Chanda, Somen (1920-1942) political activist, writer; full name Somendra Kumar Chanda, was born in Baliya village of narsingdi district on 24 May, 1920. He passed the Entrance examination in 1936 from Pogose School, Dhaka. He was admitted to Dhaka Mitford Medical School. But had to discontinue his studies because of ill health. Later, he joined the pragati lekhak sangha and became involved in Marxist politics and literary activism. He was killed on 8 March 1942 while participating in a procession organised by the Soviet Friendship Society.
Somen Chanda's political and literary careers were intertwined. Politically committed, he wrote stories describing the struggle of the general people and he meant to raise public awareness about their disadvantaged situation. Most of Somen Chanda's writings were presented at the weekly and fortnightly meetings of the Progressive Writers' Association. His story 'Vanaspati' was published in Kranti (1940). Sangket O Anyanya Galpa (1943) and Vanaspati O Anyanya Galpa (1944) were published from Dhaka and Calcutta after his death. Ranesh Daxgupta edited and published Somen Chander Galpaguchchha (The Collected Writings of Somen Chanda) in 1973. His story, 'Indur' (The Rat), has been translated into several foreign languages. He died in Dhaka on 8 March 1942.
[সম্পাদনা পবিত্র সরকার, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাদেমি, ২৬শে মে ১৯৯৭, ষাট টাকা]
সোমেন চন্দের জন্ম ঢাকা জেলার নরসিংদি এলাকার বালিয়া গ্রামে। তার (১৯২০-১৯৪২) তার স্বল্পায়ু জীবনের শেষ চার পাচ বছরই তিনি লেখালেখি করার সুযোগ পেয়েছিলেন। মাত্র বাইশ বছরেই তিনি খুন হন বিরুদ্ধ মতের রাজনৈতিক ঘাতকদের হাতে!
সোমেন চন্দ ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশ করে ডাক্তারি পড়বার জন্য ভর্তি হন ঢাকার মিটফোর্ডে। কিন্তু, ডাক্তারি পড়বার নিয়মিত খরচ অকুলান হওয়ায় বছরখানেকের মধ্যেই তার লেখাপড়ার সমাপ্তি হয়ে যায়। তবে এই সময়ই (১৯৩৭) তার পরিচয় হয় আন্দামান ফেরৎ কম্যুনিস্ট নেতা সতীশ পাকড়াশির সঙ্গে! সতীশ পাকড়াশি ঢাকায় কম্যুনিস্ট আন্দোলন সংগঠিত করার প্রয়াস শুরু করেন, এবং সোমেন অচিরেই (১৯৩৮) গোপন ‘কম্যুনিস্ট পাঠচক্র’ এর প্রকাশ্য শাখা, প্রগতি পাঠাগারের পরিচালকের দায়িত্ব পান। আস্তে আস্তে তিনি কম্যুনিস্ট জীবনদর্শন, কর্মধারা ও সক্রিয় উদ্যোগের সাথে জড়িয়ে পড়েন ও মাত্র একুশ বছর বয়েসেই (১৯৪১) পার্টির সদস্য হন। ১৯৪০ নাগাদ ঢাকায় যে প্রগতি লেখক সংঘ পথ চলা শুরু করে, সোমেন ছিলেন তার অন্যতম সংগঠক। তিনি তার ট্রেড ইউনিয়নের কাজ ও আন্দোলনের পাশাপাশি লেখক সংঘের সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক বৈঠকেও নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। তার রচিত গল্পগুলির অধিকাংশই লেখক সংঘের বৈঠকে পঠিত। ১৯৪১ এর ২২শে জুন হিটলার সোভিয়েতে আগ্রাসন চালালে, সারা পৃথিবীতে ফ্যাসীজম বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠিত হয়, এবং ঢাকায় স্থাপিত হয় সোভিয়েত সুহৃদ সমিতি। ৮ই মার্চ ঢাকায় এক সর্বভারতীয় ফ্যাসিবিরোধী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, এবং এই সম্মেলনই হয়ে দাড়ায় সোমেনের ভবিতব্য, নেমেসিস!
তথাকথিত জাতীয়বাদী কিছু দল যারা ভেবেছিল হিটলার বা জাপানিরা এসে ভারত স্বাধীন করবে, তারা প্রথম থেকেই এই সম্মেলনে বিঘ্ন ঘটাতে চেষ্টা চালাচ্ছিল। তাদের সে চেষ্টা ব্যাহত হলে, বেলা তিনটের সময় সোমেন যখন রেল কলোনীর শ্রমিকদের মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে আসছিলেন, তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে কিছু অস্ত্রধারী! তারা, “ভোজালি দিয়ে পরপর আঘাত করে তাঁকে মাটিতে ফেলে দেয়, চোখদুটো উপড়ে ফেলে, জিভ টেনে বের করে তা কেটে ফেলে দেয়, পেট চিরে নাড়িভুড়ি বার করে দেয় এবং অট্টহাস্য করে পশুর মত তারা তাঁর ছিন্নভিন্ন দেহের উপর নাচতে থাকে।“ বাইশ বছরের তরুন ও মৃত সোমেনের হয়ে সাক্ষ্য দিতে রয়ে যায় তার পচিশটি গল্প, একটি উপন্যাস, দুটি একাঙ্কিকা আর তিনটি গদ্য কবিতা! (তথ্যসুত্রঃ সম্পাদকীয় ভুমিকা)
উপরর তথ্যরাজির শেষে এবার নিজের কথা বলি। বইটি কিনেছিলাম যথারীতি পাচ-ছয় বছর আগে, বইমেলায়। সোমেন চন্দের নামটি কেমন করে জেনেছিলাম তা মনে নেই, কোথাও নিশ্চই তার ব্যাতিক্রমী লেখনীর কথা পড়েছিলাম। ইঁদুর গল্পটি পড়া থাকলেও, এবারে বাকি চব্বিশটি গল্পই পড়ে ফেললাম। সম্পাদক যেমন সোমেন কে কথাসাহিত্যিক বলেছেন, তাতে আমার মতে নিশ্চই কিছু অতিশোয়াক্তি আছে। তবে! তবে, এটাও সত্যি যে সোমেন চন্দ অকালে প্রয়াত না হলে তার রচনা ভবিষ্যতে আরও শানিত, আরও ব্যাতিক্রমী হয়ে উঠত। সম্পাদক নিজেও আলোচনায় বলেছেন যে সোমেনের অনেক গল্প দুর্বল ও অসামাপ্ত রয়ে গেছে; তার সঙ্গে আমি একমত। বাস্তবিক পক্ষে বাইশ বছর বয়সে যেটুকু পরিনত বোধ নিয়ে সমাজের কাজে ঝাপিয়ে পড়া যায়, সেই বোধ, নির্দ্বিধায়, যথেষ্ট নয় আমাদের এই জটিল সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সর্বোপরি নর-নারীর সম্পর্ক বুঝে ফেলা! তবু, এই দুর্বলতার ভিতর দিয়েই বেশ কিছু চরিত্র উঠে আসে, যারা পাঠকের স্মৃতিতে স্থান করে নেয় অনায়াসে!
সোমেন চন্দের ভাষা সুন্দর, প্রকৃতির বর্ণনা মনোমুগ্ধকর এবং অযথা অলংকারাবৃত নয়। লেখকের কোন গল্পেই দারুন কোনো চমক দেওয়ার প্রচেষ্টা নেই; বরং পড়তে পড়তেই বেশ আঁচ করা যায় গল্পের পরিণতি কি হতে পারে। তার প্রতিটি গল্পই অসংখ্য দৃশ্যের সমাহার, ক্যালাইডোস্কপিক! গল্পগুলি সমাজের ও জীবনের অনেক স্তরকে ছুঁয়ে গেছে তাদের বিষয় ও চরিত্র বৈচিত্রে। এই বিবিধ বর্ণময় ছবির কোলাজের মাঝখানে তবু কোথাও যেন তার প্রতিটি গল্পেই বিষাদের একটি ছোয়া লেগে আছে; হাজার রঙের বুকে একটি মলিন ছায়াও যেন বিছানো আছে। অবশ্য তার সময়ে চতুঃপার্শ্বে আনন্দে উচ্ছসিত হওয়ার মতও তো কিছু ছিল না যা তার লেখায় আলোর ফুলকি হয়ে ফুটে উঠবে। এই মলিনতা আসলে আপাত ভাবে এই উৎসবমুখর, রূপটানে সজ্জিতা সমাজের ভেতরের ছায়াছন্ন এক রূপ, যা সোমেন চন্দের নজর এড়ায়নি!
এই গল্প সংগ্রহ (সমগ্র) এর পচিশটি গল্পের মধ্যে কয়েকটি গল্প, যেমন, স্বপ্ন, একটি রাত, ইঁদুর, প্রান্তর, বনস্পতি, ভাল-না-লাগার শেষ, রানু ও স্যার বিজয়শংকর বেশ ভাল লাগে। একটি রাত ও ইঁদুর, দুটি গল্পেই সুকুমার চরিত্রটি (লেখক) উপস্থিত। উপরন্তু সম্পাদক আমাদের জানান যে ইঁদুর গল্পে চরিত্র সুকুমারের মা-বাবা আসলে লেখকের মা-বাবার আদলেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অনেক গল্পের বেশ কিছু নারী চরিত্রও মন টানে, যেমন, রাত্রিশেষ গল্পে ললিতা, একটি রাত গল্পে বীণা, প্রান্তর গল্পে সতী, ভাল না লাগার শেষ গল্পে রমলা (ও অদিতি) ও বনস্পতি গল্পে সুকুমারী। সবশেষে এটাই বলা যায় যে, সোমেন চন্দের গল্প গুলিতে জীবনের বহিরঙ্গের চাইতে, মানুষের, অর্থাৎ, আমাদের অন্তরংগ মনের ভাবটুকু ও অন্যের সাথে তার আদান-প্রদানটুকু যে লেখক যে ভাবে তুলে ধরেছেন তা পাঠকের মনের ভেতর দীর্ঘসময় জুড়ে গুঞ্জরিত হতে থাকে। বাইশ বছর বয়সে শহীদ হওয়া তরুনটি তাই আজও সোমেন চন্দ নামে পৃথক পরিচয়ে আমাদের মধ্যে বেচে আছেন, থাকবেনও।
আমি যদিও দ্যু এর টা পড়েছি৷ দাঙ্গা আর ইঁদুর নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। কিন্তু বাকি গল্প গুলাও খারাপ লাগেনি আমার। মানবিক প্রেম,বিরহ, জটিলতা, রাজনীতি সবই এসেছে।