একটা বাড়ি, যেখানে অনেক অনেক জোনাকি উড়ত রাতের বেলায় আর যেটাকে সবাই জোনাকিদের বাড়ি বলে জানত, সেখানে থাকত কাজু। সময়ের সঙ্গে সেই বাড়িটাই ক্রমশ হয়ে ওঠে সবার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য। ওই বাড়ি ও তার সঙ্গের জমি ও তাতে প্রোমোটিং নিয়ে ঘনিয়ে ওঠে দ্বন্দ্ব। তাতে এসে পড়ে সমাজের নানান স্তরের মানুষ। এসে পড়ে লোভ, ঈর্ষা ও হিংসা।
এই বৃহত্তর ঘটনার সঙ্গে এই গল্প বুনে চলে ব্যক্তিগত জীবনের নক্সাও। তাতে আমরা দেখি নোঈকে। দেখি তার মনখারাপ কাটিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প। দেখি আইকার অন্তর্দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে আসা নতুন মানুষটিকে। আমরা পাই মাহিরের দোলাচল। তার বিপন্নতা। পাই পুশকিনের একাকিত্ব ও নির্লিপ্তি। পাই ওর তাড়া করা অতীত থেকে মনে বাসা বাঁধা অনুতাপ। আমরা পাই রাধিয়ার লাজুক, নরম মনের ভেতরে লালন করা ক্ষত। আর পাই কাজু ও পেখমকে। হারিয়ে যাওয়া সময়ের হারিয়ে যাওয়া দুই মানুষকে। আর এদের সঙ্গে আমাদের সামনে আসে বিজন। আসে স্মরণ। আসে পরিতোষের মতো অনেক চরিত্র। দুই সময়ের গল্পকে সাঁকোর মতো ধরে রাখে নানান চরিত্ররা। সবার সঙ্গে সবার এক আবছা যোগাযোগে ধীরে ধীরে এক নতুন জীবনের ছবি মূর্ত হয়ে ওঠে। আর এইসব কিছুর সঙ্গে মিলেমিশে থাকে এই কলকাতা শহর। মিলেমিশে থাকে এর গ্রীষ্ম-বর্ষার গল্প। মিলেমিশে থাকে এই শহরের কষ্ট আর মনখারাপের অন্ধকারে বেঁচে থাকা জোনাকির মতো মানুষদের গল্প।
স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর জন্ম ১৯ জুন ১৯৭৬, কলকাতায়। বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত। প্রথম ছোটগল্প ‘উনিশ কুড়ি’-র প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত। প্রথম ধারাবাহিক ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত। শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কার ২০১৪, এবিপি এবেলা অজেয় সম্মান ২০১৭, বর্ষালিপি সম্মান ২০১৮, এবিপি আনন্দ সেরা বাঙালি (সাহিত্য) ২০১৯, সানডে টাইমস লিটেরারি অ্যাওয়ার্ড ২০২২, সেন্ট জেভিয়ার্স দশভুজা বাঙালি ২০২৩, কবি কৃত্তিবাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩, উৎসব পুরস্কার ২০২৪, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড ২০২৪, আনন্দ পুরস্কার (উপন্যাস: '‘শূন্য পথের মল্লিকা') ২০২৫ ইত্যাদি পুরস্কারে সম্মানিত ।
“দূরের বাড়িঘরের জানলায় জানলায় জ্বলে উঠছে সার-সার টিপটিপে আলো । ওসব কাদের গল্পের আলো ? কাদের জীবনের ফুলকি ? কারা ভালোবাসায়-বেদনায় সাজিয়েছে এই সব আলোর সংসার ? সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে, বুকে করে, কারা ঝড়বাদলেও আগলে রাখছে এইসব আলোর ফোঁটা ? এই সব বাড়িঘর - এসব কাদের বাসস্থান ? কারা থাকে এখানে ? কারা ক্রমাগত মরে গিয়েও বেঁচে ওঠে আবার ! ভালোবাসে আবার ! বিশ্বাস করে আবার ! আবার ঝুলন সাজায় । এ কাদের ঝুলন-শহর ? কাদের এই বাড়ী ? এ কি সত্যিই জোনাকিদের বাড়ী ?”
আহা ! কী পড়লাম । এই উপন্যাসের রেশ কাটতে কতদিন লাগবে তা জানি না । শুধু এটুকু জানি , বেঞ্জামিন কুজন সরকার - পেখম - নিশান - পুশকিন - মাহির - স্মরণ - নোঈ - রাধিয়া , এইসব নামগুলো চিরকাল জড়িয়ে থাকবে আমার সাথে ।
বেশ অনেক আগে পড়া বই, অনেকটা কোনও এক্সপেকটেশন ছাড়াই পড়া । বইটা আমার কাছে খারাপ লাগেনি, যদিও বেশ স্লো এবং বড় পরিসরের বই করো ধৈর্য্য কম হলে বিরক্ত হতে পারেন। আমার কাছে বইটা আহামরি না লাগলেও খারাপ যে লেগেছে তাও না। তিন প্রজন্মের গল্প এবং সমানতালে এগিয়েছে। লেখক ভালো লিখেন কিন্তু বইটা যদি আরেকটু মেদহীন করা যেত পড়তে ভালো লাগতো আরও।
**"জোনাকিদের বাড়ি" বইটি মূলত মানুষের জীবনের জটিল সম্পর্ক, মানসিক টানাপোড়েন, ভালোবাসা, বিচ্ছেদ এবং জীবনের নতুন আশার আলো নিয়ে লেখা। বইটিতে লেখক জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে অত্যন্ত নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। গল্পে যেমন বিষাদ আছে, তেমনি এক ধরনের আলোও আছে—যা জোনাকিদের আলোর মতোই ক্ষণিক, অথচ গভীর। এই উপন্যাস যেন এক নিঃশব্দ ভালোবাসার গান।
পেখম, কাজু, বিজন, কেয়া, পরিতোষ, আইকা, রুপিন, নোঈ, পুশকিন, নিশান, রাধিয়া, মাহির, পলি, স্মরণ, বাদল, জয়, ফলসা, নয়না, মেখলা এবং আরো অজস্র চরিত্র ছড়িয়ে রয়েছে এই উপন্যাস জুড়ে। এত চরিত্র কার সাথে কোথায় দেখা হচ্ছে, তা প্রথমে গুলিয়ে গেলেও উপন্যাসের শেষে সবাই যেন মনের মধ্যে নিজের জায়গা আলাদা করে নিয়েছে। তবে বেশ কিছু চরিত্রের যেমন নয়না, টেটু, মাহিরদের উপসংহার আরো গুছিয়ে লেখা থাকলে বেশি ভালো লাগত।
কাহিনী গড়ে উঠেছে সোনাঝুরির জোনাকিদের বাড়িকে কেন্দ্র করে। দুটো প্রজন্ম নিয়ে উপন্যাস এগিয়েছে। যেই বাড়িতে রাত হলেই অজস্র জোনাকিদের সাক্ষাৎ পাওয়া যেত, সেটাই জোনাকিদের বাড়ি। সেখানেই থাকত কাজু। কাজু, পেখম - এরা গল্পের প্রথম প্রজন্ম। এখানে বর্ণিত হয়েছে তাদের পাওয়া না পাওয়ার গল্প। দ্বিতীয় সময়কাল ঠিক এর দুই প্রজন্ম পরের ঘটনা। সেই সময় জোনাকিদের বাড়ি, কারখানা ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে প্রমোটিং নিয়ে বিবাদ বাঁধে। দুটো কোম্পানি দুই রকম মানসিকতা নিয়ে জোনাকিদের বাড়ি কিনতে উদ্যোগী হয়। এর সাথে জড়িয়ে পড়ে সেখানকার পলিটিক্যাল দলের নেতারা। জোনাকিদের বাড়ির সূত্রেই চলতে থাকে বাকি চরিত্রদের জীবনের কাহিনী। সবাইই তাদের পুরনো খোলস ছেড়ে নতুন এক রূপে আবর্তিত হয় সময়ের সাথে সাথে। তাদের জীবনে আসে ভালোবাসার ছোঁয়া।
কাহিনীতে এসেছে সমাজের তথাকথিত বাঁধাধরা কিছু সমস্যা। অন্য জাতের সাথে বিবাহ, দোজবরে বিবাহ, সম্পর্কে বয়সের তফাৎ বা উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠা নিয়ে যে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে, তা মুগ্ধ করে, মনে আশার আলো যোগায়। সম্পর্কগুলোর পূর্ণতা মনে আনন্দ আনলেও কাজুর পরিণতি সত্যিই ভীষণ মর্মান্তিক।
আগে স্মরণজিত চক্রবর্তী যতটা পছন্দের লেখক ছিলেন, এখন তা অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে। এখন আর তার গল্পগুলো সেভাবে আকর্ষণ করে না। এখানেও তিনি তার নিজস্ব লেখার ধরন থেকে বেরোতে পারেননি। গল্পে চিন্তা ভাবনার কোনো খোরাক সেভাবে নেই। তাও উনার অন্যান্য গল্প উপন্যাসের তুলনায় এটা আমার ভীষণই ভালো লাগল। হয়ত এই সুবিশাল উপন্যাসের সাথে নিজে মিশে গিয়েছিলাম বা একটা টালমাটাল মানসিক অবস্থায় পড়ার দরুন এত সুন্দর লেগেছে। তাই উপন্যাস শেষের সাথে সাথে আমার মনখারাপেরও ইতি।
smaranjit babu kobe ei dhach er baire beroben.... ? college er 1st year obdhi ekdom thik ache feel good , ronging sopno.... kintu tar por e to kemon ekta thekche
ইশ কি সুন্দর একটা উপন্যাস। কি সুন্দর। একটা জোনাক বাড়ি আর সাথে কত্তগুলো চরিত্র। পেখম কাজুর পর পর রাধিয়া, নোই, পুশকিন, নিশান, স্মরণ, বিজন, মাহির। এই উপন্যাস বেশ ধীর গতির, কিন্তু এত কিছু ভাবালো আমায়। আহা। পুরোটা গল্প অদ্ভুত সুন্দর। কলকাতা শহর, তার মানুষগুলো, সোনাঝুরি, সমান্তরালে চলা কতগুলো গল্প। রেশটা থাকবে বহুদিন।
👉 লেখক আজকের দিনে জনপ্রিয় একজন আর তার থেকে বেশি জনপ্রিয় এই বই। জোনাকিদের বাড়ি বইটি কেনা নিয��ে সবার প্রচুর আগ্রহ এবং দারুন বই বলে পাঠকদের মন্তব্য ছড়িয়ে আছে। আমার খুব কাছের এক বান্ধবীর প্রেরণায় শেষ অব্দি শুরু করি পড়া এবং আমার এক মিশ্র পাঠ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছি -
🍁 প্রথম ২০০ পাতা পড়তে আর কি হচ্ছে উদ্ধার করতে মোটামুটি ৩ মাস লেগেছে আমার (বলে রাখি আমি কিন্তু speedy reader, সেক্ষেত্রে প্রায় ৩ মাস সময়টি অনেক বেশি)।
উপন্যাসের বুনন খুব সুন্দর শুরু থেকেই। বাঁধ সেজেছে দুটি বিষয় -
প্রথম, অদ্ভুত সব চরিত্রের নাম(যদিও স্বরণজিতবাবুর লেখার নামগুলি পাঠকমহলে খুব চর্চিত)। আমার ব্যক্তিগত মতামত গল্পের প্রধান চরিত্রগুলির নামগুলি একটু সহজ একটু চলতি হলে বোধহয় গল্পের মারপ্যাঁচগুলি বুঝতে বেশি সুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে নোই, আইকা, পুশকিন, প্যাও, আরো বিচিত্র নামের বাহারে ঘিলু ঘেঁটে ঘ।
দ্বিতীয়, দুটি ভিন্ন সময় দুটি ভিন্ন প্রজন্মের ইতিহাস। এটি উপন্যাসের কোথাও উল্লেখ নেই তা না হোক। পড়তে পড়তে পাঠক তা উপলব্ধি করবে কোন ঘটনা কোন সময়কালের পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু এত শত চরিত্র, তাদের জীবনের ভিন্ন সমস্যা অথবা ভিন্ন মুহূর্ত, কি হচ্ছে কি হতে চলেছে, বিষয়বস্তুটি কি - প্রথম ২০০ পাতা পড়ার অনুভূতি খারাপই বলা চলে আমার।
👉 লেখনীর মোড়ক ঘুরেছে তারপর। এক এক করে চরিত্রগুলি পরিণত হচ্ছে, এগিয়ে চলেছে তাদের অন্তিম পরিণতির দিকে। কারোর জীবনে এসেছে নতুন মানুষ, নতুন করে বাঁচার অর্থ - আর কেউ সাফল্যের থেকে মুখ ফিরিয়ে তলিয়ে যাচ্ছে অতল গহ্বরে।
ভালবাসা জীবনের সবথেকে সুন্দর উপহার, যদি সে সেজে আসে লাল গোলাপের ডালি নিয়ে - এই ভালোবাসাই হয়ে দাঁড়ায় ভয়ংকর অভিশাপ, যখন সেজে ওঠে রক্তের রঙে। ।। ❣️💔❣️
উপন্যাসটির মাধ্যমে লেখক তুলে ধরেছেন সমাজের চিরাচরিত অনাসৃষ্টি। অন্য জাতের বিবাহের বিরোধ, দ্বিতীয় বিবাহের বিপক্ষে মানুষ, উচ্চ বংশের প্রতি মানুষের অমোঘ আকর্ষণ, মতের অমিলকে সমাজবিরোধী তকমা দেওয়া - এইরকম কয়েকশো সমস্যাগুলির ভিন্ন রূপ তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা মানুষের মন তথা সার্বিক উন্নতিসাধন করে, দুবেলা উদরে অন্ন জুটুক আর না জুটুক। অশিক্ষা বহন করে আনে কুসংস্কার, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, নিতিবিরোধ।
🙏 পরিশেষে বলি, বাকি চরিত্রগুলি সুন্দর ভাবে সাজানো হলেও মনটা চিনচিন করে কাজুদার জন্য। এত মোটা বই শেষ করে কি যে শান্তি লাগে - উফ্, ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়।
প্রেমের গল্প পড়তে ভালো লাগলে সময় নিয়ে পড়ে দেখুন ভালোবাসার এক অন্যরকম উপন্যাস ।।।
🍂✨📖উপন্যাসের নাম - জোনাকিদের বাড়ি📖✨🍂 ✍️লেখক - স্মরণজিৎ চক্রবর্তী 🖨️প্রকাশক - আনন্দ পাবলিশার্স 🧾পৃষ্ঠা সংখ্যা - ৫৭৩
🍂🍁‘ জোনাকিদের বাড়ি ’ আশা - নিরাশার জলছাপের গল্প বলে । অন্ধকার থেকে আলোর দিকে মানুষের উত্তরণের কথা বলে । বলে সব মনখারাপ পার করে ভালবাসায় নতুন করে বেঁচে ওঠার গল্প । যে গল্পে আমরা সবাই আসলে নরম আলো বুকে নিয়ে বেঁচে থাকা এক একটি জোনাকি ।🍁🍂
💫✨"যদি আমরা এক নাও হতে পারি,তাও এই সময়গুলো মিথ্যে নয় পেখম। এই রাত। এই জ্যোৎস্না।এই সব কবিতা তো আর মিথ্যে নয়!যে যার মতো যা খুশি ভাবুক,আমি আমার লেখা তোমার জন্য রেখে যাব।আমার বাদামি ডায়েরির সব লেখা শুধুমাত্র তোমার জন্য রেখে যাব।আমি যদি তোমায় খুঁজে নাও পাই,সে ডায়েরি তোমায় খুঁজে পাবে পেখম।সেইসব কবিতা তোমায় খুঁজে পাবে। এই শব্দগুলোর অর্থ কেবল আমরাই জানব। মাত্র আমরা দু ' জন জানব! "✨💫
🍂🍁একটা বাড়ি , যেখানে অনেক অনেক জোনাকি উড়ত রাতের বেলায় আর যেটাকে সবাই জোনাকিদের বাড়ি বলে জানত , সেখানে থাকত কাজু । সময়ের সঙ্গে সেই বাড়িটাই ক্রমশ হয়ে ওঠে সবার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য । ওই বাড়ি ও তার সঙ্গের জমি ও তাতে প্রোমোটিং নিয়ে ঘনিয়ে ওঠে দ্বন্দ্ব । তাতে এসে পড়ে সমাজের নানান স্তরের মানুষ । এসে পড়ে লোভ , ঈর্ষা ও হিংসা । এই বৃহত্তর ঘটনার সঙ্গে এই গল্প বুনে চলে ব্যক্তিগত জীবনের নক্সাও । তাতে আমরা দেখি নোঈকে । দেখি তার মনখারাপ কাটিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প । দেখি আইকার অন্তর্দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে আসা নতুন মানুষটিকে । আমরা পাই মাহিরের দোলাচল । তার বিপন্নতা । পাই পুশকিনের একাকিত্ব ও নির্লিপ্তি । পাই ওর তাড়া করা অতীত থেকে মনে বাসা বাঁধা অনুতাপ । আমরা পাই রাধিয়ার লাজুক , নরম মনের ভেতরে লালন করা ক্ষত । আর পাই কাজু ও পেখমকে । হারিয়ে যাওয়া সময়ের হারিয়ে যাওয়া দুই মানুষকে । আর এদের সঙ্গে আমাদের সামনে আসে বিজন । আসে স্মরণ । আসে পরিতোষের মতো অনেক চরিত্র । দুই সময়ের গল্পকে সাঁকোর মতো ধরে রাখে নানান চরিত্ররা । সবার সঙ্গে সবার এক আবছা যোগাযোগে ধীরে ধীরে এক নতুন জীবনের ছবি মূর্ত হয়ে ওঠে । আর এই সব কিছুর সঙ্গে মিলেমিশে থাকে এই কলকাতা শহর । মিলেমিশে থাকে এর গ্রীষ্ম - বর্ষার গল্প । মিলেমিশে থাকে এই শহরের কষ্ট আর মনখারাপের অন্ধকারে বেঁচে থাকা জোনাকির মতো মানুষদের গল্প ।🍁🍂
বইটা পড়লে আপনার দাঁতের চোয়াল শক্ত হবে। বাদামি রঙের সঙ্গে পরিচিতি হওয়ার প্রবল সম্ভবনা। অধিক মানুষ দের নিয়ে এই বই, যেটা কিছু জেনারেশন কে এককৃত করে একটা মিসড ফ্রুট জুস লেগেছে অমর। প্রেম পলিটিকস রাগ অভিমান দিয়ে season করা এই গল্পঃ আমার ভালই লেগেছে।
30may24 মজার ব্যাপার কলেজ স্ট্রীটে একটি মেয়ে এই বইটি খুঁজছিল। তখন অন্য একটা বই কেনায় মগ্ন থাকার ফলে ওকে শুধু হাত দেখিয়ে কোন দোকানে বই টা পাওয়া যায় দেখিয়ে দিলাম। তাকে একেবারে দোকানে পৌঁছে দিলেই হত। হয়তো তারপর আমরা প্যারামাউন্ট e বসে জুস খেতাম। আর কিছু দিন বাদে হয়তোবা গরের মাঠে নাহয় নন্দনে। নয় বই টা নাহয় আমি কেও একটা এই গল্পে ফেল করেছি।
Done! ♥️♥️♥️♥️♥️♥️ জোনাকিদের বাড়ি-স্মরণজিৎ চক্রবর্তী আমি মুগ্ধ ! আমি বিস্মিত ! সার্থক এক দীর্ঘ উপন্যাস পাঠ ! প্রত্যেকের জীবনে জোনাকিদের মত ফুটিয়ে তোলা আলো । কত বড় প্রাপ্তিযোগ !!🍁🍁🍁 আর রৌদ্র মিত্রের তৈরি করা এই প্রচ্ছদ- জ্যোৎস্নার লালিত্য যেন ভালোবাসার আঘ্রাণ নিয়ে জেগে উঠছে!!🌸🌸🌸
কিছু উপন্যাস আছে যেগুলোর পাঠ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সেগুলোর ওপর সুবিচার করা যায় না । স্মরণজিৎ এর জোনাকিদের বাড়ি সেরকমই একটা উপন্যাস ।
🖋️স্মরণজিৎ এর সিগনেচার স্টাইলে লেখা এই উপন্যাসটি। অনেক চরিত্রের মেলবন্ধন, চরিত্রের সুন্দর সব নামকরণ, আর তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বয়ে চলা একটা গল্প । প্রধানত দু-তিনটি জেনারেশন এর সময়কাল বর্ণিত হয়েছে এই উপন্যাসে ।
🌃সোনাঝুরি তে ব���স্কুট রঙের একটা প্রাসাদসম বাড়ি ছিল, সেখানে অনেকগুলো পরিবার গাদাগাদি করে থাকতো । আর সন্ধেবেলা সেই বাড়ির পিছনে উড়তো জোনাকি ।সেখানে থাকত কাজু । সোনাঝুরি তে আরও ছিল একজন যে কাজুকে ভালোবাসত - পেখম । আর ছিল ওদের একটা প্রেম কাহিনী।
✨সময় বদলায়, প্রজন্ম বদলায়। কিন্তু বাড়িটা থেকে যায়, বাড়িটাকে নিয়ে গড়ে ওঠে নতুন কাহিনী। 🔸আর আসে নতুন মুখ — নিশান, রাধিয়া, পুশকিন, স্মরণ, নঈ, মা��ির, আইকা। এই বাড়ি নিয়েই যেন তাদের জীবনে নানা ঘটনা আবর্তিত হতে থাকে । আসে কিছু মনখারাপের কথা , সেই মনখারাপ পার করে ভালোবাসার কথা। আর দেখতে পাই এই জোনাকিদের বাড়ির কিছু অজানা প্রশ্নের উত্তর আজও কেউ খুঁজছে, শেষে আমরাও খুঁজে পাই সেই প্রশ্নের উত্তর।
🪞এই বইয়ে একটার পর একটা গল্প আসবে, আর তুমি বুঝতেও পারবে না, ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে মনটা ভার হয়ে উঠল।
🖋️ব্যক্তিগত অভিমত -
🍃স্মরণজিৎ এর গদ্যের বইয়ের পদ্য গুলোই যেন সবচেয়ে ভালো হয় । এই বই ও তার ব্যতিক্রম নয় । 🍃সোনাঝুরি একটি ফিকশনাল গ্রাম হলেও বর্ণনা শুনে মনে হয়েছে লেখক বাটানগর এর বিবরণ ই দিয়েছেন, যেখানে তার জীবনের ছোটবেলা কেটেছে । যারা তার “পাতাঝড়ার মরসুমে” পড়েছে তার বেশ কিছু মিল পাবে । 🍃পুশকিন- স্মরণ - নঈ এদের কানেকশন টা বেশ লেগেছে । বিশেষ করে স্মরণ , দারুণ এক মজার চরিত্র । 🍃মাহির এর চরিত্রের এন্ডিং টা বেশ ভালো, এই চরিত্রে আমি পাল্টাহাওয়া এর পুষ্পল, বা আলোর গন্ধের রুহান এর ছাপ পেয়েছি । 🍃নিশান-রাধিয়া, বা পুশকিন-নঈ এদের জন্য আশার আলো থাকলেও গল্পের শেষে কাজু মানে বেঞ্জামিন কূজন সরকার এর জন্য একটা মনখারাপ থেকেই যায় । সে তো জোনাকিদের বাড়িতে থাকত, কিন্তু কেন ওকে কেউ থাকতে দিলো না?
আমার মনে হয়, বইটা যারাই পড়েছে সকলেই বেঞ্জামীন কূজন সরকারের প্রেমে পড়েছে। আর আমি? আমি লেখককে শুধু একটাই প্রশ্ন করতে চাই যে কাজুদাকে না মারলে কি সত্যিই চলত না? পেখম মায়ের বিরুদ্ধতা করতে পারেনা, কাজু আর কাউকেই চাইতে পারলনা, তার বন্ধুর বোন নিজেকে বিলিয়ে দিয়েও কাজুকে পেলনা! Moral of the story is জোর করে কিছুই হয়না! ভালোবাসা জোর করে পাওয়ার নয়! ছিনিয়ে নেওয়া যায়না আদর, যত্ন, পছন্দ। পেখমের সাথে যা হয়েছিল, তার নাতনিও একই ঘটনার ভুক্তভোগী হল। ধীরে ধীরে জট খুলল জোনাকবাড়ি জুটমিল এবং বাড়িটির। কাজুদার মৃত্যুরহস্য। সব-সব। শুধু কেউ উত্তর দিলনা পেখম কিভাবে নিজেকে সামলালো? সেই কবিতা টি দিয়েই কি..?
"...ধ্বংস ঘেঁটে তোমায় পেলাম মোহর তোমার আলোয় বাঁচন আমার প্রাণী কক্ষ থেকে ছিটকে যেত গ্রহ ... উল্কা তোমার কাঁচের ফুলদানি। কেমন ছিল সেসব ধুলোখেলা!...
আমরা দুজন, কেবল দু'জন জানি আমরা দুজন, মাত্র দু'জন জানি।"
এই কবিতাটা লিখে লেখক আমার মনে যে কি উথাল-পাথাল ঢেউ তুললেন কি মনখারাপ হল, কি বিষাদে ছেয়ে গেলাম আমি, হদিস নেই, কোন কল্পনা নেই আমার ... কবে, আদৌ কোনদিন এইটা থেকে বেরোতে পারব কিনা...!
This entire review has been hidden because of spoilers.
আকাশজুড়ে জোনাকিদের বাড়ি বুকের নীচে পাগলা রাজার ঘোড়া তখন থেকে সবার সঙ্গে আড়ি তখন থেকে আমার শহর পোড়া! ধ্বংস ঘেঁটে তোমায় পেলাম মোহর তোমার আলোয় বাঁচল আমার প্রাণী কক্ষ থেকে ছিটকে যেত গ্রহ… উল্কা তোমার কাচের ফুলদানি! কেমন ছিল সেসব ধুলোখেলা! কেমন ছিল সাগরপারের রানি! এই জীবনের নরম বিকেলবেলায়… আমরা দু’জন, কেবল দু’জন জানি আমরা দু’জন, মাত্র দু’জন জানি।
After a long time, read a particular book of modern genre author in Bengali literature, which made me glued on from Page 1 to the end.
An emotion spilling over from all characters in the story, makes you think and linger over human character and materialistic behaviour at large.
The small minuscule image of my city Kolkata, from an aeroplane on its descent, makes me wonder, we are all surrounded and glowing by the light of a fire-fly (‘Jonaki’).
জোনাকি পছন্দ আমার, সেই থেকে এই বই পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে বইটা পেলাম।
জোনাকিদের বাড়ি দুটি জেনারেশন নিয়ে খুব সুন্দর ভাবে এগিয়ে গেছে। সুন্দর কাহিনী কিন্তু কিছু জায়গায় গল্পটা কিছুটা অতিনাটকীয় হয়ে গেছে। যদিও চরিত্রগুলো খুব সাধারণ, খুব কাছের মনে হয়, যেন এদের রোজ আমরা আমাদের চারপাশে দেখি।
কাজুদা, পেখম এবং অন্যান্য চরিত্রগুলো সুন্দর কিন্তু নিশান, রাধিয়া বা মাহির এদের চরিত্রগুলো নিখুঁত।
Just finished " জোনাকিদের বাড়ী " and it really stuck with me. The story’s about two generations, love, loss, and change, with so many characters like Kaju, Pekhme, and Bijon.The social issues and relationships were relatable, though some endings felt rushed. Though some parts felt slow.Smaranjit sir's books always give me this weird comfort, like I’m a part of it too. Honestly, I’m still thinking about it.
This person has the capability to create a world which we love , adore .the characters become our best friends and we get immersed into their life , share their pain, love, grief and poetry. Jonaki der bari reminds me a lot, make me feel a lot and at the end, gives hope , gives happiness to enjoy life.
Every time I read Smaranjit novels, I can feel the human touch and the day to day struggle every person in the real world goes through. And of course the light we carry and the light we will. If you have loved Alor Gondho, you’ll also love this.
একটানা উপন্যাসটি পড়ে শেষ করলাম। মনে হচ্ছিল একটা মেগা সিরিয়াল দেখছি।সব চরিত্রের পরিনতি বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ কিন্তু নয়নার কী হলো বা ওর কোনো উত্তর পুরুষ এর সন্ধান পেলাম না।যেমন পুশকিন,স্মরন,নিশান ,রাধিয়া এদের সবার ই আগের এক বা দুই প্রজন্ম কাজুর সমসাময়িক ছিলো।
প্রেম, ভালোবাসা,মায়া আঁকড়েই তো বেঁচে থাকে মানুষ। প্রিয় মানুষের স্মৃতি বিজড়িত মূহূর্তগুলোই বেঁচে থাকার সাহস জোগায়। দিন শেষে মানুষটি জীবনে না থাকলেও থেকেই যায় কোথাও না কোথাও নিজের কাছেই। যেমনটি ছিল - কাজু,পেখম আর তাদের জোনাক বাড়ি 💙