What do you think?
Rate this book


154 pages, Hardcover
First published February 1, 2003
আজাদের মৃত্যুর ১৪ বছর পর, ঠিক ৩০ আগষ্ট আজদের মা পৃথিবী ছেড়ে যান। এই ১৪টা বছর তিনি এক দানা ভাতও মুখে দেননি ! এই ১৪টা বছর তিনি বিছানায় শোননি। শক্ত মেঝেতে, শক্ত পিড়িতে মাথা রেখে ঘুমিয়েছেন। কারণ তার আজাদও যে ভাত খেতে পায়নি। একটা বালিশ পায়নি মাথা রাখার জন্য।তাদের মা-ছেলের এমন ভালবাসায় আমি “মা” -তে মুগ্ধ !!
‘‘আমি কী তোকে শুধু আমার জন্যই মানুষ করেছি। এদেশটাও তোর মা। যা দেশটাকে স্বাধীন করে আয়।’’মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আজাদ গেলেন মুক্তিযুদ্ধে। শুরু হলো আজাদের নতুন আরেক জীবনযুদ্ধ। ঢাকার ক্র্যাক প্লাটুনের একজন গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন আজাদ। মুক্তিযুদ্ধের মাঝখানে আগস্ট মাসে রাজাকারদের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। হানাদাররা তথ্য জানার জন্য অকথ্য নির্যাতন করত। নির্মম অত্যাচারের মুখেও আজাদ কিছু বলেননি। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-পরিচয় বলে দেয়, তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তা শুনে আজাদের মা ছুটে গেলেন আজাদের কাছে। না, ছেলেকে মুক্ত করার জন্য নয়! বরং তিনি আজাদকে বললেন,
"বাবারে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো। সহ্য করো। কারো নাম যেন বলে দিও না।"আজাদ তাকে কথা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন জেলের দুর্বিষহ জীবনের কথা, প্রচণ্ড নির্যাতনের কথা। আরও বলেছিলেন,
"মা, ভাত খেতে ইচ্ছা করে। দুইদিন ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগে পাই নাই।"আজাদের মা তাকে অভয় ও সান্তনা দিয়ে বলেছিলেন, "কালকে আমি ভাত নিয়ে আসবো।" কথামতো ভাত নিয়ে গিয়েছিলেনও তিনি ।কিন্তু আজাদ কোথায়? আজাদ নেই। রমনা থাকা, ঢাকা কারাগার, এমপি হোস্টেলে ছেলেকে খুজতে খুজতে টিফিকারিতে ভাত পচে যায় কিন্তু ছেলেকে আর কোথাও তিনি খুজে পান না। সেইদিন তারিখটা ছিল ৩০ আগষ্ট, ১৯৭১।