এই নিরাভরণ অথচ অত্যন্ত মূল্যবান বইটিতে এইক'টি লেখা আছে~ ১. নৃতত্ত্ব ও হিন্দুসভ্যতা; ২. হিন্দুসভ্যতার উৎস; ৩. দুই সভ্যতার সংঘর্ষ ও সংশ্লেষণ; ৪. বৈদিক যুগের নৃতাত্ত্বিক পরিচয়; ৫. ইতিহাস ও মহাকাব্যের সীমানায়; ৬. সমাজ, সংস্কৃতি ও ধর্ম; ৭. তন্ত্রধর্মের উৎস ও বিকাশ; ৮. সমাজগঠনে জাতিভেদ; ৯. মধ্যযুগে বাঙালি সমাজের বিবর্তন; পরিশিষ্ট ক: বাঙালি সমাজের লুপ্ত বিবাহ; পরিশিষ্ট খ: অবৈধ সন্তানের সামাজিক স্বীকৃতি। এই লেখাগুলো এখনও বিশেষভাবে পড়ার মতো, কারণ, প্রথমত, ভারতীয় তথা অধুনা 'হিন্দু' নামে কথিত সংস্কৃতির অধিকাংশই যে সিন্ধুসভ্যতার নানা প্রথা ও রীতি থেকেই বিবর্তিত হয়েছে— এ-কথা একেবারে দ্ব্যর্থহীন ভঙ্গিতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাহিত্যিক ও ধর্মীয় উপাদানের বিশ্লেষণ করে ভারতের ইতিহাসকে স্পষ্টতর করে তোলা হয়েছে। তৃতীয়ত, তন্ত্র যে কোনো 'অর্বাচীন' 'বিকৃতি' নয়, বরং ভারতীয় অধ্যাত্মবোধের সবচেয়ে আদি প্রকাশ যে সেটি— এও এতে দেখানো হয়েছে। এই বইয়ের একমাত্র দুর্বলতা হল এর আর্য-অনার্য বিভাজন তথা সেটিকেই ইতিহাসের কাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করা। ওটিকে উপেক্ষা করে মূল বক্তব্যে ডুব দিলে এই বইয়ের রত্নাকর-রূপটি বোঝা যায়। সুযোগ পেলে অবশ্যই পড়ুন।