প্রোফেসর শঙ্কুর প্রথম ডায়েরি সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৬৮-তে। আর ১৩৯৯-এর পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর শেষ দুটি অসমাপ্ত ডায়েরি ‘ইনটেলেকট্রন’ ও ‘ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’। কী হত এর পর—যদি তিনি গল্পদুটি সমাপ্ত করতে পারতেন? সত্যজিৎ রায়ের কল্পনা কোন খাতে গল্পদুটিকে টেনে নিয়ে যেত তা জানার আর কোনও উপায় নেই। তাঁর কল্পনাশক্তি বা লেখনশৈলীর ধারেকাছে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তাই সত্যজিৎ রায়ের অসমাপ্ত শঙ্কু-কাহিনি শেষ করার চেষ্টা তাঁর জুতোয় পা গলানোর স্পর্ধা নয়, বরং সেই মহান স্রষ্টার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। দুটি অসমাপ্ত কাহিনির সম্পূর্ণ রূপ “কল্পবিশ্ব” ওয়েবজিনে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই পাঠকমহলে বিপুল সাড়া পাওয়া যায়। যেন অনেকদিন পর স্বমহিমায় ফিরে এসেছেন বাঙালির আরেক মহানায়ক। সেই গল্পদুটিকেই এবার সন্দীপ রায়ের অনুমোদনক্রমে দু-মলাটের মধ্যে সাজিয়ে দেওয়া হল। এই বইয়ের প্রচ্ছদ, অলংকরণ ও গ্রন্থসজ্জাতেও সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে যাতে সত্যজিৎ রায়ের মূল শঙ্কু-গ্রন্থগুলির স্বাদ ফিরে পাওয়া যায়।
Satyajit Ray (Bengali: সত্যজিৎ রায়) was an Indian filmmaker and author of Bengali fiction and regarded as one of the greatest auteurs of world cinema. Ray was born in the city of Calcutta into a Bengali family prominent in the world of arts and literature. Starting his career as a commercial artist, Ray was drawn into independent filmmaking after meeting French filmmaker Jean Renoir and watching Vittorio De Sica's Italian neorealist 1948 film, Bicycle Thieves.
Ray directed 36 films, including feature films, documentaries and shorts. He was also a fiction writer, publisher, illustrator, calligrapher, graphic designer and film critic. He authored several short stories and novels, primarily aimed at children and adolescents.
Ray's first film, Pather Panchali (1955), won eleven international prizes, including Best Human Documentary at the Cannes Film Festival. This film, Aparajito (1956) and Apur Sansar (1959) form The Apu Trilogy. Ray did the scripting, casting, scoring, and editing, and designed his own credit titles and publicity material. Ray received many major awards in his career, including 32 Indian National Film Awards, a number of awards at international film festivals and award ceremonies, and an Academy Award in 1992. The Government of India honoured him with the Bharat Ratna in 1992.
Early Life and Background: Ray's grandfather, Upendrakishore Ray Chowdhury was a writer, illustrator, philosopher, publisher, amateur astronomer and a leader of the Brahmo Samaj, a religious and social movement in nineteenth century Bengal. Sukumar Ray, Upendrakishore's son and father of Satyajit, was a pioneering Bengali author and poet of nonsense rhyme and children's literature, an illustrator and a critic. Ray was born to Sukumar and Suprabha Ray in Calcutta.
Ray completed his B.A. (Hons.) in Economics at Presidency College of the University of Calcutta, though his interest was always in Fine Arts. In 1940, he went to study in Santiniketan where Ray came to appreciate Oriental Art. In 1949, Ray married Bijoya Das and the couple had a son, Sandip ray, who is now a famous film director.
Literary Works: Ray created two of the most famous fictional characters ever in Bengali children's literature—Feluda, a sleuth in Holmesian tradition, and Professor Shonku, a genius scientist. Ray also wrote many short stories mostly centered on Macabre, Thriller and Paranormal which were published as collections of 12 stories. Ray wrote an autobiography about his childhood years, Jakhan Choto Chilam (1982). He also wrote essays on film, published as the collections: Our Films, Their Films (1976), Bishoy Chalachchitra (1976), and Ekei Bole Shooting (1979).
Awards, Honors and Recognitions: Ray received many awards, including 32 National Film Awards by the Government of India. At the Moscow Film Festival in 1979, he was awarded for the contribution to cinema. At the Berlin Film Festival, he was one of only three to win the Silver Bear for Best Director more than once and holds the record for the most Golden Bear nominations, with seven. At the Venice Film Festival, he won a Golden Lion for Aparajito(1956), and awarded the Golden Lion Honorary Award in 1982. In 1992 he was posthumously awarded the Akira Kurosawa Award for Lifetime Achievement in Directing at the San Francisco International Film Festival.
সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সৃষ্টি আত্মভোলা বৈজ্ঞানিক প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর পরিচয় আলাদা করে দেয়ার প্রয়োজন বোধ করি না। জীবদ্দশায় তাকে নিয়ে ৩৮ টি গল্প লিখলেও দুটো গল্প অসমাপ্ত রেখে প্রয়াত হোন সত্যজিৎ রায়। ইনটেলেকট্রন আর ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা।
ইনটেলেকট্রন হলো শঙ্কুর এমন এক আবিষ্কারের কাহিনী যা কিনা মানুষের বুদ্ধি পরিমাপ করতে পারে সংখ্যায়,অনেকটা আইকিউ পরিমাপের মতো। সেই আবিষ্কার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনের প্রদর্শনীতে নিয়ে যাবার উত্তর ঘটনাপ্রবাহ দিয়ে গল্পটা সাজানো হয়েছে।
ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা গল্পটায় খোঁজা হয়েছে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর জিনিস।
আমার কাছে কেন জানি ফেলুদার থেকেও প্রোফেসর শঙ্কু ক্যারেকটারটা বেশি ভালো লাগে। স্বভাবতই এই দুই অসম্পূর্ণ কাহিনীর পরিণতি কী হতে পারে তা নিয়ে অপরিসীম কৌতূহল কাজ করে গেছে পড়বার পর থেকে। সুদীপ দেব এদিক থেকে গল্পগুলো সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করেছেন,এবং একভাবে তিনি সফল। কোথায় সত্যজিৎ রায়ের লেখনী থেমে গেছে,আর কোথায় সুদীপ দেবের অক্ষরের সাম্রাজ্য শুরু সেটা ধরতে পারি নি। কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের শঙ্কু অ্যাডভেঞ্চারগুলোতে যে গল্পের ঘটনাপ্রবাহ ছাড়াও পারিপার্শ্বিক পরিবেশের,জায়গার একটা বর্ণনাবহুল ছবি পাওয়া যেতো,ডিটেইলিং থাকতো যে কারণে পড়ে চোখের সামনে ভাসতো সবকিছু..এসব এই গল্পগুলোয় অনুপস্থিত।
এর আগে আমি কখনো প্যাস্টিস পড়ি নি। সে হিসেবে লেখাটা সার্থক। বইয়ের শেষে শঙ্কুর আবিষ্কার নিয়ে যে সংক্ষিপ্ত কথায় বর্ণনাময় তালিকা লেখক তৈরি করেছেন এইটা অনেক জরুরি একটা কাজ।
আমাদের ছোটোবেলা ম্যাজিকাল হয়ে উঠত যে-সব লেখা পড়ে, তার একটা বড়ো অংশই আসত সত্যজিৎ রায়ের কলম থেকে। কিন্তু ২৩শে মে ১৯৯২ সেই গল্পদের আসা থেমে গেল। রয়ে গেল অজস্র ভালোলাগার মুহূর্ত, আর কিছু অসমাপ্ত লেখা। প্রোফেসর শঙ্কু'র যেদু'টি লেখা তেমন অসমাপ্ত আকারে পরে প্রকাশিত হয়েছিল, তাদের নিয়ে পাঠকমহলে দীর্ঘদিন চর্চা হয়েছিল। গল্পগুলো এতটাই নেবুলাস তথা সম্ভাবনাময় ছিল যে সত্যজিৎ তাদের ঠিক কোন দিকে নিয়ে যেতেন— সে-বিষয়ে কেউই নিশ্চিত হননি। ঠিক সেখানেই সুদীপ দেব তাঁর নিবিড় পাঠ, মেধা ও লেখনী নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কল্পবিশ্ব-তে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর লেখায় সম্পূর্ণ হওয়া সে-দু'টি কাহিনি। তারাই স্থান পেল এই বইয়ের দু'মলাটের মাঝে। এই বইয়ে আমরা পেলাম~ ১. ইনটেলেকট্রন ২. ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা বাংলা সাহিত্যে অসমাপ্ত লেখাকে সমাপ্ত করার ব্যাপারটা বিশেষ মসৃণ হয় না। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়-এর অসমাপ্ত ব্যোমকেশ-আখ্যান 'বিশুপাল বধ' নারায়ণ সান্যালের মতো দক্ষ লেখকের হাতে সমাপ্ত হলেও স্বত্বাধিকারীর আপত্তিতে গ্রন্থবদ্ধ হয়নি। যাঁরা সেটিকে পড়েছেন, তাঁরাও ওটিকে প্যাস্টিশের বদলে ফ্যান-ফিকশন হিসেবেই গ্রহণ করেছেন৷ বঙ্কিমের 'নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনি'-র পরিণতি আরও করুণ ছিল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ওঠে, সত্যজিতের মতো কিংবদন্তি সাহিত্যিকের অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে গিয়ে সুদীপ কি সফল হয়েছেন? এই দুটি লেখার অবশিষ্টাংশ কি যথাযথ শঙ্কুর অ্যাডভেঞ্চার হয়ে উঠতে পেরেছে? নির্দ্বিধায় লিখি, সুদীপ এক্ষেত্রে দুর্দান্তভাবে সফল হয়েছেন। অথচ তিনি সত্যিজিতের অনুকরণ বা হনুকরণ (এপিং) করেননি। যে ট্রোপগুলো আমরা সত্যজিতের লেখায় পাই সেগুলো এড়িয়ে তিনি পরিচ্ছন্ন, কৌতূহলোদ্দীপক, অথচ রুদ্ধশ্বাস কাহিনি বলায় মনোযোগী হয়েছেন। তার পরেও এই দু'টি লেখার কোথায় সত্যজিৎ থেমেছেন, আর কোথায় সুদীপ শুরু করেছেন— তা আলাদা করা যায় না! এই অত্যন্ত চমৎকার দু'টি লেখার পরে এসেছে 'পরিশিষ্ট' শীর্ষক অংশ। তাতে স্থান পেয়েছে প্রতিটি শঙ্কু-কাহিনিতে উল্লিখিত ও ব্যবহৃত বিভিন্ন আবিষ্কার— যাদের প্রতিটিই শঙ্কুর নিজস্ব রসবোধ এবং ভাবনার রসে জারিত। দেমু'র ফেলুদা ফাইলের স্মৃতি ফিরে এল এই অনন্য অংশটি পড়ে। যদি আপনি শঙ্কুর অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করে থাকেন, তাহলে এই ছিমছাম, হর্ষমোহন চট্টরাজের প্রচ্ছদ ও অলংকরণে শোভিত বইটি আপনাকে পড়তেই হবে। সুদীপের লেখায়, হর্ষের আঁকায়, কল্পবিশ্ব-র উদ্যোগে এই বইয়ে শঙ্কু সত্যিই স্বমহিমায় আছেন।
আজ একটি বিশেষ দিন। আর এই বিশেষ দিনে একটি বিশেষ কিছু উপহার নিজেকে দেওয়া উচিত। আর আমার কাছে বিশেষ উপহার মানেই বিশেষ বই। পছন্দের বইয়ের তালিকা যখন করতে বসি তখন চোখ বুঁজে শঙ্কুসমগ্র কেই প্রথম তিনের মধ্যে রাখি। তাই আজকের বিশেষ কিছু ছিল শঙ্কুকে নিয়েই।
সাহিত্যের যে নানাবিধ জঁরের লেখা এযাবৎকাল পড়েছি, প্যাস্টিশ তার মধ্যে ছিল অনাস্বাদিত। এমনকী ফ্যান ফিকশনও টুকটাক পড়েছি, বারোয়ারি উপন্যাসের মতো দুয়েকটি অসার্থক প্রয়াসও, কিন্তু প্যাস্টিশ কখনও নয়। ব্যোমকেশ প্রিয়তম, নারায়ণ সান্যাল দারুণ পছন্দের, কিন্তু শরদিন্দুর অসমাপ্ত উপন্যাস 'বিশুপাল বধ'-এর নারায়ণবাবু-কৃত 'বিশুপাল বধ: উপসংহার' পড়িনি। চল্লিশের দশকে প্রকাশিত প্রেমেন্দ্র মিত্রের 'হট্টমেলার দেশে' প্রায় সিকি শতাব্দী পর সম্পূর্ণ করেছিলেন লীলা মজুমদার। শুনেছি, সেই রূপদান এতই উচ্চমানের হয়েছিল যে জোড়ে সেলাইয়ের দাগটুকু পর্যন্ত নাকি ধরা যায়নি। পড়িনি তাও। কেন পড়িনি, তার কোনও নির্দিষ্ট কারণ ভেবে পেলাম না।
যাইহোক, সুদীপের লেখনী আমার খুব ভালো লেগেছে। বিরাট চমক নেই, তা দেওয়ার চেষ্টাও দেখিনি। লেখার ভঙ্গি সত্যজিতের অন্যান্য শঙ্কু কাহিনির সঙ্গে মিলেছে, এবং এক্ষেত্রেও তা সিমলেস বলেই মনে হয়েছে আমার। এ বড় কম কৃতিত্বের নয়!
প্যাস্টিশ লেখার অন্যতম শর্ত মূল লেখকের লেখনশৈলীর সঙ্গে একাত্মতা। কিন্তু শঙ্কু বলেই, লেখার পাশাপাশি অলঙ্করণের ক্ষেত্রেও সেই শর্তের পূরণ ছিল অঙ্গাঙ্গী। আমার মতে, হর্ষমোহন চট্টরাজের প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ সেই দাবি পূরণ করেছে যথেষ্ট সফলতায়, শুধুই উৎরোয়নি। শিল্পীকে আন্তরিক অভিনন্দন তাই! আক্ষেপ, পরিচিতি অংশে স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ের ছোট্ট পোর্ট্রেটটি অলঙ্করণের সামগ্রিক মানের এক বিরাট ছন্দপতন।
দুই পূর্ণাঙ্গ কাহিনির সঙ্গে উপহার হিসেবে পরিশিষ্ট অংশে আছে প্রোফেসর শঙ্কুর বিভিন্ন আবিষ্কারের তালিকা ও তাদের গুণাবলি– গল্প ধরে ধরে– গল্পান্তরে তাদের কয়েকটির মৃদু অসঙ্গতিসহ। এই কাজ অবশ্যই পায়োনিয়ার বা পাথব্রেকিং নয়, কিন্তু উপরি পাওনা হিসেবে কমও না।
অসমাপ্ত কাহিনি শেষ করা ছাড়াও প্যাস্টিশের আরেকটি রূপ আছে, যেখানে পরবর্তী কলমচি পূর্বজর শৈলী অক্ষুন্ন রেখে সম্পূর্ণ নতুন লেখার জন্ম দেন। যে কোনও কারণেই হোক, সুদীপ শঙ্কুর আর কোনও গল্প লিখবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সিদ্ধান্তকে সম্মান করি, আক্ষেপসহ।
প্রফেসর শঙ্কুকে নিয়ে লেখা 'ইনটেলেক্ট্রন' আর 'ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা' এই দুটো গল্প অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে মারা যান সত্যজিৎ রায়। ২০১৯ সালে এই গল্পদুটো সমাপ্ত করে সত্যজিৎ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানান সুদীপ ��েব। দুটো কারণে তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। 'শঙ্কুসমগ্র' শেষ করার পরে কখনো ভাবিনি যে প্রফেসর শঙ্কুর আরও নতুন কোন গল্প পড়ার সৌভাগ্য হবে। একটা কারণ, আরেকবার প্রফেসর শঙ্কুর সাথে অভিযানে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আর দ্বিতীয় কারণ, যেকোনো লেখকেরই অসমাপ্ত লেখা সমাপ্ত করাটা কঠিন। সেই কঠিন কাজটাই চমৎকারভাবে করেছেন লেখক।
প্রফেসর শঙ্কুকে কি মিস করেন আপনারা? সত্যজিৎ রায়ের শঙ্কু সমগ্র'র অসমাপ্ত দুটি গল্প ইনটেলেকট্রন ও ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা যেটুকু লিখে রেখে গিয়েছিলেন লেখক তা অন্য গল্পগুলোর মতো প্রচণ্ড কৌতুহলী করে রেখেছিল। লেখক সুদীপ দেব তার সন্তোষজনক সমাপ্তি টানলেন। শঙ্কুর ডায়েরি লেখার ধরন তো অতি সাধারণ ও শিশুর ভাষার মতোই সরল। হুবহু সেই ভঙ্গিতে পড়লাম গল্পদুটি। এই ধরনের ফ্যান ফিকশনের একটা গালভরা নাম আছে; প্যাস্টিশ! প্রথম গল্পটা অবশ্য এক্সট্রা অর্ডিনারি নয়। পুরো গল্পটায় শঙ্কুর মূল গল্পগুলোর কমন উপাদান দিয়ে সাজানো। তবে ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা দুর্দান্ত হয়েছে। রেটিং: 4.5 প্রফেসর শঙ্কুর সঙ্গে আবার অ্যাডভেঞ্চারে যোগ দিতে চাইলে অবশ্যই পড়বেন ‘স্বমহিমায় শঙ্কু’।
এক কথায় বললে ভালো লাগে নি। সত্যজিতের মতো চুম্বকধর্মী আকর্ষণের ছিটেফোটাও পাই নি।যেহেতু লেজেন্ডারী চরিত্রের উপর কাজ করেছেন সেহেতু আরো অনেক বেশি সময় নিয়ে সুখপাঠ্য কিছু লেখা আবশ্যিক ছিলো।অবশ্য সত্যজিত সত্যজিতই। তবু,তার অপ্রকাশিত লেখায় কেও কলম ধরলে তা হওয়া উচিত আরো অনেক বেশি সুন্দর। সত্যজিতের মতো না হোক অন্তত সাধারণ সাহিত্যের বিচারে হলেও মানদন্ড অনেক উচুতে থাকা উচিত।তারউপর, এমন ব্যাতিক্রমী ক্যারেক্টারের উপর কাজ হলে তা কিছুটা কষ্টকরই বটে।
প্যাস্টিশ হিসেবে বেশ ভাল, সত্যজিতের স্টাইল প্রায় পুরোপুরিই তুলে আনতে পেরেছেন সুদীপ দেব। তবে কাহিনি খুব আহামরি মনে হয়নি। ইনটেলেকট্রনে আশ্চর্য পুতুল আর প্রোফেসর রন্ডির টাইম মেশিন গল্পদুটোর প্রভাব অত্যন্ত স্পষ্ট। ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনায় ফিনিশিং জুতসই লাগেনি। তা ছাড়া মূল যে বিষয় নিয়ে কাহিনি - পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরতম জিনিস... প্রত্যাশার পারদ আকাশ ছোঁয় কথাটা শুনলে। সত্যজিৎ কী বোঝাতে চেয়েছিলেন জানি না, তবে প্যাস্টিশে উল্লেখিত ব্যাপারটি ওই কথার সঙ্গে পুরোপুরি মেলেনি। এটা আমার ব্যক্তিগত মত। তবে সব মিলিয়ে বইটা ভালই লেগেছে পড়তে। সময় কাটানোর জন্যে মন্দ নয়।
লেখক সুদীপ দেব এমন একটি দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা করেছেন যা করতে অনেক তাবড় তাবড় লেখকরাও হিমসিম খেয়ে যাবে। এ কথা সত্যি যে সত্যজিৎ রায় যদি এই গল্প শেষ করে যেতে পারতেন তাহলে এ গল্প সম্পূর্ণ অন্যরকম ভাবে আমরা পেতাম। কারণ লেখক সুদীপ দেব যে ভবিষ্যতের মোবাইল বিপ্লবের কথা বলেন বা অ্যান্ড্রয়েডের ব্যবহার দেখান তা সত্যজিৎ রায়ের কল্পনায় কোনভাবেই ধরা পড়ত না। কিন্তু সেখানেই লেখকের স্বকীয়তা। সত্যজিৎ রায়ের লেখার স্টাইল নকল করে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্যেই মুন্সীয়ানার পরিচয় দেন লেখক সুদীপ দেব। এমনকি প্রোফেসর শঙ্কুর মধ্যে যে প্রচ্ছন্ন একটা অহংকার বোধ আছে পৃথিবীর প্রথম সারির বিজ্ঞানী হিসেবে, সে ব্যাপারটাকেও সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন লেখক সুদীপ দেব। তবে কয়েকটা প্রশ্ন থেকেই যায়। বুদ্ধি বাড়ানোর তথা অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন হফম্যান ক্রোলকে দিয়েছিল। কিন্তু লাঞ্চের পর শঙ্কু ঘুমিয়ে পড়ল কেন তার দিবানিদ্রার অভ্যেস না থাকা সত্ত্বেও? তাহলে কি খাবারের মধ্যেই কিছু ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল হফম্যান? যেহেতু নকুড়বাবু শঙ্কুর সত্যিকারের অ্যান্ড্রয়েড বানাননি, তাই ধরে নেওয়া যেতে পারে তিনি একটা ইল্যুশন ক্রিয়েট করেছিলেন সবার মধ্যে। কিন্তু সেই ইল্যুশনের মাধ্যমে তৈরি করা ইমেজের কি ক্ষমতা আছে সত্যিকারের প্রোফেসর শঙ্কুর হাতের বাঁধন মুক্ত করার? যেহেতু এটা ওপেন এন্ডেড রহস্য গল্প নয়, তাই এই প্রশ্নগুলোর ক্ল্যারিটি পেলে আরও ভালো লাগত। গল্পটিতে কোনও মুদ্রণপ্রমাদ নেই শুধু ৩৭ নং পেজে ‘হব’টা ‘হর’ (১৭ নং লাইন) হয়ে গেছে। আশা রাখব পরের এডিশনে এটা যেন ত্রুটিমুক্ত হয়ে আসে। সব মিলিয়ে আমার মতে সত্যজিৎ রায়ের প্যাস্টিশ রচনার যোগ্য সম্মান রাখতে পেরেছেন সুদীপ বাবু। ওহ, একটা কথা বলতে ভুলে গেছি। প্রচ্ছদকার হর্ষমোহন চট্টরাজের আঁকা ছবিগুলো দেখে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা মনে পড়ে যায় বৈকি। শঙ্কুকে যারা ভালোবাসেন তাদের অবশ্য-পাঠ্য এই বই।
ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে প্রফেসার শঙ্কু কে না পড়েছে? বস্তুত হয়ত অনেক বাঙালীর কল্পবিজ্ঞান পড়ার হাতেখড়ি হয়েছে প্রফেসর শঙ্কুকে দিয়েই। সেই আমেজ ও খিদে রয়ে গিয়েছিল বহুদিন। অবশেষে প্যাস্টিশ অবতারে হলেও শঙ্কুর অসমাপ্ত দুটি কাহিনি যে এলো, তাতে আগ্রহ তৈরি হল বটে। এখন কথা হচ্ছে দুটো অপশন- এক, না পড়েই 'সত্যজিৎ রায়ের অপমান করা হল', 'নিজের চরিত্র নিয়ে করে দেখালে বুঝতাম কত দম' ইত্যাদি বলে নিজেকে স্বঘোষিত সাহিত্য-রক্ষক প্ৰমাণ করা। দুই, পড়ে নিয়ে আদৌ জিনিসটা অরিজিনাল ঘিয়ে ভাজা লাড্ডুর মতো হল নাকি ডালডা দেওয়া সেটা চেখে দেখা। ভোজনরসিক মানসিকতা আরকি, থুড়ি সাহিত্য-রসিক। সুদীপ দেব তাঁর 'স্বমহিমায় শঙ্কু' বইতে প্রফেসর শঙ্কুর দুটি অসমাপ্ত গল্প(খসড়া?) থেকে দুটো পূর্ণাঙ্গ গল্প গড়ে তুলেছেন– 'ইনটেলেকট্রন' ও 'ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা'।প্রথম গল্পে ইনটেলেকট্রন যন্ত্রটি শঙ্কুর নবতম আবিষ্কার, যা মানুষের বুদ্ধিকে মাপতে পারে।জার্মানির হামবুর্গে এক কনফারেন্সে সেটির প্রর্দশন এবং সেখানে শঙ্কুর বিপদে পড়া ও তা থেকে উদ্ধারের গল্প হল ইনটেলেকট্রন। এই গল্পে লেখক শঙ্কুর অরিজিনাল টাইমলাইনকে খুব দক্ষ হাতে আধুনিক একটি টাইমলাইনে সঙ্গে সংযোগ করেছেন। সেটা অবশ্যই গল্পটা যাঁরা পড়বেন তাঁদের জন্যই থাক। ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনার সূচনা শঙ্কুর পঁচাত্তরতম জন্মবার্ষিকীতে। দেশবিদেশের বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছার পাশাপাশি শঙ্কুর প্রতিবেশী অবিনাশবাবুর সশরীরে আগমন। পুত্র চার্লস এসেছেন তাঁর বাবা, বায়োকেমিস্ট জন ড্রেক্সেলের গবেষণা ও মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের অনুরোধ নিয়ে শঙ্কুর কাছে । জন ড্রেক্সেল একটি শতাব্দী প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য আরবি পুঁথির সন্ধান পেয়েছিলেন, যাতে 'পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিস'-এর আবিষ্কারের ফর্মুলা লুকিয়ে আছে। ড্রেক্সেল আইল্যান্ডে গবেষণার অগ্রগতির কিছুদিনের মধ্যেই জন মারা যান এবং পুত্রের সন্দেহ সম্ভবত পিতার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। সেই নিয়েই শঙ্কুর অভিযান শুরু হয় দুটি প্রশ্ন নি��়ে- কী সেই সুন্দরতম জিনিস আর জন কীভাবে মারা গেলেন। দুটো গল্পই ভালো লেগেছে, তবে তুলনামূলক ধরলে দ্বিতীয়টা বেশি ভালো লেগেছে। আমি এখানে একটা কথা খুব জোরে দিয়ে বলতে চাই- এই লেখা দুটো এতটাই সিমলেস আর স্মুদ যে এই দুটোকে 'সত্যজিৎ রায়'-এর লেখা বলে চালিয়ে দিলেও সহজে ধরা পড়ার নয়। দুটো গল্পের ক্ষেত্রেই জোড়ার দাগ প্রায় নেই বললেই চলে- সত্যজিৎ রায় কোথায় শেষ করেছেন, আর কোথায় সুদীপবাবু শ��রু করেছেন অত সহজে চোখেই পড়ে না। শঙ্কুর অন্য গল্পগুলোকে পাশাপাশি রাখলেও প্রায় কোনও উপস্থাপন ভঙ্গিরও পার্থক্য প্রায় নেই। এ নেহাত কম কথা নয়। গল্পগুলোয় বিরাট কিছু এনে চমকে দেওয়ার কোনও চেষ্টা নবীন লেখক যে করেননি, সেটা দেখে ভালো লেগেছে। বরং উনি শঙ্কুকে শঙ্কু-চিত-ই রেখেছেন। হর্ষমোহন চট্টরাজের প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ বেশ ভালো। তবে পরিচিতি অংশে সত্যজিৎ রায়ের ছোট্ট পোর্ট্রেটটি ছন্দপতন ঘটিয়েছে। এবং সুদীপ বাবুর পোর্ট্রেটটাও ততটা যথাযথ লাগল না।শেষাংশে শঙ্কুর আবিষ্কারগুলি গল্পের নাম সহ একটি তালিকা আছে, যেটা বেশ ভালো লেগেছে।খারাপ লাগল বলতে, বানান বা প্রুফ সংশোধনের প্রয়োজন আছে। মুদ্রিত বইয়ের কথা জানি না, অন্তত আমি যে ইবুকটি পড়েছি সেখানে কিছু সমস্যা আছে। ওভারঅল যদি আপনি স্বঘোষিত-রক্ষক দলে নাম না লিখিয়ে গল্পের আনন্দ নিতে চান, তাহলে এই বই কোনও অংশে কম নয়। এই বই নিয়ে বিস্তর কটূক্তি দেখেছি। তাই সেসবের তোয়াক্কা না করেই বলছি, প্যাস্টিশ লেখাটাও সাহিত্যের একটা ফরম্যাট। শুধু 'গেল গেল' না করে বরং পড়ে ফেলুন, তারপর খারাপ লাগলে নিশ্চয়ই বলুন।
সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট প্রফেসার শঙ্কু এর দুটি অসম্পূর্ণ গল্প লেখক সুদীপ দেব শেষ করেছেন এবং সেই দুটি গল্প একত্র করেই এই বই তৈরি। সত্যজিৎ বাবু গল্প গুলোর খুব বেশি গভীর অবদিও যেতে পারেন নি তার ফলে ওইটুকু থেকে সুদীপ বাবু যে এত ভালো করে গল্প গুলো লিখেছেন সেটা সত্যি প্রশংসনীয়। লেখা পরে খালি মনে হচ্ছিল আরে এত রায় মহাশয়ের সেই লেখন ভঙ্গি। কোথাও মনে হয় নি অন্য কোনো লেখক লিখেছেন। একজন বিখ্যাত লেখকের লেখন ভঙ্গি অনুসরণ করা কিন্তু খুব কঠিন।
আমার দুটো গল্পই খুব ভালো লেগেছে কিন্তু আলাদা ভাবে দেখতে গেলে ইনটেলেকট্রন এর তুলনায় আমার ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা বেশি ভালো লেগেছে। তার কিছু কারণ আছে। যার মধ্যে প্রধান হলো যে রায় বাবু তার শঙ্কুর গল্পে অনেক সময়ই পুরান, আরব্য রজনী বা লোককথা এসব নিয়ে এসে বেশ একটা বিজ্ঞান এবং লোককথার মিশেল তৈরি করতেন, যেটি সুদীপ বাবু এই গল্পে খুব ভালো ভাবে ব্যবহার করেছেন। আর অবশ্যই এই গল্পটি ভালো লাগার আর একটি কারণ অবিনাশ বাবু। উনি খুব বেশি সময় থাকুন আর নাই থাকুন ওনার উল্লেখ পেলেই কেন জানি না মন ভালো হয়ে ওঠে। ও আর একটা কথা ইনটেলেক্ট্রনে সুদীপ বাবু বর্তমানেএর যে একটি ছোট চিত্র তুলে ধরেছেন সেটি অসাধারণ। শেষে শঙ্কুর আবিষ্কার এর তালিকা দেয়ার জন্য অসংখ্যধন্যবাদ।
বইটি বাইরে দিয়ে দেখতেও সেই আনন্দের পাতলা শঙ্কুর বইগুলোর মতো দেখতে হয়েছে। আর শিল্পী হর্ষমোহন চট্টরাজের করা অলংকরণ গুলো চিত্তাকর্ষক।
সবশেষে আমি বইটাকে দেব : ৪/৫
গুছিয়ে অতো ভালো করে লিখতে পারি না। তাও যতটা সম্ভব চেষ্টা করলাম গুছিয়ে মতামত লেখার।
প্রথমেই সত্যজিৎ রায়ের দুটি অসমাপ্ত শঙ্কু কাহিনী শুধুমাত্র সম্পূর্ণ করেই নয়, সেটিকে চিত্তাকর্ষক অলঙ্করণ সমেত পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য প্রকাশক, লেখক, অলঙ্কারক এবং এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত সকলকেই সাধুবাদ জানাই।
এই সংকলনে দুটি গল্প, তথা ইনটেলেকট্রন’ ও ‘ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’।
প্রথম গল্পের সূচনায় শঙ্কু তার আবিষ্কৃত ইনটেলেকট্রন যন্ত্রটি ( এই যন্ত্রটির দ্বারা কোন প্রাণীর বুদ্ধি সুনির্দিষ্ট ভাবে মাপা যায়) এবং নকুড় বাবুকে নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেন বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে। সেইখানে গিয়ে তিনি ঠিক কোন বিপদে জড়ালেন এবং সেই অবস্থান থেকে আদৌ উদ্ধার পেলেন কিনা জানতে হলে পাঠকদের পড়তেই হবে এই গল্পটি!
দ্বিতীয় গল্প, ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা, তুলনমূলকভাবে দীর্ঘ এবং চমকে পরিপূর্ণ! জন ডেক্সেল এর রহস্যমৃত্যুর সুরাহা করার এবং তার গবেষণা কে সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব এসে পড়ে প্রফেসর শঙ্কুর ওপর। তিনি তার বন্ধু স্যান্ডার্স, জনের ছেলে ( চার্লস), মাইকেল এবং আমাদের সকলের অতিপ্রিয় অবিনাশবাবু কে নিয়ে হাজির হন ঘটনাস্থলে। প্রাথমিক ভাবে সরল মনে হলেও, পাঠক যতই এগোবেন, গল্প ততই নতুন মোড় নেয়। শেষেও রয়েছে এক বিশাল চমক!
বলাই বাহুল্য, প্রত্যেক সত্যজিৎ প্রেমীর কাছে এই বই অবশ্যপাঠ্য। বইটি পড়লে কেউ ধরতেই পারবেন না কোথায় রায় সাহেব কলম থামিয়েছেন আর লেখক মশাই কোথায় কলম ধরেছেন। উপরি পাওনা হলো এই বইয়ের শেষের লিস্ট যেখানে প্রফেসর শঙ্কুর সমস্ত আবিষ্কার নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করা আছে!
পড়ে ভালো লেগেছে। লেখক বেশ মুন্সিয়ানার সঙ্গেই সত্যজিতের লেখাগুলো সম্পূর্ণ করেছেন। শঙ্কুর নতুন কোনও আবিষ্কারের বর্ণনা দেওয়ার সুযোগ তৈরী করেননি প্রত্যাশিতভাবেই। চরিত্র-চিত্রায়ণ, ভাষার ব্যবহার ও লিখনশৈলী সত্যজিৎ-অনুসারী। শুধু কয়েকটা জায়গায় একটু খটকা লেগেছে - যেমন অবিনাশবাবুর অলিম্পিক দেখার কথা বা কোনো দ্বীপের দৃশ্যকে সিনেমার সেটের সাথে তুলনা করা পড়ে মনে হয়েছে সত্যজিৎ বোধহয় এরকম কিছু লিখতেন না। যাই হোক, এই গল্পদুটি অবশ্যপাঠ্য শঙ্কুপ্রিয় পাঠকদের কাছে। যদিও আর শঙ্কুর গল্প আমরা হয়তো পাবো না, তবু এই ক্ষীণ আশা থেকে যায় যে শঙ্কুর অবিশ্বাস্য সব আবিষ্কারের মতো যদি কোনোভাবে শঙ্কুর আরও ডায়েরী আবিষ্কৃত হয় আরো কোনো অবিশ্বাস্য অভিযানের বর্ণনা নিয়ে।
It was fairly good read. Stories didn't feel boring at any point. Specially the second one was quite interesting. Introduction of this book, was the best part. And some will even buy it for the end bit (the invention list of prof. Shongku). I personally don't feel much need of the list.
ফেলুদা শঙ্কু ব্যোমকেশ আমাদের এতো কাছের যে এদের নিয়ে ছাইপাঁশ এগিয়ে দিলেও হটকেক হয়ে যায়। না না, এই ব��টিকে কোনোভাবেই 'ছাইপাঁশ' গোত্রের বলতে চাইনা, কিন্তু এই বইটা না বেরোলেও কোনো ক্ষতি হতো না। মাঝারি মানের প্যাস্টিচ বলা যায়। দুটো তিনটে কারণে মাঝারি বলছি।
শঙ্কু কাহিনী বা ফেলুদার অভিযান পড়ে ছোটবেলায় প্রচুর জেনারেল নলেজ বাড়ানোর সুযোগ পেতাম। কিন্তু পড়তে গিয়ে কখনোই মনে হতো না লেখক জ্ঞান দিচ্ছেন। এখানে কিছু কিছু জায়গায় ইনফো-ডাম্পিং লেগেছে৷ ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের শেষে আটকে যাওয়া গুহা থেকে বেড়িয়ে আসতে প্রফেসর শঙ্কু নিশ্চয়ই দেওয়ালে পাথর ঠোকার থেকে ভালো অন্য কোনো বৈজ্ঞানিক উপায় বের করতে পারতেন। এটা মোটেই মনে ধরেনি। আর সর্বশেষে বলি, শঙ্কুকাহিনীর সহজ সরল ভাষা এখানে খুব মিস করেছি৷ চরিত্র গুলির কথোপকথনে ভাষা আরেকটু সত্যজিৎ সুলভ হলে ভালো লাগতো।
হর্ষমোহন বাবুর ইলাস্ট্রেশন আর লেখকের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়ে তিনটে তারা রইলো। বইয়ের শেষের প্রফেসর শঙ্কুর আবিষ্কারগুলোর লিস্টটা উপরি পাওনা।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Pastiche হিসেবে বেশ ভালোই। শঙ্কুর লেখনীর স্টাইল টা বেশ seamless ই বলা চলে। ইন্টেলেক্ট্রন গল্পটি একটু ক্লিশে মনে হলো। শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল মোটামুটি কোন খাতে গল্প এগোতে চলেছে। ক্লাইম্যাক্স এর জায়গা গুলো পুরোনো শঙ্কুর কয়েকটি গল্পেরই মিশেল মনে হলো। সব মিলিয়ে 3/5 ড্রেক্সেল এর গল্পটি তুলনামূলক ভাবে বেশি ভালো লাগলেও এর শেষটা বড্ড anti-climactic গোছের লাগলো। একটু deus ex machina দোষে দুষ্ট(spoiler দিতে চাই না)। শেষের চমকটা ভালো হলেও আরেকটু ভালো করে প্রকাশ করলে মনে হয় বেশি জমতো। সব মিলিয়ে 4/5