Jump to ratings and reviews
Rate this book

অধিরাজ #3

সর্বনাশিনী

Rate this book
ধুরন্ধর অপরাধী আর দুদে পুলিশ অফিসারের সম্পর্ক অনেকটা দাবাখেলার প্রতিযোগীদের মতো। চালের ওপর নির্ভর করে, কে জিতবে কে হারবে! এরকমই এক অপরাধের দাবার ছকে জড়িয়ে পড়ছে সবাই...

এক রহস্যময় ফেসবুক প্রোফাইল... মৃত্যুর আগেই হচ্ছে ডেথ ফোরকাস্ট... একমাত্র ব্লু, এক অপূর্ব সুন্দর কৃষ্ণাঙ্গীর ছবি...

শহরে ইতিমধ্যে ঘটে যায় দুই ধনকুবেরের রহস্যময় মৃত্যু। ফরেনসিক বলছে স্বাভাবিক মৃত্যু, তবুও... তদন্ত বলছে এদের দু'জনেরই জীবনে সম্প্রতি আবির্ভাব ঘটেছিল এক গোপন প্রেমিকার। কে সে?

অনুতাপে দ্বগ্ধ হচ্ছে মেয়েটি... কীসের অনুতাপ? কেন সে ভয় পায় অন্ধকারকে?

চক্রব্যূহে অভিমন্যুর মতো অসংখ্য প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে অসহায় অধিরাজ। অদ্ভুত এক দাবাখেলার মতো দুই দিকে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। অপরাধী ও অধিরাজ! শেষপর্যন্ত কি সমাধান হবে এই হত্যা- রহস্যগুলির? বোঝা যাবে কি খুনের পদ্ধতি? কেই বা খুনী? কেন খুন করছে সে? কীভাবেই বা ফরেনসিক ও সাইবার সেলকে বিভ্রান্ত করছে সে? কী আছে এই খুনীর জটিল মনের কেন্দ্রে?

352 pages, Paperback

First published January 1, 2019

24 people are currently reading
461 people want to read

About the author

Sayantani Putatunda

44 books107 followers
সায়ন্তনীর গড়িয়ায় বাস। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির শখ। কবিতা ও গদ্য দুইই চর্চার বস্তু।ক্লাস সেভেনে প্রথম প্রকাশ সংবাদ প্রতিদিনের শনিবাসরীয় পাতায়'চশমা' ছোট গল্প। তারপর প্রতিদিন, বর্তমান, সুখী গৃহকোণ, আর ছোটদের পত্রিকা সাহানা আর বাংলা দেশের পত্রিকা ভোরের কাগজে লাগাতার লিখে যাওয়া।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
122 (33%)
4 stars
147 (39%)
3 stars
69 (18%)
2 stars
20 (5%)
1 star
10 (2%)
Displaying 1 - 30 of 79 reviews
Profile Image for Tiyas.
449 reviews125 followers
November 6, 2024
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় ফ্রীতে খাটুনি খেটেছেন? বা রক্তদান শিবির? বা কোনো ছাতার ইন্টার্নশিপে পার্মানেন্ট চাকরির আশায় ছয়-মাসের ম্যানুয়াল লেবার? এই বই পড়বার অভিজ্ঞতা অনেকটা ওরকমই। সারাদিন খেটেখুটে ক্লাবের দাদার কাছে বিরিয়ানির প্যাকেট চাইতে গিয়ে, মর্তমান কলা ও দুটো পেল্লাই ডিম-সেদ্ধ হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরার সমান। এমন একখানি ইন্টার্নশিপ যেথায় স্টাইপেন্ড তো দুরস্ত, চাকরিটুকুও পার্মানেন্ট হয় না। মোটের ওপর সি.ভি-খানা পোক্ত হয়, এই আরকি। 

বইপড়ুয়া হিসেবে আমারও লিংকডইন প্রোফাইলে আজ থেকে অধিরাজের সুদর্শন মুখের একটা ছবি টাঙিয়ে রাখবো। যতই হোক, দলে নাম লেখালাম অ্যাদ্দিনে। বিশাল ব্যাপার। সেলিব্রেট করতে পেলে আরো খুশি হতাম। তবে এই বইটি সেই সুযোগ দিলো না। দুটো তারা ব্যায় করছি, কারণ লেখিকার লেখনী আমার ভালো লাগে। এর আগে, সামাজিকের বাইরে থ্রিলার ঘরানায় ওনার বেশ কিছু ছোট-গল্প পড়েছি। দিব্যি লেখেন। 

এই বইয়ের হাজার দুর্বলতার মাঝে, চোখে পড়ে, পুলিশি কার্যকলাপ, ফরেনসিক সায়েন্স ও যাবতীয় তথ্যাদির প্রতি নিষ্ঠার ছাপ। আর যাই হোক, গোয়েন্দা আমাদের বট-গাছের কোটরে আতস কাচ ধরে খুনি ধরে না! ভালো লাগে, দ্রুতগতির ন্যারেটিভ ও টানটান কাঠামো, যা শেষ-পাতা অবধি টেনে নিয়ে যায় পাঠককে। ভালো লাগুক কি খারাপ, পড়ে আপনাকে যেতেই হয়। ৩৫০ পৃষ্ঠা পেরিয়েও এ জিনিস সাক্ষাৎ পেজটার্নার! এবং এখানেই বুঝি সিরিজের আসল গ্রহণযোগ্যতা।

তবে খামতি প্রচুর। বইটি সম্বন্ধে হার্ডবয়েল্ড থ্রিলার তথা পুলিশ প্রসেডিউরাল জাতীয় বিশেষণের অহরহ প্রয়োগে, মনে অনেকটাই আশা পুষে রেখেছিলাম। তবে কে জানত, রহস্যের সন্ধানে 'ট্রু ডিটেকটিভ'এর বদলে মিলবে সোনি টিভির 'সিআইডি' সিরিয়ালের দেখা? খোদ ফরেনসিক এক্সপার্ট ড:চ্যাটার্জি, কোথাও গিয়ে সিরিয়ালের ডক্টর সালুখের কথা মনে করিয়ে দেন যেন। লেখিকা হাস্যরসের অবতারণা ঘটাতে গিয়ে চরিত্রদের দিয়ে ভাড়ামো করিয়েছেন স্রেফ। ব্যাপারটা বিরক্তিকর। এ লাগছে এর পেছনে, তো এ হচ্ছে রেগে লাল। সবটাই লেখা হয়েছে আশ্চর্য লঘুতা সহিত। রক্তমাংসের চরিত্রের বদলে, বইজুড়ে দেখা মেলে একঝাঁক কার্টুনের! 

ভাবতে বাধ্য করে, শেষমেষ সিরিয়াল কিলিংয়েও ক্যাপ্টেন হ্যাডকের অনুপ্রবেশ?

এছাড়াও আছে অধিরাজের সহকারী অর্ণব সেনের কার্টুন-মার্কা আতাক্যালানে সব রেসপন্স। কোনো বিশেষ চরিত্রকে বুদ্ধিমান প্রতিপন্ন করতে গিয়ে, তার চারপাশের চরিত্রদের বোকাটে বানানো সাহিত্য জগতে নতুন কোনো ট্রোপ্ নয়। তবে এই বইতে... 

দাড়ান, উদাহরন তুলে দি...

"এবার আর আকাশ নয়, হিমালয়টাই বোধহয় টেথিস সাগরে পরিণত হয়ে অর্ণবের মাথায় ঝুপ্পুস করে পড়ল! মনে হল, একটা কোকিল বুঝি মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে ভুগে কাও কাও করে ডাকছে! অথবা একটা জিরাফ হয়তো ঠ্যাং তুলে এক্কা দোক্কা খেলছে। কিংবা সে নিজে একটা ব্ল্যাক হোলে ঢুকে গিয়েছে, সেখানে সোফিয়া লোরেন দোলনায় দুলে দুলে গান গাইছেন, ‘পা-খি পা-খি পরদেসি-ই-ই..."

এক্কেবারে লুনি-টুনস! অতিনাটকীয় ও ফিল্মি। পাল্প ফিকশনের সাথে বঙ্গ-সিরিয়ালের উদ্ভট মেলবন্ধন। খোদ অধিরাজ নিজেই কিরীটি রায় ও ইন্দ্রনাথ রুদ্রের একবিংশ শতাব্দীর আপডেটেড সংস্করণ। অদ্রীশ বর্ধনের রেফারেন্স টানলাম, কারণ কাস্টডিতে বসা দাগী আসামি অবধি আমাদের এই অপরূপ হ্যান্ডসম অফিসারকে দেখে ভেবে ওঠে, "কি পুরুষ!" সিনেমার ভাষায় অধিরাজ আক্ষরিক অর্থেই একজন 'গ্যারি স্যু' - তার যেমন অপার্থিব রূপ, তেমনই অকল্পনীয় গুণ, একজন পার্ফেক্ট সুপারম্যান। তাই সে গুলিবিদ্ধ হলেও পাঠকের মনে সেরম চিন্তা হয়না। আবার অব্যর্থ সব অনুমানভিত্তিক ডিডাকশন করলেও, আশ্চর্য হওয়ার অবকাশ থাকে না।

ফেলুদার গল্পগুলো নাহয় তার বাচ্চা ভাইটি লেখে, একটু বাড়িয়ে-টাড়িয়ে বললেই বা। অধিরাজের অজুহাতটা কি? সে যেন নিতান্তই লেখিকার ইচ্ছাপূরণ-ধর্মী কোনো ফ্যান্টাসি হয়ে দাঁড়ায়। তার বাইরে, গোয়েন্দা হিসেবে... ক্যারিশম্যাটিক, তবে বাস্তবানুগ নয়। এছাড়াও, বইজুড়ে সব্বাই হয় মারকাটারি-ভুবনমোহিনী সুন্দর, নয় বিশ্রী রকমের কুৎসিত। আর-পাঁচজন ছাপোষা, সাধারণ, ধূসর চরিত্রদের এই সাদা-কালো বিভাজনে স্থান মেলে কম। এর সাথে, চোখে লাগে, সংলাপের নামে অতি-আবেগী ডায়ালগের মাত্রাতিরিক্ত ছড়াছড়ি। ফাজলামোর অবকাশে, মনে প্রশ্ন জাগে, সব বিত্তবান সুন্দরী মহিলা মাত্রই বুঝি একটি দৃশ্যমান রঙিন ট্যাটুর মালকিন হন? 

অবশ্য, সুন্দরী মহিলাদের নিয়ে কথা হচ্ছে যখন- আমার না জানাটাই স্বাভাবিক :) এর চেয়ে বরং, ফিল্ম নিয়ে কথা হোক। ফিল্মি ফান্ডায় বই থেকে একটা কথোপকথন তুলে দি। আপনারা এটা পড়েই ইতি টানুন। দেখুন অধি-Razz-এর ভানুমতির খেল!

“কিন্তু স্যার! আপনি একটু বেশি ঝুঁকি নিচ্ছেন না? মিসেস জয়সওয়াল কী প্রকৃতির মহিলা বোঝেননি!” 
“খুব ভালোই বুঝেছি।" অধিরাজ শেষ টানটা দিয়ে সিগারেটটা ডাস্টবিনে ফেলে দেয়, "তবে আরও একটু ভালো করে বোঝা দরকার!”
– “উনি আপনাকে বরবাদ করে ছাড়বেন।”
– “ইন দ্যাট কেস...।” সে উষ্ণদৃষ্টিতে কয়েকমুহূর্ত অর্ণবের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর মৃদু স্বরে বলল,—“আমি বরবাদ হতেই চাই।”


(২/৫ || ২০২৩)
Profile Image for Niharika.
268 reviews187 followers
May 19, 2025
সাল ২০২০। প্রথম দফার লকডাউন পুরোদমে চলছে, প্রতি দিন প্রতি ঘন্টা চার দেওয়ালের ভিতরে বসে কাটাচ্ছি, সঙ্গে রয়েছে সর্বক্ষণ বিগ বস-সম মাদার ইন্ডিয়ার নজরদারিও। এরই মধ্যে একদিন সদ্য শুরু হওয়া অনলাইন ক্লাস বাঙ্ক করে, টানা চার ঘণ্টায় রুদ্ধশ্বাসে বইটা পড়ে শেষ করার পর সাংঘাতিক আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়ে আমার ইতিহাস খাতার শেষ পাতায় সায়ন্তনী দেবীকে একখানা আস্ত চিঠি লিখে ফেললাম। “অপঠিতপূর্ব”, “নির্বাক হয়ে বসে আছি ” ইত্যাদি শব্দটব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল, এও মনে আছে। আজকে রিভিউ লিখতে বসার সময়ে অনেক খুঁজেও সেই খাতাখানি পেলাম না। যাক গে, চিঠিটা লেখিকার কাছে তো পৌঁছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই, ভেলপুরীর ঠোঙা হিসেবেই জীবনপাত করুক না হয়।

বইটার সবচেয়ে বড় প্যারাডক্স কী জানেন? ওই সাংঘাতিক ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক প্রচ্ছদ, এবং প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়ের সাথে উপন্যাসের কুশীলবদের সোপ অপেরা জাতীয় চরিত্রায়ণের অদ্ভুত সমাপতন। আরেকটু বুঝিয়ে বলি। চোদ্দ বছরের আমি অন্তর্জালের অষ্টপ্রহর কিলবিল করা ভাইরাস সম্মিলিত একখানা ওয়েবসাইট থেকে ঠিক এই বইটাই বেছে নিলাম, কারণ ওইরকম একখানা রগরগে প্রচ্ছদ। ওই একই আমি চরম উৎফুল্ল হয়ে বইটা গোগ্রাসে গিললাম, তারও কারণ বইটার মুখরোচক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সেই আমি যদি বইমেলা কিংবা নিদেন পক্ষে স্কুলের লাইব্রেরীতে গিয়ে এই বইখানা পকেটস্থ করার চেষ্টা করি, ওই দুটি বস্তুই আমাকে প্রচন্ড অসুবিধায় ফেলবে। সুতরাং ওই বয়সে আমার বইখানা ভালবেসে পড়লেও লেখিকার বাস্তবিক কোনো অর্থনৈতিক লাভ হওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। ঠুনকো ভালবাসা আর প্রবল আবেগ উদ্বেলিত পত্ররচনা বাদ দিয়ে বলছি।

এবার ঢুকি মূল সমস্যায়। আনুষ্ঠানিকভাবে "বড়" আমি যদি পুরোনো স্মৃতি নস্টালজিয়া ইত্যাদি উস্কে বইটায় আবার হাত দিই, এবং বয়স উপযোগী বইয়ের ঘটনাক্রমকে বর্তমান আমির চোখ দিয়ে দেখি, তাহলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বইটার স্থূল রসিকতা, এবং শ্রীমান পুরুষোত্তম সুপারম্যানের বাঙালি সংস্করণের সাথে ছলাময়ী কলা���য়ী ফেম ফেটালের ইঁদুর বিড়াল দৌড়ের কথা পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে অতিনাটকীয়ভাবে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। বইখানার টার্গে��� অডিয়েন্স যে অকালপক্ব কিশোরজাতি ছাড়া আর কেউ হতে পারে, একথা বিশ্বাস করা কঠিন। সুতরাং আজকের আমিও বইটা কেনার কথা ভাবব না। তাহলে বইটা আদপে কিনবে কারা ?

এতক্ষণ ভণিতা করলাম, এবার কাহিনিতে ঢুকি। কলকাতা শহরে একের পর এক খুন হচ্ছেন প্রথম সারির লম্পট মদ্যপ বিত্তশালী —যাকে বলে হোলি ট্রিনিটির লোকেরা। কিন্তু সেটার থেকেও চমকপ্রদ ব্যাপার হল, প্রতি খুনের সাত আটদিন আগেই "সর্বনাশিনী" নামধারী একটি ফেসবুক প্রোফাইল তাদের মৃত্যুসংবাদ পোস্ট করছে। সি আই ডি আস্তিন গুটিয়ে খেলায় নেমে পড়ে। ফেসবুক প্রোফাইলে একজন কৃষ্ণাঙ্গীর ছবি দেওয়া, সুতরাং শার্লক হোমসকে কাদায় চিতপাত খাইয়ে deduce করা হয়, আসল অপরাধী নিশ্চয়ই তুষার ধবল শ্বেতপরী হতে বাধ্য। (হায়রে subtlety ...)

তো সে যে ডানা কাটা পরীই ব্যাটম্যান রূপে গথাম, থুরি, সিটি অফ জয়ে পদার্পণ করুক না কেন, আমাদের সি আই ডি বিভাগও কম নয়। পূর্বে আলোচিত সুপারম্যানের প্রপৌত্র অধিরাজ ব্যানার্জী তো রয়েছেই, তার সাথে আছে সহকর্মী অর্ণব (এনার কথায় একটু পরে আসছি), ডাক্তার চ্যাটার্জী (বইতে ব্যানার্জী চ্যাটার্জীর oversaturation আমার পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়), এবং তার মহিলা সহকারী, যার নাম অধিরাজ কোনোভাবেই মনে রাখতে সক্ষম নয়, এবং চার বছর পরে আমিও।

গল্প যত এগোবে, শ্রীমতি পুততুন্ড গল্পের নায়ক এবং খলনায়িকার মধ্যের সাংঘাতিক সেক্স্যুয়াল টেনশন ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করবেন। ওতে ভুলবেন না কিন্তু। কারণ এই গল্পের আসল প্রেমকাহিনী হচ্ছে অধিরাজ এবং তার প্রেমমুগ্ধ অনুচর অর্ণবের মধ্যে। পিন্টারেস্ট-এ ক্ষণে ক্ষণে মধ্যযুগীয় আরবি ফারসি কবিদের ভালবাসার কবিতার প্রশংসা দেখি, কি তাঁদের চমৎকার উপমা শৈলী, কি অনন্যসুন্দর একনিষ্ঠা মনের গহীন কোণে বিচরনরত মায়াবনবিহারিনীদের জন্য! সব ফেল মেরে যায় অর্ণবের ভক্তিগদগদ চিনির রসে ছাকা বিবরণের সামনে। আমাদের সস্তার সুপারম্যান উচ্চতায় ছ 'ফুট সাড়ে চার, তাঁর সুঠাম চেহারা সকল স্টেরয়েড নেশারু হলিউডি নায়ককে হার মানায়, তাঁর অতীব আকর্ষণীয় ব্যারিটোন কন্ঠস্বর, তাঁর সাবলীল সেন্স অফ হিউমার ... যদি কোনো দিক নিয়ে বলতে ভুলে যাই, সেটা আমার বছর পেরোনো ভুলোমনা স্মৃতির দোষ, অর্ণবের নয়। কোনোকালেই তথাকথিত fanfiction girlie ছিলাম না, কিন্তু Wattpad এর পাতায় পাতায় হাজার হাজার কিশোর কিশোরীর দিনরাতের অবসেশন এর প্রমাণস্বরূপ প্রস্তুত হওয়া লেখাগুলোর সাথে অর্ণবের বিবরণের যে আকাশ পাতাল পার্থক্য থাকবে না, সেটুকু আমি হলপ করে বলতে পারি। অর্ণবের প্রেম যে একমুখী নয়, এর সবচেয়ে বড় নিদর্শন: অধিরাজ অন্তত অর্ণবের নাম মনে রাখে। সেটাই গল্পের সকল অপরূপা মহিলা চরিত্রগুলোর থেকে অর্ণবকে এগিয়ে রাখে, কারণ গ্যারি স্টু অধিরাজ খুনিদের পিছনে ছুটতে এতই ব্যস্ত, যে দুটি এক্স ক্রোমোজোমওয়ালি সহকর্মীদের নাম তার গ্রে ম্যাটার মস্তিষ্কে স্থান সংকুলান করে উঠতে পারে না।

ঈষৎ বাদামি মসৃণ ত্বক, দীর্ঘ ঋজু উদ্ধত দেহ, অসম্ভব ধারালো মুখের আদল বোধ হয় একেবারে মেপে মেপে তৈরি করা হয়েছে! কোথাও একটু বেশি বা একটু কম নেই! চওড়া কাঁধ, সুগঠিত গ্রীবা, বুক আর চওড়া কবজি কী প্রচণ্ড পুরুষালি! কোমর নিখুঁত সরু! চোখ দুটো শান্ত, অথচ প্রচণ্ড তীক্ষ্ণ! লোকটা মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখছিল তাকে। কী পুরুষ! শার্টের ওপর থেকেই এমন! না জানি শার্টের তলায় কত কারুকার্য আছে! সে নিজে যদি এমন সিংহের মতো পুরুষ হতে পারত তবে জীবনটাই হয়তো অন্যরকম হতো। বউ তার কথায় ওঠবস কত, বিছানা গরম করে দিত! মেয়েরা পেছন পেছন ঘুরঘুর করত। তার সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য পাগল হতো অনেক সুন্দরী! এতগুলো খুন করতে হতো না…!


গড প্রমিস করে বলছি, পিডিএফের থেকে চোখ বন্ধ করে বেছে নেওয়া একটা পাতায় এই বিবরণটা পেলাম। খুব সম্ভবত হাজতে উল্টো হয়ে ঝুলে পুলিশের ছত্রিশ ঘা খেতে খেতে একজন পুরুষ সাসপেক্ট এরকম দিবাস্বপ্ন দেখছে। কে বলে বাংলা সাহিত্যে এলজিবিটিকিউ ধর্মী representation পাওয়া দায়!

গল্পের মহিলাগনের যা বিবরণী পাই, তাতে তাদের আর যাই হোক, ভারতীয় বলে মনে হয় না। তারা প্রত্যেকেই হয় সুরূপা শ্বেতাঙ্গি, অথবা কুরুপা "নিগ্রোবটু"। আজ কাল ইংরিজি বইই বেশি পড়ি, কিন্তু এইরকম বিচ্ছিরি বর্ণবৈষম্যতা বাংলা বইতেই পেয়েছি। দৃষ্টিকটু লাগে বস্তাপঁচা "বিষকন্যা" গোছের ভিলেনমার্কা নারী চরিত্রের অবতারণা। (আমাদের সিরিয়াল কিলার নিজস্ব সিগনেচার রূপে লাভবাইট রেখে যায় মৃতদের শরীরে।) অধিরাজ সিরিজের অধিকাংশ বইই আমার পড়া, তার পিছনে কিরকম যন্ত্রনাকামী মনস্তত্ত্ব কাজ করেছে বলতে পারব না, তবে কি করে যেন এই বিশেষ বইটা একইসাথে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বাপেক্ষা হাস্যকর। দুটি তারা সেজন্যই দিতে হয়।

পুনশ্চ: যেকোনোরকম বানান ভুল, তা যত হৃৎকম্প উদ্রেককারীই হোক না কেন, কেবলমাত্র আমার যাচ্ছেতাই সফ্টওয়্যারের ত্রুটি।আপনার এবং আমার, দুজনের স্বার্থেই ধরে নিন যে বাস্তবের আমি একজন আদর্শ বৈয়াকরণ।
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,956 followers
July 30, 2020
একদম ঠাস বুনট লেখা। বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়া কেউ যদি থৃলার লেখেন, তবে আউটকাম এরকমই হবে। সেই সাথে প্লট নিয়ে বিস্তারিত রিসার্চ তো আছেই৷ ইংরেজি সাহিত্যে সাইকোলজিক্যাল থৃলার লেখা হচ্ছে সেই কবে থেকেই। কিন্তু এপার-ওপার বাংলা মিলিয়ে এতদিন অবধি সেই প্রচেষ্টা খুবই সীমিত ছিল। বিশেষ করে ওপার বাংলায় তন্ত্র-মন্ত্রের মিশেলে, যাকে বলে হার্ডবয়েল্ড থৃলার, মাথাচাড়া দিয়েই উঠতে পারছিল না৷ কিন্তু সায়ন্তনী পূততুন্ড তার জাত চিনিয়েছেন এই বইটি দিয়ে। উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে ছিল শুরু থেকেই। সেই ধারা অব্যাহত ছিল শেষ অবধি। প্রোটাগনিস্টের চেয়ে অ্যান্টাগনিস্টের ক্যারেক্টারাইজেশনেই মনোযোগ দেয়া হয়েছে বেশি(কিছু ক্ষেত্রে কিঞ্চিত মাত্রাতিরিক্ত)। যারা বাংলায় থৃলারে মনস্তাত্ত্বিক কিছু পড়তে চান, তাদের জন্যে অবশ্যই রিকমেন্ড করবো৷ একটি কথা না বললেই নয়, বিভার আরো একজন থৃলার লেখিকা আছেন- যিনি একটু ওভাররেটেড। তার তুলনায় সায়ন্তনী পূততুন্ড আন্ডাররেটেড৷ আরো ফোকাস তার প্রাপ্য।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
April 13, 2024
থ্রিলার কম পড়া হয়না। বলা যায় যা পড়া হয় তার অধিকাংশই থ্রিলার। তবে সত্যি দিনের পর দিন মনে রাখার মত থ্রিলার খুব কমই আছে বাংলায়। নেই কিন্তু বলিনি! তবে তাদের কিছু বই এর মাঝে সেরা মৌলিক থ্রিলার এর তালিকায় উঠে গেল সর্বানাশিনী।

জানি না লেখিকার বাকি বই গুলো কেমন, তবে এটুকু বলতে পারি এখানে লেখিকা পুরা ডমিনেট করে ছেড়েছেন জনরাটাকে। যেমন প্লট, তেমনি চরিত্র চিত্রন, তেমনি সংলাপ।

তবে একেবারেই দৃষ্টিকটু লাগার মত ব্যাপার যে ছিল না তাও না। অবশ্য ব্যক্তিগত মতামত এটি।

*প্রথমত ওয়ান ম্যান শো হয়ে গেছে অনেকটাই। যদিও খুব একটা খারাপ লাগেনি, তবু গল্পের পরিসর অনুযায়ী একটু বেক্ষাপ্পা। আবার গল্পটা কিন্তু অধিরাজ সিরিজের ৩ নাম্বার গল্প। যেখানে লেখিকা ওয়ান ম্যান সিরিজের বই হিসাবেই বের করেছেন সেখানে অধিরাজ এর উপরেই সব বর্তাবে এটাও একদিক থেকে এক্সপেক্টেড৷

* সাধারণ স্বাভাবিক দেখতে কেউ নেই! হয় গ্রীক দেব দেবীর মত দেখতে , নাহয় ভয়ংকর বাজে!

*লেখিকা চরিত্রের নাম গুলো নিয়ে বড্ড পেচিয়েছেন। কোরিয়ান সিরিজের শুরুতে যেমন নামের পেচকি লেগে যায় আমার কাছে অনেকটা সেরকমই ছিল। হয়তো ড্রামাটিক ইফেক্ট বাড়ানোর জন্যই এমন ভাবে লেখা।

তবে এই সব সূক্ষ ব্যাপার গুলো বাদ দিলে দারুন উপভোগ্য ছিল। ফাস্টপেসড, হিউমারাস, অতিরঞ্জিত ব্যাতিত নিট আর ক্লিন থ্রিলার পড়তে চান তাদের জন্য মাস্ট রিকমেন্ডেড।
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,862 followers
April 6, 2019
"কুছ রিশতোঁ কা নমক হি দূরি হোতা হ্যায়
না মিলনা ভি বহোত জরুরি হোতা হ্যায়...!"
অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন, রহস্য উপন্যাসের রিভিউয়ের এ কেমন সূচনা?
আজ্ঞে হ্যাঁ, সি.আই.ডি অফিসার অধিরাজ ব্যানার্জি তাঁর জীবনে যে কঠিনতম কেসটির সামনে পড়েছেন, তার সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে সেই উপন্যাসের শেষ দু'লাইন দিয়েই শুরু করতে হল।
কী সেই কেস?
কলকাতা শহরে খুন হচ্ছেন একের পর এক ধনকুবের।
তাঁদের স্বভাবে বেশ কিছু মিল ছিল। তাঁরা সবাই লম্পট ও মদ্যপ ছিলেন। তাঁদের লাশে অস্বাভাবিক কিচ্ছু পাওয়া যায়নি। ব্যাপারটা পুলিশের নজরে এসেছে লাশগুলো নিতান্ত বেওয়ারিশ হয়ে কোথাও পড়ে থাকার ফলে।
হ্যাঁ, আরও একটা মিল আছে তাঁদের মধ্যে। মৃতদেহ পাওয়ার সাতদিন বা তারও আগেই 'সর্বনাশিনী' নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে তাঁদের নামের পাশে আর.আই.পি বসিয়ে পোস্ট এসেছিল!
পুলিশি তদন্ত কোত্থাও পৌঁছয়িনি। তাই সি.আই.ডি। তাই কাহিনিতে এলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডক্টর চ্যাটার্জি, অর্ণব, এবং...
অধিরাজ!
ঠিক এখানেই গল্পটা পোয়ারো, হোমস, এমনকি ব্যোমকেশ লেভেলের তদন্ত না থেকে অধিরাজকীয় হয়ে দাঁড়াল। আমরা ঢুকে পড়লাম এমন এক জগতে যেখানে সুন্দরীদের ছড়াছড়ি, কিন্তু তাদের যৌবন না রূপের আড়ালে অবহেলা আর অপমানের আগুন জ্বলে। গোয়েন্দার পাশাপাশি আমাদের সঙ্গেও লুকোচুরি খেলতে শুরু করল এক নির্দয়, নির্মম খুনি।
কার চেজে, মাসাজে, এবং সাজে এই কাহিনি জেমস বন্ডকে মনে করায়। আবার নায়কের চোখ দিয়ে চরিত্রদের দেখিয়ে, তার অপমান আর ক্ষোভের জায়গাটা বুঝিয়ে, এবং তার হাত ধরেই রহস্যের আবরণ উন্মোচনে আমাদের সাহায্য করে এই কাহিনি বিবিসি শার্লকের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করে নতুনভাবে।
ব্রেইনি ইজ দ্য নিউ সেক্সি!
তবে আমার কাছে এই গল্পের আসল আবেদন ছিল তার রসবোধ আর যন্ত্রণার ককটেল। একটিবারের জন্যও মনে হয়নি, এই কাহিনি ছেড়ে উঠি। বরং, একবার পড়তে শুরু করার পর রোলার কোস্টারের মতো এই উপন্যাসই আমাকে তুলেছে, ফেলেছে, আবার তুলেছে...!
গল্পের শেষে আমাদের নায়ক ও সর্বনাশিনীর মধ্যে খেলাটা যেখানে থামল সেটার কথা ভেবে আমারও একটাই লাইন মনে পড়ে গেল~ "অজিব দাস্তাঁ হ্যায় ইয়ে, কহাঁ শুরু কহাঁ খতম...!" হয়তো আমাদের সঙ্গে অধিরাজের এমন অ্যাডভেঞ্চারের সম্পর্কও ঠিক এমনই।
খুঁত চাইলে তেমন অনেক কিছু হয়তো পাবেন এতে। কিন্তু আমি তো খুঁতান্বেষী, এমনকি সত্যান্বেষী হিসেব এই বইটি পড়িনি। আমি পড়েছি বিনোদনের জন্য। এবং সেই মাপকাঠিতে এই বই ১০০% সফল।
বিভা পাবলিকেশন আমাদের সবার কাছে ধন্যবাদার্হ হলেন এমন সুবৃহৎ বইটি প্রকাশ করে। রহস্য উপন্যাস সাইজ জিরো না হলে যাঁদের ওষ্ঠ কুঞ্চিত হয় তাঁরা হয়তো কুপিত হবেন। কিন্তু আমি এই বই পড়ে ভরপুর আনন্দ পেলাম।
সায়ন্তনী পূততুণ্ড, প্লিজ টেক আ বাও। অধিরাজের এযাবৎ শ্রেষ্ঠ উপাখ্যান পড়ার সুযোগ করে দিলেন বলে আমরাও কৃতজ্ঞতা জানালাম।
ইতিমধ্যে একটিই রেকমেন্ডেশন: বইটি পড়ুন প্লিজ, নইলে একটা দারুণ লেখা মিস করবেন।
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
July 21, 2021
বেশ ভালো লাগল। কলকাতার অসংখ্য তন্ত্র-মন্ত্র হরর বইয়ের ভিড়ে একটা দারুণ পুলিশ প্রসিডিওরাল/সিরিয়াল কিলিং বই সর্বনাশিনী। বেশ দ্রুতগতির। সাসপেন্স শুরু থেকেই ধরে রেখেছিলেন লেখিকা, একইসাথে দেখিয়েছেন পুলিশি তদন্তপ্রক্রিয়া ও ফরেন্সিক ব্যাপার-স্যাপার। ইলজিক্যাল কিছুই ছিল না অথবা ভজকট পাকাননি একেবারেই। বেশ রিসার্চ করেই বইটা লেখা। ডার্ক ব্যাপারগুলোর সাথে যথাযথ হিউমারও প্রয়োগ করেছেন, মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন লেখনশৈলীতেও। শেষের টুইস্ট ও ক্রিমিনাল সাইকোলজিও বেশ ভালোভাবেই ব্যাখ্যা ক
Profile Image for Shuhan Rizwan.
Author 7 books1,107 followers
August 25, 2022
আড়াই।

রহস্যকাহিনি হিসেবে ভালোই ছিলো, হোমওয়ার্কও যথেষ্ট করেছিলেন লেখক। কিন্তু চরিত্রেরা এমন টু-ডি, বাতাস আসা মাত্রই ভালো লাগাটা সাথে নিয়ে তারা উড়াল মারে ফরেস্ট গাম্পের পালকের মতো।
Profile Image for Taznina Zaman.
251 reviews63 followers
May 28, 2021
এক ফেসবুক আইডি, নাম তার 'সর্বনাশিনী'। প্রোফাইল পিকচারে অপূর্ব সুন্দরী এক কৃষ্ণাঙ্গীর ছবি। কলকাতা শহরে পরপর দুইজন ধনকুবেরের লাশ পাওয়া যাওয়ার ঠিক সাত আট দিন আগে এই আইডি থেকে RIP লিখে তাদের ডেথ ফোরকাস্ট করা হয়েছিলো। কিন্তু বডির দেহে কোন ক্ষত নেই, নেই কোন বিষের আলামত। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে মারা যাওয়ার আগে প্রত্যেক ভিক্টিমের লিভার ও কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ায় তারা তিলে তিলে মৃত্যুবরণ করেছে। এদিকে ফেসবুক আইডি ট্রেস করা যাচ্ছে না কারন সর্বনাশিনী অত্যন্ত ধূর্ততার সাথে সব চিহ্ন মুছে ফেলেছে। কলকাতা পুলিশ চুলচেরা বিশ্লেষণ করেও যখন সমাধান করতে পারলো না, তখন মামলা চলে এলো সিআইডি তথা অধিরাজের কাছে।

সর্বনাশিনীর এবারের টার্গেট জনৈক বিজয় জয়সওয়াল। কিছুটা তদন্ত করে সাসপেক্ট হিসাবে যাদের পাওয়া গেলো তারা হলেন সাবেক দাবাড়ু অ্যান্ড্রু বাজাজের মেয়ে রিয়া ও প্রিয়া বাজাজ, জয়সওয়াল পরিবারের স্ত্রী, কন্যা, পুত্রবধূরা এবং অ্যাডেলিন বাজাজ। এরা প্রত্যেকেই সুশিক্ষিতা, প্রখর বুদ্ধিমতী, দাবা খেলায় প্রচুর পারদর্শী সর্বোপরি সর্বনাশিনী হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট। এদিকে সর্বনাশিনী ওস্তাদ দাবাড়ুর মতো পুলিশের প্রতিটা পদক্ষেপ অনুমান করে নিয়ে আগেই চাল চেলে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে রহস্য জমে ক্ষীর।


চুপি চুপি আসছে পড়ে আমি ভেবেছিলাম এটাই অধিরাজ সিরিজের বেস্ট। কিন্তু সর্বনাশিনী পড়ে যে থ্রিলটা পেয়েছি, তার বর্ণনা ভাষায় দিতে পারবো না। এই রহস্যেও মোটিভ হিসাবে এমন একটা বিষয়কে বেছে নেয়া হয়েছে যে পাপ, যে ডিসক্রিমিনেশান সমাজে আদিকাল থেকে চলছে কিন্তু কেউ তাকে গ্রাহ্যই করে না। অপরাধের ধরন, অপরাধ বিশ্লেষণ, সন্দেহভাজনদের লুকোচুরি সবমিলিয়ে উপন্যাসটা সত্যিই উপাদেয়। তবে ক্লাইম্যাক্সটা একই লেখিকার 'এবং আত্মহত্যা' উপন্যাসের সাথে মিলে যাওয়ায় কিঞ্চিৎ হতাশ হয়েছি। সেই সাথে ফরেনসিক ডাক্তার চ্যাটার্জীর উৎপাত আর মেলোড্রামা কম ছিল বলেও পড়ে ভালো লেগেছে।

পুনশ্চঃ দেবারতি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে ওপারে যেমন আলোচনা বা আলোড়ন হয়, সায়ন্তনী পূততুন্ডকে নিয়ে সেভাবে উচ্ছ্বাস চোখে পড়ে না। অথচ যে মানের থ্রিলার তিনি লেখেন, তার কলমের যে মাধুর্য তাতে তার আরো ফোকাস পাওয়া উচিত।

রেটিংঃ ৪.৩
Profile Image for Subhasree Das.
25 reviews13 followers
August 16, 2019
সায়ন্তনী পুততুন্ডোর 'সর্বনাশিনী' শেষ করলাম।
আগে না-ভালো লাগার কথা বলি।
১. গোটা গল্প জুড়ে চরিত্ররা নয় দেখতে ভীষন ভালো, নয়তো কদাকার। নরমাল দেখতে লোকজন বেচারা অধিরাজের কেসে প্রায় নেই। খুব অবাস্তব ব্যাপার।
২. গোটা গল্প জুড়ে লাইক-লাভ-সেক্সচুয়ালিটির ছড়াছড়ি। মা-বোন বাদ দিলে যে চরিত্রই যাকে পারছে নয় লাইক করে ফেলছে, নয় লাভ বাইট দিচ্ছে নয় প্রেমে উল্টে যাচ্ছে। এতটা বাড়াবাড়ি না করলেও চলতো।
৩. অতীব সিরিয়াস সিচুয়েশনেও চরিত্ররা ছ্যাবলামি করে গ��ছে। ফরেনসিক এক্সপার্ট রিপোর্ট বোঝাতে গিয়ে লাফালাফি করছে, সি-আই-ডি অফিসার ভয়ংকর খুনিকে চেজ করতে নেমে 'কি ভাই, এবার কি চাষে নামবো!' মার্কা খিল্লি করছেন। বাকিদের কেমন লাগবে জানি না, তবে আমি পড়তে পড়তে ইরিটেট হয়েছি। থ্রিলার গল্পে চেজিং ইত্যাদি সিরিয়াস সিচুয়েশনে এসব হালকা ছ্যাবলামি মোটেই পছন্দ না আমার।
৪. অপরাধীর দিক থেকে লেখিকা এত কথা বলেছেন, এত সিন এনেছেন, তার মোটিভ ইত্যাদি নিয়ে এত লিখেছেন যে খুনি কে সেটা বড্ড প্রেডিক্টেবল ছিল।

এইসব নিয়েও বইটাকে আমি ৫ এ ৩ দেব। কারণ:
১. প্লট দুর্দান্ত। যে ভাবে দাবার চালের মতন সাদা-কালো (পড়ুন পুলিশ ও অপরাধী) দুই দিক থেকে পুরো গল্পটাকে ছকে ছকে লিখে গেছেন লেখিকা সেটা দুর্দান্ত।
২. যথেষ্ট টেন্সড ফিল নিয়ে, খুব খুব টান টান ভাবে গোটা লেখাটা এগিয়ে গেছে। ফলে পাঠক এক-দুই সিটিংয়ে বইটা দিব্বি পড়ে ফেলবেন।
৩. টুইস্ট আর টার্নিংগুলো ফাস্টক্লাস লেগেছে। একদম সঠিক জায়গায়, সঠিক ভাবে দেওয়া হয়েছে ব্যাপারগুলো।

সব মিলিয়ে আমি স্যাটিসফায়েড। বাজারে ঘুরে বেড়ানো আর পাঁচটা হাইপ থ্রিলারের থেকে এ বই অন্নেক ভালো। থ্রিলারপ্রেমী বন্ধুরা যারা 'সর্বনাশিনী' পড়েন নি, তারা দায়িত্ব নিয়ে পড়ে ফেলুন।
Profile Image for Zahidul.
450 reviews93 followers
April 20, 2022
“Like gravity, karma is so basic we often don't even notice it.”― Sakyong Mipham
-
❛সর্বনাশিনী❜
-
কলকাতার বুকে ঘটে চলছে একের পর এক ভয়াবহ খুনের ঘটনা। সেই নগরের অভিজাত স্তরের নানা মানুষের লাশ পাওয়া যাওয়ায় নড়েচড়ে বসে শহরের পুলিশ বিভাগ। এদিকে লোকগুলো মারা যাওয়ার আগেই "সর্বনাশিনী" নামের এক ফেসবুক প্রোফাইল থেকে তাদের ডেথ ফোরকাস্ট করা হচ্ছে। কিন্তু সেই লাশগুলো পাওয়ার পরে সেগুলোর কাছ থেকে অস্বাভাবিক কোন কিছুই পাওয়া যায় না, সেই প্রোফাইলের মানুষকেও পাওয়া যায় না। ক্লুলেস সেই খুনগুলোর রহস্যভেদ করতে উঠেপড়ে লাগলেও কলকাতা পুলিশ এর কোন কূলকিনারা করতে পারে না।
-
অধিরাজ ব্যানার্জি, কলকাতার হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের বলা চলে সেরা অফিসার। একই কায়দায় একাধিক হত্যাকান্ড হওয়ার ফলে কেসটি হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টে স্থানান্তর করা হয়। সেই ডিপার্টমেন্টের অধিরাজের কাছে কেসটি আসার পরে এই কেসে যুক্ত হয় তার অধীনস্ত অর্ণব, সহকর্মী প্রবীর, ফরেনসিক থেকে ড. অসীম চ্যাটার্জি এবং আহেলী। শুরু হয় অধিরাজ এবং ❛সর্বনাশিনী❜ এর ভেতরে এক মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ।
-
এখন কে এই ❛সর্বনাশিনী❜? কেন এভাবে খুন করা হচ্ছে সমাজের উচ্চস্তরের ব্যক্তিদের? অধিরাজ এবং তার দলবল কী পারবে এই ❛সর্বনাশিনী❜ কে ধরতে? তা জানার জন্য পড়তে হবে লেখক সায়ন্তনী পূততুণ্ড এর ক্রাইম থ্রিলার ধাঁচের উপন্যাস ❛সর্বনাশিনী❜ ।
-
❛সর্বনাশিনী❜ বইটি মূলত ক্রাইম এবং সাসপেন্স থ্রিলার ঘরানার উপন্যাস। কাহিনির ভেতরে পুলিশ প্রসিডিওরাল আর ফরেনসিক থ্রিলারেরও ছোঁয়া পাওয়া যায়। বইয়ের প্লট সিরিয়াল কিলিংয়ের কাহিনি হিসেবে অনুমিত হলেও এর বর্ণনাভঙ্গি সে তুলনায় বেশ ভালোই হয়েছে। একটি টানটান উত্তেজনার থ্রিলার উপন্যাসের যে ধরণের উপাদান প্রয়োজন তার সবগুলোই এখানে উপস্থিত। তবে বইয়ের ভাষাশৈলী আর সংলাপের ব্যাপারে আরো উন্নতি হয়তো করা যেতে পারতো, বিশেষ করে বইতে যে পরিমাণে বিস্ময়সূচক যতিচিহ্নের ব্যবহার রয়েছে তা দেখে বেশ বিস্মিতই হয়েছি।
-
❛সর্বনাশিনী❜ বইটি চরিত্রায়ণের দিক থেকে তুলনামূলক দুর্বলই মনে হয়েছে। এই বইয়ের প্রধান চরিত্র অধিরাজ ব্যানার্জিকে শারীরিক বা মানসিক দুইদিক থেকেই অতিমাত্রায় সুপারহিরোইক মনে হলো। টিভিতে বিভিন্ন বডি স্প্রে- এর অ্যাডে কোন পুরুষ সেই বডি স্প্রে দেওয়ার পরে আশপাশের মেয়েরা তার উপর যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে, বডি স্প্রে ছাড়াই বইয়ের প্রায় সকল নারী চরিত্র সেভাবেই যেন পারলে অধিরাজের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অধিরাজের উপর বইয়ের নারী চরিত্রদের এই লোলুপ আকর্ষণ পুরোমাত্রায় ক্রিঞ্জি লেগেছে আমার কাছে। এছাড়া অধিরাজের ভয়াবহ ডিটেকশনের ধারে কাছে পুরো হোমিসাইড কিংবা পুলিশ ডিপার্টেমেন্টের কাউকে যেতে না দেখতে পেরে অবাক লাগলো। বইতে মাঝে মধ্যেই অধিরাজ, অর্ণব এবং ড. চ্যাটার্জি এর সংলাপের ভেতরে হিউমার ঢোকানো হয়েছে, যার বেশিরভাগই খুবই সস্তাদরের রসিকতা মনে হয়েছে। বইতে বিশেষ কয়েকটি চরিত্রের সাইকোলজি এবং ফরেনসিক প্রসিডিউরাল গুলো অবশ্য বাংলা মৌলিক থ্রিলারের হিসেবে ভালোই। বইয়ের ফিনিশিং এর ব্যাখ্যাসমূহ কতটুক বাস্তবসম্মত হয়েছে এই ব্যাপারেও খটকা থেকে যায়।
-
❛সর্বনাশিনী❜ বইয়ের প্রোডাকশনের দিক থেকে বাহ্যিকভাবে বেশ প্রিমিয়াম প্রডাকশনের বই মনে হয়েছে। বইয়ের প্রচ্ছদ এবং নামলিপি দুইটিই বইয়ের সাথে মানানসই। বইয়ের মেকাপে অবশ্য কিছু শব্দ জোড়া লেগে গিয়েছে যা না থাকলে পড়ার সময় আরো ভালো লাগতো। এছাড়া বইতে সম্পাদনা মোটামুটি ভালোই ছিলো, ছোটখাট কিছু শব্দ বাদে বানান ভুল দেখিনি।
-
এক কথায়, কিছু ব্যাপার বাদ দিলে দুরন্তগতির এক বাংলা মৌলিক থ্রিলার হচ্ছে ❛সর্বনাশিনী❜। তাই প্রধান চরিত্রের সুপারহিরোইজম, কিছু অ্যাডাল্ট সিন এবং ভাষাশৈলীর ব্যাপারগুলো উপেক্ষা করতে পারলে ক্রাইম এবং সাসপেন্স থ্রিলার প্রেমীরা ❛সর্বনাশিনী❜ বইটা পড়ে দেখতে পারেন।
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
May 8, 2022
ফেসবুকে ডেথ ফোরকাস্ট হচ্ছে-
RIP অমুক
RIP তমুক
আর ক'দিন বাদেই অমুক তমুকের লাশ পাওয়া যাচ্ছে তবে ফরেসিক বিভাগ বাধ্য হচ্ছে রিপোর্টে স্বাভাবিক মৃত্যুর কথা লিখতে। আর এই অদ্ভুত স্বাভাবিক মৃত্যুর অস্বাভাবিক মৃত্যুনামা পোস্ট করা হচ্ছে সর্বানাশিনী নামের এক কৃষ্ণাঙ্গিনীর ফেসবুক আইডি থেকে। অতিরিক্ত স্মার্ট সে, কেননা লাশের ময়নাতদন্ত শেষে কোনো কিছুই পাওয়া যায় না যেন সাদামাটা স্বাভাবিক মৃত্যু তাছাড়া ফেসবুকের আইডি ফলো করেও ট্রেস করা যায় না তাকে; সর্বনাশিনী আবার টেক এক্সপার্টও। ইতিমধ্যে আবার নতুন করে ডেথ ফোরকাস্ট হয়। কাজেই ডাক আসে গ্রীক দেবতামূর্তি ছ'ফুটি মিস্টার অধিরাজ ব্যানার্জীর। শুরু হয় টিম নিয়ে সর্বনাশা সর্বনাশিনীর খোঁজ।


লেখিকার বর্ণনার ব্যাপারগুলো আমার তেমন পছন্দ হয়নি, স্ক্রিপ্টের মতো আভাস আসে। আর বড্ড ফিল্মি ডায়লগে ভরপুর। ফরেনসিক এক্সপার্টটাকে সহ্য করাটাও একটা চ্যালেঞ্জ, যেন ফরেনসিক এক্সাপার্ট নয় জোকারই তার মেইন ফর্ম। এছাড়া বাকি সিআইডিদের ক্যারেক্টারাইজেশনও যে খুব নায়েস তাও না (কেমন ফিল্মি ফিল্মি ভাব)। তবে সর্বনাশিনী ইজ আ পার্ফেক্ট ক্যারেক্টর হিয়ার! ড্যাম গুড। যেমন সুন্দরী, তেমনই ডার্ক, তেমনই স্মার্ট মানে ভিলেন হো তো এয়সা! (রেস্টুরেন্টের মালকিন মুশকান জুবেরির কথা মাথায় আসে। দু'জন এক নয়, তুলনা করাও চলে না, তবুও একতা আছে)

টান টান উত্তেজনাপূর্ণ থ্রিলার। সিরিয়াল কিলিং নিয়ে সম্ভবত "দ্য পোয়েট" এর পর এই বইটাই পড়লাম এবং অনেকটা একইভাবে পড়েছি- বইটা নামিয়ে রাখতে পারিনি, অনেকদিন পরে বোধহয় এত রাত জেগে টানা বই পড়ে শেষ করেছি। বর্ণনার ধারা পছন্দ না হওয়া সত্ত্বেও ৪ তারা দিতে হচ্ছে।

~ ৮মে, ২০২২
Profile Image for Owlseer.
220 reviews32 followers
August 8, 2024
অধিরাজের আগের কয়েকটি বই পড়ে যা বুঝেছি তা হল:
এক. অধিরাজের গল্পে অধিরাজই আর অ্যানটাগোনিষ্টই বুদ্ধিমান প্রাণী আর বাকিরা ঘাসে মুখ দিয়ে চলাফেরা করে।
দুই. হাস্যরসের নামে চরিত্রদের কার্টুন বানানো।
তিন. অধিরাজ কোন মানুষ-না সে অতিমানব।
চার. অধিরাজ নারী অফিসারদের পদবী মনে রাখতে পারে না।
স্বাভাবিকভাবে, সর্বনাশিনী যেহেতু অধিরাজের আরও বই, তাই উপরে বর্ণিত পয়েন্টগুলো এ��� বইয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

যাই হোক, সর্বনাশিনী তে দেখা যায়, শহরের ধনকুবেরদের পরপর মৃত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে, এবং তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু স্বাভাবিক হলেও, পুলিশ কেসগুলো বন্ধ করেনি। ঠিক সেই সময়, তদন্তকারীরা এক বিস্ময়কর তথ্য আবিষ্কার করেন। এই সব ধনকুবেরদের লাশ পাওয়ার কয়েকদিন আগেই তাদের মৃত্যুর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল একটি ফেসবুক আইডি থেকে। সেই আইডির নাম সর্বনাশিনী, ��বং প্রোফাইলে রয়েছে এক সুন্দরী কৃষ্ণাঙ্গীর ছবি। এ যেন এক বাস্তব জীবনে মৃত্যুর পূর্বাভাস! এই রহস্যময় আইডির প্রতিটি পোস্ট দিচ্ছে আতঙ্কের বার্তা। কেউই জানে না, কে এই সর্বনাশিনী? কী তার উদ্দেশ্য? আর কীভাবে সে জানছে এসব ধনকুবেরদের মৃত্যুর সময়? নাকি সে-ই খুন করছে এই সব ধনকুবেরদের? তাহলে ফরেনসিক কেন বলছে এই মৃত্যুগুলো স্বাভাবিক?

এই কেসটি এখন সিআইডির হাতে, এবং এর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চৌকস অফিসার অধিরাজকে। কিছুক্ষণ আগেই এসেছে আরও একটি ডেথ ফোরকাস্ট। শহরের বড় বড় ধনকুবেরদের মধ্যে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে, এবং পুরো দেশ জুড়ে চলছে উত্তেজনা। অধিরাজ এবং তার দল কি পারবে এই রহস্যের সমাধান করতে? কে এই সর্বনাশিনী? এবং কেন সে ধনকুবেরদের টার্গেট করছে?

এই প্রিমাইসটুকুই যেকোনো থ্রিলারপ্রেমিকে আটকে ফেলার জন্য যথেষ্ট, আর তার সাথে রয়েছে লেখিকার লিখনশৈলী। কিন্তু তারপরও বইটি আমার ভালো লাগলো না। অন্যান্য অধিরাজ বই থেকে এই বইটি খুবই দুর্বল লাগলো। এই বইতে অধিরাজ বাদে অর্ণব, ডা. চ্যাটার্জী সহ অন্যান্য চরিত্রকে প্রচুর পরিমাণে বুদ্ধিমানহীন করা হয়েছে। তাছাড়া অধিরাজ হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় থাকার মধ্যেও কেসের ক্লু দেন সবাইকে, আবার হাসপাতালে সে ইন্টারোগেশন করে—মানে কী এইসবের! অধিরাজ ছাড়া কি সিআইডি সম্পূর্ণ অচল? লেখিকা অধিরাজকে এত পরিমাণে এই বইতে গ্লোরিফাই করেছেন, মনে হচ্ছিল অধিরাজ কোন অতিমানব-না, সে ঈশ্বর হয়ে গেছে। তাছাড়া আমরা সকলেই জানি, অধিরাজ নারী অফিসারদের পদবী মনে রাখতে পারে না কিন্তু এই বইতে তো বেশিরভাগ সন্দেহভাজনই ছিলেন নারী, কিন্তু তারপরও অধিরাজ তাদের নাম ও পদবী দিব্যি মনে রাখতে পেরেছিল। এখন আমার সরল মনে প্রশ্ন জন্মালো, তাহলে অধিরাজ নারী অফিসারদের পদবী মনে রাখতে পারে না কেন? হয় সে মনে না রাখতে পারার নাটক করে, নাহলে এটা লেখিকার লেখার একটি দুর্বলতা। আমি প্রথমটা অর্থাৎ অধিরাজ যে নাটক করে তাই ধরে নিলাম। এছাড়া লেখিকার উদ্দেশ্যে আমার একটি প্রশ্ন, সুন্দরী নারী মাত্রই কী তাকে শরীরে ট্যাটু করতে হবে? না মানে, এই উপন্যাসের সকল সুন্দরী নারী চরিত্রের শরীরে ট্যাটু রয়েছে তাই জিজ্ঞাসা করলাম আর কি। যাই হোক, এই উপন্যাসে হাস্যরসের নামে চরিত্রদের দ্বারা বস্তাপচাঁ কিছু হিউমার পেয়েছি।

মোটের উপর, বলা যায় সর্বনাশিনী একটি পিওর অখাদ্য।
Profile Image for Ananna Anjum .
191 reviews11 followers
June 16, 2022
আশা করেছিলাম দারুণ কিছু হবে, কিন্তু তা মোটেও হল না। পড়তে যেয়ে খুব বিরক্ত বোধ করছিলাম, বইটি যেহেতু ধরেছি সেহেতু শেষ করতে হবে এজন্যই পুরোটা পড়েছি। অনেক বার মনে হয়েছে লেখিকা স্রেফ ইচ্ছে করে গল্পটা টেনে বড় করেছেন।
ভালো লাগে নি।
Profile Image for Tonmoy Biswas.
14 reviews23 followers
April 25, 2019
Tonmoy Biswas
11 hrs ·
#পঠতি_পঠতঃ_পঠন্তি
#সর্বনাশিনী- সায়ন্তনী পূততুণ্ড
#প্রচ্ছদ- স্বপন কুমার চন্দ
#বিভা_পাবলিকেশান

বাংলায় হটকেক কত বিক্রি হয় আমার জানা নেই। কিন্তু কালিয়ার চপের মত তাঁর বইয়ের উড়ে যাওয়ার কথা কারোরই তেমন অজানা নয়। আমিও তাদের মধ্যে একজন। হাওয়ার খবর পেলেই, পালক ধরে আনতে দেরি করি না বিন্দুমাত্র।

থ্রিলার জানি না, তবে মনের গভীর নিয়ে এত ডিটেলড, সফল ও ধারাবাহিক কাজ বাংলায় কেউ করেছেন বলে তো আমার মনে হয় না। শুধু সাইকো থ্রিলার নয়, সাইকোলজিক্যাল গল্পেও লেখিকার পারদর্শিতা নজর কাড়ার মত।

প্লিজ কেউ পার্সোনালি নেবেন না। কিন্তু কী বলুন তো বাংলার অনেক লেখিকাই থ্রিলার সাহিত্য নিয়ে বিস্তর ছোটাছুটি করলেও, চোখ বন্ধ করলে মাথার ভেতর মশাল জ্বালার মত একটা নামই ভেসে আসে বারবার। আর সেটা সায়ন্তনী পূততুণ্ড (লেখিকাকে তাঁর নতুন প্রেমিকের জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন 😉)।

তো এই সব কেত্তন থেকেই "সর্বনাশিনী" কেনা (পড়ুন ঝাঁপা) ও পড়া। বাসে যেতে যেতে পড়ার মত সাইজ। প্রচ্ছদ আঁকা হিসেবে ভাল হলেও, অ্যাজ আ সেলিং থিং-- পাতে দেওয়ার যোগ্য নয়। তুলনায় ক্যালিগ্রাফিটা ভাল বলা চলে।

বইয়ের কোনো ভূমিকা নেই। পাঠক সরাসরি ঢুকে পড়ে গল্পের আঙিনায়। থুড়ি বেডরুমে! কোনো এক মহাপুরুষ বলে গেছিলেন, “বইয়ের প্রথম লাইনে একজন মারকাটারি সুন্দরীকে আনো, প্রথম প্যারায় তার সমস্ত জামা-কাপড় খুলে দাও আর তার পরের পুরো চ্যাপটার জুড়ে তাকে খুন করো বা তার হাত দিয়ে রক্ত ছোটাও অন্য কারোর। ব্যস! আর চিন্তা করতে হবে না। তোমার বই সুপার ডুপার হিট!" এক্ষেত্রে হয়েছে দ্বিতীয়টি। আর তার থেকেই শুরু হয় সর্বনাশিনীর আসল খেলা।

এক অজ্ঞাত ফেসবুক প্রোফাইলে পড়তে থাকে একটার পর একটা ডেথ ফোরকাস্ট! কেঁপে ওঠে গোটা কলকাতা। নিদেনপক্ষে গল্পের কলকাতা তো বটেই। তারপর যেমন হয় আর কী। এই সব কেস গল্পের স্বার্থেই হয়ে উঠবে ঘোরালো। আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে পাওয়া যাবে না। শহরের কোত্থাও খোঁজ মিলবে না সর্বনাশিনীর!

আর বাকি গল্পটুকু রাজা-রানীর। স্পয়লার না দিয়ে এইটুকু বলা যায়, পুরো উপন্যাসই দাঁড়িয়ে আছে সাদা কালোর ৬৪ ঘরের ওপর। কালো রানী নাকি সাদা রাজা? বোড়ের আড়ালে কে খেলছে দাবার চাল? কেন ডাম্প করে রাখা গজের (পড়ুন লম্পটের) লাশে পাওয়া যায় না কোনো খুনের দাগ?

এই নিয়েই গল্প। টিম অধিরাজের ছুটে চলা। আর সেই ছুটে চলার পথ কিন্তু যথেষ্ট ধারালো। নরম চামড়ায় গেঁথে যাওয়া নখের মত সেই ছোটার মধ্যে এসে পড়ে একটার পর একটা ডেড এন্ড। আর তারপর সেই ডেড এন্ডে এসে গোড়ালি ঘোরানো একটার পর একটা টুইস্ট! দাবার বোর্ডের ওপর বোনা হতে থাকে একটার পর একটা সাইকোলজিক্যাল জাল।

পড়ার পর অনায়াসেই “যুক্তির জালে আমার হৃদয়, অবহেলে তুমি করে নিলে জয়...” গাইতেই (পড়ুন চেঁচাতে) পারতাম, কিন্তু বাধ সাধল হরলিক্সে! হ্যাঁ যে গল্পটা ২০০ পাতাতেই দিব্যি হ্যাপি এন্ডিং হতে পারত। সেটা কে কেন যে অযথা "টলার, স্ট্রংগার, শার্পার" করে তোলার দরকার পড়ল! কেন যে সিরিজ লেখা হওয়া সত্ত্বেও গল্পের নায়কের পাতার পর পাতা বর্ণনা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ল! হ্যাঁ গল্পের স্বার্থে এর কিছুটা দরকার ছিল বৈকি! কিন্তু লেখিকা অধিরাজকে "ক্রাশ বন্দ্যোপাধ্যায়" বানাবার জন্য এতটা বদ্ধপরিকর না হলেও পারতেন। আমরা ফেলুদা, ব্যোমকেশের বর্ণনা গোটা সিরিজে কতবার পাই? তা সত্ত্বেও পুরো বাঙালি জাতটার ক্রাশ অ্যান্টেনা, আজও বয়ঃসন্ধি পেরলে ওই দুয়ের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়। পাঠক হিসেবে আমার ধারণা, চরিত্র ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে র‌্যানড্রম স্ট্রোক, ছবিটাকে ধ্যাবড়া করা ছাড়া কোনো কাজেই আসে না তেমন। আসল মাপকাঠি হল অল্প আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা। কয়েকটা মাত্র টানে কতটা এনে দেওয়া যায় তার পুরুষালি হাবভাব, তার চলাফেরা। এমনকী তার স্বভাব চিরিত্র পর্যন্ত।

নইলে অলরেডি থার্ড ডিগ্রির মধ্যে দিয়ে যাওয়া একজন সাইকোকিলারের চোখে গোয়েন্দা অফিসারের রূপবর্ণনা! না মানে দেশে আইনকানুন হয়েছে বটে আজকাল। সমর্থনও করি। কিন্তু তা বলে...

যাকগে আর যেটা বলার ছিল। কী বলুন তো, কমার্শিয়াল সিনেমার স্ক্রিপ্ট হিসেবে যেগুলো মানায়, বাস্তবের গা ছুঁইয়ে লেখা থ্রিলারে সেগুলো বেশ বিরক্তিকরই লাগে। মায়ের ছোঁয়া পেয়ে ডেলিরিয়ামে থাকা ছেলের শান্ত হয়ে যাওয়া বা কিছু কিছু জায়গায় অবিশ্বাস্য অ্যাকশান সিকুয়েন্সগুলো যেকোনো সিনেমা হলে হাততালি, সিটি, গাঁদাফুল কুড়াতে পারলেও, (সৎ )পাঠক��র পিঠচাপড়ানি কতটা পাবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

আর এই সিরিজের অন্যতম একটা স্ট্রেন্থ হল থ্রিলারের সাথে হিউমারের চমৎকার ব্যবহার। এই মকটেলের ব্যাপারটা লেখিকা অন্যান্য বইগুলোতে প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন এবং সেই স্ট্রেন্থ পয়েন্টে অতিরিক্ত ভর দিতে গিয়ে এই বইয়ের সেই অংশটাও ঝুলে পড়েছে ভালমতই।

তবে সব থেকে বেশি ঝুলেছে বইয়ের শেষ কয়েক অধ্যায়ে। নর্মালি রহস্য গল্পের এই পর্যায়ে এসেই লেখক নামের ম্যাজিশিয়ানরা পাঠকের টেবিলের মেলে ধরে তার এ যাবৎ তুলে রাখা সমস্ত তাস, ব্যাপারটার মধ্যে একটা আলাদা রোমান্স আছে বস। কিন্তু এই বইয়ে সেই রোমান্সটুকু খুঁজতে হলে আপনাকে একজন টেস্ট পেপার প্রেমী হতে হবে। হ্যাঁ ঠিকই শুনলেন, টেস্ট পেপার। ওখানে যেমন সারা বইয়ের উত্তর শেষ কয়েক পাতায় ভরা থাকে? এখানেও তাই। শেষ কয়েকটা পাতা পড়তে লিটারেলি আমার ক্লান্ত লাগছিল। তাও কোয়েশ্চেন নাম্বার দিয়ে উত্তর দেওয়া নেই এই বাঁচোয়া।

বাকি বলতে একটা কথাই বলার। এই বইয়ের জন্য লেখিকা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন। দাবার গুটি ও মানুষের প্রতিশোধ স্পৃহাকে সম্বল করে যে রহস্যের জাল তিনি বুনেছেন তা যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে। শুধু স্ট্রেন্থ পয়েন্টগুলোতে বেশি করে তুলি চালাতে গিয়ে খানিক জল পড়ে গেছে। এই আর কী!
Profile Image for Madhurima Nayek.
361 reviews135 followers
May 24, 2021
Highly Recommended 👇

অধিরাজ #৩

প্রথমেই যখন দেখি ৩৫১ পৃষ্ঠার বই, তখন ভাবছিলাম এতো বড়ো... কবে শেষ করবো !?
যখন পড়তে শুরু করলাম, পাতার পর পাতা নিমেষে শেষ করে ফেলছিলাম। বুঝতেই পারছেন কাহিনী কতটা দ্রুতগতিসম্পন্ন।সম্পূর্ণ উপন্যাস একটা রহস্যের চাদরে মোড়া,পাতায় পাতায় এসেছে টুইস্ট অ্যান্ড টার্ন,সাথে হিউমারও অ্যাড করেছেন লেখিকা। অপরাধীর বুদ্ধিমত্তা দেখে মুগ্ধ হয়েছি,সিম্পলি জিনিয়াস।খুনের পদ্ধতি কি ইউনিক, উফফফ.... পুলিশকে একদম নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছে।এই সর্বনাশিনীর পেছনে যে মহিলা আছে তাকে দুর্দান্ত লেগেছে আমি কিন্তু সর্বনাশিনীর সাপোর্টে আছি।অনেকদিন পর এরকম টানটান থ্রিলার পড়লাম, শেষ না করে উঠতে মন চাইবে না।
এ বই পাঠকেরা নিঃসন্দেহে গিলে খাবে "Like hot kochuris"(লালমোহনবাবুর ডায়ালগটা ধার নিলাম😉)। প্রচ্ছদে উষ্ণতার ছোঁয়া, এবং যথেষ্ট আকর্ষণীয়, তবে ওটাই যদি লাভ বাইট দেবার ছবি হত তাহলে বেশ ম্যাচ করতো। এই প্লট দিয়ে ওয়েব সিরিজ বানালে কিন্তু দারুন চলবে। এরপর থেকে আমি অধিরাজ সিরিজের ভক্ত হয়ে গেলাম। বইটা পড়ে পরিপূর্ণ তৃপ্তির স্বাদ পেয়েছি।পাঠকেরা বইটি অবশ্যই পড়ুন নাহলে এরকম দারুন একটা জিনিস মিস করে যাবেন।
Profile Image for Tanim Rahman Papon.
14 reviews41 followers
March 8, 2022
পুলিশ ইনভেস্টিগেশন, ফরেনসিক রিপোর্ট এসব নিয়ে এতো সুবিস্তৃত মৌলিক থ্রিলার বাংলায় আমি আর পড়িনি।
সায়ন্তনী পূততুন্ড এর লেখার সবচেয়ে ভালো দিক হলো উনার লেখনশৈলী এবং গল্প বলার ভঙ্গি, অতি চমৎকার।
বইয়ের মূল ক্যারেক্টার অধিরাজ বন্দোপ্যাধায়ের পাশাপাশি পার্শ্ব চরিত্র গুলোর দিকেও লেখিকা বেশ ভালো নজর দিছে, অর্নব, পবিত্র, ড.চ্যাটার্জী ক্যারেক্টার যার কারণে বেশ ভালো লাগছে। সামনে অধিরাজ সিরিজের বাকি বইগুলোও পড়ার ইচ্ছা আছে।
বইয়ের মূল গল্প না বলি, ফ্ল্যাপ পড়লে সবাই অল্পস্বল্প ধারণা পাবেন। তবে ডার্ক, সিরিয়াল কিলিং, পুলিশি তদন্তের থ্রিলার যারা পড়তে পছন্দ করেন তারা এই বই নিঃসন্দেহে হাতে তুলে নিতে পারেন।

শুনলাম এই বই নিয়ে সামনে ওয়েব সিরিজ হতে যাচ্ছে।
Profile Image for Nazrul Islam.
Author 8 books228 followers
February 19, 2025
ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মারলেন লেখিকা। সুপার্ব
Profile Image for Mahrin Ferdous.
Author 8 books208 followers
June 6, 2022
ক্রাইম সাস্পেন্স থ্রিলার হিসেবে বইটি বেশ উপভোগ্য। কিছু ক্ষেত্রে অতিনাটকীয়তা বাদ দিলে এবং কাহিনি টেনে টেনে দীর্ঘ না করলে আরও বেশি ঠাস বুনটের উপন্যাস হতো।
Profile Image for Samma Irtifa.
43 reviews12 followers
May 18, 2022
"সাদা আর কালোর খেলায় আপনাকে স্বাগতম। সেটা দাবা হোক কিংবা গায়ের রঙ।"

দুর্দান্ত একটা থ্রিলার পড়লাম। শুরু থেকেই কাহিনীতে টানটান উত্তেজনা। এন্টাগোনিস্ট আর প্রোটাগোনিস্ট চরিত্রের সমানে সমান লড়াইটা ভালোই জমিয়েছেন লেখিকা।

"সর্বনাশিনী" সিআইডি অফিসার অধিরাজ ও অর্ণব সিরিজের বই। সর্বনাশিনী নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে খুনী চরিত্র নারী। তবে সেই নারীকে খুঁজতে যেয়ে কত নারীর দরবারে হাজিরা দিতে হলো গোয়েন্দা অধিরাজ আর তার সহকারী অর্ণবকে তা পড়ে রীতিমতো চমকাতে হয়েছে। বাজাজ আর জয়সওয়াল টাইটেলের ভিড়ে পাঠক যে কয়বার থই হারাবে তা আর নাই বা বললাম!! ওহ, সে কি এক রহস্যরে বাবা!!

বইটা শুরু করার আগে এতোটা আশা ছিলোনা। সায়ন্তনী পূততুন্ডের বই প্রথমবার পড়লাম। শুরু যে করলাম, দিন-রাত এক করে এই বইয়ের মধ্যেই ডুবে ছিলাম। অসংখ্য চরিত্র, তারপরেও যেন গোছানো একটা কাহিনী। কোথাও একটুও ধীর হয়নি। বেশ ভালো রকমেই মস্তিস্ককে উত্তেজনা দিয়েছে বলা যায়।

বোরিং সময় কাটছে? নয়তো রিডার্স ব্লকে আছে কেউ? তাহলে মাস্ট রিড হিসাবে সাজেস্ট করবো বইটা। শুরু করলে ফেলে রাখতে পারবেন না...
Profile Image for Ananya Mandal.
211 reviews
July 1, 2021
আমার personal মতামত... slang থাকলে আমার বই পড়ার আনন্দ মাটি হয়ে যায়...
নতুন বাংলা authors দের লেখা পড়ে দেখব বলে এই বই টা ধরেছিলাম... গল্প হয়তো present সামাজিক চিত্র অনুযায়ী apt... but কোনো character এর প্রায় কোনো depth পেলাম না... Hero গুলি খাওয়ার পরে ও তার জন্য কোনও feelings হলোনা...
লেখার ধরন পড়ে মনে হয় বাঁধন ভালো, good editing but very cheap at times. Jokes ও খুব shallow লাগলো...ফর্সা কালো সুন্দর কুৎসিত ছাড়া কিছু নেই আর... for men and for women characters.
Sayantani Putatunda র historical fiction probably better than her thrillers. #disappointed
Profile Image for Ratika Khandoker.
300 reviews33 followers
February 15, 2022
বাবারে বাবা!! দারুণ বই!!
বইখানা প্রি-অর্ডার দিতে গিয়েও দিলুম না টাকা পয়সার স্বল্পতার জন্যে,ভাবলাম পিডিএফ পড়ে ফেলি।এখন আফসোস হচ্ছে,এমন বই নিজের কালেকশন এ রাখাই উচিত ছিলো। সে যাকগে,সায়ন্তনী পুততুণ্ডর সাথে আমার পরিচয় ইউটিউবে বিভা ক্যাফে,মিডনাইট হরর স্টেশন ইত্যাদি ইত্যাদিতে।দুর্দান্ত থ্রিলার লেখেন।এই উপন্যাস ও ব্যতিক্রম নয়।শুরু থেকে শেষ অব্দি এমন টানটান উত্তেজনা নিয়ে পড়েছি। সচরাচর যা হয়,আমি ধরে ফেলি অপরাধীকে।এক্ষেত্রে তা হয়নি।কারন
১.অনেকগুলো চরিত্রের আগমন এবং তাদের একি ধরনের নামের জন্যে।
২.কিছুটা ড্রামাটিক ব্যাপার স্যাপার হয়ে যাওয়ায়।আমি বাপু অত একতা কাপুর স্টাইলে ভাবিনাই,রিয়���লিস্টিক পথেই ভাবছিলাম।
একতারকা কাটলাম গল্পের প্রোটাগনিস্ট থেকে শুরু করে প্রায় সবারই বাড়াবাড়ি সৌন্দর্যের জন্যে।শ্বেতপাথরের মত মসৃণ সাদা ত্বক,একরাশ মেঘকালো চুল,ধারালো চেহারা,বলিষ্ঠ দেহ গ্রীক দেবতার মত ব্লাহ ব্লাহ এগুলো এত বেশি!
আবার যাদের কুচ্ছিত করেছেন,তাদের ও বাড়াবাড়ি কুচ্ছিত করেছেন। সাধারন দেখতে বলতে গেলে কেউই নেই।
অল ইন অল,খুবি দারুণ রিডিং এক্সপেরিয়েন্স।এই সিরিজ এর বাকি বইগুলো পড়বো ভাবছি,তবে কিনে 😅!
Profile Image for Gourab Mukherjee.
164 reviews24 followers
September 6, 2025
একদম হাত থেকে একমুহুর্তের জন্য নামিয়ে রাখা যায়না এমন টানটান একখানা মার্ডার ইনভেস্টিগেশন থ্রিলার। কিছু আপত্তি এদিক ওদিক থাকলেও শতকরা নব্বই ভাগই চমৎকার লেখা।
🍄 প্রত্যেকটি চরিত্র সুন্দর করে লেখা। সবার psyche সুন্দর ভাবে দাঁড় করানো, কাউকে overacting বা বাড়াবাড়ি লাগবে না। এটাই লেখিকার USP বোধহয়।
🍄 কিছু ভালো চোর- পুলিশ চেস সিকোয়েন্স আছে। সারাক্ষণ শার্লকের মত deduction-deduction খেলা নয়। মাঝে মাঝে বেশ রোমহর্ষক।
🍄 আর আসল লড়াই ক্রিমিনাল আর ইনভেস্টিগেটিং অফিসারের মগজাস্ত্রের লড়াই, যা পুরোটাই ভিতরে ভিতরে।
🍄 আরেকটা জিনিস বেশ আলাদা লেগেছে, ভালো লেগেছে। 💕 গল্পের 75% এ গিয়ে নায়ক 168ঘণ্টার জন্য hospitalized। কিন্তু বাকি সবাই বেকার নয়। তারা রীতিমত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, ও দূর্দান্ত ক্লু বের করছে। এরা কেউ হোমসের লেস্ট্রাড নয়।

🙄 খামতি বলতে কিছু পেটে লাথ মেরে হাসানোর দৃশ্য আছে। কিন্তু ওটা হয়তো না দিলে ব্যালেন্স আসতো না, তাই ওটুকু মানাই যায়।

মোটের ওপর বলব "ভুলেও স্কিপ করবেন না" গোছের বইয়ের আওতায় পড়ে এই বই। কাজেই ভুলেও.........
Profile Image for Pranta Dastider.
Author 18 books329 followers
March 22, 2021
Nice story, but way too lengthy. This could have been 150 pages less, and that would have been fine. Medical terms and killing process is unique. The antagonist is good enough. Everything else works. But, the story didn't demand it's length, it felt highly forced.
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
May 10, 2022
নীহাররন্ঞ্জনের কীরিটী রায়ের মত একটা অতিনাটকীয় ভাব আছে, নয়তো ৩ দেয়া যেত।
Profile Image for Aniruddha Sau.
14 reviews1 follower
September 5, 2019
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া
#সর্বনাশিনী
#সায়ন্তনী_পূততুন্ড
BIVA Publication
#মুদ্রিত_মূল্য_299

কদিন আগেই কলকাতা বইমেলা থেকে এক ব্যাগ বই কিনে কিঞ্চিৎ স্ত্রী – রোষের সম্মুখীন হয়েছিলুম। বইয়ের আলমারিতে ‘ঠাঁই নাই’ অবস্থা হওয়ায়, আপাতত বউয়ের শাড়ির বাক্সগুলো হাতিয়ে বই রাখার অস্থায়ী জায়গা বানিয়ে ফেলায় রীতিমত তম্বি করে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আগে একটা বুক শেলফ বানাও, তারপর বই কিনবে।‘
আমতা আমতা করে জবাব দিয়েছিলুম, ‘পে – কমিশনটা পেলেই....’
- ‘ ওঃ, তাহলে আর বুক শেলফ, ইয়োরসেলফ হয়ে উঠলো না এ জন্মে।‘ যুক্তিনির্ভর অনুমান করেছিলেন আমার গিন্নি।
তবু বিভা সামার সেলের দুর্দান্ত অফার পেয়ে শ্বশুরনন্দিনীর অজান্তেই অর্ডার করে ফেলি দুখানি বই। তার মধ্যে অন্যতম হল - ‘সর্বনাশিনী’। এত বই থাকতে হঠাৎ এই বই কেন? সেই ব্যাপারটা আগে খোলসা করে নিই আপনাদের কাছে।

আধুনিক ক্রাইম থ্রিলার সম্বন্ধে খুব বেশি ধারণা আমার ছিল না। কোনান ডয়েল, আগাথা ক্রিস্টির বাইরে বাংলায় সামান্য যা কিছু পড়েছি তা ওই ফেলুদা, ব্যোমকেশ কিংবা কাঁটা সিরিজের পি কে বাসু পর্যন্তই। আধুনিক থ্রিলারের গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পেতেই গত এক বছরে বেশ কিছু আধুনিক লেখকের লেখা পড়তে শুরু করি। কিন্তু বলা বাহুল্য, আদৌ সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এমতাবস্থায় লেখিকা সায়ন্তনী পূততুন্ডর নাম প্রথম জানতে পারি সুলেখিকা বন্ধু আত্রেয়ী দত্তর একটা পোস্টে। Atreyee এর পছন্দের ওপর ভরসা আমার ছিল, আর তাই সাহস করে কিনে ফেলি বর্তমান সময়ের সাড়া জাগানো এই থ্রিলার, ‘সর্বনাশিনী’। গত দু- দিনে গোগ্রাসে এ বই উদরস্থ করার পর আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া,’ভাগ্যিস কিনেছিলুম।‘

বইয়ের কাহিনী অনেকটা এরকম : কলকাতা পুলিশের ঘুম উড়ে যায় বেশ কয়েকটি সিরিয়াল কিলিংয়ের ঘটনায়। রহস্য জটিল হয় এক কৃষ্ণাঙ্গী সুন্দরীর ফেসবুক প্রোফাইলকে ঘিরে। লক্ষ্যনীয় এটাই, প্রত্যেকটি মানুষের মৃত্যুর ফোরকাস্ট ঘোষিত হয়েছিল হত্যার বেশ কয়েকদিন আগেই ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে। এদিকে ফরেনসিক পরীক্ষায় আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় সমস্ত মৃত্যুগুলো একেবারেই স্বাভাবিক। কেস চলে আসে সি আই ডি, হোমিসাইডের সবচেয়ে তুখোড় অফিসার অধিরাজ ব্যানার্জির আন্ডারে। অতঃপর সর্বনাশিনীর এই সর্বনাশী খেলা বন্ধ করতে তৎপর হয় সি আই ডি বিভাগ। অধিরাজ আর অপরাধীর মধ্যে শুরু হয় মগজের লড়াই। ঠিক দাবার মতই দুজনের মধ্যের সাইকোলজিক্যাল খেলাটা একেবারে আল্টিমেট লেভেলে গিয়ে পৌঁছায়। শেষমেষ পর্দা ফাঁস হয় আততায়ীর। গল্প শেষ হবার পরেও একটা সংশয় কাজ করে, কাকে ভালো বাসব? সাদা রাজা নাকি কালো রানীকে?

কোনো সন্দেহ নেই, চুম্বকের মত আঁটকে রাখার সমস্ত উপকরণ রয়েছে এই বইয়ে। অনাবিল গদ্য, সাবলীল বর্ণনা, স্মার্ট ডায়লগ এবং কৌতুকের উপস্থিতি বইটিকে অন্যমাত্রা দিয়েছে। সাহিত্যগুন যথেষ্ঠ বেশি, যা কিনা বাজার চলতি থ্রিলারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হয়। আর এজন্যেই এ বইয়ের কাহিনী ঘটনাক্রমের নিরস বিবরণী হয়ে ওঠেনি। এই সর্বনাশিনী আসলে কোন সুন্দরী সেটা একেবারে শেষের দিকে না গিয়ে বোঝা যাবেনা বলেই আমার ধারণা। মুদ্রণ প্রমাদ প্রায় নেই বললেই চলে, প্রচ্ছদ আকর্ষণীয়, শুধু দামটাই একটু বেশি। তবে বইয়ের গুনগত মান অনুযায়ী সেটা আপত্তিজনক নয়। শুধু একটাই কথা বলবার, কয়েকটি অংশ কিঞ্চিৎ স্ফীত মনে হয়েছে আমার। অন্তত আরো তিরিশটি পাতা কম হলে আরেকটু স্লিম, আরেকটু টানটান হয়ে উঠতে পারত এই কাহিনী।

সবশেষে একটা খবর না দিলেই নয়, আমার গিন্নিও কখন যেন বইটি পড়ে ফেলেছেন। যিনি কয়েকদিন আগেই বই না কেনার ফরমান দিয়েছিলেন, সেই তিনিই এইমাত্র হুকুম করলেন, ‘এই অধিরাজ সিরিজের বাকি আর কোনো বই থাকলে ঝটপট অর্ডার করে দাও।‘

আপনারাও যদি এরকম বিপদে পড়তে চান, বইটি একবার কিনেই ফেলুন। মাত্র দশটা পাতা পড়ার পরেই দেখবেন লেখিকা তাঁর অনন্য লিখন শৈলী দিয়ে কখন যেন বন্দি করে ফেলেছেন আপনাকেও।
Profile Image for Arka Chakraborty.
151 reviews2 followers
January 17, 2021
এ গল্পের টার্গেট অডিয়েন্স এর মধ্যে আমি পড়িনা . সত্যি বলতে এর আগেই সায়ন্তনী দেবীর কিছু ছোটগল্প পড়ে মন্দ লাগেনি. সেই জন্য উপন্যাসটি ধরি. কিন্তু তার পর পুরো ছেড়ে-দে-মা-কেঁদে-বাঁচি অবস্থা! ছেড়েই দিতাম কিন্তু পয়সা দিয়ে কিনেছি আর নিজের মাতৃভাষার প্রতি স্নেহের কথা ভেবে পারলাম না! ইংরেজি হলে দুচ্ছাই করে দিতাম ! গল্প যে খুব খারাপ তা বলবো না. কিন্তু বলার ধরণ বড়ই বিরক্তিকর! হিউমারের নামে যে ছ্যাবলামো আছে এতে, তা পড়তে পড়তে বার বার মুখ দিয়ে "ধুস্সালা" বেরোচ্ছিল! আর চরিত্রায়ন! অধিরাজ বাবুর যদি গুলি না লাগতো তবে ভগবান-শ্রেণীর গোয়েন্দা কাকে বলে লেখিকা দেখিয়ে দিতেন! গল্পে ফর্সা, ��ুন্দরী, ট্যাটু-ওয়ালা, ভয়ংকর ব্যক্তিত্ব দিয়ে পুরুষদের কুটি-কুটি করে কেটে ফেলা মহিলাদের হাট বসেছে ! চাষ করে ফেলেছেন! (একটা জিনিস বলে রাখা ভালো, যদি মাচো উপন্যাস বা সিনেমার কেউ উদাহরণ টেনে আন্তে চান, তো খেয়াল করে দেখবেন সেখানে হয়তো গল্পটা ঠিক করে বলা আছে. যেমন জ্যাক কেচামের ''দ্য ক্রসিংস''. দারুন গল্প নয় কিন্তু ভালো ভাবে বলা গল্প. আর যদি তা না হয় তো সে গল্পও পড়ার অযোগ্য! ) এখানে সব কিছুই সুপারফিশিয়াল লেভেলে হচ্ছে...প্রায়! ভালো দিক অবশ্যই আছে. মনস্তত্ত্ব. বিশেষ করে চাইল্ড সাইকোলোজি আর চাইল্ড এবিউজ! তবে যাদের এতো খুঁতখুঁতানি নেই তার নির্দ্বিধায় পড়ে ফেলতে পারেন!
Profile Image for Sourav Das.
70 reviews5 followers
May 23, 2021
অনবদ্য।

এরকম টানটান থ্রিলার ভাবাই যায়না। লেখিকার সাবলীল লেখা পাঠককে আটকে রাখবেই।
আই জি অধিরাজ ব্যানার্জী - দ্যা সুপারকপ। এই ব্যক্তিটির ব্যক্তিত্বের ভক্ত হলাম। আধুনিক গোয়েন্দাপ্রবর হিসেবে ইনি যথেষ্ট প্রসংশার দাবিদার। তবে এই গল্পে ভিলেন এর চারিত্রিক বিশিষ্টতা লেখিকা দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। হ্যাটস অফ তাকে।

থ্রিলার প্রেমীদের জন্য এটি একটি অবশ্য পাঠ্য।
Profile Image for Snehasis Das.
57 reviews1 follower
July 10, 2021
Getting addicted to these two duo Adhiraj and Arnab.

But fell in love was always for the truculent and wily villain for the machinations including layers, subplots and all the dirtiest things with cumbersome back story.

PS: This should be the first story before "chupi chupi asche" (this one is sort of second level of cruelty or thrill)
Profile Image for Mohana.
100 reviews8 followers
February 21, 2023
সায়ন্তনী পূততুন্ড এর লেখা থ্রিলার যারা পড়েছেন তারা প্রত্যেকেই জানেন ওনার বই শেষ না করে ওঠার কোনো উপায় নেই, টান টান উত্তেজনা নিয়ে গ্যাট হয়ে একজায়গায় বসে পুরো বই শেষ করে তবে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেওয়া যায়, তাতে হয়তো বাদ পড়তে পারে আপনার নিজের খাওয়া দাওয়া, স্নান, কাজ, পড়াশোনা....তাতে কিচ্ছু করার নেই, আপনি কোনোমতেই উঠতে পারবেন না। এই বইটাও সেই ধর্ম যথাযতভাবেই বজায় রেখেছে।

অধিরাজ সিরিজের প্রত্যেক বইতেই একটি করে সামাজিক ইস্যু কে হাতিয়ার করেন লেখিকা, এখানেও তার অন্যত্র হয় না। অধিরাজ অর্ণবের কেমিস্ট্রি এবারেও বেশ মনোরঞ্জন করলো, সাথে ডঃ চ্যাটার্জীর কমিক রিলিফ, যদিও কিছু জায়গায় তার কমিক রিলিফ বড্ড বেশি ভাঁড়ামো মনে হয়েছে। ঠিক একইভাবে পবিত্রর কমিক রিলিফগুলোও বেশ বিরক্তিকর, খুব সিরিয়াস দৃশ্যে যখন ওঁত পেতে নির্জনে বসে আছে সবাই খুনিকে ধরবে বলে তখন একজন সি.আই.ডি অফিসার ওরকম ভাবে ভাঁড়ামো করলে ব্যাপারটা হাসির বদলে বিরক্তিই দেয়, নিজেরই মনে হয় এ এত আনসিরিয়াস কেন!

কেসটা এবারেও খুব সুন্দরভাবে সাজিয়েছিলেন লেখিকা, কিছু কিছু জায়গা বাদে এবং শেষে টুইস্ট থাকলেও আমার ঠিক টুইস্ট মনে হয়নি ব্যাপারটা। তার কারণ আমার প্রেডিকশন মিলে গেছে। ফলে থুতনি মাটিতে ঠেকে যাওয়ার মতো যে ব্যাপারটা 'চুপি চুপি আসছে' তে ঘটেছিল সেটা এই বইতে ঘটেনি। আপনি যদি বই পড়ার সাথে সাথে সিনেমাপ্রেমীও হন, এবং Incendies নামক ২০১৩ এর সিনেমাটি দেখে থাকেন তাহলে ২০৬ পৃষ্ঠায় যেই মুহূর্তে রিয়া বাজাজ বলবে "ওয়ান প্লাস ওয়ান ইকুয়াল টু ওয়ান" তখনই আপনি বুঝে যাবেন খুনি কে। এছাড়াও এর আগেও যখন বিভিন্ন সাসপেক্টদের মোটিভের কথা অধিরাজ বলবে, দুই অহল্যার কথা বলবে তখনই অনেকটা গেস করে ফেলা যায়। ফলে jaw dropping ফ্যাক্টর ফেল মারলো এই বইতে, অন্তত আমার ক্ষেত্রে।

অধিরাজের চরিত্রটাকে এবারেও বেশ বাস্তবিক করার চেষ্টা করেছেন লেখিকা, সে অন ডিউটি চুমু খায় এক সুন্দরী মহিলাকে যিনি নিজেই চুমু খেতে চেয়েছিলেন, অধিরাজেরও কিছু চাওয়া পাওয়া থাকতেই পারে সেটা শারীরিক হোক বা মানসিকই হোক সেটা বেশ ভালো ভাবেই বোঝালেন লেখিকা। তারপর আবার অধিরাজকে গুলিও খাওয়ালেন, মোটামুটি এই ব্যাপারটায় বেশ কনসিসটেন্সি আছে লেখিকার তিনি যেন তেন প্রকারেণ অধিরাজকে একবার কোনো না কোনোভাবে কষ্ট দেবেনই। যা নিয়ে আমার এতটুকু আপত্তি নেই, কারণ এই ব্যাপারটাই অধিরাজকে খানিকটা হলেও বাস্তবিক বানায়, তাকে আলাদা করে সুপারহিরো বা সবসময়ের পারফেক্ট গোয়েন্দাদের থেকে। সে তো মানুষই, সুপারহিরো নয় এই ব্যাপারটা বোঝা যায় যখন সেও সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে হাঁফায়, গুলি খায়, ডেলিরিয়ামে যায়।

তবে এই প্রতি বইতে, বা প্রতিটি কেসে প্রত্যেক অপরাধীর অধিরাজের প্রেমে টুপটাপ করে পড়ে যাওয়াটা দুটো বই পড়েই আমার একটু রিপিটেটিভ লেগেছে। দেখতে সুন্দর আর প্রচুর বুদ্ধি থাকলেই যে অপরাধীদের সেই গোয়েন্দার প্রেমে পড়তে হবে এমন তো কোনো মানে নেই, একবার দুবার ঠিক আছে কিন্তু প্রতিবার কেন? আর কলকাতায় যত সুন্দর সুন্দর দেখতে ছেলে মেয়ে অধিরাজের গল্পেই সর্বত্র ঘুরে বেড়ায় কিন্তু আমার চোখের সামনে কলকাতায় এরকম অসাধারণ সুন্দর সুন্দর দেখতে ছেলে মেয়ে সর্বত্র ঘুরে বেড়ায় না কেন? এ কেমন জাস্টিস? আরেকটা ব্যাপারও রিপিটেটিভ সেটা হল যৌনতা। যে দুটি বই পরপর পড়লাম দুটোতেই যৌনতা একটা বড় ফ্যাক্টর। যৌনতাকেন্দ্রিক অপরাধ সবচেয়ে বেশি হয় ঠিকই দুনিয়াতে, তবুও দুবারই একই জিনিস রিপিটেটিভ লাগলো।

বাকি সম্পূর্ণ বইটি যথেষ্টভাবে এঞ্জয় করেছি। লেখিকার লেখনী নিয়ে আগেও বলেছি শুধুমাত্র ওই লেখনীর জন্যই শেষ পাতা অবধি সবটা উপভোগ করা যায় চূড়ান্তভাবে। এত সুন্দরভাবে প্রত্যেকটা দৃশ্য ও চরিত্রকে দাঁড় করান যে বই শেষ হয়ে গেলেও মনে থেকে যায় সেগুলো, আর রাস্তায় বেরিয়ে আপনি খুঁজতে থাকবেন একইরকমের মানুষ বা ঘটনা। অর্থাৎ ঠাস বুনোট। যেমন কাল পড়াতে যাওয়ার পথে চোখে পড়লো রেসিং বাইক, সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে গেল অধিরাজের রেসিং বাইক নিয়ে চেজিং করার দৃশ্যটা। দৃশ্য ও চরিত্রগুলো অজান্তেই মনে গেঁথে যায় প্রতিবার। নিঃসন্দেহে সাধারণ থ্রিলারের থেকে অনেক এগিয়ে তার লেখনী।
Displaying 1 - 30 of 79 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.