Jump to ratings and reviews
Rate this book

প্রফেসর সোম #1

প্রফেসর সোম

Rate this book

158 pages, Paperback

First published January 1, 2019

2 people are currently reading
67 people want to read

About the author

Kousik Samanta

8 books18 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
45 (47%)
4 stars
24 (25%)
3 stars
13 (13%)
2 stars
10 (10%)
1 star
2 (2%)
Displaying 1 - 22 of 22 reviews
Profile Image for Tiyas.
449 reviews125 followers
April 5, 2025
রেভারেন্ড রুদ্র সোম। মেটাফিজিক্সের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। ইউরোপিয়ান দেশগুলোর গ্রামেগঞ্জে কাটিয়েছেন জীবনের সিংহভাগ। আদ্যোপান্ত বাঙালি মানুষটির কর্মক্ষেত্র ও চারণভূমি অনেকাংশেই বিদেশী। চার্চের সঙ্গে যুক্ত থেকে প্রতিনিয়ত লড়াই করেছেন অন্ধকারের বিরুদ্ধে! বলাই বাহুল্য, চমকপ্রদ পটভূমি। এমন একজন অকাল্ট গোয়েন্দার উপস্থিতি বাংলা সাহিত্যে প্রায় বিরল বললেই চলে।

প্রফেসর নিজে যেন এক স্বতন্ত্র বলয়ের মাঝে অবস্থান করেন। যেন 'ঘোস্ট ফাইন্ডার কার্নেকি' বা 'ফাদার ব্রাউনের' কোনো অদ্ভুত ককটেল? বইটা নিয়ে তাই অনেকটা আশাবাদী ছিলাম। এমন এক চরিত্রকে নিয়ে যখন ভয়-রহস্যের গল্প লেখা হয় তখন কৌতুহলী হওয়া সাজে। মন জানতে যায়, তবে কি বাংলা সাহিত্য খুজে পেলো নিজস্ব এক 'জন কনস্টান্টাইন' বা '...সাইলেন্স' কে?

তবে, ফেয়ার ওয়ার্নিং, কোনোরূপ চারিত্রিক ধূসরতা আশা করে এগোলে হতাশ হবেন। প্রথম গল্পটি বাদে, রুদ্র সোম একান্তই সোজা পথের পথিক। আমার সংগ্রহের এডিশনটি ২০২১ সালের। পুনর্মুদ্রণে বইতে স্থান পেয়েছে আরো দুটো গল্প। সর্বসাকুল্যে ৯-খানা হরর-এডভেঞ্চার। লেখক জব্বর কয়েকটি কনসেপ্ট নিয়ে নিরীক্ষা চালিয়েছেন গল্পগুলোতে। বইয়ের সেরা শক্তি ওখানেই। ইতিহাস, আর্বান লেজেন্ডস্, লাইকান্থ্রোপি থেকে রেসিডুয়াল হন্টিং, পজেশন, গ্রিম রিপার বা একখানা জলজ্যান্ত ডিব্বুক বাক্স! গল্পে আছে সব্বাই।

বইটি প্রাথমিক ভাবে সুসম্পাদিত হওয়ার দারুণ, গল্পের মাঝে কন্টিনিউটি পাওয়া যায়। ফিরে আসে কোনো কোনো চরিত্র বা দরকারি প্লট-পয়েন্টস্। তবে, একই সাথে, মাঝেমধ্যেই কিছু গল্পে বদলে যায় প্রফেসরের কলকাতার বাড়ির বেয়াড়ার নাম-পরিচয়। এটা লেখক সচেতন ভাবে করেছেন, না সম্পাদকীয় গাফিলতি, ধরতে পারলাম না।

দুঃখের বিষয়, এসবের মাঝে বইয়ের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে খোদ লেখকের কলম। কতকটা তাড়াহুড়ো করে গুটিয়ে নেওয়া গল্পগুলো পড়ে আনন্দ পেলাম অল্প। স্রেফ অবিন্যস্ত লেখনশৈলীর কল্যাণে, কিছু অসাধারন কনসেপ্ট জাস্ট টাইটানিক ন্যায় ডুবে গেলো। ব্যাপারটা দুর্ভাগ্যজনক, কারণ বইটিকে নিয়ে অনেকদিন ধরে অনেকখানি আশা পুষে রেখেছিলাম।

গল্পগুলোকে বৈঠকি চালে রচতে গিয়ে লেখক, প্রফেসর সোমকে নিয়ে এসেছেন কলকাতায়, সাথে দিয়েছেন এক গল্পখোর স্যাটেলাইট, যার নামও আবার কৌশিক! এতে গল্পের আবহাওয়া কিছুটা হলেও ভারসাম্য হারিয়েছে। চোখে লাগে একটা চড়া দাগের টোনাল শিফ্ট, যা চাইলেই এড়ানো যেত। চাইলেই এই কল্পিত ইউনিভার্সটির সুবিধার্থে, আদ্যিকালের 'চা-কচুরি সহযোগে ভূতের গল্প' টেমপ্লেটের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারতেন লেখক।

এছাড়াও প্রশ্ন জাগে অন্য খাতে। একজন বাদামি চামড়ার পাদ্রী হয়েও প্রোফেসর স্বাধীনভাবে কাজ করে যান এইসব গ্রামে-গঞ্জে। অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে ক্রমাগত হস্তক্ষেপ করেন টাউনবাসীর বিশ্বাস ও জীবনধারণের মধ্যে। তবুও সেই অর্থে সচেতন ভাবে সম্মুখীন হন না কোনো বাধা বিপত্তির।

চার্চের সঙ্গে থাকবার দরুন যেই প্রাথমিক ক্লিন-চিট পাওয়া কথা, সেটার ওপর ভিত্তি করেই হয়তো বা এই স্বাধীনতা। তবুও লেখাগুলোর ইউরোপিয় পটভূমিকার নিরিখে গল্পে একান্তই অনুপস্থিত এসব জায়গার ঐতিহাসিক বর্ণবাদ। কে জানে। এহেন সামাজিক ও জিও-পলিটিকাল ধূসরতাটুকু, চাইলে খতিয়ে দেখতেই পারতেন লেখক। আর কিছু না হলেও, গল্পগুলো আরেকটু বাস্তবসম্মত হয়ে উঠতো হয়তো।

যাই হোক, বইটির থেকে মোটের ওপর প্রাপ্তি শেষ দুটি গল্প। 'পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক' ও 'য়ুবারমেনশ'-এ এসে পাওয়া যায় রোমাঞ্চের আভাস। কন্টিনিউটি বজায় রেখে দুটি গল্প পড়ে ফেলা যায় বটে, কিন্তু তাতেও মন ভরে কি? চিরাচরিত অসম লেখনীর সাথে চোখে লাগে দুর্বল সংলাপও। বইতে লেখা কথোপকথন পড়ে একবারও মনে হয় না, হ্যা, কথাগুলো এই মানুষগুলোই বলছেন। চরিত্রপিছু ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভয়েসের অভাবে, প্রফেসর সোমের মতন একজন ডাইনামিক ব্যক্তিত্বও বহুমাত্রিকতার সুযোগ হারায়।

এছাড়াও প্রতি গল্পে, বিদেশি গ্রামবাসীদের নাম ও চরিত্রায়নে অনিচ্ছাকৃত সাদৃশ্য ও নিদারুণ পার্থক্যের অভাব নিশ্চিত করে দেয় যে কোনো চরিত্রই নিজগুণে মাথা উচিয়ে দাড়াতে পারে না। তা সে গীর্জার নিরীহ কোনো পাদ্রীই হোক বা খোদ ভিলেনরুপি স্যাটান, বইতে মাত্রা হারায় সকলেই।

তবে এর সবটাই আমার ব্যক্তিগত মতামত। মানা না মানা, যারপরনাই সাবজেক্টিভ। লেখকের এফর্টকে কোনোমতেই ছোট করছি না। এবং, হয়তো বা, সেই কারণেই ভরসা রাখছি। প্রফেসর সোমের পরবর্তী বইটিও সংগ্রহে আছে। পড়বো শীঘ্রই।

মতামতের হিসেব, সময়ের খাতায় তোলা থাক।

২/৫ (২০২৩)
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,862 followers
May 6, 2019
রেভারেন্ড রুদ্র সোমকে নিয়ে এর আগেও একটি বই লেখা হয়েছিল। তবে সেটি প্রকাশকের অসাধুতার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হিসেবেই বেশি চর্চিত। বরং গল্পগুলোকে ফোকাসে রেখে লেখা এটিই প্রথম সংকলন।
কী-কী গল্প আছে এতে?
১. প্রফেসর সোমের সঙ্গে প্রথম আলাপ
২. আয়নায় কাকে দেখা যায়
৩. নৈশ প্রহরী
৪. ক্ষুধা
৫. প্রশ্ন
৬. পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক
৭. য়ুবারমেনশ
বাংলায় এমন ভয়-জাগানিয়া গল্প খুব বেশি লেখা হয়নি। প্রাপ্তমনস্ক পাঠকের জন্য সযত্নে নির্মিত হয়েছে এই বই। এটি পড়তে গেলেই মনে হবে, আপনি পৌঁছে গেছেন তুষারাবৃত প্রান্তরে বা দুর্গম গিরিকন্দরে, যেখানে আপনার পিছু নিয়েছে কিছু মূর্তিমান অভিশাপ।
শিগগির পড়ে ফেলুন!
Profile Image for Redwan Orittro.
420 reviews57 followers
August 24, 2021
এই বইটি proof-read একদমই করা হয়নি। একাধিক spelling error পেয়েছি আমি। যদিও পটভুমি হিসাবে England এর কথা বলা হয়েছে গল্পে, characters গুলো একদই বাঙালি।
একটি line এখানে তুলে দিলাম:
ফাদার জনাথান বললেন: "তুমি আমার চেয়ে বয়সে ছোট, তোমাকে আমি আপনি না বলে, তুমি বলে ডাকবো"।
English-এ কবে থেকে 'আপনি' 'তুমি' শব্দগুলো আছে? এরকম অনেক ছোটখাটো inaccuracy-তে ভরা এই বই।
এখন আসি গল্পে। ছোট কিছু গল্পের সমগ্র এই বই। England-এর গল্প বলে ঘুল, ভাম্পায়ের, ওয়ারউলফ, গ্রিম রিপার - এদের নিয়েই সাজানো গল্প। নতুন কিছু নেই এই বইয়ে, যা কিনা কোন horror movie-তে দেখানো হয়নি।
এই বই না পরলে কিছু মিস করবেননা।
Profile Image for Gourab Mukherjee.
164 reviews24 followers
November 25, 2019
দুদিনে বইটা শেষ করেছি। বা বলা উচিত করতে বাধ্য হয়েছি কারণ লেখকের লেখা এতই সুন্দর।
কোথাও কোনো আকাশ কুসুম বর্ণনা নেই। গল্পের শুরুতেই একদম সোজা ঘাড় ধরে আপনাকে গল্পের মাঝে এনে ফেলে দেয়া হবে। তারপর আস্তে আস্তে মনে মনে গল্প সাজাতে পারবেন।
লেখার ধরণ খুব আধুনিক আর উপাদেয়। প্রত্যেক গল্পেই প্রায় কিছু ভয়াবহ twist আছে।
বিদেশী ভূত আর mythology র ওপর লেখকের রিসার্চ প্রশংসার দাবি রাখে।
প্রফেসর সোমের ফিরে আসার অপেক্ষায় রইলাম।
Profile Image for Khandaker Sanidulla Sanid.
47 reviews22 followers
October 1, 2021
'রেড্ডেরে টিবি পেশাটা টুয়া!
তোমার অপরাধের শাস্তি তুমি পাবে পুত্র।
ল্��াটিন ভাষায় বিড়বিড় করে ওঠে সে আগুনচোখা। পরমূহূর্তেই সে বাতাসে মিলিয়ে যায়, তবে কালো জোব্বাওয়ালা কিন্তু ঠিক সেটা শুনতে পায়। কিন্তু তার আর কিছুই করার নেই তখন, বড্ড দেরি হয়ে গেছে যে।'


▪ কাহিনী সংক্ষেপ :
প্রায় ছ'ফুট লম্বা মধ্যবয়েসি, ব্যাকব্রাশ করা কাচাপাকা চুলের অধিকারূ রেভারেন্ড রুদ্র সোম যিনি মেটাফিজিক্সের একজন অধ্যাপক। তিনি এমন একজন মানুষ যে প্রতিনিয়ত অন্ধকারের সাথে লড়াই করে চলেছেন। নিছক কৌতূহলের বশে এক নিষেধ অমান্য করেছিলেন যার পরিণাম ভোগ করেছে তারই বন্ধু অবিনাশ। ঠিক সেই ঘটনার পর থেকেই তিনি আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাননি। লড়ে চলেছেন অন্ধজার জগতের নানান কিছুর সাথে। মুখোমুখি হয়েছেন অনেক রোমহষর্ক পরিস্থিতির। কিন্তু একসময় তিনি কোলকাতায় থাকা শুরু করেন আর সেখানেই দেখা হয়ে যায় কৌশিক নামের এক যুবকের সাথে যে কিনা পুরানো দোকান থেকে একটা ডিবুক বাক্স কিনে এনেছে। কিন্তু সেই বাক্স যে কৌশিকের কত বড় ক্ষতি করতে পারত সেটা হয়ত প্রফেসর সোমের সাথে দেখা না হলে জানা যেত না৷
একসময় প্রফেসর সোমের সাথে কৌশিকের সম্পর্কটা আরো গাঢ় হয়। প্রায়ই কৌশিক প্রফেসর সোমের বাড়িতে যায় আড্ডা দিতে আর সেই ফাঁকে প্রফেসরের জীবনের নানান অভিজ্ঞতা শুনতে৷ আর প্রফেসরের এমনই সাতটি অভিজ্ঞতা গল্পের ছলে লেখক শুনিয়েছেন তার 'প্রফেসর সোম' বইতে।


▪ পাঠ প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা:
লেখক বই শুরু করেন প্রফেসরের সাথে কৌশিকের প্রথম আলাপের মাধ্যমে। একেবারে ধীরে ধীরে তিনি প্রফেসরের সাথে পাঠকের সাথে পরিচয় করিয়েছেন। কোনো তাড়াহুড়ো নেই একদম আস্তে আস্তে কাহিনী সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তবে গল্পের শেষ পরিণতিটা ছিলো অবাক করার মত। এভাবেই শুরু হয়েছিলো গল্প আর তারপর প্রফেসর শোনাতে থাকেন তার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা যেখানে উঠে এসেছে একজন ডাইনির নতুন করে জীবন পাওয়া, উঠে এসেছে ওয়্যারউলফ, কখনো বা কবরখেকোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন তিনি। আবার এক পর্যায়ে এসে শয়তানের সাথে চুক্তিতেও আবদ্ধ হয়েছিলেন, একদম শেষ গল্পে এসে লেখক বিজ্ঞান আর অন্ধকার জগতের এক মেলবন্ধনের চেষ্টা করেছেন।

বইয়ের সব গল্পের মধ্যে প্রথম গল্প আর ষষ্ঠ গল্পটা বেশি ভালো লেগেছে। এই দুইটা গল্প ভালো লাগার অন্যতম কারণ লেখক গল্প দুটিতে একটু সময় নিয়ে গল্প নির্মান করেছেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই গল্প দুটো বেশি উপভোগ করেছি। বাকি গল্পগুলোও ভালো এই গল্প দুটোর মত অতোটা দাগ কাটেনি কেন যেন। তবে বোঝার সুবিধার্থে প্রত্যেকটা গল্পের আলাদাভাবে ব্যাক্তিগত রেটিং দিচ্ছি-
১. প্রফেসর সোমের সঙ্গে প্রথম আলাপ- ৩.৭৫/৫
২. আয়নায় কাকে দেখা যায় - ৩/৫
৩. নৈশ প্রহরী - ৩.৫/৫
৪. ক্ষুধা - ৩/৫
৫. প্রশ্ন - ৩.২৫/৫
৬. পাহাড় চুড়ার আতঙ্ক - ৪/৫
৭. য়ুবারমেনশ - ৩.৫/৫


▪ লেখনী:
লেখকের লেখনী গোছানো তবে কিছু জায়গায় বিশেষ করে মাঝের দিকের গল্পের বেশ কিছু জায়গায় আমার কাছে একটু কঠিন লেগেছে। আর প্রতিবার সেই একই গল্প শোনার আড্ডা আর সাথে নাস্তা করার ব্যাপারটা একসময়ে বেশ একঘেয়ে লেগেছিলো। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতি গল্পে এই আসর টা একটু আলাদাভাবে করলে হয়ত আরো বেশি উপভোগ করা যেত।
তবে লেখক যেহেতু প্রফেসর সোম কে কন্টিনিউ করবেন তাই আশা রাখি পরের বইগুলো আরো দারুণ হবে।

সুযোগ হলে চেষ্টা করবো লেখকের 'মেলানকোলির রাত' বইটা সংগ্রহ করার।


▪ প্রচ্ছদ, বাঁধাই ও অন্যান্য:
বইয়ের প্রচ্ছদ একেবারেই সাদামাটা ধরনের খুব বেশি কিছু নেই তবে পেপারব্যাক বই অনুযায়ী ঠিকাছে।
আর পেপারব্যাক বইতে বাঁধাই যেমন হয় সচারাচর তেমন। তবে বইয়ের পেজ এর মান বেশ উন্নত বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায়না ভেতরে এত মোটা পেজ।


▪ বই: প্রফেসর সোম
▪ লেখক: কৌশিক সামন্ত
▪ মুদ্রিত মূল্য: ১৭০ রুপি
▪ পৃষ্ঠা: ১৫৮
▪ প্রকাশনী: অরণ্যমন প্রকাশনী (ভারত)
1 review
Read
May 5, 2019
যারা থ্রিলার পড়তে খুব ভালোবাসেন কিন্তু একটু অন্যরকম স্বাদ পেতে চান তারা অবশ্যই পড়বেন এই বইটি। লেখক অনবদ্য লেখনীর দ্বারা একটা এমন জগতে আপনাকে নিয়ে গিয়ে আছড়ে ফেলবে যে আপনি নিজে কখন যে একাত্ম হয়ে যাবেন প্রতিটি ঘটনার সাথে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না ।
Profile Image for Soumyabrata Sarkar.
238 reviews40 followers
July 20, 2020
HBOর Lovecraft Country আসতে এখনও এক মাস মতো বাকি। তার আগে একটু অজানা আতঙ্কিত পরিবেশের প্রাপ্তি হয়ে রইল বইটি। এর মধ্যেই, এই বইয়ের এত রিভিউ হয়ে গেছে, আমার তার ওপর কিছু বলা নিষ্প্রয়োজন। প্রফেসর সোমের সাথে লেখক তার প্রথম আলাপের সেই কাঠের বাক্সটার যে টোপটা দিয়েছিলেন, সেটার পিছু করতে করতে কত কি যে গায়ে-কাটা-অলা জিনিসের উপভোগ্য অনুভূতি করলাম, তা বলাই বাহুল্য।তবে কাহিনীর উন্মোচন পশ্চিমবঙ্গের ধুমায়িত কফিটেবিলে হলেও, তাঁর প্রেক্ষাপট বেশীরভাগ দেশের বাইরেই। তাই বিদেশী ভাষায় (ধরে নিচ্ছি ইংরেজিই) কয়েক জায়গায় ভারতীয়(বা বাঙ্গালীসুলভ) "তুমি আমার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট, তাই 'তুমি' করে বলছি" ব্যাপারটা এত ভিতির মধ্যেও একটু হাসির খোরাক জুগিয়েছে। যাইহোক, দু-চার জায়গায় সম্ভাব্য ফাঁক-ফোকর থেকে সবুজ মানুষ, ডিবুকরা আবার বেরিয়ে আসতে পারে দেখে পাঠশেষে মন অনেকটাই প্রফুল্ল।
অতএব **The end is the beginning**- অনুযায়ী পরের কিস্তির অপেক্ষা।
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,740 reviews355 followers
July 19, 2025
রেভারেন্ড রুদ্র সোম—নামটা শুনলেই একটা তীব্র অথচ ধ্রুপদী কম্পন ধেয়ে আসে মনের মধ্যে, যেন অন্ধকারের গায়ে কেউ ধাতব কলম ছুঁয়ে দিয়েছেন। তাঁর কণ্ঠে একদিকে অক্সফোর্ড-প্রসিদ্ধ অধ্যাপকের স্নিগ্ধ বাগ্মিতা, অন্যদিকে শ্মশান-ছাওয়া কবির ছিন্নভিন্ন উচ্চারণ—দুটো একসঙ্গে চলতে পারে, সেটা তিনিই আমাদের দেখান।

বাংলা সাহিত্যে এমন চরিত্র বড় দুর্লভ—যাঁরা কেবল রহস্য সমাধানের জন্য নন, বরং নিজেই এক রহস্য হয়ে উঠতে পারেন। তাঁর চলন, কথন, আর চোখের দৃষ্টিতে থাকে এমন এক weight, যা বোঝা যায় না এক পাঠে; যেমন হয় যারা সত্যিই দার্শনিক বা সত্যিই উন্মাদ।

এই চরিত্রটি যেন গড়ে উঠেছে এক বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ঐতিহ্যের ছায়ায়, কিন্তু একান্তই বাঙালিয়ানায় মোড়া। ভ্যান হেলসিংয়ের মতোই তিনি একজন স্কলার—তবে তাঁর অস্ত্র রূপকথা আর ল্যাটিন ধর্মগ্রন্থ নয়, বরং কবিতা, দর্শন, আর অপার-অচেনার প্রতি এক গভীর ঋষিতুল্য সংবেদন। আবার চ্যালেঞ্জারের মতোই তিনি যুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করেন, নিজের যুক্তি দিয়েই, আর তাতে পৃথিবীর known reality-টাই খানিক ধসে পড়ে। ব্রাম স্টোকারের 'Dracula'-তে যেমন ভ্যান হেলসিংকে ঘিরে গড়ে ওঠে এক প্রতিরোধের বলয়, কিংবা কনান ডয়েলের 'The Lost World'-এ প্রফেসর চ্যালেঞ্জার হয়ে ওঠেন বিদ্রোহী তত্ত্বজ্ঞা���ী—রেভারেন্ড সোম ঠিক সেইভাবেই গড়ে তোলেন এক ছায়াচ্ছন্ন জগত, যেখানে যুক্তির সীমান্তে দাঁড়িয়ে আত্মা, রূপান্তর, অতীতজন্ম, এমনকি পুরাণও নিছক গল্প নয়।

রেভারেন্ড সোম এমন একজন, যাঁর কাছে অতিপ্রাকৃত মানেই ভৌতিক নয়, বরং বাস্তবের বিস্তার। তিনি প্রেত নিয়ে কথা বলেন, আবার ক্যান্ট আর গ্যোথেও উদ্ধৃত করেন। গল্পের টানটান রহস্যে হঠাৎ করেই ঢুকে পড়েন কোনও obscure শ্লোক, অথবা একটি ব্যাখ্যাতীত অনুভূতির ইঙ্গিত—এতটাই নিপুণভাবে যে, পাঠক বুঝতেও পারেন না, কখন তিনি গল্পের ছকে ঢুকে গেছেন, আর কখন বেরিয়ে পড়েছেন এক অনির্বচনীয় দর্শনের ভেতর। এটি এক ��্রকার literary sleight of hand—যার জাদুকর কৌশিক সামন্ত, আর ট্রান্সমিশনের মিডিয়াম রেভারেন্ড সোম।

এক অর্থে, রেভারেন্ড সোম হলেন আমাদের 'Southern Gothic' বা 'Weird Fiction' এর উত্তরসূরি—তবে বাংলার পরিমণ্ডলে। তাঁর চরিত্রে আছে থমথমে পল্লব, নির্জন বাংলো, শ্মশানবাতাসে উড়ে আসা ছায়া, আবার পাশাপাশি আছে আধুনিক সন্দেহ, আত্মান্বেষণ, আর একধরনের আত্মসমীক্ষামূলক শূন্যতা। যেন H.P. Lovecraft-এর অলৌকিক আতঙ্ক, কিন্তু তাতে মিশে আছে জ্ঞানেন্দ্রীয় সংবেদ, কবিগান আর কালীসাধনার টেক্সচার।

এই চরিত্রটি দাঁড়িয়ে আছে অনেক সংবেদনশীল ও সাহিত্যিক বিপরীত মেরুর সংযোগস্থলে—তিনি simultaneously এক জন লোকজ সাধক, আবার একেবারে উচ্চশিক্ষিত বুদ্ধিজীবী; একদিকে অপরাধতত্ত্ব ও ফ্রয়েডিয়ান বিশ্লেষণ, অন্যদিকে অশরীরী আত্মার আখ্যান; তিনি সেই liminal space-এর প্রতিনিধি, যেখানে রাত মানে শুধু অন্ধকার নয়, বরং বোধের গভীরতম স্তর।

এইজন্যই, প্রফেসর সোম নয়—তিনি রেভারেন্ড সোম। নামের মধ্যে থাকা ঐ খ্রিস্টীয় অভিধা (যা বাংলার সাহিত্যে একপ্রকার অনভ্যস্ত), যেন তাঁর চরিত্রে যুক্ত করে দেয় এক ক্রস-কালচারাল ঝলক, যেটি একদিকে পাশ্চাত্যের থিওলজিকাল কাঠামো, অন্যদিকে বাংলার অলৌকিকতার দেহতত্ত্ব—এই দুইয়ের মধ্যে এক ক্ষণজন্মা সেতুবন্ধন।

সুতরাং, রেভারেন্ড সোমকে এক নিছক গোয়েন্দা, বা এক গা ছমছমে গল্পের protagonist হিসেবে দেখলে ভুল হবে। তিনি বাংলার সাহিত্যে এক নতুন archetype-এর সম্ভাবনা তৈরি করছেন—যাঁর মাধ্যমে অতিপ্রাকৃত কেবল বিনোদনের বিষয় নয়, বরং জিজ্ঞাসা, পরিচয়, বাস্তব আর মিথ-এর মধ্যবর্তী দোলাচলের এক গাঢ় প্রতিমূর্তি।

এই সংকলনে রয়েছে সাতটি গল্প—‘প্রফেসর সোমের সঙ্গে প্রথম আলাপ’ থেকে শুরু করে ‘য়ুবারমেনশ’ পর্যন্ত—যেখানে প্রতিটি পর্ব একটি নিজস্ব জগত নির্মাণ করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমস্ত গল্প মিলেমিশে এক রক্তমাংসের পোর্ট্রেট আঁকে রেভারেন্ড সোমের। এগুলোর প্রতিটি কাহিনি একইসঙ্গে স্ট্যান্ডঅলোন এবং সিরিয়ালাইজড, ঠিক যেমনটা আমরা দেখি The Adventures of Sherlock Holmes বা The Memoirs of Solar Pons-এ—গল্প আলাদা, কিন্তু চরিত্রের অন্তঃসত্তা ও বুদ্ধিমত্তার ছায়া সর্বত্র বিরাজমান।

প্রথম গল্পে আমরা তাঁর প্রাক-অধিভৌতিক জীবন glimpsed পাই—একজন কাব্যপিপাসু, ধ্যানমগ্ন অধ্যাপক যিনি ধীরে ধীরে ছায়া ও জ্যোতির মধ্যবর্তী অঞ্চলে প্রবেশ করছেন। এই স্মৃতি-ঘেরা টুকরোটা এমনভাবে লেখা যে পাঠকের মনে পড়ে যায় তারানাথ তান্ত্রিকের মধুসুন্দরী দেবীকে, কিংবা হ্যামলেটের ভূত-পিতার সেই ভোররাতের প্রত্যাবর্তন। স্মৃতি এখানে ট্রিগার নয়, চরিত্র নির্মাণের একটি পরিপূর্ণ উপকরণ।

আরও বলা চলে, এই স্ট্রাকচারটিতে রয়েছে সেই ক্লাসিক "episodic mystery with a mythic spine" ঢং, যেটা আমরা পাই Professor Challenger সিরিজে বা Carnacki, the Ghost-Finder-এর গল্পগুলোতে—যেখানে প্রতিটি ঘটনা মূল চরিত্রটির দর্শন ও জিজ্ঞাসাকে আরেকটু গভীর করে তোলে, আর পাঠকের কাছেও সে হয়ে ওঠে flesh-and-shadow-এ গড়া এক জাদুকরসুলভ উপপাঠ্য।

বলো কেমন হলো! চাইলে আরও তুলনা আনতে পারি, যেমন John Silence (Algernon Blackwood), Dr. Hesselius (Le Fanu) বা এমনকি Kolchak: The Night Stalker-এর মতো cult investigators—সবার মাঝেই এক আত্মানুসন্ধানী ভাব, এক eerie ethics।

তবে ‘ভূতের গল্প’ হিসেবে এ বইয়ের প্রতি গল্প পাঠককে ভূত দিয়ে ভয় দেখাতে চায় না—যেটা খোলাখুলিই বলে দিয়েছেন লেখক নিজেই। রেভারেন্ড সোমের জগতে ভয় আসে অন্য দিক থেকে—সম্ভবত বাস্তবের অন্ধকার গহ্বরে, মানসিক ছায়ায়, অস্তিত্বের সীমা ছাড়িয়ে থাকা কোনো সম্ভাবনায়, কিংবা সেই বিভ্রমে যা বাস্তবকেও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করায়। এ এক ধরনের ontological horror, যেখানে “ভয়” মানে বাইরের নয়, ভিতরের আলো-আঁধারি।

ধরা যাক ‘আয়নায় কাকে দেখা যায়’—গল্পটা শুরু হয় এক চেনা প্রপ দিয়ে, যেটা যেন হেনরি জেমস-এর The Turn of the Screw বা ভলেরি-র La Fausse Miroir এর মতো প্রতিফলনের আতঙ্ককে ছুঁয়ে থাকে। কিন্তু ঠিক যখন মনে হচ্ছে গল্পটা সোজাসাপটা প্রেতচর্চা হবে, তখন লেখক এমনভাবে মোচড় আনেন যে, পাঠক নিজের ঘরের আয়নার দিকে তাকাতে দ্বিধা বোধ করে। আয়নাটা শুধু চরিত্র নয়—এ যেন পাঠকের নিজের মনের একটি দিগন্তও।

তবে এখানেই এক সমস্যা দেখা দেয়—একাধিক গল্পে লেখকের প্রিয় narrative device হয়ে দাঁড়ায় ‘শেষের চমক’ বা twist ending, যেটা Agatha Christie-র The Witness for the Prosecution বা Roald Dahl-এর Tales of the Unexpected-এর মতো রচনায় যেভাবে punch দেয়, এখানেও তেমন এক রুটিন-মতো ফিরে আসে। বিশেষ করে দ্বিতীয় গল্পটা পড়ার পর, পরের কয়েকটি গল্পে টুইস্ট বা খলনায়ক অনুমান করা পাঠকের জন্য সহজ হয়ে পড়ে।

এই device-এর ব্যবহারে Hitchcock-ঘরানার shadow play থাকে, আবার বারবার ফাঁকি দেওয়া সংলাপের মধ্যে থাকে সেই psychological sleight of hand, যেটা O. Henry, Saki, কিংবা even Borges-ও ব্যবহার করতেন। সমস্যা এখানেই যে, এই চমকের ছাঁচটা যতবার দেখা যায়, ততবার তার প্রভাব কিছুটা ক্ষয় পায়। তবে শেষদিকে এসে লেখক এই ভাঙা প্রত্যাশাকে ভেঙেই আবার নতুন করে তৈরি করেন—একধরনের post-twist meta craft, যেখানে পাঠকের বিশ্বাসভঙ্গই গল্পের অংশ হয়ে ওঠে।

এই ক্র্যাফটের পরিণতি কোথাও যেন Italo Calvino-র If on a winter’s night a traveler কিংবা Julio Cortázar-এর Blow-Up-এর মতো মনে হয়—যেখানে twist নিজেই নিজেকে তিরস্কার করে, আর লেখক গল্পের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে পাঠককে জিজ্ঞাসা করেন—"আসলে তুমি কাকে ভয় পাচ্ছ?"

‘নৈশ প্রহরী’, ‘ক্ষুধা’—এই গল্পগুলোর পরতে পরতে অলৌকিকতার আবরণ থাকলেও, তার নিচে টিমটিম করে জ্বলে ওঠে সামাজিক বাস্তবতার নির্লিপ্ত শিখা। প্রেতাত্মা এখানে শুধু ভূত নয়—সে শোষণ, নিঃসঙ্গতা, বা এক অনুচ্চারিত বেদনার রূপক। এই অলৌকিক ও সামাজিকের মেলবন্ধন, কোথাও কোথাও মনে করিয়ে দেয় লাতিন আমেরিকান ম্যাজিক রিয়ালিজমের ধারা—যেখানে ভূত বলতে বোঝায় একটি ট্রমার পুনরাবৃত্তি, একটি ঐতিহাসিক ক্ষতের ছায়া। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের ‘A Very Old Man with Enormous Wings’ যেমন ঈশ্বর ও দৈত্যকে একসঙ্গে বসতে দেয় কাদামাখা উঠোনে, ঠিক তেমনভাবেই ‘ক্ষুধা’-য় আমরা দেখি একটি পেট-চোঁয়া বাস্তবের গা ছমছমে রূপান্তর।

তবে সবচেয়ে ঘামছুট অনুভূতি তৈরি করে ‘পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক’। নাম শুনে মনে হতে পারে একটা routine Himalayan horror—একটা yeti-type monster, বা খয়েরি ছায়ায় মাখা কোন দুর্গম গুহার বৃত্তান্ত। কিন্তু না। এই গল্পটার ভয় পাহাড়ের নয়, বরং পাহাড়ের মধ্যে বসবাসকারী অস্তিত্বের। চেতনার এমন এক স্তরে পৌঁছোনো হয় যেখানে বাস্তব আর অবাস্তবের সীমারেখা থরথর করে কাঁপে। এই গল্পের ভয় কনক্রিট বা রক্তমাংসের নয়—এটা এক আত্মিক সংশয়ের কুয়াশা, যেটা নিজের ভিতরের অন্ধকারটার দিকে তাকাতে বাধ্য করে। এটা সেই ভয়, যেটা এডগার অ্যালেন পো-র ‘The Fall of the House of Usher’-এ পাওয়া যায়—একটা নিঃশব্দ আতঙ্ক, একটা স্থবিরতা, একটা পরিবেশ-পরিপার্শ্ব যা ধীরে ধীরে চরিত্র হয়ে ওঠে, আপন অস্তিত্বকে চুষে নেয় যেন।

আর এখানেই কৌশিক সামন্তের craft পোক্তভাবে উদ্ভাসিত হয়। তিনি ভয় দেখাতে চান না—তিনি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে চান পাঠকের পাশে, একটা আয়নার সামনে, আর ফিসফিস করে বলেতে চান, “তুই নিজেকে চিনিস তো?”

‘য়ুবারমেনশ’ গল্পটি যেন আধাআধি দাঁড়িয়ে আছে Nietzche-র দার্শনিক ছায়ার ওপরে—একটি পরিত্যক্ত সভ্যতার বুক চিরে ওঠে আসা এমন এক ভাবনার স্তম্ভ, যেখানে মানুষ কেবল মানুষ নয়, সে এক সম্ভাব্য ‘ঈশ্বর’ হয়ে উঠতে চায়, আবার নিজের ভেতরের পশুটাকেও দমাতে ব্যর্থ হয়। এই গল্পটিই প্রথম স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, ‘প্রফেসর সোম’ সিরিজটি কেবল গা ছমছমে গল্পের খণ্ডচিত্র নয়—এ এক বিস্তৃত narrative arc-এর ক্ষীণ স্পন্দন, যার কিনারে দাঁড়িয়ে পাঠক দেখতে পান এক বৃহত্তর প্লট, একটা পরিক্রমার পূর্বাভাস।

ঠিক যেমন সিরকু ডি আর্ক-এর The Man Who Fell Through Time—যেখানে সময় ভেঙে পড়ে চরিত্রের চেতনায়, বা টেড চিয়াংয়ের Exhalation—যেখানে আত্মচেতনা আর মহাবিশ্বের entropy একই কুসুম তুলোর চাদরে মোড়া—তেমনভাবেই ‘য়ুবারমেনশ’-এ আমরা পাই এক দার্শনিক যুদ্ধের গল্প, যেখানে বিজ্ঞান, অলৌকিকতা, এবং অস্তিত্ববাদী চিন্তার মধ্যে এক অদ্ভুত, বিদ্যুচ্চমক মিশেল তৈরি হয়।

এখানে সোম আর শুধু এক অধ্যাপক নন, তিনি হয়ে ওঠেন এক ধরনের দর্শনধারী যোদ্ধা—এক টার্বোচার্জড Professor Challenger যেন, যিনি ডাইনোসরের খোঁজে নয়, আত্মার গভীর খাদে নামেন। আবার কোথাও কোথাও তাঁর অদ্ভুত বিচক্ষণতা আর উন্মাদনার মাঝের টানাপোড়েন মনে করিয়ে দেয় Professor Van Helsing-এর সেই ধ্রুবপ্রশ্ন: “What do we believe, when reason begins to fail?”

সোম এই গল্পে প্রশ্ন তোলেন—‘কী সত্য, কী মিথ্যা, আর কোনটা ভয়?’—একটা চিরকালীন দ্বন্দ্ব, যেটা একই সঙ্গে দর্শন, বিজ্ঞান, এবং অস্তিত্বের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। আর এখানেই গল্পটি তার পাণ্ডিত্য লুকিয়ে রাখে না, বরং আলতোভাবে পাঠকের বুদ্ধিকে চ্যালেঞ্জ করে, ভাবায়, এবং তাড়িয়ে নিয়ে যায় গভীরতর এক সিঁড়িমাঠার দিকে।

প্রতিটি গল্পেই রেভারেন্ড সোমের কাব্যপ্রীতি ছায়ার মতো ঘুরে বেড়ায়—তার অস্ত্র, তার ওষুধ, কখনও তার আত্মরক্ষার ঢাল। ঠিক যেমন ডঃ হানিবল লেক্টার সঙ্গীত আর শিল্পের আশ্রয়ে রচনা করেন এক অলঙ্কারিক নৃশংসতা, সোম সাহিত্যের জাদুতে মেলে ধরেন তার নিঃসঙ্গ লড়াইয়ের ভাষা। তিনি আত্মা উদ্ধারের ‘স্পিরিচুয়াল এক্সপার্ট’ নন, বরং এক আত্মসংশয়ী অধ্যাপক, যে কাব্যের পঙ্‌ক্তিতে খুঁজে পান ভয়ের সঙ্গে লড়াইয়ের ব্যক্তিগত মন্ত্র। এটাই চরিত্রটিকে কাগুজে অ্যাকশন-হিরো হয়ে ওঠা থেকে রক্ষা করে—তিনি ভয় পান, ঘামেন, দুঃস্বপ্ন দেখেন, আর সেই ভয়কেই চুমু খেয়ে বলেন, “এই তুই—তুইই আমার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী।”

তবে সব আলোতেই পড়ে কিছু ছায়া। সংকলনটি সিরিজের রূপ পেলেও কোথাও কোথাও ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়। সোমের বাড়ির রাঁধুনির নাম কখনও পালটে যায়, কখনওবা ছোটখাটো চরিত্ররা এক গল্পে আছে তো অন্য গল্পে উবে গেছে—এতে পাঠক কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হন। অবিনাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রকে আরেকটু কেন্দ্রস্থলে নিয়ে আসা যেত—তাতে সোমের তদন্তগুলো পেত একটা স্পষ্ট narrative anchor। বানান ও মুদ্রণপ্রমাদ কিছু কিছু জায়গায় আঁচড় কাটে, যা আরও যত্নবান সম্পাদনায় এড়ানো যেত।

এই সীমাবদ্ধতাগুলোর বাইরে গিয়ে, ‘প্রফেসর সোম’ সংকলনটি পাঠকের হাতে তোলে একের পর এক layered অস্তিত্ববাদী লড়াই। এগুলো নিছক ভূতুড়ে গল্প নয়—বরং একেকটি আত্মা-আঁকা কুয়াশায় ঢাকা যুদ্ধ, যেখানে রক্ত, হাড় কিংবা ভয় নেই শুধু—আছে পাপের দর্শন, মানব অস্তিত্বের ভার, আর সেই অনিবার্য প্রশ্ন—"আমি কে?"

রেভারেন্ড সোমের প্রতিপক্ষ কখনও ghoul, কখনও Werewolves, কখনওবা বাইবেল থেকে উঠে আসা শয়তান। কিন্তু আদতে তিনি লড়েন মানুষের মনের গোপন অলিন্দে থাকা ছায়াগুলোর সঙ্গে। ঠিক যেমন ফকনার বলেন—"The past is never dead. It’s not even past." তেমনই সোমের প্রতিটি অভিযান যেন একেকটি inner exorcism, যাত্রা নিজের দানবসত্তার দিকে তাকিয়ে থাকবার সাহসে।

এই চরিত্র তাই বাংলা সাহিত্যে এনে দেয় এক অভিনব anti-hero-র আবির্ভাব—এক প্রেমিক অধ্যাপক, এক বিদ্রোহী সন্ন্যাসী, এক কাব্যিক ঘাতক, যাঁর নাম রেভারেন্ড রুদ্র সোম। তিনি কোনও চিরকালীন বীর নন, বরং এক অনিশ্চিত পায়ে হাঁটা যাত্রী—ভয়ের দিকে, কুয়াশার দিকে, বা হয়তো নিজেরই ছায়ার দিকে।

২০১৯ সালে পড়া বই। লেখক তখন বেশ অপরিণত। এখন তার কলমে অবশ্য পাহাড়ি ঝর্ণার গতি।

শুভেচ্ছা জানাই তাকে।

অলমতি বিস্তরেণ।
Profile Image for Ashraf Hossain Parvez.
83 reviews4 followers
April 24, 2019
প্রফেসর রুদ্র সোম বা রেভারেন্ড রুদ্র সোম একজন মেটাফিজিক্সের অধ্যাপক। অন্ধকার জগতের অতিপ্রাকৃত এন্টিটির সাথে মোকাবেলা করা ব্যাক্তি প্রফেসর সোম। গল্পটি শুরু হয়েছে কৌশিক নামের এক ব্যাক্তিকে দিয়ে যিনি অনেকটা অন্ধকার এক জগতে চলে গেছিলেন যেখান থেকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছেন প্রফেসর সোম। এরপর গল্প এগিয়েছে প্রফেসরের রোমহষর্ক সমস্ত ঘটনার মধ্যে দিয়ে যা যেকোনো পাঠককে ভয় ধরাতে সক্ষম।
মোট সাতটি ভয় ধরানো গল্প আছে এতে। তবে শেষের দুটি গল্প পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক আর য়ুবারমেনশ খুব ভালো লেগেছে। আমার কাছে য়ুবারমেনশ গল্পটা অসমাপ্ত মনে হয়েছে তবে এর উত্তর একমাত্র লেখকই দিতে পারেন। আর প্রতিটি গল্পে লেখক কৌশিক নামের যে চরিত্রটি বারবার উপস্থাপন করেছেন সেটা স্বয়ং লেখক কিনা সে প্রশ্নটা লেখকের ওপর ছেড়ে দিলাম....

আর কিছুকিছু গল্পে লেখক এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যা এককথায় ইংলিশ ব্রেকফাস্টের সাথে দেশি তড়কার স্বাদ মনে হয়েছে আমার কাছে।
অপেক্ষায় আছি প্রফেসর সোমের আবার ফিরে আসার জন্যে। আর লেখককে ধন্যবাদ জানাই এরকম একটি সুন্দর গল্প উপহার দেয়ার জন্যে। সেসাথে শুভকামনা জানাই তাঁর পরবর্তী গল্প সংকলন কালপুরুষের জন্যে।

যারা এখনও বইটি পড়েননি তাঁরা অবশ্যই বইটি পড়বেন নিঃসন্দেহে। আশা করছি নিরাশ হবেন না।
Profile Image for Pabitra Ghosh.
52 reviews3 followers
May 11, 2024
# পাঠক_প্রতিক্রিয়া
#প্রফেসর_সোম
# লেখক_কৌশিক_সামন্ত


এই প্রতিক্রিয়ার মতামত আমার একান্ত ব্যাক্তিগত। কেউ যদি আমার কথায় আহত হন আমি তার জন্য আগাম ক্ষমাপ্রার্থী। লেখকের প্রশংসা করাটা একজন ভালো সমালোচকের যেমন বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত তেমনি লেখায় পাওয়া বিভিন্ন অসঙ্গতির উল্লেখ করাটাও অবশ্য কর্তব্য।

বইটা হাতে পাওয়ার পরই মলাটের ডান দিকে, নীচের কোণে 'সেকেন্ড এডিশন' দেখে বেশ ভালোই লেগেছিল। প্রথম মুদ্রণের সমস্ত বই বিক্রি হয়ে যাওয়ার জন্য লেখক মহাশয়কে অনেক অভিনন্দন। সম্ভবত এটিই লেখকের প্রথম বই।
যাইহোক, এর আগে অরন্যমন প্রকাশনির ' লাভক্র‍্যাফট _ আতঙ্কের জার্নাল ' বইটি হাতে পেয়েছিলাম। আর এবার হাতে পেলাম 'প্রফেসর সোম'। আগের বইটির মত এই বইয়েরও পাতার মান, মলাটের মান বেশ ভালো। প্রচ্ছদ অতি সুন্দর। নামাঙ্কন অসাধারণ হয়েছে। কৃষ্ণেন্দু মন্ডলকে কুর্নিশ। অরন্যমনের কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রফসের সোম বইটির সূচিপত্রের ওপর নেকড়ের ভেক্টর ইলাস্ট্রেশনটি অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। শিল্পীকে কুর্নিশ।

এবার আসি লেখায়। মোট ছয়টি বড় গল্প, এবং একটি ছোট গল্প নিয়ে ১৫৮ পাতার বই। গল্প গুলির মূল্যায়ন ক্রমান্বয়ে দেওয়া রইল।

১. প্রফেসর সোমের সাথে প্রথম আলাপ

গল্পের নাম শুনলেই বোঝা যায়, এই গল্পেই লেখকের সাথে প্রথম আলাপ প্রফেসর সোমের। এই গল্পে লেখক বোঝাতে চেয়েছেন প্রফেসর সোম কে, তিনি কী করেন ইত্যাদি। এই গল্পে জানা যায় রুদ্র সোম একজন মেটাফিজিকক্সের অধ্যাপক, যিনি প্যারানর্মাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া বলে একটি সংস্থার প্রতিস্থাপক । এই গল্পে আরো জানা যায় যে জীবনের কোন সেই ভয়ানক ঘটনার জন্য একজন সাধারণ যুবক রুদ্র সোম থেকে হঠাৎ করে অধিভৌতিক জগতে পা রাখেন, এবং রেভারেন্ড রুদ্র সোম হবার সিদ্ধান্ত নেন। আচ্ছা এইবেলা বলে রাখি রেভারেন্ড হল চার্চের পাদ্রীদের উপাধি।
যাইহোক, গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। কিন্তু লেখক প্রচন্ড তাড়াহুড়ো করেছেন। কিছু কিছু যায়গায় লম্বা লম্বা সংলাপ যেটা ঠিক খাপ খায়না। লেখকের লেখনী শক্তি আছে, পাঠককে শেষ পর্যন্ত বসিয়ে রাখার ক্ষমতা আছে, কিন্তু ভয়ের গল্পের জন্য পরিবেশ তৈরীর প্রয়োজন, সেটি লেখক করেন নি। যেমন ধরুন, গল্পের শুরুর দিকে লেখক নিজে একটি দুঃস্বপ্ন দেখেন। কিন্তু সেটি খুবই সংক্ষেপে বলা! একজন মানুষের দুঃস্বপ্ন দেখার যে যন্ত্রণা সেটার সাথে পাঠকের কোনো পরিচয় ঘটে না। এই রকমই প্রত্যেকবার লেখক সোজাসুজি মূল ঘটনায় চলে গেছেন এবং অল্প কথায় কাজ সেরে বেরিয়ে এসেছেন। পাঠকদের পরিবেশের সাথে মিশে যাওয়ার সময় দেননি। কিন্তু অলৌকিক গল্পে ভয়ের পরিবেশটা তৈরী করা উচিত ছিল, করলে হয়ত ২১ পাতার গল্পটি ৩০ পাতার হতো, কিন্তু গল্পের অসামান্যতা আরও বাড়তো।

২. আয়নায় কাকে দেখা যায়

এই গল্পটা বেশ ভালো। লেখায় তাড়াহুড়ো দেখলাম না। শুরুটা বেশ ভালো। সুসংবদ্ধ। গল্পের প্লটটা নতুন কিছু নয়, কিন্তু লেখক বেশ আকর্ষণীয় ভাবে গল্প ধাপে ধাপে এগিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত টানটান, এবং বেশ চমকে দিয়ে যবনিকা পত্তন। তবে, শেষের এই চমকটা নিয়েই আমার একটু খটকা আছে। গল্পের শেষে এমন একজনের আগমণ ঘটে যার কথা এই গল্পে কোনোভাবে উল্লেখ ছিলো না কিন্তু আগের গল্পে ছিলো। সে যে আসবে একথা পাঠক ভাবতেও পারবে না তাই চমকটা বেশ অভিনব বটে, কিন্তু তাহলেও আমার যেন কেমন একটু লাগল।
তবে আমার বিশ্বাস বাকি পাঠকদের গল্পটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বেশ ভালোই লাগবে।

৩. নৈশ প্রহরী

একটা হাল্কা স্পয়লার দিচ্ছি, এইটি কিন্তু ওয়্যারউলফের গল্প। অলৌকিকের জগতে ওয়্যারউলফ অতি ব্যাবহৃত প্রাচীন একটি বিষয়, কিন্তু তবুও ওয়্যারউলফ কথাটি শুনলেই হরর প্রেমি মানুষজনের মনের ভেতরটা আনন্দে লাফিয়ে ওঠে। আমার বিশেষ প্রীয় বিষয় এই ওয়্যারউলফ।
গল্পের শুরুটা বেশ জমজমাট। দারুন একটা টানটান উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্য দিয়ে শুরু হয় গল্প। এই পর্বেটিই পাঠকের মন কেড়ে নেবে। তবে ওয়্যারউলফ গল্পের একটি বিশেষ দিক হল পরিবেশ তৈরী! অন্যান্য ভৌতিক বা অলৌকিক গল্পের তুলনয়ায় ওয়্যারউলফের গল্পে পরিবেশ তৈরীতে একটু বেশীই নজর দিতে হয়। লেখক কিছুটা নজর দিয়েছেন, কিন্তু আরো আশা করেছিলাম। গল্পের গতি একটু দ্রুত হলেও উপভোগ্য। যথারীতি শেষে বেশ দারুণ একটি চমক আছে।
তবে কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে…যেমন ওয়্যারউলফ সাদা হওয়ার কারণ কী? আর সাদা ওয়্যারউলফের ছেলে, কালো ওয়্যারউলফ কেনো? এছাড়া গল্পের শেষে একজন মানুষের হাতের ক্ষত দেখে প্রফেসর সোম বুঝে গেলেন ওই ব্যাক্তিটি হলেন ওয়্যারউলফ। কিন্তু শুধুমাত্র একটি ক্ষত দেখেই কাউকে ওয়্যারউলফ ভাবাটি কতটা যুক্তিযুক্ত? যদি প্রফেসর এই ব্যাপারে কিছু তদন্ত করতেন বা আরো পোক্ত কিছু কারণ দেখাতেন তাহলে প্রফেসরের বুদ্ধিমত্তার সাথে পাঠকের আরো ভালোভাবে পরিচয় করানো যেত বলে আমার মনে হয়। মোটের ওপর গল্পটি জমজমাট!

৪.ক্ষুধা

আরও একটি জমাটি গল্প। কিছুটা প্রথাগত গোয়েন্দা গল্পের মত। অনেকগুলি সন্দেহজনক চরিত্র এবং তাদের মধ্যেই একজন অপরাধি। এখানে অপরাধি বলতে শবভোগি পিশাচ বা ghoul। আগের তিনটি গল্পের চেয়ে এই গল্পটি আরেকটু বেশী ভালো লাগলো। কিন্তু ' ভারতীয় ' বলে প্রফেসর সোমকে জনৈক ইংরেজ ব্যাক্তি অপমান করার পরও প্রফেসর সেই ব্যাক্তির বাড়ি পেটপুরে খাওয়াদাওয়াটা না করলেই পারতেন। এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত। আরও একটা ব্যাপার যেটা হলো, প্রফেসর কী উপায়ে রহস্যের সমাধান করছেন তার আর একটু বিশদ ব্যাখা হলে ভালো হত। অভিশপ্ত নদীর জলের কী রহস্য সেটাও জানা হল না! এই নদীর ইতিহাস নিয়ে পরে একটি গল্প বেরোলে খুশি হব!

৫. প্রশ্ন

অসাধারণ গল্প। এককথায় অসাধারণ লেগেছে আমার। কুর্নিশ ভাই কৌশিক তোমাকে। দারুন একটি ছোট গল্প পড়লাম অনেকদিন পর। ফেসবুকে ভূতে ধরা নিয়ে
গাঁজাখুরি গল্প পড়ে পড়ে হেবিয়ে গেলাম। এই গল্পটা অক্সিজেন দিল মাইরি।

৬. পাহাড়চূড়ায় বিভীষিকা

এই গল্পটা বুঝতে গেলে শয়তান ( Satan) -এর ব্যপারে একটু আগেভাগে জেনে রাখা ভালো। এই গল্পে লেখক পরিবেশ তৈরীর দিকে যত্নবান হয়েছেন দেখে ভালোলাগল। যদিও গল্পের শেষটা আগের গল্পগুলোর মত ততটা রোমাঞ্চকর নয়। তবুও গল্পের স্বাদ বেশ আলাদা। আরো একটা কথা, যে ভাবে প্রফেসর সোমের ওপর আক্রমণ হয় এই গল্পে তাতে তাঁর স্পটেই মারা যাওয়ার কথা। একটা সাধারণ মানুষের পক্ষে এতটা আঘাত নেওয়া সম্ভব না। লেখককে অনুরোধ করব এই দিক গুলোয় একটু নজর দিতে। কল্পনা হোক বা রুপকথা, কোন কিছুতেই অতিনাটকীয়তা খাপ খায় না।

৭. য়ুবারমেনশ্

য়ুবারমেনশ্ (Ubermensh) কথাটি জার্মান। মানে হল সাধারনের থেকেও বেশী। বইয়ের শেষ গল্প হিসেবে আদর্শ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভুমিতে শুরু হয় গল্প। সত্যি কথা বলতে কী এই গল্পটিতেই লেখক নিজের লেখনী শক্তির পরিচয় পুরোদমে রেখেছেন। সায়েন্স ফিকশন আর তন্ত্রবিদ্যার মিশেল বেশ ভালো লাগলো। আগের গল্পটির কিছু রেফারেন্স রয়েছে সেটিও ভালো লাগলো। গল্পের শেষটাও বেশ ভালো। 'সবুজ মানুষ ' ব্যাপারটাও ভালো লাগলো। কিন্তু... একটা কিন্তুও থেকে যাচ্ছে, যেটা হল প্রফেসরের দড়ির বাধন থেকে নিজেকে মুক্ত করার ব্যাপারটা। ওই যায়গাটা একটু বুদ্ধিদীপ্ত হলে ভালো হত। এই একটি ব্যাপার ছাড়া গল্পটি আমার বেশ ভালোই লেগেছে। সাধুবাদ!

পরিশেষে বলতে পারি, লেখক অত্যন্ত প্রতিভাবান। কিন্তু ছোট ছোট কিছু দিক আছে একটু নজর দিতে হবে। তাড়াহুড়ো করলে একেবারেই চলবে না। প্রতিটি গল্পই ভিন্ন স্বাদের। একবার বইটা পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠতে পারবেন না এইটুকু বলতে পারি। বিষয়বস্ত ভিন্নধর্মী। ছুটির দিনে বালিশে ঠেস দিয়ে 'প্রফেসর সোম' পড়তে পড়তে দিব্বি সময় কেটে যাবে আপনার।

সবাই ভালো থাকবেন। অনেক ধন্যবাদ।

পবিত্র ঘোষ


Profile Image for Anirban Deep.
10 reviews1 follower
April 5, 2023
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া
.
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখতে গিয়ে আলোচনায় কোনো স্পয়লার থেকে থাকতে পারে। তাই স্পয়লার এলার্ট দিয়ে রাখলাম। যদি স্পয়লার ছাড়া বই পাঠের সুখ নিতে চান, তাহলে এই প্রতিক্রিয়া পড়বেন না।
.
📕 বই : "প্রফেসর সোম"
✍🏻 লেখক : কৌশিক সামন্ত
🖌️ প্রচ্ছদ : বইতে কোথাও উল্লেখ নেই!
🖨️ প্রকাশক : অরণ্যমন প্রকাশনী
📄 পৃষ্ঠা : ১৮৪
💰 মুদ্রিত মূল্য : ₹ ২২৫/- (পেপারব্যাক)
.
🍂 বিষয়বস্তু :
৯টি অতিপ্রাকৃত গল্পের সংকলন :
📌 প্রফেসর সোমের সঙ্গে প্রথম আলাপ
📌 গ্লুমি সানডে
📌 আয়নায় কাকে দেখা যায়
📌 নৈশ্য প্রহরী
📌 কুয়াশা ঘেরা সে বাঁকে
📌 ক্ষুধা
📌 প্রশ্ন
📌 পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক
📌 যুবারমেনশ

স্পেকুলেটিভ ফিকশন জঁরার মধ্যে প্যারানরমাল বা অতিপ্রাকৃত বিষয়বস্তু বেশ পপুলার। তেমনই ৯টি গল্প সংকলন নিয়ে এক শক্তিশালী চরিত্র 'প্রফেসর সোম'...

আমরা প্রতিনিয়তই অন্ধকারের সাথে লড়াই করে চলেছি, কখনও আলো জ্বালিয়ে কখনও বা তার থেকে দূরে পালিয়ে! তবুও জ্বলন্ত প্রদীপের ঠিক তোলার জমাট বাঁধা অন্ধকারটার মতোই, শত চেষ্টা করেও সবার জীবনেই কিছু না কিছু অন্ধকার রয়েই যায়! মেটাফিজিক্সের অধ্যাপক প্রফেসর রুদ্র সোম এরকমই একজন মানুষ, যে প্রতিনিয়ত অন্ধকারের সাথে লড়াই করে চলেছেন, তবে নিজের মতো করে! সেরকমই কিছু অন্ধকারের ছন্দবিহীন দ্বন্দ্ব আর প্রফেসর সোমের অসীম স্পর্ধা, এই বইতে তুলে ধরা হলো...
.
🍁 প্রতিক্রিয়া :
স্পেকুলেটিভ ফিকশনের একটা বিশেষ ক্ষমতা আছে, এই ধরণের লেখা হয় মানুষকে উত্তেজিত করে নাহয় তাকে ভয় পাওয়ায়! প্যারানরমাল বা অতিপ্রাকৃত বিষয় নিয়ে যখন লেখা হয়, সেটা এই দুটোই পাঠকের সাথে ঘটিয়ে থাকে।

'প্রফেসর সোম' একটা শক্তিশালী চরিত্র। লেখক কৌশিক সামন্ত খুব সুন্দর ভাবে এই চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। ৯টি গল্প, প্রত্যেকটিই বেশ ভাল��� লেগেছে। লেখার ধরণ বেশ সাবলীল, অযথা অথ্যভারে জর্জরিত নয়, লেখার একটা রেজোলিউশন রয়েছে, সাসপেন্স তৈরী হয়েছে, ক্লাইম্যাক্স দিয়ে সেই সাসপেন্স ভঙ্গও হয়েছে - সর্বোপরি লেখার গুনগত মান বেশ ভালো। মাল্টিপল ন্যারেটিভ চোখে পড়েছে, কিছু ক্ষেত্রে প্রফেসর নিজে বলছেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে কথক গল্প বলছেন, ফলস্বরূপ বোর লাগবেনা পাঠকদের। আলাদা করে গল্পগুলো নিয়ে কিছু বলার নেই, সর্বোপরি সবকটিই বেশ ভালো। তবে শেষ গল্পটি, 'যুবারমেনশ' - এই গল্পটি আমার অতিপ্রাকৃত কম, কল্পবিজ্ঞানের গল্প বলে বেশি মনে হয়েছে! আর বলাই বাহুল্য আমার মতে, 'যুবারমেনশ' এই সংকলনের সেরা গল্প।
.
🌿 Final Verdict :
তরুণ লেখক হিসেবে কৌশিক সামন্ত বেশ ভালো কাজ করেছেন। আমার পছন্দ হয়েছে ওনার লেখনশৈলী। গল্প বলার ধরণটি বেশ সুন্দর। মনে দাগ কেটে যায়... স্পেকুলেটিভ ফিকশন যারা পছন্দ করেন তাদের এই বই ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। আমার তরফ থেকে রেকমেন্ডেড।

তবে লেখকের উদ্দেশ্যে ক'টি কথা বলার আছে - প্রফেসর সোমের বাড়িতে কাজ করে যে চাকরটি তার নাম কয়েকটি গল্পে পাল্টে গেছে! মূলত তার নাম 'প্রহ্লাদ', কিন্তু একটি গল্পে তা 'ভরত' এবং অন্য একটিতে 'হরিপদ' হয়ে গেছে। এই ব্যাপারটা একটু কনফিউজিং! প্রফেসরের বাড়িতে গল্পের আসর বসে শনিবার, কিন্তু একটি গল্পে তা রবিবার হয়েছে। এটা স্বাভাবিক বলে ধরে নিলেও 'প্রশ্ন' গল্পে কৌশিকের বক্তব্���ে 'শনিবার' উল্লেখ হলেও, প্রফেসরের বক্তব্যে সেটাই 'রবিবার' হয়ে গেছে! এটা মুদ্রণ প্রমাদও হতে পারে, একটু দেখে নেবেন।
.
" প্রফেসর সোম" বই প্রকাশ করেছে 'অরণ্যমন প্রকাশনী'। বইয়ের গুণগত মান, পৃষ্ঠার মান, ছাপা, বাঁধাই - অনবদ্য। কয়েকটি মুদ্রণ প্রমাদ রয়ে গেছে যদিও, তবে তা পাঠ প্রবাহে কোনো বিঘ্ন ঘটায়নি।
.
ধন্যবাদান্তে-
শ্রী অনির্বাণ ঘোষ (দীপ) 🙏🏻
Profile Image for monsieur_eeshan das.
100 reviews2 followers
August 30, 2023
♦️ স্পেকুলেটিভ ফিকশনাল ধারার মধ্যে প্যারানরমাল ফিকশন ও অতিপ্রাকৃতিক বিষয় বস্তু নিয়ে কৌশিক সামন্তর লেখা বই "প্রফেসর সোম"

আমরা প্রতিনিয়তই অন্ধকারে সাথে লড়াই করে আসছি কিংবা বলা উচিত অন্ধকার ও আলোর মধ্যে যে চিরাচরিত লড়াই তার ধারা সেই আদিম কাল থেকেই মানব সভ্যতার হাতেই। ভালো হোক বা মন্দ মানব সভ্যতা কোনোদিন একপেশে হয়নি।। এই বই এর প্রত্যেকটি গল্প সেই আদিম কাল থেকে হয়ে আশা লড়াইয়ের এক প্রতীকী আখ্যান।

♦️ প্রফেসর "রেভারেন্ড রুদ্র সোম" একাধারে মেটাফিজিক্সের প্রফেসর ও ক্রিস্টান চার্চ কর্তৃক নিয়োজিত ধর্ম প্রাণ একজন প্যারানরমাল investigetor কাম রিসার্চার। যিনি একদিন তার কাকার জীবনের ঘটে যাওয়া অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার পর থেকেই এই অতিপ্রাকৃতিক বিষয়ের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়েন । সারা জীবন ধরে নানান লৌকিক অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী এই মানুষটি বুড়ো বয়সে এসে কলকাতায় পাকাপাকি ভাবে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।

♦️ স্পেকুকেটিভ ফিকশনের এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে , যদি ঠিক ভাবে গল্প লেখা হয় তা অবশ্যই পাঠক কুলের কাছে সমাদৃত হবেই। নতুন লেখক কৌশিক সামন্তর সেই প্রত্যাশা খুব ভালো ভাবেই পূরণ করেছে।।

♦️প্রফেসর রুদ্র সোম এর জীবন কাহিনীর আদলে মোট ৯ টি গল্প বা বলা উচিত নয় টি অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার বিবরণ তথা তা কিভাবে রুদ্র সোম তার নিষ্পত্তি করলেন তারই আখ্যান।

ইজরাইলি "ডিবুক" হোক কিংবা "গ্লুমি সান ডে" বা আরবীয় মরু আতঙ্ক "ঘাউল" কি নেই এই বইতে।।

♦️ পাঠ প্রতিক্রিয়া - প্রফেসর "সোম" একটি স্ট্রং ক্যারেটর । তরুণ লেখক হিসেবে লেখক এটি তৈরি করতে পেরেছেন এটা খুব ভালো একটি দিক। প্রত্যেকটি গল্প পড়ে সত্যি ভালো লেগেছে । বোরিং নয় একেবারেই লেখক খুব ভেবেচিন্তে গল্প গুলো সাজিয়েছেন বা বলা উচিত গল্পের বিষয় বস্তু একটির সাথে আর একটির মিল নেই। তাই আগামী দিন যেই পড়বে ভালো লাগবেই।।
শেষ গল্প "য়ুবারমেসন" এটিকে অলৌকিক গল্প না বলে কল্প বিজ্ঞান এর গল্পই বলা যায় , পুরো বই এর বিচার এ এটি সব থেকে ভালো বলতে হয়।।।

♦️ বই এর কভার হোক কি বই এর বাঁধন সবই ঠিকঠাক , সেই দিক থেকে অরণ্য মন কে সাধুবাদ ।। তবে
গল্পে প্রফেসর এর বাড়ির চাকরের নাম একেক জায়গায় একেক রয়েছে। এটি আশা করি পরবর্তী প্রিন্ট গুলোতে ঠিক হয়ে যাবে।।

রেটিং ✨✨✨✨/৫
Profile Image for Tashin Abdullah .
133 reviews1 follower
May 12, 2024
নাহ তেমন জমলো না বিষয়টা। আশা জাগিয়েও কোথায় যেন ঘাটতি রয়ে গেলো। এই বইটিতে মোট ৭ টি গল্প রয়েছে,গল্পগুলি যথাক্রমেঃ
1.প্রফেসর সোমের সঙ্গে প্রথম আলাপ
2.আয়নায় কাকে দেখা যায়
3.নৈশ প্রহরী
4.ক্ষুধা
5.প্রশ্ন
6.পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক
7.য়ুবারমেনশ।
সত্যি বলতে এই ৭ টি গল্পের মধ্যে শুধুমাত্র প্রথম গল্পটিই আমার ভালো লেগেছে,ডিব্বুক বক্স এবং স্যাকুবাস নিয়ে ভালোই প্লট সাজিয়েছিলেন লেখক। ব্যাস এই একটিই বাকি গুলো কেমন এভারেজ লেগেছে। এই বইটি ভালোমত সম্পাদনা করা হয়নি। বাক্যের মাঝে মাঝে অনেক বানান ভুল বিরক্তির কারন হয়েছে। শেষ দুটি গল্প পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক আর য়ুবারমেনশের প্লট দারুন ছিলো,এবং এই দুই গল্পের মধ্যে একটা লিংকও দেখতে পাই কিন্তু প্লট ভালো হওয়া সত্বেও তা ভালোমত প্রেজেন্ট করতে পারেননি লেখক। শয়তান চর্চা, ওয়ারউলফ, গ্রিম রিপার,এক্সরসিজম এসব বিষয়বস্তু নিয়েই প্রাক্তন মেটাফিজিক্সের অধ্যাপক রেভারেন্ড রুদ্র সোমের কাহিনী। ব্যাক্তিগত ভাবে কাহিনীগুলো তুলনামুলক ভাবে আমার কাছে স্লো লেগেছে , তাই ২ স্টারের বেশি দিতে পারলাম না
20 reviews
September 7, 2025
পড়ে শেষ করলাম কৌশিক সামন্তের লেখা "প্রফেসর সোম" বইটি। এখানে প্রফেসর সোম হলেন মেটাফিজিক্সের অধ্যাপক এবং চার্চের সাথে যুক্ত একজন প্যারানর্মাল ইনভেস্টিগেটর যে প্রতিনিয়ত অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছেন তারই নানা কাহিনী এই বইটিতে সংকলিত আছে। মোট নয়টি গল্প আছে বইটিতে প্রত্যেকটি গল্পই বেশ ভাল। যারা প্যারানর্মাল ইনভেস্টিগেশন এলিমেন্ট বিষয়টি পছন্দ তাদের বইটি ভালই লাগবে।
Book :- প্রফেসর সোম
Publisher :- Aranyamon Publication
Author :- @bifocalbanker
My Ratings :- 4.2/5
Profile Image for Sourav Das.
70 reviews5 followers
January 14, 2021
প্রফেসর সোম.... বাংলা সাহিত্যে এমন একটা চরিত্র খুবই বিরল। খুব ভালো লাগলো এমন একটা চরিত্রের সাথে আলাপ হয়ে। বিদেশি occult ভীষণ ভাবে পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো লেখা পাওয়া আশায় থাকবো প্রফেসর কে নিয়ে।বইটিকে সবাই একবার ট্রাই করতেই পারেন। লেখকের এই প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়।

প্রফেসর সোমের অপেক্ষায় রইলাম। শয়তান এর বিরুদ্ধে তার আরও অজানা যুদ্ধের কাহিনী শোনার জন্য।
Profile Image for Nibedita Das.
28 reviews8 followers
January 25, 2020
ফাটিয়ে দিয়েছো পুরো কৌশিকদা..
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
November 25, 2025
মূল চরিত্র প্রফেসর সোম এবং তাঁর চ্যালা কৌশিকের চরিত্রের কোন বিল্ড-আপ নেই। কাহিনীও গড়পড়তা। পড়া যায় না তা না, কিন্তু মনে রাখার মত কিছুই নেই।
Profile Image for Ghumraj Tanvir.
253 reviews10 followers
January 10, 2020
দুর্দান্ত বই।প্রতিটা গল্পই জমজমাট ছিলো।হরর,থ্রিলার এবং সাইন্স ফিকশান ৩টার ছোয়া ছিলো বিভিন্ন গল্প গুলায়।আশা করি লেখক প্রফেসার সোমকে আবার ফিরায় নিয়ে আসবেন আমাদের সামনে।
Profile Image for Diptajit Misra.
47 reviews27 followers
August 12, 2019
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া
বইয়ের নাম: প্রফেসর সোম
লেখক: কৌশিক সামন্ত
প্রকাশক: অরণ্যমন
মূল্য: ১৭০₹

রেভারেন্ড রুদ্র সোম। পেশায় মেটাফিজিক্সের অধ্যাপক। সেই সঙ্গে অন্ধকারের ছন্দবিহীন দ্বন্দ্বযুক্ত পংক্তি মেরামত করেন নিজের মত করে। প্রফেসর সোমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে অন্ধকার জগতের নানা রহস্য জাল। কিন্তু এই অন্ধকার জগৎ ঠিক আন্ডারওয়ার্ল্ড বা ভূতপেত্নী না। তাদের চেয়ে অনেক গুণ বেশি ভয়াবহ প্রফেসর সোমের প্রতিদ্বন্দ্বী অন্ধকার নিবাসীরা। সোমও লড়ে যান তাঁর স্পর্ধা নিয়ে। এই বইতে প্রফেসর সোমকে নিয়ে যে গল্পগুলি রয়েছে, তা হল:
প্রফেসর সোমের সঙ্গে প্রথম আলাপ
আয়নায় কাকে দেখা যায়
নৈশ প্রহরী
ক্ষুধা
প্রশ্ন
পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক
য়ুবারমেনশ
আপনি যদি নিছক ভূতের ভয় পেতে এই বই খুলে বসেন বা কিনতে যান, তাহলে কিনবেন না। লেখক ভূতের ভয় পাওয়াননি এখানে। বরং ভয় হয়েছে অন্য কিছুর।
প্রথম কাহিনীতে রেভারেন্ড রুদ্র সোমের জীবনের নিজস্ব একটা ঘটনার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। যেটা ঘটেছে, সেটা বারবার তারানাথ তান্ত্রিকের মধুসুন্দরী দেবীর কথা মনে পড়ায়।
পরের গল্প থেকে নানা কান্ডের মধ্যে প্রফেসর সোমের হাজির হয়ে সমস্যা সমাধান মূল উপজীব্য।
দ্বিতীয় গল্পে খুব একটা ভয় পাইনি, তবে রহস্যটা বেশ যত্ন করে বোনা। কিন্তু সেই সঙ্গে লেখক নিজের প্রাণভোমরাও রেখে গেছেন এই গল্পে। প্রতিটা গল্পেই একইভাবে প্লট টুইস্ট। দ্বিতীয় গল্পটা পড়া থাকলে পরের প্রতি গল্পে কে ভিলেন সেটা কল্পনা করতে পারবেন পাঠকই। তবে শুধু কল্পনাই হবে। এর বেশি হবে না। কারণ লেখক যেভাবে শেষ করেছেন, সেখানেই তাঁর ইউনিকনেস।
নানা গল্পে উঠে এসেছে নানা রকম অন্ধকার চরিত্র: ঘুল, ওয়্যারউলভস, মায় স্বয়ং শয়তানও।
তবে গা শিরশিরানো ভয় পেয়েছি পাহাড় চূড়ার আতঙ্কে। হিমেল স্রোত বয়েছে মেরুদণ্ডে।
এবার আসি বইয়ের কিছু মাইনর ভুলচুকে। প্রফেসর সোম সিরিজ হলেও ধারাবাহিকতা বজায় থেকেছে একমাত্র শেষ দুটি গল্পে। তার আগের গল্পগুলোয় রেগুলার মাইনর চরিত্রের (প্রফেসর সোমের বাড়ির রাঁধুনি) নাম বদলেছে বারবার। অবিনাশের আরও বেশি ভূমিকা থাকলে ভালো লাগত। বানান ভুল মাঝেমাঝেই চোখে লাগে।
Profile Image for Diptanu.
56 reviews7 followers
October 16, 2021
সোম, প্রফেসর সোম। নামটাই যথেষ্ট। werewolf, জিন, স্বয়ং শয়তান সাবধান, এসে গেছেন আমাদের নিজস্ব সুপার হিরো (without any super power).
প্রত্যেকটা গল্পই অসাধারণ। পরের খন্ডের অপেক্ষায় রইলাম।
Displaying 1 - 22 of 22 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.