Jump to ratings and reviews
Rate this book

জলপাই রঙের কোট

Rate this book

208 pages, Hardcover

Published February 1, 2018

7 people want to read

About the author

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
1 (12%)
4 stars
4 (50%)
3 stars
2 (25%)
2 stars
1 (12%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 4 of 4 reviews
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,957 followers
June 16, 2019
মূলত মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস হিসেবে শুরু হলেও এক জায়গায় আটকে থাকেনি গল্প। কখনো গল্পের বর্ণণ এগিয়েছে বর্তমান সময়ে, আবার ফিরে গিয়েছে ফ্ল্যাশব্যাকে। ধীরে ধীরে এসেছেন মাস্টারদা সূর্যসেন, বীরকন্যা প্রীতিলতা, ধলঘাট ক্যাম্প, মার্চ মাসের উত্তাল সময়। মূল কাহিনী আবর্তিত হয়েছে যুদ্ধে আপন দেশ থেকে পলায়রত সুবীরময়ের পরিবার এবং তাদের আশ্রয় দানকারী সুজিতকে ঘিরে। এক হিসেবে দেখলে প্রেমের উপন্যাসও বলা যায়। নরনারীর প্রেম, দেশের প্রতি প্রেম। ঝরঝরে গদ্য, পড়ার সময় কোথাও আটকাতে হয় না।
আক্ষেপ একটাই, উপন্যাসে 'ইনফো ডাম্প' একটু লম্বা হলে তখন একটু মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটতে শুরু করে। তেমনটাই হয়েছে কয়েকবার। এছাড়া অভিযোগের কোন সুযোগ নেই। :)
Profile Image for Somagata Barua.
57 reviews9 followers
May 23, 2020
একাত্তর নিয়ে গল্প। গল্প মুক্তিযোদ্ধা সুজিত বড়ুয়াকে নিয়ে।
লেখনি বেশ কাঁচা হাতের। তবে অন্য সবকিছু মিলিয়ে, ভালো বই।
Profile Image for Ashikur Khan.
Author 4 books7 followers
February 28, 2023
বইয়ের নামঃ জলপাই রঙের কোট
বইয়ের ধরনঃ ঐতিহাসিক উপন্যাস (সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
লেখকঃ রবিউল করিম মৃদুল
প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ
প্রকাশনাঃ দেশ পাবলিকেশন্স

কোনো ইতিহাস জন্ম নেয় কালের পরিক্রমায়, সময়ের চলমান স্রোতে। প্রতিনিয়ত বদলে যাওয়াই সময়ের ধর্ম হলেও ইতিহাস কিন্তু বদলায় না। সময়ের সাথে সাথে স্থান-কাল-পাত্র বদলে গেলেও ইতিহাস অনড় রয়ে যায়। ইতিহাস মানুষের নায়কোচিত গল্প যেমন তুলে ধরে, তেমনি কাউকে কাউকে খলনায়কেও পরিণত করে। নশ্বর পৃথিবীতে মানুষের উত্থান-পতন যেমন ঘটে, তেমনি ইতিহাসে বর্ণিত গল্পগুলোতেও লাগে পরিবর্তনের ধাক্কা----কখনো আকস্মিক, কখনো বা ধীরেসুস্থে! এখন যা ঘটছে, পর মুহূর্তেই তার ঠাঁই হয় ইতিহাসের পাতায়। অর্থাৎ সময়ের বদলে ঘটনাচক্র অতীত হয়ে যায়। তখন তার নাম হয়ে যায় ইতিহাস!

প্রতিটি স্বাধীন জাতির উত্থানের পেছনে একটি গল্প থাকে। এ গল্প হয়ে থাকে কখনো সংগ্রামের, কখনো দ্রোহের, আবার কখনো বা নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের। অন্য জাতির মত বাঙালি জাতির এ ইতিহাসও আকারে বেশ দীর্ঘ। কোনো সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডে এর মাহাত্ম্য পরিমাপ করা খুব কঠিন। অসম্ভব বললেও খুব একটা অত্যুক্তি হবে না বোধ হয়। সে ইতিহাসের গল্পকে বইয়ের পাতায় অক্ষরে রূপদান করেছেন তরুণ লেখক রবিউল করিম মৃদুল। কোনো মনগড়া গল্প নয়, সত্যিকারের গল্প অবলম্বনে এ দেশীয় ইতিহাস তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন তিনি। এ দেশের ইতিহাস বলতে গেলে মূলত ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ---- এ সময়কালীন ইতিহাসের কথা ঘুরেফিরে মাথায় আসে। এত দীর্ঘকালীন ইতিহাসের বর্ণনা দিতে গেলে সেটা ঐতিহাসিক উপন্যাস না হয়ে ইতিহাসের এক প্রামাণ্য গ্রন্থ হয়ে ওঠে। আকারে ঢাউস সাইজের সেসব বই মানুষ কেবল অনিচ্ছাসত্ত্বেও পড়ে থাকে। যাক সেসব কথা! লেখক এ বইতে স্বদেশী আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ ----- এ সময়কালের ইতিহাস তুলে ধরেছেন। সময়ের বিচারে বলতে গেলে এ ইতিহাসের সময়কাল ১৯০৫ থেকে ১৯৭১......৬৫ বছরের ইতিহাস।

বইটিতে স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম নায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের বীরোচিত সাহসিকতার গল্প বিবৃত করা হয়েছে। একজন পুরুষ কী করে দুনিয়ার সকল মোহ-মায়াকে পরিত্যাগপূর্বক কেবল স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে এভাবে বলী দিয়ে দিতে পারে, মাস্টারদা তার সবচেয়ে উজ্জ্বল নিদর্শন। কর্মজীবনে সূর্যসেন এক হাইস্কুল শিক্ষক হবার সুবাদে সকলের কাছে মাস্টারদা নামে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত অবধি লড়ে গেছেন ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে, স্বদেশের স্বাধীনতার দাবিতে। লজ্জাজনক হলেও সত্যি যে, দেশের ইতিহাসের উপরে অসংখ্য বই রচিত হলেও এ বীরের অবদানের ব্যাপারে তেমন বিস্তারিত কিছু কোথাও পাওয়া যায়না। এ বই সে অভাব অনেকাংশেই দূর করে দিবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, স্বদেশী আন্দোলন নিয়ে পূর্ববঙ্গের লোকেদের মধ্যে অনেক বিতর্ক থাকলেও দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে মাস্টারদা সূর্যসেনের অকৃত্রিম ত্যাগ কোনোভাবেই অস্বীকার করবার মত নয়।

এর পাশাপাশি লেখক মোমবাতির মত নিরব দহনে নিঃশেষিত হয়ে যাওয়া এক নারীর জীবন সংগ্রামের গল্প তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, পর্দার অন্তরালে থেকেও কী করে এ সংগ্রামে শামিল হওয়া যায়! দূরে থেকেও ন্যায়রক্ষার সংগ্রামে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণাদায়িনী এ নারীটি আর কেউ নন---- তিনি স্বয়ং সূর্যসেনের অর্ধাঙ্গিনী। তার জীবন মোটেও আর দশটি সাধারণ গ্রাম্যবধূর ন্যায় ছিল না। হাতে মেহেদী, গায়ে নববধূর সাজ----এ বেশে একজন সদ্য বিবাহিতা নারী বাসর ঘরে অপেক্ষমাণ। কল্পনার রঙিন পাখা যখন ঘরের চালের সীমানা পেরিয়ে মুক্তাকাশে মেলে ধরেছে নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ, স্বপ্নের পুরুষ তখন ব্যস্ত দেশের মুক্তি সংগ্রামের কাজে। যৌবনের টান উপেক্ষা করে যে পুরুষ একবার দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়েছে, সামান্য নস্যি নারীর কী সাধ্য তাকে মায়ায় বাঁধনে আটকে রাখবার? তিনিও পারলেন না। সদ্য কৈশোরে পা রাখা এ অনিন্দ্য সুন্দরী নারীও পারলেন না নিজেকে মায়ার বাঁধনে স্বপ্নের পুরুষকে বেঁধে ফেলতে। সকল মোহকে উপেক্ষা করে মাস্টারদা ছুটে চললেন অজানার পানে। পেছনে পড়ে রইলো তার সংসার, তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, তার এত অযত্ন- অবহেলার পরেও এ মহিয়সী নারী জীবনে একটি বারের জন্যেও স্বামীর বিরুদ্ধে কোনোরকম অভিযোগ করেননি। জীবনের শেষ দিন অবধি এ ব্যাপারটি লক্ষ্যণীয় ছিল।

এছাড়া আরেক নারীর নিরব অপেক্ষার গল্প তুলে ধরেছেন বইটিতে। কোনো রকম সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ছাড়াই কোনো নারী যে এভাবে কারো জন্য অপেক্ষা করতে পারে, সেটা এ উপন্যাস পড়বার আগে জানা ছিল না। কেবল একজন পুরুষের মনের ভাষা বুঝতে পেরে এভাবে অজানা ভবিষ্যতের পানে পা বাড়ানো এখনকার যুগে অত্যন্ত বিরল। এ থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, যুদ্ধ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করলেও মনোবৃত্তিকে কখনো থামাতে পারে না। এ প্রসঙ্গে একটি জনপ্রিয় লোকগীতির দুই লাইন উল্লেখ না করে পারলাম নাঃ
"মনকে আমার যত চাই যে বুঝাইতে, / মন আমার চায় রঙের ঘোড়া দৌড়াইতে!"

বইয়ের আলোচ্য বিষয়বস্তু নিয়ে বস্তাপচা আলাপ কম তো হলো না। এবার আসা যাক এর ভাষাশৈলী ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ের আলোচনায়। ইতিহাসের মত কাঠখোট্টা ব্যাপারেও বেশ সাবলীল ও সহজ ভাষায় বর্ণনা করে গিয়েছেন লেখক। বলতে গেলে, এ ব্যাপারে তিনি বেশ মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অস্বীকার করবার কিছু নেই তেমন। তবে গল্পের ধারা আমার কাছে এলোমেলো লেগেছে কিছুটা। খুব দ্রুত ঘটনার প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন আসাতে নতুন ধারা ধরতে বেশ খানিকটা বেগ পেতে হয়েছে। স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা নেই যে ক্ষেত্রবিশেষে, এ কাজে আমাকে ব্যর্থতা মেনে নিতে হয়েছে। এছাড়া আর তেমন অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো কিছু আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি বলতে গেলে। সর্বোপরি, বেশ ভালো মানের লিখনী ছিল বইটি। অনেক অজানা ইতিহাস জানতে পেরেছি। অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জ্ঞানের ভাণ্ডার একটু হলেও সমৃদ্ধ হয়েছে আগের তুলনায়।আশা করি, কোনো পাঠক আশাহত হবেন না বইটি পড়ে। বইয়ের রিভিউ লিখে দেয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে লেখক মহাশয় আমাকে বইয়ের মোবাইলে পাঠযোগ্য বইয়ের পাণ্ডুলিপি দিয়েছেন। এ জন্য তার প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা।

সবশেষে, এ লেখকের নতুন বইয়ের জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো। "সাধারণ লোক পাঠক হয়ে উঠুক আর পাঠকেরা লেখক হয়ে উঠুক"-----এটাই হোক সকল বইপাগলের একমাত্র চাওয়া!

#Happy_reading!
Profile Image for Farhina Jannat.
114 reviews12 followers
December 29, 2019
লেখক ভাইয়া ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন, বইটার ফাইনাল পাণ্ডুলিপি দিবেন, সেটা পড়ে রিভিউ লিখতে হবে। সেরা তিনজন রিভিউদাতাকে ভাইয়া বইটা গিফট করবেন। সাতপাঁচ না ভেবেই কমেন্ট করে দিলাম। কিন্তু আগে জেনে নেয়া উচিত ছিল বইটা কি নিয়ে। ইতিহাস ভিত্তিক বই জানলে কখনওই কমেন্ট করতামনা। আসলে ইতিহাস আমার কোনকালেই পছন্দের ঘরানা ছিলনা। এ ধরণের বই তাই পড়া হয়নি বললেই চলে। এজন্যেই বইটা পড়তে নিয়ে যখন দেখলাম এ ধরণের বই, তখন পড়া তো আর আগায়না। কিন্তু পড়ে রিভিউ লিখবো বলে পিডিএফ নিয়েছি, না লিখলে তো কথার খেলাফ হবে। তাই ধৈর্য ধরে পড়তে থাকলাম।

স্বীকার করছি, এ সাইজের একটা বই পড়তে আমার যে সময় লাগে, তার থেকে অনেক বেশি সময় লেগেছে ওই ইতিহাস অনীহার কারণে। কিন্তু সত্যি বলছি, সময়টা মোটেই নষ্ট হয়নি। অনেক কিছু জেনেছি, বিশেষত মাস্টারদা সূর্যসেন সম্পর্কে। তাকে নিয়ে বেশ বিষদ বর্ণনা দিয়েছেন লেখক। যদিও তার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু ছিল তা জানিনা। তবে আমার মনে হয় লেখক চট্টগ্রাম এর গৈরলা এলাকার পটভূমিতে মূল কাহিনী লিখেছেন বলেই সে অঞ্চলের আরেক বীর এর ইতিহাস ও এর অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

বইয়ের পাতায় আমি হেঁটে বেড়িয়েছি গৈরলার পথ ধরে। কখনো ১৯১৬ সালে মাস্টারদা সূর্যসেন এর সাথে, কখনো ১৯৭১ সালে টগবগে যুবক সুজিতের সাথে আবার কখনো বর্তমানে বয়সের ভারে নুয়ে পড়া অথচ দেশমাতার জন্য যুদ্ধ করার গর্বে মাথা উঁচু করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা এক মুক্তিযোদ্ধার সাথে, যিনি শোনাচ্ছেন যুদ্ধের গল্প আজকের জেনারেশনকে।

কখনো শৈশব, কখনো কৈশর আবার কখনো যৌবনের তেজদীপ্ত সুজিত বড়ুয়াকে লেখক তার কলমের আঁচড়ে প্রাণবন্ত করে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রথমে লেখার ধরণে অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগলেও পরে ঠিক হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু বর্ণনার পুনরাবৃত্তি এবং একই উপমার ব্যবহার একটু চোখে লেগেছে। কিন্তু নতুন লেখক হিসেবে তিনি যে এমন একটা বিষয় নিয়ে লেখার সাহস দেখিয়েছেন, এজন্য অবশ্যই উনি সাধুবাদ পাবার যোগ্য। বইয়ের কিছু জায়গা একটু বোরিং লাগলেও অনেকগুলো যায়গা ছিল হৃদয়ছোঁয়া।

এক বইয়ে তিনি যেমন তুলে ধরেছেন যুদ্ধের বিভিষীকা, তেমনি তুলে ধরেছেন সে সময়ে গৃহবন্দী নারীদের মানসিক অবস্থা। যুদ্ধের বিভিষীকা যে মানুষের মনকে আটকে রাখতে পারেনা, এর মধ্যেও প্রেমের দোলা দিয়ে যায় সেটিও তিনি খুবই সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। আরো আছে এক কিশোরী বধূর গল্প, যে চোখে না দেখা স্বামীকে ভালবেসে তার আদর্শকে ভালবেসে কাটিয়ে দিল দিনের পর দিন। আসলে প্রত্যেকটি নারী চরিত্রকে লেখক এত সুন্দর করে বিশ্লেষণ করেছেন যে, অনুভব করতে পারছিলাম তাদের অনুভূতিগুলো।

এ দেশ স্বাধীন করতে যে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল সেটাও লেখক বিশেষভাবে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন। একই সাথে এটাও দেখিয়েছেন বর্তমানে অধিকাংশ আসল মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা দূর্নীতির সুযোগ নিয়ে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। যাদের জন্য পেলাম এ স্বাধীন দেশ, স্বাধীন পতাকা তাদের আজ পেনশন জোটেনা, জোটেনা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম, নাম উঠাতে গেলে কিছু(!) দিতে হবে। তারা আজ ভাবেন, হায়! কাদের জন্য, কিসের জন্য জীবন বাজী রেখে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলাম!! কি চেয়েছি আর কি পেয়েছি!!!

লেখক একটা বিস্তৃত প্লট নিয়ে লেখা শুরু করেছিলেন, জাল অনেকদূর ছড়িয়েওছিলেন, কিন্তু হঠাত করেই যেন জালটা গুটিয়ে নিলেন। যখন দেখলাম উপরে পরিশিষ্ট লেখা, বিশ্বাস হচ্ছিলনা। মনে হল গল্পের ভেতরে তো সবে ঢুকলাম। জানি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যত লেখা যাবে, কম হবে কিন্তু এখানে আরো একটু লিখলে হয়তো বইটা আরো বেশি পরিপূর্ণ হতো। লেখকের প্রতি তাই অভিযোগ, কেন তিনি আরেকটু লিখলেননা। হঠাৎ করে কেন সব শেষ করে দিলেন।

লেখক বেশ কিছু জায়গায় সহজ শব্দ বাদ দিয়ে কঠিন শব্দ ব্যবহার করেছেন, আমার মনে হয়েছে সেগুলো না ব্যবহার করলেই ভাল হতো। অধ্যায়গুলো যেন একটু অগোছালো, কোনটা আগে কোনটা পরে ঠিক বোঝা যায়নি কয়েক যায়গায়। খেই হারিয়ে যাচ্ছিল বারবার। বাকি থাকল ইতিহাসের সত্যমিথ্যা। ওসব নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই, যাদের আছে তারা নিশ্চয় দেখবে। লেখক বইয়ের শেষে সহায়ক গ্রন্থসমূহের তালিকা দিয়েছেন, তাতে মনে হয়েছে তিনি ইতিহাস অবিকৃত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। আর লেখকের থেকে যখন জানলাম, সুজিত বড়ুয়ার কাহিনী সত্য, উনি বেঁচে আছেন, তখন তো কথাই নেই।

অনেক বড় হয়ে গেল, রিভিউ এর সাইজ দেখেই সবাই না পড়ে পালাবে, তবু বলি, আপনারা বইটা পড়তেই পারেন। যারা ইতিহাস পছন্দ করেন, তাদের অবশ্যই ভাল লাগবে, আর আমার মত যারা তাদেরও বইটা শেষ করে অনুভূতিটা খুব খারাপ হবেনা আশা করি। সর্বোপরি লেখককে আরো লেখার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হবে। আশা করছি আমরা ভবিষ্যতে লেখকের আরো ভাল ভাল লেখা পাবো। লেখকের জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

শেষ করছি বইয়ের শেষ দুই লাইন দিয়ে:
“বাবা, এই যে পাকিস্তানি লোকটার একটা বদখত টাইপের কোট তুমি গায়ে দিয়ে ঘোরো, তোমার লজ্জা করেনা?”
ছেলের কথা শুনে হেসে বলেন, “কেন লজ্জা করবে? মানুষ তো পশু মেরে তার চামড়া দিয়েও কাপড় বানিয়ে গায়ে দেয়। তাদের কি লজ্জা করে?”
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, এটাই সেই জলপাই রং এর কোট।

হ্যাপি রিডিং 😊
Displaying 1 - 4 of 4 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.