দীর্ঘদিন পর জেল থেকে মুক্তি পায় মির্জা আশেক। নতুন করে জীবনটা শুরু করার আগে আবারো পা বাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পথে। শেষ একটি দান মারতে চায় সে। এবার তার পরিকল্পনা যেমন নিখুঁত তেমনি অভিনব। সামান্য ভুলে তলিয়ে যেতে পারে তার জীবনটা, সেই সাথে আরো কিছু মানুষেরও! এসবই কি মহামূল্যবান হীরকখণ্ড দরিয়া-ই-নুরের হাতছানি? নাকি অন্য কিছু?
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যায় পূর্ব প্রকাশিত উপন্যাসিকাটার ক্রাউন সাইজ হার্ডকভার সংস্করণটা কিনেছিলাম গতকাল। আজ সকালে কি মনে করে হাতে নিতেই একটানে শেষ হয়ে গেল। এই ছোট কলেবরেও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন নাজিম ভাই। গল্পটা ১৫ বছর জেল খেটে বেরোনো এক আসামীকে নিয়ে। বেশি কিছু বললে স্পয়লার হয়ে যাবে। নিজেই পড়ে ফেলুন। ^_^
কখনো কখনো ন্যাড়াকে বেল তলায় দু-বার ও যেতে হয়। দ্বিতীয় বার যেতে হয় বেল টা কুড়িয়ে আনার জন্য।
ন্যাড়ার মত বদ অভ্যাস আমার নিত্যদিনের সঙ্গী! কখনো কোনো বই এক্সপেক্টেশন মেটাতে না পারলেও বার বার ফিরে আসি ভাবি হয়তো এইবার বেল খানা পাইলাম। তবে এবার লেখক কথা রেখেছেন, বেল খানা সত্যিই ডেলিভারি দিয়েছেন।
❝ মুক্তি ❞। এই একটা ব্যাপারই আমাদের অস্তিত্ব কে পূর্নতা দেয়। হয়তো আমার আপনার কাছে এর মর্ম ততটা উদ্ধার হবার কথা না, যেখানে স্বাধীন দেশে বসবাস করে অবাধে ইন্টারনেটের দুনিয়াতে ঘুরে বেড়াই।
তবে এই মুক্তির মর্ম ছিল অশোক মির্জার কাছে অনেক বেশি। ১৫ টা বছর তার কাছে কোনো সংখ্যা নয় ; তার জীবনে পরাধীন ভাবে বেচে থাকার দের দশক সময়। কতটা ডিটারমাইন্ড হলে এর পরেও মানুষ ছুটে চলে ঠিক সেইদিকে যেদিকে রয়েছে সেই একই পরাধীন জীবনের প্রবল সম্ভবনা?
আমার কাছে নোভেলা বা ছোট সাইজের গল্প গুলাই সব সময় মনে হয় অনেক কিছু মিসিং থাকে। দোষা দোষি করি না, ভাবি অল্প পরিসরে হয়তো এর থেকে ভালো লেখা যেত না। কিন্তু ছোট্ট একটা বইতে লেখক গল্পের বুনন আর চরিত্র চিত্রন দিয়ে যে থ্রিল দিয়েছেন তা সত্যিই এক্সপেক্টেশন পুরন করেছে।
ডেট রিলেটেড কিছু ভুল(সম্ভবত টাইপো ছিল), আর সংবাদ পত্রের আর্টিকেলের কোনো ব্যাখা না দেওয়ায় তা লুপহোল এ পরিনত হয়েছে৷ পরবর্তী মুদ্রনে তা সংশোধন করে দিলে কনফিউশন মিটবে অনেকের।
দারুণ একটা রিভেঞ্জ থ্রিলার। খুব ছোট পরিসরেও যে পরিপূর্ণ একটা গল্প বলা যায় সেটার প্রমাণ এই দরিয়া-ই-নূর বইটা। শুরু থেকেই টানটান উত্তেজনা আর শেষে গিয়ে দারুণভাবে খোলাসা করা। গল্পটা রহস্য, বন্ধুত্ব, লোভ, প্রেম আর বিশ্বাসঘাতকতার। নাজিম ভাই আরেকবার খেল দেখালেন।
দ্রত গতির উপন্যাসিকাটিতে নাজিম ভাইয়ের মুন্সিয়ানা অনেক প্রশংসনীয়। মীর্জা আশেক এর চরিত্র ও তার ক্ষুরধার বুদ্ধি অনেক ভালো ছিলো। বেশি কিছু বললে স্পয়লার হবে। তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলুন বইটা।
অল্প পরিসরে কীভাবে একটা পরিপূর্ণ গল্প বলা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ দরিয়া-ই-নুর। ১১২ পৃষ্ঠার একটা নভেলা, কাহিনীর বিস্তৃতি বলতে গেলে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৬ টা দিন। কিন্তু এর মধ্যেই উঠে এসেছে মির্জা আশেকের জেলে কাটানো সময়ের গল্প, এর আগের জীবনের উত্থান-পতন। মোগল সাম্রাজ্যের মহামূল্যবান হীরা দরিয়া-ই-নুর, স্বাধীনতার আগে নওয়াবের সভায় মুজরা করতে আসা বাইজির জীবন কিংবা সর্বহারা পার্টির বিপ্লবীর গল্প, সবই আছে ছোট্ট এই উপন্যাসিকায়।
গল্পের রহস্য পার্টটা যে খুব আনপ্রেডিক্টেবল ছিলো তেমন না, একটু খেয়াল করলে অনেক উত্তরই আগেভাগে অনুমান করা যায়। তবুও কিছু জায়গায় ধাক্কা খেতে হয়েছে। বইটা সুখপাঠ্য বলবো। কাজের ফাঁকে বা যাত্রাপথে টুক করে পড়ে ফেলার জন্য পারফেক্ট।
বই: দরিয়া-ই-নুর লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জনরা: রিভেঞ্জ থ্রিলার প্রচ্ছদ: ডিলান প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশনী প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১২ মুদ্রিত মূল্য: ২০০/-
❝লোভ এমনই এক ঘোড়া, ছুটতে থাকবে, ছুটতে থাকবে... একটুও থামবে না! পথের শেষ হয়ে গেলেও ছোটার শেষ হবে না, নতুন পথ তৈরি করে নেবে সেই পাগলা ঘোড়া!❞
দীর্ঘ পনেরোটা বছর পর জেল থেকে রেহাই পেয়ে আশেক দেখে বদলে গেছে অনেক কিছু। কিছু প্রিয়জন এখনও আছে তার অপেক্ষায়। কিন্তু পনেরোবছর আগে যার দেখানো পথের জন্য বন্দী হয়ে থাকতে হয়েছে সে যেন বেমালুম হাওয়া! সবচেয়ে বিশ্বস্ত গুরুকে কি এতো সহজে ভোলা যায়? নতুন করে জীবন শুরু করতে হবে তো। কিন্তু শেষবারের জন্য নিতে হবে ঝুঁকি। যে হীরকখণ্ড হাত ঘুরে এতো জায়গায় পৌঁছিয়েছে মীর্জা আশেকের ভাগ্য কি ফেরাতে পারবে?
পিচ্চি সাইজের ছোট্ট পরিসরের একটা বই ❝দরিয়া-ই-নুর❞। একজন কয়েদি দীর্ঘদিন জেলে বন্দী থেকে যখন ভেবেছিল জীবনটা শেষ করে দিবে তখন জানতে পারে চরম কিছু সত্য! কিন্তু কী? পাঠক জবাব তখনই পাবেন যখন সুন্দর ছিমছাম গোছানো বইটি পড়বেন। রহস্যের মধ্যেও যে রহস্য আছে, ষড়যন্ত্রের মধ্যেও যে ষড়যন্ত্র আছে বুঝেছি এতো সহজে দরিয়া-ই-নুরের হাতবদল দেখে। তবে শেষটা চমকে দিয়েছে। অতীতের স্মৃতিচারণের সাথে বর্তমানের যোগসূত্র এবং দারুণ একটা সমাপ্তি মনে রাখার মতো।
বইঃ দরিয়া-ই-নুর লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনা সংস্থাঃ বাতিঘর প্রকাশনী প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারী,২০২৩ মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০ টাকা
বইয়ের জনরার নামগুলো প্রচলিত হয়ে ওঠার সুবাদে-এখনকার সময়ে বইগুলোর গল্পের ধরণ বর্ণনার সুবিথার্থে একটা জনরার নাম বলে দিলেই হয়। এখন, অসুবিধা যেটা হয় তা হল- এটি একটি বেশ ছোট কলেবরের বই, মাত্র ১১২ পৃষ্ঠা সেজন্য জনরা বলে দিলে কাহিনীর অনেকটাই প্রেডিক্টেবল হয়ে যায়। থ্রিলার হিসেবেই বর্ণনা করি একে।
দরিয়া ই নুর একটি হিরকখন্ডের নাম, এই হিরার নামেই বই। প্লট যা ছিল, গল্পের চরিত্র সংখ্যার স্বল্পতা স্বত্তেও একটা মাঝারি আকারের (অন্তত ২৫০ পৃ) উপন্যাস তৈরী করাই যেত। ছোট রাখার চ্যালেঞ্জ পুরা করতে গিয়ে কখনো কখনো মনে হয়েছে পরিস্থিতির ঠিকঠাক বর্ণনা হচ্ছে না বা বলা যেতে পারে জমছে না, হঠাৎ কাহিনীতে কিছু গোজামিল ও মনে হতে পারে। তবে ভূমিকাতে লেখক বলেই দিয়েছেন এটা কোন এক ম্যাগাজিনের জন্য শব্দ সংখ্যা মেপে লেখা উপন্যাস, পাঠকের হাতে ছোট আকারে সুন্দর প্রচ্ছদ সহকারে তুলে দেয়া হয়েছে।
তাই চাইলেও খুব বেশি দোষ ও দিতে পারছিনা। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ১৫ বছর জেল খেটে নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে জেল থেকে মুক্তি পায়, এবার …? কি হবে তাই নিয়েই এ উপন্যাস । মোটামুটি উৎরে গেছে। বইটা বাংলাদেশ ও কলকাতা দুই জায়গা থেকেই বের হয়েছে, বাংলাদেশের প্রচ্ছদ বেশি স্ট্যান্ডার্ড ও সুন্দর। প্রচ্ছদের জন্য আধা তারা যোগ করে দিলাম।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কে বাংলাদেশের থ্রিলার জগতের কিংপিন বলা যায়। কিভাবে পাঠককে গোগ্রাসে বই গেলাতে হয় সেটা তিনি জানেন। ' দরিয়া ই নুর' আমি এক বসাতে শেষ করেছি।
অতি ছোট্ট পরিসরের এই থ্রিলার উপন্যাসিকাটি উপভোগ করেছি। শেষ টুইস্টটা অনুমেয় হলেও মানবিক যে আবেগের সৃষ্টি তিনি করেছেন সেটা মুগ্ধ করেছে। অবসর সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত বই।
নাজিমুদ্দিন সাহেবের অন্য বইগুলির তুলনায় এইখানে অহেতুক কথাবার্তা বা টেনে ইলাস্টিকের মত লম্বা করার বিষয়টা নাই, আর শেষে গিয়ে গোঁজামিল দেয়াটাও কম (নাই যে তা না, তবে কম)। কাহিনীতে খুব নতুনত্ব নেই, কিন্তু গোঁজামিল কম থাকার কারণে ৩ দেয়া গেল।
১১২ পৃষ্ঠার একটা নভেলা, মেইনলি ১৬ টা দিনের ঘটনা- যদি না পুরানো কাহিনী ধরি। এই ১১২ পৃষ্ঠায় আছে মূল্যবান হীরা দরিয়া-ই-নুরের গল্প, নওয়াব সভায় মুজরা আসরের বাইজির গল্প, সর্বহারা পার্টির বিপ্লবীর গল্প,মির্জা আশেকের রাস্তার পিচ্চি থেকে ডামি নায়ক হওয়ার গল্প, তাঁর ১৫ বছর জেল খাটার গল্প, তাঁর আর রোজির প্রণয়ের গল্প, বন্ধুত্বের গল্প, বিশ্বাসঘাতকতার গল্প। এমন নয় যে টুইস্টগুলো ধরা যায় না, মনোযোগ দিয়ে পড়লে বেশ আগেই অনেক কিছুর ঠাওর করা সম্ভব। কিন্তু এতো এতো গল্প এই শব্দসংখ্যায় লিখেই বাজিমাত করেছেন লেখক। এক বসায় পড়ে ফেলার মতোন।
ছোট পরিসরে বেশ ভালো গল্প বলেছেন লেখক। টুইস্টগুলি অনুমেয় হলেও বিশ্বাসঘাতকতা, প্রেম, প্রতিশোধের সফল চিত্রায়ন ছিল। শেষেরদিকে সব ঘটনা এভাবে মিলে যাওয়া কিছুটা সিনেম্যাটিক লেগেছে। যদিও বইতেই বলা আছে,
"সিনেমার জীবন। জীবনের সিনেমা"
সাথে নাজিম ভাইয়ের অটোগ্রাফ অতিরিক্ত প্রাপ্তি হয়ে থাকবে। পরীক্ষার আগের রাতে এসব পড়া, আমার এ বাজে স্বভাব কোনওদিন যাবে না। 😑
এই রিভিউটি বা বিশ্লেষণটি সম্পূর্ণ রূপে আমার নিজস্ব মতামত। তাই যদি আমার কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে। তবে সেটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
চলুন শুরু করা যাক,
বাংলা যে কথাটি দিয়ে বইটিকে উপাধি দেয় হয়েছে সেটি দিয়ে শুরু করি, "ছোট মরিচের ঝাল বেশি"। আসলেই কি তাই। সব সময় কি ছোট মরিচের ঝাল বেশি হয়। কারণ পরিবেশ পরিস্থিতি সার মাটির উর্বরতা সব মিলিয়ে ঝালের পার্থক্যের তারতম্য হতেই পারে৷ এটা স্বাভাবিক।
এই বইয়ের ক্ষেত্রেও ঝালের ব্যাপারটি আমার কাছে তেমনই। সরাসরি যদি বলি নাম বড় দিয়ে বইটিকে হাইপ করা হয়েছে। এলিমেন্ট অফ সারপ্রাইজ নেই৷ তবুও বইটির প্রশংসায় ভাসছে৷ মনে হচ্ছে বইটির কাহিনী অনেক অসাধারণ। আসলেই কি তাই।
কাহিনী এবং প্লট খুব ই সাধারণ, তবে অসাধারণ হতে পারত। সেরকম সব কিছুই ছিল, তবে এক্সিকিউশন ছিল না। এখন আপনাদের মনে হতে পারে কেন আমি এমন বললাম। হতে পারি আমি থ্রিলার বেশি পড়িনি তবে ছোট ছোট থ্রিলার কিভাবে অসাধারণ হয়ে ওঠে তার অনেক উদাহরণ আছে চাইলেই দেয়া যায়। আপাতত দিচ্ছি না৷
এবার আসি কাহিনী, প্লট এবং চরিত্র গুলো নিয়ে ছোট একটা বিশ্লেষণ।
গল্পের নায়ক জেল থেকে ছাড়া পাবার পর তার গতিবিধি খুব সাধারণ। এটা গল্পের ভাষায়। সে বাসায় যাচ্ছে স্ত্রী, মায়ের সাথে সময় কাটাচ্ছে আর পুরোনো দিনের কথা মনে করছে। ৪০ পাতা পর্যন্ত কাহিনী ঠিক এভাবেই এগিয়েছে৷ এরপর আমি ছোট এক দিনের ব্রেকে চলে যাই। কারণ কাহিনী আমাকে টানতে পারছিল না।। এরপর আবার শুরু করি। তো গল্পের প্রধান চরিত্র একটি ডাকাতির দায়ে জেলে গিয়েছিল যার সাথে একটি হত্যা কান্ড জড়িত ছিল। যদিও সেটা প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। তবুও তার একটি দীর্ঘ সময়ের জন্য জেল হয়।
জেল জীবন থেকে বের হয়ে সে আর একটি পরিকল্পনা সাজায়। কারণ তার জেলে যাবার মূলে যেই ব্যক্তি রয়েছে তাকে ধরতে হবে৷ তো তার পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে প্ল্যান সেট আপ করে কাজে নেমে পরে৷
এরপর ধীরে ধীরে কাহিনী এগিয়ে চলে। যাকে ধরার বা ফাসাতে চেয়েছিল আমাদের নায়ক সে সেটা করে ফেলে। আর অনেক সহজেই করে ফেলে। বিষয়টি কি এতই সহজ। মানে থ্রিলারের হিসেবে এত সহজেই ফেসে গেলো আমাদের ভিলেন।
তো কাহিনীর এলিমেন্ট অফ সারপ্রাইজ এটাই যে যাকে শুরু ভিলেন ধরা হয়েছিল আসলে সে ভিলেন নয়। কিন্তু এখানে একটা ক্লু এর কারণে ব্যাপারটি আগেই পরিস্কার হয়ে যায়৷ সেটা আর বলছি না।
এবার যেহেতু কাহিনী ছোট এর সাব প্লট আরও ছোট হবে সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু সেখানেও অনেক কিছু ঠিক ভাবে উল্লেখ নেই। তারচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে থ্রিলিং যেই ব্যাপারটি থাকা দরকার যেটা পাঠকে পরের পাতায় যেতে বাধ্য করে বা একটা অস্থিরতা তৈরি করে দেয় সেই ব্যাপারটি অনেক মিসিং৷
এছাড়া ছোট প্লটের সাথে গল্পের গতিশীলতার একটা ব্যাপার থাকে সেটাও কম। বলা যায় টানের ব্যাপারটা নেই। এই ধরনের প্লট বা থ্রিলারে পাঠকদের এক্সপেকটেশন থাকে যে গল্পের ভেতর একটা গতি থাকবে সেটা অনেকাংশেই মিস ছিল।
হ্যা, যারা নতুন পড়বেন তাদের জন্য ভালো লাগতেও পারে। তবে এটা আমি থ্রিলার জনরাতে ফেলতে পারছি না আবার অন্য জনরাতেও নিতে পারছি না। কেন জানি না খুব সাদামাটা একটা গল্প মনে হয়েছে।
আমি দু:খিত এভাবে বলার জন্য। কিন্তু থ্রিল বা থ্রিলার যে টানটান উত্তেজনা থাকে সেটি নেই। তো "ছোট মরিচের ঝাল বেশি" কথাটা আমার কাছে একটু বাড়িয়ে বলা ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি।
শুরুতেই লেখা ছিলো একজন সাংবাদিক গল্পটা নিয়ে বললেন, 'ছোট মরিচের ঝাল বেশি'; কথাটা নেহাত মন্দ বলেনি। দারুন একটা রিভেঞ্জ থ্রিলার পড়তে পেলাম অনেক মাস পর। ছোট্ট এই নভেলার আর কীই বা আর রিভিউ দিব, কিন্ত এটা বলা চলে এই বইমেলার মাসে এটা যেন সবার লিস্টে থাকে।
"দরকারের শেষ নেই, কিন্তু লোভের লাগাম টানতে হয়। লোভ এমনই এক ঘোড়া, ছুটতে থাকবে, ছুটতেই থাকবে...একটুও থামবে না! পথের শেষ হয়ে গেলেও ছোটার শেষ হবে না, নতুন পথ তৈরি করে নেবে সেই পাগলা ঘোড়া!”
বইয়ের প্লট-টা নিয়ে সুবিস্তৃত উপন্যাস লেখা যেত, কিন্তু একশ পৃষ্ঠার মাঝেও কেমন করে পরিপূর্ণ একটা গল্প বলা যায়, সেটা দেখা গেছে 'দরিয়া-ই-নুর' উপন্যাসিকাতে। অনাড়ম্বর দৃশ্য নির্মাণ, তার মাঝেও যে উপাদানগুলো টানে, তার মাঝে রয়েছে আধবয়সী একটা জেল-ফেরত মানুষের মোটিভেশন, তার বন্ধু ও পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা। মির্জা আশেকের বন্ধুত্ব এবং প্রেমের বাইরেও, একটা অংশ বেশ আলাদা মেজাজ নিয়ে এসেছিল। সেটা হলো, চলে যাওয়া মোগল সংস্কৃতির শেষ আবেশ লেগে থাকা ঢাকা'র নবাব পরিবারের উল্লেখ, আর তাদের মুজরা'য় আগত হাসনাহেনা বাঈ। একদিকে মোগল তাজমণি দরিয়া-ই-নুর, অন্যদিকে মোগল সংস্কৃতির এইটুকু উল্লেখ এসে বেশ ভারসাম্য দিয়েছে মেজাজ-টাকে, আর ঢাকার প্রেক্ষাপটের সাথে মোগল ইতিহাসের সংযোগটাও প্রকট হয়েছে।
চলতে-ফিরতে পড়ে ফেলার মতো সহজ সুন্দর বই। আহামরি কিছু না।
বইমেলা থেকে দরিয়া-ই-নুর, বইটি কিনলাম।তারপরে বাসায় এনে টুপ্পুস করে পড়ে ফেললাম। খুব ছোট উপন্যাস তাই উপন্যাসিকা বললেই শ্রেয় হয়। এইবার বই নিয়ে কিছু বলি.. লেখক অহেতুক ঘটনার অবতারণা করেননি এবং কোন কিছুই নিয়ে অযাচিত ঘ্যানঘ্যানানি দেখিনি। লেখক অনেক সুন্দরভাবে ভাবে অতীত -বর্তমানের আবহে এক থ্রিলার সৃষ্টি করেছেন। যথেষ্ট সাসপেন্স ছিলো পুরো উপন্যাস জুরে। খুব ভালো লেগেছে।যারা থ্রিলার আর ছিমছাম বই পড়তে পছন্দ করেন,তাদের ভালো লাগবে। মীর্জা আশেক উপন্যাসের মূল চরিত্র। ১৫ বছর তার জেলে কাটে।১৬ ডিসেম্বর সারা দেশ যখন বিজয়ের আনন্দে উত্তাল,তখন আশেক তার মুক্তির আনন্দে উচ্ছ্বসিত। জেল থেকে বের হয়ে সে কেন আবার হীরা(দুনিয়া-ই-নুর) চুরি করার পরিকল্পনা করছে তা জানতে হলে পড়তে হবে। #লোভ সবারই থাকে কিন্তু তাকে লাগামে না রাখলে আখেরে নিজেরই ক্ষতি।🌞
দরিয়া-ই-নুর, নামটা শুনলেই মনেহয় একটা অত্যন্ত মূল্যবান গয়নার নাম। জিনিসটা আসলেও তাই, তবে ঠিক গয়না নয়, সেটার কাচামাল। মির্জা অশোকের কাছে ১৫ বছর পর জেল থেকে মুক্তি প্রাপ্তিও ছিলো এই হীরকখন্ড দরিয়া ই নুরের মতোই। অনেক আগে একটা মুভি দেখেছিলাম যেখানে লীড চরিত্রের নায়িকা এক্সিডেন্ট করে কোমায় চলে যায়। ফিরে আসে তখন তার বয়স ৩০! মাঝের এই বয়সগুলোতে পৃথিবী তো আর কোমায় যায়নি। কাজেই, সবকিছু সে আসার পর পালটে যায়। অশোকের জন্যও তাই-ই হয়। পৃথিবী পালটে যায়। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, আড্ডার জায়গা, পরিচিত মানুষ সকলেই নতুন হয়ে যায় তার কাছে। পালটায় না তার পাতানো মা 'আর্জুমান্দো', প্রেমিকা 'রোজী' আর 'চার্লি'। তারা ঠিক ১৫ বছর আগেই আটকে থাকে। এসবের মাঝে ১৫ বছর আগে করা ভুলটাই এবার নতুন মোড়কে পুরে করতে চায় মির্জা অশোক। আবারও সেই একই ভুল। তবে উদ্দ্যেশ্যে ভিন্ন। মূলত এই প্লটেই গল্প আগায়। ক্যারেক্টর ডেভেলপমেন্ট ভালো লেগেছে। ছোট বই হলেও কোনো ক্যারেক্টর এনালাইসিস বাদ ছিলোনা। চার্লি আর আর্জুমান্দর ব্যাকস্টোরিটা আসলেই সুন্দর। তাছাড়া পুরান ঢাকার একটা এস্থেটিক ভাইব আছে লেখায়। নওয়াবী মুজরার উত্থান যেনো বোরিং করে দেয়নি (এটলিস্ট ছোটবই হিসেবে বেশ ইন্টারেস্টিং ছিলো)। হ্যাঁ সমালোচনা করলে বলবো গল্পটা খুব যুতের নয়, শুরু থেকেই একটু নড়বড়ে প্লট। বইয়ের শেষের দিকে একদম মনে হচ্ছিলো রাজ্জাকের কোনো পুরানো বাংলা ছায়াছবি দেখছি। হয়তো বড় পরিসরে শেষ করলে এই সমস্যার সমাধান হতো। দরিয়া ই নুরকে ঠিক কম্পলিট থ্রিলার বলবোনা আমি, তবে থ্রিলারের কাছাকাছিই ছিলো। রিডিং ব্লক বা একটানে অল্প সময়ে পড়ার জন্য ভালো। 3/5 Happy reading💚
বইমেলায় প্রথমদিন গিয়েই জানতে পারলাম দরিয়া-ই-নুর কিছুক্ষণ আগে স্টলে এসেছে। একছুটে গিয়ে কিনে ফেললাম Mohammad Nazimuddin এর লেখা সদ্য প্রকাশিত 'দরিয়া-ই-নুর'। গরম গরম বই বলতে যা বোঝায় ঠিক তা-ই। তখনো বইয়ের কভারের আঠাটুকুও পুরোপুরি শুকোয়নি। কিছু কিছু বই হয়ই এমন। গরম গরম কিনে এনে গরম গরম পড়ে না ফেললে চলে না। পকেট সাইজের বইটা হাতে ধরে পড়তেও আরাম। এইটুকুনি বইটা পড়তে এক কি দেড়ঘন্টা লেগেছে বড়জোর। কিনে এনেছি যেদিন সন্ধ্যেতে সেই রাত্রেই কাবার।
🔸বই - আলোচনা : দরিয়া-ই-নুর কে উপন্যাস বলা যায় না। গল্পও বলা যায় না। যাকে বলে গল্পের পরিধি থেকে বেরিয়ে উপন্যাস হতে হতে হলো না। মাত্র ১১২পৃষ্ঠায় লেখক এক চমৎকার থ্রিলার উপহার দিয়েছেন পাঠকদের। দরিয়া-ই-নুর এক মহামূল্যবান হীরকখণ্ড। কোহিনূর বাংলা ছেড়ে ব্রিটিশ রানীর দখলে চলে গেলেও দরিয়া-ই-নুরের অবস্থান নিয়ে রয়ে গেছে রহস্য। স্বল্প আয়তনের এই থ্রিলারটিকে একই সাথে ভীষণ সিনেম্যাটিক এবং ছোট মরিচ নামে আখ্যায়িত করা যায়। অবশ্য লেখক বইয়ের শুরুতে নিজেই বইটির ব্যাপারে লিখেছেন, "সিনেমার জীবন,জীবনের সিনেমা"। ১১২ পৃষ্ঠার আয়তনেই সুনিপুণ দক্ষতায় লেখক এর ঘটনার বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন প্রাচীন নবাব আমল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত। ছোট নবাবের স্ত্রী আর্জুমান্দ বেগমের পালকপুত্র মীর্জা আশেক। ১৫ বছর জেল খেটে বের হবার পরই বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে দরিয়া-ই-নুর পাচারের কাজে নেমে পড়ে। কিন্তু কেন? দীর্ঘ ১৫ বছ�� জীবন থেকে হারিয়ে আবারো কেনো এমন এক ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠলো মীর্জা আশেক? আর কোন অপরাধেই বা ১৫ বছর জেল খাটতে হলো একসময় নায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখা মীর্জা আশেককে? প্রেম,প্রতিশোধ,মায়া,বন্ধুত্ব,স্নেহের মতো সূক্ষ্ম অনুভূতির মিশেলে রচিত বইটি হাতে নেবার পর কিভাবে যে শেষ হয় যাবে পাঠক টেরই পাবেন না। ➤ আমার আফসোসের জায়গা : এতো সুন্দর প্লট নিয়ে আরো বড় আয়তনে লিখলে আত্মা তৃপ্ত হতো।
➤ অপ্রয়োজনীয় আলাপ ব্যতীত,মেদহীন ঝরঝরে লেখা পছন্দ এমন পাঠকের জন্য দরিয়া-ই-নুর একটা রসগোল্লা🤎
বি.দ্র.: থ্রিলারটিকে কেউ নবাব আমলের পটভূমির ধাচে লেখা ভাবলে আশাহত হতে হবে এবং দরিয়া-ই-নুরকে ঘিরে ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হলেও বইটি হীরাচুরি জাতীয় কোনো বই ভাবলেও ভূল হবে। মূলত বইটির ব্যাপারে ফ্ল্যাপ কিংবা চারপাশ থেকে যা ধারণা নিয়ে আপনি পড়তে বসবেন মূল গল্প তার চেয়ে ভিন্ন। যেহেতু বইটি আয়তনে খুবই ছোট তাই বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে লেখা এই বইটি পড়ার সময় অনেক বেশি আশা না রেখে শুরু করলে পাঠক তৃপ্ত হবে।
ছোট গল্প বা উপন্যাসের সমস্যা এই যে, গল্প গড়ে ওঠার যথেষ্ট সুযোগ থাকে না। কিন্তু লেখক তার "দরিয়া-ই-নূর" ছোট্ট উপন্যাসটাতে গল্পের শুরুটা বিস্তারিত গড়ে তুলেছেন। পক্ষান্তরে শেষের দিকে গল্পের অন্তিম যেন তাড়াহুড়োর মাঝে শেষ হয়েছে! যদিওবা পত্র-পত্রিকার জন্য লেখা গল্প থেকে এর থেকে বেশি আশা করা অনুচিত। আর সেই হিসেবে অসাধারণ একটা ছোট থ্রিলার গল্প পেলাম।
দৈনিক প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যার জন্য লেখা মাত্র ৩৫ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসিকা এক জেলফেরত চরিত্রকে নিয়ে। তিনজন মিলে একটি ডাকাতি করে ধরা পরে মাত্র একজন, যার নাম মির্জা আশেক। এই চরিত্রটির ফিরে আসা এবং পরবর্তী সময়ে ডাকাতের সহযোগী বাকী দু'জনের সঙ্গে তার মনস্তাত্বিক যোগাযোগ নিয়ে লেখা এই গল্প।
সত্যি বলতে এত ছোট পরিসর হিসেবে গল্পটা দুর্দান্ত। প্লট এতটাই গোছানো ছিলো যে, এই প্লট ধরেই আরও অন্তত দুইশো পেজের গল্প লেখা সম্ভব। প্রকাশিত বইয়ের বাইরে বিভিন্ন পত্রিকার জন্য লেখা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বাকী তিনটি উপন্যাসের মধ্যেই সবচেয়ে দুর্দান্ত হলো- দরিয়া-ই-নুর।
*** *** ***
Written for the Eid Magazine of the daily Prothom Alo, this 35-page novella is about a jailed character. Only one of the three robbers, after being caught in a robbery, is named Mirza Ashek. This is the story of the character's return and his subsequent psychological contact with the other two accomplices of the robber.
To be honest the story is great in such a small range. The plot was so neat that it was possible to write at least two hundred pages more stories from this plot. Of the other three novels written by Mohammad Nazim Uddin for various journals besides the published book, 'Daria-i-Noor' is the greatest.
দীর্ঘদিন পর জেল থেকে মুক্তি পায় মির্জা আশেক। নতুন করে জীবনটা শুরু করার আগে আবারো পা বাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ এক পথে। শেষ একটি দান মারতে চায় সে । এবার তার পরিকল্পনা যেমন নিঁখুত তেমনি অভিনব । সামান্য ভুলে তলিয়ে যেতে পারে তার জীবনটা, সেই সাথে আরো কিছু মানুষেরও। এসবই কি মহামূল্যবান হীরকখন্ড দরিয়া—ই—নুরের হাতছানি? নাকি অন্য কিছু?
“লোভ এমনি এক ঘোড়া, ছুটতে থাকবে, ছুটিতেই থাকবে,.... একটুও থামবে না! পথের শেষ হয়ে গেলেও ছোটার শেষ হবে না, নতুন পথ তৈরি করে নেবে সেই পাগলা ঘোড়া!”
দরিয়া-ই-নুর আমার জন্য ছোটখাটো একটা রোলারকোস্টার রাইড ছিলো। পরিসর ছোট হলেও গল্পের বুঁনন ছিলো চমৎকার। গুটিকয়েক চরিত্রের মাঝে মির্জা আশেক এবং আর্জুমান্দ এর ক্যারাক্টার রাইটিং ভালো লেগেছে। ব্যাপ্তি অনুযায়ী গল্পের ডালপালার বিস্তার খুব ভালোভাবেই হয়েছে; হবারই কথা লেখক যেহেতু নাজিম উদ্দিন 😬। বুন্ধিমান (আমি পারিনি) পাঠকরা একটু সচেতন হলেই এন্ডিংটা আন্দাজ করতে পারবেন, আমার কাছে অন্তত টুইস্টটা বেখাপ্পা মনে হয়নি। একবসায় শেষ করার মতন কিউট সাইজের বই , ভালো লাগবে আশাকরি। রেকমেন্ড।