বনজঙ্গল আর শিকার নিয়ে লেখায় বুদ্ধদেব গুহ যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী, একাধিক বইতে তার প্রমাণ ছড়ানো। আবার একটিমাত্র ‘ওয়াইকিকি’ লিখে তিনি প্রমাণ দিয়েছেন যে, সার্থক গোয়েন্দাকাহিনি রচনাতেও তিনি কম যান না। ‘অ্যাল্বিনো’তে তাঁর পরিচয় হল আরও অন্তর্ভেদী এবং নতুনতর। শিকারের এক উত্তেজনাকর কাহিনি কীভাবে উদ্বেল উৎকণ্ঠা-মেশানো রহস্য-অ্যাডভেঞ্চারের দিকে মোড় নিল, এ-উপন্যাসে তারই বিবরণ। বন্দুকের নল এ-কাহিনিতে কখনও ‘অ্যাল্বিনো’র দিকে, কখনও-বা মানুষের দিকে তাক-করা। ‘অ্যাল্বিনো’ এক-ধরনের দুর্লভ বাঘ, গায়ে যার ধবল। পঞ্চাশ কি একশো বছরে একবার এ-রকম বাঘের খোঁজ পাওয়া যায়। শিকারিরা তাই সন্ধান পেলেই পাগল হয়ে ওঠে। ঋজুদা আর রুদ্র যে এ-হেন শিকারের সন্ধানে ছুটে আসবে, অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মানুষের মধ্যেও যে-অ্যালবিনো রয়েছে, বাইরের চামড়ার আড়ালে যা কিনা থাকে ঢাকা, তার খোঁজ নিয়ে যখন ফিরল দুই শিকারি, পাঠকের বিস্ময়-জাগানো চোখের সামনে তখন উন্মোচিত এক দারুণ রোমাঞ্চকর রহস্যকাহিনির যবনিকা।
Buddhadeb Guha (Bengali: বুদ্ধদেব গুহ) is a popular Bengali fiction writer. He studied at the well-known St Xavier's College of the University of Calcutta.
His novels and short stories are characterized by their dreamy abstractness and romantic appeal. His essays reveal the soul of a true wanderer providing some of the most beautiful renditions of travel in Bengal. His love for forests and nature provide the background for many of his novels.
A highly successful chartered accountant by profession, and an accomplished musician, Guha is very urbane in his lifestyle. He was one of the first to create characters representing easy-going, upper middle-class modern Bengali families, whom readers could identify with, and that gave him instant popularity.
He is the recipient of many awards including Ananda Puraskar, 1976; Shiromani Puraskar; and Sharat Puraskar.
The Library of Congress has over fifty titles by him. His most famous novel, according to many, is Madhukori. It is considered a milestone in Bengali literature. He is also the creator of Rijuda, an imaginary character who moves about in jungles with his sidekick Rudra. The jungles that he wrote about were mainly in Eastern India.
রহস্য, রোমাঞ্চ, অ্যাডভেঞ্চার আর জঙ্গল যে ঠিক কীভাবে এবং কতটা মাপমতো মিশলে এমন একটা লেখা তৈরি হয়, তা এই বইটি না পড়লে বিশ্বাস হবে না। কী নেই এই বইয়ে? রেড হেরিং, ষড়যন্ত্র, খুনখারাপি, সূক্ষ্ম রসিকতা, মোটা দাগের রসিকতা, গোলাগুলি, সম্ভাব্য প্রেতাত্মা, নেম-ড্রপিং... আর একটি মা কসম্ লেভেলের সাপ! বিশ্বাস করুন, শংকরকে ছোবল মারতে উদ্যত সেই কালসর্পটিকেই বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে হরেন্ডাস সাপ বলে যদি আপনি ভেবে থাকেন, তাহলে বলতেই হচ্ছে যে আপনি আসল বইটি পড়েননি। অ্যালবিনো পড়ুন। ঋজুদা'র ওপর মাঝেমধ্যে হেব্বি রাগ হবে। রুদ্র'র প্রতি মায়া হবে। জ্ঞানের চাপে লেখককে গোটাকয়েক সুনির্বাচিত অপশব্দও বলে ফেলবেন। কিন্তু বইটা? আহা! ওহো! মানে আর কিছু বলার পাচ্ছি না। না পড়ে থাকলে শিগগির পড়ুন।
অ্যালবিনো আমার পড়া ঋজুদা সিরিজের প্রথম বই । বেশ আগে থেকেই ঋজুদার কয়েকটা বইয়ের কথা শুনছিলাম । পড়ব পড়ব করেও পড়া হচ্ছিল না । আজ সূচনা হলো । মানতেই হবে সূচনা শুভ হয়েছে । কোনো বই পড়া শুরু করার আগেই বইটা সম্পর্কে একটা কিছু কল্পনা করে নেয়ার খারাপ (অথবা হয়ত ভালো) প্রবণতা আছে আমার । এই বই পড়া শুরু করার আগেও আমি ভাবছিলাম , টিপিক্যাল গোয়েন্দা কাহিনী হবে হয়ত । ব্যোমকেশ যেমন ফেলুদার খ্যাতির নিচে চাপা পড়ে যাওয়া একটা চরিত্র , তেমনি হবে ভাবছিলাম । কিন্তু আমার ভুল ভাঙ্গতে সময় লাগেনি । গোয়েন্দা গল্পের ছাঁচে বেশ একটা "Junglelore" পড়া হয়ে গেল । Wikipedia বুদ্ধদেব গুহ সম্পর্কে একটা কথা লিখেছে , " His essays reveal the soul of a true wanderer providing some of the most beautiful renditions of travel in Bengal. His love for forests and nature provide the background for many of his novels." । আমি তাঁর খুব বেশি বই পড়িনি । কিন্তু এই একটা বই পড়েই আমার মনে হয়েছে যে কথাটা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি । বাঙ্গালী খুব কম লেখকই তাঁর মতো জঙ্গলের এতো খুঁটিনাটি লক্ষ্য করেছেন বোধহয় । আর বন সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানের ভালোই বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় তাঁর লেখায় । Jim Corbett সাহেবের "Junglelore" বা "Man-Eaters of Kumaon" এই বইগুলার সাথে উনার লেখার আশ্চর্য একটা মিল আছে । তবুও তিনি স্বতন্ত্র । প্রকৃতির বর্ণনা যেভাবে দেয়া হয়েছে বইতে তাতে পাঠক হিসেবে নিজেকে ঐ বনে আবিষ্কার করতে খুব একটা সময় লাগে না । ওহ , হ্যাঁ ... রাইফেল রিভলবার এবং তাদের জেনাস স্পিসিস সম্পর্কেরও যে ভদ্রলোকের অগাধ জ্ঞান তা বুঝা গেল । সম্ভববত ব্যক্তিজীবনে তিনি শিকার করেছেন বা এই বিষয়ে উৎসাহ ছিল । এ তো গেল লেখনশৈলীর কথা । এবার আসি গল্পে । "টানটান উত্তেজনাপূর্ণ থ্রিলার" বলব না । তবে শেষ পর্যন্ত আগ্রহ ধরে রাখার মতো গল্প বটে । অনেক গোয়েন্দা গল্পে দেখা যায় গোয়েন্দার সহকারী তেমন প্রাধান্য পায়না । কিন্তু এখানে সম্পূর্ণ আলো শুধু ঋজুদার উপর পড়েনি , রুদ্রকেও অনেকটা আলোকিত করেছে । এই দিক থেকেও আমার বইটাকে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে । কিন্তু একটা ব্যাপার একটু খটকা লেগেছে । ওফিফাগাস ভ্যারাইটির কোনো সাপের খোঁজ গুগল আমাকে দিতে পারেনি । যাই হোক , তেমন বড় কোনো ব্যাপার না । মোদ্দাকথা , আমার ভালো লেগেছে । অনেকদিন পরে এরকম একটা বই পড়ে সত্যি ভালো লাগল । ঋজুদা সিরিজের বাকি বইগুলো পড়ার অপেক্ষায় আছি ।
অসাধারণ। আমার পড়া লেখকের ঋজুদা সিরিজের দ্বিতীয় গল্প। সবচেয়ে ভাল লাগছে যে বিষয়টাঃ ঋজুদা এবং রুদ্রের মাঝে কথোপকথনমালা। স্রেফ চলতি রহস্য বা কেস নিয়েই নয়, বরং ওরা কথা বলছে অনেক বিষয় নিয়ে, অনেক সময় ধরে। হিউমার আছে, গভীরতাও আছে।
"বাইরের রং আমাদের যা, তাই-ই কি আমাদের আসল রং?... বাইরের চামড়ার পিগমেন্টেশানের ক্রুটিটাই আমাদের চোখে পড়ে, আর মনের আসল রং চিরদিন চামড়ার আড়ালেই থাকে।"