Jump to ratings and reviews
Rate this book

তোপসের নোটবুক

Rate this book
শার্লক হোমসকে নিয়ে ব্যারিং গুল্ড, মিশেল হার্ডউইক বা লেসলি ক্লিংগার যে জীবনী নির্মান করেছেন সেখানে হোমস সত্যিকারের রক্তমাংসের মানুষ । কিন্তু বাঙালীর ঘরের ছেলে ফেলুদাকে নিয়ে এমন আখ্যান নেই। ফেলুর পরিবারের উৎস, বংশ পরিচয় কিংবা তাঁর বেড়ে ওঠা নিয়ে নানা সূত্র ছেড়ে গেছেন লেখক সত্যজিৎ। রেখে গেছেন বিটুইন দ্য লাইন এক সমান্তরাল ইতিহাস রচনার মালমশলা। আর সেই সব নিয়ে বাস্তব আর কল্পনাকে মিশিয়ে উপন্যাসের ঢঙে তৈরি হয়েছে তোপসের নোটবুক - ফেলুদার এক অন্যরকম জীবন আলেখ্য। এতে স্বচ্ছন্দে এসেছেন তারিণীখুড়ো, প্রফেসর শঙ্কু, ব্যোমকেশ বক্সীরা। আবার চরিত্র হিসেবে আছেন নেতাজী, উপেন্দ্রকিশোরও। এই বইতে আলো ফেলা হয়েছে ফেলুদার অজানা কেস- চন্দননগরের জোড়া খুন, লখাইপুরের হত্যাকান্ড বা ফরডাইস লেনের খুনের ঘটনাতে। এ এক আশ্চর্য ইতিহাস যার শুরু ফেলুর জন্মের বহু আগে অতীশ দীপঙ্করের সময়ে আর শেষ একেবারে বর্তমান কালে। সব ফেলুদাপ্রেমীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য এই বইটি।

অলংকরণ - শান্তনু মিত্র
নামাঙ্কন - বিল্টু দে

120 pages, Hardcover

First published May 2, 2019

30 people are currently reading
527 people want to read

About the author

Kaushik Majumdar

37 books598 followers
জন্ম ১০ এপ্রিল, ১৯৮১, কলকাতা। স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পি. এইচ. ডি. তে সেরা ছাত্রের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত। নতুন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া Bacillus sp. KM5 এর আবিষ্কারক। বর্তমানে ধান্য গবেষণা কেন্দ্র, চুঁচুড়ায় বৈজ্ঞানিক পদে কর্মরত এবং হাবড়া মৃত্তিকা পরীক্ষাগারের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক।
জার্মানী থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা গবেষণাগ্রন্থ Discovering Friendly Bacteria: A Quest (২০১২)। তাঁর কমিকস ইতিবৃত্ত (২০১৫), হোমসনামা' (২০১৮),মগজাস্ত্র (২০১৮), জেমস বন্ড জমজমাট (২০১৯), তোপসের নোটবুক (২০১৯), কুড়িয়ে বাড়িয়ে (২০১৯),নোলা (২০২০), সূর্যতামসী (২০২০), আঁধার আখ্যান (২০২০) ও নীবারসপ্তক (২০২১) এই সব দিনরাত্রি (২০২২), ধন্য কলকেতা সহর (২০২২), আবার আঁধার (২০২২), অগ্নিনিরয় (২০২২), হারানো দিনের গল্প (২০২৪), সিংহদমন (২০২৪), ডিটেকটিভ তারিণীচরণ (২০২৪), আরও একটি প্রবন্ধ সংকলন (২০২৫) সুধীজনের প্রশংসাধন্য। সরাসরি জার্মান থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন ঝাঁকড়া চুলো পিটার (২০২১)। বাংলাদেশের আফসার ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে ম্যাসন সিরিজের বাংলাদেশ সংস্করণ (২০২২, ২৩), মৃত্যুস্বপ্ন (২০২৪), ডিটেকটিভ তারিণীচরণ (২০২৪) । সম্পাদিত গ্রন্থ সিদ্ধার্থ ঘোষ প্রবন্ধ সংগ্রহ (২০১৭, ২০১৮) ফুড কাহিনি (২০১৯), কলকাতার রাত্রি রহস্য (২০২০) সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবর্ষে একাই একশো (২০২২), কলিকাতার ইতিবৃত্ত(২০২৩), বিদেশিদের চোখে বাংলা (২০২৪) এবং কলিকাতার নুকোচুরি (২০২৫)

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
76 (18%)
4 stars
114 (28%)
3 stars
146 (35%)
2 stars
49 (12%)
1 star
22 (5%)
Displaying 1 - 30 of 99 reviews
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,864 followers
January 26, 2021
এই বই নিয়ে ইতিমধ্যেই এত বিট ও বাইট ব্যয় হয়েছে যে এর সম্বন্ধে নতুন কিছু বলা কঠিন। তপেশরঞ্জনের এই কাল্পনিক নোটবুকটি যে আদতে বারিং গুল্ড ও লেসলি ক্লিঞ্জারের হোমসচরিত নির্মাণের আদলে ফেলুদাকে নিয়ে করা একটি কাজ— এও সবারই জানা। তবে লেখাটা পড়ে তিনটে জিনিস মনে হল।
প্রথমত, লেখক ইতিহাসের একজন অত্যন্ত মনোযোগী ছাত্র। কলকাতার ইতিহাস তিনি যেভাবে অল্প কথায় গল্পের ছলে বারবার আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন, তার জন্য নির্ভার লেখনী ও সলিড প্রজ্ঞা প্রয়োজন। এই নিয়ে কোনো কথা হবে না।
দ্বিতীয়ত, এই বইয়ে শুধু সত্যজিতের বর্ণিত নানা চরিত্র নয়, শরদিন্দু, এমনকি নারায়ণ সান্যালের চরিত্ররাও ছোট্ট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তারই সঙ্গে মিশে গেছে ইতিহাস। এইরকম ক্রসওভার আমরা ফিলিপ জোস ফারমার থেকে শুরু করে অ্যালান মুর অবধি নানা লেখক ও শিল্পীর কাজে দেখলেও বাংলায় এই প্রচেষ্টা অভিনব।
তৃতীয়ত, এই বইয়ের শেষে একটা প্রকাণ্ড ত্রুটি আছে। লোকজন ফেলুদা'র পরাজয় (এটা স্পয়লার নয়) নিয়ে লেখকের মুণ্ডপাত করেছেন। আমার ধারণা, রাইখেনবাখের মতো করে একটি পতন দেখিয়ে গল্পটা শেষ করার ডয়েলীয় বাসনাই বোধহয় লেখককে চালিত করেছিল এক্ষেত্রে। তার তুলনায় বরং ওই সাংঘাতিক ত্রুটির জন্যই আমার মনে হয়েছে, লেখাটা ভীষণ দুর্বল হয়ে গেছে।
বইটা কিয়দংশে প্যাস্টিশ, বাকিটা সত্যজিতের নানা রচনা থেকে উপকরণ দিয়েই গড়া। তবু লেখক, মূলত বিভিন্ন চরিত্রের আন্তঃক্রিয়া দেখিয়ে কাহিনিকে নিজস্বতা দিতে সক্ষম হয়েছেন। শান্তনু মিত্রের পরিচ্ছন্ন অলংকরণ সত্যজিতের শৈলীকে অনুসরণ করায় বইটা সব মিলিয়ে দেখতেও বেশ ভালো হয়েছে।
ইতিহাসের ইনফো-ডাম্পিং আর শেষের ওই ভয়ানক ত্রুটিটা বাদ দিলে বইটা নিঃসন্দেহে পাঠযোগ্য। তাই আমি পাঠককে বইটি পড়তেই বলব। তারপর তিনি লেখকের জন্য তিনমাসের জেল, সাতদিনের ফাঁসি, না মুগ্ধতা বরাদ্দ করবেন— সে-বিষয়ে অবশ্য আমি কিছু বলতে অপারগ।
Profile Image for Wasee.
Author 49 books785 followers
October 4, 2021
প্রথমেই বলে নেয়া ভালো, 'তোপসের নোটবুক' নামের এই বইটে ফেলুদা এন্ড কোং-কে ফোকাস করে কোন বিশ্লেষণধর্মী বই নয়। সেই বিষয়ে জানতে চাইলে, প্রসেনজিৎ দাশগুপ্তের "ফেলুদা রহস্য" বইটি একমাত্র শক্তিশালী ভরসা। 'তোপসের নোটবুক' একটি আগাগোড়া ফ্যান ফিকশন, যার সাথে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা চরিত্র বিশ্লেষণের কোন সম্পর্ক নেই।

বইটা মূলত দুই অংশ বিভক্ত। প্রথম অংশে (৩০% জুড়ে) এসেছে ফেলুদার (কাল্পনিক!) বংশ পরিচয়। এর সাথে সত্যজিৎ রায়ের কোন রেফারেন্সকে মেলানো যাবে না। আর দ্বিতীয় অংশে ফেলুদার অপ্রকাশিত, অমীমাংসিত কেস।

শুরুর দিকে এত বেশি ক্যারেক্টার আর ব্যাকগ্রাউন্ড রেফারেন্স, তাল সামলাতে কষ্ট হচ্ছিল। প্রচুর রেফারেন্স একসাথে আসলে যে সমস্যাটা হয়, সবকিছু কেমন যেন জট পাকিয়ে যায়। চরিত্রের আবির্ভাবের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বর্ণণার পরিসর বাড়লে বইটা হয়তো সুখপাঠ্য হতে পারত।

প্রশংসার জায়গাটা হচ্ছে, ফেলুদার ভক্তদের জন্য এ এক তীব্র নস্টালজিক এক্সপেরিয়েন্স। ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু, তারিণী খুড়ো, সিধু জ্যাঠা; সত্যজিৎ এর নানান চরিত্ররা ঘুরেফিরে জড়ো হয়েছেন বারবার। বিভিন্ন সময়ের মক্কেল আর কেসের রেফারেন্স সংযোজিত হয়ে ফ্যান ফিকশনের জৌলুস বাড়িয়ে দিচ্ছিল বহুগুণে।

ফেলুদার অমীমাংসিত কেসটাও দারুণ সাসপেন্স নিয়ে এগোচ্ছিল, বাধ সাধল শেষ দিকটায় এসে। তন্ত্রমন্ত্র অথবা আধিভৌতিক ব্যাপারগুলো হয়তো ফেলুদার সাথে যায় না, স্বয়ং সত্যজিৎ প্রদোষ মিত্তিরের সাথে সেভাবে আমাদের পরিচয় করাননি যে! এর পাশাপাশি সমস্যা সৃষ্টি করেছে বইয়ের বেশ কিছু অংশে টাইমলাইনের গণ্ডগোল।

আরেকটা বড় সমস্যা, চাইল্ডহুড হিরোর ব্যর্থতাকে মেনে নেয়া খুব কঠিন। কল্পনার জগতে যে হিরো, সে চিরকাল হিরোই। বাস্তবতার যুক্তি মেনে সে কখনো পরাজিত হতে পারে না, ব্যর্থতার গ্লানি কাঁধে চাপিয়ে বিষণ্ণতায় ভুগতে পারে না কোনদিন।

মৃত্যু অথবা জরাও তাদের স্পর্শ করে না। ফেলুদা, জটায়ু, তোপসে বয়স, কাল, জরা সবকিছু জয় করে টিকে থাকে। বইয়ের পরিসমাপ্তিটা সঙ্গত কারণেই মেনে নেয়া কঠিন। পারসোনাল রেটিংটা সে কারণেই কমে গেলো।
Profile Image for Mahatab Rashid.
107 reviews117 followers
May 17, 2019
শুরুর দিকের সত্যজিতের ( এবং সত্যজিতের লেখার বাইরের ) বিখ্যাত সব চরিত্রের সাথে এ গল্পের প্লটের সাথে জুড়ে দেওয়ার গাঁথুনী বেশ ইন্টারেস্টিং ছিলো। যারা সত্যজিতের মোটামুটি সবরকম লেখা পড়ে ফেলেছেন, তাদের জন্য প্রচুর খুঁটিনাটি রেফারেন্স ধরতে পারার আনন্দের সুযোগ করে দেওয়াটাও চমৎকার লেগেছে।
ছোট বই, শুরুর দিকটা কিছুটা স্লো। যেভাবে এগুচ্ছিলো খারাপ না; সত্যজিতের রেখে যাওয়া কিছু তথ্যের সাথে লজিকাল ফিল ইন দ্য গ্যাপস দিয়ে প্লট বিশ্বাসযোগ্য করে তোলাটাও ভালোই ছিলো। শেষমেশ বইটা যেরকম একটা ডার্ক টার্ন নেয়, সারাজীবন ফেলুদাকে রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে কল্পনা করায় সেটাও খারাপ লাগেনি, বরং লেখক সেই সাহস করেছেন দেখে অবাক হলাম। কিন্তু লেখার ব্যপ্তি আরও বাড়িয়ে আরেকটু বিশ্বাসযোগ্য ভাবে আর আরেকটু বর্ণনার সাথে লিখলে আরও সুখাদ্য হতো।
লেখায় সংলাপ আর ইতিহাস - এই দুয়ের আধিক্য কিছুটা টায়ারিং। শেষমেশ বলা যায়, লেখক চমৎকার পটেনশিয়াল একটা প্লট দাঁড় করিয়ে বইটা লিখেছেন, কিন্তু সেটাকে আরও ইফেকটিভলি ইউজ করলে আরও ভালো লাগতো।

রেটিং - ৩.৩/৫
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
June 28, 2020
ভালো লাগে নাই! ভালো লাগে নাই! ভালো লাগে নাই -_- উল্টো প্রচন্ড রাগ লেগেছে৷ কেন জানি না৷
ফ্যান ফিকশন হোক আর যাই হোক বইটা পড়ে মেজাজ মহাখাপ্পা হয়ে আছে৷ প্রচন্ড রকমের। রাগে দুঃখে চোখে পানি চলে আসছে!

ভাবতেই পারেন হয়তো ফেলুদার ভক্ত হয়ে শেষ পরিণতি মেনে নিতে পারিনি বলে এতো ক্ষোভ। আসলে তা না৷ শুরুর দিক থেকেই ঠিক গোছানো বলে মনে হচ্ছিল না। প্রচুর তথ্য আর তথ্য৷ যাই হোক... আস্তে আস্তে বইয়ের দ্বিতীয় অংশে তথা মূল পর্বে পৌঁছাবার পর প্রথমদিককার লেজেগোবরে হাল বেশ মিটে যায়৷ উপন্যাসের বিভিন্ন জায়গায় চেনা পরিচিত তথ্য আর কিছু চেনা ঘটনাগুলোর উপস্থিতি বেশ ভালো লেগেছে। তাহলে খারাপ লাগলো কিসে? লাস্ট কেস হিসেবে অতোটা ভালো লাগে নাই৷ আর ইদানিং বৌদ্ধধর্ম, তন্ত্রমন্ত্র নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। এই বইখানিও কিছুটা সেই পথেই হেঁটেছে৷ ওই কাহিনির সাথে ফেলুদাকে মোটেও মানায়নি৷ আর মানাইলেও তার চিরশত্রুর ছেলে এসে ফেলুদাকে ঘোল খাওয়াবে আর ফেলুদাও মনের দুঃখে বিবাগী হয়ে যাবে,সেটা মোটেও মানতে পারিনি৷ তার উপর ঘটনাও অর্ধেক। ডিটেইলস নাই। চূড়ান্তরকমের হতাশা। আমি দুঃখিত। জোর করেও বইটাকে ভালো লাগাতে পারিনি।

নেগেটিভ তারকা দেয়ার সিস্টেম নাই। আর বেচারা লেখক অনেক খেটেখুটে লিখেছেন৷ এক তারকাই সই!
Profile Image for Shaon Arafat.
131 reviews31 followers
June 9, 2019
বাংলায় ফ্যান ফিকশন?!
আগে কখনো পড়ি নাই। বাংলায় এধরণের আর কোন বই কোনদিন লেখা হয়েছে বলেও জানা নেই।

শার্লক হোমসকে রক্তমাংসের মানুষ কল্পনা করে উইলিয়াম ব্যারিং গুল্ড যেমন 'শার্লক হোমস অব বেকার স্ট্রিট' নামের ফ্যান ফিকশনটি লিখেছিলেন, ঠিক তেমনি কৌশিক মজুমদারের ফেলুদাকে একটা রক্তমাংসের বাস্তব চরিত্র প্রদান করার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস বলা যেতে পারে ১১৮ পৃষ্ঠার এ বইটিকে। শুরুটা হয় কলেজ স্ট্রিটের কোন এক বইয়ের দোকানে সবুজ মলাটে মোড়া পুরনো একটি ডায়েরি খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে। বলা বাহুল্য, সেই ডায়েরিটিই হচ্ছে শ্রীতপেশ রঞ্জন মিত্র, অর্থ্যাৎ তোপসের নোটবুক।

পুরো নোটবুক জুড়ে তোপসের জবানবন্দিতে লেখা আছে ফেলুদার সংক্ষিপ্ত বংশ পরিচয়, জন্ম, মৃত্যু এবং ছাপা না হওয়া কয়েকটি কেসের গল্প। কয়েকটি কেস আসলে না, বলা যেতে পারে একটি বড় কেসের ছোট ছোট বেশ কয়েকটি অংশ। অারও আছে তারিনী খুড়ো, প্রোফেসর শঙকুসহ ব্যোমকেশ বক্সীর মতো কিছু কালজয়ী চরিত্রের আনাগোনা। ফেলুদার জন্ম, মৃত্যু, বেড়ে ওঠা, চারিত্রিক প্রভাব, কিংবা বংশ পরিচয়ের ব্যাপারে কিছু না বলে বরং ছাপা না হওয়া রহস্যের দিকে চলে যাই।

জোসেফ ব্রাউন নামের এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান একদিন হুট করে হাজির হয় ফেলুদার বাড়িতে। নিজের পরিচয় দেয় রেসের ঘোড়ার জকি হিসেবে। কেসটা হচ্ছে 'হ্যাপি-গো-লাকি' নামের ঘোড়াটিকে কে বা কারা যেন বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে গতরাতে। ঘোড়ার মালিক পুলিশ ডেকেছে এবং সন্দেহের তীর ধেয়ে এসেছে জকির দিকে। অনেক অনেক কাহিনী করে এ কেস সলভ করা হলো। তারপর একদিন সেই জোসেফই আরেক অ্যাংলো ইন্ডিয়ানকে সাথে নিয়ে ফেলু মিত্তিরের বাড়িতে এলো। নতুন ক্লায়েন্টের নাম পল জুব্রিস্কি। পেশা হোটেলে ম্যান্ডোলিন বাজানো।

পলের বৃদ্ধ কাকা মার্কাস খুন হয়েছে সকালে। পলের সাথে কাকার টাকাপয়সা নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা বাধতো। সুতরাং পুলিশের খাতায় প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তি পল জুব্রিস্কি। তদন্ত শুরু হলো। খুনীকে ধরা গেলো। কিন্তু কিছু বিষয়ে সিধু জ্যাঠার বক্তব্য সবকিছুকে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে দিলো। খুনের যৌক্তিক কোন ব্যাখ্যা পাওয়া গেলো না। তাই কেস সলভ করেও, ফেলুদার মাথা খারাপ হবার মতো অবস্থা। এদিকে আবার চন্দননগরে জোড়া খুনের রহস্য সমাধানের জন্য ফেলুদার ডাক পড়লো। কূল-কিনারা কিছু করা গেলো না। একমাত্র সূত্র পাওয়া গেলো- সিঁদুর আর তেল দিয়ে অাঁকা অদ্ভুত একটা চিহ্ন।

তোপসেকে সাথে নিয়ে ফেলুদাকে দৌঁড়ুতে হলো সিধু জ্যাঠার বাড়িতে। জানা গেলো খুনের নেপথ্যে কাপালিকদের জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা। কাপালিক!

পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে খুন হলো আরও কয়েক দফা। সবগুলোই জোড়া খুন। আর আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে সবগুলো খুনের জায়গায়ই একটা ব্যাপার হুবহু মিলে যাচ্ছে - 'সিঁদুর আর তেল দিয়ে অাঁকা অদ্ভুত সেই চিহ্ন'।
রহস্য এগিয়ে চললো, এগিয়ে চললো তোপসের নোটবুকের জীর্ণশীর্ণ পাতারাও।

ভালো লেগেছে। বেশিরভাগ বাঙালির মতো আমিও ফেলুদার ফ্যান। সুতরাং, আগ্রহ থেকে পড়া শুরু করেছিলাম। ভালো লাগবেই- এমনটা আশা করিনি। শেষ করে মন খারাপ হয়ে গেছে। লেখক সম্ভবত এটাই চেয়েছিলেন। উনার পরিশ্রম সার্থক। তাছাড়া ফেলুদার মতো চরিত্রকে নিয়ে ফ্যান ফিকশন লিখতে যাওয়াটা অতি দুঃসাহসিক একটা ব্যাপার। দুঃসাহস হয়তো অনেকেই দেখাতে পারে, তবে দুঃসাহসকে সার্থক করতে সবাই পারে না। কৌশিক মজুমদার পেরেছেন বলেই মনে হচ্ছে।
Profile Image for Avishek Bhattacharjee.
370 reviews79 followers
September 18, 2021
ফেলুদা আমার কাছে চিরসবুজ আর চিরতরুন। আর তোপসে হচ্ছে কিশোর। দায়টা অবশ্য লেখক সত্যজিৎ রায়ের। উনি সকল লেখাই কিশোরপাঠ্য করতে গিয়ে আমাদের কাছে ফেলুদার অবয়বই আলাদা রকম। এই অবয়ব ভেংগেই লেখক কৌশিক মজুমদার আমাদের কাছে ফেলুদাকে নতুন আংগিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
শুরুটা খুব আকর্ষণীয়। লেখক মার্কেট ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ এক সেট বই পেয়ে যান। পুরো সেটটাই ফেলুদার সব ফার্স্ট এডিশনের ছাপানো। সাথে আছে ছোট্ট একটা নোটবই। নোটবইয়ের লেখক শ্রীমান তপেশরঞ্জন মিত্র। তিনি নিজের জীবন ও তার পূর্বপুরুষের গল্প লিখে গিয়েছেন এই নোটবইয়ে। সাথে লালমোহনবাবুর জীবনের কথাও আছে। কাহিনীর মধ্যে মধ্যে বরদাচরন, তরিনীখুড়ো, ব্যোমকেশ আর সবার প্রিয় প্রফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর কথাও উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে সুন্দর করেই সব এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষটা আসলে বেশ বিষণ্ণ। ফেলুদার জীবনের গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেওয়ার গল্পের মাধ্যমেই শেষ হয়েছে তোপসের নোটবই। শেষ করে মনটা আসলে খারাপই হয়েছে।
কৌশিক মজুমদারের লেখা আমি আগেই পড়েছি। উনি তান্ত্রিক, কাপালিক আর যোগীদের নিয়ে লিখতে খুব পছন্দ করেন। আর সে ব্যাপারে উনার নলেজও খুব ভাল। এই বইয়েও তার ছাপ এসেছে। সে হিসেবে বইটাতে ভার্সাটিলিটি কম এসেছে বলে আমার মনে হয়েছে। চরিত্রায়নে সত্যজিৎ রায়েরই অনুসরণ করেছেন লেখক। আর লেখা ভাল, পড়তে কষ্ট পাবেন না।
Profile Image for Tiyas.
449 reviews126 followers
November 2, 2021
শুরুতেই বলে রাখা উচিত ফ্যানফিকশন আমাকে কোনোদিনই আকর্ষণ করে না। এসব লেখার নন ক্যানোনিক্যাল সত্ত্বা আমায় বেজায় বিরক্ত করে। পড়ে আরাম পাই না।

তবুও খানিকটা হাইপে জড়িয়েই তোপসের নোটবুক পড়লাম। পড়ে আর কিছু না হলেও কয়েক খানা প্রশ্ন মাথায় এল। হালের বাংলা লেখকেরা কি তন্ত্র বর্জিত লেখা লিখতে একেবারেই অক্ষম? তন্ত্র হীন বই কি ইদানিং পাঠকমহলে একেবারেই জনপ্রিয় হয় না? ফেলুদার পৃথিবীতে কালো জাদু? কাপালিক নরবলি? পারিবারিক ইতিহাসে বজ্রযান ক্রিয়া কলাপ?

লালমোহন বাবু থাকলে এক্ষুনি ভিরমি খেতেন। মগনলালের ব্র্যান্ডি আর গরম দুধ ও তাকে রিভাইব করতে পারতো কিনা সন্দেহ।

বইয়ের প্রথমাংশে ফেলুদার বংশ পরিচয়, তোপসের জবানীতে। এর পুরোটা জুড়েই বিখ্যাত কিছু ঐতিহাসিক এবং কাল্পনিক চরিত্রদের আনাগোনা। বাদ পড়ছেন না উত্তম কুমার থেকে ব্যোমকেশ বক্সি কেউই। বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের জন্য এখানে রইছে লোভনীয় কিছু রেফারেন্স ও ইস্টার এগস্। এরূপ উচ্চাকাঙ্খী ক্রসওভারের চেষ্টা লেখকের সাহসিকতার পরিচয়।

তবে কিনা মনে আফসোস হয়, অসংখ্য ফ্যান সার্ভিসের সাহায্য না নিয়ে কেবল মৌলিক চরিত্র দিয়ে রচিত একটি আকর্ষিক বংশপরিচয় পেলাম না বলে। লেখক কি চাইলে পারতেন না? প্রশ্নটা ভাবিয়ে তোলে।

বইয়ের দ্বিতীয় অংশে গিয়ে লেখকের সাহসিকতা বিপরীত প্রভাবশালী। এই ভাগটি পুরোটাই প্যাস্টিস ধর্মী, ফেলুদার জীবনের কিছু অজানা এবং অমীমাংসিত রহস্য নিয়ে লেখা। চন্দননগরের সেই জোড়া খুনের মামলা এখানে প্রাধান্য পায়। কেন অমীমাংসিত রইল এই কেস, এবং ঠিক কি কি ঘটেছিল সেটাই লেখক তুলে ধরতে চেয়েছেন। আর সেটা করতে গিয়ে এমন কিছু ক্রিয়েটিভ স্বাধীনতা লেখক নিয়েছেন, যে গল্পের গরু গাছে চড়ে এক্কেবারে ল্যাজেগোবরে। এ নিয়ে আর বেশি কিছু বলব না, উৎসুক পাঠকেরা পড়ে দেখতেই পারেন, এবং যাদের লেখককে অভিসম্পাত করার তারা বহুদিন ধরে করেই যাচ্ছেন, এর মাঝে আমার একটি রিভিউ সেই সুচাগ্র মেদিনী বই কিছুই নয়।

মোটের ওপর বইয়ের সাথে ফেলু মিত্তিরের একটি খাসা ভিজিটিং কার্ড পাচ্ছেন। সেটাই বা মন্দ কি? বাংলায় এমন মার্কেটিং গিমিক খুব একটা দেখা যায় না। লুফে নিন।
Profile Image for Tahjiba Adrita.
103 reviews34 followers
July 12, 2022
বইটি শুরু থেকে বেশ জমজমাট যদিও শুরুতে অনেক বেশী চরিত্র আর ব্যাকগ্রাউন্ড মাঝে মাঝে বিরক্তির উদ্রেক করছিল তবে বেশ ভালোই আগাচ্ছিল কিন্তু শেষটুকু আর মেনে নিতে পারলাম না... সবসময়ের প্রিয় চরিত্রের এমন পরিণতি মেনে নেয়া কষ্টের।
সত্যজিৎ, ফেলুদাপ্রেমী দের অবশ্যই পড়া উচিত।
Profile Image for Nadia Jasmine.
213 reviews18 followers
August 14, 2019
বাংলায় এর আগে ফ্যান ফিকশন পড়ি নাই। জানি না, কখনো কেউ এতো ভালো করে অন্তত আর ফ্যান ফিকশন লিখতে পারবে কিনা। মনটা ভরে গেলো। টের পেলাম ‘ফেলুদা’.. আমার প্রথম ফিকশনাল ক্রাশকে কতোটা মিস করি।
Profile Image for Omar Faruk.
263 reviews16 followers
May 1, 2021
গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে গবেষণাধর্মী বই বাংলা সাহিত্যে হাতেগোনা। যা লিখা হয়েছে তার সবগুলোই বিদেশী গোয়েন্দা চরিত্র গুলোকে নিয়ে।  বাংলা সাহিত্যের গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে এটাই সম্ভবত প্রথম কোনো গ্রন্থ, যেখানে চরিত্রের বংশপরিচয় উঠে এসেছে।

বাংলা সাহিত্যের গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে লিখতে গেলে যে নাম গুলো প্রথম দিকে থাকবে তার মধ্যে ফেলুদা অন্যতম। ফেলুদা গোয়েন্দা কাহিনীর লেখক সত্যজিৎ রায় ফেলুদা’র বংশপরিচয় নিয়ে যেন একটু উদাসীনই ছিলেন অথবা তিনি ফেলুদা’র পরিচয়টা রহস্যাবৃত রাখতেই পছন্দ করতেন।

এই বইটিতে লেখক কৌশিক মজুমদার ফেলুদা’র রহস্যাবৃত বংশপরিচয় খোলাসা করে সবাইকে বলতে চেয়েছেন। তাও সেটা গল্পের ছলে। মূল গল্পের পাশাপাশি লেখক ফেলুদা’র কিছু অপ্রকাশিত কেসের কথাও বলেছেন। বলেছেন ফেলুদা’র পূর্বপুরুষদের কথা, তাঁর গোয়েন্দা জীবনের শুরু থেকে শেষ। রেখা টেনেছেন ফেলুদা’র জীবনেরও!

ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে বইটা বেশ চমকপ্রদ মনে হয়েছে। কাহিনির ছলে এমন গল্প বলার জন্য লেখক অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার।
তবে, বইয়ের শেষ দিকে মনে হলো যেন হুট করেই শেষ হয়ে গেল। মনে হয়েছে গল্প জমে উঠার জায়গাটাতেই লেখক গল্পের ইতি টেনেছেন।
Profile Image for শুভাগত দীপ.
275 reviews47 followers
April 12, 2020
|| রিভিউ ||

বইঃ তোপসের নোটবুক
লেখকঃ কৌশিক মজুমদার
প্রকাশকঃ বুক ফার্ম
প্রকাশকালঃ মে, ২০১৯
ঘরানাঃ বায়োগ্রাফি/মিস্ট্রি/থ্রিলার
অলঙ্করণঃ শান্তনু মিত্র
পৃষ্ঠাঃ ১২০
মুদ্রিত মূল্যঃ ১৫০ রুপি
ফরম্যাটঃ পিডিএফ

শ্রী প্রদোষ চন্দ্র মিত্র, ওরফে ফেলুদা। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে এক চিরচেনা গোয়েন্দার নাম। গ্যাংটকে গণ্ডগোল, জয় বাবা ফেলুনাথ, গোরস্থানে সাবধান, রবার্টসনের রুবি, যতো কাণ্ড কাঠমান্ডুতে, ছিন্নমস্তার অভিশাপ, সোনার কেল্লা, বাদশাহী আংটি'র মতো আরো অনেক কালজয়ী গোয়েন্দা কাহিনির নায়ক এই ফেলুদা৷ তার সঙ্গী হিসেবে ছিলো শ্রী তপেশ রঞ্জন মিত্র, ওরফে তোপসে ও রহস্য রোমাঞ্চ কাহিনির লেখক লালমোহন গাঙ্গুলী, ওরফে জটায়ু।

সত্যজিৎ রায়ের কলমে একের পর এক উঠে আসা ফেলুদার গোয়েন্দা কাহিনি আজও পাঠকের মনোরঞ্জন করে চলেছে সমানভাবে। কিন্তু এই ফেলুদার পরিবার ও বংশপরিচয় সম্পর্কে পাঠকসমাজ কতোটুকুই বা ওয়াকিবহাল! আর সেসবের কিছুটাই জানানোর চেষ্টা করা হয়েছে কৌশিক মজুমদারের 'তোপসের নোটবুক'-এর পাতায়।

কলেজস্ট্রিটের এক পুরোনো বইয়ের দোকান থেকে ঘটনাক্রমে সবুজ মলাটে বাঁধাই করা একটা নোটবুক হাতে এসে পড়ে লেখকের৷ নোটবুকটার লেখক স্বয়ং তোপসে। সেখানেই পাওয়া যায় মিত্র বংশের অজানা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। উঠে এসে ফেলুদা ও তোপসের পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে নানা আলোচনাও। সেই সাথে জানা গেছে ফেলুদার মীমাংসা করা বেশ কিছু কেসের ব্যাপারে, যেগুলো সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা কাহিনিতে স্থান পায়নি। কেন স্থান পায়নি, সেসবের ব্যাপারেও পরিস্কার একটা ধারণা দেয়া হয়েছে 'তোপসের নোটবুক'-এ।

রাঁচিতে রেললাইনে আবিস্কার হওয়া দুই ব্যক্তির লাশ, যাদের মধ্যে একজনকে খুন করা হয়েছিলো মাথায় আঘাত করে আর অপরজনকে খুন করা হয়েছিলো বিষ খাইয়ে। আপাতদৃষ্টিতে পরস্পর সম্পর্কহীন এই জোড়া খুনের রহস্য ফেলুদা তার তদন্তের মাধ্যমে কিভাবে ভেদ করেছিলো তা সংক্ষেপে দেয়া আছে এখানে। মহিষাদল রাজপরিবারের পুত্রবধুর রহস্যময় অন্তর্ধান রহস্যের সমাধানও করতে হয়েছিলো তাকে। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা কাহিনিতে স্থান না পাওয়া এসব কেস সম্পর্কে পাঠককে আলোকিত করা হয়েছে এই বইটাতে।

খোদ কলকাতার বুকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিলো কাপালিকদের একটা সংগঠন। মার্কাস সাহেব ছিলেন উকিল সত্যলব্ধবাবুর কেরানি। কে বা কারা তাকে ছুরিকাঘাত করে খুন করলো। আর এই খুনের তদন্তে নেমেই যেন হাবুডুবু খেতে লাগলো ফেলুদা। শেষমেষ এমন এক বীভৎস অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো তাকে, যা সে কখনো স্বপ্নেও চিন্তা করেনি।

ঠিক কি কারণে মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই গোয়েন্দাগিরি পুরোপুরি ছেড়ে দিলো ফেলুদা তাও জানা যাবে এই বই থেকে৷ 'তোপসের নোটবুক'- অবলীলায় এসেছে প্রোফেসর শঙ্কু, তাড়িনীখুড়ো, সিধুজ্যাঠা ও লালমোহন গাঙ্গুলী। আর এই নোটবুকের শেষদিকটা ভয়ঙ্কর মন খারাপ করা।

লেখক কৌশিক মজুমদারের লেখার ধরণ আমার খুব ভালো লেগেছে। উনি যেভাবে স্টেপ বাই স্টেপ মিত্র বংশকে নিয়ে আলোচনা করেছেন, তা সত্যিই অনেকটা পূর্ণ করেছে বাংলা সাহিত্যকে। সেই সাথে লেখক ফেলুদা সম্পর্কিত পাঠকদের অনেক অজানা কৌতুহল মিটিয়েছেন। ভালো লেগেছে বইটা।

এক বসায় শেষ করে ফেলার মতো একটা বই 'তোপসের নোটবুক'। ভালো লাগবে আশা করি।

(মোস্তানুর সরকার মুন-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা)

পুনশ্চঃ কেউ পিডিএফ লিংক চাইবেননা। আমার কাছে নেই।

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪/৫
গুডরিডস রেটিংঃ ৩.৭৩/৫

© শুভাগত দীপ

(১২ এপ্রিল, ২০২০, সকাল ১১ টা ১২ মিনিট; নিজ রুম, নাটোর)
Profile Image for Ahmed Aziz.
383 reviews69 followers
October 11, 2019
অসাধারণ উদ্যোগ, কিন্তু বইটা অনেক তাড়াহুড়ো হয়ে গেলো। আস্তে আস্তে জমে ওঠার মত ব্যাপারটা থাকলো না। হয়তো তোপসের অস্থিরতাই এর কারণ।
Profile Image for Saiqat .
60 reviews1 follower
November 18, 2024
দুর্দান্ত!
শুরুটা নাটকীয়তার মোড়া আর মাঝ পথ থেকে শেষটা টানটান উত্তেজনায় ভরা। পুরো বইতে ভুগেছিলাম ননস্টালজিয়ায়। আহা ফেলুদা, বোমকেশ বক্সী আর শার্লক। কি সুন্দর করে তাদের ভাবটা করিয়ে দিলেন লেখক।
শার্কল আর বোমকেশ কে দিয়ে শুরু করে ফেলুদা তোপসের গল্পটা বলে গেলেন লেখক।

এতটাই ডুবে গিয়েছিলাম বইতে, তাই এক বসাতেই শেষ করে উঠেছি।
দুর্দান্ত। এ যেনো ছেলেবেলার পুনরাবৃত্তি যেনো ১৪/১৫ বছর কিশোর আবারো প্রথমবারের মতো কোনো গোয়েন্দা বই পড়ছি।

সবগুলো তারা এঁকে দিলাম। আরে কয়েকটা দিতে পারলে দিয়ে ফেলতাম।
Profile Image for Nisha Mitra.
141 reviews39 followers
January 16, 2020
তোপসের নোটবুক

বইটা পড়ার আগে নেতিবাচক ধারণা ই তৈরি হয়েছিল বলাবাহুল্য।
বইএর পাতা থেকে ছোটবেলার হিরোকে রক্ত মাংসের সাধারণ মানুষে পরিণত করার সাহস সবার থাকেনা ; লেখক মশাই এখানেই এগিয়ে গিয়েছেন অনেকটা। বানিয়েছেন এমন একটা ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ড যেখানে অবাধে বিচরণ করছে বাংলা সাহিত্যের প্রিয় চরিত্ররা।
বাংলা সাহিত্যে ফ্যান- ফিকশন আগে পড়িনি। ইংরাজীতেও যা পড়েছি মনে ধরেনি। চিরকাল ভেবেছি লেখকই শেষ কথা। যেভাবে যখন তিনি শেষ হুইসেল বাজাবেন খেলা থামতে বাধ্য। এই নাকউঁচু মনোভাব নিয়ে সবথেকে প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র এর ফ্যান ফিকশন পড়তে যাওয়া আত্মহত্যার সামিল। কিন্তু, কৌতূহলের বশে পড়েই ফেললাম শেষ অবধি।

যদি এটি ফ্যান- ফিকশন এর আওতায় পরে তাহলে
নস্টালজিয়ার মুক্তো দিয়ে যে এক অনবদ্য মালা রচনা করলেন লেখক তা বহুকাল সঙ্গে থেকে যাবে পাঠকদের।
ফেলুদার জন্ম পূর্ববর্তী সময়ে তাঁর পূর্বপুরুষদের কীর্তিকলাপ যা সত্যজিৎ রায় লিখে গিয়েছিলেন খাপছাড়া ভাবে তাকেই chronologically যেভাবে দুমোলা টের মধ্যে
নিয়ে এসেছেন কৌশিক মজুমদার তা প্রশংসার দাবি রাখে। ফেলুদার হাত ধরে তারিণী খুড়ো, প্রফেসর শঙ্কু মায় ব্যোমকেশ অবধি যেভাবে বইতে স্থান করে নিয়েছেন তা লেখকের মুন্সিয়ানার পরিচয়। এবার বহু ফেলু প্রেমিকের কাছে এটা বাড়াবাড়ি ঠেকতে পারে কিন্তু সত্যজিৎ রায় এর diehard ফ্যানরা ঘটনার গতি প্রকৃতি তে চমকে উঠতে বাধ্য ।

যে কেসগুলো তোপসের লেখনীতে পাইনি সেগুলো সম্পর্কে জানতে চিরকাল আগ্রহ ছিল। লেখক কিছুটা প্রত্যাশা মিটিয়েছেন।
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছোটগল্পে তাঁর সমস্ত বিখ্যাত চরিত্রগুলিকে যেমন নিয়ে এসেছিলেন ( গল্পের নামটি ভুলে যাওয়ার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী)
; সেরকমই কৌশিক মজুমদার এর হাত ধরে সত্যজিৎ ও ফিরে এলেন তাঁর না বলা কাহিনী গুলোকে বলতে। ঘটনার বিন্যাসে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রেফারেন্স গুলো ভীষণ মনোগ্রাহী। "হ্যাঁ এরকম টা হতে পারত " ভাবটি চলে আসতে বাধ্য ।

বইয়ের শেষ অংশটিকে
বিচার করার দায়িত্ব শুধুই পাঠকের।
কথায় আছে লেখক গল্প শুরু করেন, পাঠক সেটি সম্পূর্ণ করে। কথাটি একদম খাঁটি এই প্রসঙ্গে। স্পয়লার এড়িয়ে বলতে পারি বইটা নিঃসন্দেহে সেই না হওয়া আড্ডাটাকে তুলে নিয়ে এসেছে ।
Profile Image for Farhana Sufi.
495 reviews
August 14, 2019
বইটার সবথেকে আকর্ষণীয় দিক এর প্রচ্ছদ আর আকার-আকৃতি। নামের সাথে মিল রেখে সবুজ একটা ডায়েরির আদলে বইটা যেই আমাকে পড়তে দেখছিলো, হাতে নিয়ে দেখতে চাইলো, আর বিষয়বস্তু জেনে আমার মতোই অবাক হলো। যে জিনিসটা মিসিং তা হলো একটা কালো বা লাল ফিতে, ডায়েরির পেইজ মার্কার হিসেবে যা থাকে।

শুরু হয়েছে ফেলু মিত্তিরের বংশ পরিচয় আলাপ করে। তাতে সিধু জ্যাঠা, তারিণী খুড়ো আর জটায়ুর পরিচিতিও উঠে এসেছে। প্রদোষ মিত্রের বংশ পরিচয় হতে বরং সেগুলো বেশি আকর্ষণীয় লেগেছে আমার কাছে। আসলে এই গল্প পরে শেষ হয়েছে ডিটেকটিভ প্রদোষ মিত্রের বংশের পরম্পরা ধরেই, বেশ করুণভাবে। তাতে করেই হয়তো পুরো জিনিসটা অত মনমতো লাগেনি। ফেলুদাকে হেরে যেতে দেখা বা decline or death তা বানিয়ে লেখা হলেও কষ্টকর আমাদের কাছে। তাই হয়তো সবাই এই বইটাকে ৩-৪ তারার বেশি দেননি। সত্যজিৎ আর ফেলুদার চিরচেনা ফ্রেমের বাইরে দাঁড়িয়ে দেখলে কিন্তু এ গল্পটাও আলাদা একটা গল্প হিসেবে মন্দ না।

বাংলায় ফ্যান-ফিকশন তাও আবার সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি নিয়ে, যে করার সাহস দেখায় আবার সমাদৃতও হয় তার এফোর্টের জন্যেই ৪ দিলাম।
Profile Image for Mueed Mahtab.
344 reviews
October 17, 2025
ঠিক কি সেরকম হলো যেরকম ফেলুদাকে চিনি আমরা? যেখানে ডিটেইলিং দরকার ছিলো সেখানে হয়নি, যেখানে দরকার ছিলোনা সেখানে অতিরিক্ত। বলতে গেলে ফালতু আলাপ বেশি। কেসগুলোর সলভিং স্টাইলও ফেলুদার মতো হয়নি। ফ্যান ফিকশন জানি! তাই আরও ভালো কাজ হওয়া দরকার ছিলো। আমি শার্লক হোমস নিয়ে লেখা একটা ফ্যান ফিকশন পড়েছিলাম। আমি বুঝতেই পারেনি লিখাটা আর্থার কোনান ডয়েলের না! দেখি যে ভারতীয় একজনের লিখা। অসম্ভব সুন্দর ছিলো সেটা তাই বলতে পারি যে ফ্যান ফিকশনও সুন্দর হতে পারে। গল্পের প্রথম দিকে ফেলুদার ইতিহাস। যাক সেগুলো নিয়ে কিছু বলবো না। লেখক যতটা পড়ে লিখেছে অবশ্যই আমি তার ধারেকাছেও না। পড়ার পর যতটা স্বস্তি পাওয়ার কথা পাইনি, এন্ডিং কিছুটা বিষণ্ণ কারন, বললামই তো এরকম ফেলুদা তো আমাদের পরিচিত নয়। একদমই যেন বোকা ফেলুদা।

যাই হোক। ফেলুদার বাবা ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের অংকের মাস্টার ছিলেন জানতাম। আমি ওই স্কুলেরই ছাত্র। আমাদের স্কুল নিয়ে যতটুকু লিখেছেন একদমই গুগল থেকে পাওয়া ইতিহাস। অথচ স্কুলে কিভাবে পড়াতেন, কি করতেন না করতেন এসব ভেবে একটা সুন্দর গল্প দাঁড় করানো যেতো। যাই হোক। সবমিলিয়ে ৩/৫
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
May 23, 2025
সবমিলিয়ে ভাল লাগলো না।

বইয়ের শুরুর দিকে, যেখানে আরও অনেক ফিকশনাল আর হিস্টরিকাল চরিত্রের ক্রসওভার ঘটিয়ে ফেলুদার বংশপরিচয় তুলে ধরা হয়েছে, সেই অংশটাই শুধু পড়তে ভাল লাগলো। বাকিটুকু কিছু কেস নিয়ে, ফ্যানফিকশন। একেবারে শেষে, দুর্বলভাবে দেখিয়েছেন কিভাবে ফেলুদা গোয়েন্দাগিরি বাদ দিলেন।
Profile Image for Mehzabin Hasan Hridy.
65 reviews
September 29, 2021
তোমার যদি থাকে ফেলুদাকে নিয়ে দারুণ obsession, খুঁটিনাটি মনে রাখবার মত স্মৃতিশক্তি, স্বাধীনতার পূর্বের ভারতের ইতিহাসে আগ্রহ, আর যদি দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে অদ্ভুত তৃপ্তি পেতে ভালোবাসো- তবে বইটি তোমারই জন্য! সেই সাথে যদি তোমার পড়া থাকে ব্যোমকেশ, বরদাবাবু, তারিণীখুড়ো, প্রোফেসর শঙ্কুর কাহিনী...তবে তো কেল্লাফতে!
খুঁটিনাটির যোগসাজশ ধরতে পেরে তুমি ভীষণ মজা পাবে।

শুরুর দিকের কয়েক পাতা পড়তে গিয়ে অনেক অনেক তথ্য আর সম্পর্কের প্যাঁচগোচে পাঠক গোলকধাঁধায় আটকা পড়ার মত দিশা হারাতেই পারে। কিন্তু যখন একবার মজা পেতে শুরু করবে, তখন আর তার বইটা শেষ না করে উঠতে ইচ্ছে করবে না বলে আমার মনে হয়।
তবে সেই মজাকে সত্যজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদার কাহিনীগুলোর মজার সাথে তুলনা করতে যেও না যেন, পাঠক! তবে ঠকবে। স্পয়লার হিসেবে নয়, বরং পাঠকদের মানসিক প্রস্তুতি দিতে বলে রাখছি: সত্যজিৎ রায় (ওরফে মানিকবাবু) গল্পগুলি লিখেছিলেন তোপসের কাছে শুনে, নিজের জাদুকরী ভাষায়। আর এদিকে, কৌশিক মজুমদার খুঁজে পেয়েছেন ষাট বছরের বৃদ্ধ তোপসের লেখা একটি ডায়রি, যাতে থাকা কাহিনী তিনি তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে- 'তোপসের নোটবুক' বইটিতে।

ফেলুদা যাদের হিরো, তাদের পক্ষে বইয়ের শেষদিকের ঘটনা মেনে নেওয়া একটু কষ্টকর। (আমারই তাৎক্ষণিকভাবে মনে হয়েছিল এই বইটা না পড়লেই বোধহয় ভালো করতাম।) কোটি কোটি পাঠকের আবেগের কেন্দ্রবিন্দু ফেলুদাকে নিয়ে লিখতে যথেষ্ট দুঃসাহসের প্রয়োজন হয় বই কী! লেখকের তা ছিল, দেখা যাচ্ছে।

পড়তে পারো। ভালো লাগা বা মন্দ লাগার অনুভূতি ব্যক্তিভেদে একেকরকম হবে, এ কথা তো সব বইয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অন্যান্য অনেক বইয়ের মত এই বইটারও রয়েছে positive এবং negative review. আমি নেগেটিভ রিভিউ দেবো না।

একবার পড়েই দেখ না, ষাট বছর বয়সে কী লিখেছিল তোপসে তার সবুজ মলাটের ডায়রিতে....
Profile Image for Pritam.
23 reviews
May 14, 2019
ফেলুদা-কাহিনীর আমি খুবই ভক্ত । কিন্তু 'তোপসের নোটবুক' পড়তে পড়তে মনে হয়েছে, এটি ছেলেমানুষিতে ভরা এক মজার ব‌ই । মেধার এতো দৈন‍্য ! শ্রী সত‍্যজিৎ রায় যা যা লিখেছেন অথবা লেখেননি (হয়তো লিখতেনও না কখনও তাঁর রুচিশীল মননে, নির্মল সৃষ্টিতে), তার সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের কিছু কাল্ট চরিত্রের নাম ব্যবহার করে লেখা হাবিজাবি গোছের ব‌ই এটি । বলা ভালো, একরকম বেশি মশলাদার খিচুড়ি রান্না করেছেন লেখক, এবং সেটা খেতে খুব‌‌ই খারাপ লেগেছে । সব মশলা একসঙ্গে দিলেই রান্না ভালো হয়না, এই বোধটাই লেখকের নেই । অর্থাৎ, পরিমিতি বোধের অভাব । এ দিয়েই কিন্তু কেউ সাহিত্যিক কি না তা বোঝা যায় । ফেলুদার থেকে তারিণীখুড়ো বয়সে বড় বলেই মনে হয়েছে এতদিন, এখানে তারা সমবয়সী বন্ধু । ক্রনোলজির গোলমাল আরো আছে । জীবনীর মাঝে মাঝে অতি সংক্ষিপ্ত কাপালিক-তান্ত্রিক-রহস্য, যা অতি দুর্বল, জেমস বন্ড মুভি ও বিদেশি বস্তাপচা কাহিনীর নকল, এবং যেগুলি পাঠককে কোনো তৃপ্তিকর ঠিকানায় নিয়ে যায় না । এই ফেলুর মুখে বারবার " ভালো লাগছে না রে তোপসে" যেন আসল ফেলুদার ক‍্যারিকেচার লাগছে । আর ভৃমিকায় বলা হয়েছে এটা তোপসের ডায়েরি, তার নিজের লেখা, লেখক কিনে এনেছেন । আমি বলি, তিনি না কিনলেই পারতেন ! তিনি তো ঠকলেন‌ই, সঙ্গে আমাদেরও ঠকালেন (সময় ও অর্থ দুদিক দিয়েই) । তোপসের লেখা এ হতেই পারেনা, সম্ভবতঃ কোনো পাগলের প্রলাপ, যে নিজেকে 'তোপসে' ভাবে । ( আর হ‍্যাঁ, ছেলেমানুষি ব‌ই হলেও এটি ছোটদের জন্য নয় । কেউ তোপসের নামটি কভারে দেখে ছোটোদের হাতে তুলে দেবেন না । )
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Dev D..
171 reviews26 followers
December 22, 2019
শুরুটা ভালোই লেগেছিল, মানে ফেলুদা, তোপসের পারিবারিক ইতিহাসের অংশটুকু। এই ইতিহাসে ঘুরেফিরে চলে এসেছেন তারিণী খুড়ো‌, ভূতান্বেষী বরদা, ব্যোমকেশ বক্সী এমনকি বাস্তবের মানুষজন যেমন- ফেলুদার পূর্বপুরুষের বন্ধু ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর, আর এক পূর্ব পুরুষের বিয়ের বরযাত্রী ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর এর বড়ভাই সারদারঞ্জন, ফেলুদার বাবা জয়কৃষ্ণের সাথে সুভাষ বোসের পরিচয়, কিংবা উত্তম কুমারের মাধ্যমে তোপসের সাথে মানিক বাবুর পরিচয় এগুলো বেশ লেগেছিলো- এরা তো সব বাস্তবের বিখ্যাত মানুষ। ফেলুদার বাবা জয়কৃষ্ণের সাথে লালমোহন বাবুর এথেনিয়াম স্কুলের শিক্ষক বৈকুন্ঠ বাবুকে মিলিয়ে দেয়াটাও দারুণ ছিল। গোলমাল লাগলো ফেলুদার কেস হিস্ট্রি তে গিয়ে। সিধু জ্যাঠার উপর নির্ভরশীলতা একটু বেশি ই দেখানো হয়েছে, ফেলুদার নিজের জ্ঞানের পরিধিও তো খুব কম ছিল না, প্রতিপদে তো আর ফেলুদা সিধু জ্যাঠার কাছে দৌড়াতো না। আর একালের সব লেখকের মতোই যেকোন সুযোগে তন্ত্র কে টেনে আনার ব্যাপারটাও ভালো লাগে নি, তাও যদি সেটাকে সুন্দরভাবে রূপায়িত করতে পারতেন তবুও হতো। হাজার বছর আগেও বংশে মিত্র পদবী থাকাটাও হাস্যকর যেখানে বাঙালিদের পদবীর ইতিহাস কয়েকশো বছরের পুরোনো নয়। আর মোট কথায় ভালো লাগে নি গোয়েন্দা কাহিনীর মান। সেই সাথে এমন করুণ পরাজয় ফেলুদাকে মানায় না। ভালো লাগেনি, শুরুটা বাদ দিলে একদম ভালো লাগে নি। লেখাটা শুধু ফেলুদা তোপসের পারিবারিক ইতিহাসে শেষ হয়ে গেলেই ভালো ছিল।
Profile Image for Salma Maliha.
51 reviews16 followers
June 7, 2021
বন্ধুর লেখা রিভিউ পড়ে, বইটা নেড়েচেড়ে শুরুতেই শেষ পাতায় চলে গেলাম। যদিও রিভিউ পড়ে অনুমান করেছিলাম কী হতে পারে, অনুমান সত্য হওয়ার পর রিভিউদাতা বন্ধুকে মনে মনে বেশ করে গালি দিলাম, দারুণ একটা বই রিকমেন্ড করার জন্য।
অতঃপর এক বসাতেই শেষ...
কতটুকু সাধারণ বা অসাধারণ লেখা, সে আলোচনায় যাবো না। স্রেফ একটা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলব... শেষটা যতই করুণ হোক, ফেলুদা সমগ্র ২ শেষ করার পর পারফেক্ট একটা ডেজার্ট ছিলো এটা।
Profile Image for Mustakim.
375 reviews32 followers
December 21, 2021
ফ্যান ফিকশন। লেখক সাহেব সত্যজিৎ রায়ের লেখার স্টাইল অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন। খুব বেশি যে সফল হয়েছেন তা অবশ্য বলা যায় না। মোটামুটি লেগেছে। শেষটা অপ্রত্যাশিত, মেনে নেয়া একটু কঠিন।

রেটিং - ৩/৫
Profile Image for মোহতাসিম সিফাত.
180 reviews50 followers
May 29, 2023
সুন্দর একটা বই।
টিপিক্যাল কৌশিক মজুমদার মুন্সিয়ানা।
এযুগের কেউ ফেলুদার বই লিখলে তাকে কৌশিক মজুমদার নাম দেয়া যেতে পারে।
বইয়ের সামনে ফেলুদার ভিজিটিং কার্ড দেয়া আর পরতে পরতে ফেলুদার কথা খুব ভালো লাগবে।

ছোট্ট কলেবরের বই। পড়তে পারেন। ৪.৫*
Profile Image for Tonmoy Biswas.
14 reviews23 followers
August 6, 2019
#পঠতি_পঠতঃ_পঠন্তি
#তোপসের_নোটবুক- কৌশিক মজুমদার
অলংকরণ- শান্তনু মিত্র
নামাঙ্কন- বিল্টু দে
প্রকাশক- বুক ফার্ম
দাম-১৫০

প্রচ্ছদ নিয়ে তেমন বলার কিছু নেই। নোটবুকের আদলে রঙ করা প্রচ্ছদ। এরম টেক্সচার স্টকে প্রচুর পাওয়া যায়। হাতে আঁকতে হলেও সেটা এমন কিছু চাপের কাজ নয়। ক্যালিগ্রাফি... ভালই। আচ্ছা প্রচ্ছদ দিয়ে যখন শুরু করেছি তখন ইলাস্ট্রেশনটাও একবারে সেরে নিই। শিল্পীর প্রত্যেকটা স্ট্রোক যথেষ্ট সাহসী। ঈর্ষা করার মত পেন শেডের দখল। তবে অ্যানাটমিগুলো (লাশের ছবি বাদে) আরও খানিক সাবলীল হলে ষোলো কলার কাঁদি নিয়েই ঘরে ফেরা যেত বেশ। বিশেষ করে জটায়ুর ছেলেবেলার ছবির পশ্চার যথেষ্ট দুর্বল।

ওকে ডান! এবার বইয়ের কথায় আসা যাক। বই নিয়ে মোটামুটি সবাই জানেন। তাও প্রতিক্রিয়ার অলিখিত নিয়ম অনুসারে কিছুটা সিনোপসিস দিয়ে রাখা ভাল। বুঝলেন তো, এখানে ফেলুদা হল একজন রক্ত মাংসের মানুষ। যে রজনী সেন রোড ধরে হাঁটে, অরুণ চ্যাটার্জির (উত্তমকুমার) সাথে বসে আড্ডা মারে বিস্তর। আর সব থেকে বড় কথা, তার পরাজয় আছে!

শার্লক হোমস বা অন্যান্য গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে আগে এরম প্রয়াস হলেও, বাংলায় এ কাজ এর আগে একমাত্র শঙ্কু নিয়েই হয়েছে।
"প্রোফেসর শঙ্কুর শেষ ডায়েরি"- বিশ্বজিত রায়। তবে সেখানে শঙ্কুকে মানুষ হিসেবে দেখানোর থেকে অনেক বেশি মন দেওয়া হয়েছিল বিশ্লেষণে। গল্পের ছলে সে ছিল এক গবেষণা গ্রন্থ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে তোপসের নোটবুকের ধরণ কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন।

মিত্র বাড়ির পূর্বপুরুষ থেকে শুরু হয় গল্প। ফেলুদা সিরিজের এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খুবই ক্ষীণ কিছু সুতো ধরে (তাও কিছু ক্ষেত্রে সে সব পরস্পরবিরোধী) অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য ভাবে মিত্র বংশের সামগ্রিক চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বইয়ে। সেই রেখাচিত্র প্রায়ই ছুঁয়ে যায় রায় পরিবারের উঠোন, কখনও জড়িয়ে পড়ে সশস্ত্র বিপ্লবে আবার কখনও বা ব্যোমকেশ-সত্যবতীকে সাক্ষী রেখে বিয়ে হয়ে যায় ফেলুর বাবা-মায়ের।

ঝরঝরে গদ্য আর প্রাচীন বাংলার সমগ্র চিত্র এ বইয়ের অন্যতম সম্পদ। আরেকটা যেটা সম্পদ হলেও হতে পারত, তা হল ফেলুদার না লিখে যাওয়া কেসগুলো। বেশ কিছু গল্পে যাদের আভাস পাওয়া গেলেও মানিক বাবু তাদের কথা লিখে যাননি। যেমন জোড়া খুন মামলা, রেসের এক ঘোড়ার হত্যা রহস্য, সেগুলোর কথা এখানে লেখা হলেও, কেসগুলো এত সহজেই সলভ হয়ে যায়, যে ঠিক মন ভরে না। অবশ্য এটাও ঠিক এখানে ফেলুদাকে মানুষ করে তোলার চেষ্টা চলেছে সর্বত্র। তাই স্বাভাবিক ভাবেই কেসগুলো হয়ে পড়ে সাধারণ। আর তোপসের কলম দিয়ে লেখক শুরুতেই লিখিয়ে নিয়েছেন যে, মানিকবাবুর মত পালিশ করে লেখা তার কম্ম নয়। তবে হ্যাঁ "...নইলে গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেব" কথাটা না কেমন কাশীর ঘাট না হলে ঠিক জমে না! ওখানেই সেট করে গেছে ব্যাপারটা। তাই ওই ডায়লগটা বেশ ক্লিশে লেগেছে আমার কাছে। আর ভাল লাগেনি শেষটা, কিছুটা জোর করেই যেন ফুরিয়ে গেল গল্প। অবশ্য এটা একান্তই ব্যক্তিগত ভাললাগা, ফেলুদার ওপর আমার প্রায় অন্ধ ভক্তি হয়তো এর অন্যতম কারণ!

যাই হোক সস্তায় বেশ বেশ বেশ পুষ্টিকর বই। পেজ কোয়ালিটি যথেষ্ট ভাল। শুধু মনে হল লেখাটা আরেকটু গোছানো, আরেকটু সম্পাদনার মধ্যে দিয়ে গেলে বোধহয় আরও আকর্ষনীয় হতে পারত। এই আর কী।
Profile Image for Musharrat Zahin.
404 reviews489 followers
May 18, 2020
বই: তোপসের নোটবুক ⠀
লেখক: কৌশিক মজুমদার⠀
ঘরানা: বায়োগ্রাফি, মিস্ট্রি, থ্রিলার⠀
পৃষ্ঠা: ১১৬⠀
রেটিং: 4⭐/5⭐⠀

সবসময় তো ফেলু মিত্তিরকে নিয়েই কথা হয়, আজকে নাহয় তপেশরঞ্জন ওরফ আমাদের তোপসেকে নিয়ে কিছু কথা হোক। ⠀

গ্যাংটকে গণ্ডগোল, জয় বাবা ফেলুনাথ, গোরস্থানে সাবধান, রবার্টসনের রুবি, যতো কাণ্ড কাঠমান্ডুতে, ছিন্নমস্তার অভিশাপ, সোনার কেল্লাসহ আরো সব এডভেঞ্চারের গল্প আমরা পূংখানপুংখ জানলেও, ফেলুদার পরিবার ও বংশ পরিচয় নিয়ে আমরা কতটুকুই বা জানি? আমাদের সেই অজ্ঞতা দূর করার জন্যই কৌশিক মজুমদারের এই ছোট্ট প্রয়াস।⠀

কলেক স্ট্রিটদের হাঁটার সময় তোপসের লিখা নোটবুকটা এক দোকানির কাছ থেকে কিনে নেন কৌশিক মজুমদার। পাতা উলটে দেখলেন, সেখানে কাঁপা কাঁপা হাতে লিখা, "শ্রীতপেশ রঞ্জন মিত্র, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১২"⠀

এই নোটবুকেই পাওয়া গেল মিত্র বংশের অজানা সব তথ্য, তাদের বংশপরিচয় ও পূর্বপুরুষদের ইতিহাস। এমন অনেক কেস আছে যা অমীমাংসিত রয়ে গেছে কিংবা সত্যজিৎ রায় সেসব নিয়ে কিছু লিখেননি- সেগুলোই এই নোটবুকে স্থান পেয়েছে। কেন সত্যজিৎ রায় ওইসব নিয়ে কিছু লিখেননি, সে ব্যাপারটাও এখানে আলোচনা করা হয়েছে। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ফেলুদা কেন গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দিলেন, তাও জানা যাবে এই বই থেকে।⠀

বইয়ের শেষ অংশে এসে একটু ধাক্কাই খেয়েছি। মৃত্যু ব্যাপারটা সবসময়ই কষ্টের, তার উপর তা যদি প্রিয় কোনো মানুষের হয়। ফেলুদা আমার কাছে রক্ত-মাংসের একজন মানুষ, মনে হয় ছোট থেকেই তাকে দেখে আসছি, তাঁর সাথে তোপসে বা লালমোহন বাবু না, আমিই সোনার কেল্লা-গ্যাংটক দাপিয়ে বেড়িয়েছি৷ তাঁকে যেহেতু রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ ভেবেছি, তাহলে তাঁর মৃত্যুও তো অবধারিত। তবুও ব্যাপারটা মেনে নিতে বেশ কষ্টই লাগছিল। এটাই তো নিয়তি। লালমোহন বাবু হার্ট আট্যাকে মারা গেলেন, কেস বাদ দিয়ে একসময় ফেলুদাও নিজের মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকলেন।⠀

🌻🌻🌻⠀

বইটা পড়তে যেয়ে কিছু কিছু জায়গা এত বিরক্তিকর ঠেকছিল, মনে হচ্ছিল অহেতুক টেনে বড় করা হয়েছে। এইজন্য মাঝে অনেকদিন এইটা না পড়ে রেখে দিয়েছিলাম। ফেলুদাপ্রেমী হলে বইটা পড়ে দেখতে পারেন, যদি তাঁর মৃত্যু সহ্য করার ক্ষমতা আপনার থেকে থাকে।
Profile Image for Tazbeea Oushneek.
156 reviews53 followers
July 4, 2019
ফেলুদা , তোপসে আর জটায়ুকে রক্ত মাংসের মানুষ হিসাবে দেখাতে চেয়েছেন লেখক। মিত্র বংশের ইতিহাসের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের অন্যান্য সৃষ্টি এবং বাংলা সাহিত্যের অনেক পরিচিত সৃষ্টি এবং স্রষ্টা সবাই যে সত্যিকার মানুষ ছিলেন এমনকি তাদের পূর্বপুরুষরা অনেক ক্ষেত্রে অনেক ঘনিষ্ঠ ও ছিলেন সেটা খুব সুন্দর ভাবে লেখা। এটুকু পর্যন্ত মেনে নিলাম।
কিন্তু ফ্যান ফিকশন জিনিসটা যে কারণে পছন্দ না সে কারনটা হল- পছন্দের চরিত্রগুলোকে এমন একভাবে সামনে নিয়ে আসা হয় যেটা আমার অন্যায় মনে হয়। একটা চরিত্রের পরিণতি কি হবে সেটা সেই চরিত্রটাকে একটু একটু করে যিনি সাজিয়েছেন তাঁর একচ্ছত্র অধিকারে থাকা উচিত। কেউ যদি নিজের মত করে লেখেন ও ফেলুদাকে তার জায়গা থেকে বের করে এনে এরকম পরিণতি দেয়াটা ভাল লাগেনি।
বই শুরু করার আগে মাথায় ছিল যে শেষটুকু ভাল না লাগলে অনেক কষ্ট লাগবে। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম, লেখক যদিও চেষ্টা করেছেন সত্যজিৎ রায়ের থ্রি মাস্কেটিয়ার্স কে সত্যিকার মানুষ হিসাবে দেখাতে, এই থ্রি মাস্কেটিয়ার্স অনেক আগে থেকেই আমার মনে সত্যিকার মানুষ হিসাবেই আছে। তোপসের নোটবুক পড়ে নিজেকে মনে মনে বলতে শুরু করেছিলাম , "এটা তো এমনি একটা গল্প। আসলে তো আর ফেলুদার এরকম হয় নাই।"
Profile Image for Sadia Dina.
Author 1 book67 followers
May 31, 2019
ভয়ে ভয়ে পড়তে শুরু করেছিলাম, শেষে না সবটাতেই পানি ঢেলে পণ্ড হয়।শুরুতে একদম ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে; এত ইতিহাস, তাও রেফারেন্সবিহীন! মেনে নেওয়া যাচ্ছিল না।

মাঝের ভাগে মনে হয়েছে, বেশ সুন্দর লেখার চেষ্টা করেছেন লেখক। অনেক গল্প টেনে এনেছেন, রিসোর্স দেয়ার চেষ্টা করেছেন।মাঝে মাঝে মনে হতো এই তো তোপসে, সেই সত্যজিৎ এর তোপসেই কথা বলছে!এটা যদি দুটো পাতাতেও কারো মনে হয়- আমার মনে হয় তাতেই লেখক অতি আনন্দিত হওয়া প্রয়োজন।কারণ, তা সহজ নয়।

শেষে বলি, এত্ত এত্ত ফেলুদাভক্তের মন ভাঙার রিস্ক মাথায় রেখেও লেখক সে সাহস করেছেন, তাতে বাহবা দিব?বইয়ের শেষভাগে মন ভেঙেছে। এই মন ভাঙানোর অধিকার কি কারো ছিল?
ছিল না। :)
Profile Image for Sushanto Kumar Saha.
93 reviews9 followers
May 5, 2020
একটাই শব্দ বলতে পারি - "জগাখিচুড়ি "!
Profile Image for Pranta Biswas.
122 reviews4 followers
December 13, 2023
প্রদোষ চন্দ্র মিটার (ফেলুদা), শ্রীমান তোপেসরঞ্জন (তোপসে) ও লালমোহন গাংঙ্গুলী ওরফে জটায়ুর এই 'Trio' বাংগালী কিশোর পাঠকদের কাছে এক অন্যতম ভালবাসার জায়গা। পাঁচকড়ি দে, সত্যজিৎ রায়, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো লেখকদের কল্যাণে গোয়েন্দা চরিত্রের সংখ্যা বাংলা সাহিত্যে নেহাৎ কম না। কিন্তু 'ফেলুদা'র মতো জনপ্রিয়তা মনে হয়না আর কোন গোয়েন্দা চরিত্র অর্জন করতে পেরেছে। সত্যজিৎ রায়ের এই চরিত্রকে নিয়ে একটি ফ্যান ফিকশন লেখার লোভ অনেক ফেলু প্রেমীর মতো কৌশিক মজুমদারেরও হয়েছিলো নিশ্চয়। তার ফলাফল এই 'তোপসের নোটবুক'।

বইয়ের প্রাককথনে লেখক বলেছেন, কলেজ স্ট্রিটের এক বইয়ের দোকানে ফার্স্ট এডিশনের ফেলুদা সিরিজের সাথে তিনি পেয়ে যান এই 'নোটবুক' যার মধ্যে আছে 'মিত্র বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও অন্যান্য'। সেই নোটবুক থেকেই লেখা 'তোপসের নোটবুক'। যেভাবে সত্যজিৎ রায় 'প্রফেসর শঙ্কুর ডায়েরী' থেকে লিখা শুরু করে শঙ্কু সিরিজ 🫣। যাইহোক বই পড়ার অভিজ্ঞতা খুব ভাল না, আবার খুব খারাপও না।

ভাল লাগার ব্যাপারগুলো আগে বলি। তোপসের নোটবুকে ত্রিলোকেশ��বর শঙ্কুর কথা থাকবে এইটা অনুমেয়। শরদিন্দুর ব্যোমকেশ আর বরদার উপস্থিতি একটু অবাকই করেছে। কিন্তু নারায়ন স্যান্যালের ব্যারিস্টার পি কে বাসুর উপস্থিতি যারপরনাই অবাক করেছে! মানে বাংলা সাহিত্যের সকল গোয়েন্দা/রহস্য ইউনিভার্সকে মারভেলের এভেঞ্জারস বা ডিসি কমিক্সের জাস্টিস লীগের মতো একজায়গায় করার এই প্রয়াস অন্য কার কেমন লাগবে জানি না, আমার ভালই লেগেছে। অবশ্য যে স্বয়ং শার্লক হোমসকে সুদূর লন্ডন থেকে টেনে এনে 'প্রিয়নাথ দারোগা'র সাথে জুড়ে দিতে পারে তার কাছে এগুলো তো নস্যি। এর পাশাপাশি ফেলুদার কিছু অপ্রকাশিত রহস্য (যা অবশ্যই 'মানিক' বাবুর লেখা না) নতুন করে প্রকাশ করায় লেখকের কাছে কৃতজ্ঞ 🤣 ।

ভাল না লাগার বিষয়গুলোর মধ্যে প্রথমেই আসবে বইয়ের প্রথমভাগের বংশপরিচিত (এতে লেখকের ব্যর্থতা কম, আমার সীমিত আকারের মস্তিস্কের ব্যর্থতা বেশি)। শ্রীকৃষ্ণ, নবকৃষ্ণ, জয়কৃষ্ণ, বিনয়কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ....সব কিছু মিলিয়ে মাথায় তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিলো। ফেলুদার জন্মের পর ফাইনালি একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পেরিছিলাম। পর পর কয়েকটি কেইস মোটামুটি লেগেছে। (এর প্রধান কারন হলো, কৌশিক মজুমদারের পক্ষে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা লেখা সম্ভব না। কিন্তু পাঠক হিসেবে আমি আমার ফেলুদার স্ট্যান্ডার্ড তো পরিবর্তন করতে পারছি না। ফলশ্রুতিতে যত ভালই প্লট হোক কিংবা যত ভালই গল্প হোক, সেই সুর আর তালের কম্বিনেশনটা ঠিক হয়না)। এরপর আবার চলে আসে বৌদ্ধধর্মের তন্ত্র-মন্ত্র-যন্ত্রের ইতিহাস।ইতিহাসের অলি গলি দিয়ে কাহিনী চুপিসারে চলতে থাকে। ম্যাসন সিরিজ পড়ার সময়ই বুঝেছিলাম যে এই লোকের ইতিহাসের উপর দক্ষতা অসাধারণ। কিন্তু টানা ইতিহাসের বর্ণনা আমার আবার প্রচুর একঘেয়ে মনে হয় (অই যে বলেছি, সীমিত আকারের মস্তিস্ক)। তারপরেও কাহিনী মোটামুটি জমজমাট ছিলো। কাহিনীতে আবির্ভাব ঘটে ফেলুদার চিরশত্রু মগনলাল মেঘরাজের ছেলে, সুরজলাল মেঘরাজের। সেদিনের সেই পুচকে ছোড়া বাড়ি বয়ে এসে ফেলু মিত্তির কে দিয়ে যায় হুমকি। পালের সবকটাকে হাতেনাতে ধরার জন্য ফেলুদা ও তোপসে হানা দেয় শত্রুবাহিনীর ডেরায়। কাহিনীতে টান টান উত্তেজনা.... কিন্তু একি!!! কিছু কিছু জিনিস পাঠকের উপর ছেড়ে দেওয়াই ভাল। ইতিহাসে অনেক নজির আছে একটি নির্দিষ্ট সময় পর লেখক ও তার সৃষ্টির উপর অধিকার হারিয়ে ফেলে। আর এদিকে ফ্যান ফিকশন লিখতে গিয়ে ফেলুদার যে পরিনতি লেখক তুলে ধরেছেন, একজন ফেলুদা ভক্ত হিসেবে তা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
Displaying 1 - 30 of 99 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.