ের তাগিদে কতনা তার চেষ্টা ।এই আমিত্ব আর অস্তিত্বের সংকটের গল্প অদিতার আঁধার । দার্শনিক এই চিন্তাকে মানুষের মস্তিষ্কের "আর-কমপ্লেক্সের" ফলশ্রুতিতে, প্রতিহিংসার মোড়কে আমাদের কাছে ভবিষ্যৎ এক পৃথিবীর গল্প পৌঁছে দিলেন লেখক । ঘটনাকাল-পটভূমি যদিও ভবিষ্যৎ সাম্যবাদী পৃথিবীর, তবুও তাতে ঘুরে ফিরেছে মানুষের সেই বর্ধিত জীবনের আকাঙ্ক্ষা আর তা করতে গিয়ে সৃষ্টি হওয়া কূটাভাস বা প্যারাডক্স । একদল বেছে নিতে চায় কোন রকম মানব হস্তক্ষেপহীন জীবনকাল আবার আরেক দলের লক্ষ্য অপেক্ষাকৃত দীর্ঘস্থায়ী জীবনকাল ।

বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ধরণ-ধাঁচের লেখা পড়তে গেলে প্রায়ই বলতে হয় বা বলতে শোনা যায় যে এমন লেখা আগে পড়িনি বা বাংলায় আগে কখনো চোখে পড়েনি । এমনটা বলতে আর ভাল লাগে না । দীপেন ভট্টাচার্যের লেখা বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর তকমায় বার বার বিজ্ঞানের নিগুর দার্শনিক আবেদন-দ্যোতনা তুলে ধরেছেন । এতে চিন্তার পাটাতনটা থাকে বরবারই শক্ত-পোক্ত । তবে দুহাজার বছর পরের সভ্যতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আর দশটা কল্পকাহিনীর গল্প বলার চেনা পথকেই বেছে নিয়েছেন । যদিও এই প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত । বিভিন্ন তথ্য পরিবেশন করার সেই প্রচলিত পন্থা... সেটা শেষ হয়ে গেছে সেই কবে...এমনটা আর দেখা যায় না... দু হাজার বছর বা তারও পরের কোন মানব সভ্যতার মনস্তাত্ত্বিক-দার্শনিক-প্রাযুক্তিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরতে এমন খণ্ড খণ্ড তথ্যের ফুলঝুরি পড়লে মনে হয় তা সরাররি আমার জন্যই, আমাকে বোঝানোর জন্যই লেখা । এতে গল্পের নিরেট ভাবটা আর থাকে না । সবকিছুর এমন ব্যাখ্যাই বা দিতে হবেই বা কেন! গল্প কথক গল্পের ছলেই গল্প বলে গেলে দোষটা কোথায়?
Profile Image for Sazedul Waheed Nitol.
87 reviews33 followers
March 28, 2020
দীপেন ভট্টাচার্য আবারও আমাকে চমকে দিলেন। না, এবার গল্প দিয়ে নয়, বরং দর্শন দিয়ে। যে গভীর অনুভূতি তিনি পাঠকের মাঝে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম, তা অনেক ঝানু গল্পকার আর লেখকদের মধ্যে ঈর্ষা তৈরি করবে- আমি নিশ্চিত।
Profile Image for Sushanto Kumar Saha.
93 reviews9 followers
April 21, 2020
কী নেই এই বইয়ে? ভালোবাসা, বেদনা, সংঘাত, প্রতিহিংসা, উত্থান, পতন সবকিছু ছাপিয়ে এক অন্যরকম দর্শন।
লেখকের কলমে উঠে এসেছে অনাগত পৃথিবীর এক সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ আখ্যান। টানটান উত্তেজনার এ এক অসামান্য সায়েন্স ফিকশন!
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
October 28, 2024
মৃত্যুর পরের জগৎটা রহস্যময়, কারন মানুষ জানে না মৃত্যুর পর কী হয়। সে জগৎটাই বা কেমন। চিরপরিচিত দুনিয়া ছেড়ে, আত্মীয় পরিজন ফেলে, নিজের হাজারো অসমাপ্ত কাজ ফেলে কে-ই বা চায় অনন্ত অজানার জগতে পারি দিতে। তাই মৃত্যুকে জয় করবার শখ মানুষের বহুদিনের। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক দীপেন ভট্টাচার্য ভবিষ্যতে যে সময়ের পৃথিবীর ছবি এঁকেছেন, সে সময়টার সাথে আমাদের চেনাজানা পৃথিবীর কোন মিল নেই। কালান্তর নামক এক সময়ে বসবাস করছে মানুষ। জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত এই সময়ের মানুষেরা জয় করেছে বড় বড় রোগ-ব্যাধি, জরা আর মানুষের সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় মৃত্যুকে।

এই কালান্তরের সময়ের বিখ্যাত বন গবেষক অদিতা। নানান কারণে মৃত্যু বরণ করতে চায় সে কিন্তু নতুন সভ্যতার নিয়ম অনুযায়ী দুইশ বছরের আগে সেই অনুমতি পাওয়া যাবে না। অদিতা চেষ্টা করতে থাকে, আত্মহত্যা করলেও কপি করে রাখা মস্তিষ্কের মাধ্যমে আবার পুনরুজ্জীবিত করা হয় ওকে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিজ্ঞান আর নৈতিকতার মাঝে দেখা দেয় বিরোধ। এই বিরোধের সুযোগ নিয়ে গড়ে উঠে উগ্রবাদী একটা সংগঠন 'লোহিতক'। যাদের মূল উদ্দেশ্য মৃত্যুর মতো মৌলিক আর প্রাকৃতিক একটা বিষয়ে বিজ্ঞানের অনধিকারচর্চার বিরোধীতা, মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।

সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা জগৎ, ভিন্ন সময়কে কেন্দ্র করে উপন্যাসের প্লট সাজিয়েছেন দীপেন ভট্টাচার্য। খুব ধীরে ধীরে প্লট বিল্ডাপ করে পাঠকদের মুখোমুখি করেছেন দার্শনিক কিছু প্রশ্নের। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত। ধীরপাঠ্যের চমৎকার একটা বই।
Profile Image for Fahim.
35 reviews47 followers
April 22, 2019
... সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব ছাড়া শুধু প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের অস্তিত্বের দ্বন্দ্ব নিয়ে যে আর্টের ধারণা সম্ভব, মানুষ সেটা ধীরে ধীরে বুঝতে শিখল। তবু এক ধরনের অতৃপ্তি বোধ রয়ে গেল। এই অতৃপ্তি অস্তিত্বের অর্থ না বোঝার অতৃপ্তি। কিন্তু মহাবিশ্বের প্রকৃতির মাঝে নিজের অস্তিত্বের ক্ষণস্থায়ী রূপের অতৃপ্তিকে স্বীকার করে নেয়ার মধ্যে যে এক ধরনের মুক্তি আছে, সেটা মানুষ বুঝতে শিখল। একই সঙ্গে তাদের এই একটিমাত্র জীবনে মহাবিশ্বকে অনুভব করার সময়সীমাকে তারা বাড়াতে চাইল।


কোটি কোটি বছরের পুরনো পৃথিবী আর তারচেয়েও প্রাচীন এই মহাবিশ্বে আমাদের স্থায়িত্বকাল কত অল্প! আধুনিক মানুষের ইতিহাস তো খুব বেশিদিন আগের নয়। অনন্ত অসীম মহাবিশ্বের বুকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পৃথিবীতে আমাদের পদচারণা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, প্রযুক্তি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ভালোবাসা - সবকিছু। এই তো সেদিন ব্ল্যাকহোলের ছবি তোলার মাধ্যমে আমরা হয়তো আরেকটু অগ্রসর হলাম বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি রহস্য উদঘাটনের পথে। একটু একটু করে এভাবেই মানুষ পৌঁছবে সভ্যতার উৎকর্ষের শিখরে। সেই চূঁড়োয় দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের মানুষের কাছে বর্তমানের জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি মনে হবে নিতান্তই প্রাগৈতিহাসিক। ভাবি, আমি হয়তো থাকবো না কিন্তু কী হবে একশ বছর পরে? একহাজার বছর পরে? তবে কি নিরর্থক এই বেঁচে থাকা? জন্ম আর মৃত্যু এই দুইয়ের মাঝে স্ফুলিঙ্গের মত কেবলই ক্ষণিকের উপস্থিতি?

অদিতার আঁধার জন্ম দেয় এমন এক মেলানকোলিয়ার, প্রশ্ন করতে শেখায় জীবনের অর্থ নিয়ে আর নাড়িয়ে দেয় অনেক প্রযুক্তির নৈতিক ভিত্তির । ভাষার শক্ত গাঁথুনির ওপরে জ্যোতিঃপদার্থবিদ লেখক চিত্রিত করেন ভবিষ্যত পৃথিবীর কথা। সেই ভব���ষ্যত কখনো আশা জাগায় আবার কখনো ডুবে যায় হতাশার নিকষ কালো অন্ধকারে। নতুন সেই পৃথিবীতে সংঘাত, প্রেম, প্রতিশোধ এই অনুভূতিগুলো তখনো হারিয়ে যায় নি বরঞ্চ তারা সমগ্র পৃথিবীর ভবিষ্যতকেই ঠেলে দেয় এক অনিশ্চিত আঁধারের দিকে।

অদিতার আঁধারের বিষণ্নতা ছড়িয়ে যায় মানব মনের নিভৃততম নিলয়েও।
Profile Image for Rafat Tamim.
73 reviews7 followers
November 10, 2022
রেটিং - ৩.৫

নতুন করে বলার কিছু নেই, গুডরিডস এ আসার পর যে কজন অজানা লেখকের সন্ধান পেয়েছি তার ভিতর উনি অন্যতম। বিজ্ঞানের সাথে দর্শনের এমন অদ্ভুত মেলবন্ধন যে উনি করেছেন, সেখানে তার বই শুধু সায়েন্স ফিকশন জনরা বললে অবিচার হয়।

মানুষ জাতির আসল মুক্তি যে কোথায় তা হয়ত মানুষ পৃথিবী শেষ হলেও জানবে না। এইজন্য মৃত্যুকে জয় করার পরও অদিতা দিনশেষে বলে "আমি তো মরতেই চেয়েছিলাম"। বইটা দুইবারে বসে শেষ করে ফেলছি। পজিটিভ দিক আলাদা করে বলতে গেলে উনার আগের বই নিয়ে যা বলা হয়েছে সেইগুলোই ঘুরেফিরে আসবে।

তবে এই বইয়ে বেশ কয়েকটি নেগেটিভ দিক ছিল।

১. রাস্কোর মোটিভটা মোটেও ভালোভাবে বিল্ডআপ করা হয় নাই। তার দর্শনগত দিকটা আরো ভালোমত লেখা উচিৎ ছিল। মাত্র এক চ্যাপ্টারেই তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সে নিজে বলেছে। এইরকম ১২০ বছরের গ্রান্ড প্ল্যানের জন্য আরো শক্তিশালী মোটিভ দরকার ছিল।

২. বিনতা এবং সিলেয়া চরিত্র দুটি মনে হয়েছিল গল্পে বড় ভূমিকা রাখবে কিন্তু বিনতা একটু পেলেও সিলেয়া একেবারেই অল্প ছিল।

৩. এইরকম উন্নত প্রযুক্তিকে একেবারে এত সহজে হারিয়ে শেষে সব ধ্বংস করে ফেললো এইটাও কেমন যেন লাগলো। যেহেতু গোয়েন্দারা আগেই জেনে গেছে তাদের কর্মকাণ্ড। বিষাণও সতর্ক হয়ে আগেই অদিতার ব্রেইন সরিয়েছিল অথচ কোন নিরাপত্তা রাখলো না "নিলয়" এ।

৪. পৃথিবীর অথোরিটি সম্পর্কে তেমন কিছুই ছিল না বইয়ে।

আরো ছোটখাটো কিছু লুপহোল আছে কাহিনীতে। তবে লেখক যে মেসেজ দিতে চেয়েছে সেইটা একেবারে পরিষ্কার এবং চিন্তার অনেক খোরাক দিয়েছে মাথায়। আর সম্পর্কের আবেগগুলো এবং শেষটা খুবই ভালো হয়েছে।

বইটা আরো বড় পরিসরে লেখলে লুপহোলগুলো দূর হত এবং একটা মাস্টারপিস বই হত। পরপর উনার বেশ ভালো কিছু বই পড়ার পরে, এক্সপেক্টেশন অনেক বেশী নিয়ে বসছিলাম বলে মনে হয় আরো বেশী আশা করছিলাম।
This entire review has been hidden because of spoilers.
1 review5 followers
July 22, 2022
৪.৫/৫

দীপেন ভট্টাচার্যের বই এর আগে মোটে একটা পড়া হয়েছে— 'অভিজিৎ নক্ষত্রের আলো'। বইটা পড়ে ভালো লাগলেও সহসাই দীপেন ভট্টাচার্যের আরেকটা বই ধরার সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। দীর্ঘদিন পর তার আরেক বই— 'অদিতার আঁধার' পড়া হলো। এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো যে, সাই-ফাইয়ের কোনো দুঁদে পাঠক নই আমি; আমার সাই-ফাই পড়ার দৌড় জাফর ইকবাল-হুমায়ূন আহমেদের মধ্যেই মোটামুটি সীমাবদ্ধ। সাই-ফাই বই না পড়ার পেছন এমন অনাগ্রহের কারণ হিসেবে বলবো: পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা জুড়ে যান্ত্রিক তর্জন-গর্জন, বৈজ্ঞানিক হাইপোথিসিসের চিৎকার-চেঁচামেচি— যেই উপকরণগুলোই মূলত একটা বইকে সাই-ফাই জনরার অন্তর্ভুক্ত করে, সেগুলোর প্রতি আকর্ষণহীনতা বোধ করা। দীপেন ভট্টাচার্যের বইয়ে যে এই উপকরণগুলো অনুপস্থিত, তা নয় কিন্তু তার বইয়ে যান্ত্রিক শীৎকারের অংশটা বাদেও আরেক ধরনের উপকরণ থাকে যেটা পুরোপুরি মানবীয় এবং এই দুই ধরনের উপকরণের মধ্যে যে ব্যালেন্স তিনি করেন সেটা ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই পছন্দের।

অদিতার আঁধারের পটভূমি রচিত হয়েছে এক ফিউচারিস্টিক ওয়ার্ল্ডে যেখানে ঘন বন-জঙ্গলের মতো একটা প্রাগৈতিহাসিক ব্যাপারও আছে। সেই দুনিয়ায় মৃত্যু তেমন সুপরিচিত কোনো কনসেপ্ট নয়, মানুষ ২০০ বছর না হলে মৃত্যুবরণ করতে পারবে না— এমনই আইন সেখানে। এটুকু পড়ে মনে হতে পারে, লেখক বোধহয় দীর্ঘজীবন প্রাপ্তি অথবা অমরত্ব লাভের কুফলতা সংক্রান্ত সেই ক্লিশে কাহিনিরই আবির্ভাব আরেকবার ঘটিয়েছেন। এমনটা মনে করা খুব একটা ভুল না হলেও এই বইতে লেখক সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা অ্যাপ্রোচে ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করেছেন। অদিতা গল্পের মূল চরিত্র হলেও, বইয়ে যে কয়টি চরিত্র আসে তারা প্রত্যেকে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। চরিত্রগুলো স্মার্ট বলে নয় বরং দীপেন ভট্টাচার্যের লেখার গুণেই প্রতিটি চরিত্র খুবই স্মার্টলি পাঠকের চোখে ধরা দেয়। বইয়ের ঘন বন-জঙ্গলের 'চিত্ররূপময়' বর্ণনা পড়ে খুবই জীবন্ত লেগেছে, বহুদিন মনে থাকবে সেই বর্ণনা। সাইন্স ফিকশনের পাঠকদের জন্য তো বটেই, সেই সাথে কেউ মানব সম্পর্ক, সেই সম্পর্কের জটিলতা ইত্যাদি বিষয়াদি সম্পর্কিত বই চেনাজানা পটভূমির বাইরে পড়তে চাইলে তার জন্য 'অদিতার আঁধার' খুব ভালো ট্রিটমেন্ট হতে পারে।
Profile Image for Elin Ranjan Das.
88 reviews5 followers
July 28, 2024
"অদিতার আঁধার" সুদূর ভবিষ্যতের কাহিনী, যেখানে মানুষ নিজের মস্তিষ্ককে কপি করে লাভ করেছে অমরত্ব। কিন্তু তবুও, অমরত্ব কি জীবনের চরম আশির্বাদ? অদিতার জন্য এ কেবল এক অভিশাপ, যেখানে অনন্তকাল তাকে বয়ে বেড়াতে হবে সন্তান হারানোর বিষাদ। তাই সে মুক্তি চায়। সেই মুক্তি চাওয়ার ইচ্ছে থেকেই জন্ম নিয়েছে অদিতার আঁধার।
এদিকে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছে বিদ্রোহ। বিচ্ছিন্নতাবাদী এক সংগঠন সেইসব মস্তিষ্কের অধিকার রক্ষায় বিশ্বাসী, যারা কপি হবার অপেক্ষায় ভল্টে সুরক্ষিত। কী ষড়যন্ত্র ঘিরে উঠছে অদিতাকে ঘিরে? কেন সে এর কেন্দ্রবিন্দুতে?
লেখক দীর্ঘদিন বিশুদ্ধ সাইফাই লেখার পর এবার লিখেছেন সাইফাই কনস্পিরেসি থ্রিলার। তিনি পরীক্ষায় উৎরে গেছেন দারুণভাবে। সাইফাই এর সাথে প্রকৃতি এবং দর্শনের পুরান মিশ্রণ অক্ষত রেখে যুক্ত করেছেন ষড়যন্ত্র, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার মত থ্রিল এলিমেন্টস। তবে বইয়ের কলেবরটা বেশ সংক্ষেপ হয়ে গেলো। এটা অবশ্য তার সব বইয়ের জন্যেই প্রযোজ্য।
Profile Image for Munem Ahmed.
23 reviews
February 5, 2022
জাফর ইকবালের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়ে যারা অভ্যস্ত তারা হয়ত প্রথম দিকে এই বইটি বুঝবেন না। তবে প্রায় ৫০ পৃষ্ঠার পর থেকে সবকিছু বুঝা শুরু করতে পারেন। আমার মতো আরো কয়েকজনেরই প্রথম প্রথম বুঝতে কষ্ট হয়েছিলো।
ভিন্ন ধরনের একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী। এরকম বই আমি পড়িনি। গল্পে একশন এবং তেমন একটা রোমাঞ্চ না থাকলেও রহস্য ছিলো। বিজ্ঞান কল্পকাহিনী হলেও গল্পের শেষদিকে দর্শন লক্ষ্য করা যায়।
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books356 followers
February 13, 2023
বাংলা বা বাংলাদেশি সায়েন্স ফিকশন হিসেবে ভালো বলেই সনদ দিতে হবে তবে ওই বাংলা উপন্যাসের গতবিধির মধ্যেই থেকেছে উপন্যাসের গতিবিধি। সায়েন্সের এলিমেন্ট অবশ্যই আছে তবে আবেগ ও 'ইউটোপিয়ান' ঘরানার 'এভাবেই পৃথিবী ভালো ছিল' থিয়োরিতে চলে যায়। পড়তে বেশ ভালো লাগে। গল্পের টানে আগানো যায়, শেষটা ভেবে নেয়া যায় আগে থেকেই।
Displaying 1 - 20 of 20 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.