Jump to ratings and reviews
Rate this book
Rate this book
তরুণ স্পাই আহাদ উত্তরাখন্ড না গিয়ে দার্জিলিং গেল কেন? কি করবে সে ওখানে,
যেটা বদলে দেবে সবকিছু?

অনেকগুলো পক্ষ নেমে পড়েছে নাটকের শেষ অঙ্কে। দ্য অক্টোপাস জাল গুটিয়ে আনছে
বাংলাদেশে। কার্ল সেভার্স উধাও। নিখোঁজ মাস্টার সিফাতও। সিরিয়া থেকে ফিরছে
আইএসে যোগ দেয়া সাবেক বাজিকর সমশের। সাবেক এজেন্ট রোখসানার শান্তি
তছনছ। কাপ্তান গৌতম ফিরতে চায়, জানে না কিভাবে ফিরবে। ট্রাভিস নেমে পড়েছে
জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধে। আহাদ দেখছে কিভাবে সব ভেঙে পড়ছে, আর তার
মাঝেই খুঁজে ফিরছে নিজের রহস্যময়ী মা'কে।

তুরুপের তাস অনেকের হাতেই, অনেকের আস্তিনেই রুমাল লুকানো, কিন্তু বাজিমাত
করবে শুধু একজনই। আর এসবের রঙ্গমঞ্চটা কোথায়, জানেন? নিউক্লিয়ার
ওয়্যারহেডবাহী এক বিশাল এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারে!

নাবিল মুহতাসিমের বাজিকর ট্রিলোজির শেষ খণ্ড বাজিমাত
পাঠককে হাজির করবে বহুদিন ধরে লুকোনো এক সত্যের সামনে।

306 pages, Hardcover

First published February 21, 2020

3 people are currently reading
163 people want to read

About the author

Nabil Muhtasim

23 books275 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
24 (17%)
4 stars
69 (51%)
3 stars
32 (23%)
2 stars
5 (3%)
1 star
4 (2%)
Displaying 1 - 30 of 34 reviews
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,956 followers
May 4, 2020
জামার ভিতর থিকা যাদুমন্ত্রে বারায় ডাহুক,
চুলের ভিতর থিকা আকবর বাদশার মোহর,
মানুষ বেবাক চুপ, হাটবারে সকলে দেখুক
কেমন মোচড় দিয়া টাকা নিয়া যায় বাজিকর।


শেষ হয়ে গেল সিরিজটা। বাজিমাত দিয়েই বাজিমাত করলেন লেখক নাবিল মুহতাসিম। সেই ইউক্রেনের ডামাডোলের মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া গল্পটার যবনিকাপাত হল কোরিয়ায় গিয়ে। মাঝে পুরান ঢাকা থেকে আমরা ঘুরে আসলাম দার্জিলিং, আসাম, সিক্কিম, তীব্বত, এরিয়া ফিফটি ওয়ান, যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়া। বাজিকর, বাজি, বাজিমাত- বাংলাদেশের এস্পিওনাজ থ্রিলারের জগতে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে ট্রিলোজিটি।

দু’বছর আগে বাজি এমন এক জায়গায় শেষ হয়েছিল, লেখককে তারই সৃষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা দ্য এজেন্সির বাজিকরকে দিয়ে উড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করেছিল। যেখানটায় শেষ হয়েছে, ঠিক সেখান থেকেই আবার কাহিনীর সূচনা। তবে শুরুতে আমাদের সাথে পরিচয় হয় এক তরুণ স্পাই আসাদের সাথে। এজেন্সির তুলনামূলক নতুন এই গুপ্তচর উত্তরাখণ্ডে তার কর্মস্থলে না গিয়ে দার্জিলিং গেল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর একেবারে দেয়া হয়নি, বরং ধীরে ধীরে সুতো ঢিল করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শেষ পর্যন্ত।

‘বাজি’তে লাইমলাইটে আসা উঠতি ডন “খোরশেদ” এর ছত্রছায়ায় থেকেও কাপ্তান গৌতম কাকে আশ্রয় দিয়েছে পাড়ার এক গৃহস্থালীর বাসায়? ট্রাভিস আরভাইন “দ্য লুনাটিক” কি শেষ অবধি খুঁজে পেয়েছে শান্ত, নিস্তরঙ্গ জীবন? নাকি অতীতের দুঃস্বপ্নেরা এখনও পিছু করে ফেরে তাকে? একে একে দৃশ্যপটে আবির্ভাব ঘটে চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট পঙ্গু মাস্টার সিফাত, অবসরপ্রাপ্ত মাস্টার সতীশ। তাদের ক্ষুরধার মস্তিষ্ক নাটকের শেষ অঙ্কে কি ভূমিকা রাখবে? সিফাতের সাথে দেখা করতে আসা “শার্লক” আর “ওয়াটসন”-ই বা কে? সর্বোপরি, দ্য অক্টোপাসের কড়াল থাবা থেকে অবশেষে মুক্ত হতে পারবে বাংলাদেশ?

অনেকগুলো প্রশ্ন হয়ে গেল বোধহয়। তবে সবগুলোরই উত্তর মিলবে বাজিমাতে। দুই বই ধরে যে কাহিনীর জাল গুছিয়েছেন লেখক, সবগুলোই গুটিয়ে এনেছেন এখানে। নাবিলের লেখার অনন্যতা হচ্ছে তার তীক্ষ্ণ, স্ট্রেটকাট বর্ণনাভঙ্গি। মনে হবে যেন সামনে বসে আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে গল্প বলছেন লেখক। এখানেও তার ব্যতিক্রম পাইনি। একদম প্রথম পাতা থেকেই যাকে বলে পেইজ টার্নার। তবে কোন চরিত্রকেই খুব বেশি সময়ের জন্যে দেখা যাবে না। যে যার মত লড়াইয়ে ব্যস্ত। এটাই স্বাভাবিক, দুনিয়া তো আর থেমে থাকে না কারো জন্যে। তবে কিছু ক্ষেত্রে বর্ণনা আরো দীর্ঘ হতে পারতো। (পাঠকের কৌতূহল বলে কথা, লেখকের কাছে আবদার শেষ হবে না কখনোই :D )। মুহুর্মুহু অ্যাকশন না থাকলেও যেটুকু ছিল, তাতেই পয়সা উশুল হয়ে যাবে। মুষ্টিযুদ্ধের বদলে স্নায়ুযুদ্ধের দিকে এবারে বেশি নজর ছিল লেখক। নতুন চরিত্রের মধ্যে ভারতের বাজিগার রামানাথ পান্ডেকে বেশি ভালো লেগেছে। তবে কাহিনী কিন্তু পুরোপুরি চুকেবুকে যায়নি। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে একই ইউনিভার্সে নতুন কোন কাহিনী নিয়ে হাজির হবেন লেখক। ব্যক্তিগতভাবে “দ্য লুনাটিক” ট্রাভিস আরভাইনে আরো বেশি পর্দায় দেখতে চাই।

সবমিলিয়ে দুর্দান্ত একটি সিরিজের দুর্দান্ত ফিনিশিং বাজিমাত। যারা মাসুদ রানা পড়ে অভ্যস্ত কিংবা স্পাই থ্রিলার ভালোবাসেন তারা আহাদ, আসাদ, জনি, রোখসানা, সমশেরের সাথে ঘুরে আসতেন পারেন আমাদের “নিজস্ব” এই গুপ্তচরবৃত্তির জগত থেকে।
Profile Image for Zabir Rafy.
312 reviews10 followers
November 6, 2025
নোট২: এই বইটির রিভিউয়ের শেষে পুরো ট্রিলজির কম্বাইন্ড রিভিউ এড করে দিয়েছি।

নোট ১: এই রিভিউটা আমার লেখা প্রথম রিভিউ, চার আগের অপরিপক্কতার ছাপ তাই রয়ে গেছে। কিচ্ছুটি এডিট না করে ওভাবেই রেখে দিলাম প্রথম রিভিউ। ২২. ০৫. ২০

"অনেকগুলো পক্ষ নেমে পড়েছে নাটকের শেষ অংকে। তুরুপের তাস অনেকের হাতেই, অনেকের আস্তিনেই রুমাল লুকানো, কিন্তু বাজিমাত করবে একজনই।"

বলছি নাবিল মুহতাসিম ভাইয়ার বাজিকর ট্রিলজির শেষ খন্ড 'বাজিমাত' এর কথা। বাজিকর বাজি বাজিমাত। শক্তিশালী চরিত্র, বর্ণময় অ্যাকশন আর শেষে একটু সুররিয়েলিজমের ছোঁয়া। এই নিয়ে বাজিকর ট্রিলজি। বাজিমাত নিয়ে কথা বলবো।

প্রথমত নাবিল ভাইয়ার উপস্থাপনা দুর্দান্ত। মনে হবে ঠিক আপনার সামনে বসে আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে গল্প বলছেন। জায়গায় জায়গায় হাসিও পাবে, সেগুলো উপভোগ করবেন। কোথাও কোথাও নতুন অথবা আপনার জানা কিছু ইংরেজী শব্দ পাবেন সেগুলোও উপভোগ করবেন সন্দেহ নেই। গল্প বলাটা কোথাও অতিরিক্ত মনে হবে না , কোথাও মেদ পাবেন না। রহস্য রোমাঞ্চ রোমান্স টুইস্ট তুলে রাখলেও শুধু উপস্থাপনা দিয়েই আপনার পেট ভরতে বাধ্য।
তবে একটা কথা। বাজিকর বাজির মতো মুহুর্মুহু অ্যাকশন, বুলেটের ঝনঝনানি পাবেন না এখানে। যা আছে সেগুলোও কম নয়। অ্যাকশন তুলে রেখে রহস্যে ডুবে যান, শেষে গিয়ে টুইস্টের ধামাকা সামলাতে পারবেন না বলে দিচ্ছি। এই খন্ডটা আসলে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া আর কিস্তি মাত করা নিয়ে।
তবে শেষ দিকের ছোট বড় টুইস্ট গুলো সব পুষিয়ে দেবে। হয়তো বাজিকর বাজির মতো লোম খাড়া হয়ে যাবে না, তবে পড়া শেষ করে একধরনের প্রশান্তি পাবেন।

প্রতিটা অধ্যায়ের শুরু থেকেই রহস্য ঘনিয়েছে বলতেই হবে। বাজিকর বাজিতে গৌরচন্দ্রিকা আছে, শুরুটা হয়তো মারাত্মক, রহস্য হয়তো ধীরে ধীরে ঘন হয়েছে, দুর্দান্ত ফাইটও আছে, তবে বাজিমাতে রহস্য শুরু থেকেই কনডেন্স মিল্কের থেকেও ঘন হয়েছে। যেমন তরুণ স্পাই আসাদের মিশন উতরাখন্ডে , কিন্তু সে দার্জিলিংয়ে যায় কেন? আসাদ আসলে কে? আসাদ সম্পর্কে আরেকটা কথা, আসাদের গল্প যেখানে শেষ হবে সেখানটায় একেবারে চমকে তো যাবেনই , ব্যোমকেও যাবেন। যাকগে, রহস্যের কথা বলছিলাম।
আটমাস থেকে পালিয়ে থাকা কার্ল সেভার্স হঠাৎ ওয়েবসাইট বন্ধ করে কেন? ধরাই বা দেয় কেন? রহস্যময়ী মাকে খুঁজতে গিয়ে আহাদ টের পায় যত নষ্টের গোড়া আসলে ওর বাপ। আহাদের কষ্টের জীবন কি শেষ হবে? ওর ভবিষ্যৎ কোথায়? অতীত থেকে ফিরে আসা কারও সাথে ওর লড়াই হবে নাকি আবার?
আহাদ সম্পর্কে একটু বলতে চাই। সামান্য এক নবিশ অপারেটিভের দুর্দান্ত স্পাই হওয়ার গল্প নিয়েই বাজিকর ট্রিলজি। বাজিকর আহাদ কেন্দ্রীয় চরিত্র। ওর জীবনটা দুঃখে ভরা। বাপ মাকে দেখেনি। নিজের দুই গুরুকে মারতে হয়েছে, শেষে মারতে হয়েছে নিজের নানাকে। সব সামলে নিয়ে আহাদ হয়ে উঠেছিল দুর্দান্ত এক সুপার স্পাই, বাজিকর ।
অন্যান্য চরিত্র গুলোও কম আকর্ষণীয় নয়! ট্রাভিস আরভাইন ওরফে দ্য লুনাটিকের কথা না বললেই নয়। মাইক জিমারম্যান দ্য অক্টোপাসের হেড, ওর কথা আর কাজ কারবার হাস্যকর। সুপার জিনিয়াস বদরাগী চীফ স্ট্রাটেজিস্ট মাস্টার সিফাতের বুদ্ধি একগুঁয়েমি,নিশিকান্ত বাবুর আতিথেয়তা, সেল্ফ প্রোক্লেইমড ছোটলোক রামনাথ পান্ডের বন্ধুত্ব, শমসেরের শেষ লড়াই; যাকগে অনেকেই আছে তারাও কম নয়।
অনেকগুলো চরিত্র বাজিমাতে। বাজিকর বাজির থেকেও বেশী। অনেক রহস্য। বুঝতেই পারবেন না কেন্দ্রীয় চরিত্র আসলে কে। এমনকি গল্পের মাঝে গিয়েও বুঝবেন না কে করবে বাজিমাত। বইটা নিয়ে বসে পড়ুন,, বাজিকর বাজি না পড়ে থাকলে ওদুটো পড়ে তারপর বাজিমাত শুরু করুন। বাজিকর বাজির মতো না , তার থেকেও সেরা হয়েছে বাজিমাত। পড়া শেষে প্রশান্তিতে বিছানায়,সোফায় গা এলিয়ে দিতে মন চাইবে গ্যারান্টি দিলাম।

° ° ° ° ° ° ° ° ° ° ° ° °

এই ��িভিউটা এককভাবে 'বাজিমাত' বইটির নয়, বরং পুরো ট্রিলজির কমবাইন্ড রিভিউ। যেহেতু ট্রিলজি হিসেবে রিভিউ এড করার সুযোগ নেই গুডরিডসে, তাই প্রথম বইটিতে এড করে দিয়েছি। এটাতেও এড করা হলো।

ঘটনা প্রবাহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

ঘটনাটার শুরু ইউক্রেনে, বিস্তার লাভ করলো বাংলাদেশের মাটিতে(!) আর মীমাংসা হলো উত্তর কোরিয়ায়।

ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ লাগলে সেটার রেশ থাকবে ইউক্রেন আর রাশিয়ায়, বড়জোর ইউক্রেন সমর্থনকারী আর দশটা ইউরোপীয় দেশে এবং সেই যুদ্ধের ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হবে বাংলাদেশে (যেহেতু ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা!)।

কিন্তু তাই বলে বাংলাদেশে বাজি পটকা ফুটবে, তা মানা যায় না৷ না মানলেও ঘটনাটা ঘটলো সিআইএর হুইসেল ব্লোয়ার কার্ল হাসান সেভার্সের জন্য!

দুটো আমেরিকান নামের মাঝে একটা বাংলা নাম দেখেই বুঝছেন কার্লের সাথে বাংলাদেশের সংযোগ আছে কাকতালীয়ভাবে। হ্যাঁ, কার্লের মা বাংলাদেশী। সেটা বাদেও, তিনমাস আইটি প্রশিক্ষণের সুবাদে বাংলাদেশী এজেন্ট সাব্বিরের সাথে পরিচয়ের অধিকারে কার্ল সোজা চলে এলো বাংলাদেশে।

এদিকে বাংলাদেশে এসে সে সুবোধ বালকের মতো বসে থাকেনি। একটা ওয়েবসাইট খুলে সিক্রেট অর্গানাইজেশন দ্য অক্টোপাসের একের পর এক গোপন নথি ফাঁস করে চলেছে! এই ফাঁসাফাঁসি ঠেকাতে পারে কেবল কার্ল নিজে!

কার্ল কে থামানোর জন্য দুটো উপায় আছে। তার প্রথমটা নিয়ে সিরিজের প্রথম বই বাজিকর। এবং দ্বিতীয়টা নিয়ে দ্বিতীয় বই বাজি।

প্রথমটাই প্রথমে এপ্লাই করলো দ্য অক্টোপাস । বাংলাদেশ সরকারের কাছে কার্ল সেভার্সকে দাবি করলো তারা! কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার্লকে ফেরত দেবেন না মর্মে সিদ্ধান্ত নিলেন।

এদিকে দ্য অক্টোপাস এদেশের গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইতে থাকা তাদের পোষা লোককে বললো কার্লকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যেতে। সেটাও সম্ভব হয়নি। সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না।

এরপর বাংলাদেশের পিএম এর মেয়ে সহ দেশীয় কিংবদন্তীতুল্য গোয়েন্দা সংস্থা দ্য এজেন্সির বাজিকর জনিকে কিডন্যাপ করে ইউক্রেনে রেখে দিলো তারা। কার্লকে ফেরত না দিলে পিএম এর মেয়ে আর জনিকে ছাড়া হবে না।

পিএম হার মানলেন না। দ্য এজেন্সির বেস্ট সিক্স কে পাঠালেন রেসকিউ মিশনে। পাঁচজন ফুলটাইম এজেন্ট, একজন নবিশ অপারেটিভ ; বাজিকর আহাদ!

পাঠক, ফ্ল্যাপ পড়ে আপনারা জানেন, এই রেসকিউ মিশনের দায়িত্ব শেষমেশ এসে চাপে বাজিকর আহাদের উপরে!

যাহোক, আহাদ শেষ পর্যন্ত পিএম এর মেয়েকে উদ্ধার করে ফেলে, এবং ঘটনাপ্রবাহ আরও গভীরে যায়।

এরপর দ্বিতীয় উপায় এপ্লাই করে দ্য অক্টোপাস। ঝাঁকে ঝাঁকে এসপিওনাজ এজেন্ট পাঠাতে থাকে বাংলাদেশে! আর তাদেরকে ঠেকানোর জন্য বাজিকর বাবুকে কোমা থেকে ওঠানো হয়, কারণ রাষ্ট্রের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।

বাজিকর বাবু, দ্য এজেন্সির চিফ স্ট্রাটেজিস্ট মাস্টার সিফাতের সহায়তায় একের পর এক এজেন্টের মুখোমুখি হয়ে তাদেরকে কতল করে, কার্ল-সাব্বিরকে নিরাপদ জায়গায় পাঠিয়ে দেয়।

এবারেও কার্ল কে ধরতে ব্যর্থ হয়ে দ্য অক্টোপাস পিএম কে এলিমিনেট করার প্ল্যান করে। তাদের এই প্ল্যানও সফল হয় না। বাজিকর বাবু আর আহাদ মিলে ঠেকিয়ে দেয় এই হামলা!

ঘটনার প্রায় শেষ অঙ্কে উপস্থিত আমরা। তুরুপের তাস অনেকের হাতেই, অনেকের আস্তিনেই রুমাল লুকানো, কিন্তু বাজিমাত করবে একজনই!

ঘটনার সমাপ্তি একটা নিউক্লিয়ার এয়ার ক্রাফটে। এই এয়ার ক্রাফট থেকেই হামলা চালানো হবে উত্তর কোরিয়ায়। লাগিয়ে দেয়া হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ; এটাই চায় সিক্রেট অর্গানাইজেশন দ্য অক্টোপাস।

বাজিমাত করতে জাহাজে উপস্থিত দ্য লুনাটিক ট্রাভিস আরভাইন আর বাজিকর আহাদ। তাদেরকে মোকাবিলা করতে হবে পুরনো এক শত্রুর সাথে।

সামগ্রিক বিশ্লেষণ :

বাজিকর ট্রিলজি পাঁচে পাঁচ পাওয়া একটা সিরিজ, অধিকাংশের কাছেই। কয়েকজন আপত্তি জানিয়েছিলেন সিরিজটির এসপিওনাজ কলা কৌশল নিয়ে। কারণ মাসুদ রানার সাথে এর বিস্তর ফারাক রয়েছে। তবে এই ফারাকটার জন্যই আসলে বাজিকর ট্রিলজি পাঁচে পাঁচ পাবে।

মাসুদ রানা মূলত কনক্রিট ফিল্ড ইনভেস্টিগেশন বেজড মিশন এক্সিকিউট করা প্লটের। এসপিওনাজ এজেন্টরা কীভাবে কাজ করে, কীভাবে একেকটা ইনফরমেশন কালেক্ট করে মিশনের দিকে এগিয়ে যায়, তাদের উপরে কীভাবে কাউন্টার এসপিওনাজ করা হয়; এসব নিয়েই মাসুদ রানা।

অপরদিকে বাজিকর ট্রিলজিতে লেখক এসব ইনভেস্টিগেশন এড়িয়ে কালারফুল সুররিয়েলিস্টিক অ্যাকশন বেজড একটা প্লটের উপরে লিখেছেন। বাজিকর ট্রিলজির সাফল্য এবং আপত্তির জায়গা এটাই।

প্লট:

রিসেন্ট ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্যাল এক্সাইটমেন্টের সাথে সিক্রেট অর্গানাইজেশন, স্পাই এজেন্সি, ডাবল এসপিওনাজ, দেশিয় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মিলে প্লট টা বেশ ইউনিক। সরকারের অনুগত স্পাই এজেন্সির বাইরে নাবিল মুহতাসিম লিখলেন স্পাইয়ের অন্য এক জগত নিয়ে।

লিখনশৈলী:

এই বইয়ের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং পার্ট হলো এর স্টোরিলাইন। নাবিল মুহতাসিম সামনাসামনি বসে গল্প শোনাচ্ছেন, আর পাঠক সেটা ভিজুয়ালাইজ করছে; ব্যাপারটা ঠিক এরকম।

পরিমিত স্ল্যাং, স্যাটায়ার, নিজস্ব কিছু পাঞ্চলাইন; প্রায় প্রতি চ্যাপ্টারেই এসবের উপস্থির জন্য পাঠক পরের চ্যাপ্টার পড়েছেন আগ্রহ নিয়ে।

"অমুক তো ঘাস খেয়ে মো সা দের এজেন্ট হয়নি যে এক ঘুষিতেই কাবু হবে।" এরম কিছু লাইন পড়তে গিয়ে কখনো হেসে ফেলেছি, কখনো মুগ্ধ হয়েছি।

তবে কিছু কিছু লাইন একটু মেলোড্রামাটিক লেগেছে। "আধ সেকেন্ডের মধ্যে ঘুরলো", "সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে ঘুষি চালালো।"

তবে বু লে ট ফায়ার করা নিয়ে কিছু লাইন প্রথমে মেলোড্রামাটিক লাগলেও পরে সত্যতা পেয়েছি। যেমন সেকেন্ডের মধ্যে গুলি করা।

হাইলি ট্রেইন্ড একজন শ্যুটারের জন্য এটা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে সদ্য অফিসার হিসেবে কমিশন পাওয়া আমার এক বন্ধু।

চরিত্রায়ন:

বাজিকর ট্রিলজির সাফল্যের অন্যতম কারণ এর চরিত্রায়ন। চরিত্রগুলো আমাদের আশেপাশের হলেও তারা থাকে অন্য জগতে।

বাজিকর আহাদ আর বাজিকর বাবু ট্রিলজির অন্যতম প্রধান দুই চরিত্র। এছাড়াও সময়ে সময়ে দ্য এজেন্সির চিফ স্ট্রাটেজিস্ট মাস্টার সিফাতকে দেখা গেছে বিভিন্ন চ্যাপ্টারে।

আহাদের পার্কুর টেকনিক মুগ্ধ করার মতো বিষয়। তার ফাইটিং স্কিল আর দশটা এসপিওনাজ এজেন্টের মতোই। কিন্তু আহাদ জিতেছে তাদের সাথে কারণ সে শেষ পর্যন্ত লড়তে জানে।

একজন নবিশ ইয়াং এজেন্টের মতোই আহাদ ভয় পায়, শঙ্কিত হয়, কষ্ট পায়। কিন্তু সে শেষ পপর্যন্ত লড়তে জানে।

বাজিকর বাবু তর্কসাপেক্ষে সিরিজের বেস্ট ক্যারেক্টার। এরোগেন্ট, কনফিডেন্ট, আ গুড ফাইটার এন্ড শ্যুটার, অলসো অ্যান ইথিকাল পারসন। বাজি'তে মাস্টার সিফাত তার উপরেই বাজি ধরে কারণ বাজিকর বাবুকে কিনে নেয়া সম্ভব না।

বাজিতে বাবু একের পর এক বিদেশী এজেন্টের সাথে লড়াই করে। প্রায় প্রতিবারই মৃত্যুর মুখ থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনে বাবু। কারণ সে ভয় না কোনো কিছু বা কাউকে।

বাবুর এরোগেন্ট ক্যারেকটারটাই ভালো লাগে। মুড না থাকলে এজেন্সির ডিরেক্টর আতিয়ার রহমানেরও প্রশ্নের উত্তর না দেবার রেকর্ড আছে বাবুর!

এদিকে ডিরেক্টর আতিয়ার, আনডিফিটেড বাজিকর, স্বল্পস্থায়ী একটা চরিত্র হলেও তার ইম্প্যাক্ট প্রথম দুটি বইয়ে বেশ ভালো ভাবেই বোঝা যায়। এবং তৃতীয় বইটায়ও কিছুটা রেশ পাওয়া যায়।

স্বল্পস্থায়ী আরও কয়েকটি চরিত্র মন জিতে নিয়েছে। প্রে��েন্স কম হলেও ওয়েল বিল্ড ক্যারেক্টারাইজেশনের জন্য চরিত্রগুলো মনে দাগ কাটে। একজন পাকা লেখকের মতোই নাবিল মুহতাসিম স্বল্প সময়ে চরিত্রগুলোকে স্থায়িত্ব দিয়েছেন।

বাজিকর জনি, ট্রাভিস আরভাইন, মাস্টার সিফাত যখনই বইয়ের পাতায় এসেছে, আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। তাদের অন্তর্ধান পরবর্তী চ্যাপ্টারগুলো পড়ার আগ্রহ জাগিয়েছে "আবার কখন পাব ট্রাভিসকে?" এটাও একরকম ক্লিফহ্যাঙ্গার বলা চলে।


টুইস্ট:

বাজিকর, বাজি, বাজিমাত; তিনটা বইয়েই সতন্ত্র টুইস্ট আছে।

বাজিকরে ক্যারেক্টার টুইস্ট বেশ ভালোই লেগেছে।

বাজিতে প্লট+ক্যারেক্��ার টুইস্ট দুটোই ছিল। এবারে টুইস্ট প্রথম বইয়ের তুলনায় আরও জোরালো।

বাজিমাতে কয়েকটি টুইস্ট ছিল। এরমধ্যে একটা প্রায় বুঝতে পেরেছিলাম পড়ার সময়ে, আরেকটির স্পয়লার দিয়েছিল এক হাড়ে-বজ্জাত ছোট ভাই!

এন্ডিং:

বাজিকরে এন্ডিং ঠিকঠাক ছিল, একটু বিষন্নতায় মোড়ানো।

বাজিতে এন্ডিং হয়েছে একগাদা প্রশ্নের জন্ম দিয়ে।

বাজিমাতে এন্ডিং একটু নাটকীয় লেগেছে।

বাজিকর ৪.৫/৫

বাজি ৫/৫

বাজিমাতের রেটিং ৪/৫

বাজিকর, বাজি পড়ে অ্যাকশন সিন গুলো নিয়ে একটু বেশিই অবসেসেড হয়ে গেছিলাম। বাজিমাতেও এরকম হাই অকটেন অ্যাকশন সিন আশা করেছিলাম তাই। তবে বাজিমাত কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়া আর নাটকের সমাপ্তি বলে অ্যাকশন সিন একটু কমই ছিল। শেষে একটা জবরদস্ত একশন ছিল বলে আক্ষেপ তেমন নেই। তবুও এক তারা রেটিং কেটে নিলাম একশন সিন কম বলে (!)


পরিশিষ্ট:

বাংলা মৌলিক থ্রিলারে বাজিকর ট্রিলজি একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে৷ আর কোনো বই না লিখলেও নাবিল মুহতাসিম থ্রিলার লেখক হিসেবে টিকে যাবেন।

বাজিকর ট্রিলজি বাদেও বাংলা ভাষায় লেখা আরও কিছু মৌলিক স্পাই থ্রিলার পড়া হয়েছে আমার। সেগুলো তাদের দিক থেকে অনন্য, তবে আমি যেহেতু অ্যাকশন থ্রিলারের ভক্ত তাই আমার কাছে বাজিকর ট্রিলজিই শ্রেষ্ঠ মনে হয়েছে।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
March 23, 2024
সিরিজের আগের দুইটা বই এর থেকে যেন নাবিল ভাই এর লেখনী আরো শক্তিশালী দিক গুলো বাজিমাতে দেখা গেছে। নন লিনিয়ার স্টোরি টেলিং, সাস্পেন্স আর দারুন এক্সইকিউশন এর জন্য বলা যেতেই পারে বাজিমাত সিরিজের অন্য বই এর যোগ্য উত্তরসূরি । একই সাথে মৌলিকে এস্পিওনাজ থ্রিলারে বাজিকর সিরিজ অন্যন্য যায়গা নিয়ে নিয়েছে।
Profile Image for Zahidul.
450 reviews93 followers
April 19, 2020
"An aircraft carrier is 10000 tons of democracy." - Henry Kissinger
-
বাজিমাত
-
আসাদ, বাংলাদেশী মিলিটারি ইন্টিলিজেন্স "দ্য এজেন্সি" এর এক সদস্য। এক মিশনে তার যাওয়া দরকার পড়ে উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু পথিমধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি উত্তরাখণ্ডের বদলে দার্জিলিং যাবেন।
-
খোরশেদ, এলাকার এক পাতি মাস্তান এবং উঠতি ডন। হঠাৎ তার নজরে পরে এলাকায় আসা নতুন এক লোকের উপর। তাকে শায়েস্তা করতে পাঠান দলের এক বিশ্বস্ত লোককে।
-
ট্রাভিস আরভাইন, সি.আই.এ. এর টপ এজেন্ট। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে সে ফেরত আসে তার শহর কানেক্টিকাটে। কিন্তু এ মুক্তির স্বাদ বেশিদিন থাকে না তার।
-
মাস্টার সিফাত, "দ্য এজেন্সি" এর সাবেক চিফ স্ট্রাটেজিস্ট। "বাজি" এর ঘটনার পরে পালিয়ে যান তিনি। সেখানেই তার সাথে দেখা করতে আসেন "শার্লক" এবং "ওয়াটসন" নামের দুই ব্যক্তি। এদিকে "দ্য এজেন্সি" এর আরেক সাবেক মাস্টার সতীশের কাছেও আসতে থাকে "দ্য এজেন্সি" এর নানা ধরনের সাবেক এজেন্ট।
-
আবদেল, সিরিয়ার আই.এস. এর এক ছোট টিমের কমান্ডার। এক মিশনে তার হাতে এসে পড়ে বাংলাদেশের এক সাবেক বাজিকর। তাকে কাজে লাগিয়ে সাফল্যের সিড়ি বেয়ে তড়তড়িয়ে উপরে উঠতে থাকে সে।
-
রোকসানা, "দ্য এজেন্সি" এর আরেক সাবেক এজেন্ট। এজেন্সি থেকে অবসর নিয়ে পরিবার নিয়েই শান্তিতে ছিল সে। কিন্তু আগের পত্রিকা ঘাটতে গিয়ে এক খবর পড়ে সেই শান্তি ছুটে যায় তার।
-
মাইক জিমারম্যান, বিশ্বের পঞ্চম ধনী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম "ভার্চুয়া" এর প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু সে বাস্তবায়ন করে চলছে তার এক কুটিল পরিকল্পনা। আর সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে আসে বাংলাদেশে।
-
এখন আসাদের সেই মিশন কিভাবে ইতিহাস বদলে দেবে ? খোরশেদের এলাকায় আসা নতুন লোকটি কে? ট্রাভিস আরভাইন কিভাবে আবার জড়িয়ে পরে ঝামেলায়? মাস্টার সিফাতের সাথে দেখা করতে আসা "শার্লক" এবং "ওয়াটসন" নামের দুই ব্যক্তি আসলে কারা? আবদেলের টিমের সেই সাবেক বাজিকর কে? রোকসানার শান্তি কিভাবে শেষ হয়ে যায়? মাইক জিমারম্যানের সেই মাস্টারপ্ল্যান কি? তা জানতে হলে পড়তে হবে লেখক নাবিল মুহতাসিমের বাজিকর ট্রিলোজির শেষ বই "বাজিমাত।"
-
"বাজিমাত" মূলত এস্পিওনাজ থ্রিলার ঘরানার "বাজিকর" সিরিজের শেষ বই। সিরিজের প্রথম দুই বই বেশ ভালো লাগায় এ বইটি নিয়ে প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। বাকি দুই বইয়ের মতো এ বইয়ের শুরুটাও বেশ ভালো। লেখনীও আগের দুই বইয়ের মতই টানটান, পেজ টার্নার। তবে এ বইতে স্পাই রিলেটেড খুব বেশি কিছু জিনিষ পাইনি। এর বদলে বইতে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এর একশন সিকোয়েন্স। বিশেষ করে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের ঘটনাগুলো একেবারেই শ্বাসরুদ্ধকর এবং দুর্দান্ত। সব ঘটনা একেবারে চোখের সামনে ঘটছে এমনভাবে বর্ণনা করা।
-
"বাজিমাত" বইতে স্বাভাবিকভাবেই চরিত্র ছিল প্রচুর। তবে সিরিজের প্রথম বই "বাজিকর" এর আহাদ এবং "বাজি" এর বাবু এর মতো দুর্ধর্ষ, মনে দাগ কাটা কোন ক্যারেক্টার পাইনি। যে দুই চরিত্র রামনাথ পান্ডে এবং রোকসানাকে ইন্টারেস্টিং লাগছিলো তাদের উপস্থিতিও খুবই কম। পুরো সিরিজের শেষ বই বলে অনেক প্লটের ফিনিশিং দেয়া হয়েছে এ বইতে। তবে কিছু সাব প্লটের ফিনিশিং মনঃপুত হয়নি। সেই প্লটগুলো অনেকটা দায়সারা ভাবে কয়েক লাইনে বলে শেষ করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে যেখানে আরো বিস্তারিতভাবে ঘটনাগুলো বলা যেতে পারতো।
-
"বাজিমাত" বইয়ের কারিগরি দিক দেখলে বইয়ের মেক আপ আর বাধাই আরো ভালো হতে পারতো। বইয়ের প্রচ্ছদ কাহিনী অনুসারে ভালো।তবে বইতে কন্টিনিউটির কিছু সমস্যা চোখে পড়েছে। এক জায়গায় আগের বইতে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির নির্দেশনার কথা এসেছে, আরেক জায়গায় চরিত্রের নাম অদল বদল হয়ে গেছে। এছাড়াও বানান ভুল ছিল কিছু। সামনের সংস্করণে এগুলি সংশোধন করা হবে আশা করি।
-
এক কথায়, আমার মতে ট্রিলজির সেরা বই না হলেও বেশ ভালোমানের একটি বই হচ্ছে বাজিমাত। যাদের সিরিজের আগের দুই বই পড়া আছে তাদের এ বইটি মিস করা উচিত হবে না।
Profile Image for Pranta Dastider.
Author 18 books329 followers
April 6, 2020
ভালই লাগল মোটের উপর। তবে, নারী চরিত্রগুলোকে কেবল সহায়ক হিসাবেই ব্যবহার করা হলো। এক্ষেত্রে একটু অন্যরকম হলে আরও ভাল লাগত। তাছাড়া, গল্প শেষ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু, সবকিছু একেবারে চুকেবুকে যায়নি। লেখক কি তবে আরও লিখতে ইচ্ছুক এই সিরিজে? কে জানে! লিখলে অবশ্য একেবারে মন্দ হবে না। আবার না লিখলেও বিশেষ ক্ষতি আছে বলে মনে হয় না। লেখক নিজের একটা স্টাইল দাঁড়া করিয়েছেন, মাঝে মাঝেই ইংরেজী, হিন্দি, শব্দ উঠে এসেছে বর্ণনায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাংলায় লিখে দেওয়া হয়েছে অপরিবর্তিত ইংরেজী বাক্য। এটা না করেও বোধহয় বর্ণনা ভঙ্গিতে নিজস্বতা রাখার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। এছাড়া মাঝে মধ্যেই এটা সেটার দৃষ্টান্ত টানা হয়েছে (যেমন, সত্যজিতের সিনেমা, ফেলুদার গল্প, প্রভৃতি)। এসব দৃষ্টান্তগুলোর সঙ্গে পরিচিত থাকলে পাঠক যতটা উচ্ছ্বাসিত হবে, না থাকলে ঠিক ততটাই ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

যাই হোক। দিন শেষে লেখক তাই করবেন যা নিজের ভাল লাগে। তাছাড়া নাবিল মুহতাসিম ইতিমধ্যে সেই কঠিন কাজটি করে ফেলেছেন যা করতে লেখকদের বহু বছর লেগে যায়। উনি তৈরি করেছেন নিজস্বতা। এই গল্পে আনুসাঙ্গিক ভাল লাগা হিসাবে আছে বিভিন্ন স্থান ও পরিবেশের বর্ণনা। সব���েয়ে ভাল লেগেছে নিশিকান্ত, ট্রাভিস, আর মাষ্টার সতীশকে। যথেষ্ট মানবিক এবং যুক্তি সঙ্গত চরিত্র মনে হয়েছে প্রধাণমন্ত্রী ও আনিলাকে।

এইরকম আরও গণ্ডাখানেক রোমাঞ্চ উপন্যাসের দাবি জানিয়ে রাখলাম লেখকের কাছে। সাড়া কতটা পাবো তা তোলা রইল ভবিষ্যৎ হিসাবের খাতায়।
Profile Image for Rakib Hasan.
455 reviews79 followers
October 25, 2020
তরুন লেখকদের মধ্যে নাবিল ভাইয়ের বাজি সিরিজটা আমার খুবই পছন্দের। সিরিজের আগের ২ট বই বাজিকর এবং বাকি আমার খুবই ভালো লেগেছিল। এই বইটাও তাএর ব্যতিক্রম নয়। যদিও আগের ২টা বইয়ের তুলনায় এই বইটিতে স্পাই এলিমেন্ট কম এবং আগের ২টা বইয়ের তুলনা করলে অনেক বেশি চরিত্র ছিল বইটিতে কিন্তু আগের বইগুলোর মতো বিশেষ কোন চরিত্র মনে দাগ কেটে যেতে পারেনি। কিন্তু শুরু থেকেই বইটা‍ খুব আগ্রহ নিয়ে একটানা পড়ে গেছি। বইটিতে অনেক কিছু ক্লিয়ার হয়েছে যা আগের ২টা বইয়ের কারনে আমাদের মনে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছিল। সবমিলিয়ে আমার কাছে সিরিজের সেরা বই মনে না হলেও বেশ ভালো লেগেছে।
Profile Image for Sakib A. Jami.
334 reviews36 followers
November 6, 2025
ঠিক যে জায়গাতে “বাজি” শেষ হয়েছে, সেখান থেকেই উত্থান “বাজিমাত”-এর। একটি গভীর ষড়যন্ত্রে নিমজ্জিত হয়েছিল বাংলাদেশ। যার সূচনাটা হয়েছিল একজন মার্কিন হুইসেল ব্লোয়ারের পালিয়ে আসার মধ্য দিয়ে। এক টপ সিক্রেট নথি নিয়ে সে পালিয়ে এসেছিল। আর সাথে করে নিয়ে এসেছিল এই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংগঠন ‘দ্য অক্টোপাস’-কে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপর যেভাবে হামলা হয়েছিল, বাঁচার-ই কথা ছিল না। কয়েকজন অতিমাত্রায় সাহসী, নিজেদের অর্থের কাছে বিকিয়ে না দেওয়া কিছু সৎ মানুষ — যারা দ্য এজেন্সির বর্তমান ও সাবেক এজেন্ট; তাদের সহাস্যে এই বিপর্যয় ঠেকানো গিয়েছে। সেই সাথে দ্য এজেন্সির মতো দেশের সর্ববৃহৎ সিক্রেট সার্ভিসকে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্য অক্টোপাসের শুঁড় প্রতিনিয়ত পেঁচিয়ে ধরছি দেশের অভ্যন্তরীণ কাঠামোকে। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ না।

তবুও প্রধানমন্ত্রী নিজে সবকিছু ঠিকঠাক করায় মনোনিবেশ করছেন। একজন শাসক, যিনি সদ্যই মৃ ত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন, যার বিদেশ বিভূঁইয়ে থাকা একমাত্র সন্তান প্রতিনিয়ত আক্রমণের আশঙ্কায় দিন গুনছে, কতদিন আর মনোবল শক্ত রাখা সম্ভব? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভার্চুয়ার প্রতিষ্ঠাতা যখন দেশে এলেন, সমস্ত প্রতিরোধ ভেঙে গেল। তার কথামতো কাজ করতে রাজি হলেন। এছাড়া যে আর উপায় নেই। নিজের জীবন, একমাত্র মেয়ের জীবন এখানে জড়িয়ে।

ট্রাভিস আরভাইন কোথা থেকে এসেছে সে জানে না। মাথার মধ্যে ব্ল্যাক আউট হয়েছে। কিছুতেই কয়েকটা স্মৃতি মনে পড়ছে না। তবুও সে জানে একজনকে ভালোবাসে সে। তাকে নিজের করে পেতে চায়। গেঁয়ো, সাদাসিধে, সমাজ ও রাষ্ট্র না বোঝা সেই মেয়েকেও নিস্তার দেওয়া হয়নি। সি আই এ-এর সবচেয়ে ভয়ংকর এজেন্ট বলেই কি না ট্রাভিসের প্রেমিকার এই নিষ্ঠুর পরিণতি। যে চেয়েছিল সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে শান্তিমতো এক জীবন কাটিয়ে দিবে। কিন্তু এক তীব্র ক্ষোভ, ভয়ংকর ক্রোধ যেন সবকিছু তছনছ করে দিতে প্রস্তুত। কেননা, মাঠে নামছে ট্রাভিস আরভাইন।

আহাদের কাছে দ্য এজেন্সি-ই সব। যার জন্য সে আজকের এই অবস্থানে। তাই নিজের প্রিয় সংস্থাকে হারিয়ে বিষাদগ্রস্ত সে। সাবেক এজেন্ট গৌতম আর সে মিলে আবারো বেবি দ্য এজেন্সি তৈরির চেষ্টা করছে। সেই সাথে খুঁজছে তার অতীত। যার খুব কাছে পৌঁছে গেছে সে। তখনই বন্ধু ট্রাভিসের জরুরি তলব।

এক আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মঞ্চ প্রস্তুত হয়ে আছে। সঠিক চিত্রনাট্য বাস্তবায়িত হলে এই পৃথিবীতে নরক গুলজার নেমে আসবে। তাই আহাদ উড়ে চলেছে কোরিয়ায়। দক্ষিণ নয়, উত্তর। যার সীমানা পেরোনো যেন যুদ্ধ জয়ের শামিল শত্রুপক্ষের ডেরায় ঢুকে পড়েছে সে। এবার পর্দা নামবে মঞ্চ নাটকের। একই সাথে বদলে যাবে সকল সমীকরণ। যার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।

▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া :

বাজি সিরিজের সর্বশেষ কিস্তি “বাজিমাত” শেষ করে একটা বিষয় হয়তো বলা যায়, সিরিজের তিন বইয়ের মধ্যে এই বইটি-ই কিঞ্চিৎ দুর্বল। তবে ব্যক্তিগতভাবে কিছু কারণে বইটা আমার ভালো লেগেছে। তবে অপছন্দের বিষয়ও আছে এখানে। ভালো খারাপ মিলে এই বইয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা অবশ্যই করব। দেখা যাক কেমন অনুভূতি ব্যক্ত করা যায়।

আগেই বলেছি এই বইয়ের শুরুতে হয়েছে সেখান থেকেই, যেখানে শেষ হয়েছিল বাজি। বাজিতে যে পরিমাণ অ্যাকশন দৃশ্য ছিল, এখানে তার প্রায় অনেকটাই অনুপস্থিত। হয়তো এ কারণে অনেক পাঠকই হতাশ হতে পারেন। তবে কাহিনি যেভাবে এগিয়েছে, গল্প যেভাবে নিজেকে জড়িয়েছে, এখানে অ্যাকশন দৃশ্য খুব একটা জায়গা নিতে পারত না। সে হিসেবে আমার কাছে ঠিকঠাকই লেগেছে।

যদিও এই বইতে ঘটনার বিস্তৃতি কম। বরং লেখক কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, কিছু ব্যাকস্টোরি এনেছেন। বেশকিছু সাবপ্লট ছিল। যার কিছুটা আমার কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। এই যেমন শমসেরের কাহিনি। শমসেরের সাথে মাস্টার সিফাতের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আই এসের যে কাহিনির অবতারণা করেছেন, তার ঘটনা বেশ দীর্ঘায়িত। এর আসলে প্রয়োজন ছিল কি না আমার জানা নেই। আমার কাছে অতিরিক্ত, অবান্তর মনে হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ না করে শর্টকাট করে এই ব্যাকস্টোরি নিয়ে আসা যেত। ওদিকে মাস্টার সিফাতের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে, তা লেখক সংক্ষিপ্ত করেছেন। বরং এই অংশে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয়েছে।

দ্য এজেন্সির সাবেক এজেন্ট রোকসানাকে যেভাবে স্বল্প পরিসরে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, সেভাবেই শমসেরের ঘটনা বর্ণনা করা যেত। এত দীর্ঘ করার প্রয়োজন ছিল না। এখানে রোকসানা প্রসঙ্গে লেখকের প্রশংসা করা যায়। লেখক তার বইয়ে একটা চরিত্রকে কীভাবে গুরুত্ব দেয়, তার ছোট্ট একটা উদাহরণ ছিল। তেমন করে প্রতিটি চরিত্রকে লেখক সমান গুরুত্ব দিতে কার্পণ্য করেন না।

এখানে লেখকের লেখার প্রশংসা করতেই হয়। লেখক যেভাবে গল্প বলেন, মনে হয় পাঠক এক গল্প পাঠের আসরের শ্রোতা আর লেখক স্বয়ং গল্প বলছেন। তার বেশকিছু হিউমার, পাঞ্চ লাইন, শব্দচয়ন, বাক্য গঠন মুগ্ধ করার মতো। কঠিন কিছু না, আবার সহজে মধ্যে মনের মধ্যে গেঁথে থাকে এমন কিছু। উপমার ব্যবহার বেশ পরিমিত। কোন বর্ণনায় কেমন উপমার ব্যবহার করা উচিত, লেখক বেশ দক্ষতার সাথেই সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। একই সাথে লেখক বেশ বিস্তারিত বর্ণনার আশ্রয় নিতে পছন্দ করেন। লেখক যেভাবে দৃশ্যগুলোর বর্ণনা দেন, মনে হয় যেন চোখের সামনে সবকিছু উপস্থিত। আক্রমণ দৃশ্যগুলো যেন বইতে পড়ছি না, চোখের সামনে দেখছি। শেষদিকে একটা দৃশ্য ছিল, আকাশের মধ্যে দুই ফাইটার বিমানের লড়াই। তখনকার বর্ণনায় ঘটনার যে দৃশ্যায়ন হয়েছে, আমার বেশ পছন্দের। লেখক যে অনেক বেশি পড়াশোনা করেছেন, তা বোঝা-ই যায়। দক্ষতার সাথে লড়াই ফুটিয়ে তুলেছেন। সঠিক তথ্য দিয়েছেন কি না জানি না, তবে লেখকের লেখার মধ্যে এমন দৃঢ়তা আছে যে পাঠক হিসেবে সত্যই ধরে নেওয়া যায়।

আমার যে বিষয়টা এই বইয়ে ভালো লেগেছে আহাদের অতীতকে এখানে স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। এই সিরিজের মূল চরিত্র হিসেবে আহাদ প্রতিষ্ঠিত। আগের দুই বইয়ে তার অতীত সম্পর্কে ভাসাভাসা জানা গেলেও, এই বইয়ে আহাদের অতীত যেমন আরো স্পষ্ট। না, আহাদকে সামনে রেখে লেখক এই ব্যাকস্টোরি তুলে আনেননি। বরং আহাদের বাবা-মায়ের জীবন এখানে প্রাধান্য পেয়েছে। এই অংশটা পড়তে গিয়ে আমি ভাবছিলাম, লেখক এই অংশও হয়তো অপ্রয়োজনীয় সাবপ্লট হিসেবে তুলে ধরছেন। এক দিক দিয়ে অপ্রয়োজনীয় বটে, কিন্তু আহাদের আহাদ হয়ে ওঠার আগেই তার বাবা ও মা কে, তাদের জীবন কীভাবে পরিচালিত হয়েছে; জানাটা জরুরি ছিল। ফলে আমার পড়তে বেশ লেগেছে। লেখকের এই দিককার দক্ষতার প্রশংসা করতেই হয়।

“বাজি ট্রিলজি” কেবল যে এস্পানিয়োজ থ্রিলার, বিষয়টা এমন না। এর মধ্যে আছে মানুষের জীবনের গল্প, মমত্ববোধ, ভালোবাসা; আছে দেশের প্রতি অসীম ভালোবাসার প্রতিফলন। সবশেষে লেখক যে বিষয় উন্মুক্ত করেছেন, হার না মানা দৃঢ়তা। হয়তো জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে শেষ একটা চেষ্টা করতেই হয়। আর এই চেষ্টার ফলশ্রুতিতে হয়তো ভাগ্যের চাকা বদলালেও বদলাতে পারে। প্রথাগত এস্পানিয়োজ থ্রিলারের সাথে একে মেলালে ভুল করতে হয়। এখানে একজন স্পাইয়ের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি বেশ কিছু ঘটনাবহুল কাহিনিতে লেখক প্রবেশ করেননি। বরং একটি নির্দিষ্ট ঘটনার উপর কেন্দ্র করে সিক্রেট সার্ভিসগুলোর স্পাইদের দ্বৈরথ এখানে প্রাধান্য পেয়েছে।

আগেই বলেছি এই বইতে আক্রমণ দৃশ্যের পরিমাণ কম। তার চেয়েও লেখক কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে টুকরো টুকরো গল্পের যবনিকাপাত ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। আবার কিছু প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। যার উত্তর হয়তো পাওয়া যাবে না। মাস্টার সিফাতের শেষবেলায় কী হলো, একজন পঙ্গু-অসহায় মানুষের এমন নির্মম পরিণতি মেনে নিতে কষ্ট হয়েছে। যেখানে তার একক প্রচেষ্টায় এমন ভয়াবহ এক ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া গিয়েছিল।

আমার ভালো লেগেছে শেষটা। হয়তো অনেকেই দ্বিমত হবেন আমার সাথে। শেষের দিকে অ্যাড্রেনালিন রাশের মতো কিছু ঘটনা ছিল। মানুষ যখন ক্ষমতার মূল্য বুঝতে পারে তখন ভালো মানুষির মুখোশ খসে পরে। আর সেই ক্ষমতাকে নিজের করে পাওয়ার এক প্রচেষ্টা চলে। এই পৃথিবী ক্ষমতার হাতে জিম্মি। যার হাতে ক্ষমতা, সে-ই এই পৃথিবীর চালক। নিজের ক্ষমতা শাণিত করতে যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। যা হতে পারে ভালো, কিংবা খারাপ।

আমার ব্যক্তিগতভাবে শেষের যে আবেগ, একজন সন্তানের মাকে খুঁজে পাওয়ার তাড়না; তার আবেশ আমারও মনে ছুঁয়ে গিয়েছিল। আর পরিণতি মন খারাপের জন্ম দিয়েছিল। যেকোনো নিখুঁত গল্প পুরোপুরি নিখুঁত হয় না। আমি বাজি ট্রিলজিকে নিখুঁত বলব না। পরিপূর্ণ নিখুঁত হলে তার মধ্যে সেই আবেদন থাকে না। এই বইতে আবেদন ছিল। না পাওয়ার হাহাকার, ভালোবাসার সম্ভাবনা, সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া। স্পাই দুনিয়ায় একবার পদার্পণ করলে সেখান থেকে ফিরে আসার উপায় থাকে না। জীবন এখানেই তছনছ হয়ে যায়। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যেতে হয়। তবুও দায়িত্ববোধের কাছে এই লড়াইটা লড়ে যেতে হয়, কী বলেন?

▪️চরিত্র :

এই বই কিংবা সিরিজ, যাই বলি না কেন — চরিত্রগুলো বেশ ইন্টারেস্টিং। আপনি হয়তো আহাদকে মূল চরিত্র হিসেবে ধরে নিতে পারেন, কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে যে চরিত্রই এখানে উপস্থিত হয়েছে, প্রতিটি চরিত্র-ই মূল চরিত্র হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে।

প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে এক ধরনের দৃঢ়তা ছিল, তাদের আগমনে এক ধরনের আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে পড়ছিল; ইংরেজিতে যাকে AURA বলা হয়। আহাদ, ট্রাভিস, প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং কিংবা জিমারম্যান; প্রত্যেকেই মূল চরিত্র। তাদের অবস্থান বইকে শক্ত করেছে। তেমন করে রোকসানা, গৌতম, আসাদ, তিন্নি, আনিলা, মারিয়ারাও যতবার এসেছে, তারাও মূল শক্তিশালী হয়ে ধরা দিয়েছে। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও দৃঢ়তা থেকে এক বিন্দুও বিচ্যুত হয়নি।

সচরাচর কোনো বইয়ে এমনটা দেখা যায় না। মূল চরিত্রের পাশাপাশি থাকা বাকি চরিত্রগুলো অম্লান হয়ে যায়। এখানে তেমনটা হয়নি। আর এই কারণেই বাজি ট্রিলজি ব্যতিক্রম আমার কাছে।

▪️ইবুক সম্পাদনা :

বানান ভুল, ছাপার ভুল তো ছিলই; সেগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমার বইঘর থেকে বইটা পড়তে বিরক্তি লেগেছে অন্য কারণে। বইয়ের ফন্ট কোথাও বড়ো, কোথাও ছোটো। একই অধ্যায়ের এই বড়ো ছোটো ফন্টের প্যারা আমাকে বেশ ভুগিয়েছে। যদিও বর্তমান বইগুলোতে এই সমস্যা থাকে না, কিন্তু আগে যে বইগুলো বইঘর অ্যাপে প্রকাশ পেয়েছিল, এই সমস্যা খুব বেশি লক্ষ্য করেছি।

▪️পরিশেষে কী বলব জানি না, শুধু একটা প্রশ্নই মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই যে আহাদের মতন ছেলেরা, যারা সব হারিয়ে নিঃস্ব, ছোটো থেকে যারা একটুও সুখ পায়নি, আনন্দ পায়নি, ভালোবাসা পায়নি; একজীবন দুঃখ-কষ্ট পার করে তারা কি এক সময় সুখের দেখা পায়?

▪️বই : বাজিমাত
▪️লেখক : নাবিল মুহতাসিম
▪️ইবুক : বইঘর
▪️ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.২৫/৫
Profile Image for Abdullah Al  Sifat.
38 reviews3 followers
April 7, 2020
অবশেষে বাজিকর ট্রলোজির চূড়ান্ত পর্ব বাজিমাতে সমাপ্তি ঘটলো সকল জল্পনা কল্পনার।
Profile Image for MD Mijanor Rahman Medul  Medul .
178 reviews42 followers
April 18, 2020
একটা কথা আছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার। আমার দৃষ্টিতে বাংলা এসপিওনাজ থ্রিলার এর মাঝে অন ওফ দ্য বেস্ট থ্রিলার বাজি ট্রিলজি। এককে করে তিনোটা বই পড়লেও ঐ দুটো বইয়ের ব্যাপারে চুপ ছিলাম। শেষটা দেখার জন্য যে আসল বাজিকর কে?
বাজিকর, আর বাজি এর তুলনায় বাজিমাত একটু ঢিলে। কিন্তু অভার অল টুইস্ট টা ভালো লেগেছে, তার সাথে আসল বাজিকর খোঁজার চ্যালেঞ্জটা কিংবা বাজি দান সব কিছুই দারুণ ছিলো। আর পুরো সিরিজ মিলিয়ে একশন ফাইটিং দুমদাম, সবকিছু খুবই ভালো লেগেছে। সেই সাথে বাজি ট্রিলজি আমার প্রিয় বই গুলোর তালিকায় নাম লিখালো। সো আমি রিকমাইন্ড করবো সবাইকে এস অ্যা পারফেক্ট বাংলা এসপিওনাজ থ্রিলার পড়তে চাইলো বাজি ট্রিলজি তুলে নিন। নাবিল মুহতাসিম ভাই অবশ্যই ধন্যবাদ বাজি ট্রিলজি তৈরি করার জন্য।।
রেটিং :৪/৫.......
Profile Image for Hasibul Ahsan.
32 reviews3 followers
February 26, 2020
মেলার ২য় দিন থেকে বইমেলায় প্রায় ১১-১২ দিন যাওয়ার পর বইটির দেখা পাই। বাতিঘর যেহেতু বেশ দেরি করে বই প্রকাশ করেছে এবার। কিন্তু এত আশা নিয়ে বসে থাকার ফলাফল যে এত বেশি সেরা হবে তা তো ভাবিনাই ভাই!
কি পড়লাম এইটা! দেশের বাইরের প্লট, পলিটিকাল সিনারিও আর পূর্বের প্রায় প্রতিটি চরিত্রকে এমনভাবে সাজিয়েছেন গলেপ; যে একজন ছাড়া কিছুটা বাদ রয়ে যায়। ৩০৪ পেজের বই, প্যারালাল স্টোরি কয়েকটা চলেছে একইসাথে এবং তার মাঝে একটাও কোনো অংশে কম ছিলোনা। আগের অংশের জট খোলা সাথে নতুন মিশন; সবকিছুই এত দারূণভাবে সাজিয়ে এনেছেন নাবিল ভাই, প্রশসার দাবীদার। শুরু থেকে শেষ, পুরোটাই গিললাম।
নাবিল ভাইয়ের লেখার কোয়ালিটি মাচ বেটার হইসে বলে মনে হইলো। বেশ ঘোর লাগলো। শুভকামনা নাবিল ভাইয়ের জন্যে!
সুপাঠ্য।
Profile Image for Rohun.
120 reviews58 followers
May 4, 2021
লেখকের স্টোরিটেলিং নিয়ে কোনো সমালোচনা করার নেই। কিন্তু আমি আবারো পুরোদমে আশাহত। হতাশ। ট্রিলজির প্রথম বইটা যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠলো তখন লেখক চাইলে পারতেন আরেকটু সময় নিতে। প্রত্যেক বছর ব্যাক টু ব্যাকই পাব্লিশ করতে হবে?! ঠিক আছে পাঠক তাগদা দেয় এটলিস্ট ছ'মাস এক বছর সময় নেওয়া যেতো না! আরো যত্ন নেওয়া যেত না? প্রথম একটা বই যখন খুব ভালো লেগে যায় তখন সিরিজের পরের বইগুলো আগের বইগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে - এই আশা করাটা অযৌক্তিক মনে হয় না।

দ্বিতীয়টির মতো এটিও পাচ তারকার দেবার মতো এগোচ্ছিলো। শেষ দুইটি একশান সব মেস আপ করে দিয়েছে আমার কাছে মনে হয়েছে।

গল্প এগিয়েছে কোরিয়ার বিষাদগ্রস্থ বাস্তবতা, পশ্চিমা আগ্রাসন আর তাদের অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধকরণ, এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারের সাজ সাজ রব উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। লেখকের প্রচেষ্টা সার্থক প্রশংসার দাবীদার। একপাক্ষিকতা, কাকতালীয়তা, অসংলগ্নতার মতো দুই তিনটি ইশ্যু খুব ভুগিয়েছে। তাছাড়া বেশ উপভোগ করেছি।
Profile Image for শুভাগত দীপ.
274 reviews47 followers
March 26, 2021
|| রিভিউ ||

বইঃ বাজিমাত (বাজিকর ট্রিলোজি #৩)
লেখকঃ নাবিল মুহতাসিম
প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী
প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
ঘরানাঃ এসপিওনাজ থ্রিলার
প্রচ্ছদঃ ডিলান
পৃষ্ঠাঃ ৩০৪
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৫০ টাকা
ফরম্যাটঃ হার্ডকভার

কাহিনি সংক্ষেপঃ দ্য এজেন্সি ধ্বংস হয়ে গেছে। বেঁচে যাওয়া এজেন্টরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে চারিদিকে। এজেন্ট আহাদ এখন বাজিকর। আহত অবস্থায় গাজীপুরের এক বাসায় আশ্রয় নিয়েছে সে। চলছে চিকিৎসা। চাকরিচ্যুত এজেন্ট কাপ্তান গৌতম সবদিকে খেয়াল রাখছে। সে আবারো ফিরে আসতে চায়৷ কিভাবে ফিরবে, নিজেও জানে না। উঠতি এক লোকাল গ্যাংস্টারের ভাড়াটে গুন্ডা হিসেবে কাজ করেই কেটে যাচ্ছে কাপ্তান গৌতমের দিন। কিন্তু এসব নোংরামি থেকে মনেপ্রাণে মুক্তি চায় সে।

ধীরে ধীরে জাল গুটিয়ে আনছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন দ্য অক্টোপাস। নানারকম হুমকির বেড়াজালে বেঁধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গাজী সোবহানুল হককে একরকম কোণঠাসা করে ফেলেছে তারা। প্রধানমন্ত্রীও ভেঙে পড়েছেন অনেকটাই। এবার বোধহয় দ্য অক্টোপাসের দাবীর কাছে নতিস্বীকার করতেই হয়। ওদিকে নিখোঁজ হয়ে গেছে সিআইএ-এর হুইসেলব্লোয়ার কার্ল হাসান সেভার্স। তার সাধের বংশীবাদক ডট কমও হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেছে। যে কার্লের জন্য এতো ঝামেলা, তারই কোন খোঁজ নেই। অদ্ভুত না?

সিআইএ-এর কিংবদন্তিতুল্য এজেন্ট ট্রাভিস আর্ভাইন ইদানীং অনেক কিছুই মনে করতে পারে না। নিজের গুপ্তচর জীবনকে পেছনে ফেলে ভালোবাসার মানুষটাকে নিয়ে প্রিয় শহরে এবার থিতু হতে চাইলো সে। কতো আশা-আকাঙ্ক্ষা তার মনে! কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। সিআইএ-তে ট্রাভিসের আরেক নাম ছিলো দ্য লুনাটিক। ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর এক উন্মাদ কিলিং মেশিন দ্য লুনাটিক। কি এমন ঘটলো যে সম্পূর্ণ নতুন এক যুদ্ধে নিজের সেই ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হলো ট্রাভিসকে?

সিরিয়া থেকে ফিরে আসছে সাবেক বাজিকর সমশের। আইএসে যোগ দেয়া এই বাঘা এজেন্টের জীবনে কি এমন পাপ আছে যার জন্য সে প্রতিনিয়ত স্রষ্টার কাছে ক্ষমা চায়? পঙ্গু চিফ স্ট্রাট্রেজিস্ট মাস্টার সিফাত পালিয়ে গেছে। কিন্তু এতে কি থেমে গেছে তার মস্তিষ্কের ভেতরে চলতে থাকা জটিল হিসাব-নিকাশ গুলো?

বিশ্বের পঞ্চম ধনী মহাক্ষমতাধর মাইক জিমারম্যান এবার সম্পূর্ণ নতুন এক চাল দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেষ নাটকটা বোধহয় মঞ্চস্থ হতে চলেছে আমেরিকার সবচেয়ে বড় এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে, যা চক্কর দেবে উত্তর কোরিয় উপকূল ধরে। আর সেই সময়েই কোরিয়াতে সমবেত হবে আমেরিকা, উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বশান্তি (!) রক্ষার তাগিদে। বাজিকর আহাদকে এবার আবারো সবদিক সামলে নিজ দেশের স্বার্থরক্ষা ও দ্য অক্টোপাসের কূটচাল ব্যর্থ করে দেয়ার মরিয়া একটা চেষ্টা করতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এতে সে সফল হবে কি-না।

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ অবশেষে শেষ করলাম নাবিল মুহতাসিমের এসপিওনাজ থ্রিলার ঘরানার বাজিকর ট্রিলোজি। এই যাত্রা শুরু হয়েছিলো 'বাজিকর' থেকে। এরপর ট্রিলোজির দ্বিতীয় বই 'বাজি' ও সবশেষে ২০২০-এর বইমেলায় প্রকাশিত হওয়া 'বাজিমাত'। মাসুদ রানা সিরিজের কিছু মৌলিক বই ব্যতিত বাংলাদেশে মৌলিক এসপিওনাজ থ্রিলার ঘরানা নিয়ে তেমন কোন কাজ নেই। নাবিল মুহতাসিম তাঁর বাজিকর ট্রিলোজির তিনটা বই দিয়ে মৌলিক এসপিওনাজ থ্রিলার ঘরানার মুকুটে তিনটা অমূল্য পালক যুক্ত করেছেন।

ট্রিলোজির পূর্ববর্তী দুটো বইয়ের মতো 'বাজিমাত'-ও ছিলো যথেষ্ট থ্রিলিং। দ্য অক্টোপাসের সাথে বাংলাদেশের সিক্রেট সার্ভিস দ্য এজেন্সির কয়েকজন অকুতোভয় এজেন্টের যে লড়াই, তার সমাপ্তি ঘটেছে এই তৃতীয় কিস্তিতে এসে। দ্য এজেন্সির এজেন্টদের সর্বোচ্চ খেতাব বাজিকর এবার পেতে দেখা গেছে পথের কুকুর খ্যাত আহাদকে। স্বাভাবিকভাবেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। আর তার এবারকার মিশন বরাবরের মতোই যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। শুধু তাই না, নাবিল মুহতাসিম এই পর্বে এসেও সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন বেশ কয়েকটা প্রেক্ষাপটকে। তারপর আবার সবগুলো প্রেক্ষাপটকে এনে জুড়েছেন একসাথে।

যে কাহিনিগুলো ডুয়োলজি, ট্রিলোজি বা পেন্টালজিতে সমাপ্ত হয় সেগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা ও কাহিনির ফ্লো ধরে রাখা বেশ জটিল একটা কাজ। লেখক নাবিল মুহতাসিম তাঁর বাজিকর ট্রিলোজিতে সেই ফ্লো ধরে রেখেছেন চমৎকার ভাবে। আর এই ব্যাপারটার প্রমাণ ট্রিলোজির শেষ বই 'বাজিমাত'। এবার উপরি পাওনা হিসেবে ছিলো আহাদের জন্মপরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত চাঞ্চল্যকর অংশ। মোট কথা, যে প্রশ্নগুলো 'বাজিকর' ও 'বাজি' পড়ার পর পাঠকমনে জায়গা করে নিয়েছে, সেই প্রশ্নগুলোরই উত্তর দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে 'বাজিমাত'-এ।

বর্তমান সময়ের লেখকদের মধ্যে আমার অন্যতম প্রিয় লেখক নাবিল মুহতাসিম। তাঁর গল্প বলার ধরণ আমার কাছে বরাবরই ভালো লাগে। সত্যি সত্যিই তাঁর বই পড়লে মনে হয়, কেউ পাশে বসে গল্প শোনাচ্ছে। আর তাঁর এই লেখার ধরণের জন্যই খুব অল্প সময়েই বহু পাঠকের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি৷ তাঁর এই জয়যাত্রা অব্যাহত থাকুক। ২০২১-এর বইমেলায় লেখকের 'সসেমিরা' উপন্যাসটা প্রকাশিত হয়েছে অবসর থেকে। আর বাতিঘর প্রকাশনী থেকে এই বইমেলাতেই প্রকাশিত হবে আরেক সুলেখক কিশোর পাশা ইমনের সাথে তাঁর যৌথ কাজ 'যুগলবন্দি'। বইদুটো সংগ্রহ করার ইচ্ছা আছে।

ছোটখাটো কিছু টাইপিং মিসটেকের দেখা পেয়েছি 'বাজিমাত'-এ। তবে মাত্রাতিরিক্ত কিছু না। ডিলান সাহেবের করা প্রচ্ছদটা চমৎকার লেগেছে। বইটার বাঁধাই আর কাগজের মান নিয়েও নেই কোন অভিযোগ।

এসপিওনাজ থ্রিলারের ভক্তরা চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন বাজিকর ট্রিলোজি। হতাশ হবেন না আশা করি।

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৩.৭৫/৫
গুডরিডস রেটিংঃ ৩.৯৮/৫

#Review_of_2021_13

~ শুভাগত দীপ ~

(২৫ মার্চ, ২০২১, বিকাল ৫ টা ২৮ মিনিট; নাটোর)
Profile Image for Naimul Arif.
108 reviews5 followers
March 27, 2020
বাজিকর আর বাজি'র শেষ খণ্ড হিসেবে আরো অনেক বেশি থ্রিল আশা করেছিলাম এই বইটাতে। কিন্তু থ্রিল আর ফিনিশিং এর চেয়ে বেশি ছিলো অতীত রোমন্থন আর আবেগপূর্ণ চিন্তার পরিমাণ অনেক বেশি ছিলো। দুই বছর ধরে যেই ফিনিশিং লেখা হয়েছে তাতে আরেকটু বেশি কিছু থাকতে পারতো।
এত কিছু বললাম কারণ প্রথম দুই খন্ড শেষ খণ্ডের উপর আকাঙ্ক্ষা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিলো। তারপরেও বইটা খারাপ কোনভাবেই বলা যাবে না। বরং ইদানিং যে লো কোয়ালিটি বাংলা থ্রিলারের জোয়ার চলছে তার চেয়ে শতগুণে ভালো।
বইটা পড়ার আগেই বইটাকে ৫ তারা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চারের বেশি দিতে পারলাম না।
Profile Image for Peal R.  Partha.
211 reviews13 followers
January 24, 2022
❛বাজিমাত❜

❝ছোটোলোক হয়ে জন্মানোটা খারাপ, কিন্তু সেটাকে গর্ব করে সবার কাছে বলে বেড়ানো? উঁহুঁ, এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।❞

বি.দ্র. যদি আপনি এখনও ‘বাজিকর’ ট্রিলজি শেষ না করে থাকেন তাহলে এই রিভিউটি পড়ার জন্য নিরুৎসাহিত করব। পুরোপুরি স্পয়লার না থাকলেও অনেক হয়তো থাকবে। কারণ পুরো ট্রিলজি নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই রিভিউ লেখা। বাকিটা আপনার ইচ্ছা...

.
.
.
ট্রিলজির প্রথম দুই বইয়ে যে ভুলটা লেখকের হয়নি; সেই ভুলটা সম্পাদনার ছোট্ট অভাবে করে বসেছেন ‘বাজিকর’ ট্রিলজির শেষ বই ❛বাজিমাত❜-এ। ইতোমধ্যে যাঁরা ট্রিলজিটি পড়েছেন, তাঁ্রা ‘ভার্চুয়া’ নামের একটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সাথে পরিচিত হয়েছেন; যা কি-না ‘ফেসবুক’-এর অনুপ্রেরিত ভার্সন। লেখক হয়তো সরাসরি নামটি ব্যবহার করতে চায়নি কিন্তু ভুলবশত একটি পৃষ্ঠায় (৯৮ পৃ:) ভার্চুয়া ম্যানশন না করে ফেসবুক লিখে বসেন। যা কি-না কিছুটা হাস্যকর মনে হলো; কারণ ভার্চুয়ার প্রতিষ্ঠাতার চরিত্রটি খুব ভালোই প্রভাব ফেলে পুরো ট্রিলজি জুড়ে।

বইটি যদি কোনোভাবে ইন্টারন্যাশনাল কোনো ‘বাজিকর’-এর হাতে যায় তাহলে... যারা কিনা আবার সেই ভার্চুয়ার প্রতিষ্ঠাতার সাথে সম্পর্ক—তাহলে লেখকের কি হবে ভেবে দেখেছেন? যদিও আকাশকুসুম ভাবনা। তারপরেও লেখক যেহেতু ঘটা করে যত দোষ—নন্দ ঘোষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন; তাই পরবর্তী মুদ্রণ না, পরবর্তী সংস্করণে এই ভুলটি ঠিক করা উচিত বলে মনে করি।

বাজিকর ট্রিলজির শেষ বই ❛বাজিমাত❜-কে সিরিয়াল অথবা পপুলারিটি মেইনটেইন করলে আমি শেষের দিকে রাখব। কারণ পূর্বের দুই বইয়ের কাছাকাছি এই বইয়ের অস্তিত্ব ফিকা মনে হয়েছে। অসামঞ্জস্য আছে বলব না, তবে গল্পের শুরু করতে অথবা প্রেক্ষাপটে পুরোপুরি ঢুকতে যেখানে ৬০-৭০ পৃ: কাভার করে দিতে হয়। তাহলে উত্তেজনায় ভাটা পড়া স্বাভাবিক বিষয় নয় কি? বাজিকর ও বাজি—বই দুটোর তুলনায় যা অতি ধীরগতিরও বটে।

❛বাজিমাত❜ উপন্যাসে বাজিকর আহাদের বাবা-মায়ের পরিচয়, বিশেষ করে বাবার। যার নাম—আসাদ। বইয়ের আখ্যানপত্রের শুরুতে একটা লাইন রয়েছে,

তরুন স্পাই আহাদ উত্তরাখণ্ড না গিয়ে দার্জিলিং গেল কেন?

এইটা কি ইচ্ছাকৃত ভুল না-কি পাঠককের দৃষ্টিকে ধোঁকা দেওয়ার প্রয়াস? আসাদ-আহাদ; নাম দুটোই যথেষ্ট সিমিলারিটি থাকার কারণে বাবা-ছেলের মধ্যে স্থান নিয়ে গোঁজামিলের কিছুটা উদ্রেক অবশ্যই হয়েছে। দার্জিলিং গিয়েছে আহাদের বাবা আসাদ; কিন্তু আখ্যানপত্রে লিখেছে—আহাদ!

যাহোক, ‘পশ্চিমে তখন সূর্য উঠছে’-এর মতো অসম্ভব; নমনীয় করে বললে সম্পাদনার ঘাটতি যেখানে আছে, সেখানে অবাক বা কারণ-অকারণের অনেক বিষয় থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। যেমন আছে বাজিকর সমশের-এর আগমন। মাস্টার সিফাতের বেহুদা মার খাওয়ার কারণ। সাব্বিরের হঠাৎ ওয়াটসন হয়ে শার্লক কার্লের পক্ষ নিয়ে চলা, রোখসানার উত্থান, মারিয়ার পতন, গোর্খাল্যান্ড কানেকশনের মতো ছোটোখাটো অনেক কাহিনি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। গল্পের সমাপ্তির অংশটুকু অর্থাৎ উত্তর কোরিয়াকে আমেরিকা দিয়ে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা ঠিকঠাক মনে হলেও সাবপ্লট বা বাহ্যিক কাহিনিগুলো অহেতুক মনে হয়েছে—বিশেষ করে দালাই লামা নিয়ে আতিয়ার রহমানের থিওরিটি।

◆ পাঠ প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা—

❛বাজিমাত❜ নিয়ে প্রতিক্রিয়া কেমন ইতোমধ্যে ওপরের কিছু লেখা পড়ে জেনে নিয়েছেন। পুরো ট্রিলজি অনুযায়ী দুর্বল প্লট হিসেবে বইটি চিহ্নিত করলেও; বিষয়বস্তুর কোনো কমতি লেখককে রাখেননি।

এই যেমন আই‌এস-এর কার্যক্রম, বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জঙ্গি বনে যাওয়ার পরবর্তী অবস্থা। কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে গল্পের মূল প্লট তো বিল্ডাপ করা আছেই। তবে এই বইতে ‘এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার’ নিয়ে বিশদ আলোচনা পাশাপাশি যুদ্ধ বিমান নিয়ে অ্যাকশান সিকোয়েন্সও রয়েছে। বরাবরের মতো ইমোশনাল দিকটি উক্ত উপন্যাসে বেশ সচল। পূর্বের চরিত্রদের পাশাপাশি অ্যাজেন্ট রোখসানা ও অ্যাজেন্ট মারিয়া’র মতো চরিত্রদের ঝলক থাকলেও নয়া চরিত্রদের মধ্যে বাজিমাত করেছেন মাস্টার সতীশদা।

● গল্প বুনট » লিখনপদ্ধতি » বর্ণনা শৈলী—

গল্প বুননে লেখক দক্ষ হলেও, উক্ত বইয়ের শুরুতে অনেকটা সময় তিনি নিয়েছেন। চরিত্রায়নের জন্য হয়তো প্রয়োজন; তবে কাটছাঁট করার অনেকগুলো বিষয় ছিল। লিখনপদ্ধতি বরাবরই ভালো। বর্ণনা শৈলীর দক্ষতায় দার্জিলিংয়ের ভালোই ফিল পেয়েছি তবে কয়েকবার সত্যজিৎ রায়ের ‘গ্যাংটকে গন্ডগোল’-এর সাথে কানেকশন করা বিষয়টি মৌলিকতায় কিছুটা হলেও ছাপ ফেলেছে বলে মনে হলো।

● চরিত্রায়ন—

চরিত্রের সংখ্যা যতটা গর্জেছে ততটা বর্ষেনি। ট্রাভিস আরভাইন, সতীশদা এই বইয়ের জন্য উপযুক্ত মনে হয়েছে। বলতে পারেন তারাই এই গল্পের খুঁটি। বাকি চরিত্রের আসা-যাওয়া আর দুয়েকটা ইমোশনাল কাহিনি ছাড়া কিছুই ছিল না। বিশেষ করে রোখসানার আর তার স্বামী শফিকের মিলকরণে তো কোনো জুতসই কারণ খুঁজে পাইনি। পাইনি আরও অনেকের কাহিনিতে। শেষে অনিলার সাথে আহাদের বা কী কথোপকথন হয়েছে তা-ও অজানা। ট্রিলজি পুরোপুরি শেষ হলেও চরিত্রদের জন্য একেবারে হয়নি।

● অবসান—

এই ট্রিলজিকে সিরিজে রূপান্তরিত করে আরও দুয়েকটা বই বের করা দরকার। কাহিনি অসমাপ্ত। রাজত্বে নতুন রাজা কার্লের উত্থান তো হয়েছে, তবে সেটা কীভাবে তার উল্লেখ নেই। হস্তান্তরের অনেক বিষয় রয়েছে বটে। কাহিনি মাত্রাতিরিক্ত জাম্পিং-এর কারণে স্থিরতা অথবা সাহিত্যের ভাষায় বললে গভীরতা কমই খুঁজে পেয়েছি। গল্প মেলানোর ছিল মিলিয়ে দিলাম, চরিত্র আনার ছিল এনে দিলাম টাইপ। শেষটা সুন্দর হলে প্রশ্ন অনেক, উত্তর নেই। একেবারেই মনঃপূত হয়নি।

◆ লেখক নিয়ে কিছু কথা—

লেখকের উচিত ছিল তাড়াহুড়া না করা। আরও সময় নিয়ে ট্রিলজি পুরোপুরি কমপ্লিট করা। সিরিজের যদি প্ল্যান থাকত তাহলে ক্লিফহ্যাঙ্গারে লটকে না থাকাটা সঠিক সিদ্ধান্ত মনে হতো। প্রথম দুটো বইয়ের ক্ষুধা নিবারণে ব্যর্থ হলেও আমন্ত্রণ (বাজিকর) ও আপ্যায়ন (বাজি) নিয়ে আপাতত সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।

যাহোক, টানা লেখকের অনেকগুলো বই পড়ে ফেললাম। ট্রিলজি হিসেবে ‘বাজিকর’ বইটা আমার কাছে লেখকের এখন পর্যন্ত সেরা উপন্যাস হয়ে থাকবে। প্রথমটার রেশ দ্বিতীয় বই ‘বাজি’ বজায় রাখলেও শেষটা আশাহত করেছে। তবে এই এসপিওনাজ ‘বাজিকর’ ট্রিলজিটি’র জন্য লেখককে ধন্যবাদ। এই ইউনিভার্স থেকে আরও কয়েকটি বই পাব বলে আশাবাদী।

● সম্পাদনা ও বানান—

সস্তা-কে শস্তা, দড়ি-কে দাড়ি-সহ বিস্তর বানান ভুলের পাশাপাশি টাইপোর বেদম নাচানাচি তো আছেই। সম্পাদনার ঘাটতি নিয়ে তো ইতোমধ্যে কথা বলেছি, যা খুব সাধারণ মনে হলেও উপন্যাসের জন্য ক্ষতিকর।

● প্রচ্ছদ—

প্রচ্ছদটা বেশি পছন্দ হয়েছে। যেহেতু পুরো গল্প এয়ারক্র��ফট ক্যারিয়ারের সাথে সম্পৃক্ত।

● মলাট » বাঁধাই » পৃষ্ঠা—

নতুন বই হিসেবে বাহ্যিক প্রোডাকশন ভালোই। তবে শেষে এক ফর্মা সেলাই থেকে সামান্য আলাদা হয়েছে। এ-ছাড়া খুলে আরাম করে পড়তে পেরেছি। চাপাচাপি করার জন্য হয়তো এই শেষের দিকে সেলাই হালকা খুলে গেছে। যাহোক বাহ্যিক ভালো হলেও ভেতরের প্রোডাকশন—মন খারাপের ইমো।

≣∣≣ বই : বাজিমাত (বাজিকর ট্রিলজি #৩) • নাবিল মুহতাসিম
≣∣≣ জনরা : এসপিওনাজ থ্রিলার
≣∣≣ প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০২০
≣∣≣ প্রচ্ছদ : ডিলান
≣∣≣ প্রকাশনা : বাতিঘর প্রকাশনী
≣∣≣ মুদ্রিত মূল্য : ৩৫০ টাকা মাত্র
≣∣≣ পৃষ্ঠা : ৩০৬
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Diganto.
21 reviews3 followers
March 6, 2020
একদম পারফেক্ট ফিনিশিং। নাবিল মুহতাসিমের লেখার একটা সহজাত ভঙ্গি আছে, কয়েক পাতা ওল্টাতেই বুঁদ হয়ে যেতে হয়। এবারে জায়গাগুলোর বর্ণনা বড্ড বেশি প্রাণবন্ত লেগেছে, যেন লেখক মহাশয় একদম সেই জায়গা থেকেই গল্প বয়ান করছেন।
Profile Image for Joy Sarkar.
32 reviews3 followers
February 23, 2025
সতীশদার একটা কথা বেশ মনে ধরেছে, "কোন সংস্থার মাথা কে সেইডা বড় কথা না, আজ যে মাথা আছে কাল তো সে মাথা নাও থাকবার পারে। আজ এক জন রাণী মৌমাছি আছে কাল আর এক জন থাকব। সে গেলে আর এক জন আসব। মাথা খান রে সরাইয়া দিলেই যে ঐ সংস্থা ধ্বংস হইয়া যাইব এমন ডা ভাবা তো বোকামী"

বাজিমাত মূলত এসপিওনাজ ঘরানার থ্রিলার। সিরিজের শেষ বই এটি। মিলিটারী স্পাই এজেন্সী "দ্যা এজেন্সী", কাল্পনিক সংস্থা অক্টোপাস এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভার্চুয়া কে নিয়ে গল্প এগিয়েছে।

একুশ শতকের সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্র কোনটি? তথ্য। আমার বা আপনার তথ্য নিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার এর ব্যবসা করছে টেক জায়ান্ট গুলো। ব্যাক্তিগত বা ব্যবসায়িক যে কোন তথ্যই বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। কি হয় না এই তথ্য দিয়ে। আপনি যা পছন্দ করেন তার বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে, যে খাবার আপনার খেতে ইচ্ছে করছে তার বিজ্ঞাপন, হুডির এড থেকে অন্তর্বাস, ক্যামেরা থেকে ঘড়ি সব তথ্য আপনার সামনে হাজির করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো। তথ্য দিয়ে কি করা যায় তার সবচেয়েব বড় উদাহরণ তো ক্যাম্ব্রিজ এনালিটিকা।

আমার বা আপনার ওপর নজরদারী করতে চাইলে পেছনে স্পাই লাগানোর কি আদৌ কোন দরকার আছে? আমারা তো আমাদের পকেটে করেই স্পাই নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এপ ইন্সটল করার পরে ফোন স্টোরেজ , ক্যামেরা, কন্টাক্ট, লোকেশন সব কিছুর পারমিশন ছাড়া চালু হয় এমন এপ্লিকেশন এর সংখা হাতে গোনা। পারমিশন দাও, ব্যবহার কর। টার্মস এন্ড কন্ডিশন এরর নামে যে শর্তাবলী গুলো আমরা মেনে নেই তার একটাও পড়ে দেখি না। চেক ইন, স্টোরি, গোয়িং টু ইত্যাদি নিয়ে আমরা অতিশয় ব্যস্ত। এর ফলে কি ঘটছে বা ঘটতে পারে তার হিসেব না হয় তোলা থাক।

আমি বা আপনি সবসময় যা করতে চায় বা করতে যাচ্ছি তা করা হয়ে ওঠে না। আসাদ এর ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হল। এজেন্সীর নবীশ এজেন্ট এর যাওয়ার কথা ছিল উত্তরাখান্ড তার কর্মস্থলে, সেখানে না গিয়ে সে হাজির হল দার্জিলিং এ। নিশিকান্ত বাবুর সাথে ভাব জমিয়ে তার গেস্ট হয়ে। কি অমোঘ টান এ সে আটকে রইল দার্জিলিং এ, এর সাথে বাংলাদেশেরর স্পাই এজেন্সীর কি এমন সম্পর্ক। যে তার মত বেশ কিছু এজেন্ট ভারতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কি পরিকল্পনা দ্যা এজেন্সীর?

এলাকার অঘোষিত সম্রাট খোরশেদ এর এলাকায় কে এসে আশ্রয় নিয়েছে যার খবর তার কানে এসে পৌঁছাচ্ছে না? উপরন্তু তার ডান হাত বলা ভালো গানম্যান গৌতম পর্যন্ত ব্যাপারটা এড়িয়ে যাচ্ছে। কে লুকিয়ে আছে তার এলাকায়, সবার অগোচরে?

পুরোনো পেপার গুলো ঘাঁটতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া করে বসে আছে রোখসানা। পেপার পড়া বা খবর দেখা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে সে, নিজের ফেলে আসা অতীত এর সাথে আর কোনভাবেই যুক্ত হতে চাই না সে। কিন্তু চাইলেই কি আমার বা আপনার পক্ষে সব বিসর্জন দেওয়া সম্ভব? পুরোনো জিনিসপত্র গোছাতে গিয়ে লাল কালীর হেডলাইন টা নজরে আসে তার। একটা খবর যথেষ্ট ছিল তাকে নাড়া দেওয়ার জন্য, সাথে সাবপ্লটে যে চামড়ার গুদাম এর কথা লিখা ছিল তা তাকে স্রেফ খড়ের পুতুল বানিয়ে দিল। তার জীবনের স্বর্ণযুগ যার পেছনে সে ব্যয় করেছে, সেই পাহাড়সমান দ্য এজেন্সী ............... পুরোনো জীবন পেছনে ফেলে নতুন জীবন শুরু করেছিল সে। কিন্তু তাসের ঘরের মত ভেংগে গেল তার সাজানো সংসার।


কোন কিছু করার ইচ্ছে আর গোয়ার্তুমী দুইটি আলাদা বস্তু। সবার পক্ষে সব কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব না, আর সিস্টেম এর বাইরে গিয়ে তো কখনই না। কিন্তু অসম্ভব এক কাজ করার জন্য যদি আপনার জিদ চেপে যায় আর সাথে যদি অতি মাত্রায় গোঁয়ার হয় তবে তাকে সেই কাজ থেকে বিরত রাখা অনেক কষ্টসাধ্য। চোখের সামনে এজেন্সীর ধীরে ধীরে অক্টপাশের ভেতরে চলে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারে নাই সিফাত, এজন্সীর (সাবেক!) স্ট্রাটেজিস্ট। বাজি টা সে ধরেছিল এজেন্ট বাবুকে নিয়ে।

বাজিমাত এ সাথে গল্প চলেছে অনেকগুলো। আলাদা আলাদা টাইমলাইন এ। শেষ এ ধীরে ধীরে সুতো টান করে এক করা হয়েছে সব সংশয়। সিলেট এর পিচঢালা রাস্তায় এক আগন্তুকের আগমনে যে রহস্যের সূচনা ঘটেছিল, ইউক্রেন, দোনেস্ক, আমেরিকা, এরিয়া ফিফটি ওয়ান, বাঘা বাঘা সব এজেন্টদের উত্থান পতন, দার্জিলিং, দালাই লামা, তিব্বত ঘুরে তার সমাপ্তি ঘটল নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডবাহী এক এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার এ।

দ্যা এজেন্সীর সাবেক স্ট্রাটেজিক সতীশদার কাছে আসছে গৌতম, আহাদ। পরবর্তীতে রোখসানা। কি করতে চলেছে তারা? পানখেকো, চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলা, বৃদ্ধ, সোজা চোখে ৭০ এর দশকে আটকে থাকা এক বৃদ্ধ, পুরোন ট্রানজিষ্টর টিও যার ঘরে তুলনামূলক নতুন মনে হয়, আদতে তাদের কতটা সাহায্য করতে পারবে তাদের? পৃথিবীর সাথে যার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম আদ্যিকালের এক টেলিফোন।

নাটকের শেষ অংকে কি করতে চলেছে মাস্টার সিফাত? তার ভূমিকা কি? আহাদ বা গৌতম এর সাথে তার যোগাযোগ হীনতা আসলে কোনদিকে মোড় নিচ্ছে? লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা সিফাত এর সাথে দেখা করতে আসা লোকদুটো কে? যাদের সে পরিচয় করে দিয়েছে শার্লক আর ওয়াটসন নামে।

আইএস এর ছোট টিমের কমান্ডার আবদেল হুট করে এমন আহামরি কিছু কাজ করে বসল যে, স্বয়ং সিসানী তাকে ডেকে পাঠালেন গুরুত্বপূর্ণ এক মিটিং এ। সেখানে কি এমন ঘটল যা বদলে দিল অনেক কিছু?

রামানাথ পান্ডে, রোখসানা, মারিয়া এদের ক্যারেক্টার আরো ডিটেইলস এ যেতে পারত।কিন্তু এত কম সময় তাদের স্ক্রীন টাইম (!) দেওয়াটা অন্যায় অবিচার। বিশেষ করে রোখসানার চরিত্র বেশ মনে ধরেছে। কিন্তু পুরো বই তে নারী চরিত্র গুলো সেভাবে জায়গা পায় নি। শমসের চরিত্র কে বিল্ড আপ করে পরে আশা জাগানিয়া কোন স্পেস দেওয়া হয় নাই। ফ্ল্যাপ এ একটা বড়সড় ভুল ছিলা আহাদ এবং আসাদ এর নাম-ঘটিত। বই এর এক জায়গায় আগের বই তে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। যেটি বেশ দৃষ্টিকটু।

নাবিল মুহতাসিম এর লেখনীর একটা বিশেষ দিক হচ্ছে উনি পাঠক কে বই এর সাথে লেগে থাকতে বাধ্য করেন। আগের বই দুটোর মত হেড টু হেড কম্ব্যাক্ট কম ছিল, মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল মনস্তাত্বিক খেলা। তারপরেও একশন সি��� গুলোর বর্ণনা বেশ প্রাঞ্জল ছিল। বিশেষ করে পানমুনজান এর আলোচনা আর এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার এর একশন সিনগুলো ভালো লেগেছে।।
Profile Image for Abir Yeasar.
80 reviews1 follower
September 17, 2020
স্পাই থ্রিলারে মনে যা আছে তাই লিখলে হয় না। বাস্তবতার একটু কাছাকাছি থাকা উচিত। এমন আকাশ কুসুম প্লট বইয়ের, নায়ক যদি ড্রাগনে চড়ে বেড়াত, তাহলেও অবাক হতাম না।
Profile Image for Muhtasim Fahmid.
19 reviews5 followers
December 4, 2020
রিভিউ - বাজিকরঃ https://www.goodreads.com/review/show...

রিভিউ - বাজিঃ https://www.goodreads.com/review/show...

সত্যি বলতে কি, দুর্দান্ত "বাজি"র পর লেখক হতাশই করলেন ট্রিলজির শেষ বইতে এসে। উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকার ঐতিহাসিক মিটিংকে পটভূমি হিসেবে রেখে "বাজিমাত" এর মূল প্লট যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য। ঝামেলা পাকিয়েছে সাবপ্লটগুলোই। আহাদের মায়ের থ্রেডটা ক্যারি ওভার করলেও এক্সিকিউশনটা বেশ বাজে ছিল। এজেন্ট আসাদের প্লটলাইনটা (প্রচ্ছদে এই জিনিসটা সমস্যা পাকিয়েছে। প্রথম কয়েক চ্যাপ্টার পর্যন্ত পাঠক কনফিউজড থাকবেন আসাদ, নাকি আহাদ) বেশ ভালো একটা টুইস্ট দেবার চেষ্টা করেছে, তবে শেষরক্ষা হয় নি। আতিয়ার রহমানের সাথে দালাই লামার কানেকশন, মারিয়া ইত্যাদি থ্রেড একেবারেই মিনিংলেস লেগেছে। ট্রাভিস যেভাবে ক্যারিয়ারে সব নাবিককে নিজের পক্ষে নিয়ে এল, সেটা বিশেষ একটা বিশ্বাসযোগ্য লাগে নি (ট্রেইন্ড ন্যাভাল পারসোনেল এভাবে আবেগী বক্তৃতায় নিজের দায়িত্ব বা প্রফেশনালিজম ভুলে যাবে?) রোখসানা আর সমশেরের চরিত্র দুটোও ডিউস এক্স মেখিনা লাগে। আর পুরোনো ভিলেন জনির ফিরে আসাটা একদম তামিল সিনেমা লেভেলের নিম্ন ছিল। আসাদের অরিজিনাল মিশন, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সাবপ্লট ইত্যাদি কিছুই ক্লিয়ার নয়। বইয়ের অর্ধেকটাই আহাদের জন্মকাহিনীর ব্যাকড্রপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। অপচয় লেগেছে আমার কাছে।

"বাজিমাত"কে বাঁচিয়ে দিয়েছে তিনটে জিনিস - ট্রাভিস আরভাইন, মাস্টার সতীশদা, এবং 'হোমস ও ওয়াটসন' হিসেবে কার্ল সেভার্সের স্বর্গ-হইতে-মর্ত্যে-পতন। কার্ল শেষপর্যন্ত ক্ষমতার মোহে পড়ে অক্টোপাসের হেড হবার জন্যে উঠেপড়ে লাগবে, সিফাতকে টর্চার করে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাইবে, ভাবতে পারিনি। পুরো ট্রিলজিতেই হিরো থেকে ভিলেন হবার ট্রেন্ডটা বজায় রেখেছেন লেখক - জনি, আতিয়ারের পর ফ্রিডম অফ ইনফরমেশনের ধ্বজাধারী কার্লও পল্টি দিয়েছে ভোগবাদের সামনে।

সবশেষে তুলে ধরি কিছু হালকা ঘাটতি - ১। রোখসানার সাথে শফিকের ব্যবহারের প্যাটার্নটা বেশ অদ্ভুত। যে লোক স্ত্রীর আগের স্বৈরিণী রূপ সহ্য করতে না পেরে গালিগালাজ করে তাকে বের করে দেয়, তিন সপ্তাহের মধ্যেই সেসব একদম ভুলে স্ত্রীকে বুকে টেনে নেওয়াটা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য লাগে নি।.
২। ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডে নেভি সিলদের একটা কন্টিনজেন্ট থাকা খুব অস্বাভাবিক না। তবে শিপবোর্ড যেকোনো বিশৃঙ্খলা বা কমব্যাট সিচুয়েশনে কিন্তু আগ বাড়িয়ে আসবে মেরিনরা। এটা তাদের জুরিসডিকশনের মধ্যে পড়ে।
৩। ব্যক্তিগত মতামত - যেহেতু এই ইউনিভার্সে চমকদার গ্যাজেট বা ও ধরনের প্লট ডিভাইস নেই, তাই লেখক ওয়েপনরির একটা ভালো ডেস্ক্রিপশন দিতেই পারেন। ইউনিভার্সকেই সমৃদ্ধ করবে বলে মনে হয় জিনিসটা। টপ এজেন্টরা যেখানে নিজেদের অস্ত্রের নাম রাখে, সেখানে 'সাবরিনা'র একটা কাস্টোমাইজড Wilson Combat Brigadier বেরেটা হওয়া, কিংবা 'বিলkiss' এর একটা Taran Tactical Combat Master গ্লক হওয়াটাই মনে হয় শোভা পাবে।

ট্রিলজির সবচেয়ে দুর্বল বই বাজিমাত। থ্রিলার হিসেবে মোটামুটি পাসেবল, তবে অসাধারণ একটা ট্রিলজির শেষ বইটায় এসে জিনিসটা ম্যাড়মেড়ে হয়ে গেছে কেমন।

অনেকগুলো ক্লিফহ্যাঙার রয়ে যাওয়াতে আশা করছি পরবর্তীতে আরও বই আসবে সিরিজে। মাস্টার সিফাত, সমশের, পরিণত বাজিকর আহাদ, গৌতম ইত্যাদি চরিত্রকে নিয়ে আবারও গড়ে উঠবে দ্য এজেন্সি, লাগবে বিভীষণ কার্লের পেছনে। অ্যাটম বোমার সমান শক্তিশালী কিছু পাগলা স্পাই নিয়ে দারুণ একটা ইউনিভার্স গড়েছেন নাবিল মুহতাসিম - এর আরও এক্সপানশন চাই।
Profile Image for Tarik Mahtab.
167 reviews3 followers
December 19, 2022
ট্রিলজিগুলো ধীরে সুস্থে শেষ করা অভ্যাস হলেও বাজিকর ট্রিলজির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটলো। নিঃসন্দেহে সেরা একটা সিরিজ। নাবিল মুহতাসিমের লেখা মিস দেওয়া অনুচিত। বিভং সংগ্রহে আছে। পড়ার অপেক্ষা।
আহাদ আর ট্রাভিসের জন্যে ভালোবাসা।

৪.৫/৫
Profile Image for Wasim Mahmud.
357 reviews29 followers
September 7, 2022
বাজিকর। গুপ্তচরবৃত্তিতে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে উপমহাদেশে এই নামেই বৃটিশ আমল থেকে ডাকা হয়ে আসছে। দেশভেদে উর্দু এবং হিন্দীতে 'বাজিগর' হিসেবেই চিনে এসপিওনাজ জগতের মানুষজন। পৃথিবীজুড়েই ভাষাভেদে বিভিন্ন নামে তাঁরা আছেন। মোসাদ, এম‌আইসিক্স, সিআইএ আরো অনেক এজেন্সিতেই।

এই বাজিকরদের উপর বাজি ধরা হয় যার যার সংস্থা থেকে। আবার বাজিকর ট্রিলজির প্রথম পর্বে আহাদ নিজের উপর‌ই বাজি ধরেছিল। থামিয়েছিল আমেরিকা বনাম রাশিয়া যুদ্ধ। হারিয়েছিল নিজের প্রিয় সিনিয়র এজেন্টদের। দক্ষ ফিল্ড এজেন্ট থেকে পরিণত হয়েছিল বাজিকরে।

বাজি। দ্বিতীয় পর্বে কোমা থেকে উঠে আসা বাবুর উপর বাজি ধরেছিলেন দু'শর বেশি আইকিউ সম্পন্ন মাস্টার স্ট্রাটেজিস্ট সিফাত। সব হারানো বাবু একের পর এক ভিনদেশি বাজিকরদের বিরুদ্ধে যে মরনপণ যুদ্ধে নেমেছিলেন একদম ঘাড়ত্যাড়ার মত তা বহুদিন মনে থাকবে। বাবুর জন্য মনটা বিষন্ন হয়ে থাকবে আরো কতদিন।

'দ্য এজেন্সি' কম্প্রোমাইজড। বাংলাদেশের আদর্শবাদি প্রধানমন্ত্রি গাজী সোবহানুল ইসলামের প্রাণ বাঁচিয়েছেন একদল রহস্যময় এজেন্ট। দ্য এজেন্সি পরিণত হয়েছিল দ্য অক্টোপাসের শুঁড়ে। সেই শুঁড় উপড়ে ফেলেছেন আহাদ, কাপ্তান গৌতম, বাবু ও জলিল চাচা। তবে সোবহানুল ইসলাম এবং তাঁর কন্যা আনিলার উপর নিরাপত্তা ঝুঁকি মোটেও কমেনি। বরঞ্চ বেড়েছে।

বিশ্বের খ্যাতিমান তরুন উদ্দ্যোক্তা ভার্চুয়া সামাজিক মাধ্যমের কর্ণধার মাইক জিমারম্যান সরাসরি বাংলাদেশ এসেছেন। অক্টোপাসের প্রায় সকল তথ্য বংশীবাদক ডট কমের চালক কার্ল হাসান সেভার্স একদম উধাও। তাঁকে জীবন্ত দরকার জিমারম্যানের। প্রধানমন্ত্রি এবং তাঁর কন্যার জীবন হুমকিতে ফেলে কার্লকে চান বিনিময়ে 'দ্য অক্টোপাস' এর প্রধান। কারণ এই কার্লের হাতেই আছে উত্তর কোরিয়া এবং আমেরিকার মাঝে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়ার ক্ষমতা।

বয়সে তরুণ দ্য এজেন্সির এজেন্ট আসাদ কেন দার্জিলিং এ? নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ের পাশাপাশি আসাদের লক্ষ্য আরো বেশি মনোযোগ পায় দালাই লামার উত্তরসুরির ব্যাপারে। এই যাত্রায় মিশনের সব কোড ভেঙে ফেলেছেন আসাদ। তিন্নি কি ঠিকমত দেশে ফিরতে পারবে?

ট্রাভিস আরভাইন এক ছোট্ট মফস্বল শহর সংলগ্ন জঙ্গলে ভালোই জীবন কাটাচ্ছিলো। গতবার দ্য অক্টোপাসের ষড়যন্ত্রে পা রাখেন নি দ্য লুনাটিক খ্যাত সেরা সিআইএ এজেন্ট। বাংলাদেশে যান নি তিনি বাজিকর বাবুকে ফেইস করতে। তবে ঘ���নাচক্রে ট্রাভিস আরভাইন আবার পরিণত হতে যাচ্ছেন 'দ্য লুনাটিক' এ। নিজ দেশের বিরুদ্ধে নেমে পড়েছেন কেন ট্রাভিস?

মাস্টার সিফাত নিরুদ্দেশ। সিরিয়াতে আইএসের যোদ্ধা হয়ে লড়ছেন কেন সাবেক বাজিকর সমশের? তাঁর উদ্দেশ্য ঘোলাটে‌। এদিকে খোদ সমশেরের বয়ানে প্রকৃত বাজিকর রোখসানা সব ছেড়ে সংসারধর্মে মেতেছেন। তবে খুব শীঘ্র‌ই ঝড় আসছে সাবেক এজেন্ট রোখসানার উপর। কাপ্তান গৌতম চাচ্ছেন 'দ্য এজেন্সি' কে নতুন করে সাঁজাতে। কিন্তু ঐ সংস্থার প্রাক্তন প্রধান আতিয়ারের অনুগতরা আহাদ, রোখসানা, কাপ্তান গৌতমের প্রাণের উপর আদাজল খেয়ে নেমেছেন। ‌এখন সবাইকে ফিরে যেতে হবে রিটায়ার্ড ওল্ড স্কুল আরেক মাস্টার স্ট্র্যাটেজিস্টের কাছে।

মাইক জিমারম্যান এই শো এর শেষের শুরু করেছেন। কার্লকে ব্রেইন‌ওয়াশ অথবা ম্যানিপুলেট করে, নিজের ডামি আমেরিকান প্রেসিডেন্টকে হাত করে উত্তর কোরিয়ার সাথে এমন এক সংঘর্ষ লাগাতে চান যা কিনা সূচনা করবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের। প্রায় সব নাটকের যবনিকাপাত হচ্ছে। বাজিকর আহাদের পুরনো কোন অতীত কি ছুটে আসছে পিছন থেকে? যা তাঁকে মানসিক এবং শারিরীকভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে। পার্কুর লাফঝাপ এবং ভাগ্য কি এবার সহায় হবে আহাদের?

নাবিল মুহতাসিমের বাজিকর ট্রিলজির শেষ খন্ড পাঠ শেষ হল আজ। এসপিওনাজ নভেল কম পড়া হয়নি। তবে নাবিল নিজস্ব লেখনীতে যেন লেখক হিসেবে বাজিমাত করেছেন। বাজিকর সিরিজের প্রতিটি খন্ড একটি থেকে আরেকটি উত্তরোত্তর ব্যাটার হয়েছে। বিভিন্ন বাজিকরের ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, ব্যাটল মনস্তত্ত্ব, ব্যক্তিগত জীবনের বিপন্নতা এবং ট্রাজেডি সুন্দর চিত্রায়ণের মাধ্যমে একদম চোখের সামনে মেলে ধরেছেন নাবিল মুহতাসিম। তাছাড়া লেখকের দুর্দান্ত উইট বিভিন্ন সময় ভালো কমিক রিলিফ দিয়েছে। একশন দৃশ্যগুলো নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলতে চাই না। মনে হয় মাথার ভিতর একটি ফিল্ম চালু হয়ে ছিল পুরো ব‌ইয়ে। দার্জিলিং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সিরিয়ার ভয়াবহ পরিস্থিতি, ভূরাজনীতির জটিল প্যাঁচগোছ লেখক প্রাঞ্জল ভাষায় চমৎকার লেখনীর মাধ্যমে বলে গেছেন। বাজিকর আহাদের অরিজিন স্টোরিও আছে এই আখ্যানে। লেখক টানটান উত্তেজনা টিকিয়ে রেখেছেন পুরো গ্রন্থটি জুড়ে তেমন টুইস্ট এবং গিমিকের উপর নির্ভর না করেই। এটি সম্ভব হয়েছে তাঁর একধরণের সার্কাজম এবং সিরিয়াসনেসের যৌথতায় নৈরাজ্যপূর্ণ অদ্ভুত গল্পকথনের মাধ্যমে। বাজিমাত করেছেন নাবিল মুহতাসিম। আজ লেখকের জন্মদিন। তাঁর প্রতি জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা র‌ইল।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ খেলা জমবে একটি পারমানবিক অস্ত্রে সজ্জিত এয়ারক্রাফট ক্যরিয়ারে। শেষ রহস্যরোমাঞ্চপূর্ণ টানটান উত্তেজনাময় অভিযানের যবনিকাপাত ঘটতে যাচ্ছে সেখানেই। বাজিকর হয়তো অনেক, বাজি লাগিয়েছেন তাদের উপর কেউ কেউ বা তাঁরা নিজেরাই নিজেদের উপর। তবে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করবেন একজন‌ই। এই ট্রিলজি এক সূত্রে কোথায় যেন গাঁথা এই বিখ্যাত কবিতার সাথে-

জামার ভিতর থিকা যাদুমন্ত্রে বারায় ডাহুক,
চুলের ভিতর থিকা আকবর বাদশার মোহর,
মানুষ বেকুব চুপ, হাটবারে সকলে দেখুক
কেমন মোচড় দিয়া টাকা নিয়া যায় বাজিকর ৷
চক্ষের ভিতর থিকা সোহাগের পাখিরে উড়াও,
বুকের ভিতর থিকা পিরীতের পূর্ণিমার চান,
নিজেই তাজ্জব তুমি একদিকে যাইবার চাও
অথচ আরেক দিকে খুব জোরে দেয় কেউ টান৷
সে তোমার পাওনার এতটুকু পরোয়া করে না,
খেলা যে দেখায় তার দ্যাখানের ইচ্ছায় দেখায়,
ডাহুক উড়ায়া দিয়া তারপর আবার ধরে না,
সোনার মোহর তার পড়া থাকে পথের ধূলায় ৷
এ বড় দারুণ বাজি, তারে কই বড় বাজিকর
যে তার রুমাল নাড়ে পরানের গহীন ভিতর ৷

-পরাণের গহীন ভিতর
সৈয়দ শামসুল হক

বুক রিভিউ

বাজিমাত

লেখক : নাবিল মুহতাসিম

প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রকাশনা : বাতিঘর প্রকাশনী

প্রচ্ছদ : ডিলান

জনরা : এসপিওনাজ থ্রিলার

রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
Profile Image for Shoaib Akther.
34 reviews
November 7, 2024
বইয়ের নাম: বাজিমাত
সিরিজ: বাজিকর
লেখক: নাবিল মুহতাসিম
প্রকাশনী: বাতিঘর
মুদ্রিত মূল্য:৩৫০ টাকা

বিশ্বব্যাপী গোপন এক সন্ত্রাসী সংস্থা "দ্য অক্টোপাসের" অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এর এজেন্ট কার্ল সেভার্স। বংশীবাদক ওয়েবসাইটের খুলে একে একে সেই নথি ফাঁস করতে থাকেন কার্ল ও তার বাংলাদেশি বন্ধু সাব্বির। আর কার্ল কে ফেরত পেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গাজী সুবহানুল হকের মেয়ে আনিলা হক কে অপহরণ, প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলা সহ নানা চেষ্ঠা করতে থাকে বিশ্ব ব্যাপী জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভার্চুয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও দ্য অক্টোপাসের প্রধান মাইক জিমারম্যান।

তিন খন্ডে রচিত বাজিকর সিরিজের প্রথম দুটি খন্ডে প্রধানমন্ত্রী কন্যাকে উদ্ধারে আহাদের বীরত্ব ও বিভিন্ন দেশের সেরা এজেন্টদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে কার্ল কে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্ঠা প্রতিহত করতে এজেন্ট বাবু'র সর্বাত্মক চেষ্ঠা ও সফলতার বর্নণা রয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দর সড়কে প্রধানমন্ত্রী'র মন্ত্রীর উপর প্রাণঘাতী হামলা প্রতিহত করে তাকে নিরাপত্তা প্রদান, আহাদের ফিরে আসা ও দ্য অক্টোপাসের সাথে হাত মেলানো পুরো এজেন্সি কে গুড়িয়ে দেওয়ার পর আহাদের নতুন এক রহস্যের জালে জড়িয়ে পড়া-ই তৃতীয় খন্ডের প্রতি পাঠককে আগ্রহী করে তুলবে।

বাজিমাতের শুরুতেই পাঠক কে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশি এজেন্ট আসাদের সাথে যে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজে নিজের পরিচয় পাল্টে ভারতে এসেছে। ভারতেই নিজের বসের মেয়ে কে বিয়ে করে নেয় সে এবং এর জন্য কঠিন শাস্তি যে তাকে পেতে হবে সেটাও সে জানে। অন্যদিকে দ্য এজেন্সির চাকরিচ্যুত এজেন্ট গৌতমের সহায়তায় নিজের মা কে খুঁজে বের করার মিশনে নেমেছে আহাদ। এর ই মধ্যে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী কন্যার উপর ফের হামলা চালায় দ্য অক্টোপাস। পরিস্থিতি এতোই জটিল যে অবশেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নতি স্বীকার করতে বাধ্য হোন ও মাইক জিমারম্যান নিজেই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাকা কথা নিতে বাংলাদেশ সফরে আসেন।

চারদিকে যখন আধার দেখছিলো আহাদ তখন আবার ও আশার আলো নিয়ে বাংলাদেশে আসে মার্কিন এজেন্ট ট্রাভিস। ট্রাভিস সেই ব্যক্তি যে দোনেস্ক শহরে এক পরিত্যক্ত কয়লা খনি থেকে বিপর্যস্ত আহাদ কে উদ্ধারে সহায়তা করেছিলো। আহাদের দক্ষতা কে কাজে লাগাতে আমেরিকা যখন ওর ব্রেইন ওয়াশের চেষ্ঠা করছিলো তখন ও এই ট্রাভিস ই তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করছিলো। ট্রাভিসের পরামর্শ ও সহায়তায় দ্য অক্টোপাস কে রুখতে নতুন লড়াই শুরু হয় আহাদের।

অন্যদিকে মাইক জিমারম্যানের কথা মতো আমেরিকা-উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বাঁধাতে কাজ করতে থাকে কার্ল সেভার্স। আমেরিকা-কোরিয়ার শান্তি আলোচনার মধ্যে কার্ল উপস্থিত হয়ে জানায় বংশীবাদক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সে যেসব তথ্য প্রকাশ করেছিলো এর সবই উত্তর কোরিয়ার নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামের। আর এতেই পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। শান্তি আলোচনার মাঝেই বেজে উঠে আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধের দামামা যা কেবল-ই মাইক জিমারম্যানের একটা চাল ছিল।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঠেকাতে আহাদ-ট্রাভিসের চেষ্ঠা শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছিলো কি-না কিংবা আহাদের মায়ের সাথে সাক্ষাৎ কেমন ছিল জানতে হলে পড়তে হবে বাজিকর ট্��িলজীর তৃতীয় খন্ড "বাজিমাত"।

এতো বেশি চরিত্র ও ঘটনা মনে রাখতে পাঠককে বেশ বেগ পেতে হতে পারে। গত দুইটি বইয়ের মতো এই খন্ডে ছিলো না অস্বাভাবিক কোন মারামারি কিংবা খুনাখুনির ঘটনা। দার্জিলিং, কাঞ্জনজঙ্গার বর্ণনা থাকায় ফেলুদা প্রেমী'রা ফেলুদা সিরিজের ও কিছুটা স্বাদ পেয়ে যাবেন এই বইটিতে। সব থেকে বড় বিষয় হলো "দ্য অক্টোপাস" কে কেন্দ্র করে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবেও আছে এবং পাঠককে খুঁজে বের করতে হবে এই সংগঠনের পেছনে কারা? আশা করি দ্য অক্টোপাসকে খুঁজে পেতে পাঠকদের খুব বেশি সমস্যা হবে না!
Profile Image for উচ্ছ্বাস তৌসিফ.
Author 7 books69 followers
October 2, 2020
মূল গল্পের খুব বেশি বাকি ছিল না। সেটা বোঝা গিয়েছিল বাজিমাত-এর মাঝামাঝি এসেই। তবু তরুণ স্পাই আহাদ ও কিশোর দালাই লামা, তিন্নি এবং পরে রোখসানার গল্পটা আমার ভাল লেগেছে। পুরো ট্রিলজিটা মিলে একটা গল্প যদি হয়, তাহলে মূল ঘটনার ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকা এই সব ছোট ছোট ঘটনাগুলো গল্পটাকে বাস্তব করে তুলেছে পুরোপুরি।

মাইক জিম্যারম্যান, কার্ল, শার্লক বা ওয়াটসন না, দ্য অক্টোপাস কিংবা যুক্তরাষ্ট্র-কোরিয়ার যুদ্ধও না; এই বইটা আমার যেসব কারণে ভাল লেগেছে, তার মধ্যে রোখসানার সঙ্গেই আছে সমশের। যে সমশের আইএসে যোগ দিয়েছিল। আছেন সতীশদা, যিনি পান চিবুতে চিবুতে বাতলে দেন অদ্ভুত কার্যকর সব স্ট্র‍্যাটেজি। আছে হারিয়ে হাওয়া সিফাত, যাকে ছাড়া বাজির শুরুটা-ই হতো না।

কিন্তু এই সবকিছুর চেয়েও বাজিমাত আমার অসম্ভব পছন্দের তালিকায় থাকবে বরং সাশার জন্য।

আরো কি সিক্যুয়েল আসবে? কার্ল হাসান সেভার্স, মাস্টার সিফাত, সমশের, কাপ্তান গৌতম কিংবা দ্য এজেন্সির অন্য কারো গল্প নিয়ে? ট্রাভিস আরভাইনকে অনেক দেখতে ইচ্ছে হলেও মনে হচ্ছে, দ্য লুনাটিক আর ফিরে না আসুক। ওরও তো একটু বিশ্রাম প্রাপ্য হয়েছে।
Profile Image for Sarah Haque.
427 reviews105 followers
June 2, 2020
লেখা বা সিরিজ কোনটাই নিয়ে নতুন করে বলা বেশি দরকার নেই। থ্রিলার সিরিজ হিসেবে শুরু থেকেই খুব ভাল লেগেছে কিন্তু দ্বিধায় ছিলাম সেটার শেষ কীভাবে হয় দেখার জন্যে।

শুরু থেকে যেহেতু পড়ছি, আগের দুটো বইও আবার পড়েছি, হতে পারে লকডাউন এফেক্ট কিন্তু সবই মিলে যায়, তো, খারাপ আর কী!


লেখক অনেক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্যে অতীতের কাহিনী, নতুন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চরিত্র সবই এনেছেন, যেইটাই তার চেয়েও ভালো কথা সব গুলিয়ে যায়নি বা একঘেয়ে হয়নি।

শেষের পৃষ্ঠাগুলো বেশ ভালো ছিল। ওই যে ইংরেজিতে একটা কথা আছে না, "When you have so many questions but there are only fifty pages left" খানিকটা ওইরকম একটা অবস্থায় পড়েছিলাম কিন্তু বইয়ের গতির সাথেই সাথেই তা কাটিয়ে ফেলা সোজা।

শেষকথা, জানি এটা শেষ বই কিন্তু কেন জানি লাগছে না। কিছু জিনিস অজানা রয়েই যায়।

এখন এটা আমার মনের আশা না অন্যকিছু বুঝছি না এখনো। অথবা থাকুক না কিছু কথা অজানা, কিইবা যায় আসে?
Profile Image for Payel Nusrat.
89 reviews17 followers
September 23, 2020
৩.বাজিমাত
ট্রিলজির শেষ কিস্তি,যেখানে সব খাপছাড়া সুতোর লেজ ধরে এক মলাটের ভেতর ঠেসে সুতোর জট ছাড়ানো হয়েছে।বই হিসেবে "বাজিমাত" লেখাটা কঠিনই ছিলো বলতে হবে,আগের দুটো বই ধরে গড়ে ওঠা সকল সাসপেন্স,প্রশ্ন,রহস্যের সমাধান দিতে হবে এই বইতে।সেই হিসেবে বইয়ের প্রথম অর্ধেক কিছুটা ধীরগতিতে গেছে।গতি বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিতীয় হাফে গিয়ে।বইয়ে নতুন চরিত্র হিসেবে আবির্ভাব হয় এজেন্ট আসাদের (আমার ফেভারিট)।দ্বিতীয় হাফে গতি বৃদ্ধির পর সুনিপুণভাবে লেখক সকল রহস্যের জাল গুটিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন।অলরেডি ট্রিলজির ভক্ত যারা তারা আশা করি নিরাশ হয়নি,যারা নতুন করে পড়া শুরু করবে তারাও নিরাশ হবেনা।
Profile Image for Junaed Alam Niloy.
86 reviews10 followers
June 19, 2020
৩.৫ সত্যি বলতে।
হালকা ডিসএপয়েন্টেড। হয়ত এক্সপেক্টেশন টা একটু বেশিই ছিল।
বাজিকরে অবাক হয়েছিলাম, ভেবেছিলাম বাজি অতটা ভাল হবে না, কিন্তু বাজি আরো বেশি ভাল লেগেছিল। সেই জন্যেই হয়ত এক্সপেক্টেশন বেশি ছিল বাজিমাত এর প্রতি।
ওভারঅল ভাল লেগেছে। প্রথম দিকে ধীর গতিতে চললেও ৫০ পেজ এর পড়েই গল্প গতি পায়। শার্লক-ওয়াটসনের টুইস্টটা ভাল ছিল। ট্রাভিসের কাহিনিও ভাল ভাবে গড়েছেন লেখক।
লেখকের কাছে এমন আরো কাজের অপেক্ষায় রইলাম।
Profile Image for Heisenberg.
151 reviews8 followers
February 13, 2021
প্রচন্ড রকম হতাশ...প্রথম বইয়ের জনপ্রিয়তার কারনে কি শেষে এসে এরকম গোজামিল দেয়া লাগলো? আরও সময় নেয়া উচিৎ ছিলো..একদম ই ভাল লাগে নি..
Profile Image for HR Shohag.
60 reviews8 followers
July 11, 2021
আগের দুইটা বই পড়ে এইটার প্রতি অনেক এক্সপেকটেশন ছিল। পড়তে খারাপ লাগেনি তবে কিছু জায়গায় অনেকটা নাটুকে ভাব ছিল। সুন্দর একটি ট্রিলজির জন্যে নাবিল ভাইকে ধন্যবাদ
Displaying 1 - 30 of 34 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.