“তুমি কী? মানুষ নাকি রোবট?” প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে যেয়ে আজিমো নিজেকে আবিষ্কার করে এক গোলক ধাঁধায়। একটি নির্দিষ্ট অতীত পর্যন্ত স্মরণ করতে পারে সে, তার আগের সব স্মৃতি অন্ধকার!
তাই দ্বারস্থ হয় সে প্রখ্যাত সাইকিয়াট্রিস্ট, ডা. স্টিভ হেলমনের। কাউন্সেলিং চলতে থাকে... আচমকা এক সকালে জানতে পারে- আগের রাতে ডাঃ স্টিভ হেলমন খুন হয়েছেন!
ফিঙ্গারপ্রিন্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে খুনের দায়ে গ্রেফতার হন বিখ্যাত স্কলার, প্রোফেসর লুক্সবার্গ ইথান। কিন্তু বিপর্যয় শুরু হয় তখন যখন সাইরাস জিম জানতে পারে- খুন হওয়ার সময় প্রোফেসর লুক্সবার্গ ইথান অন্য এক সেক্টরের একটি সেমিনারে লেকচার দিচ্ছিলেন!
দৃশ্যপটে গুপ্ত-সংঘ ‘কোম্পানি’-এর দুজন এজেন্ট পরিস্থিতিকে করে তোলে আরও গোলমেলে। খুনকে কেন্দ্র করে রহস্য হতে থাকে ঘনীভূত।
জন্ম, বেড়ে ওঠা ও পৈত্রিক নিবাস ঢাকা শহরেই। পড়ালেখা করেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগে। তিন চাকরি করার পর এখন বাংলা সাহিত্যের মুক্তকোষ তৈরির লক্ষ্যে ‘বই পিডিয়া’ নামক একটি প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আর পাশাপাশি লেখালেখিও করছেন। সাই-ফাই লেখালেখিতে তার অনুপ্রেরনা হচ্ছেন ‘স্যার আইজাক আজিমভ’ ‘ফিলিপ কে ডিক’।
চমৎকার প্লটের বিপরীতে অপরিপক্ক লেখনশৈলী বানান ভুল আর ফিনিশিং দূর্বল থাকায় সুন্দর একটি বইয়ের অপমৃত্যু ঘটলো। কমপক্ষে ২০+ ভুল পেয়েছি লাস্টে আর গণনাই করিনি। কাহিনী সংক্ষেপ বলতে গেলে হয়তো স্পয়লার হয়ে যেতে পারে কারণ গল্পটি প্রেডিক্টেবল টুইস্ট কম সাইন্স ফিকশন থাকায়। কিন্তু লেখকের ক্যারেক্টর বিল্ড আপটা সুন্দর লেগেছে। যাইহোক এটা লেখকের প্রথম বই আশাকরি দ্বিতীয় বইয়ে এইসব ভুল শুধরে নতুন ভাবে দেখতে পাবো শুভকামনা রইলো।
বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে থ্রিলার এই মূহূর্তে বেশ শক্ত পোক্ত অবস্থানে থাকলেও থ্রিলারের কিছু সাব জনরা এখনও এদেশে শক্ত অবস্থান তৈরী করতে পারেনি। এর মাঝে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য জনরা সম্ভবত সায়েন্স ফিকশন বা সংক্ষেপে সাই-ফাই। এর কারণ এই জনরার পাঠকের অভাব নাকি মানসম্পন্ন মৌলিক সাই ফাই উপন্যাসের অভাব সেটা নিয়ে একটা আলোচনা হয়ে যেতেই পারে। তবে সে আলোচনাকে এক সাইডে রেখে আমি যখন মৌলিক সাই ফাই উপন্যাস ‘আলফা এক্স’ হাতে পেলাম তখন যারপরনাই খুশি হলাম। তরুন লেখক তন্ময় আহমেদ আর সাকিব তানভির যে উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। চলুন দেখে আসি সব মিলিয়ে কেমন ছিলো বইটি।
বর্তমান থেকে বেশ খানিকটা দূরের ভবিষ্যৎ (আজ থেকে ৩০০-৪০০ বছর পর, এক্সাক্ট সাল বা সময়টা আমার খেয়াল নেই) পৃথিবীর একজন বাসিন্দা আমাদের এই উপন্যাসের প্রোটাগোনিস্ট আজিমো। আজিমো হঠাৎ করে একদিন আবিস্কার করে তার মাঝে মানবীয় আবেগের ব্যাপারগুলো নেই। এই কারণে বান্ধবী ইয়ারার প্রেমের প্রস্তাবে সে সাড়া দেয় না, তার আসলেও জানাই নেই একজন মানব ও একজন মানবীর মাঝে প্রেম, ভালোবাসার অনুভূতিটা কেমন। একইভাবে সহপাঠী এবং থিসিস পার্টনার ভিনেলের প্রতিও তার বন্ধুত্বের অনুভূতি কাজ করে না। শুধু এই অনুভূতির ব্যাপার না, আজিমো খেয়াল করে দেখে সে আসলে তার অতীত নিয়েও জানে না। জানে না কে তার বাবা-মা, মনে পড়েনা শৈশবের কোন স্মৃতিও। আজিমো বুঝতে পারে সে আর দশজন মানুষের মত সাধারণ কেউ নয়। তার নিজের ব্যাপারে এই না জানার ব্যাপারগুলো বিশদভাবে জানার জন্য সে শরণাপন্ন হয় দেশের সেরা মনোবিজ্ঞানী ড. স্টিভ হেলমনের সাথে। মাত্র দু সেশন পরেই আজিমো যখন মনের অলিগলি ঘুরে তার অতীতের খোঁজ পাওয়া শুরু করেছিলো, তখনই রহস্যজনকভাবে খুন হন এই মনোবিজ্ঞানী। কে খুন করলো তাকে? খুন করার পেছনে কারণ কি? তবে কি তিনি আজিমোর ব্যাপারে এমন কিছু জানতে পেরেছিলেন যা প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হবে? এই খুনের রহস্য ভেদ করতে মাঠে নামের দেশের সেরা গোয়েন্দা সাইরাস জিম। সাইরাস জিম হচ্ছেন এমন একজন গোয়েন্দা যে কিনা কেস হাতে নিয়েছেন কিন্তু সলভ করতে পারেননি; এমনটা কখনো ঘটেনি। সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে খুনি হিসেবে যাকে পেলেন তিনি বেশ নামকরা একজন প্রফেসর, নাম লুক্সবার্গ ইথান, পেশায় একজন ইউনিভার্সিটি প্রফেসর। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে খুনের সময় প্রফেসর লুক্সবার্গ ইথান একটা সেমিনারে বক্তৃতা দিচ্ছিলো, সাক্ষী হাজার হাজার মানুষ। তাহলে তার মতো দেখতে এই খুনি কে? এখানে কি অন্য কোন চক্র আছে যারা আজিমোর অতীত উদ্ধার হতে দিতে চায় না? সাইরাস জিম কি এই খুনি আর চক্রকে খুঁজে বের করতে পারবে? এই হচ্ছে উপন্যাসের শুরু। এর পরে আরো অনেক কিছু আসে তবে সেটা বলে দিলে পাঠক উপন্যাস পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এবার আসি উপন্যাস পড়ে আমার অনুভূতি প্রসঙ্গে।
প্লট চমৎকার হলেও উপন্যাসটা আমার কাছে একদমই ভালো লাগেনি স্রেফ অপরিপক্ক লিখনশৈলী আর সম্পাদনার কারণে। উপন্যাস পড়ে বারবার মনে হয়েছে এইটা একটা ড্রাফট। এতগুলা দূর্বল জায়গা আছে যে এইটা লেখকদের লেখার শেষে রিভিউ, সম্পাদনা টিমের রি-ওয়ার্ক শেষে একটা প্রিন্টেড বইতে পরিণত হয়েছে বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয়েছে। প্রথমত,লেখায় বহুল পরিমাণে ইংরেজি শব্দের ব্যবহার ছিলো। উদাহরণ হিসেবে একটা লাইন বলি, ‘জীবাশ্ম থেকে ডিএনএ সেপারেট করে সেটাকে হিউম্যান ভ্রূণের সাথে মার্জ করে আমরা Subject-85 কে তৈরী করি।’ এখানে মনে হচ্ছে, এক কুল ডুড তার আরেক কুল ডুড বন্ধুকে কোন একটা জিনিস বোঝাচ্ছে। এছাড়াও ডিফিউজড আলো, অ্যাডজাস্ট, ক্ল, ক্যাওস, পার্সোনাল এজেন্ডা এরকম আরো অনেক শব্দের জায়গায় চাইলেই বাংলা শব্দ ব্যবহার করা যেত। দ্বিতীয়ত, কয়েক জায়গায় নাটকীয়তা এবং লজিক ছিলো ভীষণ রকমের দূর্বল। যেমন : শুরুর দিকে আজিমোর কথায় জানা যায়, সে নিজের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার কোন অনুভূতি অনুভব করতে পারছে না। অতীতের কোন স্মৃতিও মনে নেই। অতীত বলতে শুধু তার মনে আছে, একটা সকালে সে উঠে নিজেকে তার ফ্ল্যাটে আবিষ্কার করে, নিজের ভেতর থেকে সে জানে সে একজন ইউনিভার্সিটি ছাত্র এবং তার পরের ৪ বছর এভাবেই চলে এসেছে। এই ৪ বছরে একবারও তার মনে প্রশ্ন জাগেনি, তার অতীত কি, তার বাবা মা কে। শুধু যখন এ উপন্যাস শুরু হলো, তখনই তার মনে প্রশ্ন এসেছে। এখানে শুরুতেই বইটা খেলো হয়ে গেছে এবং উপন্যাসের এরকম দূর্বল স্টার্টিং আমার চোখে সহসা পড়েনি। পটভূমি হিসেবে সে সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা বর্তমান সময়ের চেয়ে ৩০০-৪০০ বছরের পরের পৃথিবী এবং ওখানে আলাদা কোন দেশ দেখানো হয়নি। দেখানো হয়ছে ৭ম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর সব দেশ এক হয়ে পৃথিবীটাকে একটা ইউনিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। পৃথিবীর এতগুলা শক্তিশালী রাষ্ট্রকে এক ছাদের নিচে আনতে গেলে যে আইডিওলজি আর নেতৃত্বের দরকার তা উপন্যাসে উঠে আসেনি, ওটাকে আমি স্কিপ করে গেলেও একটা জিনিস স্কিপ করতে পারছি না। তা হলো, এই বড় রাষ্ট্রটিকে নাকি ইংরেজি বর্ণমালা অনুসারে ২৬টা অ্যালফাবেটিক সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। সিরিয়াসলি? সেক্টরে ভাগ করার ক্ষেত্রে পৃথিবীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, জাতিগত ব্যাপারগুলা উপেক্ষা পেয়ে সেখানে গুরুত্ব পেলো ইংরেজি বর্ণমালা? ইংরেজী বর্ণমালায় বর্ণ যদি ৩৯ টা থাকতো তাহলে সেক্টর কি ৩৯টাই হতো? এরপর উপন্যাসের এক পর্যায়ে হোমিসাইডের চিফ সাইরাস জিমকে ডেকে বলে, ওপর থেকে নির্দেশ আছে, তোমাকেই এই কেসটা নিতে হবে। ঠিক তার পরের পৃষ্ঠায়ই দেখা গেলো, সে চিফ আবার জিমকে সাধারণভাবে প্রশ্ন করছে, তুমি কি কেসটা নেবে না আমি অমুককে দিয়ে দেবো? প্রশ্ন হলো, অমুককে যদি দেয়াই যায় তাহলে ওপরের চাপ, তোমাকে নিতে হবে এসব বলার মানে কি? একদমই রিলেট করে যায় নি। এই জিনিসগুলা উপন্যাসের ফ্লো নষ্ট করেছে।
সাই ফাই উপন্যাসে আমরা দারুণ দারুণ কিছু গ্যাজেট, বাহনের ব্যবহার দেখি যেগুলো আমাদের এই পৃথিবীতে এই মূহূর্তে না থাকলে অদূর ভবিষ্যতে থাকবে বলে আশা করা যায়। এ উপন্যাসেও এরকম কিছু জিনিস আমরা দেখেছি। যেমন : ম্যালভার্স, হাইপার গ্র্যাভকার, ন্যানো হুক ইত্যাদি। এর মাঝে ন্যানো হুকের ডিজাইনটা আমার কাছে একটু আজব লেগেছে। এটার দৈর্ঘ্য বলা হয়েছে ৮ ইঞ্চি, কিন্তু এটা এতটাই সুক্ষ্ম যে এটা মাথায় ঢোকালে একদম এক ফোঁটা রক্তও বের হয় না। আচ্ছা এটার সুক্ষ্মতার ব্যাপারে বুঝলাম। কিন্তু একটু পরেই আবার বলা হচ্ছে ওটা থেকে প্রয়োজন অনুসারে জেল থ্রো করা যায়, হিট বের করা যায় ইত্যাদি। তাহলে আসলেই কি ওটা এত সুক্ষ্ম যে একটু রক্তও বের হয় না? এটা একটু খাপছাড়া লেগেছে। তবে ম্যালভার্স, গ্র্যাভকার এগুলো বেশ ভালো লেগেছে।
ভয়ানক দূর্বল ছিলো গল্পের উপন্যাসের চরিত্রায়ন। এ উপন্যাসের বেশ কিছু মূল চরিত্র তৈ��ীতে লেখক যে সামঞ্জস্য তৈরী করে ফেলেছেন তা বোধহয় লেখকের দৃষ্টিগোচর হয়নি। যেমন : এ উপন্যাসের প্রত্যেকেই যার যার কাজে সেরা এবং জীবনে তারা শ��ধু সাফল্যই পেয়ে গেছে। ড. স্টিভ হেলমন, পেশায় একজন সাইকিয়াট্রিস্ট, তার কাছে রোগী এসেছে কিন্তু সুস্থ হয়নি, এমন নজির নেই। তার সাক্সেস রেট, ১০০%। সাইরাস জিম, পেশায় হোমিসাইডের একজন ডিটেকটিভ, তিনি কেস হাতে নিয়েছেন কিন্তু সমাধান করতে পারেননি, এটা কখনও হয়নি। তার সাক্সেস রেট, ১০০%। জোনাথন প্রিস্ট, পেশায় ‘কোম্পানী’র একজন এজেন্ট, কোম্পানী তাকে কোন মিশন দিয়েছে কিন্তু সে মিশন কমপ্লিট করে নাই, এরকম নজীরবিহীন। এনার সাক্সেস রেটও ১০০%। এই যে সবাই সবার জায়গায় সেরা, এটা প্রতিটি চরিত্রকে আলাদা আলাদা করে ফুটে উঠতে দেয়নি। এমনকি পরবর্তীতে এনাদের কিছু কিছু আচরণ এনাদের যার যার জায়গায় সেরা আখ্যার দেয়ার জায়গাটুকুকেও নষ্ট করেছে। যেমন : সাইরাস জিম স্টিভ হেলমনের মৃত্যুতে লুক্সবার্গ ইথানকে গ্রেপ্তার করে জানায়, তার DNA ক্রাইম সিনে পাওয়া গেছে। এটা শুনে ইথান জিজ্ঞেস করেন, ‘DNA কত পার্সেন্ট ম্যাচ করেছে?’ (DNA কি % হিসেবে ম্যাচ করে? এটা কেউ জানলে আমাকে জানায়েন)। জিম বলছে, ৭৫% (!)। ইথান বললো, তাহলে তো হলো না। ম্যাচ করলেও তো ১০০% করবে নতুবা করবে না। আমার কথা হচ্ছে, DNA যদি ম্যাচ করলে ১০০% ম্যাচ করে নতুবা করে না, তাহলে ইথান কেন প্রশ্ন করলো, কত পার্সেন্ট ম্যাচ করে? তার থেকেও হাস্যকর কথা হচ্ছে ইথানের এই কথার উত্তরে সাইরাস জিম বলেছে, ‘ফাঁকটা মাথায় আসেনি। ধন্যবাদ। বিষয়টা আবার তলিয়ে দেখছি।’ আই মিন সিরিয়াসলি? এই স্কিল, বুদ্ধিমত্তা নিয়ে সে তার লাইফের সব কেস কিভাবে সমাধান করেছে? (স্পয়লার অ্যালার্ট) এখানেই শেষ না, কেস চলাকালীন সাইরাস জিম একদিন স্বপ্নে দেখতে পায়, তার বাবা তাকে একটা কো-অর্ডিনেট দিচ্ছে। কেন দিচ্ছে সেটা সে না জানলেও সে কেসের কাজ স্থগিত রেখে ঐ কো-অর্ডিনেটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় (!)। যাওয়ার পথে একজন অপরিচিত মানুষ তাকে ফোন দিয়ে বলে, আপনি যে কেস হ্যান্ডেল করছেন সে বিষয়ে আপনার সাথে কথা আছে। এটা শুনে জিম যেখানে আছে ওখানেই দাঁড়িয়ে অপরিচিতি কলারের জন্য অপেক্ষা করে। তখন কমিশনার তাকে ফোন করে জানায়, ‘তুমি যেখানেই থাকো তাড়াতাড়ি ডিপার্টমেন্টে আসো। কে বা কারা যেন ডিপার্টমেন্টের সবাইকে হত্যা করে রেখে গেছে।’ এটা শুনেও জিম বলে, স্যার আমি চলমান কেসের গুরুত্বপূর্ণ একটা তথ্যে জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছি, এটা শেষ করে আসছি। আরো একবার আমি বলতে বাধ্য হচ্ছে, সিরিয়াসলি? সে তো ভাই চেনেও না কে ফোন করেছে, তথ্যটা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিনা এবং মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি এটা হোক্স কল কিনা তাও সে জানে না। তা সত্ত্বেও সে তার কলিগদের দুরাবস্থার চাইতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকাটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করলো? (স্পয়লার অ্যালার্ট শেষ) এখানে এসে লেখকের কাছ থেকে আমি আসলে চরিত্রায়নের আশা ছেড়ে দিয়েছি। এছাড়াও হোমিসাইডকে লেখক আরো বাঁশ দিয়েছেন মার্ফি নামে একজন জুনিয়র ডিটেকটিভকে দিয়ে। সে হোমিসাইডের একজন ডিটেকটিভ হয়ে, বাসায় গিয়ে তার রুমমেটের (যে কিনা একজন ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট) সাথে দেশের টপ প্রায়োরিটি কেসের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করে। ব্যাপারটা কিন্তু মোটেও এমন না যে, তাদের মাঝে সম্পর্ক খুবই ভালো। বরং টাইমিং না মেলায় প্রায়ই তাদের দেখা হয় না। ওদিকে রুমমেটও কম যায় না, মার্ফির কাছ থেকে পুরো কেস শুনে নিয়ে সে নিজে লিড নিয়ে নেয়। খানিকবাদে দেখা গেলো, সেই মার্ফিকে নির্দেশ দিচ্ছে, এটা করো, ওটা করো। মানে ভালোই, যে যার মতো খেলছে হোমিসাইডকে নিয়ে। এইতো গেলো, থ্রিলারের ইল্লোজিক্যাল ব্যাপারগুলো। সায়েন্সের ইল্লোজিক্যাল বিষয়ও আছে কিছু। যেমন : এক জায়গায় বলা হয়, Subject-85 এর ডিএনএতে একটা ভিন্নধর্মী ‘এলিমেন্ট’ যোগ করা হয়েছিলো (এলিমেন্ট আবার কি?)। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই এলিমেন্ট কি তা আমার মতো Subject-85 এর সুপারভাইজাররাও জানতেন না। শুধু জানতেন, ঐ এলিমেন্টটা তারা এক্সট্রা টেরিস্টিয়াল সোলার প্ল্যানেট থেকে পেয়েছেন। আর পেয়েই সাবজেক্টের ডিএনএতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন (!)। মানে ব্যাপারটা কি এমন নাকি যে, বিদেশী জিনিস, ভালো তো হবেই? অদ্ভূত ইল্লোজিক্যাল লেগেছে এই পয়েন্টটা।
এরকম আরো অনেক অনেক ভুল, গাদা গাদা জোড়াতালিতে ভরা ‘আলফা এক্স’ যা নিয়ে লিখতে গেলে তা একটা ছোটগল্পের আকার ধারণ করবে। তাই আপাতত ক্ষান্ত দিলাম। আর এ বই লিখতে নাকি লেখকের ৩ বছর লেগেছে। সে হিসেবে বলবো, উনি ৩ বছর ধরে যে কষ্টটা করেছেন তার একদমই দাম দেন নাই প্রকাশনীর লোকজন। একটু সম্পাদনা করলে আমার মতে এর ভুল থাকতো না। এটা যেহেতু সিরিজ হবে, তাই পরের বইগুলোতে সম্পাদনা হবে আর এসব ভুল আসবে না আশা রেখে গেলাম।
ওহ, লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট, লেখক যদি এ পোস্ট দেখে থাকেন আরকি। আচ্ছা, পেন্সিল দিয়ে গুতা দিয়ে একটা মানুষকে কিভাবে মেরে ফেলা যায়? বইতে এটা এসেছে কিন্তু আমার ছোট্ট মাথায় এটা ধরেনি। সম্ভব হলে একটু ব্যাখ্যা করবেন। আপনার পরবর্তী বইয়ের জন্য শুভকামনা রইলো।
একটা ভালো বই হইতে পারত। কিন্তু অনেক বানান ভুলের জন্য ভালো লাগে নাই। কিন্তু বইটা ৯৯.৯৯% মানুষের কাছে ভালো লেগেছে। ভুলের লিস্ট ২১ নম্বর পেজঃ বানান ভুল (এইখান থেকে খারাপ লাগা শুরু কিন্তু বানান কি ভুল ছিলো সেটা লিখতে মনে নেই, আর পিছনে যাবার ইচ্ছাও ছিলো না)
২৩ নম্বর পেজঃ আমার তো কোনোভাবেই মনে পড়ছে যে কবে বা কীভাবে এখানে… (একটা লাইন থেকে 'না' বাদ পড়েছে)
২৪ নম্বর পেজঃ সব প্রক্রিয়া যদি আমি করে থাকে…. (হবে 'থাকি')
৪২ নম্বর পেজঃ যেহেতু তাকে খুঁজে বেড় করে পেরে খুন করা হয়েছে…. ( এইখানে হবার কথা ছিল 'তারপর', 'বের' বানানও ভুল)
৬৬ নম্বর পেজঃ পুলিশ ব্যাক ছাড়া বাইরের কেউ ঢুকলেই সাইরেন বেজে উঠবে (বুঝে নিয়েন কি এটা)
৬৬ নম্বর পেজঃ জিম ঢোকাতে অবশ্য কোন সাইরেন বাজল নাম, ব্যাজের কামাল… ( কাহিনী বুঝেছেন)
৮০ নম্বর পেজঃ বানান ভুল গ্রেঢুার (গ্রেপ্তার)
৮২ নম্বর পেজঃ বানান ভুল গ্রেঢুার (গ্রেপ্তার)
৮২ নম্বর পেজঃ তারপর সারারাত রাস্তা ছিল সকালে ক্লাস ধরার জন্য… (লাইনটা পড়েন তাহলে বুঝবেন)
৮৬ নম্বর পেজঃ বানান ভুল গ্রেঢুার (গ্রেপ্তার)
৮৭ নম্বর পেজঃ সারভেইলেন্স হয়েছে স্যুভেলিয়ান
৯০ নম্বর পেজঃ সারভেইলেন্স হয়েছে স্যুভেলিয়ান
৯১ নম্বর পেজঃ বানান ভুল গ্রেঢুার (গ্রেপ্তার)
৯১ নম্বর পেজঃ আষঢ়যধ ঢ (১ পেজে ৩বার) আবার এই পেজে এই লেখা ঠিক করে লেখা Project Alpha X কারণ Ctrl+A দিয়ে ফন্ট চেঞ্জ করার কামাল 📷
৯২ নম্বর পেজঃ বানান ভুল গ্রেঢুার (গ্রেপ্তার)
১০৬ নম্বর পেজঃ আপনার সাথে একটা ছেলের সাথে দেখা করে… ( একটা লাইনে ২বার হবার কারণে পড়তে ঝামেলা লাগে )
১২৬ নম্বর পেজঃ সে একটি দরকার দিকে তাকিয়ে আছে। (ভাই থামেন এইটা দরকার না, এইটা দরজার হবে) 📷
১৩৪ নম্বর পেজঃ পরক্ষণেই তখনের নিজেকে (তখনের কি?)
২৩৬ নম্বর পেজঃ সে অন্য সব সাধারণ বাচ্চাদের আচরণ করত না (মতো বাদ গেছে )
১৩৮ নম্বর পেজঃ এখানেই subject-85 সম্পর্কিত লগ এখানেই শেষ ( লাইনটা হবার কথা ছিলো 'এখানেই subject-85 সম্পর্কিত লগ শেষ' বা subject-85 সম্পর্কিত লগ এখানেই শেষ। )
১৬২ নম্বর পেজঃ ডিএনএর ৩% মিল পেয়েছে (কিন্তু এই কাহিনী শুরুর দিকে বলেছে মিল পেয়েছে ৭৫% কিন্তু এইখানে এসে পল্টি মেরেছে)
১৮৫ নম্বর পেজঃ মার্ফি জানায় ন? (এইটা মনে হয় চিটাগাং এর ভাষা, ন ডরাই 📷)